BHRC By-lawsBHRC Press ReleaseBHRC By-lawsBHRC ConferenceIHRCIRD ActivitiesLegal StatusBHRC BoardBHRC BranchesElection Monitoring Acid and Trauma VictimsBHRC BrochureBHRC Forms

ContactHOME

 

 

 

Cover February 2019

English Part February 2019

Top

 

Bangla Part

         নারী ও শিশু সংবাদ        পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

স্বাস্থ্য সংবাদ          আইন কনিকা

 

বিবিধ সংবাদ

 

                                 


শিক্ষাগুরুর চাদর গুছিয়ে দিলেন
ছাত্রী শেখ হাসিনা

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে আনিসুজ্জামানের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ছাত্রী-শিক্ষকের সেই সম্পর্ক আজও বিদ্যমান। ছাত্রী যত বড়ই হোন না কেন শিক্ষকের কাছে তিনি আজীবনই ছাত্রী। অন্যদিকে, শিক্ষাগুরুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর গুণ সর্বজনবিদিত। সেই দৃশ্যই আবার দেখা গেল বাংলা একাডেমিতে।
শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পদক বিতরণ ও বক্তব্য দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত গ্রন্থমেলায় পরিদর্শন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীসহ বিদেশি অতিথিবৃন্দ।শিক্ষাগুরুর চাদর গুছিয়ে দিলেন ছাত্রী শেখ হাসিনা
শিক্ষাগুরুর চাদর গুছিয়ে দিলেন ছাত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মেলায় প্রবেশের পথে বিছানো লালগালিচা । সেই লালগালিচা দিয়ে হাটার সময় ড. আনিসুজ্জামানকে ছেড়ে দিয়ে পাশে হাঁটা শুরু করেন তারছাত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমন সময় প্রিয় শিক্ষকের কাঁধ থেকে অসতর্কতায় খসে পড়ে চাদর। সেটি লক্ষ্য করে নিজেই আনিসুজ্জামানের কাঁধে গুছিয়ে দিলেন গভীর মমতায়। যেন তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, শিক্ষাগুরুর সান্নিধ্যে বিনয়াবনত শিষ্য এক!
সেই দৃশ্যের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্যে বন্দনা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। কেউ কেউ বলেন, শিক্ষাগুরুকে সম্মান জানানোর ইচ্ছেটাই মুখ্য।

 

 
 

জানুয়ারি’ ২০১৯ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৮৫ জন
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে BHRC’র ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান এবং ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন-IHRC’র সহযোগিতায় প্রতিবেদন সম্পন্ন করে। জরিপে জানুয়ারি ২০১৯ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ১৮৫টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জানুয়ারি ২০১৯ মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৬টি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব। স¤প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে হত্যাকান্ডের শিকার ১৮৫ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৬ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ১৭ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৬৪ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৯ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে হত্যা ১৮ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৫ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৫ জন, অপহরণ হত্যা ৮ জন, গুপ্ত হত্যা ৫ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৩৬ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ১০ জন, এসিড নিক্ষেপে হত্যা ২ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২৬৩ জন, আত্মহত্যা ১৯ জন।
জানুয়ারি ২০১৮ সালে কতিপয় নির্যাতনের উলে­খযোগ্য ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৪০ জন, যৌন নির্যাতন ৩ জন, যৌতুক নির্যাতন ৫ জন।
 

 

 মা হারা শিশুকে স্তন্যপান করান নারী কনস্টেবল
 


মানবাধিকার রিপোর্ট’
বছরের শেষ দিনের আগের রাতে মাত্র দু’মাসের মেয়ে খুঁজে পেল এক অন্য মা-কে। না তিনি গর্ভে ধারণ করেছেন, না লালন-পালন করেছেন। তবুও ওই শিশুর ‘এক রাতের মা’ তিনি-ই। ভারতের নিজাম শহরে এ ঘটনা ঘটেছে।
রাতের ঘটনা। হায়দরাবাদের ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে ওই কন্যা সন্তানকে আকষ্মিকভাবে পেয়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির হাতে শিশুটিকে ধরিয়ে তার মা বলে যান, ‘এক্ষুনি আসছি।’ কিন্তু কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও শিশুটিকে নিতে আসেনি ওই মহিলা।
এ দিকে ক্ষিদায় কান্না শুরু করে দেয় শিশুটি। শীতের রাতে এভাবে একা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে একটা সময় ভয় পেয়ে যান জনৈক ব্যক্তি। শিশুটির মায়ের অপেক্ষা না করে তিনি সোজা বাড়ি চলে আসেন। এর পর ফিডিং বোতলে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টাও করেন। আত্মীয়-স্বজনকে ডাকেন। কিন্তু কোনওভাবেই শিশুটির কান্না থামানো যায়নি। শেষমেশ বন্ধুদের পরামর্শে আফজলগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।
থানায় কর্মরত কনস্টেবল এম রবিন্দর বিষয়টি বুঝেই সোজা ফোন লাগান তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে। তিনিও কনস্টেবল। পোস্টিং অন্য জায়গায়। তবে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বাড়িতে রয়েছেন। ফোন পেয়েই ওই রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁর স্ত্রী। এর পর শিশুটিকে কোলে নিয়ে নিজের বুকের দুধ খাওয়ান প্রিয়াঙ্কা।
তিনি বলেন, “আমারও বাড়িতে ছোট্ট সন্তান রয়েছে। বুঝতে পারি, ওর ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছিল। তাই কোনও কিছু না ভেবে এত রাতে চলে আসি।” শীতের রাতে উষ্ণ কোল আর বুকের দুধ পেয়ে ততক্ষণে কান্না থেমে গিয়েছে শিশুটির। এর পর ওই শিশুকে ভর্তি করা হয় পেটলাবুর্জের সরকারি প্রসূতি হাসপাতালে।
এ বার নিশ্চিয়ই ভাবছেন কোথায় গেল শিশুটির আসল মা?
ওই ব্যক্তির বয়ান অনুযায়ী শহরের আনাচে-কানাচে খোঁজ চালায় পুলিশ। চঞ্চলগুড়া এলাকায় এক মহিলাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। শেষমেশ নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই মহিলাই শিশুটির মা। কিন্তু কেন শিশুটিকে নিতে এলেন না তিনি ? মহিলার কথায়, ওই ব্যক্তিকে যে জায়গায় তাঁর সন্তানকে দিয়ে গিয়েছিলেন, পরে সেই জায়গাটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি তিনি। পাগলের মতো খুঁজেছেন। তবে, পুলিশের দাবি, ওই মহিলা মদ্যপ ছিলেন। সোমবার ওই মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে।
কনস্টেবল দম্পতির এমন মানবিকতার পরিচয় দেওয়ার জন্য, তাঁদের পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা করেছে হায়দরাবাদ সিটি পুলিশ। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ভাইরাল হওয়ার পর, অনেকেই বলছেন ওই মহিলা ইতিমধ্যেই পুরস্কৃত হয়ে গিয়েছেন ‘এক রাতের মা’ হয়ে।
 

   মালয়েশিয়ায় এক বছরে ৭৮৪ বাংলাদেশির মৃত্যু
                                                                 


মানবাধিকার রিপোর্ট’
প্রবাসে বাড়ছে বাংলাদেশিদের মৃতের সংখ্যা। প্রতিদিনই প্রবাসীদের মরদেহ আসছে বাংলাদেশে। মালয়েশিয়ায় গত এক বছরে ৭৮৪ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৮৪ জন বাংলাদেশি। এদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, সড়ক দুর্ঘটনা ও নির্মাণ সাইটে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশির সংখ্যা বেশি হওয়ায় মূলত ওই অঞ্চল থেকেই মরদেহ যাচ্ছে সর্বাধিক। এর মধ্যে তালিকায় প্রথমে আছে সৌদি আরব। এরপর যথাক্রমে মালয়েশিয়া, আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত।
গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে গেছে ২০১৮ সালে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এই হিসাব পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং ধার করে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপে ভোগেন তারা। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, বেশিরভাগ প্রবাসী মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাকে। প্রবাসীদের এমন অকালমৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও কোনও অনুসন্ধান হয়নি। প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো মৃত্যুর এই সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন। গত চার বছরে যত প্রবাসীর লাশ এসেছে, তাদের মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে।
প্রবাসী বাংলাদেশি, মৃতদের স্বজন ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্ত হন। যে বিপুল টাকা খরচ করে বিদেশে যান, সেই টাকা তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম, দিনে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে থাকা, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং সব মিলিয়ে মানসিক চাপে ভোগেন তারা। তাই মানসিক চাপ কমাতে অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রবাসী শ্রমিকদের মানসিক বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা তৈরি করার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে ২ হাজার ৩১৫ জন, ২০১০ সালে ২ হাজার ২৯৯ জন, ২০১১ সালে ২ হাজার ২৩৫ জন, ২০১২ সালে ২ হাজার ৩৮৩ জন, ২০১৩ সালে ২ হাজার ৫৪২ জন, ২০১৪ সালে ২ হাজার ৮৭২ জন, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮৩১ জন, ২০১৬ সালে ২ হাজার ৯৮৫ জন, ২০১৭ সালে ২ হাজার ৯১৯ জন এবং ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৫৭ জনের মরদেহ দেশে ফিরেছে। অর্থাৎ গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসীর লাশ দেশে এসেছে ২০১৮ সালে।
সবচেয়ে বেশি লাশ এসেছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে এসেছে ১০০৮টি, কুয়েত থেকে ২০১টি, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২২৮টি, বাহরাইন থেকে ৮৭টি, ওমান থেকে ২৭৬টি, জর্ডান থেকে ২৬টি, কাতার থেকে ১১০টি, লেবানন থেকে ৪০টিসহ মোট ৩০৫৭টি লাশ দেশে ফিরেছে।
 

 

 

কারা বেশি নির্র্যাতিত ও মানবাধিকার বঞ্চিত নারী না কি পুরুষ?
 

মানবাধিকার সংরক্ষণ নিয়ে সারা বিশ্ব এখন সোচ্চার। বিশ্বের সকল দেশেই মানবাধিকার সংরক্ষণে বিভিন্ন আইন রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও নারী নির্যাতন আইন রয়েছে। কিন্তু পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে কোন আইন আছে কিনা জানা নাই। পত্রিকার পাতা খুলে­ নারী নির্যাতনের অসংখ্য কাহিনী দেখা যায়। দেখা যায় তাদের আদালতে বিচারের কাহিনী। মাঝে মাঝে অনেক ঘটনা দেখা যায় যা সত্যিই লোম হর্ষক। এর সমুচিত শাস্তি হওয়া দরকার এবং কিছু কিছু হচ্ছেও। নারী নির্যাতন চলে আসছে প্রাচীনকাল থেকে। তখন নারীরা ছিল অধিকার বঞ্চিত ও নির্যাতিত। কিন্তু আধুনিক যুগে পুরুষরাও কি কম নির্যাতিত?
পুরুষ নির্যাতনের কাহিনী বহুলাংশে অপ্রকাশিত থেকে যায়, থেকে যায় লোক চক্ষুর অন্তরালে। পুরুষরা নিরবে সহ্য করে যায় হাজারো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। পুরুষরা যতটা না বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায় তার চেয়ে বহুগুনে বিচ্ছেদ ঘটায় নারীরা। সংসারে পুরুষরা যতটা না বিশৃঙ্খলা ঘটায় তার চেয়ে বেশি ঘটায় নারীরা। নারীরা যতটা পরকীয়ায় জড়িয়ে ছেলে-মেয়ে ফেলে চলে যায় বা নিষ্ঠুর আচরণ করে পুরুষরা তা করে না। মা-বাবা তার বহু সন্তানকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করে লালন-পালন করেন। এমনকি তার কোন সন্তান বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধী হলেও মা-বাবা তাকে অতি যতেœর সাথে লালন-পালন করেন। অতচ বৃদ্ধাবস্থায় অনেক মা-বাবাকে অসহায় অবস্থায় নিজের সন্তানের সাথে জীবন কাটাতে হয়। আবার কখনোবা বৃদ্ধাশ্রমে স্থান হয় তাদের, কখনো বা গোয়াল ঘরে, কখনো বা পাকের ঘরের কোণায়, কখনো বা রাতের আধারে বাঁশঝাড় কিংবা রাস্তার ধারে বা গহীন বনে। মেয়েদেরকে বিবাহ দিলে তারা চলে যায় স্বামীর বাড়িতে। সংগত কারনেই বৃদ্ধ বাবা-মায়ের স্থান হয় ছেলে আর ছেলে বৌয়ের কাছে। অনেক আধুনিকা বৌয়েরা বৃদ্ধ শশুর-শাশুরীকে আদৌ মানতে চায় না। অনেকে আবার যে ছেলের বৃদ্ধ পিতা-মাতা আছে সেখানে তারা বিবাহে নারাজ। যাই হোক বিবাহ হয়ে গেলে দুই/এক বছরের মধ্যে তাদের সংসারে সন্তান এসে যায়। তখনই বৌয়ের গোড়া শক্ত হয়ে যায়। তখন সে আরো বেশি সক্রিয় হয়ে যায়। অধিকাংশ আধুনিকা বৌয়েরা চায় বৃদ্ধ শশুর-শাশুরীকে আলাদা রাখতে। আর শশুর-শাশুরী অচল অবস্থায় পৌছালে অর্থাৎ স্বাভাবিক কাজকর্ম চালাতে অক্ষম হলে অবস্থা আরো বেগতিক হয়। কোনো কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে সাফ সাফ জানিয়ে দেন; তার বৃদ্ধ মা-বাবা সাথে থাকলে, সে সংসার করবে না। এভাবে একাধিক ছেলে-ছেলেবৌ থাকলে সবার পক্ষ থেকে এমই বক্তব্য আসতে থাকে। ছেলেরা চায় না মা-বাবাকে অন্যত্র রাখতে। কিন্তু স্ত্রীর যন্ত্রনা যখন অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন নিজের সন্তানের কথা ভেবে (স্ত্রী যদি চলে যায়, তবে ছেলে-মেয়েদের কি হবে?) স্ত্রী সাথে মিলে বা ভাইয়ে ভাইয়ে মিলে অসহায় মা/বাবাকে রাতের আধারে কোন রাস্তার ধারে বা ঝোঁপের পাশে ফেলে রাখে অথবা কোন বৃদ্ধাশ্রমে। ছেলে বা ছেলেরা পাষানের মতো সকল ব্যাথা বুকে চাপিয়ে এমন কাজটি করে। তখন পুরুষরা নারীদের দ্বারা কতটা মানষিকভাবে নির্যাতিত ও অসহায় হয়ে নিজের বৃদ্ধ অসুস্থ ও অক্ষম পিতা-মাতাকে বাহিরে ফেলে রাখে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার স্ত্রীর কারনে অনেক পুরুষের সাথে তার মা-বাবা, ভাই-বোনসহ আত্মীয় স্বজনদের সাথেও যোগাযোগ থাকে না। তবে দুই একজন ছেলে মেয়ে অর্থের লোভে পরে পিতা-মাতাকে হত্যাও করে ফেলে। যা খুবই নগন্য। অন্য দিকে স্ত্রীর মা-বাবা, সহ সকল আত্মীয় স্বজনদের কে নিয়ে চলে রমরমা উৎসব, এছাড়াও পুরুষদের তুলনায় নারীরা পরকীয়ায় বেশি জড়িয়ে, পুরুষকে নির্যাতন সহ ক্ষেত্র বিশেষ হত্যা পর্যন্ত করে থাকে।
অনেকে স্বামীর অর্থ সম্পদ নিয়ে অপরের হাত ধরে পালিয়ে যায়। কেউ কেউ স্বামীর উপরে অমানসিক শারীরিক নির্যাতন চালায়। আত্ম-সম্মানের কথা বিবেচনা করে পুরুষরা সব কিছু নীরবে সহ্য করে সংসার চালিয়ে যায়। অথচ আমাদের আধুনিকা স্ত্রী/নারীরা ভেবে দেখা না তারাও একদিন একজন অসহায় শাশুরী হতে চলছে বা মা হতে চলছে। কাজেই নারী নির্যাতনের পাশাপাশি পুরুষ নির্র্যাতনে আইন থাকা দরকার।
মো. দ্বীন ইসলাম হাওলাদার
প্রভাষক-দুমকি ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা
দুমকি, পটুয়াখালী।

 


 

ঢাকায় শিশু ভাড়া করে চলছে ভিক্ষা বাণিজ্য
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঢাকায় শিশু ভাড়া করে চলছে ভয়ঙ্কর ভিক্ষা বাণিজ্য। ৩ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভাড়া নিয়ে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় ভিক্ষা করেন নারীরা। তাদের কোলে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখা যায় এ শিশুদের।
দেখে শিশুটির মা মনে হলেও আসলে ওই নারীরা তাদের ভাড়ায় নিয়ে আসেন। রাজধানীর শাহবাগ, মগবাজার, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, ভাড়ায় আনা শিশুটি যাতে কাঁদতে না পারে সে জন্য তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। ফলে ভিক্ষুক নারীর কাঁধে মাথা রেখে সারাক্ষণ ঘুমায় শিশুটি। চিকিৎসকরা বলছেন, ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোসহ নানা কারণে এ সব শিশুরা বিকাশজনিত সমস্যার পাশাপাশি নানা জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, নগরীকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে সমাজসেবা অধিদফতর একটু নজর দিলে মাঝে মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলে তা আরও সহজ হবে।
সরেজমিন, রাজধানীর মগবাজার, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকা ঘুরে কোলে শিশু নিয়ে নারীদের ভিক্ষা করতে দেখা গেছে। গুলশানেও শিশু কোলে নিয়ে ভিক্ষা করছেন নারীরা।
গুলশান থানা পুলিশ জানিয়েছে, এ এলাকায় কোনো ভিক্ষুক চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হয়। গুলশান থানার পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এ এলাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে তাদের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার সকালেও গুলশান-বাডডা লিংক রোডে তিন মাসের সন্তান কোলে নিয়ে ভিক্ষা করার সময় শারমীন আক্তার নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। কোলের বাচ্চাটি তার নিজের বলে দাবি করলেও পুলিশের সন্দেহ- এ বাচ্চা সে ভাড়ায় আনতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার মগবাজার এলাকায় ১ বছর বয়সী একটি শিশুকে ঘুমন্ত অবস্থায় কোলে নিয়ে ভিক্ষা করতে দেখা যায় এক নারীকে। ওই নারী জানান, তার নিজের নাম আছমা। কোলের শিশুটি তার মেয়ের বলে দাবি করেন তিনি। জানান, শিশুটিকে রেখে তার মেয়ে মারা গেছে ৬ মাস আগে। মেয়ের স্বামী বাচ্চাটিকে তার কাছে রেখে অন্যত্র বিয়ে করেছে। সে খোঁজ-খবর রাখে না। এখন বাচ্চাটিকে মানুষ করতে পথে পথে ভিক্ষা করছি। বাসা কোথায় জানতে চাইলে তিনি আর কথা না বলে উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করেন।
বুধবার দুপুরে শাহবাগ মোড়ে একটি মেয়েকে কোলে নিয়ে ভিক্ষা করছিলেন রাশিদা নামে মাঝবয়সী এক নারী। শিশুটিকে নিয়ে কখনও রাস্তায় পথচারীর কাছে, আবার কখনও প্রাইভেট কারের জানালায় গিয়ে ভিক্ষা চাইছিলেন তিনি। কোলে ঘুমাচ্ছিল শিশুটি। রাশিদা জানান, শিশুটির নাম সালমা।
শিশুটির জন্মের পর তার বাবা অন্যত্র বিয়ে করেছে। এরপর থেকে সংসার চালাতে না পেরে তিনি শিশুকে নিয়ে ভিক্ষা করছেন। শিশুটি ঘুমাচ্ছে কেন? এ প্রশ্ন করতেই ওই নারী আর কথা না বলে সরে যান। এদিকে হাইকোর্ট এলাকায় অবস্থানরত এক ভিক্ষুক যুগান্তরকে জানিয়েছেন, যে সব নারী রাস্তায় বাচ্চা কোলে নিয়ে ভিক্ষা করেন, তারা ওই শিশুটিকে আগে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন।
আর যাতে পায়খানা না করে সে জন্য সারাদিন কোনো খাবার না দিয়ে শুধু বেঁচে থাকার জন্য পানি খাওয়ান। এতে দুর্বল হয়ে পড়া শিশুটি ঘাড় ঝুলিয়ে শুয়ে থাকে। এভাবে শিশু কোলে নিয়ে ভিক্ষা করতে দেখা গেছে, রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ, বিজয় সরণি সিগনাল, পান্থপথ সিগন্যালসহ বিভিন্ন এলাকায়।
রাস্তায় শিশুদের দেখিয়ে সহজেই ভিক্ষা পাওয়া যায় বলে এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন অনেকে। গড়ে উঠেছে একাধিক চক্রও। বাংলাদেশ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিসিএইচআরডি) নামে একটি সংস্থা ভিক্ষুকদের নিয়ে গবেষণার কাজ করছে। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল হক, যুগান্তরকে বলেন, নগরীর যে সব এলাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, সে সব এলাকায় ইদানীং ভিক্ষুকের আনাগোনা বেড়েছে।

 

মুসলিম রীতিকে সমাজতন্ত্রে মেশাতে নতুন আইন

ধর্মের ‘চৈনিক সংস্করণ’ আনছে চীন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলামের ‘চৈনিক সংস্করণ’ আনছে চীন। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে নতুন একটি আইন পাস করেছে দেশটি। মুসলিম ও ইসলামী রীতিনীতির বিরুদ্ধে দেশটির চলমান দমন-পীড়নের মধ্যে বিতর্কিত এই পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছে বেইজিং।
আইনের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রের সঙ্গে মুসলিম রীতি ও ধর্মের বিধানগুলো ‘সঙ্গতিপূর্ণ’ করা হবে। আর তা করা হবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে। ৫ জানুয়ারি ২০১৮ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইংরেজি দৈনিক গ্লোবাল টাইমসের এক রিপোর্টে এসব কথা বলা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট সরকারের ধর্মবিরোধী পদক্ষেপগুলোতে এটি নতুন সংযোজন।
পশ্চিমাঞ্চলের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ শিংজিয়াং প্রদেশসহ চীনের বেশকিছু অংশে ইসলাম চর্চা অনুশীলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নামাজ পড়া, রোজা রাখা, দাড়ি লম্বা করা, ইসলামী নাম রাখার কারণে বন্দি করা হচ্ছে পুরুষদের। হিজাব পরার কারণে আটক করা হচ্ছে নারীদের।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের অন্তত ১২ লাখ সদস্যকে বিভিন্ন বন্দিশিবিরে বন্দি রাখা হয়েছে। সেখানে ‘সংস্কৃতি শিক্ষা’র নামে চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন। স¤প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার কিছু চিত্র উঠে এসেছে।
আলজাজিরা জানায়, ভীতিকর পরিবেশ-পরিস্থিতির মধ্যে স¤প্রতি আটটি ইসলামী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, সংগঠনগুলো ইসলাম ধর্মকে চীনা সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে একমত হয়েছেন।
ইসলাম ধর্মের ‘চীনা সংস্করণ’র জন্য তারা একটি আইন প্রণয়নেও রাজি হয়েছেন। তবে রিপোর্টে ওই আট মুসলিম সংগঠনের নাম ও কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত কিছু উলে­খ করা হয়নি। সা¤প্রতিক কয়েক বছরে চীন মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন বাড়িয়ে দিয়েছে।
লাখ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দিশিবিরে আটকে রেখে তাদের পুরোপুরি বদলে দেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব বন্দিশিবিরেরর নাম দেয়া হয়েছে ‘পুনঃশিক্ষণ শিবির’। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে ইসলাম ধর্মের ওপর বিধিনিষেধ অতীতের চেয়ে আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। চীনের কিছু অংশে ইসলাম ধর্ম পালন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এরপরও যারা নামাজ পড়েছে, রোজা রেখেছে বা যেসব মুসলিম নারী হিজাব পরেছে, তাদের গ্রেফতার ও নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে। অধিকার সংগঠনগুলো চীনা সরকারের বিরুদ্ধে জাতি নির্মূল অভিযান চালানোর অভিযোগ তুলেছে। তবে চীন এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা সংখ্যালঘুদের ধর্ম ও সংস্কৃতিকে সুরক্ষা দিচ্ছে।
নতুন আইন পাস হলেও ইসলামের ‘চীনা সংস্করণ’ বানাতে বা মুসলিম রীতিনীতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য কয়েক দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছে চীন। এক্ষেত্রে বেশ আক্রমণাত্মক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আগে এসব ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সহনশীলতা দেখালেও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সময়ে তাদের স্বাধীনতা ক্রমেই সঙ্কুচিত হচ্ছে।
মাও জে দংয়ের পর তিনিই চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন বলে জানায় আলজাজিরা। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে বন্দি শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে এবং তাদের ধর্ম ত্যাগ করে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকারে বাধ্য করা হচ্ছে।
চীন জাতিগত নিধনে অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। গত আগস্টে মার্কিন পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বিশ্ব মুসলিমদের বিরুদ্ধে এই অভিযানকে ‘উপেক্ষা করতে পারে না।’



বিশ্বে শীর্ষ দশ ধনী নারী


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় উঠে এসেছেন অনেক কম বয়সী নারী। তাদের মধ্যে অধিকাংশই পারিবারিক সূত্রে বিশাল সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়েছেন। আবার নিজের চেষ্টায় সেই সম্পদ বাড়িয়েছেন অনেকেই। ফ্যাশন ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন এমন কোটিপতি নারী। উত্তরাধিকারী সূত্রে পাওয়া বা নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান, সবখানেই সফলতার সঙ্গেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই নারীরা। এমনই কিছু নারী কোটিপতির তথ্য তুলে ধরা হলো। তথ্যসূত্র ইন্টারনেট।
হলি ব্র্যানসন: হলি ব্র্যানসন প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক। পেশাগত জীবনে তিনি একজন নিউরোসার্জন। তার বাবা রিচার্ড ব্র্যান্সন একজন মার্কিন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। নিউরোসার্জনের ওপর পড়াশোনা শেষ করে তিনি চেলসিতে ওয়েস্টমিন্সটার নামক হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিত্সক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সাথেও যুক্ত রয়েছেন তিনি।
মারিয়ে বেসনিয়্যার:ফরাসি বংশোদ্ভূত মারিয়ে বেসনিয়্যার ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক মারিয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে বিখ্যাত ডেইরি ফার্ম ল্যাকটালিস এর মালিক হন। তার বাবা মিশেল বেসনিয়্যার ১৯৫৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এই কোম্পানির সিইও ছিলেন এবং তার পরে তার তিন সন্তান এই কোম্পানির মালিকানা লাভ করেন। চিজ উত্পাদনের মাধ্যমে এই কোম্পানি সমগ্র আমেরিকাতে পরিচিতি লাভ করে।
সারা সেবানচি:তুরস্কের অন্যতম ধনী সেবানচি পরিবারের উত্তরাধিকারী সারা সেবানচি প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক। ২০১৬ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের দেওয়া এক তালিকায় দেখা যায় সারা নিজেই তুরস্কের ধনীদের মধ্যে ২৮তম অবস্থানে। তুরস্কের অন্যতম সেরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সেবানচি হোল্ডিং, যার একজন অন্যতম কর্ণধার এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্য তিনি।
আনা লুসিয়া:৪১ বছর বয়সী আনা প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের মালিক। তার দাদা ঈটাও নামে ব্রাজিলের অন্যতম বড় এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে ল্যাটিন আমেরিকার আরেকটি বিখ্যাত ব্যাংক ইউনিব্যাংকোর সাথে সমঝোতা এবং চুক্তিবদ্ধ হয়ে ঈটাও-ইউনিব্যাংকো নামে কাজ করে যাচ্ছে। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অর্থসম্পত্তির প্রভাবে তিনি ব্রাজিলের সর্বকনিষ্ঠ বিলিয়নিয়ার হিসেবে পরিচিত হন।
লি সিও হ্যুন:দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক লি সিও ৪১ বছর বয়সী এবং দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক। ফরাসি শিল্প সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার পর তিনি ব্যবস্থাপনার ওপরেও ট্রেনিং এবং ডিগ্রি লাভ করেন। লি শেইল নামক একটি কোম্পানির পরিচালক অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি স্যামসাং কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই ক্ষমতাশীল নারী গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
এরিন লডার:প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের মালিক এরিন লডার উত্তরাধিকার সূত্রেই বিশাল সম্পত্তির মালিক হন। তার বাবা অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত আছেন। এরিন পেনসিল্ভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার পর পারিবারিক ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ ও গণমাধ্যমের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি কসমেটিক, সুগন্ধী, আসবাবপত্রের ব্যবসা শুরু করেন যার নাম এরিন। বিশ্ববিখ্যাত কসমেটিক কোম্পানি এস্টি লডারের প্রায় ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের শেয়ার তার নিজের নামে বরাদ্দ রয়েছে।
তামারা এক্লেস্টন:৩২ বছর বয়সী তামারা প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের মালিক। পেশাগত জীবনে তিনি একজন মিডিয়া প্রভাবক এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। তার বাবা বার্নি এক্লেস্টন ফর্মুলা ওয়না নামক বিখ্যাত কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক। এছাড়া তিনি ইতালির স্কাই স্পোর্টসসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানগুলোর উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ করেন।
পেট্রা স্টান্ট:পেট্রা কোটিপতি বার্নি এক্লেস্টনের আরেক মেয়ে, অর্থাত্ তামারার বোন। বোন তামারার? মতো বিভিন্ন সামাজিক ও গণমাধ্যমগুলোতে পরিচিতির পাশাপাশি পেট্রা ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন।
ডিলান লরেন:ডিজাইনার রালফ লরেনের মেয়ে ডিলান ব্যক্তিগতভাবে ৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক। বাবার ডিজাইনার ব্যবসার দিকে মন না দিয়ে তিনি আমেরিকার অন্যতম ক্যান্ডির প্রতিষ্ঠান ডিলানস ক্যান্ডি বার চালু করেন এবং ব্যাপক সাফল্য পান। বরাবরই তার পোশাকের থেকে ক্যান্ডির ব্যবসার প্রতি বেশি ভালবাসা ছিল।
কাইলি জেনার:২০১৮ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের শিরোনামে এই ২০ বছর বয়সী ধনী নারীর নাম ওঠে আসে। কিম কারদাশিয়ানের বোন কাইলি নিজ যোগ্যতায় উঠে আসেন আলোচনায়। কিমের নিজস্ব কোম্পানি কাইলির ৯০০ মিলিয়ন সম্পত্তির মাঝে তারও একটি বড় অংশ আছে।

 

  ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ৪১টি দেশে ভ্রমণ সুবিধা 

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক ২০১৯-এর তালিকায় বাংলাদেশ এগিয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে ৯৭তম। ভিসা ছাড়া শুধু পাসপোর্ট দিয়ে বিদেশ গমনের ওপর জরিপের ভিত্তিতে এ র‌্যাঙ্কিং করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নাগরিকত্ব ও পরিকল্পনাবিষয়ক সংস্থা হ্যানলি অ্যান্ড পাসপোর্ট পার্টনার্সের স¤প্রতি করা পাসপোর্ট ইনডেক্স থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে ৯৭তম স্থানে আছে লেবানন, লিবিয়া, দক্ষিণ সুদান।
কোনো দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী, তা নির্ভর করে ওই পাসপোর্ট দিয়ে কতটি দেশে ভিসা ছাড়াই যাওয়া যায় তার ওপর। ভিসা ছাড়া যাওয়া বলতে বোঝায় ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’। অর্থাৎ, অগ্রিম ভিসা না করে শুধু টিকিট কেটে অন্য দেশে চলে যাওয়া যায়।
সেই দেশে ভিসার যাবতীয় কাজ সারা হয়। বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই বিশ্বের ৪১টি দেশে ভ্রমণ সুবিধা পান। দেশগুলো হলো এশিয়ার ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং পূর্ব তিমুর। আফ্রিকার বেনিন, কেপ ভার্দে আইসল্যান্ড, কোমোরেস, দি জিবুতি, গাম্বিয়া, ঘানা, কেনিয়া লিসোথো, মাদাগাস্কার, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সিশিলিস, সোমালিয়া, টোগো, উগান্ডা।
ওশেনিয়ার কুক আইসল্যান্ড ফিজি, মাইক্রোনেশিয়া, নিউয়ি, সামোয়া, ট্রুভালু, ভানুয়াতু। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বাহামা, বার্বাডোজ, ব্রিটিশ ভার্জিন আইসল্যান্ড, ডোমেনিকা, গ্রানাডা, হাইতি, জ্যামাইকা, মন্টসারাত, সেন্ট কিটস এন্ড নেভিস, সেন্ট ভেনিস এন্ড গ্রানাডিস, ত্রিনিদাদ ও টোবাকো এবং আমেরিকায় বলিভিয়া। এর মধ্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা ২০টি দেশে। বিশ্বের ১৮৫টি দেশে যেতে ভিসা প্রয়োজন হয় বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের।
২০১৮ সালের বৈশ্বিক পাসপোর্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ৫ ধাপ পিছিয়ে ১০০ ধাপে ছিল বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে তালিকায় ছিল ৯৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্য ভারত ৭৯তম (ভিসা ফ্রি ৬১ দেশ), পাকিস্তান ১০২তম (ভিসা ফ্রি ৩৩ দেশে), শ্রীলঙ্কা ৯৫তম (ভিসা ফ্রি ৪৩ দেশ), নেপাল ৯৮তম (ভিসা ফ্রি ৪০ দেশ), মিয়ানমার ৯০তম (ভিসা ফ্রি ৪৮ দেশে) অবস্থানে আছে। ৩০টি দেশে ভিসা ফ্রি সুবিধা নিয়ে তালিকার সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে ইরাক ও আফগানিস্তান।
তালিকার শীর্ষে থাকা জাপানের পাসপোর্ট বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী। ১৯০ দেশে ভিসা-ফ্রি এবং অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাচ্ছেন জাপানের পাসপোর্টধারীরা। জাপানের পরই দ্বিতীয় স্থানে আছে সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার পাসপোর্ট।
এই দুই দেশের পাসপোর্টধারীরা ভিসা-ফ্রি এবং অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাচ্ছেন ১৮৯টি দেশে। ফ্রান্স ও জার্মানি আছে তৃতীয় স্থানে। ১৮৮ দেশে ভিসা-ফ্রি এবং অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাচ্ছেন এই দুই দেশের পাসপোর্টধারীরা।
এর পরই আছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেন। ১৮৭ দেশে ভিসা-ফ্রি এবং অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান এই চার দেশের পাসপোর্টধারী নাগরিকেরা। লুক্সেমবার্গ ও স্পেন আছে পঞ্চম স্থানে। এই দুই দেশের পাসপোর্টধারী নাগরিকেরা ১৮৬ দেশে ভিসা-ফ্রি এবং অন অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাচ্ছেন।
 

 

 বিশ্বে মানবপাচারের ৭০ শতাংশই নারী : জাতিসংঘ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বে পাচারের শিকার হওয়া মানুষের মধ্যে ৭০শতাংশই নারী ও কিশোরী বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আর এই পাচার হওয়া নারী-কিশোরীরা ভয়াবহভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে বলেও জানানো হয়। ডয়চে ভেলে
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবপাচারকারীরা সারাবিশে^ই নারী ও কিশোরীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে চলেছে। সনাক্তকৃত ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশই যৌন নিপীড়নের সম্মখীন হয়। এর পাশাপাশি ৩৫ শতাংশ নারীকে জোরপূর্বক শ্রমিক বানানো হয়।
প্রতিবেদনমতে, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার একাধিক অঞ্চলে চলমান সশস্ত্র সংঘাত, দুর্বল সীমান্ত নিরাপত্তা এবং দরিদ্র সামাজিক অবস্থাই মানবপাচারের পেছনের কারণ। মানবপাচারের টার্গেটে পড়া দেশগুলোর মধ্যে সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান ও মিয়ানমার প্রথমসারিতে রয়েছে। এরফলে, ভিনদেশে গিয়ে নারী ও কিশোরীদের পতিতাপল­ীতে কাজ করতে হয় কিংবা জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয় তাদের।


   পেন্টাগনের চিফ অব স্টাফের পদত্যাগ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ কেভিন সুয়েনি । যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ কেভিন সুয়েনি পদত্যাগ করেছেন। সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর এ নিয়ে তৃতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা পেন্টাগন ছাড়লেন।
ট্রাম্পের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন রিয়ার অ্যাডমিরাল সুয়েনি।
পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘বেসরকারি খাতে ফিরে যাওয়ার এখনই সময়।’
সুয়েনি ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে পেন্টাগনের চিফ অব স্টাফের দায়িত্বে ছিলেন। পদত্যাগপত্রে এ রিয়ার অ্যাডমিরাল দায়িত্ব পালনকালে তার সহকর্মীদের সহযোগিতার কথা উলে­খ করে ধন্যবাদ জানালেও ট্রাম্পের নাম নেননি।



 

 ৩ বছরে ১০ লাখ শ্রমিক নেবে কানাডা: যেতে হলে যা জানা দরকার

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সহজ করা হয়েছে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রক্রিয়া। ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে ১০ লাখ দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক নেবে কানাডা। এতে তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন।
স¤প্রতি কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রী আহমেদ হুসেন এ খবর দিয়েছেন। হাই স্কিল্ড, ফ্যামিলি মাইগ্রেশন, ট্রেড স্কিল্ডসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৬০ রকমের প্রোগ্রামের আওতায় এসব লোকজন নেওয়া হবে।
২০১৯ সালে কানাডায় অভিবাসনের সিআরএস (আবেদনের যোগ্যতা) পয়েন্টের নিম্নমুখী স্কোরের প্রবণতা দেখে চলতি বছর সবচেয়ে কম পয়েন্ট দিয়েও কানাডায় আবেদনের সুযোগ পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে দুই লাখ ৮৬ হাজার অভিবাসীকে স্থায়ীভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে কানাডা।
পৃথিবীর অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের অভিজ্ঞ পেশাজীবীরাও ১০টি ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত এক্সপ্রেস এন্ট্রি ও পিএনপি, এ দুই ধরনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বেশি আবেদন করা হয় ।
যে ১০টি পদে আবেদনের মাধ্যমে দ্রুত যাওয়া যাবে সেগুলো হলো- সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট ম্যানেজার, বিজনেস অ্যানালিস্ট, কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ, আইটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, সিনিয়র অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও ম্যানুফ্যাকচারিং। এ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রের দক্ষ পেশাজীবীরাও আবেদন করতে পারবেন। কানাডায় নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নিজের আছে কি না, তা জানতে কেউ বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শও নিতে পারেন।
কানাডা সবসময়ই ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে অভিবাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে। বিল সি-৬ অনুযায়ী দেশটিতে সিটিজেনশিপের আবেদন করতে পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত তিন বছর সেখানে বসবাস করতে হবে। এর আগে ছয় বছরের মধ্যে চার বছর বসবাসের বিধি ছিল। এ ছাড়া, অস্থায়ী ক্যাটাগরিতে কাজ কিংবা পড়াশোনার কারণে আগে কেউ কানাডায় থেকে থাকলে সেই সময়কেও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, কানাডায় অভিবাসনের আবেদন করতে সাধারণত একটি পূর্ণাঙ্গ বায়োডাটা, পরিবারের তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে ডিপ্লোমা বা ডিগ্রি পাস, আইইএলটিএস, ইসিএ সার্টিফিকেট, কমপক্ষে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, মেডিকেল রিপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ইত্যাদি লাগে। অনলাইনেই আবেদন করা যায়। তবে জব অফার ছাড়া আবেদন করে লাভ নেই। অর্থাৎ কানাডায় পদার্পণের পরই যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবেন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে। এজন্য এসব পদেই অভিজ্ঞ জনবল নেওয়া হচ্ছে।
আবেদনের জন্যে যোগ্য কি না তা নিরূপণ করার পরই প্রোফাইল তৈরি করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিয়ে লটারির ড্র’র জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
কানাডায় ইমিগ্রেশনের ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে আগ্রহী যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে।
কানাডার অভিবাসন আইন নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতালব্ধ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘মূলত যেকোনো ডিপ্লোমাধারী অথবা ডিগ্রি পাসধারী দক্ষ ও অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেন। বাংলাদেশিরা যদি প্রথম থেকেই দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে ফাইল প্রসেস করে, তবে স্বল্প সময়ে এই ভিসা পাওয়া নিশ্চিত। প্রকৃতপক্ষে যারা যোগ্যতা রাখেন, তাদের আর দেরি করা ঠিক হবে না’। একইসঙ্গে অযোগ্য ব্যক্তিরা যেন অযথা আবেদন করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট না করেন সে ব্যাপারেও অনুরোধ জানান এ আইনজীবী। ফ্রি অ্যাসেসমেন্টে আগ্রহীরাও ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড’র চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠানো যাবে info@worldwidemigration.org এই ঠিকানায়। কেউ বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন www.bmc.com ওয়েবসাইটে।
 

নারী-পুরুষ মিলেই পূর্ণ হয়েছে মানবসভ্যতা


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
হযরত মোহাম্মদ (স.) নারীদের শ্রদ্ধার উঁচু আসনে সমাসীন করেছেন
মানবজাতিকে সৃষ্টিগতভাবে নারী ও পুরুষের সমন্বয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে। নারী-পুরুষ মিলেই পূর্ণ হয়েছে মানবসভ্যতা। নারী ও পুরুষের মাঝে সামান্য কিছু পার্থক্য মূলত কোনো বিভাজন নয়; বরং সৃষ্টির পূর্ণতা ও উৎকর্ষতার জন্যই একে অপরের পরিপূরক হিসেবে সৃজিত জুটি সৃষ্টার অপরূপ ও মমতাময়ী সৃষ্টি নারীজাতি।
পবিত্র কোরআনে নারীদের ব্যাপারে আল­াহর বাণী- হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গিনীকে সৃষ্টি করেছেন, আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী।
তেমনি আল­াহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচনা করে থাকো এবং আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারে সতর্ক থাকো। নিশ্চয় আল­াহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন।’ এটি সূরা নিসার প্রথম আয়াত।
[‘নিসা’ শব্দটির অর্থ নারী।]
এ সূরা নিসা নামটিই প্রমাণ করে কোরআন নারী জাতিকে, কি সম্মান দিয়েছে। মূলত এ আয়াতটি নারী জাতি সম্পর্কে ইসলামের ভাবধারা, ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি এবং পুরুষ ও নারীর পারস্পরিক দায়িত্ব-কর্তব্য ও সম্পর্কের রূপরেখা সম্পর্কে পূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে।
আধুনিক যুগে নারীর স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থান বিশ্বজুড়ে একটি আলোচিত বিষয়। কিন্তু ইসলাম ও হযরত মোহাম্মদ (স) মানুষের স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে ছিলেন অনুপম আদর্শ।
তিনি অমর্যাদা ও গ্লানির অতল গহŸর থেকে তুলে নারীদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার উঁচু আসনে সমাসীন করেছেন।
ইতিহাস পাঠে আমরা দেখি, নবী আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের ছিল স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী তখন স্বপর্দায় নারীরাও জীবনযাপনের জন্য বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। তবে সব ক্ষেত্রেই নারীরা তার শালীন ও নিরাপত্তা অনুকূল জীবনধারা অনুসরণ করেছেন।
আল­াহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে সূরা নিসা নামে পূর্ণাঙ্গ একটি সূরা নাজিল করেছেন নারীর যাবতীয় স্বাধীনতা ও অধিকারের বার্তা নিয়ে। নারীরা আমাদেরই মা, বোন, স্ত্রী কিংবা কন্যা। তাদের হয়রানি বা নির্যাতন করা এবং তাদের অধিকার হরণ করা এবং অর্থনৈতিক ও কর্মের স্বাধীনতা হরণ করা মানেই তাদের মানবাধিকার হরণ করা, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আমাদের প্রত্যেকের উচিত, ইসলাম নির্দেশিত পথে নারীকে তার জীবন পরিচালনা ও অধিকার আদায়ে সহযোগিতা করা। ইসলাম কিন্তু পেশা গ্রহণে নারীকে বাধ্য করেননি, একইভাবে প্রয়োজনে নারীর উপার্জনকে হারাম বা নিষিদ্ধ করেনি। কর্মসংস্থান অর্থনৈতিক মুক্তি আনে ও স্বাধীন ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়। আধুনিক যুগে নারীর কর্মসংস্থান বিশ্বজুড়ে একটি আলোচিত বিষয়। বস্তুত কোনো মানুষ স্বনির্ভর হতে পারে না কর্মসংস্থান ছাড়া। কারণ অর্থাভাবে মানুষ পরমুখাপেক্ষী হয়, তার ধর্ম সংকীর্ণ, বুদ্ধি দুর্বল এবং মানবতা বিনষ্ট হয়। তাই মানুষের স্বাধীনতা ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে রাসূল ছিলেন একেবারেই আপসহীন।
অমর্যাদা ও গ্লানির অতল গহŸর থেকে তুলে ইসলাম নারীদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার উঁচু আসনে সমাসীন করেছেন।
নারীর পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় অর্থনৈতিক ও কর্মের স্বাধীনতা ছিল বলেই রাসূলুল­াহ সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়াসাল­ামের যুগে বেহেশতের সুসংবাদপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাহাবি হজরত যোবায়ের (রা.)-এর স্ত্রী, হজরত আবু বকর (রা.)-এর কন্যা আসমা (রা.)-এর সপর্দায় ঘোড়ার ঘাস সংগ্রহ করা, খেজুর বাগানের পরিচর্যা, খেজুরের আঁটি বহন করে বাড়ি আনা থেকে সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতেন। হজরত জাবের ইবনে আবদুল­াহ খালা তালাকপ্রাপ্ত হলে তিনি খেজুর বাগান থেকে খেজুর সংগ্রহ করতেন। হজরত রাসূলুল­াহ (সা.) এটা জানলে বললেন, এতে কোনো ক্ষতি নেই।
মহিলা সাহাবি ক্বিলাহ (রা.) বাজারে ব্যবসা করতেন। হজরত আবদুল­াহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর স্ত্রী ঘরে বসে শিল্পকর্ম করতেন এবং তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতেন।
ওহুদের যুদ্ধে উম্মে আম্মারা (রা.) শত্রুদের তরবারির ডজনখানেক আঘাত সহ্য করেও বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে রাসূল (সা.)-এর ওপর আক্রমণকারী শত্রুদের প্রতিহত করেছিলেন। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর সময় উম্মে শিফা নামক মহিলা বাজারের পরিদর্শক (আল হিসবাহ্) হিসেবে নিয়োজিত হন। রুফায়দা আল-আসলামিয়া প্রথম মহিলা ডাক্তার ছিলেন।
রাসূল (সা.) খন্দকের যুদ্ধের সময় তাকে মদিনার মসজিদের পাশে তাঁবু টানিয়ে দিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি যুদ্ধাহত মুসলিম সেনাদের শুশ্রূষা করতেন। আশশিফা বিনতে আবদুল­াহ মুসলিম মহিলাদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য বের হতেন। উম্মে মিজান নামক এক মহিলা হজরত রাসুলুল­াহ (সা.)-এর মসজিদে ঝাড়ু দিতেন। তার মৃত্যুর পর তিনি তার জানাজার নামাজ পড়ান।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জয়নব আমাদের মধ্যে সবচেয়ে দানশীল। কারণ তিনি স্বহস্তে কাজ করতেন ও সদকা করতেন।’ সহিহ মুসলিম হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল­াহ (সা.) নিজের সহধর্মিণী জয়নবের কাছে এসে দেখলেন, তিনি চামড়া পাকা করার কাজ করছেন।’-সহিহ মুসলিম। এই হলো প্রিয় নবীর আমলে কর্মজীবি নারীদের অবস্থা। কিন্তু হাল সময়ে ইসলামের এই সোনালী ঐতিহ্যকে না জেনে, ইসলাম নারীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে প্রচার মূলতঃ অজ্ঞতারই পরিচায়ক।
ইসলামে নারীর অবস্থান ও মর্যাদা স্পষ্ট, প্রথমত নারীকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তাই শিক্ষা-দীক্ষার ক্ষেত্রে নারীর পিছিয়ে থাকারও কোনো অবকাশ নেই।
 

 

শরণার্থী হতে কেউই পছন্দ করেন না- মালালা


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শরণার্থীদের জন্য কেবল কথা বলা নয়, আমাদেরকে তাদের কথা শুনতেও হবে বলে মনে করেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পাকিস্তানী তরুণী মালালা ইউসুফজাই। তিনি আরো বলেন, শরণার্থী হতে কেউ পছন্দ করে না। শরণার্থী হতে তারা বাধ্য হন। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টেলিভিশন শো, দ্য ডেইলি শোতে এই কথা বলেন তিনি।
মালালা জানান, ‘আমি নিজেও পাকিস্তান থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত অন্য দেশে অভিবাসী ও শরণার্থী হবার জন্য ছুটছে। আমরা শরণার্থীদের বিষয়ে শুধু বলেই যাই। তবে, তাদের কথা শোনাও গুরুত্বপূর্ণ।’ শরণার্থীরাও যাতে সাহস দেখাতে পারে তাই তাদের সবসময় অনুপ্রেরণা দিতে হবে বলে মনে করেন মালালা ফান্ডের এই প্রতিষ্ঠাতা।
মালালা মনে করেন, শরণার্থীদের জন্য আমরা কি করতে পারি তা সবসময় ভাবতে হবে। তাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে হবে। মালালা নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, শরণার্থীদের অনেকের মধ্যেই প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের অনেকেই তার স্বাক্ষরও রাখছেন। তাদের নিজেদের গল্প বলার সুযোগ দিতে হবে।
মালালা বলেন, শরণার্থী হওয়া কারো প্রথম পছন্দ নয়, হতে পারে না। এটি সর্বশেষ এবং একমাত্র বিকল্প। শরণার্থীরা সবসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে অবস্থান নেওয়া এক ১৫ বছরের কিশোরী, যে তার বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে সে নিশ্চয়ই নিরাপদবোধ করবে না। তাকে সর্বদাই খুন বা অপহৃত হওয়ার আতঙ্কে থাকতে হয়। আর আমাদেরকে তার সেই ভয়ই দূর করতে হবে।


 

 ৬ গ্রেডে মজুরি বাড়ল পোশাক শ্রমিকদের

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মজুরি কাঠামোর সমন্বয় করা হয়েছে। ছয় গ্রেডে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি আমলে নিয়ে সরকার ১২ জানুয়ারি সংশোধিত মজুরি কাঠামো ঘোষণা করেছে। এতে ১নং থেকে ৬নং পর্যন্ত গ্রেডগুলোয় বেতন যৌক্তিকভাবে সমন্বয় করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিভিন্ন গ্রেডের বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করা হয়েছে। ১৫ টাকা থেকে শুরু করে ৭৮৬ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রেডে বেতন বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সপ্তম গ্রেডে ৮ হাজার টাকা মজুরি কাঠামো অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
সংশোধিত বেতন কাঠামো অনুসারে ১নং গ্রেডে ১৮ হাজার ২৫৭ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে মজুরি ছিল ১৭ হাজার ৫১০ টাকা। বেড়েছে ৭৪৭ টাকা মজুরি। ২নং গ্রেডের মজুরি ১৫ হাজার ৪১৬ টাকা ধরা হয়েছে। আগে ছিল ১৪ হাজার ৬৩০ টাকা। বেড়েছে ৭৮৬ টাকা। ৩নং গ্রেডে ২৫৫ টাকা বেড়ে ৯ হাজার ৮৪৫ টাকা, ৪নং গ্রেডে ১০২ টাকা বেড়ে ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা, ৫নং গ্রেডে ২০ টাকা বেড়ে ৮ হাজার ৮৭৫ টাকা এবং ৬নং গ্রেডে ১৫ টাকা বেড়ে ৮ হাজার ৪০৫ টাকা মজুরি হয়েছে।
এদিকে মজুরি কাঠামোর সন্তোষজনক সমন্বয়ের দিনেও সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শ্রম অসন্তোষের মুখে অর্ধশত পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। মজুরি ইস্যুতে সপ্তাহব্যাপী চলা শ্রম অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে রোববার দিনভর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বেতন কাঠামোর সংশোধন পর্যালোচনায় গঠিত মালিক, শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় কমিটির বৈঠক শেষে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী সংশোধিত নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেন।
মজুরি কাঠামোর অসঙ্গতি দূর হওয়ায় খুশি হয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়েছে। এখন যে মজুরি কাঠামো ঘোষণা হল সেটি আমরা শুধু মেনেই নিচ্ছি না, আমরা স্বাগতও জানাই। পাশাপাশি সব শ্রমিককে কাজে ফিরে যাওয়ার আহŸান জানাচ্ছি।
মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- গত কয়েকদিনে আন্দোলনের নামে যারা পোশাক কারখানা ভাংচুর করেছে তাদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। সম্পদ রক্ষায় সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে। সরকার যেন কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেয়। একই সঙ্গে শ্রমিকদের অবিলম্বে কাজে যোগ দেয়ার আহŸান জানিয়েছে মালিক পক্ষ। পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলেছে, ২৩ জানুয়ারি থেকে যেসব কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে না, সেসব কারখানা শ্রম আইন অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে।
 



Top

 মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষক

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের ফলে দেশের প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। বছরের প্রথম দিন বই উৎসবের পাশাপাশি উপবৃত্তির ব্যবস্থা থাকায় গ্রামাঞ্চলের অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। প্রতিবছর পাসের হার বাড়ছে। পিইসি, জেএসসি, এসএসসিতে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা আমাদের আশাবাদী করছে। কিন্তু শিক্ষার প্রকৃত মান কি এর দ্বারা যাচাই করা সম্ভব? প্রত্যন্ত এলাকায়ও এখন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হয়তো এমন কোনো গ্রাম এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো স্কুল নেই। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু শিক্ষার মান কি নিশ্চিত করতে পারছে এসব প্রতিষ্ঠান? কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তো বাণিজ্যের অভিযোগও আছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশের সরকারি ও এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় শিক্ষক সংখ্যা চার লাখ ৩১ হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে বিএড প্রশিক্ষণ নেই এক লাখ ৫৮ হাজার ৭২২ জন শিক্ষকের। প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকের বেশির ভাগই মাদরাসার। কোনো পেশায়ই প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়েই একজন পেশাজীবী নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন। প্রশিক্ষণ ছাড়া দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়, দক্ষতা না থাকলে সেই পেশায় কোনো অবদান রাখাও সম্ভব নয়। শিক্ষকতা পেশায় প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প তো থাকতেই পারে না। কারণ এ পেশায় প্রতিদিনই শিক্ষককে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের কথাই যদি ধরা হয়, সেখানে প্রশিক্ষণ পাওয়া ও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের মধ্যে ফারাকটা সহজেই ধরা পড়বে। এই পর্যায়ের শিক্ষকদের জন্য বিএড প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন শিক্ষক শিক্ষণ যাচাইয়ের সুযোগ পান। আবশ্যকীয় শিক্ষণ দক্ষতাও তিনি অর্জন করেন। এর পাশাপাশি শিক্ষা গবেষণা, জেন্ডার স্টাডিজ, শিক্ষণ কৌশল এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি সম্পর্কেও তিনি সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের মতো প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকের এসব বিষয়ে দক্ষতা থাকে না। ফলে শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় তাঁর দুর্বলতা ধরা পড়ে। পাঠদান পদ্ধতিতেও প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হতে পারেন না। শিক্ষা কারিকুলাম ও সিলেবাস বিষয়েও তিনি থাকেন অন্ধকারে। সবচেয়ে বড় কথা, শিক্ষকের জন্য অতি জরুরি ‘প্যারেন্টিং’ শিক্ষায় তাঁর ঘাটতি থেকে যায়। আর এ কারণেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
এ ব্যাপারে সরকারকে কঠোর নীতি অনুসরণ করতে হবে। শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, শিক্ষকতা পেশায় আসতে হলে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। পেশায় ঢোকার পর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাতে শিক্ষাঙ্গনের এবং দেশের কল্যাণ।

 

Top

ছদ্মবেশী ভয়ঙ্কর নারী


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরুর মাংসের ভুনা আর সবজি-সবকিছুই তৃপ্তি নিয়ে খেলেন আহমেদ পরিবার। খেতে খেতে ভাড়াটিয়ার রান্নার প্রশংসা করছিলেন সবাই। বলছিলেন, আহ! বহুদিন পর এমন মজাদার রান্না খেলাম। বাড়িওয়ালা আহমেদ এতটাই উচ্ছ¡সিত যে, ফিরনি দুবার নিয়ে খেলেন। কিন্তু এই ভালো লাগার চিত্র বেশিক্ষণ ছিল না। মজাদার খাবার খেয়ে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়েছিল। খাবার খেয়ে একের পর এক জ্ঞান হারান বাড়িওয়ালা পরিবারের নয় সদস্য। পরে বাড়িওয়ালার ঘরের সর্বস্ব লুট করে পালায় সেই ভাড়াটিয়া। ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল­ার দেলপাড়া এলাকার আলী আহমেদের বাড়ির।
ডেমরায় ভাড়াটিয়ার দাওয়াত খেয়ে বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন বাড়িওয়ালা বৃদ্ধ দম্পতি। ভাড়াটে সেজে বাড়িতে ঢুকে ঘরের জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায় কয়েক নারী। তারা ভাড়া নিতে এসে বৃদ্ধ বাড়িওয়ালার সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলে। এরপর অজ্ঞান করে বাড়িঘরের মালামাল লুটে নিয়ে পালায়। ঘণ্টাখানেক পর লোকজন জানতে পারেন, বৃদ্ধ দম্পতি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। হাসপাতালে নেওয়া হয় তাদের। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। সর্বশেষ এমন আরেক ঘটনা ঘটে রাজধানীর সায়েদাবাদে। বাড়ি ভাড়া নিতে এসে দম্পতিকে অচেতন করে স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিয়েছে কজন অজ্ঞাত নারী। এ টি এম সোলাইমান (৭০) ও তার স্ত্রী নাজমা বেগমের (৫৫) অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়ের জামাই তাজুল ইসলাম জানান, করাতিটোলায় তাদের নিজ বাড়ির ছয়তলা ভবনের নিচতলায় থাকেন তারা। তিনি জানতে পেরেছেন, সকালে তিনজন নারী বাসা ভাড়ার কথা বলে তাদের বাসায় এসেছিল। এরপর থেকে তারা অজ্ঞান। তাদের শরীরে থাকা সোনাদানা সব লুটে নিয়ে পালিয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে এমন ভয়ঙ্কর নারী ছড়িয়ে পড়েছে। যারা বাসা ভাড়ার কথা বলে ভাড়াটিয়ার ছদ্মবেশ নেয়। এরপর ভাড়িওয়ালাকে অজ্ঞান করে মালামাল লুটে নিয়ে পালায়। সংশ্লিষ্টরা বলেন, কয়েক বছর ধরে নতুন এক ধরনের চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ চক্রটি বাড়ি ভাড়া হবে বা টু-লেট দেখে ভাড়া নেওয়ার নাম করে মালিকের বাড়ি যায়। এরপর কৌশলে বাড়িওয়ালাকে খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে বাড়ির দামি জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা লুট করে। অনেক সময় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে ভাব জমিয়েও এমন কাজ করে চক্রটি। তবে তাদের টার্গেটে থাকে বৃদ্ধ বাড়িওয়ালা। যাদের খুব সহজে কাবু করতে পারে। এমন একটি চক্র পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে স¤প্রতি। এ চক্রটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল­ায় খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ একই পরিবারের নয়জনকে অচেতন করে সর্বস্ব লুটে নেয়। গ্রেফতারের সময় ভাড়াটিয়া এই দম্পতির কাছ থেকে সোনার অলঙ্কার, ল্যাপটপ, ক্যামেরাসহ অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। প্রতারক এই চক্রকে রাজধানী ঢাকার মান্ডা এলাকার জালাল মিয়ার ষষ্ঠতলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই চক্রের সদস্যদের অধিকাংশই নারী। তারা মূলত অজ্ঞান পার্টি। ভাড়াটিয়ার ছদ্মবেশে তারা এখন বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়েছে। কখনো বাসা ভাড়া নিয়ে, আবার কখনো বাসা ভাড়া নিতে এসেই অজ্ঞান করে সর্বস লুটে নিয়ে যায়। পুলিশ বলছে, ভাড়া নিতে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে অবশ্যই শক্ত সামর্থ্য লোকজনকে কথা বলতে হবে। বয়স্ক লোকদের এ কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। তাছাড়া এমন ঘটনার সন্দেহ হলে, অবশ্যই পুলিশকে জানাতে হবে।

 

পৃথিবীতে একমাত্র ব্যাক্তি যার কোথাও যেতে পাসপোর্ট লাগেনা
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ব্রিটিশ রাণী এলিজাবেথ পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাননা কেন তার সঙ্গে থাকে বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী। থাকে মণি মুক্তার মতো বহুমূল্যের রতœ। এমনকি তার সঙ্গে তার পোষা কুকুর করজিসের জন্যও থাকে বিশেষ খাদ্য। তবে, যে জিনিসটি কখনোই থাকেনা তা হলো পাসপোর্ট। কারণ পৃথিবীর কোথাও কোন সীমান্ত অতিক্রমণে তার পাসপোর্ট লাগেনা।
রাণী এলিজাবেথ ছাড়া যে কোন মানুষকেই পৃথিবীর কোন না কোন স্থানে পাসপোর্ট ব্যবহার করতেই হবে। এমনকি সে যদি রাণী ছাড়া ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্য যে কোন সদস্যও হয়। কিন্তু কি এর কারণ?
জানা গেছে, যতো ব্রিটিশ পাসপোর্ট ইস্যু করা তার সবই রাণীর পক্ষ থেকে। এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের ওয়েবসাইটে লেখা আছে, ‘রাণী যখন বিদেশে ভ্রমণ করেন তখন তাঁর কোন পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই। মেরুণ রঙের ব্রিটিশ পাসপোর্টে দুটি রাজকীয় অস্ত্রের প্রতিকৃতি খোদাই করা আছে। আর লেখা আছে যে, ব্রিটেনের মহিমান্বিত রাণীর পক্ষ থেকে পাসপোর্টধারী ব্যক্তিকে গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
সুতরাং যেখানে স্বয়ং রাণীই ব্রিটিশ পাসপোর্ট ইস্যু করেন এবং পাসপোর্টধারী ব্যক্তির দায় গ্রহণ করেন সেখানে তার নিজের দায় নিয়ে কারো কোন প্রশ্নই থাকতে পারেনা। তবে, রাণী ছাড়া ব্রিটিশ রাজ পরিবারের অন্য যে কোন সদস্যকেই বিদেশ ভ্রমণে পাসপোর্ট বহন করতে হবে। এমনকি এটি রাণীর স্বামী ডিউক অব এডিনবার্গের জন্যও প্রযোজ্য।
এছাড়াও একই কারণে পৃথিবীর কোথাও রাণী এলিজাবেথের কোন ড্রাইভিং লাইসেন্সেরও প্রয়োজন নেই।
যে শহরে দুই মাস সূর্য ওঠে না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভোর হলে দেখা দেয় সূর্যের হাসি। গোটা প্রকৃতি আলোকিত করে, তপ্ত করে সূর্যের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়। যদি এমন হয়, এই সূর্য উঠবে না দুই-এক মাস!
কি, অবাক হচ্ছেন? ভয় লাগছে বিষয়টি শুনে? বিচিত্র এই দুনিয়ায় কতই না ঘটনা ঘটে। এমনটাই নিয়মিত ঘটছে আলাস্কায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উত্তরে আলাস্কা রাজ্যের একটি অন্যতম শহর উতকিয়াগভিক। শহরটি সুমেরুবৃত্ত থেকে ৩২০ মাইল দূরে অবস্থিত। একসময় ‘ব্যারো’ নামে পরিচিত ছিল এই শীতলতম স্থানটি।
মাত্র ৪ হাজার লোকের বসবাস এখানে। বর্তমানে চলছে ৬৫ দিনের রাত। অর্থাৎ নভেম্বরের শেষ দিক, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির শুরুর দিক মিলে দুই মাস আর সূর্যের আলো দেখা যাবে না।
প্রথম দিকে একদিন মাত্র ৬৪ মিনিটের জন্য সূর্যের আলো দেখে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। গত বছর ১৮ নভেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৪ মিনিট নাগাদ সূর্য ডুবে যায়। ২০১৮ সালকে দেড় মাস আগেই বিদায় জানিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি দুপুর ১টা ৪ মিনিটে সূর্য উঠবে বলে আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়।
এই শহরে শেষ সূর্য ওঠে নভেম্বরের একদিন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে আর অস্ত যায় দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে। শেষবারের মতো সূর্যকে দেখতে জড় হন বাসিন্দারা। মেরু রাতের শুরুতে উৎসবের ঢঙেই শুরু হয় অনন্ত রাত।
বন্ধুবান্ধব মিলে একত্রে ভালো ভালো খাবার খেয়ে, ভৌতিক ছবি দেখে আর আনন্দ-হাসিতামাশা করে দিন কাটান তারা। এর আগে গত ৩০ দিনও রাত ছিল অঞ্চলটিতে।
তবে ওইদিনই পুরোপুরি দীর্ঘদিনের জন্য অস্ত যায় সূর্য। যদিও মেঘের জন্য ৬৪ মিনিটের সূর্যকে ভালোভাবে দেখতে পাননি তারা। তবে অঞ্চলটি একেবারে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে না। দেখা যায় পোলার নাইট বা মেরু রাত। প্রতি বছরই এমন হয়ে থাকে। মেরু রাতগুলো তারা অতিক্রম করেন মূলত ভীতিমূলক ছবি দেখে।
জানা যায়, এই হিম রাত চলাকালীন তাপমাত্রা থাকে মোটামুটিভাবে মাইনাস ৫ থেকে মাইনাস ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শীতের মাত্রা বৃদ্ধির দিকে যা মাইনাস ২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত পৌঁছে।
শুধু উতকিয়াগভিক শহরই নয়, আলাস্কার কাকটোভিক, পয়েন্ট হোপ ও আনাকটুভুক পাসের বাসিন্দারাও এক থেকে দুই মাস সূর্যের দেখা পান না। নভেম্বর মাসের শেষ থেকে ডিসেম্বরের শুরুর সময়টুকুর মধ্যে এসব অঞ্চলেও সূর্য ডুবে থাকে।
 

বাংলাদেশ গরিব মানুষের বসবাসে বিশ্বে পঞ্চম


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অতিগরিব মানুষের সংখ্যা বেশি এমন ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। বিশ্বব্যাংকের ‘পোভার্টি অ্যান্ড শেয়ার প্রসপারিটি-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি হতদরিদ্রের বাস পাশের দেশ ভারতে, ১৭ কোটি ৫৭ লাখ। এরপর আছে যথাক্রমে নাইজেরিয়া, কঙ্গো ও ইথিওপিয়া। তালিকায় ছয় থেকে ১০ নম্বরে থাকা বাকি পাঁচ দেশ হলো তানজানিয়া, মাদাগাস্কার, কেনিয়া, মোজাম্বিক ও ইন্দোনেশিয়া। বাংলাদেশে হতদরিদ্রের সংখ্যা দুই কোটি ৪১ লাখ।
ক্রয়ক্ষমতার সমতা বা পিপিপি অনুসারে, দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯০ ডলারের কম এমন ব্যক্তিদের হতদরিদ্র ধরা হয়। প্রতি পিপিপি ডলারের মান বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩২ টাকার মতো। সেই হিসাবে, এ দেশের প্রায় দুই কোটি ৪১ লাখ মানুষের দৈনিক আয় ৬১ টাকার কম। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অতিগরিব মানুষের একটি আলাদা হিসাবও দিয়েছে জাতিসংঘ। এ ধরনের দেশের মানুষকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে হলে প্রতিদিন অন্তত ৩ দশমিক ২ পিপিপি ডলার উপার্জন করতে হবে। বিশ্বব্যাংক বলছে, এই মানদণ্ডে বাংলাদেশে অতিগরিব মানুষের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। সংখ্যাটি হবে আট কোটি ৬২ লাখ। মোট জনসংখ্যার হিসাবে ৫২.৯ শতাংশ।
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘ওয়েলথ-এক্স’ জানায়, অতিধনী বাড়ার হারে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। একই প্রতিষ্ঠানের গত বুধবারের আরেকটি প্রতিবেদনে উঠে আসে, ধনী বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ তৃতীয়। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরে এ দেশে ধনী মানুষের সংখ্যা ১১.৪ শতাংশ হারে বাড়বে।

 

আপন তিন বোনই ব্যারিস্টার!


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চট্টগ্রামের বনেদি পরিবারের সন্তান প্রিয়াংকা আহসান, ফাতিমা ওয়ারীথাহ আহসান ও প্রিয়া আহসান। তারা আপন তিন বোন। তিনজনই ব্যারিস্টার। যা বাংলাদেশে বিরল। নানা আব্দুল মালেক উকিল ছিলেন প্রখ্যাত আইনজ্ঞ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বাবা আবদুল্লাহ আল আহসান, দেশের শিল্পখাতের অন্যতম আইকন। ছোটবেলা থেকেই নেহেরু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আইনজ্ঞ নানার গল্প শুনে বড় হওয়া তিন বোন বাবার অনুপ্রেরণায় ব্যারিস্টারি পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাবার স্বপ্ন পূরণে এক এক করে তিন বোন পাড়ি জমান লন্ডনে।
তাদের ভাষায় ‘প্রথম থেকেই বাবার কনসেপ্ট ছিল- হলে তিন জনই ব্যারিস্টার হবে। দেয়ার ইজ নো আদার অপশন। এ কারণে আমরা কখনও অন্য কোনো অপশন চিন্তা করিনি।’ ব্যারিস্টারি পাশ করে দেশে এসে বাবার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তিন বোন শুরু করেছেন আইন পেশা। প্রখ্যাত আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলামের চেম্বারে কাজ শুরু করা বড় বোন ব্যারিস্টার প্রিয়াংকা আহসান আইন পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। পাশাপাশি শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করে পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান। সেভ দ্যা চিলড্রেন, হোপ ফর চিলড্রেন,অ্যাকশন এইডসহ বিভিন্ন এনজিওতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেঝ বোন ব্যারিস্টার ফাতিমা আহসান আইন পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে শুধু দেশেই না বিশ্বজনীন ভাবে আইন প্র্যাকটিস করে তার মেধা কাজে লাগাতে চান। নিজেদের প্রতিষ্ঠিত এনজিও’র মাধ্যমে নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যেতে চান তিনি। অপরদিকে, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে কাজ শুরু করা ছোট বোন ব্যারিস্টার প্রিয়া আইন পেশায় লেগে থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যেতে চান। সমাজের অবহেলিত-দরিদ্র মানুষের জন্য কাজও করতে চান তিনি।
এক বিছানায় তিন বোনের বেড়ে উঠা, ব্যারিস্টারি পড়ার দিনগুলো, তিন বোনের খুনসুঁটি, ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে এই প্রথম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তারা।




যুক্তরাজ্যের গ্রামীণ ফাউন্ডেশন দেউলিয়া


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের পদ্ধতি অনুসরণ করে ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যে গ্রামীণ ফাউন্ডেশন স্কটল্যান্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। বিবিসির সর্বশেষ খবর হলো এই প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে পড়ায় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার আবেদন করেছেন পরিচালকরা। এই ফাউন্ডেশনেরও ছয়জন পরিচালকের একজন ছিলেন অধ্যাপক ইউনূস, যেটি যুক্তরাজ্যের গ্রামীণ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল।
যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডে অনগ্রসর ব্যক্তিদের ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক সংকটের শুরু হয় যখন এর বেশ কয়েকজন গ্রাহক তাঁদের বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থ হন। প্রতিষ্ঠানটিতে একজন আর্থিক কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে, যিনি এখন সেটির সম্পত্তি বিক্রি করে যতটা সম্ভব দেনার বন্দোবস্ত করবেন। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য ছিল, যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করা, প্রাথমিকভাবে যা পশ্চিম স্কটল্যান্ড থেকে শুরু করা হয়।
কর্মকাণ্ড শুরু করার পর প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার মানুষের মধ্যে ঋণ বিতরণ করে। কিন্তু অনেক ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানটি সংকটের মধ্যে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির সম্পত্তি ও দেনা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়া ডানকান এলএলপির কর্মকর্তা ব্রায়ান মিলনে বলেছেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম এখন বন্ধ হয়ে গেছে। গ্রামীণ স্কটল্যান্ড ফাউন্ডেশন এখন আর তাদের ব্যবসা চালাতে পারবে না, যেহেতু তাদের ঋণের পরিমাণ অপূরণীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘ঋণগ্রহীতাদের কাছে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় তিন লাখ পাউন্ডের ঋণ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ধসের কারণ হচ্ছে যে অনেক ঋণগ্রহীতা তাঁদের বকেয়া পরিশোধ না করার কারণে সেটি আর্থিক অবস্থার ওপর বড় প্রভাব পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে পড়ায় ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার আবেদন করেছেন পরিচালকরা।’
 

চিকিৎসকদের ডিগ্রি বিতর্ক

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চিকিৎসকদের উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে চলা মতবিরোধের সুরাহা দীর্ঘ ৮ বছরেও না হওয়া দুর্ভাগ্যজনকই বলতে হবে।
এমবিবিএস শেষ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেখানে এমডি, এমএস, এমফিল ইত্যাদি বেশি গ্রহণযোগ্য, সেখানে আমাদের দেশে এফসিপিএস ও এমসিপিএস ডিগ্রিকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে মতবিরোধ ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আমরা মনে করি, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চিকিৎসকদের উৎকর্ষ সাধন এবং রোগীদের বেশি কাজে আসবে যে ডিগ্রি, তাকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত বিষয়টির সুরাহা করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে চিকিৎসায় উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে মতবিরোধের সমন্বয় করার নির্দেশ দেয়ার পর এখনও বিষয়টি ঝুলে থাকা দুঃখজনক।
এটা সত্য, এফসিপিএস ও এমসিপিএস করে তারপর এমডি, এমএস ইত্যাদি ডিগ্রি নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে অনেক সময় চলে যাবে একজন চিকিৎসকের। তাছাড়া এফসিপিএস ও এমসিপিএস ডিগ্রি নয়, মূলত ফেলোশিপ। তাই এমডি-এমএসের আগে এগুলো বাধ্যতামূলক করে দেয়া যেমন যৌক্তিক নয়, তেমনি যুগ যুগ ধরে ডিগ্রি দুটির সেবাদাতা-গ্রহীতাদেরও উপেক্ষা করা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এক্ষেত্রে দেশে চিকিৎসায় উচ্চ ডিগ্রি দেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরসহ সরকারের শীর্ষ মহলের সমন্বয়ে স্বাস্থ্য খাতের উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধের সমাধান দ্রুত বের করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, এমন একটা সময় আমাদের চিকিৎসকদের ডিগ্রি নিয়ে মতবিরোধ চলছে, যখন স্বল্প খরচ ও সহজে যাতায়াতের সুযোগে আমাদের রোগীদের অনেকেই বিদেশ, বিশেষত ভারতমুখী। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় অন্যান্য দেশেও চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন রোগীরা। এর পেছনের কারণ দেশের চিকিৎসাসেবার প্রতি অনাস্থা বৈ কিছু নয়।
এ অবস্থায় যদি চিকিৎসকদের ডিগ্রি নিয়ে তৈরি মতবিরোধ জটিল আকার ধারণ করে, তবে দেশের চিকিৎসা খাতে আরও অনীহা তৈরির পাশাপাশি বহির্মুখী মনোভাব প্রকট আকার ধারণ করবে।
এফসিপিএস-এমসিপিএস ও এমডি-এমএসের পক্ষে-বিপক্ষের সবাইকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি, চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর কল্যাণই যে আসল এটি বিবেচনায় নিয়ে যে ডিগ্রি চিকিৎসকদের বেশি দক্ষ করে এবং বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সমান পর্যায়ে নিয়ে যায়, সেটির পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।


 

৬৫ লাখ বাংলাদেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৩ হাজার ৩’শ কোটি ডলার


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
২০০৯ সাল থেকে সাড়ে ৬ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিদেশে যাওয়ার পর গত নভেম্বর পর্যন্ত রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১৩৩.৫ বিলিয়ন ডলার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে গত বছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজে গিয়েছে। বর্তমানে ১৬৯টি দেশে বাংলাদেশিরা কাজ করছে। এর আগের সরকারের আমলে ৬৯টি দেশে কাজ করত বাংলাদেশি শ্রমিকরা। বাসস
বিভিন্ন দেশে শ্রমবাজারের খোঁজ ও সে অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা পর্যায়ে এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে অনেকেই সহজে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর দক্ষ লোকবল হিসেবে বিদেশে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৬.২৯ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ১৪.৯৮ বিলিয়ন, ১৬-১৭ অর্থবছরে ১২.৭৭, ১৫-১৬ অর্থবছরে ১৪.৯৩, ১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫.৩২, ১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪.২২, ১২-১৩ অর্থবছরে ১৪.৪৬, ১১-১২ অর্থবছরে ১২.৮৪, ১০-১১ অর্থবছরে ১১.৬৫, ৯-১০ অর্থবছরে ১০.৯৯ ও ৮-৯ অর্থবছরে ৯.৬৯ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট বলছে অভিবাসী খরচ ১০ ভাগ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কারণে রেমিটেন্স প্রবাহের গতি বেড়েছে। এছাড়া বিদেশি ভাষা শিখে আগের চেয়ে অনেক সহজে বাংলাদেশিরা বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। কূটনৈতিক উদ্যোগ নেয়ায় মালয়েশিয়া ও সৌদি আরবে অনেক অবৈধ বাংলাদেশি বৈধ হবার সুযোগ পেয়েছেন। এর পাশাপাশি হংকং, জর্ডান, বাহরাইন ও মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ওসব দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটেছে।

 

 নাগরিকত্বের জন্য হ্যান্ডশেক বাধ্যতামূলক আইন পাশ করলো ডেনমার্ক

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পেতে হলে সংশ্লিষ্ট পুরুষ অথবা নারী কর্মকর্তার সাথে করমর্দন বাধ্যতামূলক করা নিয়ে আইন পাশ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টের উগ্র ডানপন্থি এবং রক্ষণশীল লিবারেল জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে এ আইন পাশ হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এ আইন কার্যকর হবে।
তবে দেশটির অনেক পৌরমেয়র এ আইনের বিরোধিতা করে জানিয়েছেন, অনাবশ্যক একটি বিষয়কে নাগরিকত্বের জন্য বাধ্যতামূলক করা অহেতুক।
দেশটির আইনজ্ঞরা বলেছেন, করমর্দন আইন হিজাব নিষেধাজ্ঞার মতোই। আইনটি মুসলমানদের বিরুদ্ধেই করা হয়েছে। যারা ধর্মীয় বিশ^াস অনুযায়ী বিপরীত লিঙ্গের সাথে করমর্দন করতে অপছন্দ করেন। অন্যদিকে দেশটির রাজনীতিবিদরা বলেছেন, করমর্দন দেশের মৌলিক মূলনীতির অংশ হিসেবেই এ আইন করা হয়েছে।
গত আগষ্টে হিজাব নিষেধাজ্ঞা আইন কার্যকর করে ডেনমার্ক। এরফলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেন দেশটির মুসলিম নারীরা। উদ্ব্যেগ জানায় মানবাধিকার সংস্থাগুলোও।

 

Top

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রোগীর তথ্য অধিকার


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রোগীর তথ্য অধিকার অন্য যে কোনো অধিকারের মতো উন্নত বিশ্বে সর্বজনীন রূপ লাভ করেছে। রোগীর তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নৈতিক সুশাসন কাঠামোর অংশ হিসেবে উন্নত দেশগুলোয় প্রয়োজনীয় আইনও করা হয়েছে। আদালতও রোগীর এ অধিকার সংরক্ষণে এগিয়ে এসেছে। যেমন, ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ম্যাসাসিউট একটি আইন প্রণয়ন করে। সে আইন চিকিৎসককে নির্দেশ প্রদান করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শিক্ষাগত যোগ্যতা কী, কী কী সম্মান ও পুরস্কার তিনি এ পর্যন্ত অর্জন করেছেন, তিনি কোন ধরনের বীমা পলিসি নিয়েছেন ইত্যাদি বিষয় রোগীদের কাছে প্রকাশ করতে হবে, যাতে চিকিৎসক নির্বাচনে রোগী বা তার প্রতিনিধি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
রোগীকে রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা, তাকেই তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম করে তোলা, রোগীর আত্মসম্মানবোধকে স্বীকার করা বিষয়গুলোর নৈতিক ও প্রয়োগিক মূল্য আছে। রোগীর স্বাধীনতা ও তার প্রকৃত ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে বা জানতে চিকিৎসক ও সমাজ রোগীর জানার অধিকারকে নিশ্চিত করতে চেয়েছে। এ দৃষ্টিকোণটি ইমানুয়েল কান্টের কর্তব্য পালন নীতি ও সদিচ্ছার নীতি এবং অ্যারিস্টটলের সদ্গুণ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নে।
রোগীর তথ্য অধিকার অস্ট্রেলিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন জানা যায়, এক ভারতবংশীয় আমেরিকান ডাক্তার অপারেশন করে অনেক রোগী মেরে ফেলেছেন। ওই ডাক্তারের কর্মকাণ্ডকে নৈতিক অনুমোদন সমাজ দেয়নি। বাংলাদেশের সার্জনদের সম্পর্কে আমরা ভয়াবহ সংবাদ পত্রিকার পাতায় দেখতে পাই। সম্প্রতি জানা গেছে, নামি এক হাসপাতালের একজন সার্জন রোগীর দুটো কিডনি ফেলে দিয়েছেন। ওইসব সংবাদ রোগীদের বিদেশে যেতে অনুপ্রাণিত করে। এসব বাস্তব সমস্যা থেকে উন্নত দেশগুলো নজর দেয় রোগীর তথ্য অধিকার পর্যালোচনায়। আর সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রোগীর তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে শল্য চিকিৎসাবিদদের রিপোর্ট কার্ড প্রবর্তনের বিষয়টি নৈতিক বিবেচনায় গুরুত্ব পায়। গবেষকরা মনে করেন, সার্জনদের রিপোর্ট কার্ড রোগীর তথ্য অধিকার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিবেচ্য বিষয় বাংলাদেশের সার্জনদের জন্য এমন একটি পদ্ধতি প্রবর্তন করা যায় কিনা।

 
জনস্বার্থে ফিটনেসবিহীন যানবাহন নিষিদ্ধ করুন


সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। ছোটদের বড় আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বোধোদয় হয়েছে বলে মনে হয় না। যানবাহনের মালিক, চালক কারো আইনের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা আছে বলেও মনে হয় না। আন্দোলনের পরও কমেনি সড়ক দুর্ঘটনা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরেনি। অদক্ষ চালকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে যানবাহন। আইনের তোয়াক্কা না করে সড়ক-মহাসড়কে উঠে আসছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর ফল যে কী হতে পারে, তা প্রতিদিনের সংবাদপত্রের পাতায় দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। গত বৃহস্পতিবার বাস ও থ্রি হুইলার সংঘর্ষে ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিন জেলায় নিহত আরো ছয়জন।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, শুধু আন্তরিকতা নেই বলেই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। সরকারি হিসাব মতে, দেশে ৩২ লাখ গাড়ির সরকারি নিবন্ধন থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে ২৫ লাখের। অর্থাৎ বাকি যানবাহন তুলে দেওয়া হয়েছে লাইসেন্সবিহীন চালকদের হাতে। নিয়ম অনুযায়ী চালকদের প্রথমে হালকা গাড়ির লাইসেন্স নিতে হয়। এর তিন বছর পর মাঝারি গাড়ির লাইসেন্স পাওয়া যায়। ভারী গাড়ির লাইসেন্স নিতে আরো তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়। এরপর যে চালক বাস চালাতে চায়, তাকে পিএসভি নামে ভিন্ন আরেকটি লাইসেন্স নিতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চালকরা এত দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে চায় না। হালকা বা মাঝারি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নিয়েই অনেকে বাস চালাচ্ছে। এর বাইরে আছে নিবন্ধনহীন স্বল্পগতির যানবাহন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ সড়ক-মহাসড়কে চলছে তিন চাকার স্বল্পগতির যানবাহন। গত বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের হরিদাসপুরে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে থ্রি হুইলারের এই সংঘর্ষ হয়েছে।
দেশে মানুষ বাড়ছে। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। নতুন নতুন রুট চালু হচ্ছে। ফলে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। ২২টি জাতীয় মহাসড়কে থ্রি হুইলার অটোরিকশা, নসিমন-করিমন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মহাসড়কে চার লেন চালু হয়েছে, স্থাপন করা হয়েছে সড়ক বিভাজক। নির্মিত হয়েছে আন্ডারপাস-ওভারপাস। মাঝেমধ্যে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হয়। সড়ক-মহাসড়কের আধুনিকায়নও হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বিআরটিএ সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট গঠন করেছে। সড়ক নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা, রোড শো করেও নিশ্চিত করা যায়নি সড়ক নিরাপত্তা। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে যানবাহনের মালিক ও চালকদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আইন মেনে চললে দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।
 


 মালয়েশিয়ায় মিনি বাংলাদেশ ‘বাংলা পাসার’


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ায় রয়েছে আরেক ‘মিনি বাংলাদেশ’। মালয়েশিয়া জুড়ে বাংলাদেশিরা থাকলেও দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে অদূরে গড়ে উঠেছে ‘বাংলা পাসার’। মালয় ভাষায় পাসার অর্থ বাজার। বাংলাদেশিরা এই বাজার গড়ে তুলেছেন বলে এই বাজারের নামকরণ করা হয়েছে ‘বাংলা পাসার’।
স্থানীয় প্রবাসীরা জানিয়েছেন, দেশটির সেলাঙ্গ জেলার চুইঙ্গা বুলু থানায় এ বাজার গড়ে উঠেছে। বাঙালিরা এ বাজার গড়ে তুললেও এখানে শুধু বাংলাদেশিরা ব্যবসা করেন না, মালয়, থাই, চায়নিজসহ অন্য দেশের ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন। ক্রেতাও শুধু বাঙালি নয়, ভিন্ন দেশেরও রয়েছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, ১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ যখন অবৈধ বিদেশিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বৈধ করার সুযোগ দেন, তখন থেকেই ওই এলাকায় বসবাস শুরু করেন বাংলাদেশিরা।
ফেনী জেলার প্রবাসী মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ১৯৯৬ সালের শেষের দিকে বাজারটি গড়ে ওঠে। ৯৬ সালে যখন এই এলাকায় আমরা আসি, তখন শুধু জঙ্গল আর কিছু খামার ছিল। মানুষের বসতি ছিল না। এখন এই এলাকায় প্রচুর শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকজন বাংলাদেশি মিলে বাজারটি গড়ে তোলার পর থেকে কিছু বাঙালি পণ্য-সামগ্রী নিয়ে রাস্তায় বসে বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন বাজারটি অনেক বড় হয়ে গেছে।
বাংলা পাসার বাজারে খাবারের দোকানে ক্রেতা। পাসারে গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশিরা ইমিটেশন সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। কেউ আলু, সবজি ও মাছ বিক্রি করছেন। সেই বাজারে মালয়েশিয়ান হরেক রকমের খাবার নিয়ে বসেছেন হু মাও সি। তিনি বলেন, বাজারটি বাংলাদেশিরা গড়ে তুললেও এখানে সব দেশের লোকজনই আসেন।
প্রবাসীরা জানান, প্রতিদিন বাজার বসলেও প্রতি রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সেদিন সব বাংলাদেশিরা বাজারে আসেন।
প্রবাসী ব্যবসায়ী আব্বাস আলী বলেন, ৩ মাস ধরে বাজারে ব্যবসা করছি। বেচাকেনা ভালো। একই কথা জানালেন আরেক প্রবাসী মো. মোমেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি রোববার আমরা এখানে মিলিত হই। বাজারটি বাংলা নামে হওয়ায় প্রবাসের মাটিতে ভালোই লাগে। 

 

নিউইয়র্ক পুলিশের প্রথম বাংলাদেশি নারী সার্জেন্ট কুমিল্লার মেয়ে ফজিলাতুন নিসা!

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

ফজিলাতুন নিসা। ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে কুমিল্লার এই মেয়ে ডিভি (ডাইভারসিটি ভিসা) লটারির সুযোগ পেয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। নিউইয়র্ক শহরের অচেনা অলিতে-গলিতে প্রথমে কাজ জোটে একটি সুপার মার্কেটে।
২০০৫ সালে পরিবারের সংকটময় সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিলেও সুপারশপের কাজে নিজেকে বেধে রাখতে চাননি তিনি। স্বপ্নটা বড় থাকায় দূর পরবাসে গিয়ে পড়াশোনাটা চালিয়ে যাওয়া ছিল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তাই ভর্তি হন স্থানীয় এক কলেজে।
আর কলেজে পড়ার সময়ই জানতে পারেন, অভিবাসী হয়েও নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কাজ করা যায়। শুরু হলো স্বপ্নের প্রতীক্ষা। ২০১২ সালে সে সুযোগ পেয়ে এমুহূর্ত দেরি করেননি ফজিলাতুন নিসা। যোগ দেন এনওয়াইপিডিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে এ ধরনের নতুন পেশায় যোগ দেওয়ার গল্পটা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাসলিমা আখতার নামের আরেক বাংলাদেশি নারী নিউইয়র্কের ইউনিফর্ম পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে বাংলাদেশি অভিবাসী কোনো নারী চ্যালেঞ্জিং এ কাজে যোগ দেননি। আমরাই ছিলাম পুলিশে প্রথম বাংলাদেশি নারী।’
পুলিশে নিয়োগ পাওয়ার পর দুই বছর প্যাট্রোল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফজিলাতুন নিসা। তিন ভাষায় দক্ষতা থাকার সুবাদে বিশেষ সুযোগ পান পুলিশ বিভাগে। ফজিলাতুন নিসাকে যুক্ত করা হয় এনওয়াইপিডির কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে।
২০১৭ সালে পদোন্নতি পান সার্জেন্ট পদে। সেই থেকে নিউইয়র্ক পুলিশের প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি নারী সার্জেন্ট হলেন ফজিলাতুন নিসা। বাংলাদেশের গর্বিত এই নারী যুক্তরাষ্ট্রের মতো জায়গায় নিজের অবস্থান তৈরি করাটাকে একটা চ্যালেঞ্জ মনে করেন তিনি।
 

 বেকারত্ব কমাতে দরকার শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার


বেকারত্ব কমাতে দরকার শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর পাওয়া আর না পাওয়ার হিসাব চুকাতে গেলে অনেক কিছুরই গলদ চোখে পড়বে। হয়তো বা যতটুকু উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল ততটুকু হয়নি। তবে আশাহত হওয়াটাও ঠিক হবে না।
অতীতের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা থেকে সেই কবেই আমরা বেরিয়ে এসেছি। তারপর বাংলাদেশ হেঁটে এসেছে অনেকটা পথ। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ এখন সমীহ জাগানিয়া দেশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক রেমিটেন্স অর্জন কিংবা মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নয়নশীল দেশকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত। সম্প্রতি বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এতসব উন্নয়ন আশা জাগায়। তবে ওই যে প্রথমে বলেছিলাম- এতসব উন্নয়নের মাঝেও কিছুটা গলদ চোখে পড়বে। দেশের অন্যতম প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখনও টিকে আছে; তবে কিছুটা খেই হারিয়েছে বৈকি! সময়ের পরিক্রমায় দেশে আরও নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছে। হয়তো বা উচ্চশিক্ষাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্যই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হচ্ছে। উদ্দেশ্য এমনটা হয়ে থাকলে তা নির্দ্বিধায় মহৎ বলা চলে।
এবার আসল কথায় আসা যাক। দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৫। স্বাধীনতা-উত্তর দেশে হু হু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে এবং এখনও এই ধারা চলমান। আমরা শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে যতটা না ভাবছি তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ানোর ওপর। শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে দ্বিমত নেই; কারোরই দ্বিমত থাকা উচিত নয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা শুধু শিক্ষিতের সংখ্যাই বাড়াচ্ছে। বাড়াচ্ছে উচ্চশিক্ষার হার। কিন্তু সেই সঙ্গে বাড়ছে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও।
আমরা যারা একটু-আধটু সংবাদপত্র পড়ি, তারা মোটামুটি অবগত আছি এ বিষয়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশে বেকারের সংখ্যা ৪ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী চাকরিবঞ্চিত অবস্থায় রয়েছে। আমাদের শুধু বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে নিঃসন্দেহে। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সহজেই কোনো একটি নির্দিষ্ট পেশায় ঢুকে পড়ার ভালো সুযোগ রয়েছে। নয়তো অচিরেই এই শিক্ষিত জনগোষ্ঠী দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। উন্নয়নের পথে ধাবিত হওয়া অর্থনীতি খেই হারাবে। বেকার জনগোষ্ঠী হতাশায় নিমজ্জিত হবে। তাদের হাতেই সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। গবেষণা তাই-ই বলে; খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার তাগিদে এই বেকাররা বিভিন্ন অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়বে। মাদকাসক্তি, টাকার বিনিময়ে খুন-খারাবি কিংবা বিভিন্ন নীতিবিবর্জিত কাজ বেড়ে যাবে।
তাই এসব নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। নয়তো বা অদূর ভবিষ্যতে আমাদেরকেই এ দায় নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক শিক্ষাকে গুণগত মানে উন্নীত করতে হবে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বেকারদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির উপযোগী করতে হবে। তবেই দেশে বেকারত্বের বোঝা অনেকাংশে লাঘব হবে।।


যে দেশটির কথা কেউ শোনেনি



লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের অপর পাড়ের শহরের নাম ‘উজুপিস’। ছোট্ট শহরটি নিয়েই গঠিত হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম এক খুদে দেশ, যে দেশের কথা কেউ জানে না। গণতান্ত্রিক উজুপিসের জন্য অবশ্য রক্তক্ষয়ী কোনো যুদ্ধের প্রয়োজন হয়নি। একদিন হঠাত্ করে শহরের বাসিন্দারা ঘোষণা দিয়ে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র গঠন করে বসে। লিথুনিয়ার একদল শিল্পমনা মানুষ মিলে স্রেফ মজা করতে করতে গণতান্ত্রিক উজুপিসের ঘোষণা দেয়। সময়ের ব্যবধানে এই দেশটির রয়েছে নিজস্ব সরকার ব্যবস্থা, প্রেসিডেন্ট, সংবিধান, এমনকি নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থাও। মজার বিষয়, এক বর্গ কিলোমিটারের চেয়ে ছোট আয়তনের এই উজুপিসের রয়েছে নিজস্ব নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীও। নৌবাহিনীর সদস্যরা মাত্র তিন থেকে চারটি নৌকায় করে দেশের চারদিকে পাহারা দিয়ে বেড়ায়। আর সেনাবাহিনীতে রয়েছে মোটের ওপর ১০ জনের একটি দল যদিও এই সেনাবাহিনী কখনো কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় না। উল্টো দেশটির জনসাধারণের শান্তিপ্রিয় মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে উজুপিসের সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে।
লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াস আর উজুপিসের মধ্যে রয়েছে এক নদী। সেই নদী পাড়ি দিলেই উজুপিস। এই দেশটিতে পা দিলে পর্যটকদের চোখে পড়বে ‘উজুপিস জলপরীর ভাস্কর্য’। ২০০২ সালে দেশটির বিখ্যাত ভাস্কর রোমাস ভিলকাউসকাসের নকশায় তৈরি হয় রৌপ্যের জলপরীটি। এটি যে কোনো পর্যটকের মন জয় করে নেবে অনায়াসেই। ঐতিহ্যগতভাবে ভাস্কর্যের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে লিথুনিয়াবাসীর। লিথুনিয়ার প্রায় প্রত্যেকটি শহরে রয়েছে নানা ধরনের ভাস্কর্য। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগে পর্যন্ত সেখানকার ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে সোভিয়েত স্থাপত্যের নিদর্শনের বহিঃপ্রকাশ ঘটত। ১৯৯৫ সালের পর থেকে সোভিয়েত আমলের অনেক ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় একদল শিল্পমনা মানুষ উজুপিসের একটি ভাস্কর্য সরিয়ে সেখানে বসিয়ে দেয় মার্কিন পপ সম্রাট ফ্রাঙ্ক জাপ্পা’র একটি মূর্তি। এরও দুই বছর পর ১৯৯৭ সালের ১ এপ্রিল আরও সাহসী এক পদক্ষেপ নেয় তারা। লিথুনিয়া থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক উজুপিস গঠন করে তারা। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে কোনো স্বীকৃতি মেলেনি উজুপিসের। লিথুনিয়া সরকারও এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বরং রাজধানী ভিলিনিয়াস এবং লিথুনিয়ার কাছে এটি রীতিমতো গর্বের বিষয়।
দেশটির প্রজাতন্ত্র দিবস ১ এপ্রিল। প্রতি বছর এই দিনে বিশেষভাবে পালন করে দেশের মানুষ। লিথুনিয়া কিংবা অন্য যে কোনো দেশের পর্যটকদের উজুপিসে প্রবেশের জন্য কোনো ভিসা-পাসপোর্টের প্রয়োজন না হলেও প্রজাতন্ত্র দিবসের বেলায় নিয়মটা একটু বদলে যায়। এই দিনে উজুপিসে প্রবেশ করতে হলে সঙ্গে থাকতে হবে পাসপোর্ট। দেশটির প্রবেশদ্বারে এই পাসপোর্টে অনুমোদন দিলেই কেবল এদিন উজুপিসে প্রবেশ করার অনুমতি মিলবে।
উজুপিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস চেপাইটিস একাধারে ক্ষুদ্র জাতি-রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাতা জনকও। উজুপিসের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনের গল্প ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দার্শনিক এরিস্টটলের দর্শন অনুযায়ী মহত্ রাষ্ট্র হতে হলে সেখানে সীমিত সংখ্যক জনগণ থাকতে হবে। তার দর্শনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তৈরি করা হয়েছে ক্ষুদ্র জাতি-রাষ্ট্র, যেখানে মোটের ওপর মাত্র ৫ হাজার মানুষের বাস। এখানে সবাই সবাইকে চেনে। সুতরাং কারো পক্ষে কাউকে ঠকানো কিংবা ঝামেলা করার কোনো সুযোগ নেই।


প্রবীণরাও মানবসম্পদ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জীবনের বসন্ত পেরিয়ে গেলে নেমে আসে প্রবীণকাল। একসময় যে মানুষটি সংসারের হাল ধরেছিলেন, যার ওপর নির্ভরশীল ছিল সবাই, যিনি ছিলেন পরিবারের সর্বেসর্বা, সময়ের ব্যবধানে তিনি হয়ে পড়েন কর্মহীন অক্ষম একজন মানুষ।
তার শারীরিক শক্তি কমে যায়। দুর্বল হয়ে পড়েন। লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে হয়। বার্ধক্যজনিত নানা অসুখ দেখা দেয়। একসময়ের টগবগে তাজা তরুণ জীবনের অন্তিম বেলাভূমে এসে অসহায় হয়ে পড়েন। চলাফেরা, ওঠাবসা, খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা- সব ক্ষেত্রে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
অনেকে প্রবীণদের গুরুত্ব দেয় না। এড়িয়ে চলে। সংসারের বোঝা মনে করে। অবহেলা করে। খোঁজখবর নেয় না। ভরণপোষণ, সেবাযতœ ও চিকিৎসা করে না। কর্কশ ব্যবহার ও বিদ্রƒপ করে। আবার অনেকে প্রতারণা করে প্রবীণের শেষ সম্বলটুকু কেড়ে নেয়। ফলে প্রবীণ ব্যক্তি হয়ে পড়ে সহায়-সম্বলহীন। তার দীর্ঘশ্বাস বেড়ে যায়।
শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনের কারণে এবং সমাজ ও পরিবারে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, দারিদ্র্য, হীনমন্যতা ও পারিবারিক ভাঙনে প্রবীণরা বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পারিবারিক অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণে বার্ধক্যের অসহায়ত্ব সঙ্গে নিয়ে প্রবীণকে যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে অথবা তাকে ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নিতে হয়।
আমাদের মনে রাখতে হবে- এ সমাজ, সংসার ও দেশ প্রবীণদের কাছে কৃতজ্ঞ। যৌবনে মেধা, শ্রম, ত্যাগ ও অর্থ দিয়ে এই প্রবীণ ব্যক্তিরা নানা ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিলেন। এখনও তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হলে তারা তাদের বুদ্ধি, পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডে সহায়তা করতে পারেন এবং সঠিক ও সুন্দর পথ দেখাতে পারেন। তাই বলা যায়, প্রবীণরাও আমাদের মানবসম্পদ।
প্রবীণদের প্রতি আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব রয়েছে। তাদের মূল্যায়ন করা উচিত। আমাদের প্রতি তাদের হক বা অধিকার আছে। তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। সমাজ বা রাষ্ট্রে বিভিন্ন সাংবিধানিক অধিকার যেমন- নারী অধিকার, শিশু অধিকার, শ্রম অধিকার ইত্যাদি অধিকারের মতো প্রবীণ অধিকারও থাকা দরকার। প্রবীণ অধিকার আদায় ও বাস্তবায়নে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। প্রবীণের পাশে থাকা এবং সহযোগিতা করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।
সাধারণত সংসারে মা-বাবাই প্রবীণ। তারাই এ পৃথিবীতে আমাদের আগমনের উৎস। মা-বাবা ছাড়া আমাদের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। তাছাড়া সমাজে আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যেও কিছু প্রবীণ ব্যক্তি রয়েছেন। প্রবীণদের প্রতি সবসময় সহনশীল থাকতে হবে। তাদের সঙ্গে নম্র, ভদ্র ব্যবহার করতে হবে। তাদের কোনোরকম কষ্ট দেয়া যাবে না। তাদের প্রতি সবসময় সুনজর রাখতে হবে। অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা করাতে হবে। তাদের সেবাযতœ করতে হবে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের পাশে বসে গল্প-গুজব করে নিঃসঙ্গতা দূর করতে হবে। প্রবীণদের খাদ্য, গোসল ও পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি যতœশীল হতে হবে। কখনও তাদের সঙ্গে রাগ বা অভিমান করা ঠিক নয়।
পথেঘাটে কোনো প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলে তাকে সম্মান করতে হবে। চলাফেরায় তার কোনো অসুবিধা হলে তাকে সহযোগিতা করা কর্তব্য। দেশের নাগরিক হিসেবে প্রবীণদের জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে এবং তাদের অধিকারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
নুরুল আমিন : প্রাবন্ধিক, লালমোহন, ভোলা

 

বৃটেনে নিযুক্ত প্রথম নারী হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম


বৃটেনে বাংলাদেশের নতুন হাই কমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৬ নভেম্বর তিনি নতুন পদে যোগ দিতে লন্ডনে পৌঁছান। হাই কমিশনারকে হিথ্রো বিমানবন্দরে স্বাগত জানান ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার জুলকার নাইন। তার সাথে ছিলেন মানচেস্টার ও বার্মিংহামের সহকারি হাই কমিশনার এবং হাই কমিশনের সিনিয়র কর্মকর্তারা।
সাঈদা মুনা তাসনিম বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৯৩ সালে তিনি চাকুরিতে যোগ দেন। বৃটেন হাইকমিশনের শীর্ষপদে তিনিই প্রথম নারী কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সন্তান, এ অনন্য সাফল্যের জন্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংগঠন সাঈদা মুনা তাসনিমকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
প্রতি ২ মিনিটে একজন কিশোর-কিশোরীর এইচআইভি আক্রান্ত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফের প্রতিবেদন বলছে, এইডসের কারণে ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। এই সময়ে এইচআইভি প্রতিরোধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রকল্পে বাড়তি বিনিয়োগ করা না হলে প্রতিদিন ৭৬ জন কিশোর-কিশোরী মারা যাবে। বর্তমানে প্রতি ২ মিনিটে একজন কিশোর বা কিশোরী এইচআইভি আক্রান্ত হচ্ছে।
 

উপেক্ষিত মানবাধিকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের স্বীকার
 মোঃ দ্বীন ইসলাম হাওলাদার


যারা শিক্ষকতা করেন তারাই শিক্ষক। হোক সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । শিক্ষক তো শিক্ষকই আর শিক্ষকতা মানেই ব্রেইন কালচার। কোন মানুষের হাত-পা না থাকলেও সে স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করতে পারে। কিন্তু ব্রেইনে সামান্যতম সমস্যা দেখাদিলে সে স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে না।তার স্থান হয় রাস্তা-ঘাটে; যেখানে-সেখানে অর্থাৎ সে স্বাভাবিক মানুষ থাকে না। সেই ব্রেইন কালচার করতে হয় শিক্ষকদেরকে। তাই শিক্ষকদেরকে তাদের কাজে অর্থাৎ শিক্ষকতার কাজেই রাখা দরকার। কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষকরা তীব্র মানষিক নির্যাতনের স্বীকার। তাদেরকে শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করতে বাধ্য করা হয়; যা অনেকাংশে অমানবিক। আমাদের দেশের শিক্ষকদেরকে সকাল ৯/৯:৩০টা থেকে ৪/৪:৩০ টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে থাকতে হয় যা বিশ্বের অন্য কোন দেশে আছে কিনা সন্দেহ। তারপরে শিক্ষকদেরকে দিয়ে নতুন ভোটার তালিকা করানো, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করানো, আদমশুমারি পশুশুমারি নিরাপদ ও অনিরাপদ পায়খানা ব্যবহারকারীদের সংখ্যা নিরূপণ, শিশু জরিপ সহ নানাকাজে নিয়োজিত করা হয়। এ সকল কাজে গিয়ে তাঁরা নানা ভাবে লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। এ রকমের বহু ঘটনা প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় দেখা যায়। অথচ ওয়ার্ড ভিত্তিক সরকারের ইউপি সদস্য রয়েছে, রয়েছে চৌকিদার এ কাজ তো তাদের করার কথা। অথবা বিভিন্ন চৎড়লবপঃ এর মতো সরকার পারিশ্রমিক দিয়ে এ সকল কাজের জন্য সাময়িকভাবে জনবল নিয়োগ দিতে পারে। কোথাও কোন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হয় উক্ত সভা-সমাবেশে হাজির হওয়ার জন্য, যাতে লোক সমাগম বেশি দেখানো যায়। দেখা গেছে, উপজেলাগুলোতে কোন সমাবেশ হলে এমনকি কোন পাবলিক ফাংশনের কোন সমাবেশ হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য করা হয় উপজেলা অডিটরিয়ামে হাজির হতে। কোন এক ইউনিয়ন পরিষদে সাধারন জনগনকে আইসিটি বিষয়ে সচেতন করার লক্ষ্যে সমাবেশের আয়োজন করা হলে উক্ত ইউপি চেয়াম্যান ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকে হাজির হতে বাধ্য করেন। কিন্তু ওটা ছিলো সরকারি চৎড়লবপঃ যার জন্য সরকারি বরাদ্ধও ছিলো অনেক। অথচ সেখানে শিক্ষকদেরকে হাজির করে বিনা খরচে সমাবেশ করে চৎড়লবপঃ শেষ করা হয় ও অর্থ লোপাট হয়ে যায়।
আবার ইউনিয়ন বা উপজেলার বিভিন্ন দিবস উদযাপন বা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থীসহ হাজির হতে বাধ্য করা হয়। অথচ সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ভীড়ে শিক্ষকরা কোথাও একটু বসার জায়গাও পায় না শিক্ষার্থীরাতো দুরের কথা। শিক্ষার্থীরা অনাহারে দিন কাটিয়ে অসুস্থ হয়ে পরে। আবার কোন এমপি বা মন্ত্রী বা কোন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বা নেত্রীর আগমনে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে শিক্ষক ও কোমলমতী শিক্ষার্থীদেরকে ঘন্টারপর ঘন্টা অনাহারে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে রাস্তার দু’ধারে দাড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। অথচ এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের থাকার কথা ছিলো না। উপস্থিত থাকার কথা সংশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের। কিন্তু সেখানে নেতাদেরকে খুশি করানোর জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে উপস্থিত থাকতে বাধ্য করা হয়। এভাবে প্রতিবছর বহুদিন শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। যা মানবাধিকার ও শিশু অধিকার পরিপন্থী। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।

Top

একটি মানবাধিকার কর্মীর সফলতার গল্প


মেয়ের জন্য বাবার কান্নার আর্তনাদ, সেদিন কাঁদিয়ে ছিলো সবাইকে। চট্টগ্রাম লোহাগাড়া, কলাউজান থেকে মেয়ের সংসার বাঁচানোর জন্য অনেক স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-ইঐজঈ বান্দরবান পৌরশাখা কার্যালয়ে এসেছিলেন, চিনু দাশের বাবা, মনোরঞ্জন দাশ। তার স্বপ্ন সফল হলো।
চিনু দাশের স্বামী সুমন দাশ। বান্দরবান মেম্বারপাড়ার বাসিন্দা। সে তার স্ত্রীকে নিয়ে সুন্দর সংসার করতে চায়। অতীতের সমস্ত কথা ভুলে যাবে এক্কেবারে এমনি আশ্বাস দিলো সবাইকে। চোখ মুছতে মুছতে সুমন আমায় বললো, আজকাল ছেলেদের কথা কেউ শুনতে চায় না, আপনি আমার কথা শুনেছেন গুরুত্ব সহকারে, আমি আপনার সেই সম্মান রাখবো। চিনু বলে, ভেঙ্গে ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাওয়া সংসারটি আপনি পেরেছেন জোড়া দিতে, আজ থেকে আপনি আমাদের আপন বোন, আপন দিদি।
চিনু দাশের মা, বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মেয়ে সংসার ফিরে পেয়েছে, এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। সারাজীবন আমরা তোমার জন্য আশীর্বাদ করবো। বান্দরবান আসলে একবার হলেও তোমাকে দেখে যাবো।
কখন যে চোখ দু'টো আনন্দে ভিজে গেলো জানিনা। আনন্দে কাঁদলো তারাও।
সাংবাদিক হাকিম ভাই ফোন করে বললেন, নীলিমা তোমার উপর আমার বিশ্বাস আছে, তারপরেও তুমি ভালো করে দেখো বিষয়টা, সংসারটা যেন ভেঙ্গে না যায়। হাকিম ভাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আন্তরিক ধন্যবাদ যারা সহযোগীতায় ছিলেন।
নীলিমা আক্তার নীলা
সভানেত্রী-বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC

 


 

নারী ও শিশু সংবাদ


 


 

 
গৃহকর্মী নির্যাতনে
গৃহকর্ত্রী গ্রেফতার

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

আছমা (১২) নামের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশের পর নির্যাতিতাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর মধ্য বাসাবোর এক বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী সেলিনা আক্তার শিলাকে। নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।
সবুজবাগ থানার ওসি কুদ্দুছ ফকির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্যাতনের ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পর গৃহকর্মীকে উদ্ধার এবং গৃহকর্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গৃহকর্ত্রীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, আছমার জবানিতে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকভিত্তিক কমিউনিটি গ্রুপ ‘উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)’-এর হয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন প্রতিবেশী তকি উদ্দিন। ভিডিওটি রাজধানীর সবুজবাগ থানার নজরে এলে ২০ ডিসেম্বর মধ্য বাসাবোর ১৬৯/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভবনটির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় আছমাকে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় গৃহকর্ত্রী সেলিনা আক্তার শিলাকে (৪২)। বৃহস্পতিবার রাতেই আছমার ভাই রুহুল আমিন সবুজবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ভিডিওতে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে আছমা বলে, ‘গৃহকর্ত্রী শিলা আমাকে বলেছেন, তোরে যদি মাইরা বস্তার মধ্যে ফালায়া দেই কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না।’ গৃহকর্তা মোস্তফা কামাল চাঁদপুর আদালতের আইনজীবী বলেও জানায় আছমা।
 

চিলমারীতে শিশু শিক্ষার্থীদের মাথায় বিস্কুটের কার্টন
 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথায় করে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুটের কার্টন বহনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের চর খোদ্দ বাঁশপাতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রমের আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিস্কুট বিতরণ করা হয়। এসব বিস্কুট বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের। নিয়মানুযায়ী ঠিকাদার মাদার স্কুল থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত বিস্কুট পৌঁছার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রদান করেন। তা সত্ত্বেও হরহামেশাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসব বিস্কুটের প্যাকেট বহনের চিত্র চোখে পড়ে। বিষয়টি প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। এ নিয়ে সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে ১০ নভেম্বর উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নে গিয়ে কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থীকে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট কার্টন মাথায় করে বহন করতে দেখা যায়। এ সময় তাদের ছবি তুলতে গেলে পেছন থেকে একজন শিক্ষক দ্রুত তাদের মাথা থেকে বিস্কুট কার্টন নামাতে বলে। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা খোদ্দ বাঁশপাতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মোতাবেক বিস্কুটের কার্টন বহন করছে। অভিযোগ রয়েছে এসব বিস্কুটের কার্টন স্কুলে পৌঁছানোর খরচ প্রদান করা সত্ত্বেও লেবার খরচ বাঁচাতে শিশুদের দিয়ে মাথায় করে বহন করা হচ্ছে বিস্কুটের কার্টন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে আরডিআরএস’র ফিল্ড মনিটর মো. জাকির হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ট স্কুলে বিস্কুট পৌঁছে দেয়ার জন্য লেবার খরচ পর্যন্ত দেয়া হয়, তারপরও বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ কাজটি কেন করা হয় তা বোধগম্য নয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।


আজকের শিশুরাই গড়ে তুলবে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সরকার দেশের সব শিশু বিশেষ করে কন্যাশিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। কারণ আমরা মনে করি, কন্যাশিশুরা সুরক্ষা ও অধিকার পেলে তারা শিক্ষিত, যোগ্য ও উপার্জন হয়ে গড়ে উঠতে পারবে।
এর মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব। সম্প্রতি বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০১৮ উদযাপনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। আমরা চাই, শিশুরা শিক্ষিত ও যোগ্য হয়ে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলুক। আমরা শুধু দৃশ্যমান উন্নয়ন বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নেই গুরুত্ব দিতে চাই না। একই সঙ্গে মানব উন্নয়ন সূচক এবং নারী ও শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপরও গুরুত্ব দিতে চাই।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় আমি বলতে চাই, কন্যা তুমি তুচ্ছ নও, নও তুমি ক্ষুদ্র, যদি তুমি জেগে উঠো, তবে তুমি বিশ্ব জয় করতে পারবে।
এজন্য কোনো কিছু অর্জন করতে হলে তার জন্য প্রত্যাশা ও স্বপ্ন থাকতে হবে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী হতে হবে। কন্যাশিশুদের বিকশিত করে তোলার জন্য রাষ্ট্র ও সমাজের উচিত হবে তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা। তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালক আনজীর লিটনের মতে, জীবনে ভয় পেলে চলবে না। সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের যোগ্য করে তোলার জন্য প্রচুর বই পড়তে হবে। কারণ বই হল জ্ঞানের আঁধার। বই মানুষের চিন্তার জগতকে আলোকিত করে।
স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহসভাপতি শাহীন আক্তার ডলি বলেন, মানুষ হল মানবসম্পদ। আর কন্যাশিশুরা হল মানবসম্পদের অঙ্কুর। তাই কন্যাশিশুরা সুরক্ষিত থাকলে দেশ আলোকিত হয়।
আমরা চাই বছরের প্রত্যেকটি দিনই কন্যাশিশুরা সুরক্ষিত থাকুক। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাজী রোজী এমপি, কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম প্রমুখ।


 

 

 


 


 

 

Top
 

 

পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

 


 

হত্যা মামলায় ২০ চরমপন্থির যাবজ্জীবন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মাদারীপুরের রাজৈর থানায় পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এসআই আবুল হাসনাইন আজম খান এবং প্রধান সহকারী কামরুল আলম খান ঠাকুরকে গলা কেটে হত্যার দায়ে সর্বহারা ও চরমপন্থি দলের ২০ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
১২ ডিসেম্বর ২০১৮ দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মনির কামাল এ রায় দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় জনকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার ৩২ আসামির মধ্যে চারজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং দু’জন বিচার চলাকালে মারা যান। বাকি ২৬ জনের মধ্যে ছয় জনকে খালাস ও ১৩ জন পলাতক রয়েছেন।
পলাতক আসামিরা হলেন- দাদন ফকির, আমীর হোসেন শেখ, জসিম শেখ, মাছিম শেখ, মজনু মাতুব্বর, ফয়েজ শেখ, উজ্জ্বল হাওলাদার, জাফর মাতুব্বর, কুব্বাস মাতুব্বর, হালিম আকন, মিরাজ শিকদার, এমে মোল্লা ও সুমন বাঘা।
রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত দণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি- মোশাররফ শেখ, আশরাফ শরিফ, বজলু আকন, আজাদ মোল্লা, দবির মোল্লা, সৈকত মোল্লা ও দীপু বিশ্বাসকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল হাসনাইন আজম খান এবং প্রধান সহকারী কামরুল আলম খান ঠাকুর মোটরসাইকেল যোগে শাখার পাড় যাওয়ার পর আসামিরা তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। পুলিশ পরিচয় পেয়ে আসামিরা তাদের মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এর পর মোটরসাইকেলসহ তাদের শ্রীনদীর দিকে নিয়ে যায় তারা।
ট্রলারে উঠিয়ে প্রথমে মোটরসাইকেলটি নদীতে ফেলে দেয় আসামিরা। এরপর প্রথমে কামরুলকে গলা কেটে হত্যার পর তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিচ্ছিন্ন মাথা হাসনাইনের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কামরুলের মরদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে হাসনাইনকে একইভাবে হত্যার পর তার মরদেহও টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয় আসামিরা।
২০০৭ সালের ৬ আগস্ট মাদারীপুরের রাজৈর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম মোল্লা ৩২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। ২০০৮ সালের ৪ মে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।

 

মালয়েশিয়ায় ৫৫ বাংলাদেশিসহ ৩৩৮ বিদেশি আটক


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ায় অভিবাসন দফতরের অভিযানে বৈধ নথিপত্রহীন ৩৩৮ বিদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জন বাংলাদেশিও রয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকে শুরু হওয়া ‘অপস মেগা ৩.০’ নামের সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে দেশটির সাইবারজায়া শহরে তল্লাশি চালিয়ে এই বিদেশিদের আটক করা হয়।
অভিবাসন দফতরের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অভিযানে ২২৩০ বিদেশির কাগজপত্র যাচাই করা হয়েছে। সেখান থেকে ৩৩৮ জন বিদেশির নথিপত্র বৈধ না হওয়ায় তাদের আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৫ জন বাংলাদেশি, ২০৮ জন ইন্দোনেশিয়ান, ২৮ জন বর্মী এবং ৪৭ নেপালিজ রয়েছেন।
মুস্তাফার আলী জানান, যারা আটক হয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই এক কোম্পানির পরিচয়ে এদেশে এসে অন্য কোম্পানির কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। এই জালিয়াতিতে অল্প কিছু কোম্পানিই জড়িত। আটক এই বিদেশিদের বুকিত জালিল ইমিগ্রেশন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে
মালয়েশিয়ায় বৈধ নথিপত্র ছাড়া অবস্থানরত বিদেশিদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অবৈধ শ্রমিকদের স্বদেশে ফেরত যেতে বেঁধে দেওয়া আলটিমেটাম আগস্টে শেষ হওয়ার পর এই সাঁড়াশি অভিযানে নামে অভিবাসন দফতর। তার আগে অবশ্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে অবৈধ শ্রমিকদের আট হাজার টাকা শোধ করে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পরিচালিত এই অভিযানে দফায় দফায় বহু বিদেশিকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশি থাকার তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে, মালয়েশিয়ায় ১০ লাখের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই বৈধ নথিপত্র ছাড়া।

কাশিমপুর কারাগারে হাজতির মৃত্যু
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আবদুল হাই (৬০) নামে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর দুপুরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আবদুল হাই মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার সাঙ্গারদি এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে। বিমানবন্দর থানার মাদক মামলার আসামি ছিলেন তিনি।
জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম জানান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ বন্দি ছিলেন আবদুল হাই। ২৩ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ১২টায় শ্বাসকষ্ট রোগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


 


 


 

Top



Top
 



 

স্বাস্থ্য সংবাদ


 


হাঁটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে

 

মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
নিয়মিত হাঁটাচলায় হৃদযন্ত্র ভালো থাকে কিংবা শরীরের পেশিগুলো থাকে সচল ও সজীব এ কথা বহুবার বহু গবেষণায় উঠে এসেছে। এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ওপরও রয়েছে এর সরাসরি প্রভাব। তাদের মতে, হাঁটার সময় পায়ের তলায় পড়া চাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো পুষ্টি পায় সহজে, যা এর কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। খবর সায়েন্সডেইলি।
নিউ মেক্সিকো হাইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির (এনএমএইচইউ) একদল গবেষক সম্প্রতি এ-বিষয়ক একটি গবেষণা করেন। এতে দেখা যায়, হাঁটার সময় পায়ের তলায় যে চাপ পড়ে, তা রক্ত সংবহনতন্ত্রের মধ্য দিয়ে একটি চাপীয় তরঙ্গ প্রেরণ করে। ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। এতে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে মস্তিষ্ক কোষগুলো, যা এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এ-বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনটি শিকাগোর পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞান ২০১৭ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়।
এতদিন পর্যন্ত মস্তিষ্কে রক্ত পরিবহনের (সেরিব্রাল ব্লাড ফ্লো বা সিবিএফ) বিষয়টিকে শরীরের স্বনিয়ন্ত্রিত বিষয় বলে ধারণা করা হতো। অর্থাৎ শরীরচর্চা বা এমন কোনো কারণে রক্তচাপের যে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে, তা মস্তিষ্কে রক্ত পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না। কিন্তু এনএমএইচইউর গবেষকরা দেখতে পান, হাঁটার সময় বিপরীত রক্তপ্রবাহের (শরীরের নিম্নাংশ থেকে ঊর্ধ্বমুখী) গতিতে বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। হূদস্পন্দনের সঙ্গে তাল রেখে ঘটা এ পরিবর্তনের ফলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের মাত্রায়ও পরিবর্তন আসে। এ-বিষয়ক একটি পূর্বধারণা থাকলেও এ নিয়ে বিস্তৃত কোনো গবেষণা এর আগে হয়নি।
সাম্প্রতিক গবেষণায় এনএমএইচইউর গবেষকরা ১২ জন তরুণের ওপর পরীক্ষা চালান। তারা শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করে বিভিন্ন অবস্থায় অংশগ্রহণকারীদের রক্ত সংবহনতন্ত্রের ব্যাস, সংবাহিত রক্তের গতি ও মস্তিষ্কে পরিবাহিত রক্তের পরিমাণের হিসাব নেন। এতে দেখা যায়, দৌড়ানোর তুলনায় হাঁটার সময় কম চাপ পড়লেও এ সময় মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গবেষকরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের বিষয়টি শরীরের গতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এ কারণে শরীরচর্চা আমাদের সুস্থ রাখার পাশাপাশি মানসিক তৃপ্তিও দেয়। একই সঙ্গে বর্ধিত এ রক্তপ্রবাহের কারণে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা থেকে শুরু করে এর দক্ষতাও বেড়ে যায়।
সাইক্লিং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সাইকেল চালিয়ে কাজে গেলে ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়।
বাহনে চড়ে মানুষজন কাজে যাওয়া এবং স্বাস্থ্যের ওপর তার প্রভাব নিয়ে- পাঁচ বছর ধরে ২ লাখ ৫০ হাজার অফিস যাত্রীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সাইকেল চালিয়ে অফিসে যান, তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমেছে ৪৫ ভাগ, আর হৃদরোগের ঝুঁকি কমেছে ৪৬ ভাগ।
এছাড়া গবেষণায় পাওয়া যায়, সাইক্লিং করলে শরীরে মেদ এবং প্রদাহ কম যায়।
গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. জেসন গিল বলেন, ‘এটা এখন প্রমাণিত। কাজে যাওয়ার জন্য ব্যবহার হওয়া বাহনের সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে সাইকেল চালিয়ে কাজে যাওয়ার উপকার অনস্বীকার্য।’
তিনি বলেন, সাইকেল চালালে অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। মনের সাথে যুদ্ধ করতে হয়না।
ব্রিটেনের শীর্ষ বেসরকারি ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের ক্লেয়ার হাইড বলছেন, এই গবেষণায় পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিনের জীবনযাপনে যারা যত বেশি সক্রিয় থাকেন, তাদের রোগের ঝুঁকি তত কমে।


খালি পেটে যে খাবার খেতে নেই


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ষুধা লাগলেই যে হাতের সামনে যা আছে তা-ই খেয়ে নেব তা কিন্তু নয়। প্রতিটি খাবার খাওয়ারই একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। তা না হলে খাবার গ্রহণে উপকারের পরিবর্তে উল্টো ক্ষতি হতে পারে শরীরের। কিছু খাবার রয়েছে যা খালি পেটে খাওয়া একদমই ঠিক নয়। আসুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো ভুল করেও খালিপেটে খাওয়া যাবে না।
টমেটো টমেটোয় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং নিউট্রিশন থাকে। কিন্তু এই টমেটো খালি পেটে খাওয়া একেবারেই অনুচিৎ। এর ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। টমেটোয় বিদ্যমান এসিড গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এসিডের সাথে মিশে পাকস্থলীর মধ্যে এক ধরনের অদ্রবণীয় উপাদান তৈরি করে। এটি পাকস্থলীতে পাথর হওয়ার কারণ হতে পারে।
শসা
প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড থাকায় শসা খালি পেটে খাওয়া একেবারেই উচিৎ নয়। এর ফলে তলপেটে যন্ত্রণা, হৃদরোগ, পেট ফাঁপা সমস্যা হতে পারে।
কলা
কলাকে বলা হয় সুপার ফুড। এটি হজমের জন্যে খুবই দরকারী। কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকে। কিন্তু যদি আমরা খালি পেটে কলা খাই, তাহলে রক্তে ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য হারিয়ে যেতে পারে। তাই সকাল বেলা কলা খাওয়া মানা।
কোমল পানীয়
কোমল পানীয়তে থাকে উচ্চ পরিমাণ কার্বোনেটেড এসিড। খালি পেটে এগুলো খেলে বমি ভাব তৈরি হতে পারে।
দুধজাতীয় খাবার
দই কিংবা দুধের তৈরি যেকোনও খাবার খালি পেটে খাওয়া উচিৎ নয়। এতে অ্যাসিডিটি হয়। ভারী খাবার গ্রহণের পর দুধ বা দই খাওয়া উচিৎ।
লেবুজাতীয় খাবার
লেবু বা লেবু জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া ঠিক নয়। বাতাবি লেবু, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি খালিপেটে খেলে অ্যাসিডিটি বাড়ার ঝুঁকি থেকে। এটি শরীরে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করে।
মশলাদার খাবার
ঝাল খাবার খেতে পছন্দ করেন অনেকে। তবে খালি পেটে ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এর ফলে এসিডিক বিক্রিয়ার কারণে পেটে জ্বালাপোড়া হয়। নিয়মিত এরকম হলে পাকস্থলীর ক্ষতি হবার ঝুঁকি বাড়ে।
চা-কফি
খালি পেটে চা কিংবা কফি খাওয়া ক্ষতিকর। চায়ের মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় এসিড, যা পাকস্থলীর আবরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কফিতে যে ক্যাফেইন থাকে তা পাকস্থলীর জন্য ভালো নয়। তাই সকালবেলা চা কিংবা কফি খেলে তার আগে একগ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন।


পাইলস রোগের লক্ষণ ও করণীয়


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
পাইলস শব্দটির অর্থ পিলার। মেডিকেলের ভাষায় একে হেমোরয়েড বলা হয়ে থাকে। সহজ বাংলায় মলদ্বারের রক্তনালী ফুলে যাওয়াকে পাইলস বলা হয়ে থাকে। তরুণ এবং বৃদ্ধরা সাধারণত পাইলসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়স সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। নারী পুরুষ নির্বিশেষে রোগটির বিস্তার দেখা যায়। গবেষণায় দেখা যায় যে বিশ্বে শতকরা চার থেকে পাঁচজন এই রোগে আক্রান্ত।
মলত্যাগের সময় চাপ দেয়ার বদ অভ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলস হওয়ার মূল কারণ। কারো কারো ক্ষেত্রে পাইলস বংশগত ভাবেও হয়ে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া স্থূলকায়, যকৃতের রোগী, বৃহদান্ত্রের প্রদাহ জনিত কারণ, বৃহদান্ত্র ও মলাশয় ক্যান্সারের রোগী, মলদ্বারের পূর্বের অপারেশন, আইবিএস ইত্যাদি রোগ থাকলে পাইলস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
মলত্যাগের সঙ্গে রক্ত যাওয়া পাইলসের প্রধান উপসর্গ। মলের সঙ্গে তাজা রক্ত যায়। রোগীরা ফিনকি দিয়ে কিংবা টপ টপ করে রক্ত যাওয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়া মলদ্বারে বাড়তি মাংস, চুলকানি, ভেজা ভেজা ভাব ও অস্বস্তি ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে।
পাইলসে সাধারনত ব্যথা হয় না। তবে জটিলতা হলে (রক্ত জমাট বাঁধা, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি) ব্যথা হতে পারে। মলত্যাগের সময় চাপ দেয়ার বদভ্যাস ত্যাগ, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় টয়লেটে বসে থাকা ইত্যাদি বদভ্যাস ত্যাগ করা পাইলস চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার পান করতে হবে। খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবার বেশি (শাকসবজি, ইসপগুলের ভুষি ইত্যাদি) এবং মাছ-মাংস পরিমাণ মতো রাখতে হবে। রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খাওয া যেতে পারে। তিনদিন পর্যন্ত মল না হলে দুইটা অথবা তিনটা গ্লিসারিন সাপোজিটর মলদ্বারে নির্দেশ মত ব্যবহার করতে হবে।
এ রকম নিয়ম মেনে এবং সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ ব্যবহার করে শতকরা ৮০ ভাগ পাইলস বিনা অপারেশনে চিকিৎসা সম্ভব।


লিভার পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
লিভার আমাদের শরীরের দ্বাররক্ষী হিসেবে কাজ করে। এটি দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। লিভার শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে আমাদের সুস্থ রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসের প্রভাবে লিভারে সমস্যা দেখা দেয়। এই সাধারণ সমস্যাগুলো শুরুতেই আমলে না নিলে এ থেকে নানা জটিল ধাপে অগ্রসর হতে পারে। যেমন: লিভারে প্রদাহ, প্রদাহজনিত ক্ষত বা সিরোসিস, লিভারে অকার্যকারিতা ইত্যাদি।
অ্যালকোহলজনিত কারণে এ থেকে যে সিরোসিস হয়, তাতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি, প্রায় ১০ শতাংশ। তাই আমাদের এই লিভার নামে দ্বাররক্ষীর যতœ নিতে হবে।
আসুন জেনে নেই এমন কিছু খাবারের কথা, যেগুলো খেলে লিভার সুস্থ থাকার পাশাপাশি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে;
জাম্বুরা: জাম্বুরাতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা লিভারের ন্যাচারাল ক্লিঞ্জিং প্রসেসকে বৃদ্ধি করে।
ছোট সাইজের এক গ্লাস জাম্বুরার জুস লিভারের ডিটক্সিফিকেশন এনজাইমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা কার্সিনোজেন এবং অন্যান্য টক্সিনকে পরিপূর্ণভাবে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।
রসুন: রসুনে সেলেনিয়াম ও এলিসিন নামক উপাদান থাকে এবং এরাও লিভার থেকে টক্সিন বাহির হতে কার্যকরি ভূমিকা রাখে। এছাড়া রসুনে লিভার পরিষ্কারক প্রচুর এনজাইম থাকে এবং এই এনজাইম লিভার থেকে টক্সিন বের হতে সাহায্য করে।
বিট ও গাজর: গাজর গ্লুটাথায়ন নামক প্রোটিনে সমৃদ্ধ, যা লিভারকে বিষমুক্ত হতে সাহায্য করে। গাজর ও বিট উভয়ের মধ্যেই উচ্চমাত্রার উদ্ভিজ ফ্লেভনয়েড ও বিটা ক্যারোটিন থাকে।
গ্রিনটি: গ্রিনটি হচ্ছে লিভার লাভিং বেভারেজ বা যকৃৎপ্রেমী পানীয়। গ্রিনটি উদ্ভিজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন সমৃদ্ধ, যা লিভারের কাজে সহযোগিতা করে।
সবুজ শাক-সবজি: সবুজ শাক-সবজি শক্তিশালী লিভার পরিষ্কারক। সবুজ শাক-সবজি কাঁচা, রান্না করে বা জুস হিসেবে খাওয়া যায়। সবুজ শাক-সবজিতে উচ্চ মাত্রার ক্লোরোফিল থাকে এবং এরা রক্ত প্রবাহ থেকে পরিবেশগত বিষ শোষণ করে নেয়।
আরো যা খেতে পারেন- আপেল, অ্যাভোকাডো, ওলিভ অয়েল, লেবু, হলুদ, আখরোট, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ, মসুর ডাল, মিষ্টি আলু, ব্রোকলি, টমেটো ইত্যাদি খাবার নিয়মিত খেলে লিভার পরিষ্কার থাকবে।


তুলসিতে নিরাময় যে ১০ রোগের


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
গত ৫০০০ বছর ধরে নানা রোগ সারাতে এই গাছটিকে কাজে লাগানো হয়ে আসছে, তা ত্বকের রোগ হোক কী চুল, বা অন্য কোনো শারীরিক অসুবিধা। আসলে তুলসি গাছের রসের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ছোট-বড় নানা রোগ সারাতে দারুণ কাজে আসে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে তুলসি গাছের পাতা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে নানা ধরনের সংক্রমণ হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নানা রোগ এমনিতেই দুরে পালায়।
আসলে 'দ্য কুইন অব হার্বস' নামে পরিচিত তুলসি গাছের গুণাগুণ লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। তবু কয়েকটির কথা না বললেই নয়।
এখানে এমন ১০টি রোগের বিষয়ে আলোচনা করা হল, যেগুলো সারাতে তুলসির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
১. কিডনির পাথর : তুলসি পতায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে সেখানে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমায়। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন যদি মধু দিয়ে তৈরি চুলসি পাতার রস খাওয়া যায়, তাহলে কিডনির পাথর গলে তো যায়ই, সেই সঙ্গে শরীর থেকে তা বেরিয়েও যায়। প্রসঙ্গত, তুলসি পাতায় যে ডিটক্সিফাইং এজেন্ট রয়েছে তা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে দেয় না। ফেল কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
২. হার্ট ভালো রাখে : ইউজেনল নামে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে তুলসি পাতায়, যা রক্তচাপ এবং কোলেস্টরলের মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখে। আর এ কথা তো সকলেরই জানা যে এই দুটি জিনিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। আপনি কি কোনো রকমের হার্টের রোগে ভুগছেন? তাহলে রোজ সকালে খালি পেটে কয়েকটি তুলসি পাতা চিবিয়ে খান। দেখবেন অল্প দিনেই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
৩. ক্যানসার রোগকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে : প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক প্রপাটিজ এবং অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্ট থাকায় তুলসি পাতা খেলে ক্যানসার রোগও দূরে পালায়। একাধিক গবেষণা অনুসারে, রোজ যদি তুলসি পাতা চিবিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে ব্রেস্ট এবং ওরাল ক্যানসার কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে তুলসি পাতার রস খেলে পরিবেশে উপস্থিত নানা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরকে নষ্ট করতে পারে না। ফলে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।


২০০ রোগের প্রাথমিক সংকেত হলো মুখের ঘা


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, প্রায় ২০০ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায় মুখগহ্বরের ঘা’র মাধ্যমে। বর্তমানে মরণ রোগ এইডস থেকে শুরু করে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি গর্ভাবস্থায়ও শরীরে বাসা বাঁধা অনেক রোগের লক্ষণ মুখের ভেতরেই প্রকাশ পায়।
মুখের ভেতরের মাংসে বা জিহ্বায় ঘা হয়, ব্যথা করতে থাকে, কিছু খেতে গেলে জ্বলে- এগুলিই হচ্ছে মুখে ঘা এর প্রাথমিক লক্ষণ। অনেকেরই এসবের সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফুলে যাওয়া বা পুঁজ বের হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
সাধারণত মুখে গালের ভেতরের অংশে বা জিভে ঘা হয় কোনভাবে কেটেছড়ে গেলে। আবার শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলেও এ সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরর। খুব গরম পানীয় পান করলে বা কিছু চিবাতে গিয়ে গালের ভেতরে কামড় লাগলেও ঘা হতে পারে। মুখের ঘা হওয়ার পেছনে এই সব অতি সাধারণ কারণ। এছাড়াও মুখের ঘা নানা মারণব্যধির কারণে হতে পারে।
যাদের ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং দীর্ঘদিন ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের মুখেও এক ধরনের জীবাণু বাড়তে থাকে। সাধারণ ক্ষেত্রে আয়রন বা ভিটামিন বি-১২-এর অভাবেই এ সমস্যা বেশি হয়। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। যেমন- ফল, শাকসবজি, দুধ, মাছ এবং চর্বি ছাড়া মাংস। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক, ভিটামিন ও আয়রন থাকায় মুখের ঘা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এরই সঙ্গে নিয়মিত মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় যে, যাদের ধূমপান এবং জর্দা দিয়ে পান ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের মধ্যে মুখের ঘা খুব বেশি হয় এবং সেই সঙ্গে মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। বিশেষত যারা পানের সঙ্গে জর্দা খান এবং অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি থাকে।
মুখ অত্যন্ত স্পর্শকাতর অংশ। তাই নিজে নিজে ওষুধ ব্যবহার করতে যাবেন না। যা করবেন তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। সব চেয়ে জরুরি বিষয় হল, চিকিৎসার পরও মুখের ঘা যদি দুই সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহ স্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
কারণ মুখের বেশ কিছু ঘা বা সাদা ক্ষতকে বিজ্ঞানীরা প্রি-ক্যান্সার লিশন বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থার ক্ষত বলে থাকেন। সুতরাং, মুখের ঘা প্রতিরোধে দাঁত ও মুখের যতœ নিন। মুখের ভিতরের অংশে ঘা হওয়া মাত্রই তার চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নিন।
 



 


Top

 

 

আইন কনিকা


 

আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে মৃত্যুদন্ড্তি


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
যৌতুকের জন্য কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৭’-এর খসড়ায়। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এ খসড়াটি অনুমোদনের জন্য আজকের মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত করা চলতি বছরের জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিও রয়েছে মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে। এতে গত বছরের তুলনায় জনপ্রতি সাড়ে ১৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ২১ হাজার টাকা খরচ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংক্রান্ত ২০১৬ সালের ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রতিবেদন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া উপস্থাপন করা হতে পারে বৈঠকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
যৌতুক নিরোধ আইন প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুক দাবি ও লেনদেনের শাস্তি নির্দিষ্ট করা থাকলেও যৌতুক চেয়ে নির্যাতনের শাস্তির বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। প্রস্তাবিত আইনে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো নারীর স্বামী, স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ছাড়া যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, মারাত্মক জখমের জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা অন্যূন ১২ বছর সশ্রম কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুকের জন্য অঙ্গহানির শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা কমপক্ষে ১২ বছর সশ্রম কারাদন্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়। তবে স্ত্রীর জখমের ধরন অনুযায়ী স্বামীকে অর্থদন্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণ দেয়ারও বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী, যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে সাধারণ জখম করলে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং সর্বনিম্ন এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হবে। খসড়ায় ‘যৌতুক’ বলতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত যে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর বা মূল্যবান জামানতকে বোঝানো হয়েছে। কোনো ব্যক্তি কনে বা বর পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি বা যৌতুক নিলে বা দিলে অধরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।
কেউ যৌতুক দাবি বা লেনদেন করলে সর্বনিু এক বছর ও সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল বা ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি যৌতুক নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে তিনি ছয় মাসের কারদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন বলেও খসড়ায় বলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনেও যৌতুকের জন্য কোনো নারীর মৃত্যু ঘটানোর দায়ে কোনো ব্যক্তি মৃত্যুদন্ড বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুক নিরোধ আইনেও একই ধরনের শাস্তির বিধান যুক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও অপরাধকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে খসড়া আইনে। প্রস্তাবিত এই আইন কার্যকরের পর ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন রহিত হলেও ওই আইনের আলোকে প্রণীত বিধি ও প্রবিধি উপ-আইন হিসেবে গণ্য হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।
 

রিমান্ড কি মানবাধিকার পরিপন্থী?


মানবাধিকার ল’ ডেস্ক
কোনও আসামিকে গ্রেফতার করার পর তথ্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ ওই আসামিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রাখতে পারেন। তারপর আইন অনুযায়ী তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে মামলা সম্পর্কে তথ্য উদঘাটন সম্ভব না হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে আসামিকে রিমান্ডে নেয়া যায়।
এ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করা না করা এবং করলে কয়দিনের জন্য তা ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনামূলক ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। একাধিকবারও পুলিশ আসামিকে রিমান্ডে নিতে পারেন। তবে সর্বসাকুল্যে একটি ঘটনার জন্য ১৫ দিনের বেশি রিমান্ডে রাখা যায় না।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আগে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই পুলিশ ডায়েরি (সিডি) দেখতে হবে, যাতে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া রিমান্ডের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দায়ের করা হয়েছে কিনা, আসামি শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা এসব বিষয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদেশ উপরস্থ ম্যাজিস্ট্রেট এবং এসপিকে (পুলিশ সুপার) জানানোর নির্দেশ দেবেন। রিমান্ড মঞ্জুর করলে অর্ডার শিটে যথাযথ কারণ লিপিবদ্ধ করবেন। এছাড়া রিমান্ড মঞ্জুরের সময় আসামিকে হাজির করা হয়েছে কিনাÑ সে বিষয়টিও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এ রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে এ রিমান্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে। মানুষ পেটানোর হাতিয়ার এই রিমান্ড। মানুষকে রিমান্ডে নিয়ে পিটিয়ে তথ্য আদায় করা হয়। এর ফলে রিমান্ডকে মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেন মানবাধিকারকর্মীরা।

 

যৌতুকের মিথ্যা মামলার শাস্তি ৫ বছর রেখে আইন পাস



যৌতুক দেওয়া-নেওয়া এবং যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে সংসদে ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ পাস হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
কারও ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে। আগের আইনে যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনও দণ্ডের বিধান ছিল না।
বিলে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনও এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কিন্তু সর্বনিম্ন এক বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান করলেও একই ধরনের সাজা হবে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য ও জামিন অযোগ্য হবে। তবে আপসযোগ্য হবে।’
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি হয়। গত ২৫ জুন বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮০ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন করে আইন করতে বিলটি তোলা হয়েছে সংসদে। ১৯৮০ সালের ওই আইন ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।

 

Top
 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 
   

                                                     Copy Right : 2001 BHRC  All rights reserved.