           
 
|
Cover
July 2020
English Part July 2020
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
করোনাতে একটি মানুষও যেন কষ্ট না পায়, সেই চেষ্টা করে
যাচ্ছি

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন,
করোনাভাইরাস আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়
করিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের একটি মানুষও যেন কষ্ট না
পায়, খাদ্যের অভাবে না থাকে- সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
অন্যান্য দেশ না পারলেও এই করোনাকালের মধ্যে সরকার
বাজেট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার কারণে দেশের অনেক কিছু স্থবির হয়ে
যায়, যারা দিন এনে দিন খায়, তাদের অনেকেই কর্মহীন হয়ে
পড়েন। তাদের প্রত্যেককে খুঁজে খুঁজে বের করে সাহায্য
পৌঁছে দিয়েছি, অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।
১০ জুন ২০২০ জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায়
অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এই
আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী,
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাসদ সভাপতি
হাসানুল হক ইনু, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান
রাঙ্গা ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে মরি,
গুলি খেয়ে মরি, অসুস্থ হয়ে মরি, মরতে একদিন হবেই। এই
মৃত্যু যখন অবধারিত সেটাতে তো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি
ভয় পাইনি। কখনও ভয় পাব না।
আর আমি যখন বাংলাদেশে ফিরে আসি সেটা ছিল সেই বাংলাদেশ
যেখানে আমার বাবা-ভাই-বোন শিশু ভাইটিকে পর্যন্ত হত্যা
করা হয়েছিল। আমাদের পরিবারের বহুজন সদস্য বুলেটবিদ্ধ,
আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বুলেটবিদ্ধ স্পিন্টার
নিয়ে অনেকে বেঁচে আছেন।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে
সবারই কাজ করার সুযোগ ছিল না। যারা নিয়মিত চাকরির বেতন
পেতেন তার বাইরে কিছু লোক থাকে যারা ছোটখাটো কাজ করে
খান, ব্যবসা করে খান।
প্রতিটি মানুষের খবর নিয়ে নিয়ে তাদের ঘরে ঘরে খাবার
ব্যবস্থা করি। এমনকি রিকশার পেছনে যারা আর্ট করে এমনকি
সাংস্কৃতিককর্মী তাদেরকে কিছু সরকারিভাবে, কিছু আমাদের
ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য সহযোগিতা করেছি।
আর্টিস্ট বা শিল্পী কিংবা শিল্পীদের সহযোগিতা করে
তাদের কথা কেউ ভাবে না- এই ভাবনাটা কিন্তু আমার নিজের
না। সত্যিকারের কথা বলতে এটা শেখ রেহানার চিন্তা। সেই
কিন্তু খুঁজে খুঁজে তাদের সাহায্য দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কাছে এ
জন্য আলাদাভাবে ত্রাণ দিয়ে রেখেছি যাতে তারা সাহায্য
পান। আমাদের দলের নেতাকর্মী যে যেখানে আছে যে যেটুকু
পেয়েছে প্রত্যেককেই সাহায্য করেছে। সমাজের বিভিন্ন
স্তরের মানুষও সাহায্য করছে।
প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে
মৃত্যুবরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন,
মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে দেশের চরম দুঃসময়ে যারা
নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা একে একে মৃত্যুবরণ করছেন, মনে
হচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকে একটা একটা করে পাতা ঝড়ে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, চরম এই দুঃসময়ে প্রশাসন থেকে শুরু করে
সবাই একতাবদ্ধ হয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। পুলিশ,
র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি,
চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মীরা
প্রতিনিয়ত এ দুঃসময়ে সাহসের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন,
এদের মধ্যে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের প্রতি গভীর
শ্রদ্ধা জানাই।
উপসর্গহীন ব্যক্তির মাধ্যমেও করোনা ছড়ায় : বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নেই, এমন কারো মাধ্যমে
কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঘটনা ‘খুবই বিরল’ — গত সোমবার
এমনটাই জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু
সংস্থাটির বক্তব্যের সঙ্গে বিশ্বের অনেক অনেক
বিজ্ঞানীই একমত হতে পারেননি। ফলে এ নিয়ে সৃষ্টি হয়
তর্ক-বিতর্ক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ জুন এক বিশেষ
ব্রিফিংয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে
ব্যাখ্যা দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, উপসর্গহীন
ব্যক্তির মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।
গত সোমবারের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার মহামারি-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. মারিয়া ভ্যান
কারখোভ গতকাল মঙ্গলবার জানান, উপসর্গহীন সংক্রমণের
অনেক ধরনের গাণিতিক মডেল রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
হিসাবে ১৬ শতাংশ মানুষ, যাদের মধ্যে করোনার উপসর্গ নেই,
তাদের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ছড়াতে পারে। তবে, ড. মারিয়া এও
বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে উপসর্গহীনদের
মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর মাত্রা বেড়ে প্রায় ৪০ শতাংশও হতে
পারে। সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯-সংক্রান্ত ব্রিফিংগুলো
সাধারণত সোমবার, বুধবার ও শুক্রবারে করে থাকে। কিন্তু
গত সোমবারের ব্রিফিং ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় গতকাল
মঙ্গলবার বিশেষ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সংস্থাটি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ
কেন্দ্র গতকাল মঙ্গলবার করোনাভাইরাস ছড়ানো নিয়ে আরো
সুস্পষ্ট একটি বিবৃতি দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, জ্বর,
কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো করোনাভাইরাসের উপসর্গ নেই,
কিন্তু কোভিড-১৯ ছড়াতে পারে, এমন দুধরনের সম্ভাব্য রোগী
রয়েছে— এক. এরা উপসর্গবিহীন এবং কখনোই এদের মধ্যে
করোনার উপসর্গ দেখা যায় না; দুই. আরেক ধরনের রোগী রয়েছে,
যারা শুরুতে উপসর্গবিহীন থাকে, কিন্তু পরে তাদের মধ্যে
উপসর্গ দেখা দিতে থাকে।
এর আগে গত সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জিং
ডিজিজ বিভাগের প্রধান মারিয়া ভ্যান কারখোভ বলেছিন,
‘আমাদের কাছে যে তথ্য ও পরিসংখ্যান রয়েছে, তাতে দেখা
যাচ্ছে যে উপসর্গহীন রোগীদের মাধ্যমে অন্য কারো শরীরে
সংক্রমণ ছডানোর হার খুব কম। বলতে গেলে বিরল।’ বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার জেনেভার সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের
সময় মারিয়া এ বিষয়ে জোর দিতে গিয়ে আবার বলেন, ‘এটা
খুবই বিরল।’
তবে প্রশ্নের মুখে মারিয়া স্বীকার করেছিলেন যে, কোনো
কোভিড-১৯ রোগীর শরীরে উপসর্গ না থাকলে তাঁর মাধ্যমে
সংক্রমণ ছডানোর ঘটনা যে নেই, তা নয়। কিন্তু সেইসঙ্গে
তিনি এও বলেন, ‘এ ব্যাপারে আরো গবেষণা, আরো পরিসংখ্যান
দরকার। কারণ, আমাদের কাছে বেশ কয়েকটি দেশের তথ্য এসেছে,
যারা খুব ভালো করে কনট্যাক্ট ট্রেসিং করেছে। তারা
দেখেছে, উপসর্গহীন রোগীদের থেকে অন্যজনের শরীরে খুব
বেশি সংক্রমণ ছডাচ্ছে না। এটা খুবই বিরল।’
ড. মারিয়ার এমন বক্তব্যের পরই বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে
আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির
ব্যাখ্যা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের ফুল দিয়ে
শুভেচ্ছা
জাতিসংঘ প্রতিনিধি
দলের
BHRC সদর দপ্তর পরিদর্শন এবং সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ
মানবাধিকার রিপোর্ট’
জাতিসংঘের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক এশিয়া এন্ড
প্যাসিফিক রিজিয়নের সিনিয়র এডভাইজার এবং মহামারী
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতিসংঘ
প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ড. জাহিদ হক এর নেতৃত্বে
৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ১৭ মে ২০২০ বিকেলে
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC সদর দপ্তর পরিদর্শন
করেন। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের অপর সদস্যগণ হচ্ছেন
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড স্পোর্ট এলাইন্স এর চীফ কো-অর্ডিনেটর
মেজর (অবঃ) ড. রশিদ সিদ্দিক এবং জাতিসংঘের সহযোগী
কর্মকর্তা প্রফেসর ড. নাঈমা খানম। জাতিসংঘ প্রতিনিধি
দল BHRC’র সদর দপ্তরে পৌছলে BHRC’র সেক্রেটারী জেনারেল
ড, সাইফুল ইসলাম দিলদার এর নেতৃত্বে মানবাধিকার
কর্মকর্তাগণ জানান। সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন BHRC’র
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী
কাজী রেজাউল মোস্তফা। সমন্বয় সভায় BHRC’র কর্মকর্তাদের
মধ্যে সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর আক্তারুজ্জামান বাবুল,
ডেপুটি গভর্নর ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন, ডেপুটি গভর্নর
সৈয়দ আজমুল হক, সহকারী পরিচালক এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম
কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট ফারাহ দিবা, ঢাকা মহানগর
দক্ষিণ শাখার সহ-সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলাম রাজিব, ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ-পশ্চিম মহিলা শাখার সভাপতি জেসমিন আরা
কবীর, ইঐজঈ ঢাকা মহানগর উত্তরের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক
নাসিমা আক্তার উর্মি, BHRC সহকারী পরিচালক মোঃ রুহুল
আমিন প্রমুখ।
রাষ্ট্রদূত প্রফেসর ড. জাহিদ হক BHRC’র সাথে
আনুষ্ঠানিক বৈঠকে জাতিসংঘের প্রতিনিধিগণ BHRC’র
কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং মহামারী
করোনাভাইরাসের ন্যায় প্রাণঘাতি মহামারী প্রতিরোধে
মানবাধিকার কর্মীদের মহৎ কার্যক্রমে অভিভুত হন।
জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC সারা
বাংলাদেশে মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে একযোগে কাজ
করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সমন্বয় সভায় BHRC’র
কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে
একটি প্রত্যয়নপত্র ইঐজঈ’র সেক্রেটারী জেনারেল এর নিকট
হস্তান্তর করেন।
BHRC চট্টগ্রাম মহানগর
উত্তর-এর উদ্যোগে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ
মানবাধিকার রিপোর্ট’
২৮ শে জুন ২০২০ ইং সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর) এর পক্ষ
থেকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল করোনা আইসোলেশন ইউনিট
এ সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়। ভয়াবহ ভাইরাস করোনার
এই মহামারি সময়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জীবনের ঝুঁকি
নিয়ে মানবিক সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সরা।
বিধায় চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষার জন্য চট্টগ্রাম
জেনারেল হাসপাতালে সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করা হয়
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর)
এর পক্ষ হতে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় ডেপুটি গর্ভণর ও
চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ
জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি টিম আন্দরকিল্লা রোডস্থ
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকদের
সুরক্ষায় ব্যবহারের জন্য পিপিই, সার্জিক্যাল মাস্ক,
হ্যান্ড গ্লাভস প্রদান করেন। হাসপাতালের পক্ষে সুরক্ষা
সামগ্রী গ্রহণ করেন অর্থোপেডিক সার্জিক্যাল ডাক্তার
অজয় দাশ।
এসময় সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা রোগীদের
চিকিৎসা দিতে গিয়ে সম্মানিত চিকিৎসকগণ সংক্রমিত হচ্ছেন।
তাই আমাদের সকলকে তাদের সুরক্ষার বিষয়টি অনুধাবন করে
যার যার অবস্থান থেকে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী
প্রদানে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে আসার আহবান
জানিয়েছেন । এতে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের স্বাস্থ্য
বিষয়ক সম্পাদক লায়ন ডা. মেজবাহ তুহিন এবং সহ-দপ্তর
সম্পাদিকা বিবি ফাতেমা সহ প্রমুখ।
এছাড়া বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর)
এর পক্ষ হতে এই কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং ধারাবাহিক
ভাবে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
বন্দিদের জন্য
ইতালির সব কারাগারে মসজিদ হবে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইতালি সরকার ও ইউনিয়ন অব ইসলামিক কমিটিজ অ্যান্ড
অরগানাইজেশন ইন ইতালির (ইউসিওআইআই) মধ্যে একটি সমঝোতা
চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যার অধীনে ইমামরা কারাগারের
মুসলিম বন্দিদের ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষা দেওয়া ও নামাজের
ইমামতি করার সুযোগ পাবেন।
কারা প্রশাসনের প্রধান বিচারক বার্নার্ডো পেট্রেলিয়া
ও ইউসিওআইআইয়ের সভাপতি ইয়াসিন লাফরাম চুক্তিপত্রে
স্বাক্ষর করেন। গত মাসে শেষ সপ্তাহে দেশটির মসজিদ ও
প্রার্থনাকক্ষগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপার ইতালির
প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতে ও ইউসিওআইআইয়ের প্রতিনিধি
দলের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির
আলোকেই নতুন সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো।
ইতালির বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইতালির ৬০ হাজার
বন্দির মধ্যে ১০ হাজারই বিদেশি। তাদের বেশিরভাগই
মরোক্ক, তিউনিশিয়া ও রোমানিয়ার নাগরিক। ইতালির
বন্দিদের মধ্যে সাত হাজার ২০০ জন মুসলিম। তাদের জন্য
৯৭ জন ধর্মীয় শিক্ষক রয়েছেন। বন্দির ৪৪ জনের দাবি তারা
জেলেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ইতালির মাত্র
কয়েকটি জেলে মুসলিম বন্দিদের প্রার্থনার জায়গা রয়েছে,
যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
ইতালির বিচার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইতালির
সংবিধানে সব নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতার নীতি রয়েছে এই
চুক্তি তা প্রয়োগে সহায়তা করবে। ইতালির সংবিধান সব
বন্দির জন্য সঠিকভাবে ধর্মপালনের অধিকার দিয়েছে।
ইতালির কারাগারে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যা
বৃদ্ধি পাওয়ায় সবার জন্য সঠিকভাবে ধর্মপালনের সুযোগ করে
দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী ইউসিওআইআই ইতালিতে ইমামের দায়িত্ব
পালনকারীদের একটি তালিকা দেবে, যারা সারা দেশের
কারাগারের মুসলিম বন্দিদের ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দেবে
এবং তাদের নামাজের ইমামতি করবে। কর্মক্ষেত্র নির্বাচনে
ইমামদের মতামত নেওয়া হবে।
ইতালীয় মুসলিমদের নেতা লাফরাম বলেন, এটি খুবই
স্বস্তিকর। নতুন সমঝোতা চুক্তির আলোকে ইতালির সব
কারাগারে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে। এটি
মূলত পাঁচ বছর আগের একটি প্রজেক্টের সুফল, যার অধীনে
ইতালির আটটি কারাগারে শুরু হয়েছিল।
২০১৫ সালে ইতালির কয়েকটি কারাগারে মুসলিম বন্দিদের
নামাজের জন্য কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে
একত্রে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ ছিল না। তবে
রমজানের মতো বিশেষ সময়ে কর্তৃপক্ষ জামাতে নামাজ আদায়ের
অনুমতি দেয়।
পাল্টা অভ্যুত্থান পরিকল্পনা মাহাথিরের, মালয়েশিয়ার
সমস্যা নাজিব
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়ার রাজনীতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ড.
মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি বিশ্বাস করেন এখনও রাজনীতিতে
ফেরার জন্য ষড়যন্ত্র করছেন ‘১এমডিবি’ দুর্নীতিতে জড়িত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। বর্তমান
প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন কে তা নিয়ে প্রশ্ন
তুলেছেন তিনি। এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি এমপিদের
এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক মিত্র আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রতি
আহ্বান জানিয়েছেন তার উত্তরসুরি মুহিদ্দিন ইয়াসিনের
বিরুদ্ধে পাল্টা ক্যু শুরু করতে। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের
মধ্যকার কথোপকথনে দেশটির সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়েছে।
রাজনীতির খেলা সম্প্রতি জমজমাট আকার ধারণ করেছে আধুনিক
মালয়েশিয়ার রূপকার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির
মোহাম্মদ ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের
মধ্যে। সেটাকেও বড় করে দেখেন না ৯৪ বছর বয়সী রাজনীতিক
মাহাথির। তিনি মনে করেন প্রকৃত সঙ্কট এখনও নাজিব রাজাক,
২০১৮ সালের নির্বাচনে যিনি ধরাশায়ী হয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ার ৬৬ বছরের ইতিহাসে ক্ষমতাসীনরা
প্রথম পরাজিত হয়েছে।
এসব নিয়ে ‘দিস উইক ইন এশিয়া’তে বিস্তারিত এক
সাক্ষাতকার দিয়েছেন মাহাথির। এতে দু’দুবারের সাবেক এই
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিনকে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের দুর্বল অনুগামী
হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মাহাথির বলেন, নাজিব রাজাক ১এমডিবি
আর্থিক কেলেংকারিসহ কয়েক ডজন দুর্নীতির অভিযোগের
মুখোমুখি। তাকে জেল থেকে বাঁচাতে মুহিদ্দিন সবকিছুই
করবেন বলে মনে করেন মাহাথির। তিনি পাল্টা রাজনৈতিক
অভ্যুত্থানের যে আহ্বান জানিয়েছেন তা সফল হবে কিনা সে
বিষয়ে মাহাথির বলেছেন, আনোয়ার ইব্রাহিম ও তার সঙ্গে
যারা আছেন তাদেরকে একত্রিত হতে হবে। তার ভাষায়
‘ঐক্যবদ্ধ না হলে সরকার হঠাতে যে পরিমাণ শক্তির
প্রয়োজন তা আমরা পাবো না। বর্তমান সরকারের রয়েছে
ভঙ্গুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা’।
১৯৪০ এর দশক থেকে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে মাহাথির। এই
দীর্ঘ বর্ণিল রাজনৈতিক জীবনে সামনের লড়াইটা সবচেয়ে
কঠিন হবে বলে তিনি মনে করেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ
সপ্তাহের শেষের দিকে মাহাথির মোহাম্মদ এবং আনোয়ার
ইব্রাহিম একটি ঘোষণা দিতে পারেন। তারা বলতে পারেন,
দেশের মোট ২২২ জন এমপির সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পেয়েছেন
তারা। এমনটা হলে ক্ষমতাসীন সরকার এক বড় বিপদে পড়ে যেতে
পারে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তাদের এ পরিকল্পনা অসম্ভব
নয়। কারণ, মুহিদ্দিন প্রশাসনের রয়েছে সামান্য
সংখ্যাগরিষ্ঠতা। এমনই এক প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ওই
সাক্ষাতকার দিয়েছেন মাহাথির। এরই মধ্যে মুহিদ্দিনের
পক্ষের এমপিদের সরকারি চাকরিতে সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব
দেয়া হয়েছে, বিনিময়ে পরিকল্পনায় তারা সমর্থন দেবেন।
কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ডব্লিউএইচডি‘র “ষ্টার অব কোভিট” এ্যাওয়ার্ড
পেলেন BHRC’র ২ সদস্য
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ডব্লিউএইচডি‘র
গ্লোবাল সোসাল ওয়ের ফেয়ার (হিউম্যান পিলার অব সোসাইটি)
ক্যাটাগিরি “কোভিড তারকা” (STARS OF COVID)
এ্যাওযয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের (BHRC)
পক্ষে ডেপুটি গভর্নর গৌরনদী তথা বরিশালের কৃতি সন্তান
সৈয়দ আজমুল হক। তিনি ‘পিলার অব সোসাইটি’ অর্থাৎ সমাজের
খুটি হিসেবে উল্লেখ করে সমাজসেবায় অর্থাৎ মানবাধিকার
কর্মকান্ডের অবদান স্বরূপ তিনি এই পদক পান। এছাড়া ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ শাখার সহ-সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলাম রাজিব
বিজনেস (এডুকেশন) ক্যাটাগরীতে এই পদক লাভ করেন।
গত ২৮ জুন বেলা ২টায় (লন্ডন সময়) লন্ডনে ডব্লিউএইচডি‘র
গ্লোবাল সংস্থার মিডিয়া চ্যানেলের লইফ প্রোগ্রামে
“কোভিড তারকা” সম্মাননার জন্য নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণ
দেয়া হয়।
‘বিশ্ব মানবতাবাদী ড্রাইভ (World Humanitarian
Drive)’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. আব্দুল বাসিত
সৈয়দ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন,
কসোভোর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এইচ.ই. ফাতমির সেজদিও।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
এইচ.ই. মাধব কুমার নেপাল, আন্দালুশিয়া-স্পেন-এর জাতীয়
অধিবেশনের সভাপতি সম্মানিত পেড্রো আই. আলতামিরানো।
‘কোভিড তারকা ইভেন্টে বিশ্বের ৭টি মহাদেশ হতে ৩৫টি
দেশের ১৬০০-রও অধিককে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য সিবি, ভিডিও
ক্লিবসহ যাবতীয় প্রমাণপত্র জমা দেন। ওই প্রমাণপত্র
ছাড়াও ডব্লিউএইচডি‘র গ্লোবাল হিউম্যান এ্যাওয়ার্ড
পিলার অব সোসাইটির ‘বিশ্ব মানবতাবাদী ড্রাইভ কর্তৃক
আয়োজিত ‘কভিড তারকা এ্যাওয়ার্ডের জন্য সংস্থাটি তাদের
নিজস্ব টিম দ্বারা প্রতিটি দেশে মনোনয়ন প্রত্যাশী
সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। ৩৫টি দেশের ৫৫০
জনেরও অধিক প্রতিযোগীর মধ্য হতে ১০০ জনকে প্রাথমিকভাবে
মনোনয়ন দেন। ১২টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের
জন্য ১২টি ক্যাটাগিরিতে এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
করোনায় মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে
প্রবাসী শ্রম ভিসা
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
করোনা পরিস্থিতির কারণে মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে রয়েছে
১ লক্ষাধিক শ্রম ভিসা। যদিও ভিসার মেয়াদ বাড়বে বলে
আশ্বাস দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শ্রমবাজারভুক্ত
দেশগুলোর ইস্যু করা এসব ভিসা বাতিল করবে, না-কি পুনরায়
একই নামে ভিসা ইস্যু করে কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ করে
দিবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের আগে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার
বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিলো। বিএমইটির হিসেবে চলতি বছরের
মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ৮১ হাজার ভিসা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
যার মধ্যে ফ্লাইট বন্ধের কারণে বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়েও
অনেকে যেতে পারেননি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং
এজেন্সি- বায়রা জানায়, সদস্যভুক্ত এজেন্সিগুলোর দেয়া
তথ্য অনুসারে এই সংখ্যা ১ লাখের বেশি। যারা এরই মধ্যে
বিদেশগামী কর্মীদের নিবন্ধন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট,
মেডিক্যাল ও টিকেট সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় টাকা খরচ করে
ফেলেছেন।
বায়রার নিবন্ধিত ১ হাজার ৬০০ এজেন্সির মধ্যে ৩১৩টি
রিক্রুটিং এজেন্সির তথ্য অনুযায়ি ৮০ হাজার ভিসার তথ্য
পাওয়া গেছে। এদের কেউই মার্চে ফ্লাইট বন্ধের পর আর
বিদেশ যেতে পারেননি।
তাদের মধ্যে- ভিসা স্ট্যাম্পের জন্য অপেক্ষমান- ২৯
হাজার ৯২৮ জন, ভিসা স্ট্যাম্পিং সম্পন্ন ১৫ হাজার ৫৪৪
জন, ভিসা বাতিল হয়েছে ২ হাজার ২৭০ জনের, জনশক্তি
ছাড়পত্র পেয়েছে ২০ হাজার ৪৪৯ জন, ফ্লাইট বাতিল ৩ হাজার
৩৪ জনের, অনান্য সমস্যায় ৪ হাজার ৭৩৫ জনের ভিসা বাতিল
হয়েছে।
এ অবস্থায় বিদেশ যেতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়বে
কর্মীরা। তবে ভিসার মেয়াদ বাড়বে বলে দূতাবাস মাধ্যমে
আশ্বাস দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এদিকে,
করোনায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকলেও বিশেষ
ব্যবস্থায় মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফিরেছে কয়েক হাজার
অভিবাসী কর্মী।
এই গ্রামে পুরুষ নেই, তবু যেভাবে মা
হচ্ছে মেয়েরা!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দক্ষিণ কেনিয়ার একটি ছোট জনপদ হল উমোজা। ২৭ বছর ধরে
এখানে শুধু মেয়েদের বাস। কাঁটা’তারে ঘেরা এই গ্রামে
ছেলেদের প্রবেশ নিষেধ। কেন? তাহলে ফিরে যেতে হবে ১৯৯০
সালে।
সেই সময় ব্রিটিশদের হাতে গণ ধর্ষণের শিকার হন এখানকার
১৫ জন মহিলা। এরপর তারা ঠিক করেন গ্রামের একপ্রান্তে
নিজেদের মতো জনপদ তৈরি করে তারা থাকবেন।
কোনও রকম পুরুষের প্রবেশ নিষেধ। সেই ১৫ থেকে আজ
সংখ্যাটা এসে দাঁড়িয়েছে ২৫০ জনে। অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে
যাওয়া, গার্হস্থ্য হিংসা আর নির্যাতনে বাড়ি থেকে বের
করে দেওয়া কিংবা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এমন মহিলাদের
ঠাঁই হয়েছে এই গ্রামে।
মহিলারা মনে করেন তাদের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় এই গ্রাম।
আর অসহায় মেয়েদের জন্য এই গ্রামের দরজা সবসময় খুলে
রেখেছেন বাকি মেয়েরা।
শুধু মেয়েরাই নন, তাদের সন্তানরাও রয়েছেন সঙ্গে। এবার
প্রশ্ন হল যে গ্রামে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ সেখানে
মেয়েরা কীভাবে পুরুষের সাহায্য ছাড়াই সন্তানের জন্ম
দিচ্ছেন।
গ্রামে যেহেতু পুরুষের প্রবেশ নিষেধ তাই পছন্দের
পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের জন্য রাতের বেলা অন্য গ্রামে
যান মেয়েরা। তবে বাইরের কোনও অতিথির সঙ্গে যৌনমিলন করতে
পারবেন না মেয়েরা এমনও নিয়ম রয়েছে।
মেয়েরা তাদের গ্রাম সাম্বুরুতে নিজেরাই গড়ে তুলেছেন
স্কুল, কালচারাল সেন্টার এবং সাম্বুরু ন্যাশনাল পার্ক।
তাদের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে। নিজেরা গয়না এবং
ঘরসাজানোর নানা দ্রব্য বানিয়ে তা যেমন অনলাইনে বিক্রি
করেন তেমনই পর্যটকদের কাছেও বিক্রি করেন। বহু পর্যটক
আসেন এই গ্রাম ঘুরতে।
তাদের জঙ্গলসাফারি, মিউজিয়াম ঘুরে দেখানোর দায়িত্বও
থাকে মহিলাদের হাতে। আসার আগে অনলাইনে বুকিং করতে হয়।
করোনা ভ্যাকসিনের প্যাটেন্টে কারও একক অধিকার থাকবে
না : প্রফেসর ইউনূস

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
‘সামার অব পারপাস’ শিরোনামে জার্মানির মিউনিখে গতকাল
থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘সামাজিক ব্যবসা দিবস’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর
মুহাম্মদ ইউনূস করোনা ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিকভাবে জনগণের
সম্পত্তিতে পরিণত করার মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ পৃথিবী
গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, এই ভ্যাকসিনের
প্যাটেন্টের ওপর কারও একক অধিকার থাকবে না। করোনা
ভ্যাকসিনের উৎপাদন স্থানীয় পর্যায়ে করারও আহ্বান জানান
তিনি। ঢাকার ইউনূস সেন্টার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ
তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, প্রতি বছরের মতো এ
বছরও বৈশ্বিকভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। তবে ‘কভিড-১৯’
এর কারণে আয়োজনের বড় অংশটাই হচ্ছে ভার্চুয়াল স্পেসে।
মিউনিখের অনুষ্ঠানের ইভেন্টগুলোর ভিডিও ক্লিপ উপস্থাপন
করা হবে এবং স্যাটেলাইটে বিশ্বব্যাপী সম্প্রচারিত হবে।
সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করছে ইউনূস সেন্টার ও গ্রামীণ
ক্রিয়েটিভ ল্যাব।
এ বছরের সামাজিক ব্যবসা দিবসে করোনা
দুর্যোগ-পূর্ববর্তী পৃথিবীতে যে বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক
ও সামাজিক পরিস্থিতি ছিল, সেই পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার
বিপদ সম্পর্কে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হচ্ছে। উদ্বোধনী
দিনে প্রফেসর ইউনূস এক বক্তৃতায় ‘কিছুতেই আবার ফিরে না
যাওয়া’র একটি দৃঢ় নীতি ঘোষণা করেছেন। করোনা সংকটকে একটি
নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার একটি অভাবনীয় সুযোগ হিসেবে গ্রহণ
করার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্মেলনে জার্মান রাজনৈতিক নেতা
জার্মান ফেডারেল পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ওলফগাং
শয়েবলে, বাভেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মার্কাস সোয়েডার,
বাভেরিয়ার ডিজিটাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী
জুডিথ গেরলখ এবং মাই-কালেকটিভের প্রতিষ্ঠাতা ড.
অ্যাঙ্গেলমেইয়ের বিশেষ বার্তা দেন। তিন দিন ধরে বক্তারা
করোনা-পরবর্তী পৃথিবীতে বৈশ্বিক সামাজিক সমস্যাগুলো
কীভাবে উদ্ভাবনমূলক উপায়ে সমাধান করা যায় তা নিয়ে
আলোচনা করবেন। আলোচনায় মানবাধিকার, গ্রহ হিসেবে
পৃথিবীর নিজস্ব অধিকার, মূল্যবোধ-চালিত ব্যক্তিগত
লক্ষ্য বিষয়ক সংলাপ, খেলাধুলাকে মহামারী চলাকালেও
কীভাবে পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায়,
করোনা ভ্যাকসিনকে কীভাবে একটি বৈশ্বিক সর্বসাধারণের
সম্পত্তিতে পরিণত করা যায় ইত্যাদি বিষয়গুলো
অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ‘রি-ইমাজিনিং এ বেটার ইউরোপ ইন
২০২৫’ বিষয়ক দুটি বিশেষ সেশনও পরিচালিত হবে।
যেকোনো নম্বরে কথা বলুন ৩০ পয়সায়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রতিবছরই বাড়ছে মোবাইল ফোন পরিচালনার খরচ। বাড়ছে
কলরেট এবং ইন্টারনেটের দাম। এই অবস্থায় অনেকেই ফেসবুক
মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমোর মতো
অ্যাপভিত্তিক প্লাটফর্মগুলোতে ঝুকছেন। কেননা, এর
মাধ্যমে শুধু ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই বিনা পয়সায় কল
করা যাচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে যাকে কল দেবেন তার
ইন্টারনেট সংযোগ এবং অ্যাপ থাকতে হবে।
এই সমস্যার সমাধান দেবে আইপি কল। আইপি কলে যে কল দেবেন
তার ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই হবে। যাকে কল দেয়া হচ্ছে
তার ইন্টারনেট সংযোগ কিংবা অ্যাপ না থাকলেও চলবে। এতে
খরচ খুবই কম। প্রতি মিনিট কল করার খরচ মাত্র মাত্র ৩০
পয়সা। প্রতি সেকেন্ডে পালস রয়েছে। এছাড়াও আইপি ফোন থেকে
আইপি
ফোনে কথা বলার কোনো খরচ নেই।
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশে এখন ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিফোন সার্ভিস
প্রোভাইডার্স (আইপিটিএসপি) কোম্পানিগুলোকে অ্যাপের
মাধ্যমে ভয়েস সেবার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মোবাইল ফোন
অপাটেরগুলোর দৌরাত্বের কারণে আইপি টেলিফোন সেবা অতটা
জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু দিন দিন এর গ্রাহক সংখ্যা
বাড়ছেই। দেশে আইপি টেলিফোন সেবায় এগিয়ে আছে আম্বার আইটি।
প্রতিষ্ঠানটির আম্বার আইটি আইপি ফোন অ্যাপ ব্যবহার করে
মাত্র ৩০ পয়সায় এক মিনিট কথা বলা যাবে যেকোনে
টিঅ্যান্ডটি এবং যেকোনো অপারেটরের মোবাইল ফোনে। প্রতি
সেকেন্ডে পালস রয়েছে। গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি
ডাউনলোড করা যাবে বিনামূল্যে। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র
দিয়ে নিবন্ধন করলে ১০ টাকার ফ্রি টক টাইম দেয়া হবে।
আম্বার আইটির আইপি ফোনে রিচার্জ করাও সহজ। মোবাইল
ব্যাংকিং ছাড়াও ইন্টারনেট ব্যাংকি এবং নেট ব্যাংকিংয়ের
মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে রিচার্জ করা যায়। রিচার্জকৃত
ব্যালেন্সের মেয়াদও অফুরন্ত। ফলে সাশ্রয়ী দাম কথা বলা
যাচ্ছে। গ্রাহকদের খরচও কমে যাচ্ছে। আম্বার আইটির সিইও
আমিনুল হাকিম গণমাধ্যমকে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইবারের
মতো অ্যাপগুলোতে শুধু ইন্টারনেটে অ্যাপ হতে অ্যাপে কথা
বলা যায়। কিন্তু ইন্টারনেটভিত্তিক টেলিফোন বা আইপি
টেলিফোনের অ্যাপে সাধারণ মোবাইল নেটওয়ার্কে বা
ল্যান্ডলাইনে কথা বলা যায়। এ অ্যাপে ইন্টারনেট, সাধারণ
মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ল্যান্ডফোন যে কোনো মাধ্যমে কথা
বলার সুবিধা রয়েছে। খরচও কম। আর এই আইপি ফোন হতে আইপি
ফোনে কথা বলতে কোনো খরচ লাগে না।
তিনি জানান, গ্রাহক টানতে, আইপি ফোন ব্যবহারে
গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করতে আম্বার আইটি মাত্র ৩০ পয়সায়
প্রতি মিনিটে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে।
অ্যাপ ছাড়াও বাজারে আইপি টেলিফোন সেট পাওয়া যাচ্ছে।
এসব সেটের দাম ১৫০০ টাকা থেকে শুরু। এই ফোনে ইন্টারনেট
সংযুক্ত করে সাধারণ টেলিফোনের মতোই কম খরচে কথা বলা
যাচ্ছে। আইপি ফোন থেকে আইপি ফোনে কল করলে কোনো খরচ হয়
না।
বাংলাদেশের জনগণ অসচেতনঃ চীনা বিশেষজ্ঞদের হতাশা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে চীন থেকে ১০
সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল এসেছিল বাংলাদেশে।
বিশেষজ্ঞ দলটি দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, কোয়ারেন্টিন
সেন্টারসহ বিভিন্ন পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে।
এ ছাড়া বেশ কিছু স্থান ঘুরে তাঁরা হতাশা প্রকাশ করে বলে
গেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ সচেতন নয়, বরং তারা অসচেতন।
এতে করে ক’রো’না পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদল নিজ দেশ চীনে ফিরে যাওয়ার আগে এসব ব্যাপারে
কথা বলেছে সংশি-ষ্টদের সঙ্গে। সরকারকেও পরামর্শ দিয়ে
গেছেন তাঁরা। দেশে করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন
এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গঠিত
‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি‘র সদস্য ও বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক
উপাচার্য (ভাইরোলজিস্ট) অধ্যাপক নজরুল ইসলাম আজ বুধবার
এ প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘হতাশা প্রকাশ করে চীনের
দলটি বলে গেছে, ‘এই করোনা পরিস্থিতির ভেতরেও
বাংলাদেশের জনগণ সচেতন নয়; বরং তারা ভীষণ অসচেতন।
যেখানে ঘরবন্দি থাকার কথা, সেখানে সাধারণ মানুষ নিরাপদ
দূরত্ব বজায় রেখে চলছে না।
পাশাপাশি বসে আড্ডা দিচ্ছে। অপ্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছে।
মাস্ক পরিধান করছে না। অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধিও মানছে
না। এতে করে করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেছেন। এ
পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতেও তাঁরা পরামর্শ
দিয়েছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখে চীনের বিশেষজ্ঞদল
একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনও তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে
লিখিত আকারেও এ ব্যাপারে পরামর্শ থাকার কথা। তবে
পরামর্শক কমিটি এখনো ওই রিপোর্ট হাতে পায়নি। তাঁরা
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের কাছে ওই রিপোর্ট
জমা দিয়ে দেশে ফিরেছেন।
মানব পাচারকারীর
ভয়ঙ্কর সিন্ডিকেট
মির্জা মেহেদী তমাল
সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ। হারিয়ে যাওয়ার বিপদ। মৃত্যুভয়।
কোনো কিছুই যেন বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখতে পারছে
না হতদরিদ্র মানুষেরা। মানব পাচারকারীর ফাঁদে পড়ে
মৃত্যুকে কবুল করেই তারা ট্রলারে চেপে বসছে। পৌঁছে যেতে
চায় স্বপ্নের ঠিকানা মালয়েশিয়ায়। এসব পথেই
টেকনাফ-উখিয়াসহ সারা দেশের হাজারো তরুণ, যুবক দেশ
ছেড়েছিলেন বছর পাঁচেক আগে। কারও খোঁজ মিলেছে। কারও
মেলেনি। যাদের খোঁজ মেলেনি তারা কী অবস্থায় আছেন, জানে
না কেউ। অজানা আশঙ্কা কাটেনি পরিবারের সদস্যদের। তারা
এখনো প্রহর গুনছেন-ঘরে ফিরবে সন্তান। তাদের কান্না এখনো
থামেনি। তবে কান্না না থামলেও মানব পাচারকারীর ভয়ঙ্কর
সিন্ডিকেটের তৎপরতা বন্ধ হয়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়,
টেকনাফের বিভিন্ন পাহাড়ে গড়ে তুলেছে তারা নতুন আস্তানা।
বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পর ফের চালু হয়েছে
কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলের নোয়াখালীপাড়ার
কাটাবনিয়া-কচুবনিয়া ঘাট। এখান থেকেই ট্রলারে উঠতে হয়
বলে এসব ঘাট ‘মালয়েশিয়া এয়ারপোর্ট’ নামেই পরিচিত। বিনা
টাকায় বিদেশ পাড়ির গল্প দিয়ে নিরীহ মানুষদের এই
‘এয়ারপোর্ট’ থেকে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ট্রলার নামের
মরণযানে। এর পরের ঘটনা শুধুই বর্বরতার।
সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে সম্প্রতি
টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে নারী ও শিশুসহ শতাধিক
মানুষকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে
১১ ফেব্রুয়ারি ১৩৮ জন যাত্রী নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া
যাওয়ার পথে সেন্টমার্টিনের কাছে একটি ট্রলার ডুবে যায়।
এ ঘটনায় ২১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ এখনো ৪৪ জন।
ওই ঘটনায় ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে কোস্টগার্ডের দায়ের করা
মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে
পুলিশ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে
মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় মারা যান অনেক
বাংলাদেশি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি
করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, পাচারকারী
চক্রের প্রলোভনে পড়ে রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশিরা জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে
তাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গত মাসেই আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বেশ
কয়েকজন মানব পাচারকারী। এর পরেও পাচার বন্ধ হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি শিথিল
হলে পাচার আবারও বেড়ে যায়। মানব পাচারের ঘটনা তদন্ত
করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাচারের
রোমহর্ষক তথ্য খুঁজে পায়। র্যাব এমনই একটি ঘটনা তদন্ত
করতে গিয়ে নির্যাতনের কায়দাকানুন ও হত্যার পর সাগরে
ফেলে দেওয়ার তথ্য জানতে পারে।
জানা যায়, ২০১৫ সালে তাদের ফাঁদে পড়ে পাচার হওয়ার সময়
১২ জনকে উদ্ধার করেছিল র্যাব-১২। এরপর দীর্ঘ তদন্তের
পর গত ৩০ জুন টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তারা
প্রত্যেকেই এখন কারাগারে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইল
থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। তদন্তে জানা যায়, তারা
বিনা পয়সায় মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল
থেকে লোক সংগ্রহ করে সাগরপথে মাছ ধরার ট্রলারে করে
পাচার করত। তারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ
নিরীহ লোককে বিনা পয়সায় মালয়েশিয়ায় পাঠানোর প্রলোভন
দেখিয়ে দালালের মাধ্যমে লোক সংগ্রহ করত। টাঙ্গাইল,
কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও দেশের
বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রীদের প্রথমে চট্টগ্রাম নিয়ে
আসত। এরপর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের টেকনাফে নিয়ে আসে।
টেকনাফ থেকে ধাপে ধাপে তাদের মালয়েশিয়াগামী মাছ ধরার
ট্রলারে উঠায়। ট্রলারে উঠানোর পর থেকেই যাত্রীদের
বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
নির্যাতন ও অনাহারে যাত্রীদের মধ্যে কোনো যাত্রী
গুরুতর অসুস্থ বা মৃত্যুবরণ করলে তাদের সাগরে ছুড়ে ফেলা
হয়। মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার
জলসীমায় ট্রলার পরিবর্তন করে যাত্রী হস্তান্তর করা হয়।
এভাবে মালয়েশিয়া সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছার আগেই জীবিত সব
যাত্রী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। মানব পাচারকারী দলের
সদস্যরা প্রতিনিয়ত মালয়েশিয়ায় যাতায়াত করে। সমুদ্রপথে
পাঠানো যাত্রীদের মালয়েশিয়ায় গ্রহণ করত তারা।
যাত্রীদের গ্রহণ করার পর মালয়েশিয়ার সাগর তীরবর্তী
অঞ্চলে টর্চার সেলে নিয়ে যেত। ভুক্তভোগীদের পরিবারের
কাছে মুক্তিপণ চাইত। যারা টাকা দিতে পারত না, তাদের
ক্ষেত্রবিশেষে সাগরে ছুড়ে ফেলা বা নির্যাতন করে পঙ্গু
করে দিত এই চক্রের সদস্য।
বরিশাল চড়কাউয়া
ফেরী ঘাটে মাঝিদের মধ্যে BHRC’র ত্রাণ বিতরণ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বরিশালে চড়কাউয়া ফেরী ঘাটে নৌকা ও ট্রলার মাঝিদের মাঝে
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা।
বরিশালের কাউয়ার চড় ফেরীঘাটে মাঝি মাল্লাদের মাঝে ১১০
প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত খাদ্য
সামগ্রীর মাঝে ছিল চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ ও সয়াবিন তেল।
বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন বরিশালের সম্মানিত জেলা
প্রশাসক আজিয়র রহমান, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
বরিশালের বিভাগীয় গভর্নর ও বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি
মোঃ মাহমুদুল হক খান মামুন, ডেপুটি গভর্নর ও বরিশাল
জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী আল মামুন, ডেপুটি
গভর্নর ও বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি মোঃ আবু মাসুম
ফয়সল, বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ
জাহাঙ্গীর হাওলাদার মিন্টু, বরিশাল আঞ্চলিক শাখার
সভাপতি জে এইচ সুমন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম
তালুকদার. কাউনিয়া থানা সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার
হোসেন সহ অন্যান্য মানবতাবাদী সদস্যবৃন্দ।
দেশে ভূমিহীন
পরিবার ৪০ লাখ, সিলেটে বেশি্
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশে মোট খানার (একই রান্না খান যে সব সদস্য বা পরিবার)
সংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৮০টি। যাদের কোনো
ধরনের জমি নেই এমন ভূমিহীন (যে পরিবারের নিজস্ব কোনো
জমি নেই) পরিবারের সংখ্যা ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯টি, যা
শতকরা হিসাবে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিলেট বিভাগে ভূমিহীন পরিবারের হার সর্বোচ্চ ১২ দশমিক
১৩ শতাংশ। তবে সব চেয়ে কম বরিশাল বিভাগে ৫ দশমিক ০১
শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশনের পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের
কৃষি শুমারি ২০১৯- এর প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে এমন তথ্য
পাওয়া গেছে।
বিবিএস সূত্র জানায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে
ভূমিহীনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ২০১৯ সালে কিছুটা
কমে এসেছে। ২০০৮ সালে ভূমিহীনতার হার ছিল ১২ দশমিক ৮৪
শতাংশ। ভূমিহীনতার হার ১৯৯৬ সালে ছিল ১০ দশমিক ১৮
শতাংশ এবং ১৯৮৩ সালে ছিল ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
শহর এলাকায় ৫৯ লাখ ৮ হাজার ২০৫টি খানার মধ্যে ১৭ লাখ
৯১৯ পরিবার ভূমিহীন। শহরে ভূমিহীন পরিবারের হার ২৮
দশমিক ৭৯ শতাংশ। অন্যদিকে পল্লী এলাকায় ২ কোটি ৯৬ লাখ
২৪ হাজার ৯৭৫ জন পরিবারের মধ্যে ভূমিহীন পরিবারের
সংখ্যা ২৩ লাখ ২৩ হাজার ২৭০টি। তবে পল্লী এলাকায়
ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা মাত্র ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিভাগওয়ারী সর্বোচ্চ ভূমিহীন পরিবারের হার সিলেট ১২
দশমিক ১৩ শতাংশ, এরপরেই ঢাকা বিভাগ ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
এছাড়া রংপুর বিভাগে ৮ দশমিক ২৩, রাজশাহী ৭ দশমিক ৭৬,
ময়মনসিংহে ৬ দশমিক ১৭, খুলনায় ৭ দশমিক ৩৩, চট্টগ্রাম
বিভাগে ভূমিহীন পরিবারের হার ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
শহরের মধ্যে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভূমিহীন পরিবার
রয়েছে ঢাকা শহরে (১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ)। ঢাকার পরে সিলেট
বিভাগে ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং খুলনায় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ
ভূমিহীন পরিবার রয়েছে।
বিবিএস সূত্র জানায়, মহানগর এলাকাগুলোর আশপাশে
নগরায়নের প্রবণতা বাড়ছে। পল্লী এলাকা থেকে শহর এলাকায়
ভূমিহীন মানুষের অভিবাসনের কারণে প্রতিটি বিভাগে পল্লী
এলাকায় ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা কমছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাংলানিউজকে বলেন,
ভূমিহীন পরিবারের জন্য সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
আমাদের সরকার মানবিক সরকার। ভূমিহীন পরিবারের জন্য ঘর
করে দেওয়া হচ্ছে, এই কাজ দেশব্যাপী শুরু হয়েছে। যাদের
ঘর নেই প্রকল্পের আওতায় সরকার ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে।
কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৯ স্বাধীন
বাংলাদেশে ৬ষ্ঠ বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো। বিশ্ব খাদ্য ও
কৃষি সংস্থার (এফএও) ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম ফর দ্য সেনসাস
অব অ্যাগ্রিকালচার ২০২০ গাইডলাইন মোতাবেক এই কৃষি
শুমারি পরিচালিত হয়েছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা
বিভাগাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিশ্ব খাদ্য ও
কৃষি সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে সারা দেশে শহর ও পল্লী
এলাকায় এটি বৃহৎ আকারে পরিচালিত অন্যতম পরিসংখ্যানিক
কার্যক্রম। প্রতি দশ বছর অন্তর কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত
হয়।
কৃষি শুমারির দ্বিতীয় জোনাল অপারেশনে সারা দেশের ১ লাখ
৬৭ হাজার ৬টি এলাকায় গণনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
এতে অংশ নেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮১৫ জন গণনাকারী। অর্থাৎ
প্রতিটি এলাকার জন্য একজনেরও কম গণনাকারী গণনাকাজ
সম্পন্ন করে।
এছাড়া ২২ হাজার ৩৭৩ জন সুপারভাইজার, ২১৯ জন সহকারী জেলা
সমন্বয়কারী, ৭৮ জন জেলা সমন্বয়কারী এবং ১০ জন বিভাগীয়
সমন্বয়কারী কাজ করেন এই প্রকল্পের আওতায়।
স্বাধীনতার আগে তথা পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৬০ সালে প্রথম
নমুনা আকারে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীন
বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি হয়।
Top
পেশা
বদলাচ্ছেন চিকিৎসকরা ?
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সেই ছোটবেলা থেকে মা-বাবার মুখে শোনা,
ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার (চিকিৎসক) হবে। মানুষের সেবা করবে;
মুখ উজ্জ্বল হবে পরিবারের, সমাজে বাড়বে
সম্মান-প্রতিপত্তি। স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাও চাইতেন, বড়
হয়ে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হবে তার প্রিয় শিক্ষার্থী। এই
দুই পেশার বাইরে অন্যকিছু যেন কল্পনায়ই আসত না। কিন্তু
সেই স্বপ্ন যেন ফিকে হয়ে এসেছে। সমাজে চিকিৎসকের সেই
সম্মান আজ আর নেই।’
মেডিকেলে ভর্তির শুরু থেকে যে যুদ্ধ আর অধ্যবসায়ের শুরু,
ভর্তির পরও তার যেন শেষ নেই। টানা পাঁচ বছর
সমাজ-পারিপার্শ্বিকতা সবকিছু বাদ দিয়ে বইয়ের মধ্যে মুখ
গুঁজে পড়ে থাকা। এমবিবিএস কোর্স শেষের পর চলে বিসিএসের
প্রস্তুতি। সবকিছু ঠিক থাকলে মেলে স্বাস্থ্য ক্যাডারের
সুযোগ অর্থাৎ ছোটবেলা থেকে লালিত স্বপ্ন সেই সরকারি
চিকিৎসক হওয়ার সুযোগ মেলে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের শুরুতে
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পোস্টিং। সেখানে নেই কোনো
গাড়ির সুবিধা, ভাড়ায় থাকতে হবে সরকারি কোয়ার্টারে!
ব্যক্তিগত সহকারী ও আলাদা কোনো অফিস থাকবে না।
পদোন্নতির জন্য প্রয়োজন হবে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন
ডিগ্রির, যা শেষ করতে লাগে ১৪-১৫ বছর। এখানেও সেই কঠিন
অধ্যবসায়। রয়েছে জটিল পদোন্নতি প্রক্রিয়া, সহযোগী
অধ্যাপক হলেও মিলবে না গাড়ি পাওয়ার সুযোগ।
অন্যদিকে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরির শুরুতে মন্ত্রণালয়ের
সহকারী সচিব, ডিসি অফিসের কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড হিসেবে
যোগদান। রয়েছে ধারাবাহিক পদোন্নতির সুযোগ, গাড়ি-বাড়ির
সুবিধা, গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণে মাসিক ৫০ হাজার টাকা।
ব্যক্তিগত সহকারী, পাওয়া যাবে আলাদা অফিসও। আর ইউএনও
হলে সরকারি বাংলো ও গাড়ির সুবিধা তো রয়েছে। পদোন্নতি
পেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হতে পারেন। রয়েছে স্কলারশিপ
নিয়ে বিদেশে পড়ার সুযোগ, প্রেষণে আন্তর্জাতিক সংস্থায়
কাজের সুযোগও আছে। তাহলে প্রশাসনিক ক্যাডার না হয়ে কেন
চিকিৎসক হবেন তরুণরা এমন প্রশ্ন ৩৮তম বিসিএস প্রশাসন
ক্যাডারে নির্বাচিত হওযা মেডিকেল কলেজের এক
শিক্ষার্থীর।
নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, পদোন্নতি, সুযোগ-সুবিধা
ও সামাজিক মূল্যায়ন বিবেচনায় স্বপ্নের সেই চিকিৎসক
হওয়ার পেশায় মন টেকেনি। প্রশাসন পরিচালনার কাজের প্রতি
আগ্রহ তৈরি হয়েছে, সেখানে রয়েছে পর্যাপ্ত সম্মান। এ
কারণে ডাক্তারি পড়লেও প্রশাসন ক্যাডার বেছে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে
চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যসেবা দিলেও নানাভাবে তাদের বঞ্চিত
হতে হয়। সঠিক সময়ে পদোন্নতির সমস্যা, নানাভাবে
লাঞ্ছিত-বঞ্চিত হওয়া, যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা না
পাওয়াসহ রয়েছে নানা সমস্যা।
এমবিবিএস পাস করে চিকিৎসক না হয়ে প্রশাসন ক্যাডারে
অন্তর্ভুক্ত হওয়া এমন আরও কয়েকজনের সঙ্গে এ
প্রতিবেদকের কথা হয়। তাদের সবার একই মন্তব্য। ‘ভাই,
চিকিৎসক হয়ে লাভ কী? সেই মহান পেশা আজ আর নেই। এ কারণে
চিকিৎসক হওয়ার বদলে পুলিশ, প্রশাসন, পররাষ্ট্র ও কর— এ
চার ক্যাডারের যে কোনোটি বেছে নেয়া।’
গত মঙ্গলবার ৩৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে,
এমবিবিএস পাস করা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্যাডার পদ বেছে
নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন পুলিশ, প্রশাসন,
পররাষ্ট্র ও কর ক্যাডারে। তাদের সংখ্যা কত এমন প্রশ্ন
করা হয় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি)। সঠিক
সংখ্যা বলতে না পারলেও পিএসসি জানায়, এ সংখ্যা শতাধিক।
কেন স্বাস্থ্য ক্যাডার ছেড়ে অন্য ক্যাডারে আকৃষ্ট
হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা— এমন প্রশ্ন রাখা হয় দেশের নামকরা
কয়েকটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের কাছে। তারা জানান,
দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পেশায় না
থাকার জন্য বেশিরভাগ অভিভাবকই তাদের সন্তানদের
নিরুৎসাহিত করছেন। এমনকি কিছু অভিভাবক মেডিকেল
শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নি করতেও বাধা দিচ্ছেন।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সর্বশেষ ব্যাচের
প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে
ইন্টার্নিতে যোগ দেননি। যদিও মেডিকেল কর্তৃপক্ষ
সার্টিফিকেট না দেয়ার ভয় দেখিয়েছে তবুও শিক্ষার্থীরা
ইন্টার্নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
Top
শেনজেন
ভিসা ব্যবহার করতে পারবে না বাংলাদেশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শেনজেন ভিসা ব্যবহার করতে পারবে না বাংলাদেশ। ইউরোপীয়
ইউনিয়নের ২৬টি দেশ নিয়ে তৈরি ব্লককে শেনজেন কান্ট্রিস
হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জুলাইয়ের শুরু থেকে এসব দেশের
সীমান্ত খুলে দেয়ার কথা। এ সময়ে এসব দেশে প্রবেশের ভিসা
বৈধ হবে ৫৪টি দেশের জন্য। সেই দেশগুলোর তালিকায় নেই
বাংলাদেশ। এতে বলা হয়, শেনজেন বলতে বোঝানো হয় ইউরোপীয়
ইউনিয়নের পাসপোর্ট-ফ্রি জোন। এর অধীনে রয়েছে ইউরোপীয়
ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশ।
সেখানে যেকোনো ব্যক্তিকে শেনজেনভুক্ত এলাকার যেকোনো
সদস্যদেশে সফর করতে দেয়া হয়। এই শেনজেন জোনে কোনো
সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে সেখানে প্রবেশের বিষয়ে
সর্বশেষ সরকারি বিবৃতি এ সপ্তাহে পরের দিকে ঘোষণা করার
কথা। ধারণা করা হচ্ছে, তা ১লা জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হবে।
এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিটি
দেশের মহামারি পরিস্থিতি এবং করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে
গৃহীত পদক্ষেপ, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা, বিধিনিষেধ
প্রত্যাহার হয়েছে কিনা- এসব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এই
দেশগুলোর তালিকা আপডেট করা হবে। ওদিকে ১১ই জুন এ বিষয়ক
কমিশন শেনজেন সীমান্ত ১৫ই জুন খুলে দেয়ার বিষয়ে তাদের
সুপারিশ উত্থাপন করে, যাতে ইউরোপিয়ানরা অবাধে
সীমান্তের পরোয়া না করেই মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারেন,
যেমনটা তারা করতেন মহামারির আগে। কমিশন আরো সুপারিশ করে
যে, আগামী ১লা জুলাই থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৩০টি দেশের
নাগরিকদের প্রবেশ করতে দেয়ার শুরু করা উচিত সদস্য
দেশগুলোর।
শেনজেনভুক্ত দেশগুলো হলো অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক
প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড,
ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি,
লাতভিয়া, লিচেটেনস্টেইন, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ,
মালটা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল,
স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন ও
সুইজারল্যান্ড।
অক্সফোর্ডের
পরীক্ষা শেষ করলেন মালালা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করেছেন
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মানবাধিকারকর্মী মালালা
ইউসুফজাই। পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরে তিনি আনন্দ ও
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এক টুইটে তিনি বলেছেন, সামনে
কি করবো জানি না। তবে এখন সঙ্গী হবে নেটফ্লিক্স,
পড়াশোনা আর ঘুম। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
পাকিস্তানে স্কুলে পড়ার সময় তালেবান জঙ্গিরা তার মাথায়
গুলি করে। জীবনমৃত্যুর লড়াইয়ে তিনি বেঁচে যান। তিনি
নারী শিক্ষার একজন কর্মী হওয়ায় তার ওপর হামলা চালায়
তালেবানরা।
মাথায়, কাঁধে ও গলায় গুলি করে তার। কট্টরপন্থিদের অধীনে
জীবন কেমন সে সম্পর্কে একটি ডায়েরি লিখার কারণে তার
ওপর ওই হামলা হয়। তারপর জীবনের সঙ্গে লড়াই করে তিনি
ঠাঁই পান লন্ডনে। সেখানে পড়াশোনা করেন। বর্তমানে তার
বয়স ২২ বছর। তিনি অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করেছেন রাজনীতি,
দর্শন ও অর্থনীতি নিয়ে।
২০১৪ সালে তিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে শান্তিতে নোবেল
পুরস্কার পান। তিনিই এ যাবত সবচেয়ে কম বয়সী নোবেল বিজয়ী।
এর তিন বছর পর তিনি অক্সফোর্ডের লেডি মার্গারেট হলে
পড়াশোনার প্রস্তাব গ্রহণ করেন। সেখানে পড়াশোনা ও ডিগ্রি
সম্পন্ন করার খবর দিয়ে তিনি নিজেই দুটি ছবি টুইট
করেছেন। এর একটিতে তাকে দেখা যায় পরিবারের সদস্যদের
নিয়ে সামনে কেক রেখে এই সফলতাকে উদযাপন করছেন। অন্যটিতে
তাকে ইউনিভার্সিটিতে দেখা যায়। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা
শেষ হলে সেখানে খাদ্য ও ফুল দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর পুরো
শরীর মাখিয়ে দেয়া হয়। সেই কাজটিই করা হয়েছে।
সৌদি মানবাধিকার কমিশনে নারী-পুরুষ সমান!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সৌদি আরবের মানবাধিকার সংস্থা সৌদি হিউম্যান রাইটস
কমিশনে (এইচআরসি) নিয়োগ পেলেন ১৩ জন নারী। বাদশাহ
সালমানের জারি করা এক ফরমানে এ তথ্য জানানো হয়। দেশটিতে
নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতেই বাদশাহ এই পদক্ষেপ
নিয়েছেন বলে জানিয়েছে আরব নিউজ।
এইচআরসির প্রধান ডক্টর আওয়াদ বিন সালেহ আল-আওয়াদ বলেন,
সংস্থায় মোট সদস্য সংখ্যা ২৬ জন। এদের মধ্যে ১৩ জন নারী
সদস্য নিয়োগ দিয়েছেন বাদশাহ সালমান। সৌদি আরবের
বিভিন্ন খাতে নারীর ক্ষমতায়নকে কার্যকর করতেই তিনি এই
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মাধ্যমে সংস্থাটিতে নারী ও
পুরুষের সংখ্যা সমান হলো।
আরব নিউজ বলছে, এইচআরসিতে একজন সদস্যের মেয়াদ চার বছর
থাকে। নতুন সদস্য নিয়োগ দেয়ায় বাদশাহ সামলান ও সৌদি
ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন
আল-আওয়াদ।
তিনি বলেন, আমাদের এই সংস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব
আছে বাদশাহ সালমানের। এইচআরসিকে কার্যকর করতে তার
অবদান অতুলনীয়। সৌদি আরবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়
এই প্রতিষ্ঠান যতদিন কাজ করে যাবে ততোদিন বাদশাহ
সালমানের কথা মানুষ মনে করবে।
ছি:! আমি কী বাঙ্গালী!
মোঃ দ্বীন ইসলাম হাওলাদার
আমি বাঙ্গালী।
বাংলা আমার মাতৃভাষা। এ দেশটাকে স্বাধীন করতে
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন আপামর জনতা। তাদের তাজা
রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়। বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে
আসেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটাকে পূণর্গঠনের কাজ শুরু
করলেন, বিদেশ থেকে সাহায্য আসলো ৭ কোটি বাঙ্গালির জন্য
৭ কোটি কম্বল। কিন্তু সে কম্বল সবাই পায়নি। তাই অনেক
কষ্ট পেয়েই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন. “৭ কোটি বাঙ্গালীর ৭
কোটি কম্বল; আমারটি কই? সবাই পেয়েছে সব, আমি পেয়েছি
চোরের খনি। ”বাস্তবতাও তাই- এ দেশের চৌকিদার থেকে শুরু
করে পদস্থ কর্মকর্তা পর্যন্ত অধিকাংশ দুর্নীতির সাথে
জড়িত। সৎ কর্মকর্তা কর্মচারীদের সংখ্যা শতাংশের হারে
পাওয়া যাবে না। অবশ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও মহান সংসদে
বলেছেন, “আমি ছাড়া সবাইকে টাকা দিয়ে কেনা যায়।”
চৌকিদার টাকার বিনিময়ে আসামীদের পালাতে সাহায্য করেন।
অর্থের বিনিময়ে ইউপিতে নানা তথ্য প্রদানে অসঙ্গতি
রাখেন। ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যান এলাকায় বয়স্ক ভাতা,
বিধবা ভাতা, কাবিখা, ঠএঋ কার্ড, ত্রাণ সামগ্রী ইত্যাদি
প্রদানের তালিকা প্রণয়নে অনেক অর্থ আদায় করেন ও
অধিকাংশ সামগ্রী গোপনে বিক্রি করেন। ঠিকাদারেরা সড়কের
কাজ শুরু করলে, এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার
আগেই তাতে গর্তের সৃষ্টি হয়, ভবন আর ব্রীজ কালর্ভাটে
কয়েক বছর যেতে না যেতেই ফাটল, খসে পরে প্লাষ্টার, রডের
বদলে কঞ্চি, দুই এক বছরেই মেরামতের প্রয়োজন। কখনো বা
কাগজে কলমেই কাজ শেষ, পুরো টাকা লোপাট। ঠিকাদারকে সকল
অফিসে ও স্থানীয় নেতাদেরকে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হয়।
যারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাথে জড়িত তারা বিশাল
অংকের কর ফাঁকি দিয়ে থাকেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
পণ্যদ্রব্যে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ উচ্চমাত্রার রাসায়নিক
পদার্থ ব্যবহার করেন পণ্যদ্রব্য বেশিদিন সংরক্ষণ ও
আকর্ষণীয় করার জন্য। বড় বড় কোম্পানীগুলো যে মালামাল
বিএসটিআইতে পাঠান পরীক্ষার জন্য সেগুলো ভালোভাবে ও
নির্ভেজালভাবে তৈরি করেন এবং মোটা অংকের উৎকোচের
মাধ্যমে অনুমতি পেয়ে যান। দেশের ক্ষমতাধর রাজনীতিকরাই
জাতীয় ও আন্তজার্তিক চোরাকারবারি পরিচালনা করে থাকেন।
ক্ষমতাধর মন্ত্রী/এমপি ও প্রভাবশালী রাজনীতিকরা তাদের
পোষ্য সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে মদ, গাঁজা, হিরোইন,
ইয়াবাসহ সকল অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে থাকেন। তারাই জন্ম
দিয়েছেন নয়ন বন্ড, কালা জাহাঙ্গীর, জি.কে শামীম,
খালেদসহ সকল সন্ত্রাসীদের। ক্ষমতাসীন দলের সিকি নেতা,
পাতি নেতা, রাঘব বোয়াল সবাই আজ শত শত; হাজার-হাজার কোটি
টাকার মালিক। তারা দখল করে চলছে সরকারি ও সাধারণ
জনগণের জমি। অনেক মুক্তিযোদ্ধারা রাজনৈতিক কারণে অসহায়
অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে
স্বীকৃতিও পাননি। পাচ্ছেন না কোন সরকারি/বেসরকারি
সাহায্য। আমার বাবা মোঃ আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার,
পিতা-মৃত নূর মোহাম্মদ হাওলাদার, গ্রাম-ঢোলা,
ডাকঘর-হানুয়া, উপজেলা-বাকেরগঞ্জ, জেলা-বরিশাল,
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি বরিশাল সরকারি সৈয়দ
হাতেম আলী কলেজের ডিগ্রীর ছাত্র ছিলেন এবং বাবুগঞ্জে
মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করেছেন। বাবার কাছে
মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছি। আমার শ্বশুর আবদুল
মজিদ গাজী, পিতা-মৃত হাসেম গাজী, গ্রাম-মাঝপাড়া,
ডাকঘর-দ্বিপাশা, উপজেলা-বাউফল, জেলা-পটুয়াখালী। তিনিও
একজন মুক্তিযোদ্ধা, তার সনদও ছিলো। ট্রাংঙ্ক সহ চোরে
নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা কেহই আর মুক্তিযোদ্ধাদের
তালিকায় স্থান পাননি, পাননি কোন সরকারি সহযোগীতা। অথচ
অনেক অমুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতার জোরে
তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সকল
সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। তাদের অথর্ব সন্তানরাও
বিভিন্ন সরকারি চাকুরীতে যোগদান করছে। আর অনেক
সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধারাও অর্থাভাবে অসহায় জীবনযাপন
করছে।
যারা যতো বেশি তোষামুদে; তারা ততো বেশি লাভবান হচ্ছেন।
কিন্তু সৎপথে চলতে গেলে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে অনেক
ক্ষেত্রেই জীবন বিপন্ন হয়। এ কারণেই হয়তোবা সাবেক
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, “যদি তুমি তেল মারো,
তবে তুমি বেশ; আর যদি তুমি সত্য বলো, তবে তুমি শেষ।”
জনগণের বন্ধু বলা হয় পুলিশ প্রশাসনকে, তারা যে কতটা
দুর্নীতির সাথে জড়িত তা জগণের কারো জানার বাকি নাই। মদ,
গাজা, হিরোইন, ইয়াবা, অস্ত্র সহ সকল অবৈধ কারবারের
সাথেই পুলিশ বাহিনীর সখ্যতা দেখা যায়। এমপি, মন্ত্রী,
পদস্থ কর্মকর্তা, কেউই দুর্নীতি মুক্ত হতে পারছেন না।
হয়তো এজন্যই বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলন, ”৭
কোটি বাঙালির হে মুদ্ধ জননী; রেখেছো বাঙালী করে মানুষ
করো্িরন।” যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত তাদের অধিকাংশই
নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলে দাবি করছেন।
তাহলে বঙ্গবন্ধুও কি তবে তাদের মতোই ....... ছিলেন ?
যিনি এ স্বাধীন জাতির প্রতিষ্ঠাতা। তারা তাঁকেও
কলংঙ্কিত করছে। সত্যিই আমরা এ দেশের নাগরিক! ছি! আমি
বাঙ্গালী। কেন আমাদের চরিত্রের এত স্খলন? আমরা কি কোনো
দিন মানুষ হবো না? নিজের প্রতি, এ জাতির প্রতি আমার বড়
ঘৃণা হয়।
প্রভাষক- দুমকি ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসা, দুমকি,
পটুয়াখালী।
পাকিস্তানের
ইতিহাসের প্রথম নারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো
লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদায় উন্নীত হলেন একজন নারী।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি তার রক্ষণশীলতার জন্য বহির্বিশ্বে
পরিচিত। তবে নিগার জোহর নামের ওই লেফটেন্যান্ট জেনারেল
আপন যোগ্যতায় উঠে এলেন এমন উচ্চপদে। এ খবর দিয়েছে সাউথ
এশিয়ান মনিটর। খবরে বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদফতরের (আইএসপিআর) ডিজি মেজর
জেনারেল বাবর ইফতিখার এক টুইট বার্তায় অনন্য এ
ইতিহাসের কথা জানান। লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে
নিগার জোহর পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মেডিক্যাল কোরের
প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার সামলাবেন। এই প্রথম কোনো নারী
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মেডিকেল কোরের প্রধান হলেন।
পাক-আফগান সীমান্তের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের
সোয়াবির বাসিন্দা নিগার।
বর্তমানে তিনি রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক হাসপাতালে
কমান্ড্যান্টের দায়িত্বে রয়েছেন। পাকিস্তান
সেনাবাহিনীর প্রথম মহিলা লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিগারের
জন্ম সেনা পরিবারেই। বাবা কর্নেল কাদির ছিলেন পাক
গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের অফিসার। তার চাচা মেজর
মোহাম্মদ আমিরও পাক সেনা অফিসার ছিলেন। তবে ৩০ বছর আগে
সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা-মা দু’জনেই মারা যান। এরপর
রাওয়ালপিন্ডির প্রেজেন্টেশন কনভেন্ট গার্লস স্কুল থেকে
উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৮৫ সালে আর্মি মেডিক্যাল
কলেজ থেকে ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চিকিৎসক
হিসেবে পাক সেনাবাহিনীতে যোগ দেন নিগার। ২০১৭ সালে
পাকিস্তানের ইতিহাসে তৃতীয় নারী হিসেবে মেজর জেনারেল
পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল
হওয়ার পরেই শুভেচ্ছার বন্যায় ভেসে যাচ্ছেন নিগার জোহর।
রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে আমজনতা সবাই শুভেচ্ছা
জানিয়েছেন ইতিহাস গড়া এই প্রমীলা সেনা অফিসারকে।
প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা
শেহবাজ শরিফ তাকে নিয়ে একটি টুইট করেছেন। এতে তিনি
বলেন, পাকিস্তানের মেয়েদের আদর্শ হয়ে উঠেছেন নিগার
জোহর। দেশের নারীদের ও মেয়েদের জানা উচিৎ ইচ্ছা থাকলেই
সব সম্ভব।
২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করলেন পুতিন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায়
থাকার সুযোগ সম্বলিত ডিক্রিতে সই করেছেন ভাদিমির
পুতিন। সংবিধান সংশোধনের গণভোটে পক্ষে রায় আসার পর
শুক্রবার তিনি স্বাক্ষর করেন। গত বুধবার শেষ হওয়া
গণভোটে সংবিধান সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেয় দেশটির ৭৮
শতাংশ নাগরিক।
নতুন সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে রয়েছে সমকামী বিবাহকে
নিষিদ্ধ ঘোষণা, আন্তর্জাতিক আইনের উপর রাশিয়ার আইনের
আধিপত্য এবং রাশিযান ফেডারেশনের মাধ্যমে
প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদ টানা দু’বার ৬ বছরের জন্য
মেযাদ বৃদ্ধি করা।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলছেন, রাশিয়ার মানুষ জাতিগতভাবে
একটি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের মানুষ নিজেদের
মন থেকে এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল।
প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন ওই গণভোটকে পুতিনের
বিশাল বিজয় হিসেবে উল্লেখ করছেন। এদিকে বিরোধীরা বলছেন,
আজীবনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যই পুতিন এমন ভোটের
আশ্রয় নিয়েছেন।
১ জুলাই ভোটের নির্ধারিত দিন থাকলেও করোনার কারণে আগের
সপ্তাহজুড়ে ম্যারাথন ভোট গ্রহণ করা হয়। এরপর ২ জুলাই
রুশ নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভোটের ফলাফলে জানান, মোট ৬৪
শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন। এরমধ্যে সংবিধান
সংশোধনের পক্ষে ৭৭.৯ ভাগ ভোট পড়েছে। আর বিপক্ষে ভোট
পড়েছে ২১.৩ শতাংশ।
পুতিনের বর্তমান ক্ষমতার মেয়াদ আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত
ছিলো। এ গণভোটের রায়ের ফলে ছয় বছর করে আরও দুই মেয়াদে
ক্ষমতায় থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে পুতিনের। নির্বাচনে জয়ী
হলে আগামী ২০৩৬ সাল পর্যন্ত অনায়াসে ক্ষমতায় থাকছেন ৬৭
বছরের পুতিন। গত ২০ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় রয়েছেন এই
রুশ নেতা।
৩০ সেপ্টেম্বর
পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট (এমআরএ) একটি প্রজ্ঞাপন
জারি করে সব সনদপ্রাপ্ত সব ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ কারণে অর্থনীতির অধিকাংশ খাতই
ক্ষতিগ্রস্ত এবং নেতিবাচক প্রভাব দীর্ঘায়িত হওয়ার
আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে শিল্প, সেবা ও ব্যবসাখাত
তাদের স্বাভাবিক কায্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।
এসব বিষয় বিচেনায় এবং ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের
ব্যবসা-বাণিজ্য তথা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের
ওপর কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব সহনীয় মাত্রায় রাখার
লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা ও ঋণ
শ্রেণিকরণের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সংকটকালীন সময়ে মাইক্রো ফাইন্যান্স
ইনস্টিটিউট কর্তৃক ঋণ গ্রহীতাকে কিস্তি পরিশোধে বাধ্য
করা যাবে না।
তবে কোনো গ্রাহক স্বেচ্ছায় কিস্তি দিতে চাইলে টাকা নিতে
কোনো বাধা থাকবে না। ’
করোনাকালে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে 'ইমিউনিটি পিঠা'
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত
কোন ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি। তবে এর আক্রমন থেকে
বাঁচতে যে পদ্ধতিটি এখন পর্যন্ত স্বীকৃত, তা হলো
ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। এই চিন্তা
থেকেই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ আর নিজেদের গবেষণার মাধ্যমে
যশোরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইডিয়া’র কর্মীরা তৈরি
করেছেন ‘ইমিউনিটি পিঠা’। যে পিঠায় আছে ডুমুর, কালোজিরা,
আদা, অলিভ অয়েল, চিকেন মিটসহ ১২টি ঔষধি মসলা।
আইডিয়া’র প্রধান উপদেষ্টা যশোর সরকারি এমএম কলেজের
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক শাহীন
বলেন, সারা পৃথিবীতেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি
রূপ নিয়েছে। এ অবস্থায় সহজে দেশের মানুষের ইমিউনিটি
কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে আইডিয়ার কর্মীরা চিন্তা
করছিলেন। আমাদের দেশের মানুষের পিঠার প্রতি বড় ধরণের
আকর্ষণ রয়েছে। তাই স্বাদ, গন্ধ অটুট রেখে যদি পিঠার
মধ্যেই ইমিউনিটি বাড়ানোর উপাদানগুলো যোগ করে দেওয়া যায়,
তাহলে খাওয়ার মজার সাথে ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজটাও সহজে
হয়ে যায়। সে চিন্তা থেকেই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিয়ে
তিন ধরণের পিঠা তৈরি করছে আইডিয়া। যার মধ্যে থাকছে
পিঠার অন্যান্য সাধারণ উপকরণের পাশাপাশি ডুমুর,
কালোজিরা, আদা, রসুন, এলাচ, মেথি, লবঙ্গ, গোলমরিচ,
চারুচিনি, আমলকি, তুলসি পাতা, সজিনার পাতা ও এক্সট্রা
ভার্জিন অলিভ ওয়েল। এসব উপাদানগুলো আমাদের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও বহু ধরণের উপকার
করে। প্রতি পিস পিঠার দাম রাখা হচ্ছে মাত্র ২০ টাকা,
যা আইডিয়া যশোরের পিঠা পার্ক থেকে যে কেউ সংগ্রহ করতে
পারবেন। এই পিঠা থেকে আইডিয়া কোন অর্থনৈতিক বেনিফিট
পেলে সেটাও মানুষের কল্যাণেই ব্যয় করা হবে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি)
পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রভাষক শুভাশীষ দাস
শুভ বলেন, প্রাচীনকাল থেকে প্রমাণিত যে নিয়মিত শরীর
চর্চা ও সুষম খাবারের সাথে কিছু মসলা রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আইডিয়ার তৈরি ইমিউনিটি পিঠায় যে উপাদানগুলো ব্যবহার করা
হচ্ছে, সেগুলো খুব সহজেই ইমিউনিটি তৈরির কাজটা করবে।
কার্গো ফ্লাইটে চড়ে ঢাকায় এলেন
বিদেশিনী!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কার্গো ফ্লাইটে করে আসার কথা পণ্যসামগ্রী। পণ্যসামগ্রী
এলো ঠিকই। কিন্তু সঙ্গে এলেন এক বিদেশিনী। ঘটনাটি
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দরে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ডেনমার্কের ওই নাগরিকের
বাংলাদেশে আসার কথা ছিল আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম)
হয়ে কাজ করার জন্য। তিনি একজন মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ।
বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা অনুযায়ী গত মে মাসে
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ভিসাও
নিয়েছিলেন। তিনিসহ চারজন বাংলাদেশে আসবেন এমন কূটনৈতিক
বার্তাও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেবল সেই কার্গো
ফ্লাইটে আসার অনুমতি ছিল না।
জানা গেছে, কার্গো ফ্লাইটে করে কিভাবে ওই ব্যক্তি
বাংলাদেশে আসলেন এবং কাতার এয়ারওয়েজই বা কেন তাঁকে নিয়ে
এলো তা নিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কার্গো
ফ্লাইটে করে এভাবে যাত্রী পরিবহনের সুযোগ নেই।
গত ২৪ জুন ২০২০ রাতে এই প্রতিবেদন লেখার সময় ওই
ব্যক্তির ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণের কাজ চলছিল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ওই যাত্রীকে ইমিগ্রেশন পার
করে বাংলাদেশে ঢোকার ব্যবস্থা করতে চেষ্টার কমতি ছিল
না। কিন্তু তাঁকে ভোররাতেই ফিরতি ফ্লাইটে বহিষ্কার
করার কথাই বিবেচনা করা হচ্ছিল। কারণ এভাবে আসার কোনো
নিয়ম নেই।
Top
কোভিড আক্রান্তদের
অধিকাংশই রাতে
হাইপারটেনশনে মারা
যাচ্ছেন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন এর
প্রধান জোজেফ কেসেসিওগ্লু গত ১৪ জুন ২০২০ ল্যানসেট
অনলাইনকে এ কথা বলেন। সংস্থার গবেষণা রিপোর্টে জানানো
হয়, ইউরোপের ৯টি দেশে মারা যাওয়া রোগীদের কেসস্টাডি করে
এ গবেষণা চালানো হয়।
তিনি বলেন, মৃত্যুভীতিই একটা শাক্তিশালী ভাইরাস। এই
ভীতি কাজ করলে যে কোনো সুস্থ মানুষেরই নিউরো-মটর
ব্রেকডাউন করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ
রোগীই কোভিডকে ভয়াবহ রুপে দেখেছেন এবং দেখছেন। ফলে
মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। হার্ড ইমিউন সিস্টেম ভেঙে পড়ে।
শ্বাসকষ্ট না হলেও শ্বাসকষ্টের ভীতি কাজ করে এবং এ ভীতি
থেকে শ্বাসযন্ত্রের ক্রিয়া অকেজো হয়ে পড়ে।
গবেষণা রিপোর্টে দেখা গেছে ইতালিতে হাইপারটেনশনেই মারা
গেছেন শতকরা ৬৮জন রোগী।
এরপরই রয়েছে বৃটেনের নাম। এদেশে হাইপারটেনশনে মারা
গেছেন গড়ে ৫৩জন রোগী। রোড়ীরা বেশিরভাগই মারা গেছেন রাতে।
সংস্থাটি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে পুরো মে মাস এসব
দেশে গবেষণা করেছে। গত ১২ জুন ২০২০ তারা তাদের
অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে গবেষণার ফলাফল জানায়।
বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান
খান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলা একাডেমির সভাপতি
হিসেবে নিয়োগ পেলেন বিশিষ্ট ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান
খান। গতকাল দুপুরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক
আদেশ জারি করে। তাকে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক
নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি টানা ১০ বছর বাংলা
একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া
জাতীয় জাদুঘর ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের
দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এর আগে ২০১২ সাল পর্যন্ত
বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ড.
আনিসুজ্জামান। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে
তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান ড.
আনিসুজ্জামান। গত ১৪ মে তার মৃত্যুর পর এই পদটি শূন্য
হয়ে পড়ে।
চালকহীন ফাইভ জি প্রযুক্তির গাড়ি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ফাইভ জি প্রযুক্তি
সুবিধার চালকহীন গাড়ির পরীক্ষা চালিয়েছে চীনা প্রযুক্তি
প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।
হুয়াওয়ের দাবি, তাদের এ ধরনের প্রযুক্তি জটিল পরিবেশে
কার্যক্রম চালাতে সক্ষম বলে লজিস্টিক সেবায় মানুষের
বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
হুয়াওয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চালকবিহীন এ গাড়ি নিরাপদ,
সহজে ব্যবহারযোগ্য, সাশ্রয়ী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের
কাজের চাপ কমিয়ে রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিতেও বেশ
কার্যকর। জাতীয় স্বাস্থ্য খাতকে স্মার্ট হাসপাতালে রূপ
দেয়ার জন্য ক্রমান্বয়ে ফাইভ জি প্রযুক্তি ব্যবহার করা
হবে।
৩০ কোটি ভ্যাকসিনের
আগাম অর্ডার দিল যেসকল দেশি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সম্ভাব্য করোনা ভ্যাকসিনের ৩০ কোটি ডোজের আগাম ফরমায়েশ
দিয়েছে ইউরোপের চার দেশ— জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও
নেদারল্যান্ডস। সুইডিশ-ব্রিটিশ কোম্পানি
অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার
পর্যায়েই রয়েছে, তবে বেশ আশা জাগিয়েছে এটি।
জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার
সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে জানায়, তারাসহ চারটি দেশ
কোম্পানিটির সঙ্গে ৩০০ মিলিয়নের (৩০ কোটি) বেশি ডোজের
প্রি-অর্ডার (আগাম ফরমায়েশ) চুক্তি করেছে।
ইউরোপের অন্যান্য দেশ এ চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে
বলেও জানানো হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ভ্যাকসিনটি এখন ৪২ হাজার
মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা শুরু করেছে।
২০২০ সালের শেষ নাগাদ এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চূড়ান্ত হবে
বলে আশা করা হচ্ছে।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনস স্প্যান বলেন,
বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক দূর এগোলেও
ইউরোপ তেমন কিছু করতে পারেনি।
এদিকে, ইউরোপবাসীর জন্য অচিরেই ৪০ কোটি ভ্যাকসিন মিলবে
বলে ফেসবুক পোস্টে জানান ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রবার্ট স্পেরেঞ্জা।
সৌদি প্রবাসিদের জন্য দারুন সুখবর
দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সৌদিআরব থেকে দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশি শ্রমিকদের
পর্যায়ক্রমে দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের
বিষয়ে সৌদিআরব সম্মতি প্রকাশ করেছে।
১৪ জুন ২০২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল
মোমেনের সাথে ফোনে আলাপকালে সৌদিআরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে সহমত
প্রকাশ করেন।
কো’য়া’রেন্টাইন সুবিধা নিশ্চিত করতে সৌদিআরব থেকে দেশে
ফিরতে আগ্রহী প্রবাসী শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে দেশে আনা
হবে। তবে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার
ক্ষেত্রে আ’ট’কে পড়া উমরা হজ্জ পালনকারী, সেদেশে
অধ্যয়নরত ছাত্র এবং নারী গৃহকর্মীদের অগ্রধিকার দেওয়া
হবে।
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সৌদি আরবের কৃষি উৎপাদন
বৃদ্ধি ও মৎস্য চাষে বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিকদের কাজে
লাগাতে অনেুরোধ করেন ড. মোমেন। ক’রো’না পরবর্তী
পরিস্থিতিতে কৃষি উৎপাদনে সৌদি আরবের কোম্পানি সেদেশের
বাইরে অন্য দেশেও বাংলাদেশের দক্ষ কৃষি শ্রমিকদের কাজে
লাগিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে বলে
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
এাছাড়া তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশিকে
সৌদি আরব কাজে লাগাতে পারবে বলে বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিক
এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষদের কাজে লাগানোর বিষয়ে
ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ উৎসাহ প্রকাশ করেন।
এসময় সৌদিআরবকে বাংলাদেশ থেকে হালাল মাংস আমদানির
আহ্বান জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বিষয়ে
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের যৌথ প্রকল্প স্থাপন করা যেতে
পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে উন্নত সবজি
পিপিই আমদানির সুযোগ আছে বলেও জানান ড. মোমেন।
ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোর ওপর ক’রো’না মহা’মা’রির প্রভাব
মো’কা’বিলায় করণীয় নির্ধারণ, অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জীবন ও
জীবিকা রক্ষা এবং কো’ভি’ড-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি
ফান্ড গঠনের বিষয়ে আলোচনার জন্য ওআইসি’র
পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বিশেষ ভার্চুয়াল সভা আয়োজনের
বিষয়ে সৌদি আরবের সহায়তা চান ড. মোমেন।
এ সভা আয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আশ্বস্ত
করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রবাসী শ্রমিকরা
কর্মহীন হলে তাদের প্রশিক্ষণসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে
কো’ভি’ড-১৯ রেসপন্স এন্ড রিকভারি ফান্ড অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে এসময় উল্লেখ করেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ডময়ানমার থেকে জোরপূর্বক রাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা
জনগোষ্ঠীর দ্রুত স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রেও সৌদি
আরবের সহযোগিতা চান ড. মোমেন। এ বিষয়ে সৌদি আরবের
সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান ফয়সাল বিন ফারহান আল
সৌদ।
এসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা বিষয়ে সৌদি
আরবের অব্যাহত সাহায্যের জন্য সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ
জানান। এছাড়া ড. মোমেন সৌদিআরবে ক’রো’না আ’ক্রা’ন্ত
বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের সার্বিক
সহযোগিতার জন্যও সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
চিকিৎসা নৈরাজ্যে নিরাপত্তাকে
অগ্রাধিকার দিন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা
বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে। অবস্থা
এমনই শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, সাধারণ সর্দি-জ্বর বা
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালের পর হাসপাতাল
ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। আতঙ্কের কারণে বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকরা তাদের চেম্বারে বসেন না বললেই চলে। খুলনা ও
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে
চিকিৎসাধীন তিন রোগীর মৃত্যু- আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
যদিও চিকিৎসকরা বলেছেন তাদের করোনা ইউনিটে চিকিৎসা
দেওয়া হলেও কেউ ওই ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন না।
চিকিৎসকরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে রোগী দেখা
কার্যত বন্ধ রাখায় দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে
পড়েছে। বিশেষ করে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশিতে কেউ
আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসায় কেউ এগিয়ে আসছে না। দেশে
এযাবৎ যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে
চিকিৎসক ও নার্সরাও রয়েছেন। বিভিন্ন দেশে এই মরণঘাতী
ভাইরাসে যারা প্রাণ হারিয়েছে তার মধ্যে চিকিৎসক ও
চিকিৎসা কর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের চিকিৎসকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা
সামগ্রীর ব্যবস্থা না থাকায় তাদের মধ্যে আতঙ্ক
সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। করোনাভাইরাস চিকিৎসায়
চিকিৎসকদের অনীহা থাকায় তার প্রতিক্রিয়া পড়েছে সাধারণ
রোগীদের ওপর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ধারণা কারোর
মধ্যে দানা বেঁধে উঠলে হাসপাতাল থেকে পালানোর প্রবণতা
মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা কার্যকর
রাখতে করোনাভাইরাস আতঙ্কের অবসান ঘটানো দরকার। এ
আতঙ্কের অবসানে সবকিছুর আগে চিকিৎসকসহ চিকিৎসা
কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের জোগান নিশ্চিত
করতে হবে। দেশের স্বাস্থ্য খাত এযাবৎ সে সক্ষমতা দেখাতে
ব্যর্থ হয়েছে। এ ব্যাপারে আর সময় ক্ষেপণ না করে এখনই
চিকিৎসা কর্মীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে করণীয়
পদক্ষেপ নিতে হবে।
নারী-শিশু নির্যাতন যত
বীভৎসতা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে ২০১৯-এর বছরজুড়েই
একের পর এক বীভৎস ঘটনা ঘটছে। একদিকে রাজধানীর বাড্ডায়
ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেণু নামের মহিলাকে
গণপিটুনি দিয়ে হত্যা, অন্যদিকে সিরাজগঞ্জের দিরাইয়ের
শিশু তুহিনকে বীভৎসভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখার
মতো ঘটনাও ঘটে। আবার ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী
নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যার
ঘটনাটিও বছরজুড়ে তীব্র আলোচনা সৃষ্টি করে। বিদায়ী বছরে
যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্ততার অনেকগুলো ঘটনা ঘটে। আবার
অসংখ্য শিশুকে এ বছর ধর্ষণ শেষে নির্মমভাবে হত্যা করা
হয়। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, চলতি বছরে
শিশু ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি ও নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার
বিষয়টি সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় বিচারহীনতার
সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না এলে আগামী দিনে নারী-শিশুর
প্রতি বীভৎসতা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়েও তারা
উদ্বিগ্ন। আইন ও সালিস কেন্দ্রের তথ্যে, চলতি বছরের
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ১ হাজার
৩৫১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ৬৬ জনকে ধর্ষণ
শেষে হত্যা করা হয়। আর ধর্ষণের শিকার ১০ জন নারী
আত্মহত্যা করেন। এ ছাড়াও এ সময় যৌন হয়রানির শিকার হন
২৩৬ জন নারী। এর মধ্যে আত্মহত্যা করেন ১৫ জন।
উত্ত্যক্ততায় বাধা দেওয়ায় ১৫ জনকে হত্যা করা হয়। মোট
উত্ত্যক্ততার শিকার হন ২২৭ জন আর উত্ত্যক্তকারীর আঘাতে
আহত হন ১৫ জন নারী। বিদায়ী বছরে স্বামীর নির্যাতনে
মৃত্যু হয় ১৯৫ জনের। শ্বশুরবাড়ির লোকদের নির্যাতনে
মৃত্যু হয় ৪৩ জনের। এ সময় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির
নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন ৫৪ জন নারী।
বছরের প্রথম ১১ মাসে যৌতুকের কারণে শারীরিকভাবে
নির্যাতনের শিকার হন ৫৪ জন। যৌতুকের কারণে শারীরিকভাবে
নির্যাতনের শিকার হন ৮৮ জন। আর এ জন্য ৮৪টি মামলা
দায়ের করা হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর
পর্যন্ত সময়ে ১৬ জন নারী অ্যাসিড হামলার শিকার হন।
মূলত দাম্পত্য কলহ, জমি নিয়ে বিরোধ, সম্পর্ক করতে
অস্বীকার, পূর্ব শত্রুতা ও যৌতুকের জন্য এই অ্যাসিড
হামলা করা হয়। নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম
হচ্ছে রাজধানীর তাসলিমা বেগম রেণু (৪০) হত্যাকান্ড ।
চলতি বছরের ২০ জুলাই সন্তানকে স্কুলে ভর্তির জন্য
বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোঁজ নিতে গেলে
ছেলেধরা সন্দেহে রেণুকে গণপিটুনি দেওয়া হলে হাসপাতালে
নেওয়ার পথে রেণু মৃত্যুবরণ করেন।
ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি তার
মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করায়
অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা তার অনুসারীদের নুসরাতকে হত্যার
প্ররোচনা দিয়ে নির্দেশনা দেন। এরপর ৬ এপ্রিল সকালে
কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের সহপাঠীসহ কয়েকজন
হাত-পা বেঁধে নুসরাতকে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর আহত
নুসরাত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন : বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসের প্রতিবেদন বলছে,
এ সময়ে মোট ৯৫৯ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। আর ধর্ষণ
শেষে ৪২ শিশুকে হত্যা করা হয়। হারিয়ে যাওয়ার পর ৬৪টি
শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া আইন ও সালিস
কেন্দ্রের ১১ মাসের প্রতিবেদন বলছে, এ সময় মোট ৯টি শিশু
গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার এবং নির্যাতনের কারণে মৃত্যু
১০ জন শিশুর। শিক্ষকের কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়
২১ জন মেয়ে শিশু আর ৩৫টি ছেলে শিশু যৌন নির্যাতনের
শিকার হয়। ১১ মাসে মোট ৪৭ শিশু উত্ত্যক্ততার শিকার হয়।
আর ১০ শিশু অ্যাসিড হামলার শিকার হয়। ধর্ষণ শেষে
আত্মহত্যা করে ৯ শিশু। শারীরিক নির্যাতনের কারণে ৮৫
শিশুর মৃত্যু হয়। শিশু হত্যাকা গুলোর মধ্যে চলতি বছরের
আলোচিত ঘটনা হচ্ছে পাঁচ বছরের শিশু তুহিন হত্যাকা ।
পারিবারিক বিরোধের কারনে এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে
তুহিনের বাবা আবদুল বাসির, শিশুটির চাচা ও চাচাত
ভাইয়েরা এই হত্যাকা ঘটান। গত ১৩ অক্টোবর ঘুমন্ত
অবস্থায় শিশু তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে
তার বাবা। এরপর বাবার কোলেই ঘুমন্ত অবস্থায় তুহিনকে
ছুরি দিয়ে গলা কেটে খুন করে তার চাচা নাসির উদ্দিন।
হত্যাকারীরা শুধু খুন করেই থেমে থাকেনি হত্যার পর
শিশুটির মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তখন তার পেটে দুটি
ছুরি গাঁথা ছিল এবং শিশুটির কান ও জননাঙ্গ কাটা ছিল।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী
অ্যাডভোকেট এলিনা খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিশু
নির্যাতনের ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনা অতীতের যে কোনো
সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আধুনিক যুগে আইয়্যামে
জাহিলিয়াত যুগের মতো নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাটিও
নিন্দনীয়। মূলত আগের ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ায় নারী ও
শিশু নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনে রাখতে হবে
পরিবারের নারী-শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে
একটি পরিবারের নিরাপত্তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
ধনীর চেয়ে দরিদ্রের গড় আয়ু ১৯ বছর
কম
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
উচ্চ আয়ের মানুষের তুলনায় ১৯ বছর কম বাঁচে নিম্ন আয়ের
মানুষ। একটি শিশু নিম্ন আয়ের পরিবারে জন্ম নিলে তার গড়
আয়ু হয় ৫৯ বছর। আর উচ্চ আয়ের পরিবারে জন্ম নিলে গড় আয়ু
হয় ৭৮ বছর।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত সর্বশেষ
(২০১৯ সালের) মানব উন্নয়ন রিপোর্টের সার-সংক্ষেপে এ
তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান সময়ে
মানুষের জীবনমানের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ক্ষুধা,
বুভুক্ষা, দারিদ্র্য ও ব্যাধি থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে
বিশ্বের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ন্যূনতম জীবনমানের
ঊর্ধ্বে উঠতে পেরেছে। শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে।
তার পরও জীবন-মৃত্যু, জ্ঞান-সুযোগ এবং জীবন-পরিবর্তনীয়
প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অসমতা থাকায় উচ্চ ও নিম্ন আয়ের
মানুষের গড় আয়ুর বিশাল ফারাক রয়েছে। আর এ পার্থক্য এখনো
১৯ বছর। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিম্ন ও উচ্চ মানব উন্নয়ন
সূচকের দেশগুলোর মধ্যে প্রতি ধাপ বয়সেই প্রত্যাশিত
আয়ুর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৭০ বছর বয়স
মাত্রায় প্রত্যাশিত গড় আয়ুর ফারাক প্রায় ৫ বছর এবং যারা
পেছনে পড়ে আছে তাদের মধ্যে ৬০ কোটি মানুষ চরম আয়
দারিদ্র্যে বাস করে। বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক পরিমাপ
করলে তা এক লাফে ১৩০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়ায়। ৫৪ লাখ শিশু
৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে না। টিকাদান ও ব্যয়বহুল
চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের দরিদ্রতম
দেশগুলোর দরিদ্রতম গৃহাঙ্গনেই শিশুমৃত্যুর হার বেশি।
নারী ও শিশু সংবাদ
করোনায় পরিবার পেল বন্দি শিশুরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মাদক মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয় ১০ বছরের
রোহিঙ্গা শিশুটি। ঠাঁই হয় টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে।
বছরখানেক পর সম্প্রতি জামিন পায় সে। পরে তাকে
কক্সবাজারে পরিবারের হাতে তুলে দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর।
এ শিশুটিই শুধু নয়, তার মতো ৫৮৯টি শিশু গত ১২ মে থেকে
২ জুলাই দেশের বিভিন্ন শিশু আদালত থেকে জামিন পেয়েছে।
এর মধ্যে ৫৩টি মেয়েশিশু রয়েছে। তারা গাজীপুরের টঙ্গী,
কোনাবাড়ী ও যশোরের পুলেরহাটের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে
ছিল। এই তথ্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের।
করোনাকালে জামিন পাওয়া এসব শিশুর মধ্যে ৫৮৩টিকে শিশু
উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে মুক্তি দিয়ে নিজ নিজ অভিভাবকের
হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ২৬ জনের অভিভাবক উন্নয়ন
কেন্দ্রে না আসায় তাদের ইউনিসেফের সহযোগিতায় নিজেদের
বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
তবে বন্দিদশা থেকে এই শিশুদের মুক্তি পাওয়ার পেছনে
তাদের অভিভাবকদের ভূমিকা নেই। আপিল বিভাগের বিচারপতি
মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের
শিশুবিষয়ক বিশেষ কমিটির নির্দেশনা এবং শিশু আদালত ও
সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমন্বয়ে তাদের জামিনে মুক্তির
ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা
করার চিন্তা থেকেই এসব শিশুকে মুক্তির পদক্ষেপ নেওয়া
হয়।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের
বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান কালের কণ্ঠকে
বলেন, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিশেষ
নির্দেশনায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি
মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন শিশুবিষয়ক কমিটি
শিশুদের জামিনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে যেসব শিশু
জামিন পেয়েছে, তাদের বিষয়ে সময়ে সময়ে প্রধান বিচারপতিকে
অবহিত করা হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রতিষ্ঠান-২) এম এম
মাহমুদুল্লাহ জানান, করোনাভাইরাসের কারণে দেশে ২৬
মার্চ থেকে সারা দেশে নিয়মিত আদালত বন্ধ হয়ে যায়। তবে
ভার্চুয়াল আদালত চালু হয় ১১ মে। এর পরদিন ১২ মে থেকে
শিশুদের জামিন দেওয়া শুরু হয়।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের শিশুর সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ শাবনাজ
জাহেরীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ৬০০ শিশুর ধারণক্ষমতা রয়েছে
এ তিনটি কেন্দ্রের। তবে করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে
নিয়মিত আদালত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিশুদের জামিন স্থগিত হয়ে
যায়। ফলে ১০-১২ দিনের মধ্যে কেন্দ্রে শিশুর সংখ্যা
দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ অবস্থায় কেন্দ্রগুলোতে
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশু রাখা কঠিন হয়ে ওঠে। এ
প্রেক্ষাপটে ইউনিসেফ শিশুদের জামিনের জন্য পদক্ষেপ নেয়
বলে জানান তিনি। শাবনাজ জাহেরীন জানান, শিশুদের জামিন
দেওয়ার বিষয়টি চলমান রয়েছে।
বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় আটক শিশুদের শিশু উন্নয়ন
কেন্দ্রে রাখা হয়, যা আসলে সংশোধনাগার। কোমলমতি শিশুরা
কারাগারে বড়দের সঙ্গে মিশে পেশাদার অপরাধী হয়ে না ওঠে,
সে জন্য এই ব্যবস্থা।
বাল্যবিয়ে আটকে দিয়ে বর-কনের
বাবাকে জরিমানা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পাবনার চাটমোহরে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীর
বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে
উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় বরের বাবা মতিউর রহমানকে ২০ হাজার টাকা জ’রি’মানা
অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কা’রা’দণ্ড এবং কনের বাবাকে
৩ হাজার জরিমানা প্রদানের আদেশ দেন উপজেলা সহকারী
কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইকতেখারুল
ইসলাম।
জানা গেছে, শুক্রবার উপজেলার ছাইকোলা গ্রামের মুকুল
প্রমাণিকের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রীর সাথে
পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার মতিউর
রহমানের ছেলে শফিউজ্জামান (৩৩) এর বিয়ের দিন ধার্য ছিল।
মেয়ের বাড়িতে যথা নিয়মে বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন
হলে সন্ধ্যায় বরযাত্রী নিয়ে হাজির হয় ছেলের পরিবার।
এমন সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে
মেয়ের বাড়িতে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সসহ হাজির হন নির্বাহী
হাকিম।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ছেলের
বাবাকে ২০ হাজার টাকা ও কনের বাবাকে ৩ হাজার টাকা
জরিমানা করা হয়।প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের
বিয়ে দেবে না মর্মে কনের বাবার নিকট থেকে মুচলেকা নেওয়া
হয়। পরে জ’রি’মানার টাকা প্রদান করে মুক্ত হন বর ও
কনের বাবা।
শিশুদের
সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলুন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে
তোলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, জাতির আগামী দিনের কর্ণধার আজকের
শিশু-কিশোররা। তাদের সুনাগরিকের গুণাবলী অর্জন করে
দেশপ্রেমিক ও চরিত্রবান, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক
ও সংস্কৃতিবান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে আমাদের। সম্প্রতি
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয়
নাট্যশালায় জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের
দুদিনব্যাপী ‘জাতীয় সম্মেলন-২০১৫’ এর উদ্বোধনকালে তিনি
এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেনÑ সোনার বাংলা গড়তে
সোনার মানুষ চাই। সোনার মানুষ বলতে তিনি সৎ, যোগ্য,
চরিত্রবান ও মেধাবীদের বুঝিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের
শিশু-কিশোররা তাদের আচার-আচরণ, চিন্তা-কর্ম ও
জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে
তুলতে হবে বলে আমার আশা।
সূত্র জানা যায়, দুদিনব্যাপী সম্মেলনে সারা দেশের ৪০টি
জেলা ও আঞ্চলিক কমিটি এবং প্রায় ৪০০টি শাখা আসরের ১
হাজার প্রতিনিধি-পর্যবেক্ষক ও ২ হাজার শিশু-কিশোর ও
দেশের বরেণ্য ব্যক্তিরা অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া অংশ
নিচ্ছেন সর্বভারতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘সব পেয়েছি’র
আসরের ছয় সংগঠক।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
সরাইলে বাল্যবিয়ে বন্ধ করলো পুলিশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পুলিশের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে
থেকে রক্ষা পেয়েছে এক কিশোরী। তার নাম শিলা আক্তার
আবুনি। সে সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের
পরমানন্দপুর গ্রামের আলফত আলীর মেয়ে।
২৮ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরযাত্রীরা আসার আগেই বিয়ে
বাড়িতে গিয়ে সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক ও অরুয়াইল পুলিশ
ফাঁড়ির ইনচার্জ বাপন চক্রবর্তী এ বিয়ে বন্ধ করেন।
পুলিশ জানায়, পরমানন্দপুর গ্রামের আলফত আলীর নাবালিকা
মেয়ে শিলা আক্তার আবুনীকে (১৫) তারই বড় বোনের জন্মসনদ
দেখিয়ে একই গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে এনায়েত উল্লাহর
(২৩) সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিল পরিবার। সন্ধ্যায় খবর
পেয়ে পুলিশ সেই বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে এ বাল্যবিয়ে
বন্ধ করে।
বিয়ের কাবিননামা নেই, নারী
নির্যাতনের তদন্ত করতে চায় না পুলিশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ
করেছিলেন এক নারী। কিন্তু পুলিশ পাল্টা তার কাছেই
বিয়ের কাবিননামা চেয়েছে এবং সেই কাগজ না দিলে তদন্ত হবে
না বলেও জানিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভারতের নারায়ণগডে
র অপর্ণা মাইতি ও তার বাপের বাড়ির লোকজন।
চলতি বছরের ১০ অক্টোবর নারায়ণগড় থানায় স্বামী
শ্যামলকুমার মাইতি, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে অভিযোগ
দায়ের করেন অপর্ণা। তার দাবি, ২০০৬ সালে বিয়ের পর
থেকেই যৌতুকের বাকি টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। মেয়ে
হওয়ার পর আরো এক লাখ টাকা দাবি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
অপর্ণার পরিবার তা দিতে পারেনি। তার জেরে শুরু হয়
মারধর। ৯ অক্টোবর মারধর করে তাকে গলা টিপে হত্যার
চেষ্টা করা হয় বলেও অপর্ণার অভিযোগ।
তিনি কোনো রকমে পালিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান। অপর্ণার
বাবা পূর্ণচন্দ্র দাস অধিকারী ও বাডি র অন্যরা অপর্ণাকে
প্রথমে সবং হাসপাতাল এবং পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে
ভর্তি করান। তার পর বাপের বাড়িতেই আছেন অপর্ণা। ১০
বছরের মেয়ে ও সাত বছরের ছেলে অবশ্য রয়েছে শ্বশুরবাড়িতে।
অপর্ণা বলেন, স্বামী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
টাকার জন্যই অত্যাচার চলত।
৯ তারিখ মারধরের পর ১০ অক্টোবর নারায়ণগড থানায় নারী
নির্যাতনের অভিযোগ জানান অপর্ণা। কিন্তু পুলিশ পাল্টা
বিয়ের কাবিন চাইছে এবং তদন্তে গডি মসি করছে বলে
অপর্ণার বাডি র লোকদের অভিযোগ।
অপর্ণার ভাই হরিচরণ দাস অধিকারী বলেন, পুলিশে অভিযোগ
জানালেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বোনের বিয়ের
শংসাপত্র চাইছে পুলিশ। সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়েছে।
শংসাপত্র কোথায় পাব?
পুলিশ বলছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮-এ, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৭,
৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর নিয়ম মেনেই চাওয়া
হয়েছে বিয়ের শংসাপত্র। খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
কাজী সামসুদ্দিন আহমেদও বলেন, নারী নির্যাতনের
অভিযোগের ক্ষেত্রে বিয়ের প্রমাণপত্র তো লাগবেই।
পুলিশের ব্যাখ্যা, অভিযোগকারি বিবাহিত কিনা সেই প্রমাণ
না পেলে তো বধূ নির্যাতনের তদন্ত করা সম্ভব নয়। বিয়ের
শংসাপত্র না থাকলে ভোটার পরিচয়পত্র বা আধার কার্ডেও
কাজ চলতে পারে। সব কিছু খতিয়ে দেখে পুলিশের পক্ষ থেকে
অভিযুক্তকে নোটিস পাঠানো হয়। সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত
সাড়া না দিলে তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেপ্তার করা হয়। এ
ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে এরই মধ্যেই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে
নারায়ণগড থানা পুলিশের দাবি।
জেলের সব বন্দিদের
দেয়া হচ্ছে স্যানিটাইজার, মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাভস
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সবকটি কারাগারে
বন্দিদের করোনামুক্ত রাখতে কারাপ্রশাসন বেশ কিছু
কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রত্যেক বন্দির জন্য তাদের
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি মাস্ক, স্যানিটাইজার,
হ্যান্ডগ্লাভস, স্প্রে মেশিন, থার্মোমিটার ও
হ্যান্ডওয়াশ সরবরাহ করা হচ্ছে।
অধিক সতর্কতা অবলম্বনের কারণে কারাবন্দিদের মধ্যে করোনা
ছড়িয়ে পড়ছে না বলে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ। কঠোর
অনুশাসনের মধ্যে কারাগারে বন্দিদের রাখা হয়েছে। নতুন
কোনো আসামি কারাগারে ঢোকার পরই তাকে অন্য বন্দিদের কাছ
থেকে আলাদা করে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
নতুন আসা কোনো বন্দির জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে তাকে
প্রথমেই করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং আলাদা সেলে রেখে
ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি
কারাগারে তৈরি করা হয়েছে মেডিকেল টিম ও আইসোলেশন
ওয়ার্ড।
করোনা শুরুর পর আদালতের নির্দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯
হাজার নতুন আসামি দেশের বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়।
সব মিলিয়ে এখন আসামি রয়েছেন ৭২ হাজারের মতো।
করোনা শুরুর আগে মোট বন্দি আসামি ছিলেন ৮৮ হাজার।
সরকারের বিশেষ নির্দেশে ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে ৩৫
হাজার বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় কারা অধিদফতরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন্স)
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা পাশা যুগান্তরকে
বলেন, আমি এক কঠোর অনুশাসনের মধ্যে কারাগারে বন্দিদের
রেখেছি।
একজনের থেকে আরেকজন যেন করোনায় আক্রান্ত না হয় তার
জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। যে কারণে ঢাকা
কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের প্রায় সব কটি কারাগারে কোনো
সংক্রমণ নেই।
আদালতে জামিন না পাওয়া নতুন তিনজন বন্দি আক্রান্ত হন
ঢাকার বাইরের কারাগারে। তবে তারাও সুস্থ। তবে তাদের
সংস্পর্শে আসার কারণে কারাগারের বেশ কিছু প্রহরী করোনা
আক্রান্ত হন বলে জানান তিনি ।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পাশা বলেন, আমি কারাগারের ঢোকার
পথে ‘ফুটবাথ চালু করেছি। যাতে করে নতুন আসা আসামিরা পা
ভিজিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারে। করোনা মহামারী দেখা দিলে গত
২৪ মার্চ থেকে আসামিদের আদালতে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি।
করোনার কারণে বন্দিদের স্বজনরা দেখা করতে পারছেন না। এ
কারণে বন্দিরা পাঁচ মিনিট করে কাছের স্বজনদের সঙ্গে কথা
বলার সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি জানান, কক্সবাজার ছাড়া সব কারাগারেই করোনা উপসর্গ
দেখা দিলে যে কোনো বন্দিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে
রাখার ব্যবস্থা আছে। দেশে বর্তমানে ৬৮টি কারাগার রয়েছে।
গত তিন মাসে ১২৮ জন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হন।
তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৮ জন।
কারা মহাপরিদর্শক আরও জানান, গত ২৫ এপ্রিল পেরুর একটি
কারাগারে দাঙ্গায় ৯ জন বন্দি নিহত হয় এবং এ ঘটনায় ৬৭
জন কারারক্ষী আহত হয়। ভারতের কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয়
কারাগারে করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন বন্দিদের সঙ্গে কারা
কর্মচারীদের সংঘর্ষে এক কয়েদির মৃত্যু হয়।
গত ৩০ মার্চ থাইল্যান্ডের একটি কারাগারে করোনাভাইরাস
আতংকে বড় ধরনের দাঙ্গা সংঘটিত হয়। গত ২৩ মার্চ
কলম্বিয়ার বোগাটার একটি কারাগারে করোনাভাইরাস আতংকে
সৃষ্ট দাঙ্গায় অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছিল।
কিন্তু বাংলাদেশের ৬৮টি কারাগারে করোনার কারণে এখনও
পর্যন্ত বন্দিদের মধ্যে কোনো উত্তেজনা, আতংক বা
দাঙ্গার ঘটনা ঘটেনি। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে প্রথম
থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়ার কারণে।
বন্দিদের করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বন্দি সাক্ষাৎ
সাময়িকভাবে বন্ধ। তবে বন্দিরা যাতে মানসিকভাবে বিচলিত
না হয় ও হতাশাগ্রস্ত না হয় তার জন্য পরিবারের সঙ্গে কথা
বলার জন্য স্থাপন করা হয়েছে টেলিফোন বুথ।
এতে বন্দিরা সপ্তাহে একদিন ৫মিনিট করে পরিবারের সঙ্গে
কথা বলতে পারছে। এবং স্থানীয় কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
বন্দিদের কাউন্সেলিংও করা হচ্ছে যাতে তারা বিপদগ্রস্ত
না হয়।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
মশার লালা থেকে তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন,
রুখবে সব ভাইরাস?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাসের দাপটে বিপর্যস্ত গোটা
বিশ্ব। মারণ এই ভাইরাসের মোকাবেলায় ভ্যাকসিন আবিষ্কারে
মরিয়া গোটা বিশ্বের গবেষকরা। অনেক ক্ষেত্রে আশার আলো
দেখা গেলেও এখনও সম্পূর্ণভাবে কার্যকরী কোনো
ভ্যাকসিনের সন্ধান মেলেনি। এর মধ্যেই মার্কিন ন্যাশনাল
ইনস্টিটিউট অব হেলথের বিজ্ঞানী ও সংক্রামক রোগ
বিশেষজ্ঞ জেসিকা ম্যানিং এমন এক ভ্যাকসিন তৈরির কথা
শোনালেন যা ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়া-চিকুনগুনিয়াসহ মশাবাহিত
যে কোনো সংক্রামক রোগ বা মহামারির প্রকোপ রুখে দিতে
পারবে বলে আশা করা হচ্ছে
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মশাবাহিত
জীবাণু নয়, সরাসরি মশার লালা থেকেই ভ্যাকসিন তৈরির ওই
উদ্যোগ মানুষের শরীরে পরীক্ষার (হিউম্যান ট্রায়াল)
প্রথম পর্যায়ে রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী সংক্রামক রোগের একটা বড় ক্ষেত্র হলো
মশাবাহিত রোগজীবাণু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে,
শুধু ম্যালেরিয়াতেই প্রতি বছর ৪ লাখ লোক মারা যায়। এই
মৃত্যুর বেশিরভাগ দরিদ্র দেশগুলোতে ঘটে থাকে। এছাড়া
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, ইয়োলো ফিভার,
মায়ারো ভাইরাসের কারণেও প্রতিবছর অনেক মানুষ প্রাণ
হারায়।
মশাবাহিত এসব রোগের জন্য আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো
ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তবে সহকর্মী ও অন্যান্য
বিজ্ঞানীদের কাজের ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের
জাতীয় অ্যালার্জি এবং সংক্রামক রোগের ক্লিনিকাল গবেষক
ম্যানিং এ ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। মূলত
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের চিন্তা থেকেই মশার লালা থেকে
মশাবাহিত সকল রোগের জন্য সর্বজনীন একটা ভ্যাকসিন তৈরির
কাজ শুরু করতে সক্ষম হন তিনি। এজন্য মশার লালা থেকে
পাওয়া প্রোটিন ব্যবহার করেছেন ম্যানিং ও তার দল।
রয়টার্স জানিয়েছে, অন্যসব ভ্যাকসিনের বেলায় যেমন করে
জীবাণুকেই উপজীব্য করা হয়, এখানে তা করা হয়নি। এই
পরীক্ষায় ভেক্টর বা জীবসত্তাকেই হাতিয়ার করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা যখন জানেন যে মশার লালা থেকেও মশাবাহিত
রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তখন তারা সেই লালাকেই
ভ্যাকসিন তৈরির কাজে ব্যবহারের উদ্যোগ নেন।
পাঁচ বছর আগে নিজের অফিস বিল্ডিংয়ের বাইরে দৈত্যকায়
মশার মডেল থেকেই মাথায় এসেছিল আইডিয়াটা। এরপর বছরের পর
বছর কেটেছে মাথায় আসা সেই চিন্তা বাস্তবে রূপ দিতে।
জেসিকা বলছেন, মশাবাহিত যেসব রোগ মানুষের শরীরে বাসা
বাঁধে, সেই রোগের জীবাণু দিয়েই তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন
বিস্তারিত ব্যাখায় এই নারী বিজ্ঞানীর দাবি, মশার থেকে
যেসব জীবাণু বা প্যাথোজেন মানুষের শরীরে ঢোকে এবং
ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, হলুদ জ্বর, বা
মেয়ারোর মতো ভাইরাসে রূপ নেয়, সেইসব প্যাথোজেন দিয়েই
তিনি তৈরি করছেন এই ইউনিভার্সাল ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন
শরীরে গিয়ে এমন অ্যান্টিবডি তৈরি করবে, যা যে কোনও
সংক্রমণ আটকাতে পারবে। মশার লালা বা থুতুতে উপস্থিত
প্রোটিনকেই কাজ লাগানো হবে এই ভ্যাকসিনে। এই গবেষণা
সফল হলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, হলুদ
জ্বর, পশ্চিম নাইল বা মেয়ারোর মতো ভাইরাস এবং যেকোনো
সংক্রামক রোগকে প্রতিরোধ করা সক্ষম হবে বলে দাবি
জেসিকার।
সম্প্রতি দ্য ল্যান্সেট জার্নালে জেসিকা ও তার
সহকর্মীদের গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
মশার লালা থেকে তৈরি এই ভ্যাকসিন প্রথমবার মানুষের
শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। ৪৯ জন
প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির শরীরে এই ভ্যাকসিন দেওয়া
হয়েছে। দু’ভাবে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হবে। প্রথমে দুটি
ডোজে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর ব্যক্তিকে
মশার কামড় খাইয়ে দেখা হবে শরীরে কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি
হয়েছে। মশার কামড়ের পর যদি দেখা যায় ব্যক্তির শরীরে
কোনো সংক্রমণ ঘটেনি, তাহলে আরো কয়েকবার মশার কামড় দেওয়া
হবে। তারপরও সুস্থ থাকলে বুঝতে হবে রোগ প্রতিরোধকারী
শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন।
মার্কিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের বিজ্ঞানী জেসিকা
ম্যানিং ও তার টিমের দাবি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটাই
হবে সব থেকে বড় আবিষ্কার
এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মশাবাহিত সংক্রামক
রোগের ক্ষেত্রে কার্যকরী হলেও এই ইউনিভার্সাল ভ্যাকসিন
কি করোনার ক্ষেত্রেও কার্যকরী হবে? যদিও বিশেষজ্ঞরা
বলছেন, এই ভ্যাকসিন নিয়ে আরো অনেক গবেষণা বাকি।
হিউম্যান ট্রায়ালের প্রথম ধাপে রয়েছে এটি। মশাবাহিত
রোগ প্রতিরোধই এর মূল ফোকাস হলেও গবেষণার অনেক দিক খুলে
দিয়েছে ম্যানিং ও তার টিম।
লেবুর রসের চেয়েও খোসায় পুষ্টিগুণ
বেশি
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আমাদের দেশে ভিটামিন-সি এর সবচেয়ে ভালো উৎস হিসেবে ধরা
হয় লেবুকে। আর বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরাস
মহামা’রির কালে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বারবার বলছে বেশি
বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করতে। তাহলে কি লেবুর রস বের
করার পর তার খোসা ফেলে দেওয়া হবে?
লেবু খাওয়ার পর একটি বড় ভুল আমরা প্রায় সকলেই করে থাকি।
আপনার স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য লেবুর খোসা কতটুকু
দরকারি তা জানার পর আপনি নিশ্চিত খোসা ফেলে দেওয়ার
অভ্যাস বদলে ফেলবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক, লেবু ও
খোসার উপকারিতা ও ব্যবহার সর্ম্পকে।
পুষ্টি সরবরাহ: লেবুর রসের মতো খোসাতেও রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম এবং বিটা ক্যারোটিন। এক কথায় বলা যায়,
রসের চেয়ে এর খোসা প্রায় ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি পুষ্টি
সরবরাহ করতে পারে। প্রায় ১০০ গ্রাম লেবুর খোসায় ১৩৪
মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৬০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ১২৯
মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি এবং ১০.৬ গ্রাম ফাইবার রয়েছে।
হাড় মজবুত করে: আপনার হাড় মজবুত ও হাড়ের স্বাস্থ্যগত
উন্নতি করতে পারে ভিটামিন-সি ও ক্যালসিয়াম। লেবুর
খোসার এই পুষ্টিগুলো প্রদাহজনিত পলি আর্থ্রাইটিস,
অস্টিওপোরোসিস, রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো রোগও
প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
ক্যানসার প্রতিরোধক: লেবুর রসের মতো লেবুর খোসাতেও
সাইট্রাস বায়োফ্লাভোনয়েড সমৃদ্ধ। যা জারণ চাপের মাত্রা
কমাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। পাশাপাশি দেহের
ভেতরকে ক্ষারীয় করে তোলে। লেবুর খোসা ক্যানসারও
প্রতিরোধ করতে পারে। লেবুর খোসা দেহের ভেতরে ক্যানসার
কোষগুলোর বেড়ে ওঠার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো উপাদান
লিমোনিন এবং সালভস্ট্রোল কিউ৪০ সরবরাহ করে থাকে।
ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ: ভিটামিন-সি’র
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা নাড়িভুঁড়ি/ অন্ত্রের ভেতরে
থাকা কৃমি এবং পরজীবী জীবাণু মে’রে ফেলে। এছাড়াও দেহের
বিভিন্ন অঙ্গকে বিভিন্ন ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার
সং’ক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে।
কীভাবে খাবেন লেবুর খোসা?: লেবু থেকে খোসা ছাড়ানোর পর
এটি আপনি শুকিয়ে রাখতে পারেন। যাতে এগুলোকে ভালোভাবে
গুড়ো করা যায়। খোসা শুকনোর সহজ একটি উপায় হলো, ওভেন
ব্যবহার করে ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় তা
ভাজাভাজা করা নিতে পারেন এবং সেঁকা খোসাগুলোকে গুঁড়ো
করে নিন। এরপর সেই গুঁড়ো বিভিন্নভাবে প্রতিদিনকার
খাবার, পানীয়, অর্গানিক চা বা স্যুপের মধ্যে মিশিয়ে
খেতে পারেন।
কতটা নিরাপদ?: লেবুর খোসা অক্সালেটের এক বড় উৎস। দেহে
প্রতিদিন ৮০ মিলিগ্রামের বেশি অক্সালেট গ্রহণ করলে
কিডনি এবং পিত্তথলিতে পাথর তৈরি করতে পারে। আর ১ চা
চামচ লেবুর খোসাতে প্রায় ২৫ মিলিগ্রাম অক্সালেট থাকতে
পারে। তাই, প্রতিদিন সর্বাধিক ৩ চা চামচের বেশি লেবুর
খোসা গ্রহণ করা উচিত হবে না।
হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে
পান করুন
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
এক চা চামচ পাতিলেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ মধুর মিশ্রণ
দিনে দু’বার করে খান। এই মিশ্রণ গলার ভেতরের সংক্রমণ
দ্রুত কমাতে সাহায্য করে
গাজর খেতে পারেন। এর ভিটামিন ও মিনারেলস শরীরে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
সর্দি-কাশির সমস্যায গরম পানির সঙ্গে লবণ মিশিয়ে নিয়ে
দিনে দু’বার ভাপ নিন। নাক ও বুকে জমে থাকা কফ বের হয়ে
যাবে। যে কোনো জীবাণুর সংক্রমণ দূর করতেও এই গরম পানির
ভাপের জুড়ি নেই।
(তবে জ্বর যদি বেশি হয়, বা শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে কোনো
ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।)
করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীরা মোটামুটি এসব বিষয় মেনে
চলার কথাই বলছেন। তবে সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত সর্দি কাশি বা
ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো কার্যকর হলেও করোনার
বিরুদ্ধে কার্যকর কি না তার স্বীকৃতি মেলেনি। সে কারণে
করোনার যে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবে।
করোনা ভাইরাস: শিশুদের নিরাপদ রাখতে
ইউনিসেফের পরামর্শ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বিশ্বে এখন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাসে তিন
হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা
লাখ ছুঁই ছুঁই।
চীনের উহান প্রদেশ থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস থেকে
শিশুদের রক্ষার জন্য সতর্কতা ও পরামর্শ দিয়েছে
জাতিসংঘের শিশুদের নিয়ে কাজ করা বিশেষ সংস্থা ইউনিসেফ।
ইউনিসেফ জানাচ্ছে,
* করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছুঁলে বা তার হাঁচি
বা কাশিতেই ছড়িয়ে পড়ে করোনা।
* করোনা ভাইরাস বাতাসে অনেক ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। তাই
অনেক পরেও ওই ভাইরাস শরীরে সংক্রামিত হতে পারে।
* করোনায় আক্রান্ত হলে প্রথমে জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে
শুরু হয়। তারপর শুরু হয় শ্বাসকষ্ট।
* ধীরে ধীরে নিউমোনিয়া দেখা দেয়।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে এই ভাইরাসে মৃত্যু
পর্যন্ত হতে পারে।
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রে একটু কম হয়।
তাই শিশুদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে একটু বেশি। যা করতে
হবে:
* বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে
* নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে মাস্ক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন
নেই। কারো যদি হাঁচি বা কাশি হয়, সেক্ষেত্রে অন্যদের
নিরাপত্তার জন্য তাকেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
* পরিবারে কারো জ্বর হলে শিশুকে দূরে রাখুন
* আর শিশুর জ্বর, সর্দি, কাশি বা শ্বাসের সমস্যা হলে
ডাক্তার দেখান ।
রক্তের ভাসমান চর্বি
থেকে হার্টের সমস্যা
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ে কথা হলেই সবাই প্রথমে মাথায়
আনেন ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল অথবা খারাপ কোলেস্টেরল
এলডিএল। তবে যুক্তরাষ্টের হিউস্টনের বেলর কলেজ অব
মেডিসিনের অধ্যাপক ড: পিটার এইচ জোনস এমডি এর অভিমত:
হার্ট ভালো রাখতে হলে রক্তের ট্রাইগিসারাইড অবশ্যই ১৫০
অথবা এর নীচে রাখা দরকার। অনেক ক্ষেত্রে রক্তের এই
ভাসমান চর্বি হার্টের রক্তনালীতে জমা হয়ে হার্টের
সমস্যা করতে পারে। এমনকি অনেক বিশেষজ্ঞও মনে করেন ভালো
কোলেস্টেরল এইচডিএল ঠিক থাকা এবং খারাপ কোলেস্টেরল
এলডিএল কম থাকলেই চলে। হার্ট ডিজিজ ও ডায়াবেটিস এর
ক্ষেত্রে রক্তে ভাসমান চর্বি হিসাবে পরিচিত
ট্রাইগিসারাইড বেশী ঝুঁকির্পূণ। তাই রক্তের
ট্রাইগিসারাইড ১৫০ মাত্রার নীচে নামিয়ে রাখতে হবে। কোন
প্রকার ওষুধ ছাড়াই রক্তের এই ক্ষতিকর ট্রাইগিসারাইড ৩০
থেকে ৫০ শতাংশে হ্রাস করতে পারেন। আর এটা সম্ভব যদি
আপনি আপনার খাবারের তালিকা থেকে স্যাসুরেটেড ফ্যাট বা
সম্পৃক্ত চর্বি যেমন: গরুর মাংস, লালমাংস, মাখন,
নারিকেল তেল, সয়াবিন তেল, কালো চকলেট, ডিম, চিপস
ইত্যাদি বাদ দেন অথবা এ ধরণের চর্বি খাওয়ার পরিমাণ
একেবারেই কমিয়ে দেন। পাশাপাশি শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে
পারেন। এতে আপনার হ্নদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার
ঝুঁকি ২০ থেকে ৩০ ভাগ কমে যাবে। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম
এবং সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণ করলেও রক্তের কোলেস্টেরল
নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গর্ভাবস্থায় খাবার
নিয়ে কুসংস্কার
মানবাধিকার হেলথ রিপোর্টঃ
দীর্ঘদিন ধরে মেয়েলি রোগ নিয়ে কাজ করছি। প্রতিদিনই রোগী
দেখতে হয়। কত শিশুর প্রথম কান্নার আওয়াজ শুনেছি তার
ইয়ত্তা নেই। প্রতিদিন রোগী দেখতে গিয়ে একটি উপলব্ধি
হয়েছে, গর্ভাবস্থায় মেয়েরা কুসংস্কারের কারণে নিজের
জীবনে চরম সর্বনাশ ডেকে আনে। অনেক শিক্ষিত মেয়েকেও
দেখেছি কুসংস্কারের কাছে হার মানতে। মা-দাদি-নানি,
শাশুড়িরা এ ধরনের কুসংস্কার মেনে চলতে গর্ভবতীদের
বাধ্য করেন। এ সময় তারা খাবার নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন।
মনে করা হয় গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণে খেলে ও পুষ্টিকর
খাবার খেলে সন্তান বেশি বড় হবে। ফলে নরমাল ডেলিভারি হবে
না। সন্তান প্রসবের পর কোনো কোনো এলাকায় মাকে শুধু
শুকনো খাবার অল্প পরিমাণে দেওয়া হয়। কোথাও শুধু ঘি-ভাত
বা কালিজিরা-ভাত দেওয়া হয়। অনেকে মনে করেন সবজি,
মাছ-মাংস খেলে বাচ্চার পেট কামড়াবে।
পানি কম খেতেও বাধ্য করা হয়। মনে করা হয় পানি ও তরল
খাবার বেশি খেলে শরীরের রস টানবে না।
গর্ভাবস্থায় শিশু মায়ের কাছ থেকে পুষ্টি নেয়। এ সময়
মায়ের চাহিদা বাড়ে। মাকে যদি বেশি পরিমাণে না খাওয়ানো
হয়, তাহলে মা ও শিশু দু’জনেরই পুষ্টির অভাব দেখা দেবে।
এতে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি কম হবে, ওজন কম হবে। ওজন খুব
কম হলে শিশু মারাও যেতে পারে।
Top
আইন কনিকা
স্থাবর সম্পত্তি
দখলচ্যুত বা বেদখল হলে প্রতিকার কি?
সাদ্দাম হুসাইন শৈলানী
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
জমির দখল যার কাছে আছে বা যিনি দখলে আছেন তিনি দখলে
থাকবেন এটাই সাধারণ নীতি। যার দখল আছে তাকে যদি শক্তির
জোরে বেদখল করার ব্যাপারে আইন সমর্থন দিতে তবে সবাই বল
প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ত। তাই আইনে বল প্রয়োগকে
নিরুৎসাহিত করার জন্য এই আইনটি করা হয়েছে। যার দখল নেই
কিন্তু স্বত্ব বা মালিকানা আছে, সে নিজের হাতে আইন তুলে
নিতে পারবে না। শক্তির জোরে দখলদার ব্যক্তিকে জমির
দখলচ্যুত করা যাবে না। তবে স্বত্ববান ব্যক্তি বেআইনি
বল প্রয়োগের বিরুদ্ধে তার দখল বজায় রাখার জন্য আইনি
সহায়তা পাবেন। স্বত্ববান ব্যক্তি প্রয়োজনে ‘দখল
পুনরুদ্ধারের মামলা’ করে জবর-দখলকারকে বিতাড়িত বা
দখলচ্যুত করতে পারে। সে জন্য এই আইনটি জানা থাকতে হবে
স্থাবর সম্পত্তি থেকে দখলচ্যুত হলে কীভাবে প্রতিকার
পাবেন।
দখল কি:
দখল বলতে সাধারণত কোন কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণকে বুঝায়? এ
ধারার দখল বলতে বর্তমান দখলকেই নির্দেশ করা হয়েছে? দখল
প্রত্যক্ষ হয়ে থাকে। তবে এমন সম্পত্তি আছে স্পষ্টতই
দখল করা যায় না? যেমন ব্যবসায়ের সুনাম? এতদ্ব্যতীত
দখলের আবার বিভিন্ন দিক রয়েছে-
১. Immediate possession ( তাৎক্ষণিক দখল) : যখন কেউ
নিজে নিজের জন্য দখল করে রাখে, যেমন, যে বৈধ দখলদার বা
মালিক।
২. Mediate possession (মধ্যবর্তী দখল) : যখন কেউ নিজে
অন্য কারো হয়ে দখল করে রাখে, যেমন এজেন্ট।
৩.Incorporeal possessio ( অমূর্ত দখল) : এমন কোন
বিষয়ের দখল যা বাহ্যিক ভাবে/ বাস্তবে দেখা যায় না,
যেমন আইনি অধিকার বা সুনাম ইত্যাদি।
৪. Constructive possession ( গঠনমূলক দখল) : যখন কেউ
বাস্তবিক / প্রকৃত দখলে না থেকেও কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ
করতে পারে এমন ধরনের দখল।
৫. Adverse possession ( প্রতিকূল দখল) : যখন কোন
ব্যক্তি অন্য কারো (মালিকানাধীন) স্থাবর সম্পত্তিতে
কোন ধরনের চুক্তি বা অভিযোগ ছাড়া ১২ বছর বাহ্যিক ভাবে/
বাস্তবে দখল করে থাকে তখন তা এই দখলকে Adverse
possession বা প্রতিকূল দখল বলে, উল্লেখ্য এই দখলদার
পরে ঐ সম্পত্তির মালিকানা দাবি করতে পারে। (Article
142 of Limitation Act)
জমি দখলে রাখার অধিকার:
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ এক খন্ড জমি দখলে রাখার জন্য সব
সময়ই উদগ্রীব থাকে? জমি দখলে রাখার অধিকার বিভিন্নভাবে
হতে পারে। যেমন- উত্তরাধিকার সূত্রে, ক্রয় সূত্রে, দান
সূত্রে, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত খাস জমি পাবার পর, লীজ
গ্রহণের মাধ্যমে, জবর দখলের মাধ্যমে, বর্গা চাষের
জন্যও জমি দখলে রাখতে পারবে? উপরোক্ত যে কোনো ভাবেই
কোনো মানুষ জমি পেয়ে থাকুক না কেন জমি দখলে রাখার
অধিকার সকল মানুষেরই রয়েছে? এমন কি ঐ জমিতে যদি তার
মালিকানা নাও থাকে তথাপিও সেই জমি দখলে রাখতে পারবে?
জমি বেদখল কি:
জমি বেদখল বলতে বোঝায় প্রকৃত মালিককে তার মালিকানা থেকে
জোর করে উচ্ছেদ করে অবৈধভাবে সেখানে তার স্বত্তা
প্রতিষ্ঠিত করা ?
জমি বেদখল কিভাবে হয়:
জমি জমা ভোগ দখলে রাখার আশা মানুষের চিরকালের ? তাই
জমির দখল নিয়ে সব সময়ই সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে ? অসাধু
দাঙ্গাটে প্রকৃতির লোকেরা প্রায়ই লোকজনকে জোরপুর্বক বা
চাতুরী পন্থায় ভুমি বেদখল করছে
জমি হতে বেদখল হলে প্রতিকার:
জমি হতে বেদখল হলে দখল পুনরুদ্বারের জন্য যে সমস্ত
প্রতিকার আছে তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
১) সালিশের মাধ্যমে
২) আদালতে মামলা করার মাধ্যমে (ফৌজদারী আদালত অথবা
দেওয়ানী আদালত)
সালিশের মাধ্যমে:
কোন ব্যক্তির জমি বেদখল হলে তার গ্রামের স্থানীয়
লোকদের নেতৃত্বে সালিশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি তার জমি
ফেরত পেতে পারেন ? সালিশে মীমাংসার মাধ্যমে উভয় পক্ষের
মধ্যে সমাধান করা হয়ে থাকে ?
আদালতে মামলা করার মাধ্যমে:
যদি জমি হতে বেদখল হওয়া ব্যক্তিটি মনে করেন যে গ্রামের
স্থানীয় লোকদের নেতৃত্বে সালিশের মাধ্যমে উপযুক্ত
প্রতিকার পাবেন না মর্মে আশংকা করেন কিংবা গ্রামের
স্থানীয় লোকদের নেতৃত্বে সালিশে মীমাংসার মাধ্যমে কোনো
সমাধান বা প্রতিকার না পান তাহলে সেক্ষেত্রে জমি হতে
বেদখল হওয়া ব্যক্তিটি সরাসরি আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করতে
পারবেন।
নামজারি কেন করবেন?
কীভাবে করবেন?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কোনো ব্যক্তি কোনো জমির মালিকানা লাভ করার পর তার নাম
সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করা বা তার নিজ নামে
নতুন খতিয়ান খোলার যে কার্যক্রম তাকে খারিজ/নামজারি বা
মিউটেশন বলে। সাধারণত দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জরিপের
মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। ফলে দুই
জরিপের মধ্যবর্তী সময়ে উত্তরাধিকারের মাধ্যমে জমি
প্রাপ্তির ফলে কিংবা দলিলের মাধ্যমে জমি হস্তান্তরের
ফলে ভূমি মালিকানার পরিবর্তনে খতিয়ান হালনাগাদকরণ
অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি)
খারিজ/নামজারি বা মিউটেশনের মাধ্যমে খতিয়ান হালকরণের
কাজ করে থাকে।
কেন খারিজ/ নামজারি/ নিউটেশন করবেন?
১। যে কোনো সময় জমি বিক্রয় করা যাবে (রেজিস্ট্রেশন আইন,
১৯০৮-এর ৫২এ ধারা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২-এর
৫৩সি ধারা অনুসারে, দলিলমূলে প্রাপ্ত জমির নামজারি
খতিয়ান না থাকলে সে জমি বিক্রয় করা যায় না)।
২। ভূমির মালিকানা হালনাগাদ হবে।
৩। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়/প্রদান করা সহজ হবে।
৪। খতিয়ান হালনাগাদ থাকার ফলে জরিপ কাজে সুবিধা হবে।
৫। সরকারের খাস জমি সংরক্ষণে সুবিধা হবে।
৬। নদী পয়স্তিজনিত কারণে রেকর্ড সংশোধন হবে।
৭। মূল ভূমি মালিকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারগণের
মালিকানার নির্দিষ্ট অংশ সংবলিত খতিয়ান প্রস্তুত হবে।
৮। রেজিস্ট্রিকৃত দলিলমূলে জমি হস্তান্তরের কারণে
ক্রেতা বা গ্রহীতার নামে খতিয়ান প্রস্তুত হবে।
৯। মামলা-মোকদ্দমা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
১০। বিক্রেতা আপনার ক্রয়কৃত জমি দ্বিতীয়বার বিক্রি করতে
পারবে না।
সর্বোপরি যে কোনো বিতর্কের সময় মালিকানা বা দখল
প্রমাণের ক্ষেত্রে নামজারিসংক্রান্ত কাগজপত্রাদি
গুরুত্বপূর্ণ কাগজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
নামজারি তিন ধরনের হয়ে থাকে-
১। শুধু নামজারি বা নামপত্তন : কোনো রেকর্ডীয় মালিকের
নামের পরিবর্তে ওই একই খতিয়ানে পরবর্তী গ্রহীতা ও
ওয়ারিশগণের নামভুক্ত হলে, তা শুধু নামজারি বা নামপত্তন
হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব
আইনের ১৪৩ ধারা মতে এ ধরনের নামজারি বা নামপত্তন হয়ে
থাকে।
২। নামপত্তন ও জমা খারিজ : কোন দাগের জমি বিক্রয় বা
অন্য কোনো প্রকার হস্তান্তরের মাধ্যমে বিভক্ত হলে এবং
ওই বিভক্তির জন্য পৃথক হিসাব বা হোল্ডিং খুলে ভূমি
উন্নয়ন কর আদায়ের আদেশ দিলে তা নামপত্তন ও জমা খারিজ
নামে পরিচিত। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকানার পরিবর্তন হবে
এবং পৃথক খতিয়ান এবং হোল্ডিং নম্বর পড়বে। রাষ্ট্রীয়
অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৩ ও ১১৭ ধারা মতে
নামপত্তন ও জমা খারিজ প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়ে থাকে।
রিমান্ড কি
মানবাধিকার পরিপন্থী?
মানবাধিকার ল’ ডেস্ক
কোনও আসামিকে গ্রেফতার করার পর তথ্য উদঘাটনের জন্য
পুলিশ ওই আসামিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রাখতে
পারেন। তারপর আইন অনুযায়ী তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে
হাজির করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে মামলা সম্পর্কে তথ্য
উদঘাটন সম্ভব না হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে
আসামিকে রিমান্ডে নেয়া যায়।
এ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করা না করা এবং করলে কয়দিনের
জন্য তা ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনামূলক ক্ষমতার ওপর
নির্ভর করে। একাধিকবারও পুলিশ আসামিকে রিমান্ডে নিতে
পারেন। তবে সর্বসাকুল্যে একটি ঘটনার জন্য ১৫ দিনের বেশি
রিমান্ডে রাখা যায় না।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আগে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই
পুলিশ ডায়েরি (সিডি) দেখতে হবে, যাতে আসামির বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
যায়। এছাড়া রিমান্ডের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
দায়ের করা হয়েছে কিনা, আসামি শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা
এসব বিষয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট
রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদেশ উপরস্থ ম্যাজিস্ট্রেট এবং
এসপিকে (পুলিশ সুপার) জানানোর নির্দেশ দেবেন। রিমান্ড
মঞ্জুর করলে অর্ডার শিটে যথাযথ কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
এছাড়া রিমান্ড মঞ্জুরের সময় আসামিকে হাজির করা হয়েছে
কিনাÑ সে বিষয়টিও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। চীফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম
শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক
বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেটের এ রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে এ রিমান্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে।
মানুষ পেটানোর হাতিয়ার এই রিমান্ড। মানুষকে রিমান্ডে
নিয়ে পিটিয়ে তথ্য আদায় করা হয়। এর ফলে রিমান্ডকে
মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেন মানবাধিকারকর্মীরা।
যৌতুকের মিথ্যা মামলার
শাস্তি ৫ বছর রেখে আইন পাস
যৌতুক দেওয়া-নেওয়া এবং যৌতুক নিয়ে মিথ্যা
মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা
জরিমানার বিধান রেখে সংসদে ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ পাস
হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মহিলা ও শিশুবিষয়ক
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি জাতীয় সংসদে বিলটি
পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
কারও ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে
পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে
দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে। আগের আইনে
যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনও দণ্ডের বিধান ছিল
না।
বিলে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনও এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তবে
সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কিন্তু সর্বনিম্ন এক বছরের জেল
বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান করলেও একই ধরনের সাজা হবে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য
ও জামিন অযোগ্য হবে। তবে আপসযোগ্য হবে।’
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে
পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি হয়। গত ২৫
জুন বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে
প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮০ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন করে আইন
করতে বিলটি তোলা হয়েছে সংসদে। ১৯৮০ সালের ওই আইন ১৯৮২,
১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।
Top
|
|