           
 
|
Cover May
2015
English Part
May 2015
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
অনুসন্ধান রিপোর্ট
মোট
হত্যাকান্ডের শিকার ২৫৬ জন
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপ
অনুযায়ী ২০১৫ সালের মে মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড
সংঘটিত হয় ২৫৬টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইনশৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মে মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে ৮ জনের অধিক। আইন
প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত
বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে
হত্যাকান্ড কমিয়ে শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক
রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে
অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের
শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের
ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৫ সালের মে ‘১৫ মাসে হত্যাকান্ডের শিকার
হয় ২৫৬ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৯ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ৪৯ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৪৫ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৮ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ১১ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৬ জন, চিকিৎসকের
অবহেলায় মৃত্যু ৪ জন, অপহরণের পর হত্যা ৯ জন, গুপ্ত
হত্যা ৭ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৯৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা
৭ জন।
১২। এসিড নিক্ষেপে হত্যা ৪ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহণ দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২৪৭ জন, আত্মহত্যা ৩৮ জন।
মে ২০১৫ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে
ধর্ষণের শিকার ৪০ জন, যৌন নির্যাতন ৬ জন, যৌতুক
নির্যাতন ৭ জন, সাংবাদিক নির্যাতন ২ জন, এসিড
নিক্ষেপের শিকার ৫ জন।
Top
Top
জনগণের ভাগ্য নিয়ে
ছিনিমিনি খেললে ক্ষমা নেই :প্রধানমন্ত্রী

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি
এবং নৈরাজ্যের বিস্তারসহ ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে
বিএনপি-জামায়াতকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন,
যারা জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে তাদের কোন ক্ষমা
নেই। তারা কেন মানুষ খুন করবে কেন মানুষ পুড়িয়ে মারবে
মানুষ পোড়ানো অথবা হত্যা করার তাদের কোন অধিকার নেই।
আমি আশা করি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। যদি
এর পুনরাবৃত্তি ঘটে, অপরাধীকে ছাড়বো না। তাদের অবশ্যই
শাস্তি পেতে হবে।
গতকাল শনিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
কাছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের
অনুলিপি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে
হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। পরে
৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, ১টি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও
একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসহ মোট ১০টি শিক্ষা বোর্ডের
চেয়ারম্যানরা তাদের নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল
প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ বিষয়ে
রাঙ্গামাটি ও নীলফামারিতে সংসদ সদস্য, জেলা
প্রশাসকবৃন্দ, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা
বলেন। ফলাফলের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী
আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের টানা হরতাল-অবরোধের
কারণে এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কাক্সিক্ষত
ফলাফল আসেনি। হরতাল-অবরোধ না থাকলে ও পরীক্ষার সময়
বারবার বদলাতে না হলে পাসের হার আরো বাড়তো। তিনি বলেন,
বিএনপির জ্বালাও, পোড়াও, হরতাল, অবরোধের কারণে বারবার
পরীক্ষায় সময়সূচি বদলাতে হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের
মনোযোগ নষ্ট হয়েছে। প্রতিকূল অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে
শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ ফলাফল করেছে।
রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে প্রতিকূল অবস্থায় পরীক্ষা
দিয়েও পাসের হার এত বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন
জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিকূল অবস্থায়ও এত
পাসের হার কম কথা নয়, এটা বড় অর্জন। একটু সুন্দর
পরিবেশ পেলে শিক্ষার্থীরা অবশ্যই পরীক্ষায় পাস করবে।
Top
সুষ্ঠু
নির্বাচন হলে আ.লীগের অস্তিত্ব থাকবে না : খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘নির্বাচন
সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বও থাকবে না। এটা তারা
বুঝতে পেরেছে। সে কারণেই ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও
চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহিংসতা,
জোর-জবরদস্তি, অনিয়ম ও ভোট কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল দখল
করেছে আওয়ামী লীগ।’
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শনিবার রাতে
চারটি বার কাউন্সিলের নবনির্বাচিত আইনজীবী নেতারা তার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
২০ দলীয় জোট নেত্রী বলেন, ‘এতদিন যারা ৫ জানুয়ারির
নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আমাদের সাজেশন দিয়ে আসছিল,
এখন তারা বুঝতে পারছে কি কারণে আমরা আওয়ামী লীগের অধীনে
ঐ নির্বাচনে যাইনি। কারণ আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো
সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বর্তমানে কেবলমাত্র প্রশাসনের ওপর
ভর করে এ সরকার টিকে আছে। আমি যখন সিটি নির্বাচন
উপলক্ষে প্রচারণায় বের হয়েছি, তখন জনগণের
স্বতঃস্ফুর্ততা দেখেছি। মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমি
মুগ্ধ হয়েছি। মানুষ দম মেরে বসে আছে, সময় হলে তারা
সঠিক জবাব দেবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারের নির্বাচনগুলোতে
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। সুষ্ঠু
নির্বাচন হলে আসন্ন বার কাউন্সিল নির্বাচনেও আমাদের
প্রার্থীরাই বিজয়ী হবে। এ জন্য সরকার সেখানেও নানা
অপচেষ্টা করবে, কিন্তু আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।’
এর আগে রাত ৮টার পরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান
কার্যালয়ে সিনিয়র আইনজীবী ও নবনির্বাচিত আইনজীবী নেতারা
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঢাকা বারের
নির্বাচিত কমিটির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে
শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এ সময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ
আহমেদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, চেয়ারপারসনের
উপদেষ্টা এজে মোহাম্মদ আলী, জয়নাল আবেদিন, আহমেদ আজম
খান, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন,
কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া,
মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহসিন আলী, বোরহানউদ্দিন,
মোস্তফা কামাল, ওমর ফারুকসহ সুপ্রীম কোর্ট বার, ঢাকা
বার, মেট্টোপলিটন বার ও ট্যাক্সেস বারের নেতারা
উপস্থিত ছিলেন।
Top
যুক্তরাষ্ট্রের
মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে জাতিসংঘ
যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারবিষয়ক বিভিন্ন ঘটনা ও তথ্য
পর্যালোচনা করে দেখবে জাতিসংঘ। এ বিষয়ে
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের
সামনে আজ সোমবার দীর্ঘ প্রকাশ্য বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
এতে গুরুত্ব পাবে পুলিশি নির্মমতা, বর্ণবাদ ও জনগণের
ওপর নজরদারির অভিযোগ এবং ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের’
মতো বিষয়গুলো। খবর এএফপির।
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যদেশের সবাইকে নিয়ে প্রতি চার বছর
পর পর ইউনিভার্সাল পিরিওডিক্যাল রিভিউ শীর্ষক বিতর্ক
হয়। যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে বিতর্কে সম্প্রতি পুলিশের হাতে
বিভিন্নভাবে বেশ কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যুর
আলোচিত বিষয়টি বিশেষভাবে উঠবে।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ বাল্টিমোরে গত মাসে পুলিশি
হেফাজতে ফ্রেডি গ্রে (২৫) নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের
মৃত্যুর প্রতিবাদে সংঘটিত দাঙ্গার ব্যাপারে তদন্ত শুরু
করেছে। এ ছাড়া মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের ফার্গুসন এলাকায় গত
বছর মাইকেল ব্রাউন (১৮) নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণকে
হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ
হয়েছিল।
জেনেভার বিতর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব
দেবেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিথ
হার্পার এবং ভারপ্রাপ্ত মার্কিন আইন উপদেষ্টা মেরি
ম্যাকলিওড। তাঁরা মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
বিভিন্ন কৌশল, পুলিশি নির্মমতা, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত
মার্কিন জনগোষ্ঠীসহ অন্য সংখ্যালঘুদের প্রতি বিরূপ
আচরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন।
শিশুসহ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী অবৈধ অভিবাসীদের
কারারুদ্ধ করে রাখার ব্যাপারেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের
কূটনীতিকেরা প্রশ্ন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Top
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার মতবিনিময় সভা
অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার
আওতাধীন উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে এক
মতবিনিময় সভা চট্টগ্রাম খুলশী ক্লাবে চট্টগ্রাম উত্তর
জেলার সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের সভাপতিত্বে ও
সাধারণ সম্পাদক আবুল বশরের সঞ্চালায় অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের বিভাগীয় প্রতিনিধি সোহেল আহমেদ মৃধা, উত্তর
জেলার সহ-সভাপতি জসীম আহম্মদ, গিয়াস উদ্দিন, চৌধুরী
মো. ইমাম উদ্দিন নুরী, যুগ্ন সম্পাদক আবু তালেব
সিদ্দীকি সাঞ্জু, মহিলা সম্পাদিকা নূর-ই-জান্নাত জেমী,
আইটি সম্পাদক জুনায়েদ ইজদানী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক
সম্পাদক মো. শাহাজাহান, রাঙ্গুনীয়া উপজেলার সভাপতি
প্রিন্সিপ্যাল কেএম মুসা, সাধারণ সম্পাদক ইস্কান্দার
মিয়া তালুকদার, হাটহাজারী উপজেলার সভাপতি লাকী আক্তার,
মো. গোলাম মওলা, রাউজান উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মো.
হাসান শিকদার, মিরসরাই উপজেলার সভাপতি নুরুল আলম,
নির্বাহী সভাপতি মো. নুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ
হোসেন চৌধুরী, নাজিরহাট পৌরসভার সভাপতি নাছির উদ্দিন,
মিরসরাই উপজেলার যুগ্ন সম্পাদক এম মাঈন উদ্দিন,
রাঙ্গুনীয়া উপজেলার অর্থ সম্পাদক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন
চৌধুরী প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় আলোচনা সাপেক্ষে আগামী ২০ দিনের মধ্যে
চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আওতাধীন প্রতিটি উপজেলা ও
পৌরসভার সম্মেলন শেষ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এছাড়া
উপজেলা ও পৌরসভাকে ইউনিয়ন ও কলেজ সম্মেলন শেষ করার
তাগিদ দেয়া হয়েছে।
Top
মানবাধিকার কমিশনের
সভায় সুনামগঞ্জকে মানব পাচারমুক্ত করার দাবী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জেলা শাখার মত বিনিময় সভায়
সুনামগঞ্জকে মানব পাচারমুক্ত করার দাবী জানানো হয়েছে।
শনিবার বিকাল ৪টায় জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার
মোক্তারপাড়াস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায়
বক্তারা এ দাবী জানান। সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি
শিক্ষিকা ফৌজিআরা বেগম শাম্মীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সহ-সভাপতি
হাজী কেবি রশিদ (যোদ্ধাহত),ডাঃ শাকিল মুরাদ খান
আফজল,মাওলানা মুহাম্মদ এমদাদুল হক,সাধারন সম্পাদক
সাংবাদিক আল-হেলাল,সহ সাধারন সম্পাদক এডভোকেট হেলিনা
আক্তার,সাংবাদিক সেলিম আহমদ তালুকদার,সহ সাংগঠনিক
সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম,প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক রাজু
আহমেদ রমজান, কার্যকরী সদস্য মোঃ দিলাল আহমদ ও মোঃ
শহীদুল ইসলাম প্রমুখ। সভায় বক্তারা আগামী ১৩ জুন
শনিবার বিকেল ৪টায় একই স্থানে পরবর্তী আলোচনা সভায়
সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে আহবান জানিয়ে
বলেন,এ জেলার যে প্রান্তে যেভাবেই মানবাধিকার ক্ষুন্ন
হবে সেখানেই বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বঞ্চিত মানুষের
পাশে দাড়াবে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সুনামগঞ্জ
প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান চৌধুরী,
কমিশনের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর
রহমান,বিশিষ্ট সমাজসেবী দেওয়ান ইছকন্দর রাজা চৌধুরী (সুবক্ত
রাজা), রানীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মজলুল হক ও জেলা
রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারী এডভোকেট পীর মতিউর
রহমান কে উপদেষ্টা রাখার জন্য প্রস্তাব গৃহীত হয়।
Top
গাইবান্ধায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জেলা
সম্মেলন অনুষ্ঠিত
গাইবান্ধা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গত ১৬ মে ২০১৫
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন গাইবান্ধা জেলা শাখার
সম্মেলন-২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে
বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা ও ক্রেষ্ট বিতরন
অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন
গাইবান্ধা জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি এ্যাডভোকেট সৈয়দ শামস-উল-আলম হিরু, বিশেষ অতিথি-
গাইবান্ধা পৌর মেয়র মোঃ শাসছুল আলম, বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশন গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি
এ্যাডভোকেট সেকেন্দার আযম আনামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে
বক্তব্য রাখেন- সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট আনিস মোস্তফা
তোতন টেলিজার রহমান বাচ্চু। ধীরেশ চক্রবর্তী উজ্জ্বল,
এমদাদুল হক নাদিম, সুলতানা শামিম আরা বেগম ফটো, আমিনুল
ইসলাম সরদার প্রমূখ। বক্তারা মানবাধিকার রক্ষায়
সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলোকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন ও
পাশাপাশি জনগণকে আরও সচেতন করে মানবাধিকার রক্ষায় এগিয়ে
আসার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানটি
পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট শামছুজ্জোহা শামিম ও এ,কে,এম
সালাহ উদ্দিন কাশেম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশন গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট
আনিছ মোস্তফা তোতন উল্লেখ করেন সংগঠনটির গাইবান্ধা জেলা
শাখা মামলা ও বিকল্প পদ্ধতিতে অসহায় ভুক্তভুগী পরিবারকে
আইনগত সহায়তা দিয়ে আসছে। তিনি বলেন গাইবান্ধায় ২০১৪
সালে ৪৮ জন নির্যাতিত দরিদ্র নারীকে আইনগত সহায়তা এবং
১০ জন শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে বই ও টিউশন সহায়তা দেওয়া
হয়েছে। প্রধান অতিথি এ্যাডভোকেট সৈদয় শামস-উল-আলম হিরু
গাইবান্ধায় এই সংগঠনের কার্যক্রম প্রশংসার দাবী রাখে।
ভবিষ্যতে নতুন নেতৃত্ব আরও সংগঠিতভাবে তাদের কার্যক্রম
পরিচালনা করে নির্যাতিত অসহায় মানবাধিকার বঞ্চিত
মানুষের পাশে দাড়াবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Top
হোটেলে মানুষের
মাংস!
খাবার হিসেবে মানুষের মাংস পরিবেশন করা হয় নাইজেরিয়ার
এক রেস্টুরেন্টে। গা ছমছম করার মতো শোনালেও ঘটনা সত্য।
নাইজেরিয়ার আনামব্রাতে এক রেস্টুরেন্টে। মানুষের মাংস
পরিবেশন করার অভিযোগ করায় বন্ধ করে দেয়া হয় সেই
রেস্টুরেন্টটি। বিবিসি নিউজ সোহিলির খবরে প্রকাশ, ওই
হোটেলের কাস্টমাররা অভিযোগ করেন তাদের মানুষের মাংস
পরিবেশন করা হয়েছে। গুজব না সত্যি যাচাই করতে তদন্তে
নামে পুলিশ। বিবিসির রিপোর্টে প্রকাশ, পুলিশ
রেস্টুরেন্টে তদন্ত চালানোর পর যা উদ্ধার করে তা সত্যি
ভয়ানক। উদ্ধার হয় তাজা রক্তাক্ত মানুষের মাথা। তখনও
গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। সেখান থেকে কিছু ধারলো অস্ত্র
ও মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। বিবিসিকে এক স্থানীয়
বাসিন্দা জানান, যখনই বাজারে যাই, দেখি হোটেলে
সন্দেহজনক কারবার চলছে। ওই হোটেলের কর্মচারীদের কখনোই
পরিষ্কার জামায় দেখা যেত না। তাদের চোখে-মুখে কিসের
যেন একটা ভয়! এক সন্ন্যাসী ওই হোটেলে খেতে গেলে তার
বিল হয় ৭০০ নায়ার অর্থাৎ ২.২০ ইউরো। যেটা অন্য হোটেলের
চেয়ে অনেক বেশি। তিনি জানান, ‘আমাকে ছোটো ছোটো মাংসের
টুকরো খেতে দেয়া হয়, যার মূল্য ভাবতেও পারিনি। এ ঘটনা
জানার পর তিনি উদ্বেগের সঙ্গে জানান, আমি কখনোই ভাবতে
পারিনি, আমাকে মানুষের মাংস দেয়া হয়েছে। আর যার দাম এত
বেশি! পুলিশ এখন পর্যন্ত দশ জনকে গ্রেফতার করেছে।
Top
প্রযুক্তির
বিড়ম্বনা গোপন ক্যামেরা, তরুণীরা সাবধান!
মোঃ শাহ্নেওয়াজ সুমন
ঢাকার এক হাই সোসাইটির মেয়ে (তরু) ছন্দ নাম নিজের মান
মর্যাদা, পারিবারিক আত্ম-সন্মান বাচানোর জন্য দৃঢ় শপথ
নিয়েছেন। তিনি আর কোন দিন বিউটি পার্লার, স্লিম
সেন্টারে যাবেন না। কারণ জানতেই ভেজা চোখে রুমাল দিয়ে
এক বুক কষ্ট নিয়ে বললেন সেই গোপন ক্যামেরার কথা। নিজের
অজান্তে নিজেই আবিস্কার করলেন বিউটি পার্লারে রক্ষিত
সেই গোপন ক্যামেরা। আমাদের দেশের এক শ্রেণির মানুষ আছে
যারা সমাজে ভদ্র পেশার আড়ালে নিজের বিবেক বিবর্জিত কাজ
করে যাচ্ছেন। তাদের এই হীন চরিত্র চরিতার্থ করার জন্য
তারা দিনে দিনে নানা বিধ ফন্দি ফিকির আঁকছেন। দেশের বড়
বড় বিখ্যাত নামী দামি বিউটি পার্লারে আজকাল তরুণীরা
যাওয়া আসা প্রায় কমিয়ে দিয়েছেন। অনেক স্বামী তার
স্ত্রীকে, অনেক ভাই তার বোনকে এমনকি বাবা তার মেয়েকে
ঐসব এড়িয়ে চলতে বলছেন। কালের বিবর্তনে এখন আর আমাদের
সমাজের মেয়েরা ঘরে বসে আর বউ সাজেনা। তারা বিভিন্ন
উৎসবে যেমন বিয়ে, বৌভাত, গায়ে হলুদ এবং ফাংসনে নিজেকে
আকর্ষণীয় করতে বিউটি পার্লারে যায়। তাদের করতে দোষ নেই।
কিন্তুু দোষ তাদের যারা ব্যবসার আড়ালে (গোপন ক্যামেরার
মাধ্যমে) ঐ সব তরুণীদের গোপন জিনিস ভিডিও করে
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। অনেকে আবার পরিবারের
কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। লোক লজ্জার ভয়ে তাদের
পরিবার কাউকে কিছু না বলে নীরবে সয়ে যায়। অনেকে আবার
শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ইদানিং বড় বড় শপিং
মলে ট্রায়াল রুমে/ চেঞ্জিং রুমেও গোপন ক্যামেরার
ব্যবহার হয়। ঐ সব গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত বিভিন্ন নগ্ন
ছবি, ভিডিও তৈরী করে অনেক পরিবারকে করা হয় হয়রানি।
কয়েক বছর আগে ঢাকার বনানীর এক নামী দামি বিউটি
পার্লারের চেঞ্জিং রুমে গোপন ক্যামেরা দেখে এক তরুণী
চিৎকার দিয়ে বেড়িয়ে আসেন। পরে স্থানীয় পুলিশ কে খবর
দেন। এই নিয়ে দেশের সব গণমাধ্যমে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে ঐ
বিউটি পার্লারটি প্রায় বন্দের উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু
পড়ে এ নিয়ে তেমন কিছু হয় নাই; কারণ কোন অদৃশ্য শক্তির
এর নেপথ্যে কাজ করছে। আমাদের সমাজে অবৈধ কাজকে বৈধতা
দিতে এক শ্রেণির তদবির বাজরা এর নেপথ্যে কাজ করেন।
পার্শ^বর্তী দেশ ভারতের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী
স্মৃতি ইরানী গিয়েছিলেন গোয়ার একটি শপিংমলে। একটি
পোশাক তার পছন্দ হল সেটি তার শরীর ফিট হচ্ছে কিনা তা
দেখতে চাচ্ছেন। দোকানী তাকে ট্রায়াল রুম দেখিয়ে দিলেন।
স্মৃতি ইরানী তার পরনের পোষাক বদলাতে গেলে তার নজরে আসে
একটি গোপন ক্যামেরার। এই নিয়ে গোটা ভারত জুড়ে হৈ চৈ পড়ে
যায়। এই ঘটনার পর পুরো ভারত জুড়ে নারীদের মধ্যে ছড়িয়ে
যায় ট্রায়াল রুম আতংক। নামীদামি শপিং মলের যদি হয় এই
অবস্থা? তাহলে কম দামির কি অবস্থা? এ তো গেল ভারতের কথা।
আমাদের দেশেও এ রকম কিছু অভিযোগ পাওয়া যায়। কোথাও গোপন
ক্যামেরার ব্যবহার করা হলে সেটি আইন অনুযায়ী নোটিশ
থাকতে হবে। মানুষের নিরাপত্তার জন্য সব জায়গায় সি.সি.
টিভি. ক্যামেরা বসানো হতে পারে। কিন্তু কোন সি.টি.টি.ভি
ক্যামেরা গোপনীয়তাকে অনিরাপদ করতে নয়। কোন অবস্থাতেই
আপনার ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে কেউ ভাঙ্গতে পারবেনা।
আমাদের দেশে উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে
এখন সবার হাতে মোবাইল ক্যামেরা এমনকি কোথাও সি.সি.টি.ভি
বসানোর নামে কোন গোপন স্থানে গোপনীয় ভাবে ক্যামেরা
বসিয়ে দিচ্ছে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? সাইবার অপরাধ
বিশেজ্ঞরা বলেছেন লুকানো ক্যামেরায় ছবি তোলা সংক্রান্ত
অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। ইদানিং প্রযুক্তির উন্নতির ফলে
ওহভৎধ (ইনফ্রা) রেড প্রযুক্তির মাধ্যমে অন্ধকারেও গোপন
ক্যামেরায় ছবি তোলা যায়। তা হলে আপনি বুঝাইতেই পারছেন
আপনি কতটুকু নিরাপদ। আবার অনেক শপিং মলের শৌচাগার,
সিনেমা হলের বাথরুমেও গোপন ক্যমেরা বসানো থাকতে পারে।
তাই সব দিক ঠিক মত খুব খেয়াল করতে হবে। আপনারও
নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে। অনেকে আবার বেড
রুমেও গোপন ক্যামেরা বসিয়ে স্বামী-স্ত্রীর গোপন কিছু
ভিডিও ধারন করে। অতএব সাবধান তরুণী!
এক্ষেত্রে গোপন ক্যামেরার হাতে হতে রক্ষার জন্য কিছু
সতর্ক উপদেশ দেওয়া হল ঃ-
১) রাতে ঘুমের আগে বেড রুমের সব বাতি বন্ধ করে দিতে হবে।
কোন জানালা খোলা রাখা যাবেনা।
২) পাশের বাড়ির জানালা/বারান্দা দিয়ে কোন ক্যামেরা পাতা
আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা।
৩) শপিং মলের ট্রায়ালরুমের / চেঞ্জিং রুমে ঢুকে আয়নায়
আঙ্গুল ঠেকালে যদি প্রতিফলের সাথে জোড়া লাগে তাহলে
বুঝতে হবে কোথাও গলদ আছে।
৪) ট্রায়ালরুমের দেয়াল ও সিলিং এর দিকে আপনার মোবাইল
ক্যামেরা ধরলে মোবাইল স্কিনে যদি কোন লাল বিন্দু দেখা
যায় তাহলে বুঝতে হবে কোথাও গোপন ক্যামেরা আছে।
৫) ট্রায়াল রুমে ঢুকলে সাইবার অপটিকস ফোনের
নেটওয়ার্কের বিঘœ ঘটলে বুঝতে হবে সেখানে লুকানো
ক্যামেরা আছে।
Top
ক্ষমতায় যেতেই
চুপচাপ সু চি

দুর্বলের পক্ষে কথা বলতে কোনো ছাড় দেন না- এ পরিচয়েই
অং সান সু চিকে চিনত বিশ্ববাসী। এই ব্যক্তিত্বের
প্রতিদানে শান্তিতে নোবেলও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে সেই সু চির মুখে আজ কুলুপ। এ
জন্য এদিক-সেদিক থেকে ভর্ৎসনাও শুনতে হচ্ছে তাঁকে। তবে
তাঁর স্ববিরোধী এ আচরণের কারণ অনেকটাই পরিষ্কার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনে জিততেই সংখ্যালঘু
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ
মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় এই নেত্রীর।
এ বছর সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ঢুকতে
গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে বহু রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি।
নৌদুর্ঘটনা ছাড়াও এসব মৃত্যুর পেছনে আছে নানাবিধ
নির্যাতনের কাহিনী। বহু গণকবরের সন্ধান মিলেছে
থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়। এ অবস্থায় মিয়ানমারের
পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের
করুণ পরিণতির কথা উঠেছে সবচেয়ে বেশি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে
গতকাল শুক্রবার কথা বলতে ব্যাংককে জড়ো হন আঞ্চলিক
দেশগুলোর নেতারা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম
রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে চুপচাপ রয়েছেন সু চি।
এই অনীহার কারণে সম্প্রতি তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা
দালাই লামার তিরস্কার শুনতে হয়েছে সু চিকে। দালাই লামা
বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখের বিষয়। আমি আশা করেছিলাম, এ
ইস্যুতে সু চি কিছু একটা করতে পারবেন।’
গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে সাবেক জান্তা
সরকারের আমলে ১৫ বছর বন্দি ছিলেন সু চি। এই ত্যাগ তাঁকে
জায়গা করে দেয় বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিকামী নেতাদের দলে।
কিন্তু ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে আচরণ পাল্টাতে
থাকে তাঁর। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিবেদিত একটি
সত্তা ক্রমে পরিণত হতে থাকে কট্টর রাজনীতিবিদে। আর এ
ক্ষেত্রে তাঁর অন্যতম লক্ষ্য হলো, আসন্ন নির্বাচনে জিতে
ক্ষমতায় যাওয়া।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের
(এইচআরডাবিউ) এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন
বলেন, ‘যেখানে মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার
দায়ভার বহন করতে হচ্ছে, সেখানে একজন মানবাধিকারকর্মী
হিসেবে নিজের নৈতিক ক্ষমতা খাটাতে সু চি ব্যর্থ হচ্ছেন।’
চলতি বছরের শেষ দিকে মিয়ানমারে নির্বাচন হওয়ার কথা।
সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের মধ্যে ক্রমেই
মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব বাড়ছে। মিয়ানমারবিষয়ক গবেষক
মায়েল রেনাউড বলেন, ‘নির্বাচনে জেতার ক্ষেত্রে সম্ভবত
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলাই সু চির জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি।
তাই এ বিষয়ে কথা বলা তাঁর জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে
না।’
গত ১৯ মে জনসম্মুখে সু চি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি
সরকারকে সমাধান করতে হবে। মূলত বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাসের
মধ্যে এটাই তাঁর একমাত্র ‘জটিল’ উক্তি। এর সমর্থন করে
সু চির জীবনী লেখক পিটার পোফাম বলেন, ‘রাজনীতির দাবা
খেলায় এই মুহূর্তে এমন জটিল চাল দেওয়া ছাড়া সু চির কোনো
উপায় নেই।’ সূত্র : এএফপি।
Top
ধর্ষণের পর ৪২ বছর কোমায়
থেকে মৃত্যুর কাছে হার
ভারতে ধর্ষণের পর ৪২ বছর কোমায় থেকে অবশেষে মৃত্যুর
কাছে হার মেনেছেন এক নারী। যার আশা ছিল মানুষের সেবা
করার, সেই নার্সই ৪২ বছর সহকর্মীদের সেবা নিয়ে সবাইকে
কাঁদিয়ে গতকাল সোমবার সকালে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
তার যন্ত্রণাটা এতটাই কষ্টকর ছিল যে তিনি স্বেচ্ছা
মৃত্যুর আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু অনুমতি
মেলেনি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
অরুণা শানবাগ মুম্বাইয়ের কে ই এম হাসপাতালের নার্স
ছিলেন। তার ওপর নৃশংসতার ঘটনা ঘটে ১৯৭৩ সালে।
হাসপাতালের সুইপার সোহানলাল বার্থা বাল্মিকী এই
নৃশংসতার রুপকার। ওই দুর্বৃত্ত তাকে ধর্ষণ করে। এরপর
কুকুর বাঁধা চেইন দিয়ে তার ঘাড় ও মাথায় আঘাত করে এবং
গলায় ফাঁস দেয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,
সোমবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মারা গেছেন অরুণা। গত ৪০
বছর ধরে বোধশক্তিহীন অবস্থায় ছিলেন অরুণা। ওই ঘটনায়
তার মস্তিষ্কের সেল নষ্ট হয়ে যায়। গত ছয়দিন ধরে তিনি
নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। ৬৭ বছর বয়সী অরুণা ২০১৩ সালে
কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সেই
কোমায় চলে যেতে হয়েছে। হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডের একটি
বাইরের কক্ষটিই তার বাড়ি হয়ে উঠেছিল। সেই ১৯৭৩ সাল থেকে
তার সহকর্মীরা অরুণাকে সেবা দিয়ে আসছিলেন। সবাই আশা
করেছিলেন, আগামী জুনে তার ৬৮ তম জন্মদিনে হয়তো আবার
তিনি সুস্থ হয়ে সহকর্মীদের মাঝে ফিরে আসবেন। কিন্তু
তাদের আশা আশাই থাকলো।
Top
নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর সফরসঙ্গী
হচ্ছেন মমতা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অনুরোধে তাঁর
সফরসঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসতে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছেন
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে
মোদির সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না-
এটা নিশ্চিত হয়েই মমতা ঢাকায় আসতে সম্মতি দিয়েছেন।
এর আগে শিগগিরই তিস্তা চুক্তি হচ্ছে- সম্প্রতি ভারতের
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কলকাতা সফরে এমন ঘোষণা
দিলে মমতা বেঁকে বসেন। তাঁর সন্দেহ ছিল, হয়তো মোদির
সফরে চুক্তিটি হয়ে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত গত
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আবারও মমতাকে
তাঁর সফরসঙ্গী হওয়ার অনুরোধ করেন এবং এই সফরে তিস্তা
চুক্তি হচ্ছে না বলে নিশ্চয়তা দেন।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা গতকাল
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন
ঢাকা সফরে মুখ্যমন্ত্রীও সঙ্গী হবেন কি না, তা নিয়ে
টানাপড়েন চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। একটা সময় মমতা জানিয়ে
দিয়েছিলেন, তিনি আসতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত মোদির
হস্তক্ষেপে বরফ গলল। নতুন করে কোনো অঘটন না ঘটলে ৬ জুন
প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ঢাকা আসবেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার এই সম্মতির খবর শুনে গতকাল নরেন্দ্র মোদি বলেন,
‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গ অত্যন্ত
প্রাসঙ্গিক রাজ্য এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে আমি প্রথম দিন
থেকেই অনুরোধ করেছি। মমতা যেতে সম্মত হয়েছেন, এই সংবাদে
আমি খুশি।
এর আগে বিগত ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ
যখন ঢাকা এসেছিলেন, তখন শেষ মুহূর্তে আসতে রাজি হননি
মমতা। তখনো কারণ ছিল তিস্তা চুক্তি। মমতার সঙ্গে আলোচনা
না করেই মনমোহনের সফরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হয়ে
যাবে- বিষয়টি তখন মেনে নিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী।
তবে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সফর নিয়ে
মমতাকে না চটাতে শুরু থেকেই সাবধানী প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তান বাদ দিয়ে প্রায় সব প্রতিবেশী
রাষ্ট্র সফর করে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশে
যাচ্ছেন সবার শেষে। আনন্দবাজারের ভাষ্য অনুযায়ী, সবার
শেষে মোদির বাংলাদেশ সফরের কারণ একটাই। মমতার সঙ্গে
আলোচনা না করে বাংলাদেশের ব্যাপারে একতরফা সিদ্ধান্ত
তিনি নিতে চান না। এ জন্য মমতার সঙ্গে মোদির একান্ত
বৈঠক হয়েছে দুবার। একবার সংসদে, আরেকবার রাজভবনে।
দুবারই বাংলাদেশ নিয়ে মমতার সঙ্গে কথা বলেছেন
প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি রাজভবনের বৈঠকে মমতাকে
বাংলাদেশ সফরে তাঁর সঙ্গী হওয়ার অনুরোধ করেন মোদি এবং
মমতা তাতে সম্মতিও দেন।
তবে সম্প্রতি মোদির সফরসূচি ঘোষিত হওয়ার পর
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্ন থেকে
জানানো হয়, মমতা মোদির সঙ্গে ঢাকায় আসছেন না। এ বিষয়ে
খোঁজখবর নিতে গত শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয়
মিত্রকে ফোন করেছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্রসচিব
জয়শঙ্কর। মুখ্যসচিব তাঁকে বলেন, এখনো পর্যন্ত
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ ৬-৭ জুন
জেলায় কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। পরে গত
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মমতাকে আশ্বাস
দেওয়া হয়, ঢাকায় তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে না। পরে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথও গতকাল বলেন, এই সফরেই তিস্তা
চুক্তি হয়ে যাবে, এমন কথা তিনি বলেননি। শেষ পর্যন্ত
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় আসার কথা জানিয়ে গতকাল মমতা
বলেন, ‘আমি তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধে নই। কিন্তু
উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করে তো চুক্তি করা উচিত নয়।
Top
কারাগারে থেকে জিপিএ ৫
লেখাপড়া করে যে ভালো ফল পায় সে। তাতে সে যেখানে যেভাবে
থাকুক না কেন। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহীতে
কারাগারে বন্দি থেকে অংশ নেয় ছয়জন পরীক্ষার্থী। তাদের
মধ্যে চারজনই জিপিএ ৫ পেয়েছে। এ ছাড়া আরো একজন পাস
করেছে। এর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে একজন।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সামশুল
কালাম আজাদ জানান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার
ছয়জন পরীক্ষার্থী কারাভ্যন্তরীণ হয়ে এসএসসি পরীক্ষায়
অংশ নেয়। তাদের মধ্যে চারজনই জিপিএ ৫ পেয়ে কৃতিত্বের
স্বাক্ষর বহন করেছে। তারা হলো রাজশাহী গভর্নমেন্ট
ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন রাসেল,
আরিফ রায়হান ও নাজমুল হাসান স্বপন এবং রাজশাহী
ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
মিজানুর রহমান।
এ ছাড়াও রাজশাহীর পবা উপজেলার মাসকাটাদিঘী স্কুলের
শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন ২.৬৭ পেয়ে পাস করেছে।
তবে পাস করতে পারেনি শিবপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের আরেক
শিক্ষার্থী মামুন আলী। রাজশাহী ল্যাবরেটরি স্কুলের
প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, কারাভ্যন্তর থেকে
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থীই মেধাবী। তারা
প্রতিকূল পরিবেশে থেকেও মেধার মূল্যায়ন করতে পেরেছে।
Top
ডুমুরের গুণাগুণ
ডুমুর আদিকাল থেকেই ভেষজ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
ডুমুরের পাতা প্রসূতি ঘরে রাখার বিধান আদিকালের।
আমাদের দেশে সাধারণত দু’ধরনের ডুমুর দেখা যায়; যথা
কাকডুমুর ও যজ্ঞ ডুমুর। কাকডুমুরের পাতা যজ্ঞডুমুরের
পাতা থেকে বড় ও বেশি খসখসে। তাই একে খরপত্রীও বলে। এ
ছাড়া রয়েছে বরাডুমুর। জয়া ডুমুর ও কালিফোর্নিয়ান ডুমুর
(আঞ্জির নামে পরিচিত) ইত্যাদি। ডুমুর দামে সস্তা,
কিন্তু তরকারি খুবই পুষ্টিকর। এ দেশের হিন্দুদের ঘরে
এটি খুবই সমাদৃত ও বহুল প্রচলিত তরকারি হলেও স্বাস্থ্য
সচেতনতার অভাবে মুসলমান ঘরে এটি যথার্থ দাম পায় না। তা
ছাড়া ডুমুর কুটতে বেশি সময় লাগে বলে আজকের ব্যস্ততার
দিনে এটির ব্যবহার কমে যাচ্ছে। কিন্তু সস্তায় এমন টনিক
ও স্বাদু খাবার আর নেই। ভেষজগুণেও এটি ভরপুর। কাকডুমুর
শ্বেতী রোগের মহৌষধ। চরকের মতে ‘শ্বিত্রে স্নংসনমগ্র্যং
মলপুরস ইষ্যতে সগুড় অর্থাৎ শ্বৈতী রোগে প্রধান কাজ হলো
এমন কিছু খাওয়া যেন মলপুর (ডুমুর) কাজ সাধন হয়; এর
জন্য মলপু ফলের রস ও একটু গুড় খাবে। চক্রদত্তের মতে,
এটি কাকডুমুর ভগন্দর ফাটিয়ে দেয়, বিষাক্ত পুঁজ ও
রক্তক্ষরণ করিয়ে তা সারিয়ে দেয়। চরক সংহিতায় বর্ণনা আছে
যে, এ ফলটি কাঁচা ও পাকা অবস্থায় কৃশতা সারায়, এটি
গুরুপাক ও শীতবীর্য; রক্তপিত্তে বিশেষ উপকারী।
ভাবপ্রকাশের মতে এটি শ্বেতী ও রক্তপ্রদর সারায়।
কাকডুমুর ধারক, কামোদ্দীপক, রক্তপরিষ্কারক, তবে বাতকর;
বমনকারক। এর ছালের ক্বাথ সোরিয়াসিস, পাণ্ডু (জন্ডিস) ও
কামলারোগ ও রক্তপিত্তে (নাক, মুখ দিয়ে রক্ত পড়া) উপকারী।
জ্বর নিবারণের জন্য এর ছালের গুঁড়ো ১-২ গ্রাম মাত্রায়
দিনে তিন-চার বার খাওয়াতে হয়। অল্প মাত্রায় খেলে এটি
টনিকের কাজ করে। ফলের গুঁড়ো গরম পানিতে মিশিয়ে বাগীতে
পুলটিশ দিলে উপকার হয়। কারো কারো মতে, কাকডুমুরের ফল
খেলে অকালে গর্ভপাত নিবারণ হয়। অনেকে দুধ ঘন করার জন্য
গরু-মহিষকে ডুমুরের ফল খাওয়ায়। নিচে কাকডুমুরের ভেষজ
ব্যবহারবিধি দেয়া হলো।
ভস্মকাগ্নি : একে লোকজ কথায় বলে খাই-খাই করা রোগ। এ
রোগের উৎপত্তি বায়ুধিকার প্রধান অগ্নিমান্দ্যে এবং এর
চিকিৎসা না করলে কৃশতা রোগ অনিবার্য।
এ রোগ হলে কাকডুমুরের ফলের রস ২ চা-চামচ করে প্রতিদিন
এক-দুই বার করে খেলে দুই-তিন দিনেই ফল দেখা যায়।
অপুষ্টিজনিত কৃশতা : এ ক্ষেত্রে পাকা কাকডুমুর কেটে
পোকা আছে কি না দেখে নিয়ে তারপর রোদে শুকাতে হবে। এরপর
প্রতি ৫ গ্রাম মাত্রায় আধাকাপ দুধ ও ২ কাপ পানিতে
সিদ্ধ করে আন্দাজ আধা কাপ থাকতে নামিয়ে ডুমুরসহ সে পানি
খেতে হবে।
শোথে অপুষ্টি : এ ক্ষেত্রে কাকডুমুরের পাকা ফলের রস ২
চা-চামচ মাত্রায় একটু গরম করে প্রতিদিন একবার অথবা
দুইবার খেতে হবে। এতে বুকের দুর্বলতাও কমবে, শোথও সারবে।
রক্তপিত্ত : পাকা কাকডুমুর ছোট হলে ৩টি, বড় হলে ২টি
পানিতে মিশিয়ে নিংড়ে পাতলা ন্যাকড়ায় ছেঁকে ওই পানি দিনে
২-৩ বার খেলে ২-৩ দিনের মধ্যে রক্ত ওঠা বন্ধ হবে, গলার
সুড়সুড়ি ও কাশি থাকবে না।
প্রদর : রক্ত ও শ্বেতপ্রদরে কাকডুমুর গাছের কাঁচা ছাল
১০ গ্রাম একটু থেঁতো করে ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করার পর
আন্দাজ এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছেঁকে ওই পানি সকাল ও
বিকেলে খেতে হবে। এর দ্বারা রক্তপ্রদরও সারবে।
শ্বেতপ্রদরও কিছু দিন ধরে ব্যবহার করলে সারবে। তবে এ
ছালসিদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে দিলে এ রোগ তাড়াতাড়ি সারবে।
পেটের দোষ : পেটের দোষ যদি বারো মাসই চলে, তবে সে
ক্ষেত্রে কাকডুমুর গাছের গোড়ার দিকে শুকনো ছাল, ১০
গ্রাম নিয়ে একটু থেঁতলে ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করার পর এক
কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সে পানি সকাল ও বিকেলে ২ ভাগ
করে খেতে দিতে হবে।
শ্বেতী রোগ : শ্বেতী রোগের বেলায় পেটের দোষের নিয়মে
খেলে ধীরে ধীরে দাগগুলোর রঙ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।
ডুমুরের তরকারিও খেতে হবে। চিকিৎসা শুরু হলে দাগের
জায়গায় প্রদাহ বা জ্বালা শুরু হলে কয় দিন খাওয়া বন্ধ
রাখতে হবে।
চামড়ার বিবর্ণতা : যেকোনো কারণে চামড়ার রঙ বদলে গেলে
অর্থাৎ অন্য রকম হয়ে গেলে কাকডুমুর সিদ্ধ পানিতে (কাঁচা
ডুমুর অথবা ছাল) ১০-১৫টি চামড়াটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এ
ছাল বা ফল থেঁতলে নিয়ে ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ১ ভাগ
থাকতে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করতে হবে। ১৫-২০ দিন
ধরে এভাবে ব্যবহার করলে রঙ স্বাভাকি হবে।
দূষিত ক্ষত : পচা বা দূষিত ঘা, তা নতুন বা পুরাতন হোক,
২০ গ্রাম কাকডুমুরের ছাল সিদ্ধ পানিতে ধুলে পচাটা সেরে
যাবে। এতে ৫-৬ কাপ পানিতে ছাল নিয়ে সিদ্ধ করে এক-দেড়
কাপ থাকতে নামিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
ঋতুস্রাব : মেয়েদের অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হলে কচি ডুমুরের
রস মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এটি দুধ ও চিনি
মিশিয়ে খেলেও চলে।
রক্তপিত্ত বা মুখ দিয়ে রক্ত ওঠা : এতে কচি ডুমুরের রসে
মিছরি মিশিয়ে দিনে ২ বার করে খেতে হবে (১ চা-চামচ রসে
আধা চা-চামচ মিছরির গুঁড়ো। তাতে মুখ দিয়ে রক্ত ওঠা
বন্ধ হবে, এটা ৩-৪ দিন খেতে হয়।
আমাশয় : এ রোগে কাকডুমুরের পাতার একটি কুঁড়ি আতপ চালের
সাথে চিবিয়ে খেলে রোগের উপশম হয়। এভাবে তিন দিন খেতে
হবে। তা ছাড়া গাছের ছাল থেঁতলে নিয়ে মিছরির সরবতের সাথে
ভালোভাবে চটকে ছেঁকে নেয়ার পর দিনে ২ বেলা ২ চা-চামচ
করে।
মাথা ঘোরা : ভাতপাতে প্রথমে ১ চা-চামচ দূর্বাঘাস ভাজা
খেয়ে পরে বীজ বাদ দিয়ে ডুমুর ভাজা খেলে উপকার হয়।
ডায়াবেটিস : কাকডুমুর গাছের শিকড়ের রস এ রোগে খুবই
উপকারি। তবে অনেক দিন ধরে খেলে তবেই উপকার মিলে।
হেঁচকি : কাকডুমুর চাক চাক করে কেটে কিছুক্ষণ পানিতে
ভিজিয়ে রেখে আধা ঘণ্টা পর পর ১ চা-চামচ করে তা পান করলে
৪-৫ বার পান করার পরই হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়।
এ ছাড়া কাকডুমুরে যথেষ্ট পরিমাণে লোহা রয়েছে বলে এটি
খেলে স্কার্ভি, রক্তপ্রদর, রক্তপড়া, অর্শ্ব, রক্ত
প্রস্রাব ও রক্তশূন্যতা রোগ সারে, তবে বেশি করে খেলে
কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
যজ্ঞডুমুর : এটি উদুম্বর নামেও পরিচিত। যজ্ঞডুমুর
কৃমিনাশক, সাইনাস সারায়, শোথ, রক্তদোষনাশক, ক্ষতনাশক,
কুষ্ঠে কাজ দেয়। এর ক্ষীর গাঁটের ফুলোয় লাগিয়ে দিলে
প্রদাহ বা জ্বালা ব্যথা কমে। নিচে যজ্ঞডুমুরের
ব্যবহারবিধি দেয়া হলো।
কেটে রক্তপাত হতে থাকা : এ অবস্থায় যজ্ঞডুমুরের ঘনসার
লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যথা হবে না এবং ওটাতে
ঘা সেরে যাবে। (ঘনসার বানানোর নিয়ম : ১২-১৫ সে.মি.
ডালসহ কাঁচা পাতা ছেঁচে নিয়ে তা সিদ্ধ করে সে পানি
ছেঁকে নিয়ে নরম জ্বালে আবার পাক করতে করতে ঘন হয়ে
চিটাগুড়ের থেকেও একটু বেশি ঘন হলেই বা কাই করে নামাতে
হয় এবং সংরক্ষণ করতে। এতে অল্প সোহাগার ঘৈ মেশালে এটা
আর নষ্ট হয় না।
বিষাক্ত পোকা-মাকড়ের কামড় ও কুকুরে আঁচড় : এ অবস্থায়
যজ্ঞডুমুরের ঘনসার লাগালে জ্বালা-যন্ত্রণার উপশম হবে,
বিষও থাকবে না।
থেতলে যাওয়া ও আঘাত লাগা : এ অবস্থায় ঘনসারের সাথে দুই
গুণ পানি মিশিয়ে পেস্ট বা লেইয়ের মতো লাগালে ফুলা ও
ব্যথা দুই-ই কমে যাবে।
ফোঁড়া : ফোঁড়ায় ঘনসার চার গুণ পানির সাথে মিশিয়ে
ন্যাকড়া বা তুলোয় লাগিয়ে বসিয়ে দিলে ওটা ফেটে পুঁজ
রক্ত বেরিয়ে যাবে এবং ক’দিনেই তা সেরে যাবে।
মুখের দুর্গন্ধ, দাঁতের ও মুখে ক্ষত : এ অবস্থায়
যজ্ঞডুমুরের ঘনসার আট গুণ পানিতে গুলে গরগরা করলে অথবা
মুখে রেখে দিলে দু-এক দিনেই রোগের উপশম হবে।
গ্রন্থিস্ফীতি : যজ্ঞডুমুরের ক্ষীর ফোলায় লাগালে
প্রদাহ ও ব্যথা কমে যায়, বসেও যায়।
রক্তপিত্ত, রক্তার্শ ও রক্তস্রাব : যজ্ঞডুমুরের ঘনসার
১২ গ্রেন আন্দাজ নিয়ে ৫০ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে দিনে
২-৩ বার খেলে রোগের উপশম হয়।
পিত্তবিকারজনিত রোগ : এ ক্ষেত্রে যজ্ঞডুমুরের শুকনো
পাতার গুঁড়ো মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে সেরে যায়।
চিকেন পক্স : এসব ক্ষেত্রে পাতা দুধে ভিজিয়ে মধুতে মেড়ে
লাগালে বিশেষ উপকার হয়।
স্ত্রী রোগজনিত স্রাব : এ ক্ষেত্রে ঘনসার ৮-১২ গুণ
পানিতে গুলে ডোস দিলে তা নিশ্চিত প্রশমিত হবে।
প্রদর : যজ্ঞডুমুরের রক্ত মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে প্রদর
রোগ সারে।
বহুমূত্র : দাদখানি চালের সাথে যজ্ঞডুমুরের ভর্তা খেলে
বহুমূত্র রোগে উপকার হয়।
যজ্ঞডুমুরে অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও এতে লোহা বেশি
বলে অধিক পরিমাণে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এতে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানিতে একটি পাতি
লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে অসুবিধাটা চলে যাবে।
Top
বন্দিশালায় কষ্টের
জীবন
সাগরপথে মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে অসংখ্য
বাংলাদেশি এখন থাইল্যান্ডের বিভিন্ন বন্দিশালায়
ধুঁকছেন। কেউ কারাগারে, কেউ অভিবাসন পুলিশের ক্যাম্পে,
আবার কেউ বা থানাহাজতে। এঁদের কারও কারাবাসের মেয়াদ
দুই দিন, কারও দুই বছর বা তারও বেশি।
থাইল্যান্ডে বন্দিশালায় এ মুহূর্তে কত বাংলাদেশি আছেন,
তার পুরো হিসাব বাংলাদেশ দূতাবাস, আন্তর্জাতিক অভিবাসন
সংস্থা (আইওএম) বা ইউএনএইচসিআর-কারও কাছে নেই।
থাইল্যান্ডের স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশি
বন্দীর সংখ্যা হবে কয়েক হাজার। অবস্থা এমন হয়েছে যে
সমুদ্র উপকূলবর্তী দক্ষিণ থাইল্যান্ডের দুটি প্রদেশ
সংখলা ও পুকেটের কারাগার ও ডিটেনশন ক্যাম্পে আর জায়গা
হচ্ছে না। তাই অনেক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাকে দেশটির
উত্তরাঞ্চলের চিয়াংরাই প্রদেশসহ কম্বোডিয়ার সীমান্তে
স্থাপিত বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন মুখপাত্র জানান, তাঁদের কাছে
১১ মে পর্যন্ত যে হিসাব আছে, তাতে এ দেশে বন্দী
বাংলাদেশির সংখ্যা ৪১৯। তিনি বলেন, শুধু সাজা শেষ হলে,
তারপর আদালতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে
পাঠানোর পর থাই কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানায়।
এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তারা সাক্ষাৎকার নিয়ে তাঁদের
নাম-ঠিকানা ঢাকায় পাঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে
এঁদের নাগরিকত্ব ঠিক আছে বলে ছাড়পত্র আসার পরই দূতাবাস
দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা আটক হয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে
কোনো তথ্য নেই। এমনকি দু-তিন বছর আগে আটক হওয়া অনেকের
তথ্য দূতাবাসের কাছে নেই। প্রথম আলোর অনুসন্ধানে ১৬
তরুণের সন্ধান মিলেছে, যাঁরা প্রায় দুই বছর ধরে
কারাগারে বা পুলিশ হাজতে আছেন। কিন্তু বাংলাদেশ
দূতাবাস তা জানে না বা থাই কর্তৃপক্ষ দূতাবাসকে জানায়নি।
এঁদের দুজন ইতিমধ্যে মারা গেছেন। স্বজনেরা লাশও পাননি।
দূতাবাসের ওই মুখপাত্র জানান, দূতাবাসের কাউন্সিলর
শাখার কর্মকর্তারা গত বছরের মার্চ থেকে এ বছরের ১০ মে
পর্যন্ত আটক থাকা ১ হাজার ২১৪ জন বাংলাদেশির
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পরিচয় নিশ্চিত হতে। আর গত বছরের ১৩
জুন থেকে ৮ মে পর্যন্ত ৭৯৯ জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার
নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, এই ৭৯৯ জনের মধ্যে ১৩
জন থাই এয়ারওয়েজে এবং অন্যরা বাংলাদেশ বিমানে দেশে
ফিরেছেন। বিমান ভাড়া দিয়েছে তাঁদের পরিবার।
এ ছাড়া আটক বাংলাদেশিদের পরিচয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশের
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র না এলে তাঁদের দেশে
ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এখানকার সরকার বা বাংলাদেশ দূতাবাস
কিছু করতে পারে না। কিন্তু এ পরিচয় নিশ্চিত করার কাজটি
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করে স্থানীয় পুলিশের মাধ্যমে। এ
ক্ষেত্রে পুলিশকে টাকা না দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে
প্রতিবেদন আসে না, এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বলে
সংশ্লিষ্ট একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
আইওএম-এর ব্যাংকক কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান,
সাম্প্রতিককালে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁদের প্রথম
যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে থাই কর্তৃপক্ষ। এরপর দ্বিতীয়
ধাপে গিয়ে তারা আইওএম ও ইউএনএইচসিআরকে ডাকবে।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, আটক হওয়ার পর শুরুতে কোনো কোনো
বাংলাদেশি নিজেদের রোহিঙ্গা বলে দাবি করেন। তাঁদের
ধারণা, রোহিঙ্গা দাবি করলে শরণার্থী মর্যাদা পাওয়া যাবে
এবং এ দেশে থেকে কাজ করা যাবে। পরে ভুল ভাঙলে অনেকে
আইওএম বা ইউএনএইচসিআরের কাছে আসল পরিচয় স্বীকার করেন।
এদিকে সংখলা প্রদেশের রাত্তাফোমে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে
তিন দফায় যে ২২০ জনকে আটক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৮০
জনই বাংলাদেশের বলে জানিয়েছেন সেখানকার ডিটেনশন
ক্যাম্পের কর্মকর্তারা। অন্যরা মিয়ানমারের আরাকানের
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। থাই সরকারের অভিযানের মুখে মানব
পাচারকারীরা তাঁদের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
সর্বশেষ গত শুক্রবার পুকেটের পাক্সনা দ্বীপে আরও ১০৬
জনকে আটক করা হয়েছে। এঁদের কতজন বাংলাদেশি তা নিশ্চিত
হওয়া যায়নি। তবে পুকেটের স্থানীয় একজন সাংবাদিক এ
প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, সেখানেও বাংলাদেশি নাগরিক আছে
বলে তিনি জেনেছেন।
এ প্রতিবেদক গত তিন দিনে সংখলা প্রদেশের বিভিন্ন জেলায়
তিন ধরনের তিনটি বন্দিশালায় (কারাগার, পুলিশের হাজতখানা
ও অভিবাসন) বাংলাদেশি বন্দীদের সঙ্গে অল্প সময় কথা
বলার সুযোগ পেয়েছেন। এঁদের মধ্যে সাদাও জেলা কারাগারে
থাকা বগুড়ার মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘এখানে যে কী কষ্ট,
কীভাবে বলব, বোঝাতে পারব না। খাবার কষ্ট, থাকার কষ্ট,
ঠিকভাবে বসা যায় না, অতটুক জায়গায় ঘুমাতে হয়।’
সাতক্ষীরার রবিউল হোসেন বলেন, ‘ওদের ভাষা বুঝি না। আমরা
বিদেশি বলে লাথি-গুঁতা মারে, ঘৃণা করে। অসুখ হলে
চিকিৎসা দেয় না। দুজন মারা গেছে, গ্যাস্ট্রিকের জন্য
তারা খেতে পারত না।’
এর চেয়েও খারাপ দশা অভিবাসন পুলিশের ডিটেনশন ক্যাম্পে।
একসঙ্গে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মিলিয়ে শত শত মানুষ
গাদাগাদি করে রাখা। একই কষ্টের কথা জানিয়েছেন হাজ্জাই
থানাহাজতে থাকা ১২ বাংলাদেশি তরুণও। কারাবন্দী এসব
বাংলাদেশি জানেন না, তাঁদের এ দুর্দশা কবে শেষ হবে।
Top
মানবপাচার রোধকল্পে আন্তর্জাতিক তদন্তে মানবাধিকার
কমিশনের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে মানব পাচার রোধ
সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিক তদন্ত কার্য পরিচালনার
লক্ষ্যে কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার এর
নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত ২২ মে ২০১৫ মালয়েশিয়ার
রাজধানী কুয়ালালামপুর এবং ২৭ মে ২০১৫ থাইল্যান্ডের
রাজধানী ব্যাংককে গমন করেন। মানবাধিকার কমিশনের
মহাসচিব কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের হাই
কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম এবং কাউন্সিলর মোঃ রইচ হাসান
সরওয়ার এর সাথে বৈঠকে মিলিত হন। এছাড়া কমিশনের মহাসচিব
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বৈধ এবং অবৈধ প্রায় ২০ জনের বেশি
বাংলাদেশী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়
করেন।
অপরদিকে কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার গত ২৭
মে ২০১৫ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বাংলাদেশ
দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত/কাউন্সিলর এহতেশামুল
হক এবং দূতাবসের কনসুলার শাখার কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ
হোসেনের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। থাইল্যান্ডে অবস্থানকালে
কমিশনের মহাসচিব ব্যাংককে বসবাসকারী সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তাদের প্রায় ১৫ জন বাংলাদেশীর সাথে মানব পাচার
বিষয়ে বিশদ আলোচানায় অংশ নেন। উল্লেখ্য থাইল্যান্ড,
মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র সীমান্তে প্রায় সাত
থেকে দশ সহস্রাধিক মানুষ আটকা অবস্থায় অমানবিক
জীবনযাপন করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এ যাবত প্রায়
শতাধিক মানুষের গণ কবরের সন্ধান পাওয়া যায় এবং তাদের
কঙ্কাল পরীক্ষার জন্য থাই এবং মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ
মরদেহের অবশিষ্টাংশ পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে প্রেরণ
করে। জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্টের হস্তক্ষেপে উল্লেখিত
৩টি দেশ এবং মায়ানমার সমুদ্রে আটকে পড়া অসহায় মানুষদের
ঠাই দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে। সমুদ্রে আটকে পড়া প্রায়
দশ সহস্র মানুষের মধ্যে সিংহভাগই হচ্ছে মায়ানমারের
রোহিঙ্গা নাগরিক। রোহিঙ্গা নাগরিকদের মায়ানমার তাদের
নাগরিক বলে স্বীকার করছে না। রোহিঙ্গাদের মায়ানমার
বাংলাদেশী বলে উল্লেখ করছে, যা সম্পূর্ণ অসত্য।
থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের
কর্মকর্তাগণ অবৈধভাবে এসে আটক হওয়ার পর তাদের বাংলাদেশে
ফেরত পাঠানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে। সমুদ্র সৈকতে আটককৃত
ব্যক্তিগণ বাংলাদেশী নাগরিক বলে উল্লেখ করা হলেও
পরবর্তীতে দেখা যায় আটককৃত ব্যক্তিদের অধিকাংশই
রোহিঙ্গা, যারা বাংলাদেশের কোন নাগরিক নয়। বাংলাদেশে
বর্তমানে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলার
টেকনাফ এবং উখিয়া এলাকায় ইউএনএইচসিআর এর রিফুজি
ক্যাম্পে অবস্থান করছে। অবৈধ মানব পাচার কার্যক্রমের
সাথে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম এলাকার কতিপয় রাজনৈতিক
নেতা এবং বেশ কিছু পুলিশ কর্মকতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া
গেছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক তদন্তপূর্বক
দায়ী ব্যক্তিদের খুজে বের করতে হবে এবং তাদের আইনের
নিকট সোপর্দ করতে হবে। এছাড়া অদূর ভবিষ্যতে কোন
বাংলাদেশী যাতে করে এমন অমানবিক অবস্থায় দেশ না ত্যাগ
করে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে সমুদ্র সীমান্ত এলাকায় দায়িত্বে নিয়োজিত
কোস্টগার্ড, বিজিবি এবং পুলিশের দায়িত্ব আরও কঠোরতর
প্রদান করতে হবে। এ ধরনের অবৈধ মানব পাচার বাংলাদেশের
ইমেজকে আন্তর্জাতিক মহলে খাটো করা হচ্ছে।
Top
প্রতারণার নাম মাদক নিরাময়
চিকিৎসার নামে প্রতারণা আমাদের দেশের চিকিৎসা
ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের
যত্রতত্র গড়ে উঠেছে মনোলোভা সাইনবোর্ডের ক্লিনিক।
পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ছাড়াই তারা বছরের
পর বছর চালাচ্ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। সহজ-সরল মানুষ হচ্ছে
প্রতারণার শিকার। মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামে রাজধানীসহ
সারা দেশে যেসব ক্লিনিক গড়ে উঠেছে সেগুলোতে প্রতারণার
মাত্রা আরও বেশি। এসব ক্লিনিকের বেশির ভাগেরই কোনো
অনুমোদন নেই। উৎকোচের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে
চলছে তথাকথিত সব মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। এসব
নিরাময় কেন্দ্র থেকে মাদকাসক্তদের সুস্থ হয়ে বাড়ি
ফেরার নজির নেই বললেই চলে। বরং বেশকিছু নিরাময় কেন্দ্র
মাদক কেনাবেচা ও সেবনের নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে।
তথাকথিত নিরাময় কেন্দ্রের মতো মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে
জড়িত এনজিওগুলোর কার্যক্রমও বাণিজ্যিক হয়ে পড়েছে।
মাদকবিরোধী জনসচেতনতা গড়ার নামে রাজধানীসহ সারা দেশে
গড়ে উঠেছে আড়াই শতাধিক এনজিও। তাদের বেশির ভাগ
কার্যক্রম বার্ষিক মাদক দিবস পালনের মিছিল, মিটিং,
সেমিনার আর র্যালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অথচ নিষ্ঠুর সত্য
হলো মাদকবিরোধী জনসচেতনতার নামে বিভিন্ন দাতা সংস্থার
কাছ থেকে প্রতি বছর এনজিওগুলো গড়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা
হাতিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। দেশে সরকারিভাবে মাত্র
৫৭টি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের অনুমোদন থাকলেও
অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠা নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় দেড়
হাজারের মতো। এসব নিরাময় কেন্দ্র থেকে কেউ চিকিৎসা নিয়ে
কিছুদিন ভালো থাকলেও আবারও তাকে মাদকেই ফিরে যেতে দেখা
যায়। বেসরকারিভাবে মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন
কেন্দ্র করতে হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের
অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু মতলববাজরা মাদকদ্রব্য
নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজনই বোধ
করছে না। মাদকাসক্তি নিরাময়ের নামে কোনো কোনো ক্লিনিকে
গোপনে মাদক ব্যবসা চালানো হয় এমনটিও একটি ওপেন সিক্রেট।
নারী মাদকাসক্তদের লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় তথাকথিত
নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে এমন অভিযোগ প্রায়শ শোনা যায়।
চিকিৎসার নামে প্রতারণা একটি মারাৎদক অপরাধ। সভ্য সমাজে
এ ধরনের অমানবিক এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া যায়
না। নিজেদের সভ্য সমাজের অংশ ভাবতে চাইলে প্রতারকদের
বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
Top
মানবাধিকার কমিশন বরগুনা জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক
সম্মেলন অনুষ্ঠিত
৯ মে ২০১৫ইং সকাল ১০টায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
বরগুনা জেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে সাথে পতাকা উত্তোলনের মধ্য
দিয়ে সকালে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক
মীর জহুরুল ইসলাম, একই সাথে সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন
করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোল্লা নাসির
উদ্দিন। পরে হোটেল বে অব বেঙ্গলে সংগঠনের সভাপতি
আনোয়ার হোসেন মনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে
বক্তব্য রাখেন, বরগুনার জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম,
পৌর মেয়র শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
জাহাঙ্গীর আলম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্বাস
হোসেন মন্টু মোল্লা, সিভিল সার্জন ডাক্তার রুস্তম আলী,
সাবেক মেয়র ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি
অ্যাডভোকেট শাহজাহান, সনাক ও বরগুনা জেলা বার
এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান,
বরগুনা পেসক্লাবের সম্পাদক জাফর হোসেন হাওলাদার প্রমূখ।
সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও বিটিভি বরগুনা
প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার সভাপতি, এটিএন বাংলা ও
দৈনিক জনকন্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা অ্যাডভোকেট মোস্তফা
কাদের সম্পাদক নির্বাচিত হন।
Top
শিশু অপহরণ বাড়ছে
কিছুদিন আগেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে
দুষ্কৃতকারীরা নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে। এখন
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কমলেও থেমে নেই অপরাধ, অপরাধের
ঘটনা। বরং দিন দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই হচ্ছে।
প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটছে বহু খুনের ঘটনা।
ঘরে ঢুকে জবাই করে যাচ্ছে। ঘটছে অপহরণের ঘটনাও। তেমনই
একটি ঘটনার কিনারা করতে পেরেছে র্যাব। আট বছরের এক
শিশু অপহরণের মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মা-বাবার
কাছে ফিরে যেতে পেরেছে শিশুটি। ফিল্মি কাহিনীকেও হার
মানায় এমনই ঘটনা। ঢাকার ব্যস্ততম সড়ক থেকে শিশুটিকে
অপহরণ করা হয়। অপহরণের চার দিন পর তাকে ফেরত দিয়ে যায়
অপহরণকারীরা। গত রবিবার অপহরণকারীদের একটি অংশকে ধরতে
সমর্থ হয় র্যাব।
দেশের ভেতরে সক্রিয় অপরাধীচক্র নানা পরিচয়ে অপরাধ
সংঘটন করে থাকে। অপরাধীদের একটি অংশ আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও অপরাধ করে থাকে। দেশের
বিভিন্ন স্থান থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর
পরিচয় দিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ
চক্রগুলোকে কোনোভাবেই দমন করা যাচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে
অপরাধীরা ধরা পড়লেও দুর্বল অভিযোগপত্রের সুযোগে আইনের
ফাঁক গলে তারা বেরিয়ে আসে। নতুন উদ্যমে অপরাধ তৎপরতার
সঙ্গে যুক্ত হয়। অপরাধীদের অপতৎপরতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কোনো সদস্যের সখ্য গড়ে ওঠার
অভিযোগও আছে। বিশেষ করে থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ
রেখে অপরাধ তৎপরতা চলে, এমন অভিযোগ তো অনেক পুরনো।
কিছুদিন আগে এক জরিপে দেখা গেছে, পুলিশের দেওয়া দুর্বল
অভিযোগপত্রের কারণেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্র্ধষ
অপরাধীরাও জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে তাদের আর আদালতে
হাজির করা যায় না। ফলে বিলম্বিত হয় বিচারকাজ। অনেক
ক্ষেত্রে পুলিশ এমন তদন্ত রিপোর্ট দেয় যে অপরাধীরা পার
পেয়ে যায়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে,
সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলো সক্রিয় থাকার পরও দেশের
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এরই মধ্যে ঢাকায়
নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সব মিলিয়ে দেশের
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নেই। এক শিশু আবিরকে উদ্ধার
করে তৃপ্ত হলে চলবে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের
হত্যা-অপহরণের ঘটনা ঘটছে এবং শিশুরাই তার শিকার হচ্ছে
বেশি। এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আবিরের পরিবারের সৌভাগ্য,
তাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বহু মা-বাবারই
বুক খালি হয়ে গেছে। মুক্তিপণ দেওয়ার পরও জীবিত পাওয়া
যায়নি, এমন উদাহরণও তো আছে। কাজেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীকে এই অবনতি রোধ ও অপরাধীদের প্রতিরোধে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। হতে হবে আরো সক্রিয়।
Top
মেধাবী মুখ
সিদরাতুল মোনতাহা ইরা
সিদরাতুল মোনতাহা ইরা এবার এসএসসি পরীক্ষায় টঙ্গী
সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী থেকে ব্যবসায় মানবিক বিভাগে
গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে। তার বাবা আলহাজ মোঃ মেরাজ
উদ্দিন বাংলাদেশ বানবাধিকার কমিশনের টঙ্গী অঞ্চলের
সভাপতি ও টঙ্গী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মা
মোর্শেদা আক্তার মিলি গৃহিণী। তার এ সাফল্যে সে বাবা-মা
ও স্কুলের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ইরা ভবিষ্যতে
চার্টার অ্যকাউন্ট্যান্ট হতে চায়। সে সবার দোয়া
প্রার্থী। ইরার জেঠা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ হাসান
উদ্দিন সরকার সফিউদ্দিন সরকার একাডেমী এন্ড কলেজসহ
টঙ্গী ও গাজীপুরে অর্ধ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
প্রতিষ্ঠাতা।
Top
তথ্য অধিকার প্রসঙ্গে
তথ্য কমিশনকে তথ্য অধিকার আইনের বিষয়ে জনগণকে আরও
সচেতন করিয়া তুলিতে উদ্যোগী হইবার আহ্বান জানাইয়াছেন
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রধান তথ্য কমিশনার
জানাইয়াছেন, সারাদেশে জনগণকে তথ্য দেওয়ার জন্য ২১
হাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিয়াছে। ২০১৪ সালের
বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছয় বৎসর পূর্বে তথ্য
অধিকার আইন পাস হইবার পর এখন অবধি জনগণকে দেওয়া হইয়াছে
প্রায় ৬৯ হাজার তথ্য। তাহা ছাড়া নিষপত্তি করা হইয়াছে
তথ্য না দেওয়া সংক্রান্ত ৯২০টি অভিযোগ।
তথ্য জানিবার অধিকারটি কয়েক দশক পূর্বেও তৃতীয় বিশ্বের
দেশসমূহের জনগণের কাছে ‘সোনার হরিণ’ কিংবা অলীক কল্পনা
বলিয়া মনে হইত। জানা যায়, ১৭৬৬ সালে প্রথম সুইডেনে এই
ধরনের আইন প্রবর্তিত হয়, যাহার মাধ্যমে পূর্বেকার
সেন্সারশিপ প্রথা রহিত করা হয়; যাহা সংবাদপত্রের
স্বাধীনতা আইন নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের
আইন আলোকিত আইন নামে পরিচিত। মানবাধিকারের সর্বজনীন
ঘোষণাপত্রে তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার সংরক্ষিত আছে।
জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস চার্টার ১৯৪৮-এর ১৯ নম্বর
ধারায় সপষ্টভাবেই মতপ্রকাশের অধিকারের কথা বলা হইয়াছে।
এই অধিকারের আওতায় শুধু মত প্রকাশ করা নয়, গণমাধ্যমের
দ্বারা যেকোনো তথ্য ও ধারণা জানিবার, গ্রহণ করিবার এবং
ছড়াইয়া দেওয়ার অধিকারের কথা বলা হইয়াছে। আন্তর্জাতিক
নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক চুক্তিপত্রে (আইসিসিপিআর)
ইহাকে উল্লেখ করা হইয়াছে একটি আইনগত অধিকার হিসাবে।
ধারণাগত ও ব্যবহারিক দৃষ্টিকোণ হইতেও তথ্য অধিকার আইন
মূলত একটি আইনি প্রক্রিয়া।
জনগণ যখন একটি প্রজাতন্ত্রের মালিক হিসাবে স্বীকৃত হইয়া
থাকে, তখন সেই প্রজাতন্ত্রের কর্মধারার যেকোনো
পর্যায়ের তথ্য জানিবার অধিকার রাখে প্রশাসনিক
স্বচ্ছতার নিমিত্ত। ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন পাস
হইলেও কর্তৃপক্ষের নিকট নিয়মতান্ত্রিক পথে তথ্য চাহিয়া
বিড়ম্বনায় পড়িবার ঘটনাও বিরল নহে। এককালে সরকারি তথ্য
চাহিতে গিয়া ব্রিটিশ আমলের ‘দি অফিসিয়াল সিক্রেটস
অ্যাক্ট ১৯২৩’ খড়গ দিয়া তথ্য দিতে নানা তালবাহানা
করিতেন সরকারি কর্মকর্তারা। নূতন করিয়া তথ্য প্রাপ্তির
আইন ও তথ্য কমিশন গঠিত হইবার পর রাতারাতি পুরো স্বচ্ছতা
না আসিলেও বিষয়টি ক্রমশ জনবান্ধব হইতেছে।
ইইউতে
সংস্কার আনার জোরালো আহ্বান
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) সংস্কার আনতে নিজের পরিকল্পনায়
সমর্থন পেতে জার্মানি, ফ্রান্সসহ চার দেশের নেতাদের
সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড
ক্যামেরন।
সম্প্রতি থেকে টানা দুই দিনের ঝটিকা সফরে চার জোট
নেতার মন জয়ের চেষ্টা করেন সদ্য পুনর্র্নিবাচিত
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তবে অধিকতর সংহত ইউরোজোনের
পক্ষে ফরাসি-জার্মান পরিকল্পনার বিপরীতে একটি অসম
লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। খবর এএফপি ও
রয়টার্সের।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে
মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার দুই
দিনের সফর শেষ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এটা ছিল
ক্যামেরনের নির্বাচন-পরবর্তী প্রথম সফর। তাঁর সদ্য
পুনর্র্নিবাচিত সরকার যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকা না থাকা
প্রশ্নে গণভোটের পথ প্রশস্ত করতে আইনি উদ্যোগ নিয়েছে।
অঙ্গীকার অনুযায়ী, ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ সেই গণভোটের
আয়োজন করবে ক্যামেরন সরকার। গণভোটের আগেই ইইউতে এমন
একটি সংস্কার আনতে চান ক্যামেরন, যা দেখিয়ে তিনি
দ্বিধাবিভক্ত ব্রিটিশ ভোটারদের মন জয় করতে পারবেন। এ
লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি আগামী মাসে ব্রাসেলসে ইইউর একটি
সম্মেলনের আগেই জোটের সব দেশ সফর করবেন। ওই বৈঠকে তাঁর
সংস্কার প্রস্তাবটি নিয়ে বিশদ আলোচনা করবেন ইইউর নেতারা।
Top
কর অব্যাহতি পেল গ্রামীণ ব্যাংক
নোবেল বিজয়ী ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ
ব্যাংক অবশেষে বহুল আলোচিত ৬ মাসের কর অব্যাহতি পেয়েছে।
ফলে ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের প্রায়
৭৭ কোটি টাকা কর দিতে হবে না প্রতিষ্ঠানটিকে। উপরন্তু
কর হিসেবে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি যে আংশিক অর্থ পরিশোধ
করেছে তাও ফেরত পাওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। আইন
মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর সম্প্রতি রাজস্ব বোর্ড (এনবি
আর) এক আদেশে কর অব্যাহতি দিয়েছে। এনবি আরের সংশ্লিষ্ট
সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এনবি আরের একজন ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আলোচ্য ছয়
মাসের আগে ও পরে কর অব্যাহতি পেয়েছে বা পেয়ে আসছে। এ
বিবেচনায় এনবি আর তাদের কর অব্যাহতি দেয়া যেতে পারে
মর্মে মত দিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয়ের
অনুমোদনক্রমে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি
ইতিমধ্যে যে কর পরিশোধ করেছে তা ফেরত দেয়া হবে না।
ভবিষ্যতে কোন কর প্রাপ্য হলে তার সাথে সমন্বয় করা হবে
বলে জানান তিনি। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কর
অব্যাহতির সুযোগ চাওয়া হলেও ভূতাপেক্ষ কর (অতীতে
কর্তিত কর) ফেরত দেয়া হয় না – এমন যুক্তিতে এনবি আর ওই
সময়ের জন্য কর অব্যাহতি দিতে অপারগতা জানায়। ইতিমধ্যে
গ্রামীণ ব্যাংক ১০ কোটি টাকা অগ্রিম কর পরিশোধ করে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে গ্রামীণ ব্যাংক
অধ্যাদেশের ৩৩ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি সব ধরনের কর
অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতে তিন বছর পর পর এই মেয়াদ নবায়ন করা হয়।
কিন্তু ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত
গ্রামীণ ব্যাংকের কর অব্যাহতির আবেদনের সিদ্ধান্তটি
ঝুলে থাকে। অর্থাৎ এনবি আর সিদ্ধান্ত না নেয়ায় করের
আওতায় পড়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীকালে এনবি আর ২০১১
সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত
প্রতিষ্ঠানটিকে কর অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু মাঝের ছয় মাসের কর অব্যাহতির বিষয়ে কোন
সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না এনবি আর। তবে সর্বশেষ
গতবছরের জুনে এনবি আরের বোর্ডসভায় কর অব্যাহতি দেয়ার
বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসে। এর পর আইনি প্রক্রিয়া
সম্পন্ন করে প্রায় একবছর পর এ আদেশটি জারি হলো।
এদিকে গ্রামীণ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি
আবারো ৫ বছরের কর অব্যাহতি চেয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে
তিন বছরের কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। গ্রামীণ
ব্যাংকের চেয়ারম্যান খন্দকার মোজাম্মেল হক এনবি আর
চেয়ারম্যানের কাছে সময় বাড়ানোর এ আবেদন জানিয়ে একটি
চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে গ্রামীণ ব্যাংককে আগামী জানুয়ারি
থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য সব
ধরনের আয়কর, সুপার ট্যাক্স, ব্যবসায় মুনাফা কর প্রদান
থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়।
গ্রামীণ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে গ্রামীণ
ব্যাংক ২ হাজার ৫৬৮টি শাখার মাধ্যমে প্রায় ৮৬ লাখ ৫৪
লাখ সদস্যের মধ্যে এ ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
গ্রামীণ ব্যাংক বছরে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ
বিতরণ করছে। এ ঋণের আদায়ের হার ৯৮ দশমিক ১৪ শতাংশ।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
গাইবান্ধায় যৌতুক চেয়ে
নির্যাতনকারী স্বামী গ্রেপ্তার
যৌতুকের দাবিতে গাইবান্ধায় এক গৃহবধূকে নির্যাতনের
অভিযোগে স্বামী আব্দুস সোবহান সরকারকে (৪১) গ্রেপ্তার
করা হয়েছে। সোবহান গাইবান্ধার কয়ারপাড়া সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এটি ঘটেছে
গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী গ্রামে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা
দায়েরের পর পুলিশ এ পদক্ষেপ নেয়। এদিকে এ ঘটনায় উদ্বেগ
প্রকাশ করে নির্যাতনকারী স্বামীর শাস্তি দাবি করেছেন
স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা।
মামলার বিবরণ, পুলিশ ও নির্যাতিতা নিলুফা ইয়াসমীন (২৭)
সূত্রে জানা গেছে, তিনি হরিপুরের আবদুস সাত্তার
সরকারের মেয়ে। ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলার
খামার বোয়ালী গ্রামের মৃত মফসের আলীর ছেলে আব্দুস
সোবহানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুক দাবি
করে আসছিলেন স্বামী। কিন্তু নিলুফা দরিদ্র বিধবা মা ও
ভাইদের কাছ থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে প্রায়ই তাঁকে
নির্যাতন করতেন।
গত ৯ মে সন্ধ্যায় সোবহান নিলুফাকে তাঁদের বাড়ি থেকে এক
লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। অসহায়
নিলুফা যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোবহান তাঁকে বেদম
মারধর শুরু করেন। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে নিলুফা
চিৎকার শুরু করলে সোবহান বাঁশের লাঠি দিয়ে শরীরে ও
মাথায় আঘাত করতে শুরু করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে
এসে মুমূর্ষু অবস্থায় নিলুফাকে উদ্ধার করে। পরে দ্রুত
তাঁকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে নিলুফা শুক্রবার তাঁর
স্বামী সোবহানকে আসামি করে গাইবান্ধা সদর থানায় নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার
করে পুলিশ।
এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে মানবাধিকারকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে
যান। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি আমাতুর নুর
ছড়া বলেন, ‘নির্মম নির্যাতনের ছাপ গৃহবধূর শরীরে। এ
চিত্র মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই, সুষ্ঠু তদন্ত করে
নির্যাতনকারী স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।’
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ
রাজিউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে নিলুফার ওপর
নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। নিলুফার মামলার ভিত্তিতে
সোবহানকে গত শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল
শনিবার তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Top
নারী
উন্নয়নে বাধা বাল্যবিয়ে
বাল্যবিয়ের ফলে
কন্যা শিশু অল্প বয়সে গর্ভধারণ করে। ফলে প্রসবকালীন
জটিলতাসহ গর্ভপাত, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু বৃদ্ধি পায়।
কিশোরী মায়েরা অপুষ্টিতে ভোগে এবং অপুষ্ট শিশুর জন্ম
দেয়। তারা সন্তানের সঠিক লালন-পালন করতে পারে না। এই
সব অল্প বয়স্ক মায়ের ফিস্টুলা, যৌনরোগ, জরায়ুর মুখে
ক্যান্সার, এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকির মধ্যে
থাকে। এসব কারণে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ রাখার ব্যাপারে
এনজিও কর্মীরা সুপারিশ জানায়।
গত ১৭ মে সকালে সিরডাপ মিলনায়তনে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে
কর্মপরিকল্পনা-২০১৫-২০২১ কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা
বলেন। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ৫ বছর মেয়াদী জাতীয়
কর্মপরিকল্পনার খসড়া প্রণয়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু
বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ ও ইউএনএফপিএ যৌথভাবে এ
কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক
যুগ্ম সচিব তাহমিনা বেগমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি
হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব নাসিমা
বেগম।
নাসিমা বেগম বলেন, দীর্ঘকালের প্রবাদ এখন মিথ্যে হয়ে
গেছে। বাংলাদেশের নারীরা এখন আর কুড়িতে বুড়ি হয় না।
তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া
প্রতিশ্র“তি রক্ষার জন্য সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে
আসতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে ২০২১ সালের মধ্যে দেশ
থেকে বাল্যবিয়ে নির্মূল করা যাবে।
বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ নারীর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত
করছে। বাল্যবিয়ের ফলে একটি শিশু তার মানবাধিকার থেকে
বঞ্চিত হয়। একই সঙ্গে সে আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলে।
সরকারিভাবে বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত সঠিক তথ্য না থাকায়
অনেক সময় প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়। বাল্যবিয়ের কুফল
সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে থাকে।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন ইউনিসেফ’র ডেপুটি
রিপ্রেজেনটেটিভ লুইসি মভোনো ও ইউএনএফপিএ’র
রিপ্রেজেনটেটিভ আইওডি কাতো। নির্ধারিত বিষয়ের ওপর
স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের
মাল্টি-সেকটোরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্স এগেইনস্ট
উইম্যান -এর প্রকল্প পরিচালক ও উপ-সচিব ড. আবুল হোসেন
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
সমানবপাচারে
কক্সবাজারে ২৪ পুলিশ কর্মকর্তা
অর্থ আয়ের জন্য মানবপাচারের কাজে জড়িয়ে পড়েছেন পুলিশ
সদস্যরাও। কক্সবাজার জেলায় কাজ করেছেন বা করছেন এমন
অন্তত ২৪ জনের নাম পাওয়া গেছে পুলিশের গোয়েন্দা
সংস্থার প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি এখন স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের হাতে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন কক্সবাজার থানার এসআই (উপপরিদর্শক)
মোস্তফা কামাল, এসআই সুনিল, টিএসআই (টাউন
সাব-ইন্সপেক্টর) দেলোয়ার, সৈকত পুলিশ ফাঁড়ির টিএসআই
এমদাদ, টেকনাফ থানায় বিভিন্ন সময় দায়িত্ব পালনকারী ওসি
(অফিসার ইনচার্জ) ফরহাদ, ওসি মুক্তার আহম্মদ, ওসি
রঞ্জিত দাশ, শাপলাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে বিভিন্ন সময়
ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করা এসআই আনিসুর রহমান, এসআই
মজিবুর রহমান, এসআই বাবুল আজাদ, রামু থানার অপারেশন
অফিসার এসআই শাহ আলম, এএসআই নয়ন, এএসআই কানু, কুতুবদিয়া
থানার ওসি অং সাই থোয়াই, উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম,
একই থানার এসআই রাজেস ও প্রভর দাশ; হিমছড়ি ফাঁড়ির
ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করা এসআই আবদুর রহমান ও এসআই
বদরুল আলম; ইনানী ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আলাউদ্দিন, একই
ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই হাবিবুর রহমান, এসআই সাঈদ
মিয়া ও এসআই মাশরুর হক এবং বর্তমানে ঢাকার
শিল্পাঞ্চলের এসআই নজরুল।
কক্সবাজারে মানবপাচার নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী সাংবাদিকদের
সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে
এম শহিদুল হক, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম,
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক কর্নেল মিসতাউদ্দিন আহমেদ, বর্ডার
গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার কমান্ডার কর্নেল
খালেকুজ্জামান, কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কমান্ডার
ক্যাপ্টেন শহীদুল ইসলাম, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।
সভায় আইজিপি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য মানবপাচারে জড়িত
থাকলে বা এতে সহযোগিতা দিচ্ছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে
তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া
হবে। গত দুই বছরে সমুদ্রপথে মানবপাচার বহুগুণ বেড়ে গেছে।
আর এ ক্ষেত্রে টেকনাফ উপকূলকে ব্যবহার করা হয়। এই অবৈধ
কাজে কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, উখিয়া, রামু ও কুতুবদিয়া
থানার বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা যুক্ত হয়ে পড়েন।
জনপ্রতি তাঁরা দুই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত
ঘুষ নেন বলে তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। গত দুই বছরে
উখিয়া থানায় রেজু খালের মোহনা দিয়ে সবচেয়ে বেশি
পাচারের ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজার সদর থানার পুলিশ সদস্যরা
দালালচক্রের প্রতিটি সিন্ডিকেটের কাছ থেকে মাসে এক লাখ
টাকা করে আদায় করেছেন।
তবে মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে
অস্বীকার করেছেন তালিকাভুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা। এ
ব্যাপারে কালের কণ্ঠ’র পক্ষ থেকে কয়েকজনের সঙ্গে
যোগাযোগ করা হলে তাঁরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। উখিয়া
থানার ওসি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে অভিযানের পর
মানবপাচারকারীরা সব পালিয়ে আছে। আমাদের লোক জড়িত থাকার
প্রশ্নই আসে না।’ কুতুবদিয়া থানার ওসি অং সাই থোয়াই
বলেন, ‘এই দ্বীপাঞ্চলে কোনো মানবপাচারকারীই নেই। আর এর
সঙ্গে জড়িত থাকার সুযোগই বা কোথায়!’ জানতে চাইলে এসআই
মোস্তফা কামাল বলেন, ‘চার-পাঁচ মাস আগে আমি কক্সবাজার
থানা থেকে রামু থানায় বদলি হয়ে এসেছি। এ ধরনের কোনো
বিষয়ে আমি জড়িত নই।’ টেকনাফের শাপলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির
সাবেক ইনচার্জ এসআই আনিসুর রহমান বলেন, ‘এক মাস আগে আমি
মহেশখালী বদলি হয়ে এসেছি। আপনারা খোঁজ নেন, কেউ আমার
বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারবে না।’
গতকাল রাতে রামু থানার অপারেশন অফিসার এসআই শাহ আলমের
কাছে মানবপাচার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি
একটা প্রোগ্রামে আছি। এখন কথা বলতে পারব না।
Top
থানা হাজতে আত্মহত্যা
ফুলবাড়ী থানা হাজতে রাখার ১৫ মিনিটের মধ্যে গলায় কম্বল
পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি। গতকাল দুপুর পৌনে
১টায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্র জানায়, বিজিবির
কুড়িগ্রামস্থ ৪৫ অনন্তপুর বিওপির হাবিলদার শফিকুল
ইসলাম শুক্রবার দিনগত রাত ৩টা ২০ মিনিটের সময় ৯৪৭/৪
নম্বার সীমান্ত পিলারের নিকটবর্তী মাদক ব্যবসায়ী ময়ছার
আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার কৃঞ্চপুর
গাড়িয়ালপাড়া গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে মো. আনিছুর
রহমানকে ২ কেজি ৪শ গ্রাম গাঁজা ও একটি বাজাজ প্লাটিনা
১০০ সিসি মোটরসাইকেলসহ আটক করেন। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায়
তাকে ফুলবাড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়। এর ১৫ মিনিট পর
আনিছুরকে হাজতকক্ষের দরজার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলতে দেখা
যায়। তার গলায় কম্বল পেঁচানো ছিল। দ্রুত ফুলবাড়ী উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডা. ইফতেখার তাকে
মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে বিজিবির হাবিলদার শফিকুল ইসলাম জানান, ধৃত
আনিছুরকে সুস্থ অবস্থায় ফুলবাড়ী থানায় মামলা দিয়ে
হস্তান্তর করা হয়। ফুলবাড়ী থানার ওসি মো. বজলুর রশিদ
জানান, আসামিকে হাজতে রাখা হয়েছিল। সেখানে তিনি হাজতে
থাকা কম্বল ছিঁড়ে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে
তার মৃত্যু ঘটে।
Top
এএসআই হাজ্জাজের ৪
বিয়ের তথ্য ফাঁস
আড়াইহাজার থানা থেকে ডিএমপিতে বদলি হওয়া এক এএসআইয়ের
বিরুদ্ধে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৪টি বিয়ের মাধ্যমে
অসহায় নারীদের কাছ থেকে যৌতুক আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
হাজ্জাজ আহম্মেদ সুমন নামের ওই এএসআই বিভিন্ন জেলায়
কর্মরত থাকা অবস্থায় তার কাছে আইনগত সমস্যা সমাধানে আসা
তরুণীদের নানা ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। সর্বশেষ প্রতারিত
ফতুল্লার পাগলা এলাকার হাজেরা আক্তার নামে এক নারী গত
৬ মে আদালতে হাজ্জাজের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের
করেন। বিচারক হাজ্জাজকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ
দিয়েছেন। এছাড়া প্রতারিত হাজেরা হাজ্জাজের বিরুদ্ধে বহু
বিবাহের অভিযোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর,
স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা
রেঞ্জেরে ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে।
হাজ্জাজ আহমেদ সুমন মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার
খেরুপাড়া এলাকার মৃত হাসান আলীর ছেলে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, হাজেরা আক্তার ফতুল্লা আদর্শ
নগর এলাকার বাসিন্দা সাবেক জেলা প্রশাসক প্রয়াত
মমতাজউদ্দিন আহম্মেদের মেয়ে। হাজ্জাজ সুমন ২০১৪ সালে
ফতুল্লা থানায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় হাজেরার আদর্শনগর
এলাকার পৈতৃক বাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে
ঝামেলা হয়। ২০১৪ সালের ১১ মে ফতুল্লা মডেল থানায়
দায়েরকৃত মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে হাজ্জাজ সুমন
হাজেরার বাড়িতে আসেন। ওই সময় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়।
হাজ্জাজ বিয়ের প্রস্তাব দেন হাজেরাকে। পুলিশে চাকরি
করেন বলে হাজেরা অল্পতেই বিশ্বাস করেন হাজ্জাজকে।
হাজেরা জানান, তিনি তালাকপ্রাপ্তা। তার এক পুত্র ও এক
কন্যা রয়েছে। হাজ্জাজ প্রস্তাব দিলে ২০১৪ সালের ৩০
এপ্রিল ইসলামী শরিয়া মোতাবেক রেজিস্ট্রিকৃত
কাবিননামামূলে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, যার দেনমোহর
তিন লাখ টাকা। কোনো উসুল দেওয়া হয়নি। বিয়ের পর হাজ্জাজ
মোটরসাইকেল কেনার জন্য হাজেরার কাছে টাকা দাবি করেন।
হাজেরা ২০১৪ সালের ২২ মে হাজ্জাজকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা
দেন। ওই টাকায় হাজ্জাজ মোটরবাইক কেনেন। জমির সমস্যার
কথা বলে হাজেরার কাছ থেকে নানা অজুহাতে আরও ১ লাখ ৩০
হাজার টাকা নেন হাজ্জাজ। গতবছর রমজান মাসে হাজ্জাজকে
নেত্রকোনায় বদলি করা হয়। পরে তাকে আবার নারায়ণগঞ্জে
বদলি করা হয়। তখনই তার মুখোশ উন্মোচিত হয়।
অভিযোগমতে, হাজ্জাজের প্রথম স্ত্রী বর্তমান। ওই
স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই হাজেরাকে বিয়ে করেন তিনি।
হাজেরাকে বিয়ের পর ঢাকার রামপুরায় ঝুমা নামে এক
তরুণীকেও তিনি বিয়ে করেন। হাজ্জাজের পর পর ৩টি বিয়ের
প্রমাণ হাজেরা সংগ্রহ করেছেন। সম্প্রতি হাজ্জাজকে
প্রতারণার কথা জিজ্ঞেস করে বিভিন্ন সময় দেওয়া টাকা
ফেরত চান হাজেরা। গত ১৬ এপ্রিল হাজ্জাজ উল্টো আরও ৩
লাখ টাকা দাবি করেন তার কাছে। টাকা না দিলে হাজ্জাজ
তালাক দেবে বলে জানিয়ে দেন হাজেরাকে। উপায়ন্তর না পেয়ে
হাজেরা গত ৬ মে নারায়ণগঞ্জের একটি আদালতে মামলা করেন।
শুনানি শেষে হাজ্জাজকে আগামী ৭ জুলাই আদালতে হাজির
হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
জানা গেছে, হাজ্জাজের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তের দায়িত্ব
আড়াইহাজার থানার ওসি তদন্তকে দেওয়া হয়েছে। তিনি
হাজেরাকে ব্যক্তিগতভাবে এ সমস্যা সমাধানের পরামর্শ
দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার ওসি আলমগীর জানান, বিষয়টি
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তদন্ত করছেন। তবে এএসআই
হাজ্জাজ ডিএমপিতে বদলি হয়েছেন। শনিবার (১৬ মে) ডিএমপিতে
যোগ দেওয়ার জন্য থানা থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন তিনি।
কাশিমপুর কারাগারে ফাঁসির কয়েদির মৃত্যু
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে ফাঁসির
দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি নূরুল ইসলাম হাওলাদার মারা গেছেন।
তিনি ঝালকাঠি জেলার বদনাকাঠি গ্রামের আশ্রাফ আলী
হাওলাদারের ছেলে। তার লাশ ময়নাতদন্ত করতে গাজীপুর শহীদ
তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো
হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার
জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, ঢাকার শ্যামপুর থানার নারী ও
শিশু নির্যাতন আইনের একটি মামলায় ২০০৩ সালে আদালত
নূরুল ইসলাম হাওলাদার (৬৫)কে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর নূরুল ইসলাম হাওলাদারকে ২০১৩
সালের নভেম্বরে এ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টার দিকে সে বুকে ব্যথা
অনুভব করলে প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে
সেখান থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার নূরুল
ইসলাম হাওলাদারকে মৃত ঘোষণা করেন।
Top
ওসি হেলালের তিন বছরের কারাদণ্ড
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ
বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র আবদুল কাদেরকে
নির্যাতন ও জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টার দায়ে
খিলগাঁও থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল
উদ্দিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল
রোববার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবীর
এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
গতকাল হেলাল উদ্দিনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী সাইদুর রহমান
সময়ের আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে একমাত্র আসামি
হেলাল উদ্দিনকে পলাতক দেখিয়ে এ রায় ঘোষণা করেন। পরে
আদালত সাজাপ্রাপ্ত আসামি হেলালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি
পরোয়ানা জারি করেন। সাময়িক বরখাস্ত হেলাল ঢাকার
রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
মামলার বাদী আবদুল কাদের গতকাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন
না। বিসিএস (শিক্ষা) উত্তীর্ণ কাদের বর্তমানে
লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক। রায়ের
প্রতিক্রিয়ায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অন্যায়ের বিচার
হয়েছে, এতে আমি সন্তুষ্ট। মা-বাবাও এ রায় শুনে
সন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে তাঁরা বলেছেন, ওসি হেলালের আরও
বেশি সাজা হলে তাঁরা খুশি হতেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান রায়ের পর
সাংবাদিকদের বলেন, আসামি হেলাল উদ্দিন অসুস্থ। এ কারণে
তিনি রায়ের তারিখ পেছানোর আবেদন করেছিলেন। আদালত তা
নাকচ করে রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর
তা পর্যালোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, পুলিশ জনগণকে নিরাপত্তা দেবে,
কিন্তু পুলিশ যদি নির্যাতন করে তা নিন্দনীয়, অমানবিক
এবং দায়িত্বের চরম অবহেলা। এ মামলার আসামি হেলাল
উদ্দিন ঘটনার সময় (২০১১ সালের ১৬ জুলাই) খিলগাঁও থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের
নির্যাতনের ঘটনা কারোরই কাম্য নয়।
রায়ে আরও বলা হয়, আবদুল কাদেরকে নির্যাতনের একমাত্র
প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন সংশ্লিষ্ট থানার কনস্টেবল
আবদুল করিম। তিনি তাঁর জবানবন্দিতে বলেছেন, ঘটনার দিন
তিনি রাত চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত ডিউটিতে ছিলেন। ভোর
সাড়ে চারটায় এসআই আলম বাদশা কাদেরকে আটক করে নিয়ে আসেন।
থানায় ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মো. আসলামের
নির্দেশে তাঁকে হাজতে আটক রাখা হয়। পরদিন থানার ডিউটিতে
আসার পর ওসি হেলাল তাঁকে লকার খুলে কাদেরকে তাঁর কক্ষে
নিয়ে যেতে বলেন। ওসি হেলালের কক্ষে রেখে আসার কিছুক্ষণ
পর তিনি কাদেরের চিৎকার শুনতে পান এবং গিয়ে দেখেন,
কাদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁর বাঁ পা
রক্তাক্ত। অপর সাক্ষী খিলগাঁও থানার তৎকালীন ডিউটি
অফিসার এসআই আসলাম মিয়া একই জবানবন্দি দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে
১৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। সাক্ষীরা অভিযোগ প্রমাণে
সক্ষম হওয়ায় আসামি হেলাল উদ্দিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড
দেওয়া হলো। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা
হয়। অনাদায়ে তাঁকে আরও তিন মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে
বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ
দেন। রায়ে বলা হয়, আসামি হেলাল যেদিন গ্রেপ্তার বা
আত্মসমর্পণ করবেন, সেই দিন থেকে এ রায় কার্যকর হবে।
আবদুল কাদেরকে নির্যাতনের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে
প্রচারের পর হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে আইন
মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কাদের
২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি ওসি হেলালের বিরুদ্ধে এ মামলা
করেন। ওই বছরের ২৬ মার্চ খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক আবু
সাঈদ আকন্দ তদন্ত শেষে হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে
অভিযোগপত্র দেন। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর এ মামলায় অভিযোগ
গঠন করা হয়। বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী
মুনজুর আলম, মোহাম্মদ গাফফার হোসেন ও শুভ্র সিনহা রায়।
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
সাতটি সমস্যার কারণে
মুখের দুর্গন্ধ হয়
অপরিষ্কার দাঁত এবং বাজে খাদ্যাভ্যাস কারনে শুধু মুখে
দুর্গন্ধ হয়না। মুখে দুর্গন্ধ নানা কারণেই হয়ে থাকে
যার বেশিরভাগই হয় নানা শারীরিক সমস্যার কারণে। তাই মুখে
দুর্গন্ধ হলে তা অবহেলা করে এড়িয়ে যাবেন না।
কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনার মুখের দুর্গন্ধের কারণ
শারীরিক সমস্যা? আসুন জেনে নেওয?া যাক কীভাবে বুঝবেন
যে ৭ টি শারীরিক সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে আপনার
মুখের দুর্গন্ধে।
১. খুবই বাজে ধরণের দুর্গন্ধ এবং বাথরুমের মতো গন্ধ
পেলে বুঝে নেবেন আপনার মাড়িতে ইনফেকশন হয়েছে। সুতরাং
সাবধান,
শারীরিক সমস্যা যদি বুঝে নিতে পারেন নিঃশ্বাসের
দুর্গন্ধ থেকে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ
গ্রহন করুন।
২. যদি মুখের দুর্গন্ধ অ্যামোনিয়া ধরণের হয় অর্থাৎ
কিছুটা প্রসাবের মতো গন্ধ হতে থাকে তাহলে সতর্ক হয়ে
যান। কারণ এই ধরণের দুর্গন্ধ প্রমাণ করে আপনার টাইপ-১
ডায়বেটিসের সমস্যা হয়েছে। এই গন্ধের মূল কারণ হচ্ছে
ডায়বেটিসের কারণে দেহে ইনসুলিনের অভাব।
৩. যদি আপনার নিঃশ্বাসে দিনের প্রত্যেকটা সময় সকালে
ঘুম থেকে উঠার পর যেমন গন্ধ থাকে তেমন গন্ধ পান তাহলে
আপনার ‘জেরোস্টোমিয়া’ অর্থাৎ মুখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা
রয়েছে। মুখে ভেতরের স্যালিভা শুকিয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়া
উৎপন্ন হতে থাকে যা এইধরনের দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে।
৪. যদি আপনার নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ পান তাহলে বুঝে নেবেন
আপনার সাইনাসে সমস্যা রয়েছে। এর কারণ হচ্ছে নাকে ও
গলায় মিউকাস জমে থাকা।
৫. যদি টক দুধের মতো টক টক ধরণের গন্ধ পান আপনার
নিঃশ্বাসে আপনার খাবারে প্রোটিনের মাত্রা অতিরিক্ত বেশি
হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে কিটোনের ভাঙন।
৬. যদি আপনার নিঃশ্বাসে আঁশ্টে গন্ধ হয় তাহলে বুঝে
নেবেন আপনার কিডনি সমস্যা হয়েছে। কিডনিতে সমস্যা হলে
এবং কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে নাইট্রোজেন উৎপন্ন হয়
যা এইধরনের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী।
৭. যদি আপনার নিঃশ্বাসে পচে যাওয়া মাংসের মতো দুর্গন্ধ
পান তাহলে বুঝে নেবেন আপনার টনসিলের সমস্যা হয়েছে।
টনসিলের কারণে সালফার উৎপন্নকারী ব্যাকটেরিয়া অধিক
জন্ম নিচ্ছে যার কারণেই নিঃশ্বাসে এই ধরণের দুর্গন্ধের
সৃষ্টি হচ্ছে।
Top
ভাইরাল জ্বর হলে
করণীয়
এখন প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি হচ্ছে। অনেকে
আবার আক্রান্ত হচ্ছেন নিউমোনিয়ায়। অথচ সামান্য পরিচর্যা
ও ওষুধ সেবনে জ্বর, সর্দি-কাশি ভালো হয়। আর জ্বরে
আক্রান্তদের মধ্যে শিশু-কিশোররাই বেশি। জ্বর একসপ্তাহ
পার হলে আমরা সাধারণত ভাইরাল ফিভার ভাবি না। এটা
সম্ভবত শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ বা অন্য কোন কারণে
জ্বর হতে পারে। এছাড়া ভাইরাল জ্বরের অন্যতম প্রধান
লক্ষণ হলো শরীরের পেশীতে প্রচণ্ড ব্যথা, চোখ লাল হওয়া
ও নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। তাই এ ক্ষেত্রে বিলম্ব
না করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যে কোন এন্টিবায়োটিক
শুরু করা উচিত। পাশাপাশি জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেন হাইটের
বেশি হলে প্যারাসিটামল দিনে ৩ বার খাওয়ার পর দেয়া যেতে
পারে। এ ছাড়া সর্দি-কাশি হলে যে কোন এন্টি-হিস্টামিন
জাতীয় ওষুধ সকালে ও রাতে দেয়া যেতে পারে। শরীর ব্যথা
হলেও প্যারাসিটামল সেবন করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে
ওষুধ সেবনের ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে জ্বর নিরাময় না হলে
অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করে ওষুধ সেবন করানোর দরকার হতে
পারে। এ ক্ষেত্রে ইউরিন রুটিন, রক্তের সিবিসি, রক্তের
বিডাল টেস্ট অথবা রক্তের কালচার করা উচিত। এসব
পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ইউরিনের প্রদাহ, টাইফয়েড
অথবা ডেঙ্গুজ্বর হলে ধরা পড়বে। তখন অধিক সময় ওষুধ
সেবনের প্রয়োজন হবে। তবে মনে রাখবেন জ্বর বেশীদিন থাকলে
এবং সাধারণ চিকিৎসায় ভালো না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয়।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
Top
ভিটামিনে
ভরপুর মিষ্টিআলু
মিষ্টিআলুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ডি ও বি৬,
বিটাক্যারোটিন এবং খনিজ ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। এতে
থাকা ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি ভালো রাখে। এর
বিটাক্যারোটিন,ভিটামিন সি-জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
শরীরের সজীবতা রক্ষায় সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে,
মিষ্টিআলু রক্তের সুগারের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ডায়াবেটিক আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটা খুবই উপকারী। এতে
কোলেস্টেরল, সোডিয়াম কম পরিমাণে থাকে ও ভিটামিন বি৬
যথেষ্ট পরিমাণে থাকায় হার্টের জন্য ভালো। দেহকে
শক্তিশালী ও পাকস্থলীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এর জুড়ি নেই।
মিষ্টিআলু পুড়িয়ে খেলে সর্দি-কাশি দূর হয়। এটা ফ্লু
ভাইরাস, ক্যান্সার, বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা থেকে মুক্তি
দেয়। হাড়, স্নায়ু, চামড়া, দাঁত, লোহিত ও শ্বেতকণিকা
গঠনেও দারুণ ভূমিকা রাখে মিষ্টিআলু।
শরীরের বাড়তি ওজন থেকে ক্যান্সার!
এবার বিশেষজ্ঞগণ শরীরের বাড়তি ওজনের সঙ্গে ক্যান্সারের
যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর
রিসার্স অন ক্যান্সার তাদের এক গবেষণা রিপোর্টে উল্লেখ
করেছে বিশ্বের অন্তত ৫ লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত
হয়েছে শুধুমাত্র শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণে। আর
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, বিশ্বে যত রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত
হয় তার মধ্যে অন্তত শতকরা ৩ দশমিক ৬ ভাগ শরীরের
অতিরিক্ত ওজনের জন্য হয়। গবেষণা লব্ধ এই তথ্যটি প্রকাশ
করেছে খ্যাতনামা মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট।
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, ওবেসিটির সবচেয়ে খারাপ দিক হলো এটার
দীর্ঘ মেয়াদী কোন প্রতিকার নেই। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন,
শরীরের ইনসুলিন, গুকোজ ও হরমোন লেভেল-এর পরিবর্তন করে
ঘাতকব্যাধি ক্যান্সারের জন্ম দেয় ওবেসিটি। আর মহিলাগণই
বেশি সমস্যার সম্মুখীন হন। গবেষণায় আরো উল্লেখ করা হয়
বছরে অন্তত ৫ দশমিক ৪ ভাগ ক্যান্সারে আক্রান্তের ঘটনা
ঘটে ওবেসিটির কারণে। গবেষণার প্রধান অথার ড:মেলিনা
অ্যারনল্ড মনে করেন শুধু ওবেসিটির কারণে নয়, মহিলাগণের
আরো অনেক ক্যান্সার হতে পারে। তাই গবেষগণের পরামর্শ
হচ্ছে- ওজন দ্রুত কমানো যখন সম্ভব নয়, তাই এক্সারসাইজ
ও ডায়েট কন্ট্রোল সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
Top
কিডনি রোগীর খাবার
কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীরের বিপাকের প্রান্ত দ্রব্য
নির্গত করা, এর মধ্যে ইউরিয়া হচ্ছে উল্লেখযোগ্য।
প্রত্যহ প্রায় ৩০ গ্রাম ইউরিয়া নির্গত হয়। এই নির্গত
ইউরিয়ার অর্ধেকটা আসে খাবার থেকে, বাকীটা শরীরের
বিভিন্ন টিস্যু ধ্বংস প্রাপ্তি থেকে। শরীরের এই ৩০
গ্রাম ইউরিয়া নির্গমন করার জন্য কমপক্ষে ৭৫০ মিঃ লিঃ
প্রস্রাব তৈরি এবং নির্গত হতে হবে। সেজন্য যখন একুইট
ফ্রোইটিস শুরু হয় তখন প্রস্রাব কমে যায় এবং ইউরিয়া ও
অন্যান্য প্রান্ত দ্রব্য শরীরে জমা হয়। তখন রোগীকে
শর্করা ও চর্বিযুক্ত খাবার বেশি দিলে শরীরে টিস্যু
ধ্বংস কম হয় এবং সঙ্গে খাবার প্রোটিন রেসট্রিক্ট করলে
ইউরিয়া এবং অন্যান্য প্রান্ত দ্রব্যের শরীরে জমা হওয়া
কমে যাবে। আবার যখন কিডনী ফাংশন আস্তে আস্তে এবং
প্রস্রাব নির্গমন স্বাভাবিক হবে তখন পর্যাপ্ত প্রোটিন
শুরু করা যায়। কিডনীর রোগগুােকে প্রধান ৪টি ভাগে ভাগ
করে এখন এর খাদ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে নিুে আলোকপাত করা
হলঃ ১. একুইট নেফ্রাইটিস ইলনেস, ২. নেফ্রোটিক সিনড্রোম,
৩. একুইট রেনাল ফেইলর, ৪. ক্রনিক রেনাল ফেইর। একুইট
নেফ্রাইটিস ইলনেস সর্বমোট ক্যালরীর প্রয়োজন দৈনিক
প্রায় ১৭০০ ক্যালরী।
প্রোটিন (আমিষ)ঃ প্রোটিন খাওয়া যতটুকু সম্ভব সীমাবদ্ধ
করতে হবে। এনুরিয়া হলে প্রোটিন সীমাবদ্ধ ২০০ গ্রাম
ডেইলী করে ১০-২০% গ্লুকোজ বা ফ্রুকটোজ মুখে বা
ইন্টাগ্যাস্টিক ড্রিপ বা আইডি দিতে হবে। যখন প্রস্রাব
আবার স্বাভাবিক হবে তখন প্রাটিন আস্তে আস্তে বাড়ানো
যাবে। ৫০০-৭০০ মিঃ লিঃ প্রস্রাব হলে প্রতি কেজি
বডিওয়েট ০.৫ গ্রাম প্রোটিন দেয়া যেতে পারে, প্রস্রাব
স্বাভাবিক হলে ৬০ গ্রাম প্রোটিন প্রত্যহ দেয়া যেতে পারে।
প্রোটিন বেশি সীমাবদ্ধ করলে এসথেনিয়া এবং এনিমিয়া বা
রক্ত শূন্যতা হতে পারে।
ফ্যাট (চর্বি)ঃ যেহেতু ফ্যাটের বিপাকের প্রান্ত দ্রব্য
কিডনীর উপর নির্ভরশীল নয় সেহেতু ফ্যাট এনুরিয়া থাকলেও
দেয়া যাবে।
কার্বহাইড্রেট (শর্করা)ঃ একুইট নেফ্রাইটিস-এর সময় এটাই
রোগীর শক্তির প্রধান উৎস।
ভিটামিনঃ ভিটামিন সি বা বি কমপ্লেক্স যদি ডেফিসিয়েন্সী
থাকে তাহলে সাপ্লিমেন্ট করতে হবে।
মিনারেলসঃ কিডনী স্বাভাবিক অবস্থায় স্বাভাবিক হরমন
নিয়ন্ত্রণাধীনে সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম নিয়ন্ত্রণ করতে
পারে। একুইট নেফ্রাইটিস হলে কিডনী স্বাভাবিকভাবে একুইট
নেফ্রাইটিস হলে কিডনী স্বাভাবিকভাবে সোডিয়াম এবং
পটাশিয়াম নির্গত হতে পাে রনা, যেহেতু ইলেকট্রোলাইট
ইমব্যালান্স হয়, সেজন্য ইলেকট্রোলাইট পরীক্ষা করার পর
সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম দিতে হবে। শরীরে ইডিমত বা পানি
থাকলে সোডিয়াম দেয়া যাবে না বা সীমাবদ্ধ করতে হবে।
ইডিমা কমে গেলে পুনরায় সোডিয়াম দেয়া যেতে পারে। আবার
প্রস্রাব কম হলে পটাসিয়াম সীমাবদ্ধ করতে হবে।
ফ্লুইডঃ রোগীকে কতটুকু পানি দেয়া যাবে তা নির্ভর করে
রোগীর শরীরে বিদ্যমান পানির অবস্থানের উপর। যেহেতু
প্রস্রাবের সঙ্গে পানি নির্গত হওয়া ছাড়াও প্রায় ১০০০
মিঃ লিঃ পানি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে, ঘাম এবং পায়খানার
সঙ্গে নির্গত হয় সেজন্য প্রত্যহ একটা ফ্লুইড চার্ট তৈরি
করতে হবে। যে পরিমাণ পানি প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হয়
এর সঙ্গে আরো ১০০০ মিঃ লিঃ রোগীকে দিতে হবে। যদি রোগীকে
চা, সুপ, দুধ, ফলের রস খেতে দেয়া হয় তার পরিমাণ বের করে
মোট ফ্লুইড থেকে বাদ দিতে হবে। আবার রোগীর শরীরে
বিদ্যমান পানি বেশি থাকলে প্রস্রাবের পরিমাণ মত বা
সর্বমোট ১০০০ মিঃ লিঃ পানি রোগীকে দিতে হয়। নেফ্রোটিক
সিনড্রোম ক্যালরীঃ প্রত্যহ প্রায় ২০০০ ক্যালরী রোগীকে
দিতে হবে।
প্রোটিনঃ নেফ্রোটিক সিনড্রোমে খুব সামান্য থেকে প্রচুর
পরিমাণ প্রোটিন শরীর থেকে প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হয়
এবং এর ফলে সিরাম এ্যালবোমিনের পরিমাণ কমে যায়, কলয়ডাল
অঙ্কোটিক প্রেসার কমে যায়, ফলে ইডিমা হয়। সঙ্গে সিরাম
কোলেস্টরল-এর মান বেড়ে যায়। এজন্য সমস্ত রোগীর প্রোটিন
ডাইট কমপক্ষে ১.৫ থেকে ২ গ্রাম প্রোটিন/প্রতি কেজি বডি
ওজন হিসেবে দিতে হবে।
ফ্যাটঃ স্বাভাবিক পরিমাণ ফ্যাট অর্থাৎ ১ গ্রাম/প্রতি
কেজি বডির ওজন হিসেবে দিতে হবে।
কর্বোহাইড্রেটঃ প্রোটিন এবং ফ্যাট থেকে প্রাপ্ত
ক্যালরী বাদ দিয়ে বাকিটা কর্বোহাইড্রেট থেকে সংগ্রহ
করতে হবে।
ভিটামিনঃ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স
সাপলিমেন্ট দেয়া যেতে পারে।
মিনারেলসঃ ইডিমা থাকলে সোডিয়াম কম যুক্ত খাবার দিতে হবে।
এই জন্য খাবার এর সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ না দেয়া ভাল।
লবণযুক্ত খাবার যেমনঃ সলটেড বিস্কুট, সলডেট বাটার,
টিনজাত মাছ এবং মাংস পরিত্যাগ করা ভাল। এরপরেও যদি
ইডিমা থাকে তাহলে ইলেক্ট্রোলাইট করতে হবে। যদি
সোডিয়ামের মান কম থাকে তাহলে খাবার লবণ খেতে দেয়া যেতে
পারে।
ডাঃ মোঃ শহীদুল ইসলাম সেলিম।
Top
চুলপড়া ও প্রতিকার
মাথার চুল নিয়ে ভাবেন না এমন সৌন্দর্য প্রিয় নর-নারী
খুঁজে পাওয়া যাবে না। অনেক চেষ্টা, নানা প্রসাধন
সামগ্রী, দামী-দামী শ্যাম্পু, হেয়ার অয়েল, হেয়ার
ম্যাসাজ করেও চুল রাখতে পারছে না অনেকে। বিশেষজ্ঞদের
মতে প্রতিদিন ১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। এর অধিক চুল
পড়লে কোন স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত। মনে
রাখতে হবে বিউটি পার্লারে ব্যবহৃত নানা কেমিক্যাল চুল
ওঠা বন্ধ হওয়ার পরিবর্তে চুলপড়া আরও বেড়ে যায়। চুল পড়া
নিয়ে নানা তথ্য, চিকিৎসা পদ্ধতিতে রয়েছে। তবে সম্প্রতি
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকস-এর চর্মরোগ বিভাগের ক্লিনিক্যাল
গবেষণার প্রধান ডঃ উইলমা বার্গফেল্ড গবেষণায় দেখেছেন
বেশি পরিমাণ আমিষ (প্রোটিন) এবং কম পরিমাণ শর্করা (কার্বোহাইড্রেট)
আহার চুলপড়ার অন্যতম কারণ। গবেষণায় বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন,
অধিক প্রোটিন ও কম শর্করায় শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও
খনিজপদার্থের অভাব থেকে যায়, যা চুলের স্বাস্থ্য
রক্ষায় জরুরী। প্রতিদিন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ
খাবার, সবুজ শাক-সবজি, ফল-মুল বিশেষ করে বি ভিটামিন,
জিঙ্ক ও আয়রণ চুলপড়া বন্ধে সহায়ক। তবে চুলপড়া যদি
হরমোনজনিত কারণে বা অন্য কোন মেডিক্যাল সমস্যাজনিত
যেমন ‘এন্ড্রোজেনেটিক’ চুলপড়া, এলোপেসিয়া অ্যারিটা (মাথার
চুলের অংশ বিশেষ জুড়ে চুল না থাকা), চুল টেনে ছিড়া
ইত্যাদি সমস্যার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়।
আজকাল চুল বিশেষজ্ঞ বা ট্রাইকোলজিস্ট পাওয়া যায়।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের এটি একটি নব সংযোজন। বাংলাদেশেও হাতে
গোনা ২/১ জন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের চুল নিয়ে উচ্চতর
প্রশিক্ষণ রয়েছে। মনে রাখবেন মেডিকেল সমস্যাজনিত চুলপড়া
কোনভাবেই তেল, শ্যাম্পু, হেয়ার ক্রিম, হেয়ার লোশনে
বন্ধ হবে না।
শাক সবজি কেন খাবেন?
টাটকা শাক-সবজি ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং
মিনারেল রয়েছে যা শরীরের জন্য প্রয়োজন। শাক-সবজি
ফলমূলের অনেক অনেক গুণ রয়েছে যার বেশ কিছু গুণের কথা
আমরা অনেকেই জানি আবার সবাই জানিনা। গ্রীন কেন মহৎ তার
সামান্য উদাহরণ তুলে ধরা হলো-
* গ্রীন শাকসবজির মধ্যে আছে ফলিক এসিড, বি-ভিটামিন যা
কিনা হৃদরোগ প্রতিরোধ কমায় বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম রোধ করে।
* তাদের মধ্যে ভিটামিন ই, এ, সি রয়েছে যা এন্টি
অক্সিডেন্ট হিসাবে আমাদের শরীরে কাজ করে বিটা কেরোটিন
ক্যন্সার প্রতিরোধ করে, রাতকানা রোগ দূর করে, ত্বক
মসৃণ করে ইত্যাদি।
* অধিকাংশ শাক-সবজি ফলমূলে প্রচুর আঁশ রয়েছে এই আঁশ
যেমন ক্যান্সার রোধ করে তেমন কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে,
যারা মাছ, মাংস, চর্বিদার খাবার কম খাবে, শাক-সবজি
ফলমূল বেশি কাবে তাদের মুটিয়ে যাবার সম্ভাবনা ততই কম
হবে। যে সকল শিশুরা রুচিহীনতায় অপুষ্টির শিকার তাদেরকে
প্রতিদিন ২ প্রকার শাক-সবজি, ২ প্রকার ফল খাওয়ানো যায়
তবে আহারে অনীহা দূর হবে।
শহুরে জীবন-যাপনে অনেকেই ৭ দিনের বাজার একদিন করেন,
ফ্রিজে রেখে খান তাদের জন্য উল্লেখ্য শাক-সবজি
প্লাস্টিক ব্যগে করে, অথবা ঢাকনাযুক্ত পাত্রে রেখে তার
পরে সেটা ফ্রিজে রাখবেন। রক্ষিত শাক-সবজি ৩ দিনের বেশি
রাখলে তার স্বাদ পুষ্টিমান অনেকাংশে কমে যায়।
ডা. রফিক আহম্মেদ।
Top
আইন কনিকা
Top
প্রত্যেক আসামি আইনগত পরামর্শ ও
সাহায্য পাওয়ার অধিকারী
মো. সাহেব আলী
কোনো ব্যক্তি আসামি হলেই তিনি আইনের দৃষ্টিতে দোষী
সাব্যস্ত হবেন, এমনটি নয়। তিনি দোষী কি না তা নির্ধারণ
করার দায়িত্ব একমাত্র আদালতের। আদালত তা না করার আগ
পর্যন্ত তাকে কেউ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন
না। কে দোষী কিংবা দোষী নয়, তা নির্ধারণ করার আগে
আদালত বাদী এবং বিবাদী পক্ষের তর্ক-বিতর্ক শোনে এবং
শেষে রায় প্রদান করে। বিচার চলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তি
কিছু অধিকার এবং নিরাপত্তা ভোগ করতে পারেন। শুধু তাই
নয়, তিনি বিচারের আগে কিংবা বিচারের পরেও সেই অধিকার
কিংবা নিরাপত্তার সুবিধা পেতে পারেন। এই সুবিধা আদালত
কর্তৃক প্রদান করা হয়। এসব অধিকার ও নিরাপত্তার লক্ষ্য
হলোÑ অভিযুক্ত ব্যক্তির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার
নিশ্চিত করে পক্ষপাতমূলক বিচার থেকে তাকে রা করা। আজ
আমরা সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। অভিযুক্ত ব্যক্তি
যে অধিকার ও নিরাপত্তামূলক সুবিধা পেতে পারেন, সেগুলো
হচ্ছেÑ
ক. ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়ার অধিকার। খ.
জামিন পাওয়ার অধিকার। গ. পরামর্শ ও আইনগত সাহায্য
পাওয়ার অধিকার। ঘ. দ্রুত বিচার পাওয়ার অধিকার।
ক. ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির হওয়ার অধিকার : পুলিশ
কোনো ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির না করে
দীর্ঘদিন আটকে রাখতে পারে না। শাসনতন্ত্র ও অপরাধ
দণ্ডবিধিতে এমন বিধান আছে, গ্রেফতার করার ২৪ ঘণ্টার
মধ্যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের
সামনে হাজির করবে। শাসনতন্ত্র ও অপরাধ দণ্ডবিধি
ব্যক্তির এ ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিশ্চত করে থাকে।
খ. জামিন পাওয়ার অধিকার : উপযুক্ত ফৌজদারি আদালতই কেবল
কোনো ব্যক্তি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে পারে।
দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে কোনোভাবেই দোষী বলা
যায় না। পুলিশ তাদের পক্ষ থেকে মামলার কাজ শেষ করার
পরও মামলা শেষ হতে অনেক সময় লাগে। সে কারণে অভিযুক্ত
ব্যক্তির অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া সাপেক্ষে আদালত তাকে
জামিনে মুক্তি দিতে পারে। তবে এটা বলা প্রয়োজন, আইন
অপরাধকে জামিনযোগ্য এবং জামিন অযোগ্য এই দুই শ্রেণীতে
ভাগ করেছে। অপরাধীর অপরাধ লঘু হলে তাকে জামিনযোগ্য এবং
অপরাধ গুরুতর হলে তাকে জামিন অযোগ্য পর্যায়ভুক্ত করা
হয়। প্রথম পর্যায়ভুক্ত অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি
জামিন পাওয়াকে তার অধিকার হিসেবে দাবি করতে পারেন।
দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্ত অপরাধের ক্ষেত্রেও আদালত উপযুক্ত
কারণ দেখিয়ে অভিযুক্তকে জামিন মঞ্জুর করতে পারে। তবে
সে অপরাধ মৃত্যুদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদ-যোগ্য
অপরাধ হবে না। যদি আদালত মনে করে যে, অভিযুক্তের বয়স
১৬ বছরের নিচে কিংবা তিনি নারী অথবা অভিযুক্ত অসুস্থ
বা অক্ষম তাহলে অপরাধ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন
কারাদণ্ডযোগ্য হলেও তাকে আদালত জামিনে মুক্তি দিতে পারে।
গ. পরামর্শ ও আইনগত সাহায্য পাওয়ার অধিকার : বিচারের
মুখোমুখি অভিযুক্ত ব্যক্তি কার্যকরভাবে আত্মরক্ষার
জন্য পরামর্শ পাওয়ার অধিকারী হন। শাসনতন্ত্রে এ
ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার
করা হলে গ্রেফতারের কারণ দর্শাতে হবে এবং কারণ না
দর্শিয়ে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। গ্রেফতারকৃত
ব্যক্তিকে তার পছন্দসই আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণ করা থেকে
বঞ্চিত করা যাবে না। দণ্ডবিধির নির্দেশ অনুসারে কোনো
ব্যক্তি আদালতে বিচারের সম্মুখীন হলে আত্মপক্ষ
সমর্থনের অনুকূলে অভিযুক্তের ইচ্ছা অনুযায়ী উকিল নিয়োগ
করতে পারেন। যিনি উকিল নিয়োগের সামর্থ্য রাখেন না তাকে
সহযোগিতা করার জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত আইনজীবী
সহায়তা করতে পারেন। আর্থিক সঙ্গতিহীন অভিযুক্তকে সরকারি
উকিলের সহযোগিতা করাও একটি দায়িত্ব বটে।
ঘ. দ্রুত বিচার পাওয়ার অধিকার : ইংরেজিতে একটা কথা
আছেÑ দঔঁংঃরপব উবষধুবফ রং ঔঁংঃরপব উবহরবফ.'' অভিযুক্ত
ব্যক্তির দিক থেকে বিচারকাজ দ্রুত করার গুরুত্ব এই যে,
বিচার দ্রুত সম্পন্ন হলে তিনি সত্বর সাজা ভোগ কিংবা
অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন। বিচারকাজ দ্রুত
সম্পন্ন না হলে অভিযুক্তকে দীর্ঘদিন জেলহাজতে কিংবা
পুলিশ হেফাজতে দিন কাটাতে হয়। এতে করে তার মধ্যে এক
ধরনের অনিশ্চয়তা বোধের সৃষ্টি হয়। শুধু তাই নয়, তার
মধ্যে মানসিক দুশ্চিতায় অবসাদগ্রস্ততা ভর করতে পারে।
অভিযুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও জনগণের স্বার্থে বিচারকাজ
দ্রুত সম্পন্ন হওয়া উচিত। কেননা দ্রুত বিচার
নিবর্তনমূলক ব্যবস্থারই অংশ।
Top
ফারায়েজে বণ্টনের
নিয়ম
ফারায়েজ বা উত্তরাধিকার আইনে পিতা-মাতা ও সন্তানদের
সম্পত্তির অংশ বণ্টন করা হয়। উত্তরাধিকার মাধ্যমে
ওয়ারিশরা যে মালিকানা লাভ করে তা বাধ্যতামূলক। মৃত
ব্যক্তির সন্তান ও পিতা-মাতা যেহেতু সর্বাধিক নিকটবর্তী
তাই তারা সর্বাবস্থায় ওয়ারিশি স্বত্ব পায়। এ দুটি
সম্পর্ক মানুষের অধিকতর নিকটবর্তী ও প্রত্যক্ষ।
অন্যান্য সম্পর্ক পরোক্ষ। মৃত ব্যক্তির সন্তানদের মধ্যে
পুত্র ও কন্যা উভয় শ্রেণী থাকলে তাদের অংশের সম্পত্তি
এভাবে বণ্টন করা হবে যে, প্রত্যেক পুত্র প্রত্যেক
কন্যার চেয়ে দ্বিগুণ পাবে।
অন্যদিকে পিতা-মাতা উভয়ই জীবিত এবং সন্তানাদিও আছে
সেক্ষেত্রে পুত্র ও কন্যা হোক না কেন পিতা-মাতা
প্রত্যেকেই ছয় ভাগের এক ভাগ পাবেন। অবশিষ্ট অংশ
অন্যান্য ওয়ারিশ সন্তান ও স্ত্রী অথবা স্বামী পাবে।
দ্বিতীয় অবস্থায় মৃত ব্যক্তির সন্তান ও ভাই-বোন কিছুই
নেই। শুধু পিতা-মাতা আছেন। এমতাবস্থায় ত্যাজ্য
সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ মা এবং অবশিষ্ট তিন ভাগের
দুই ভাগ পিতা পাবেন।
তৃতীয় অবস্থায় মৃত ব্যক্তির সন্তানাদি নেই; কিন্তু
ভাই-বোন আছে, যাদের সংখ্যা দুই ভাই হোক কিংবা দুই বোন
অথবা দুইয়ের অধিক। এমতাবস্থায় মা ৬ ভাগের ১ ভাগ পাবে।
আর যদি কোনো ওয়ারিশ না থাকে তবে অবশিষ্ট ৬ ভাগের ৫ ভাগ
পাবে, যা অবশিষ্ট থাকবে তা পিতা পাবেন।
ফারায়েজের কতিপয় নিয়ম আছেÑ (১) যার সম্পত্তি বণ্টন করা
হবে তার মৃত্যু কোনোক্রমেই তার উত্তরাধিকারীদের ওপর
স্বত্ব বর্তাবে না। (২) যার সম্পত্তি বণ্টন করা হবে
তার সমুদয় সম্পত্তিকে ষোলআনা ১ ধরে বা ভগ্নাংশের আকারে
ধরলে ১ ধরে করতে হবে। (৩) যার সম্পত্তি বণ্টন করা হবে
প্রথমত তার কাফন-দাফনের খরচ, দ্বিতীয়ত কোনো ঋণ করে গেলে
তা পরিশোধ করতে হবে। কোনোরূপ অসিয়ত করে গেলে তা
পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ হতে অসিয়ত বাবদ বাদ
দিয়ে অবশিষ্ট অংশের ওপর কেবল ওয়ারিশদের স্বত্ব বর্তাবে।
(৪) জীবিত থাকাকালে তার ওয়ারিশ সম্পত্তি বণ্টনের জন্য
কোনোরূপ দাবি করতে পারবে না। (৫) তিনি যদি ভূমি
হস্তান্তর আইনে ১৮৮২ সাল কর্তৃক বৈধভাবে কোনো সম্পত্তি
হস্তান্তর করে মৃত্যুবরণ করেন তবে ওই সম্পত্তি
ফারায়েজের আওতায় আসবে না। (৬) তিনি যদি তার স্ত্রীর
গর্ভে তার ঔরশজাত কোনো সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন তবে
বণ্টনের ক্ষেত্রে ওইরূপ সন্তানের ভূমিষ্ট হওয়া অবধি
অপেক্ষা করা উত্তম। (৭) স্বামীকর্তৃক পরিত্যক্ত স্ত্রী
ওই স্বামীর মৃত্যুতে বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনোরূপ
অংশপ্রাপ্ত হবে না। (৮) মৃত ব্যক্তির স্থাবর ও অস্থাবর
সমুদয় সম্পত্তিই ফারায়াজের আওতায় আসবে।
এ ছাড়া ফারায়াজে উত্তরাধিকারের শ্রেণী বিভাগ রয়েছে।
যেমনÑ (ক) ‘যাবিল ফুরুয’ বা অংশীদার (খ) ‘আসাবা’ বা
অবশিষ্ট ভোগী (গ) ‘যাবিল আরহায’ বা অদূরবর্তী জ্ঞাতিরা।
উত্তরাধিকারী নির্ণয়ে সবার আগে যাবিল ফুরুযকেই
সর্বাবস্থায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোনো যাবিল ফুরুয
না থাকলে সব মিরাস এবং যাবিল ফুরুস থাকলে তাদের দাবি
পূরণের পর যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তা হলে অবশিষ্টাংশ
আসাবদের মধ্যে বণ্টিত হবে।
আসাবা তালিকা অনুযায়ী অধঃস্তন পুরুষরা পুত্র-কন্যা
পুত্রের সঙ্গে আসাবা হয় এবং পুত্র দ্বিগুণ অংশ পায়।
পুত্রের পুত্র যত নিম্নগামী হোক পূর্ব-পুরুষদের মধ্যে
রয়েছে, পিতা প্রকৃত পিতামহ। পিতার অধঃস্তন পুরুষদের
মধ্যে পূর্ণ ভ্রাতা, পূর্ণ ভগিনী। পূর্ণ ভগিনী, পূর্ণ
ভ্রাতা ও অন্য আসাবা না থাকলে পূর্ণ বোন অবশিষ্ট পাবে।
যদিÑ (ক) এক বা অধিক কন্যা, (খ) পুত্রের কন্যা, (গ)
মাত্র এক কন্যা এবং পুত্রের কন্যা বা কন্যারা যতই
নিম্নগামী হোক। বৈমাত্রেয় ভাই হলে অবশিষ্ট পাবে। বোন
থাকলে ভাই তাতে দ্বিগুণ পাবে। বৈমাত্রেয় বোন,
বৈমাত্রেয় ভাই অন্যান্য আসাবা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভগিনী
অবশিষ্ট পাবে। (ঘ) পূর্ণ ভাইয়ের পুত্র। (ঙ) বৈমাত্রেয়
ভাইয়ের পুত্র, (চ) পূর্ণ ভাইয়ের পুত্রের পুত্র। যাবিল
আরহাম বংশধরদের মধ্যে (ক) কন্যার ছেলে-মেয়ে ও তাদের
বংশধররা, (খ) পুত্রের কন্যাদের সন্তান-সন্ততি।
স্ত্রীর মৃত্যুকালে যদি সন্তান বা পুত্রের নিম্নক্রম
কেউ থাকে তবে সে ক্ষেত্রে স্বামী তার ত্যাজ্য
সম্পত্তির এক-চতুর্থাংশ পাবে। সন্তানহীনা স্ত্রীর
স্বামী এক-অর্ধাংশ সম্পত্তি পান। পিতা- সর্বদাই একটি
অংশ পাবেন। মা- সর্বদাই একটি অংশ পাবেন।
রোগাক্রান্ত পশু বাজারজাতকরণ
শাস্তিযোগ্য অপরাধ
রোগাক্রান্ত পশু বাজারজাত করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যে আইনে রোগাক্রান্ত পশু বা তা থেকে উৎপাদিত কোনো পণ্য
বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পশুরোগ আইনে স্পষ্ট বলা
হয়েছে, কোনো পশু সুস্থ নাকি অসুস্থ তা
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই বাজারজাত করতে হবে। এ বিষয়ে
পশুরোগ আইন-২০০৫ এর ১২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সংক্রমিত
পশু বা ওই পশু থেকে উৎপাদিত পণ্য কোনো সরকারি
ভেটেরিনারি কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া বাজারজাত করা যাবে
না। যদি এই বিধান লঙ্ঘন করে, তাহলে এ আইনের ৫ ধারা
অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে দুই বছর কারাদন্ড বা ১০ হাজার
টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড দিতে পারেন আদালত।
Top
Top
|
|