           
 
|
Cover October 2016
English Part
October 2016
Top
Bangla Part
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে
২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনা প্রেসিডেন্ট
শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে ২৬টি
দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
বৈঠক ও সমঝোতা স্মারক সই শেষে ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব আরো সামনে এগিয়ে
যাবে।
ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, দুই দেশের মধ্যে
সমঝোতার ২৬টি চুক্তি আমরা স্বাক্ষর করেছি। উচ্চ পর্যায়ের
অনেকগুলো বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মানুষের
অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার কথা আলোচনা করেছি আমরা।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন ছিলো বঙ্গবন্ধুর সেই
পথে আমরা অনেকটাই এগিয়েছি। সেই স্বপ্ন পূরণেও বাংলাদেশ ও
চীনের বন্ধুত্ব সহায়ক হবে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম
আয়ের দেশ হবো আর ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশ। সেসব
স্বপ্ন পূরণের দিকেও এগিয়ে যাবো আমরা।
১৪ অক্টোবর তিনটায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি প্রথমে একান্ত বৈঠক ও
পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন। বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যে
প্রায় ২৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধান
প্রতিবেদন
অক্টোবর’২০১৬
মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ২৫৪ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপে
অক্টোবর ২০১৬ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়
২৫৪টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অক্টোবর মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৮.১৯
জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়
গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার
ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে হত্যাকান্ডের শিকার
২৫৪ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ১১ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ২৬ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৫৭ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৬ জন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ২২ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৫ জন, চিকিৎসকের
অবহেলায় মৃত্যু ১১ জন, গুপ্ত হত্যা ৭ জন, রহস্যজনক
মৃত্যু ৯৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ৫ জন, অপহরণ হত্যা ৯
জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ১৬৯ জন, আত্মহত্যা ৩২ জন।
অক্টোবর ২০১৬ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য
ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণ ৫২ জন, যৌন নির্যাতন ১১ জন,
যৌতুক নির্যাতন ১৩ জন,
এসিড নিক্ষেপ ৪ জন।
প্রতিটি
মানুষের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে
----------
শিল্পমন্ত্রী
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
প্রতিটি মানুষের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে। তাই
মানবাধিকার নিয়ে তৃণমূলে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায় তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় বরিশাল নগরীর অশ্বিনীকুমার হলে
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বরিশাল আঞ্চলিক সম্মেলন-২০১৬
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির
হোসেন আমু একথা বলেন। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, ধর্মের
নামে জঙ্গিবাদ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সে কাজের
জন্য যুব সমাজকে বিপথগামী করা হচ্ছে। এভাবে দেশকে
অকার্যকর করার ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত রয়েছে তাদের
বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশন বরিশাল জেলা ও মহানগরের আয়োজনে এ
সম্মেলনে বিএইচআরসি’র বরিশাল বিভাগের গভর্নর ও বরিশাল
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু সভাপতিত্ব
করেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বরিশাল জেলা পরিষদের প্রশাসক খান আলতাফ হোসেন ভুলু,
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ফিন্যান্স কমিটির সভাপতি এসএম
রেজাউল করিম।
জিনপিং-খালেদা জিয়া বৈঠক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চীনের
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ১৭ অক্টোবর ২০১৬ বিকেলে
রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়া। ‘২০১৭ হবে চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের বছর’
ঐতিহাসিক সফরে ঢাকায় চীনের প্রেসিডেন্ট চীনের
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে
অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়
নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে।
বৈঠকে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি
জিয়াউর রহমানের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিএনপি
চেয়ারপারসন আশা করেন, সামনের দিনে চীন-বাংলাদেশের
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন,
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমান,
নজরুল ইসলাম খান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন
আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়েছে চীনের প্রেসিডেন্টের
সঙ্গে উল্লেখ করে বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের পরস্পরের
স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চীন সব সময়
বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অকৃত্রিম বন্ধু।
বাংলাদেশ আশা করে, চীন সব সময় তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে
সহযোগিতা করবে এবং পাশে থাকবে। একই সঙ্গে চীনও আশা করে,
বাংলাদেশ সব সময় চীনের যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং একই
সঙ্গে ভূ-রাজনীতির সঙ্গে চীন যে ভূমিকা পালন করছে- সেই
উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীনকে সমর্থন জোগাবে।
অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুই নেতার আলোচনা হয়েছে।
পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
মানবাধিকার কমিশন ময়মনসিংহ
আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গত ১৫ অক্টোবর ২০১৬ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৬ ময়মনসিংহ
শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন
ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন- আইএইচআরসি এবং
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব ড.
সাইফুল ইসলাম দিলদার। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয়
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সম্মেলনে
সভাপতিত্ব করেন মানবাধিকার কমিশনের ময়মনসিংহ আঞ্চলিক
সমন্বয়কারী এডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু। বিশেষ অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জি.এম.
সালেহ উদ্দিন, ডিআইজি ময়মনসিংহ রেঞ্জ, চৌধুরী
আব্দুল্লাহ আল মামুন, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মোঃ
খলিলুর রহমান, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মেয়র
ময়মনসিংহ পৌরসভা মোঃ ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহ জেলা
আইনজীবী সমিতির সভাপতি বাধন কুমার গোস্বামী,
মানবাধিকার কমিশন ময়মনসিংহ বিভাগীয় গভর্নর এড. এএইচএম
খালেকুজ্জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এর গভর্নর
সিকান্দার আলী জাহিদ, নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি এড.
রেজাউল করিম, কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি, কামরুজ্জামান
জাহাঙ্গীর, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি রাজিয়া সামাদ
ডালিয়া, বৃহত্তর মিরপুর আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক
গোলাম কিবরিয়া মোল্লা, গাজীপুর মহানগর সভাপতি আবুল
কালাম ভূইয়া, ময়মনসিংহ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি এড.
শিব্বির আহমেদ লিটন প্রমুখ। সম্মেলনে মানবাধিকার
কমিশনের ময়মনসিংহ জেলা, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ এবং
শেরপুর জেলা শাখার ছয়শতাধিক মানবাধিকার কর্মী যোগ দেন।
রাখাইনে আবার রোহিঙ্গা
নির্যাতন্তি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মিয়ানমারের
উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতি অভিযান চালানোর
সময় দেশটির সেনা সদস্যরা অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম নারীকে
ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আট
রোহিঙ্গা নারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া
সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ করেন।
এ ছাড়া মানবাধিকার সংগঠনগুলোও রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর
মিয়ানমার সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা
ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে। এসব ঘটনার স্বাধীন তদন্ত
দাবি করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)।
গত শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানায়।
নির্যাতনের শিকার নারীদের ভাষ্য, সেনারা গত সপ্তাহে
তাঁদের বাড়িতে হানা দেয়, লুটপাট চালায়। বন্দুকের মুখে
তাঁদের ধর্ষণ করে। অভিযোগকারী তিন নারীর মুখোমুখি
সাক্ষাৎকার নিয়েছে রয়টার্স। বাকি পাঁচজনের সাক্ষাৎকার
নেওয়া হয়েছে টেলিফোনে। এর পাশাপাশি মানবাধিকারকর্মী ও
স্থানীয় নেতাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সব অভিযোগ
স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
৪০ বছর বয়সী এক নারীর অভিযোগ, চারজন সেনা তাঁকে ধর্ষণ
করেছে। তাঁর ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে তারা লাঞ্ছিত করেছে।
তাঁর গহনা ও নগদ অর্থ নিয়ে গেছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের
মুখপাত্র জ হতে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ
থেকে সেনাবাহিনীর কাছে একটি মেইল করা হলেও তার জবাব
দেয়নি তারা।
এদিকে শুধু গত ১৯ অক্টোবর একটি গ্রামেই ৩০ জন রোহিঙ্গা
নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা
মানবাধিকার সংস্থা ‘আরাকান
প্রজেক্টের’ পরিচালক ক্রিস লেওয়া। তিনি জানান, গত ২০
অক্টোবর একটি গ্রামের দুই নারী ও ২৫ অক্টোবর পাঁচ
কিশোরী-তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
গত ২৫ অক্টোবর বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (বিএইচআরএন)
এক বিবৃতিতে বলেছে, চরম উদ্বেগের ব্যাপার যে সামরিক
বাহিনীর অভিযানের সময় মংডু এলাকায় অন্তত ১০ নারী
ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা
এক নারীও আছেন। ধর্ষণের ফলে তাঁর গর্ভের শিশুটি নষ্ট
হয়েছে।
বিএইচআরএনের কর্মকর্তা উ কেয়াও উইন বলেন, মিয়ানমার
সরকার রাখাইনে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং
অপরাধ করেই যাচ্ছে। মিয়ানমার সরকার রাখাইনে যৌন নিপীড়ন
বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অঙ্গীকার
করলেও তা মানছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। জাতিসংঘসহ
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি
দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে, যাতে
ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত মানবাধিকার হরণের অভিযোগগুলো
স্বাধীনভাবে তদন্ত করা যায়।
২০০৮ সালে প্রণীত মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির
সেনাবাহিনী যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে
দায়মুক্তি পেয়ে আসছে। কিছু মানবাধিকার সংগঠন মিয়ানমার
সেনাবাহিনীকে বিচারের মুখোমুখি করতে এই সাংবিধানিক
দায়মুক্তির পরিবর্তন দাবি করে আসছে।
মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা উত্তর
আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্ট’
১৬ অক্টোবর ২০১৬ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা উত্তর
আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৬ টঙ্গী চেরাগ আলীস্থ
সানাই পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উদ্বোধন
করেন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন- আইএইচআরসি
এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও
মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার। সম্মেলনে প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ
সদস্য মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন
গাজীপুর আঞ্চলিক শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মীর
আমিরুজ্জামান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের সহকারী পরিচালক
ফারাহ দিবা, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা মহানগর
উত্তর ও দক্ষিণের গভর্নর সিকান্দার আলী জাহিদ, ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ এর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন,
সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া, সহ-সভাপতি শাহ
আলম শান্ত, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজমুল হক,
ঢাকা বৃহত্তর মিরপুর আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক
গোলাম কিবরিয়া মোল্লা, টঙ্গী আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মোঃ
মেরাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল বারী ভূইয়া, ঢাকা
সুপ্রীম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক এড. বাদশা আলমগীর
প্রমুখ। সম্মেলনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা জেলা,
মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুর জেলা শাখার পাঁচশতাধিক
মানবাধিকার কর্মী যোগ দেন।
মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবার ফাঁসি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পিরোজপুরে মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবা মহারাজ হাওলাদারের
বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুর
দেড়টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম জিল্লুর
রহমানের আদালত এ রায় দেন।
এ সময় বিচারক আলীগ হোসেন হাওলাদারের ছেলে মহারাজ
হাওলাদারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অপরদিকে পৃথক একটি মামলায় একই আদালত মৃত সিকান্দার
আলীর ছেলে সেলিম ব্যাপারিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০
হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ইউএনডিপির নয়া
কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর বাংলাদেশের
নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছেন
সুদীপ্ত মুখার্জি। তিনি আজ ঢাকা এসে পৌঁছাবেন। সর্বশেষ
তিনি ইউএনডিপি সিয়েরালিওন-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে
দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি ইউএনডিপির ইরাক
কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অঙ্গনে
স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে সুদীপ্ত মুখার্জির
রয়েছে দুই দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা। জাতিসংঘে যোগ
দেওয়ার আগে তিনি ভারত সরকার এবং যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন
সংস্থা ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)-এ
কর্মরত ছিলেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার,
বাংলাদেশের জনগণ এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করার
উদ্যোগে নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর আরও কার্যকর ভূমিকা
রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের পটুয়াখালী আঞ্চলিক মানবাধিকার
সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পটুয়াখালী আঞ্চলিক
মানবাধিকার সম্মেলন ২৯ অক্টোবর ২০১৬ রোজ শনিবার সকাল
৯:৩০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তন, পটুয়াখালীতে
অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন জাতীয় সংসদের মাননীয় সংসদ সদস্য এবিএম রুহুল
আমিন হাওলাদার এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের আন্তর্জাতিক সদর দপ্তরের গভর্ণর
জেনারেল/মহাসচিব মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
কমিশনের পটুয়াখালী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম
সারওয়ার ফোরকান সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য
নাসরিন জাহান রতœা, মানবাধিকার কমিশনের বরিশাল বিভাগীয়
সমন্বয়কারী সাইদুর রহমান রিন্টু, পটুয়াখালী জেলা শাখার
সভাপতি এডভোকেট সামসুদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ও
কমিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মোল্লা নাসির উদ্দিন, বরগুনা
জেলা শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার, সাধারণ
সম্পাদক এডভোকেট গোলাম কাদের প্রমুখ। সম্মেলনে
পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা শাখার পাঁচশতাধিক মানবাধিকার
কর্মী যোগ দেন।
কুয়াকাটা পর্যটন সিটি
মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের কুয়াকাটা পর্যটন শাখার উদ্যোগে ৩০
অক্টোবর ২০১৬ রোজ রোববার বিকেল ৩টায় কুয়াকাটায় হোটেল
পর্যটন অডিটোরিয়ামে কুয়াকাটা পর্যটন সিটি মানবাধিকার
সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
আন্তর্জাতিক সদর দপ্তরের গভর্ণর জেনারেল/মহাসচিব
মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
কুয়াকাটা পর্যটন শাখার সভাপতি মাওলানা মাঈনুল ইসলাম এর
সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা, বরিশাল
বিভাগীয় বিশেষ প্রতিনিধি মোল্লা নাসির উদ্দিন,
পটুয়াখালী আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ গোলাম সারওয়ার
ফোরকান, ঢাকা সুপ্রীম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক
এডভোকেট বাদশাহ আলমগীর, ঢাকা মহানগর মিরপুর আঞ্চলিক
শাখার নির্বাহী সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাধারণ সম্পাদক
গোলাম কিবরিয়া মোল্লা, কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ
জিএম শাহনেওয়াজ, মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর
রহমান, কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ ৃনূর
বাহাদুর প্রমুখ। সম্মেলনে বরিশাল, পটুয়াখালী এবং বরগুনা
জেলা শাখার তিনশতাধিক মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ যোগ দেন।
এই
নারকীয়তার শেষ কোথায়?
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গত সপ্তাহে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি খবর দেখে
মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলি। একটি খবর ছাপা হয় গত ২৪
অক্টোবর। এই খবরে বলা হয়, ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকার একটি
বাসার দরজা ভেঙে সন্ত্রাসীরা ঢুকে পড়ে। তারা ওই বাড়ির
সবাইকে জিম্মি করে ছিনিয়ে নেয় টাকা ও মুঠোফোন। এরপর ওই
বাসার ১৫ বছরের কিশোরী মেয়েটিকে ধর্ষণ করে চলে যায়।
আরেকটি খবর প্রকাশিত হয় গত ২৬ অক্টোবর। এতে বলা হয়,
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাঁচ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণ
করা হয়েছে। ধর্ষক তাকে শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি,
শিশুটির প্রজনন অঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ধারালো
অস্ত্র দিয়ে কেটে দিয়েছে। তার এই অবস্থা দেখে আঁতকে
উঠেছেন চিকিৎসকেরাও। বড় আব্বু বলে ডাকত—এমন একজন
ব্যক্তি শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে।
গা শিউরে ওঠে খবরগুলো পড়ে। এসব কী হচ্ছে? এ কোন দেশে
বাস করছি আমরা?
বাংলাদেশ এখন এমন একটি দেশ, যেখানে অনেক ক্ষেত্রেই
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। একজনের ঘরে ঢুকে
ধর্ষণ করে বুক ফুলিয়ে চলে যাওয়া কীভাবে সম্ভব?
দিনদুপুরে প্রকাশ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে। ছুরি
চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হচ্ছে। হত্যা পর্যন্ত করছে।
কেননা, এসব ধর্ষক ও খুনির সামনে তো দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির কোনো উদাহরণ নেই। এ জন্য খুন-ধর্ষণের মতো ঘটনা
বারবার ঘটছে। পাঁচ বছরের শিশুর ধর্ষণকারী সাইফুল
ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে,
আদৌ কি কোনো শাস্তি হবে তার?
আমাদের দেশে কোনো নারী যখন ধর্ষণের শিকার হন, তখন তাঁর
কপাল সঙ্গে সঙ্গে পুড়ে যায়। কেননা, সমাজের দৃষ্টিতে
কোনো মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়া মানে তাঁর জীবনের সবকিছু
শেষ হয়ে যাওয়া। তিনি তখন ঘৃণিত, অস্পৃশ্য। তাঁকে দেখা
হয় অশ্রদ্ধার চোখে। উদাহরণ হিসেবে রংপুরের ঘটনাটির কথা
বলা যায়। জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায় নবম শ্রেণির এক
স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর তাকে স্কুলে আসতে
‘না’ বলে দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ধর্ষণের শিকার
স্কুলছাত্রীকে কলঙ্কের কালি দিয়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার
করা হয়।
আমাদের সমাজে ধর্ষণের জন্য কখনো দায়ী করা হয় নারীর
পোশাককে, কখনোবা দায়ী করা হয় তাঁর চালচলনকে। যেন
ধর্ষকের কোনো অপরাধ নেই। ধর্ষণের শিকার নারী এ ঘটনায়
মামলা করতে থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে চায় না এমন
উদাহরণ ভূরি ভূরি রয়েছে। বিচার-সালিস বসলে ধর্ষকের
সঙ্গে সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীরও বিচার করা হয়। ওই
নারী সহানুভূতি পাওয়ার বদলে পান ঘৃণা। এ কারণে আমাদের
সমাজে ধর্ষণের শিকার বহু নারী চেপে যান তাঁদের ধর্ষণের
কথা। বিচার পাওয়ার বদলে জোটে অপমান। এর থেকে মুক্তির
উপায় হিসেবে অনেক মেয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ধর্ষক
যদি প্রভাবশালী হয়, তাহলে তো কথাই নেই। থানা-পুলিশ
তারই পক্ষ নেয়। বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হলেও তা এগোয়
ঢিমেতেতালায়। কখনোবা তা মাঝপথেই থেমে যায়। এভাবে
নিপীড়িত নারী কুঁকড়ে থাকেন একটা ঘূর্ণাবর্তে। এ থেকে
উত্তরণ জরুরি। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল
বাংলাদেশ গড়তে চায়। দেশকে পরিণত করতে চায় মধ্যম আয়ের
দেশে। দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানামুখী
পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। দেশের অর্ধেক মানুষ যেহেতু
নারী, কাজেই দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারীর কল্যাণ ও তাঁর
ভালো থাকার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। পদে পদে নারীর হেনস্তা
হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে।দিনাজপুরের পাঁচ বছরের
শিশু ধর্ষণের বিচার দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশ্বাস
দিয়েছেন আইনমন্ত্রী। আমরা সেই পাষন্ড ধর্ষকের দ্রুত
সমুচিত সাজা দেখার আশায় রইলাম। আর এই দ্রুত বিচার এ
ধরনের অন্যান্য মামলার গতিও বেগবান করবে বলে প্রত্যাশা।
৮১ হাজার ১০০ মার্কিন
নারী পেলেন ড. ইউনূসের গ্রামীণ ঋণ
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
নিজস্ব প্রতিবেদক: ৮১ হাজার ১০০ মার্কিন মহিলা পেয়েছেন
নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ঋণ। ২৪ অক্টোবর
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে নিউ ইয়র্কে
অনুষ্ঠিত গ্রামীণ আমেরিকার পরিচালনা পরিষদের সভায় এই
ঘোষণা দেওয়া হয়। ঢাকার ইউনূস সেন্টার সূত্রে এই তথ্য
জানা গেছে। গ্রামীণ আমেরিকা ৫০ কোটি ডলার ঋণ বিতরণের
মাইলফলক অতিক্রম করেছে বলেও তাতে উল্লেখ করা হয়। ইউনূস
সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ জানিয়েছেন,
২০০৮ সালে নিউ ইয়র্ক থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত
যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি শহরে দরিদ্র মহিলাদের ক্ষুদ্র ঋণ
দেওয়া শুরু করে গ্রামীণ আমেরিকা। তিনি জানান, এ
পর্যন্ত ৮১ হাজার ১০০ জন মহিলাকে তাদের ক্ষুদ্র
ব্যবসায়ে বিনিয়োগের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ৫৩৫ মিলিয়ন
মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে।
জানা গেছে, গ্রামীণ আমেরিকা এ পর্যন্ত ২ লাখ ৪২ হাজার
৪৪৫টি ঋণ অনুমোদন করেছে। এই ব্যবসাগুলো থেকে নতুন করে
৭৫ হাজার ১৫৫ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রফেসর ইউনূস গ্রামীণ আমেরিকার চেয়ারম্যান
হিসেবে কাজ করছেন।
এড.
ওয়াহিদ-উল-ইসলামের ইন্তেকাল
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কুষ্টিয়া আঞ্চলিক শাখার
সভাপতি এডভোকেট ওয়াহিদ-উল-ইসলাম গত ২৪ অক্টোবর
ইন্তেকাল করেন (ইন্না ..... রাজিউন)। ২৫ অক্টোবর ২০১৬
কুষ্টিয়া জেলার আমলাপাড়া এলাকায় দাফন করা হয়। তিনি
দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি
এক স্ত্রী এবং এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে
গেছেন। তিনি দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে মানবাধিকার
কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি
আমীর-উল-কবীর চৌধুরী এবং মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম
দিলদার এই মানবতাবাতী নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোক
সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নারীকেই প্রতিবাদী হতে হবো
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বখাটের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত সিলেটের কলেজ
শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিস হাসপাতালে মৃত্যুর
সঙ্গে লড়ছেন। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের তাহমিনাও
বখাটের অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে। এ ছাড়া
বখাটের হয়রানির প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হয়েছেন
রাজধানীর মিরপুরের দুই যমজ বোন। তবে তাঁরা বখাটের কাছে
হার মানেননি। রীতিমতো রুখে দাঁড়িয়েছেন।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, নারীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদী হয়ে উঠছে। মিরপুরের দুই যমজ বোনের প্রতিবাদ
সারা দেশের নারীদের আরো প্রতিবাদী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে।
এভাবে নারীরা প্রতিবাদী হয়ে উঠলে নারী হয়রানি ধীরে ধীরে
কমে আসবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জরিপে দেখা যায় গত ২০১৫
সালে ধর্ষণের শিকার হয় ৩০৪ জন, যৌন নির্যাতনের শিকার
হয় ৫৮ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয় ৭৪ জন,
এসিড নিক্ষেপের শিকার হয় ২৩ জন। যৌতুকের কারণে হত্যার
শিকার হয় ৯৮ জন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয় ৬১ জন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি
বলেন, যৌন হয়রানির কারণে অসংখ্য সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি
হয়। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে আত্মহত্যা অথবা হত্যা,
এসিড নিক্ষেপ, সংসার ভেঙে যাওয়া, নারী-শিশুর মানসিক ও
শারীরিক ক্ষতি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের
বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই তা সংসদে তোলা
হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তবে শুধু আইন করে যৌন হয়রানি
বন্ধ করা সম্ভব নয়। যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে নারীরা বেশ
সাহসী হয়ে উঠেছে। তাদের আরো সচেতন ও সাহসী হতে হবে।
ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করা সম্ভব না হলে থানা বা
অভিভাবককে ঘটনা জানাতে হবে। পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি
স্তরে যৌন হয়রানি রোধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি বন্ধ করতে হবে
মুহাম্মদ
ইসমাইল হোসেন
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল
অধিবেশনে উপর্যুপরি আমি চারবার কাউন্সিলর হিসেবে
যোগদান করলাম। তবে অতীতের চেয়ে এবারের কাউন্সিল ছিল
অনেক ব্যতিক্রমী এবং তাৎপর্যপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর প্রতি
ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার কারণে সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে না
এলে আমার জীবনে অনেক অভিজ্ঞতাই অধরা থেকে যেত। কারণ
রাজনীতির ভেতরে না থাকলে বাইরে থেকে রাজনীতি কী, তা
বোঝা সম্ভব নয়। রাজনীতির বাইরে থেকে রাজনীতি এবং
রাজনৈতিক দলকে সঠিকভাবে বোঝা বা সমালোচনা করা যায় না।
একজন রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী এবং লেখক হিসেবে আমার সে
অভিজ্ঞতাই হয়েছে। যেসব অরাজনৈতিক ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী
বা সুশীলসমাজ টেলিভিশন চ্যানেল বা অন্যত্র রাজনীতি এবং
রাজনীতিবিদদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেন, আমার মতে
তারা রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দল সম্বন্ধে সম্যক ধারণা
ছাড়াই তা করে থাকেন। দূর থেকে তারা যা জানেন বা বোঝেন
বাস্তব অবস্থা মোটেও তা নয়। কারণ তাদের চিন্তা-চেতনার
চেয়েও রাজনীতি অনেক কঠিন কাজ। দলীয় পদ-পদবি গ্রহণ করে
মানুষের মন জয় করা এবং তার ফল ঘরে তোলা অত্যন্ত দুরূহ
কাজ। যে সে ব্যক্তি এমন কাজের যোগ্য নন। একজন
রাজনীতিবিদের জীবন অনেক কঠিন। একজন বুদ্ধিজীবী অথবা
সচেতন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচনে
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হিলারির দিকে নজর দিলেও তার কিছুটা
বুঝতে পারবেন। বুঝতে পারবেন একজন সফল ধনকুবের ব্যবসায়ী
কীভাবে হিলারি ক্লিনটনের কাছে পদে পদে পর্যুদস্ত হয়ে
চলেছেন। যাক সে কথা।
এবারে দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে প্রাচীন দলটির
কাউন্সিলের কথায় ফিরে আসি। গতবারের কাউন্সিলে আমি হলের
ঠিক মাঝামাঝি অবস্থানে বসে আশপাশের কাউন্সিলরদের সঙ্গে
কথা বলে প্রচুর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলাম। বিশেষ করে
সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে যারা ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে
জনসাধারণকে কষ্ট দিচ্ছেন, তাদের থামাতে হবে, রুদ্ধ করে
দিতে হবে তাদের সেসব অপকর্মের রাস্তা। দলীয়
হাইকমান্ডের কাছেও অনুরোধ জানাব তারা যেন দুর্নীতির
রন্ধ্রগুলো খুঁজে বের করে সেসব বন্ধ করে দেন। আর এসব
কাজ সঠিকভাবে করতে হলে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিও বন্ধ
করতে হবে।
জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব হচ্ছেন গুটারেস
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
জাতিসংঘের মহাসচিব হতে যাচ্ছেন পর্তুগালের সাবেক
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও গুটারেস। আনুষ্ঠানিক
ভোটাভুটির পরে নতুন মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন
গুটারেস। এর ফলে তিনি বর্তমান মহাসচিব বান কি মুনের
স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। ষষ্ঠবারের মতো আয়োজিত গোপন
ভোটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের
কেউ গুটারেসের বিরুদ্ধে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ না করায়
এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কূটনীতিকরা। খবর
বিবিসির। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশ ১০ জন
প্রার্থীর প্রতিজনের জন্য গোপন ভোট প্রদান করে থাকে।
এর মাধ্যমে তাদের প্রতি আগ্রহী, অনাগ্রহী বা কোনো
মন্তব্য নয় এমন তিনটি পছন্দের যে কোনো একটিকে বেছে নেয়
তারা। গুটারেস ১৩টি আগ্রহী ভোট পান এবং কোনো মন্তব্য
নয় এমন ২টি ভোট পান। জাতিসংঘে রাশিয়ার অ্যাম্বাসাডর
ভিটালি চার্কিন সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ষষ্ঠ
নির্বাচনের পরে আমরা স্পষ্টতই এগিয়ে থাকা একজনকে পেয়েছি
এবং তার নাম অ্যান্টোনিও গুটারেস।’ এ সময় পরিষদের অন্য
১৪ সদস্য দেশের তার সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। ৬৬ বছর
বয়সী গুটারেস আগামী বছরের শুরুতেই তার নতুন দায়িত্বভার
গ্রহণ করবেন। ১০ বছর জাতিসংঘের মহাসচিব থাকা দক্ষিণ
কোরিয়ান বান কি মুনের উত্তরসূরি হবেন তিনি। গুটারেস ১০
বছর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
Top
প্রতি ৭ সেকেন্ডে একটি করে বাল্যবিবাহ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বব্যাপী প্রতি ৭ সেকেন্ডে একটি করে বাল্যবিবাহের
ঘটনা ঘটছে। এর শিকার হচ্ছে ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়েরা।
সেভ দ্য চিলড্রেনের নতুন এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে
এসেছে। প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে, ১০ বছর বয়সের অনেক
মেয়েকে তাদের চেয়ে বয়সে অনেক বড় পাত্রের সঙ্গে বিয়ে
দেয়া হচ্ছে। এসব ঘটনা বেশি ঘটছে আফগানিস্তান, ইয়েমেন,
ভারত ও সোমালিয়ার মতো দেশে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে
বলা হয়, গতকাল আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসে নতুন
প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন। সংগঠনটি
বলছে, বাল্যবিবাহের ফলে নানা ধরনের অসুবিধার মধ্যে
মেয়েদের পড়তে হয়। আর দেশে দেশে সংঘর্ষ, দারিদ্র্য ও
মানবিক সংকটের মতো কারণ মেয়েদের বাল্যবিবাহের দিকে ঠেলে
দিচ্ছে। সংগঠনটির সিইও হেল থর্নিং-স্মিট বলেন,
‘বাল্যবিবাহ মেয়েদের জীবনে সমস্যার একটি চক্র তৈরি করে।
এটা মেয়েদের শিক্ষা ও বিকাশের মৌলিক অধিকার থেকে
বঞ্চিত করে, বঞ্চিত করে তাদের শিশু থাকার সুযোগ থেকে।
বেশি অল্প বয়সে যেসব মেয়ের বিয়ে হয় তাদের বেশিরভাগই
স্কুলে যেতে পারে না এবং তাদের পারিবারিক সহিংসতা,
নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হতে হয়। তারা গর্ভবতী হয়ে পড়ে
এবং এইচআইভিসহ অন্যান্য যৌনবাহিত রোগের ঝুঁকিতে থাকে।’
‘এভরি লাস্ট গার্ল’ নামের ওই প্রতিবেদনে স্কুলে যাওয়া,
বাল্যবিবাহ, অল্পবয়সে গর্ভধারণ, মাতৃ মৃত্যুর হার ও
সংসদে নারীদের উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে মেয়েদের জন্য
সবচেয়ে কঠিন দেশের র্যাংকিং করা হয়েছে। এই র্যাংকিংয়ে
সবচেয়ে নিচের পাঁচটি দেশ হলো- চাদ, নাইজার, সেন্ট্রাল
আফ্রিকান রিপাবলিক, মালি ও সোমালিয়া। প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে, যেসব দেশে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে সেসব দেশের
মেয়েরাই বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে বেশি রয়েছে। অনেক
শরণার্থী পরিবারেই মেয়েদের দারিদ্র্য ও যৌন নির্যাতনের
হাত থেকে মেয়েদের বাঁচাতে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে থাকে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের মানবিক
বিপর্যয়েও মেয়েরা ক্ষতির শিকার হয়। যেমন- সিয়েরা লিওনে
ইবোলা মহামারীর কারণে দেশটির স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। ওই
সময় প্রায় ১৪ হাজার কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। ইউনিসেফের
হিসাবে, বর্তমানে বিশ্বে বাল্যবিয়ের শিকার মেয়েদের
সংখ্যা প্রায় ৭০ কোটি। ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ৯৫
কোটিতে দাঁড়াবে।
Top
এই পাঁচটি গুজব পৃথিবী
কাঁপিয়ে দিয়েছিল
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন গোলমেলে
পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল যে, তাকে সামলাতে হিমশিম খেতে
হয় প্রসাসন ও গণমাধ্যমকে।
গুজবে কান দেবেন না। এই সাবধানবাণী সত্ত্বেও গুজব রটে।
আর দাবানলের মতো ছড়িয়েও পড়ে। যাঁরা এই গুজব-প্রবাহ থেকে
নিজেদের সরিয়ে রাখতে চান তাঁরাও এক সময়ে ব্যর্থ হন সেই
বন্যা থেকে বাঁচতে। বাঁধ ভেঙে গুজব গ্রাস করে
শহর-বন্দর-গ্রাম-প্রান্তর। এক সময়ে তুঙ্গে ওঠা গুজব
কিছুদিন পরেই বিস্মৃতির অতলে চলে যায়। তার উপরে পলি পড়ে
নতুন গুজবের। আবার তাকে সরিয়ে জায়গা করে নেয় নতুনতর
গুজব। এমন বহু গুজব আছে, যারা রীতিমতো সমস্যায় ফেলেছিল
মিডিয়াকে। জনগণ সেই সব রটনাকে ঘটনা বলে ধরে নিয়ে এমন
গোলমেলে পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল যে, তাকে সামলাতে
হিমশিম খেতে হয় প্রসাসন ও গণমাধ্যমকে। তেমন পাঁচটি ‘মহাগুজব’-এর
কথা রইল এখানে।
* ২০১৫-এর ২৪ জুলাই ব্রিটেনের ‘ডেলি এক্সপ্রেস’-এ একটি
প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, একটি সমীক্ষা
অনুযায়ী, ব্রিটেনের স্কুলগুলিতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার
উঠে যেতে বসেছে। ইমিগ্রেশনকেই এর জন্য দায়ী করা হয়। এই
‘খবর’ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে
যায় সেই পোস্ট। পরে দেখা যায়, ওই সমীক্ষায় উল্লেখিত
পরিসংখ্যানগুলিকে এদিক-ওদিক করা হয়েছিল। দু’টি ভাষা
বলতে পারে এমন স্কুলছাত্রদের ইংরেজি জানে না বলে
উল্লেখ করা হয়েছিল। আর এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়
তীব্র জাতিবিদ্বেষ মাথা চাড়া দেয়। যাকে সামলাতে দম
বেরিয়ে যায় প্রশাসনের।
* মাইকেল জ্যাকসন বেঁচে আছেন এমন একটা গুজব ছড়ায় ২০১৫
নাগাদ। একটি ফেক ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে জানানো হয়,
মাইকেলকে বহাল তবিয়তে প্যারিসের রাস্তায় ঘুরতে দেখা
গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াবাজরা ঝাঁপিয়ে পড়েন এই ভিডিওটি
নিয়ে। তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। মাইকেল-ফ্যানবৃন্দ
হাপুস নয়নে পোস্ট করতে থাকেন তাঁদের আইডলকে স্টেজে ফিরে
আসার জন্য। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই জানা যায় ভিডিওটি
‘ফেক’। যাবতীয় আবেগ লহমায় নিভে যায়।
* ২০১৪-এ মার্কিন কমেডিয়ান জোয়ান রিভারস এক অতি খাজা
কমেডি শো-তে ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে
‘রূপান্তরকামী’ বলে বসেন। এ নিয়ে বিতর্ক উঠলে রিভারস
ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন রূপান্তরকামীরা
সুন্দর মানুষ। এতে অপমানের কী রয়েছে? রিভারসের এই
রসিকতাকে সত্যি ধরে নিয়ে গুজব ছড়ায় দাবানলের মতো।
অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন মিশেল তাঁর সেক্সুয়াল
আইডেন্টিটি গোপন রাখেন। চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির
সৃষ্টি হয় এই গুজবকে ঘিরে।
* মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্পর্কে প্রায়শই
যে গুজবটি মাথা চাড়া দেয়, সেটি তাঁর ধর্মবিশ্বাস নিয়ে।
তাঁর মধ্যানাম ‘হুসেন’-এর কারণেই এই গুজবটি রটে।
ইসলামিক টেররিজমের সূত্র ধরে ওবামার নীতি নিয়েও প্রশ্ন
তুলতে শুরু করেন দেশের সাধারণ মানুষ। পরিসংখ্যান
জানাচ্ছে, আজও ২০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক আর ৩১ শতাংশ
রিপাবলিকান বিশ্বাস করেন, ওবামা ইসলাম ধর্মাবলম্বী।
* ভারতের সবথেকে বিখ্যাত গুজব সম্ভবত নেতাজি
সুভাষচন্দ্র বসুকে ঘিরে। অন্য কিছু নয়, তাঁর
‘প্রত্যাবর্তন’ নিয়ে এত বেশি গুজব রটেছে যে, তাকে
গুজবের বিশ্ব রেকর্ডের তালিকার উপরের দিকেই রাখা যায়।
ভারতীয়, বিশেষ করে বাঙালিমাত্রেই জানেন এই গুজবের
মাহাত্ম্য।
হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ
মিরপুরের বাসযাত্রীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ট্রাফিক জ্যামে বাস এসে থামতেই হাতে তালি দিতে দিতে উঠে
পড়লেন দুজন হিজড়া। না, তারা যাত্রী হয়ে গন্তব্যে
যাওয়ার জন্য বাসে উঠেননি। তাদের উদ্দেশ্য চাঁদা তোলা।
বাসে উঠেই দুজন দুদিক দিয়ে যাত্রীদের বিভিন্ন সম্বোধন
করে চাঁদা চাইতে লাগলেন। চাঁদার সর্বনিম্ন পরিমাণ ৫
টাকা। বেশ মার্জিত তাদের ভাষা। তবে কেউ দিতে অপরাগতা
প্রকাশ করলেই সেই ভাষা বদলাতে সময় লাগেনা।
হিজড়াদের গ্রুপে সাধারণত দুজন করে থাকে। মিরপুর ১০
নম্বর গোলচক্কর হয়ে যেসব বাসযাত্রীরা নিয়মিত যাতায়াত
করেন তাদেরকে প্রায় প্রতিদিনই এই দৃশ্যের মুখোমুখি হতে
হয়। সাধারণত হিজড়াদের নিয়ে কেউ ঘাঁটাতে চায় না। প্রথমে
অনুরোধ; তারপর জবরদস্তি করে হলেও টাকা আদায় করে ছাড়ে।
যদি কোন যাত্রী কোনো কারণে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ
করে তখন তাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল বাক্যবর্ষণ শুরু হয়।
বাধ্য হয়েই তাই বেচারা যাত্রীকে টাকা দিতে হয়।
কিন্তু কেন এই চাঁদাবাজি? একজন হিজড়াকে জিজ্ঞেস করলে
তিনি বলেন, “ছেলে-মেয়েদের খাওয়াব, আমরা খাব। তাই টাকা
তুলছি।” দুজনেই নাম প্রকাশে অপরাগ। সাংবাদিক পরিচয় দিলে
দ্রুত নেমে যেতে থাকেন বাস থেকে। নামার সময় একজন বলে
উঠেন, “আপনারা ভদ্রলোকরা তো আমাদের চাকরি দেন না,
আমাদের খাওয়াবে কে?” জোর করে টাকা নেন কেন?-জিজ্ঞেস
করলে তিনি বলেন, “আমরা জোর করে নেইনা।”
এমন সময় বাসযাত্রীরাও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
একটি বেসরকারী কম্পানিতে চাকরিরত নুরুল আফসার বলেন,
“ভাই, একা থাকলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু পরিবার নিয়ে
যখন বাসে উঠি তখনও এদের অশ্লীল কথা শুনতে কেমন লাগে
বলুন তো?”
সরকারী বাঙলা কলেজের ছাত্র রবিন বলেন, “আমাকে কলেজ এবং
টিউশনির জন্য দিনে বেশ কয়েকবার এই পথে যেতে হয়। এর ফলে
দিনে একাধিকবার ওদের খপ্পরে পড়তে হয়। আর টাকা না দিয়ে
কোনো উপায় নেই।”
বাসযাত্রী শারমিন খান বলেন, “একদিকে ভিক্ষুকদের উপদ্রব,
অন্যদিকে এই হিজড়া। ভিক্ষুকদের তাড়ানো যায় কিন্তু ওদের
সুন্দর করে ‘না’ বললেও সমস্যা। আজে বাজে কথা বলা শুরু
করে।” মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত
একজন পুলিশ সদস্যকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “এটা নিয়ে কেউ অভিযোগ
করেনি। ওরা মাঝেমধ্যে কিছু টাকা-পয়সা তোলে বলে জানি।
যাত্রীরাও খুশি হয়ে দিয়ে দেয়।”
রাস্তা পারাপারে আইন না মানায় মুরগির জেল!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রতি বছর রাস্তা পার হতে গিয়ে সারা বিশ্বে কয়েক লাখ
দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনা এড়াতে তাই
অনেক দেশই কড়া আইন প্রণয়ন করে থাকে। অনেক দেশে আইন
থাকার পরও লোকজন দ্রুত গতিতে ছুটে যাওয়া গাড়ির মধ্যে
দৌঁড়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
তবে সমপ্রতি যুক্তরাজ্যের আইন না মেনে চলন্ত গাড়ির
মধ্যে রাস্তা পার হতে গিয়ে জেলে যেতে হয়েছে একটি
মুরগিকে। সকাল বেলা অফিসগামী লোকজন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার
সময় হঠাৎ ইস্ট মার্কেটগাইট এলাকার রাস্তার মধ্যে
মুরগিটিকে দেখতে পেয়ে টেইসাইড পুলিশ স্টেশনে খবর দেন
গাড়ি চালকরা। দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পুলিশের
একটি দল মুরগিটিকে বেশ কসরত করে ধরে নিয়ে যায় থানায়।
জেলের মধ্যে আটকে রেখে খবর দেওয়া হয় স্কটল্যান্ড প্রাণি
সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মীদের। যতোদিন এটির মালিককে
খুঁজে পাওয়া না যায় মুরগিটিকে থাকতে হবে তাদের সঙ্গে।
মুরগির মালিককে খুঁজতে ইতোমধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে
টেইসাইড পুলিশ।
Top
রামপাল প্রকল্প
সরানোর পরামর্শে অটল ইউনেসকোে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রামপালে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি
সুবিধাজনক অন্য কোনো স্থানে সরিয়ে নিতে পরামর্শ দিয়ে
সরকারের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে
ইউনেসকো। মঙ্গলবার ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ
প্রতিবেদনে বলা হয়, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে বিশ্ব
ঐতিহ্য সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টার ও
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)
যৌথভাবে এ আশঙ্কা প্রকাশ করে রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প
বাতিল বা সরানোর দাবিতে অটল থাকার বিষয়টি আবারও
জানিয়েছে।
এ বিষয়ে গত আগস্টেই সরকারকে চিঠি দিয়ে জবাব চেয়েছিল
জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাটি। গত ১০ অক্টোবর ইউনেসকোর
কাছে পাঠানো এক ফিরতি প্রতিবেদনে বাংলাদেশ জানিয়েছে,
রামপাল প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
বিদ্যুৎকেন্দ্রর নির্মাণকাজ চলবে। সরকারের কাছ থেকে
জবাব পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে
প্রকাশ করল ইউনেসকো।
ইউনেসকোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়,
সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত স্থান থেকে
মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক এক হাজার ৩২০
মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে; যা বনের
জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
প্রতিবেদন মতে, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে চারটি
প্রধান দূষণের শিকার হবে সুন্দরবন। এগুলো হলো কয়লার
ছাইয়ের কারণে বায়ুদূষণ, বর্জ্য অবমুক্ত ছাই ও পানি থেকে
দূষণ, জাহাজ চলাচল বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত নদী খননে জলজ
পরিবেশ ধ্বংস এবং শিল্প-কারখানা স্থাপন ও এর সঙ্গে
সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো তৈরির কারণে সমন্বিত নেতিবাচক
প্রভাব বনের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি করবে। এ জন্য
রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাতিল অথবা অন্যত্র সরিয়ে
নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনেসকো।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে সরকার নতুন কোনো
সিদ্ধান্ত নেবে কি না তা আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে
প্রতিবেদন আকারে জানাতে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারে দিতে
বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেছে ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড
হেরিটেজ সেন্টার ও আইইউসিএন। একই সঙ্গে বিশ্ব ঐতিহ্য
রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের এক পৃষ্ঠার
একটি সারাংশও প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করা
হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিবেদনটি ২০১৭ সালে অনুষ্ঠেয়
বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪১তম অধিবেশনে পর্যালোচনা করা হবে।
এর পরই সুন্দরবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে
কি না এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত
প্রতিবেদনে বলা হয়।
১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায়
অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আগামী বছর এই স্বীকৃতির ২০ বছর
পূর্তি উদযাপন করা হবে। সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা এবং
বনের ওপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জলবায়ু পরিবর্তনের
প্রভাব খতিয়ে দেখতে চলতি বছরের মার্চে ইউনেসকো ও
আইইউসিএনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসে। তারা
রামপাল প্রকল্প স্থান ও সুন্দরবন ঘুরে এবং সরকার ও
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে গত জুন মাসে একটি
প্রতিবেদন জমা দেয়। এই প্রতিবেদনে রামপালকে সুন্দরবনের
জন্য মারাত্মক হুমকি উল্লেখ করে প্রকল্পটি বাতিল বা
অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
শিশু ধর্ষণের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে:
আইনমন্ত্রী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, 'শিশু ধর্ষণের বিচার
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে। অভিযুক্তদের কম সময়ের
মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে। আজ বুধবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে
বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধন
শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে এ কথা বলেন তিনি। তিনি
বলেন, এ ধরনের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাবে
এবং তার বিচারিক কাজ দ্রুত সময়ে হবে। আমি আশা করি,
ধর্ষণে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। যাতে
ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে কেউ সাহস না পায়।
প্রসঙ্গত, দিনাজপুরের পাবর্তীপুর উপজেলায় পাঁচ বছর বয়সি
ধর্ষিত শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে
পুলিশ। ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগ শিশুর বাবা ঘটনার দুই
দিনের মাথায় দুইজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার
আসামিরা হলেন স্থানীয় সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোসেন
(৪৮)। এর মধ্যে সাইফুল ইসলামকে দিনাজপুর শহর থেকে
গ্রেফতার করা হয়েছে।
মানবীয় মূল্যবোধের
অবক্ষয়ে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গত ৩ অক্টোবর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নামধারী
এক নরপশু সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা
আক্তার নার্গিসকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে
হত্যার চেষ্টা করে। খাদিজা সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক-
সর্বক্ষণ এ প্রার্থনা করছি। এ ধরনের বীভৎস ঘটনা ঘটলে
আমাদের ঘুম ভাঙে, আমরা সবাই বেশ তৎপর হয়ে উঠি। মিডিয়ায়
বড় আকারে খবর হয়, তারপর ক’দিনেই আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি,
মিডিয়ায় খবরের আকার ছোট হতে হতে মিলিয়ে যায়- সবাই আবার
ঘুমিয়ে পড়ি। এভাবেই চলছে। সন্ত্রাসী ঘটনা সব দেশেই
কম-বেশি ঘটে; কিন্তু কে কিভাবে সেটাকে নিয়ে ভাবে তা
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত সামগ্রিক
পরিবেশ-পরিস্থিতির নিরিখে এসবের স্থায়ী প্রতিকারের
চিন্তা করা। তবে সরকার যেভাবে খাদিজার পাশে দাঁড়িয়েছে,
তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
বদরুলরা নারী উত্ত্যক্তকারী, মাদকসেবী, সন্ত্রাসী হোক
আর জঙ্গিই হোক, এরা যে মানবিক বিকৃতির শিকার তা সবাই
জানেন। কিন্তু এসব ব্যাধির টেকসই সমাধান কী? আমাদের
খুঁজে বের করতে হবে- কেন সমাজে কিছু বদরুল তৈরি হয়। এর
কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর প্রতিকারের ব্যবস্থা না
নিলে এমন কুকর্মের স্থায়ী সমাধান হবে না। বদরুলরা এ
সমাজেই জন্ম নিয়েছে, এ সমাজেই বেড়ে উঠেছে। আবার অনেক
আলোকিত মানুষও এ সমাজেই জন্ম নিচ্ছেন, বেড়ে উঠছেন। এই
প্রভেদের রহস্য কী? একজন মানুষের মধ্যে সত্যিকার
মানবিক বোধ থাকলে তার পক্ষে কোনো মানুষ এমনকি কোনো
প্রাণীর প্রতিও এমন সহিংস আচরণ করা সম্ভব নয়। আর এই
মনুষ্য বৈশিষ্ট্য বা মানবিক বোধ তো মানুষ সমাজের নানা
উপাদান থেকেই শেখে। কাজেই আমাদের ভাবতে হবে, বদরুলের
মতো বখাটে বা অপরাধীরা পরিবারে সচরাচর কী শিক্ষার মধ্যে
দিয়ে বড় হয় এবং পরিবারের বাইরে তারা সামগ্রিকভাবে কী
শিক্ষা পায়।
গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, একশ্রেণীর মানুষ বিভিন্ন
সন্ত্রাসী বা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে নিত্য জড়িত। এরা
কেউ কোরবানির পশু কাটার চাপাতি দিয়ে মানুষকে দিবালোকে
কুপিয়ে মারে, কেউ তিনতলা থেকে ময়লা ফেলার মতো নিচে
ছুঁড়ে ফেলে, কেউ বস্তাবন্দি করে নদীতে পানির নিচে পুঁতে
ফেলে, কেউ হাত-পা বেঁধে হাড্ডি গুঁড়া করে। এরা কেউ
গ্রামের নিরক্ষর কৃষক বা দিনমজুর নয়, প্রায় সবাই
শিক্ষিত, রীতিমতো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিত! আমরা তো
জানি, মানুষ শিক্ষিত হয়ে মানুষ ও সমাজের প্রাণ রক্ষা
করে, সমাজকে আরও সুন্দর করে। কিন্তু দেখছি, এই তথাকথিত
শিক্ষিতরা সমাজকে কলুষিত করায় রত, মানুষ ও সমাজের
প্রাণসংহারে লিপ্ত। সবাই নয়, সমাজের একটি অংশ
উচ্চশিক্ষিত হয়েও নানা সন্ত্রাসী বা অপরাধমূলক
কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। আবার যারা দুর্নীতির মাধ্যমে
দেশের সর্বনাশে লিপ্ত, তারাও সবাই কলেজ-বিশ্ববিদ্যাল
পড়ুয়া উচ্চশিক্ষিত। অর্থাৎ, এরা শিক্ষিত হয়েছেন কিন্তু
মানুষ হননি। এতে বোঝা যায়, এদের শিক্ষার মধ্যে কোথাও
না কোথাও গলদ রয়েছে। কোথায় এই
জাতিসংঘ
জন্মলগ্ন থেকেই বিশ্ব
শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) ভারপ্রাপ্ত
কমিশনার এস এম রুকন উদ্দিন বলেছেন, জাতিসংঘ তার
জন্মলগ্ন থেকেই বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ করে হানা-হানি, ক্ষুধা ও শরর্ণার্থী সমস্যা
নিরসনে জাতিসংঘ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
জাতিসংঘের অনেক সাফল্যের মাঝে অনেক ব্যর্থতাও রয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের
মধ্যকার দ্বন্দ নিরসনে জাতিসংঘকে আরো কার্যকরী ভূমিকা
পালন করতে হবে। তা না বিশ্বশান্তি বিনষ্ট হয়ে ভয়াবহ
পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
সিলেটে জাতিসংঘ দিবস উদযাপিত
তিনি জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত র্যালী,
কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির
বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন। গত ২৩ অক্টোবর বিকেলে নগরীর
দরগাহ গেইটস্থ ড. আর কে হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বামাকের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও মহানগর
সভাপতি আলহাজ্ব আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয়
বিশেষ প্রতিনিধি মনোরঞ্জন তালুকদারের পরিচালনায় সভায়
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা আইনজীবী
সমিতির সভাপতি একেএম শমিউল আলম, সিলেট জেলা এডিশনাল
পিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম, সিলেট জেলা লিগ্যাল এইড
কমিটির সভাপতি এডভোকেট মোতাহির আলী, দৈনিক সিলেট বাণীর
নির্বাহী সম্পাদক এম এ হান্নান, বামাক সিলেট জেলার
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আছাদুজ্জামান, মহানগর সহ-সভাপতি
প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,
মহানগর সহ-সভাপতি জাদুশিল্পী মো. বেলাল উদ্দিন,
হবিগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ইসলাম উদ্দিন,
মহানগর যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট সাজ্জাদুর রহমান, বীর
মুক্তিযুদ্ধা সৈয়দ নুরুল হক খসরু, জাহাঙ্গীর আলম,
ফাইয়াজ হোসেন ফরহাদ, এডভোকেট বাবুল মিয়া, ফারুক আহমদ
শিমুল, আশিকুর রহমান রব্বানী, খালেদ মিয়া, ইউসুফ সেলু,
শফিকুর রহমান শফিক, গিয়াস উদ্দিন সরকার, আলী আহসান
হাবীব, ফরহাদ হোসেন খান, জুনেদ আহমদ, মধু মিয়া প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে এক বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর বিভিন্ন
সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে
কেক কাটা
অপরাধে জড়িত
শিশুদের বিকল্প পন্থায় সংশোধন দাবি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের বিকল্প পন্থায়
সংশোধনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। বিকল্প পন্থায়
সংশোধনের মডেল তৈরি করতে হবে। আদালতে আনার আগে পরিবার
ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগে অপরাধে
অভিযুক্ত শিশুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা
করতে হবে।
রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনের এ এস মাহমুদ কনফারেন্স হলে
গতকাল সোমবার সকালে ‘শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী বিকল্প
পন্থা: যশোর ও খুলনার অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ে
এক অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অপরাধে
অভিযুক্ত শিশুর হয়।
সুরক্ষায় জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস) ও জাতিসংঘের শিশু
উন্নয়ন তহবিল (ইউনিসেফ) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
সভায় জাগ্রত যুব সংঘের নির্বাহী পরিচালক এ টি এম জাকির
হোসেন বলেন, ছোট বা বড় অপরাধে অভিযুক্ত শিশুর জন্য
দেশের প্রতিটি থানায় শিশু হেল্প ডেস্ক এবং জেলা ও দায়রা
জজ আদালতে শিশুর জন্য শিশু কোর্টের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ
বলেন, শিশু অপরাধ মামলা সামলানোর ক্ষেত্রে আইনের মধ্যে
থেকে শিশুর স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা যায়, তা ভাবতে হবে।
জামিনের ক্ষেত্রে শিশুর সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক
পরিমন্ডল বিবেচনা করতে হবে। শিশু আইনেও কিছু সমস্যা আছে,
যা সংশোধনে কাজ করা হচ্ছে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউনিসেফের জিন লিবে বলেন,
‘শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের প্রত্যেকেরই সংশোধনের
জন্য দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার সুযোগ দেওয়া উচিত।’
সভায় যশোরের সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার মো.
শাহাবুদ্দিন বলেন, ২০১৩ সাল থেকে গত সেপ্টেম্বর
পর্যন্ত ৯৮ জন শিশু-কিশোর পরিবারের মাধ্যমে থানা থেকে
বিকল্প পন্থায় মুক্তি পেয়েছে। আর আদালতের সম্মতিক্রমে
৩৮ জন বিকল্প পন্থায় মুক্তি পেয়েছে।
প্রতিবছর অপুষ্টির
জন্য এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য ইতিবাচক। ক্ষুধা,
মঙ্গা, খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
করেছে। কমছে শিশুদের অপুষ্টিতে আক্রান্তের হারও। এরপরও
অপুষ্টির জন্য প্রতিবছর প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়,
যা স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের চেয়েও বেশি। জাতিসংঘের খাদ্য
কর্মসূচির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে একটি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় খাদ্য
সংকট ও অপুষ্টিকে প্রধান অন্তরায় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক
বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ
কামালের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ অর্থাৎ
প্রায় চার কোটি মানুষ এখনো খাদ্য সংকটে রয়েছে। এমনকি
তিনবেলা পেটপুরে খাওয়া তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
ইচ্ছেমতো বৈচিত্র্যময় খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। তারা
অপুষ্টিরও শিকার। নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও
এখনো প্রতি তিনজনে একটি শিশু নিপীড়নের শিকার। নানা
পদক্ষেপ সত্ত্বেও গত কয়েকবছরে দেশের অতি অপুষ্টিহীনতার
হার সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।দেশের
গ্রামাঞ্চল ও বস্তিতে এ প্রবণতার হার বেশি। তবে খাদ্য
নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপুষ্টির হার হ্রাসের মাধ্যমে
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত
করতে দেশের বিশেষ পদক্ষেপ রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে
উল্লেখ করা হয়।
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)
অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশসহ সমসাময়িক দেশের অপুষ্টি
দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু সুপারিশ
করা হয়েছে প্রতিবেদনটি। এতে বলা হয়, সমন্বিত পদক্ষেপের
মাধ্যমে খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জন করতে হবে। অপুষ্টির
হার কমাতে গণসচেতনতাসহ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রের মধ্যে
সমন্বয় সাধন করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বরাদ্দ,
দায়িত্ব সচেতনতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।
সমাজের প্রতিটি নাগরিককে এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসতে
হবে। নারীদের বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে। কৃষি ক্ষেত্রে
চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও চাষাবাদের
পদ্ধতিতে বৈচিত্র্যতা আনতে হবে। জোরদার করতে হবে
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি।
খাদিজার উপর হামলার
প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
মানববন্ধন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সিলেট সরকারী কলেজের ছাত্রী খাদিজার উপর বর্বরোচিত
হামলার প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশন। সোমবার সকাল ১০ টায় শহরের আলফাত
উদ্দিন স্কয়ারে কমিশনের জেলা,সদর উপজেলা ও পৌরসভা
কমিটির এক যৌথ উদ্যোগে হামলাকারী বখাটে ছাত্র বদরুলের
সব্বোর্চ শাস্তির দাবীতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির উপদেষ্টা জেলা আইনজীবী
সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মফচ্ছির মিয়া এডভোকেট। কমিশনের
সুনামগঞ্জ জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসীম উদ্দিন
দিলীপের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক
সিরাজুল ইসলাম পলাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন
কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সহ-সভাপতি এডভোকেট
শহীদুল হাসমত খোকন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আরতি তালুকদার
কলি,সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক আল-হেলাল,যুগ্ম সম্পাদক
এডভোকেট হেলিনা আক্তার, শফিকুল ইসলাম,অবসরপ্রাপ্ত সেনা
সার্জেন্ট আব্দুল করিম বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা অজেদ
আলী খন্দকার, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া,সুনামগঞ্জ
সদর উপজেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল কাদির শানিমশ
মিয়া,সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ারুল হক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর
শামীনূর রশীদ চৌধুরী সামু,সাবেক কাউন্সিলর মোঃ মফিজুল
হক,যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা জিয়াউর রহমান,মোজাহিদুল
ইসলাম মজনু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মহিবুর রহমান
মুহিব,সহ অর্থ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, প্রচার সম্পাদক
সাংবাদিক ফরিদ আহমদ,সুনামগঞ্জ পৌরসভা শাখার সভাপতি মোঃ
জাকারিয়া জামান তানভীর ,সাধারন সম্পাদক শাকিল আহমেদ,সহ
আইন বিষয়ক সম্পাদক শানমশ তালুকদার, অর্থ সম্পাদক মহসিন
উদ্দিন চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সিহাব আহমদ ও
মুক্তিযোদ্ধার সনমশান শফিকুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধনে
কমিশনের প্রথম থেকে মেধাবী ছাত্র অর্ক এর চিকিৎসা
সহায়তার লক্ষ্যে ড. মফচ্ছির মিয়া এডভোকেট ও জসিম
উদ্দিন দিলীপ এর নেতৃত্বে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি অর্থ
সংগ্রহ উপকমিটির মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে তহবিল গঠন করা
হয়।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
--------------------------------------
ইয়েমেনে ক্ষুধার সঙ্গে শিশুদের
যুদ্ধ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের হোদাইদা শহরের একটি হাসপাতালের
নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অপুষ্টিতে ভোগা এক
শিশু। সম্প্রতি তোলা ছবিটি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়।
যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ছয় বছরের শিশু সালেম ইসা। তার
হাড়জিরজিরে কায়া দেখে মনে হয় বয়সটা আরও কম। চিকিৎসার
জন্য অভিভাবকেরা তাকে ভর্তি করেছেন ইয়েমেনের সানায়
অবস্থিত সরকারি থাওরা হাসপাতালে। শুধু ইসা নয়, তার মতো
লিকলিকে হাত-পা নিয়ে অনেক শিশু ভর্তি হয়েছে ওই
হাসপাতালে। সঙ্গে অভিভাবকদের ভিড়। এই শিশুরা দেশটিতে
চলা গৃহযুদ্ধের সরাসরি কুফল ভোগ করছে বলে গার্ডিয়ানের
এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
থাওরা হাসপাতালে আগে মাসে গড়ে এমন ১০ থেকে ২০ জন শিশুর
আগমন ঘটত। কয়েক মাসে তা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি মাসে গড়ে
১২০ জন শিশুকে নিয়ে আসা হয়।
হাসপাতালে ইসার মা বলছিলেন, ‘আমি সাধারণত তাকে বিস্কুট
খাওয়াই। কিন্তু সে খুবই দুর্বল। সে কিছুই খেতে পারছে
না।’ অগত্যা তিনি সন্তানকে বাঁচাতে এই হাসপাতালে নিয়ে
এসেছেন।
এমন শিশুদের দেখা যে শুধু থাওরা হাসপাতালে মিলছে, এমন
নয়। আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দরিদ্র এই দেশের বিভিন্ন
স্থানের হাসপাতালে ক্রমে এমন শিশুদের ভিড় বাড়ছে।
হোদেইদা নামের একটি শহরের এক হাসপাতাল পরিদর্শনের
অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জাতিসংঘের মানবকল্যাণ
সহায়তাপ্রধান স্টিফেন ও’ব্যারেন বলেন, ছোট শিশুরা চরম
অপুষ্টিতে ভুগছে।
তবে কি দেশটিতে দুর্ভিক্ষ হানা দিয়েছে? এ ব্যাপারে ওই
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত কয়েক মাসের গৃহযুদ্ধ ও সরকার
বন্দর আটকে রাখার কারণে দেশটিতে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি
হচ্ছে।
জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখ।
এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে। এই
সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।
ইউনিসেফের মতে, চরম অপুষ্টিতে ভুগে ৩ লাখ ৭০ হাজার
শিশুর সুষ্ঠু বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ১৫ লাখ শিশু
ক্ষুধার্ত থেকে যাচ্ছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যার সৃষ্টি
করবে। দেশটির পাঁচ বছরের কমবয়সী অর্ধেকের বেশি শিশু
চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।
ইয়েমেনে শিশুদের ভবিষ্যৎ এমন হুমকির মুখে পড়ার পেছনে
সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী হুতিদের গৃহযুদ্ধের প্রত্যক্ষ
প্রভাব রয়েছে। দেশটির সৌদি জোট-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট
আবদ রাব্বু মানসুর হাদি দেশটির হুতি বিদ্রোহীদের দমাতে
তাদের অধ্যুষিত এলাকায় বন্দর অবরোধ আরোপ করেছেন। এ ছাড়া
ইরানের সমর্থন পাওয়া হুতি বিদ্রোহীদের অর্থনৈতিক দিক
দিয়ে চাপে ফেলতে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাপারে কিছু
পরিবর্তন এনেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদর দপ্তর
রাজধানী সানা থেকে সরিয়ে এডেনে নিয়ে গেছেন। কারণ, সানা
এখন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া তিনি নতুন একজন
গভর্নর নিয়োগ করেছেন। আর নতুন গভর্নর ঘোষণা দিয়েছেন,
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে কোনো অর্থ নেই। এটি দেশটির
সাধারণ নাগরিকদের মনে আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছে। নগদ অর্থের
সংকট দেখা দিয়েছে। খাদ্যদ্রব্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্ভব হলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে। শিশুদের
নিয়ে কাজ করছে যে মন্ত্রণালয়গুলো, তাদের মধ্যে সমন্বয়
বাড়ানোরও চেষ্টা চালানো হবে।
কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এই বৈঠক সঞ্চালনা
করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।
বক্তাদের আলোচনায় ঘুরেফিরে আসে শিশু গৃহকর্মী
জান্নাতুল ফেরদৌসের কথা। এই শিশুর মাথায় গরম ইস্ত্রি
দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। এক বছর ধরে চালানো হয়েছে
নির্মম নির্যাতন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি প্রকাশ পায়।
বর্তমানে জান্নাতুলকে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে
উন্নত চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর থেকে এনে ঢাকা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
ট্রাস্ট শিশুটির পুনর্বাসন ও আইনি সহায়তা দিচ্ছে।
আলোচনায় গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা
কে চৌধূরী বলেন, ‘শিশু গৃহকর্মীদের প্রতি মানবিক হওয়ার
কোনো সুযোগ নেই। কারণ, আমরা আমাদের ঘরে শিশু গৃহকর্মী
রাখবই না। নিজের সন্তান স্কুলে যাচ্ছে, তার সঙ্গে
পানির ফ্লাস্ক দিয়ে পাঠানো হচ্ছে আরেক শিশুকে। এটি
মূল্যবোধের অবক্ষয় ছাড়া আর কিছু নয়।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের সদস্য মোহাম্মদ আজিজ খান বলেন,
‘ঘরে কাজের লোক থাকছে, কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে কথা
বলতে পারে না। একসঙ্গে বসে খেতে পারে না। এ ধরনের
চিত্র সমাজে খুব স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিক চিত্রই
গ্রহণযোগ্য না। সেখানে তাদের খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা
দেওয়াসহ অন্যান্য নির্যাতন করা হচ্ছে। এটি হচ্ছে
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। জান্নাতুলের ঘটনাকে সামনে রেখে
বলি, আমার বাসা, আমার সন্তানের বাসা বা নাতির বাসায় এ
ধরনের নির্যাতনের ঘটনা কখনো ঘটবে না।’
অধিকাংশ দেশে অধিকারবঞ্চিত নারীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন,
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ হলেও অধিকাংশ দেশে
নারীরা অধিকারবঞ্চিত। উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে নারী
ও পুরুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধের
মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি দেশে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা
করতে হবে। তিনি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ
করার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ইন্টার
পার্লামেন্টারি ইউনিয়নে (আইপিইউ) সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের
নারী সংসদ সদস্যদের সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময়
সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন, এম এ আওয়াল, রেজওয়ান আহমদ
তৌফিক, নাছিমা ফেরদৌসী ও রওশন আরা মান্নান এবং জেনেভায়
বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিরোধীদলীয় নেতা আরো বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে এ বিষয়ে
আলোচনা হলেও প্রকৃতপক্ষে নারীর ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য
অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয়
নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সংসদ উপনেতা নারী হলেও
প্রকৃত অর্থে নারীর ক্ষমতায়ন হয়নি। এ বিষয়ে আইপিইউ কাজ
করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ সময় রওশন এরশাদ আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল
বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য ১৩৬তম আইপিইউ সম্মেলনে
অংশগ্রহণের জন্য বিশ্বের নেতাদের আমন্ত্রণ জানান। পরে
তিনি সেখানে বাংলাদেশি স্টল পরিদর্শন করেন এবং আইপিইউতে
অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে
মতবিনিময় করেন।
কুমিল্লায় নির্যাতনে
ক্ষতবিক্ষত শিশু গৃহকর্মী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শিশুটি নিজের নামও ঠিকভাবে বলতে পারে না। কী হয়েছে
জিজ্ঞেস করলে শুধু আঘাতের ক্ষতচিহ্ন দেখায় আর
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। উত্সুক মানুষের ভিড় আর
পুলিশের উপস্থিতিতে তার চোখেমুখে ফুটে ওঠে আতঙ্কের ছাপ।
নাম জানতে চাইলে মৃদু কণ্ঠে বলে, ‘ইভা’। কে মেরেছে?
‘পলি খালা।’ এই দুটি উত্তর ছাড়া আর কিছ্ইু বলতে পারছিল
না শিশুটি।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার কালিয়াজুড়ি
মাজারসংলগ্ন এলাকার একটি ভবনের তিনতলা থেকে ইভা নামের
পাঁচ বছর বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে ঘরে
আটকে রেখে পালিয়ে গেছেন গৃহকর্ত্রী।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক আবুল হোসেন
জানান, আইনউদ্দিন শাহ মাজার রোড এলাকায় একটি শিশুকে
আটক করে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন
গৃহকর্ত্রী রোমানা আক্তার পলি (৪০) পালিয়ে যান।
পুলিশ এলাকাবাসী ও বাড়ির মালিক ময়নাল হোসেনের সহায়তায়
ভবনের তিনতলার একটি কক্ষ থেকে ইভাকে উদ্ধার করে
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটির হাতে
ও শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে পোড়া ক্ষতের দাগ। সে জানায়,
গৃহকর্ত্রী পলি খুন্তি গরম করে তার শরীরের বিভিন্ন
স্থানে ছেঁকা দিতেন। নির্যাতনের যন্ত্রণায় ও ভয়ে
সন্ত্রস্ত ইভা জানায়, তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম নজু।
এ ছাড়া আর কোনো তথ্য দিতে পারছিল না সে।
এসআই আবুল হোসেন বলেন, ‘শিশুটি যে বাসায় কাজ করত তার
গৃহকর্তা দেবীদ্বার উপজেলার প্রজাপতি গ্রামের মাহবুবুর
রহমান। রোমানা আক্তার পলি তাঁর স্ত্রী। বাসার সবাই
পালিয়ে গেছে।’
এসপি পদমর্যাদার ২৮
কর্মকর্তাকে রদবদল
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২৮ কর্মকর্তাকে রদবদল
করে গতকাল সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফারজানা
জেসমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ১৫
ডিসেম্বরের মধ্যে এই আদেশ কার্যকর হবে। এ ছাড়া চারজন
ডিআইজি প্রিজন্সকে বদলি করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁদের রদবদল করা হয়েছে
চুয়াডাঙ্গার এসপি রশীদুল হাসানকে জয়পুরহাটে,
কুড়িগ্রামের এসপি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহকে সিলেট
মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (ডিসি), শেরপুরের
এসপি মেহেদুল করিমকে কুড়িগ্রামে, পাবনার এসপি আলমগীর
কবীরকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি, ডিএমপির
ডিসি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খানকে গোপালগঞ্জের এসপি,
গোপালগঞ্জের এসপি এস এম এমরান হোসেনকে ডিএমপির
উপকমিশনার, ফরিদপুরের এসপি জামিল হাসানকে ডিএমপির
উপকমিশনার, এনটিএমসির ডাটাবেইস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এ কে
এম ইকবাল হোসেনকে কক্সবাজারে, রাজবাড়ীর এসপি জিহাদুল
কবিরকে পাবনায়, ১১ এপিবিএনের এসপি সালমা বেগমকে
রাজবাড়ীতে, জয়পুরহাটের এসপি মোল্ল্যা নজরুল ইসলামকে
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার
আবদুর রহমান খানকে ট্যুরিস্ট পুলিশে, পুলিশ স্টাফ
কলেজের মোহাম্মদ নজরুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছার
দ্বিতীয় এপিবিএনে, ঝালকাঠির এসপি সুভাষ চন্দ্র সাহাকে
ফরিদপুরে, মাগুরার এসপি এ কে এম এহসানউল্লাহকে নৌ
পুলিশে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এসপি মিজানুর রহমানকে আরআরএফ
রাজশাহীতে, আরআরএফ রাজশাহীর এসপি বি এম হারুন অর রশীদকে
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশে, কক্সবাজারের এসপি শ্যামল কুমার
নাথকে সিএমপির উপকমিশনার, এসএমপির উপকমিশনার মোশফেকুর
রহমানকে হাইওয়েতে (প্রশাসন ও প্ল্যানিং), হাইওয়ের (প্রশাসন
ও প্ল্যানিং) এসপি শাহিনা আমিনকে ১১ এপিবিএন ঢাকায়, নৌ
পুলিশের এসপি জোবায়েদুর রহমানকে ঝালকাঠিতে, ঢাকা
রেঞ্জের ডিআইজি অফিসের এসপি সৈয়দ হারুন অর রশীদকে
ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে, ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার
আসাদ উল্লাহ চৌধুরীকে এসবিতে, পুলিশ সদর দপ্তরের
অতিরিক্ত এসপি প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে ডিএমপিতে, এসবির
বিশেষ পুলিশ সুপার সুলতানা নাজমা হোসেনকে ঢাকা রেঞ্জ
ডিআইজি অফিসে ও পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি রফিকুল হাসান
গনিকে শেরপুরের এসপি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
চার ডিআইজি প্রিজন্স বদলি : চারজন কারা উপমহাপরিদর্শককে
(ডিআইজি প্রিজন্স) বদলি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কারা
অধিদপ্তরের ডিআইজি প্রিজন্স এ কে এম ফজলুল হককে সিলেট
বিভাগ সদর দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী
বিভাগের মো. বজলুর রশীদকে ঢাকায় কারা অধিদপ্তরে,
বরিশালের মো. আলতাব হোসেনকে রাজশাহী বিভাগে ও সিলেটের
মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে ঢাকা বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
গত ১৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শিরীন
রুবী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁদের বদলি করা হয়।
হাইতিতে কারাগার
ভেঙে ১৭০ জনের বেশি বন্দি পালিয়ে গেছেন।া
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশটির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে ৩০ মাইল উত্তরে
আরকাহায়ের কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
পালিয়ে যাওয়া বন্দিরা পাঁচটি রাইফেল নিয়ে গেছে। এ সময়
বন্দিদের সঙ্গে কারারক্ষীদের গোলাগুলিতে একজন রক্ষী ও
একজন বন্দি নিহত হয়েছেন।
পরে দেশটিতে নিয়োজিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের সহায়তায়
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের ধরতে
অভিযান শুরু করেছে।
হাইতির সরকার টুইটবার্তায় এ ঘটনাকে কারাবিদ্রোহ আখ্যা
দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে।
দেশটির বিচারমন্ত্রী ক্যামিল এদুয়ার্দ জুনিয়র
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, 'এক কারারক্ষী এ ঘটনার
সময় নিহত হন। তিনজন বন্দি আহত হন। তাদের মধ্যে পরে
একজন মারা যান।'
পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে ১১ জনকে পুনরায় আটক করা হয়েছে।
আরকাহায়ের কারাগারের বন্দিরা কোনো ইউনিফর্ম পরে না। ফলে
সাধারণ মানুষের মাঝে তাদের মিশে যাওয়া সহজ।
হাইতির কারাগারগুলোয় ভয়াবহভাবে ধারণক্ষমতার অনেক বেশি
বন্দি রয়েছে। বন্দিরা বিচারের আগেই বছরের পর বছর
কারাগারে আটক থাকেন।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে মহাপরিকল্পনা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে
সরকার। এর অংশ হিসেবে সারা দেশে গঠন করা হচ্ছে
কাউন্টার টেরোরিজম ও পুলিশ এন্টি-টেরোরিজম ইউনিট।
পরিকল্পনার মধ্যে আরও রয়েছে পুলিশ এভিয়েশন ইউনিট গঠন,
বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোয় পুলিশ নিয়োগ ও
ডিজিটালাইজড ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। পাশাপাশি
যুগোপযোগী তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ, উন্নতমানের অস্ত্র ও
গাড়িসহ লজিস্টিক সাপোর্ট, গোয়েন্দা তথ্য ব্যবস্থার
আধুনিকায়ন, প্রযুক্তিগত তদন্ত ব্যবস্থার প্রসার, ভবন
এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এছাড়া এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে
পুলিশে নেয়া হচ্ছে নতুন আরও ৫০ হাজার জনবল। পুলিশ
সদস্যদের জন্য উন্নত খাবার এবং পোশাক সরবরাহও রয়েছে এই
পরিকল্পনায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা
গেছে।
বৈঠকে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের নয়া এই
পরিকল্পনার বিষয়টি অবহিত করা হয়। এতে বলা হয়েছে,
বর্তমানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বাংলাদেশকে একটি
ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। জঙ্গি ও
সন্ত্রাসবাদ দমনে বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট ‘কাউন্টার
টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট’ (সিটিএন্ডটিসিইউ)
গঠন করা হয়েছে, যা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। জঙ্গি ও
সন্ত্রাসবাদ মাঠ পর্যায়ে বিস্তৃত হওয়ায় সারা দেশের
জন্য এ ইউনিট গঠন করার কথা ভাবা হচ্ছে। পুলিশের সক্ষমতা
বাড়াতে অত্যাধুনিক অস্ত্র, প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ,
দেশে ও বিদেশে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনে
হেলিকপ্টার এবং ড্রোন ব্যবহারেরও অনুমতি প্রদানের কথাও
ভাবা হচ্ছে। পুলিশের গোয়েন্দা সক্ষমতা বাড়াতেও নেয়া
হয়েছে নানা উদ্যোগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান
খান কামাল যুগান্তরকে বলেন, ‘সময়ের প্রয়োজনেই পুলিশের
সক্ষমতা বাড়াতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ তিনি
বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই এখন জঙ্গি ও
সন্ত্রাসবাদ একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে পুলিশ
বাহিনীর আরও আধুনিকায়নসহ তাদের সক্ষমতা-দক্ষতা এবং
যোগ্যতা বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে
বলেন, ‘পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ
হিসেবে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনাগুলো
বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ পুলিশ আরও দক্ষতার সঙ্গে
জনসাধারণকে উন্নত সেবা দিতে সক্ষম হবে।’
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে,
পুলিশ বাহিনীর সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানো ও আধুনিকায়নের
জন্য সরকার এই বাহিনীতে নতুন করে আরও (দ্বিতীয় পর্যায়)
৫০ হাজার জনবল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে
পুলিশ সদর দফতরের বিদ্যমান বিভিন্ন ইউনিটের জন্য
সর্বমোট ১৩ হাজার ৬৪১টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।
অবশিষ্ট পদ সৃষ্টির কার্যক্রম বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বা
দফতরে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে সব জেলা ও বিভিন্ন
ইউনিটের জনবল বাড়ানোসহ রংপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও
কুমিল্লা মেট্রোপলিটন ইউনিট এবং পুলিশ এন্টি-টেরোরিজম
ইউনিট গঠনের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যানবাহনসংক্রান্ত বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়, পুলিশের
নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যানবাহন ও জলযান
গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশ বাহিনীর গতিশীলতা ও দক্ষতা
বাড়ানোর জন্য বিশেষায়িত, দীর্ঘস্থায়ী, মানসম্পন্ন
যানবাহন এবং জলযানের বিকল্প নেই। যানবাহন ক্রয়ে বাজেট
কোড প্রতিবন্ধকতা দূর করে ব্যবহার উপযোগী, টেকসই ও
মানসম্পন্ন যানবাহন দ্রুততার সঙ্গে ক্রয় করতে হবে।
কাশিমপুর
কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে
এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। মৃত বাদল মিয়া (৩২) চাঁদপুর
জেলার মদনা এলাকার ঈসহাক আলীর ছেলে।
জানা গেছে, রবিবার সকালে কয়েদি বাদল মিয়া বুকে ব্যাথা
অনুভব করলে তাকে কারাগারের অভ্যন্তরে চিকিৎসা সেবা দেয়া
হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন
আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত
চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ২৯ সেপ্টেম্বর ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক মামলায়
বাদল মিয়াকে ছয় মাসের কারাদ দেয়।
সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত
করেছেন।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
কাশির যন্ত্রণা থেকে
দ্রুত মুক্তি পেতে করণীয়!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কাশি একটা সামান্য রোগ ঠিক, যন্ত্রণা কিন্তু সামান্য
নয়। কাশি হলে আপনি মনের সুখে কোন কাজ করতে পারবেন না।
নিজের ঘুমের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবেন।
খুসখুসে কাশিতো আরো বেশি যন্ত্রণা দিয়ে থাকে। আবহাওয়ার
পরিবর্তন, ধূলাবালি, গরম-ঠাণ্ডা পরিবেশসহ বিভিন্ন কারণে
কাশি হতে পারে। শীতের আগমন বার্তা শোনা যাচ্ছে। এই সময়ে
কাশির প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। আমরা কাশি থেকে মুক্তি
পেতে বাজার থেকে প্রচুর ঔষধ ক্রয়ের জন্য অন্ধ হয়ে যাই।
কিন্তু এজন্য কিছু সহজ ঘরোয়া ব্যবস্থা রয়েছে যেগুলোর
দ্বারা সহজেই কাশি থেকে মুক্তি মিলবে।
চলুন জানা যাক, কাশি থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া
উপায়:
১৫-২০ গ্রাম ঘিতে কিছু গোলমরিচ নিয়ে হালকা তাপে গরম
করুন। যখন গোলমরিচ গরম হবে তখন কিছু ঠাণ্ডা করে তাতে
প্রায় ২০ গ্রাম মিছরি গুঁড়ো মেশান। অতঃপর গোলমরিচ সরিয়ে
খেয়ে নিন। এই নিয়মে দু-তিন দিন সেবন করলে কাশি থেকে
মুক্তি মিলবে।
তুলসি পাতায় ৫টি গোলমরিচ, ৫টি কিশমিশ, ৫ গ্রাম গমের আটা,
৬ গ্রাম যষ্টিমধু নিয়ে ২০০ মি.লি. পানিতে গরম করুন।
যখন পানি কমে অর্ধেক হবে তখন তা নামিয়ে ঠাণ্ডা করে
ছেঁকে নিন। পুনরায় গরম করুন এবং রাতে শোয়ার সময় গরম
গরম পান করুন। এভাবে ৩-৪ দিন পান করুন। কাশি ভাল হয়ে
যাবে।
সৈন্ধব লবণের টুকরা আগুনে গরম করুন। যখন তা গরমে লাল
হবে তখন দ্রুত আধা কাপ পানিতে ঢেলে দিন। শোয়ার পূর্বে
এই পানি পান করলে কাশি থেকে অনেক আরাম মিলবে। অথবা, এক
গ্রাম সৈন্ধব লবণ এবং ১২৫ গ্রাম পানি নিয়ে আগুনে গরম
করুন। পানি অর্ধেক হলে নামিয়ে ফেলুন। সকাল-সন্ধ্যা এই
পানি পান করলে কাশি থেকে মুক্তি মিলবে।
কাশি হলে দুধে কয়েক টুকরা শুকনো আদা নিয়ে গরম করুন।
রাতে শোয়ার সময় এই দুধ পান করুন। এভাবে মাত্র ২-৩
দিনেই কাশি ভাল হয়ে যাবে।
মধু ও কিশমিশ খেলে কাশি থেকে মুক্তি মেলে।
ত্রিফলা ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে পান করলে কাশিতে উপকার
পাবেন।
তুলসী পাতা, গোলমরিচ এবং আদা দ্বারা তৈরি চা পান করলে
কাশি থেকে নিমিষেই মুক্তি পাবেন।
হিং, ত্রিফলা, যষ্টিমধু একত্রে মিশিয়ে লেবুর রস দিয়ে
চাটনি বানিয়ে খান, কাশি পালাবে।
খুসখুসে কাশিতে অধিক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এই কাশিতে
কফ হয় না কিন্তু কাশি আসতেই থাকে। যদি কাশি দীর্ঘদিন
থাকে তবে অবহেলা করবেন না। দু’সপ্তাহের বেশি কাশি হলে
অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
শুকনো ফলে পুষ্টি
বেশি
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বহু যুগ আগে থেকেই ফল শুষ্ক করে বা ফলের মধ্যকার জলীয়
অংশকে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা ও খাওয়ার প্রচলন আছে। কিশমিশ,
খোরমা, শুকনো খেজুর, আমসি, আমসত্ত্ব ইত্যাদি আমাদের
দেশে জনপ্রিয়। ইদানীং বাজারে বিদেশি শুকনো ফল যেমন:
এপ্রিকট, ক্রানবেরি, ফিগ ইত্যাদিও প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে।
সাধারণ ফলকে শুকিয়ে ফেলার পর এর মধ্যকার উপাদানের
ঘনত্ব বেড়ে যায় বলে শুকনো ফলে সাধারণ ফলের চেয়ে পুষ্টি
বা ক্যালরি বেশি। শুকনো করে ফেলার পরও এতে ভিটামিন এ,
ভিটামিন সি, রিবোফ্ল্যাভিন, থায়ামাইন ইত্যাদি পুরোপুরি
সংরক্ষিত থাকে। এ ছাড়া শুকনো ফলে চর্বি, কোলেস্টেরল ও
সোডিয়াম বা লবণ থাকে না বললেই চলে। তবে এতে চিনি বা
শর্করার পরিমাণ বেশি। আবার অনেক সময় প্রস্তুতপ্রণালিতে
খানিকটা চিনি মেশানো হয় বলে এগুলো রক্তে শর্করা বাড়াতে
পারে। কিন্তু বাড়তি শক্তি ও ক্যালরি জোগাতে ড্রাই
ফ্রুট বা শুকনো ফলের জুড়ি নেই।
* কিশমিশ, শুকনো খেজুর ও এপ্রিকটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন
আছে এবং রক্তশূন্যতার রোগীদের প্রায়ই এসব ফল খেতে বলা
হয়। এ ছাড়া কিশমিশে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাসও
অনেক। রক্ত চলাচলে সাহায্য করে এগুলো। রক্তনালিকে
সুস্থ রাখে।
* শুকনো ফলে প্রচুর আঁশ বা ফাইবার থাকে, যা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
বিশেষ করে এপ্রিকট ও ফিগ বা শুকনো ডুমুর
পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতার জন্য ভালো।
* শুকনো ক্রানবেরি প্রস্রাবের সংক্রমণ প্রতিরোধে
সাহায্য করে। শুকনো আম বা আমসত্ত্বতে আছে প্রচুর
ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। আরও আছে ওমেগা থ্রি
ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ত্বকের সুরক্ষা দেয়। কিশমিশে যে
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে, তা ত্বককে সতেজ রাখে বলে
সৌন্দর্যচর্চায় এর ব্যবহার সুপ্রাচীন। শুকনো ফলের ভালো
দিক হলো, এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে খাওয়া যায় ও সহজে
বহনযোগ্য, পচনশীল নয়। শুকনো কাচের বয়াম বা জারে
সংরক্ষণ করে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন এবং
প্রতিদিন কিছু পরিমাণ করে খেতে পারেন।
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে
যা যা করতে পারেন!
মানবাধিকার হলেথ ডেস্কঃ
আশেপাশের পরিবেশ থেকে শতকরা ৮০ ভাগ বিষয়ই মানুষ জানতে
পারে তার চোখের মাধ্যমে? দুর্ভাগ্য হলেও এ কথা সত্য যে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখও নানা অসুখে আক্রান্ত হয়,
যা এড়াতে সময় মতো চোখের যতœ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
মুক্তবাতাস: শুধু ফুসফুস সুস্থ রাখতেই যে মুক্ত
বাতাসের প্রয়োজন তা নয়, চোখের কর্ণিয়া জন্যও চাই
মুক্তবাতাস? কারণ চোখ নিজস্ব অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে
না? বিশেষ করে যারা দিনের বেশিরভাগ সময় বদ্ধ ঘরে কাজ
করেন, তাদের জন্য মুক্ত বাতাসে হাঁটা বেশি জরুরি? এ কথা
জানান জার্মানির লাইপসিগ বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিকের চক্ষু
বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়েন্স ডাওজিনস্কি।
বই পড়তে চাই যথেষ্ট আলো: পড়াশোনার সময় যেন ঘরে যথেষ্ট
আলো থাকে। কারণ আলো কম হলে চোখের পেশিগুলোতে অনেক বেশি
চাপ পড়ে। এর ফলে অনেক সময় মাথা ব্যথা বা চোখে লালভাব
বা চোখকে লাল দেখায়।
যথেষ্ট পানি পান: চোখের নিজস্ব পানি সংবেদনশীল চোখকে
বাইরের ধুলোবালি থেকে পরিষ্কার রাখতে ও চোখের অসুখ থেকে
দূরে রাখতে সাহায্য করে। তাই চোখের পানি বজায় রাখতে
শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ পানি থাকা প্রয়োজন? অর্থাৎ এর
জন্য দিনে কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করতে হবে? কারণ
শুষ্ক চোখেই দেখা দেয় নানা সমস্যা।
অতিরিক্ত সূর্যের তাপ থেকে দূরে থাকুন: সূর্যের অতি
বেগুনিরশ্মি চোখের জন্য ক্ষতিকর। তাই বেশি রোদে যাওয়ার
সময় অবশ্যই ‘আলট্রা ভায়োলেট রে’ থেকে সুরক্ষা দেয়, এমন
সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। এতে চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকিও
কমবে।
শরীরে বিটা ক্যারোটিনের অভাব হলে রাতে মানুষ কম দেখে।
তাই নিয়মিত গাজর খাবেন। কারণ গাজরে রয়েছে যথেষ্ট বিটা
ক্যারোটিন। তবে হ্যাঁ, গাজর সামান্য তেল দিয়ে মেখে নিলে
শরীর তা আরো সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে? দিনে অবশ্য
মাঝারি সাইজের একটি গাজরই কিন্তু যথেষ্ট!
সবুজ সবজি: সবুজ সবজিতে থাকা লুটেইন চোখের অসুখকে দূরে
রাখতে সাহায্য করে? বিশেষকরে বয়স বাড়ার সাথে সাথে
চোখের যেসব সমস্যা দেখা দেয়, তা থেকে তবে প্রতিদিন ১৫০
গ্রাম সবুজ সবজিই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট।
সামুদ্রিক মাছ: মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চোখের
সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সোজা কথা, অল্প বয়সে
চোখের স্বাস্থ্যে দিকে ভালোভাবে নজর দিলে পরে তার ফল
অবশ্যই পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সপ্তাহে দুই বা তিনদিন
মাছ খাওয়া যেতে পারে।
চোখের মেকআপ: অনেকেই চোখ দু’টোকে আরো আকর্ষণীয় দেখাতে
মেকআপ ব্যবহার করেন। তবে তারা অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন
যে, সেই রূপচর্চার সামগ্রী যেন আপনার চোখের উপযুক্ত হয়?
অর্থাৎ চোখের মেকআপে যেন সংরক্ষণকারী পদার্থ মেশানো না
থাকে? কারণ রাসায়নিক পদার্থ থেকে চোখে নানারকম
অ্যালার্জি এবং অন্যরকম ক্ষতিও হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ছোলা
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ছোলা বা বুটকে বলা হয় দানাদার শক্তিশালী খাদ্যশস্য।
অর্থাৎ প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে (প্রায় ৫০ গ্রাম) ছোলা
খেলে মাছ-গোশত ইত্যাদির ঘাটতি পূরণ হয়। এর আঁশ
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। নিয়মিত ছোলা খেলে আর নিয়মিত
পায়খানা হলে খাদ্যনালিতে ক্ষতিকর জীবাণু থাকতে পারে
না। মজার ব্যাপার হলো, ছোলায় আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ
মাংস, মাছ বা ডিমের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। প্রতি
১০০ গ্রাম ছোলায় আমিষ আছে প্রায় ১৮ গ্রাম।
কার্বোহাইড্রেট আছে প্রায় ৬৫ গ্রাম। আর ফ্যাট আছে
প্রায় ৫ গ্রাম। ছোলায় আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ।
প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় রয়েছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম। ভিটামিন ‘এ’ প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম।
কুকুর
কামড়ালে তাৎক্ষণিক যা করবেন
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
পথে ঘাটে হঠাৎ ঘটে
যেতে পারে দুর্ঘটনা। কামড়াতে পারে কুকুর। কুকুরের কামড়
অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক এবং মারাতœক। কুকুরের কামড় থেকে
জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। রেবিস নামক ভাইরাস থেকে জলাতঙ্ক
রোগ হয়ে থাকে। এটি একটি স্নায়ুজনিত রোগ।
রেবিস ভাইরাস কুকুরের লালা থেকে ক্ষতস্থানে লেগে যায়
এবং সেখান থেকে স্নায়ুতে পৌঁছে এই রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
জলাতঙ্ক হলে স্নায়ুতে সমস্যা হয়ে থাকে। যার কারণে
মস্তিষ্কে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কে প্রদাহের
সাথে খাদ্যনালীতে তীব্র সংকোচন হতে পারে। এছাড়া রোগী
কোন আলো বা শব্দ সহ্য করতে পারে না। এই সকল লক্ষণ দেখা
দিলে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তবে কুকুর
কামড়ালে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। এই কাজগুলো
করা হলে মারাত্মক আকার ধারণ করা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ক্ষত পরিষ্কার করুন:
প্রথমে একটি পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে ক্ষতের স্থানটি চেপে
ধরুন। তারপর কুকুরের কামড় দেওয়া স্থানে বেশি করে সাবান
পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করা ভাল। এটি
ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য জীবাণু দূর করে থাকে। তবে
ক্ষত পরিষ্কার করার সময় খুব বেশি ঘষাঘষি করবেন না।
রক্ত বন্ধ করুন:
ক্ষত স্থানে চাপ দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। এতে রক্ত পরা
বন্ধ হয়ে যাবে।
ব্যান্ডেজ:
ক্ষতস্থানটিতে অ্যান্টিবায়েটিক ক্রিম বা অয়েন্টমেন্ট
লাগিয়ে নিন। তারপর একটি গজ কাপড় দিয়ে ভাল করে
ব্যান্ডেজ করে ফেলুন। ক্ষত স্থান খোলা থাকলে এতে
বিভিন্ন রোগ জীবাণু প্রবেশ করতে পারে।
ডাক্তারের কাছে যাওয়া:
প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডাক্তারের কাছে যেতে হবে এবং তার
পরামর্শে টিটেনাস ইনজেকশন দিতে হবে। কুকুর কামড়ানোর পর
অব্যশই টিটেনাস ইনজেকশন দিতে হবে। কুকুর কামড়ের ২৪
ঘণ্টার মধ্যে এই ইনজেকশন দেওয়া উচিত।
সতর্কতা:
কুকুরের কামড়ে অনেক সময় রোগী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
তাকে আস্থা প্রদান করতে হবে যে, সে আবার সুস্থ হয়ে
যাবে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অব্যশই রোগীকে
ডাক্তার কাছে নিয়ে যেতে হবে।
লবণ খাওয়ার বিপদ:
সমস্যা ও প্রতিকার
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
লবণ আমাদের দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান।
সুস্থ থাকার জন্য লবণ খাওয়া জরুরী। রাসায়নিক নাম
সোডিয়াম ক্লোরাইড। তবে লবণ খাওয়ার কিছু ভুল পদ্ধতি
উল্টো বিপদ ডেকে আনে। লবণ খাওয়ার বিপদগুলো জেনে নিন:
লবণের বিপদ
১. অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস স্বল্পমেয়াদি এবং
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। রক্তচাপ বাড়ে, হাড়কে দুর্বল
করে দেয়।
২. শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হলে শরীরে পানি জমে যায়।
যার জেরে শরীরে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়
৩. অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ও ব্রেন স্ট্রোকের
পক্ষে ক্ষতিকারক।
৪. শিশুদের ক্ষেত্রে বাড?তি লবণ কিডনি, লিভার ও
মস্তিষ্কের ক্ষতি করে।
৫. হাড?ের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ক্যালসিয়াম। অতিরিক্ত
লবণ গ্রহণ করলে মূত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম শরীর থেকে
বেরিয়ে যায়। হাড?ের ক্যালসিয়াম ক্ষয় হয়ে অস্টিওপোরোসিস
রোগ দেখা যায়।
৬. অতিরিক্ত লবণ মস্তিষ্কের নিউরনকে প্রভাবিত করে।
৭. পাকস্থলীর ঘা এবং কোলন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক
রোগের সৃষ্টি করে।
কী করে বুঝবেন বেশি লবন খাচ্ছেন?
১. অতিরিক্ত পানির তেষ্টা পাবে।
২. হাত পায়ে পানি জমে ফোলা ফোলা ভাব দৃশ্যমান হবে।
৩. নোনতা খাওয়ার ইচ্ছে বাড়বে।
৪. ঘন ঘন বদহজমের সমস্যা।
কীভাবে লবন খাওয়া কমাবেন?
১. ভাত বা ফলের সঙ্গে লবণ খাওয়া বন্ধ করুন।
২. খাদ্য সংরক্ষণের জন্য লেবুর রস, ভিনিগার,কাঁচা রসুন
ও মশলা ব্যবহার করুন।
৩. ফ্রোজেন ফুড এড়িয়ে চলুন।
৪. ফাস্টফুডে প্রচুর পরিমানে লবন থাকে, ফাস্টফুড কম
খান।
৫. রান্নার ধরনের পরিবর্তন আনুন। যাতে লবন কম থাকে।
৬. সন্তানকে শৈশব থেকেই কম লবনযুক্ত খাবারে অভ্যস্ত
করুন।
Top
আইন কনিকা
ছেলে সন্তানের
অবর্তমানে সম্পত্তিতে মেয়ের উত্তরাধিকার
মানবাধিকার ল’ ডেস্কঃ
জনাব আজমল হোসেন মারা যাওয়ার সময় স্ত্রী, এক মেয়ে এবং
এক ভাই রেখে যান। মুসলিম আইন অনুসারে তার মৃত্যুর পর
তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির অর্ধেক তার মেয়ে এবং
এক-অষ্টমাংশ পাবেন তার স্ত্রী। সে হিসেবে পুরো
সম্পত্তির আট ভাগের পাঁচ ভাগ এ দুজনের মধ্যে বণ্টন
হওয়ার পর বাকি আট ভাগের তিন ভাগ আসাবা হিসেবে পেয়ে
যাবেন আজমল সাহেবের ভাই। পক্ষান্তরে আজমল সাহেব যদি
মারা যাওয়ার সময় স্ত্রী, ভাই এবং এক মেয়ের সঙ্গে একজন
ছেলে সন্তানও রেখে যেতেন, সে ক্ষেত্রে সম্পত্তি
বণ্টনের হিসাব-নিকাশ অন্যরকম হয়ে যেত। এ অবস্থায় স্ত্রী
এক-অষ্টমাংশ নেয়ার পর বাকি আট ভাগের সাত ভাগ তার
ছেলে-মেয়ের মধ্যে ২:১ হারে বণ্টিত হয়ে যেত এবং আজমল
সাহেবের ভাই সম্পত্তিতে কোনো অংশ পেতেন না।
এর অর্থ হলো আজমল সাহেবের মৃত্যুর পর তার ছেলে না থাকলে
সম্পত্তির বড় একটা অংশ পরিবারের বাইরে অর্থাৎ তার
ভাইয়ের কাছে চলে যাচ্ছে। পক্ষান্তরে মৃত্যুকালে ছেলে
রেখে গেলে তার এ সম্পত্তি পরিবারের বাইরে যাচ্ছে না।
ইসলাম একটি কমিউনিটিভিত্তিক জীবনব্যবস্থা, যেখানে
পরিবারের চেয়ে সমাজ কিংবা কমিউনিটির স্বার্থ বেশি দেখা
হয়। এ কারণে পারিবারিক গ-ির বাইরেও কাউকে কাউকে
সম্পত্তি দেয়া হয়ে থাকে। কমিউনিটিভিত্তিক
সমাজব্যবস্থায় আজমল হোসেনের মৃত্যুর পর তার কোনো ছেলে
সন্তান না থাকায় তার স্ত্রী এবং মেয়ের দেখাশোনার নৈতিক
দায়িত্ব তার ভাইয়ের ওপর বর্তায় বলে মুসলিম আইনে আজমল
সাহেবের ভাইকেও সম্পত্তির কিছু অংশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু সমস্যা হলো, আজকের সমাজ আর কমিউনিটিভিত্তিক নেই
বরং পরিবারকেন্দ্রিক। এখন প্রতিটি পরিবার অন্য পরিবার
থেকে স্বতন্ত্র; যে কারণে সম্পত্তি অর্জন কিংবা
দেখভালের জন্য পরিবারের বাইরের সদস্যরা যেমন
উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা রাখে না আবার আজমল সাহেবের
ঘটনার মতো মৃত্যুর পর মৃতের স্ত্রী-কন্যাকে দেখাশোনার
ব্যাপারেও পারিবারিক গ-ির বাইরে চাচা-ফুফুদের মতো
আত্মীয়রা খুব একটা দায়িত্ব নেয় না। পরিবারগুলোর এই
স্বতন্ত্রতা এবং এককেন্দ্রিকতা এখন একটি কঠিন বাস্তবতা।
সুতরাং, এ রকম সমাজব্যবস্থায় পুত্রের অবর্তমানে মৃতের
নিকটতর কন্যাসন্তানকে বাবার পুরো সম্পত্তি প্রদান না
করে তুলনামূলকভাবে দূরবর্তী আত্মীয় চাচা-ফুফুদের কাছে
সেই সম্পত্তি হস্তান্তর করায় এক অসম পরিস্থিতি তৈরি
হচ্ছে।
মুসলিম পারিবারিক আইনের আওতায় এর দুই ধরনের প্রতিকার
সম্ভব। প্রথমটি হলো পুত্রসন্তানের অনুপস্থিতির কারণে
যে অংশটুকু পরিবারের বাইরে চলে যাওয়ার কথা, সেটুকু অংশ
পিতা তার জীবদ্দশায় কন্যাসন্তানের অনুকূলে উইল করে দিয়ে
যেতে পারেন। আর দ্বিতীয় উপায়টি হলো জীবদ্দশায়
কন্যাসন্তানকে সেই অংশটুকু হেবা করে দিতে পারেন। তবে এ
দুই উপায়েই বিশেষ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন কোনো
ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তিতে যারা নির্ধারিত
অংশ পাবেন, তাদের উইল করতে হলে যার অনুকূলে উইল করা হবে,
তার সহ-শরিকদের মতামত গ্রহণ করতে হয়। সে হিসেবে কন্যা
যেহেতু পিতার সম্পত্তিতে নির্দিষ্ট অংশ পেয়ে থাকে, তার
অনুকূলে সম্পত্তি উইল করতে হলে পিতাকে অন্য সহ-শরিকদের
সম্মতি গ্রহণ করতে হবে; যা বাস্তবে বেশ কঠিন ব্যাপার।
আবার জীবদ্দশায় কন্যাসন্তানের অনুকূলে হেবা বা সম্পত্তি
দান করারও একটা ঝুঁকি রয়েছে। হেবা সাধারণত
তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয় বলে হেবা ঘোষণার সঙ্গে
সঙ্গেই তার মালিক হয়ে যায় হেবাগ্রহিতা। এখন সম্পত্তি
যদি বাবা-মা তার মেয়ের অনুকূলে হেবা করে দেন, সে
ক্ষেত্রে বাবা তার জীবদ্দশায় অনিরাপদ বোধ করতে পারেন,
কারণ সম্পত্তি তখন আইনগতভাবে আর তার মালিকানায় থাকে
না। সম্পত্তিহীনভাবে বাকি সময়টা মেয়ের গলগ্রহ হয়ে পড়ে
থাকার ঝুঁকি তাই কোনো বাবা-মা নিতে চান না।
সমস্যা সমাধানে কী করা যেতে পারে? এ ব্যাপারে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান, পারিবারিক
আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা গুরুত্বপূর্ণ
অভিমত দিয়েছেন। সমস্যার চারটি সম্ভাব্য সমাধান উল্লেখ
করেছেন তিনি। তার মতে, পুত্রসন্তানের অনুপস্থিতিতে
কন্যাসন্তানদের অবশিষ্ট সম্পত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে
ইসলামী আইনের আওতার ভেতর থেকেই ইজতিহাদের (গবেষণা)
মাধ্যমে সমাধান বের করার চেষ্টা করতে হবে এবং সে
অনুসারে আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। তিউনিসিয়ায়
বহুবিবাহ নিষিদ্ধ এবং ইন্দোনেশিয়ায় কন্যাসন্তানের
উত্তরাধিকার অংশ বৃদ্ধিতে যেভাবে ইজতিহাদ করা হয়েছে,
তার উদাহরণ টানেন তিনি। দ্বিতীয়ত সম্পত্তি উইল করার
ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতাগুলো রয়েছে, সেগুলো দূর করা যেতে
পারে। তার মতে, জীবদ্দশায় যেহেতু একজন ব্যক্তি পুরো
সম্পত্তি হেবা করে যেতে পারেন, সেহেতু মৃত্যুর পরও পুরো
সম্পত্তি উইল করার ব্যাপারে তার ক্ষমতা থাকা উচিত। এ
ক্ষেত্রে এক-তৃতীয়াংশ উইল করা এবং উইল করতে হলে
উত্তরাধিকারীদের সম্মতি গ্রহণসংক্রান্ত বাধ্যবাধকতাগুলো
শিথিল করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
Top
|
|