           
 
|
Cover
April 2020
English Part April 2020
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর চার বার্তা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার গতকাল এক
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বার্তাগুলো প্রচারের জন্য অনুরোধ
জানান।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও বার্তাগুলো হচ্ছে নিম্নরূপ:
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার করণীয়
প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। বাইরে বের হলে
মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলুন। যাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
হয়ে বিদেশ থেকে ফিরেছেন, তাঁরা ১৪ দিন সম্পূর্ণ আলাদা
থাকুন। ঘন ঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি
দিতে হলে রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন।
যেখানে-সেখানে কফ-থুতু ফেলবেন না। করমর্দন বা কোলাকুলি
থেকে বিরত থাকুন। মুসলমান ভাইয়েরা ঘরেই নামাজ আদায়
করুন। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও ঘরে বসে প্রার্থনা করুন।
পরিবার, পাড়াপ্রতিবেশী এবং দেশের মানুষের জীবন
রক্ষার্থে এসব পরামর্শ মেনে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি
মেনে চলুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
সুরক্ষা ও চিকিৎসাসামগ্রীর ঘাটতি নেই
স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ
অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পিপিই-সহ পর্যাপ্ত পরিমাণ
সুরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস
পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট মজুত রয়েছে।
ঢাকায় চারটি স্থানে এবং চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস
পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য ছয়টি বিভাগে
করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে। কেউ গুজব
ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।
করোনাভাইরাসে ভীত হবেন না
করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতা রাখলেও ততটা প্রাণঘাতী
নয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত সিংহভাগ মানুষই কয়েক দিনের
মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে। নানা রোগে আক্রান্ত এবং বয়স্ক
মানুষদের জন্য এই ভাইরাস বেশ প্রাণসংহারী হয়ে উঠেছে।
আপনার পরিবারের সংবেদনশীল মানুষটির প্রতি বেশি নজর দিন।
আতঙ্কিত হবেন না। আতঙ্ক মানুষের যৌক্তিক চিন্তাভাবনার
বিলোপ ঘটায়। আপনি, পরিবারের সদস্যরা এবং প্রতিবেশীরা
যেন সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। আপনার
সচেতনতা আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং সর্বোপরি দেশের
মানুষকে সুরক্ষিত রাখবে।
সহনশীল ও সংবেদনশীল হোন
করোনাভাইরাসের কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব এক
সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। এ সময়ে আমাদের সহনশীল এবং
সংবেদনশীল হতে হবে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই।
দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সঙ্গে সরবরাহ চেইন অটুট
রয়েছে। অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম
বৃদ্ধি করবেন না। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোনো
ভোগ্যপণ্য কিনবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ
দিন। অসহায় মানুষের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার
জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধান প্রতিবেদন
মার্চ ২০২০ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৪৬ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র বিভিন্ন জেলা, উপজেলা
ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয়
দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে BHRC’র
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান এবং ইন্টারন্যাশনাল
হিউম্যান রাইটস কমিশন-IHRC’র সহযোগিতায় প্রতিবেদন
সম্পন্ন করে।
জরিপে মার্চ ২০২০ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড
সংঘটিত হয় ১৪৬টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
মার্চ ২০২০ মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায়
৫টি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০২০ সালের মার্চ মাসে হত্যাকান্ডের শিকার
১৪৬ জন। এর মধ্যে পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ১৬ জন,
সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৩১ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ২২ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৪ জন, অপহরণ
হত্যা ৩ জন, গুপ্ত হত্যা ৪ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ২৫ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২৩৮ জন, আত্মহত্যা ১৬ জন। মার্চ ২০২০ সালে
কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণ ১৭
জন, যৌন নির্যাতন ৪ জন, যৌতুক নির্যাতন ২ জন, সাংবাদিক
নির্যাতন ৪ জন, এসিড নিক্ষেপ ১ জন।
ঢাকায় BHRC’র
সচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারণা, খাদ্যদ্রব্য ও সুরক্ষা
সামগ্রী বিতরণ
মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন-BHRC’র সদর দপ্তরের উদ্যেগে
২৭ মার্চ ২০২০ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার
শাহজাহানপুর বস্তি, খিলগাঁও রেলওয়ে বস্তি এবং মান্ডা
বস্তি এলাকায় BHRC’র সচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচারণা,
লিফলেট বিতরণ, দরিদ্র নারী-পুরুষ এবং শিশুর মধ্যে
মাস্ক, হ্যান্ড-স্যানিটাইজার এবং হ্যান্ড গ্লাভস বিতরণ
করে। BHRC’র প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারী জেনারেল ড.
সাইফুল ইসলাম দিলদার কর্মসূচীর নেতৃত্ব দেন। BHRC’র
সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের
সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজমুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের
সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির, মুগদা থানা শাখার সভাপতি
নাসির উদ্দিন প্রিন্স সহ বেশ কিছু মানবাধিকার কর্মী এবং
BHRC সদর দপ্তরের কর্মীরা সেক্রেটারী জেনারেলের সাথে
ছিলেন। অপর দিকে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের প্রায় সর্বত্র
BHRC’র মানবতাবাদি কর্মীরা সচেতনতামূলক কর্মসূচী এবং
বিভিন্ন সামগ্র ী বিতরণ করছে।
জীবন-মৃত্যুর
সন্ধিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র ॥ ট্রাম্পে

মানবাধিকার রিপোর্ট’
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র। তাই সব
মার্কিনীকে সরকারের নির্দেশনা অনুসরণ করতে উদাত্ত
আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কর্মকর্তারা সতর্কতা দিয়েছেন আগামী কয়েক সপ্তাহে
যুক্তরাষ্ট্রে এক লাখ থেকে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ করোনা
ভাইরাসে মারা যেতে পারেন। নিউ ইয়র্কের হাসপাতালগুলোর
মর্গ উপচে পড়ছে মৃতদেহ। এখন আর মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই।
হাসপাতালের বাইরে রেফ্রিজারেটর ট্রাকের ভিতর সারিবদ্ধ
রাখা হয়েছে মৃতদেহ। টাইমস অব ইসরাইল, অনলাইন বিবিসিসহ
বিভিন্ন মিডিয়ায় এ খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে।
করোনা ভাইরাস মহামারি সামাল দিতে বিশ^জুড়ে জাহাজ,
স্টেডিয়াম, পার্ককে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তরিত করা
হয়েছে।
স্পেন ও ফ্রান্সে মারা গেছেন কমপক্ষে ৮০০ মানুষ। বৃটিশ
সরকার তার দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি
পাওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে। বিশ^জুড়ে এখন কমপক্ষে
৮ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। এমন অবস্থায়
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন,
সামনে আরো অত্যন্ত কঠিন বেদনাদায়ক সময় অপেক্ষা করছে। এ
জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে তিনি তার নাগরিকদের
প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, পীড়াময় ওই সময়কে
আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত থাকা উচিত। সবচেয়ে খারাপ কথা হলো
সামনের কয়েক সপ্তাহ বা মাসে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে আড়াই
লাখ মানুষ মারা যেতে পারেন বলে প্রক্ষেপন বা প্রজেকশনে
বলা হচ্ছে। তাই এই মহামারিকে একটি ‘প্লেগ’-এর মতো
আখ্যায়িত করে হোয়াইট হাউজ থেকে বক্তব্য রাখছিলেন
প্রসিডেন্ট ট্রাম্প। তার ভাষায়, সামনের দু’টি সপ্তাহ
হবে অত্যন্ত কঠিন বেদনাদায়। কঠিন এক বেদনাদায়ক অবস্থার
দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পরিস্থিতি। সামনের এই কঠিন দিনগুলোর
জন্য প্রস্তাত থাকার জন্য প্রতিটি মার্কিনীর প্রতি আমি
আহ্বান জানাচ্ছি।
সর্বপ্রথম কোয়ারেন্টাইন উদ্ভাবন করেন মোহাম্মদ
(সা.) ॥ মার্কিন গবেষক
মানবাধিকার রিপোর্ট’
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে
কোয়ারেন্টাইন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এটি যেকোনো উপায়ে
মানতেই হবে। কিন্তু এই কোয়ারেন্টাইনের কথা সর্বপ্রথম
যিনি বলেছিলেন তিনি হলেন মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)।
এমনটিই বলছেন মার্কিন এক গবেষক।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা ও সংবাদভিত্তিক ম্যাগাজিন
নিউজউইকের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। প্রতিবেদনটি
লিখেন মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন। তিনি
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবস্থিত রাইস ইউনিভার্সিটির
একজন গবেষক। এছাড়া তিনি একজন আন্তর্জাতিক বক্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমিউনোলজিস্ট ডা. অ্যান্থনি ফসি এবং
মেডিকেল রিপোর্টার ডা. সঞ্জয় গুপ্তের মতো বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকরা বলেছেন, সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সুন্দর ব্যবস্থাপনায়
হোম কোয়ারেন্টাইন থাকতে। একই সঙ্গে সুস্থ লোকদের
জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন,
এসব উপায়ই করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) থেকে বেঁচে থাকার
সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।
গ্রামীণফোনের বকেয়ার ১০০ কোটি টাকা নেয়নি বিটিআরসি
টেক্সাসের গীর্জায় গোলাগুলি, হামলাকারীসহ ৩ জন নিহত মত
প্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে কাজ
করছে ‘ভয়েস’
মার্কিন গবেষক ড. ক্রেইগ কন্সিডাইন তার রিপোর্টে লিখেন,
আপনারা কি জানেন মহামারির সময়ে সর্বপ্রথম কে এই সবচেয়ে
ভালো কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবন করেছেন?
আজ থেকে প্রায় ১৩শ বছর আগে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত
মোহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম
কোয়ারেন্টাইনের ধারণা দেন। যদিও তার সময়ে সংক্রামণ
রোগের মতো কোনো বিশেষজ্ঞ ছিলেন না। তারপরেও তিনি এসব
রোগব্যাধিতে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তা
ছিল কভিড-১৯ এর মতো প্রাণঘাতী রোগ মোকাবেলায় দুর্দান্ত
পরামর্শ। তার সেই পরামর্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনো
মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
এর উদাহরণ হিসেবে মার্কিন গবেষক মোহাম্মাদ (সা.)-এর
একটি বাণী উল্লেখ করেন। তিনি লিখেন- ‘মোহাম্মাদ বলেছেন,
যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও
তখন সেখানে প্রবেশ করো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমার
অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ
কোরো না।’
তিনি আরও বলেছেন, যারা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে
তাদের সুস্থ মানুষ থেকে দূরে থাকতে হবে।’
এভাবে বিভিন্ন সময়ে মানব জাতিকে সংক্রামণ থেকে রক্ষা
করতে মোহাম্মাদ (সা.) রোগব্যাধিতে আক্রান্ত লোকদের
পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও উদ্বুদ্ধ করতেন।
এ ব্যাপারে তার অমূল্য বাণীগুলো হচ্ছে-
‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’
‘ঘুম থেকে ওঠার পরে হাত ধৌত করো। কেননা ঘুমের সময়
তোমার হাত কোথায় স্পর্শ করেছে তা তুমি জান না।’
‘খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধোয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে।’
ইত্যাদি।
সবচেয়ে বড় কথা, মোহাম্মাদ (সা.) এটা বলেননি যে, শুধু
তুমি প্রার্থনা করে বসে থাকবে। বরং তুমি প্রার্থনার
পাশাপাশি চিকিৎসা নেবে। সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পেতে
মৌলিক নিয়মগুলি মেনে চলবে।
এর উদাহরণ হিসেবে মোহাম্মাদ (সা.)-এর সময়ের একটি ঘটনার
কথা উল্লেখ করেন মার্কিন গবেষক। তিনি তিরমিজি শরিফের
বরাত দিয়ে লিখেন, ‘একদিন, মোহাম্মাদ এক বেদুইনকে
লক্ষ্য করলেন যে, সে তার উটটি না বেঁধে চলে যাচ্ছে।
তখন তিনি বেদুইনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি তোমার উটটি
বেঁধে রাখছো না কেন?’
জবাব বেদুইন বললো, ‘আমি ইশ্বরের (আল্লাহ) উপর ভরসা
রেখেছি।’ তখন নবী বললেন, ‘তোমার উটটি আগে বেঁধে রাখ,
তারপর আল্লাহ উপর আস্থা রাখ।’
মোটকথা, মোহাম্মাদ (সা.) ধর্মীয় ক্ষেত্রে যেমন অবদান
রেখে অমর হয়ে আছেন। ঠিক তেমনই মানুষের জীবনযাপন বিষয়ক
মহামূল্যবান যে পরামর্শ তিনি দিয়ে গেছেন তা আজও
অনুকরণীয়।
ঢাকার বায়ুদূষণ ‘সহনীয়’ পর্যায়ে
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল
পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারি অফিসের
পাশাপাশি বেসরকারি অফিসও এই ছুটির আওতাধীন থাকবে।
পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে ঢাকার
বায়ুদূষণ নেমে এসেছে ‘সহনীয়’ পর্যায়ে।
২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটায় দেখা যায়, ‘এয়ার পলিউশন:
রিয়েল টাইম এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’-এ ঢাকার বায়ুদূষণের
মাত্রা ৯৩-তে নেমে আসতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য সময়ে ঢাকা বায়ুদূষণের মাত্রা
২৫০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত থাকে। তবে গত সোমবার ঢাকার
বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ১৯৫। পরের দিন মঙ্গলবার ছিল
১৫৭। গতকাল বৃহস্পতিবারও ছিল বায়ু দূষণের মাত্রা ১৫৭।
ঢাকার বায়ু দূষণের পরিমাণ আরও কমবে বলেই মনে করছেন
পরিবেশ সংশ্লিষ্টরা।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক এবং
পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক সচিব প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান
ঢাকার বায়ুদূষণ সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, যেসব উৎস
থেকে বায়ুদূষণ হতো যেমন সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন
ছোট-বড় প্রজেক্ট, যানবাহন ও শিল্প কারখানার কালো ধোঁয়া
বর্তমানে সেগুলো বন্ধ। সে কারণেই বায়ু দূষণের মাত্রা
৯৩-তে এসেছে। এ থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে, আমরা যদি
যথাযথ নিয়ম মেনে পরিবেশের দিকে লক্ষ রেখে কাজ করি তাহলে
আমাদের বায়ুর মান ২৫০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত যাবে না। সুতরাং
যারা বায়ুদূষণের সঙ্গে জড়িত এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের যারা
তাদের মনিটরিং করবে, উভয়েই যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন
করে তাহলে ঢাকার বায়ু স্বাস্থ্যকর থাকবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান ব্যবস্থাপনা বিভাগের
পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের একার পক্ষে
বায়ুদূষণ কমানো সম্ভব নয়। শুধুমাত্র আমাদের লোকাল
পলিউশন নয় এর সঙ্গে আরও অনেক বিষয় জড়িত রয়েছে। যেমন-
বায়ু প্রবাহ, বৃষ্টিপাত, অন্য স্থানের দূষণ হলেও তার
প্রভাব ঢাকাতে হতে পারে। বায়ুদূষণের মূল কারণগুলো
সরকারের অন্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কমানো গেলে
ঢাকার বায়ু মোটামুটি স্বাস্থ্যকর রাখা সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মান অনুসারে বায়ুর মান শূন্য থেকে ৫০ থাকা
মানে বায়ু স্বাস্থ্যকর। ৫০ থেকে ১০০ হচ্ছে সহনীয় অবস্থা।
১০০ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল, ১৫০ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর,
২০০ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর, ৩০০ থেকে ৫০০ হচ্ছে
বিপদজনক অবস্থা।
করোনাভাইরাসের
প্রভাবে বেড়ে যাবে গরিবের সংখ্যা
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
রাজধানীর মিরপুরে রিকশা চালান শেরপুরের আব্বাস আলী।
স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ ৫ হাজার টাকায় ভাড়া থাকেন
রূপনগর টিনশেড এলাকার ছোট এক রুমে। করোনাভাইরাসের আগে
তিনি রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৯০০ থেকে ১ হাজার
টাকা আয় করতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে তার আয়
একেবারেই কমে গেছে। গতকাল সারা দিনে তার আয় ছিল মাত্র
দেড়শ টাকা। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে আব্বাস আলী বলেন, ‘হঠাৎ
গরিব অইয়া গেলামরে বাই (ভাই)...!’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস’র রিসার্স
ডিরেক্টর ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত
বলেন, ‘যারা প্রান্তিক সীমায় ছিল, তারা এই ধাক্কায়
দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে
অনেক বেশি মানুষ গরিব হবে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা উচ্চবিত্ত তাদের ওপর খুব বেশি
প্রভাব পড়বে না। কিন্তু যারা নিম্ন আয়ের মানুষ,
ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে রাজধানীতে এসেছেন, তাদের ওপর
করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়বে ব্যাপক মাত্রায়। এদের মধ্যে
রয়েছেন- রিকশাচালক, রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, হোটেল
শ্রমিক, বিভিন্ন ছোট কারখানা ও দোকানে কর্মরত শ্রমিক,
মুচি, ফুটপাথে খাদ্য ও পণ্য বিক্রেতা, ফেরিওয়ালাসহ
বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষ। এই শ্রেণিটির অনেকেই রাজধানী
থেকে গ্রামে চলে গেছেন। যারা আছেন, তারা এখন আয়ের মধ্যে
নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে যত সময় লাগবে তত বেশি
গরিব মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
ড. জায়েদ বখত বলেন, এই পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়িয়ে গরিব মানুষকে খাদ্য
সহায়তা দেওয়া। এই সহায়তা এমনভাবে দিতে হবে যেন সেটি
সঠিকভাবে প্রান্তিক মানুষের হাতে পৌঁছে। পরিস্থিতি
স্বাভাবিক হলে আয়বর্ধক কর্মসূচি নিতে হবে, যেখানে
নিম্ন আয়ের মানুষ জড়িত হতে পারে।
১৬ কোটি জনসংখ্যার ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ এক দশকে
ধারাবাহিকভাবে জিডিপি বাড়িয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে বেশ
সাফল্য দেখিয়েছে। গত ডিসেম্বরে পরিসংখ্যান ব্যুরো তথ্য
দেয়, এক বছরের ব্যবধানে ১ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ
দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠে এসেছিল। এ হিসাবে ১৬ কোটি
মানুষের দেশে দরিদ্র্য মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ কোটি
২৮ লাখে। শতাংশের দিক থেকে এটি জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৫
ভাগ। ২০১৬ সালেও বাংলাদেশের চরম দারিদ্র্যের হার ছিল
১২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গত বছর ১০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে
আসে। বিশ্বব্যাংকের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে চরম
দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের বড় সুযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের আঘাত
এতটা ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠেছে যে, এখন দারিদ্র্য বিমোচনের
এই সাফল্যের গল্পটা আবার উল্টোপথে না হাঁটতে শুরু করে।
করোনায়
বিশ্বে প্রথম রাজপরিবারের কারো মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনার কারণে এবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন খোদ স্পেনের
রাজকন্যা মারিয়া তেরেসা। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি
বোরবন পার্মা রাজ পরিবারের সদস্য ছিলেন।
রাজকন্যার মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করেন তাঁর ভাই
প্রিন্স সিক্সটাস হেনরি। মারিয়া-ই বিশ্বে প্রথম
রাজপরিবারের কোন সদস্য যিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে
মৃত্যুবরণ করলেন।
১৯৩৩ সালে প্যারিসে জন্ম মারিয়ার। তবে জীবনের একটা বড়
অংশ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে কাটিয়েছেন। স্প্যানিশ
রাজনৈতিক আন্দোলন নিয়ে গবেষণা ও প্রচুর লেখালেখি
করেছেন।
তাঁর পরিবারকে স্পেনের ক্ষমতার কেন্দ্রে বসানোই ছিল
মারিয়ার কাজের প্রধান উদ্দেশ্য। তাই
বিয়ে-সংসার-সন্তানের পথে কোনওদিন পা বাড়াননি। কিন্তু
সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।
করোনার কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ছিয়াশির রাজকন্যা।
উল্লেখ্য রাজকন্যা মারিয়ার করোনায় মৃত্যুর খবর তখনই এলো
যখন ইংরেজ রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লসের
করোনায় আক্রান্তের খবরে গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন।
কি বলেন করোনায় প্রথম আক্রান্ত ওয়েই গুইজিয়ান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫৭
বছর বয়সী এক নারী। তিনি চিংড়ি বিক্রি করতেন। এক মাসের
চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়েছেন। তবে বলেছেন, চীন যদি
আগেভাগে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতো,
তাহলে এর বিস্তার রোধ করা সম্ভব হতো। ভারতের সরকারি
বার্তা সংস্থা পিটিআইকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে
অনলাইন জি নিউজ। এতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ধারণা করা
হয়, করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ এর উৎপত্তিস্থল হলো চীনের
উহান। সেখানেই প্রথম করোনা শনাক্ত করা হয় ৫৭ বছর বয়সী
ওই নারীর দেহে। তারপর থেকে এই ভাইরাস সংক্রমণে এখন
পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট
জার্নাল ওই নারীকে ওয়েই গুইজিয়ান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, তিনি হুনান সিফুড মার্কেটে চিংড়ি বিক্রি
করতেন। ১০ই ডিসেম্বর তার কাশি হয়। প্রথমে মনে করা
হয়েছিল তিনি সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত হযেছেন। তাই তিনি
স্থানীয় এক ক্লিনিকে যান। সেখানে তাকে ইঞ্জেকশন দেয়া
হয় বলে লিখেছে বৃটেনের অনলাইন মিরর। কিন্তু তাতে কাজ
হয় নিন। ওয়েই গুইজিয়ান ক্রমশ দুর্বল হতে থাকেন। একদিন
পরে তিনি উহানে ইলেভন্থ হাসপাতালে যান। তা সত্ত্বেও
তার মধ্যে অসুস্থতা বেশি বোধ হতে থাকে। তিনি ১৬ই
ডিসেম্বর ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় উহান ইউনিয়ন হাসপাতালে
যান। সেখানে তাকে বলা হয় তার অসুস্থতা খুবই কঠিন।
এরপরই ওই হাসপাতালে যান হুনান মার্কেটের অনেক মানুষ।
তাদের লক্ষণ অভিন্ন। অবশেষে ডিসেম্বরের শেষের দিকে
ওয়েই গুইজিয়ানকে কোয়ারেন্টিন করা হয়। এ সময়ই চিকিৎসকরা
করোনা ভাইরাস শনাক্ত করেন। তারা মনে করেন এই ভাইরাস ওই
সামুদ্রিক খাদ্য বিক্রয়কারী মার্কেট থেকে ছড়িয়ে পড়েছে।
চীনা সংবাদ মাধ্যম দ্য পেপার লিখেছে, এই নতুন করোনা
ভাইরাস মানবজাতির জন্য পঞ্চম মহামারি নিয়ে এসেছে। করোনা
ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা
আছে। তারা নতুন নতুন প্রজাতির শরীরে নিজেকে মানিয়ে নিতে
পারে। ফলে ভবিষ্যতে করোনা ভাইরাস আরো সরাসরি সংক্রমিত
হতে পারে। তাই একই রকম ভাইরাসের বিস্তারের বিরুদ্ধে
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি গ্রহণের জন্য মানবজাতির আরো
গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে দ্য পেপার। এতে তারা
উদ্ধৃত করেছে স্কুল অব লাইফ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল
সায়েন্সেস, স্কুল অব মেডিকেল সায়েন্সেস, ইউনিভার্সিটি
অব সিডনি এবং সাংহাই পাবলিক হেলথ ক্লিনিক্যাল
সেন্টারের প্রফেসর এডওয়ার্ড হোমস এবং স্কুল অব লাইফ
সায়েন্সেস, ফুডান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ঝাং ইংঝেনকে।
ওদিকে সামুদ্রিক খাদ্যের ওই মার্কেটটি করোনা ভাইরাস
ছড়িয়ে পড়ার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে। ততক্ষণে এক মাস কেটে গেছে। জানুয়ারির দিকে
সুস্থ হতে শুরু করেন ওয়েই গুইজিয়ান। তাকে কভিড-১৯
‘প্যাসেন্ট জিরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে,
তিনি ওই মার্কেটে মাংস বিক্রি হয় এমন একটি অংশের টয়লেট
ব্যবহার করেছিলেন। সেখান থেকেই তার শরীরে সংক্রমণ হয়েছে।
তিনি বলেছেন, তার সঙ্গে আরো যারা এ ব্যবসা করতেন
তাদেরও একই রোগ হয়েছে।
উহান মিউনিসিপ্যাল হেলথ কমিশন নিশ্চিত করেছে যে, প্রথম
কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছিলেন যে ২৭ জন রোগী তার মধ্যে
ছিলেন ওয়েই গুইজিয়ান। তিনি বলেছেন, সরকার যদি আরো আগে
ব্যবস্থা নিতো তাহলে এই ভাইরাসে মৃত্যু আরো কমিয়ে আনা
সম্ভব হতে পারতো।
বড় সংকটে শ্রমবাজার্ম্য
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে
শ্রমবাজারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা দেশে কর্মী প্রেরণ কমেছে।
আর বিগত কয়েকদিনে এ সংখ্যা শূন্যের কোঠায়। ফলে
দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতিতে
গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা রেমিট্যান্স খাত। ইতিমধ্যে
প্রায় সব দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া
হয়েছে। আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধের
সময়সীমা থাকলেও তা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন
সংশ্লিষ্টরা। অনেক দেশ নিজেরাই তাদের সীমান্ত
অভিবাসীদের জন্য সীলগালা করেছে। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন
দেশের ভিসা স্ট্যাম্পিং।
টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের কর্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
মুখ থুবড়ে পড়ছে বিদেশে কর্মী পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সি।
দাপ্তরিক কাজেই সীমাবদ্ধ তাদের কার্যক্রম। অনেক
প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতেও হিমশিম খাচ্ছে।
অন্যদিকে গত একমাসে বিদেশ থেকে প্রায় ৬ লাখ কর্মী ফেরত
এসেছেন। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা
শ্রমবাজারের জন্য একটি অশনি সংকেত।
তথ্যমতে, গতবছর ৭ লাখ ১৫৯ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিভিন্ন
দেশে গেছে। আর এ খাত থেকে বছরটিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১
লাখ ৫৫ হাজার ২১ কোটি টাকা। যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২৫
হাজার কোটি টাকা বেশি। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এ খাত চলতি
বছরের শুরুতেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় বিভিন্ন দেশে
শ্রমবাজারের এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ধারাবাহিকভাবে
কমতে শুরু করেছে বিদেশে কর্মী প্রেরণের হার।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে বিভিন্ন দেশে কর্মী
গেছে প্রায় ৭০ হাজার। যার মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক কর্মী
গেছে সৌদি আরবে। এ সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৮৬ জন। এ মাসে
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার কর্মী গেছে ওমানে।
এছাড়া সিঙ্গাপুরে ৩ হাজার ৪৩৯ জন, জর্ডানে ১ হাজার ৩৫৩
জন, কাতারে ১ হাজার ৩১৯ জন, কুয়েতে ৯৩৮ জন, সংযুক্ত
আরব-আমিরাতে ৩৪৩ জন, লেবাননে ১৮৮ জন, মরিশাসে ৫৬৮ জন,
দক্ষিণ কোরিয়ায় ৫৪ জন, ব্রুনাইয়ে ২২১ জন, মালয়েশিয়াতে
৫৪ জন কর্মী গেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে আরও ১২১৯ জন
কর্মী দেশ ছেড়েছেন। তবে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে
পড়ায় পরের মাস অর্থ্যাৎ ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মী গেছে ৫৭
হাজার ৬৭২ জন, যা আগের মাসের তুলনায় সাড়ে ১২ হাজার জন
কম। আর চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের মতো। তবে গত
কয়েকদিন ধরে বিদেশ কোন কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমনকি
থেমে গেছে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কাজও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে
বিদেশে কর্মী প্রেরণে নিয়োজিত এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম
প্রায় বন্ধের উপক্রম। শুধুমাত্র দাপ্তরিক কার্যক্রমে
সীমাবদ্ধ রয়েছেন। চাকরি হারানোর ভয়ে এ সেক্টরে কর্মরত
অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি
রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মী বলেন, আমার কাজই প্রবাসী
কল্যাণ ভবন এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ
ব্যুরো (বিএমইটি) কেন্দ্রীক। দৈনন্দিন ফাইলপত্র নিয়ে
ছুটাছুটি করতে হয়। এখন কাজই যদি না থাকে তাহলে আমাকে
অফিস কেনো বেতন দেবে। এদিকে বিভিন্ন দেশের ভিসা
স্ট্যাম্পিং বন্ধ থাকায় এবং বিমান ফ্লাইট চলাচল না
করায় নতুন করে কোন কর্মীও পাঠানো হচ্ছে না। ফলে এক
ধরণের স্থবিরতা এসেছে জনশক্তি প্রেরণ সেক্টরে। অন্যদিকে
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন
বিএমইটি পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)।
গত ১৮ই মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের
প্রেক্ষিতে ৩১শে মার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে অনেক
কেন্দ্রের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও অফিস চলছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল
রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী
নোমান বিশ্বের সার্বিক অর্থনীতি অন্যান্য সেক্টরের মতো
শ্রমবাজার পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন,
দাপ্তরিক ছাড়া এখন রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তেমন কোন
কাজ নেই। তবে বড় সমস্যা হলো আমরা নিজেদের টাকা দিয়েই
চলি। গার্মেন্টস্ যেমন ব্যাংকের লোন দিয়ে চলে,
সেক্ষেত্রে অনেক সময় বাড়িয়ে মেকআপ করে নেয়। কিন্তু
আমাদের বিজনেস টোটালি নিজেস্ব টাকা দিয়ে চলে। আর
ইতিমধ্যে যে লোকগুলোর পেছনে ইনভেস্ট হয়ে গেছে অথচ
পাঠাতে পারিনি সেক্ষেত্রে অর্থের বড় সংকট তৈরি হয়েছে।
কারণ তারা না গেলে তো আমাদের টাকাটা দিবে না। সত্যিকার
অর্থে আমরাই বেশি সংকটে। কারণ টাকাগুলো আটকে গেছে। এখন
এই অবস্থা যদি দীর্ঘদিন চলে তাহলে অফিস কিভাবে চলবে।
এটা একটা চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত: আমাদের সঙ্গে যারা কাজ
করছে তাদেরকে আমরা কিভাবে ট্রিট করবো। এ জায়গাতে যদি
সরকার না এগিয়ে আসে তাহলে সেক্টরটি মুখ থুবড়ে পড়বে।
বায়রা মহাসচিব বলেন, অফিসের কার্যক্রম অনুযায়ী ব্যাংক
লোন পেলে চ্যালেঞ্জটা উৎরানো যেতো। এছাড়া সরকার সব
সেক্টরে প্রণোদনা দেয়ার চিন্তা করছে, সেক্ষেত্রে
আমাদেরও দিলে ব্যবসা সচল থাকতো। তিন মাস ধরে এই অবস্থা
চললে সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
BHRC চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের উদ্যোগে সচেতনতামূলক
কার্যক্রম
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের
উদ্যোগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক লিফলেট
এবং জনসাধারনের মাঝে মাস্ক বিতরন কর্মসূচি আজ ২৪ মার্চ
মঙ্গলবার দিনব্যাপী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় ডেপুটি গভর্ণর ও
চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,
সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান খাঁন, সহ সভাপতি লায়ন মোঃ
ইব্রাহিম, সহ সভাপতি হুমায়ন কবির মিঠু, এ বি এম রাসেল
চৌধূরী, যুগ্ন সম্পাদক হাজী বাবর আলী, রিয়াজুল ইসলাম
ভুটো, সাহাবুদ্দিন জাহেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল
হাসান, অর্থ সম্পাদক হাজী এয়াকুব মিয়া, সহ অর্থ
সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, দপ্তর সম্পাদক জাহিদ
তানসির, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন তুহিন,
মহানগরের নেতৃবৃন্দ। এসময় সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর
আলম বলেন, করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া একটি
ভাইরাস।এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে চাই সচেতনতা।
তিনি আরো বলেন, মাস্ক বিতরণ ও লিফলেট বিতরণ করার মুখ্য
উদ্দেশ্যই হলো সমাজের গরীব, দুখী, অসহায় মানুষকে আরো
সচেতন করা। আমরা সকলেই যার যার স্থান থেকে আতংকিত না
হয়ে সর্তক থাকবো। এছাড়াও আরো অংশগ্রহন করেন সংগঠনের
পাহাড়তলী থানার সভাপতি আলহাজ সোলায়মান হাসান হাসু,
ইলিয়াছ চৌধূরী, আনসারুল ইসলাম, ডবলমুরিং থানা কমিটির
সাধারন সম্পাদক মোঃ আবদুর রাজ্জাক, আইন বিষয়ক সম্পাদক
এডভোকেট আফরোজা রুনা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদীকা ফাতেমা
নাসরিন প্রমি প্রমুখ। সকাল ১০ টা থেকে অলংকার মোড় থেকে
শুরু হয়ে নগরীর আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, চৌমহুনী, কোতোয়ালী
নিউমার্কেট সহ বিভিন্ন এলাকায় বিতরণের মাধ্যমে দিনব্যপী
কর্মসুচীর সমাপ্তি করা হয়।
মানব শরীরে নিষিদ্ধ ড্রাগের মতো
কাজ করে মোবাইলের নেশা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে,বাসে-ট্রামে একটা লেখা প্রায়ই
চোখে পড়ে গোপন নেশা ছাড়ুন । কদিন পরে যদি দেখেন লেখা
আছে গোপন মোবাইলের নেশা ছাড়ুন , তাহলে অবাক হবেন না।
কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইলের নেশা আসলে বেশ কিছু
নিষিদ্ধ নেশার ড্রাগের মতোই কাজ করে আমাদের শরীরে,
মস্তিষ্কে।
আইকিউ লেভেল-এ সরাসরি প্রভাব ফেলে এই মোবাইলের ব্যবহার।
মোবাইলের ক্ষতিকর আলোর জন্য আমাদের মস্তিষ্কের ধূসর
থকথকে পদার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই সমস্যা
আরও ভয়ঙ্করভাবে দেখা দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে।
সকালে চোখ খোলা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়া অবধি
বারবার আমরা এই যন্ত্রের দিকে তাকিয়ে থাকি। রাস্তায়
চলতে চলতে, কারও সঙ্গে কথা বলছি মুখোমুখি, খেতে বসে
এমনকি টয়লেটে গিয়ে– কোনও সময়েই এই যন্ত্রটিকে আমরা দূরে
সরিয়ে রাখতে পারি না।
মোবাইলের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করার সময়
হেইডলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জার্মান গবেষক মোট ৪৮
জনের মস্তিষ্কের এমআরআই রিপোর্ট দেখেন। তাঁদের মধ্যে
২২ জন মোবাইল ফোনে আসক্ত ছিলেন। দেখা গেছে, তাঁদের
মস্তিষ্কের ধূসর থকথকে পদার্থের ঘনত্বে প্রভাব পড়েছে।
সেই প্রভাব এতটাই যে, ওই ২২ জনের দৃষ্টিশক্তি, কথা বলা,
আবেগ সবকিছুরই ক্ষমতা বাকিদের চেয়ে কমে গেছে। এটা খুবই
আশ্চর্যজনক।
আপনি কি জানেন কেন আপনি মোবাইল ফোন দেখলে খুশি হন? কেন
নোটিফিকেশন এলে বাকি সবকিছু ছেড়ে ওতেই মন দেন? আপনি
নেশার কোনও ওষুধ খেলে বা কোনও নেশা করলে সাধারণত আপনার
স্নায়ু দ্রুত গতিতে চলে। মোবাইলের নোটিফিকেশনের
ক্ষেত্রেও একই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
কারণ এ সময় আপনার শরীর অধিক পরিমানে ডোপামিনের মতো
হরমোন তৈরি করতে থাকে। সেটা আপনার স্নায়ুকে শিথিল করে
দেয় অনেকটাই। নেশা করলে যেমন অনেক সময়েই আপনি কী বলছেন
, কী করছেন সে খেয়াল থাকে না বা অনেকেরই সে জ্ঞানই চলে
যায়, তেমনই এই মোবাইলের নেশাতেও অনেক সময়েই আপনি কোথায়
আছেন, কী করছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন, সে খেয়াল থাকে
না।
এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়
* বেশ কিছু মোবাইল কেনার সময়েই দেখবেন, তাতে বিল্টইন
কিছু ফিচার থাকে, তাতে সারাদিনে কতটা ব্যবহার করলেন
ফোনটি, সেটার হিসেব রাখতে পারবেন। এটার দিকে লক্ষ্য
রেখে সারাদিনের মোবাইল ব্যবহারের সময় কিছুটা কমিয়ে ফেলা
যায়। মোবাইলের ব্যবহার যত কমাবেন, ততই আপনার শরীরের
জন্য সেটা ভালো। চেষ্টা করবেন মোবাইলের ব্যবহার যতটা
সম্ভব কমিয়ে দিতে।
* সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপগুলোর বদলে কিছু স্বাস্থ্য
সম্পর্কিত অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলতে পারেন। ফলে নিজেকে
ফিট রাখলে, রোজ হাঁটলে বা ক্যালোরি ঝরালে আপনারই ভালো
লাগবে। শুধু ঘাড় গুঁজে বসে বসে মোবাইল ঘাঁটবেন না
সেক্ষেত্রে আর।
* ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিতে পারেন। প্রথমে হয়তো
খুবই কষ্ট হবে, তবে একবার অভ্যাস বদলে ফেলতে পারলে আর
সমস্যা হবে না।
* ফোনের আলো বা ব্রাইটনেস কমিয়ে দিতে পারেন। তাহলে আর
অত বেশিবার ফোনের দিকে চোখ যাবে না। আপনার মোবাইলের
নেশা কাটাতে সুবিধাই হবে।
গার্মেন্ট শিল্পে করোনা
বিপর্যয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে একের পর এক অর্ডার বাতিল
হচ্ছে। একদিকে কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ সংকট, অন্যদিকে
পুরনো অর্ডার বাতিল ও নতুন কোনো অর্ডার না আসায় চরম
বিপর্যয়ে পড়েছে তৈরি পোশাক শিল্প খাত। ইতিমধ্যেই ঢাকার
কিছু পোশাক কারখানার প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার এবং
চট্টগ্রামের ৩৭টি গার্মেন্টসের ২১ মিলিয়ন ডলারের
অর্ডার বা ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এই বাতিল ও
স্থগিতাদেশের মধ্যে ২৫ শতাংশ গার্মেন্ট এক্সেসরিজ
পণ্যের অর্ডারও রয়েছে। সূত্র মতে, করোনাভাইরাসের কারণে
কিছু দিন ধরে তৈরি পোশাক শিল্পে চলমান অর্ডারের ওপর
স্থগিতাদেশ আসছিল। গত কয়েক দিন ধরে অর্ডার বাতিলের
সিদ্ধান্ত আসা শুরু করেছে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও
নামিদামি ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে। ফলে দিশেহারা অবস্থায়
আছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। অর্ডার বন্ধ হওয়ায়
ঢাকা-চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া
হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ
চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে ৭০০
কারখানা থাকলেও চালু রয়েছে ২৫০টি। এর মধ্যে করোনার
প্রভাব যাচাই করতে গিয়ে ১০৫টি কারখানায় জরিপ চালানো হলে
সেখান থেকে উঠে আসে ভয়াবহ চিত্র। জরিপে দেখা গেছে, গত
কয়েক দিনে ২৫টি পোশাক কারখানায় ১৫ মিলিয়ন ডলার এবং
১২টি কারখানায় ৬ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে।
বাকি কারখানায় আরও অন্তত ৩০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার
বাতিল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে
চট্টগ্রামেই ৫০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে।
এদিকে বিকেএমইএর একটি সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের
প্রভাবে দেশে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় গড়ে ১০০ মিলিয়ন ডলারের
বেশি অর্ডার বাতিল হচ্ছে। গত মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে
বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪টি কারখানার ১০৪
মিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি
পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য,
স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে
করোনাভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, ফ্রান্স ও ইতালিতে
জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। দেশগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয়
পণ্য ছাড়া অন্য দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
গ্যাপ, নাইকি, ইন্ডিটেক্স, কলাম্বিয়া স্পোর্টসওয়্যার,
রিফোরমেশনের মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ঘোষণা দিয়ে
বিভিন্ন দেশে তাদের বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করেছে। করোনার
ধাক্কায় চট্টগ্রামের ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলের আড়াই
লাখ ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে।
এ ছাড়া ঢাকার স্কয়্যার নিট কম্পোজিটের ২২ লাখ ডলারের
অর্ডার বাতিল ও স্থগিত করেছে দুটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া বিটপি গ্রুপের চার লাখ ৬৬ হাজার ডলার,
অ্যাপেক্স হোল্ডিংসের ৪০ লাখ পিস পোশাক, আমান গ্রাফিকস
অ্যান্ড ডিজাইনের এক লাখ ১৩ হাজার ডলার, আমান নিটিংয়ের
এক লাখ ৯৭ হাজার ডলার, স্কাইলাইন গার্মেন্টসের আট লাখ
৫০ হাজার ডলার এবং রুমানা ফ্যাশনের ৯০ হাজার পিস
পোশাকের অর্ডার বাতিল ও স্থগিত করেছে বিদেশি
ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ অবস্থায় গার্মেন্টস এক্সেসরিজ
প্রস্তুতকারকরাও পড়েছেন বিপর্যয়ের মুখে। দেশের চাহিদার
৯০ শতাংশ গার্মেন্ট এক্সেসরিজ উৎপাদন হয় এখানেই।
আমদানিনির্ভর কাঁচামালের ওপর ভিত্তি করে হ্যাংগার,
পলিব্যাগ, কার্টন, ইলাস্টিক, সুইং থ্রেড থেকে শুরু করে
সব এক্সেসরিজ এখন দেশেই উৎপাদন হয়। যে পরিমাণ পোশাকের
অর্ডার বাতিল ও স্থগিত হয়েছে সেখানে ২৫ শতাংশই
এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক বিনিয়োগ রয়েছে।
ব্যাংক এলসি ও ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা এ
এক্সেসরিজ কারখানার মালিকরা এখন ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন
বলে জানান বিজিএপিএমইএ (বাংলাদেশ গার্মেন্ট এক্সেসরিজ
সমিতির)-এর প্রথম সহসভাপতি খোন্দকার লতিফুর রহমান আজিম।
তিনি বলেন, এ বৈরী অবস্থা মোকাবিলার জন্য আমাদের সবাইকে
শক্ত হতে হবে।
সময়
দ্রুত হারিয়ে ফেলছি
মুহাম্মদ ইউনূস
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আমি শুধু সময়ের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি।
প্রতি মুহূর্তে যেন আমরা সুযোগ হারিয়ে ফেলছি। এখনো
বিষয়টা বুঝে উঠতে পারলে আমাদের সামনে যে রকমের যুদ্ধ
আমরা সে রকমের প্রস্তুতি নিতে পারতাম। যুদ্ধটার
চেহারাটা যেন আমরা কেউ দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে
পারছি না। চেহারাটা পরিষ্কার বুঝতে পারলে সহজে
সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম যে জীবনের ওপরেই যখন হামলা,
জীবন বাজি রেখেই এখন লড়াইতে নামবো। আত্মসমর্পণের কোনো
সুযোগ এখানে নেই।
করোনা রোগের বিস্তারের গতি দেখলে যে কোনো মানুষ থ হয়ে
যাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেজিং অফিসকে চীন একটা
অজানা রোগের কথা জানিয়েছিল ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে। আজ
মার্চের ২২ তারিখ।
অর্থাৎ ৮২ দিন আগে। এই ৮২ দিনে কিন্তু এই রোগ সারা
দুনিয়া তছনছ করে ফেললো। তার মোকাবিলার জন্য এখন
সেনাবাহিনী তলব করতে হচ্ছে। সমস্ত কিছু অচল করে মানুষকে
ঘরের ভেতর দিনরাত কাটাতে বাধ্য করছে। সরকার তার
মোকাবিলার জন্য ট্রিলিয়নকে ট্রিলিয়ন ডলার বরাদ্দের
ঘোষণা দিচ্ছে। সরকার প্রধানরা সারাক্ষণ টেলিভিশনের
সামনে এসে মানুষকে প্রতিটি পদক্ষেপ ব্যাখ্যা করছে।
পার্লামেন্টে সকল দল একমত হয়ে আইন পাস করছে। দেশে জরুরি
অবস্থা ঘোষণা করছে। সারা দুনিয়া ক্রিকেটের স্কোর
বোর্ডের মত করোনার স্কোর বোর্ড দেখছে। অতীতে কোনো
বিশ্বযুদ্ধও মানুষকে এত ভাবিয়ে তুলতে পারেনি। অথচ
মাত্র ৮২ দিনের ব্যাপার। দুনিয়ার এক মাথা থেকে আরেক
মাথা পর্যন্ত সে বিস্তৃত হয়ে কোটি কোটি মানুষকে কাবু
করে ফেলেছে। সে যে দেশেই ঢুকছে সে দেশকেই নাস্তানাবুদ
করে দিচ্ছে।
আমাদের কপাল ভালো এই ৮২ দিনের মহামূল্যবান অভিজ্ঞতা
আমরা অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে পেয়ে গেছি। এই অভিজ্ঞতা
যদি আমরা কাজে না লাগাই তাহলে আমরা আমাদের কপালকে দূষতে
পারবো না। দূষতে হবে আমাদের নির্বুদ্ধিতাকে, বালিতে
আমাদের মাথা গুঁজে রাখাকে।
একটা দেশে ঢোকার পরপর সে কত শতাংশ মানুষের মধ্যে
সংক্রমিত হয় সেটা জার্মানীর চ্যান্সেলরের ভাষণ থেকেই
বুঝা যায় স্পষ্টভাবে। জার্মানীর মানুষ যখন করোনার
চেহারার সঙ্গে পরিচিত হতে পারেনি, এমন এক সময়ে
চ্যান্সেলর মার্কেল জাতিকে জানালেন যে এই রোগ শিগগিরই
৭০ শতাংশ জার্মান নাগরিকের মধ্যে সংক্রমিত হবে। কী
সাহসী এবং স্পষ্ট বক্তব্য। মার্চ ২০ তারিখে
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর তার ভাষণে জনগনকে জানিয়ে দিলেন
যে আগামী দু’মাসে ক্যালিফোর্নিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা
২.৫ কোটিতে পৌঁছাবে। অর্থাৎ তার রাজ্যের ৫৬% মানুষ ২
মাসের মধ্যে আক্রান্ত হবে। ক্যালিফোর্নিয়াতে প্রথম রোগী
শনাক্ত হয়েছিল জানুয়ারির ২২ তারিখে। মাত্র দু’মাস আগে।
মাত্র চার মাসে একজন রোগী থেকে আড়াই কোটি রোগীতে গিয়ে
পৌঁছাবে। প্রচণ্ড তার গতি। এই তার ধর্ম। তার গতিপথ
পাল্টানোর কোনো ব্যবস্থা এখনো কেউ করতে পারেনি। আমাদের
লড়াই হবে তার গতিপথ থেকে নিজেকে আড়াল করা। যারা যত
সফলভাবে তা করতে পারবে তারা তত আঘাত কমাতে পারবে।
সবচাইতে সফলভাবে একাজটা করতে পেরেছে এশিয়ারই কয়েকটি
দেশ। চীন একাজ পেরেছে, সেখানে এরোগের সূত্রপাত হয়েছিল
৮২ দিন আগে। এখন সেখানে এরোগকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে।
তারপর সফল হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান, হংকং,
এবং সিঙ্গাপুর। সফল দেশগুলোর কৌশল ছিল একটাই। যে যখনই
আক্রান্ত হচ্ছে তাকে চিহ্নিত করো। তাকে আলাদা যায়গায়
রাখো। তাহলে সংক্রমণ থেকে অন্যরা রেহাই পাবে। সংক্রমণ
থামাতে পারলেই রোগের বিস্তার হতে পারবে না। একজন থেকে
২ জনও যদি সংক্রমিত হয় তাহলে হু হু করে সংখ্যা বেড়ে
যায়। একটা পরিসংখ্যান দিচ্ছি, একজন যদি প্রতি ৫ দিনে
২.৫ জনকে আক্রান্ত করে তাহলে ৩০ দিনে সে একাই ৪০৬ জনকে
আক্রান্ত করবে।
এশিয়ার এ সকল দেশগুলো তার সমস্ত শক্তি দিয়ে
আক্রান্তদের শনাক্ত করেছে এবং তাদেরকে অন্যদের থেকে
দূরে রেখেছে। এর ফলে তাদের দেশের বেশি লোক আক্রান্ত
হবার সুযোগ পায়নি। এখন এসব দেশে করোনার উৎপাত থেমে গেছে।
যারা একাজে গাফিলতি করে ভীষণ বিপদে পড়েছে তারা হলো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, এবং সুইজারল্যান্ড।
এখন তাদের অবস্থা সামালের বাইরে।
এনজিওর
ঋণগ্রহীতা: কিস্তি না দিলেও জুন পর্যন্ত খেলাপি করা
যাবে না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কিস্তি না দিলেও জুন পর্যন্ত খেলাপি করা যাবে না।
দেশের যেসব এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা
ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন, আগামী জুন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি
দিতে না পারলে তাদের খেলাপি করা যাবে না। রোববার
ক্ষুদ্রঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) থেকে এ
সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে। এটি সংশ্লিষ্ট
প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে
বিশ্ব বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর
নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দেশের সার্বিক অর্থনীতিতেও এর
নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে
ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে যারা ব্যবসা
করছেন, তাদের ব্যবসায়ও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এতে
অনেকে নিয়মিত ঋণ শোধ করতে না-ও পারেন। ফলে স্বাভাবিক
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জুন পর্যন্ত কোনো গ্রাহক
যদি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারেন, তাহলে তাদের
ঋণকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। বিদ্যমান
পরিস্থিতিতে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলেও ঋণকে নিয়মিত
রেখে প্রয়োজনে নতুন ঋণ দিতে হবে। তবে কোনো ঋণের অর্থ
পরিশোধিত হলে ওইসব ঋণের মান যথাযথভাবে উন্নীত করা যাবে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও একটি সার্কুলার জারি করে
ব্যাংকিং খাতের কোনো গ্রাহক জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন
পর্যন্ত কোনো ঋণের কিস্তি বা ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে
তাদেরকে খেলাপি করা যাবে না- এ মর্মে একটি সার্কুলার
জারি করে।
Top
করোনার
দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যা করল জার্মানির মন্ত্রী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের জেরে
জার্মানির এক মন্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। থমাস শেফার
নামের ওই মন্ত্রী জার্মানির হেসে প্রদেশের অর্থমন্ত্রী
ছিলেন।
শনিবার ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং মাইনজের মধ্যবর্তী হোচাইম শহরে
হাইস্পিড ট্রেন লাইনের উপর থেকে শেফারের ছিন্নভিন্ন
দেহটি উদ্ধার হয়।
প্যারামেডিকসের একটি দলই তার দেহটি উদ্ধার করে। গোটা
দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রথমে তাকে শনাক্ত করা
যায়নি।
ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ
দিয়েই তিনি আত্মঘাতী হন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে,
করোনার প্রকোপ থেকে অর্থনীতিকে কিভাবে বাঁচাবেন তা নিয়ে
দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন ৫৪ বছরের শেফার। করোনা ঠেকাতে
আর্থিক সহায়তা নিয়ে সম্প্রতি বিবৃতিও দিতে দেখা যায়
তাকে। হেসে প্রদেশের প্রধান ভলকার বুফিয়ের শেফারের
মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন,
অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছি
না। দীর্ঘ ১০ বছর হেসের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে
ছিলেন শেফার। কীভাবে করোনা পরিস্থিতির মোকাবেলা করা
যায়, তা নিয়ে দিন-রাত তিনি কাজ করছিলেন বলেও জানান
বুফিয়ের। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তিনি।
এই কঠিন সময়ে তার মতো একজনকে খুব দরকার ছিল আমাদের।
Top
ব্যতিক্রমী মমতা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় যে চিকিৎসক, নার্স ও
স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষের সেবা দিচ্ছেন, তাদেরকে
হাসপাতালের কাছাকাছি হোটেল, গেস্টহাউসে রাখার ব্যবস্থা
হচ্ছে বলে বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। দেশ পুরো লকডাউন হওয়ায় কোনো
যানবাহন না থাকায় অনেক চিকিৎসক, নার্স ও
স্বাস্থ্যকর্মীদের হেঁটে বা অন্যের সাহায্য নিয়ে
হাসপাতালে আসতে হচ্ছে। এই সমস্যা মেটাতে সায়েন্স সিটির
কাছে আইটিসি সোনার, চৌরঙ্গীর কাছে হিন্দুস্তান
ইন্টারন্যাশনালের মতো হোটেল রাজ্য সরকার ভাড়া নিয়েছেন
বলে জানা গেছে। অনেক গেস্ট হাউসও সরকার সাময়িকভাবে
অধিগ্রহণ করেছে। এই সব জায়গায় চিকিৎসক, নার্স ও
স্বাস্থ্যকর্মীদের রাখা হবে। তাদের খাওয়া-দাওয়া এবং
আনা-নেয়ার দায়িত্বও সরকার পালন করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী
জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই কলকাতা ও শহরতলীতে ভাড়ায় থাকা
অনেক চিকিৎসক ও নার্সকে করোনার ভয়ে বাড়ি মালিকরা ঘর
ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। এই ব্যবস্থার কোনো নজির যেন তৈরি
না হয় সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
পাশাপাশি তিনি মানবিক হওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্যের
গরিব পরিবারগুলোকে এক মাসের রেশন একবারে দিয়ে দেয়ার
নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এজন্য রেশন
দোকান প্রতিদিন খোলা থাকবে। এছাড়াও যেসব সামাজিক পেনশন
চালু রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে দু’মাসের পেনশন একসঙ্গে
দিয়ে দেয়া হবে। গত বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায় সোস্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলার ওপর
জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সোস্যাল ডিসট্যান্সিং মানে
মানুষকে আলাদা করে দেয়া নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, অযথা
আতঙ্কিত হয়ে জিনিস মজুত করবেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয়
জিনিসের জোগান নিরবচ্ছিন্ন থাকবে। এ ব্যাপারে পুলিশ ও
প্রশাসনের অধিকারকদের তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। এদিন
মুখ্যমন্ত্রী সকলকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, কারও জ্বর
হতেই পারে। তাই বলে তাকে সামাজিকভাবে বয়কট করা চলবে
না। কেউ খেতে না পেলে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে
বলেও তিনি জানিয়েছেন। করোনা মোকাবিলায় রাজ্য ২০০ কোটি
রুপির তহবিল গঠন করলেও আরো অর্থের প্রয়োজন জানিয়ে
মুখ্যমন্ত্রী আপদকালীন রিলিফ ফান্ডে অনুদান দেবার জন্য
সাধারণ মানুষের কাছে এবং প্রবাসীদের কাছে আবেদন
জানিয়েছেন।
জনপ্রতিনিধিদের অর্থ বরাদ্দ: করোনা মোকাবিলায় হাসপাতাল
ও চিকিৎসার পরিকাঠামো উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট
এবং বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা তাদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল
থেকে অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বামফ্রন্টের
বিধায়করা তাদের বিধায়ক তহবিল থেকে ন্যূনতম ১০ লাখ রুপি
করে অর্থ বরাদ্দের কথা জানিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে ওই সিদ্ধান্তের কথা
জানিয়ে দিয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি
বলেছেন, তাদের বিধায়ক তহবিল থেকে এই বরাদ্দের কথা
সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে।
বিশ্ব যেন এক মৃত্যুপুরী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নিউইয়র্কে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইতালি স্পেনের পর
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা ভয়াবহ । সারা বিশ্বে মৃত্যু ৪৫
হাজারের বেশি, আক্রান্ত সাড়ে ৮ লাখ।
মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে গোটা বিশ্ব এখন
মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এ ভাইরাস এখন আর ১৯৯ দেশ ও
অঞ্চলে সীমাবদ্ধ নেই, গ্রাস করেছে সমগ্র বিশ্বকে। এত
দিন যেসব দেশ করোনামুক্ত ছিল, এখন সেসব দেশও
আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রদেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত
করেছে এ ভাইরাস। সেখানে প্রতি ৯ মিনিটে একজন করে মারা
যাচ্ছেন। এমনকি সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশিদের মধ্যে
এক দিনেই মারা গেছেন আটজন। আগেও মারা যান ১৩ বাংলাদেশি।
গতকাল সন্ধ্যায় পাওয়া ওয়ার্ল্ডোমিটার, আলজাজিরা ও
সিএনএনের খবর অনুযায়ী বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের
সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সোয়া ৮ লাখে, মোট মৃতের সংখ্যা
প্রায় আড়াই হাজার। ১২ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন
আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫০০, স্পেনে ৫ সহস্রাধিক,
জার্মানিতে দেড় হাজার, ইরানে সাড়ে ৩ হাজার এবং
বেলজিয়ামে সহস্রাধিক। এ ছাড়া এ সময় পর্যন্ত ইরানে মারা
যান ১১৭ জন, স্পেনে ৮১২ জন।
বাংলাদেশিদের মৃত্যু : নিউইয়র্ক যেন মৃত্যুপুরীতে
পরিণত হচ্ছে। লাগামহীনভাবে সংক্রমণ ঘটছে করোনাভাইরাসের।
নিউইয়র্কে গত ২৪ ঘণ্টায় আট বাংলাদেশি মারা গেছেন।
নিউইয়র্ক প্রবাসী ফটো সাংবাদিক স্বপন হাই করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের একটি হাসপাতালে
গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ১টায় মারা গেছেন। ঢাকায়
প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়, মানবজমিনের সাবেক ফটো
সাংবাদিক স্বপন কিডনি সমস্যার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে
ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি করোনায় আক্রান্ত
হয়েছিলেন। ভয়াবহতায় হতবিহ্বল বাংলাদেশি কমিউনিটির
মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্থানীয়
প্রশাসনকে। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র সতর্ক করেছেন, আগামী
এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম।
দেশটির করোনা প্রতিরোধে গঠিত টাস্কফোর্সের একজন শীর্ষ
কর্তা জানিয়েছেন, করোনায় প্রাণহানি ২ লাখে পৌঁছাতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ব্যাগে করে
লাশ হিমায়িত ট্রাকে তোলা হচ্ছে। সংখ্যা এত যে তা
মোকাবিলা কঠিন হচ্ছে। নিউইয়র্কের এমন পরিস্থিতি আমি আগে
দেখিনি।’ ইতালিতে শত চেষ্টায়ও আটকানো যাচ্ছে না
মৃত্যুর মিছিল। বেঁচে থাকার প্রাণপণ চেষ্টায় আক্রান্তরা।
একজন বলছেন, ‘টানা নয় দিন অক্সিজেন ব্যবহার করেছি। নিজে
চেষ্টা করলেও স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারিনি।
দিনগুলো শেষই হতে চাচ্ছে না।’ স্পেন, ফ্রান্স,
যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতেও লাশের মিছিল। দিনরাত এক করে
দিয়েও পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন
চিকিৎসাকর্মীরা। চীনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও
দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের আশঙ্কায় সতর্ক থাকার কথা
জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে ৩৫ বাংলাদেশি মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়ে
চিকিৎসাধীন আছেন আরও অনেকে। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ
সপ্তাহে চীনের উহান শহরে ছড়িয়ে পড়া কভিড-১৯ ভাইরাস সারা
বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর বিদেশে থাকা নাগরিকরাও এতে
আক্রান্ত হয়েছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ঠিক
কত, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে দিতে পারেনি
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ এক আজব জমানা
মোহাম্মদ আবুল হোসেন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
এ এক আজব জমানা। মানুষ মরলে কেউ কাছে আসে না। পাড়ার
মানুষ তো দূরের কথা, নিজ ঘরের মানুষই দূরে থাকে। লাশ
দাফনের মানুষ নেই। অনেকটা গোপনে, সঙ্গোপনে লাশ দাফন করা
হয়। পাড়া পড়শিরা কাঁদেন কিনা জানা যায় না। অনলাইন
মানবজমিন-এ একটি ভিডিওসহ রিপোর্ট পড়ে ও দেখে আত্মা
কেঁপে উঠেছে। এক স্বামী ‘নীরবে দাফন করলেন স্ত্রীকে’।
ইন্টারনেট দুনিয়ায় দেখেছি, বিদেশে এম্বুলেন্সে করে
কফিনে লাশ নিয়ে দাফন করা হচ্ছে। সেখানে কফিনটিও কেউ
স্পর্শ করছেন না। কফিনে রশি লাগিয়ে টানছেন একজন। দু’জন
দুটি লাঠি বা গাছের ডালের মতো কিছু দিয়ে কফিনকে আগলে
দিচ্ছেন। অনেকক্ষণ কসরত করে রশিতে এক হ্যাঁচকা টানে
লাশ টেনে নামালেন কবরে। ধপাস করে কবরের ভিতর গিয়ে পড়ল
কফিন। কবরের ভিতর থেকে ধুলো উড়ে অন্ধকার হয়ে গেল
চারপাশ। এভাবে লাশ কবরে নামাতে দেখিনি কখনো। কফিন
স্পর্শ না করার একটিই উদ্দেশ্য, তারা যেন করোনা ভাইরাসে
সংক্রমিত না হন। ইউটিউবে দেখা সেই দৃশ্যের সঙ্গে অনেকটা
মিলে গেছে খিলগাঁও তালতলা কবরস্তানে ওই নারীর দাফন।
রিপোর্ট অনুযায়ী তার নমুনা সংগ্রহ করেছে আইইডিসিআর। তা
পরীক্ষা করা হবে। ওই মরহুমা চলে গেছেন, আসুক আস্তে
সুস্থে রিপোর্ট। এই নমুনা কি আগে সংগ্রহ করা যেত না?
তিনি মারা যাওয়ার আগে রিপোর্ট পাওয়ার কোনোই উপায় ছিল
না? যখন ওই নারী আল্লাহর দরবারে হিসাবের খাতা নিয়ে
হাজির, তিনি পাড়ি দিয়েছেন ওপাড়ে, তখন শুনতে হচ্ছে,
রিপোর্ট আসবে। এ কোন জমানায় এসে পড়েছি আমরা।
চারদিকে চাপা আর্তনাদ। মানবাত্মা কাঁদছে। যেন এক একটি
বাড়ি এক একটি জেলখানা এই ঢাকা শহরে। শুধু বাড়ি নয়,
প্রতিটি ফ্লোর এক একটি সেলে পরিণত হয়েছে। এর মাঝে
নিজেদের বন্দি করে আমরা শুধু দেখছি মৃত্যুর মিছিল। না,
সরকারিভাবে এসব মৃত্যুর বেশির ভাগকেই করোনা বলে
স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রিপোর্ট ছাপা
হচ্ছে, আইসোলেশনে থাকা শিশু, নারী বা বৃদ্ধের মৃত্যু।
আবার কখনো পত্রিকাগুলোতে বা অনলাইনে খবর আসছে করোনা
ভাইরাসের সিম্পটম বা লক্ষণ নিয়ে মারা গেছেন কেউ কেউ।
এসব মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি করোনায় তা কে
নির্ধারণ করবে! পেশাগত দৃষ্টিতে যখন উপর থেকে চোখ মেলি,
তখন সারাবিশে^ এক ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পাই। করোনা
আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে অসংখ্য মানুষ। তাদের
ভিডিও দেখে অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। লাশ দাফনের জন্য
মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না- এ কোন জমানায় এসে পড়েছি আমরা।
মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ হয়েছে অনেক দেশে। পবিত্র মক্কা,
মদিনায় কড়াকড়ি। সেখানে মূল চত্বরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা।
ইসলামের সুতিকাগার, যেখানে দিনরাত ২৪ ঘন্টা মানুষে
মানুষে সয়লাব, হাঁটার মতো পথ পাওয়া কষ্ট, সেই মক্কা,
পবিত্র কাবা জনশূন্য প্রায়। মসজিদ বন্ধ করে দিতে হয়,
এমন পরিস্থিতি কি পৃথিবীতে এসেছে কখনো! এ দৃশ্যও
আমাদেরকে প্রত্যক্ষ করতে হচ্ছে। শুধু মসজিদ নয়, সব
ধর্মের উপাসনালয়ও বন্ধ। এ কোন জমানায় এসে পড়েছি আমরা!
বাতাসে মড়াকান্না। প্রতিটি মানুষের বুকের ভিতর কান্না।
নিঃশ^াস নিতেও ভয়। যদি বাতাসে করোনা ভাইরাস ঢুকে পড়ে
শরীরে! যারা বেঁচে আছি, অন্তত বাতাসে নিঃশ^াস নিতে
পারছি, তাদের মধ্যে আমরা সবাই জানি না, নিজে সুস্থ আছি
কিনা। একটা কাশি হলেই বুকে উথাল-পাতাল শুরু হয়ে যায়।
একটু গা গরম হলে মৃত্যুভয় গ্রাস করে। সূর্য ওঠে, সূর্য
ডোবে। সময় পেরিয়ে যায়। এক একটি দিন, এক একটি রাত যেন
দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে। তার মাঝে বাড়ি থেকে মায়ের ফোন- বাবা
কেমন আছিস!
মাকে সত্যি বলতে পারি না। বলি- ভাল আছি মা। চিন্তা করো
না। তবু মায়ের মন। ইন্টারনেটের কারণে মুহূর্তেই খবর
রাষ্ট্র হয়ে যায়। গ্রামের বাঁশবাগানে বাঁশ কাটতে গিয়ে
ছলিমুদ্দিনও কপালের ঘাম মুছতে মুছতে দেখে নেন দুনিয়া।
শুধু পাগল ছাড়া সবাই জেনে গেছেন দুনিয়ার খবর। তাই
গ্রামে থাকা আত্মীয়-স্বজনের হতাশা ভাল আছি কিনা তা নিয়ে।
তাদের ভয়- আল্লাহ না করুন, যদি করোনায় আক্রান্ত হই, এই
আমার লাশটিও তারা দেখতে পাবেন না। রাস্তা দিয়ে নিতে
দেবেন না পথচারীরা। এম্বুলেন্স একজন করোনা রোগীর লাশ
বহন করতে চাইবে না। এ জন্য বুঝি তাদের ভয়টা বেশি। যদি
করোনায় নিকটতম কেউ এই শহরে মারা যান, তার স্বজনরা হয়তো
লাশটাও দেখতে পাবেন না। আর মা! কোনো মা কিভাবে এটাকে
মেনে নেবেন! হয়তো এসব ভেবেই অস্থির হয়ে পড়েন মা। এ কোন
জমানায় এসে পড়েছি আমরা!
পাশের দেশ ভারতে সব বন্ধ। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া,
চীনসহ পশ্চিমা দুনিয়া বন্ধ। দিনের পর দিন ধসে পড়ছে
অর্থনীতি। এমন হলে মানুষ বাঁচবে কি করে! শ্রমজীবী
মানুষ, যারা দিন এনে দিন খান, তাদের কি অবস্থা হবে! যদি
তারা ঘর থেকে বেরুতে না পারেন তখন এই অর্থনীতির সঙ্কটে
আরো বড় অঘটন ঘটার আশঙ্কা করা যায়। পেট বাঁচাতে মানুষ
কি করে আর কি না করে! যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ইউরোপ,
কানাডা, মধ্যপ্রাচ্য দুমড়ে মুচড়ে গেছে। সব বন্ধ।
পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর হিসেবে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডনাল্ড ট্রাম্পকে ভাবা হয়, তার কথায়ও হতাশার সুর। তিনি
নিউ ইয়র্ক সহ অনেক স্থান থেকে লকডাউন তুলে নেয়ার কথা
ভাবছিলেন। কিন্তু রোববার তিনিই হতাশা, ভয় ছড়িয়ে
দিয়েছেন। বলেছেন, আগামী দু’সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে
করোনায় মৃত্যুহার হবে সর্বোচ্ছ। তার প্রশাসনে মহামারি
বিষয়ক সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন,
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মারা যাবেন এক লাখ থেকে দুই লাখ
মানুষ। এরপরই ট্রাম্প সুর নরম করেছেন। তিনি বলেছেন,
লকডাউন এপ্রিলের ৩০ তারিখ পর্যন্ত থাকবে। আসলে কোথায়
চলেছি আমরা! দূরে কি আলোর রেখা দেখা যাবে! কি জানি!
অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি। আর ভাবছি এ
কোন জমানায় এসে পড়েছি আমরা!
মানুষ কোনোক্রমেই অসীম
ক্ষমতার অধিকারী নয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সৃষ্টিজগতে মানুষের মেধা, সৃজনশীলতা আর ‘অসীম’ ক্ষমতা
তাকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছে। যখন মিসরের পিরামিডের দিকে
তাকাই, তখন বিস্মিত হতে হয়। হাজার হাজার বছর আগে
মরুভূমির বুকে এমন বিশাল পিরামিড কী করে বানাল সে
যুগের মানুষ! স্থাপত্যকলার এমন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান কেমন
করে পেয়েছিল!
কেমন করে গাণিতিক আর জ্যামিতিক হিসাব-নিকাশ সুদক্ষভাবে
সম্পন্ন করে নির্মাণ করেছিল পিরামিড, যা এত বছর পরও
সদম্ভে দাঁড়িয়ে আছে! নীল নদের ওপাড়ে নুবিয়ার পাহাড় থেকে
বিশাল বিশাল পাথর কেটে কেমন করে নিয়ে এসেছিল মরুভূমিতে!
পাথরের পর পাথর বসিয়ে সঠিক হিসাবে কেমন করে সম্ভব হয়েছে
সুবিশাল ত্রিকোণ ইমারত নির্মাণ করা! তখন তো আধুনিক
যন্ত্রপাতিও ছিল না স্থপতিদের হাতে। মানুষের অমন ক্ষমতা
দেখে বিস্মিত হতে হয়। ১৯৮২ সালে আমি প্রথমবারের মতো
গিয়েছিলাম আগ্রায় তাজমহল দেখতে। উপরে উঠে সমাধির ওপর
চোখ পড়ল। লাল-সবুজ নানা রঙের ফুলের নকশাকাটা।
ফুল, পাতা এত ঝলমল করছিল, মনে হচ্ছিল এই মাত্র বোধহয়
সংস্কার করা হয়েছে। টাটকা রং হাতে লেগে যাবে।
একবার আঙুলে ছোঁয়া লাগিয়ে দিলাম। না, হাতে তো রং লাগল
না! ভুল ভাঙল আমার, এ তো রং নয়! রঙিন পাথর কেটে মিনা
করা হয়েছে। চারশ’ বছর ধরে এমনই জ্বলজ্বল করছে। তখনও
বিস্মিত হয়েছিলাম মানুষের প্রতিভার কথা ভেবে। আধুনিক
যুগে মানুষ বিস্ময়কর প্রতিভার প্রকাশ দেখাচ্ছে।
পারমাণবিক অস্ত্রসহ নানা ভয়ংকর মারণাস্ত্র বানাচ্ছে।
তা দিয়ে ক্ষমতাবানরা জীবন ও সভ্যতা সংহার করছে।
বিশ্বের নানা দেশের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করছে।
মহাকাশযান আর আধুনিক যন্ত্রকৌশলে মহাকাশে মানুষের
বিকল্প বসতি খুঁজে বেড়াচ্ছে।
আমরা মহামারীর মতো মহাবিপর্যয়ে পড়লে কিছু সময়ের জন্য
হলেও থমকে যাই। এ মানুষেরই শক্তিকে ভীষণ সীমাবদ্ধ মনে
হয় তখন। দাপুটে দেশের শক্তিমানরাও কেমন চুপসে যান।
কণ্ঠের দৃঢ়তা হারিয়ে ফেলেন। কোনো কূটনৈতিক সমঝোতা
ছাড়াই এখন মার্কিন ও তুর্কি বিমান সিরিয়ায় আর বোমা
ফেলছে না। সংঘাত বন্ধ করে আরব-ইসরাইল সুপ্রতিবেশীর মতো
বসবাস করছে। ভারত আর দাঙ্গাবাজ কাউকে মাঠে খুঁজে পাওয়া
যাচ্ছে না। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও আলোচনা-পর্যালোচনা
থেমে আছে। উপনির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া নিয়েও
তেমন উচ্চবাচ্য নেই। এটি অনেকটা দীর্ঘ গরমে হাঁসফাঁস
প্রকৃতির দশার মতো।
বড় বড় এসি দিয়ে ঘর ঠাণ্ডা হলেও প্রকৃতি ঠাণ্ডা করার
উপায় নেই; কিন্তু যখন আকাশ অন্ধকার করে ঝড়-বৃষ্টি নামে,
তখন আধঘণ্টায় পুরো প্রকৃতি শীতল হয়ে যায়। মুহূর্তে
প্রকৃতি শীতল করার মতো তেমন এসি বিজ্ঞানীরা বানাতে
পারেননি। এসব দেখে মনে হয় মানুষের ক্ষমতা কত সীমাবদ্ধ!
মানুষের যুগের আগেও কত সরীসৃপের যুগ লক্ষ লক্ষ বছর
অতিক্রম করেছে। তারপর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। মানুষের
সাক্ষাৎ পূর্বসূরি প্রাইমেটরাও লক্ষ বছর চষে বেড়িয়েছে
পৃথিবী। তারপর হারিয়ে গেছে পৃথিবী থেকে। একই
ধারাবাহিকতায় প্রাকৃতিক দুর্বিপাক মানুষ আর
মানবসভ্যতাকে যদি ধ্বংস করে দিতে চায়, তবে কী অস্ত্র
আছে মানুষের যে তা রোধ করবে!
অনেক সময় শক্তির দম্ভে মানুষ মানতে চায় না তার চেয়ে বড়
স্রষ্টা আর কেউ আছে; কিন্তু বিপদে বিপন্ন অবস্থায় পৌঁছে
গেলে প্রকৃতি বলি আর আস্তিক মানুষের ধর্মীয় দৃষ্টিতে
ঈশ্বরই বলি- এর শক্তির কাছে মানুষের ক্ষমতা ক্ষুদ্র
বালিকণার মতোই মনে হবে।
কী এমন করোনাভাইরাস- ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র! অণুবীক্ষণ
যন্ত্র ছাড়া চোখে পড়ে না। এর কী ক্ষমতা! চীন থেকে
যাত্রা শুরুর পর হাজার হাজার কিলোমিটার মুহূর্তে
অতিক্রম করে পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল মানুষের দেহে। এ
আক্রমণ রোধ করা কঠিন হয়ে পড়ল পৃথিবীর তাবৎ শক্তিমান
বিজ্ঞানীদের পক্ষে। একদিন হয়তো মানুষ ভ্যাকসিন
আবিষ্কার করবে। নিয়ন্ত্রণে আসবে করোনাভাইরাস। আবার
কিছুদিন ভালো থাকবে টিকে থাকা পৃথিবীর মানুষ। একসময়
কষ্টের স্মৃতি ভুলে যাবে। দম্ভ দেখিয়ে আবার মানবতার
কণ্ঠনালি চেপে ধরবে। হিংসার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেবে
পৃথিবীতে। অন্যায়ের ষোলোকলা পূর্ণ হলে আবার রুষ্ট হবে
প্রকৃতি অথবা আস্তিকের বিচারে ঈশ্বর। ছড়িয়ে দেবে
করোনার মতো কোনো শাস্তি। আবার আমরা দাম্ভিকরা চুপসে
যাব।
করোনার মহামারি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড়
বিপর্যয়
জাতিসংঘ
মহাসচিব
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আন্তোনিও গুতারেস বলেন, এই মহামারি বিশে^ নজিরবিহীন
অর্থনৈতিক মন্দা ডেকে আনবে। ফলে কোটি কোটি মানুষের
জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়তে চলেছে। এটা বিশ্বের
জন্য সা¤প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি
শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে
সাহায্য করার আর্জি জানান। দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া
রোগটির দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেন
তিনি। করোনার প্রাদুর্ভাবে বিশ্বজুড়ে বিদেশি বিনিয়োগের
ধারায় ৪০ শতাংশ ‘অবনমন’ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা
হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। বুধবার
সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আট লাখ ৬০ হাজার মানুষ
সংক্রমিত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে। গত
বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান
শহরে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়।
লাশ পুড়িয়ে
ফেলার চেয়ে কবর দেয়া ভালো: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয়ের পর কোনো লাশের শরীর মহামারী
রোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে
জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গণহারে মানুষ মারা
গেলে লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেয়া উত্তম বলেও মত
দিয়েছে সংস্থাটি। নিজস্ব ওয়েবসাইটে ‘রিস্কস পোজড বাই
ডেড বডিস আফটার ডিজঅ্যাস্টারস’ শিরোনামে একটি নির্দেশনা
প্রকাশ করে ডব্লিউএইচও।
এতে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে করোনাভাইরাসে
মৃত ব্যক্তি থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর কোনো
প্রমাণ মেলেনি। কারণ মহামারীতে মারা যাওয়ার পর মানুষের
শরীরে ওই এজেন্টের বেশিরভাগই দীর্ঘ সময় জীবিত থাকে না।
তবে লাশের সঙ্গে সংস্পর্শ অব্যাহত রাখলে (কন্সট্যান্টলি
ইন কনকাক্ট উইথ করপসেস) যক্ষ্মা বা রক্তবাহিত ভাইরাসের
সংক্রমণ ঘটতে পারে।
লাশ থেকে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকি থাকে। যেমন
কেউ যদি কলেরা বা রক্তপ্রদাহজনিত জ্বরে (হেমোরেজিক
ফিভার) মারা যান, তাহলে এটা ঘটতে পারে। বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা আরও বলেছে, যেসব মানুষ নিয়মিত মৃতদেহ
দাফন বা এর দাফন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাদের
যক্ষ্মা, রক্তবাহিত ভাইরাস (যেমন হেপাটাইটিস-বি, সি এবং
এইচআইভি) এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (যেমন কলেরা, ই-কোলি,
হেপাটাইটিস-এ, রোটাভাইরাস ডায়রিয়া, সালমানেলোসিস,
শিগেলোসিস এবং টাইফয়েড/ প্যারাটাইফয়েড জ্বরে) সংক্রমিত
হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
সংস্থাটি জানায়, এসব তথ্য ও ঝুঁকির কথা একই সঙ্গে জরুরি
বিভাগের কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া উচিত,
যাতে যথাযথ পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করা যায়, যখন মৃতদেহ
নাড়াচাড়া করা হয়। একই সঙ্গে আতঙ্ক ও ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো
যায়। এ ক্ষেত্রে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, যখন গণহারে মানুষ
মারা যায় এবং মৃতদের আর শনাক্ত করা সম্ভব হয় না তখন
লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেয়া উত্তম। জনস্বার্থের
জন্য গণকবর কোনো সুপারিশকৃত বিষয় নয়। এতে প্রচলিত
সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ আদর্শগুলো লঙ্ঘিত হতে পারে।
লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় পারিবারিক প্রয়োজন ও
সামাজিক রীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত। যদি রীতিতে
ভিন্নতা থাকে তাহলে প্রতিটি সামাজিক গ্রুপকে নির্ধারিত
এলাকায়, সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব
মর্যাদা রক্ষা করার চর্চা করতে দেয়া উচিত। যেখানে
কবরস্থান বা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের স্থান
পর্যাপ্ত নয় সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
করোনার ভয়ে হিন্দু বৃদ্ধের সৎকারে নেই আত্মীয়-স্বজন,
লাশ কাঁধে নিলেন মুসলিমরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সাধারণ মৃত্যু ঘিরেও তৈরি হচ্ছে
সন্দেহ। করোনাভাইরাসের ভয়ে অনেক মৃতদেহের কাছে যাচ্ছেন
না অনেকেই। এবার বার্ধক্যজনিত হিন্দু বৃদ্ধের মরদেহ
ঘিরে ঘটল এমন ঘটনা। মৃত্যু হওয়া বৃদ্ধের কোনো
আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী সৎকারে এগিয়ে না এলেও তার
মরদেহ কাঁধে তুলে নিয়েছেন মুসলিমরা।
ভারতে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে ঘটেছে এমন ঘটনা।
এখানকার বাসিন্দা রবিশংকরের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার
কারণে মৃত্যু হয়। রবিশংকরের প্রতিবেশীরা মনে করেছিলেন
করোনাভাইরাসেই বুঝি মারা গেছেন তিনি। তাই সৎকার তো দূরে
থাক, মরদেহ দেখতে আসেননি প্রতিবেশীরা। আত্মীয়-স্বজনরাও
করোনার ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন রবিশংকরের শোকাহত
পরিবারের কাছ থেকে।
রবিশংকরের পাড়ার পাশেই রয়েছে মুসলিম অধুষ্যিত এক এলাকা।
রবিশংকরের মৃত্যুর খবর পেয়ে এ পাড়ার কিছু যুবক ছুটে
আসেন। তারা দেখেন রবিশংকরের মরদেহ শ্মশানে নেওয়ার মতো
লোক নেই। এরপর তারাই রবিশংকরের মরদেহ কাঁধে নিয়ে সৎকার
করতে নিয়ে যান।
জয়নব সিকান্দার নামের এক ব্যক্তি টুইটারে সংক্ষেপে এ
ঘটনা লেখেন। এরপর থেকে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
ভাইরাল হয়ে যায়।
করোনা নিয়ে
বিল গেটসের সাড়া জাগানো উদ্ধৃতি

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস। এই
মহামারীতে করোনা নিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন টেক
জায়ান্ট মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ও বিলিয়নিয়ার বিল
গেটস। নিচে তার উদ্ধৃতিগুলো তুলে ধরা হলো :
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী করি যে, ঘটে যাওয়া সমস্ত কিছুর
পেছনে একটি আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য রয়েছে। যা আমরা যা
দেখেছি তার ভালো বা খারাপ দুটি দিক রয়েছে। আমি এটি নিয়ে
গভীরভাবে চিন্তা করেছি। করোনা বা কোভিড -১৯ ভাইরাস
সত্যিই আমাদের সাথে কী করছে তা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার
করতে চাই :
এই ভাইরাস আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমরা সবাই সমান।
আমাদের সংস্কৃতি, ধর্ম, পেশা, আর্থিক পরিস্থিতি বা আমরা
কতটা বিখ্যাত তা এখানে কোনো বিষয় নয়।
এই রোগটি আমাদের সকলের সাথে সমানভাবে আচরণ করছে।
আমাদেরও এমনটা করা উচিত। আপনি যদি বিশ্বাস না করেন তবে
কেবল টম হ্যাঙ্কসকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করুন (এই ভাইরাস
তাকেও ছাড়েনি)। এই ভাইরাস আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে,
আমরা সবাই একে অপরের সাথে সংযুক্ত। এটা এমন বিষয় যা
একজন ব্যক্তির ওপর যেমন প্রভাব ফেলে অন্যের ওপরও
একইরকম প্রভাব ফেলে।
এটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমরা যে মিথ্যা
সীমানাগুলো ধারণ করি সেগুলোর খুব কম মূল্য রয়েছে। কারণ
এই ভাইরাসের পাসপোর্টের প্রয়োজন নেই। এই দুনিয়াতে
যাদের পুরোজীবন নিপীড়নে কেটেছে তাদের ওপর যে আমরা
অত্যাচার করেছি এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। করোনা
আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি কত
মূল্যবান। কীভাবে আমরা রাসায়নিকের সাথে দূষিত পুষ্টিকর
দুগ্ধজাত খাবার এবং পানীয়র মিশ্রণ করে জীবনকে চালিত
করেছি। আমরা যদি আমাদের স্বাস্থ্যের যতœ না নিই, তবে
আমরা অবশ্যই অসুস্থ হয়ে পড়ব।
এটি আমাদের জীবনের সংক্ষিপ্ততা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে তা হলো, একে
অপরকে, বিশেষত যারা বৃদ্ধ বা অসুস্থ তাদের সহায়তা করা
আমাদের উদ্দেশ্য। সমাজ কীভাবে বস্তুবাদী হয়ে উঠেছে এটি
আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে
পারছি, আমাদের প্রয়োজনীয় খাবারগুলো (খাদ্য, জল, ওষুধ)
এবং বিলাসিতাগুলোর কখনও কখনও অযথা মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
করোনায় সৃষ্ট পরিস্থিতি আমাদের পরিবার এবং গৃহজীবন কতটা
গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা একে কতটা অবহেলা করেছি তা মনে
করিয়ে দিচ্ছে। এটি আমাদের বাড়ীতে ফিরে যেতে বাধ্য করছে
যাতে আমরা সম্পর্ক পুনর্র্নিমাণ করতে পারি এবং আমাদের
পারিবারের একতাকে শক্তিশালী করতে পারি।
এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদের আসল
কাজটি আমাদের কাজ নয়, আমরা যা করি তা তৈরি করে না।
আমাদের আসল কাজ একে অপরকে দেখাশোনা করা, একে অপরকে
রক্ষা করা এবং একে অপরের দ্বারা উপকৃত হওয়া।
এটি আমাদের উদ্বিগ্নতার বিষয়গুলো পরীক্ষা করে রাখতে
আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে
যে আমরা যতটা নিজেদের দুর্দান্ত মনে করি বা অন্যরা
আমাদের কতটা দুর্দান্ত মনে করে সেটা কোনো বিষয় না। একটি
ভাইরাস আমাদের বিশ্বকে স্থবিরতায় নিয়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, মুক্তির
শক্তি আমাদের হাতে। আমাদের একে অপরকে সহযোগিতা করা,
শেয়ার করে নেওয়া-দেওয়া উচিত। আমাদের উচিত স্বার্থপর না
হওয়া, নিজেদের যতœ নেওয়া। প্রকৃতপক্ষে, এটি আমাদের আসল
রঙ বের করে দিচ্ছে (সরূপ চিনিয়ে দিচ্ছে)।
এটি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আমরা ধৈর্য ধরতে পারি
কিংবা আতঙ্কিত হতে পারি। আমরা হয় বুঝতে পারি যে এই
ধরণের পরিস্থিতি ইতিহাসে আগে বহুবার হয়েছিল এবং শেষ হয়ে
যাবে। অথবা আমরা আতঙ্কিত হয়ে একে বিশ্বের সমাপ্তি
হিসাবে দেখতে পারি। ফলস্বরূপ, আমাদের ভালোর চেয়ে আরও
বেশি ক্ষতি করতে পারে।
এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, এটি হয় শেষ
হতে পারে বা নতুন শুরু হতে পারে। এটি এমন একটি সময় হতে
পারে, যখন আমরা আমাদের ভুলগুলি থেকে শিখি। কিংবা এটি
একটি চক্রের শুরু হতে পারে।
এই ভাইরাস আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, এই পৃথিবী
অসুস্থ। আমাদের প্রয়োজন বনাঞ্চলের পরিমাণকে বৃদ্ধি করা।
এরচেয়ে বেশি প্রয়োজন পর্যবেক্ষণ করা।
Top
মানবাধিকার ও ইসলাম
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
“Hamidullah, Dr. Muhammd, The First Written
Contitution in the word, Lahore : Shah Muhamad
Ashraf, 1981, P.4”
বিদায় হজ্বের অমোঘ ভাষণ : বিদায় হজ্বে প্রদত্ত মহানবী
সা. এর ঐতিহাসিক ভাষণ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে
একটি মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত। কোন আন্দোলন কিংবা
সংগ্রামের মুখে নয়, কোন চাপের কাছে নত স্বীকার করে নেয়,
সম্পূর্ণ নবুওয়তী দায়িত্ব ও কর্তব্যের খাতিরে
স্বত:স্ফুর্তভাবে প্রদত্ত এই ভাষণে তিনি মানবাধিকার
বিষয়ে যে সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখেন তা অবিস্মরণীয়। তিনি
বলেন, ‘আজকের এই দিন, এই মাস ও এই শহর তোমাদের নিকট
পবিত্র অনুরূপভাবে তোমাদের জীবন এবং সম্পদ ও পবিত্র’।
“Harun Abdus Salam (ed) Tahjib sirat Ibn- Hisham,
Kuwait : Dar-al Buhuth at Islamiyah, 1984, P, 325।
রাসূল সা. আরো বলেন, কারো নিকট কোন সম্পদ গচ্ছিত থাকলে
তা প্রকৃত মালিকের নিকট অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। জাহিলী
যুগের সমস্ত সুদ প্রথা রহিত করা হল, কিন্তু মূলধন ফেরত
পারবে।” “Ibid, P.326””। “সম্মতি ও সন্তুষ্টি ব্যতীত
অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা অবৈধ। “Ibid, P.327”।
“জাহিলী যুগের সকল রক্তের প্রতিশোধ রহিত করা হল”।
“Ibid, P.326””। ইচ্ছাকৃত হত্যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড,
আর অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যার শাস্তি হল একশত উট রক্তপণ
আদায়। “Al-Jahiz-Amrinb Bahr, Kitab-Al-Bayat wal
Tabyyan, Beirut : Dar al Firkr, 1968, Vol-1, Purt-2,
53”। মহানবী সা. কর্তৃক মানুষের জীবন ও সম্পদের
নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি জাতিসংঘের The Universal
Declaration of Human Rights (1948) এর ৩, ৬ ও ১৭ নং
অনুচ্ছেদে এবং সংবিধানের ৩২, ৪২, ৪২ (১) নং অনুচ্ছেদেও
স্থান পেয়েছে।
স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার সম্পর্কে মহানবী সা.
বলেন, “তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার রয়েছে।
আবার তোমাদের উপরও তোমাদের স্ত্রীদের অধিকার রয়েছে।
তাদের উপর তোমাদের অধিকার হল তোমাদের বিছানায় তোমরা
ছাড়া অন্য কেউ যেন না যায় এবং তারা যেন কোন অশ্লীল কাজ
সম্পাদনা করে; তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে আল্লাহর
আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর নির্দেশে তোদের
সাথে দাম্পত্যের সম্পর্ক স্থান করে তাদেরকে নিজেদের
জন্য বৈধ করেছ। “Harun, Abdus Salam, Ibid, P.326”।
স্বামী-স্ত্রীর মানবাধিকার বিষয়টি জাতিসংঘের The
Universal Declaration of Human Rights এর ১৬নং
অনুচ্ছেদে এবং International Covenent of Civil and
Political Rights (ICCPR) এর ২৩নং অনুচ্ছেদ স্থান লাভ
করে।
মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের সীমারেখা নির্ধারণ করে
মহানবী সা. বলেন “এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। আর
মুসলিম জাতি ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ।
অতএব, পারস্পরিক সম্মতি ও সন্তুষ্টি ব্যতীত কোন
মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা বৈধ নয়”।
“Ibid, P.327”। মহাবী সা. আরো বলেন, “তোমাদের রব এক এবং
তোমাদের পিতা এক। সকলকে আদম থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে আর
আদম আ-কে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে।
“Al-Jahiz-Amrinb Bahr, kitab- Al-Bayan wal Tabyyan.
P. 16”। এভাবে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধকে অনেক ঊর্ধ্বে
স্থান দেয়া হয়েছে। Fyzee বলেন, ইসলামের ভ্রাতৃত্ববোধের
শিক্ষা কেবল প্রচার-প্রোপাগান্ডার মধ্যেই সীমিত নয়;
বাস্তব জীবনেও তা অনুসরণের তাগিত দেয়া হয়। বস্তুত
ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ইসলামের চিরন্তন সোনালী অধ্যায়ের এক
অবিচ্ছেদ্য অংগ। “Fyzee, Asalf, A.A., Out lines of
Mohammadan Law, London : Oxford University Press,
Introduction, P.13.”। জাতিসংঘের The Universal
Declaration of Human Rights--এর ১নং অনুচ্ছেদে
মানুষের পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বসূলভ আচরণের ঘোষণা দেয়া
হয়েছে।
দূষণের শীর্ষে ঢাকার বায়ু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আবারও সবচেয়ে
খারাপ অবস্থানে (শীর্ষে) উঠে এসেছে ঢাকা। বৃহস্পতিবার
সকাল ৮টা ১৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই)
ঢাকার স্কোর ছিল ২৮৭, যার অর্থ হচ্ছে এ শহরের বাতাসের
মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ এবং এ অবস্থায় সবাই মারাত্মক
স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন।
নেপালের কাঠমান্ডু ও ভারতের দিল্লি যথাক্রমে ১৯০ ও ১৮৮
একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা
জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু,
প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের
বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া
হয়ে থাকে। একিউআই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে নগরবাসীর
প্রত্যেকের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ
করে শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে
পারেন।
একিউআই স্কোর ৩০১ থেকে ৫০০ বা তারও বেশি হলে বাতাসের
মান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়। একিউআই সূচকে ৫০ এর নিচে
স্কোর থাকার অর্থ হলো বাতাসের মান ভালো। সূচকে ৫১ থেকে
১০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য বলে
ধরে নেওয়া হয়।
জনবহুল ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম
খাচ্ছে। মূলত নির্মাণ কাজের নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা,
যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা প্রভৃতি কারণে রাজধানীতে
দূষণের মাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাংক ও
পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ু দূষণের
প্রধান কারণ হিসেবে এ শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে
চিহ্নিত করা হয়েছে।
কুরআন ছুঁয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ
প্রধানের শপথ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়ে পুলিশ
প্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন এক কর্মকর্তা। ইব্রাহিম
বেকুরা ১৭তম পুলিশ প্রধান হিসাবে কুরআন ছুঁয়ে শপথ নেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের পেটারসন
শহরের পুলিশ প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। শহরটির
মেডর আন্ড্রে সাইয়েগ বলেন, ইব্রাহিম আমেরিকার ইতিহাসে
প্রথম তুর্কি পুলিশ প্রধান। সেই সঙ্গে তিনি পেটারসন
শহরের প্রথম মুসলিম পুলিশ প্রধান।
শপথ অনুষ্ঠানটি জাতীয সংগীত এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে
শুরু হয়। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সির তুর্কি
সম্প্রদায়ের সদস্য, স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা এবং
ইব্রাহিমের পরিবার ও আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
ইব্রাহিম বেকুরা বলেন, ৩২ বছর ধরে আমেরিকায় আছি। এখানে
পুলিশ বিভাগে চাকরি করেছি। শিশুকাল থেকে পেটারসনে
বসবাস করে আসছি।
এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পদে আসীন হওয়ার সময়
অনেক মুসলমান কুরআন ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন।
রোহিঙ্গাদের পক্ষে
আদালতে আমাল ক্লুনি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতে রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলার
জন্য সুপরিচিত মানবাধিকার আইনজীবী আমাল ক্লুনিকে নিয়োগ
করেছে মালদ্বীপ। তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে
রোহিঙ্গাদের পক্ষে ন্যায়বিচার চাইতে লড়বেন। মালদ্বীপ
সরকার জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার
সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেবে মালদ্বীপ। সূত্র :
রয়টার্স। আমাল ক্লুনি প্রখ্যাত এক আইনজীবী এবং বিখ্যাত
হলিউড অভিনেতা জর্জ ক্লুনির স্ত্রী। ক্লুনি এর আগে
মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের পক্ষে
জাতিসংঘে আইনি লড়াই করেছেন। ক্লুনিকে উদ্ধৃত করে
মালদ্বীপ সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘মিয়ানমারে সংগঠিত
গণহত্যার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এখনো অনেক পথ
বাকি। আদালতের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায় বিচারের
জন্য চেষ্টা করব। প্রসঙ্গত, আমাল ক্লুনি সাবেক
প্রেসিডেন্ট নাশিদের পক্ষে জয়লাভ করেছেন। ২০১৫ সালে
মোহাম্মদ নাশিদকে ১৩ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছিল।
সংখ্যালঘুর
মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের মতো দুটো দেশে সংখ্যালঘু হিসেবে
বাস করে আমার মনে হয়েছে, সংখ্যালঘুর নিজস্ব কিছু
মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা থাকে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু,
বিশেষ করে হিন্দুদের মধ্যেও এই জটিলতা কাজ করে।
পচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশ ক্রমশ
তার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র হারাতে থাকে। এর সাথে যোগ হয়
নিরাপত্তাহীনতা ও সম্পদ লুণ্ঠনের ঝুঁকি। গত এগারো বছর
আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে সংখ্যালঘু
নির্যাতনের ঘটনা অনেক হ্রাস পেলেও একেবারে বন্ধ ঢুকে
পড়ে। তার
হয়নি। বর্তমানের ভালো দিক হলো, রাষ্ট্র অন্তত সংখ্যালঘু
নির্যাতনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে না।
নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে আমি সংখ্যালঘুদের এই মানসিক
কষ্টটুকু বুঝি। আমি মনে প্রাণে তাই অসাম্প্রদায়িকতা
অনুশীলন করার চেষ্টা করি। যে কারণে বিশিষ্ট নাক, কান ও
গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. দেবেশ তালুকদারের নাম আমার
অন্যতম প্রিয় বন্ধুর তালিকায় জ্বলজ্বল করে।
মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা থেকে উৎসারিত কোন অসংলগ্নতা তাই
আমাকে স্পর্শ করে না।
বিকাশে ভুলে অন্য
নাম্বারে টাকা চলে গেলে ফেরত পেতে করণীয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বর্তমানে আর্থিক লেনদেন করার জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্চে
। মোবাইল নাম্বার দিয়ে মিনিটেই অনেক দূরে থেকে টাকা
লেনদেন করতে পারবেন। নাম্বারের মাধ্যমেই এই লেনদেন চলে।
কিন্তু অনেক সময় অসাবধানতাবশত ভুল নম্বরে টাকা চলে যায়।
এ সমস্যায় পড়লে কী’ করবেন, তা জানা নেই অনেকের। তাই
দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। চিন্তা ছেড়ে জেনে নিন কি করলে
টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। বিকাশ একাউন্ট থেকে ভুলবশত কোন
নাম্বারে টাকা গেলে প্রথমে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন।
ট্রানজেকশন নাম্বার নিয়ে জিডি করুন। যতো দ্রুত সম্ভব
জিডি কপি নিয়ে বিকাশ অফিসে যোগাযোগ করুন এবং আপনার
সমস্যা জানান।
টাকা ভুল নাম্বারে গেলে সঙ্গে সঙ্গে প্রাপককে ফোন
দেবেন না। কারণ ভুলবশত অন্য নাম্বারে টাকা চলে গেলে,
তা ফিরিয়ে দেয়ার মানসিকতা খুব কম লোকই রাখে। তাই তিনি
টাকা উঠিয়ে ফেললে, আপনার করার কিছুই থাকবে না। অতএব
টাকা উঠানোর আগেই, জিডি কপি এবং মেসেজসহ যদি বিকাশ
অফিসে যোগাযোগ করেন, তারা টেম্পোরারি ওই ব্যক্তির
অ্যাকাউন্ট লক করে, উনার সঙ্গে কথা বলবে।
প্রাপক যদি তখন জানায় হ্যাঁ টাকা এসেছে, বিকাশ অফিস
থেকেই টাকা স্থানান্তর করে দিবে। যদি তিনি নিজের টাকা
দাবী করেন, তাহলে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তাকে অফিসে এসে
অ্যাকাউন্ট ঠিক করে নিতে হবে। পরবর্তী ৬ মাসে যদি তিনি
না আসেন, তাহলে প্রেরকের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাবে।
পরবর্তী ৬ মাসে অ্যাকাউন্ট ঠিক না করলে অ্যাকাউন্টটি
অটো ডিজেবল হয়ে যাবে চিরতরে এবং প্রেরক আদালতের
সাহায্য নিয়ে টাকা আনতে পারবেন। এই পদ্ধতি শুধু
বিকাশেই নয়, রকেট এবং নগদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।
জাতিসংঘ মহাসচিবের
উদ্বেগ, ওআইসির নিন্দা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ
করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস।
মুসলিমদের টার্গেট করে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী
সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) কেন্দ্র করে গত ২৩
ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া ঐ সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ৪০ জন
ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক শ মানুষ। গত বৃহস্পতিবার
এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের
উদ্বেগের কথা জানান তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব নিবিড়ভাবে দিল্লি পরিস্থিতি
নজরে রেখেছেন। বিক্ষোভকারীদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে
বিক্ষোভ করতে দেওয়া এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সংযত থাকা
উচিত। একই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব পরিবেশ শান্ত করা এবং
স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি বলেও মনে করেন
জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি জানান, ব্যক্তি জীবনে মহাত্মা
গান্ধীর শিক্ষায় অনুপ্রেরণা পান জাতিসংঘ মহাসচিব।
গান্ধীর আদর্শের আলোকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ
তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন
থমথমে দিল্লিতে
নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দিল্লিতে সহিংসতা আপাতত থেমেছে। তবে পরিস্থিতি থমথমে।
গতকাল পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে।
সহিংসতার তদন্তে সরকার দুটি বিশেষ তদন্ত দল এবং
কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন
করেছেন। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২৩টি
এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৩০ জনকে।
গুরুগ্রামে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সহিংসতার
মধ্যেও ভারতের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির
নজির সৃষ্টি হয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার
পত্রিকার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকালও বলেছেন, কারো
নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে নয়, প্রতিবেশী দেশে সহিংসতার
শিকার মানুষদের নাগরিকত্ব দিতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন
(সিএএ) করা হয়েছে। দিল্লি কিছুটা শান্ত হতেই সরিয়ে
দেওয়া হয়েছে পুলিশ কমিশনারকে। পুলিশ জানায়, দিল্লির
সহিংসতার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১২৩টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতার করা হয়েছে ৬৩০ জনকে। গোটা উত্তর-পূর্ব দিল্লি
যেন ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। থমথমে দিল্লিতে ঘর
থেকে বের হতে অনেকে ভয় পাচ্ছেন। দাঙ্গায় নিহতদের
পরিবারপিছু ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা
দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
গতকাল অবশ্য দোকানবাজার কিছুক্ষণ খোলা রাখতে কোথাও
কোথাও কারফিউ শিথিল করা হয় কয়েক ঘণ্টার জন্য। গত
রবিবারের পরেই অ্যালার্ট জারি হয়েছিল গুরুগ্রামে।
গতকাল জুমার নমাজের প্রাক্কালে সেই অ্যালার্ট আরো কঠোর
করা হয়। নিরাপত্তার কথা ভেবে সিএএর বিরুদ্ধে হিংসার
ঘটনায় কারা কারা জড়িত, কারা অর্থ জোগাচ্ছে তা খুঁজে
বের করতে দিল্লি হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার, দিল্লি
সরকার ও দিল্লি পুলিশকে নোটিশ দিয়েছে। তদন্ত কমিটির
কর্মকর্তারা গতকাল অভিযুক্ত আপ নেতা তাহির হুসেনের
বাড়িতে যান। তিনি সহিংসতায় মদত দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ
আছে। যদিও তিনি সব অস্বীকার করেছেন। এদিকে
মহারাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিমদের জন্য
সংরক্ষিত রাখতে রাজ্যের জোট সরকার। শুক্রবার এই ঘোষণা
দেন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নবাব মালিক।
বিধানসভার চলতি বাজেট অধিবেশনেই আনা হবে সেই বিল।
সোনিয়া গান্ধীর তদন্ত দল গঠন
কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভাপতি সোনিয়া গান্ধী সহিংসতায়
ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর-পূর্ব দিল্লির এলাকাগুলো পরিদর্শন
এবং পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে তাকে প্রতিবেদন দেওয়ার
জন্য একটি পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করেছেন। দ্রুত সময়ের
মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তাদেরকে। এই
প্রতিনিধিদলে রয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মুকুুল
ওয়াসনিকও।
নারী ও শিশু সংবাদ
শিশুদের ব্যাপারে সচেতন হউন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বে বর্তমানে ৩৫০ কোটি মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার
করেন। বাংলাদেশে এই ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় পৌনে
৩ কোটি। স্মার্ট ফোন কিংবা ট্যাব-ফ্যাব এখন শিশুদের
হাতেও শোভা পাইতেছে। বিশেষ করিয়া আধুনিক বাবা-মায়েরা
যেমন স্মার্ট ফোনের স্ক্রিনের প্রতি ডুবিয়া থাকেন
অহর্নিশ, তেমনি শিশুরা যাহাতে তাহাদের বিরক্ত না করে
সেই জন্য শিশুটির হাতেও একটি স্মার্ট ডিভাইস ধরাইয়া
দেওয়া হয়। ধরা যাক, এই ক্ষেত্রে শিশুটির অভিভাবক
ইন্টারনেট ব্যবহারে চ্যাইল্ড লক চালু করিবার ব্যাপারে
সচেতন; কিন্তু তাহার পরও আরো কিছু ভয়ংকর ক্ষতির দিক
কিন্তু রহিয়াই যায়। সত্যিকার অর্থে মোবাইল ফোনের দুইটি
ক্ষতিকর দিক লইয়া বিশ্বের সচেতন মানুষ ক্রমশ উদ্বিগ্ন
হইতেছেন। এই দুইটি দিকের একটি হইল মানসিক ক্ষতি, অপরটি
শারীরিক। মোবাইল ফোন-সৃষ্ট ক্ষতিকর বস্তুটির নাম
‘রেডিয়েশন’ বা বিকিরণ। এক মোবাইল হইতে অন্য মোবাইলে এই
বিকিরণশক্তির মাধ্যমেই কথা আদান-প্রদান হয়। এক গবেষণায়
দেখা গিয়াছে, ১৯৭৫ সালের পূর্বে হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন
ক্যানসারের রোগী তুলনামূলক কম ছিল। পরবর্তী সময়ে
মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাইবার কারণে
এই ভয়ংকর রোগ দুইটির মাত্রা বৃদ্ধি পাইয়াছে বলিয়া মনে
করেন অনেক গবেষক।
তবে মোবাইল ফোনের যে ক্ষতিটি এখন উদ্বেগের পর্যায়ে
পৌঁছাইয়াছে, তাহা লইয়া এই ডিভাইসের প্রতি শিশুদের
প্রবল আসক্তি। বিকিরণ সমস্যার কথা না হয় উহ্যই রহিল,
দেখা যাইতেছে মোবাইল ফোন ছাড়া একটি শিশু তিন বেলা
ঠিকমতো খাইতে পারে না। তাহার খেলাধুলা, বিনোদনের জগত্
বন্দি হইয়া পড়িয়াছে পাঁচ বা ১০ ইঞ্চির ডিজিটাল পর্দায়।
ইহা যে কতটা ভয়ংকর এবং দিনকে দিন ইহা এমনই ভয়াবহ
সমস্যার দিকে ধাবিত হইতেছে যে, একটি শিশুর পুরো মানসিক
জগত্ ওলটপালট করিয়া দিতেছে। কে না জানে, শিশুরা নরম
মাটির মতো। তাহাদের যেইভাবে তৈরি করা যাইবে, তাহারা
সেইভাবেই গড়িয়া উঠিবে। মোবাইল ফোনের ডিজিটাল দুনিয়ায়
যে অদ্ভুত ফ্যান্টাসি রহিয়াছে, শিশুটি সেই জগতে বুঁদ
হইয়া পড়ে। আটকাইয়া পড়ে মিথ্যা মায়াবি বিস্ময়জগতে। ফলে
বাস্তব দুনিয়ার সহিত তাহাদের মিথস্ক্রিয়ার ঘাটতি বাড়িতে
থাকে। ইহার পরিণতি হইতে পারে ভয়াবহ। একপর্যায়ে শিশুরা
সারাক্ষণ ফোন লইয়া থাকিতেই আনন্দ বোধ করিবে। কাহারো
সহিত কথা পর্যন্ত বলিতে আগ্রহী হইবে না। এমতাবস্থায়
ফোন কাড়িয়া লইলে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিবে।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়াইয়া পড়িবার কারণে
গৃহবন্দি হইবার বাধ্যতামূলক পরিস্থিতি তৈরি হইতেছে।
বাংলাদেশেও এখন লকডাউনের কাছাকাছি অবস্থা। এমতাবস্থায়
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া অবধি শিশুরা যেন তাহাদের
বাবা-মায়ের সহিত গৃহকোণে সময় কাটাইতে আরো বেশি স্মার্ট
ফোনের দিকে ঝুঁকিতে না পারে। বাড়িতে এই দীর্ঘ লকডাউনের
সময় স্মার্ট ফোন ব্যতীত শিশুসন্তানের সহিত কী করিয়া
গঠনমূলক সময় কাটানো যায়, তাহা লইয়া প্রত্যেক অভিভাবককে
ভাবিয়া দেখিতে হইবে।
দোহারে প্রবাসীর বাল্যবিয়ে,
অতঃপর..
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিনদিনের মাথায়
অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক কিশোরীকে বিয়ে করলেন মো. রাসেল নামে
এক প্রবাসী। করোনা ভাইরাস নিয়ে সৃষ্ট এমন পরিস্থিতিও
বিয়ে আটকাতে পারেনি তার। বাল্যবিয়ের এমন অভিযোগে ওই
প্রবাসীকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঘটনাটি
ঘটেছে ঢাকার দোহার উপজেলার উত্তর জয়পাড়া গ্রামে।
কোয়ারেন্টাইন ঠিক মতো পালন না করা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ।
জানা যায়, দোহার পৌরসভার উত্তর জয়পাড়া গ্রামের শুকুর
আলীর ছেলে মো. রাসেল নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বগুড়ার
একটি নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে করেন। সে ৮ই মার্চ সৌদি আরব
থেকে দেশে আসেন। খবর পেয়ে বুধবার রাতে রাসেলের বাড়িতে
অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাল্যবিবাহের অপরাধে
আটক করা হয় তাকে।
২৬ মার্চ ২০২০ সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোতি বিকাশ রাসেলকে
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭, ৭(১) ধারায় ৫ হাজার টাকা
জরিমানা করেন। একইসাথে কনের বয়স ১৮ বছর না হওয়া
পর্যন্ত তাকে বাবার বাড়িতে রাখবে এবং তার সাথে বৈবাহিক
সম্পর্ক স্থাপন না করার শর্তে মুচলেকা রেখে মুক্তি দেয়া
হয়।
করোনায় আপনার শিশুকে নিরাপদ রাখতে
করণীয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের হার
বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হারও। আর এই উদ্বেগ
আতঙ্কে বয়সিরা যেমন আছেন তেমনি শিশুরাও। বিশেষ করে
পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুরা একরকমের বন্দিদশায় কাল
কাটাচ্ছেন। বড়রা লকডাউন আর ফিজিক্যাল ডিসটেন্স বুঝলেও
ছোটদের ক্ষেত্রে হচ্ছে উল্টো। অনেক বাসায় দেখা যায়
কাজের বুয়ারাই বাসার বাচ্চাকে লালন-পালন করে থাকেন।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শিশুরা কতটা
নিরাপদ? প্রাপ্ত তথ্যে জনা যায়, বাংলাদেশের গড় শিশুর
পুষ্টিহীনতা উন্নত দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
চলমান এই সঙ্কটে শিশুর সুরক্ষায় কি করা যাবে? কি করা
যাবে না? এ বিষয় নিয়ে মানবজমিনের সঙ্গে কথা বলেছেন,
ঢাকা শিশু হসপাতালের হাই ডিপেনডেন্সি এন্ড আইসোলেসন
ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা.
রিয়াজ মোবারক। তার সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো
পাঠকদের জন্যÑ
যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরি:
১. যারা কোলে করে শিশুটিকে বড় করছেন তাদের কেউ যদি
ভাইরাসবাহী হন তাহলে তা শিশুর মধ্যে খুব সহজেই ছড়াতে
পারে।
২. বড়দের হাঁচি-কাশি থেকেও শিশুর মধ্যে ভাইরাসটি
প্রবেশ করতে পারে।
৩. শিশুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নানারকম ময়লা বা নোংরা
জিনিসপত্র হাতে নেয়, এসব থেকে দূরে না রাখতে পারলে
শিশুটি করোনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
৪. অনেকে শিশুদের হাতে ময়লা বা পুরোনো নোট দিয়ে থাকেন।
যা নিয়ে শিশুরা খেলাধুলা করে। এটাও মারাত্মক ঝুঁকির
কারণ হতে পারে। কারণ, টাকা অনেকের হাতে যায়। ফলে এর
মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ানো স্বাভাবিক।
৫. আমাদের দেশে একান্নবর্তী পরিবার বা যৌথ পরিবারের
সংখ্যা অনেক বেশি। সুতরাং, যদি পরিবারের বড় কেউ এই
ভাইরাস বহনকারী হন তাহলে তাকে কোয়ারেন্টিন বা আইসোলেসনে
রাখা পুরোপুরি সম্ভব না হলে শিশুটি আক্রান্ত হতে পারে।
৬. ঢাকায় ঘনবসতি বা অ্যাপার্টমেন্টে পাশাপাশি অনেক
মানুষের বাস। কাজেই পর্যাপ্ত সাবধানতা অবলম্বন না করলে
আপনার শিশুটি যে কোনভাবে অন্যকোন অপরিচিত দ্বারা
আক্রান্ত হতে পারেন।
৭. যদি এমন হয় মায়ের মধ্যে উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে
তাহলে সন্তানের কাছ থেকে মাকে আলাদা থাকতে হবে।
সন্তানের নিরাপত্তার স্বার্থেই এটি করতে হবে।
৮. আর যদি সন্তানের হয় সেক্ষেত্রে মাকে সুরক্ষা পোষাক
বা পিপিই ব্যবহার করে শিশুর যতœ নিতে হবে। কোনভাবেই
আবেগপ্রবণ হওয়া যাবে না। এতে বাবা-মা দুজনেই আক্রান্ত
হতে পারেন।
৯. আমাদের শিশুদের অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়
হিমোগ্লোবিন কম, ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। এ ধরণের ঘাটতি
থাকলে দ্রুত ভাইরাস শিশুটিকে কাবু করতে পারে।
১০. দরিদ্র পরিবারের শিশুদের অনেক ক্ষেত্রেই প্রোটিন
ঘাটতি থাকে যা এই ভাইরাস আক্রান্ত হলে দ্রুত কাবু করতে
পারে।
যে সকল বিষয়ে সাবধানতা জরুরি:
১. এ সময় যে কারও কোলে আপনার শিশুকে দেয়া যাবে না।
খোলাশা করে বললে দাঁড়ায়, যার তার কোলে নয়।
২. কাজের বুয়া বা বাইরের কারও সামনে শিশুকে দাঁড়াতে
দিবেন না বা বাইরের কেউ শিশুর সামনে দাঁড়াবে না।
৩. যারা বাসার বাইরে কাজে যাচ্ছেন, তাদের ঘরে ফিরে
শিশুর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। বিশেষত পর্যাপ্ত
পরিচ্ছন্নতা বা সুরক্ষা নেয়া ছাড়া তো নয়ই।
৪. শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন সি
জাতীয় ফল, সবজি, পানি খাওয়াতে হবে। তাতে শিশুর রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
৫. শিশুকে বাসায় এমন একটি পরিবেশে রাখার চেষ্টা করতে
যেন তার স্বভাবিক বৃদ্ধি আটকে না যায়। অর্থাৎ,
খেলাধুলার ব্যবস্থা করা। বিভিন্ন ধরণের ইনডোর গেমের
মাধ্যমে তাকে উৎফুল্ল রাখা।
৬. লকডাউন বা ফিজিক্যাল ডিসটেন্স এ সময়টাই শিশু বাসার
ভেতরে খেলাধুলা সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।
৭. খেয়াল রাখতে হবে টেলিভিশনে রোগিরা ভেন্টিলেশনে আছে
এমন ফুটেজ যেন না দেখে। এতে শিশুটি মানসিকভাবে দুর্বল
হলে তার ক্ষতি হতে পারে।
৮. শিশুটিকেও বারবার পরিচ্ছন্নতার চর্চা শিক্ষা দিতে
হবে। কিভাবে হাত পরিষ্কার রাখতে হবে তা বুঝাতে হবে।
৯. বাইরের শিশুদের সঙ্গে এ সময়টায় মিশতে দেয়া যাবে না।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
দুই বোনই পুলিশ কর্মকর্তা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নাসরিন আক্তার ও শিরিন আক্তার।নাসরিন আক্তার ও শিরিন
আক্তার।গ্রামে স্কুলপড়ুয়া সমবয়সী মেয়েদের বিয়ে নিয়ে
অভিভাবকেরা যখন ব্যস্ত, তখন তাঁদের বাবার সাফ কথা,
মেয়েদের আগে পড়ালেখা শেষ করতে হবে। শুধু তাই নয়,
পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করে স্বাবলম্বী হওয়ার পরই বিয়ে।
মেয়েরাও তাঁর কথা রেখেছেন। বাবা মো. আকবর হোসেনের
উৎসাহে নাসরিন আক্তার ও শিরিন আক্তার বর্তমানে পুলিশের
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আকবর হোসেনের অন্য দুই মেয়ে
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন।
সম্প্রতি প্রথম আলোর কার্যালয়ে বসে বাবার উৎসাহে
তাঁদের দুই বোনের পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ার গল্প শোনালেন
সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ) শিরিন আক্তার। ঢাকায়
পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
নাসরিন আক্তারের দেখানো পথ ধরে এ পেশায় যোগ দিয়েছেন
শিরিন। বড় বোন নাসরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস
বিভাগে পড়াশোনা শেষ করে ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশে
যোগ দেন। আর শিরিন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান
বিষয়ে পড়াশোনা শেষে ৩৬তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশে যোগ
দেন।
টাঙ্গাইলে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ২
জনের যাবজ্জীবন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
টাঙ্গাইলে এক নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই জনের
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও এক লাখ টাকা
জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু
নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম খালেদা
ইয়াসমিন আসামিদ্বয়ের উপস্থিতিতে জণাকীর্ণ আদালতে এ রায়
দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কালিহাতী উপজেলার মৃত রহিজ
উদ্দিনের ছেলে নূর মোহাম্মদ ওরফে নুরু (৬৫) এবং ওই
ধর্ষণ ও হত্যায় সহায়তাকারী বাসাইল উপজেলার নাজির
হোসেনের স্ত্রী নাজমা (৩২)।
ধর্ষণ ও হত্যার শিকার আশা আক্তার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার
ফৈলারঘোনা গ্রামের আলীমের মেয়ে। তিনি টাঙ্গাইল শহরের
এনায়েতপুরে তার নানার বাড়িতে থাকতেন।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের
বিশেষ পিপি নাছিমুল আক্তার জনান, ২০১৬ সালের ১৮
অক্টোবর আশা আক্তার নানার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। দীর্ঘ
১০-১২ দিনেও তাকে খুঁজে না পাওয়ায় তার বাবা আলীম বাদী
হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কালিহাতী থানায়
মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী
থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন নাজমাকে
গ্রেফতার করেন। নাজমা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক
জবানবন্দি দেন। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নূর
মোহাম্মদ ওরফে নুরুকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
গ্রেফতাররা জানান, ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর তারা দুজনে
আশা আক্তারকে নিয়ে কালিহাতী উপজেলার ধানগড়া গ্রামের
মান্দাই বিলের কাছে যান। নূর মোহাম্মদ পরে আশা আক্তারকে
দুই বার ধর্ষণ করে এবং নাজমার সহায়তায় বিলের পানিতে
চুবিয়ে ও শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে
২০১৭ সালের ৩১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
করে। মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
করোনার জের: কলকাতার কারাগারে বন্দিদের তাণ্ডব
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনা আতঙ্কের জেরে খুব জরুরি ছাড়া আদালতের সব কাজকর্ম
সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে বিচারাধীন
বন্দিদের বিচার স্তব্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া সতর্কতা হিসেবে
জামিনের বহু আবেদনেরও নিষ্পত্তি বন্ধ রয়েছে। সতর্কতা
হিসেবে সাময়িক ভাবে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বন্দিদের
দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সবেরই প্রতিবাদে
কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের একদল বন্দি
ক্ষুব্ধ হয়ে কারাগারের অভ্যন্তরে ব্যাপক ভাঙচুর
চালিয়েছে। আগুন ধরিয়ে দিয়েছে কারাগারের সম্পত্তিতে।
সেইসঙ্গে বন্দিরা করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক থেকে বাঁচতে
মাস্ক ও স্যানিটাইজার দাবি করেছেন। কারা সূত্রের খবর
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ
ভার্মা সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা কারাগারে গিয়ে কয়েক
ঘণ্টার চেষ্টায় ক্ষুব্ধ বন্দিদের শান্ত করতে সক্ষম
হয়েছেন।
দমকলের কয়েকটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলের আগুন নিভিয়েছে। জানা
গেছে, এ দিন সকালে গণ্ডগোল শুরু হয়েছিল। দমদম
কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ১ নম্বর ওয়ার্ডে মূলত
বিচারাধীন বন্দিরাই থাকেন। জেল সুপার নিজে বিক্ষোভ
থামাতে গেলে, তার সামনে একাধিক দাবি নিয়ে হাজির
হয়েছিলেন বন্দিরা। বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মতো
তাদেরও প্যারোলে ছাড়তে হবে। এই নিয়েই জেল কর্তৃপক্ষ এবং
বন্দিদের মধ্যে বচসা থেকে তা সংঘর্ষের আকার নেয়।
অভিযোগ, ওই সংঘর্ষ চলাকালীন জেল পুলিশ এবং বাইরে থেকে
র্যাব এসে ওয়ার্ডের মধ্যেই বিচারাধীন বন্দিদের ওপর
ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে। বন্দিরা পাল্টা ওয়ার্ডে
ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। সেই সময় বিক্ষুব্ধ বিচারাধীন
বন্দিরা ওয়ার্ডের গেট ভেঙে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন
বলে অভিযোগ। কারা কর্তাদের দাবি, বন্দিরা দা এবং
কুড়ালের মতো অস্ত্রও হাতে তুলে নিয়েছিলো। পুলিশ অবশ্য
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাইরে থেকে কাঁদানে গ্যাসের
শেল ফাটিয়েছে। পুলিশ গুলিও চালিয়েছে বলে বন্দিরা
অভিযোগ করেছে। দমদম কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েক শ’ বন্দি
রয়েছে। এর মধ্যে বহু বিচারাধীন বাংলাদেশি বন্দিও রয়েছে।
করোনাভাইরাস: কারাবন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে ভারত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করোনা আতঙ্কে ভারতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলের তিন হাজারের
বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই তাদের মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে
বলে জানিয়েছে কারা কতৃপক্ষ।
রাজ্যে প্রতিটি জেলে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ
থাকায় করোনা মোকাবেলায় তাদের আপাতত মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তথা সালসা-র
এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান দীপঙ্করের দত্তের নেতৃত্বে
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি বৈঠকে বসে। এই কমিটি ১০১৭ জন
দণ্ডিত বন্দি এবং ২০৫৯ জন বিচারাধীন বন্দিকে যথাক্রমে
প্যারোলে এবং অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দেওয়ার
সুপারিশ করেছে বলে জানায় কারা কতৃপক্ষ। তিন মাসের জন্য
মুক্তি পেতে পারেন বন্দিরা। তবে কোনও বন্দি যদি আগে এ
ভাবে মুক্তি পেয়ে থাকেন, এই ক্ষেত্রে তাঁর নাম বিবেচিত
হবে না।
তবে নারীদের যৌন হেনস্থা, রাজ্যের বিরুদ্ধে
দাঙ্গাহাঙ্গামা, জাল নোট, শিশু অপহরণ, দুর্নীতি, মাদক
পাচার (এ ক্ষেত্রে মাদকের পরিমাণ বিচার্য) এই ধরনের
অভিযোগে বা বাণিজ্যিক ও আর্থিক অভিযোগে যাঁরা বন্দি
রয়েছেন, তাঁরা অবশ্য মুক্তি পাবেন না। এছাড়া যে সব
বিচারাধীন বন্দি রাজ্যের বাইরের বাসিন্দা এবং যাঁদের
বিরুদ্ধে বিদেশি আইনে অভিযোগ রয়েছে, তাঁরাও এই মুক্তির
তালিকায় থাকবেন না। বিচারাধীন বন্দিদের অন্তর্র্বতী
জামিনের ক্ষেত্রে একাধিক শর্ত থাকবে বলে জানিয়েছে কারা
দফতর।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত হয়ে
কারাবন্দির মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে
প্যাট্রিক জোনস নামের এক কারাবন্দির মৃত্যু হয়েছে। তিনি
মাদক মামলায় ২৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। তার
মধ্যে ভাইরাসটির প্রথম লক্ষণ দেখা দেয় গত ১৯শে মার্চ।
এই প্রথম দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো কারাবন্দির
মৃত্যু হলো। দেশটির কেন্দ্রীয় কারাগার ব্যুরো (বিওপি)
স্থানীয় সময় শনিবার একথা জানিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা
সংস্থা রয়টার্স।
বিওপির ওয়েবসাইট অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কেন্দ্রীয়
কারাগারগুলোয় সবমিলিয়ে ১৪ বন্দি ও ১৩ কর্মী করোনায়
আক্রান্ত হয়েছেন। জোনস ২০১৭ সালে লুইজিয়ানার ওকডেলে
একটি স্বল্প-নিরাপত্তা সম্বলিত কারাগারে বন্দি ছিলেন।
বিওপি জানায়, তিনি আগ থেকেই কিছু জটিল রোগে ভুগছিলেন।
পুলিশ হেফাজতে
নারীর মৃত্যু
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা হাজতে জ্যোৎস্না ওরফে লিমা
(৩৫) নামে এক নারী মারা গেছেন। পুলিশ বলছে, সোমবার রাতে
থানা হাজতে অসুস্থ হওয়ায় তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
ও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। গতকাল ভোরে কর্তব্যরত
চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বামী পরিত্যক্তা
জ্যোৎস্না থাকতেন মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে।
মোহাম্মদপুর জোনের এসি মো. রওশানুল হক সৈকত জানান,
সোমবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে ডি-টাইপ
কলোনির একটি ফ্ল্যাটে পতিতাবৃত্তি হচ্ছে- ৯৯৯ নম্বরে
এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। ঘটনাস্থল থেকে সেলিনা,
জ্যোৎস্না, শাহিনুর, সোহাগকে আটক করা হয়। থানায় এনে
তাদের রাতের খাবারও দেওয়া হয়। রাত ৩টার পর জ্যোৎস্না
অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে জাতীয় হৃদরোগ
ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্যোৎস্না মারা যান। সরকারি
বরাদ্দপ্রাপ্ত কলোনির ওই বাসাটি সেলিনার জানিয়ে পুলিশ
কর্মকর্তা সৈকত বলেন, সেলিনার স্বামী অনেক আগেই মারা
গেছেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তার স্বামী
কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
মাস্টার্স করা সেলিনার বিরুদ্ধে মানবপাচারের দুটি
মামলাও রয়েছে।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
করোনাভাইরাস থেকে
বাঁচতে কী করবেন?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে
৮১৩-তে। আর এতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩৭ হাজার ১৯৮ জন
মানুষ। রোববার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে
এসব তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
তবে বাংলাদেশে এখনও এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েনি। তবে এই
ভাইরাস না ছড়ালেও সাবধান থাকা জরুরি। বিভিন্ন
সংবাদমাধ্যমের সূত্রানুসারে ভারতে অন্তত তিনজনকে এই
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তাই বাংলাদেশে এ
ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ভারতের সেন্টার অব ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড
প্রিভেনশনের(সিডিসি) দেয়া পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক
একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার কয়েকটি উপায় জানা গেছে।
আসুন জেনে নিই করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে কী করবেন?
১. করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রাথমিক সুরক্ষার বিষয়গুলো
জানতে হবে।
২. হাত ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। নাক, মুখ, চোখ
আবৃত রাখতে হবে যাতে ভাইরাসের সংক্রমণ না হয়।
৩. বাহ্যিক বিভিন্ন বস্তুর এবং জনসাধারণের ব্যবহৃত
বস্তুগুলো ব্যবহার পর অবশ্যই জীবাণু ম্ক্তু হতে হবে।
৪. অনেকেই মনে করেন ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ পরলে ভাইরাস
সংক্রমণের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এই ‘মাস্ক’
সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়, তবে পুরোপুরি আশঙ্কা ম্ক্তু করে
না। ‘এন নাইনটি ফাইভ’ নামক ‘সার্জিক্যাল মাস্ক’ সবচাইতে
শক্তিশালী সুরক্ষা দেবে এই ক্ষেত্রে।
৫. তীব্র ‘ফ্লু’তে ভুগছেন কিংবা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৬. ১৪ দিনের মধ্যে যারা চীন গেছেন, তাদের এবং তাদের
আশপাশে থাকার লোকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
৭. এই ভাইরাস থেকে সংক্রমণের পূর্বাভাস দেখা দিলে
সুস্থ মানুষের সঙ্গ পরিহার করুন। যাদের মাঝে ভাইরাস
সংক্রমণ হতে না পারে তারে সঙ্গ এড়িয়ে চলুন।
৮. বিশ্বব্যাপী সব বিমানবন্দরে রাখা হয়েছে কড়া সুরক্ষা
ব্যবস্থা। তাই ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা আছে এমন স্থান
থেকে দূরে থাকতে হবে।
৯. ঘরে থেকে বিশ্রাম নিন। নিজে সুস্থ হন, অপরকে
সুরক্ষিত রাখুন।
মানবদেহের বাইরে
কতোক্ষণ বাঁচে করোনাভাইরাস
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে কভিড-১৯, প্রতিদিনই বাড়ছে
মৃত্যু। ভাইরাসটি কীভাবে ছড়াচ্ছে তা এখনো স্পষ্ট না
হলেও অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো এর আচরণ
এমটাই ধরে নেয়া হচ্ছে। ফলে মানবদেহের বাইরে এটি
কতোক্ষণ জীবিত থাকতে পারে সেটি এখন গুরুত্বপূর্ণ
আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বণিক বার্তা
সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠতল
স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এ
কারণে বস্তুর পৃষ্ঠতল নিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি বাড়ছে।
এখন অফিস আদালতের দরজার হাতল আর কেউ ধরতে চাচ্ছেন না,
বাস-ট্রেনসহ গণপরিবহণে ওঠা নামার সময়ও ঝুঁকি নিয়ে
সার্ফ করার মতো করে ওঠানামা করছেন, কর্মীরা সকালে অফিসে
এসেই আগে ডেস্ক পরিষ্কার করছেন জীবাণুনাশক দিয়ে।
যেসব এলাকায় এরই মধ্যে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে
পড়েছে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা বিশেষ পোশাক পরে শপিংমল,
প্লাজা, পার্ক, রাস্তাঘাট ইত্যাদি জনসমাগমের স্থানে
জীবাণুনাশক স্প্রে করছে। অফিস, হাসপাতাল, দোকানপাট,
রেস্টুরেন্টেও জীবাণুনাশকের ব্যবহার বেড়েছে। অনেক শহরে
স্বেচ্ছাসেবীরা প্রতি রাতে এটিএম মেশিনের কি-বোর্ড
জীবাণুনাশক দিয়ে মুছে দিচ্ছেন।
ফ্লুসহ অন্য অনেক শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ সৃষ্টিকারী
ভাইরাসের মতো কভিড-১৯ ভাইরাসও আক্রান্ত ব্যক্তির নাক ও
মুখ দিয়ে কাশির অতিক্ষুদ্র ফোঁটার মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
একবার কাশিতে এমন প্রায় ৩ হাজার ফোঁটা বের হয়। সাবধানতা
অবলম্বন না করলে এসব কণা পড়তে পারে অন্য লোকের গায়ে,
কাপড়ে অথবা আশেপাশের বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠতলে। কিছু কণা
বাতাসেও ভেসে থাকতে পারে। নরম বস্তুর গায়ে ভাইরাস
তুলনামূলক বেশি সময় টিকে থাকতে পারে বলে প্রমাণ রয়েছে।
এ কারণে টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর বা জীবাণুদূষিত কিছু
স্পর্শ করার পর ভালোভাবে হাত না ধুলে সেই হাত থেকে
জীবাণু ছড়াতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)
বলছে, দূষিত বস্তুর পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর মুখে হাত
দেয়াই ভাইরাস ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম এমন কোনো কথা নেই।
তবে এরপরও সিডিসি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য
দেশে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে
ঘন ঘন হাত ধোয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। যদিও বস্তুর দূষিত
পৃষ্ঠতল থেকে এখন পর্যন্ত কতোজন আক্রান্ত হয়েছেন এর
কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই, তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো
সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো কভিড-১৯ রোগ সৃষ্টিকারী
ভাইরাস সার্স-কোভ-২ আসলে মানবদেহের বাইরে কতোক্ষণ টিকে
থাকতে পারে। সার্স এবং মার্সের মতো ভাইরাসগুলোর বিষয়ে
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এরা ধাতু, কাচ এবং
প্লাস্টিকের পৃষ্ঠে নয় দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
এমনকি নিম্ন তাপমাত্রায় কিছু ভাইরাস ২৮ দিন পর্যন্ত
অক্ষত থাকে।
কোথায় বেঁচে থাকতে পারে এটির ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের
ব্যাপারে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ কারণে
গবেষকরা কভিড-১৯ প্রতিরোধে এ বিষয়ে গবেষণার ওপরও জোর
দিচ্ছেন। তারা বুঝার চেষ্টা করছেন, এ ভাইরাস মানবদেহের
বাইরে কোথায় কতোদিন টিকে থাকতে পারে।
এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য
ইনস্টিটিউটের (এনআইএইচ) ভাইরোলজিস্ট নিলতে ভন ডোরমালেন।
মোন্টানার হ্যামিল্টনে রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরির
সহকর্মীদের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন বস্তুর পৃষ্ঠতলে
সার্স-কোভ-২ ভাইরাস কতো সময় টিকতে পারে তা নিয়ে গবেষণা
করেছেন। তাদের গবেষণা প্রতিবেদনটি একটি বিজ্ঞান
সাময়িকীতে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
তাদের গবেষণায় দেখানো হয়েছে, বাতাসে কাশির সঙ্গে বেরিয়ে
আসা ক্ষ্দ্রুফোঁটার মধ্যে এ ভাইরাস তিন ঘণ্টা পর্যন্ত
বাঁচে। ছোট আকারের কোণা যেগুলো ১-৫ মাইক্রোমিটার
আকারের হয় (মানুষের চুলের প্রায় ৩০ ভাগের এক ভাগ)
সেগুলো স্থির বায়ুতে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত ভেসে অক্ষত
থাকতে পারে।
এর অর্থ হলো, বায়ু চলাচলের পথে যদি কোনো ফিল্টার না
থাকে তাহলে এ ভাইরাস বড়োজোর কয়েক ঘণ্টা ভাসমান অবস্থায়
জীবিত থাকতে পারে। যেখানে অ্যারোসলের কোণা অস্থির
বাতাতেও এর চেয়ে দ্রুত নিচে পড়ে যায়।
এনআইএইচের গবেষণায় আরো বলা হচ্ছে, সার্স-কোভ-২ ভাইরাস
কার্ডবোর্ডের (শক্ত কাগজের বোর্ড) গায়ে ২৪ ঘণ্টা
পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারে। আর প্লাস্টিক এবং স্টেইনলেস
স্টিলের গায়ে থাকতে পারে ২-৩ দিন পর্যন্ত। ফলে আপনার
সেলফোনটি নিয়ে সাবধান থাকুন!
সকালে মেথি চা খেলে যেসব রোগ কাছেও
ঘেষবে না
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
সকালে এককাপ চা না হলে কি চলে? আপনার সারা দিনের কাজের
জন্য শরীরকে তৈরি করবে এককাপ চা। বিভিন্ন ধরনের চা খেয়ে
থাকি আমরা। তবে শরীরের জন্য সবচেয়ে উপকারী হচ্ছে মেথি
চা। এই চা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেথি চা দারুণ উপকারী। যারা
ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের সুস্থ থাকতে মেথি চা পান করতে
পারেন নিয়মিত। সুগার ছাড়াও বিভিন্ন রোগ দূর করে মেথি
চা।
তাই সকালে নাস্তায় খেতে পারেন মেথি চা। আসুন জেনে নিই
মেথি চায়ের উপকারিতা-
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে
সকালের নাস্তায় খেতে পারেন মেথি চা। ডায়াবেটিস থেকে
বাঁচতে আগাম সাবধানতার জন্য এখন থেকেই শুরু করতে পারেন
মেথ চা-পান করা।
ওবেসিটি কমায়
সকালে খালি পেটে এক কাপ মেথি চা মানেই হজম ক্ষমতা বেড়ে
যাওয়া। এ ছাড়া অতিরিক্ত চর্বি কমবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
মেথিতে চা হজম ও আলসারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া
মেথির মধ্যে থাকা ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য
করে। এতে দ্রুত হজম হয়।
হৃদরোগের সম্ভাবনাও কমায়
রোজ সকালে মেথি চা মানেই কোলেস্টেরল কম। আর তাতে ধমনী,
শিরার চর্বি থাকতে পারে না। এতে রক্ত চলাচল ভালো হয়।
ভালো থাকে হার্ট।
ভালো রাখে কিডনি
প্রতিদিন মেথি চা পান করলে পরিষ্কার থাকে কিডনিও।
মেথির প্রভাবে ইউরিন ক্লিয়ার থাকে। কিডনিতে স্টোন
হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
কীভাবে মেথি চা তৈরি করবেন?
এক চা-চামচ মেথি গুড়ো করে নিন। এক কাপ ফুটন্ত গরম
পানিতে ওই গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। এক চা-চামচ মধু মেশাতে
পারেন। চাইলে চা পাতা বা তুলসী পাতাও মেশানো যেতে পারে
এতে।
সব উপকরণ দিয়ে মিনিট তিনেক ভিজিয়ে রাখুন। ছেঁকে নিয়ে
গরমাগরম চুমুক দিন।
৫টি উপায়ে শরীর রাখুন বিষমুক্ত
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য শরীর বিষমুক্ত
রাখা একান্ত প্রয়োজন। নিয়মিত সহজলভ্য কিছু খাবার
গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীর থেকে এই বিষাক্ত
উপাদানগুলো দূর করতে পারি।
তিতা খাবার
তিতা খাবার আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে
দিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে
চিরতার পানি অথবা করলা কিংবা নিমপাতার রসের জুডি নেই।
লেবু
লেবুতে আছে একগুচ্ছ ডিটক্স ডাইট যা টক্সিন নামক বিশেষ
প্রকার জৈব, যা বিষ নির্মূলে সহায়তা করে। এছাড়া লেবুতে
রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত ও ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী।
তাছাড়া লেবুর ক্ষারীয প্রভাব আপনার শরীরে অম্লতার
ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। প্রতিদিন এক ফালি লেবুর সাথে গরম
পানি আপনার শরীর থেকে বিষ নির্মূল করবে।
রসুন
আমরা সবাই জানি হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে উপকারী
খাদ্য রসুন। এতে রয়েছে এলিসিন নামক রাসায নিক উপাদান
যা রক্তে শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন ও টক্সিন নির্মূলে
সাহায্য করে। রসুন কাচা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।
গ্রিন টি
শরীর থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক নির্মূলে গ্রিন-টি’র
কোনো বিকল্প নেই। তরল এই খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন
অংশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি
শুধু চা নয , একে ওজন কমানোর ঔষুধও বলা চলে। এতে রয়েছে
উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
টাটকা ফল
তাজা ফলে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
ফাইবার ও কম ক্যালোরি যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো
নির্মূলে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে চোখ ও ত্বককে উজ্জ্বল
করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।
খালি
পেটে রসুন খাওয়ার ৬টি আশ্চর্যজনক উপকার
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
খালি পেটে রসুন খাবার বিষয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। খালি
পেটে রসুন খেলে বিভিন্ন রোগ দূর হবার সাথে সাথে
বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও গড়ে তোলে। তবে যাদের
রসুন খাবার ফলে এলার্জির আশঙ্কা কিংবা মাথা ব্যথার
সমস্যা হয়, বমির প্রাদুর্ভাব হয় তারা অবশ্যই কাঁচা
রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খালি পেটে রসুন খাবার
উপকারিতা জেনে নিন-
১. প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক:
গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাবার ফলে এটি একটি
শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর ন্যায় কাজ করে। সকালে
নাস্তার পূর্বে রসুন খেলে এটি আরও কার্যকরীভাবে কাজ করে।
তখন খালি পেটে রসুন খাবার ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো
উন্মুক্ত হয় এবং তখন রসুনের ক্ষমতার কাছে তারা
নতিস্বীকার করে। তখন শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমূহ
আর রক্ষা পায় না।
২. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:
অসংখ্য মানুষ যারা উচ্চ রক্তচাপের শিকার তারা দেখেছেন,
রসুন খাবার ফলে তাদের উচ্চ রক্তচাপের কিছু উপসর্গ উপশম
হয়। রসুন খাবার ফলে তারা শরীরে ভাল পরিবর্তন দেখতে পায়।
৩. অন্ত্রের জন্য ভাল:
খালি পেটে রসুন খাবার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে
নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করে। এছাড়াও, এর ফলে পেটের
বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় যেমন- ডায়রিয়া। এটা হজম ও
ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এটি স্ট্রেস দূর
করতেও সক্ষম। স্ট্রেস বা চাপের কারনে আমাদের
গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায় পরতে হয়। তাই, খালি পেটে রসুন
খেলে এটি আমাদের স্নায়বিক চাপ কমিয়ে এ সকল সমস্যা দূর
করতে সাহায্য করে।
৪. শরীরকে ডি-টক্সিফাই করে:
অন্যান্য ঔষধের তুলনায় শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে রসুন
কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন
প্যারাসাইট, কৃমি পরিত্রাণ, জিদ, সাক্সঘাতিক জ্বর,
ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং ক্যান্সার এর মত বড় বড় রোগ
প্রতিরোধ করে।
৫. শ্বসন:
রসুন যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন,
হাপানি, হুপিং কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধ করে। রসুন এ সকল
রোগ আরোগ্যের মাধ্যমে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
৬. যক্ষ্মা প্রতিরোধক:
আপনার যদি টিবি জাতীয় কোন সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে
সারাদিনে একটি সম্পূর্ণ রসুন কয়েক অংশে বিভক্ত করে বার
বার খেতে পারেন। এতে আপনার যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে সহায়তা
পাবেন।
ভ্রমণে বমি এড়াতে আপনি কী করবেন?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
ভ্রমণের সময় অনেকের বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার সমস্যা হয়।
এটাকে বলা হয় মোশন সিকনেস বা গতির অসুস্থতা। গতির (ভ্রমণ)
জন্য কানের ভেসটিবুলার অংশের সমস্যার ফলে এই অবস্থা হয়।
এ ধরনের সমস্যা ভ্রমণকে কষ্টদায়ক করে তোলে। বমি
প্রতিরোধে অনেকেই ভ্রমণের আগে ওষুধ খেয়ে নেন। তবে কিছু
খাবারও রয়েছে যা খেলে বমি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে এমন কিছু
খাবারের নাম।
আদা
আদা বমি প্রতিরোধী খাদ্য হিসেবে বেশ পরিচিত; এটি হজমের
জন্য উপকারী। যদি আপনার বমির সমস্যা হয় তাহলে ভ্রমণের
আগে আদার চা খেয়ে নিতে পারেন। গর্ভাবস্থার বমি
প্রতিরোধেও এটি কার্যকরী।
পুদিনা
পুদিনার চা বমি বন্ধে বেশ উপকারী। পুদিনা পাতা ভালোভাবে
ধুয়ে একটু মধু মিশিয়ে চায়ের সাথে খেতে পারেন। আর পথে
থাকলে কিছু পুদিনা পাতা চাবাতেও পারেন। এর গন্ধ বমি বমি
ভাব ও বমিরোধে সাহায্য করবে।
দারুচিনি
দারুচিনি বমিনাশক উপাদান হিসেবে উপকারী। আপনি
দারুচিনির চা খেতে পারেন। চাইলে স্বাদ বাড়াতে একটু
মধুও যোগ করতে পারেন এর সাথে। গর্ভাবস্থার সকালের
অসুস্থতা কাটাতে এবং বমি দূর করতে দারুচিনির চা খুব
কার্যকরী।
পেঁয়াজের জুস
পেঁয়াজের জুস দ্রুত বমি ভাব থেকে মুক্তি দেয়। পেঁয়াজ
এবং আদা থেঁতলে জুস করে একসঙ্গে খেতে পারেন। এটি ভালো
কাজ করে।
লবঙ্গ
বমি বমি ভাব ও বমি থামানোর জন্য কিছু লবঙ্গ মুখে নিয়ে
চাবাতে পারেন। এর স্বাদ বাড়াতে একটু মধু যোগ করতে
পারেন। পাকস্থলি ভালো রাখতেও লবঙ্গ বেশ উপকারী।
এলাচ
এলাচ চাবানোও দ্রুত বমি রোধে বেশ উপকারী; এটি হজমের
জন্য ভালো। আপনি এলাচ ও দারুচিনির চা খেতে পারেন।
গরম লেবুপানি
গরম লেবুর পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
মাথাব্যথা, বমি এবং বমিবমি ভাব দূর করতে এই পানি উপকারী।
জিরা
ভ্রমণের আগে জিরার গুঁড়া পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে
পারেন। এটি বমি দূর করতে সাহায্য করবে।
মৌরি
মৌরিও বমি বমি ভাব এবং বমি রোধে সাহায্য করে। দ্রুত বমি
ভাব দূর করতে কিছু মৌরি চাবাতে পারেন। মৌরির চা পান
করতে পারে ভ্রমণের আগে।
ধূমপানে সিজোফ্রেনিয়া
ধূমপানের সঙ্গে সিজোফ্রেনিয়া রোগের যোগসূত্র রয়েছে বলে
আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। লন্ডনের কিংস কলেজের এক
দল গবেষক ৬০টির বেশি গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে দেখেছেন,
ধূমপায়ীদের সিজোফ্রেনিয়া রোগ বা ‘দ্বৈত সত্তা’র
সমস্যায় ভোগার প্রবণতা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা
বলছেন, সিগারেটের নিকোটিন মস্তিষ্কের গঠন বদলে দিতে
পারে।
বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন ‘সাইকোসিস’ বা যে
মানসিক বৈকল্যের কারণে মানুষ বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্ক
হারিয়ে ফেলে তার সঙ্গে ধূমপানের যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু
এত দিন ধূমপানকে এর কারণ হিসেবে দেখা হতো না বরং মনে
করা হতো, এই মানসিক অবস্থা রোগীকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ
করছে।
Top
আইন কনিকা
ভরণপোষণ না দেয়ায়
স্বামীর ৪৮০ দিনের জেল
আলী আজম
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেয়ায় ভারতের আহমেদাবাদের এক আদালত
৪৮০ দিনের জেল দিয়েছে ওই নারীর স্বামী নরেশ রজনী
(২৯)কে। নরেশ আহমেদাবাদের শীর্ষ স্থানীয় একটি ওষুধ
কোম্পানিতে চাকরি করেন। ডমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্টের
অধীনে তার থেকে আলাদা থাকা স্ত্রীকে ভরণপোষণ বাবদ তাকে
এক লাখ ২০ হাজার রুপি দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু
এ অর্থ না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে ওই রায় দেয়া হয়েছে। এ
খবর দিয়ে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, মির্জাপুরে
স্থানীয় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এ বিষয়ে
শুনানি হয় সোমবার। এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে স্ত্রীকে মাসে
৭৫০০ রুপি দিতে আদালত নির্দেশ দেয় নরেশকে। কিন্তু ১৬
মাস ধরে ওই অর্থ পরিশোধ করেনি নরেশ। এ অবস্থায় তার
স্ত্রী আইনজীবী সেলিম সাঈদের মাধ্যমে বকেয়া এক লাখ ২০
হাজার রুপি চেয়ে আদালতে আরেকটি আবেদন করেন।
এর প্রেক্ষিতে সোমবার আদালতে তলব করা হয় নরেশকে। তাকে
বকেয়া পরিশোধ না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
জবাবে নরেশ বলেন, নিকট ভবিষ্যতে তিনি তার স্ত্রীকে ওই
অর্থ পরিশোধে সক্ষম হবেন না। কারণ, তিনি এই অর্থ
সংগ্রহ করতে পারেন নি। আদালত দেখতে পায়, তার উত্তর
অযৌক্তিক এবং সন্তোষজনক নয়। আদালত থেকে বলা হয়, তিনি
এখনো এই অর্থ পরিশোধে প্রস্তুত নন। তাকে আর সময় দেয়ার
কোনো কারণই থাকতে পারে না। কারণ, এটা হবে তার স্ত্রীর
প্রতি অবিচার এবং আইনের ব্যত্যয়। তাই প্রতি মাসের
খেলাপির জন্য ৩০ দিন করে তাকে মোট ৪৮০ দিন জেল দেন
বিচারক।
নামজারি কেন করবেন?
কীভাবে করবেন?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কোনো ব্যক্তি কোনো জমির মালিকানা লাভ করার পর তার নাম
সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করা বা তার নিজ নামে
নতুন খতিয়ান খোলার যে কার্যক্রম তাকে খারিজ/নামজারি বা
মিউটেশন বলে। সাধারণত দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জরিপের
মাধ্যমে রেকর্ড সংশোধন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। ফলে দুই
জরিপের মধ্যবর্তী সময়ে উত্তরাধিকারের মাধ্যমে জমি
প্রাপ্তির ফলে কিংবা দলিলের মাধ্যমে জমি হস্তান্তরের
ফলে ভূমি মালিকানার পরিবর্তনে খতিয়ান হালনাগাদকরণ
অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি)
খারিজ/নামজারি বা মিউটেশনের মাধ্যমে খতিয়ান হালকরণের
কাজ করে থাকে।
কেন খারিজ/ নামজারি/ নিউটেশন করবেন?
১। যে কোনো সময় জমি বিক্রয় করা যাবে (রেজিস্ট্রেশন আইন,
১৯০৮-এর ৫২এ ধারা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২-এর
৫৩সি ধারা অনুসারে, দলিলমূলে প্রাপ্ত জমির নামজারি
খতিয়ান না থাকলে সে জমি বিক্রয় করা যায় না)।
২। ভূমির মালিকানা হালনাগাদ হবে।
৩। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়/প্রদান করা সহজ হবে।
৪। খতিয়ান হালনাগাদ থাকার ফলে জরিপ কাজে সুবিধা হবে।
৫। সরকারের খাস জমি সংরক্ষণে সুবিধা হবে।
৬। নদী পয়স্তিজনিত কারণে রেকর্ড সংশোধন হবে।
৭। মূল ভূমি মালিকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারগণের
মালিকানার নির্দিষ্ট অংশ সংবলিত খতিয়ান প্রস্তুত হবে।
৮। রেজিস্ট্রিকৃত দলিলমূলে জমি হস্তান্তরের কারণে
ক্রেতা বা গ্রহীতার নামে খতিয়ান প্রস্তুত হবে।
৯। মামলা-মোকদ্দমা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
১০। বিক্রেতা আপনার ক্রয়কৃত জমি দ্বিতীয়বার বিক্রি করতে
পারবে না।
সর্বোপরি যে কোনো বিতর্কের সময় মালিকানা বা দখল
প্রমাণের ক্ষেত্রে নামজারিসংক্রান্ত কাগজপত্রাদি
গুরুত্বপূর্ণ কাগজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
নামজারি তিন ধরনের হয়ে থাকে-
১। শুধু নামজারি বা নামপত্তন : কোনো রেকর্ডীয় মালিকের
নামের পরিবর্তে ওই একই খতিয়ানে পরবর্তী গ্রহীতা ও
ওয়ারিশগণের নামভুক্ত হলে, তা শুধু নামজারি বা নামপত্তন
হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব
আইনের ১৪৩ ধারা মতে এ ধরনের নামজারি বা নামপত্তন হয়ে
থাকে।
২। নামপত্তন ও জমা খারিজ : কোন দাগের জমি বিক্রয় বা
অন্য কোনো প্রকার হস্তান্তরের মাধ্যমে বিভক্ত হলে এবং
ওই বিভক্তির জন্য পৃথক হিসাব বা হোল্ডিং খুলে ভূমি
উন্নয়ন কর আদায়ের আদেশ দিলে তা নামপত্তন ও জমা খারিজ
নামে পরিচিত। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকানার পরিবর্তন হবে
এবং পৃথক খতিয়ান এবং হোল্ডিং নম্বর পড়বে। রাষ্ট্রীয়
অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৩ ও ১১৭ ধারা মতে
নামপত্তন ও জমা খারিজ প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়ে থাকে।
রিমান্ড কি
মানবাধিকার পরিপন্থী?
মানবাধিকার ল’ ডেস্ক
কোনও আসামিকে গ্রেফতার করার পর তথ্য উদঘাটনের জন্য
পুলিশ ওই আসামিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রাখতে
পারেন। তারপর আইন অনুযায়ী তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে
হাজির করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে মামলা সম্পর্কে তথ্য
উদঘাটন সম্ভব না হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে
আসামিকে রিমান্ডে নেয়া যায়।
এ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করা না করা এবং করলে কয়দিনের
জন্য তা ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনামূলক ক্ষমতার ওপর
নির্ভর করে। একাধিকবারও পুলিশ আসামিকে রিমান্ডে নিতে
পারেন। তবে সর্বসাকুল্যে একটি ঘটনার জন্য ১৫ দিনের বেশি
রিমান্ডে রাখা যায় না।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আগে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই
পুলিশ ডায়েরি (সিডি) দেখতে হবে, যাতে আসামির বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
যায়। এছাড়া রিমান্ডের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
দায়ের করা হয়েছে কিনা, আসামি শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা
এসব বিষয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট
রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদেশ উপরস্থ ম্যাজিস্ট্রেট এবং
এসপিকে (পুলিশ সুপার) জানানোর নির্দেশ দেবেন। রিমান্ড
মঞ্জুর করলে অর্ডার শিটে যথাযথ কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
এছাড়া রিমান্ড মঞ্জুরের সময় আসামিকে হাজির করা হয়েছে
কিনাÑ সে বিষয়টিও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। চীফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম
শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক
বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেটের এ রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে এ রিমান্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে।
মানুষ পেটানোর হাতিয়ার এই রিমান্ড। মানুষকে রিমান্ডে
নিয়ে পিটিয়ে তথ্য আদায় করা হয়। এর ফলে রিমান্ডকে
মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেন মানবাধিকারকর্মীরা।
যৌতুকের মিথ্যা মামলার
শাস্তি ৫ বছর রেখে আইন পাস
যৌতুক দেওয়া-নেওয়া এবং যৌতুক নিয়ে মিথ্যা
মামলার ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল ও ৫০ হাজার টাকা
জরিমানার বিধান রেখে সংসদে ‘যৌতুক নিরোধ বিল-২০১৮’ পাস
হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মহিলা ও শিশুবিষয়ক
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি জাতীয় সংসদে বিলটি
পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
কারও ক্ষতি করার জন্য যৌতুকের মামলা বা অভিযোগ করলে
পাঁচ বছরের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে
দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে পাস হওয়া বিলে। আগের আইনে
যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলার জন্য কোনও দণ্ডের বিধান ছিল
না।
বিলে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনও এক পক্ষ প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে অন্য পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি করে তবে
সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কিন্তু সর্বনিম্ন এক বছরের জেল
বা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
যৌতুক গ্রহণ বা প্রদান করলেও একই ধরনের সাজা হবে।’
এতে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য
ও জামিন অযোগ্য হবে। তবে আপসযোগ্য হবে।’
এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে
পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি হয়। গত ২৫
জুন বিলটি সংসদে তোলার পর তা পরীক্ষা করে সংসদে
প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
১৯৮০ সালের এ সংক্রান্ত আইন বাতিল করে নতুন করে আইন
করতে বিলটি তোলা হয়েছে সংসদে। ১৯৮০ সালের ওই আইন ১৯৮২,
১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।
Top
|
|