           
 
|
Cover January 2019
English Part
January 2019
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বিজয়ের মাসে দেশের জনগণের আরেক বিজয়: প্রধানমন্ত্রী

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একাদশ জাতীয়
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের বিজয়
ডিসেম্বর মাসে দেশের জনগণের আরেক বিজয়।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও তাঁর দল
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পুনরায় বিজয় লাভ করায় ৩১
ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাজনৈতিক নেতা,
বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা তাঁকে
অভিনন্দন জানাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা জানান, এ বিজয় ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়, বরং
দেশ ও জনগণের প্রতি তাঁর বড় দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী জানান, আবার নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে
দেশের জনগণের সেবা করা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অসাধারণ সুযোগ
পেয়েছেন তিনি। নববর্ষ উপলক্ষে দেশের জনগণকে শুভেচ্ছা
জানান শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন নেতা ও কর্মকর্তারা তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, প্রধানমন্ত্রীর
উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, ইকবাল সোবহান চৌধুরী,
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব,
জনপ্রশাসন সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানরা, আইজিপি,
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, বিজিবি ও র্যাবের
মহাপরিচালক।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা ও
প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
১০ বছর পর অংশগ্রহণমূলক এই নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোট
হয়। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় গাইবান্ধা-৩ আসনে আগেই
ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সেখানে পরে ভোট নেওয়া হবে।
তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২
আসনের ফল স্থগিত করা হয়।
ভোটে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৮৬১
জন। মোট ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। নারী
ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। তরুণ ভোটার
প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ।
২০১৮ সালের বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিবেদন
২০১৮ সালে হত্যাকান্ডের সংখ্যা ২২০ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র বিভিন্ন জেলা, উপজেলা
ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয়
দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে BHRC’র
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান এবং ইন্টারন্যাশনাল
হিউম্যান রাইটস কমিশন-IHRC’র সহযোগিতায় প্রতিবেদন
সম্পন্ন করে। জরিপে ২০১৮ সালে সারা দেশে মোট
হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ২৪৫০টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড
অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। BHRC এই
হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর
উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০১৮ সালে গড়ে প্রতিদিন
হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৭টি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও
সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের
কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন
প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে
হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক
রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে
অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের
শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের
ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব। সম্প্রতি শিশু
নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে
যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনীর
কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৮ সালে হত্যাকান্ডের শিকার ২৪৫০ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৫৩ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ৩২৩ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৬২৫ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৮০ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ৪৪৭ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৩৪ জন, চিকিৎসকের
অবহেলায় মৃত্যু ৫৩ জন, অপহরণ হত্যা ৯৪ জন, গুপ্ত হত্যা
৯১ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৫৮৪ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ৫৮
জন, নির্বাচনী সহিংসতায় ২২ জন, এসিড নিক্ষেপে হত্যা ৩
জন, সাংবাদিক হত্যা ১ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২৯২৩ জন, আত্মহত্যা ২৬১ জন।
২০১৮ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর মধ্যে
ধর্ষণ ২৯৬ জন, যৌন নির্যাতন ১২৭ জন, যৌতুক নির্যাতন ৬১
জন, সাংবাদিক নির্যাতন ৩০ জন, এসিড নিক্ষেপের শিকার ৭
জন।
BHRC’র
যুক্তরাষ্ট্র গভর্নর শরীফ আহমেদ লস্করকে সংবর্ধনা
প্রদান
মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র যুক্তরাষ্ট্র গভর্নর
শরীফ আহমেদ লস্কর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষ্যে ১৯ নভেম্বর
২০১৮ BHRC সদর দপ্তরে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
হয়। উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন BHRC’র প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারী
জেনারেল ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব
করেন BHRC জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি
বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী কাজী রেজাউল মোস্তফা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন BHRC’র ঢাকা
মহানগর গভর্নর সিকান্দার আলী জাহিদ, ঢাকা মহানগর উত্তর
শাখার সভাপতি আক্তারুজ্জামান বাবুল, ঢাকা মহানগর
দক্ষিণ শাখার সভাপতি মোঃ ফিরোজ আলম সুমন, সহ-সভাপতি
এমআর আকরাম মুকুল, আরিফুল ইসলাম রাজিব, সাধারণ সম্পাদক
সৈয়দ আজমুল হক, ঢাকা জেলা মহিলা শাখার সভাপতি শাহিদা
সেবা, সাধারণ সম্পাদক মেহবুবা জাহান, নারায়ণগঞ্জ জেলা
মহিলা শাখার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার,
নির্বাহী সভাপতি কোহিনুর আক্তার রুমা, ঢাকা মহানগর
দক্ষিণ শাখার সভাপতি মিনান্নাহার লিপা, সাধারণ সম্পাদক
মাহবুবা বেগম, ঢাকা জেলা শাখার সংগঠনিক সম্পাদক মোঃ
আবুল খায়ের আশিক, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, বৃহত্তর মিরপুর আঞ্চলিক
শাখার নির্বাহী সভাপতি মাহবুব আলম, সাধারণ সম্পাদক
গোলাম কিবরিয়া মোল্লা, মিরপুর থানা শাখার সাধারণ
সম্পাদক শেখ মোতালেব, ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি শেখ
শামিম প্রমুখ।
খাশোগি হত্যার
‘বিশ্বাসযোগ্য’ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
মানবাধিকার রিপোর্ট’
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেট ভবনে
সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তদন্তের
আহ্বান জানালেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ কাতারে দোহা ফোরামের সম্মেলনে তিনি
এই আহ্বান জানান বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষস্থানীয়
গণমাধ্যম আল জাজিরা।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের
‘বিশ্বাসযোগ্য’ তদন্ত এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির
মুখোমুখি করা অত্যন্ত জরুরি। এই বিষয়ে গণমাধ্যমে
প্রকাশিত তথ্য ছাড়া তিনি আর কিছু জানেন না বলেও উল্লেখ
করেন।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের
কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন দ্য ওয়াশিংটন
পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগি। প্রথম থেকেই তুরস্ক
দাবি করে আসছিল তাকে ভবনটির ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে।
সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে
ভিন্নমতাবলম্বী এই সাংবাদিককে হত্যার কথা স্বীকার করে।
তারা একথাও স্বীকার করেছে যে এই হত্যাকাণ্ড ছিল
পরিকল্পিত। এখন তুরস্কের দাবি, হত্যায় জড়িতদের বিচারের
জন্য আংকারার হাতে তুলে দিতে হবে কিন্তু এতে রাজি নয়
সৌদি কর্তৃপক্ষ। এখনও খাশোগির মরদেহের খোঁজ মেলেনি।
গত ১৪ ডিসেম্বর ইস্তাম্বুলে একটি অনুষ্ঠানে তুর্কি
প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান বলেন, জামাল
খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করার সময়
হত্যাকারীদের একজনকে বলতে শোনা যায়, আমি জানি কীভাবে
কাটতে হয়।
তিনি বলেন, এই ব্যক্তি সেনাবাহিনীর একজন সদস্য। খাশোগি
হত্যার পর যে অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে, সেখান থেকেই আমরা
এসব তথ্য পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি,
ফ্রান্স ও কানাডাকে এই অডিও রেকর্ড দেয়া হয়েছে
হত্যাকাণ্ডটি তদন্তের জন্য।
ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বে এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর
পদত্যাগ
মানবাধিকার রিপোর্ট’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বে এবার
পদত্যাগ করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস।
বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এখনই
প্রশাসন থেকে বিদায় নিচ্ছেন না তিনি। আগামী
ফেব্রুয়ারিতে তিনি প্রশাসন ছাড়বেন। যে কারণে পদত্যাগ
ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়া এবং আফগানিস্তান থেকে সেনা
প্রত্যাহার নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বে
জড়িয়ে পড়েন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিস। সিরিয়া থেকে
সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণার একদিন পর বৃহস্পতিবারই
পদত্যাগপত্র দেন ম্যাটিস। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
আফগানিস্তান থেকে সাত হাজার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা
দেন। জানা গেছে, সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের
প্রসঙ্গ আসলে ম্যাটিস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতামতকে
সমর্থন করেননি। তিনি বলেছিলেন, এই কৌশল আমেরিকার জন্য
ভাল হবে না। এছাড়া রাশিয়া এবং ন্যাটো ইস্যুতেও
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল।
পদত্যাগপত্রে যা বলেছেন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদত্যাগপত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে
উদ্দেশ্য করে মিত্রদের শ্রদ্ধা এবং আমেরিকার প্রভাব
সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনার এমন একজন
প্রতিরক্ষামন্ত্রী নেওয়ার অধিকার আছে যিনি আপনার
মতামতের সঙ্গে তালমেলাতে সক্ষম হবেন। তাই আমার অবস্থান
থেকে আমার পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করি’।
BHRC চট্টগ্রাম
মহানগর শাখার শীত বস্ত্র বিতরণ
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
অসহায়, দুস্থ ও গরীবের সেবায় সার্বিকভাবে নিয়োজিত হয়ে
কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ মানবধিকার কমিশন চট্টগ্রাম
মহানগর। শীতকালীন সময়ে অসহায়দের পাশে দাড়ানো প্রত্যেক
মানবিক প্রাণের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এ সময়
প্রচন্ড শীতে অনেক সুবিধাবঞ্চিত, গৃহহীন
অসহায়,জরাজীর্ণ, দুস্থ ব্যক্তিরা সামর্থ্যের অভাবে শীত
বস্ত্র পরিধান বা শীত নিবারনে গা ঢাকিয়ে বাচার মৌলিক
চাহিদা পূরণ করার সম্ভাবপর হয় না।
সেজন্য সমাজ দেশ ও মানবসেবায় আত্মপ্রাণ নিবেদনে সুন্দর
মনের পরিচয়ে আমাদের সকলের উচিত মানুষ হয়ে মানুষের সেবা
ও সহযোগিতা করা।
সে লক্ষ্যে ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং আয়োজিত মাসিক সমন্বয়
সভায় বাংলাদেশ মানবধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগরের
পক্ষ হতে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে শীত বস্ত্র প্রদান এবং
নিবেদিত সকল প্রাণের মহামিলনে সি. আর.বি. রোডস্থ
তাসফিয়া গার্ডেন রেস্টুরেন্টে অসহায়দের কম্বল বিতরণ এবং
খাবার খাওয়ানো হয়।
অসাধারণ সুন্দর মুহূর্ত হিসেবে সার্বিক সহযোগিতায় অসীম
এন্টারপ্রাইজের আয়োজনে উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন
চট্রগ্রাম মহানগরের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ মুহাম্মদ
মাঈনুদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব
জাহাংগীর আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি
লায়ন নবাব হোসেন মুন্না, লায়ন মোঃ ইব্রাহীম, মোহামমদ
সোলায়মান, ,যুগ্ন সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম ভুট্রো, মঈন
উদ্দিন মঈন, আলমগীর বাদশা,সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী বাবর
আলী, জাহিদুল হাসান,সহ অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ,
সমাজকল্যাণ সম্পাদক দিদারুল আলম, দপ্তর সম্পাদক জাহিদ
তানসির, সহ দপ্তর সম্পাদিকা বিবি ফাতেমা, প্রচার
সম্পাদক রিমন কান্তি মুহুরী সহ প্রচার,মহিলা সম্পাদিকা
তাসলিমা জাহান (রুবি),নির্বাহী সদস্য শিল্পী
বসাক,কোতয়ালী থানার সহ- সভাপতি নবুয়ারা সিদ্দিকী, মোঃ
হেলাল সহ মহানগরের নেতৃবৃন্দ এবংমহানগরের থানা কমিটির
নেতৃবৃন্দ।
ভারতে একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী
মমতা
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
চলতি বছরের শুরুতেও ভারতের তিনটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
ছিলেন নারীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের
পর তা দাঁড়িয়েছে মাত্র এক-এ। এখন দেশটির ক্ষমতাসীন দল
বিজেপি বিরোধী জোটের প্রধান তথা তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান
মমতা ব্যানার্জিই হলেন দেশটির একমাত্র নারী
মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক দিন আগে বিজেপি শাসিত রাজস্থানে
ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর গদি হারাতে
হয় বসুন্ধরা রাজে-কে। এর আগে গত জুন মাসে
জম্মু-কাশ্মীরে জোট সরকারের ওপর থেকে বিজেপি সমর্থন
তুলে নেওয়ায় ইস্তফা দিতে হয় পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি
(পিডিপি) সভাপতি ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা
মুফতিকে। তবে ভারতে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রী
থাকার রেকর্ড করেছেন দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শীলা
দিক্ষীত। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি ক্ষমতায় ছিলেন ৫৪৩৪
দিন। ১৯৯৮ সালে বিধানসভা ভোটের পরই দিল্লির
মুখ্যমন্ত্রী হন শীলা দিক্ষীত। এরপর ২০১৩ সালে আম আমদি
পার্টি (আপ)-এর কাছে হেরে মুখ্যমন্ত্রীর গদি খোয়াতে হয়
শিলা দিক্ষীতকে। এ ব্যাপারে শিলা জানিয়েছেন ‘আমিসহ
প্রত্যেক নারী মুখ্যমন্ত্রীই নির্বাচনে জিতেছি এবং
হেরেছি..আমি খুশি যে এই মুহূর্তে মমতা ব্যানার্জিই
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমাদের সব নারীর হয়ে
প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং আগামী নির্বাচনে তিনি
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।’ মমতা ব্যানার্জি
হলেন পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী যিনি
২০১১ সালে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম
শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা
নির্বাচনেও প্রায় একক দক্ষতায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে
প্রায় বিপর্যস্ত করে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা
দ্বিতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদে
বসেন ভারতীয় রাজনীতির ‘দিদি’ বলে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ।
যদিও মমতার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাঁকে একজন নারীর চেয়ে
রাজনীতিবিদ হিসেবেই বিবেচনা করে থাকে। সিপিআইএম’এর নীতি
নির্ধারণ কমিটির একমাত্র নারী সদস্য বৃন্দা কারাট
অবশ্য বলেছেন, মমতার শাসন পরিচালনার ধরন নারীদের কোনো
সুফল বয়ে আনেনি।
এক ভিসায় ঘুরে আসুন ২৬ দেশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নিশ্চয়ই ‘সেনজেন’ শব্দটি শুনেছেন। সেনজেন বলতে আমরা
ইউরোপ মহাদেশের ৫০টি দেশের মধ্যে ২৬টি দেশকে বুঝি।
২৬টি দেশই স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। তাদের নিজস্ব
পৃথক পৃথক ভাষা, মুদ্রা ও রাজধানী আছে। কিন্তু ভিসা
পলিসির ক্ষেত্রে তারা অভিন্ন নীতি অবলম্বন করে থাকে।
যাকে আমরা সেনজেন ভিসা বলে থাকি।
যদি ২৬টি দেশের কোন একটি দেশের ট্যুরিস্ট বা কনফারেন্স
ভিসা পেয়ে যান, তবে সেনজেনের ২৬ দেশেই ভ্রমণ করতে
পারবেন। সহজ করে বলতে গেলে, যদি আপনার সেনজেন ভিসা থাকে
তবে অন্য বাকি ২৫টি দেশের জন্য কোন ভিসা লাগবে না।
তাছাড়া কোনো ইমিগ্রেশন ও ফিঙ্গার প্রিন্টের পদ্ধতি নেই।
শুধু তা-ই নয়, একটি দেশে প্রবেশ করে সুবিধামতো অন্য
একটি দেশ দিয়ে বাহির হতে পারবেন।
২৬ দেশের নাম হচ্ছে- অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক
রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স,
জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি,
ল্যাটভিয়া, লিয়েসথেন্সটাইন, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ,
মালটা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল,
স্লোভেকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড।
তবে বাংলাদেশে সেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশের মধ্যে মাত্র ৭টি
দেশের অ্যাম্বাসি আছে। ৭টি দেশ হলো- সুইডেন, ফ্রান্স,
ডেনমার্ক, জার্মান, ইতালি, স্পেন ও সুইজারল্যান্ড। আর
১৫টি দেশের অ্যাম্বাসি বাংলাদেশে নেই তবে সুইডেন,
ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মান, ইতালি অ্যাম্বাসির সাথে
যুক্ত হয়ে কাজ করে থাকে। আর হাঙ্গেরি, লিয়েসথেন্সটইন,
লিথুনিয়া ও নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসি বাংলাদেশে নেই।
যে দেশগুলো অন্য দেশের অ্যাম্বাসির মাধ্যমে কাজ করছে-
সুইডেন অ্যাম্বাসি: বেলজিয়াম, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া,
লুক্সেমবার্গ, পোল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও ফিনল্যান্ড।
ফ্রান্স অ্যাম্বাসি: পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া ও চেক
রিপাবলিক।
ডেনমার্ক অ্যাম্বাসি: নরওয়ে।
জার্মান অ্যাম্বাসি: এস্তোনিয়া।
ইতালি অ্যাম্বাসি: গ্রিস, মালটা ও স্লোভাকিয়া।
এইচআইভি
আক্রান্ত কোষ ধংসের দাবি বিজ্ঞানীদের
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্যারিসের ইনস্টিটিউট পাস্তুর’এর বিজ্ঞানীরা বলছেন
এইচআইভি আক্রান্ত কোষ ধংসের মধ্যে দিয়ে সম্ভবত তারা এ
রোগটির অব্যর্থ ওষুধ তৈরি করতে সক্ষম হবেন। সেল
মেটাবোলিজম নামের বৈজ্ঞানিক জার্নালে তাদের প্রকাশিত
এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞানীদের এ সফলতা এইচআইভি
রোগীদের মনে সেরে ওঠার ব্যাপারে আশার সঞ্চার করবে। এখন
পর্যন্ত এইচআইভি রোগের কোনো ওষুধ না থাকলেও চিকিৎসকরা
এ্যান্টিরিট্রোভাইরালসের মাধ্যমে চিকিৎসার চেষ্টা
করছেন। স্টার ইউকে
৯০ দশকে এইচআইভি শনাক্তের পর চিকিৎসকরা এর ইনফেকশন যাতে
ছড়িয়ে না পড়ে সে চেষ্টা করলেও মানবদেহ থেকে এর কোষকে
অপসারণ করতে সক্ষম হননি। ইমিউন সিডিফোর টি কোষ নামে
পরিচিত এ কোষকে ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা ধংস করতে পেরেছেন
বলে প্রথমবারের মত দাবি করছেন। এখন তা এইচআইভি সারিয়ে
তুলতে গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা
হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানীরা যে ভাইরাস প্রয়োগ করেছিলেন তা
মানবশরীরের সবগুলো সিডিফোর টি কোষকে পুরোপুরি
নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। তবে এধরনের কোষের আচরণ ও
বৈশিষ্ট নির্ধারণ করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। এইচিআইভি
কোষগুলোর উচ্চমাত্রার বিপাকীয় কার্যকলাপ ও গ্লুকোজের
পরিমাণ বেশি থাকায় তা এইচআইভি সংক্রামিত হতে সাহায্য
করে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা কোষটির লিম্পোসাইটের
কার্যকলাপকে থামিয়ে দিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধী করতে সক্ষম
হয়েছেন যা অবশেষে এএচআইভি নির্মূল করতে সাহায্য করবে।
ইতালিতে সিটি নির্বাচনে বাংলাদেশির জয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইতালির শিল্প নগরী ব্রেসিয়ার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে
বাংলাদেশি মো. নুরুল হক ডন বসকো এলাকা থেকে কমিশনার
নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কুমিল্লার লালমাইয়ের
নোয়াগাঁওয়ের অধিবাসী। সম্প্রতি ব্রেসিয়ার সিটিতে
স্থানীয় কমিশনার পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মো. নুরুল হক বাংলাদেশ ও ইতালিয়ান নাগরিক হিসেবে
বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিয়োজিত। তিনি বৃহত্তর কুমিল্লা
সমাজ ব্রেসিয়ার সভাপতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও আঞ্চলিক
সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
তিন মেয়ে ও স্ত্রী কোয়েল ভূঁইয়াকে নিয়ে ব্রেসিয়ার ভিয়া
ক্রসিকা এলাকায় বসবাস করছেন নুরুল হক। ইতালি আসার আগে
তিনি বাংলাদেশে আইন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন।
হাসিনাকে অভিনন্দন মোদির
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় অর্জনে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনাকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের ও ভারতের জনগণের
পক্ষ থেকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য শেখ
হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের একজন কর্মকর্তা এ কথা
জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সকালে শেখ
হাসিনাকে ফোন করেন। মোদি আশা করেন, দুই দেশের মধ্যে
সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার যে
অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার করছে, তা আরও জোরদার হবে।
ভবিষ্যতে যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, তাঁর
নেতৃত্বে সংস্কার ও উন্নয়ন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
বৈধ সব রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় কর্মী
পাঠাতে পারবে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে বাংলাদেশি বৈধ সব রিক্রুটিং
এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর যাবে। এছাড়া
কলিং ভিসায় কর্মী নিয়োগের বিষয়েও ইতিবাচক সিন্ধান্ত
গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় অপেক্ষমান মালয়েশিয়া
গমনেচ্ছু কর্মীদের পথ উন্মুক্ত থাকবে।
২৫ সেপ্টেম্বর কুয়ালালামপুরে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে
পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক
কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র নেতৃত্বে ৫
সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল ২৫ সেপ্টেম্বর
মালয়েশিয়ার হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী
কুলাসেগারানের সঙ্গে এক সভায় মিলিত হন। সভায় সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়, জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে বাংলাদেশি বৈধ সব
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো
যাবে।
এদিকে মালয়েশিয়ার শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে গঠিত জয়েন্ট
ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর)
মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের
পক্ষে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন
কুয়ালামাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হাইকমিশনার শহিদুল
ইসলাম।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন জনশক্তি,
কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত
সচিব) সেলিম রেজা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কর্মসংস্থান)
আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন, মন্ত্রীর একান্ত সচিব (যুগ্মসচিব)
আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, মন্ত্রণালয়ের উপসচিব
মোহাম্মদ শাহীন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক
মোশাররফ হোসেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা
সেবা বিভাগের উপসচিব সানজিদা শারমিন। এছাড়াও সভায়
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শ্রম)
সায়েদুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব) উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশিরাই সব কাজ করছে : ড. মাহাথির
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন,
অভিবাসী শ্রমিকদের স্রোত তার দেশের নৃতাত্ত্বিক পরিচয়কে
দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। মালয়েশিয়ায় বহু জাতের মানুষ বাস
করে। কিন্তু এটা খুব বেশি হওয়া উচিত নয়। ২১ ডিসেম্বর
২০১৮ এক নৈশভোজে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বহু জাতিগোষ্ঠীর বসবাসে আমরা
অভ্যস্তও হয়ে উঠেছি। কিন্তু বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত,
মধ্যপ্রাচ্য, ইরান, মধ্য এশিয়ার লোক বেশি হয়ে গেছে
এখানে। আমরা এখন মানুষ দেখলে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।
কারণ, আমরা বুঝতেই পারি না কে মালয়েশিয়ার নাগরিক আর কে
নয়। মালয়েশিয়ানরা যদি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চায়,
তাহলে তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ভালো শিক্ষা নিতে
হবে এবং দেশের জন্য কাজ করতে হবে।’
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকের আধিক্যের কথা উল্লেখ করে
ড. মাহাথির বলেন- তারা এখানে কেন? আমরা কাজ করতে চাই
না। তাই বাংলাদেশিরাই সব কাজ করছে।’
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার লোকজন সাধারণত নোংরা, ঝুঁকিপূর্ণ
এবং কঠিন কাজগুলো করতে চায় না। এ কারণেই কৃষি এবং
নির্মাণ খাত চলে গেছে অভিবাসী শ্রমিকদের কাছে।
এর আগে এক জরিপে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ায় মোট
কর্মসংস্থানের ১৫ শতাংশই বিদেশি কর্মীদের দখলে। ২০১০
সালে মালয়েশিয়ায় বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা যেখানে ছিল ১৭
লাখ, ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২১ লাখে। ২০১৭ সালের
হিসাব বলছে, মালয়েশিয়ায় এখন বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যা ২২
লাখ।
২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ায় অভিবাসী
শ্রমিক হিসেবে প্রথম অবস্থান ফিলিপাইনের, এরপর আছে
নেপাল এবং বাংলাদেশ আছে তৃতীয় অবস্থানে।
পৃথিবীতে মৌমাছি না থাকলে মানব সভ্যতা টিকবে ৪ বছর
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পৃথিবীতে কোনো মৌমাছি না থাকলে মানব সভ্যতা টিকে থাকা
অসম্বব হয়ে উঠবে। সমস্যাটি হলো বিশ্বের ১’শ রকমের ফল
আর ৯০ ভাগ খাদ্য শস্যের পরাগায়ন হয় মৌমাছির সাহায্যে।
মৌমাছি না থাকলে কমে যাবে ফসল কিংবা ফলের উৎপাদন। দেখা
দেবে খাদ্য সংকট। প্রশ্ন হলো পৃথিবী কি সে দিকেই এগিয়ে
যাচ্ছে? কারণ ১ দশক আগেও বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ মৌমাছি
ছিলো, এখন আছে তার মাত্র দুই তৃতীয়াংশ।
বিজ্ঞানরা বলছে পৃথিবী থেকে যদি মৌমাছি হারিয়ে যায়,
তাহলে মানব সভ্যতা টিকবে মাত্র ৪ বছর। তার মানে মৌমাছি
ছাড়া খুব বেশি টিকে থাকার সময় পাবে না মানুষ। কী হবে
যদি সত্যি সত্যি মৌমাছি হারিয়ে যায়?
বিশ্বের ৯০ ভাগ মূল ফসলের পরাগায়ন হয় মৌমাছির মাধ্যমে।
মৌমাছি যদি পরাগায়নে সাহায্য না করে তাহলে বাঁচবে না
ফসল। মানুষের প্রতি ৩ লোকমা খাবারের মাধ্যে ১ লোকমাই
আসে মৌমাছির কারণে। সারা বিশ্বের ৯০ ভাগ আর
যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ ভাগ খাদ্য দ্রব্যের পেছনে রয়েছে
মৌমাছির অবলম্বন। কিন্তু সমস্যা হলো মৌমাছি
মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। গত এক দশকে মৌমাছির এক
তৃতীয়াংশ বিলুপ্ত হয়েছে। আর বিলুপ্তির পথে রয়েছে
ইউরোপের ২৪ ভাগ মৌমাছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন বিলুপ্ত
হচ্ছে মৌমাছি? এর অবশ্য বহু কারণ হয়েছে। যার মধ্যে
উল্লেখযুগ্য বিষয় হলো, কীটনাশন, খড়া, বাসস্থান হারানো,
খাদ্যের অভাব, বায়ু দুষণ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ
আরো অনেক কারণ রয়েছে। এক কথায় সম্পূর্ণটাই হলো মানব
সৃষ্ট কারণ।
বড় বড় কীটনাশক কোম্পানিগুলো, কীটনাশন ও আগাছা নিধনকারী
ওষুধ বানাচ্ছে ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে। যার
মধ্যে রয়েছে নিওনিক্স , যা মৌমাছিদের মেরে ফেলে। অর্থাৎ
কীটনাশকের হাত থেকে ফসলকে রক্ষা করতে নয় বরং ধ্বংশের
পথে ঠেলে দিচ্ছে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিওনিক্স সমৃদ্ধ কীটনাশকের
ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। মৌমাছির ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব
সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করছে। কিন্তু ঐ একই
উপাদান পাওয়া যাচ্ছে বাগানে ব্যবহৃত কীটনাশকেও। তাই
কীটনাশক ক্রয় করার আগে এই উপাদান আছে কী না ক্ষতিয়ে
দেখতে হবে।
মানুষের মধ্যে বিভক্তিতে বিশ্বাস করি না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পাকিস্তানে শিক্ষা ও নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী এবং
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, মানুষের
মধ্যে বিভক্তি করার রীতি বিশ্বাস করি না। ২০১৩ সালে
টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় নিজের
নাম নিয়ে নিয়ে এই মন্তব্য করেছিলেন মালালা। বাবা
জিয়াউদ্দিন ইউসুফজাইয়ের নতুন বইয়ে এই তথ্য প্রকাশ করা
হয়। খবর এনডিটিভি’র
বইটির নাম ‘লেট হার ফ্লাই : অ্যা ফাদারস জার্নি
অ্যান্ড দ্য ফাইট ফর ইক্যুয়ালিটি’। বইটিতে উল্লেখ করা
হয়েছে, ২০১৩ সালে টাইম ম্যাগাজিন মালালার ছবি দিয়ে
প্রচ্ছদ করে। ওই বছর টাইমের র্যাংকিংয়ে মালালা ১৩
নম্বরে ছিলেন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ছিলেন
৫১ নম্বরে। জিয়াউদ্দিন লিখেছেন, মালালা তখন হাসপাতালে
চিকিত্সাধীন ছিল। তাকে নিয়মিত দেখতে যাওয়া লাগতো।
এজন্য আমাদের একজন গাড়ির চালক প্রয়োজন ছিল। শহীদ হোসেন
নামের একজন চালক পেয়েছিলাম। সে আমাদের বন্ধুতে পরিণত
হয়েছিল। একদিন টাইম ম্যাগাজিনের তালিকা সংক্রান্ত একটি
রিপোর্ট দেখালো চালক এবং বললো এটি মালালাকে দেখালে খুব
খুশি হবে। জিয়াউদ্দিন চালকের মোবাইলটি নিয়ে গেলেন এবং
মালালাকে দেখালেন। মালালা ফোনটি নিয়ে রিপোর্টটি পড়ার
পর বিছানায় রেখে দিয়ে বললো- আমি মানুষের মধ্যে এই
ধরনের বিভক্তিতে বিশ্বাস করি না।
Top
শিশু উন্নয়ন ও
অটিজম বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও
এশিয়া অঞ্চলে অটিজম বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ হোসেন শিশু উন্নয়ন ও অটিজম
বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।
২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সকালে শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক
মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগমের
সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিশু
একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ও শিশু
একাডেমির পরিচালক শিশু সাহিত্যিক আনজীর লিটন। মহিলা ও
শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন শিশু উন্নয়ন ও
শিশু সুরক্ষামূলক প্রকল্প এবং কর্মসূচিসমূহের মধ্যে
সমন্বয় ও একটি সমন্বিত গাইড লাইন প্রণয়নের লক্ষ্যে এই
সভার আয়োজন করা হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও
সূচনা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে এই মতবিনিময় সভায় প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সূচনা ফাউন্ডেশন, অটিজম এবং
নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা
কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন।
সচিব নাছিমা বেগম বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর জাতি গঠনে
নিরাপদ মাতৃত্ব অত্যন্ত জরুরি। নিরাপদ মাতৃত্ব ও
শিশুদের ডিজঅ্যাবিলিটি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দেশের
কমিউনিটি ক্লিনিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার স্থাপনে উদ্যোগ
নেয়া হচ্ছে।
Top
একসঙ্গে জেএসডি
পাস করলেন বাবা-ছেলে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খামারমুন্দিয়া গাজেম আলী
দাখিল মাদ্রাসা থেকে একসঙ্গে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট
(জেএসডি) পরীক্ষায় পাস করেছেন বাবা ও ছেলে। বাবার নাম
বাবলুর রহমান আর ছেলে মেহেদী হাসান। তাদের বাড়ি
কালীগঞ্জ উপজেলার খামারমুন্দিয়া গ্রামে।
পাস করার বিষয়ে মেহেদী হাসান (১৩) জানায়, সে জিপিএ-২
দশমিক শূন্য ৬ পেয়েছে। আর তার বাবা বাবলুর রহমান
পেয়েছেন ২ দশমিক ৭২।
মেহেদী হাসান জানায়, তার বাবা বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই
পড়ালেখা করতেন। তারা দুজন বইখাতা ভাগাভাগি করে পড়ালেখা
করেছে। মাঝেমধ্যে বাবা মাদ্রাসায় গেছেন। পরীক্ষায় তার
চেয়ে বাবা বেশি নম্বর পেয়েছেন সবসময়।
এ বিষয়ে বাবলুর রহমান জানান, পারিবারিক কারণে পড়ালেখা
বেশি দূর এগোয়নি। একসময় বিয়ে করেন। কৃষিকাজ করে সংসার
চালান এখন। ক্ষেতখামারে কাজ করার সময় মনে হয় পড়ালেখার
কথা। তাই তিনি ছেলে মেহেদী হাসানের সঙ্গে মাদ্রাসায়
ভর্তি হন।
তিনি জানান, চাকরি করার ইচ্ছায় নয়, জ্ঞানার্জনের জন্যই
পড়ালেখা করছি।
এ ব্যাপারে গাজেম আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. রবিউল
ইসলাম জানান, বাবলুর রহমান যেদিন তার প্রতিষ্ঠানে
প্রথম এসে পড়ালেখার কথা বলেন, সেদিনই তাকে ভর্তি করে
নেন। তার ইচ্ছাশক্তি দেখে অনেক ভালো লেগেছে বলে জানান
সুপার।
ভারতে তিন তালাক
নিষিদ্ধ বিল পাস, তিন বছরের জেল ও জরিমানার বিধান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভারতের লোকসভায় পাস হয়ে গেল সংশোধিত তিন তালাক বিল।
এখন থেকে তিন তালাক উচ্চারণের মাধ্যমে মুসলিম পুরুষরা
স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, তিন
তালাক দেওয়ার চেষ্টা জামিন অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ বলে
গণ্য হবে।
লোকসভায় বিরোধী রাজনীতিবিদদের আপত্তি সত্ত্বেও
বৃহস্পতিবার এ বিলটি পাস হয়ে গেল ভারতে। এতে সমর্থন
জানিয়েছেন ২৪৫ জন সংসদ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১
জন। একপর্যায়ে ভোটাভুটির আগেই অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যান
কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে-র সংসদ সংসদরা।
বিলটি আইনে পরিণত হওয়ায় জামিন-অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধের
তকমা পাবে তিন তালাক প্রথা। অভিযুক্ত স্বামীর শাস্তি
হবে তিন বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা। আর স্ত্রী পাবেন
ভরণপোষণ।
২৭ ডিসেম্বর সকালে লোকসভায় সংশোধিত বিলটি পেশ করা হয়।
একাধিক সংশোধনের দাবি নিয়ে শুরু থেকেই বিলটির বিরোধিতা
করছিল কংগ্রেস এবং এআইএডিএমকে।
তিন তালাক বিল নিয়ে মূলত তিনটি বিষয়ে আপত্তি তোলেন
বিরোধী শিবিরের সংসদ সদস্যরা, যার মধ্যে অন্যতম হল
সাজার মেয়াদ। ওই বিলে তাৎক্ষণিক তালাক দিলে স্বামীর
তিন বছর হাজতবাসের কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের যুক্তি,
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়া, স্ত্রীকে ত্যাগ
করার উদাহরণ নতুন নয়। কিন্তু অন্য কোনো ধর্মে তা নিয়ে
স্বামীর সাজার মেয়াদ ঘোষণা করা নেই। শুধু ইসলামের
ক্ষেত্রে এমন নিয়ম প্রয়োগ বৈষম্যমূলক বলে দাবি তাদের।
আইন জানুন, আইন
মানুন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আপনি আইনে পড়ছেন? চিন্তাও করতে পারবেন না কতটা উপকার
করতে পারেন আপনি মানুষের। দিন দিন আইনে পড়ুয়া মানুষ
বাড়ছে, তবু অনেক সাধারণ মানুষ আইন সম্পর্কে জানে না।
কোনো আইনি ঝামেলায় পড়লেই কেবল আইন জানতে বাধ্য হয় এবং
তাতেও কত যে যন্ত্রণা!
আইন জানা সবার জন্যই খুব বেশি প্রয়োজন। বিশেষ করে
নিজের অধিকার রক্ষায় এবং দেশের সঠিক মূল্যায়নের জায়গাটি
চিহ্নিত করতে আইন জানা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
সরকার তথ্য জানার জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে;
কিন্তু তথ্য জানার ক্ষেত্রে অনেকেই অপারগ। আইনের ছাত্র
বা আইনবিদ ইচ্ছা করলেই সাধারণ মানুষকে আইন জানাতে
পারেন এবং এই অপারগতা থেকে মুক্তি দিতে পারেন। অনেকে
তা করেনও শুনেছি। নিজের দায়বদ্ধতা থেকেও যদি কেউ আইন
ক্যাম্পেইন শুরু করেন, মাসে একদিন হলেও, তা একটি বড়
পরিবর্তন এনে দিতে পারে সমাজে।
দিন যত যাচ্ছে আমরা এগোচ্ছি। এ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও
আইন জানাটা খুব বেশি প্রয়োজন। আইন জানলে তথ্যের
উন্মোচন আরও বেশি হবে। যারা আইনবিদ, তাদের কাছে অনুরোধ
রইল অন্তত নিজ গ্রামের বাড়িতে মাসে একদিন হলেও খুব
সাধারণ আইন ও তথ্য নিয়ে আলোচনা বা ক্যাম্পেইন করুন।
সেখানে আলোচনা করুন পরিবহন আইন নিয়ে, তুলে ধরুন নাগরিক
অধিকারের বিষয়গুলো, বলুন নারীদের অধিকার রক্ষার কথা,
জানিয়ে দিন ভোক্তা অধিকারের বিষয়গুলো, বোঝান জমি নিয়ে
বিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগগুলোর কথা।
এতে করে সাধারণ মানুষ প্রতারণা থেকে বাঁচবে, আইনের
প্রতি তাদের শ্রদ্ধা বাড়বে এবং মানুষ আইন মানতেও
সচেষ্ট হবে। একজন মানুষ বিপদে পড়ে আইন শিখলে আইনকে শুধু
বিপদই মনে হবে এবং ভাববে আইন বুঝি একটা ফাঁদ। আর যদি
কাউকে উৎসাহ দিয়ে আইন শেখানো যায়, তবে আইন মানতে তিনি
এমনিই সচেষ্ট হবেন। নতুন আইনজীবী ও আইনবিদ যারাই
রয়েছেন, তাদের প্রতি এ কাজটিতে সামান্য সময় দেয়ার
অনুরোধ রইল এবং তাতে আইনের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল একটি
জাতিতে পরিণত হতে পারব আমরা।
সরকারও উদ্যোগ নিতে পারে এ বিষয়ে। আইন মন্ত্রণালয় চালু
করতে পারে একটি নিয়মও। যারা আইনে পড়াশোনা করছেন, তাদের
পড়াশোনার শেষ সময়ে ইন্টার্নিতে এমন ক্যাম্পেইন করার
বিষয়ে বাধ্যবাধকতাও আনা যেতে পারে। সাধারণ আইনগুলো
মানুষ জানলে দুর্নীতি কমবে এবং মানুষ আরও বেশি
স্বচ্ছতার সঙ্গে সেবা পাবে বলে আশা করা যায়। আশা করি,
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যপারে ব্যবস্থা নেবে এবং
ব্যক্তি পর্যায় থেকেও অনেকে এগিয়ে আসবেন।
ফল প্রত্যাখ্যান, নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃভোট
দাবি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল
হোসেন ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নির্বাচনে নজিরবিহীন কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিলের
দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। পাশাপাশি
নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের
দাবিও জানান তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রোববার রাতে
বেইলী রোডের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি
জানান। ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে ভোট
যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না, এটা আরও
একবার প্রমাণিত হল। এ অবস্থায় দলীয় সরকার বাদ দিয়ে
নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট
নিশ্চিত করতে হবে। এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন
নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগ এই দাবি না মানলে তাদের
দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।’
ড. কামাল হোসেন আরও বলেন, দেশের প্রায় সব আসন থেকেই
একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছিল। এ পর্যন্ত আমাদের
শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছে। এ অবস্থায় আমরা
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই
প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক। এই নির্বাচনের কথিত
ফলাফল আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং সেই সঙ্গে নির্দলীয়
সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি। তিনি বলেন, এই
নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। সবখানে জালিয়াতির মাধ্যমে
ভোট হয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে
যোগ দিয়েছিল এবং এই আন্দোলনও চলবে।
যুক্তরাজ্যের গ্রামীণ ফাউন্ডেশন দেউলিয়া
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত
গ্রামীণ ব্যাংকের পদ্ধতি অনুসরণ করে ২০১২ সালে
যুক্তরাজ্যে গ্রামীণ ফাউন্ডেশন স্কটল্যান্ড নামে একটি
প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। বিবিসির সর্বশেষ খবর হলো এই
প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া
হয়ে পড়ায় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার আবেদন করেছেন পরিচালকরা।
এই ফাউন্ডেশনেরও ছয়জন পরিচালকের একজন ছিলেন অধ্যাপক
ইউনূস, যেটি যুক্তরাজ্যের গ্রামীণ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে
আসছিল।
যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডে অনগ্রসর ব্যক্তিদের ক্ষুদ্র
ঋণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক সংকটের শুরু হয় যখন এর
বেশ কয়েকজন গ্রাহক তাঁদের বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হন।
প্রতিষ্ঠানটিতে একজন আর্থিক কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে,
যিনি এখন সেটির সম্পত্তি বিক্রি করে যতটা সম্ভব দেনার
বন্দোবস্ত করবেন। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ছিল,
যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের
আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা, প্রাথমিকভাবে যা পশ্চিম
স্কটল্যান্ড থেকে শুরু করা হয়।
কর্মকাণ্ড শুরু করার পর প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার মানুষের
মধ্যে ঋণ বিতরণ করে। কিন্তু অনেক ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ
না করায় প্রতিষ্ঠানটি সংকটের মধ্যে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির
সম্পত্তি ও দেনা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়া ডানকান
এলএলপির কর্মকর্তা ব্রায়ান মিলনে বলেছেন,
‘প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
গ্রামীণ স্কটল্যান্ড ফাউন্ডেশন এখন আর তাদের ব্যবসা
চালাতে পারবে না, যেহেতু তাদের ঋণের পরিমাণ অপূরণীয়
পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ঋণগ্রহীতাদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির প্রায়
তিন লাখ পাউন্ডের ঋণ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ধসের কারণ
হচ্ছে যে অনেক ঋণগ্রহীতা তাঁদের বকেয়া পরিশোধ না করার
কারণে সেটি আর্থিক অবস্থার ওপর বড় প্রভাব পড়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে পড়ায় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার
আবেদন করেছেন পরিচালকরা।’
চিকিৎসকদের ডিগ্রি
বিতর্ক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চিকিৎসকদের উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে চলা মতবিরোধের সুরাহা
দীর্ঘ ৮ বছরেও না হওয়া দুর্ভাগ্যজনকই বলতে হবে।
এমবিবিএস শেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার জন্য বিশ্বের
অন্যান্য দেশে যেখানে এমডি, এমএস, এমফিল ইত্যাদি বেশি
গ্রহণযোগ্য, সেখানে আমাদের দেশে এফসিপিএস ও এমসিপিএস
ডিগ্রিকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ ও
বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আমরা মনে করি, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিকিৎসকদের
উৎকর্ষ সাধন এবং রোগীদের বেশি কাজে আসবে যে ডিগ্রি,
তাকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত বিষয়টির সুরাহা করা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে চিকিৎসায় উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে
মতবিরোধের সমন্বয় করার নির্দেশ দেয়ার পর এখনও বিষয়টি
ঝুলে থাকা দুঃখজনক।
এটা সত্য, এফসিপিএস ও এমসিপিএস করে তারপর এমডি, এমএস
ইত্যাদি ডিগ্রি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে অনেক সময় চলে
যাবে একজন চিকিৎসকের। তাছাড়া এফসিপিএস ও এমসিপিএস
ডিগ্রি নয়, মূলত ফেলোশিপ। তাই এমডি-এমএসের আগে এগুলো
বাধ্যতামূলক করে দেয়া যেমন যৌক্তিক নয়, তেমনি যুগ যুগ
ধরে ডিগ্রি দুটির সেবাদাতা-গ্রহীতাদেরও উপেক্ষা করা
গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এক্ষেত্রে দেশে চিকিৎসায় উচ্চ ডিগ্রি দেয়া বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং
বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের মধ্যে
আলোচনা সাপেক্ষে এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরসহ
সরকারের শীর্ষ মহলের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য খাতের উচ্চ
ডিগ্রি নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধের সমাধান দ্রুত বের করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, এমন একটা সময় আমাদের চিকিৎসকদের ডিগ্রি
নিয়ে মতবিরোধ চলছে, যখন স্বল্প খরচ ও সহজে যাতায়াতের
সুযোগে আমাদের রোগীদের অনেকেই বিদেশ, বিশেষত ভারতমুখী।
মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় অন্যান্য দেশেও চিকিৎসার
জন্য যাচ্ছেন রোগীরা। এর পেছনের কারণ দেশের
চিকিৎসাসেবার প্রতি অনাস্থা বৈ কিছু নয়।
এ অবস্থায় যদি চিকিৎসকদের ডিগ্রি নিয়ে তৈরি মতবিরোধ
জটিল আকার ধারণ করে, তবে দেশের চিকিৎসা খাতে আরও অনীহা
তৈরির পাশাপাশি বহির্মুখী মনোভাব প্রকট আকার ধারণ করবে।
এফসিপিএস-এমসিপিএস ও এমডি-এমএসের পক্ষে-বিপক্ষের সবাইকে
বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।
সর্বোপরি, চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর কল্যাণই যে আসল এটি
বিবেচনায় নিয়ে যে ডিগ্রি চিকিৎসকদের বেশি দক্ষ করে এবং
বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সমান পর্যায়ে
নিয়ে যায়, সেটির পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।
৬৫ লাখ
বাংলাদেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৩ হাজার ৩’শ কোটি ডলার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
২০০৯ সাল থেকে সাড়ে ৬ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিদেশে যাওয়ার
পর গত নভেম্বর পর্যন্ত রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৩৩.৫
বিলিয়ন ডলার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
মন্ত্রণালয় বলছে গত বছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে ১০
লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজে গিয়েছে। বর্তমানে ১৬৯টি
দেশে বাংলাদেশিরা কাজ করছে। এর আগের সরকারের আমলে ৬৯টি
দেশে কাজ করত বাংলাদেশি শ্রমিকরা। বাসস
বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারের খোঁজ ও সে অনুযায়ী
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি
পেয়েছে। জেলা পর্যায়ে এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে
অনেকেই সহজে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর দক্ষ লোকবল হিসেবে
বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে চলতি
বছরের প্রথম ৫ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৬.২৯ বিলিয়ন ডলার।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ১৪.৯৮ বিলিয়ন,
১৬-১৭ অর্থবছরে ১২.৭৭, ১৫-১৬ অর্থবছরে ১৪.৯৩, ১৪-১৫
অর্থবছরে ১৫.৩২, ১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪.২২, ১২-১৩ অর্থবছরে
১৪.৪৬, ১১-১২ অর্থবছরে ১২.৮৪, ১০-১১ অর্থবছরে ১১.৬৫,
৯-১০ অর্থবছরে ১০.৯৯ ও ৮-৯ অর্থবছরে ৯.৬৯ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট
বলছে অভিবাসী খরচ ১০ ভাগ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, সরকারের
বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কারণে রেমিটেন্স প্রবাহের গতি
বেড়েছে। এছাড়া বিদেশি ভাষা শিখে আগের চেয়ে অনেক সহজে
বাংলাদেশিরা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।
কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ায় মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবে অনেক
অবৈধ বাংলাদেশি বৈধ হবার সুযোগ পেয়েছেন। এর পাশাপাশি
হংকং, জর্ডান, বাহরাইন ও মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে
বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ওসব দেশে
কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটেছে।
নাগরিকত্বের
জন্য হ্যান্ডশেক বাধ্যতামূলক আইন পাশ করলো ডেনমার্ক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পেতে হলে সংশ্লিষ্ট পুরুষ অথবা
নারী কর্মকর্তার সাথে করমর্দন বাধ্যতামূলক করা নিয়ে
আইন পাশ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টের উগ্র
ডানপন্থি এবং রক্ষণশীল লিবারেল জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ
ভোটের ভিত্তিতে এ আইন পাশ হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে
এ আইন কার্যকর হবে।
তবে দেশটির অনেক পৌরমেয়র এ আইনের বিরোধিতা করে
জানিয়েছেন, অনাবশ্যক একটি বিষয়কে নাগরিকত্বের জন্য
বাধ্যতামূলক করা অহেতুক।
দেশটির আইনজ্ঞরা বলেছেন, করমর্দন আইন হিজাব
নিষেধাজ্ঞার মতোই। আইনটি মুসলমানদের বিরুদ্ধেই করা
হয়েছে। যারা ধর্মীয় বিশ^াস অনুযায়ী বিপরীত লিঙ্গের সাথে
করমর্দন করতে অপছন্দ করেন। অন্যদিকে দেশটির
রাজনীতিবিদরা বলেছেন, করমর্দন দেশের মৌলিক মূলনীতির
অংশ হিসেবেই এ আইন করা হয়েছে।
গত আগষ্টে হিজাব নিষেধাজ্ঞা আইন কার্যকর করে ডেনমার্ক।
এরফলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেন দেশটির মুসলিম নারীরা।
উদ্ব্যেগ জানায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোও।
Top
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রোগীর তথ্য
অধিকার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রোগীর তথ্য অধিকার অন্য যে কোনো অধিকারের মতো উন্নত
বিশ্বে সর্বজনীন রূপ লাভ করেছে। রোগীর তথ্য অধিকার
নিশ্চিত করার জন্য নৈতিক সুশাসন কাঠামোর অংশ হিসেবে
উন্নত দেশগুলোয় প্রয়োজনীয় আইনও করা হয়েছে। আদালতও
রোগীর এ অধিকার সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছে। যেমন, ১৯৯৭ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ম্যাসাসিউট একটি আইন প্রণয়ন
করে। সে আইন চিকিৎসককে নির্দেশ প্রদান করে সংশ্লিষ্ট
চিকিৎসকের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, কী কী সম্মান ও
পুরস্কার তিনি এ পর্যন্ত অর্জন করেছেন, তিনি কোন ধরনের
বীমা পলিসি নিয়েছেন ইত্যাদি বিষয় রোগীদের কাছে প্রকাশ
করতে হবে, যাতে চিকিৎসক নির্বাচনে রোগী বা তার
প্রতিনিধি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
রোগীকে রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, তাকেই তার জীবনের
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে তোলা, রোগীর
আত্মসম্মানবোধকে স্বীকার করা বিষয়গুলোর নৈতিক ও
প্রয়োগিক মূল্য আছে। রোগীর স্বাধীনতা ও তার প্রকৃত
ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে বা জানতে চিকিৎসক ও সমাজ রোগীর
জানার অধিকারকে নিশ্চিত করতে চেয়েছে। এ দৃষ্টিকোণটি
ইমানুয়েল কান্টের কর্তব্য পালন নীতি ও সদিচ্ছার নীতি
এবং অ্যারিস্টটলের সদ্গুণ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে
বিবেচিত হয়েছে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নে।
রোগীর তথ্য অধিকার অস্ট্রেলিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে ওঠে যখন জানা যায়, এক ভারতবংশীয় আমেরিকান ডাক্তার
অপারেশন করে অনেক রোগী মেরে ফেলেছেন। ওই ডাক্তারের
কর্মকাণ্ডকে নৈতিক অনুমোদন সমাজ দেয়নি। বাংলাদেশের
সার্জনদের সম্পর্কে আমরা ভয়াবহ সংবাদ পত্রিকার পাতায়
দেখতে পাই। সম্প্রতি জানা গেছে, নামি এক হাসপাতালের
একজন সার্জন রোগীর দুটো কিডনি ফেলে দিয়েছেন। ওইসব
সংবাদ রোগীদের বিদেশে যেতে অনুপ্রাণিত করে। এসব বাস্তব
সমস্যা থেকে উন্নত দেশগুলো নজর দেয় রোগীর তথ্য অধিকার
পর্যালোচনায়। আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রোগীর তথ্য অধিকার
নিশ্চিত করতে শল্য চিকিৎসাবিদদের রিপোর্ট কার্ড
প্রবর্তনের বিষয়টি নৈতিক বিবেচনায় গুরুত্ব পায়। গবেষকরা
মনে করেন, সার্জনদের রিপোর্ট কার্ড রোগীর তথ্য অধিকার
সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ পরিপ্রেক্ষিতে
আমাদের বিবেচ্য বিষয় বাংলাদেশের সার্জনদের জন্য এমন
একটি পদ্ধতি প্রবর্তন করা যায় কিনা।
জনস্বার্থে ফিটনেসবিহীন যানবাহন নিষিদ্ধ করুন
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে।
ছোটদের বড় আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হয়েছে
বলে মনে হয় না। যানবাহনের মালিক, চালক কারো আইনের প্রতি
কোনো শ্রদ্ধা আছে বলেও মনে হয় না। আন্দোলনের পরও কমেনি
সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরেনি। অদক্ষ চালকের হাতে
তুলে দেওয়া হচ্ছে যানবাহন। আইনের তোয়াক্কা না করে
সড়ক-মহাসড়কে উঠে আসছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন।
লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে আইনানুগ
ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এর ফল যে কী হতে পারে, তা প্রতিদিনের সংবাদপত্রের
পাতায় দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। গত
বৃহস্পতিবার বাস ও থ্রি হুইলার সংঘর্ষে ১১ জন নিহত
হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিন জেলায় নিহত আরো ছয়জন।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, শুধু আন্তরিকতা নেই বলেই সড়ক
নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। সরকারি হিসাব মতে, দেশে
৩২ লাখ গাড়ির সরকারি নিবন্ধন থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স
আছে ২৫ লাখের। অর্থাৎ বাকি যানবাহন তুলে দেওয়া হয়েছে
লাইসেন্সবিহীন চালকদের হাতে। নিয়ম অনুযায়ী চালকদের
প্রথমে হালকা গাড়ির লাইসেন্স নিতে হয়। এর তিন বছর পর
মাঝারি গাড়ির লাইসেন্স পাওয়া যায়। ভারী গাড়ির লাইসেন্স
নিতে আরো তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। এরপর যে চালক বাস
চালাতে চায়, তাকে পিএসভি নামে ভিন্ন আরেকটি লাইসেন্স
নিতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চালকরা
এত দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে চায় না। হালকা বা মাঝারি গাড়ি
চালানোর লাইসেন্স নিয়েই অনেকে বাস চালাচ্ছে। এর বাইরে
আছে নিবন্ধনহীন স্বল্পগতির যানবাহন। রাজধানীর বিভিন্ন
এলাকাসহ সড়ক-মহাসড়কে চলছে তিন চাকার স্বল্পগতির
যানবাহন। গত বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের হরিদাসপুরে
যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে থ্রি হুইলারের এই সংঘর্ষ হয়েছে।
দেশে মানুষ বাড়ছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এক
প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যানবাহন চলাচল বেড়েছে।
নতুন নতুন রুট চালু হচ্ছে। ফলে যানবাহনের সংখ্যাও
বেড়েছে। ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিকশা,
নসিমন-করিমন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি
মহাসড়কে চার লেন চালু হয়েছে, স্থাপন করা হয়েছে সড়ক
বিভাজক। নির্মিত হয়েছে আন্ডারপাস-ওভারপাস। মাঝেমধ্যে
ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়।
সড়ক-মহাসড়কের আধুনিকায়নও হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও
সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বিআরটিএ সড়ক
নিরাপত্তা ইউনিট গঠন করেছে। সড়ক নিরাপত্তায় ব্যাপক
প্রচার-প্রচারণা, রোড শো করেও নিশ্চিত করা যায়নি সড়ক
নিরাপত্তা। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ২০১৬ সালের
তুলনায় ২০১৭ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা
বেড়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে যানবাহনের মালিক
ও চালকদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইন মেনে
চললে দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।
মালয়েশিয়ায় মিনি বাংলাদেশ
‘বাংলা পাসার’
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ায় রয়েছে আরেক ‘মিনি বাংলাদেশ’। মালয়েশিয়া জুড়ে
বাংলাদেশিরা থাকলেও দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে
অদূরে গড়ে উঠেছে ‘বাংলা পাসার’। মালয় ভাষায় পাসার অর্থ
বাজার। বাংলাদেশিরা এই বাজার গড়ে তুলেছেন বলে এই
বাজারের নামকরণ করা হয়েছে ‘বাংলা পাসার’।
স্থানীয় প্রবাসীরা জানিয়েছেন, দেশটির সেলাঙ্গ জেলার
চুইঙ্গা বুলু থানায় এ বাজার গড়ে উঠেছে। বাঙালিরা এ
বাজার গড়ে তুললেও এখানে শুধু বাংলাদেশিরা ব্যবসা করেন
না, মালয়, থাই, চায়নিজসহ অন্য দেশের ব্যবসায়ীরাও
রয়েছেন। ক্রেতাও শুধু বাঙালি নয়, ভিন্ন দেশেরও রয়েছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, ১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট
দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ যখন
অবৈধ বিদেশিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বৈধ করার সুযোগ
দেন, তখন থেকেই ওই এলাকায় বসবাস শুরু করেন বাংলাদেশিরা।
ফেনী জেলার প্রবাসী মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ১৯৯৬ সালের
শেষের দিকে বাজারটি গড়ে ওঠে। ৯৬ সালে যখন এই এলাকায়
আমরা আসি, তখন শুধু জঙ্গল আর কিছু খামার ছিল। মানুষের
বসতি ছিল না। এখন এই এলাকায় প্রচুর শিল্প কারখানা গড়ে
উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে বাজারটি গড়ে
তোলার পর থেকে কিছু বাঙালি পণ্য-সামগ্রী নিয়ে রাস্তায়
বসে বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন বাজারটি অনেক বড় হয়ে গেছে।
বাংলা পাসার বাজারে খাবারের দোকানে ক্রেতা। পাসারে গিয়ে
দেখা যায়, বাংলাদেশিরা ইমিটেশন সামগ্রীসহ বিভিন্ন
পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। কেউ আলু, সবজি ও মাছ বিক্রি
করছেন। সেই বাজারে মালয়েশিয়ান হরেক রকমের খাবার নিয়ে
বসেছেন হু মাও সি। তিনি বলেন, বাজারটি বাংলাদেশিরা গড়ে
তুললেও এখানে সব দেশের লোকজনই আসেন।
প্রবাসীরা জানান, প্রতিদিন বাজার বসলেও প্রতি রোববার
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সেদিন সব বাংলাদেশিরা বাজারে
আসেন।
প্রবাসী ব্যবসায়ী আব্বাস আলী বলেন, ৩ মাস ধরে বাজারে
ব্যবসা করছি। বেচাকেনা ভালো। একই কথা জানালেন আরেক
প্রবাসী মো. মোমেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি রোববার আমরা এখানে মিলিত
হই। বাজারটি বাংলা নামে হওয়ায় প্রবাসের মাটিতে ভালোই
লাগে।
নিউইয়র্ক পুলিশের
প্রথম বাংলাদেশি নারী সার্জেন্ট কুমিল্লার মেয়ে
ফজিলাতুন নিসা!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ফজিলাতুন নিসা। ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে কুমিল্লার
এই মেয়ে ডিভি (ডাইভারসিটি ভিসা) লটারির সুযোগ পেয়ে পাড়ি
জমান যুক্তরাষ্ট্রে। নিউইয়র্ক শহরের অচেনা অলিতে-গলিতে
প্রথমে কাজ জোটে একটি সুপার মার্কেটে।
২০০৫ সালে পরিবারের সংকটময় সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি
দিলেও সুপারশপের কাজে নিজেকে বেধে রাখতে চাননি তিনি।
স্বপ্নটা বড় থাকায় দূর পরবাসে গিয়ে পড়াশোনাটা চালিয়ে
যাওয়া ছিল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাই ভর্তি হন স্থানীয়
এক কলেজে।
আর কলেজে পড়ার সময়ই জানতে পারেন, অভিবাসী হয়েও
নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কাজ করা যায়। শুরু হলো স্বপ্নের
প্রতীক্ষা। ২০১২ সালে সে সুযোগ পেয়ে এমুহূর্ত দেরি
করেননি ফজিলাতুন নিসা। যোগ দেন এনওয়াইপিডিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে এ ধরনের নতুন পেশায় যোগ
দেওয়ার গল্পটা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাসলিমা
আখতার নামের আরেক বাংলাদেশি নারী নিউইয়র্কের ইউনিফর্ম
পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে বাংলাদেশি অভিবাসী কোনো
নারী চ্যালেঞ্জিং এ কাজে যোগ দেননি। আমরাই ছিলাম পুলিশে
প্রথম বাংলাদেশি নারী।’
পুলিশে নিয়োগ পাওয়ার পর দুই বছর প্যাট্রোল অফিসার
হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফজিলাতুন নিসা। তিন ভাষায়
দক্ষতা থাকার সুবাদে বিশেষ সুযোগ পান পুলিশ বিভাগে।
ফজিলাতুন নিসাকে যুক্ত করা হয় এনওয়াইপিডির কাউন্টার
ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে।
২০১৭ সালে পদোন্নতি পান সার্জেন্ট পদে। সেই থেকে
নিউইয়র্ক পুলিশের প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি নারী
সার্জেন্ট হলেন ফজিলাতুন নিসা। বাংলাদেশের গর্বিত এই
নারী যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গায় নিজের অবস্থান তৈরি
করাটাকে একটা চ্যালেঞ্জ মনে করেন তিনি।
বেকারত্ব
কমাতে দরকার শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার
বেকারত্ব কমাতে দরকার শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর পাওয়া আর না পাওয়ার হিসাব চুকাতে
গেলে অনেক কিছুরই গলদ চোখে পড়বে। হয়তো বা যতটুকু
উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল ততটুকু হয়নি। তবে আশাহত হওয়াটাও
ঠিক হবে না।
অতীতের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। হেনরি
কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা থেকে সেই কবেই আমরা
বেরিয়ে এসেছি। তারপর বাংলাদেশ হেঁটে এসেছে অনেকটা পথ।
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ এখন সমীহ জাগানিয়া দেশ। জিডিপি
প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক রেমিটেন্স অর্জন কিংবা মাথাপিছু আয়ে
বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নয়নশীল দেশকে টেক্কা দিতে
প্রস্তুত। সম্প্রতি বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এতসব উন্নয়ন আশা জাগায়। তবে ওই যে প্রথমে বলেছিলাম-
এতসব উন্নয়নের মাঝেও কিছুটা গলদ চোখে পড়বে। দেশের
অন্যতম প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখনও টিকে আছে;
তবে কিছুটা খেই হারিয়েছে বৈকি! সময়ের পরিক্রমায় দেশে
আরও নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছে। হয়তো বা
উচ্চশিক্ষাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্যই বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের জন্ম হচ্ছে। উদ্দেশ্য এমনটা হয়ে থাকলে তা
নির্দ্বিধায় মহৎ বলা চলে।
এবার আসল কথায় আসা যাক। দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৫। স্বাধীনতা-উত্তর দেশে হু
হু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে এবং এখনও এই ধারা
চলমান। আমরা শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে যতটা না ভাবছি তার
চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ানোর
ওপর। শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে দ্বিমত নেই;
কারোরই দ্বিমত থাকা উচিত নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়
কেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা শুধু শিক্ষিতের সংখ্যাই
বাড়াচ্ছে। বাড়াচ্ছে উচ্চশিক্ষার হার। কিন্তু সেই সঙ্গে
বাড়ছে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও।
আমরা যারা একটু-আধটু সংবাদপত্র পড়ি, তারা মোটামুটি
অবগত আছি এ বিষয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে,
দেশে বেকারের সংখ্যা ৪ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ দেশের বৃহৎ
জনগোষ্ঠী চাকরিবঞ্চিত অবস্থায় রয়েছে। আমাদের শুধু
বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসার সময়
হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করতে পারে নিঃসন্দেহে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত
হয়ে সহজেই কোনো একটি নির্দিষ্ট পেশায় ঢুকে পড়ার ভালো
সুযোগ রয়েছে। নয়তো অচিরেই এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশের
জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। উন্নয়নের পথে ধাবিত হওয়া
অর্থনীতি খেই হারাবে। বেকার জনগোষ্ঠী হতাশায় নিমজ্জিত
হবে। তাদের হাতেই সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। গবেষণা
তাই-ই বলে; খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার তাগিদে এই বেকাররা
বিভিন্ন অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়বে। মাদকাসক্তি, টাকার
বিনিময়ে খুন-খারাবি কিংবা বিভিন্ন নীতিবিবর্জিত কাজ
বেড়ে যাবে।
তাই এসব নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। নয়তো বা অদূর ভবিষ্যতে
আমাদেরকেই এ দায় নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক
শিক্ষাকে গুণগত মানে উন্নীত করতে হবে। কারিগরি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বেকারদের
বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির উপযোগী করতে হবে।
তবেই দেশে বেকারত্বের বোঝা অনেকাংশে লাঘব হবে।।
যে দেশটির কথা কেউ শোনেনি
লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের অপর পাড়ের শহরের নাম
‘উজুপিস’। ছোট্ট শহরটি নিয়েই গঠিত হয়েছে পৃথিবীর
অন্যতম এক খুদে দেশ, যে দেশের কথা কেউ জানে না।
গণতান্ত্রিক উজুপিসের জন্য অবশ্য রক্তক্ষয়ী কোনো
যুদ্ধের প্রয়োজন হয়নি। একদিন হঠাত্ করে শহরের
বাসিন্দারা ঘোষণা দিয়ে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র গঠন করে বসে।
লিথুনিয়ার একদল শিল্পমনা মানুষ মিলে স্রেফ মজা করতে
করতে গণতান্ত্রিক উজুপিসের ঘোষণা দেয়। সময়ের ব্যবধানে
এই দেশটির রয়েছে নিজস্ব সরকার ব্যবস্থা, প্রেসিডেন্ট,
সংবিধান, এমনকি নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থাও। মজার বিষয়,
এক বর্গ কিলোমিটারের চেয়ে ছোট আয়তনের এই উজুপিসের রয়েছে
নিজস্ব নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীও। নৌবাহিনীর সদস্যরা
মাত্র তিন থেকে চারটি নৌকায় করে দেশের চারদিকে পাহারা
দিয়ে বেড়ায়। আর সেনাবাহিনীতে রয়েছে মোটের ওপর ১০ জনের
একটি দল যদিও এই সেনাবাহিনী কখনো কারো বিরুদ্ধে
যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় না। উল্টো দেশটির জনসাধারণের
শান্তিপ্রিয় মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে উজুপিসের সামরিক
বাহিনীর মাধ্যমে।
লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াস আর উজুপিসের মধ্যে রয়েছে
এক নদী। সেই নদী পাড়ি দিলেই উজুপিস। এই দেশটিতে পা দিলে
পর্যটকদের চোখে পড়বে ‘উজুপিস জলপরীর ভাস্কর্য’। ২০০২
সালে দেশটির বিখ্যাত ভাস্কর রোমাস ভিলকাউসকাসের নকশায়
তৈরি হয় রৌপ্যের জলপরীটি। এটি যে কোনো পর্যটকের মন জয়
করে নেবে অনায়াসেই। ঐতিহ্যগতভাবে ভাস্কর্যের প্রতি
বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে লিথুনিয়াবাসীর। লিথুনিয়ার প্রায়
প্রত্যেকটি শহরে রয়েছে নানা ধরনের ভাস্কর্য। ১৯৯০ সালে
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে পর্যন্ত সেখানকার
ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে সোভিয়েত স্থাপত্যের নিদর্শনের
বহিঃপ্রকাশ ঘটত। ১৯৯৫ সালের পর থেকে সোভিয়েত আমলের
অনেক ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায়
একদল শিল্পমনা মানুষ উজুপিসের একটি ভাস্কর্য সরিয়ে
সেখানে বসিয়ে দেয় মার্কিন পপ সম্রাট ফ্রাঙ্ক জাপ্পা’র
একটি মূর্তি। এরও দুই বছর পর ১৯৯৭ সালের ১ এপ্রিল আরও
সাহসী এক পদক্ষেপ নেয় তারা। লিথুনিয়া থেকে নিজেদের
স্বাধীনতা ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক উজুপিস গঠন করে তারা।
যদিও আন্তর্জাতিকভাবে কোনো স্বীকৃতি মেলেনি উজুপিসের।
লিথুনিয়া সরকারও এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বরং রাজধানী
ভিলিনিয়াস এবং লিথুনিয়ার কাছে এটি রীতিমতো গর্বের বিষয়।
দেশটির প্রজাতন্ত্র দিবস ১ এপ্রিল। প্রতি বছর এই দিনে
বিশেষভাবে পালন করে দেশের মানুষ। লিথুনিয়া কিংবা অন্য
যে কোনো দেশের পর্যটকদের উজুপিসে প্রবেশের জন্য কোনো
ভিসা-পাসপোর্টের প্রয়োজন না হলেও প্রজাতন্ত্র দিবসের
বেলায় নিয়মটা একটু বদলে যায়। এই দিনে উজুপিসে প্রবেশ
করতে হলে সঙ্গে থাকতে হবে পাসপোর্ট। দেশটির
প্রবেশদ্বারে এই পাসপোর্টে অনুমোদন দিলেই কেবল এদিন
উজুপিসে প্রবেশ করার অনুমতি মিলবে।
উজুপিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস চেপাইটিস একাধারে
ক্ষুদ্র জাতি-রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাতা জনকও। উজুপিসের
গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনের গল্প
ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দার্শনিক এরিস্টটলের দর্শন
অনুযায়ী মহত্ রাষ্ট্র হতে হলে সেখানে সীমিত সংখ্যক
জনগণ থাকতে হবে। তার দর্শনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তৈরি
করা হয়েছে ক্ষুদ্র জাতি-রাষ্ট্র, যেখানে মোটের ওপর
মাত্র ৫ হাজার মানুষের বাস। এখানে সবাই সবাইকে চেনে।
সুতরাং কারো পক্ষে কাউকে ঠকানো কিংবা ঝামেলা করার কোনো
সুযোগ নেই।
প্রবীণরাও মানবসম্পদ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জীবনের বসন্ত পেরিয়ে গেলে নেমে আসে প্রবীণকাল। একসময়
যে মানুষটি সংসারের হাল ধরেছিলেন, যার ওপর নির্ভরশীল
ছিল সবাই, যিনি ছিলেন পরিবারের সর্বেসর্বা, সময়ের
ব্যবধানে তিনি হয়ে পড়েন কর্মহীন অক্ষম একজন মানুষ।
তার শারীরিক শক্তি কমে যায়। দুর্বল হয়ে পড়েন। লাঠিতে
ভর দিয়ে চলতে হয়। বার্ধক্যজনিত নানা অসুখ দেখা দেয়।
একসময়ের টগবগে তাজা তরুণ জীবনের অন্তিম বেলাভূমে এসে
অসহায় হয়ে পড়েন। চলাফেরা, ওঠাবসা, খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা-
সব ক্ষেত্রে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
অনেকে প্রবীণদের গুরুত্ব দেয় না। এড়িয়ে চলে। সংসারের
বোঝা মনে করে। অবহেলা করে। খোঁজখবর নেয় না। ভরণপোষণ,
সেবাযতœ ও চিকিৎসা করে না। কর্কশ ব্যবহার ও বিদ্রƒপ করে।
আবার অনেকে প্রতারণা করে প্রবীণের শেষ সম্বলটুকু কেড়ে
নেয়। ফলে প্রবীণ ব্যক্তি হয়ে পড়ে সহায়-সম্বলহীন। তার
দীর্ঘশ্বাস বেড়ে যায়।
শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনের
কারণে এবং সমাজ ও পরিবারে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়,
দারিদ্র্য, হীনমন্যতা ও পারিবারিক ভাঙনে প্রবীণরা
বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
পারিবারিক অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণে বার্ধক্যের অসহায়ত্ব
সঙ্গে নিয়ে প্রবীণকে যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে অথবা তাকে
ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে হয়।
আমাদের মনে রাখতে হবে- এ সমাজ, সংসার ও দেশ প্রবীণদের
কাছে কৃতজ্ঞ। যৌবনে মেধা, শ্রম, ত্যাগ ও অর্থ দিয়ে এই
প্রবীণ ব্যক্তিরা নানা ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন।
এখনও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হলে তারা তাদের বুদ্ধি,
পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডে সহায়তা করতে
পারেন এবং সঠিক ও সুন্দর পথ দেখাতে পারেন। তাই বলা যায়,
প্রবীণরাও আমাদের মানবসম্পদ।
প্রবীণদের প্রতি আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব রয়েছে। তাদের মূল্যায়ন করা উচিত।
আমাদের প্রতি তাদের হক বা অধিকার আছে। তাদের অধিকার
থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। সমাজ বা রাষ্ট্রে বিভিন্ন
সাংবিধানিক অধিকার যেমন- নারী অধিকার, শিশু অধিকার,
শ্রম অধিকার ইত্যাদি অধিকারের মতো প্রবীণ অধিকারও থাকা
দরকার। প্রবীণ অধিকার আদায় ও বাস্তবায়নে আমাদের সচেতন
হওয়া উচিত। প্রবীণের পাশে থাকা এবং সহযোগিতা করা
আমাদের নৈতিক কর্তব্য।
সাধারণত সংসারে মা-বাবাই প্রবীণ। তারাই এ পৃথিবীতে
আমাদের আগমনের উৎস। মা-বাবা ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব
কল্পনা করা যায় না। তাছাড়া সমাজে আমাদের
আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যেও কিছু প্রবীণ ব্যক্তি রয়েছেন।
প্রবীণদের প্রতি সবসময় সহনশীল থাকতে হবে। তাদের সঙ্গে
নম্র, ভদ্র ব্যবহার করতে হবে। তাদের কোনোরকম কষ্ট দেয়া
যাবে না। তাদের প্রতি সবসময় সুনজর রাখতে হবে।
অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা করাতে হবে। তাদের সেবাযতœ করতে
হবে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের পাশে বসে
গল্প-গুজব করে নিঃসঙ্গতা দূর করতে হবে। প্রবীণদের
খাদ্য, গোসল ও পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি যতœশীল হতে হবে।
কখনও তাদের সঙ্গে রাগ বা অভিমান করা ঠিক নয়।
পথেঘাটে কোনো প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলে তাকে
সম্মান করতে হবে। চলাফেরায় তার কোনো অসুবিধা হলে তাকে
সহযোগিতা করা কর্তব্য। দেশের নাগরিক হিসেবে প্রবীণদের
জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে
এবং তাদের অধিকারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
নুরুল আমিন : প্রাবন্ধিক, লালমোহন, ভোলা
বৃটেনে নিযুক্ত
প্রথম নারী হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম
বৃটেনে বাংলাদেশের নতুন হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম
দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে,
গত ২৬ নভেম্বর তিনি নতুন পদে যোগ দিতে লন্ডনে পৌঁছান।
হাই কমিশনারকে হিথ্রো বিমানবন্দরে স্বাগত জানান
ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার জুলকার নাইন। তার সাথে ছিলেন
মানচেস্টার ও বার্মিংহামের সহকারি হাই কমিশনার এবং হাই
কমিশনের সিনিয়র কর্মকর্তারা।
সাঈদা মুনা তাসনিম বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১১তম
ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৯৩ সালে তিনি চাকুরিতে যোগ দেন।
বৃটেন হাইকমিশনের শীর্ষপদে তিনিই প্রথম নারী কর্মকর্তা।
তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সন্তান, এ অনন্য
সাফল্যের জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠন সাঈদা মুনা
তাসনিমকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রতি ২ মিনিটে একজন কিশোর-কিশোরীর এইচআইভি আক্রান্ত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফের প্রতিবেদন বলছে, এইডসের
কারণে ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৬০
হাজার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। এই সময়ে এইচআইভি
প্রতিরোধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রকল্পে বাড়তি
বিনিয়োগ করা না হলে প্রতিদিন ৭৬ জন কিশোর-কিশোরী মারা
যাবে। বর্তমানে প্রতি ২ মিনিটে একজন কিশোর বা কিশোরী
এইচআইভি আক্রান্ত হচ্ছে।
উপেক্ষিত
মানবাধিকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের স্বীকার
মোঃ দ্বীন
ইসলাম হাওলাদার
যারা শিক্ষকতা করেন তারাই শিক্ষক। হোক সে প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । শিক্ষক
তো শিক্ষকই আর শিক্ষকতা মানেই ব্রেইন কালচার। কোন
মানুষের হাত-পা না থাকলেও সে স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন
করতে পারে। কিন্তু ব্রেইনে সামান্যতম সমস্যা দেখাদিলে
সে স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে না।তার স্থান হয়
রাস্তা-ঘাটে; যেখানে-সেখানে অর্থাৎ সে স্বাভাবিক মানুষ
থাকে না। সেই ব্রেইন কালচার করতে হয় শিক্ষকদেরকে। তাই
শিক্ষকদেরকে তাদের কাজে অর্থাৎ শিক্ষকতার কাজেই রাখা
দরকার। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষকরা তীব্র মানষিক
নির্যাতনের স্বীকার। তাদেরকে শিক্ষকতার পাশাপাশি
বিভিন্ন কাজ করতে বাধ্য করা হয়; যা অনেকাংশে অমানবিক।
আমাদের দেশের শিক্ষকদেরকে সকাল ৯/৯:৩০টা থেকে ৪/৪:৩০
টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে থাকতে হয় যা বিশ্বের অন্য কোন
দেশে আছে কিনা সন্দেহ। তারপরে শিক্ষকদেরকে দিয়ে নতুন
ভোটার তালিকা করানো, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করানো,
আদমশুমারি পশুশুমারি নিরাপদ ও অনিরাপদ পায়খানা
ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নিরূপণ, শিশু জরিপ সহ নানাকাজে
নিয়োজিত করা হয়। এ সকল কাজে গিয়ে তাঁরা নানা ভাবে
লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। এ রকমের বহু ঘটনা
প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় দেখা যায়। অথচ ওয়ার্ড
ভিত্তিক সরকারের ইউপি সদস্য রয়েছে, রয়েছে চৌকিদার এ
কাজ তো তাদের করার কথা। অথবা বিভিন্ন চৎড়লবপঃ এর মতো
সরকার পারিশ্রমিক দিয়ে এ সকল কাজের জন্য সাময়িকভাবে
জনবল নিয়োগ দিতে পারে। কোথাও কোন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ
হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হয় উক্ত
সভা-সমাবেশে হাজির হওয়ার জন্য, যাতে লোক সমাগম বেশি
দেখানো যায়। দেখা গেছে, উপজেলাগুলোতে কোন সমাবেশ হলে
এমনকি কোন পাবলিক ফাংশনের কোন সমাবেশ হলেও
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হয় উপজেলা অডিটরিয়ামে
হাজির হতে। কোন এক ইউনিয়ন পরিষদে সাধারন জনগনকে আইসিটি
বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে সমাবেশের আয়োজন করা হলে উক্ত
ইউপি চেয়াম্যান ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকে হাজির হতে বাধ্য করেন। কিন্তু
ওটা ছিলো সরকারি চৎড়লবপঃ যার জন্য সরকারি বরাদ্ধও ছিলো
অনেক। অথচ সেখানে শিক্ষকদেরকে হাজির করে বিনা খরচে
সমাবেশ করে চৎড়লবপঃ শেষ করা হয় ও অর্থ লোপাট হয়ে যায়।
আবার ইউনিয়ন বা উপজেলার বিভিন্ন দিবস উদযাপন বা
বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থীসহ
হাজির হতে বাধ্য করা হয়। অথচ সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক
নেতাদের ভীড়ে শিক্ষকরা কোথাও একটু বসার জায়গাও পায় না
শিক্ষার্থীরাতো দুরের কথা। শিক্ষার্থীরা অনাহারে দিন
কাটিয়ে অসুস্থ হয়ে পরে। আবার কোন এমপি বা মন্ত্রী বা
কোন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বা নেত্রীর আগমনে তাঁকে উষ্ণ
অভ্যর্থনা জানাতে শিক্ষক ও কোমলমতী শিক্ষার্থীদেরকে
ঘন্টারপর ঘন্টা অনাহারে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তার
দু’ধারে দাড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। অথচ এখানে
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের থাকার কথা ছিলো না। উপস্থিত
থাকার কথা সংশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের। কিন্তু
সেখানে নেতাদেরকে খুশি করানোর জন্য সংশ্লিষ্ঠ
কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে উপস্থিত
থাকতে বাধ্য করা হয়। এভাবে প্রতিবছর বহুদিন শ্রেণি
কার্যক্রম বন্ধ থাকে। যা মানবাধিকার ও শিশু অধিকার
পরিপন্থী। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব সহকারে
বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।
Top
একটি মানবাধিকার
কর্মীর সফলতার গল্প
মেয়ের জন্য বাবার কান্নার
আর্তনাদ, সেদিন কাঁদিয়ে ছিলো সবাইকে। চট্টগ্রাম
লোহাগাড়া, কলাউজান থেকে মেয়ের সংসার বাঁচানোর জন্য
অনেক স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-ইঐজঈ
বান্দরবান পৌরশাখা কার্যালয়ে এসেছিলেন, চিনু দাশের বাবা,
মনোরঞ্জন দাশ। তার স্বপ্ন সফল হলো।
চিনু দাশের স্বামী সুমন দাশ। বান্দরবান মেম্বারপাড়ার
বাসিন্দা। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে সুন্দর সংসার করতে চায়।
অতীতের সমস্ত কথা ভুলে যাবে এক্কেবারে এমনি আশ্বাস দিলো
সবাইকে। চোখ মুছতে মুছতে সুমন আমায় বললো, আজকাল
ছেলেদের কথা কেউ শুনতে চায় না, আপনি আমার কথা শুনেছেন
গুরুত্ব সহকারে, আমি আপনার সেই সম্মান রাখবো। চিনু বলে,
ভেঙ্গে ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাওয়া সংসারটি আপনি পেরেছেন
জোড়া দিতে, আজ থেকে আপনি আমাদের আপন বোন, আপন দিদি।
চিনু দাশের মা, বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মেয়ে সংসার
ফিরে পেয়েছে, এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। সারাজীবন আমরা
তোমার জন্য আশীর্বাদ করবো। বান্দরবান আসলে একবার হলেও
তোমাকে দেখে যাবো।
কখন যে চোখ দু'টো আনন্দে ভিজে গেলো জানিনা। আনন্দে
কাঁদলো তারাও।
সাংবাদিক হাকিম ভাই ফোন করে বললেন, নীলিমা তোমার উপর
আমার বিশ্বাস আছে, তারপরেও তুমি ভালো করে দেখো বিষয়টা,
সংসারটা যেন ভেঙ্গে না যায়। হাকিম ভাইকে আন্তরিক
ধন্যবাদ। আন্তরিক ধন্যবাদ যারা সহযোগীতায় ছিলেন।
নীলিমা আক্তার নীলা
সভানেত্রী-বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC
নারী ও শিশু সংবাদ
গৃহকর্মী নির্যাতনে
গৃহকর্ত্রী গ্রেফতার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আছমা (১২) নামের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ভিডিও
ফেসবুকে প্রকাশের পর নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর মধ্য বাসাবোর এক বাসা
থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা
হয়েছে নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী সেলিনা আক্তার শিলাকে।
নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো
হয়েছে।
সবুজবাগ থানার ওসি কুদ্দুছ ফকির কালের কণ্ঠকে বলেন,
‘নির্যাতনের ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পর গৃহকর্মীকে
উদ্ধার এবং গৃহকর্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গৃহকর্ত্রীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, আছমার জবানিতে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে
ফেসবুকভিত্তিক কমিউনিটি গ্রুপ ‘উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)’-এর
হয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন প্রতিবেশী তকি উদ্দিন।
ভিডিওটি রাজধানীর সবুজবাগ থানার নজরে এলে ২০ ডিসেম্বর
মধ্য বাসাবোর ১৬৯/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভবনটির
তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় আছমাকে। এ
সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় গৃহকর্ত্রী সেলিনা
আক্তার শিলাকে (৪২)। বৃহস্পতিবার রাতেই আছমার ভাই
রুহুল আমিন সবুজবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ভিডিওতে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে আছমা বলে, ‘গৃহকর্ত্রী
শিলা আমাকে বলেছেন, তোরে যদি মাইরা বস্তার মধ্যে ফালায়া
দেই কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না।’ গৃহকর্তা মোস্তফা
কামাল চাঁদপুর আদালতের আইনজীবী বলেও জানায় আছমা।
চিলমারীতে শিশু শিক্ষার্থীদের মাথায়
বিস্কুটের কার্টন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের মাথায় করে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুটের
কার্টন বহনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার
দুর্গম চরাঞ্চলের চর খোদ্দ বাঁশপাতার সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে। জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে
দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের আওতায়
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে
বিস্কুট বিতরণ করা হয়। এসব বিস্কুট বিদ্যালয়ে পৌঁছে
দেয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের। নিয়মানুযায়ী
ঠিকাদার মাদার স্কুল থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্কুট
পৌঁছার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে
প্রদান করেন। তা সত্ত্বেও হরহামেশাই কোমলমতি
শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসব বিস্কুটের প্যাকেট বহনের চিত্র
চোখে পড়ে। বিষয়টি প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ নেই
সংশ্লিষ্টদের। এ নিয়ে সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে ১০ নভেম্বর উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নে গিয়ে
কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থীকে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট
কার্টন মাথায় করে বহন করতে দেখা যায়। এ সময় তাদের ছবি
তুলতে গেলে পেছন থেকে একজন শিক্ষক দ্রুত তাদের মাথা
থেকে বিস্কুট কার্টন নামাতে বলে। ওই শিক্ষার্থীদের
সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা খোদ্দ বাঁশপাতার সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা স্কুলের প্রধান
শিক্ষকের নির্দেশ মোতাবেক বিস্কুটের কার্টন বহন করছে।
অভিযোগ রয়েছে এসব বিস্কুটের কার্টন স্কুলে পৌঁছানোর
খরচ প্রদান করা সত্ত্বেও লেবার খরচ বাঁচাতে শিশুদের
দিয়ে মাথায় করে বহন করা হচ্ছে বিস্কুটের কার্টন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে
কথা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে আরডিআরএস’র
ফিল্ড মনিটর মো. জাকির হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ট স্কুলে
বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার জন্য লেবার খরচ পর্যন্ত দেয়া হয়,
তারপরও বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ কাজটি
কেন করা হয় তা বোধগম্য নয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা
মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।
আজকের শিশুরাই গড়ে তুলবে আগামীর
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সরকার দেশের সব শিশু বিশেষ করে কন্যাশিশুদের অধিকার ও
সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। কারণ আমরা মনে
করি, কন্যাশিশুরা সুরক্ষা ও অধিকার পেলে তারা শিক্ষিত,
যোগ্য ও উপার্জন হয়ে গড়ে উঠতে পারবে।
এর মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব। সম্প্রতি
বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি
ফোরামের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০১৮ উদযাপনে
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের
আফরোজ চুমকি এমপি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের
কাতারে প্রবেশ করেছে। আমরা চাই, শিশুরা শিক্ষিত ও
যোগ্য হয়ে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলুক। আমরা শুধু
দৃশ্যমান উন্নয়ন বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নেই গুরুত্ব
দিতে চাই না। একই সঙ্গে মানব উন্নয়ন সূচক এবং নারী ও
শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপরও গুরুত্ব
দিতে চাই।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল
আলম মজুমদার বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় আমি বলতে
চাই, কন্যা তুমি তুচ্ছ নও, নও তুমি ক্ষুদ্র, যদি তুমি
জেগে উঠো, তবে তুমি বিশ্ব জয় করতে পারবে।
এজন্য কোনো কিছু অর্জন করতে হলে তার জন্য প্রত্যাশা ও
স্বপ্ন থাকতে হবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী হতে
হবে। কন্যাশিশুদের বিকশিত করে তোলার জন্য রাষ্ট্র ও
সমাজের উচিত হবে তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।
তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালক আনজীর লিটনের মতে,
জীবনে ভয় পেলে চলবে না। সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।
নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের যোগ্য
করে তোলার জন্য প্রচুর বই পড়তে হবে। কারণ বই হল
জ্ঞানের আঁধার। বই মানুষের চিন্তার জগতকে আলোকিত করে।
স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের
সহসভাপতি শাহীন আক্তার ডলি বলেন, মানুষ হল মানবসম্পদ।
আর কন্যাশিশুরা হল মানবসম্পদের অঙ্কুর। তাই কন্যাশিশুরা
সুরক্ষিত থাকলে দেশ আলোকিত হয়।
আমরা চাই বছরের প্রত্যেকটি দিনই কন্যাশিশুরা সুরক্ষিত
থাকুক। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাজী রোজী এমপি,
কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম প্রমুখ।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
হত্যা মামলায় ২০ চরমপন্থির
যাবজ্জীবন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মাদারীপুরের রাজৈর থানায় পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি)
এসআই আবুল হাসনাইন আজম খান এবং প্রধান সহকারী কামরুল
আলম খান ঠাকুরকে গলা কেটে হত্যার দায়ে সর্বহারা ও
চরমপন্থি দলের ২০ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন
আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও
তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
১২ ডিসেম্বর ২০১৮ দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার
ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মনির কামাল এ রায় দেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় জনকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার ৩২ আসামির মধ্যে চারজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং
দু’জন বিচার চলাকালে মারা যান। বাকি ২৬ জনের মধ্যে ছয়
জনকে খালাস ও ১৩ জন পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামিরা হলেন- দাদন ফকির, আমীর হোসেন শেখ, জসিম
শেখ, মাছিম শেখ, মজনু মাতুব্বর, ফয়েজ শেখ, উজ্জ্বল
হাওলাদার, জাফর মাতুব্বর, কুব্বাস মাতুব্বর, হালিম আকন,
মিরাজ শিকদার, এমে মোল্লা ও সুমন বাঘা।
রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত দণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি-
মোশাররফ শেখ, আশরাফ শরিফ, বজলু আকন, আজাদ মোল্লা, দবির
মোল্লা, সৈকত মোল্লা ও দীপু বিশ্বাসকে সাজা দিয়ে
কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল
উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসনাইন আজম খান এবং প্রধান
সহকারী কামরুল আলম খান ঠাকুর মোটরসাইকেল যোগে শাখার
পাড় যাওয়ার পর আসামিরা তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন।
পুলিশ পরিচয় পেয়ে আসামিরা তাদের মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে
রশি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এর পর মোটরসাইকেলসহ তাদের
শ্রীনদীর দিকে নিয়ে যায় তারা।
ট্রলারে উঠিয়ে প্রথমে মোটরসাইকেলটি নদীতে ফেলে দেয়
আসামিরা। এরপর প্রথমে কামরুলকে গলা কেটে হত্যার পর তার
মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিচ্ছিন্ন মাথা
হাসনাইনের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কামরুলের মরদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে নদীতে ফেলে দেওয়া
হয়। পরে হাসনাইনকে একইভাবে হত্যার পর তার মরদেহও টুকরো
টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় আসামিরা।
২০০৭ সালের ৬ আগস্ট মাদারীপুরের রাজৈর থানার তৎকালীন
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম মোল্লা ৩২ আসামির
বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। ২০০৮
সালের ৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে
চার্জ গঠন করেন।
মালয়েশিয়ায় ৫৫ বাংলাদেশিসহ ৩৩৮
বিদেশি আটক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ায় অভিবাসন দফতরের অভিযানে বৈধ নথিপত্রহীন ৩৩৮
বিদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জন
বাংলাদেশিও রয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকে শুরু
হওয়া ‘অপস মেগা ৩.০’ নামের সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে
দেশটির সাইবারজায়া শহরে তল্লাশি চালিয়ে এই বিদেশিদের
আটক করা হয়।
অভিবাসন দফতরের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী সংবাদমাধ্যমকে
বলেন, অভিযানে ২২৩০ বিদেশির কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে।
সেখান থেকে ৩৩৮ জন বিদেশির নথিপত্র বৈধ না হওয়ায় তাদের
আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জন বাংলাদেশি, ২০৮ জন
ইন্দোনেশিয়ান, ২৮ জন বর্মী এবং ৪৭ নেপালিজ রয়েছেন।
মুস্তাফার আলী জানান, যারা আটক হয়েছেন, তাদের
বেশিরভাগই এক কোম্পানির পরিচয়ে এদেশে এসে অন্য
কোম্পানির কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। এই জালিয়াতিতে
অল্প কিছু কোম্পানিই জড়িত। আটক এই বিদেশিদের বুকিত
জালিল ইমিগ্রেশন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে
মালয়েশিয়ায় বৈধ নথিপত্র ছাড়া অবস্থানরত বিদেশিদের ধরতে
সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অবৈধ
শ্রমিকদের স্বদেশে ফেরত যেতে বেঁধে দেওয়া আলটিমেটাম
আগস্টে শেষ হওয়ার পর এই সাঁড়াশি অভিযানে নামে অভিবাসন
দফতর। তার আগে অবশ্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে অবৈধ
শ্রমিকদের আট হাজার টাকা শোধ করে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার
সুযোগ দেওয়া হয়।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিচালিত এই অভিযানে দফায় দফায়
বহু বিদেশিকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক
বাংলাদেশি থাকার তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে,
মালয়েশিয়ায় ১০ লাখের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত
রয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বৈধ নথিপত্র ছাড়া।
কাশিমপুর কারাগারে
হাজতির মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আবদুল হাই (৬০) নামে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয়
কারাগারের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে
হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আবদুল হাই মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার সাঙ্গারদি এলাকার
আবদুল মান্নানের ছেলে। বিমানবন্দর থানার মাদক মামলার
আসামি ছিলেন তিনি।
জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম জানান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয়
কারাগার-২ এ বন্দি ছিলেন আবদুল হাই। ২৩ ডিসেম্বর বেলা
পৌনে ১২টায় শ্বাসকষ্ট রোগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা
হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর চিকিৎসক তাকে
মৃত ঘোষণা করেন।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
হাঁটলে মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা বাড়ে
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
নিয়মিত হাঁটাচলায় হৃদযন্ত্র ভালো থাকে কিংবা শরীরের
পেশিগুলো থাকে সচল ও সজীব এ কথা বহুবার বহু গবেষণায় উঠে
এসেছে। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার
ওপরও রয়েছে এর সরাসরি প্রভাব। তাদের মতে, হাঁটার সময়
পায়ের তলায় পড়া চাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ
উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো
পুষ্টি পায় সহজে, যা এর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। খবর
সায়েন্সডেইলি।
নিউ মেক্সিকো হাইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির (এনএমএইচইউ)
একদল গবেষক সম্প্রতি এ-বিষয়ক একটি গবেষণা করেন। এতে
দেখা যায়, হাঁটার সময় পায়ের তলায় যে চাপ পড়ে, তা রক্ত
সংবহনতন্ত্রের মধ্য দিয়ে একটি চাপীয় তরঙ্গ প্রেরণ করে।
ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে
যায়। এতে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে মস্তিষ্ক কোষগুলো, যা এর
কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এ-বিষয়ক গবেষণা
প্রতিবেদনটি শিকাগোর পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞান ২০১৭
সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়।
এতদিন পর্যন্ত মস্তিষ্কে রক্ত পরিবহনের (সেরিব্রাল
ব্লাড ফ্লো বা সিবিএফ) বিষয়টিকে শরীরের স্বনিয়ন্ত্রিত
বিষয় বলে ধারণা করা হতো। অর্থাৎ শরীরচর্চা বা এমন কোনো
কারণে রক্তচাপের যে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে, তা মস্তিষ্কে
রক্ত পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না। কিন্তু
এনএমএইচইউর গবেষকরা দেখতে পান, হাঁটার সময় বিপরীত
রক্তপ্রবাহের (শরীরের নিম্নাংশ থেকে ঊর্ধ্বমুখী) গতিতে
বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। হূদস্পন্দনের সঙ্গে তাল রেখে ঘটা
এ পরিবর্তনের ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের মাত্রায়ও
পরিবর্তন আসে। এ-বিষয়ক একটি পূর্বধারণা থাকলেও এ নিয়ে
বিস্তৃত কোনো গবেষণা এর আগে হয়নি।
সাম্প্রতিক গবেষণায় এনএমএইচইউর গবেষকরা ১২ জন তরুণের
ওপর পরীক্ষা চালান। তারা শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করে
বিভিন্ন অবস্থায় অংশগ্রহণকারীদের রক্ত সংবহনতন্ত্রের
ব্যাস, সংবাহিত রক্তের গতি ও মস্তিষ্কে পরিবাহিত
রক্তের পরিমাণের হিসাব নেন। এতে দেখা যায়, দৌড়ানোর
তুলনায় হাঁটার সময় কম চাপ পড়লেও এ সময় মস্তিষ্কে
রক্তপ্রবাহের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। এ
পরিপ্রেক্ষিতে গবেষকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের
বিষয়টি শরীরের গতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এ কারণে
শরীরচর্চা আমাদের সুস্থ রাখার পাশাপাশি মানসিক তৃপ্তিও
দেয়। একই সঙ্গে বর্ধিত এ রক্তপ্রবাহের কারণে
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা থেকে শুরু করে এর দক্ষতাও বেড়ে
যায়।
সাইক্লিং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য
অনুযায়ী, সাইকেল চালিয়ে কাজে গেলে ক্যান্সার এবং
হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়।
বাহনে চড়ে মানুষজন কাজে যাওয়া এবং স্বাস্থ্যের ওপর তার
প্রভাব নিয়ে- পাঁচ বছর ধরে ২ লাখ ৫০ হাজার অফিস
যাত্রীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে,
যারা সাইকেল চালিয়ে অফিসে যান, তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমেছে ৪৫ ভাগ, আর হৃদরোগের ঝুঁকি কমেছে ৪৬ ভাগ।
এছাড়া গবেষণায় পাওয়া যায়, সাইক্লিং করলে শরীরে মেদ এবং
প্রদাহ কম যায়।
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. জেসন গিল বলেন, ‘এটা
এখন প্রমাণিত। কাজে যাওয়ার জন্য ব্যবহার হওয়া বাহনের
সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে
সাইকেল চালিয়ে কাজে যাওয়ার উপকার অনস্বীকার্য।’
তিনি বলেন, সাইকেল চালালে অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। মনের
সাথে যুদ্ধ করতে হয়না।
ব্রিটেনের শীর্ষ বেসরকারি ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের ক্লেয়ার হাইড বলছেন, এই
গবেষণায় পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিনের জীবনযাপনে যারা যত
বেশি সক্রিয় থাকেন, তাদের রোগের ঝুঁকি তত কমে।
খালি পেটে যে খাবার খেতে নেই
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ষুধা লাগলেই যে হাতের সামনে যা আছে তা-ই খেয়ে নেব তা
কিন্তু নয়। প্রতিটি খাবার খাওয়ারই একটা নির্দিষ্ট সময়
আছে। তা না হলে খাবার গ্রহণে উপকারের পরিবর্তে উল্টো
ক্ষতি হতে পারে শরীরের। কিছু খাবার রয়েছে যা খালি পেটে
খাওয়া একদমই ঠিক নয়। আসুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো ভুল
করেও খালিপেটে খাওয়া যাবে না।
টমেটো টমেটোয় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং নিউট্রিশন
থাকে। কিন্তু এই টমেটো খালি পেটে খাওয়া একেবারেই অনুচিৎ।
এর ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। টমেটোয়
বিদ্যমান এসিড গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এসিডের সাথে মিশে
পাকস্থলীর মধ্যে এক ধরনের অদ্রবণীয় উপাদান তৈরি করে।
এটি পাকস্থলীতে পাথর হওয়ার কারণ হতে পারে।
শসা
প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকায় শসা খালি পেটে
খাওয়া একেবারেই উচিৎ নয়। এর ফলে তলপেটে যন্ত্রণা,
হৃদরোগ, পেট ফাঁপা সমস্যা হতে পারে।
কলা
কলাকে বলা হয় সুপার ফুড। এটি হজমের জন্যে খুবই দরকারী।
কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকে।
কিন্তু যদি আমরা খালি পেটে কলা খাই, তাহলে রক্তে
ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য হারিয়ে যেতে পারে।
তাই সকাল বেলা কলা খাওয়া মানা।
কোমল পানীয়
কোমল পানীয়তে থাকে উচ্চ পরিমাণ কার্বোনেটেড এসিড। খালি
পেটে এগুলো খেলে বমি ভাব তৈরি হতে পারে।
দুধজাতীয় খাবার
দই কিংবা দুধের তৈরি যেকোনও খাবার খালি পেটে খাওয়া উচিৎ
নয়। এতে অ্যাসিডিটি হয়। ভারী খাবার গ্রহণের পর দুধ বা
দই খাওয়া উচিৎ।
লেবুজাতীয় খাবার
লেবু বা লেবু জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া ঠিক নয়। বাতাবি
লেবু, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি খালিপেটে খেলে অ্যাসিডিটি
বাড়ার ঝুঁকি থেকে। এটি শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করে।
মশলাদার খাবার
ঝাল খাবার খেতে পছন্দ করেন অনেকে। তবে খালি পেটে ঝাল
জাতীয় খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এর ফলে এসিডিক বিক্রিয়ার
কারণে পেটে জ্বালাপোড়া হয়। নিয়মিত এরকম হলে পাকস্থলীর
ক্ষতি হবার ঝুঁকি বাড়ে।
চা-কফি
খালি পেটে চা কিংবা কফি খাওয়া ক্ষতিকর। চায়ের মধ্যে
রয়েছে উচ্চ মাত্রায় এসিড, যা পাকস্থলীর আবরণকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে। কফিতে যে ক্যাফেইন থাকে তা পাকস্থলীর
জন্য ভালো নয়। তাই সকালবেলা চা কিংবা কফি খেলে তার আগে
একগ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন।
পাইলস রোগের লক্ষণ ও করণীয়
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
পাইলস শব্দটির অর্থ পিলার। মেডিকেলের ভাষায় একে
হেমোরয়েড বলা হয়ে থাকে। সহজ বাংলায় মলদ্বারের রক্তনালী
ফুলে যাওয়াকে পাইলস বলা হয়ে থাকে। তরুণ এবং বৃদ্ধরা
সাধারণত পাইলসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়স সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। নারী পুরুষ
নির্বিশেষে রোগটির বিস্তার দেখা যায়। গবেষণায় দেখা যায়
যে বিশ্বে শতকরা চার থেকে পাঁচজন এই রোগে আক্রান্ত।
মলত্যাগের সময় চাপ দেয়ার বদ অভ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য
পাইলস হওয়ার মূল কারণ। কারো কারো ক্ষেত্রে পাইলস বংশগত
ভাবেও হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া
স্থূলকায়, যকৃতের রোগী, বৃহদান্ত্রের প্রদাহ জনিত কারণ,
বৃহদান্ত্র ও মলাশয় ক্যান্সারের রোগী, মলদ্বারের
পূর্বের অপারেশন, আইবিএস ইত্যাদি রোগ থাকলে পাইলস
হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
মলত্যাগের সঙ্গে রক্ত যাওয়া পাইলসের প্রধান উপসর্গ।
মলের সঙ্গে তাজা রক্ত যায়। রোগীরা ফিনকি দিয়ে কিংবা টপ
টপ করে রক্ত যাওয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়া মলদ্বারে বাড়তি
মাংস, চুলকানি, ভেজা ভেজা ভাব ও অস্বস্তি ইত্যাদি
উপসর্গ থাকতে পারে।
পাইলসে সাধারনত ব্যথা হয় না। তবে জটিলতা হলে (রক্ত
জমাট বাঁধা, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি) ব্যথা
হতে পারে। মলত্যাগের সময় চাপ দেয়ার বদভ্যাস ত্যাগ,
প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় টয়লেটে বসে থাকা ইত্যাদি
বদভ্যাস ত্যাগ করা পাইলস চিকিৎসায় অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার পান করতে হবে।
খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবার বেশি (শাকসবজি, ইসপগুলের
ভুষি ইত্যাদি) এবং মাছ-মাংস পরিমাণ মতো রাখতে হবে। রাতে
এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খাওয া যেতে পারে। তিনদিন
পর্যন্ত মল না হলে দুইটা অথবা তিনটা গ্লিসারিন
সাপোজিটর মলদ্বারে নির্দেশ মত ব্যবহার করতে হবে।
এ রকম নিয়ম মেনে এবং সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ
ব্যবহার করে শতকরা ৮০ ভাগ পাইলস বিনা অপারেশনে চিকিৎসা
সম্ভব।
লিভার পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
লিভার আমাদের শরীরের দ্বাররক্ষী হিসেবে কাজ করে। এটি
দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। লিভার শরীরের রক্ত
পরিষ্কার করে আমাদের সুস্থ রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসের প্রভাবে
লিভারে সমস্যা দেখা দেয়। এই সাধারণ সমস্যাগুলো শুরুতেই
আমলে না নিলে এ থেকে নানা জটিল ধাপে অগ্রসর হতে পারে।
যেমন: লিভারে প্রদাহ, প্রদাহজনিত ক্ষত বা সিরোসিস,
লিভারে অকার্যকারিতা ইত্যাদি।
অ্যালকোহলজনিত কারণে এ থেকে যে সিরোসিস হয়, তাতে
ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি, প্রায় ১০ শতাংশ। তাই
আমাদের এই লিভার নামে দ্বাররক্ষীর যতœ নিতে হবে।
আসুন জেনে নেই এমন কিছু খাবারের কথা, যেগুলো খেলে
লিভার সুস্থ থাকার পাশাপাশি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যও
ভালো থাকবে;
জাম্বুরা: জাম্বুরাতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা লিভারের ন্যাচারাল
ক্লিঞ্জিং প্রসেসকে বৃদ্ধি করে।
ছোট সাইজের এক গ্লাস জাম্বুরার জুস লিভারের
ডিটক্সিফিকেশন এনজাইমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা
কার্সিনোজেন এবং অন্যান্য টক্সিনকে পরিপূর্ণভাবে বের
হয়ে যেতে সাহায্য করে।
রসুন: রসুনে সেলেনিয়াম ও এলিসিন নামক উপাদান থাকে এবং
এরাও লিভার থেকে টক্সিন বাহির হতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে।
এছাড়া রসুনে লিভার পরিষ্কারক প্রচুর এনজাইম থাকে এবং
এই এনজাইম লিভার থেকে টক্সিন বের হতে সাহায্য করে।
বিট ও গাজর: গাজর গ্লুটাথায়ন নামক প্রোটিনে সমৃদ্ধ, যা
লিভারকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে। গাজর ও বিট উভয়ের
মধ্যেই উচ্চমাত্রার উদ্ভিজ ফ্লেভনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন
থাকে।
গ্রিনটি: গ্রিনটি হচ্ছে লিভার লাভিং বেভারেজ বা
যকৃৎপ্রেমী পানীয়। গ্রিনটি উদ্ভিজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
ক্যাটেচিন সমৃদ্ধ, যা লিভারের কাজে সহযোগিতা করে।
সবুজ শাক-সবজি: সবুজ শাক-সবজি শক্তিশালী লিভার
পরিষ্কারক। সবুজ শাক-সবজি কাঁচা, রান্না করে বা জুস
হিসেবে খাওয়া যায়। সবুজ শাক-সবজিতে উচ্চ মাত্রার
ক্লোরোফিল থাকে এবং এরা রক্ত প্রবাহ থেকে পরিবেশগত বিষ
শোষণ করে নেয়।
আরো যা খেতে পারেন- আপেল, অ্যাভোকাডো, ওলিভ অয়েল, লেবু,
হলুদ, আখরোট, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, মিষ্টি আলু,
ব্রোকলি, টমেটো ইত্যাদি খাবার নিয়মিত খেলে লিভার
পরিষ্কার থাকবে।
তুলসিতে নিরাময় যে ১০ রোগের
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
গত ৫০০০ বছর ধরে নানা রোগ সারাতে এই গাছটিকে কাজে
লাগানো হয়ে আসছে, তা ত্বকের রোগ হোক কী চুল, বা অন্য
কোনো শারীরিক অসুবিধা। আসলে তুলসি গাছের রসের মধ্যে
এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ছোট-বড় নানা রোগ সারাতে
দারুণ কাজে আসে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে তুলসি গাছের
পাতা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে,
সেই সঙ্গে নানা ধরনের সংক্রমণ হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে নানা রোগ এমনিতেই দুরে পালায়।
আসলে 'দ্য কুইন অব হার্বস' নামে পরিচিত তুলসি গাছের
গুণাগুণ লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। তবু কয়েকটির কথা না
বললেই নয়।
এখানে এমন ১০টি রোগের বিষয়ে আলোচনা করা হল, যেগুলো
সারাতে তুলসির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
১. কিডনির পাথর : তুলসি পতায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায়
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে
সেখানে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমায়। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন
যদি মধু দিয়ে তৈরি চুলসি পাতার রস খাওয়া যায়, তাহলে
কিডনির পাথর গলে তো যায়ই, সেই সঙ্গে শরীর থেকে তা
বেরিয়েও যায়। প্রসঙ্গত, তুলসি পাতায় যে ডিটক্সিফাইং
এজেন্ট রয়েছে তা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে
দেয় না। ফেল কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে
যায়।
২. হার্ট ভালো রাখে : ইউজেনল নামে বিশেষ এক ধরনের
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তুলসি পাতায়, যা রক্তচাপ এবং
কোলেস্টরলের মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখে। আর এ কথা তো
সকলেরই জানা যে এই দুটি জিনিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে
হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। আপনি কি কোনো রকমের
হার্টের রোগে ভুগছেন? তাহলে রোজ সকালে খালি পেটে কয়েকটি
তুলসি পাতা চিবিয়ে খান। দেখবেন অল্প দিনেই সুস্থ হয়ে
উঠবেন।
৩. ক্যানসার রোগকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে :
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজ এবং
অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্ট থাকায় তুলসি পাতা খেলে
ক্যানসার রোগও দূরে পালায়। একাধিক গবেষণা অনুসারে, রোজ
যদি তুলসি পাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে ব্রেস্ট এবং
ওরাল ক্যানসার কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকালে
এক গ্লাস করে তুলসি পাতার রস খেলে পরিবেশে উপস্থিত নানা
ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরকে নষ্ট করতে পারে না। ফলে
নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
২০০ রোগের
প্রাথমিক সংকেত হলো মুখের ঘা
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, প্রায় ২০০ রোগের
প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা’র মাধ্যমে।
বর্তমানে মরণ রোগ এইডস থেকে শুরু করে ক্যান্সার,
ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি গর্ভাবস্থায়ও শরীরে বাসা
বাঁধা অনেক রোগের লক্ষণ মুখের ভেতরেই প্রকাশ পায়।
মুখের ভেতরের মাংসে বা জিহ্বায় ঘা হয়, ব্যথা করতে থাকে,
কিছু খেতে গেলে জ্বলে- এগুলিই হচ্ছে মুখে ঘা এর
প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেরই এসবের সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফুলে
যাওয়া বা পুঁজ বের হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
সাধারণত মুখে গালের ভেতরের অংশে বা জিভে ঘা হয় কোনভাবে
কেটেছড়ে গেলে। আবার শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার
করলেও এ সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরর। খুব গরম পানীয় পান
করলে বা কিছু চিবাতে গিয়ে গালের ভেতরে কামড় লাগলেও ঘা
হতে পারে। মুখের ঘা হওয়ার পেছনে এই সব অতি সাধারণ কারণ।
এছাড়াও মুখের ঘা নানা মারণব্যধির কারণে হতে পারে।
যাদের ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের মুখেও এক
ধরনের জীবাণু বাড়তে থাকে। সাধারণ ক্ষেত্রে আয়রন বা
ভিটামিন বি-১২-এর অভাবেই এ সমস্যা বেশি হয়। সমস্যা থেকে
মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। যেমন-
ফল, শাকসবজি, দুধ, মাছ এবং চর্বি ছাড়া মাংস। এসব খাবারে
প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক, ভিটামিন ও আয়রন থাকায় মুখের ঘা
সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এরই সঙ্গে নিয়মিত মাউথ
ওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় যে, যাদের ধূমপান এবং
জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের
মধ্যে মুখের ঘা খুব বেশি হয় এবং সেই সঙ্গে মুখে
ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। বিশেষত যারা পানের
সঙ্গে জর্দা খান এবং অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা
বেশি থাকে।
মুখ অত্যন্ত স্পর্শকাতর অংশ। তাই নিজে নিজে ওষুধ
ব্যবহার করতে যাবেন না। যা করবেন তা অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী। সব চেয়ে জরুরি বিষয় হল, চিকিৎসার পরও
মুখের ঘা যদি দুই সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়,
তবে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে
হবে।
কারণ মুখের বেশ কিছু ঘা বা সাদা ক্ষতকে বিজ্ঞানীরা
প্রি-ক্যান্সার লিশন বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার ক্ষত
বলে থাকেন। সুতরাং, মুখের ঘা প্রতিরোধে দাঁত ও মুখের
যতœ নিন। মুখের ভিতরের অংশে ঘা হওয়া মাত্রই তার
চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নিন।
Top
আইন কনিকা
আত্মহত্যায় প্ররোচিত
করলে মৃত্যুদন্ড্তি
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
যৌতুকের জন্য কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে দোষী
ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়ার বিধান রাখা
হয়েছে ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৭’-এর খসড়ায়। মহিলা ও
শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এ খসড়াটি অনুমোদনের
জন্য আজকের মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচ্যসূচিতে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত করা চলতি বছরের
জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিও রয়েছে মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে।
এতে গত বছরের তুলনায় জনপ্রতি সাড়ে ১৪ হাজার থেকে
সর্বোচ্চ সাড়ে ২১ হাজার টাকা খরচ বাড়ানোর প্রস্তাব করা
হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত
বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংক্রান্ত ২০১৬ সালের ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর)
প্রতিবেদন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং শেখ হাসিনা
বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া উপস্থাপন করা হতে পারে বৈঠকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
যৌতুক নিরোধ আইন প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশুবিষয়ক
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ১৯৮০
সালের যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুক দাবি ও লেনদেনের শাস্তি
নির্দিষ্ট করা থাকলেও যৌতুক চেয়ে নির্যাতনের শাস্তির
বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। প্রস্তাবিত আইনে বিষয়টি স্পষ্ট
করা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো নারীর স্বামী,
স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে
অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে
আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন
কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ছাড়া যৌতুকের জন্য মৃত্যু
ঘটানোর চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, মারাত্মক
জখমের জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা অন্যূন ১২ বছর
সশ্রম কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুকের
জন্য অঙ্গহানির শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন সশ্রম
কারাদন্ড বা কমপক্ষে ১২ বছর সশ্রম কারাদন্ডের প্রস্তাব
করা হয়েছে খসড়ায়। তবে স্ত্রীর জখমের ধরন অনুযায়ী
স্বামীকে অর্থদন্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণ দেয়ারও বিধান রাখা
হয়েছে।
এ ছাড়া সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী, যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে
সাধারণ জখম করলে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং সর্বনিম্ন এক
বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হবে।
খসড়ায় ‘যৌতুক’ বলতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত
যে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর বা মূল্যবান জামানতকে বোঝানো
হয়েছে। কোনো ব্যক্তি কনে বা বর পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি
বা যৌতুক নিলে বা দিলে অধরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।
কেউ যৌতুক দাবি বা লেনদেন করলে সর্বনিু এক বছর ও
সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল বা ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা
জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি যৌতুক
নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে তিনি ছয় মাসের
কারদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত
হবেন বলেও খসড়ায় বলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনেও যৌতুকের জন্য কোনো নারীর মৃত্যু ঘটানোর দায়ে কোনো
ব্যক্তি মৃত্যুদন্ড বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য
যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুক নিরোধ আইনেও
একই ধরনের শাস্তির বিধান যুক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি
বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও অপরাধকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত
করা হয়েছে খসড়া আইনে। প্রস্তাবিত এই আইন কার্যকরের পর
১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন রহিত হলেও ওই আইনের আলোকে
প্রণীত বিধি ও প্রবিধি উপ-আইন হিসেবে গণ্য হবে বলে
খসড়ায় বলা হয়েছে।
রিমান্ড কি
মানবাধিকার পরিপন্থী?
মানবাধিকার ল’ ডেস্ক
কোনও আসামিকে গ্রেফতার করার পর তথ্য উদঘাটনের জন্য
পুলিশ ওই আসামিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রাখতে
পারেন। তারপর আইন অনুযায়ী তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে
হাজির করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে মামলা সম্পর্কে তথ্য
উদঘাটন সম্ভব না হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে
আসামিকে রিমান্ডে নেয়া যায়।
এ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করা না করা এবং করলে কয়দিনের
জন্য তা ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনামূলক ক্ষমতার ওপর
নির্ভর করে। একাধিকবারও পুলিশ আসামিকে রিমান্ডে নিতে
পারেন। তবে সর্বসাকুল্যে একটি ঘটনার জন্য ১৫ দিনের বেশি
রিমান্ডে রাখা যায় না।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আগে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই
পুলিশ ডায়েরি (সিডি) দেখতে হবে, যাতে আসামির বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
যায়। এছাড়া রিমান্ডের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
দায়ের করা হয়েছে কিনা, আসামি শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা
এসব বিষয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট
রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদেশ উপরস্থ ম্যাজিস্ট্রেট এবং
এসপিকে (পুলিশ সুপার) জানানোর নির্দেশ দেবেন। রিমান্ড
মঞ্জুর করলে অর্ডার শিটে যথাযথ কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
এছাড়া রিমান্ড মঞ্জুরের সময় আসামিকে হাজির করা হয়েছে
কিনাÑ সে বিষয়টিও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। চীফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম
শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক
বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেটের এ রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে এ রিমান্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে।
মানুষ পেটানোর হাতিয়ার এই রিমান্ড। মানুষকে রিমান্ডে
নিয়ে পিটিয়ে তথ্য আদায় করা হয়। এর ফলে রিমান্ডকে
মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেন মানবাধিকারকর্মীরা।
যৌতুকের মিথ্যা মামলার
শাস্তি ৫ বছর রেখে আইন পাস
যৌতুক দেওয়া-নেওয়া এবং যৌতুক নিয়ে মিথ্যা
মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা
জরিমানার বিধান রেখে সংসদে ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ পাস
হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মহিলা ও শিশুবিষয়ক
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি জাতীয় সংসদে বিলটি
পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
কারও ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে
পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে
দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে। আগের আইনে
যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনও দণ্ডের বিধান ছিল
না।
বিলে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনও এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তবে
সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কিন্তু সর্বনিম্ন এক বছরের জেল
বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান করলেও একই ধরনের সাজা হবে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য
ও জামিন অযোগ্য হবে। তবে আপসযোগ্য হবে।’
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে
পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি হয়। গত ২৫
জুন বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে
প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮০ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন করে আইন
করতে বিলটি তোলা হয়েছে সংসদে। ১৯৮০ সালের ওই আইন ১৯৮২,
১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।
Top
|
|