           
 
|
Cover August 2017
English Part
August 2017
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার প্রতিবেদন
জুলাই’২০১৭ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১১৯ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপে
জুলাই ২০১৭ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়
১১৯টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জুলাই ২০১৭ মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায়
৩.৮০ জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়
গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার
ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে হত্যাকান্ডের শিকার
১১৯ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ০৫ জন,
পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ২০ জন, সামাজিক সহিংসতায়
হত্যা ২৬ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ০৫ জন, আইন শৃংখলা
বাহিনীর হাতে হত্যা ১১ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু
০৪ জন, অপহরণ হত্যা ৭ জন, গুপ্ত হত্যা ০৩ জন, রহস্যজনক
মৃত্যু ৩৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ১ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২৩১ জন, আত্মহত্যা ২০ জন।
জুলাই ২০১৭ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য
ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণ ৩৫ জন, যৌন নির্যাতন ৬ জন, যৌতুক
নির্যাতন ৫ জন।
জনসংখ্যা
আমাদের বড় সম্পদ, সমস্যা নয়: প্রধানমন্ত্রী

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই বলে থাকেন
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা জনসংখ্যা। আমি বলি এটা কোনো
উদ্বেগের ব্যাপার নয়। যদি তাদের শিক্ষা দিয়ে দক্ষ করে
তৈরি করতে পারি তাহলে তারাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড়
সম্পদ। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি
এসব কথা বলেন। টেকসই উন্নয়নে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক
শিক্ষার সর্বোত্তম পদ্ধতি-কৌশলসমূহের উপর পারস্পরিক
বিনিময়ে আইডিইবি ও সিপিএসসি’র উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী এ
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,
বর্তমানে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা কমেছে।
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনই সরকারের মূল লক্ষ্য। তাই
কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারিগরি শিক্ষার ওপর
গুরুত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার গঠিত
ড. কুদরত-এ-খোদা শিক্ষা কমিশনেও কারিগরি শিক্ষাকে
গুরুত্ব দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার প্রণীত যুগোপযোগী
শিক্ষানীতিতেও কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০৪০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় স্টুডেন্টের হার ৫০
শতাংশে করা বর্তমান সরকারের লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে-এ
নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ কর া হয়। এটা উদ্বেগ ব্যাপার নয়।
যদি তাদের সঠিক শিক্ষা দিয়ে দক্ষ করে তৈরি করতে পারি
তাহলে তারাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। কেননা আগামী
দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একমাত্র দক্ষ জনশক্তির
দ্বারাই সম্ভব। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের নানা
পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জাতির পিতাও
জনসংখ্যাকে সম্পদে রূপান্তর করতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
গড়েছিলেন। বর্তমান সরকারও দেশের বিভিন্ন এলাকায়
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে। নারীদের জন্যেও আলাদা
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট করা হয়েছে।’
রোহিঙ্গারা আদৌ মিয়ানমারে ফিরতে পারবে কি?
একেএম আতিকুর রহমান
মানবাধিকার রিপোর্ট’
মিয়ানমারে ইদানীং রোহিঙ্গাবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড চালানোর
জন্য বৌদ্ধ ধর্ম ফিলানথ্রপি ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন
মাঠে নেমেছে। এটি মূলত অতি কট্টর বৌদ্ধদের ধর্ম রক্ষার
আন্দোলন মা বা থা-এর নতুন সংস্করণ, যা মিয়ানমারের
সামরিক শাসনামলে জন্ম নিয়েছিল। সংগঠনটির বিরুদ্ধে
বিভিন্ন সময় মুসলমানদের ওপর সহিংসতা চালানোর অভিযোগ
রয়েছে। তবে কি আবার তারা বৌদ্ধ ধর্ম রক্ষার নামে
রোহিঙ্গা মুসলমানদের স্থায়ীভাবে মিয়ানমার থেকে
উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে? কেউ হলফ করে বলতে পারবে না,
এতে মিয়ানমার সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো মদদ
রয়েছে কি না। যদিও দেশটির শীর্ষ বৌদ্ধ কর্তৃপক্ষ
সংগঠনটিকে ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করেছে।
গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটের মুসলমান
অধ্যুষিত এলাকায় ৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনাকে
কেন্দ্র করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে হত্যা, ধর্ষণসহ
নানা নির্যাতনের শিকার হয় সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা
মুসলমানরা। জীবন বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা
নর-নারী বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে
বাংলাদেশসহ আশপাশের আরো কয়েকটি দেশে। ইউএনএইচসিআর-এর
তথ্য মতে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা বৈধ ও অবৈধ
রোহিঙ্গা মুসলমান শরণার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৭৬ হাজার
২০৭, থাইল্যান্ডে এক লাখ দুই হাজার ৬০০, মালয়েশিয়ায় ৮৭
হাজার এবং ভারতে ১৫ হাজার ৬০০ জন। আমরা জানি, মিয়ানমার
থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে প্রবেশ এটাই প্রথম
নয়। তারা বেশ কয়েকবারই বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে
শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৭৮-৭৯ সালে এক ভয়াবহ
দাঙ্গার শিকার হয়ে প্রায় দুই লাখ রাখাইন মুসলমান
বাংলাদেশে চলে আসে। তবে বাংলাদেশ সরকার প্রচণ্ড চাপ
সৃষ্টি করলে মিয়ানমার সরকার বাধ্য হয়ে তাদের দ্রুত
ফিরিয়ে নেয়। একইভাবে ১৯৯২ সালে প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা
বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল। তাদের ফেরত নিতে গিয়ে
যাচাই-বাছাইয়ের নামে নানা টালবাহানায় বছরের পর বছর পার
করে। ওই সময় আসা ৩৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা এখনো
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রয়ে গেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল এ বিষয়ে যে প্রতিবেদন
উপস্থাপন করেছে, তাতে মিয়ানমারের সৈন্যদের রোহিঙ্গাদের
নির্যাতন ও হত্যায় সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আমরা জানি, শুধু মিয়ানমার সরকারই নয়, শান্তিতে নোবেলজয়ী
মিয়ানমারের আপসহীন নেত্রী অং সান সু চি এ প্রতিবেদন
প্রত্যাখ্যান করেছেন। অং সান সু চির মতো একজন নেতার
কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ আমাদের নিরাশ করেছে। তাহলে কি
রোহিঙ্গাদের হত্যা আর নির্যাতনের ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা
বা বানোয়াট? না কি রোহিঙ্গারা নিজেরাই এসব কর্মকাণ্ড
ঘটিয়ে দেশ ত্যাগ করে বাংলাদেশে শরণার্থী হয়েছে? কিন্তু
এটিই বা কী করে সম্ভব? তাহলে সত্য ঘটনা কী?
শেষ কথাটি হলো, রোহিঙ্গা সমস্যা একান্তভাবেই
মিয়ানমারের একটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এর একটি স্থায়ী ও
টেকসই সমাধান হওয়া অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতে রোহিঙ্গা
মুসলমানদের যেন ভিটামাটি ছাড়তে না হয়, সে জন্য তাদের
মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে অন্যদের মতোই রাষ্ট্রের সব
সুযোগ-সুবিধা প্রদানের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর
বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য খোলামন নিয়ে মিয়ানমারের
নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা জানি, এ ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ সব সময়ই মিয়ানমারকে সব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে
দেবে। তাই কোনো সময়ক্ষেপণ না করে রোহিঙ্গা সমস্যাটির
শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে
বিদ্যমান সম্পর্ক হোক আরো গভীর ও শক্তিশালী এ কামনাই
করি।
ভারতের নতুন প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ
মানবাধিকার রিপোর্ট’
ভারতের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন রাম নাথ
কোবিন্দ। পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে ২৫ জুলাই ২০১৭
শপথ নিয়েছেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভাইস
প্রেসিডেন্ট হামিদ আনসারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি,
লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা,
বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নররা, মুখ্যমন্ত্রীরা,
রাষ্ট্রদূতরা, অন্যান্য কূটনীতিক, এমপি, সরকারের
সিনিয়র কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
প্রেসিডেন্ট কোবিন্দকে শপথ বাক্য পাঠ করান ভারতের
প্রধান বিচারপতি জেএস কেহার। এর আগে তাকে নিয়ে
পার্লামেন্ট হাউজের দিকে এগিয়ে যান সদ্য বিদায়ী
প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি। শপথ নেয়ার পর তার এখন
নতুন ঠিকানা ভারতের রাইসিনা হিলে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি
ভবন। অন্যদিকে বিদায় নিয়ে প্রণব মুখার্জির ঠিকানা হয়েছে
দিল্লির লুতিয়েনসে ১০ রাজাজি মার্গ বাংলো। এর আগে
রাজাজি মার্গ পরিচিত ছিল কিং জর্জ এভিনিউ নামে।
স্বাধীনতার পরে সি রাজগোপালচারীর নামে এ ভবনটির নামকরণ
করা হয়। উল্লেখ্য, তাকে রাজাজি নামেই বেশি ডাকা হতো। এ
খবর দিয়েছে অনলাইন জি-নিউজ। এতে বলা হয়েছে ওই বাংলোটি
একটি ব্যতিক্রমধর্মী হেরিটেজ। এর ঢালু ছাদ লাল টাইলসে
তৈরি। চিমনিগুলোতে নতুন করে রঙ করা হয়েছে। বাসার বাইরে
রয়েছে সুবিস্তৃত লন ও বাগান। ২০১৫ সালে মারা যান সাবেক
প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম। তার আগে পর্যন্ত এ
বাড়িতেই ছিলেন তিনি। তার পর এখানে বসবাস করছিলেন
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী মহেশ শর্মা। বিজেপি
দলের এই নেতা এখন চলে গেছেন ১০ আকবর রোডে। উল্লেখ্য,
১৯৬২ সালে প্রণীত প্রেসিডেন্টের পেনশন আইনের অধীনে
দেশের ভেতরে যেকোনো স্থানে ফ্রিতে থাকার জন্য
প্রেসিডেন্ট আবাসন সুবিধা পাবেন। ওদিকে, শপথ নিয়ে
প্রথম বক্তব্য রেখেছেন প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ।
তিনি বলেছেন, আমি খুব সাধারণ অবস্থা থেকে উঠে এসেছি। (প্রেসিডেন্টের)
এই পদ আমি শ্রদ্ধাবনত হয়ে গ্রহণ করছি। তিনি বলেন, আমাকে
যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি উঠে
এসেছি অতি সাধারণ অবস্থা থেকে। সফরের পথটি অনেক দীর্ঘ।
ড. রাধাকৃষ্ণাণ, ড. আবদুল কালাম ও প্রণব দা’র মতো একই
পথে চলতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। শপথ নেয়ার পরপরই
নতুন প্রেসিডেন্টের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা
হয়। তাতে বলা হয়, ভারতের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ
নিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি
দায়িত্ব পালন করবো।
মহান মে দিবসে
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর সভা
অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার
উদ্যোগে ১লা মে মহান মে দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেল ৫
ঘটিকায় খুলশী ক্লাব লি: এ এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের মহানগর শাখার সহ-সভাপতি অসিম কুমার দাশ এর
সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলমের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন সদর দপ্তর বিশেষ প্রতিনিধি লায়ন এম.এ.সোহেল
আহমেদ মৃধা। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জনাব জসিম আহমেদ। সভায় আরো
বক্তব্য রাখেন, মহানগরের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব
মোহাম্মদ মইনুদ্দিন, সহসভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইব্রাহিম,
যুগ্ন সম্পাদক আবদুল মজিদ চৌধুরী, মোঃ আলাউদ্দিন, মোঃ
আলমগীর বাদশাহ, সেকান্দর আলী, মোঃ মছরুর হোসেন, সাগর
ইসলাম, আকবরশাহ থানার সভাপতি লায়ন মাওলানা মোহাম্মদ
ইউসুফ। এসময় উপস্থিত ছিলেন মোঃ মহিউদ্দিন মঈন, মোঃ
লিয়াকত আলী, জাহিদ তানছির, মোঃ বাবর আলী, আনোয়ার হোসেন
মিয়া, মোঃ খোকন, জাহিদ হোসেন রনি, শাহাদাত হোসেন বাবু,
নুরুল আফসার খন্দকার প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, জীবন
জীবিকার তাগিদে প্রত্যেকেই যার যার অবস্থানে শ্রম দিয়ে
যাচ্ছেন। মে দিবসের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রত্যেকের
ন্যায্য অধিকার প্রদানে সচেষ্ট হওয়ার জন্য সকলের প্রতি
আহবান জানান।
শিক্ষার্থীদের
ভারতে ভিসায় দুর্ভোগ নেই
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা
বলেছেন, ভারতের ভিসা প্রক্রিয়া অনেক সহজ করা হয়েছে।
বিশেষভাবে শিক্ষার্থীদের ভিসা নিতে এখন আর দুর্ভোগ
পোহাতে হয় না। তা ছাড়া প্রতিবেশী হওয়ায় যাতায়াতের
ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধা রয়েছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু
আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘স্টাডি ইন ইন্ডিয়া’
শীর্ষক দুই দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন
ভারতের হাইকমিশনার। ‘অ্যাফেয়ার্স এক্সিবিশন অ্যান্ড
মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘এ টু জেড স্টাডি’র যৌথ
উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে
ভারতের হাইকমিশন। হাইকমিশনার বলেন, ‘ভালো ক্যারিয়ার ও
উন্নত জীবনযাপনের জন্য চাই ভালো শিক্ষা। ভারতের
স্কুল-কলেজের শিক্ষা উন্নতমানের। সারা বিশ্বে এর সুনাম
রয়েছে। ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এ
সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। ’ তিনি বলেন, ভারত ও
বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষের বয়স ৪০ বছরের নিচে। এ তরুণ
প্রজন্ম প্রতিদিন চাকরির বাজারে ঢুকছে। প্রতিনিয়ত
চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। তাই উন্নত যুবসমাজ গড়তে মানসম্মত
শিক্ষার বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অ্যাফেয়ার্স
এক্সিবিশন অ্যান্ড মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জীব বলিয়া, এ টু জেড স্টাডির
সিইও শামিম হোসেন। এবারের মেলায় ভারতের বিভিন্ন
অঞ্চলের ৩০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও আবাসিক
স্কুল অংশ নিচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য ভারতে পড়তে ইচ্ছুক
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সহজে সঠিক তথ্য দেওয়া। এর
মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা
প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার
সুযোগ পাচ্ছেন। আজ মেলা শেষ হবে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল
৫টা পর্যন্ত চলবে এ মেলা।
জাপানি ফার্স্ট লেডি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না :
ট্রাম্প
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, জাপানের ফার্স্ট
লেডি ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না। রুশ প্রেসিডেন্ট
পুতিনের সঙ্গে গোপন বৈঠকের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে এর
ব্যাখা দিতে গিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে এ কথা বলেন
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
তবে জানা গেছে, ফার্স্ট লেডি আকিয়ে অ্যাবে ইংরেজিতে কথা
বলতে পারেন। তিনি কেবলই না বলার ভান করেছিলেন।
জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে জাপানের ফার্স্ট
লেডির কাছে বসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু পরে
তিনি পুতিনের কাছের ফাঁকা আসনে বসেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘তার (আকি আবে) স্বামী জাপানের
প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে খুবই ভালো মানুষ। সেখানে একজন
জাপানি অনুবাদকও ছিলেন। তা না হলে বিষয়গুলো বোঝা খুব
কঠিন হতো। তবে আমি সেদিন সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আলাপ করেছি।
তিনি খুব আন্তরিক একজন মানুষ। ওই সময়টা আমি খুব মজা
পেয়েছি। আসলে পুরো ব্যাপারটাই বেশ ভালো ছিল।’
পুতিনের সঙ্গে তার গোপন বৈঠকের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
ট্রাম্প বলেন, ‘নৈশভোজটি ছিল পৌনে দুই ঘন্টার। তাই
এতক্ষণ চুপ করে বসে থাকাটা সম্ভব ছিল না। আর আমার মনে
হয়, জাপানি ফার্স্ট লেডি ইংরেজিতে ‘হ্যালো’ শব্দটি
পর্যন্ত বলতে পারেন না।’
মশা যে কত শক্তিশালী নমরুদের চেয়ে কেউ ভালো জানে না
এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, এমপি
যখন আমরা বিপদে পড়ি তখন হঠাৎ করে তাড়াহুড়া করে কাজগুলো
করে থাকি। ফলে সঠিকভাবে কাজগুলো সামাল দিতে পারি না।
সরকারের টাকারও অপচয় হয়। এখন দেশব্যাপী ‘চিকুনগুনিয়া’
সংক্রমণ চলছে। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার
দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সঙ্গে অস্থি
সন্ধিতে ব্যথা থাকে যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর
পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই ভাইরাসটি মশার কামড়ের
মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে। আগে থেকেই আবহাওয়াজনিত
কারণে আসাম-বেঙ্গল এলাকাটি মশার জন্য বিখ্যাত। সর্বত্র
ম্যালেরিয়ার জ্বরে আক্রান্ত ছিল নিত্যনৈমিত্তিক
ব্যাপার। ঐতিহ্যগতভাবেই আমরা মশার অত্যাচারে
অত্যাচারিত হয়ে আসছিলাম এবং এখনো হয়ে আসছি। মশা আগেও
ছিল এখনো আছে।
আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে, নমরুদ ভীষণ শক্তিশালী
ছিল। নমরুদ ছিল হামের বংশধর কুশের সন্তান। তার রাজত্ব
প্রথমে শুরু হয়েছিল বাবেল থেকে। নমরুদ দুনিয়াতে একজন
ক্ষমতাশালী পুরুষ হয়ে উঠেছিল। বেবিলন দেশের বেবিলন শহরে
এরক, অক্কাদ, কলনি নামে জায়গাগুলো তিনি রাজত্ব করতে
শুরু করেন। তিনি সেখান থেকে বের হয়ে তার রাজ্য বাড়াতে
বাড়াতে আশেরিয়া দেশ পর্যন্ত গেলেন। সেখানকার নিনেভ,
রাহোবোত ও রেশন নামে শহরগুলো তারই তৈরি। এর মধ্যে রেশন
ছিল নিনেভ ও কেলহের মাঝামাঝি জায়গায়। এগুলো একসঙ্গে
মিলে একটা বড় শহর তৈরি হয়েছিল।
একটি ল্যাংড়া মশা নমরুদের নাক দিয়ে মগজে প্রবেশ করে।
এর পর তার নিরাপত্তা কর্মীরা চব্বিশ ঘণ্টা তার মাথায়
আঘাত করতে থাকে। তাতে সে একটু আরাম বোধ করে। এভাবে করতে
করতে বেশ কিছুদিন হয়ে গেল। হঠাৎ একদিন তার একজন
নিরাপত্তা কর্মী রাগ করে তার মাথায় সজোরে আঘাত করে এবং
সে মারা যায়। গল্পটা যেহেতু ইরাকের এবং সেখানে ভালো
ভালো পুরনো সভ্যতা আছে, আশপাশের এলাকায় প্রচুর
ঐতিহাসিক স্থাপনা ও এলাকা আছে; তাই ভাবলাম, জায়গাটি
ঘুরে দেখে আসি। সে উদ্দেশ্যে প্রাক্তন সাংবাদিক মরহুম
মাওলানা জহির সাহেবকে নিয়ে ইরাকে গেলাম। আমাদের সঙ্গে
ইরাকের এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুও ছিলেন।
বিশ্বখ্যাত বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট ভারতবর্ষে
এসেছিলেন, ভারতবর্ষের অনেকাংশ জয়ও করেছিলেন।
আলেকজান্ডার সুদূর গ্রিস থেকে একের পর এক রাজ্য জয় করে
ইরান আফগানিস্তান হয়ে ভারতের পাঞ্জাবে পৌঁছে যায়।
সুদর্শন তরুণ সম্রাটের চোখে সারা পৃথিবী জয়ের স্বপ্ন।
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিশালী সেনাবাহিনীর অধিকারী
তিনি। বিখ্যাত ইরান সম্রাট দারায়ুস থেকে শুরু করে
উত্তর-পশ্চিম ভারতের পরাক্রমশালী রাজা পুরু পর্যন্ত
কেউ তার সামনে দাঁড়াতে পারেনি। গ্রিক দেশের
ম্যাসিডোনিয়ার রাজা আলেকজান্ডার তার ১২ বছরব্যাপী
সাম্রাজ্য বিস্তারের শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেন ভারত
বর্ষের দোরগোড়ায়, সিন্ধু নদীর তীরে। তিনি ভাবতেন
পৃথিবীর শেষপ্রান্ত অবধি জয় করবেন। মনে করতেন ভারতের
পরেই পৃথিবীর শেষ। মহা বীর আলেকজান্ডারকেও মশার কামড়ে
মরতে হয়েছে। পাকিস্তানের তক্ষশীলা থেকে মশার কামড়ে
আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং পরে ব্যাবিলনে গিয়ে জ্বরে ভুগে
তিনি ৩২৩ অব্দে জুন মাসের ১১ অথবা ১২ তারিখে মৃত্যুবরণ
করেন।
এবার আসা যাক, আমাদের দেশের ব্যাপারে। এখন দেশব্যাপী
চিকুনগুনিয়া জ্বর দেখা দিয়েছে। চিকুনগুনিয়া আবার কী
জিনিস বুঝতে চাইলাম। ভাবলাম, বেতবুনিয়ার মশা এতদিনে
চিকুন হয়ে চিকুনগুনিয়া হয়ে এসেছে কি না? পাকিস্তান আমলে
পার্বত্য অঞ্চলে একটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র বসানোর
পরিকল্পনা ছিল। সে সময়কার নিয়ম ছিল যে, কোনো
স্যাটেলাইট স্টেশন করতে হলে তা ফাঁকা জায়গায় করতে হবে
যাতে করে গাড়ি বা অন্য কোনো শব্দ ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে।
সে অনুযায়ী আমাদের বেতবুনিয়া স্যাটেলাইট স্টেশন স্থাপন
করা হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে
গেল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর কিছু যন্ত্রপাতি
মিয়ানমারে, কিছু যন্ত্রপাতি শ্রীলঙ্কায় পড়ে রয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু এগুলো সংগ্রহ করে এবং বিভিন্ন জায়গায় অনেক
চেষ্টা-তদবির করে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে এটা চালু
রেখেছিলেন। কয়েক বছর পর আমি টেলিফোন মন্ত্রী হিসেবে
প্রতি মাসেই বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রটি পরিদর্শনে
যেতাম। প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম সাহেব আমাদের আত্মীয়
হন। তিনি আমাকে বললেন যে, বাবা, তুমি বেতবুনিয়ায় ঘন ঘন
এস কেন? আমি বললাম, এখানে আমাদের যে স্যাটেলাইট
স্টেশনটি আছে, সেটা দেখে যেতে হয় মাঝে মাঝে। পুরনো
যন্ত্রপাতি দিয়ে কোনোমতে স্টেশনটি চলছিল। তিনি বললেন,
সেখানে তো কোনো লোক থাকে না। এত অস্বাস্থ্যকর জায়গা
যে, মশার ভয়ে, সাপের ভয়ে কোনো লোক সেখানে থাকে না।
পরবর্তীতে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করার চিন্তাভাবনা শুরু
করি এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তালিবাবাদ ভূ-উপগ্রহ
কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নেই। তাই মনে পড়ল,
বেতবুনিয়ার মশাই এখন চিকুন হয়ে ‘চিকুনগুনিয়া’ মশায়
রূপান্তরিত হয়েছে কি না?
আমি একজন ডাক্তার সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম, চিকুনগুনিয়া
মানে কী? বেতবুনিয়া ভুল করে চিকুনগুনিয়া লিখেছে কি না?
তিনি বললেন, না, চিকুনগুনিয়া আছে। চিকুনগুনিয়া হলো একটি
রোগ। এটা গ্রিক শব্দ। মশা যাকে কামড়াবে সে কোঁকরিয়ে
যাবে, হাতে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হবে। এর ভালো কোনো ওষুধ
নেই। তবে দু-তিন দিন জ্বর থাকে। পরে আর জ্বর থাকে না।
আমার অফিসের একজন এটেনডেন্টকে আমি বললাম, আমার রুমে
যেন কোনো মশা ঢুকতে না পারে। এরপর হঠাৎ আমার জ্বর এলো।
যা হোক, ভাবলাম তিন দিন তো থাকবেই। তিন দিন পর ঠিকই
জ্বর চলে গেল। ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। কিন্তু আমি দিন
দিন অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আমাদের জাতীয় সংসদের হাসপাতালে
নতুন ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে
এক্স-রে করে রিপোর্টটি আমার মেয়েকে দিয়ে ইউনাইটেড
হাসপাতালে ডাক্তার নজরুল ইসলাম সাহেবের কাছে পাঠিয়ে
দিলাম দেখার জন্য। তিনি আমার বন্ধু মানুষ। তিনি আমাকে
ফোন করে বললেন, আপনি কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন? আমি
বললাম, লুঙ্গি পরা অবস্থায় আছি। তিনি বললেন, এ
অবস্থায়ই চলে আসেন। হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর
গুলশানের উদ্দেশে রওনা দিলাম। গুলশানে গিয়ে দেখি, গোটা
এলাকা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। মনে হলো যেন নাগাসিকো
বোমায় পুড়ছে। যা হোক, তিনি রিপোর্ট দেখে বললেন, এক্ষনি
আপনি স্পেশাল কেয়ার ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হন।
চিকুনগুনিয়া জ্বর চলে যাওয়ার পর আপনি যতœ নেননি। যার
ফলে আপনার নিউমোনিয়া হয়েছে। আমার যে নিউমোনিয়া হয়েছে
সেটা এত বিপজ্জনক যে, আমাকে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হতে
হবে। এরপর তিনি আরও কয়েকজন ডাক্তারকে ডেকে আমাকে ভর্তি
করে দিলেন। আসলে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে শুধু যে
জ্বর আসবে তা নয়। এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। যার
ভুক্তভোগী আমি নিজে। এর পর ৭-৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাসায়
চলে আসি। উল্লেখ্য, সৌভাগ্যবশত আমি এক্স-রে করেছিলাম।
১৯৬২ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ‘গধষধৎরধ
ঊৎধফরপধঃরড়হ চৎড়মৎধস’ নামে একটি প্রকল্প করা হয়েছিল।
বৈদেশিক সাহায্য ও সরকারি অর্থায়নের মাধ্যমে এ
প্রকল্পটি করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল এ প্রকল্পের
মাধ্যমে গাড়ি কেনা ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি। কয়েকশ গাড়ি
কেনা হয়েছিল যা দিয়ে কর্মকর্তারা ঘুরে বেড়াতেন। আমি
একদিন একজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনারা তো
শুধু গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান, কিন্তু মশা মারেন কী করে?
আমাকে বললেন, কোথায় কোথায় মশা আছে আমরা তা সার্ভে করছি।
আমি বললাম, দু-একটি মশা আপনাদের গাড়ির নিচে পড়ে মারা
গেলেও তো কমত। তিনি বললেন, গাড়ির নিচে মশা পড়লে তো আমরা
দেখি না, তবে গাড়িগুলো যখন দূরে যায় তখন দু-একটি মশা
মরলে গাড়ির গ্লাসের ওপর পড়ে।
তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সময়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি কনফারেন্স হয়েছিল। সেখানে
তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেছিলেন, ঊধংঃ
চধশরংঃধহ রং সড়ংয়ঁরঃড় ভৎবব. তখন সবাই হেসে ফেললেন। তারা
বলেছিলেন, এটা কীভাবে করলেন? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
একজন সিনিয়র অফিসার জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনারা কী ধরনের
নেটের ব্যবস্থা করেছেন যে, বার্মার মশা এখানে ঢুকতে
পারে না! জানালে আমরা বিশ্বজুড়ে এ ব্যবস্থা নিতে পারি।
এরপর উক্ত প্রতিনিধি আর কোনো কথা বলেননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯৪৭ এর পর থেকে এ পর্যন্ত
একমাত্র হাবিবুল্লাহ বাহার সাহেব, যিনি জাতীয় কবি কাজী
নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, এখনো
প্রবাদ আছে যে— ‘বাহার-নাহার এক বৃন্তে দুটি ফুল’,
ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি ব্যতীত আর কারও
রেকর্ড নেই যে ঢাকাবাসীকে মশার মহাবিপদ থেকে রক্ষা করতে
সক্ষম হয়েছিলেন। প্রত্যেক বছরই আমাদের এরকম এক একটি
মহামারী এসে হাজির হয়। আগে থেকে প্রস্তুতি না নিলে এর
মোকাবিলা করা যায় না। মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানি লেগে
যায়। হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার পর আমার দুই বন্ধু এলেন।
তারা বললেন, সিটি করপোরেশন, মিউনিসিপ্যালিটির তেল ক্রয়,
ওষুধ ক্রয়, ইত্যাদি বিষয়ে বহু কারসাজি আছে। অন্যদিকে
দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো এ সুযোগে ভালো ব্যবসা করে
নিচ্ছে। ওষুধের দাম বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিচ্ছে। তাছাড়া
ব্র্যান্ডের ওপর ব্র্যান্ড পরিবর্তন করছে। আমি বললাম,
আপনারা তাহলে কী করছেন? তারা বললেন, আমরাও লিখে দেই।
রোগী আসলে তো লিখতে হবেই। সবশেষে নিজের কথায় আসি। ১৯৬২
সালে ছাত্র আন্দোলনের কারণে রাজশাহী কলেজ থেকে আমাকে
বহিষ্কার করা হয়েছে। বুঝলাম, পুলিশ কেইস করেই
কর্তৃপক্ষ ক্ষান্ত হয়নি। আমাকে শায়েস্তা করার সব
ব্যবস্থাই তারা নিয়েছে। তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
অর্ডিন্যান্সের ১৭ ধারায় আমাকে ভড়ৎপবফ ঃৎধহংভবৎ
পবৎঃরভরপধঃব দিয়ে বহিষ্কার আদেশ দেয়। এ আদেশের বলে
তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের কোনো কলেজেই আমার আর
ভর্তির সুযোগ রইল না। আমার উচ্চশিক্ষার পথ একেবারেই
রুদ্ধ হয়ে গেল। যাই হোক, চিঠি পেয়ে ঢাকা এলাম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে গেলাম। বঙ্গবন্ধু
বললেন, সন্ধ্যার পর এসো। এরপর তিনি আমাকে এসআর পাল ও
সুধাংশু শেখর হালদারের কাছে নিয়ে গেলেন। তারা বললেন, এ
বিষয়ে তো মামলা করা যাবে না। একটি রিট করা যেতে পারে।
সুধাংশু শেখর হালদারকে তিনি কিছু ধারণা দিলেন কীভাবে
কী করতে হবে। পরে তিনি একটি ড্রাফট তৈরি করলেন। ড্রাফটি
তিনি আতাউর রহমান খান, নূরুল আমিন, শাহ আজিজুর রহমান,
হামিদুল হক চৌধুরীসহ তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানের
খ্যাতনামা আইনজীবীদের দেখালেন। পরবর্তীতে ড্রাফটি
মোটামোটিভাবে চূড়ান্ত হয়ে গেল। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিব করাচির প্রখ্যাত আইনজীবী মাহমুদ আলী কাসুরীকে
ঢাকায় আসার অনুরোধ জানান। উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালের আইয়ুব
খান যে শাসনতন্ত্র গঠন করেন সে শাসনতন্ত্রে
ঋঁহফধসবহঃধষ জরমযঃং এর ওপর এটাই ছিল পাকিস্তানের প্রথম
মামলা। মাহমুদ আলী কাসুরীসহ প্রায় ৪০-৫০ জন বিখ্যাত
আইনজীবী একটি টেস্ট কেস হিসেবে এ মামলাটি দায়ের করেন।
অতঃপর সেই রিটে আমরা জয়ী হই। পরে এস আর পালের কাছে
গেলাম। এস আর পাল বললেন, মামলায় তো জিতিয়ে দিলাম। এখন
মোনায়েম খান যদি ভাইস চ্যান্সেলরকে বলে দেন যে, তাকে
পরীক্ষায় পাস করাবেন না; তাহলে তো আমার করার কিছু থাকবে
না। অতএব বাইরে কোনোখানে চলে যাও। এ ব্যাপারে
অ্যাডভোকেট এস আর পাল আমাকে অনেক বুঝালেন।
আমার ভবিষ্যৎ জীবনের কর্মপন্থা ঠিক করার বিষয়ে বেগম
রোকেয়া আনোয়ার তার বাসায় বঙ্গবন্ধু ও আমার বাবাকে
একসঙ্গে দাওয়াত করলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আমাকে করাচি
যেতে হবে। করাচি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর আইএইচ
কোরেশি আব্বার বন্ধু ছিলেন। করাচি যাওয়ার এটা ছিল আর
একটি কারণ। বঙ্গবন্ধুর সাহায্য না পেলে হয়তো আমার
লেখাপড়াই হতো না। বঙ্গবন্ধুর সেদিনের পরামর্শ ও
সিদ্ধান্তের জন্যই হয়তো আমি করাচিতে লেখাপড়া করে
মাস্টার ডিগ্রি লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। ছাত্রজীবনে আমার
মামলা মোকদ্দমা ও অত্যন্ত কঠিন কঠিন সময়ে বঙ্গবন্ধু
আমার পাশে ছিলেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ ও
সিদ্ধান্তের জন্য অনেক মিল কারখানা করার সুযোগ পেয়েছি।
বঙ্গবন্ধুর অফুরন্ত স্নেহ, মহানুভবতার জন্য আমি তাঁর
কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ। প্রতিদিন যখন আমার বাবা-মা,
আত্মীয়স্বজনদের জন্য দোয়া করি তখন বঙ্গবন্ধুর জন্যও
মহান আল্লাহপাকের কাছে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত
কামনা করি।
করাচিতে গিয়ে আব্বা তার বন্ধু হাসিম গাজদারের সঙ্গে কথা
বললেন। হাসিম গাজদার সিন্ধু প্রদেশের অর্থমন্ত্রী
ছিলেন। আমি তখন করাচি কাসরনাস গেস্ট হাউসে ছিলাম। সে
সময় ড. জাকির হোসেন ভারতের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার ছোট
ভাই ড. মাহমুদুল হাসান ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভাইস
চ্যান্সেলর ছিলেন। তাকে ছাত্রদের বিরুদ্ধে পুলিশি
ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। তিনি ঢাকা থেকে যাওয়ার সময়
সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ও ধস হড়ঃ ধ ঢ়ড়ষরপব সধহ, ও পধহহড়ঃ
ফড় রঃ. তিনি ঢাকা থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে করাচি
ইউনিভার্সিটিতে গিয়েছিলেন। তিনি আমাদের ইতিহাস বিভাগের
প্রধান ছিলেন। খুব সুন্দর চেহারা, দেবতার মতো মানুষ।
পরের দিন আব্বা আমাকে নিয়ে বিছানাপত্র যা যা প্রয়োজন
কিনে দিলেন। সন্ধ্যার পর হাসিম গাজদার আব্বাকে ও আমাকে
দাওয়াত করে করাচির দামি মেট্রোপলিটন হোটেলে খাওয়ালেন।
পরে তিনি গাড়িতে করে আব্বাকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে করাচি
ইউনিভার্সিটি হোস্টেলে রেখে চলে আসেন। তখনকার করাচি
হোস্টেল এখন দেখলে চেনাই যাবে না। করাচি জেলখানা যারা
দেখেছেন তারা হয়তো জানেন। করাচি জেলখানা থেকে ১০ মাইল
দূরে এ হোস্টেল। আশপাশে খালি জায়গা ছাড়া কিছু নেই।
কিন্তু আমি হোস্টেলে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। মশারি
নেই। মশায় ভর্তি রুম। খুব দুরবস্থা। সাড়া রাত জেগে
থাকারও উপায় নেই। শরীরের এমন কোনো জায়গা খালি নেই
যেখানে মশার কামড় পড়েনি। এরকম বড় বড় মশা আমি শুধু
শান্তিনিকেতনেই দেখেছি। তখন হোস্টেলে কাউকে চিনিও না
যে ডেকে আনি। এভাবে সাড়া রাত কেটে গেল। পরের দিন আমার
বন্ধু আবদুল্লাহ হারুন সকাল ৭টার সময় এলো। সে এখন
টরেন্টোতে আছে। আমেরিকানও বিয়ে করেছে। খুব ভালো
অবস্থানে আছে। সে এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ (অব.),
নুরুদ্দিন কামাল ও চ্যানেল আইয়ের পরিচালক মামুনের ভাই।
খুবই উচ্চশিক্ষিত পরিবারের সন্তান। সে তখন সেখানে
বাঙালিদের নেতা। সে এসে বলল, আমি রাতেই আসতাম। কিন্তু
তোর চাচারা ও ভিআইপিরা এসেছিলেন, এ জন্য তোর সঙ্গে দেখা
করিনি। তোর তো কোনো অসুবিধে হয়নি? আমি বললাম, এই দেখ
আমার সারা গায়ে মশার কামড়। ঢাকার মশার চেয়ে করাচির
মশার সাইজ ডাবল, পাঠানদের মতো। তখন বন্ধু আমাকে বলল,
তুই হাত-মুখ ধুয়ে নে। এখন বাস আসবে। আমরা শহরে গিয়ে
মশারি কিনে নিয়ে আসব। ইউনিভার্সিটির বাসে শহরে গেলাম।
বাজারে গিয়ে হারুন বলল, তুই এখানে একটু দাঁড়া, আমি আসছি।
এদিকে আমি দাঁড়িয়ে আছি তো আছিই। হারুন আর আসছে না।
অতঃপর আমি নিজে গিয়ে বৌরি বাজার পেলেস সিনেমা হলের পাশে
দোকানদারকে বললাম, ভাই, আমাকে একটি মশারি দেন। যাকে
জিজ্ঞেস করি সে-ই বলছে, নেই। এভাবে ১৫-২০টি দোকানে যাই।
হারুন আমাকে যেখানে থাকতে বলেছিল সেখানে গিয়ে আবার
দাঁড়ালাম। এরপর হারুন এলো। মশারি কেনার কথা শুনে সে
হাসল। পরে সে দোকানদারের কাছে গিয়ে বলল, একটা
‘মচ্ছদ্যান’ দেন। দোকানদার সঙ্গে সঙ্গে মশারি বের করে
দিল। মশারিকে যে তারা ‘মচ্ছদ্যান’ বলে সেটা তো আর আমি
জানি না। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢুকলে
যাত্রী সাধারণকে প্রথম অভ্যর্থনা জানানো হয় মশার কামড়
দিয়ে। মশার কামড়ে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। তাই স্বভাবত কারণেই
প্রশ্ন ওঠে, যে বিমান অথরিটি এয়ারপোর্টের মশা মারতে
পারে না, সে অথরিটি বিমান চালাবে কী করে? বিমানবন্দরে
মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে কয়েক মাস আগে আমি
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রীকে বলেছিলাম।
মন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, ‘এটা তো সিটি করপোরেশনের অধীনে
নয়, তাই এখানে মশা মারার কেউ নেই। ’ কিন্তু
এয়ারপোর্টের তো নিজস্ব একটি অথরিটি আছে। তারা কি
মশাগুলো মারতে পারে না? তাদের কি মশা মারার ক্ষমতাও
নেই?।
আমার আরেকটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলছি। গত ৬ মার্চ
২০১৬ খ্রি. তারিখে সিঙ্গাপুর থেকে আসছিলাম। বিমানে ওঠে
দেখি মশা। বিমান ক্রুদের জিজ্ঞেস করলাম, বিমানে মশা কী
করে এলো? তারা বলল, ‘স্যার, তাদের তো পাসপোর্ট লাগে
না, ইমিগ্রেশন চেক নেই, ভিসা নেই, টিকিটও করেনি, বিনা
পয়সায় চড়ছে। ’ বললাম, সিঙ্গাপুর বিমান অথরিটি যদি দেখে
যে, ‘বিমানের মশা সিঙ্গাপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাহলে তো
আপনাদের সেখানে আর নামতে দিবে না। ’ আপনারা জানেন,
সিঙ্গাপুর একটি সিটি স্টেট। সবকিছুই পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন, সাজানো গোছানো। সেখানে মশা মাছির কোনো
কারবার নেই। যাই হোক, আমি বললাম, ‘মশাগুলো মারার
ব্যবস্থা নেন। ’
এখন যেহেতু রাজধানী ঢাকা বিশাল শহরে বিস্তৃত হয়েছে।
তাই মশা নিধনের জন্য শুধু মেয়রদের দায়িত্ব না দিয়ে
প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলরদের এ দায়িত্ব দিতে হবে।
এতে করে স্থানীয়ভাবে জনগণের জবাবদিহিতা থাকবে। তাছাড়া
একমাত্র তথাকথিত ম্যাজিক মশারি দিয়ে গোটা দেশকে ঢেকে
দেওয়া যায় কিনা তা-ও ভেবে দেখতে হবে!
লেখক : সাবেক মন্ত্রী।
পুরনো
ধারণা নিয়ে বিশ্ব এগোতে পারবে না : ড. ইউনূস

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পুরনো ধ্যানধারণা দিয়ে বিশ্ব আর এগোতে পারবে না বলে
মন্তব্য করেছেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গ্রামীণ ব্যাংকের এই প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, ‘তিন শূন্য
লক্ষ্য করে আমাদের এগোতে হবে। শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য
বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ এই তিন সমস্যার টেকসই
সমাধানের মধ্যেই রয়েছে বিশ্বকে নতুন করে সাজানোর পথ। ’
সপ্তম বার্ষিক সামাজিক ব্যবসা দিবস উপলক্ষে ২৮ জুলাই
২০১৭ রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে
তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি ইউনূস সেন্টারের ফেসবুক
পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
বিশ্বে যে আয়বৈষম্য কিংবা সুযোগের বৈষম্য রয়েছে তার
সমাধানে সামাজিক ব্যবসা অর্থাৎ প্রত্যেককে উদ্যোক্তা
হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. ইউনূস। সেই সঙ্গে
সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
এবারের সামাজিক ব্যবসা দিবস উপলক্ষে ইউনূস সেন্টারের
মূল অনুষ্ঠানটি সাভারের জিরাবোতে ‘সামাজিক কনভেনশন
সেন্টারে’ দুই দিনব্যাপী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু
পুলিশের অনুমতি না মেলায় শেষ মুহূর্তে গত ২৭ জুলাই
বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে এটি বাতিল করার কথা জানায় ইউনূস
সেন্টার। ইতিমধ্যে বিদেশি অতিথিরা ঢাকায় চলে এসেছেন বলে
জানানো হয়।
তবে এর আগে ওই দিন সকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)
এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ইউনূস
সেন্টারের পক্ষ থেকে ২৪ জুলাই পুলিশকে এ সম্মেলনের কথা
জানানো হয়। এত অল্প সময়ের মধ্যে নিরাপত্তা প্রস্তুতি
সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই সম্মেলনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ইউনূস সেন্টারের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার (মিডিয়া
অ্যান্ড আউটরিচ) সাব্বির আহমেদ ওসমানি বলেন, ‘আমাদের
বেশির ভাগ বিদেশি অতিথি লা মেরিডিয়ান হোটেলে উঠেছিলেন।
মূল অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় এসব মেহমানকে নিয়ে ছোট পরিসরে
সকালে কয়েকটি সেশন শুরু হয় যা ফেসবুকে সম্প্রচারিত হয়।
’
সমাপনী বক্তব্যে ড. ইউনূস বলেন, ‘শেষ নয়, এটা কেবল শুরু।
আমরা কোনো কিছুই মিস করতে চাই না। ’ মূল অনুষ্ঠান
বাতিলের পরও যারা ছোট এই আয়েজনটি করতে সহায়তা করেছেন
তাদের ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস।
ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সব অতিথি এসেছেন, প্রযুক্তির
মাধ্যমে সবাই আমাদের দেখতে পারছে। ’ তবে বাংলাদেশি
অংশগ্রহণকারীরা অংশ নিতে না পারায় তিনি দুঃখ প্রকাশ
করেন।
এমন কিছু করুন যেন মৃত্যুর পরেও মানুষ আপনাকে
শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে
ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
“মানুষ মরণশীল।” আমাদের সবাইকে একদিন না একদিন মরতে হবে।
মৃত্যুর পর স্থান হবে কবরস্থান অথবা শ্মশানে। ভাল
কাজের মাধ্যমে মৃত্যুর পরেও পৃথিবীতে অনেক মানুষ
যগযুগান্তর অমর হয়ে রয়েছেন। আসুন আমরাও ভাল কাজের
দৃষ্টান্ত স্থাপন করি। প্রত্যেকেই এমন কিছু করুন যেন
মৃত্যুর পরেও মানুষ আপনাকে স্মরণ করে।” ইন্টারন্যাশনাল
হিউম্যান রাইটস কমিশন-IHRC-এর মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম
দিলদার উপর্যুক্ত কথাগুলো বলেছেন। তিনি গত ৯ জুলাই
২০১৭ দুপুরে ভারতের কোলকাতা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের পশ্চিমবঙ্গ চ্যাপ্টার
আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৭’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, “একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমাদের
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাজ করে যেতে হবে। যতক্ষণ
পর্যন্ত সমাজের প্রত্যেকটি স্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা
না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সকলস্থানে সাংগঠনিক কার্যক্রম
ছড়িয়ে দিয়ে সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন-IHRC পশ্চিমবঙ্গ
চ্যাপ্টারের সভাপতি অ্যাডভোকেট স্বপ্না বসু খন্দকারের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ভারত ও বাংলাদেশের
মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। সম্মেলনে
দু'দেশের শতাধিক মানবাধিকার কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা পর্ব শেষে মানবাধিকার রক্ষায় অনন্য ভূমিকা
রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ জন ভারতীয় এবং ১০ জন বাংলাদেশী
মানবাধিকার কর্মীকে আন্তকর্জাতিক মানবাধিকার এওয়্যার্ড-২০১৭’
অর্পণের মাধ্যমে সম্মাননা প্রদান করা হয়। দেন।
ন্যায়বিচারের স্বার্থে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শুধু নিম্ন আদালতেই নয়, উচ্চ আদালতেও কর্মচারীদের মধ্যে
জেঁকে বসেছে দুর্নীতি-অনিয়ম এবং প্রতারণার কারসাজি। এটা
কেবল উদ্বেগের নয়, আঁতকে ওঠার মতো বিষয়ই বটে। জানা গেছে,
সুপ্রিমকোর্ট ও দেশজুড়ে অধস্তন আদালতের কর্মচারীরা
টাকার বিনিময়ে রায় পক্ষে পাইয়ে দেয়া, বিচার-রায় প্রদানে
বিলম্ব ঘটানোসহ নানা দুর্নীতি-অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে।
অবৈধ স্বার্থ হাসিলে জাল-জালিয়াতি, ফাইল গায়েব, রায়
পক্ষে এনে দেয়ার তদবির থেকে শুরু করে বিচারপতির
স্বাক্ষর জাল- এমন অন্যায় করতেও পিছপা হচ্ছে না
কর্মচারীরা। এক বছরের মধ্যে নিু আদালতের ১৬৮ কর্মচারীর
বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠাই দুর্নীতির ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির
প্রমাণ। বলার অপেক্ষা রাখে না, আদালতের কর্মচারীদের
অনিয়ম-দুর্নীতি দেশের বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নের
সম্মুখীন করছে এবং ন্যায়বিচারকে হুমকির মুখে ফেলছে।
আমরা মনে করি, ন্যায়বিচার ও সামাজিক শৃঙ্খলার স্বার্থে
বিচারাঙ্গনের যে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিকারীর বিরুদ্ধে
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
যুগান্তরের খবরেই বলা হয়, গত এক বছরে অর্ধ ডজনের বেশি
কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তিনজনকে। এর মধ্যে হাইকোর্টের
দুটি রিটের গোটা আদেশ জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্ত
হয়েছেন এক কর্মচারী। দেশের উচ্চ ও নিন্ম আদালতে বিচারক,
কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকটের কারণে এমনিতেই ত্রাহি অবস্থা,
এর মাঝে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে নিজেদের
ভেতরের দুর্নীতি-অনিয়ম তদন্তের বিষয়। এতে
বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তিতে বিলম্ব ও
দীর্ঘসূত্রতা আরও দীর্ঘ হবে বলেই ধরে নেয়া যায়।
কর্মচারীদের এমন স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগে অপরাধীরা আরও
বেপরোয়া হয়ে পড়বে, এতে সন্দেহ নেই। বিচারপতির স্বাক্ষর
জাল করে ২৯ কেজি স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় স্থগিতাদেশ ও
১৮ হাজার পিস ইয়াবা আসামির জামিনের ঘটনা থেকে
প্রতীয়মান হয়, অপরাধীরা আদালতকে ‘হাতের মুঠোয়’ রাখা
যায় মনে করে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে অপরাধে পা বাড়াচ্ছে।
আদালত রাষ্ট্রের একটি স্পর্শকাতর অঙ্গ। অন্য অঙ্গগুলোর
অনিয়মকে আইনের আওতায় এনে সাজা নিশ্চিত করা আদালতের কাজ;
কিন্তু এ অঙ্গনেই যদি অনিয়ম জেঁকে বসে, তবে রাষ্ট্রের
অন্য স্তম্ভগুলোতেও এর প্রভাব পড়বে। আশার কথা,
সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন অনিয়মে জড়িত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নিচ্ছে। হাইকোর্টের কর্মচারী বিধিমালার আলোকে
সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা গেলেই কেবল আদালতের
কর্মচারীদের অনিয়ম কমিয়ে আনা সম্ভব। প্রয়োজনে
আদালতসংশ্লিষ্টদের অনিয়ম-দুর্নীতি খতিয়ে দেখার জন্য
আলাদা ট্রাইব্যুনাল করা যেতে পারে। কারণ কর্মচারীদের
অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে তথ্য জানানোর জন্য হটলাইন সেবা,
অনলাইনে অভিযোগ দাখিল, সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার
জেনারেলের কার্যালয়ে অভিযোগ বক্স স্থাপন এবং
সেকশনগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরও থামছে না অনিয়ম।
ধর্ম-বর্ণ-গোত্রকে
নয়, হত্যা করা হচ্ছে মানুষ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শুনেছি, মানুষ ভালো না থাকলে নাকি স্রষ্টা ভালো থাকেন
না। তাহলে কেমন আছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভগবান?
কেমন থাকেন তিনি, যখন সামান্য গরুর মাংস হয়ে ওঠে
মানুষের মৃত্যুর কারণ? যখন চরম ভীতি, মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে
কিছু মানুষ মৃত্যুভয় এড়াতে লুকিয়ে থাকে আর তাদের লুকিয়ে
থাকতে দেয়া হয় না এবং খুঁজে খুঁজে নির্মম কষ্ট দিয়ে
হত্যা করা হয়? অপরাধ? আর কিছু নয়। ওই গরুর মাংস। ২০১৫
সালের ৩ আগস্ট, ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৪ অক্টোবর, ২০১৬ সালের
১৮ আগস্ট, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল, ৩ মে,
২৪ জুন, ২৯ জুন ভগবানের নামে হত্যা করা হয়েছে মানুষ।
ভগবানের নামে বা গো-মাতা রক্ষার নামে উত্তর প্রদেশ,
হিমাচল, কর্নাটক, আহমেদাবাদ, রাজস্থান, আসাম, উত্তর
দিনাজপুর এবং ঝাড়খণ্ডে গো-রক্ষকরা যখন পিটিয়ে মানুষ
হত্যা করছিল এবং হত্যার পর যখন তাদের ঝুলিয়ে রাখা
হচ্ছিল আরও বহুসংখ্যক মানুষের মনে মৃত্যুভীতি ঢুকিয়ে
দেয়ার জন্য, তখনও ভগবান নীরব!
কেমন থাকেন যেহোভা, যখন তার নামে গাজায় বিদ্যুৎ ও
পানির সংযোগ বন্ধ করে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য করা
হয় গাজাবাসীকে? যখন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আল-আকসা
মসজিদে নামাজ পড়তে এসে দেখেন মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়া
হয়েছে, আর সাউন্ড বম্ব, টিয়ার গ্যাস হাতে দাঁড়িয়ে আছে
ইসরাইলি সৈন্যরা? লক্ষ্য করুন, আল্লাহর নামের অজুহাতে
শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বোকো হারাম
খ্রিস্টানদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বুদ্ধ মানুষের বাইরে
অন্য সত্তার প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়ে পরিষ্কার বলেছিলেন,
‘হে মানুষ, তোমার বাইরে আর কিছু নেই, আর কিছুরই
অস্তিত্ব নেই, তুমি নিজেই নিজের আলোকবর্তিকা হয়ে জ্বলো।’
সেই বুদ্ধই বা কেমন থাকেন, যখন মানুষ নিজে আলোকবর্তিকা
হয়ে না জ্বলে, রোহিঙ্গা পরিচয়ধারী মানুষদের ঘরবাড়িতে
আগুন জ্বালিয়ে, তাদের ঘরছাড়া করে? অর্ধদশকেরও বেশি সময়
‘আসাদ হঠাও’ মন্ত্রে এবং আরও নানামাত্রিক ঘোরপ্যাঁচে
লাখ লাখ মানুষ হত্যা করা হয়েছে সিরিয়ায়। তবু শেষ হয়েও
শেষ হয় না। শেষ হয় না মানুষ হয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়ার
নিত্যনতুন কৌশল। কাতারের বাড় বেড়েছে অজুহাতে সৌদি আরব,
বাহরাইন, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত জোট কাতারকে একঘরে
করে রেখেছে। গাজাবাসীর মতোই মরুভূমির জীবন হতো
কাতারবাসীর, যদি তুরস্ক-ইরান পানীয় জল না পাঠাতো
কাতারকে। ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে আর মালাউয়িতে লাখ লাখ
মানুষ অনাহারে কাটাচ্ছে। সুদান, দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো,
নাইজেরিয়া এবং সোমালিয়ার লাখ লাখ শরণার্থী ইতিমধ্যেই
খাবারের অভাবে মারা যেতে শুরু করেছে। অপুষ্টিজনিত কারণে
মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া এবং
দক্ষিণ সুদানের লাখ লাখ শিশু। প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একজন
নারী ধর্ষিত হচ্ছেন আফ্রিকায়। আর বঞ্চনা? প্রাপ্তি
শব্দটির সঙ্গেই যাদের পরিচয় নেই, বঞ্চনার অনুভব তাদের
অনুভূতির অভিধানে থাকে কী করে? এ সবের পরও মানুষ কী করে
এই দাবি করে যে তার প্রজ্ঞার কাছে পরাজিত হয়েছে ধর্মীয়
কুসংস্কার?
ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরাইলের দ্বন্দ্ব এখন আর কেবল
ধর্মীয় বিরোধ হিসেবে নেই। মাঝখানে সাম্রাজ্যবাদী
যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ব্যবসার রাজনীতি ঢুকে এই যুদ্ধ
এখন অমীমাংসার স্তরে এসে পৌঁছেছে। কে বলে বিপ্লবকে
চিরদিনের জন্য ডাস্টবিনে নির্বাসন দেয়া হয়েছে? কে বলে
পৃথিবী থেকে চিরদিনের জন্য উধাও হয়েছে বিপ্লব? কে বলে
শ্রেণী সংগ্রাম জারি নেই? আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরাইলি
সৈন্যদের বসানো মেটাল ডিটেক্টর এবং ব্যারিকেডের কারণে
মসজিদে ঢুকতে না পেরে ফিলিস্তিনি মুসলিমরা যখন রাস্তায়
দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন এবং টিয়ার গ্যাস হাতে তাদের
চারপাশ ঘিরে থাকে ইসরাইলি সৈন্যরা, সেই দৃশ্যের মধ্যে
নামাজরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিপ্লবের সবচেয়ে গভীর
স্পিরিট পাই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরাশক্তির দ্বারা
স্পন্সরড ইসরাইলি বাহিনীকে জার শাসকতুল্য মনে হয়।
অস্ত্রহীন ফিলিস্তিনিদের মনে হয় বিপ্লবী। এই
প্রেক্ষাপটে নামাজ পড়ার অধিকার প্রতিষ্ঠাই বিপ্লব। এই
বিপ্লব হানাদার ইসরাইলের আগ্রাসী রূপের বিরুদ্ধে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তিমানদের বিরুদ্ধে।
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। বিপ্লবী ফিলিস্তিনিরা কেবল
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেই লড়াই করছেন না, তাদের লড়াই
সাম্রাজ্যবাদের ভাবগত ও দার্শনিক ভিত্তির বিরুদ্ধেও।
বিশ্বের প্রত্যেকটি নির্যাতিত মানুষের দায়িত্ব এই
লড়াইকে সমর্থন দেয়া। তা না হলে সভ্য এবং মানবিকতার দাবি
মিথ্যা হয়ে যায়। মানুষ উনমানুষ হয়ে যায়। মানবতা
উনমানবতা হয়ে যায়।
যা কিছু সমগ্রের ধারণা থেকে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে,
তাই-ই মানুষের মহত্ত্ব ও মৌলিকত্বকে খাটো করে, খর্ব করে।
এই শর্তে বিশ্বের প্রতিটি মানুষ আজ উনমানুষ। আজ
পর্যন্ত বিশ্বের ইতিহাস উপনিবেশ ও বর্ণবাদের কারণে
মানুষ হত্যার ইতিহাস হয়েই থাকল। ‘মানুষের শ্রেষ্ঠত্বে
বিশ্বাসী’ দাবিদারদের দাবি কেবল বচনসর্বস্ব বাগাড়ম্বরই
থেকে গেল। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান
যেখানেই হত্যকাণ্ড সংঘটিত হোক, সেই হত্যাকে মানুষ হত্যা
নয়, মুসলিম হত্যা হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। মানুষের
শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসীরা সব ধর্ম ও সংস্কৃতির সম্মিলনকে
সার্বজনীন জ্ঞান বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মানুষ
হত্যাকাণ্ড বিবেচিত হয়েছে ধর্মের পরিচয়ে।
বিশ্বের যে প্রান্তে যে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, গোত্রের
মানুষই হত্যা করা হোক না কেন, তা যদি মানুষ হত্যা
হিসেবে বিবেচিত না হয়ে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, গোত্রের
হত্যা হিসেবে বিবেচিত হয়, প্রাধান্য পায় এবং তারপরও
মানুষ নিজেকে সভ্য ও মানবিক দাবি করে, তাহলে ফের বলতে
হয়- খোদার ওপর খোদকারীদের জন্য অপেক্ষা করছে এক
অবসবাসযোগ্য পৃথিবী।
কোনো না কোনো ধর্মকে মানুষ অবলম্বন করে ওই ধর্মকে
অতিক্রম করে সার্বজনীন মানবধর্মে উপনীত হওয়ার জন্য।
কোনো বিশেষ ধর্মকে অতিক্রম করে মানুষ যদি শেষ পর্যন্ত
মানবধর্মে পৌঁছতে না পারে, তাহলে সবই বৃথা। সেই যে
রেভারেন্ড কৃষ্ণস্বামী বলেছিলেন, মানুষ ভালো থাকলে
ভগবান ভালো থাকেন গো!
জয়া ফারহানা : গল্পকার ও প্রাবন্ধিক
বিভিন্ন রাষ্ট্রকে ভূগর্ভস্থ সম্পদের ব্যবহারে
উৎসাহিত করতে হবে : রাষ্ট্রপতি

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিভিন্ন রাষ্ট্রকে ভূগর্ভস্থ সম্পদের ব্যবহারে উৎসাহিত
করতে হবে : রাষ্ট্রপতিরাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ
পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব ও দেশীয় উদ্যোগের
মানোন্নয়ন ঘটিয়ে পানি ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ
মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
‘ঢাকা পানি সম্মেলন-২০১৭’ উপলক্ষে দেয়া আজ এক বাণীতে
তিনি এই আহ্বান জানান।
মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিভিন্ন রাষ্ট্রকে ভূগর্ভস্থ
সম্পদের পুনর্ব্যবহার, পরিশোধন ও এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা
ও ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি
সংরক্ষণ ও নাব্যতা অক্ষুণœ, অন্যান্য আন্তঃদেশীয়
নদ-নদীর পানির ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ এবং নদী অববাহিকা
ও পরিবেশ রক্ষায় বহুমুখী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ
অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’
পানি ব্যবস্থাপনায় সার্বজনীন বৈশ্বিক উদ্যোগের উপর
গুরুত্বারোপ করে ‘ঢাকা পানি সম্মেলন ২০১৭’ অনুষ্ঠিত
হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি আনন্দ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ পানি ও স্যানিটেশনকে
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার হিসেবে বিবেচনা করেছে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) বিশুদ্ধ পানি ও
স্যানিটেশনকে অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রার সাথে সর্বোচ্চ
অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। সকলের জন্য নিরাপদ, বিশুদ্ধ ও
সহজপ্রাপ্য পানি সুবিধা নিশ্চিতকরণে এবং এ সংক্রান্ত
প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্র ও
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে অর্থনৈতিক সুবিধাদি প্রদান ও
দক্ষতা বৃদ্ধির আহবান জানানো হয়েছে। নিরাপদ পানি
সরবরাহ ও পানি ব্যবস্থাপনাকে মানবাধিকারভুক্তকরণে
নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ে যে সব
উন্নয়নশীল রাষ্ট্র ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশ তার
মধ্যে অন্যতম।
হামিদ বলেন, বিশ্বব্যাপী নিরাপদ পানির সহজলভ্যতা দিন
দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। গবেষকদের মতে, এশিয়া প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অঞ্চলের তিন-চতুর্থাংশের বেশি দেশ গুরুতর এ
সমস্যার মোকাবিলা করছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এশিয়া প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অঞ্চলে পানির চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান
দাঁড়াবে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। নদ-নদী ও জলাভূমির বেহাল
অবস্থার কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। জনসংখ্যা
বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত ও দ্রুত নগরায়ণ, দূষণ এবং
ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন এবং সর্বোপরি জলবায়ু
পরিবর্তনের কারণে পানির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
তিনি ‘ঢাকা পানি সম্মেলন ২০১৭’ বিশ্বব্যাপী সমন্বিত
পানি ব্যবস্থাপনার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে
গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। একই
সাথে রাষ্ট্রপতি ‘ঢাকা পানি সম্মেলন ২০১৭’ এর সার্বিক
সাফল্য কামনা করেন।
Top
বিমানে যে কাজগুলো না
করাই ভালো
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বিমানের
ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট নারী বা পুরুষ হেঁটে যাওয়ার সময়
অনেকেই তাদের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে থাকেন যে, তাদের
স্বাভাবিক কাজের বিঘ্ন ঘটে। এছাড়াও অনেকেই বিমানের
ভেতর তাদের কাজের স্থানে উঁকি মেরে কার্যক্রম লক্ষ্য
করার চেষ্টা করেন। তাদের এমন আচরণে বিমানের কর্মীদের
কাজে যে শুধু ব্যাঘাত ঘটে তাই নয়, এতে অস্বস্তিতেও
পড়েন তারা।
স্টিকার ব্যবহার করুন
অধিকাংশ বড় ফ্লাইটেই সিটের সঙ্গে একটি স্টিকার দেওয়া
থাকে। এতে লেখা থাকে, ‘খাবারের সময় আমাকে ডেকে দিও।’
এমন স্টিকার থাকলে খাবার দেওয়ার সময় ফ্লাইট
অ্যাটেনডেন্ট আপনাকে নিশ্চিন্তে ডেকে দেবেন। এমন
স্টিকার না থাকলে খাবারের সময় ডাকলে বা না ডাকলেও
বিরক্ত হন। তাই আপনার প্রয়োজনে স্টিকারটি ব্যবহার করুন।
খাবারের জন্য ধন্যবাদ দিন
বিমানে প্রত্যেক যাত্রীর জন্যই পর্যাপ্ত খাবার মজুদ
থাকে। ফলে খাবার গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই, বরং তা
প্রত্যাখ্যান করাই ঝামেলার। তাই খাবার গ্রহণ করার সময়
সহায়তাকারীকে ধন্যবাদ দিন।
ট্রে অগোছালো নয়
খাবার খাওয়ার পর আপনার ট্রে অগোছালো থাকলে গোছাতে সময়
লাগে। আর এভাবে ৬৪ জনের ট্রে গোছাতে দু’ মিনিট করে
লাগলে তাতে অতিরিক্ত দু’ ঘণ্টা সময় ব্যয় হবে। তাই অন্য
একজনের কথা চিন্তা করে হলেও এমনভাবে গুছিয়ে রাখুন, যেন
তা সহজেই ফেরত দেওয়া যায়। যদি সময়মতো খাবার খাওয়া শেষ
না করেন তাহলেও এটা খুবই ঝামেলাপূর্ণ হয়ে যায়।
গ্যালারিতে যান
অতিরিক্ত কোনো পানীয় কিংবা হালকা খাবার প্রয়োজন হলে
বিমানের গ্যালারিতে যান। অধিকাংশ বিমানের পেছনের দিকেই
এটি থাকে। যাতায়াতের সময় একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে
ডেকে কোনোকিছু চাওয়ার চেয়ে এটি অনেক ভদ্র পদ্ধতি।
হেডসেট ও কম্বল ফেরত দিন
বিমানযাত্রার শেষ দিকে বিমানের যাত্রীদের কাছ থেকে
হেডসেট নেওয়ার দায়িত্বে একজন নিয়োজিত থাকেন। কারণ তার
কাজ বিমানটি সময়মতো পরিষ্কার করে নতুন করে সাজিয়ে
যাত্রী ওঠানো। এখানে আপনার সিনেমা দেখার চেয়ে অনেক
গুরুত্বপূর্ণ তার কাজ। তাই সেগুলো তাড়াতাড়ি গুছিয়ে
নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও থাকে। অনুরূপ নিয়ম কম্বলের জন্যও
প্রযোজ্য।
Top
‘ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন সায়মা
ওয়াজেদ পুতুল
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিদের কল্যাণে উদ্ভাবনী কাজের
স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড’
পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা অটিজম বিশেষজ্ঞ
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের প্রিন্সটন
ক্লাবে ‘সিমা কলাইনু’ নামে একটি শিশু অটিজম কেন্দ্র ও
স্কুল এবং এর আন্তর্জাতিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আই কেয়ার
ফর অটিজম’র বার্ষিক অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের পক্ষে
পুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
এরআগে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর
মাসে পুতুলকে হু অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে।
শিশুদের অটিজম এবং স্নায়বিক জটিলতাসংক্রান্ত বিষয়ের
ওপর ২০০৮ সাল থেকে কাজ শুরু করেন পুতুল। অল্প সময়ের
মধ্যেই তাঁর কাজ বিশ্বজুড়ে প্রশংসা অর্জন করেন।
মনস্তত্ববিদ সায়মা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা
প্রতিষ্ঠান অটিজম স্পিকস-এর পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেন।
তিনি ২০১৩ সালের জুন থেকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলে
অন্তর্ভুক্ত হন ।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭
সালে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি, ২০০২ সালে
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি এবং ২০০৪
সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি লাভ করেন।
জনদুর্ভোগের কারণে
সাময়িকের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধের দাবি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখা
চট্টগ্রামে স্মরণকালের কালের ভয়াবহ বৃষ্টি ও জলজঠের
কারণে সৃষ্ট জনদুর্ভোগের সময়ে আপদকালীন সাময়িক সময়ের
জন্য চট্টগ্রাম শহরের স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করার দাবি
জানিয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক
মাসুকুর রহমান সিকদারের নিকট একটি স্মারকলিপি
হস্তান্তর করেন। চট্টগ্রাম শহরের অধিকাংশ এলাকায়
অতিবৃষ্টি সহ পাহাড়ী ঢল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের
অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়াতে মানুষ এখন পানি বন্দী।
ইতিমধ্যে আবহাওয়া বার্তায় যতটুকু জানা গেছে এই ধরনের
বৃষ্টি আর ও কয়েকদিন চলতে পারে।একই সাথে দুপুর ১২ টা
পর্য্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় সমুদ্রে বছরের
সর্বোচ্চ জোয়ার, যার উচ্চতা প্রায় সাড়ে ১০ ফিট।এই
পরিস্থিতিতে কোমলমতি শিশু কিশোরদের স্কুল কলেজ যেতে
প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এবং তাদের অভিভাবক রা ও
এই ভোগান্তির স্বীকার।ইতিমধ্যে বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশন আঞ্চলিক শাখা লক্ষ্য করেছে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে,ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এই নিয়ে প্রচুর
আলোচনা হচ্ছে।তাই জনস্বার্থ বিবেচনায় চট্টগ্রাম শহরের
স্কুল কলেজ গুলো আপত কালীন বিবেচনায় সাময়িক ছুটি বা
বন্ধ দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা এবং এবং আশু পদক্ষেপ
গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন আঞ্চলিক
শাখা জোর দাবী জানিয়েছেন।বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আমিনুল হক বাবুর নেতৃত্বে এ সময়
উপস্থিত ছিলেন সাধারন সম্পাদক আসাদুর রহমান,যুগ্ন
সম্পাদক মাসুদ পারভেজ ও এমদাদ চৌধুরী, প্রচার ও
প্রকাশনা সম্পাদক এড. রিগান আচার্য্য,দপ্তর সম্পাদক
তামজীদ কামরান সহ নেতৃবৃন্দ।
মালয়েশিয়ায় অভিবাসী
শ্রমিকদের গ্রেপ্তারে আসিয়ানের নিন্দা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ায় কয়েক হাজার অবৈধ অভিবাসী শ্রমিক গ্রেপ্তারে
উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দক্ষিণ-পূর্ব দেশগুলোর জোট
আসিয়ানের মানবাধিকার বিষয়ক আইন প্রণেতারা। তাঁরা
মালয়েশিয়া সরকারের শ্রমিক গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযানের
নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এতে অসহায় শ্রমিকরা হয়রানির
শিকার হচ্ছে।
গত ৩০ জুন এনফোর্সমেন্ট কার্ড (ই-কার্ড) নিবন্ধনের
সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর যারা এই কার্ডের আওতায় আসতে
পারেনি এমন বিদেশি শ্রমিকদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য
করছে মালয়েশিয়া সরকার। সেই অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে
দেশটিতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিবাসন বিভাগের
হিসাব অনুযায়ী ১১ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ১ শরও বেশি
শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা
বিচারে তালিকায় সবার আগে বাংলাদেশ। এরপর আছে
ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমারসহ অন্য কয়েকটি দেশের নাম।
সর্বশেষ সম্প্রতি উপকূলীয় শহর পোর্ট ডিকসনে একটি
নির্মাণ সাইট থেকে বেশ কয়েকজন বিদেশি শ্রমিককে
গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশটি এশিয়ার
বিভিন্ন দেশের শ্রমিকদের একটি বড় কর্মক্ষেত্র। ধারণা
করা হচ্ছে, এই বিশালসংখ্যক বিদেশি শ্রমিকদের একটা বড়
অংশেরই সঠিক কাগজপত্র নেই। ফলে তারা অবৈধ হিসেবেই
বিবেচিত হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় কাগজপত্রহীন বিদেশি শ্রমিকদের গ্রেপ্তারের
ঘটনায় প্রতিবেশী দেশগুলো এবং মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে
উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। আসিয়ানের মানবাধিকারবিষয়ক
পার্লামেন্টারিয়ান কম্বোডিয়ার মু সোচুয়া বলেন, ‘একটি
দেশে কাগজপত্রহীন শ্রমিকদের সংখ্যা কমিয়ে আনার ইচ্ছা
কোনোভাবেই অসহায় শ্রমিকদের হয়রানি করার যুক্তি হতে পারে
না। ’
মালয়েশিয়ায় অভিবাসীদের স্বার্থ দেখে থাকে এমন একটি
প্রসিদ্ধ অধিকার গ্রুপ তেনাগানিতার পরিচালক আয়েজাইল
ফার্নান্দেজ জানান, প্রকৃত অপরাধী হচ্ছে দেশের
বিবেকহীন এজেন্টরা, যারা বিদেশ থেকে শ্রমিক আমদানির
বিনিময়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। তারা শ্রমিকদের এ দেশে
এনে মাথায় বিপুল ঋণের ভার চাপিয়ে ছেড়ে দেয়। ’
BHRC’র গুলশান আঞ্চলিক শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র গুলশান আঞ্চলিক
শাখার সম্মেলন ২৯ জুলাই ২০১৭ গুলশান-বাড্ডা লিং রোডের
সিরাজ টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়। BHRC গুলশান আঞ্চলিক শাখার
সভাপতি মোঃ শামীম বক্স এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের
সংসদ সদস্য এড. হোসনে আরা বেগম বাবলী। সম্মেলন উদ্বোধন
করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও
মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার এবং সংবর্ধিত অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শাখার সাধারণ মোহাম্মদ কায়সার
জামান চৌধুরী। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট সুলতান উদ্দিন নান্নু,
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা মহানগর উত্তর এর
সভাপতি আক্তারুজ্জামান বাবুল, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি
ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার
নির্বাহী সভাপতি ডাঃ মোক্তার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক
শেখ মোঃ শহীদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সাধারণ
সম্পাদক সৈয়দ আজমুল হক, সিলেট জেলা শাখার সাধারণ
সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার সভাপতি
কোহিনুর ইসলাম রুমা। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের গুলশান আঞ্চলিক শাখার উপদেষ্টা মোঃ
শাহীন বক্স ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুজ্জামান, রামপুরা
থানা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হক ও সাধারণ সম্পাদক
এমএ নায়েম তালুকদার, বনানী থানা শাখার সভাপতি গিয়াস
উদ্দিন, বাড্ডা থানা শাখার সভাপতি এড. মোঃ সাইফুল
ইসলাম, ভাটারা থানা শাখার সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান
প্রমুখ। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ, জাতীয় সংগীত এবং বেলুন
উড়ানোর মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে
অংশগ্রহণকারী সকল মানবাধিকার কর্মীদের শপথ বাক্য পাঠ
করান সংসদ সদস্য এডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী।
সম্মেলনে গুলশান আঞ্চলিক শাখা, গুলশান থানা, ভাটারা
থানা, বাড্ডা থানা, বনানী থানা এবং রামপুরা থানা শাখার
প্রায় দুইশত মানবাধিকার কর্মী যোগ দেন।
এই বৈষম্য অমানবিক ও অসম্মানজনক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিষয়টি নিয়ে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। অনেক
আন্দোলন-কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। অনেক ধিক্কার জানানো
হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই
হচ্ছে না। আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের
কর্তাব্যক্তিরা। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন লাখো শিক্ষক।
অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের চাঁদা ৬ শতাংশ থেকে
বাড়িয়ে ১০ শতাংশ কেটে নেয়ার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। ফলে
জুলাই থেকে সব চাকরিজীবীর বেতন বাড়লেও এমপিওভুক্ত
শিক্ষকদের বেতন কমে যাবে ৪ শতাংশ। বেতন বৈষম্য বেড়ে
যাবে। ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি থেকে এখনও এমপিওভুক্ত
শিক্ষকরা বঞ্চিত। পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস ও বৈশাখী ভাতা
থেকেও বঞ্চিত তারা।
প্রথমেই বলি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা কোন শ্রেণীর চাকরিজীবী।
যারা সরকার অনুমোদিত কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে
জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত হন এবং সরকার
নির্ধারিত বয়সসীমা পর্যন্ত চাকরি করে অবসরপ্রাপ্ত হন
এবং সরকার নির্ধারিত অবসর সুবিধা গ্রহণ করেন। পুরো
চাকরি জীবনে এসব শিক্ষক সরকারি সব আদেশ-নিষেধ, পরিপত্র
ও প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চাকরি করতে বাধ্য থাকেন এবং
বিধিবহির্ভূত কাজের জন্য শাস্তিও ভোগ করেন। এসব দিক
বিবেচনা করলে একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কখনই বেসরকারি
শিক্ষক হতে পারেন না। সরকারি, আধাসরকারি,
স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত ক্যাটাগরির সঙ্গে
যুক্ত আরেকটি ক্যাটাগরি হল এমপিওভুক্ত শিক্ষক। সুতরাং
সরকারি বিধি প্রতিপালনের পাশাপাশি সরকারি আর্থিক
সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকারও সংরক্ষণ করেন এমপিওভুক্ত
শিক্ষকরা। কিন্তু জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভুক্ত
প্রজাতন্ত্রের সব চাকরিজীবী বৈশাখী ভাতা নামক
সার্বজনীন ভাতাটি পেয়ে আসছেন দু’বছর যাবৎ। শুধু
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এ থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি অমানবিক,
অসম্মানজনক এবং বিধিবহির্ভূতও বটে।
বছরের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ও উপবৃত্তি
প্রদান নামক সফলতার পাশাপাশি গাইড ও কোচিং বাণিজ্য
বন্ধ করতে না পারার ব্যর্থতা রয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের।
শিক্ষামন্ত্রী কি জানেন, বিনামূল্যে পাঠ্যবই পাওয়ার
মাধ্যমে অভিভাবকদের যেটুকু শিক্ষা ব্যয় কমে তার চেয়ে
অনেকগুণ বেশি টাকায় কিনতে হয় সহপাঠ্য নামক উচ্চমূল্যের
গাইডবই। উপবৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থী যেটুকু আর্থিক
সহায়তা পায় তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি ব্যয় হয় কোচিং করে।
তাই গাইডবাণিজ্য বন্ধ না করে বিনামূল্যের পাঠ্যবই আর
কোচিংবাণিজ্য বন্ধ না করে উপবৃত্তি- কোনটাই সুফল বয়ে
আনবে না।
এই বৈষম্য ও বিভাজন শিক্ষাক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সুফল বয়ে
আনবে বলে হয় না। সারা দেশের এমপিওভুক্ত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে ভূ-সম্পত্তি, যে অবকাঠামো আর যে
রিজার্ভ মানি রয়েছে তাতে সরকার জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত
নিতেই পারে। এতে শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ
এগিয়ে যাবে।
BHRC
চাটমোহর উপজেলা শাখার নৌ-ভ্রমণ এবং সংবর্ধনা সভা
অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
২৮ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
BHRC চাটমোহর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক নৌ-ভ্রমণ, পৌর
শাখার আইডি কার্ড বিতরণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্ন
হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীরা সকাল ৯ টায় উপজেলার বিলচলন
ইউনিয়নের বওসা ব্রীজ পয়েন্ট থেকে বিশাল নৌকা যোগে
সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলাধীন চড়ুইমুড়ি গ্রামে
অবস্থিত "রিয়া-রূপন শিশু পার্ক" অভিমূখে যাত্রা করে।
পথিমধ্যে BHRC চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক
কে. এম. বেলাল হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ
সম্পাদক সাংবাদিক শেখ সালাহ উদ্দিন ফিরোজের সঞ্চালনায়
অনুষ্ঠিত সাংগঠনিক সভায় বক্তব্য দেন- উপজেলা শাখার
অন্যতম নির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব ডা: এম. এ. মজিদ,
সহ-সভাপতি জয়দেব কুন্ডু গনো, পৌর শাখার সভাপতি পৌর
কাউন্সিলর নূর-ই হাসান খান ময়না, সহ-সভাপতি ব্যাংক
কর্মকর্তা আলহাজ্ব মো: আফসার আলী, সহ-সভাপতি ও জেলা
পরিষদ সদস্য মো: হেলাল উদ্দিন প্রমূখ।
সাংগঠনিক আলোচনা শেষে নব অনুমোদিত পৌর কমিটির
মানবাধিকার সংগ্রামীদের মাঝে কেন্দ্র প্রদত্ত আইডি
কার্ড বিতরণ করা হয়। সবশেষে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার লাভ করায় ইঐজঈ চাটমোহর শাখার সভাপতি
সাংবাদিক কে. এম. বেলাল হোসেন স্বপনকে সংবর্ধনা
ক্রেস্ট এবং কোলকাতায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার
সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করায় উপজেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বজিৎ
জোয়াদ্দার মিঠুনকেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে ৬০ সদস্যের মানবাধিকার সংগ্রামীর
দলটি রিয়া-রূপন শিশু পার্কে প্রবেশ এবং বিনোদন উপভোগ
অন্তে বিকেল সাড়ে ৫ টায় নৌকা গতিশীল হয় এবং রাত ১০ টায়
সকল অভিযাত্রীরা ঘরে ফেরেন।
BHRC পাবনা জেলা শাখার
মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন BHRC পাবনা জেলা শাখার
মাসিক সভা গত ২৯ জুলাই ২০১৭ বিকেলে শহরের অন্নদা
গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী'র সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত
হয়েছে।
BHRC পাবনা জেলা শাখার সভাপতি জনাব সাইফুল আলম স্বপন
চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব
অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত
সভায় বক্তব্য দেন- নির্বাহী সভাপতি সাংবাদিক জনাব
রবিউল করিম রবি, অপর নির্বাহী সদস্য প্রফেসর জনাব শহিদ
আহম্মেদ ইব্রাহিম, পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ (পানাসি)
আঞ্চলিক শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আ. ত. ম.
শহিদুজ্জামান নাসিম, জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক জনাব
অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম পটল, আইন বিষয়ক সম্পাদক জনাব
অ্যাডভোকেট কাজী মকবুল আহম্মেদ বাবু, চাটমোহর উপজেলা
শাখার সভাপতি সাংবাদিক জনাব কে. এম. বেলাল হোসেন স্বপন,
আটঘরিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব ইকবাল শেখ
প্রমূখ।
সভায় বক্তাগণ মানবাধিকার সমন্বিত সমাজ গঠন এবং সমাজের
প্রতিটি স্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থানে
থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এছাড়াও পাবনায় সংগঠনের একটি অফিস ভাড়া নেয়া, অভিযোগ
মূল্যায়ন ও শালিস কমিটি গঠন, প্রতিটি উপজেলায় কমিটি
গঠনের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার
উদ্দেশ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জন্মদাগের গোপন তথ্য
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রায় প্রতিটি মানুষের শরীরের কোন না কোনও অংশে
জন্মদাগ দেখা যায়। অনেকের আবার বংশ পরম্পরাতেও শরীরের
একই স্থানে জন্মদাগ থাকে। যার ফলে মা-মেয়ে বা
বাবা-ছেলেকে অনায়াসেই চিনতে পারা যায়। কিন্তু জানেন
কি, এই জন্মদাগের আড ালে লুকিয়ে থাকে নানা গোপন তথ্য?
এই দাগই ব্যক্ত করে সেই মানুষের স্বভাব, চরিত্র, এমনকী
ভবিষ্যৎও।
অনেকেই হয়তো এমন তথ্যকে কুসংস্কার বলে অবজ্ঞা করতে
পারেন। তবে এ নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। তবে খুব বেশি তথ্য
প্রকাশ্যে না এলেও, ১৯৬০ সালে চিকিৎসক ইয়ান স্টিভনসন এ
নিয়ে নানা রহস্য ফাঁস করেছিলেন। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি
করেই এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল জন্মদাগের কিছু গোপন
কথা।
শরীরের আলাদা আলাদা জায়গার জন্মদাগের অর্থও আলাদা।
কারও পায়ে জন্মদাগ থাকলে সেই ব্যক্তি সাধারণত
বিভ্রান্ত থাকেন। কোনও বিষয় নিয়ে চটপট সিদ্ধান্ত নিতে
পারেন না। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও, তা সঠিকভাবে কাজে
লাগানোর অভাবে বাকিদের থেকে পিছিয়ে পড়েন তিনি।
কাঁধে জন্মদাগ বলতে বোঝায় অর্থে টান। এই ব্যক্তিরা
প্রায় সারাজীবনই টাকার অভাবে ভোগেন। তবে ডান কাঁধে
জন্মদাগ থাকলে সেই ব্যক্তি অত্যন্ত ভাগ্যবান। ভাগ্যের
জোরেই বহুদূর এগিয়ে যান তিনি।
লক্ষ্য করে দেখুন তো, বুকের বাঁ-দিকে জন্মদাগ রয়েছে কি
না। তাহলে যাতেই হাত দেবেন তা সোনা হতে বাধ্য। প্রতিটি
পদক্ষেপে মিলবে সাফল্য। পাশাপাশি আপনার মধ্যে যে রসবোধ
রয়েছে, সে বিষয়েও সকলে অবগত। বুকের ডান দিকের নিচে
জন্মদাগ থাকলেও, আপনি সৌভাগ্যবান। সম্পদ ও সৌভাগ্যে
পরিপূর্ণ আপনার জীবন।
ঘাড়ের ডান দিকে জন্মদাগ থাকার অর্থ সেই ব্যক্তি
বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থাকতেই ভালবাসেন। পরিবার ও
বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে তিনি পছন্দ করেন। এক কথায়
সংসারে শান্তি বজায় রাখতে বড ভূমিকা রয়েছে সেই
ব্যক্তির। কোনও ব্যক্তির হাতে অথবা হাতের আঙুলে
জন্মদাগ থাকলে তিনি নিজের কাজ নিজে করতেই ভালবাসেন।
অন্যের দয়া বা সাহায্য নেওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি। পেটের
কোনও অংশে জন্মদাগ রয়েছে এমন ব্যক্তিকে সমঝে চলবেন।
কারণ, সেই ব্যক্তি কিন্তু অত্যন্ত লোভী এবং স্বার্থপর।
এমনকী ভালবাসার মানুষকেও তিনি রেয়াত করেন না।
নাকে জন্মদাগের অর্থ আপনি একজন সৃজনশীল ব্যক্তি। যে
কোনওরকম আর্টে আপনার প্রতিভা রয়েছে।
পায়ের নিচে জন্মদাগ। তাহলে নিঃসন্দেহে সেই ব্যক্তি
ঘুরতে ভালবাসেন। ভবিষ্যতে ট্রাভেলকে পেশা হিসেবেও বেছে
নিতে পারেন।
Top
ধর্ষণ ঠেকাতে
‘কলম-অস্ত্র’
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেখতে একেবারে কলমের মতোই। ছোট ব্যাগে কলমের মতো করেই
রেখে দেওয়া যায়। কিন্তু ওইটুকু একটা জিনিসই এক প্রকার
অস্ত্র! কাউকে তাক করে টিপলেই তার চোখ একেবারে ঝলসে
যাবে। যৌন হেনস্তা বা ধর্ষকদের রুখতে এবং নারীদের
সুরক্ষা বাড়াতে এমনই এক মোক্ষম অস্ত্র বাজারে এনেছে
চীন।
এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্লেম-থ্রোয়ার’। নারীদের
আত্মরক্ষার জন্যই এ অস্ত্র। এতে আছে একটা সুইচ, যেটি
টিপলেই আগুনের লেলিহান শিখা বেরোবে। এটি কারো চোখে পড়লে
মুহূর্তের জন্য তার পৃথিবী অন্ধ হয়ে যাবে। ধর্ষণ কিংবা
অন্যান্য যৌন হেনস্তা থেকে রক্ষা পেতেই চীনে নারীদের
মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ অস্ত্র। সিগারেট লাইটারের
মতো দেখতে এ ডিভাইস। দাম ধরা হয়েছে ১০ ডলার থেকে থেকে
৩০ ডলার। অর্থাৎ, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০০ থেকে আড়াই
হাজার টাকার মতো পড়বে।
উল্লেখ্য, ভারতের মতো চীনেও যৌন নিপীড়নের ঘটনা
নৈমিত্তিক একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য
ধর্ষকদের রুখতে নানা ধরনের ‘অস্ত্র’ চীনের বাজারে আছে।
তবে আপাতত ‘ফ্লেম-থ্রোয়ার’-এর চাহিদাই সে দেশের বাজারে
সবচেয়ে বেশি। সূত্র : এই সময়।
বালিশের দাম ৪৬ লাখ
টাকা!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অনিদ্রা থেকে রেহাই পেতে কত না পন্থা অবলম্বন করে
মানুষ। তবে এবার সেই অনিদ্রার অশান্তি থেকে মুক্তির
উপায় হিসেবে বালিশকেই সমাধান হিসেবে বেছে নিলেন এক
ফিজিও থেরাপিস্ট। আবিষ্কার করেছেন এক বিলাসবহুল বালিশ।
থিজেস ভেন ডার হিলসট নামের নেদারল্যান্ডসের ওই ফিজিওর
দাবি, বালিশটি ঘুমের যাবতীয় সমস্যার সমাধান দেবে। আর
এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ডলার, যা
বাংলাদেশি টাকায় ৪৬ লাখ ৫১ হাজারেরও বেশি।
বালিশটির উপরিভাগ তৈরি হয়েছে মোলায়েম ম্যালবেরি সিল্ক
দিয়ে। যার মধ্যে রয়েছে ২৪ ক্যারেট সোনার সুতোর বুনন।
বালিশটির ভেতরে রয়েছে উন্নতমানের মিশরীয় তুলা এবং অ-বিষাক্ত
বলে পরিচিত ডাচ মেমরি ফোম। এছাড়া বালিশটির জিপারে রয়েছে
চারটি হীরা এবং ২২ দশমিক ২ ক্যারেট ওজনের একটি
নীলকান্তমণি। ধারণা করা হচ্ছে ওই বালিশটিই বর্তমানে
বিশ্বের সবচেয়ে দামি বালিশ ।
ভেন ডার হিলসট জানিয়েছেন, ধনী মানুষরা অনেক সময় অসুখী
হন। তারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না। তাই অনেক দিন ধরেই
তার ধনী ক্লায়েন্টরা যেন ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন সে
জন্য কিছু একটা তৈরি করতে চাইছিলেন তিনি। অবশেষে দীর্ঘ
১৫ বছর গবেষণা করে এ বালিশ তৈরি করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগামী মাসে দুবাইয়ে তার ডিজাইন করা
বিশেষ বালিশগুলোর একটি প্রদর্শনী হওয়ার কথা আছে। সেখানে
৫৭ হাজার ডলার মূল্যের এই বালিশটিও উপস্থাপন করা হবে।
ঘরেই বেশি
নির্যাতিত নারী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঘরে-বাইরে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার নারী। তবে
পাড়া-মহল্লার চেয়ে পরিবারের আপন ভুবনেই বেশি নির্যাতিত
হচ্ছেন নারী। দেশের বিবাহিত নারীদের ৮৭ শতাংশই স্বামীর
মাধ্যমে কোনো না কোনো সময়ে, কোনো না কোনো ধরনের
নির্যাতনের শিকার হন। বিস্তারিত জানাচ্ছেনÑ কেয়া আমান
মাত্র ২০ হাজার টাকাই কাল হয়ে দাঁড়ায় গৃহবধূ আতিয়া
বেগমের। বাবা যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে
পারলেও পারেননি অবশিষ্ট ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে। আর
এই অপারগতার কারণেই গত বছরের ৯ জুলাই প্রকাশ্যে দিনের
বেলা গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়
গাইবান্ধার মধ্য ফলিয়া গ্রামের আতিয়াকে।
একইভাবে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন নড়াইলের
লোহাগড়ায় গৃহবধূ ববিতা খানম। ববিতাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে
সেনাবাহিনীতে কর্মরত স্বামী নির্যাতন করে।
শুধু গৃহবধূ আতিয়া বেগম কিংবা ববিতা খানমই নন। দেশের
বিবাহিত নারীদের ৮৭ শতাংশই স্বামীর হাতে কোনো না কোনো
ধরনের পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে ৬৫
শতাংশ বলেছেন, তারা স্বামীর মাধ্যমে শারীরিক নির্যাতন
ভোগ করেছেন, ৩৬ শতাংশ যৌন নির্যাতন, ৮২ শতাংশ মানসিক ও
৫৩ শতাংশ নারী স্বামীর মাধ্যমে অর্থনৈতিক নির্যাতনের
শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)
পরিচালিত ‘ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন (ভিএডব্লিউ) সার্ভে
২০১১’তে পারিবারিক নির্যাতনের এমন চিত্রই উঠে আসে।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
জরিপে শারীরিক, যৌন, মানসিক ও অর্থনৈতিক চার ধরনের
নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে
৪৫ শতাংশ নারীকে তাদের স্বামীরা চড় বা ঘুষি মেরে আহত
করেন, ১৫ শতাংশ নারী লাথি বা মারধরের শিকার হন। যৌন
নির্যাতনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নারী ইচ্ছার বিরুদ্ধে
স্বামীর সঙ্গে শারীরিক মিলনে বাধ্য হন। ৮১ দশমিক ৬
শতাংশ স্বামীগৃহে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন।
জরিপ অনুযায়ী, বিবাহিত নারীদের প্রায় অর্ধেকই
অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার। ৩০ শতাংশ নারী বলেছেন,
স্বামীরা হাত খরচ দিতে অস্বীকৃতি জানান। ১৭ শতাংশ
বলেছেন, স্বামীর টাকা-পয়সা আছে কিন্তু তার পরও তারা
সংসারের খরচ দিতে চান না।
প্রবাসে
খুব কষ্টে আছে বাংলাদেশিরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রবাসে খুব কষ্টে আছে বাংলাদেশিরামধ্যপ্রাচ্যসহ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা এখন আর ভালো
নেই। বিদেশে তারা নানাবিধ সংকটে দিন কাটাচ্ছে। কয়েক
বছর আগে থেকে চলা অর্থনৈতিক মন্দা, জ্বালানি তেলের দাম
কমে যাওয়া, যুদ্ধবিগ্রহ, ইউরোপজুড়ে মারাত্মক অভিবাসন
সংকট, অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত দেয়ার চাপ ও
ব্যাপক ধরপাকড় এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তাহীনতার কারণে পদে
পদে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন প্রবাসীরা। আবার দেশে
কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় নানা জটিলতা মোকাবিলা করে
বাধ্য হয়ে বিদেশে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশিরা।
শুধু তাই নয়, বিদেশে কর্মসংস্থান ক্রমেই সংকুচিত হয়ে
আসা এবং আয় কমে যাওয়ায় প্রবাসীদের সংকট আরো ঘনীভূত
হচ্ছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক
বছর ধরে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর সংখ্যা বাড়লেও
রেমিট্যান্স বাড়েনি, বরং কমেছে। এছাড়া গত ৫ মাস ধরে
আশঙ্কাজনকভাবে কমছে জনশক্তি রফতানি। গত মার্চে এক লাখ
৬ হাজার কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থান হলেও পরের মাসগুলোকে
কমতে শুরু করেছে। এতে দেখা যায়, গত এপ্রিলে বিদেশে গেছে
৯৫ হাজার কর্মী, মে’ মাসে গেছে ৮৩ হাজার কর্মী, জুন
মাসে গেছে ৬৮ হাজার কর্মী এবং চলতি মাসে যাবে ৬৬ হাজার
কর্মী। তবে সৌদি আরব, ওমান ও কাতারে যেসব কর্মী এখন
যাচ্ছে তাদের একটি বড় অংশ সেখানে মাসের পর মাস কাজ
পাচ্ছে না। তারা বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে ধরনা দিচ্ছে।
অনেকেই অভিবাসন ব্যয়ের সঙ্গে আয় নগণ্য দেখে স্বেচ্ছায়
দেশে ফিরে আসছেন। আবার অনেকে কর্মরত কোম্পানিতে মাসের
পর মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এছাড়া
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশেও হেইট ক্রাইমে
হত্যা ও এসিড সন্ত্রাসে আতঙ্কে রয়েছেন বাংলাদেশিরা।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘদিন ধরে
যুদ্ধ চলায় লাখ লাখ অভিবাসী জীবন বাজি রেখে সমুদ্র পাড়ি
দিয়ে ইউরোপে ঢুকে পড়ছেন। এসব অভিবাসীর চাপ সামলাতে
টালমাটাল ইউরোপ ও তাদের রাজনৈতিক অঙ্গন। এ অবস্থায়
ইউরোপে অবৈধভাবে থাকা ৯৩ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত
পাঠাচ্ছে ইইউ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশকে মারাত্মক চাপে
রেখেছে ইইউ। এসব অবৈধদের ফেরত না নিলে, বাংলাদেশিদের
নতুন করে ইউরোপের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসার হুমকিও রয়েছে।
এতে বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে,
তেমনি বাণিজ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়বে। পরিস্থিতি
বিবেচনা করে ইউরোপ থেকে পর্যায়ক্রমে সব বাংলাদেশিকে
ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিবাসন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের
অঙ্গীকার রয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি যেখানেই থাকুক, ফেরত
নেয়া হবে।
এদিকে সৌদি সরকারের সাধারণ ক্ষমার আওতায় ৫০ হাজারের
বেশি বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরে আসার আবেদন করেছেন বলে
সোমবার এ খবর দিয়েছে সৌদি গেজেট। এর মধ্যে ৪৫ হাজার
বাংলাদেশি স্বদেশে ফেরার প্রক্রিয়া সৌদি আরবেই সম্পন্ন
করেছে। এ পর্যন্ত মোট ২০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সৌদি
আরব ত্যাগ করেছেন। আগামী সোমবার সৌদি সরকারের সাধারণ
ক্ষমার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সৌদি গেজেটের জানায়, সৌদি
আরবের উত্তরাঞ্চলের আরার এবং দক্ষিণাঞ্চলের আসির
অঞ্চলসহ সর্বত্র স্বদেশে ফেরত উচ্ছুক কর্মীদের উপচে পড়া
ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
“কুলাউড়ায়
মানবাধিকার কমিশনের কর্মশালা সম্পন্ন”
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন এর
কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৯ জুলাই ২০১৭ কুলাউড়া
রিক্রেশন ক্লবে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কুলাউড়া
উপজেলা শাখা ও দক্ষিণ কুলাউড়া আঞ্চলিক শাখার যৌথ
উদ্যোগে উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ও প্রশিক্ষক
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড: কিশোরী পদ দেব
শ্যামল। কুলাউড়া উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল লতিফের
সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমদের পরিচালনায়
দিনব্যাপী উক্ত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শামীম
মুসা, কুলাউড়া বি.আর.ডি.বির সভাপতি ফজলুল হক ফজলু।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া উপজেলা
শাখার সহ-সভাপতি ইউ:পি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির,
শিক্ষক আব্দুল বাছিত, ফখরুল ইসলাম, রেজাউর রহমান কয়ছর,
সুজিত দে, দক্ষিণ কুলাউড়া আঞ্চলিক শাখার সভাপতি আব্দুস
সালাম চৌধুরী, সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক
তপন দত্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ, মাহমুদুর
রহমান মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন লাল দেব প্রমূখ।
সকাল ১০:০০ ঘটিকা থেকে বিকাল ৪:০০ ঘটিকা পর্যন্ত
অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালায় কুলাউড়া উপজেলা শাখা ও দক্ষিণ
কুলাউড়া আঞ্চলিক শাখার ৬০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া কর্মশালার
প্রাক্কালে কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল
জলিল ও গীতাপাঠ করেন মানবাধিকার কর্মী নয়ন লাল দেব।
নরসিংদীর ডাংগা
ইউনিয়নের ৫ মাসে অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে হত্যা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নে যৌতুকের জন্য
রুমানা আক্তার (২৩) নামে এক অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে হত্যা
করেছে পাষন্ড স্বামী । গত ২৩ জুলাই ২০১৭ দিবাগত রাতে
ডাংগা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। পরদিন
২৪ জুলাই ২০১৭ পলাশ থানার পুলিশ রুমানা আক্তার এর লাশ
তার স্বামীর বাড়ী থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য
মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত রুমানা আক্তারের একটি প্রায় দেড়
বৎসরের কন্যা সন্তান রয়েছে। ঘটনার পর নিহতের স্বামী
লাবন বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায় ৩
বৎসর আগে ইসলাম পাড়ার নয়ন মিয়ার ছেলে লাবনের সঙ্গে
রুমানার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই নিহতের
স্বামী মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রায় সময়ই তার
স্বামী যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালাতো। টাকার জন্য
একাধিকবার তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তার পিত্রালয়
নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে পাঠিয়ে দেয়। নির্যাতন সহ্য করতে
না পেরে তার বাবা পর্যায়ক্রমে লাবনকে সাত লক্ষ টাকা
দেন। ২৪ জুলাই রাতে রাতে আবারও তার বাপের বাড়ী থেকে
টাকা এনে দিতে বললে রুমানা টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানায়।
এ সময় লাবন তাকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত রুমানার বাবা খোরশেদ আলম জানান মৃত্যুর এক ঘন্টা
আগে মেয়ে তাকে ফোন দিয়ে সকাল সকাল তাদের বাড়ীতে যেতে
বলেন। মেয়ে আরও বলেন তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রায়
একঘন্টা পর লাবনের পাশের বাড়ীর একজন ফোন করে জানায় তার
মেয়ে রুমানা মারা গেছে। তারা আমার মেয়েকে টাকার জন্য
মেরে ফেলেছে বলে দাবী করেন রুমানার বাবা খোরশেদ আলম।
ডাংগা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কৌশিক ইসলাম (নয়ন)
জানান এর আগেও রুমানাকে তার স্বামী মারধর করতো।
মৃত্যুর খবর পেয়ে সংবাদ পেয়ে ইউপি সদস্য সাথে সাথেই
ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিশকে খবর দেন। পলাশ থানার সেকেন্ড
অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান এ ব্যাপারে নিহতের বাবা
বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। লাশ ময়না
তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর
থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের অভিযান চলছে।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
পাঁচ
বছরে ১৮২ জনের মৃত্যৃ
নৃশংস নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটাতে আমেনাকে (১০) ফেনীর আফরোজা
বেগমের বাসায় কাজ করতে দিয়েছিল তার ফুপু। কিছুদিন পর
তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢাকায় আফরোজার মেয়ে লাভলীর বাসার
কাজে সাহায্য করতে। খাবার না জুটলেও আমেনার কপালে জোটে
বর্ণনাতীত নির্যাতন। লাভলীর নির্যাতনে ঝলসে যায় আমেনার
পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান। দগ্ধস্থানে ধরেছে পচন। এ
অবস্থায় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তাকে
রাস্তা থেকে হাসপাতালে ভর্তি করেন এক ব্যক্তি। এরপর
বেরিয়ে আসে নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) হিসাব
অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে নৃশংস নির্যাতনে মারা গেছে ১৮২
জন গৃহকর্মী। সম্প্রতি উন্নয়ন অন্বেষণের ‘ডমেস্টিক
ওয়ার্কার্স : ডিভ্যালুয়েশন অ্যান্ড ডিসক্রিমিনেশন’
শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা যায়, ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ শিশু
গৃহকর্মী দৈনিক ৯ ঘণ্টার বেশি সময় কাজ করে। ১২ শতাংশ
শিশু গৃহকর্মীর কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। অথচ
একজন শিশু গৃহকর্মী মাসে গড়ে ১ হাজার ১৮৫ টাকা মজুরি
পায়। কারও কারও কপালে তাও জোটে না। পায় না ঠিকমতো
খাবার, পোশাক, থাকার জায়গা এবং চিকিৎসা। প্রাপ্তবয়স্ক
গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রেও একই দশা।
জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম
ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চাইল্ড লেবার মনিটরিং
সেলের কো-চেয়ার অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, গৃহকর্মী
নির্যাতন বন্ধে প্রণিত নীতিমালাকে কার্যকর করতে হবে।
যখন নির্যাতনের মাত্রা চরম পর্যায়ে যায় তখন তা আমাদের
সামনে আসে। এ ছাড়া এরকম অসংখ্য নির্যাতনের চিত্র রয়ে
যায় অন্তরালে। এসব মামলায় ক্ষতিপূরণ দিয়ে আপোস করে ফেলা
হয়। কিন্তু এ নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন মনিটরিং এবং
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এ বছরের
জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মোট ২২ জন গৃহকর্মী
বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে শারীরিক
নির্যাতনের পরে মারা গেছেন ৪জন। আর ধর্ষণের পর হত্যা
করা হয়েছে একজনকে। এ ছাড়া রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৭
জনের। গৃহকর্মীরা ঘরের ভিতরে নির্যাতনের শিকার হলেও তা
রয়ে যায় চার দেওয়ালের ভিতরে। কেউ জানতে পারে না
প্রতিদিনের অবর্ণনীয় এই নির্যাতন। দরিদ্র পরিবারগুলো
অনেকটা বাধ্য হয়েই শিশুদের মানুষের বাসায় কাজে দেয়।
বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, শিশুদের নামমাত্র
মজুরি বা বিনা মজুরিতে কাজ করানো হয়। নির্যাতনের শিকার
হলেও তাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তা দেখারও কেউ নেই।
নয় বছর বয়সে জান্নাতুল ফেরদৌস কাজ করত গাজীপুরের এক
বাসায়। ঈদে চাঁদপুরে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার বায়না ধরলে
নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে। পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন
অংশে গরম খুন্তি ও বিদ্যুতের তারের আঘাতের অসংখ্য
চিহ্ন। টাইলসের সঙ্গে মাথা লাগিয়ে নির্যাতন করায় মাথায়
বেশ ক্ষত।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের তোফাজ্জল আলীর মেয়ে সুমাইয়া
খাতুন। অভাবের সংসারে আট বছর বয়সে বাবা মারা গেলে পথে
বসে পরিবার। তখন পেটের দায়ে গ্রামের মোয়াজ্জেম আলীর
কথায় কাজ নেয় রাজধানীর বাড্ডা এলাকার রফিকুল ইসলামের
বাসায়। কয়েকদিন যেতেই কথায় কথায় শুরু হয় অকথ্য
গালিগালাজ। কয়েক মাস পার হতেই গরম খুন্তি, বেলনা ছাড়াও
হাতের কাছে যা পায় তা দিয়েই সুমাইয়াকে মারধর করেন
গৃহকর্ত্রী। একদিন রাত ১১টায় ডিম ভাজি করতে বলে
সুমাইয়াকে। ভাজতে গিয়ে একটু পুড়ে যাওয়ায় গরম কড়াই দিয়ে
ছ্যাঁকা দিলে বাঁচার জন্য চিৎকার দেয় সে। তার চিৎকার
শুনে পাশের বাড়ির প্রতিবেশী পুলিশে খবর দিলে তারা এসে
গ্রেফতার করে রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে। এ রকম
নির্যাতন হরহামেশাই চলছে রাজধানীসহ সারা দেশের
গৃহকর্মীদের ওপর। কমেনি গৃহকর্মী নির্যাতন। মানবতা বা
নীতিমালা কোনো কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না গৃহকর্মী
নির্যাতন। বরং দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে নির্যাতনের ধরন ও
নৃশংসতা। অসহায় এই পরিবারের শিশুরা অবর্ণনীয়
নির্যাতনের শিকার হলেও করা হয় না মামলা। কেউ আবার মামলা
করলেও অর্থের বিনিময়ে করে নেয় আপোস।
এ ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ সব ঘটনায় মামলা গৃহকর্মীর
পরিবার না করলে রাষ্ট্রকে করতে হবে। এ ঘটনায় আপোসের
ব্যবস্থা বন্ধ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন
প্রয়োজন। যে বাড়িতে নির্যাতন হয়েছে তাদের আইনের আওতায়
আনলে এবং বিচারের সংস্কৃতি সচল থাকলে এ ঘটনাগুলো কমে
যাবে। এ সব মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার ঘটনা সবচেয়ে
বেশি। তাই গৃহকর্মী নির্যাতন করে পার পেয়ে যাওয়ার এই
বিষয়ে সবার সজাগ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
পাঁচ মাসেই ২৪৪ শিশু
ধর্ষণের শিকার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের শিশুদের অবস্থা দিন দিন নাজুক থেকে নাজুকতর হচ্ছে।
চলতি বছরের পাঁচ মাসেই ২৪৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
গত এক বছরে ৪৪৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। চলতি বছরের
প্রথম পাঁচ মাসেই সে হিসাব ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
শিশুদের ওপর অন্য ধরনের নির্যাতনও বেড়েছে। বাংলাদেশ
শিশু অধিকার ফোরামের শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে করা
এক প্রতিবেদনে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
গত বছর থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে শিক্ষকের হাতে
শাস্তি, পায়ুপথে বাতাস, চুরির অপবাদে দরিদ্র ও শ্রমজীবী
শিশুদের পেটানোসহ অন্যান্য নির্যাতন বৃদ্ধির ঘটনাও
রয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে গত বছরের চেয়ে ধর্ষণের পর
শিশু হত্যার হার কিছুটা কমেছে। জাতীয় মানবাধিকার
কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘আইনের প্রতি
শ্রদ্ধা ও যথাযথ প্রয়োগের অভাবে এ সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।
এ থেকে উত্তরণে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে
আরও বেশি তৎপর হতে হবে। ’ শিশু অধিকার ফোরাম সূত্রে
জানা গেছে, গত এক বছরে ৪৪৬ শিশু যৌন নির্যাতন ও
নিপীড়নের শিকার হয়। এর মধ্যে ৬৮ শিশু গণধর্ষণের শিকার
হয়। চলতি বছরের পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) শিশুর ওপর এ
ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২৪৬টি। জানুয়ারিতে ধর্ষণের শিকার হয়
৩৬ শিশু, ফেব্রুয়ারিতে ৫৪, মার্চে ৫৫, এপ্রিলে ৩৮ ও
মেতে ৬১ শিশু। আর গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪২টি। ৩টি
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে
আত্মহত্যা করে আরও ৩ শিশু। গত বছর অন্যান্য বিষয় থেকে
শিশু হত্যা বেশি আলোচিত ছিল।
এ দেশে একসময়
বাল্যবিবাহ বলে কিছু থাকবে না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) প্রতিনিধি
আর্জেন্টিনা মাতাভেল পিচ্চিন তিন বছর চার মাস বাংলাদেশে
দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ থেকে
বিদায় নেন। বিদায় নেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে
মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাল্য
বিবাহসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রোকেয়া রহমান
প্রশ্নঃ আপনি তিন বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে কাজ
করেছেন। ইউএনএফপিএ যেসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সরকারকে
সহায়তা করছেন, তার মধ্যে কোনটিতে অগ্রগতি হয়েছে বলে
আপনি মনে করেন?
আর্জেন্টিনা মাতাভেল: বাংলাদেশ এ পর্যন্ত সহস্রাব্দ
উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর লক্ষ্য অর্জন করেছে। সেটি
হচ্ছে মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ
উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০০১ থেকে ২০১০
সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ কমেছে। ২০০১ সালে
সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি লাখে ৩২২ জন মা মারা
যেতেন। ২০১০ সালে এ হার লাখে ১৭০ জনে নেমে আসে। এটা
অবশ্যই একটি সাফল্য। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য হচ্ছে
মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে ৭০ জনে নামিয়ে আনা। এ জন্য
বাংলাদেশকে আরও অনেক কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে
মাতৃমৃত্যু বা মাতৃত্বজনিত অসুস্থতার একটি বড় কারণ
হচ্ছে বাড়িতে অদক্ষ ধাইয়ের মাধ্যমে সন্তান প্রসব।
সন্তান প্রসবের সময় অবশ্যই দক্ষ ও পেশাদার মিডওয়াইফ
দরকার। বাংলাদেশের সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
মিডওয়াইফারি সেবা প্রসারের মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু কমিয়ে
আনার জন্য সরকার ৩১টি সরকারি নার্সিং কলেজ ও নার্সিং
ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করেছে।
ইতিমধ্যে ৬০০ পেশাদার মিডওয়াইফকে দেশের বিভিন্ন
হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জানুয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আরও
৯০০ মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া হবে। নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত
করতে অবশ্যই প্রসবের সময় মিডওয়াইফের উপস্থিতি দরকার।
প্রসবোত্তর সেবা ও পরিবার পরিকল্পনাসংক্রান্ত দানের
ক্ষেত্রেও মিডওয়াইফরা কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। আমি
আশা করছি, পেশাদার মিডওয়াইফদের আরও বেশি সংখ্যায় নিয়োগ
দেওয়া হলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে
আনা সম্ভব হবে।
কোমলমতি শিশুদের
দিয়ে চলছে কারখানা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও গাজীপুরের শ্রীপুরে
অসংখ্য শিল্পকারখানায় শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত।
শিশু শ্রমের কারণে এদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। উপজেলার
বিভিন্ন কারখানায় শিশুরা অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর
পরিবেশে কাজ করছে। নামমাত্র বেতনে শিশু শ্রমিক পাওয়া
যায় বিধায় কারখানার মালিকেরা শিশুদের কাজে নিয়োগে
আগ্রহী হচ্ছে। শিশুদের মাসিক বেতনের টাকাও সঠিক সময়ে
পরিশোধ করছে না কারখানার মালিকরা। অপরিপক্ব বয়সে কাজের
অতিরিক্ত চাপ থাকায় ও দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজ করে তারা
অপুষ্টির শিকার হয়েই বেড়ে উঠছে। কারখানা মালিকরা
প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এসব
দেখেও না দেখার ভান করছে। যে বয়সে কোমলমতি শিশুদের
বিদ্যালয়ে থাকার কথা, সেই বয়সে ঘুরাতে হচ্ছে কারখানার
চাকা। যাদের বয়স ৮ বছর থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। এমন একটি
কারখানার সন্ধান মিললো গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি
ইউনিয়নের ছাতির বাজার এলাকায় গোদারচালা গ্রামে। কম
বেতনে কাজ করানো যায় বিধায় এমন বয়সী শিশুদের দিয়ে চলছে
পুরো একটি কারখানা, অথচ কারখানা কর্তৃপক্ষ শিশুশ্রমের
বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। গাজীপুর জেলার
শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ছাতির বাজার এলাকার
গোদারচালা গ্রামের এ.আর.আই কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের
একটি প্যাকে কারখানা শিশু শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে পরিচালনা
করা হচ্ছে। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, কারখানার শ্রমিকদের
মধ্যে অধিকাংশই শিশু। কারখানায় ২৬ জনের মতো শিশু
শ্রমিক দৈনিক দুই শিফটে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের
ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে একারখানা।
নারী নির্যাতন বন্ধ করুন, ভালো থাকুন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সম্প্রতি একটি দৈনিকে ‘নির্যাতক পুরুষেরা সুখে থাকেন
না’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে
দেশে পরিচালিত একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করা হয়, যার
ফলাফলে বলা হয়েছে, যেসব পুরুষ নারী নির্যাতন করেন,
জীবন নিয়ে তাঁদের সন্তুষ্টির মাত্রা যাঁরা নারী
নির্যাতন করেন না তাঁদের তুলনায় কম। নির্যাতন করার
বিষয়টি তাঁদের শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অর্থাৎ নারী নির্যাতনকারী পুরুষেরা সুখী হন না। ওই
প্রতিবেদনে আরেকটি আন্তর্জাতিক গবেষণার ফলাফলের কথা
উল্লেখ করা হয়, যাতে বলা হয়েছে, সমাজে নারী-পুরুষের
সমতা প্রতিষ্ঠিত হলে নারীর পাশাপাশি পুরুষেরও
জীবনযাত্রার মান বেড়ে যায়।
গবেষণাগুলোর ফলাফল অনুযায়ী, আমাদের দেশের বেশির ভাগ
পুরুষ অসুখী। কারণ, নির্যাতনকারী পুরুষের সংখ্যাটা যে
অনেক বেশি। গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশিত হয় নারীর ওপর
নির্যাতন বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি
জরিপের ফলাফল। এতে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে বিবাহিত
নারীদের শতকরা ৮০ জনই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের
শিকার হন। আর স্বামীরা তাঁদের ওপর এ নির্যাতন চালিয়ে
থাকেন। এ অনুযায়ী নির্যাতনের শিকার নারীর সংখ্যা আর
নির্যাতনকারী পুরুষের সংখ্যা সমান। কী ভয়াবহ ব্যাপার,
তাই নয় কি? পুরুষেরা নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে
তাঁদের বারোটা তো বাজিয়েই চলেছেন, তার ওপর নিজেরাও ভালো
থাকছেন না। কী লাভ হচ্ছে তাহলে?
আমাদের দেশের অনেক পুরুষই হয়তো দেশে ও বিদেশে পরিচালিত
ওই গবেষণার ফলাফলকে মানতে চাইবেন না। আমাদের সমাজে এমন
অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা মনে করেন, মারধর না করলে মেয়ে
লোক মাথায় চড়ে বসে। আর নিজেকে পুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা
করা বা সংসারে তাঁর কথাই যে শেষ কথা, সেটা বোঝানোর
জন্যও অনেকে মারধরকেই পথ হিসেবে মানেন।
নির্যাতনকারী সেই সব পুরুষকে বলতে চাই, নিজেদের
কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার এটা কোনো রাস্তা নয়। সংসার তো
নারী-পুরুষ দুজনের। সেখানে পুরুষকে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
করতেই হবে কেন? দুজনে মিলেমিশে দুজনের মতের ভিত্তিতে
কি সংসার চালানো যায় না? নিশ্চয়ই যায়। এ রকম উদাহরণও
তো সমাজে আছে। স্ত্রীকে মারধর করে আপনি যতটা না
কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারছেন, ভালোবাসলে, স্ত্রীর
দায়িত্ব নিলে দেখবেন আপনা-আপনি আপনার কর্তৃত্ব
প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এতে স্ত্রীও ভালো থাকতেন এবং নিজেও
সুখী হতেন।
অনেক পুরুষ ভাবেন, গায়ে হাত তুললেই সেটা কেবল নির্যাতন
হয়, এ ছাড়া নির্যাতন হয় না। কিন্তু কাউকে যখন
মানসিকভাবে যন্ত্রণা দেওয়া হয়, সেটাও নির্যাতন। আমাদের
ভদ্র সমাজে মানসিক নির্যাতনের হার বেশি। আছে অর্থনৈতিক
নির্যাতনও।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
বরগুনায় মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় বাদিনীর জেল
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বরগুনায় ধর্ষণ মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় মামলার
বাদিনীকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড
ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বরগুনার নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জুলফিকার
আলী খান ১১ই জুলাই ২০১৭ বিকালে এ আদেশ দেন। তবে রায়
ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বরগুনা জেলার বেতাগী পৌরসভার
বাসিন্দা আবদুল মালেকের স্ত্রী মোসাঃ তাসলিমা বেগম।
জানা যায়, মোসাঃ তাসলিমা বেগম ২০০৯ সালের ৩০শে এপ্রিল
বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তার
প্রতিবেশী মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে আবদুল মান্নান
হাওলাদারকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। ঐ মামলায়
বাদী উল্লেখ করেন, ২০০৭ সালের ৬ই জুন মান্নান রাত ৮টার
দিকে তার বসতঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। বেতাগী থানার
তদন্ত কর্মকর্তা প্রজিৎ কুমার রায় মামলাটি তদন্ত শেষে
২০০৭ সালের ২৭শে জুন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনাল ২০০৮ সালের ৪ঠা আগস্ট আসামি মান্নানকে
খালাস দেন। তাসলিমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার
অভিযোগ এনে আসামি মান্নান ক্ষুব্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে
একই ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে ২০০৯ সালের ২১শে জুন
তাসলিমাকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে
মামলা করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে ১১ জুলাই ২০১৭ দুপুরে
ট্রাইব্যুনালের বিচারক তাসলিমাকে দোষী সাব্যস্ত করে
দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার
আদেশ দেন। রায় ঘোষণার পর মান্নান বলেন, আমার ৫৫ বছরের
জীবনের সকল অর্জন তাসলিমা একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে শেষ
করে দিয়েছে। আজ থেকে আমি কলঙ্কমুক্ত।
কারাবন্দিদের
স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা নাজুক : আইজি প্রিজন্স
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আইজি প্রিজন্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার
উদ্দিন জানিয়েছেন, কারা বন্দিদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার
ব্যবস্থা কিছুটা নাজুক। দেশের ৬৮ কারাগারে ডাক্তারের
চাহিদা ১১৭ জন। সেখানে ডাক্তার আছেন মাত্র ৬ জন। যেসব
নার্স আছেন তারাও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অন্যত্র চলে
যাচ্ছেন। অ্যাম্বুলেন্স আছে ৯টি। তবে চিকিৎসক না
থাকলেও আমরা বন্দীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে চিন্তিত নই।
গত ১৪ মে রবিবার রাজধানীর কারা অধিদফতরে এক সংবাদ
সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজি প্রিজন্স বলেন,
একজন অসুস্থ আসামি হাসপাতালে ক’দিন থাকবে তা সম্পূর্ণ
চিকিত্সকের উপর নির্ভর করে। এতে আমাদের কোনো
সংশ্লিষ্টতা নেই।
তিনি আরো বলেন, যেসব বন্দীর নামে হাসপাতালে থাকার
অভিযোগ শোনা গেছে তারা অনেকেই ডায়াবেটিস, ব্লাড
প্রেসারসহ কয়েকটি রোগে আক্রান্ত। তারা অসুস্থ বোধ
করলেই তাদের হাসপাতালে নিতে হবে বলে আদালতের নির্দেশনা
রয়েছে। তাই তারা যখনই বলে অসুস্থ তখনই আমরা তাদের
হাসপাতালে নিতে বাধ্য হই।
তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি দীর্ঘদিন রাখেন
তাহলে এটা তাদের ব্যাপার। আমরা চাইলেই তাদের আনতে পারি
না। চিকিত্সাধীন অবস্থায় তাদের কারাগারে ফিরিয়ে আনতে
হলে আমাদের বন্ড সই করে আনতে হবে। রাজশাহীতে এ ধরনের
একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা বন্ড দিয়ে কারাগারে আনার পর এক
বন্দির মুত্যু হয়েছে। একজন অসুস্থ কারাবন্দী হাসপাতালে
যাওয়ার পর আমাদের দায়িত্ব শুধু তার নিরাপত্তা বিধান করা।
মাগুরায়
স্ত্রী-কন্যা হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মাগুরায় গর্ভবতী স্ত্রী ও পাঁচ বছরের কন্যাকে হত্যার
দায়ে আমিরুল ইসলাম (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড
দিয়েছেন আদালত। গত ১২ জুলাই ২০১৭ মাগুরা বিজ্ঞ জেলা ও
দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমিরুল ইসলাম মহম্মদপুর উপজেলার
চৌবাড়িয়া গ্রামের সোবহান মোল্লার পুত্র।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাড কামাল হোসেন
বাংলানিউজকে জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০১১
সালের ৫ই জুন সন্ধ্যায় আমিরুল তার গর্ভবতী স্ত্রী কবিতা
খাতুনকে মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনা তার
৫ বছরের কন্যা জামিলা খাতুন দেখে ফেললে পাষণ্ড পিতা
আমিরুল তাকেও গলা টিপে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ দুটি পাট
ক্ষেতে মাটি চাপা দিয়ে সে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর দিন
কবিতা খাতুনের বাবা শালিখার চিলেডাঙ্গ গ্রামের রকিব
মোল্লা জামাই আমিরুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে সদর
থানায় মেয়ে ও নাতি হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ঘটনার ৪ দিন পর ৯ই জুন আসামি আমিরুলকে গ্রেপ্তার
করে। পরদিন আমিরুল আদালতে স্ত্রী ও কন্যা হত্যার দায়
স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।
এরপর সাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক আজ বুধবার
বেলা ১২টায় আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
নাটোরে হত্যা
মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নাটোরের সিংড়ার একটি হত্যা মামলার রায়ে পাঁচজনকে
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার নাটোরের জেলা
ও দায়রা জজ রেজাউল করিম পাঁচ আসামির উপস্থিতিতে ওই
দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। বাকি দু’জন পলাতক রয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হল- আঙ্গুর মোল্লা, মো. মিঠু, সোহাগ
হোসেন, মো. নয়ন ও ফারুক হোসেন। মামলার এজাহার সূত্রে
জানা যায়, উপজেলার দামকুড়ি গ্রামের কৃষক লোকমান আলী
২০১৩ সালের ৭ এপ্রিল পাশের কালীগঞ্জ বাজারে গিয়ে
নিখোঁজ হন। এক সপ্তাহ পর ১৪ এপ্রিল বিকালে কালীগঞ্জ
বাজারের পাশের একটি বাড়ির সেফটিক ট্যাংকির ভেতর থেকে
তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের ভাই নজরুল ইসলাম
জানান, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সিংড়া থানায় মামলা
করেছিলেন। তদন্ত শেষে সিংড়া থানার উপ-পরিদর্শক
মন্তেজার রহমান সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
দাখিল করেন।
১২শ’ জনকে আসামি করে
পুলিশের মামলা
মানবাধিকার রিপোর্ট
রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে শাহবাগে পুলিশের
সঙ্গে ঢাকার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায়
শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১২শ’ জনকে
আসামি করা হয়েছে। শাহবাগ থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম
বাদী হয়ে ২০ জুলাই ২০১৭ এ মামলা করেন। মামলা নং ২৬।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ওসি আবুল
হাসান বলেন, পুলিশের কাজে বাধা, গাড়ি ভাংচুর, হত্যার
উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলাটি করা
হয়েছে। মামলার আসামি অজ্ঞাত পরিচয় ১২০০ জন। মামলার
তদন্ত করবেন এসআই দেবরাজ। তবে ২০ জুলাই ২০১৭ ঘটনাস্থল
থেকে আটক ১৩ শিক্ষার্থীকে কলেজ কর্তৃপক্ষের জিম্মায়
ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান ওসি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া ঢাকার সাত সরকারি
কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ সাত দফা
দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। ঢাকা
কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি
তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ
ও মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভে অংশ
নেয়। তাদের অবস্থানের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে যান
চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ বাধা দেয়, একপর্যায়ে শুরু
হয় সংঘর্ষ। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিপেটা
করে শিক্ষার্থীদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই ১৩ জনকে
আটক করা হয়। সংঘর্ষের সময় সিদ্দিকুর রহমান নামে সরকারি
তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীর চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে।
পরে তাকে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওসির
দাবি, শিক্ষার্থীরা পুলিশের দিকে ফুলের টব ছুড়ে মারার
সময় সিদ্দিকুর চোখে আঘাত পায়। আমরা হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার চিকিৎসার বিষয়ে কথা বলেছি,
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, ৪৮
ঘণ্টা পর তার চোখের অবস্থা তারা বলতে পারবেন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বৃহস্পতিবারই ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত সাতটি সরকারি কলেজের বিভিন্ন
বর্ষের পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করে নোটিশ দেয়া হয়।
মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষা ১০ সেপ্টেম্বর, অনার্স
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা ১৬ অক্টোবর এবং ডিগ্রি প্রথম ও
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা আগামী ৪ নভেম্বর শুরু হবে। এ ছাড়া
ডিগ্রি প্রথম বর্ষ, মাস্টার্স প্রথম ও শেষ পর্বের
প্রাইভেট (রেজি) পরীক্ষা ২৫ জুলাই থেকে ২৯ আগস্টের
মধ্যে নেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি ও হামলার
প্রতিবাদে বিক্ষোভ আজ : এদিকে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ
জানিয়ে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে
শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয়
প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। ২১
জুলাই ২০১৭ বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর
ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের
পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে তিতুমীর কলেজের ২০১১-১২
সেশনের শিক্ষার্থী রিয়াজ মাহমুদ পরবর্তী করণীয় ও
কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শাহিন হোসেন,
ইডেন মহিলা কলেজের হাজেরা খাতুন কেয়া, বাঙলা কলেজের
সৈকত আমীন, কবি নজরুল কলেজের আসাদুজ্জামান নূর, শহীদ
সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাকিব উদ্দিন প্রমুখ।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
কৃমির ওষুধ কখন খাব?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কৃমি আকারে খুবই ছোট। প্রায় দেখাই যায় না। কিন্তু জেনে
অবাক হবেন, এ রকম একটি কৃমি মানুষের অন্ত্র থেকে দিনে
শূন্য দশমিক ২ মিলিলিটার রক্ত শুষে নেয়। অনেক কৃমি
শরীরে থাকলে প্রতিদিনই বেশ কিছু পরিমাণ রক্ত হারিয়ে
যায়। ফলে শিশুরা অপুষ্টি ও রক্তশূন্যতায় ভোগে। বড়রাও
কম ভোগেন না।
এ ছাড়া কৃমির কারণে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি, শুকনো
কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কখনো অন্ত্রের বা পিত্তথলির
নালিতে কৃমি আটকে গিয়ে বড় ধরনের জটিলতা হয়। কৃমি
সংক্রমণ তাই বড় ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা।
কৃমি দূর করতে হলে প্রথমেই জানা দরকার এটি কেন হয়?
নোংরা পরিবেশ, অনিরাপদ পানি পান, অস্বাস্থ্যকর
খাদ্যাভ্যাস, খালি পায়ে হাঁটা কৃমি সংক্রমণের জন্য দায়ী।
কৃমি হলেও ওষুধের মাধ্যমে দূর করার উপায় আছে। কিন্তু
অনেকে নানা ভুল ধারণার জন্য ভয়ে কৃমির ওষুধ খান না।
শিশুদেরও খাওয়াতে চান না। কিন্তু ওষুধ নিয়ম মেনে খেলে
আর সহজ কিছু উপায় মেনে চললে সহজেই কৃমি দূর করা যায়।
জেনে নেওয়া যাক সহজ কিছু উপায়:
১. প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে
অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে
হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়।
শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে। দুই বছরের নিচে
কোনো শিশুকে খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. চিনি খেলে বা মিষ্টি খেলে কৃমি হবে বলে যে ধারণা
প্রচলিত, তা ঠিক নয়। মিষ্টি বা চিনি খাওয়ার সঙ্গে
কৃমির কোনো সম্পর্ক নেই। বরং নোংরা হাতে বা
অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কৃমি হবে।
৩. কৃমি হলে পায়ুপথ চুলকায় বলে শিশুরা সেখানে হাত দেয়।
পরে আবার সেই হাত মুখে দেয়। এভাবেই সংক্রমণ ছড়াতে থাকে।
তবে পায়ুপথ চুলকানো মানেই কৃমি সংক্রমণ নাও হতে পারে।
কৃমি সংক্রমণের আরও উপসর্গ আছে। যেমন: ওজন না বাড়া,
পেট ফাঁপা, পেট কামড়ানো, আমাশয়, অপুষ্টি, রক্তশূন্যতা
ইত্যাদি।
৪. গরমকালে কৃমিনাশক খাওয়া যাবে না এমন ধারণারও কোনো
ভিত্তি নেই। গরম, শীত, বর্ষা যেকোনো সময়ই কৃমিনাশক
খাওয়া যাবে। তবে খাওয়ার পর বা ভরা পেটে খাওয়া ভালো।
৫. কৃমিনাশক নিরাপদ ওষুধ। এর তেমন কোনো
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে কারও কারও পেট ফাঁপা বা
বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় কৃমিনাশক খেয়ে শিশুদের
অসুস্থ হওয়ার যে খবর পাওয়া যায়, তা বেশির ভাগ
ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা ও কুসংস্কারজনিত।
৬. পানি অবশ্যই ফুটিয়ে বা বিশুদ্ধ করে পান করবেন।
শাকসবজি ও মাংস খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে ভালো করে হাত ধুতে হবে।
শিশুদের খাওয়ার আগে ও শৌচাগার ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে
কীভাবে ভালো করে হাত কচলে ধুতে হয়, তা শেখানো জরুরি।
৭. বাইরের খোলা অপরিচ্ছন্ন খাবার না খাওয়াই ভালো।
মাঠঘাটে শিশুদের খালি পায়ে খেলতে দেবেন না।
৮. কেবল গ্রামে বা রাস্তায় থাকা শিশুদের কৃমি হয় এই
ধারণাও ভুল। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে-কারও কৃমি
সংক্রমণ হতে পারে। তাই অপুষ্টি এড়াতে নিয়মিত কৃমিনাশক
খাওয়াই ভালো।
কফি পানে আয়ু বাড়ে!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আপনি যদি দিনে তিন কাপ কফি পান করেন, তাহলে আপনার আয়ু
বাড়বে—নতুন এক গবেষণায় এ দাবি করেছেন গবেষকরা। ইউরোপের
১০টি দেশের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের ওপর চালানো গবেষণার
ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটি অ্যানালস অব ইন্টারনাল
মেডিসিন নামের জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক কাপ অতিরিক্ত কফি মানুষের আয়ু
বাড়াতে পারে। এই কফি যদি ডিক্যাফিনেটেড বা
ক্যাফিনবিহীনও হয়।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা বলেন, বেশি কফি
পানের সঙ্গে মৃত্যুঝুঁকি কমার, বিশেষ করে হৃদরোগ এবং
পাকস্থলীর রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্যার ডেভিড
স্পিগেলহালটার বলছেন, যদি এ গবেষণা সঠিক হয়, তাহলে
প্রতিদিন এক কাপ অতিরিক্ত কফির কারণে একজন পুরুষের আয়ু
তিন মাস এবং একজন নারীর আয়ু এক মাস বেড়ে যেতে পারে।
তবে এ গবেষণার ব্যাপারে অনেকের প্রশ্ন আছে। তারা বলছে,
কফি মানুষের আয়ু বাড়াচ্ছে, নাকি কফি পানকারীদের
জীবনপ্রণালির কারণে তারা বেশিদিন বাঁচছে সেটা পরিষ্কার
নয়।
এর আগের গবেষণাগুলোতে অবশ্য মানবদেহের ওপর কফির প্রভাব
সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী ফল পাওয়া গিয়েছিল। কফিতে যে
ক্যাফিন থাকে, তা সাময়িক সময়ের জন্য মানুষকে অনেক বেশি
সজাগ রাখতে পারে। কিন্তু বিভিন্ন মানুষের ওপর
ক্যাফিনের প্রভাব বিভিন্ন রকমের।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস সন্তানসম্ভবা নারীদের
দিনে ২০০ গ্রামের বেশি ক্যাফিন গ্রহণ করতে নিষেধ করে।
কফি বেশি পান করলে নবজাতক শিশুর আকার খুব ছোট হতে পারে
বলে আশঙ্কা করা হয়।
চিকুনগুনিয়ায়
ব্যথার ওষুধ সেবন করা যাবে কি
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
চিকুনগুনিয়া দেশব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করেছে। এটা
একটা মশাবাহিত ভাইরাস রোগ। কয়েকদিন জ্বর থাকে। পেশী ও
জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। থাকে সর্দি-কাশি অন্যান্য
উপসর্গ। তবে চিকুনগুনিয়ার সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হচ্ছে
মাংস পেশী ও জয়েন্টে তীব্র ব্যথা। অনেকের ক্ষেত্রে এই
ব্যথা এতটাই ভয়াবহ থাকে যে হাঁটা-চলা করা পর্যন্ত
অসম্ভব হয়ে পড়ে। চিকুনগুনিয়ার আর একটি খারাপ দিক হচ্ছে
যে মশার দংশনে চিকুনগুনিয়া হয় সেই এডিস মশার দংশনে
ডেঙ্গু জ্বর হয়। ফলে চিকিৎসকদের প্রথম দিকে খুব সমস্যা
হয়ে যায় এটা চিকুনগুনিয়া না ডেঙ্গু তা নির্ণয় করতে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং চিকুনগুনিয়া রোগের গাইডলাইন
প্রণয়ন কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. অনুপকুমার সাহার মতে,
যদি কোন রোগীর প্রতীয়মান হয় তার ডেঙ্গু হয়নি তাহলে
চিকুনগুনিয়াজনিত মাংসপেশী ও জয়েন্টের ব্যথার জন্য পেইন
কিলার সেবন করতে পারে। এক্ষেত্রে মাসল রিল্যাক্সান্ট
যেমন ট্যাবলেট মায়োল্যাক্স, বেলকোফেন দিনে ২টা করে
ব্যথা না কমা পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া এনএসএআইডি,
যেমন-রিউমাফেন, ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম (ক্লোফেনাক) দেওয়া
যেতে পারে। তবে ব্যথা নাশক ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চেষ্টা করা উচিত ব্যথানাশক জাতীয় ওষুধ কম সেবন করা।
জানা দরকার, এনএসএআইডি জাতীয় ওষুধ সেবনের পূর্বে
অবশ্যই গ্যাসের ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে মাসল
রিল্যাক্সান্ট, মায়োল্যাক্স সেবনের পূর্বে কোন ধরনের
গ্যাসের ওষুধ যেমন র্যানিটিডিন, অমিপ্রাজল ইত্যাদি
সেবন করার প্রয়োজন নেই।
এছাড়া চিকুনগুনিয়ার রোগীদের পর্যাপ্ত শরবত জাতীয় পানীয়
পান করা উচিত। বাজারে অনেকে এখন ভিটামিন সি জাতীয় শরবত
যেমন ক্যাভিক সি বাজারজাত করছে। একটা ট্যাবলেট এক
গ্লাস পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় তাজা
ফলের রস, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার এবং প্রোটিন জাতীয়
খাবার আহার করা।
ফ্রিজে কাঁচা
মাছ রেখেও স্বাদ অটুট রাখার পদ্ধতি জেনে নিন!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
যারা মাসের বাজার একবারে করেন তাদের অনেক সময়ই ডীপ
ফ্রিজে কাঁচা মাছ রাখতে হয়। যার ফলাফল কিছুদিন ফ্রিজে
মাছ রেখে দিলেই মাছের স্বাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
খেতে শুকনো লাগে এবং গন্ধ বেশি লাগে। বেশীদিন রেখে দিলে
মাছ খাওয়াই যায় না, ফেলে দিতে হয়।
কিন্তু এই সমস্যার রয়েছে খুবই সহজ ছোট্ট একটি সমাধান।আপনি
চাইলেই মাছের তাজা ভাব ফিরিয়ে আনতে পারেন খুব সহজে।
জানতে চান কীভাবে?
মাছের তাজা স্বাদ পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে দুধ।
প্রথমে ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে ঠাণ্ডা ছাড়িয়ে নিন।
এরপর মাছের পিসগুলো একটি বড় বাটিতে দুধ মিশ্রিত পানিতে
ভিজিয়ে রাখুন প্রায় ৩০ মিনিট। তারপর স্বাভাবিক ভাবে
ধুয়ে রান্না করুন।
দেখবেন মাছের তাজা স্বাদ ফিরে এসেছে এবং আঁশটে গন্ধও
নেই একেবারেই। দারুণ, তাই না?
ব্যায়ামের জন্য
কতটুকু সময়?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ব্যস্ত জীবনে সময়ের বড অভাব। সকাল থেকে রাত অবধি তো
নানা কাজে ছুটছেন। এর মধ্যে ব্যায়ামের জন্য একটু সময়
বের করার ফুরসত কোথায়? তাই বলে নিজের জন্য খানিকটা সময়
তো ব্যয় করতেই হবে। নইলে হিসাব মেলানোর সময় লাভের চেয়ে
ক্ষতিটাই দেখা যাবে বেশি।
সপ্তাহে সাত দিন, মানে ১০ হাজার ৮০ মিনিট। এর মাঝে
মাত্র ১৫০ মিনিট সময় বের করা সত্যিকার অর্থে খুব
কষ্টকর হওয়ার কথা নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সপ্তাহে ১৫০
মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করাই যথেষ্ট। মাঝারি ব্যায়াম মানে
জোরে হাঁটা, সাইকেল চালনা, সাঁতার কাটা, অ্যারোবিকস
ইত্যাদি।
এই হিসাব মেলাতে প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা সময় বের করতে
যদি না-ও পারেন, পাঁচ দিনে ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন।
তা-ও না পারলে তিন দিনে (মানে এক দিন পরপর) ৫০ মিনিট
করে সময় বের করুন। একেবারেই সম্ভব না হলে সাপ্তাহিক
ছুটির দুই দিন ব্যায়াম করুন। যেভাবেই হোক, সপ্তাহে ১৫০
মিনিটের এ হিসাব মেলানোর ব্যবস্থা করুন।
ভারী ব্যায়াম করতে পারলে সপ্তাহে ৭৫ মিনিট রাখলেও চলবে।
জোরে দৌড ানো বা ব্যায়ামাগারে নির্দেশিত ব্যায়াম হলো
ভারী ব্যায়াম।
অফিসে বা ঘরে হয়তো অনেক কাজই করা হয়, তবু ব্যায়ামের
জন্য আলাদা করে সময় বের করা জরুরি। অফিসের চেয়ারে বা
বাড়ির কাজকর্মে যতটাই কর্মঠ হোন, সুস্থ থাকতে
শরীরচর্চার বিকল্প নেই।
রসুনের আশ্চর্য্য
গুণাবলি
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কাঁচা রসুন খাওয়া অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় কাঁচা রসুন স্বাস্থ্যের পক্ষে
অত্যন্ত উপকারি। রসুন শুধু মশলাদার রান্নার উপকরণ নয়,
রসুন শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আয়ুর্বেদিক
চিকিৎসকরাও খালি পেটে রসুন খেতে বলেন। দেখে নিন রসুন
খেলে কী কী উপকার হয়।
১) কোলেস্টেরল কমায়। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
২) উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা দূর করে।
৩) বাতের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
৪) শ্বাস-প্রশ্বাসের
সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
৫) খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
৬) যক্ষ্মা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
৭) হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্য-এর সমস্যা দূর করে।
৮) বিভিন্ন রকম ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৯) পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
১০) শরীরে থাকা কৃমি ধ্বংস করে।
১১) চোখে ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
১২) ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
১৩) দাঁতের ব্যথা সারাতে সহায়তা করে।
১৪) ব্রণ সমস্যা দূরে রাখে।
১৫) আঁচিলের সমস্যা সমাধান করে।
১৬) দাদ, খোস-পাঁচড়া ধরণের চর্মরোগের হাত থেকে রক্ষা
করে।
১৭) ঘুম না হওয়া, অনিদ্রা রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
১৮) ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
সতর্কতা দিনে ২ কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া যাবে না।
রসুনে অ্যালার্জি থাকলে না খাওয়াই উচিত। অতিরিক্ত রসুন
খেলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ এবং বমিভাব হতে পারে।
কিডনির পাথর গলে যাবে যে পাতার রসে
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
তুলসী সবুজ রঙের গুল্মজাতীয় একটি উপকারী উদ্ভিদ। এ
গাছের পাতায় বহু রোগ সারানোর উপকারী গুণ রয়েছে।
তুলসীপাতার রস বা চা প্রতিদিন একগ্লাস করে পান করলে,
আমাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার শঙ্কা কমে যায়। আর যদি
কিডনিতে পাথর জমে তাহলে তুলসী পাতার রস টানা ৬ মাস পান
করলে সেই তা গলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।
এছাড়া সর্দি, কাশি, কৃমি, প্রস্রাবে জ্বালা কমায়,
হজমকারক ও কফ গলাতে দারুণ কাজ করে তুলসীপাতা। এটি ক্ষত
সারাতে এন্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করে।
তুলসিপাতা দিয়ে চা ও মিশ্রণ তৈরির কয়েকটি প্রস্তুত
প্রণালী পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো:
তুলসী পানি :
প্রস্তুত প্রণালী : একটি পাত্রে দুই কাপ পানি নিন। এর
সঙ্গে কয়েকটি তুলসিপাতা সিদ্ধ করুন। ফুটে উঠলে নামিয়ে
পান করতে পারেন। এই মিশ্রণটি গলা ব্যথা ও খুসখুসে কাশি
কমিয়ে আপনাকে আরাম দেবে।
তুলসী-চা:
উপকরণ : ১০-১৫টি তুলসীপাতা, গুড , পানি ও লেবুর রস।
প্রস্তুত প্রণালী : প্রথমে গুড় ও তুলসীপাতা বেটে নিন।
এর মধ্যে দেড় কাপ পানি ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে
চুলায় বসান। মিশ্রণটি ফুটে উঠলে নামিয়ে ফেলুন। এই চা
পান করলে আপনার শরীর উষ্ণ থাকবে।
ভেষজ তুলসী-চা:
উপকরণ : এক টুকরো আদা, গোলমরিচ, লবঙ্গ, তুলসীপাতা,
দারুচিনি, এলাচ পরিমাণ মতো।
প্রস্তুত প্রণালী : পরিমাণমতো পানিতে উপরের উপকরণগুলো
মিশিয়ে জ্বাল দিন। ১০ মিনিট পর নামিয়ে ছেকে পান করতে
পারেন।
এই ভেষজ তুলসী-চা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং
ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয া রোগ থেকে বাঁচানোর ক্ষমতা রাখে।
হার্বাল জুস:
উপকরণ : আজওয়াইন, তুলসীপাতা, জিরা, আমচুর গুঁড া, লবণ
এবং পুদিনা পাতা পরিমাণ মতো।
প্রস্তুত প্রণালী : চার কাপ পানিতে উপরের উপকরণগুলো
মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট জ্বাল দিন। এরপর পান করুন। এই জুস
প্রতিদিন পান করলে হজমশক্তি বাড়বে এবং পানিশূন্যতা
থেকেও আপনাকে রক্ষা করবে।
Top
আইন কনিকা
স্ত্রী ও সন্তানের
ভরণপোষণ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৮ ধারায় (১)এ বলা হয়েছে, স্ত্রী
ও সন্তানাদির ভরণপোষণের আদেশ কার্যকরীকরণ সম্পর্কে।
কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রী বা বৈধ কিংবা অবৈধ সন্তানকে
পর্যাপ্ত সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও নিজের ভরণপোষণে অক্ষম
হয় এবং তাকে ভরণপোষণ করতে অবহেলা বা অস্বীকার করে, তা
হলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা
কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটমহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট
এরূপ অবহেলা বা অস্বীকৃতি প্রমাণিত হওয়ার পর যেরূপ
উপযুক্ত মনে করেন, যে রূপ মাসিক সর্বমোট অনধিক চারশত
টাকা ওই স্ত্রী বা ওই সন্তানকে মাসিক ভাতা দেয়ার এবং
তিনি বিভিন্ন সময়ে যে ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট করে দেন সেই
ব্যক্তির কাছে তা প্রদানের জন্য ওই ব্যক্তিকে আদেশ দিতে
পারবেন।
(২) এই আদেশের তারিখ থেকে অথবা সেই রূপ আদেশ দেয়া হলে
খোরপোষের জন্য কৃত আদেশপত্রের তারিখ থেকে এরূপ ভাতা
প্রদানযোগ্য হবে (৩) সে কারণে কোন ব্যক্তি যদি কোন
কারণ ছাড়াই আদেশ অনুসারে কাজ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে
ম্যাজিস্ট্রেট আদেশের প্রত্যেকটি লঙ্ঘনের জন্য আগের
বর্ণিত জরিমানা আদায়ের পদ্ধতিতে প্রাপ্য অর্থ আদায়ের
জন্য পরোয়ানা জারি করতে পারবেন এবং পরোয়ানা কার্যকরী
হওয়ার পর প্রত্যেক মাসের ভাতার সম্পূর্ণ বা কোন অংশ
অপরিশোধিত থাকলে তার জন্য সে ব্যক্তিকে একমাস পর্যন্ত
অথবা তৎপূর্বে পরিশোধ করা হলে পরিশোধ না করা পর্যন্ত
কারাদণ্ড দিতে পারবেন। তবে ওই ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর
সাথে বসবাস করার শর্তে তাকে ভরণপোষনের প্রস্তাব দেয় এবং
স্ত্রী যদি তার সাথে বসবাস করতে অঙ্গীকার করে তাহলে
মাজিস্ট্রেট তার অস্বীকৃতির বিবৃত কোন কারণ বিবেচনা
করতে পারবে এবং তিনি যদি সন্তুষ্ট হন অস্বীকৃতির সঙ্গে
কারণ রয়েছে তা হলে ওই প্রস্তাব সত্ত্বেও এ ধারা অনুসারে
আাদেশ দিতে পারবে। তবে এ ধারা অনুসারে কোন অর্থ
অপরিশোধিত থাকলে এবং যে তারিখে উহা প্রাপ্য হয়েছে সেই
তারিখ থেকে এক বছর সময়ের মধ্যে তা আদায়ের জন্য আদালতে
আবেদন না করা হলে তা আদায়ের জন্য কোন পরোয়ানা জারি করা
যাবে না। এর (৪) এ বলা হয়েছে, স্ত্রী যদি কোন
ব্যাভিচারে লিপ্ত থাকে অথবা যথেষ্ট কারণ ব্যতীত
স্বামীর সাথে বসবাসে অস্বীকার করে অথবা উভয়ে যদি
পারস্পরিক সম্মতিক্রমে স্বতন্ত্রভাবে বসবাস করছে বলে
প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট ওই আদেশ বাতিল করবেন (৬)
এই অধ্যায়ে বলা হয়েছে, সব সাক্ষ্য স্বামী বা পিতা
যেখানে যেরূপে প্রযোজ্য উপস্থিতিতে অথবা তাকে
ব্যক্তিগত উপস্থিত হওয়া থেকে অব্যাহতি দেয়া হলে তার
উকিলের উপস্থিতিতে গ্রহণ করতে হবে এবং এমন মামলার জন্য
নির্ধারিত পদ্ধতিতে তা লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ম্যাজিস্ট্রেট যদি এতে সন্তুষ্ট হন ওই স্বামী বা পিতা
ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতে হাজির হতে অবহেলা করছে তাহলে
ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি একতরফা শ্রবণ করতে ও রায় দিতে
পারবেন। এরূপ প্রদত্ত কোন আদেশ তার তারিখ থেকে তিন
মাসের মধ্যে উপযুক্ত কারণ প্রদর্শন করে আবেদন করলে
বাতিল করা যাবে। (৭) এ ধারা অনুসারে পেশকৃত আবেদনপত্র
সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণের সময় মামলার ব্যয় সম্পর্কে
ন্যায়সঙ্গত আদেশ দেয়ার ক্ষমতা আদালতের থাকবে। (৮) যে
জেলার ওই ব্যক্তি তার স্ত্রী বা তার অবৈধ সন্তানের
মাতার সাথে বসবাস করে বা করছে বা সবশেষে বসবাস করছে সে
জেলায় তার বিরুদ্ধে ৩ ধারা অনুসারে কার্যক্রম রুজু করা
যাবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৯ ধারায় মাসোহারা পরিবর্তন
সম্পর্কে (১) এ বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ৪৮৮ ধারা অনুসারে
মাসিক ভাতা লাভ করছে অথবা একই ধারা অনুসারে যে
ব্যক্তিকে তার স্ত্রী বা সন্তানকে মাসিক ভাতা দিতে
আদেশ দেয়া হয়েছে, সেই ব্যক্তির অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে
বলে প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট যেরূপ পরিবর্তন করতে
পারেন। তবে তিনি যদি ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করেন, তাহলে
তা সর্বমোট মাসিক হার চারশত টাকা অপেক্ষা অধিক হবে না।
(২) যখন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, কোন
যথাযথ এখতিয়ার বলে দেওয়ানি আদালতের রায়ের ফলে ৪৮৮ ধারা
অনুসারে প্রদত্ত কোন আদেশ বাতিল বা পরিবর্তন করা উচিত,
তখন তিনি আদেশটি অনুরূপভাবে বাতিল বা পরিবর্তন করবেন।
আইনের ৪৯০ ধারায় ভরণপোষণ দানের আদেশ কার্যকরীকরণ
সম্পর্কে বলা হয়েছে, খোরপোষ দেয়ার আদেশের একটি নকল যে
ব্যক্তির স্বপক্ষে আদেশ দেয়া হয়েছে তাকে অথবা তার
অভিভাবক যদি থাকে, অথবা যার কাছে ভাতা প্রদান করতে হবে
তাকে বিনামূল্যে দিতে হবে এবং যার বিরুদ্ধে আদেশ দেয়া
হয়েছে, সেই ব্যক্তি যেখানেই থাকুক না কেন, সেখানে যে
কোন ম্যাজিস্ট্রেট পক্ষসমূহের পরিচয় এবং দেয় ভাতা
পরিশোধ করা হয়নি বলে সন্তুষ্ট হলে আদেশটি কার্যকরী করতে
পারবেন।
Top
|
|