           
 
|
Cover July 2016
English Part
July 2016
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও
কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বন্যার্দুগতদের পাশে
দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের বভিন্নি জলোয় বন্যার্দুগতদরে পাশে দাঁড়াতে জনগণরে
প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৩১ জুলাই ২০১৬ সকালে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ
ইনস্টিটিউশনে জাতীয় পরিবেশ ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা
নিশ্চিত করেছি। পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ এই দেশের
জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য
বাসযোগ্য করে তুলতে হবে।
সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা বনায়নে
গুরুত্ব দিয়েছি। সবুজ বেষ্টনি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। ৯
শতাংশ বনভূমি থেকে এখন ১৭ শতাংশে উন্নীত করেছি। এটা ২৫
শতাংশ র্পযন্ত নিতে হবে।
শেখ হাসিনা জানান, সরকার নিজস্ব তহবিল গঠন করে জলবায়ুর
ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র
সংরক্ষণে গাজীপুরে সাফারি র্পাক, ইকো র্পাকসহ নানা উদ্যোগ
নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, সেটা কমাতে কাজ করছে
সরকার। তেল বা ডিজেলবাহী জলযানগুলোর কারণে ব্যাপক দূষণ হয়ে
থাকে। এগুলোর বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধান
প্রতিবেদন
জুলাই’২০১৬
মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ২৩৮ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপে
জুলাই ২০১৬ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়
২৩৮টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৭.৬৭ জন।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়
গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদপে গ্রহণ করতে সরকার ও
আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে হত্যাকান্ডের শিকার
হয় ২৩৮ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ১১ জন,
পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ২৮ জন, সামাজিক সহিংসতায়
হত্যা ৪৫ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৯ জন, আইন শৃংখলা
বাহিনীর হাতে হত্যা ১৯ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৫ জন,
চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৫ জন, গুপ্ত হত্যা ৭ জন,
রহস্যজনক মৃত্যু ৭৯ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ২ জন, অপহরণ
হত্যা ৫ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ১৬৮ জন, আত্মহত্যা ২৩জন।
জুলাই ২০১৬ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য
ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণ ৪০ জন, যৌন নির্যাতন ১১ জন এবং
যৌতুক নির্যাতন ১৩ জন।
লন্ডন শাখার অভিষেক অনুষ্ঠানে
ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার
যেখানেই মানবাধিকার
লংঘিত হয় সেখানেই মানবাধিকার কমিশন

মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
যেখানেই মানবাধিকার লংঘিত হয় সেখানেই হিউম্যান রাইট
কমিশন, এই শ্লোগান নিয়ে বিশ্বব্যাপী কাজ করছে বাংলাদেশ
হিউম্যান রাইট কমিশন (বি-এইচ-আর-সি)। লন্ডন শাখার
অভিষেক অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ
হিউম্যান রাইট কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার
একথা বলেন। তিনি বলেন শুধু নামে নয় কাজের মাধ্যমে
মানবাধিকার কর্মীদের তা প্রমাণ করতে হবে। গেল ১৮ জুলাই
মধ্যরাতে লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের ইন্ডিয়ান ফিউশন
রেষ্টুরেন্টে লন্ডন শাখার সভাপতি জাহাঙ্গির খানের
সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায়
অনুষ্টিত অভিষেক অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন ইউরোপীয় কো-অর্ডিনেটর তারাউল ইসলাম, ইউনাইটেড
কিংডম শাখার প্রেসিডেন্ট আব্দুল আহাদ চৌধুরী,
এম্বেসেটর সহিদুর রহমান, ঢাকা নর্থ-সাউথের গভর্ণর
সিকন্দর আলী জাহিদ, গভর্ণর শাহানুর খান, বিয়ানী বাজার
ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট ইউকের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব,
বাংলাদেশ সেন্টারের সেক্রেটারী দিলওয়ার হোসেন।
অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন ইংল্যান্ড শাখার সেক্রেটারী
আব্দুল হাফিজ বক্কর, সৈয়দ এহসান, আব্দুল মজিদ, শাহিন
আহমদ, কাউন্সিলার মামনুর রশিদ, আব্দুল হাদি প্রমুখ।
সভায় নতুন ২৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষনা করেন
প্রধান অতিথি। প্রেসিডেন্ট জাহাঙ্গির খান, সিনিয়র ভাই
প্রেসিডেন্ট দিলওয়ার হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মামুন
রশিদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট নীরমণি সিংহা, ভাইস
প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এহসান, ভাইস প্রেসিডেন্ট খাইরুল
ইসলাম খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট আলী হোসাইন ভূইয়া, ভাইস
প্রেসিডেন্ট আলিমুজ্জামান, ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল
বাসির, জেনারেল সেক্রেটারী মোঃ নিজাম উদ্দিন,
এসিসটেন্ট জেনারেল সেক্রেটারী মাসুদ আহমদ, এসিসটেন্ট
জেনারেল সেক্রেটারী সৈয়দ মোঃ ইশতিয়াক, অর্গেনাইজিং
সেক্রেটারী কামরুল হাসান মামুন, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন
সেক্রেটারী আলি আহমেদ বেবুল, ফিনান্স সেক্রেটারী দিলাল
আহমদ, ওমেন সেক্রেটারী নিলুফা ইয়াসমিন, অফিস সেক্রেটারী
জোবের আহমদ, পোর্টস এন্ড ইয়োথ সেক্রেটারী সাইফুজ্জামান
খান সোয়েব, ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারী মোঃ আলিম উল্লাহ,
ক্যালচারাল সেক্রেটারী সাদেক আহমদ, ইন্টারন্যাশনাল
সেক্রেটারী জাকির হোসাইন, কার্য নির্ব্হী সদস্যরা হলেন
আলহাজ্ব এম এ মতলিব, মোঃ হারুন রশিদ, ময়নুল আলম
শোয়েব,মোজাম্মেল আলী, শাহিন আহমেদ ও আব্দুল হাদি।
হাইকোর্টের
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
স্কুল-কলেজের সভাপতি হতে পারবেন না এমপিরা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সংসদ সদস্যরা
বেসরকারি শিা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি
থাকতে পারবেন না বলে দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি
প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
৩১ জুলাই ২০১৬ এ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন বিচারপতি
জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট
বেঞ্চ।
এর আগে, গত ০১ জুন বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি
প্রবিধানমালা ২০০৯ এর ৫ (২) এবং ৫০ ধারাকে বাতিল করে
ওই রায় দেন বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি একেএম
জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত পরিচালনা
পর্ষদকে দায়িত্ব দিতে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি করে
নির্বাচন করার নির্দেশ এসেছে উচ্চ আদালত থেকে।
স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদে স্থানীয় এমপির সভাপতি পদে
মনোনীত হওয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোটের" দেওয়া রায়ের
পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এসেছে এই নির্দেশনা।
এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে দেওয়া রুলের শুনানি করে
বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের
হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৮ জুন এই রায় দেয়, যার পূর্ণাঙ্গ
অনুলিপি ৩১ জুলাই প্রকাশিত হয়।
আবেদনকারী পরে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানিয়েছেন, তিনি
ওই রায়ের অনুলিপি হাতে পেয়েছেন।
রায়ের আদেশ অংশে হাই কোর্ট ১২ দফা নির্দেশনা ও পর্যবেণ
দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর মধ্যে রয়েছে-
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্যদে সংসদ
সদস্যদের সভাপতি পদ বাতিল।
দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কমিটি বাতিল।
আইন থেকে বিশেষ কমিটি গঠনের ৫০ ধারা বাতিল।
সংশ্লিষ্ট সব আইন ৬০ দিনের মধ্যে সংশোধন করতে বলা হয়েছে
শিক্ষা সচিব, আইন সচিব ও ঢাকা বোর্ডেকে।
সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি
করে নির্বাচন করতে হবে।
নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ঠিক করার
বিধান তৈরি করতে হবে।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ পরিচালনার জন্য
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিশেষ কমিটি গঠনের বৈধতা
চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোটের" আইনজীবী ইউনুছ চলতি বছর
রিট আবেদনটি করেন।
তার যুক্তি, ওই প্রবিধানমালার ৩৯ বিধান অনুসারে এডহক
কমিটির মেয়াদ ছয় মাস। অথচ ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও
কলেজ এ পর্যন্ত চার বার এডহক ও দুই বার বিশেষ কমিটি
গঠন করা হয়। এটি ৩৯ বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ জানুয়ারি হাই
কোর্ট রুল দেয়। রুলে ওই কমিটি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে
না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর ২০০৯ সালের মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং
কমিটি প্রবিধানমালা এর ৫ ও ৫০ বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ
করে সম্পূরক আবেদন করেন ইউনুছ আলী।
শান্তিচুক্তির বাস্তবায়নই পার্বত্য
চট্টগ্রামের উন্নয়নের চাবিকাঠি
মানবাধিকার রিপোর্ট’
পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও ভূমি
সমস্যার নিষ্পত্তিকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের টেকসই
উন্নয়নের চাবিকাঠি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী
হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আবাদি
জমির পরিমাণ কম বিধায় সেখানে জনসংখ্যার বাড়তি চাপ
দেওয়ার সুযোগ নেই। বরং সেখানকার বনাঞ্চলের আধুনিক
ব্যবস্থাপনা, উদ্যানতত্ত্বের প্রয়োগ, প্রাণিসম্পদ
সংরক্ষণ ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প গড়ে তোলাই হবে
মূল লক্ষ্য।
গত ১৬ জুলাই সকালে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক
মন্ত্রণালয়ের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর
সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট
মিলনায়তনে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের লন্ডন মহিলা শাখা অনুমোদিত

মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লন্ডন মহিলা শাখা গঠন
উপলক্ষে ১৯ জুলাই ২০১৬ দুপুরে, লন্ডনের ব্রান্টে এক
সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মানবাধিকার কমিশনের লন্ডন
মহিলা শাখার সভাপতি জানিফার সারোয়ারের সভাপতিত্বে সভায়
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের
মহাসচিব/গভর্নর জেনারেল ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার গভর্নর অনার
সেকান্দর আলী জাহিদ, কমিশনের ইইউ এ্যাম্বাসেডর
মোহাম্মদ সহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আবদুল
আহাদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তারাউল ইসলাম, লন্ডন
ওয়েষ্টমিনষ্টার শাখার সভাপতি মাসুদুল ইসলাম রুহুল,
লন্ডন মহিলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজিয়া সুলতানা
স্নিগ্ধা সহ মানবাধিকার কমিশনের লন্ডন মহিলা শাখার
কর্মকর্তাবৃন্দ ও কমিশনের যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শাখার
কর্মকর্তাগণ সভায় যোগদেন।
বার বার কেন এই নৃশংসতা
মানবাধিকার রিপোর্ট’
খুলনায় শিশু রাকিব হত্যার এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে আরও
একটি শিশুকে। প্রায়শ বলা হয়ে থাকে যে, অপরাধীদের দ্রুত
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া গেলে সমাজে প্রতিনিয়ত যেসব
গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তার পুনরাবৃত্তি হত না। এই
বক্তব্যের সাথে সকলেই কমবেশি একমতও পোষণ করে থাকেন।
কিন্তু গত ২৪ জুলাই ২০১৬ শিশুশ্রমিক সাগর বর্মণের সাথে
সজ্ঞানে পরিণতবয়স্ক ব্যক্তিরা যা করেছে তাতে সাধারণের
সেই বিশ্বাসও চুরমার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঘটনার
বীভৎসতাদৃষ্টে বেদনায় ও বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন
সর্বস্তরের মানুষ। প্রসঙ্গত স্মরণ করা যেতে পারে যে
খুলনায় শিশু রাকিবকেও অনুরূপ নৃশংস পন্থায় খুন করা
হয়েছিল। কিন্তু সেই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আটক করা
হয়েছে। অতি দ্রুত সম্পন্ন করা হয়েছে তাদের বিচারকার্য।
দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ শাস্তি। তার পরও কেন একই ঘটনার
পুনরাবৃত্তি ঘটল সেই প্রশ্ন এড়িয়ো যাবার উপায় নাই।
লক্ষণীয় যে উভয়ক্ষেত্রে অতি তুচ্ছ কারণে বর্বরোচিত এই
নৃশংসতা সংঘটিত করা হয়েছে। রাকিব কাজ করত গাড়ি
মেরামতের একটি ওয়ার্কশপে। তার অপরাধ ছিল সে অন্য একটি
ওয়ার্কশপে কাজ নিয়েছিল। অন্যদিকে, বাবার সাথে একই
কারখানায় কাজ করত সাগর। মাত্র নয় বছর বয়সী এই শিশুটি
কী এমন অপরাধ করতে পারে যার জন্য কম্প্রেসার মেশিনের
মাধ্যমে পেটে বাতাস ঢুকিয়ে অমানুষিকভাবে তাকে হত্যা করা
হল তা আমরা বুঝতে অক্ষম। এটা সুবিদিত যে যখন এই
শিশুদের ঘাসফড়িঙের পিছনে ছুটে বেড়াইবার কথা কিংবা
বইখাতা হাতে কোলাহলমুখর করে তুলবার কথা স্কুলপ্রাঙ্গণ,
তখন কেবল পেটের দায়ে তাদের বেছে নিতে হয়েছে শ্রমিকের
জীবন। কোমলমতি এই শিশুরা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে ছোটখাটো
ভুল করতেই পারে। কিন্তু এজন্য এভাবে তাদের খুন করে
ফেলতে হইবে এটা কি ভাবা যায়?
বস্তুত রূপগঞ্জে যা হয়োছ এবং অন্যত্র যা হচ্ছে তা
মোটেও সুস্থতার লক্ষণ নয়। কোনো সুস্থ মানুষ এ ধরনের
কাজ করতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এই উন্মত্ততা হতে
পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই এ ব্যাধির উৎস এবং
কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সমাজই যদি ক্রমবর্ধমান এই
অসহিষ্ণুতার জন্য দায়ী হয়ে থাকে তা হলে দেখতে হবে যে
কী কারণে এই ব্যাধি সমাজে শিকড় গাড়তে পারল? সর্বোপরি,
সে কারণটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করাই যথেষ্ট নয়, একই সাথে
তার যথাযথ প্রতিকারেরও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
অসহিষ্ণুতার মূল কারণটি দূর করতে না পারলে এটার দাবানল
হতে পরিত্রাণ সুদূরপরাহতই বলা যায়।
ছয়
মাস কারাদন্ডের বিধান রেখে
পেট্রোলিয়াম আইন পাস
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
লাইসেন্স ছাড়া পেট্রোলিয়াম আমদানি, মজুদ, পরিবহন,
বিতরণ উত্পাদন, শোধন ও মিশ্রণ বন্ধে পেট্রোলিয়াম আইন-২০১৬
বিল পাস হয়েছে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে পাস হওয়া এই
আইন লঙ্ঘনে ছয় মাসের কারাদ বা ১০ হাজার টাকা জরিমানার
বিধান রাখা হয়েছে।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার
সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি
ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিলটি পাসের
প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে
বিলটির ওপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র
সদস্যদের জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব
কণ্ঠভোটে নাকচ হয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর
পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ
সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে
পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদনক্রমে কোনো তেল বিপণন
কম্পানি প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম ব্যবসা করার জন্য
ডিলার নিয়োগ করতে পারবে। একইভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয়
শ্রেণির পেট্রোলিয়াম ব্যবসার জন্য এজেন্ট নিয়োগ করতে
পারবে।
লাইসেন্স ছাড়া প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম আমদানি,
পরিবহন, মজুদ বা বিতরণ করা যাবে না। তবে লাইসেন্স ছাড়া
দুই হাজার লিটার পরিমাণ দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির
পেট্রোলিয়াম মজুদ ও পরিবহন করা যাবে। কিন্তু তা এক
হাজার লিটার পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। এ ছাড়া
লাইসেন্সধারী মোটরযান বা জ্বালানি ইঞ্জিনের জন্য ৯০
লিটার পেট্রোলিয়াম মজুদ ও পরিবহন করা যাবে। একইভাবে
বিক্রির উদ্দেশ্য ছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ২৫ লিটার পরিমাণ
প্রথম শ্রেণির পেট্রোলিয়াম মজুদ করার বিধানও আইনে রাখা
হয়েছে।
জামালপুরে বৃদ্ধের মাথায় শিং!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
"হাট্টিমা টিম টিম, আয়াত আলীর মাথায় খাড়া শিং, শিং নিয়ে
ছাড়ে না, হাসপাতালের বিছানা" এমনি একটি ছড়ার উৎস
হয়েছেন জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একশ দশ
বছর বয়সী বৃদ্ধ আয়াত আলী সেক। জামালপুর শহরের
লাঙ্গলজোড়া গ্রামে তার বাড়ি।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের
তৃতীয় তলায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সার্জিক্যাল বিভাগে মাথায়
শিংওয়াল রোগী ভর্তি হয়েছেন গত ১৪ জুলাই। মানুষের মাথায়
শিং গজিয়েছে। ডাক্তারি ভাষায় এটি একটি সাধারণ রোগ।
রোগের নাম সেফাছিয়াস হর্ণ। এদিকে মানুষের মাথায় শিং
গজানোর খবরে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন
লোকজন হাসপাতালে যাচ্ছেন রোগীটিকে এক নজর দেখার জন্য।
সেফাছিয়াস হর্ণ রোগী বৃদ্ধ আয়াত আলী সেক জানান, আজ থেকে
বছর খানেক আগে তার মাথায় প্রথমে বড় একটি ফোঁড়া বেড় হয়।
পরে ওটা দিন দিন বড় হয়ে শিং এর মত হয়েছে। শিংটি
ইতিমধ্যেই ১২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়েছে। তিনি আরও জানান,
কিছুদিন যাবত শিংটির গোড়ায় প্রচ ব্যথা করায় শিংটি
অপসারণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিক্যাল
সার্জন ডা. নুরে আলম বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আয়াত
আলী সেক সেফাছিয়াস হর্ণ রোগে ভোগছেন। এটা খুব জটিল কোনো
রোগ না। অপারেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই ১২ সেন্টিমিটার
লম্বা সেফাছিয়াস হর্ণটি অপসারণ করা সম্ভব। তবে এ রোগীকে
দেখতে কৌতুহলী অনেক মানুষ হাসপাতালে আসছেন।
মানবতার কাজ করাই প্রকৃত ইবাদত
মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
অর্থনৈতিকভাবে এগোচ্ছে দেশ, শিক্ষার হার বাড়ছে।
সার্বিকভাবে জনগণের জীবনযাত্রার মানও বাড়ছে। কিন্তু
সামাজিক ও পারিবারিক অঙ্গনে অশান্তি এবং অস্থিরতাও
বাড়ছে সমানতালে। শিক্ষার হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে
সততা। আপাত ভদ্রলোক বাড়ছে, কমছে নিখাদ ভালো মানুষ।
জনসংখ্যা বাড়ছে, কমছে ভালো মানুষ। আইন কঠোর হচ্ছে,
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও বাড়ছে; কমছে না
অপরাধপ্রবণতা। মানুষকে ‘মানুষ’ হিসেবে জ্ঞান করতে না
পারলে স্বাভাবিক নিয়মেই হারিয়ে যায় মানবিক মূল্যবোধ।
চলে যায় প্রেম, ভালোবাসা ও স্নেহ-মমতা। নষ্ট হয়
শান্তি-শৃঙ্খলা। শুরু হয় মানুষের মধ্যে পারস্পরিক
হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি। বর্তমান বিশ্বে যা
হরহামেশাই ঘটছে। পত্রিকা ও টেলিভিশনের সংবাদ মানেই
হত্যা, ধর্ষণ, গুম, খুন, রাহাজানি আর হানাহানি।
চারদিকের অবস্থা পর্যালোচনা করলে মনে হয়, মানুষ এখন আর
ভালো নেই। অবাক করা ব্যাপার হলো এতকিছুর পরও মানুষ
দিব্যি ভালো আছে। কেন যেন মানুষের মাঝে মানুষের জন্য
আফসোস নেই মমতা নেই; বুঝতে পারছি না। প্রয়াত
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ঠিকই বলেছেন। ‘মানুষ
সামাজিক জীব নয় ব্যক্তিগত জীব। একশ মানুষের প্রাণহানির
চেয়ে ব্যক্তিগত একশ ডিগ্রি জ্বর বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
বর্তমান সময়ের চিত্র তুলে ধরে হুমায়ূন আহমেদ লেখেন,
‘মানুষের দুরবস্থা এখন আর আমাদের আহত করে না। লঞ্চ ডুবে
কিংবা বাস এক্সিডেন্টে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা দেখে
আমরা শুধু ‘আহ’ বলে অন্য চ্যানেলে চলে যাই।’ এটি কখনোই
প্রকৃত মুসলমানের চরিত্র হতে পারে না। প্রকৃত মুসলমান
হতে হলে খোদার প্রতিটি সৃষ্টির জন্য হৃদয়ে দরদ থাকতে
হবে। আত্মায় মানবতা থাকতে হবে। মানুষের দুঃখে দুঃখী হতে
হবে। পল্লী কবি জসীমউদ্দীন চমৎকারভাবে বলেছেন,
‘সবার সুখে হাসব আমি
কাঁদব সবার দুঃখে
নিজের খাবার বিলিয়ে দেব
অনাহারীর মুখে।’
এই যে আমরা একের দুঃখে অন্যে দুঃখী হই না, এ জন্য
আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে এখন অশান্তির আগুন জ্বলছে
প্রত্যেক মানব হৃদয়ে। অবস্থা এমন হয়েছে, প্রকাশ্য
দিবালোকে পাঁচজন মানুষ যখন একজন মানুষকে ছিনতাই করে
তখন রাস্তার পাঁচ হাজার মানুষ নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত
থাকে। অথচ দশজনও যদি দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করত তবে
দুষ্কৃতকারীরা পালানোরও জায়গা পেত না। বলছিলাম, শুধু
নিজেকে বাঁচালেই চলবে না, প্রত্যেককে নিয়ে ভাবতে হবে।
তাদের জন্য কাজ করতে হবে। এ ভাবনা আর এ কাজই
মুসলমানদের নামাজ, রোজার পাশাপাশি পালন করতে হবে। বুঝতে
হবে সকাল-বিকাল মসজিদে দৌড়ালেই ইবাদত হয় না। মানবতার
কল্যাণে কাজ করাও ইবাদতের অংশ।
মানুষের কল্যাণে নিজকে নিয়োজিত রাখাই প্রকৃত ধর্ম ও
ধার্মিকের কাজ। সহিহ মুসলিম থেকে দুটি হাদিস শোনাচ্ছি।
হজরত তামীম দারী (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন,
‘আদদ্বীনুন নাসিহা- অর্থাৎ ধর্ম হলো মঙ্গল কামনা করা।’
সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রসুল! কার জন্য
মঙ্গল কামনা করব?’ রসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ, কিতাব ও
রসুলের প্রতি ইমানের ব্যাপারে মঙ্গল কামনা করবে। আর
প্রত্যেক মুসলমান, সাধারণ ও নেতাদের জন্য কল্যাণ কামনা
করবে।’ (মুসলিম।)। জারীর ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন,
‘আমি রসুল (সা.) এর কাছে নামাজ কায়েম করা, জাকাত আদয়
করা এবং প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কল্যাণ কামনা করার
বাইয়াত-অঙ্গীকার করেছি।’ (মুসলিম।)।
যখন ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর জাগতিক স্বার্থ, বৈষয়িক
উন্নতির চিন্তা প্রাধান্য পায়, তখনই মানুষের আত্মা থেকে
পরকালে জবাবদিহির ভয় কমে যায়। এমন অবস্থায় মানুষ কেবল
পাপাচারেই জড়িয়ে পড়ে না, মানবিক বোধটুকুও হারিয়ে ফেলে।
বস্তুত পরকালের ভাবনা মানুষের কুপ্রবৃত্তি তথা নফসকে
নিয়ন্ত্রণে করে। মানুষের ভিতর সুপ্রবৃত্তি ও সৎ গুণাবলি
জাগিয়ে তোলে। যার ভিতর আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর ভয় কিংবা
পরকালের ভাবনা কাজ করে না, তাকে আইন দিয়ে নিবৃত্ত রাখা
যায় না। মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে যুগে যুগে ধর্ম ও
কল্যাণকামী মানুষের বড় ভূমিকা ছিল। ধর্মীয় অনুশাসনই
মানবিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সব যুগে সাহায্য করেছে।
পবিত্র কোরআনে মানবিক মূল্যবোধের বিপর্যয় রোধে
মুসলমানকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান এভাবে করা হয়েছে
‘ওয়াদাল লাজিনা আমানু মিনকুম ওয়া আমিলুস সোয়ালিহাতি লা
ইয়াসতামলি কান্নাসুম ফিল আরদ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহ
প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তোমরা নেক কাজ করলে দুনিয়ার
কর্তৃত্ব তোমাদের দেওয়া হবে।’ দুনিয়াজুড়ে মুসলমানদের
সামগ্রিক বিপর্যয় রোধে কোরআনের বিধান ভালো করে বুঝতে
এবং মানতে হবে। সত্যবাদিতা, সহিষ্ণুতা, মাধুর্যতা,
তীক্ষ মেধাশক্তি ও শিষ্টাচারের মাধ্যমে মুসলমান
একবিংশ শতাব্দীর অগ্রযাত্রায় নেতৃত্বের ভূমিকা নেবে।
আল্লামা ইকবাল লেখেন, ‘সবক পড় ফের সাদাকাত কা ইতা আতকা
আমানত কা কাম লিয়া যায়ে তুঝছে সারে দুনিয়া কি ইমামত কা
।’ অর্থাৎ সত্যনিষ্ঠা, আনুগত্য আর আমানতের সবক শিখে
নাও, তবেই সারা দুনিয়ার নেতৃত্ব তোমাদের হাতের মুঠোয়
আসবে।
লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
অ্যাপে চলে দোকান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সুইডেনে চালু হলো প্রথম বিক্রেতাহীন দোকান। এই দোকানে
কোনো কর্মী নেই। পণ্য কেনার জন্য মোবাইল ফোন আর একটি
অ্যাপ (অ্যাপ্লিকেশন) হলেই যথেষ্ট। ২৪ ঘণ্টার এই মুদি
দোকান খুলে চমক দেখিয়েছেন সুইডেনের প্রযুক্তিবিদ
রবার্ট ইলিজ্যাসন।
কিভাবে মাথায় এলো এমন অভিনব আইডিয়া? ইলিজ্যাসন জানান,
এক রাতে হাত ফস্কে ছেলের বেবিফুডের জার মাটিতে পড়ে ভেঙে
যায়। গাড়ি নিয়ে সুইডেনের গ্রাম চষে ফেলেও কোনো দোকান
খোলা পাননি। তখনই ঠিক করেন, এমন অবস্থায় আর কেউ পড়লে
যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য নতুন কিছু করতে হবে।
ইলিজ্যাসনের দোকানে কেনাকাটা করতে হলে স্মার্টফোনে একটি
অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয়। সেই অ্যাপের সাহায্যে দোকানের
হদিস যেমন মেলে, তেমনই দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশও করা
যায়। শুধু তাই নয়, পছন্দসই পণ্য কেনার পর অ্যাপটির
সাহায্যে প্যাকেটের গায়ে ছাপা বার কোড পড়ে জানা যায়
সঠিক দামও।
জিনিস কিনতে সেখানে নগদ দাম দেওয়ার চল নেই। মাসের শেষে
ই-মেইলে পৌঁছে দেওয়া হয় বিল। ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের
মাধ্যমেও দাম দেওয়া যায়। দোকানের নিরাপত্তার দায়িত্বে
রয়েছে সিসিটিভি সিকিউরিটি সিস্টেম।
মানবাধিকার
কমিশনের মহাসচিবকে লন্ডনের টাওয়ার হেমলেটসের স্পীকারের
সংবর্ধনা

মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-এর মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম
দিলদার এবং ঢাকা মহানগরের গভর্নর সেকান্দর আলী জাহিদকে
লন্ডন টাওয়ার হেমলেটসের স্পীকার খালিশ উদ্দিন সংবর্ধনা
প্রদান করেন। গত ১৮ জুলাই ২০১৬ দুপুরে টাওয়ার
হেমলেটসের কাউন্সিল ভবনে এক বিশেষ সভায় তাদের সংবর্ধনা
দেয়া হয়।
অনষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আবদুল আহাদ চৌধুরী, সাধারণ
সম্পাদক তারাউল ইসলাম, ওয়েষ্টমিনষ্টার শাখার সভাপতি
মাসুদুল ইসলাম, ইউকে শাখার সহ-সভাপতি আনসার আহামেদ
উল্লাহ, জামাল আহামেদ খান সহ কর্মকর্তাগণ বক্তব্য
রাখেন।
কন্যাসন্তান প্রসবের খরচ ফ্রি
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
নারী-পুরুষের অনুপাতে ভারসাম্য আনা একটি লক্ষ্য। মেয়ে
হবে জেনে কেউ যেন গর্ভের সন্তান নষ্ট না করে, সেটিও
একটি লক্ষ্য। এই দুটি লক্ষ্য নিয়ে প্রশংসনীয় উদ্যোগ
নিয়েছে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদ শহরের একটি
হাসপাতাল। সেখানে কেউ কন্যাসন্তানের জন্ম দিলে
প্রসবসংক্রান্ত সব খরচ বহন করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই মুহূর্তে গুজরাটে প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে
নারীর সংখ্যা ৮৯০ জন। ‘কন্যাভ্রূণ হত্যা’ রুখতে এবং
কন্যাসন্তানের জন্মে উৎসাহ দিতে গত মাসে এমন উদ্যোগের
কথা ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর পরই ওই হাসপাতালে
সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছে প্রায়
১৫০ দম্পতি।
ওই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মহাদেব লোহানা বলেন,
‘বছরের পর বছর ধরে আমরা দেখছি, প্রসূতিরা হাসপাতালে
ভর্তি হওয়ার পর থেকেই পুত্রসন্তান প্রার্থনা করেন।
ছেলের জন্ম হলে হাসপাতালে মিষ্টি বিতরণ করতেও দেখেছি।
কিন্তু মেয়ে হলে মুখে হাসি ফোটে না যেন! তাই আমরা ঠিক
করেছি, যখনই কোনো মেয়ের জন্ম হবে, হাসপাতালের
ট্রাস্টের তরফে তা উদ্যাপন করা হবে।’
প্রসবের জন্য ভর্তি হওয়া এক নারী বলেন, ‘আমাদের পরিবারে
গত ৩৫ বছরে কোনো মেয়ে জন্মায়নি। প্রার্থনা করছি যেন
কন্যাসন্তান হয়।’
চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের বিজ্ঞানীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিন
জঙ্গি হামলা ও গুপ্তহত্যার মতো সহিংস ঘটনায় যখন
নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে সর্বত্র, তখনই দেশের
বিজ্ঞানীদের সাফল্য আমাদের নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
রোটাভাইরাসের ভ্যাকসিন ও ওষুধের মডেল উদ্ভাবন করে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন
বাংলাদেশের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের এই আবিষ্কার
বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে নতুন এক উচ্চতায়। সরকারের
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির বিজ্ঞানীরা
রোটাভাইরাসের বিস্তার নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে কার্যকর
একটি গবেষণা করেছেন। প্রিথেরাপি হিসেবে পাঁচটি
ভ্যাকসিন ও পোস্ট থেরাপি হিসেবে ওষুধের মডেল তৈরি
করেছেন। তাঁদের এই গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে
‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন ফার্মাকোলজি’ নামের আন্তর্জাতিক
জার্নালে। প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে সাড়া পড়েছে।
বিজ্ঞানীদের এই কৃতিত্বে আমরা গর্বিত।
গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব
বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহ। তিনি
জানিয়েছেন, কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ‘নিয়ন্ত্রণহীন
রোটাভাইরাস’ শীর্ষক প্রতিবেদন তাঁদের এই গবেষণায় উৎসাহ
জুগিয়েছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশের কৃতী জিনবিজ্ঞানী ড.
মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী ধান, পাট,
ভুট্টাসহ প্রায় ৫০০ উদ্ভিদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর
‘ম্যাক্রোফমিনা ফ্যাসিওলিনা’ নামের এক ছত্রাকের
জীবন-রহস্য আবিষ্কার করে বাংলাদেশের জন্য অনন্য গৌরব
বয়ে এনেছিলেন। বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা এই বিজ্ঞানী
তার আগে পাটের জেনোম আবিষ্কার করেন। রোটাভাইরাস
নিয়ন্ত্রণের ভ্যাকসিন ও ওষুধ আবিষ্কার আমাদের নতুন এক
গৌরবের অংশীদার করেছে।
রিওভারাইড গ্রুপের রোটাভাইরাস খাওয়ার পানি, মল, ঝড় ও
বৃষ্টির দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায়। ভাইরাসটি অন্ত্রের
নিঃশেষণ ও শোষণের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। ফলে
অন্ত্রের এপিথেলিয়াল কোষ সহায়ক পদার্থ বিশোষণ ও
ক্ষতিকর পদার্থের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে
না। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, ডায়রিয়ায়
আক্রান্ত শিশুদের ৬৭ থেকে ৮২ শতাংশই রোটাভাইরাসে
আক্রান্ত। এই খবর গবেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
রোটাভাইরাসে আক্রান্তদের ভ্যাকসিনের জন্য বিদেশের দিকে
তাকিয়ে থাকা, বেসরকারি পর্যায়ে বাজারে ভ্যাকসিনের
অত্যধিক দাম ইত্যাদি গবেষকদের দেশেই ভ্যাকসিন তৈরির
কাজে উদ্বুদ্ধ করে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেন।
একপর্যায়ে সাফল্য আসে।
কুকুর কামড়ালে কি পেটে কুকুরের বাচ্চা হয়?
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কুকুর সম্পর্কে আমাদের অনেকের মনে বিশেষ ভীতি রয়েছে।
আর এই ভীতির অন্যতম কারণ হচ্ছে র?্যাবিস। র?্যাবিস
আক্রান্ত কুকুর মানুষকে কামড়ালে আর সময়মতো চিকিৎসা না
করালে পরিণাম হয় মৃত্যু। র?্যাবিস আক্রান্ত কুকুরকে
সাধারণ লোকজন পাগলা কুকুর বলেই জানে। প্রকৃতপক্ষে এই
পাগল আচরণের জন্য দায়ী র?্যাবিস। র?্যাবিস—র?্যাবডোভাইরাস
গ্রুপের আরএনএ ভাইরাসজনিত রোগ। র?্যাবিস আক্রান্ত
কুকুরের মধ্যে কোনো কিছুকে কামড়ানোর প্রবৃত্তি জেগে ওঠে,
ঝাঁপ দিয়ে কোনো কিছু ধরতে চায় এবং গিলে খেতে
সাহায্যকারী মাংসপেশিগুলোর সংকোচন হতে থাকে। এতে তৃষ্ণা
পেলেও পানি পান করা সম্ভব হয় না। তাই হয়তো র্যাবিসের
অন্য নাম জলাতঙ্ক। কাজেই কুকুর থেকে সাবধান থাকা ভালো।
কিন্তু কুকুর কামড়ালে মানুষের পেটে কুকুরের বাচ্চা হয়—এ
ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। কুকুরের কামড় থেকে পেটে
কুকুরের বাচ্চা হওয়া অসম্ভব ব্যাপার। এমনকি কখনো হয়েছে
বলে শোনা যায়নি। তার পরও এ ধরনের একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস
প্রচলিত আছে।
সম্ভবত কুকুর সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বনের স্বার্থে এ
ধরনের কথার প্রচলন হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের ভয়
দেখানোর জন্য বিশেষ করে এবং তারা যাতে কুকুর থেকে দূরে
থাকে, এ জন্যই হয়তো এ রকম ভ্রান্ত কথার প্রচলন হয়েছে।
তবে কথাটির প্রচলন যে কারণেই হোক, এটি ঠিক নয়। কুকুর
কামড়ালে পেটে বাচ্চা হয় না এবং বাচ্চা হওয়ার কোনো
প্রশ্নই আসে না। তবে কুকুর কামড়ালে অবশ্যই দ্রুত
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তির সংশোধনী
প্রস্তাব অনুমোদিত
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহিঃসমর্পণ সম্পর্কিত চুক্তি
(বন্দি বিনিময় চুক্তি) সহজ করার এক সংশোধনী প্রস্তাব
মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার
বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত সাপ্তাহিক
বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম
সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সচিব বলেন, ভারত সরকার বিদ্যমান চুক্তিটি সহজ করতে এর
১০/৩ ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে। এই সংশোধনীর ফলে এখন
বাংলাদেশ ও ভারত যেকোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে নিজ দেশে
গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হলে তাকে তার দেশে বহিঃসমর্পণ
করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান আইনে একটু জটিলতা
রয়েছে। এতে বহিঃসমর্পণের জন্য কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও প্রমাণ উপস্থাপনের
প্রয়োজন ছিল। আজ অনুমোদিত এই সংশোধনীর ফলে কোনো
অভিযুক্তকে প্রত্যার্পনে আর কোনো প্রমাণ উপস্থাপনের
প্রয়োজন নেই। বহিঃসমর্পণ চুক্তিটি ২০১৩ সালের ২৩
অক্টোবর কার্যকর হয়।
Top
মানুষ হত্যা করে
বেহেস্ত পাওয়া যায় না : নাহিদ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, আমাদের
কোমলমতি মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিপথগামী করার অপচেষ্টা
চলছে। ইসলামের দোহাই দিয়ে জঙ্গি তৈরি করা হচ্ছে, হত্যা
করলে বেহেস্তে যাওয়া যাবে, এমন বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা
দিয়ে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী তরুণদের ধ্বংস
করে দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক ও অভিভাববদের উদ্দেশে বলেন,
আপনার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ১০ দিনের বেশি সময়
অনুপস্থিত থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুণ,
সন্তান বা শিক্ষার্থীর পরিবর্তন লক্ষ করলে, তাকে দ্রুত
সংশোধনের চেষ্টা করুণ ভালোবাসা দিয়ে। ভালোবাসা আদর আর
পরিবারের সহযোগিতাই পারবে আপনার সন্তানকে মানবতার পথে
ফিরিয়ে আনতে।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা সদরে
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মহিলা কলেজ এবং সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
পলিটেকনিকেল ইনস্টিটিউট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে
সমাবেশে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত
সেনগুপ্ত।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পৃথিবীব্যাপী কারিগরি শিক্ষার
গুরুত্ব বেড়েছে। তাই বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে
বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আগে যেখানে এক শতাংশেরও নিচে
কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ছিল বর্তমান সরকারের আমলে
তা বেড়ে কয়েকগুণ হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা ৬০ শতাংশ করা
হবে।
‘জার্মানিতে ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা নিচ্ছে,
পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে ৬৫ ভাগের বেশি শিক্ষার্থী
কারিগরি শিক্ষা নিয়ে পড়ছে, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে
দেশে যেমন চাকরির বা কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা বেশি,
বিদেশে গেলেও কাজের সুযোগ বেশি, অর্থ উপার্জনও করবেন
বেশি।’ শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ভাটি বাংলায় বর্ষায়
চলাচলের সমস্যা, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সমস্যার কথা
চিন্তা করে সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলের জন্য পৃথক শিক্ষা
ক্যালেন্ডার করার কাজ হচ্ছে। সুনামগঞ্জের মতো
প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে শিক্ষা
ব্যবস্থার খুব খারাপ অবস্থা। বেশির ভাগ স্কুলে যাতায়াত
ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় স্কুলে শিক্ষার্থী গেলে শিক্ষক
যান না আর শিক্ষক গেলে শিক্ষার্থী যায় না। তাই এমন
অবস্থার যাতে সৃষ্টি না হয় হাওর অঞ্চলগুলোতে বিশেষ
ব্যবস্থার কথা জানান তিনি।
Top
দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি
১০ লাখ
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে
এক-তৃতীয়াংশই কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণী। তাই জনসংখ্যা
বৃদ্ধির হার কমাতে কিশোর-কিশোরীদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ
দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি
এসব কথা বলেন। বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালনকে সামনে রেখে
এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের
সঙ্গে প্রতি বছর ১১ই জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন
করে বাংলাদেশ। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে
১১ই জুলাইয়ের পরিবর্তে ২১শে জুলাই বাংলাদেশে জনসংখ্যা
দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জনসংখ্যা দিবসের
এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘কিশোরীদের জন্য বিনিয়োগ,
আগামী প্রজন্মের সুরক্ষা।’ প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের
জনসংখ্যা এখন ১৬১ মিলিয়ন (১৬ কোটি ১০ লাখ)। মোট প্রজনন
হার এখনো ২ দশমিক ৩।
এ হার ২-এ নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। মোট জনসংখ্যার ৩১
শতাংশ তরুণ প্রজন্ম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭
শতাংশ। তিনি আরও বলেন, দেশে সাড়ে চার কোটি কিশোর-কিশোরী
ও তরুণ-তরুণী রয়েছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার এখন
কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে।
আমরা মনে করি, যদি তাদের স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগ দেয়া
যায়, তাহলে দেশের জনসংখ্যা আর বাড়বে না। সরকার মেয়েদের
সব ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষায়
অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, সমাজে
শিক্ষিত মা তৈরি হলে একদিকে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমে
আসবে, অন্যদিকে জনসংখ্যাও বাড়বে না।’ কিশোর-কিশোরীর
স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে দেশের ১০০টি সেবাকেন্দ্রে
কিশোরবান্ধব স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে বলে
তিনি জানান। বহু বছর ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার একই
জায়গায় আটকে আছে। আগের মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবার
পরিকল্পনার কোনো সেবা দেয়া হয় না। সাংবাদিকদের
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গি হামলায় জড়িতদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা রোগটা ধরতে পেরেছি,
জঙ্গিদের যথাযথ ওষুধ দেওয়া হবে। ঢাকা মেট্রোপলিটন
পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সতর্কতামূলক এসএমএস পেয়েছেন কি
না- জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, আমি এসএমএস দেখিনি,
পত্রপত্রিকায় মারফত জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আপনারা
যতটুকু জানানে আমিও ততটুকু জানি। এ সময়ে আরও উপস্থিত
ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, পরিবার
পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওয়াহিদ হোসেন ও
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
ইসলাম
সন্ত্রাসবাদের কারণ নয়: পোপ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ইসলাম নয়, বরং বৈশ্বিক
অর্থনীতির দু®প্রকৃতিই সন্ত্রাসবাদকে অনুপ্রাণিত করে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো
হয়, গত ৩১ জুলাই ২০১৬ সাংবাদিকদের কাছে ওই মন্তব্য
করেন পোপ। পাঁচ দিনের পোল্যান্ড সফর শেষে গত ৩১ জুলাই
২০১৬ ভ্যাটিকানে ফেরেন তিনি।
সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে ইসলামের যোগসূত্র
নিয়ে এক প্রশ্নে ফাইটে বসে পোপ বলেন, সহিংসতার সঙ্গে
ইসলামকে চিহ্নিত করা ঠিক নয়। সন্ত্রাসবাদের মুখ্য
কারণের মধ্যে সামাজিক অবিচার ও অথের" পূজা অন্যতম।
পোপ বলেন, ‘আমি মনে করি, সহিংসতার সঙ্গে ইসলামকে
চিহ্নিত করা ঠিক নয়। এটা ঠিক নয়, এটা সত্য নয়।’
পোপ বলেন, প্রায় সব ধর্মে সব সময় ছোট মৌলবাদী গোষ্ঠী
থাকে। ক্যাথলিক ধর্মেও তা আছে।
পোপ বলেন, ‘আমি যদি ইসলামিক সহিংসতা নিয়ে কথা বলি,
আমাকে ক্যাথলিক সহিংসতা নিয়েও কথা বলতে হবে। সব মুসলিম
সহিংস নয়। সব ক্যাথলিক সহিংস নয়।’
পোপ বলেন, ইসলামিক স্টেট (আইএস) একটি ছোট্ট মৌলবাদী
গোষ্ঠী। তারা পূর্ণাঙ্গ ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না।
সন্ত্রাসবাদের নানা কারণ আছে উল্লেখ করে পোপ বলেন, যখন
অন্য কোনো বিকল্প থাকে না, যখন বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দে"
মানুষের বদলে অর্থ বসে, তখন সন্ত্রাসবাদ বাড়ে। এটিই
সন্ত্রাসবাদের প্রাথমিক রূপ। এটিই সব মানবতার বিরুদ্ধে
মৌলিক সন্ত্রাসবাদ। এটা নিয়ে কথা বলতে হবে।
মেহের আফরোজ চুমকির
চাচার ইন্তেকাল
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির
চাচা গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি
মোঃ শাহাবুদ্দিন গত ২৩ জুলাই ২০১৬ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না
.... রাজিউন)। কালীগঞ্জের নোয়াপাড়া পারিবারিক গোরস্থানে
দাফন করা হয়। তার মৃত্যুকে নোয়াপাড়ায় শোকের ছায়া নেমে
আসে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার
মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং
তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
Top
এইডসের টিকার
পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু এ বছরেই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গত বছরের নভেম্বর মাসেই ছোট আকারে শুরু হয়েছিল এইডস
সংক্রমণের জন্য দায়ী এইচআইভি ভাইরাসের টিকার প্রয়োগ।
তার ফলাফল ইতিবাচক উঠে আসার পর এবারে সেটাকেই বড় আকারে
প্রয়োগ করা হচ্ছে এ বছরেই। দক্ষিণ আফ্রিকার চারটি
স্থানে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষকে প্রয়োগ করা হবে এই
টিকা। গবেষকরা আশা করছেন, দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর এই
টিকাতেই তারা পাবেন এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধের সক্ষমতা।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে শুরু
হওয়া ২১তম আন্তর্জাতিক এইডস কনফারেন্সে গত বছরের ছোট
পরিসরের টিকা প্রয়োগের ফলাফল তুলে ধরা হয়। এ সময় জানানো
হয়, গত বছরের নভেম্বর মাসে দক্ষিণ আফ্রিকাতেই ৫২ জন
স্বেচ্ছাসেবীর ওপর প্রয়োগ করা হয় এইচভিটিএন১০০ নামের
টিকা। এই টিকা কতটুকু সুরক্ষা দিতে সক্ষম তা
নির্ধারণের জন্য বড় পরিসরে প্রয়োগের আগে ছোট পরিসরের
ওই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়। এই টিকার পরীক্ষামূলক
প্রয়োগের প্রধান, দক্ষিণ আফ্রিকার ডেসমন্ড টুটু এইচআইভি
সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর লিনডা গেইল-বেক্কার বলেন,
‘এই টিকা কতটা কার্যকর তা জানার জন্য ওই পরীক্ষামূলক
প্রয়োগ ছিল সতর্কতামূলক।’ আর ওই প্রয়োগের ফলাফলও এসেছে
আশানুরূপ। এই গবেষণার পৃষ্ঠপোষক মার্কিন প্রতিষ্ঠান
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস
ডিজিজের পরিচালক অ্যান্থনি ফসি বলেন, ‘অবশ্যম্ভাবী
প্রশ্ন হলো- যে ফলাফল আমরা পেয়েছি বড় পরিসরের পরীক্ষায়
কি আমরা একই ফলাফল অর্জন করতে পারবো? এই টিকাকে
সাব-সাহারান আফ্রিকা অঞ্চলে প্রয়োগের জন্য উন্নত করা
হয়েছে। ওই অঞ্চলে এইচআইভি ভাইরাসের একটি ভিন্ন
প্রজাতির সংক্রমণ বেশি। এই টিকার প্রয়োগের জন্য চারটি
গুণগত মানও নির্ধারণ করা হয়েছিল। গেইল-বেক্কার বলেন,
‘এটি চারটি ক্ষেত্রেই আশানুরূপ ফল দিয়েছে। এটা
প্রতিশ্রুতিশীল ও এটা চালু হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন,
‘আমাদের সামনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, এটাকে আমরা
চালু করবো না কি করবো না। আর এর উত্তর হলো, হ্যাঁ।’ আর
তাই এ বছরের নভেম্বর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার চারটি স্থানে
৫ হাজার চারশ’ মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হবে এই টিকা।
এসব স্থানে তিন বছর ধরে চলবে এই টিকার প্রয়োগ। এর আগে
২০০৯ সালে থাইল্যান্ডে এইডসের একটি টিকার পরীক্ষামূলক
প্রয়োগ করা হয়েছিল। সেবারে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ
থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা পাওয়া গেলেও ওই
পরীক্ষামূলক প্রয়োগের শেষে সাফল্যের হার নেমে এসেছিল
৩১ শতাংশে। এবারের টিকার ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ সাফল্য ধরে
রাখার বিষয়ে আশাবাদ জানিয়েছেন গবেষক দলের সদস্যরা। আর
তা অর্জন করতে পারলে এই টিকাকে বিশ্বব্যাপী প্রয়োগের
জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হবে। গেইল-বেক্কার বলেন,
‘আমরা আশা করছি, এই টিকা এইচআইভি ভাইরাসের জন্য
বিশ্বের প্রথম লাইসেন্সকৃত টিকা হবে।’ তিনি জানিয়েছেন,
এই বড় পরিসরের পরীক্ষায় হয়তো আশানুরূপ ফলাফল
সম্পূর্ণভাবে অর্জিত হবে না। তবে এই ফলাফলের ওপর ভিত্তি
করে এর নির্মাতারা একে লাইসেন্সকৃত টিকা হিসেবে
বাজারজাত করার জন্য প্রস্তুত করতে পারবেন। আর সেই
আশাবাদ সফল হলে শেষ পর্যন্ত এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ
রোধে বিশ্ব পাবে প্রথম একটি কার্যকরী টিকা।
নিয়ন্ত্রণ করছে। যে কারণে কোনোভাবেই এর আগ্রাসন রোধ করা
যাচ্ছে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক
ব্যবসার এই সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ইয়াবাসেবীর সংখ্যা বেড়েই
চলেছে। আর এই ইয়াবা প্রতিদিনই আসছে অবৈধ পথে
পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে। দেশের একপ্রান্ত
টেকনাফের স্থল ও সাগরপথের ১১ পয়েন্ট দিয়ে দিনে-রাতে
ঢুকছে ইয়াবার চালান। আর এই ইয়াবা বিভিন্ন উপায়ে ছড়িয়ে
পড়ছে দেশের আরেক মাথা তেঁতুলিয়া পর্যন্ত। রাজধানীসহ
সারা দেশের গ্রামগঞ্জে এখন ইয়াবার ব্যবসা জমজমাট।
ইয়াবার সর্বনাশা থাবায় লাখো পরিবারের সন্তানদের জীবন
এখন বিপন্ন। অরক্ষিত ১১ পয়েন্ট : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
অধিদফতর এক কর্মকর্তা বলেন, সড়কপথে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীর কড়াকড়ি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাচারকারীরা নৌপথকে
নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে। নৌপথে বিভিন্ন মাছ
ধরার ট্রলারে করে মাঝি-মাল্লাদের সহায়তায় এসব ইয়াবা
পাচার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। বেশি টাকার লোভে
অনেক মাঝি-মাল্লা মাছ ধরা ছেড়ে ইয়াবার হাতবদলে সহায়তা
করছে বলেও তিনি জানান। এই মাঝিরা এখন তাদের আসল পেশা
ছেড়ে মাদক ব্যবসায় নেমেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা
গেছে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের ১৫টি স্থানে
৩৭টি ইয়াবা কারখানা রয়েছে। যেখান থেকে সাগর ও সড়কপথে
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, নয়াপাড়া, সাবরাং, মৌলভীপাড়া,
নাজিরপাড়া, জালিয়াপাড়া, নাইট্যংপাড়া, জলিলেরদিয়া, লেদা,
আলীখালী, হৃলাসহ অন্তত ১১টি পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবার চালান
বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এসব ইয়াবা তৈরি ও পাচারে
আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী যেমন জড়িত রয়েছে তেমনি
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের গডফাদারও রয়েছে। যারা সীমান্তে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবি, কোস্টগার্ড, র্যাব
কিংবা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচার করে আসছে।
এর মাঝেও হাল ছাড়েনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাংলাদেশকে অশান্ত করার বক্তব্য ঠিক নয়

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশকে অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিতে চায়
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন অভিমত
ঠিক নয় উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ঢাকায়
নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। তিনি
বলেন, এ ধরনের নীতি তার দেশের নেই। বার্নিকাট বলেন,
বাংলাদেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কাজ
করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশকে
বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে তার দেশ। গতকাল রাজধানীতে
এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। আমেরিকান
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম)
গত ২০ জুলাই ২০১৬ সোনারগাঁও হোটেলে মধ্যাহ্নভোজের
আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত
মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। অ্যামচেম সভাপতি
নুরুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে আরও
উপস্থিত ছিলেন টেকনোহেভেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও
সিইও হাবিবুল্লাহ এন করিম ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের
এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড হেলথ অফিসার
ক্যাথরিন আর সিগ্রেভস। সংগঠনের সাবেক সভাপতি আফতাব উল
ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহসভাপতি
শওকত আলী সরকার ও দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য
দেন।
দুই টাকার
বীমায় ১০ লাখ!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জীবন বীমার অঙ্ক যত কমই হোক, আপনাকে অন্তত ৫০০ টাকা
থেকে কয়েক হাজার টাকার মাসিক প্রিমিয়াম দিতে হবে।
স্বাস্থ্য বা গাড়ির মতো সাধারণ বীমার প্রিমিয়ামও তিন
অঙ্কের নিচে নয়। এই যখন অবস্থা, তখন মাত্র দুই টাকায়
১০ লাখ টাকার বীমা একটি চমকে যাওয়ার মতো খবরই বটে।
ভারতীয় রেলওয়ে এই বীমা চালু করতে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ
জানিয়েছে, যাত্রীদের জন্য মাত্র দুই টাকার বিনিময়ে ১০
লাখ টাকার জীবন বীমা সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
করা হয়েছে। এখন জীবনবীমা সংস্থার সঙ্গে চুক্তির অপেক্ষা
করছে ভারতের লাইফলাইন খ্যাত ‘ইন্ডিয়ান রেল’।
জানা গেছে, ভারতীয় রেলযাত্রীরাই কেবল এমন সুবিধা পাবে
না; রেলে ভ্রমণকারী বাংলাদেশিসহ যেকোনো বিদেশি যাত্রীই
এ সুবিধা পাবে। আর নিয়মও সবার জন্য এক। অর্থাৎ দুই
টাকার বিনিময়ে ১০ লাখ টাকার জীবনবীমার সুবিধা
দেশি-বিদেশি সবাই পাবে। তবে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে
টিকিটের সঙ্গে এই বীমার কথা উল্লেখ করে টিকিটের
মূল্যের অতিরিক্ত দুই টাকা দিতে হবে। ভারতীয় রেলের
পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগের আওতায় পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খ ও
উড়িষ্যা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম, ত্রিপুরার রেল
যাত্রীদের মধ্যে প্রতিদিন অসংখ্য বাংলাদেশি যাত্রী
ভ্রমণ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি যাত্রী হয়
কলকাতা-দিল্লি ও কলকাতা-চেন্নাই-কাঠপাটি রুটে। ফলে
নতুন এই বীমা পরিষেবায় বাংলাদেশি যাত্রীরা ভালোভাবেই
সুযোগ পাচ্ছে।
এর আগে হেলথ ট্যুরিজম চালু করে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে
ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম করপোরেশন। এবার রেলের এই
সংস্থা জীবন বীমাও শুরু করতে যাচ্ছে। সংস্থাটির
চেয়ারম্যান অরুণ কুমার মানোছা ভারতীয় গণমাধ্যমকে
জানিয়েছেন, ইচ্ছুক সব রেলযাত্রীকে এই ইনস্যুরেন্স দেওয়া
হবে। তিনি বলেন, ‘ভারতের তিনটি শীর্ষস্থানীয় জীবন বীমা
সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। যারা আমাদের শর্ত মেনে
যুক্ত হতে পারবে, তাদেরই আমরা এই বৃহত্তম নেটওয়ার্কে
যুক্ত করব।’
বিত্তবানের
সন্তানেরা কেন জঙ্গি দলে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গুলশানে হলি আর্টিজান, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ও সর্বশেষ
ঢাকার কল্যাণপুরের ঘটনায় নিহত জঙ্গিদের মধ্যেও সাতজন
রাজধানীর উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাঁরা ইংরেজি
মাধ্যমে ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন।
গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মাদ্রাসাপড়ুয়া থেকে শুরু করে
শহুরে উচ্চবিত্তের সন্তানেরা পর্যন্ত কেন জঙ্গিবাদে
জড়িয়ে পড়ছেন, তা এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয়। বিষয়টি
ভাবিয়ে তুলেছে সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে। দুশ্চিন্তায়
পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও মনস্তত্ত্ববিদেরা বলছেন,
জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো কৌশল হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে খাপ
খাওয়াতে সক্ষম শিক্ষিত তরুণদের দলে ভেড়ানোর কৌশল নিয়েছে।
এ ক্ষেত্রে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো কিছুটা সফল হয়েছে। এখন এটা
মোকাবিলার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা, মাদারীপুরের কলেজশিক্ষককে
হত্যাচেষ্টায় জড়িত এবং সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ভোরে
কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশি অভিযানে নিহত
হয়েছেন ১৬ জন জঙ্গি। হলি আর্টিজানের ঘটনা বাদে বাকি
তিনটি ঘটনায় একজন করে সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেপ্তার
হয়েছেন।
নিহত ও গ্রেপ্তার হওয়া এই ১৯ জঙ্গির মধ্যে সাতজন ইংরেজি
মাধ্যম বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। তাঁদের মধ্যে
চারজন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, একজন ব্র্যাক
বিশ্ববিদ্যালয়ের, একজন মালয়েশিয়ার মোনাশ
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। একজন স্কলাস্টিকা থেকে ও
লেভেল পাস করা। বাকিরা মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত
পরিবারের সন্তান। তাঁদের মধ্যে চারজন কলেজছাত্র ও ছয়জন
মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। একজন পড়েছেন তৃতীয় শ্রেণি
পর্যন্ত। একজনের লাশ এখনো শনাক্ত হয়নি।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম
আলোকে বলেন, ২০১২-১৩ সাল থেকে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে
উচ্চশিক্ষিত ও অবস্থাপন্ন পরিবারের সন্তানদের
সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন,
নিম্নবিত্ত ও ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণেরাই শুধু
জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, সবাই যখন এমনটা ধরে নিয়েছে;
জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো তখন তাদের লক্ষ্যবস্তুতে নিয়েছে
শিক্ষিত তরুণদের। কারণ, বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটভিত্তিক
যোগাযোগব্যবস্থার প্রসার এবং ‘ইসলামিক রাষ্ট্র’ গঠন
করার তাদের যে লক্ষ্য, সে জন্য শিক্ষিত তরুণদেরই তাদের
প্রয়োজন বেশি। পশ্চিমা দেশগুলো থেকে যাঁরা সিরিয়ায়
গেছেন, তাঁদের বড় অংশই উচ্চশিক্ষিত।’
বিত্তবান পরিবারের শিক্ষিত তরুণদের জঙ্গিবাদের সঙ্গে
জড়িত হওয়ার বিষয়টি আগেও বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে।
২০০১ সালে এ দেশে হিযবুত তাহ্রীরের তৎপরতা শুরুর পর
থেকেই বিষয়টি ক্রমে আলোচনায় আসতে থাকে। বিত্তবান
পরিবারের সন্তান ও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্রদের কেন্দ্র করেই হিযবুত তাহ্রীর (বর্তমানে
নিষিদ্ধ) কার্যক্রম শুরু করে। তাদের সদস্যদের বড় অংশই
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা।
১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর এই বিষয়টি
সারা দেশের মানুষকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। এটা সর্বত্র
আলোচনা ও উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুলশানের ঘটনায়
নিহত পাঁচ জঙ্গির মধ্যে তিনজনই ছিলেন ইংলিশ মিডিয়াম
স্কুল ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। এর মধ্যে
রোহান ইবনে ইমতিয়াজ স্কলাস্টিকা থেকে এ লেভেল শেষ করে
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন, স্কলাস্টিকা থেকে ও
লেভেল পাস করেছিলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের। নিবরাস ইসলাম
ঢাকার টার্কিশ হোপ স্কুল থেকে পাস করে নর্থ সাউথ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে কিছুদিন পড়ার পর তিনি
মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়েছেন। তাঁদের সবার
পরিবারই অবস্থাপন্ন এবং সমাজে প্রতিষ্ঠিত। অধ্যাপক
তাজুল ইসলাম বলেন, এসব তরুণকে ফিরিয়ে আনতে হলে ধর্মেরই
সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাঁদের চক্র ভেঙে
ফেলতে হবে। একই সঙ্গে সঠিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ
হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পরিবারকে সচেতন হবে এবং
সাংস্কৃতিক কর্মকা দিয়ে জঙ্গিবিরোধী মানসিকতা গড়তে হবে।
হিন্দু নারীর জীবন
বাঁচাতে মুসলিম নারীর কিডনি দান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভারতে শামসাদ বেগম (৪০) নামে এক মুসলিম নারী আরতি (৩৮)
নামের আরেক হিন্দু নারীকে কিডনি দান করছেন।
দেশটির সম্প্রতি গাং খাওয়া নিয়ে মুসলিমদের ওপর
নির্যাতনের মধ্যে উত্তর প্রদেশের ওই নারীর কিডনি দানকে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যন্য নজির হিসেবে দেখা
হচ্ছে।
ফতেহপুর জেলা থেকে শামসাদ বেগম কিডনি দিতে
মহারাষ্ট্রের পুনেতে গেছেন। সেখানে দু'জনকেই চিকিৎসকরা
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
শামসাদ বেগম কিডনি দানের ইচ্ছাপত্রসহ যাবতীয় নথিপত্র
ফতেহপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে জমা দিয়েছেন। এখন
সরকারের অঙ্গদান অনুমোদন কমিটির সায় পেলেই পরবর্তী
কার্যক্রম চালাবেন চিকিৎসকরা।
শামসাদের ছোট বোনের বান্ধবী আরতির দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে
যাওয়ায় এক বছর ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
তার ডায়লাইসিসি চলছে, যা দেখে নিজের কিডনি দিয়ে বোনের
বান্ধবীকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন শামসাদ বেগম।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার (আরতি) শারীরিক কষ্ট দেখে আমি
আর থাকতে পারিনি, রক্তের গ্র“প পরীক্ষা করিয়ে দেখি
আমার আর তার রক্তের গ্র“প একই। এখন আমি কিডনি দেয়ার
জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’
শামসাদ বেগম বলেন, ‘ধর্ম দিয়ে নয়, মানুষকে মানুষ হিসেবে
দেখতে চেয়েছি। তাই একজন মানুষের জন্য আমার এই ত্যাগ।’
১০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর ফতেহপুরের
রাঢ়িবুজুর্গ গ্রামে বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন শামসাদ
বেগম। তার ছোট বোন থাকেন মহারাষ্ট্রের পুনেতে, সেখানে
গিয়ে আরতিকে দেখেন শামসাদ।
মেয়ের সিদ্ধান্তে কোনো আপত্তি করেননি শামসাদের বাবা
জাকির খান। তিনি বলেন, ‘সব প্রক্রিয়া শেষ। দুই পরিবারও
রাজি। এখন সরকারি কমিটির অনুমোদন পেলেই হয়।’
প্রত্যেক মানুষের দুটি কিডনি থাকলেও একটি কিডনি নিয়েই
বেঁচে থাকা সম্ভব।
ফতেহপুরের জেলার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. বিনয়
কুমার বলেছেন, তারা শামসাদ বেগমের সব কাগজপত্র
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিটিতে পাঠিয়েছেন, এখন অনুমোদনের
অপোয় রয়েছে।
মানুষের চোখ ৫৭৬ মেগাপিক্সেল
ক্যামেরা!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সৃষ্টি বড়ই অদ্ভূত। পৃথিবী জুড়ে এমন অনেক কিছুই রয়েছে,
যেগুলো সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো ধারণাই আমাদের নেই। এই
যেমন প্রত্যেকটা মানুষই ১০টা সুপার পাওয়ার নিয়ে জন্মায়।
নিজের সেই ক্ষমতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। চলুন
এর কয়েকটি জেনে নিই-
মানুষের মস্তিষ্ক বিদ্যুৎ উৎপাদক
নিউরন আমাদের মস্তিষ্কে বার্তা পাঠায়। সেই সময়ই বেশ
কিছুটা বিদ্যুৎও উৎপন্ন করে সেটি। মস্তিষ্কে তৈরি হয়
প্রায় ২০ ওয়াট বিদ্যুৎ। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ দিয়ে
জ্বালানো যেতে পারে ছোট টিউব বা ডিম লাইট।
ইস্পাতের থেকে শক্ত মানবদেহের হাড়
মানুষের শরীরের হাড় অনেক শক্ত জিনিসের থেকেও বেশি
শক্তিশালী। নিশ্চয়ই ভাবছেন ঠিক কতটা শক্ত আমাদের হাড়?
ইস্পাতের থেকে পাঁচ গুণ বেশি শক্ত।
মানুষের চোখ আসলে ৫৭৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা
দিনরাত তো কোন ফোনের ক্যামেরা কত মেগাপিক্সেল, তা
নিয়েই মেতে রয়েছেন। ৮ থেকে ৪১ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার
ফোন বাজারে এসেছে। আর যদি উঝখজ ক্যামেরার কথা বলেন, তবে
তার ক্ষমতা ১২০ মেগাপিক্সেল।
শরণার্থী সহায়তায় ধনী দেশগুলির অনীহা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শরণার্থী, এসাইলাম আবেদনকারী আর অভিবাসী গ্রহণ-বর্জন
লইয়া ইউরোপ-আমেরিকার রাজনীতিতে কত কিছুই না ঘটিয়া
চলিয়াছে। বহিরাগত অভিবাসীদেরকেও সকল সমস্যার মূল হিসাবে
চিহ্নিত করিয়া উগ্রবাদী ও রক্ষণশীল দলগুলি পশ্চিমের
দেশে-দেশে একের পর এক ফায়দা লুটিয়া চলিয়াছে বেশ কিছু
দিন ধরিয়া। সিরিয়া কিংবা ইরাকের মত দেশগুলি হইতে প্রাণ
বাঁচাইতে আগত মানুষজনকে ঠেকাইতে ইউরোপ তাহার সদর দরজায়
হরেক রকমের অর্গল বসাইতেছে। অক্সফ্যামের সদ্য প্রকাশিত
একটি প্রতিবেদনে দেখা যাইতেছে যে, শরণার্থী গ্রহণে ধনী
দেশগুলি প্রচ অনীহার মুখে নিম্ন আয়ের কয়েকটি দেশই মূলত
বৈশ্বিক শরণার্থীদের বড় ভারটি বহন করিয়া চলিয়াছে।
বর্তমানে বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা ৬৫ মিলিয়ন। ইহাদের
বড় অংশ নিজ-দেশের মধ্যেই স্থানান্তরণে বাধ্য হইয়াছে।
অন্য দেশে আশ্রয় লওয়া প্রায় সাড়ে ২১ মিলিয়ন শরণার্থীর
মধ্যে সর্বাধিক ধনী ৬টি দেশ দুই মিলিয়নের সামান্য অধিক
শরণার্থী ও এসাইলাম আবেদনকারীকে ঠাঁই দিয়াছে। এই
দেশগুলি হইতেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি,
ফ্রান্স, চীন ও জাপান। ইহাদের মধ্যে জার্মানি
সর্বোচ্চ সাত লক্ষাধিক, যুক্তরাষ্ট্র পাঁচ লক্ষাধিক,
ফ্রান্স তিন লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় দিয়াছে। যুক্তরাজ্যে
স্থান হইয়াছে দেড় লক্ষের কিছু বেশি মানুষের। এশিয়ার
মধ্যে চীন তিন লক্ষের মত মানুষকে আশ্রয় দিলেও, জাপান
মাত্র ষোল হাজার মানুষের জন্য দ্বার উন্মোচন করিয়াছে।
উল্লেখ্য, এই ছয় দেশ একসঙ্গে বৈশ্বিক জিডিপি’র প্রায়
৫৭ শতাংশ ধারণ করে। মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের পরিণতিতে
শরণার্থী গ্রহণের ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলির এহেন অনীহাকে
‘১৯৫১ সালের জাতিসংঘ রিফিউজি কনভেনশনের’ চূড়ান্ত
বরখেলাপ মনে করিতে কোথাও বাধা থাকিতেছে না।
ধনী দেশগুলির অবস্থার বিপরীতে, যেকোনো কারণেই হউক,
শরণার্থীদের ভার বহন করিতেছে এমন ছয়টি দেশ যাহাদের
সমন্বিত জিডিপি বৈশ্বিক জিডিপি’র দুই শতাংশেরও কম। এই
দেশগুলি হইতেছে জর্দান, তুরস্ক, অধিকৃত ফিলিস্তিন
অঞ্চল, পাকিস্তান, লেবানন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এইসব দেশ
বিশ্বের মোট শরণার্থীর ৫০ ভাগের অধিকের আশ্রয়স্থল। জান
বাঁচাইতে নিরুপায় মানুষজনকে আশ্রয় এই দেশগুলি দিয়াছে
বটে; কিন্তু তাহাদের সামর্থ্য অতি সীমিত। এইসব দেশসহ
অন্যান্য নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে শরণার্থীরা বাস্তবে
মানবেতর জীবনযাপন করিতেছে। মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণের
জন্য নিত্যকার সংগ্রাম, নিরাপত্তার অভাব, বেকারত্ব,
জঙ্গিবাদের প্রকোপ, অবৈধ কর্মকাে জড়াইয়া পড়িবার ঝুঁকি
শরণার্থী জীবনকে প্রতিনিয়তই দুর্বিষহ করিয়া রাখিতেছে।
বিপুল সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয়দানকারী এই দেশগুলি এই সকল
দুর্বিপাক হইতে শরণার্থীদিগকে মুক্ত করিবার মত
অর্থনৈতিক অবস্থায় নাই। ধনী দেশগুলি যদি এইক্ষেত্রে
আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মান্য করিয়া প্রয়োজনমাফিক
সহায়তার হস্ত প্রসারিত করে তাহা হইলে শরণার্থীদের
দুর্বিষহ জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আসিতে পারে।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
--------------------------------------
গৃহকর্মী নির্যাতন
হচ্ছেই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
১১ বছর বয়সী গৃহকর্মী আদুরি। নাম আদুরি হলেও ওর ভাগ্যে
কখনো আদর জোটেনি। বরং কাজ করতে এসে নানা ধরনের
অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আদুরিকে ঠিকমতো
খাবার দেওয়া হয়নি কখনো। মুখে আগুনের ছ্যাঁকা দিয়ে
পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইস্ত্রি দিয়েও গায়ে ছ্যাঁকা দেওয়া
হয়েছে। গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান ব্লেড দিয়ে সারা শরীর
কেটে দিয়েছেন। নানা ধরনের বীভৎস নির্যাতন করেও ক্ষান্ত
হননি তিনি। একদিন মারতে মারতে আদুরিকে মৃত ভেবে
ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। রাজধানীর বারিধারা ডিওএইচএস
এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া যায়
আদুরিকে। এরপর হাসপাতালে নিলে দেখা যায়, লিকলিকে
শরীরের আদুরির সারা গায়ে নির্যাতনের চিহ্ন। শরীরজুড়ে
দগদগে ঘা। মাথার হাড়ে ফাটল। হাতে ব্যান্ডেজ। সূত্র:
প্রথম আলো
পরিবার-নিজস্ব পরিবেশ ছেড়ে বেঁচে থাকার তাগিদে বহু শিশু
ও নারী গৃহকর্মীর কাজ করেন। রাতদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম
করতে হয় গৃহকর্ত্রীর মন জয় করতে। কিন্তু বেশির ভাগ
সময়ই গৃহকর্মীদের ভাগ্যে জোটে নির্যাতন। কাজ একটু
এদিক-সেদিক হলেই মারধর থেকে শুরু করে গরম খুন্তির
ছ্যাঁকা, ধারালো ছুরি-ব্লেডের আঁচড় খেতে হয়। অনেকে
আবার গৃহকর্মীকে ঠিকমতো খাবারও দেন না। এমনকি গৃহকর্তা
ও গৃহকর্ত্রী দুজনে মিলেই গৃহকর্মীর ওপর পাশবিক
নির্যাতন চালান। এমনকি গৃহকর্মী হত্যার ঘটনাও কম ঘটে
না।
বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার
স্টাডিজের (বিলস) তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে গত পাঁচ বছরে
১৮২ জন নির্যাতিত গৃহকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছেন
কমপক্ষে ১৪৩ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে মোট ৭৮ জন গৃহকর্মী
নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু
হয়েছে।
দুমুঠো খাবার আর পরিবারের খরচ জোগাতে নীলফামারী থেকে
রংপুরে আসে গৃহকর্মী রেশমা (ছদ্মনাম)। ১২ বছর বয়সে যখন
স্কুলে থাকার কথা, তখন কাজ নেয় রংপুরের মিঠাপুকুর
উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তার বাসায়। কিন্তু রেশমার সে
বাসায় কাজ করা হয়ে ওঠেনি। পরিবারকেও কোনো সাহায্য করা
হয়নি। বরং তাকে আশ্রয় নিতে হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে। সেখান থেকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে।
কারণ, গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন
রাতেই গৃহকর্তা শিশুটির ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এতে
গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় শিশুটি। সূত্র: প্রথম আলো
গৃহকর্মী নির্যাতনের এ রকম হাজারো উদাহরণ আছে। তবে
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ‘বাংলাদেশে নারীর
প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে
২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতনের
ঘটনা কমেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মোট ৪৮ জন
গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫
জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৬ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
২০১৪ সালে সেখানে ১০৮ গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার
হয়েছিলেন। অর্থাৎ ২০১৪ সালের তুলনায় গৃহকর্মী
নির্যাতনের ঘটনা ৫৬ শতাংশ কমেছে।
যৌতুকের বলি
হয়েই চলেছেন নারীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আঠারোতে পা দিতেই বিয়ে হয় নাটোরের সিংগাইর উপজেলার
বাস্তা গ্রামের মেয়ে আঁখি আক্তারের। বর একই উপজেলার
ভূমদক্ষিণ গ্রামের ছেলে মান্নান বিশ্বাস। বিয়ের পর
থেকেই স্বামী ও তাঁর পরিবার পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি
করে আসছিল আঁখির পরিবারের কাছে। কিন্তু দেওয়ার
সামর্থ্য তাঁদের নেই। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর
মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। যৌতুককে কেন্দ্র করেই একদিন
আঁখিকে মারধর করেন স্বামী। মেয়েকে মারধরের খবর পেয়ে
আঁখিকে দেখতে আসেন মা। তখন মাকে অপমান করেন আঁখির
শাশুড়ি-দেবরসহ সবাই। মায়ের অপমান সহ্য করতে না পেরে এবং
যৌতুকের কারণে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওই দিন রাতেই
বাথরুমে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন আঁখি।
এভাবেই বিয়ের মাত্র তিন বছরের মাথায় যৌতুকের বলি হন
আঁখি।
সামাজিক একটি সমস্যা যৌতুকের কারণে সবচেয়ে বেশি
পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা
আইনজীবী সমিতির ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা’
শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ সালে যৌতুকের কারণে
৩৯২ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সংখ্যা ২০১৪
সালের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে
১৯২ জনকে। আর নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন
১৮ জন। ২০১৪ সালে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার
হয়েছেন ৩০৭ জন।
২০১৪ সালে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩০৭
জন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান
নেহাল করিম বলেন, ‘সমাজে যৌতুকের লেনদেন আগেও ছিল। এখনো
আছে। তবে আগের তুলনায় যৌতুক বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো
মানুষের যেমন আয় বেড়েছে, তেমনি চাহিদাও বেড়েছে। এককথায়
বিনাশ্রমে মেয়ের কাছ থেকে যতটুকু উশুল করে নেওয়া যায়।
আর দিন দিন আমাদের মানসিকতা নিচের দিকে যাচ্ছে, আমরা
সংকীর্ণমনা হয়ে পড়ছি। যার মধ্যে আত্মসম্মানবোধ আছে,
তিনি কখনো যৌতুক দাবি করবেন না বা নেবেন না।
যৌতুক আদায় করতে স্বামীরা নানা উপায় অবলম্বন করছেন।
কেউ স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করছেন, কেউবা করছেন
মানসিক নির্যাতন। আর না পেলেই তাঁকে মেরে ফেলা হচ্ছে।
রংপুরের পীরগাছায় গৃহবধূ তহমিনা খাতুনের (৩২) গায়ে
জ্বলন্ত কুপি ছুড়ে মারেন স্বামী ও শাশুড়ি। এতে তাঁর
গায়ে আগুন ধরে শরীরের ৫০ শতাংশ পুড়ে যায়। বিয়ের ১৩ বছর
পর এই ঘটনা ঘটে। এর আগে তাঁকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়া
হয়েছিল। চড়-থাপ্পড়ে একটি কানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবু দুই
মেয়ের কথা ভেবে সংসার করে যাচ্ছেন তিনি। (সূত্র: ২৮
ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ প্রথম আলো)
বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যান
অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত শুধু যৌতুকের
কারণে ১ হাজার ২৪৩ জন নারীকে স্বামী ও তাঁর স্বজনেরা
হত্যা করেছে। একই সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের
শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৩৪ জন নারী।
পরিবারে
বয়স্ক নারীদেরও নির্যাতন সইতে হয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রৌদ্রোজ্জ্বল সকালেও অঝোর ধারায় কেঁদে চলেছেন ৬৬ বছর
বয়সী রিজিয়া বেগম (ছদ্মনাম)। মাস ছয়েক হলো তাঁর ঠিকানা
হয়েছে আগারগাঁওয়ের প্রবীণ নিবাস। ফেলে আসা সোনালি
অতীতের কথা ভেবে চোখের পানি ফেলছেন তিনি। ধানমন্ডিতে
বাড়ি থাকার পরও স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেমেয়েরা জোর করে
তাঁকে এখানে রেখে গেছেন। এমনকি বাড়িটিও নিজেদের নামে
লিখিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের অজুহাত, এই বয়সে রিজিয়া বেগমের
দেখাশোনা করবে কে। যখন একসঙ্গে বাড়িতে ছিলেন, তখন
প্রতিনিয়ত বউ-ছেলেদের মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন।
খাওয়া থেকে শুরু করে থাকার ঘর নিয়ে শুনতে হতো কটু কথা।
অসুস্থ হলে বা কোনো কিছুর প্রয়োজন হলেই সহ্য করতে হয়েছে
বউদের মুখ ঝামটা, খারাপ ব্যবহার। ছেলেদের কাছে এ নিয়ে
অভিযোগ করলে উল্টো তাঁকেই দোষারোপ করেছেন ছেলেরা।
তাঁরাও খারাপ ব্যবহার করেছেন মায়ের সঙ্গে। বৃদ্ধ বয়সে
এমন পরিণতি মন থেকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
মুন্সিগঞ্জের হালিমুন নেছা (ছদ্মনাম) স্বামীকে নিয়ে
মিরপুর কালশী বস্তিতে থাকেন। ছেলেমেয়েরা বাবা-মায়ের
খোঁজও রাখেন না। স্বামী অসুস্থ থাকায় তাঁকেই সংসারের
দায়িত্ব নিতে হয়েছে। মিরপুর-১ থেকে শাক কিনে কালশীতে
বিক্রি করেন ৬৪ বছর বয়সী হালিমুন নেছা। সময়মতো খাবার
না পেলেই গালাগাল, মারধর শুরু করেন স্বামী। একবার
পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছিলেন। ছেলেদের সঙ্গে থাকার সময়ে
বউদের হাতে প্রায়ই মার খেতে হতো তাঁকে। আর গালাগালি,
খারাপ ব্যবহার ছিল প্রতিদিনকার ঘটনা। আয় করলেও সে টাকা
খরচের অধিকার নেই তাঁর। দিন শেষে সব টাকা তুলে দিতে হয়
স্বামীর হাতে।
মানসিক নির্যাতনের বিষয়টিকে এ দেশে গুরুত্ব দেওয়া না
হলেও বয়স্ক নারীদের ওপর এর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব
ফেলে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী
অধ্যাপক আহমেদ হেলাল বলেন, ‘নারীদের স্বাভাবিকভাবেই
সামাজিক ঝুঁকি বেশি, বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে তা আরও
বেড়ে যায়। বয়স্ক নারীদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার কারণে
তাঁদের মনোজগতে দুই ধরনের প্রভাব পড়ে। প্রাথমিক
ক্ষেত্রে সন্তান বা নিকটাত্মীয়ের এ ধরনের আচরণ প্রতারণা
হিসেবে নেয়। এটিকে বলা হয় একুইট স্টেজ। আর এ ধরনের
আচরণ দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে তাঁদের মধ্যে একধরনের ক্রনিক
স্টেজ তৈরি হয়, যাতে তাঁরা বিষণœতায় ভোগেন,
নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশের
বয়স্কদের জন্য বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি-একটি পর্যালোচনা’
শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে,
বাংলাদেশে পারিবারিক সুরক্ষার অভাবে বয়স্ক নারীরা
বয়স্ক পুরুষের তুলনায় বেশি মানসিক চাপ ও একাকিত্বে
ভোগেন। পাশাপাশি সামাজিক মূল্যবোধের কারণে নারীদের
বৃদ্ধ বয়সে বৈধব্য ও তালাকের যন্ত্রণা বেশি ভোগ করতে
হয়।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
রেলওয়ে পুলিশের নির্যাতনে মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জামালপুর রেলস্টেশনে রেলওয়ে (জিআরপি) পুলিশের নির্যাতনে
আবদুল বারী নামের এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ১১
জুলাই ২০১৬ দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে দোষীদের
শাস্তির দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
নিহত মুক্তিযোদ্ধার পারিবারিক সূত্র জানায়,
মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবদুল বারীর ছোট
ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র মাজহারুল
ইসলাম বাবু আজ সকাল সোয়া ৫টার দিকে রাজশাহী যাওয়ার
উদ্দেশে জামালপুর স্টেশনে আসেন। ৫ আপ ট্রেনে তাঁর
রাজশাহী যাওয়ার কথা। কিন্তু টিকেট থাকা সত্ত্বেও জিআরপি
পুলিশ সদস্যরা তাঁকে আটক করে টিকেট কালেক্টারদের কক্ষে
আটকে রাখেন। অন্য লোকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা
আবদুল বারী ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে দুপুর ১২টার দিকে
স্টেশনে যান। স্টেশনে ছেলেকে ছাড়ানোর চেষ্টার সময়
পুলিশ আবদুল বারীর ওপর চড়াও হয়। জিআরপি থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌরচন্দ্র মজুমদারের
উপস্থিতিতে পুলিশ স্টেশনের প্লাটফরম এলাকায়
মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে বেদম পিটিয়ে আহত করে। পরে
গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে জামালপুর জেনারেল
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ময়মনসিংহে সম্মিলিত
সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে
বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা
সংসদের জামালপুরের জেলা কমান্ডার সাবেক সংসদ সদস্য
শফিকুল ইসলাম খোকা জানিয়েছেন, জিআরপি থানার ওসিসহ অন্য
সদস্যরা প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারীকে
অমানবিকভাবে পিটিয়ে আহত করেন। অবিলম্বে দোষীদের
শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে মৃতদেহ
আসার পর আমরা দোষীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি
ঘোষণা করব।’
এ ব্যাপারে জামালপুর জিআরপি থানার ওসি গৌরচন্দ্র
মজুমদার বলেন, স্টেশনে বিনা টিকেটের যাত্রীদের আটক
অভিযান চলছিল। এ সময় ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে আটকের পর
ছেড়ে দেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারী স্টেশন
প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে পুলিশকে লক্ষ করে গালিগালাজ করলে
ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলে তিনি মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন।
মৃত্যুর বিষয়টি তিনি জানেন না।
সহোদর হত্যার
দায়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গাজীপুরে সহোদরকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই মো. বোরহান
উদ্দিনকে (২৫) মৃত্যুদ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ একেএম এনামুল
হক এ রায় দেন।
একই সঙ্গে রায়ে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং
অন্য এক ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদ সহ ৫ হাজার টাকা
জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদ দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভেকেট
হারিজ উদ্দিন আহমেদ। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোঃ
সুলতান উদ্দিন।
হারিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, আসামি বোরহান উদ্দিন
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঠেঙ্গেরবান এলাকার মাওলানা
ইউসুফ আলীর ছেলে।
পারিবারিক কারণে বোরহান উদ্দিন ও তার বড় ভাই জহিরুল
ইসলামের মধ্যে বিবাদ ছিল।
২০১৩ সালের ১২ এপ্রিল দুপুর দুইটার দিকে বোরহান বাড়ির
গোয়াল ঘরে বড় ভাই জহিরুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম
করে।
পরে জহিরুলকে অজ্ঞান অবস্থায় টেনেহেঁচড়ে বাড়ির কাঁচা
টয়লেটের ম্যানহোলে ফেলে ঢাকনা লাগিয়ে দেয়।
মুক্তি পেলেন শতবর্ষী কয়েদি
অহিদুন্নেছা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মুক্তি পেয়েছেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শতবর্ষী কয়েদি
অহিদুন্নেছা। গত ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া
হয়েছে। কারাফটক পেরিয়ে মুক্ত পৃথিবীতে পা রেখে আনন্দে
কেঁদে ফেলেন। তাঁকে নিতে আসা স্বজনদের বুকে জড়িয়ে ধরেন।
অবসান ঘটে তাঁর ২০ বছরের কারাজীবনের।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র
কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল
বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ ১৮ জুলাই ২০১৬ দুপুরে এক
রায়ে অহিদুন্নেছার যাবজ্জীবন কারাদে র রায় বাতিল করে
তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দেন। ওই দিন সন্ধ্যায়ই
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ওই বৃদ্ধার সেলে গিয়ে
মুক্তির খবর জানান। খবর শুনে আশু মুক্তির আনন্দে তিনি
কেঁদে ফেলেন। এ সময় তাঁর মুক্তিতে সহায়তা করায় প্রধান
বিচারপতি, কারা কর্তৃপক্ষ ও আইজি প্রিজনসের প্রতি গভীর
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
১৮ জুলাই ২০১৬ রাত ১১টার দিকে আদালত থেকে অহিদুন্নেছার
মুক্তির আদেশ কারাগারে এসে পৌঁছায়। যাচাই-বাছাই শেষে
গত ২০ জুলাই ২০১৬ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অহিদুন্নেছাকে
মুক্তি দেওয়া হয়। তার আগে রাতেই কয়েদির পোশাক পরিবর্তন
করে তাঁকে কারাগারে প্রবেশের সময়ের পোশাক পরানো হয়।
সূত্র জানায়, চাঁদপুরের মতলব থানার এক হত্যা মামলায়
যাবজ্জীবন (৩০ বছরের) সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০০০
সালের ১৪ মে কারাগারে আসেন প্রায় শত বছর বয়সী
অহিদুন্নেছা। ২০০৭ সালের ২৩ নভেম্বর তাঁকে কাশিমপুর
মহিলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তিনি ছিলেন
কারাগারের সবচেয়ে বায়োজ্যেষ্ঠ নারী কয়েদি।
জানা গেছে, ভালো আচরণের জন্য কারাগারের সবাই
অহিদুন্নেছাকে পছন্দ করত। আর ১৬ বছর ধরে কারাগারে বন্দি
থাকলেও রেয়াত পেয়ে ইতিমধ্যে তাঁর ২০ বছর সাজা ভোগ করা
হয়ে গেছে। কারণ ভালো কাজের জন্য জেল কর্তৃপক্ষ একজন
কয়েদিকে বছরে তিন মাস সাজা রেয়াত দিতে পারে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গত ২৬ জুন
কাশিমপুর কারাগার কমপ্লেক্স পরিদর্শনে আসেন। এ সময় কারা
কর্তৃপক্ষ অহিদুন্নেছাকে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা
করার সুযোগ করে দেয়। তাঁর কথা শুনে প্রধান বিচারপতি
জেল কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
দেন।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
বাদাম শুধু খেতেই মজা নয়, গুণও অনেক!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বাদাম শুধু পখতেই মজা নয়, বাদামে রয়েছে খাদ্যের মৌলিক
উপাদান। নিরামিষাশীদের মধ্যে যারা হাজেল নাট, আখরোট,
কাঠ বাদাম এসব খেয়েছেন তাঁদের হাটেঅর অসুখ কম হয়েছে।
শুধু খেতে মজা নয়, গুণও অনেক বাদাম শুধু খেতে মজা নয়,
নানা ধরনের বাদামে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়
পুষ্টিগুণ। আর তা হাজার বছর আগে থেকেই জানে মানুষ?
আমাদের পূর্ব পুরুষদের বেঁচে থাকার জন্য নানা ধরনের
বাদাম ও বীজ খেতে হয়েছে? শুধু তাই নয়, আজও বিভিন্ন
খাবারের পাশাপাশি বাদামকে সংযোজন করা হয়।
মৌলিক উপাদান
শক্ত খোসার ভেতরেই রয়েছে খাদ্যের মৌলিক উপাদান?
রেগেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও পুষ্টি
বিশেষজ্ঞ গ্যুন্থার হির্শফেল্ডার বলেন, বাদাম এবং
অন্যান্য বীজ সেই প্রস্তরযুগ থেকেই দরকারি শস্য হিসেবে
খাওয়া হচ্ছে।
গবেষণার ফল
সম্প্রতি ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি
গবেষণার ফলাফল থেকে জানা গেছে, স্পেনের বার্সেলোনায়
নিরামিষভোজী ৭৪০০ জন মানুষের মধ্য একটি গবেষণা করা
হয়েছিল? এতে দেখা গেছে, নিরামিষাশীদের মধ্যে যারা
হাজেল নাট, আখরোট, কাঠ বাদাম এসব খেয়েছেন তাদের
হার্টের অসুখ কম হয়েছে। অন্য নিরামিষাশীরা আবার খাবারে
যথেষ্ট পরিমাণে অলিভ অয়েল ব্যবহার করেছেন।
চর্বি হলেও প্রয়োজন
বাদাম খেতে মজা হলেও যথেষ্ট চর্বি থাকার কারণে অনেকেই
বাদাম খাওয়া থেকে দূরে থাকেন। এটা প্রমাণিত যে বাদামে
সত্যিই প্রচুর চর্বি রয়েছে? তবে তার সঙ্গে সঙ্গে এতে
যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিনও আছে? এসব
খাদ্যগুণ থাকায় বাদাম যে কোনো ধরনের হার্টের সমস্যা
প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়া, কলেস্টোরেল কমাতেও ভূমিকা
রাখে বাদাম। একথা বলেন ম্যুন্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের
খাদ্য বিশেষজ্ঞ প্রোফেসর উরসেল ভারবুং।
প্রোটিনের উৎস
বাদাম বা বিভিন্ন বীজ প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করতে
পারে? তবে খুব বেশি পরিমাণে বাদাম খাওয়া ঠিক নয়।
প্রতিদিনই কয়েকটি করে বাদাম মোটামুটি সকলেই খেতে পারেন।
তাছাড়া বাদাম অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
আরবের খেজুর সাতটি
রোগের মহাওষুধ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আমাদের দেশে সৌদি আরবের খেজুর সারা বছর পাওয়া গেলেও
মূলত রমজান মাস ছাড়া ফলটি খুব একটা কেউই খায় না।
সারা বছর কম খাওয়ার ফলে রমজান মাসে ফলটির চাহিদা বেড়ে
যায় বহুগুণ।
কিন্তু আপনি কি জানেন আরবের এই ফলটির মধ্যে লুকিয়ে আছে
সাতটি রোগের মহাওষুধ। আসুন জেনে নিই খেজুরের সেই সাতটি
রোগের বিরুদ্ধে কিছু স্বাস্থ্যগত গুণের কথা।
১। দ্রুত শক্তি প্রদানকারী
খেজুরে আছে গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ যা আপনাকে
শক্তি দিয়ে থাকে। এটি খুব দ্রুত কাজের শক্তি ফিরিয়ে
নিয়ে আসে শরীরে। আপনি যদি খুব ক্লান্ত থাকেন তখন কিছু
খেজুর খাবেন, দেখবেন শরীরের ক্লান্তি এক নিমিষে দূর হয়ে
গেছে।
২। রক্ত স্বল্পতা দূর করে
যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। তারা নিয়মিত খেজুর খেতে
পারেন। খেজুর রক্ত উৎপাদন করে দেহের রক্তের চাহিদা
পূরণ করে থাকে।
৩। কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
খেজুরে কোনো কোলেস্টেরল এবং বাড়তি পরিমাণে চর্বি থাকে
না। ফলে আপনি সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করে অন্যান্য
ক্ষতিকর ও চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
৪। ওজন কমিয়ে থাকে
মাত্র কযয়েকটা খেজুর কমিয়ে দেয় ক্ষুধার জ্বালা। এবং
পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আর এই কয়েকটি
খেজুর শরীরের শর্করার চাহিদাও পূরণ করে থাকে। ফলে আপনি
শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ না করলেও শরীরে শর্করার অভাব
হয় না।
৫। হজমে সাহায্য করে
কখনো বেহিসেবি খাওয়াদাওয়া করে ফেললে, অনেক সময় বদহজম
হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি দেবে কয়েকটি
খেজুর।
৬। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ যা খাদ্য পরিপাক হতে
সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। ডায়রিয়া হলে
কয়েকটি খেজুর খান। এটি ডায়রিয়া রোধ করতে সাহায্য করবে।
৭। ক্যান্সার প্রতিরোধ
অবাক হলেও সত্য খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এক
গবেষণায় দেখা যায় খেজুর পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
আর যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যান্সারের
ঝুঁকিটা কমে যায় অনেকখানি।
কিসমিসের গুণাগুণ
মানবাধিকার হলেথ ডেস্কঃ
কিসমিসকে শুকনো ফলের রাজা বলা হয়। সোনালী-বাদামী রংয়ের
চুপসানো ভাঁজ হওয়া ফলটি খুবই শক্তিদায়ক। আংগুর শুকিয়ে
তৈরি করা হয় মিষ্টি স্বাদের কিসমিস। এটি খেলে শরীরের
রক্ত দ্রুত বৃদ্ধি পায়, পিত্ত ও বায়ুর সমস্যা দূর হয়।
এটি হৃদপিন্ডের জন্যও উপকারি।
যে কোনো মিষ্টি খাবারের স্বাদ এবং সৌন্দর্য বাড়ানোর
কাজেই আমরা কিসমিস ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও অনেকে
পোলাও, কোরমা এবং অন্যান্য অনেক খাবারে কিসমিস ব্যবহার
করেন। রান্নার কাজে ব্যবহার করলেও আমরা কিসমিস
সাধারণভাবে খাই না। অনেকে তো ভাবেন এমনি কিসমিস খাওয়া
স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এই কথাটা আসলে সত্যি নয়।
প্রতিদিন কিসমিস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।
আসুন জেনে নেই কিসমিস আমাদের স্বাস্থের কি কি উপকার
সাধন করে:
১। হজমে সাহায্য করে:
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা আমাদের
পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হ’তে সাহায্য করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
২। রক্তশূন্যতা দূর করে:
রক্তশূন্যতার কারণে অবসাদ, শারীরিক দুর্বলতা, বা রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যতে পারে; এমনকি, বিষণœতাও দেখা
দিতে পারে। কিসমিসে আছে, প্রচুর পরিমাণে লৌহ উপাদান,
যা রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
৩। জ্বর নিরাময় করে:
কিশমিশ রয়েছে প্রচুর পরিমানে ব্যাকটেরিয়ারোধী, এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফলে এটা ভাইরাল এবং
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জ্বর
নিরাময় করতে সাহায্য কারে।
৪। ক্যান্সার:
খাবারে প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল
ক্যান্সার ঝুঁকি কমে যায়। এক টেবিল চামচ কিসমিস ১
গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে। কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে
রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা
প্রদান করে।
৫। এসিডিটি কমায়:
রক্তে অধিক মাত্রায় এসিডিটি (অম্লতা) বা টক্সিসিটি (বিষ
উপাদান) থাকলে, তাকে বলা হয়, এসিডোসিস। এসিডোসিসের (রক্তে
অম্লাধিক্য) কারণে বাত, চর্মরোগ, হৃদরোগ ও ক্যান্সার
হতে পারে। কিশমিশ রক্তের এসিডিটি কমায়।
৬। চোখের যতেœ:
আপনি কি জানেন, প্রতিদিন কিসমিস খেলে বৃদ্ধ বয়সে
অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ? কিসমিসে আছে প্রচুর
পরিমাণ, এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।
কিশমিশে আছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট, যা
অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে।
৭। দাঁতের ও হারের সুরক্ষা:
কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও
হাড় মযবুত করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিসমিসে
আরো রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের
ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে।
৮। দেহে শক্তি সরবরাহকারী:
দুর্বলতা দূরীকরণে কিসমিসের জুড়ি মেলা ভার। কিসমিসে
রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ, যা তাৎক্ষণিকভাবে
দেহে এনার্জি সরবরাহ করে। তাই দুর্বলতার ক্ষেত্রে
কিসমিস খুবই উপকারী।
৯। অনিদ্রা:
কিশমিসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর আয়রন যা মানুষের অনিদ্রার
চিকিৎসায় বিশেষ উপকারী।
১০। উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্ট্রোরেল কমায়:
কিশমিশ শুধুমাত্র রক্তের মধ্যে থাকা বিষোপাদান কমায়
তাই না, বরং উচ্চরক্তচাপও কমায়। কিশমিশে আছে
এন্টি-কোলোস্ট্রোরেল উপাদান যা রক্তের খারাপ
কোলোস্ট্রোরেলকেহ্রাস করতে সাহায্য করে। কিশমিশের
দ্রবণীয় আশ, লিভার থেকে কোলোস্ট্রোরেল দূর করতে
সাহায্য করে।
১১। ইনফেকশন হতে বাধা প্রদান করে
কিশমিশের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরি উপাদান যা
কাঁটা ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা দূরে
রাখে।
১২। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কিশমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের
পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
আমরা আজকাল ভাজাপোড়া খাবার খেতে পছন্দ করি। কিন্তু
সেগুলোর অধিকাংশই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমাদের
খাদ্য তালিকায় প্রথম পছন্দ হওয়া উচিৎ প্রাকৃতিক খাবার।
ফলমূল হলে তো কথাই নেই। তাই খাদ্য তালিকায় আজই কিসমিস
যোগ করুন।কিসমিসে থাকা বোরন মস্তিষ্কের জন্য খুবই
উপকারি। বোরন ধ্যান বাড়াতে সহায়ক। ফলে কাজে মনোযোগ বাড়ে।
এটি বাচ্চাদের পড়াশোনাতেও মনোযোগী করে তুলতে পারে।
মৃত্যুর কয়েক সেকেন্ড পর মানুষের
শরীরে যা ঘটে!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
মৃত্যু এক চিরন্তন সত্য। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই তো জীবন
শেষ। মৃত্যু নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক শঙ্কা কাজ করে
স্বাভাবিকভাবেই; কিন্তু মৃত্যু ঘটবেই, একে এড়িয়ে
যাওয়ার কোনো উপায়ও তাই নেই। মৃত্যুর পর নশ্বর দেহতে
কিছু পরিবর্তন ঘটে প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গেই।
জানলে অবাক হবেন, মানুষ মারা যাওয়ার পরও তার কিছুদিন
পর্যন্ত হাতের নখ ও চুল বৃদ্ধি পায় বলে মনে হয়! এ তো
গেল অন্য কথা, তবে আজীবন বয়ে বেড়ানো শরীর মৃত্যুর পর
প্রকৃতির সঙ্গেই মিশে যায় ধীরে ধীরে। মেন্টাল ফ্লস
নামের একটি ওয়েবসাইটে মৃত্যুর পর নশ্বর মানবদেহের
পর্যায়ভিত্তিক পরিণতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
১. মৃত্যুর পর মস্তিষ্কের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এটি
ঘটবে সেকেন্ডের ব্যবধানে।
২. শরীরের তাপমাত্রা শীতল হয়ে যাবে।
৩. অক্সিজেনের অভাবে কোষগুলোর মৃত্যু ঘটতে আরম্ভ করবে।
সে সঙ্গে কোষগুলোয় ভাঙন ধরবে, যা পচন প্রক্রিয়ার আগ
পর্যন্ত চলবে। এটি ঘটবে মিনিটের ব্যবধানে।
৪. শরীর প্রসারিত হওয়ার কারণে পেশির মধ্যে ক্যালসিয়াম
তৈরি হতে থাকে। এটি ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়। এটি ঘটবে
ঘণ্টার ব্যবধানে।
৫. পেশিগুলো শিথিল হয়ে যায়।
৬. ত্বক শুষ্ক, সংকুচিত দেখায়। এর কারণে চুল ও নখ বড়
হয়ে যাবে বলে মনে হবে।
৭. মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে রক্তে টান পড়বে। এতে করে
শরীরের চামড়ায় কালশিটে পড়া বা অনেকটা দাগের মতো দেখা
যাবে।
৮. শরীরের এনজাইমগুলো নিজেদের ভেতরের
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো হজম করতে শুরু করে, প্রক্রিয়াটি
ত্বরান্বিত করে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি। এটি ঘটবে দিনের
ব্যবধানে।
৯. পচনশীল দেহের থেকে পিউট্রিসিন বা ক্যাডাভেরিন নামের
রাসায়নিক উপাদান নির্গত হওয়ার কারণে দুর্গন্ধ তৈরি হবে।
১০. এক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ শরীর
খেয়ে ফেলতে থাকবে। সপ্তাহের ব্যবধানে এটি ঘটতে শুরু
করবে।
১১. শরীর বেগুনি থেকে কালো হয়ে যাবে, কারণ
ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে শরীরের বিয়োজন অব্যাহত থাকবে।
১২. চুল ঝরতে শুরু করে।
১৩. চার মাসের মধ্যে বাকি রইবে শুধু কঙ্কাল, বাকি
সবটাই মিশে যাবে মাটির সাথে ।
প্রতিদিন দই খাওয়ার উপকারিতা
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
দই খুব পুষ্টিকর ও সুস্বাদু একটি খাবার। প্রতিদিনের
খাদ্যতালিকায় দই রাখা উচিত। দই অত্যন্ত উপকারী খাবার
যা শরীরের নানা সমস্যা দূর করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ায়। দেখে নিন দইয়ের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা-
- দই হজমশক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস, পেটের গোলমাল ইত্যাদি
সমস্যা থাকলে দই খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল।
- দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন।
যাদের দুধ সহ্য হয় না, তাদের জন্য এই দুধজাত খাবারটি
আদর্শ।
- অনেকেই হয়তো জানেন না হ্যাংওভার কাটাতে অত্যন্ত
উপকারী এই খাদ্য।
- দই হল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং এটি শরীরকে প্রচুর
পরিমাণে এনার্জি সরবরাহ করে।
- ত্বক ও চুলের পক্ষে খুবই উপকারী দই। ত্বকে ও চুলে
দইয়ের প্যাক লাগানো ভাল। এছাড়া প্রতিদিন দই খেলেও ত্বকে
ও চুলে ঔজ্জ্বল্য আসে।
- দই হল আদর্শ ফ্যাটজাত খাদ্য যা শরীরে ব্যাড ফ্যাটের
পরিমাণ বাড়ায় না বরং শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেয়।
- স্ট্রেস কাটাতে এবং মুড ভাল করতে এই খাবারের বিকল্প
নেই।
- নিয়মিত দই খেলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- দই শরীরকে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলস গ্রহণ করতে
সাহায্য করে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের উপায়
আমাদের দেশে গ্যাস্টিকের সমস্যা নেই এমন মানুষ হয়তো
খুঁজে পাওয়াই যাবে না। এই সমস্যাটি মূলত ভাজাপোড়া
খাবার খেলেই বেশি হয়ে থাকে। অনেকেরই এ সব খাবার খাওয়ার
পরে পেট ব্যথা বা বুকে ব্যথা কিংবা বদ হজম হয়। অথচ এই
সমস্যা দূর করার জন্য ওষুধ না খেয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার
আগে নিচের যেকোন একটি নিয়ম মানলেই চলবে।
১। আধা ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা আদা নিন। তারপর অল্প একটু
লবন মাখিয়ে খেয়ে ফেলুন। আদা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর এক কাপ
কুসুম গরম পানি খান। গভীর রাতে আর গ্যস্ট্রিকের সমস্যা
হবে না। অথবা
২। এক গ্লাস পানি একটি হাড়িতে নিয়ে চুলায় বসান। এর আগে
এক ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা হলুদ পানিতে দিয়ে দিন। পানি
অন্তত পাঁচ মিনিট ফুটতে দিন। তারপর নামিয়ে আনুন। পানি
ঠা া হলে হলুদসহ খেয়ে ফেলুন। গ্যাস্ট্রিক দৌঁড়ে পালাবে।
অথবা
৩। ওপরের সমস্ত পদ্ধতি ঝামেলার মনে হলে শুধুমাত্র এক
গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে
যাওয়ার আগে পান করুন। কখনোই রাতে পেট বা বুক ব্যথা করবে
না।
Top
আইন কনিকা
প্রথম স্ত্রীর অনুমতি
ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ রেজিষ্ট্রি হবে না
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
এক স্ত্রীর বর্তমানে আরেকটি বা একাধিক বিবাহ করাকে বহু
বিবাহ বলে। ইসলামী আইনে বলা হয়েছে, কেউ যখন বস্তুগত
দিক দিয়ে এবং স্নেহ ভালবাসার দিক দিয়ে প্রত্যেক
স্ত্রীর সাথে সমান আচরণ করতে পারবে কেবল মাত্র তখনই সে
চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পারবে।
তবে বাস্তবে এটা কখনও সম্ভব নয়। কারণ যে স্বামী নিজের
স্ত্রীকে ভালবাসে তার দ্বিতীয় বিবাহ করার ইচ্ছেই হবে
না। কাজেই পবিত্র কোরআন শরীফে বহু বিবাহকে অনুমতি
দেবার চেয়ে একটি বিবাহ করাই উত্তম বলে উল্লেখ করেছে।
আমাদের সমাজে একাধিক স্ত্রী গ্রহণের আইনগত অধিকার
স্বামীদের থাকলেও নারীদের ক্ষেত্রে এ ধরণের বিধান নেই।
এখানে উল্লেখ্য যে, একই সঙ্গে স্বামী চারজনের অধিক
স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে না।
বহুবিবাহের আর্থসামাজিক বাস্তবতা
ইসলামে বহুবিবাহের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ইসলাম
আবির্ভাবের প্রথম দিকে একটি ভিন্ন আর্থসামাজিক ও
অস্থিতিশীল রাজনৈতিক বাস্তবতায়। মূলত বিধবা, এতিমদের
নিরাপত্তা ও রক্ষার জন্য ইসলামে এ ধরণের প্রতিকারের
ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেসময়কার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে
দেখা যায়, ওহুদের যুদ্ধে বহু মুসলিম পুরুষ শাহাদত বরণ
করেন, ফলে স্বাভাবিকভাবে অভিভাবক ও স্বামীহীন নারীরা
চরম নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে। এসব নারীদের নিরাপত্তার
নিশ্চয়তার জন্য বহুবিবাহ প্রথা চালু হয়।
কোরআন শরীফের বিধান
পবিত্র কোরআন শরিফের সূরা নিসায় পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে
‘যদি তুমি আশঙ্কা কর যে, এতিমদের প্রতি তুমি সুবিচার
করতে পারবে তবে তুমি এ ধরনের নারীদের বিয়ে করতে পারো
যাকে ভাল লাগে তাদের মধ্যে থেকে দুই, তিন অথবা চার।
কিন্তু যদি তুমি আশঙ্কা কর যে, এদের মধ্যে তুমি
সুবিচার করতে পারবে না তবে তাদের মধ্যে থেকে অথবা যারা
তোমার আশ্রয়ে রয়েছে তাদের মধ্য থেকে একজনকেই বিয়ে কর।
অন্যায় এড়ানোর এটাই সহজ ও উত্তম ব্যবস্থা।’ এখানে
সুবিচারের প্রশ্নে শুধু স্বামীর অর্থনৈতিক সচ্ছলতার
সমান ব্যবহারের কথা বলা হয়নি বরং স্নেহ মায়া, ভালবাসা,
আদর সোহাগের বিষয়ে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে। একাধিক
স্ত্রী গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বামীরা কি আদৌ আদর সোহাগের
মতো সূক্ষ্ম অনুভূতির ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার করতে পারে?
মূলত এটা অসম্ভব তাই বলা যায়, শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন
সাপেক্ষে বহু বিবাহকে কঠিন নিষেধাজ্ঞাতে পরিণত করেছে।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১
আইনের ধারা ৬ মতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি
পরিষদের নিকট হতে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না।
অনুমতির জন্য ২৫ টাকা ফি দিয়ে সাদা কাগজে চেয়ারম্যানের
নিকট আবেদন করতে হবে এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিয়ের
অনুমতি প্রদানে যে সকল বিষয়ের প্রতি বিবেচনা করা হবে
তার মধ্যে অন্যতম হলো যথাথ ১) বর্তমান স্ত্রীর
বন্ধ্যাত্ব ২) দৈহিক দৌর্বল্য, ৩) দাম্পত্য জীবন
সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্যতা এবং ৪) দাম্পত্য অধিকার
পুনর্বহালের জন্য কোন উন্মত্ততা।
স্ত্রীর অধিকার লংঘনে আইনী প্রতিকার
কোন পুরুষ যদি সালিশি পরিষদের অনুমতি বিনা দ্বিতীয়
বিবাহ করেন তবে তিনি অবিলম্বে তার বর্তমান স্ত্রী বা
স্ত্রীদের আশু বা বিলম্বিত দেন মোহরের সম্পূর্ণ টাকা
তৎক্ষণাৎ পরিশোধ করবেন এবং মোহরানার টাকা পরিশোধ করা
না হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব আদায়ের মতো আদায় করা হবে।
এছাড়াও অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ১ বৎসর পর্যন্ত জেল
ও ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড কিংবা উভয়দন্ডে দন্ডিত
হবেন। পাশাপাশি দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ৪৯৪ এর বিধান মতে,
স্বামী যা স্ত্রীর জীবনকালে পুনরায় বিবাহ করেন তবে সে
ব্যক্তি যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে যার মেয়াদ সাত বৎসর
পর্যন্ত হতে পারে তদুপরি অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবে। তবে
একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা উচিত, বহু বিয়ের
মামলায় বাদীকে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে,
দ্বিতীয় বিয়ের সময় প্রথম বৈধ বিয়ের অস্তিত্ব ছিল।
বহু বিবাহের আইনগত দিক
পরিতাপের বিষয় এই যে, বেশিরভাগ মানুষ কেউ বুঝে, অথবা
কেউ না বুঝেই সূরা নিসার অপব্যাখ্যা প্রদান করে। ফলে
সমাজে কোন কোন পুরুষ যথেচ্ছাভাবে একাধিক বিয়ের মধ্য
দিয়ে পারিবারিক জীবনে মহা জটিলতার সৃষ্টি করে, যার ফলে
উদ্বেগজনক প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বামী পরিত্যক্ত
নারীদের সংখ্যা। এ জাতীয় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের
জন্য ১৯৬১ সালে আইন প্রবর্তন করা হয় যা মুসলিম
পাবিরারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ নামে পরিচিত। এ আইন
অনুযায়ী পূর্বাহ্নে সালিশী পরিষদের নিকট হতে লিখিত
অনুমতি না নিয়ে কোন পুরুষ একটি বিবাহ বলবৎ থাকাকালে আর
একটি বিবাহ করতে পারবে না এবং পূর্বানুমতি গ্রহণ না করে
এই জাতীয় কোন বিবাহ হলে তা মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন
আইন ১৯৭৪ মালের ৫২ নং আইন মোতাবেক রেজিস্ট্রি হবে না)।
বিয়ের অনুমতির জন্য নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত
পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করতে হবে এং
আবেদনপত্রে প্রস্তাবিত বিবাহের কারণ এবং বর্তমানে
স্ত্রী বা স্ত্রীগণের সম্মতি নেওয়া হয়েছে কিনা তা
উল্লেখ করতে হবে।
Top
|
|