           
 
|
Cover February 2017
English Part
February 2017
BHRC Branch activities
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার প্রতিবেদন-২০১৫
জানুয়ারি ’২০১৬ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৭৯ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপে
জানুয়ারি ২০১৭ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত
হয় ১৭৯টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জানুয়ারি মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৫.৭৭
জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুন্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়
গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার
ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে
দেখা যায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে হত্যাকান্ডের
শিকার ১৭৯ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৫ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ৩৩ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৩৫ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৭ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ১৬ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ২ জন, চিকিৎসকের
অবহেলায় মৃত্যু ৭ জন, গুপ্ত হত্যা ০৫ জন, রহস্যজনক
মৃত্যু ৫৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ৬ জন, অপহরণ হত্যা ৫
জন, এসিড হত্যা ১ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২০১ জন, আত্মহত্যা ১১ জন।
জানুয়ারি ২০১৭ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য
ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ২৯ জন, যৌন নির্যাতন ১০
জন এবং যৌতুক নির্যাতনের শিকার ৭ জন। ।
বাংলা ভাষা ব্যবহারে
সকলকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা ভাষা ব্যবহারে সকলকে
বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বাংলা শব্দের বানান ও
উচ্চারণ সর্ম্পকে আরো সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ইদানিং বাংলা বলতে গিয়ে ইংরেজি বলার একটা
বিচিত্র প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জানি না, অনেক
ছেলে-মেয়ের মাঝে এখন এটা সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে
গেছে। এভাবে কথা না বললে যেন তাদের মর্যাদাই থাকে না-
এমন একটা ভাব। ২১ ফেব্র“য়ারি ২০১৭ রাজধানীর
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত পাঁচ
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ কথা
বলেন।
প্রধনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই জায়গা থেকে আমাদের
ছেলে-মেয়েদের বেরিয়ে আসতে হবে। যখন যেটা বলবে
সঠিকভাবেই উচ্চারণ করবে এবং বলবে। ভাষা আন্দোলনের
প্রেক্ষাপট স্মরণ করে তিনি বলেন, আমাদের ভাষার ওপর বার
বার আঘাত এসেছে। এটাকে কখনো আরবি হরফে এবং কখনো রোমান
হরফে লেখার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বাঙালি কখনো তা মেনে
নেয়নি। এটা হচ্ছে বাঙালিদের চরিত্র, অন্যায়ের কাছে মাথা
নত না করা। এ জন্যই আমরা সবসময় বলি একুশ আমাদের
শিখিয়েছে মাথা নত না করার। সেভাবে আমরা স্বাধীনতাও
অর্জন করেছি এই সংগ্রামের পথ বেয়ে।
অন্য ভাষার প্রতি তাঁর কোনো বৈরিতা নেই উল্লেন খ করে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে নিজের ভাষা আগে শিখতে হবে।
সেই সাথে অন্য ভাষাও আমরা শিখবো। শেখ হাসিনা বলেন,
‘অন্য ভাষা শিখতে হবে। কিন্তু মাতৃভাষাকে ভুললে চলবে
না। এটাই হচ্ছে আমাদের কথা। ভাষা শিক্ষার মধ্যে আলাদা
একটা মাধুর্য আছে। পৃথিবীতে একমাত্র মানব জাতিরই ভাষা
আছে। তারাই কেবল বলতে পারে।
চোরা পথে
ক্ষমতায় যেতে চায় না বিএনপি : খালেদা জিয়া

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঢাকা আইনজীবী
সমিতির নবনির্বাচিত বিএনপিপন্থী নেতারা দলের
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২৬
ফেব্র“য়ারি ২০১৭ রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা
আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত বিএনপিপন্থী নেতারা দলের
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২৬
ফেব্র“য়ারি ২০১৭ রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি
চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিতর্কিত আখ্যা
দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের
সুষ্ঠু নির্বাচনের ইচ্ছা থাকলে এমন বিতর্কিত একজনকে
প্রধান নির্বাচন কমিশনার করত না। চোরা পথে নয়, বিএনপি
মানুষের ভোটেই ক্ষমতায় যেতে চায়। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে
যে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিজয় হয়, ঢাকা আইনজীবী সমিতির
নির্বাচন তার প্রমাণ।
২৬ ফেব্র“য়ারি ২০১৭ রাতে গুলশানে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা
আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত বিএনপিপন্থী নেতাদের এ কথা
বলেন।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, আগামী নির্বাচনেও বিজয়ী হতে
আওয়ামী লীগ পরিকল্পনা করে রেখেছে। আর এ কারণেই অযোগ্য
বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি আবারও ক্ষমতায়
যাবে।
সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই স্থগিত
মানবাধিকার রিপোর্ট’
সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অবশেষে
স্থগিত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে
গত ২৮ ফেব্র“য়ারি ২০১৭ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)
এ স্থগিতাদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। স্থগিতাদেশে
সই করেছেন জামুকার মহাপরিচালক পুণ্যব্রত চৌধুরী। এ
আদেশের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রণালয়কে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আদালত
অবমাননার শাস্তি এড়াতে আইনজীবীর পরামর্শে এ স্থগিতাদেশ
জারি করল জামুকা।
জামুকার মহাপরিচালক পুণ্যব্রত চৌধুরী গত ২৮ ফেব্রয়ারি
২০১৭ রাতে বলেন, ‘হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার আগে কিছু
কমিটি তাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
তাদের প্রতিবেদন এখন জামুকার হাতে রয়েছে। এসব
প্রতিবেদন আপাতত ফাইলবন্দি করে রাখা হয়েছে। আদালতের
পরবর্তী সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে সেগুলোর ভবিষ্যৎ।
এ জন্যই এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা কোনো পদক্ষেপ
নিচ্ছি না। ’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আদালতে আইনিভাবে
জবাব দেব প্রতিপক্ষের। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত যে
সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তা মেনে নেব। তবে আশা করি, আমরা
আদালতকে সঠিক বিষয়টি বোঝাতে পারব এবং আদেশ আমাদের পক্ষে
আসবে বলে প্রত্যাশা রাখি। ’
হাইকোর্ট গত ২৩ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই
কার্যক্রমের ওপর চার মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এ অবস্থায়
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের
অভিমত নিয়ে জামুকা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করল।
অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম তাঁর অভিমতে বলেন,
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাচাই-বাছাই করা হলে
সেটা হবে আদালত অবমাননা।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, সারা দেশে
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের ওপর
স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের এ আদেশের পর আর
কোনো যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার পরবর্তী সব কার্যক্রম স্থগিত
থাকবে। তবে স্থগিতাদেশের আগে যেসব কমিটি যাচাই-বাছাই
করে প্রতিবেদন দিয়েছে বা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম
সম্পন্ন করেছে সেসব বিষয়ে কী হবে জানতে চাইলে তিনি
বলেন, এটার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আদালতের সিদ্ধান্তের
ওপর। আদালত যদি সেটাকে বৈধতা দেন তবেই শুধু
যাচাই-বাছাই কমিটির রিপোর্ট আমলে নিতে পারবে
মন্ত্রণালয় ও জামুকা। অন্যথায় এ বিষয়ে তাদের কিছুই
করণীয় নেই।
সারা দেশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম
পরিচালনার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ১২
জানুয়ারি এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব উপজেলা, জেলা
ও মহানগরের জন্য কমিটি করে। গত বছর ১০ ডিসেম্বর
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাইসংক্রান্ত
নির্দেশিকা জারি করে জামুকা। এতে ২০১৬ সালের ৩১
ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। পরে গত
৫ জানুয়ারি আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে যাচাই-বাছাইয়ের
তারিখ পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তী সময়ে ৪৫৯টি উপজেলা
কমিটি, তিনটি জেলা কমিটি ও আটটি মহানগর কমিটি পুনর্গঠন
করে ১৯ জানুয়ারি নতুন আদেশ জারি করে জামুকা। ১৯
জানুয়ারির ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা
হলে স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট।
কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে এরই মধ্যে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মাগুরা সদর, খুলনার বটিয়াঘাটা ও কয়রা,
সাতক্ষীরার আশাশুনি, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর,
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এবং
বান্দরবানসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একের
পর এক রিট আবেদন করেন হাইকোর্টে। এসব রিট আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টসংশ্লিষ্ট উপজেলা যাচাই-বাছাই
কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। এ ছাড়া সরকারি
কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে নিয়োগ পাওয়া (বিশেষ
সুপিরিয়র সার্ভিস) কর্মকর্তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ
যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত করা হয় আলাদা রিট
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে।
অবশেষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ছে
মানবাধিকার রিপোর্ট’
অবশেষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর
উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বর্তমানে বিদ্যমান বয়সসীমা ৩০
থেকে বাড়িয়ে ৩২ করা হচ্ছে। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের
ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা করা হচ্ছে ৩২ থেকে
৩৪। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে তিনটি মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে
দেখার কাজ শুরু করেছে।
আর চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে ৩২ এবং
মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২
থেকে ৩৪ করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন
অতিরিক্ত সচিব বলেন, সরকারি চাকরিরত মুক্তিযোদ্ধাদের
অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করে একটি প্রস্তাব
প্রণয়ন করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরই
বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সরকারি
কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬১ বছর করার আরেকটি
প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা
হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের
বয়সসীমা ৩২ থেকে ৩৪ এবং সাধারণদের ৩২ থেকে ৩৪ করার
প্রস্তাবটিও সেখানে থাকছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়,
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন
মন্ত্রণালয় বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ
শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে সরকারি চাকরি বিধিমালায়
পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা এবং সংসদ, সংসদীয় কমিটি,
জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন প্রস্তাব বিবেচনায় নিচ্ছে।
সূত্র জানায়, উন্নত দেশগুলো তাদের জনগণকে মানবসম্পদে
রূপান্তরের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো সীমারেখা নির্দিষ্ট
করেনি।
আধুনিক সমাজ
প্রতিষ্ঠায় কাজ চালিয়ে যেতে হবে
মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) পাহাড়তলী থানা
শাখার উদ্যোগে গত ১২ ফেব্র“য়ারি চট্টগ্রাম নগরীর
অলংকার মোড়স্থ একটি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশন চট্টগ্রাম মহানগরের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের
গণসংবর্ধনা, অসহায় ব্যক্তিদের চক্ষু চিকিৎসায় অনুদান
প্রদান অনুষ্ঠান বিএইচআরসি চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ
সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে পাহাড়তলী শাখার
সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম ভুট্টোর সঞ্চালনায়
অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. অনুপম সেন। প্রধান
বক্তা ছিলেন বিএইচআরসি সদর দপ্তরের গভর্নর এড. আবুল
হাশেম, সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি এম.এ. সোহেল আহমেদ
মৃধা, বিএইচআরসি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার নির্বাহী
সভাপতি আবু হাসনাত চৌধুরী, কাউন্সিলর নেছার উদ্দিন
মঞ্জু, কাউন্সিলর জহিরুল আলম জসিম, কাউন্সিলর মোর্শেদ
আকতার চৌধুরী, বিএইচআরসি চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র
সহ-সভাপতি মোঃ মইনুদ্দিন, সহ-সভাপতি ইকবাল আলী আকবর,
অধ্যাপক শ্রীমান কান্তি ঘোষ, কামাল আহমেদ, অসীম কুমার
দাশ। প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
অন্ধদের জন্য কাজ করছেন, পাগলদের খাবার দিচ্ছেন,
অসহায়দের কাপড় দিচ্ছেন, লিগ্যাল এইড সেবা দিচ্ছেন যা
সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। পথশিশুদের অধিকার আদায়ে
সচেষ্ট হোন। মাদক রোধে অতীতের মত কার্যক্রম চালিয়ে যান।
সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠা মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ
চালিয়ে যান। সভায় বক্তব্য রাখেন, আব্দুল মজিদ চৌধুরী,
লায়ন এস.এম. সালাহউদ্দিন সামির, মুহিউদ্দিন চৌধুরী জিকু,
সাহাবুদ্দিন জাহেদ, আহসান উদ্দিন সোলাইমান হাসান,
মোহাম্মদ সেলিম, টিপু সুলতান সিকদার, মোঃ ইকবাল হোসেন,
শাহজাহান সেলিম, মোঃ ইয়াকুব, লেয়াকত আলী, জাহিদ তানছির,
বাবর আলী, আনোয়ার হোসেন, রেবা বড়–য়া, ইয়াছিন ভুইয়া,
জাহেদুল হাসান, মাহাবুবুর রহমান দুর্জয়, সাহেদ শাকিল,
সাইফুল আলম, আলমগীর বাদশাহ, সেকান্দর আলী, সাগর ইসলাম,
মোঃ দিদারুল আলম, তসলিমা নূরজহান রুবী, বাবু সিকদার,
লিয়াকত আলী বাবুল প্রমুখ। শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে
এলাকার অসহায় ব্যক্তিদের চক্ষু চিকিৎসায় অনুদান প্রদান
করা হয়।
'রোগের মত
ছডাচ্ছে' মানবাধিকার লংঘন, বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
"মানবাধিকারকে অসম্মান করা, অগ্রাহ্য করাটা বিশ্বজুড়ে
রোগের মত ছড়িযে পডছে। আর এই প্রবণতাকে উস্কে দিচ্ছে
রাজনীতিকদের সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা এবং
কট্টরপন্থী অসহিষ্ণুতা।" এই হুঁশিয়ারি এবং উদ্বেগ
প্রকাশিত হয়েছে জতিসংঘের মহসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের
কন্ঠ থেকে।
তবে যে প্রতিষ্ঠানের সভায মিগুতেরেস ভাষণ দিচ্ছিলেন
সেই জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ভূমিকাও এখন
প্রশ্নবিদ্ধ। সমালোচনা বাড়ছে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি
রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এবং অকার্যকর।
বিশ্বের যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে সেদিকেই
তাকানোর কথা জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের।
কিন্তু এই পরিষদে ভোটাধিকার আছে এরকম অনেক সদস্য দেশ,
যেমন সৌদি আরব, চীন এবং ভেনেজুয়েলার মানবাধিকার
পরিস্থিতি নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। সিরিয়ার যুদ্ধ
নিয়ে এই পরিষদ বড় ধরনের তদন্ত করলেও, ইয়েমেনের যুদ্ধ
নিয়ে একরকম চুপ। অভিযোগ উঠেছে যে ইয়েমেন সরকারকে
সহযোগিতা করতে গিয়ে সৌদি আরব যেভাবে বোমা হামলা চালিয়ে
যাচ্ছে তাতে অনেক ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
এরকম সমালোচনার মধ্যেই জেনেভায় শুরু হয়েছে এই
সংস্থাটির বসন্তকালীন অধিবেশন। জাতিসংঘের মহাসচিব
এন্টোনিও গুটেরেস তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেছেন, সস্তা
জনপিয়তা পাওয়ার রাজনীতি মানবাধিকারের জন্যে বড ধরনের
হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে-
তিনি বলছেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি, সস্তা জনপ্রিয়তা এবং
চরমপন্থার রাজনীতির প্রবনতা ক্রমশই বাড়ছে। এর ফলে
বৃদ্ধি পাচ্ছে জাতিবিদ্বেষ, বিদেশিদের প্রতি ভয়, ইহুদি
বিদ্বেষ এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসহ নানা ধরনের
অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের
ওপর নির্যাতন ও নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।" "একই
ধরনের ঘটনা ঘটছে সমকামী, ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়াদের
ক্ষেত্রেও। শরণার্থী ও অভিবাসীদের অধিকারও পড়ছে হামলার
মুখে। বাড়ছে মানব পাচারের ঘটনা কারণ যুদ্ধ থেকে
পালাচ্ছে বহু মানুষ। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমাজ
তাদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না।"
মি. গুটেরেস বলেন, এমন এক সময়ে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত
হচ্ছে যখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সারাবিশ্বেই একটি
রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে
এখন এই চিকিৎসায় এগিয়ে আসতে হবে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, এমন গুজবও আছে যে ইসরায়েলের
মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র এই পরিষদ থেকে বেরিয়েও যেতে
পারে।
ইসরায়েলের দাবি, এই পরিষদ থেকে তাদেরকে অহেতুক সমালোচনা
করা হয়।
তবে মানবাধিকার গ্র“পগুলো বলছে, এই পরিষদের পক্ষ থেকে
দাসত্ব এবং নির্যাতনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও কাজ
হয়েছে। আর এই কারণে সংস্থাটির আন্তর্জাতিক সমর্থনেরও
প্রয়োজন রয়েছে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে
ট্রাম্পের সমালোচনায় রুশনারা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সাত মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে
প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড
ট্রাম্পের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন বাংলাদেশি
বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
একই কারণে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন লন্ডনের বাঙালি
অধ্যুষিত বারা কাউন্সিল টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী
মেয়র জন বিগস।
ট্রাম্পকে অবিলম্বে ওই নির্বাহী আদেশ প্রত্যাহারের
আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা
আলী হাউস অব কমন্সে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, “এই নির্বাহী
আদেশ চরম বিভক্তিকর এবং একই সাথে বিপদের। এটি আমেরিকা
ও ইউরোপসহ পুরো মুসলিম বিশ্বে একটি আতঙ্কের বার্তা
পৌঁছে দিয়েছে। একজন মুসলিম হিসাবে আমার কাছে এটি গভীর
উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয়।”
কানাডায় মসজিদে গুলিতে ছয়জন নিহতের কথা উল্লেখ করে তিনি
বলেন, “এখন আমি এদেশেও আতঙ্কিত।”
রুশনারা বলেন, “বিভক্তি ও ঘৃণার বিপরীতে রাজনীতিবিদরা
যখন আতঙ্ক ছড়িয়ে দেন, যখন তারা এর বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে
দাঁড়াতে পারেন না, তখন তা ভুল বার্তা ছড়িয়ে দেয়।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এর
বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তার মতোই বক্তব্য দিয়ে মেয়র জন বিগস এক বিবৃতিতে বলেন,
“টাওয়ার হ্যামলেটসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্থান নেই। কারণ
ইস্ট এন্ড সর্বদাই ঘৃণা, বিভক্তি ও গোঁড়া মতবাদের
বিরুদ্ধে। আমরা এটাও জানি, এর বিরুদ্ধে কীভাবে দাঁড়াতে
হয়।”
মেয়র বলেন, “টাওয়ার হ্যামলেটসে বহু সংস্কৃতির চমৎকার
সহাবস্থান রয়েছে। এজন্যই আমরা এখানে শক্তিশালী ও ভালো।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভক্তির নীতি সমাজে হিংসা ও ঘৃণা
বাড়ানো ছাড়া আর কোনো ফল বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করেন
তিনি।
প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র কাছে চিঠি পাঠিয়ে
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফর বাতিলের অনুরোধ
জানানোর কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন জন বিগস।
“বলেছি, টাওয়ার হ্যামলেটসে ঘৃণা এবং উগ্রবাদের কোনো
স্থান নেই। আর এজন্য যতক্ষণ না পর্যন্ত ট্রাম্প
মুসলমান ও রিফিউজিদের টার্গেট করে প্রণীত তার অন্যায়
নীতিগুলো প্রত্যাহার এবং এজন্য ক্ষমা না চাইবেন ততক্ষণ
পর্যন্ত এখানে তার কোনো স্থান হবে না।”
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সন্ত্রাস দূরে রাখার কথা বলে মুসলিম
অধ্যুষিত সাত দেশ ইরাক, ইরান, সিরিয়া, লিবিয়া, সোমালিয়া,
সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ৯০
দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার সাত
দিনের মাথায় ট্রাম্পের ওই আদেশের সমালোচনা করেছে
মানবাধিকার সংগঠনগুলো। নিজের দেশ এবং দেশের বাইরে
ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা ছাড়াও কয়েক জায়গায় এ আদেশের
বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে।
ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারাও এ
আদেশের সমালোচনা করেছেন। তাদের আশঙ্কা, উল্টা প্রভাব
হিসেবে জঙ্গি সংগঠনগুলো এটাকে কাজে লাগিয়ে নতুন লোক দলে
ভেড়াতে পারে।
জানাজায়
অংশ নিয়ে কাঁদলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কানাডার কুইবেকের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত
মুসলিমদের জানাজায় অংশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেশটির
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জানাজায় অংশ নিয়ে জাতীয়
ঐক্যের ডাক দিয়েছেন কানাডার এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগে
২৯ জানুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যায় কুইবেকের একটি মসজিদে
বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ৩
ফেব্র“য়ারি কুইবেক শহর কনভেনশন সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী
ট্রুডো, দেশটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, কমিউনিটি নেতা,
এবং হাজার হাজার মানুষ জানাজায় অংশ নেন। নিহত ছয়জনের
মধ্যে মামাদো তানু ব্যারি (৪২), ইব্রাহিম ব্যারি (৩৯),
ও আজেদিন সুফিয়ান (৫৭) নামের তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত
হয়েছে। কানাডার জাতীয় দৈনিক দ্য স্টার বলছে, তানু
ব্যারি ও ইব্রাহিম ব্যারি আফ্রিকার দেশ গিনির নাগরিক
ছিলেন। এছাড়া সুফিয়ান মরক্কো থেকে কানাডায় অভিবাসী
হিসেবে এসেছিলেন। জানাজায় অংশ নিয়ে ট্রুডো বলেন,
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে
লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী প্রত্যেকেই এ জন্য দায়ী। আমরা
যা করছি; তা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছে, কানাডার
প্রতিনিধিত্ব করছে, দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। মামাদো
তানু ব্যারি, ইব্রাহিম ব্যারি, ও আজেদিন সুফিয়ানও এই
দেশকে অত্যধিক ভালোবাসতেন।
মসজিদে গোলাগুলিতে নিহত অপর তিনজনের জানাজা মন্ট্রিলে
অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বাকি তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুইবেক মরিচ-রিচার্ড এলাকায় বৃহস্পতিবারের জানাজায় অংশ
নেয়া হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশ্যে কানাডার
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই গণহত্যা কানাডার মানুষের সঙ্গে
মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সৌহার্দ্য আরো জোরদার করেছে।
জানাজায় আগতদের উদ্দেশ্যে আরবি ভাষায় ট্রুডো বলেন,
আস-সালামু-আলাইকুম। এ সময় সবাই কানাডার প্রধানমন্ত্রীর
প্রশংসা করেন। ট্রুডো বলন, ‘আমি কুইবেকের মুসলিমদের
বলতে চাই : আপনারা এখানে বাড়িতে আছেন। আমরা সবাই
কুইবেকারস।’
কুয়েতে
কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে বাংলাদেশিদের
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আরব সাগরের কোল ঘেঁষে বিকশিত মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী
দেশ কুয়েতে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে।
শ্রমিক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা না উঠলেও বিশেষ অনুমতি নিয়ে
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দক্ষ পেশাজীবীদের কুয়েত যাওয়ার
সুযোগ ক্রমান্বয়ে সৃষ্টি হচ্ছে।
উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে ২০০৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত
বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা উন্মুক্ত ছিল। তবে কিছু
উচ্ছৃঙ্খল প্রবাসী বাংলাদেশির নানা অপরাধ এবং
ভারতীয়দের বাংলাদেশি বিরোধী প্রচারণার কারণে মূলত
বাংলাদেশের ভিসা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের শুরু থেকে
বিশেষ সুপারিশমালায় বাংলাদেশিদের জন্য চিহ্নিত কিছু
ক্যাটাগরিতে কাজ করার ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে
বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানিতে কাজের চাহিদা বেড়েছে।
ক্লিনিং কোম্পানি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, ইংরেজি
মাধ্যমের শিক্ষক, পাঁচতারকা হোটেলের সেফ, ওয়েটার,
ওয়েট্রেস, ম্যানেজমেন্ট স্টাফ এবং সুপার মার্কেটে কাজ
পাওয়া যেতে পারে।
এসব স্থানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা খুবই নগণ্য।
আশার কথা হচ্ছে, গত বছর কুয়েতে যোগ দিয়েছেন উদ্যমী
রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম। কুয়েতের সরকারি প্রশাসনে
তার যোগাযোগ ভালো। তিনি বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের
ব্যাপারে তৎপরতা চালাচ্ছেন। গত আগস্টে কুয়েতের আমিরের
সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি কুয়েতে বিদেশি শ্রমশক্তি
আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার
দেওয়ার ঘোষণা দেন। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ
ব্যুরোর হিসাবে, ১৯৭৬ থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫
লাখ ৫ হাজার ৪৭ জন বাংলাদেশি গেছেন কুয়েতে। এর মধ্যে
১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর ১০ হাজার
লোক কুয়েতে গেছেন।
১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে কুয়েতের পক্ষে অবস্থানের
কারণে দেশটিতে বাংলাদেশের সুনাম বেড়ে যায়। এরপর ১৯৯১
থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত গড়ে ২৫ হাজার লোক দেশটিতে গেছেন।
২০০১ সালের পর তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে এবং প্রতি বছর
৩০ থেকে ৪০ হাজার লোক কুয়েতে যেতে থাকেন। ২০০৭ সালে
বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০০৮ সালে মাত্র ৩১৯ জন,
২০১০ সালে ৪৮ জন, ২০১১ সালে ২৯ জন, ২০১২ সালে মাত্র ২
জন ও ২০১৩ সালে ৬ জন কর্মী যান দেশটিতে। ২০১৪ সালের
শেষ দিক থেকে আবারও কর্মী যাওয়া শুরু করে। গত বছর ১৭
হাজার ৪৭২ জন কর্মী গেছেন দেশটিতে। জনশক্তি
রপ্তানিকারকরা বলছেন, কুয়েতের শ্রমবাজার চালু হলে বছরে
৫০ হাজারেরও বেশি কর্মীর কর্মসংস্থান হতে পারে।
ভারতীয় ভিসা পেতে ৮ কেন্দ্রে ই-টোকেন লাগবে না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের ৮ কেন্দ্রে (ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন
সেন্টার-আইভিএসি) ভারত ভ্রমণে আগ্রহী বাংলাদেশি
নাগরিকদের সাক্ষাৎকারের আগাম তারিখ বা ই-টোকেনের
প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন।
আগামী ১লা ফেব্র“য়ারি থেকে ভিসার আবেদনের নতুন ওই ঘোষণা
কার্যকর হচ্ছে। হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই
তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতে যাওয়ার (বিমান,
সড়ক বা রেলপথের) নিশ্চিত টিকিট রয়েছে এমন বাংলাদেশিদের
জন্য সরাসরি ভিসা প্রাপ্তির স্কিমটি বর্ধিত করা হয়েছে।
যাদের নিশ্চিত ভ্রমণ টিকিট রয়েছে, তারা ১লা ফেব্্রুয়ারি
২০১৭ থেকে সাক্ষাৎকার (অ্যাপয়েন্টমেন্ট) ছাড়াই
আইভিএসি-এর রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা,
যশোর, ময়মনসিংহ এবং বরিশাল শাখায় সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা
প্রাপ্তির সুবিধা পাবেন। ঢাকার আবেদনকারীরা তাদের
নিশ্চিত ভ্রমণ টিকিট নিয়ে
সরাসরি আইভিএসি মিরপুর শাখায় ট্যুরিস্ট ভিসার
আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। তবে আইভিএসি ফরমে ভিসা
আবেদনপত্র জমাদানের তারিখের এক মাসের মধ্যে ভ্রমণের
তারিখ হতে হবে। এছাড়া, পরবর্তী বিস্তারিত তথ্য িি.িরাধপনফ.পড়স
এই ঠিকানায় পাওয়া যাবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই
প্রক্রিয়াটি ভারতের ভিসাপ্রাপ্তি প্রক্রিয়া চলমান ও
সহজীকরণের একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। এর আগে ২০১৬
সালের অক্টোবরে মহিলা ভ্রমণকারী ও তাদের পরিবারের
সদস্যদের জন্য প্রথম সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা স্কিম চালু
করা হয়। পরবর্তীতে ১লা জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে এটি সকল
বাংলাদেশি ভ্রমণকারীর জন্য বর্ধিত করা হয়। স্কিমটি
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসাপ্রাপ্তি সহজ করে
দিয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- বিমান, সড়ক বা
রেলপথে ভারতে ভ্রমণের নিশ্চিত টিকিট থাকলে কোনো
বাংলাদেশি নাগরিকের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য ই-টোকেন অথবা
অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন নেই। ভিসা সহজীকরণের
এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ভারত এবং
বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সুদৃঢ় করাই এর মূল
উদ্দেশ্য।
রোহিঙ্গা স্থানান্তর: ঠেঙ্গার চর বিষয়ে আরও জানতে চায়
ইইউ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ঠেঙ্গার
চরে স্থানান্তরের বিষয়ে আরও জানতে চায় ইউরোপিয়ান
ইউনিয়ন (ইইউ)। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ইইউ-এর রাষ্ট্রদূত
পিয়েরে মায়াদুন বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ
আলী ঠেঙ্গার চরের বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছেন।
কিন্তু এখনও এটি প্রাথমিক অবস্থায় আছে। আমরা এ বিষয়ে
আরও জানতে চাই।’ সোমবার দুপুরে গুলশানস্থ তার বাসভবনে
সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। ঠেঙ্গার চরে
রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনায়
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সহায়তা করবে কিনা, এমন প্রশ্নে
মায়াদুন বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আরও জানতে চাই।
এরপর যদি আমাদের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়, তবে আমরা
বিবেচনা করব।’ তিনি বলেন, ‘ইইউ সবসময়ে রোহিঙ্গা
সম্প্রদায়ের সমস্যা সমাধানের পক্ষে কথা বলে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাতিসংঘ বা দ্বিপক্ষীয়, যেখানেই আমরা
সুযোগ পাই, সেখানেই রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে আলোচনা করি।
আমাদের উদ্বেগের বিষয়টি জানাই।’
মায়াদুন বলেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের স্থানীয়
ও বিদেশি এনজিওগুলোর মাধ্যমে ইইউ সহায়তা করছে। জাতিসংঘ
উদ্বাস্তু সংস্থার সঙ্গেও ইইউ কাজ করছে।’ রোহিঙ্গা
সমস্যা সমাধানের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে
বলে তিনি মন্তব্য করেন। এর আগে হাতিয়া উপজেলার ঠেঙ্গার
চরে রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ভিত্তিতে স্থানান্তরের
সরকারের সিদ্ধান্তটি বিদেশি কূনীতিকদের কাছে ব্যাখ্যা
করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী। প্রায় দেড়
ঘণ্টার ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি
অস্থায়ী ব্যবস্থা।’ রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত
পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চান
তিনি। উল্লেখ্য, বর্তমানে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা
বাংলাদেশে অবৈধভাবে বাংলাদেশে বসবাস করছে। বেশিরভাগ
রোহিঙ্গা কক্সবাজারের অবস্থানের কারণে সেখানের
পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।
সৌদি
আরব-কাতার গিয়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের করুণ
কাহিনী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যৌন নির্যাতনসহ নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন বাংলাদেশি
নারী শ্রমিকরা। এমন নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৬ সালেই
দেশে ফিরে এসেছেন ৫০০ নারী কর্মী। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে
নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন এই নারী শ্রমিকরা। পরবর্তীতে
কেউ দেশে ফিরতে পারছেন আবার কেউ পারছেনও না।
সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে বা আরেকটু ভালো থাকার আশায় সৌদি
আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাচ্ছে এসব নারী
শ্রমিকরা। ঐখানে গিয়ে আবার স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে এসব নারী
শ্রমিকদের এঁরা মূলত বাসাবাড়িতে কাজ করার জন্য সৌদি
আরবে গিয়েছিলেন।
গাজীপুরের কাপাসিয়ার মালেকের স্ত্রী হনুফা বেগম (প্রকৃত
নাম নয়)। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন, তাই সংসারের হাল
ধরতে হয় স্ত্রী হনুফাকে। তিন ছেলে আর দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ
ভেবে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি
আরবের রিয়াদে যান তিনি। কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি বুঝতে
পারেন, অক্লান্ত পরিশ্রম আর চরম নির্যাতন তাঁর জন্য
অপেক্ষা করে আছে। দৈনিক ১৫ ঘণ্টা কাজ শেষে রাতে
বিশ্রামের সুযোগ নেই। চলে পাশবিক নির্যাতনও। চার মাস
বেতন পেলেও প্রায় এক বছর ধরে তাও বন্ধ। দেশে ফেরত আসার
জন্য প্রতিদিনই মোবাইল ফোনে কল করে কান্নাকাটি করেন।
কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে গেছে ফোন করাও। সৌদি
আরবে নির্যাতনের শিকার বোনকে দেশে ফেরত আনতে
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তাঁর ছোট বোন।
হনুফার কথা জানতে চাইলে তাঁর বোন কান্নাজড়িত কণ্ঠে
বলেন, ‘জামাইডা পাগল, শিকলে বাইন্দা রাখতে হয়, বড়
পোলাডাও প্রতিবন্ধী। আট মাসের ছোট বাচ্চা রাইখ্যা বোন
গেছে বিদেশে, শুধু বোনের বাচ্চাগো মুখে কিছু খাওয়ার
জোগাড়ের লাইগ্যা। আজ হেই বোনের ওপর নির্যাতন হইতাছে।
দুই সপ্তাহ ধইরা বোনের খোঁজ নাই। দয়া কইরা আমার
বইনডারে একটু ফিরাইয়া আইন্যা দেন। ‘ এসব কথা বলেই
কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সূত্রে জানা গেছে, সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস ও
শেল্টার হোমে আরো ৩৫০ বাংলাদেশি নারী কর্মী অবস্থান
করছেন। নির্যাতনের শিকার এসব নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনা
হবে। শুধু সৌদি আরবেই নয়, এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে
মধ্যপ্রাচ্যের আরো কয়েকটি দেশে। মূলত দালালের মাধ্যমে
ওই সব দেশে গিয়ে নারী কর্মীরা সংকটে পড়ছেন। নির্যাতিত
নারীদের স্বজনরা প্রতিনিয়ত প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়,
প্রবাসীকল্যাণ বোর্ডসহ বিভিন্ন সংস্থায় অভিযোগ জানিয়ে
প্রতিকার চাচ্ছেন। এ অবস্থায় ওই সব দেশে নারী কর্মী,
বিশেষ করে গৃহকাজে নারী কর্মী পাঠানো প্রশ্নের মুখে
পড়েছে।
একইভাবে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে কাতারে গিয়েছেন
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মেয়ে রুমা আক্তার (এ ক্ষেত্রেও
প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হলো না)। সাত মাস আগে
গৃহকর্মীর ভিসায় বিদেশে গেলেও তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া
হয়। সেখানে তাঁর ওপর দিনরাত চলে নির্যাতন। সেই
নির্যাতন সইতে না পেরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে অন্য
জায়গায় আশ্রয় নেন রুমা। এ প্রসঙ্গে তাঁর বাবা কালের
কণ্ঠকে বলেন, ‘আর কেউ যেন কোনো দালালের প্রতারণায় না
পড়ে। ওদের ফাঁদে পড়লে মেয়েদের জীবন শেষ। আমার
টাকা-পয়সার দরকার নাই। আমার মেয়েটা যেন আমার বুকে ফিরে
আসে। শাক আর ডাল দিয়ে ভাত খাব, তবু শান্তিতে থাকব। ‘
শুধু হনুফা আর রুমাই নন, গৃহকর্মী ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যের
বিভিন্ন দেশে গিয়ে নারী কর্মীরা অমানবিক নির্যাতনের
শিকার হচ্ছেন অহরহ। স্বামী নেই ও দরিদ্র পরিবারেরসহ
বেশির ভাগ অসহায় নারী কর্মী সংসারে সুখ আনতে পাড়ি জমান
সৌদি আরব, ওমান, লেবানন, বাহরাইন, আরব আমিরাতসহ
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। অল্প টাকায় বিদেশের মাটিতে
পা রাখলেও মুহূর্তেই তাঁদের সব স্বপ্ন ধুলায় মিশে যায়।
গৃহকর্মীর কাজ
নির্যাতিত নারীরা জানান, আট থেকে ১০ ঘণ্টা করার কথা
থাকলেও ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টাও কাজ করতে হয়। শুধু তাই নয়,
গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে নিয়োগ দেওয়া হলেও অনেকের ওপর
চলে পাশবিক নির্যাতন।
আবার সেখানে গৃহকর্মীর কথা বলে নেওয়ার পর অনেকের স্থান
হয় ছোট ছোট পতিতালয়ে। মোটা অঙ্কের টাকায় নারী কর্মীদের
বিক্রি করে দেওয়ার কথা জানালেন তাঁরা।
চল্লিশের পর
আইনজীবী হওয়া যাবে না : আপিল বিভাগ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত আইনজীবী হিসেবে
সনদ নেওয়ার ক্ষেত্রে ৪০ বছর বয়স নির্ধারণ করার পক্ষে
অভিমত প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
৮ ফেব্র“য়ারি ২০১৭ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলার
রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে
চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বেঞ্চের
অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান
ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল
মাহবুবে আলম। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে
ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সঙ্গে ছিলেন
আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের
বলেন, আপিল বিভাগ এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ে আইনজীবী
হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা
দেবেন। বিচার বিভাগ থেকে অবসর নিয়ে নিম্ন আদালতে আইন
পেশায় অনুশীলনের সুযোগ আর থাকবে না। নিম্ন আদালতের
বিচারকরা ইচ্ছে করলে শুধু হাইকোর্টে প্রাকটিস করতে
পারবেন। হাইকোর্ট থেকে যাঁরা অবসর নেবেন তাঁরা শুধু
আপিল বিভাগে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। আর আপিল বিভাগ
থেকে অবসরের পর তাঁদের প্র্যাকটিসের কোনো সুযোগ নাই।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আপিল বিভাগ বলেছেন দুই বছরের
কোর্স তাঁরা অনুমোদন করবেন না। তিন বছর অথবা চার বছর
মেয়াদি কোর্সধারী হতে হবে। আমি বলেছিলাম আইনজীবী হওয়ার
বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে। তবে এখন পর্যন্ত আলাপ-আলোচনায়
বুঝা গেছে উনারা ৪০-এর পক্ষে।’
দারুল এহসানের পক্ষের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী
সাংবাদিকদের বলেন, আদালত বলেছেন ৪০ বছরের পর আইনজীবী
হওয়া যাবে না। তা ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই
বছর মেয়াদি এলএলবি সনদধারীরা বার কাউন্সিলের পরীক্ষায়
অংশ নিতে পারবেন না। আর জেলা জজ পর্যায় থেকে যাঁরা
অবসর নিয়েছেন তাঁরা হাইকোর্ট বিভাগের নিচে অন্য কোনো
আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে পারবেন না।
গত বছরের ২৫ জুলাই দারুল ইহসানের কার্যক্রম বন্ধ
ঘোষণার রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে হাইকোর্ট বলেন, ২০০৬
সালের পর দারুল ইহসানের সব সার্টিফিকেট বাতিল বলে গণ্য
হবে। পরের দিন ২৬ জুলাই দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের
সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিপত্রে বলা হয়, কোনো শিক্ষার্থী
ক্ষতিপূরণ চাইলে সরকার সহায়তা করবে। শিক্ষার্থীরা
সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবে।
সে সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা
মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
জানানো হয়, হাইকোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ের
পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দারুল
ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাসসহ সব কার্যক্রম
বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য সব বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাসগুলো বন্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে।
Top
টেকনাফে জেলের জালে ১২৫ কেজি ওজনের পোয়া মাছ!
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় শাহপরীর দ্বীপে জেলেদের
জালে ধরা পড়েছে ১২৫ কেজি ওজনের একটি পোয়া মাছ।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টেকনাফের সাবরাং
ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা
মোহাম্মদ হাসানের মালিকানাধীন একটি নৌকায় জেলে খুরশিদ
আলম, রশিদ আহমদ ও নজির আহমদ মাছ ধরতে যান। নাফ নদীর
মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় ভোরে জাল পাতেন।
সকালে জালে পোয়া মাছটি ধরা পড়ে। এটির ওজন ১২৫ কেজি।
জেলেরা জানান, মাছটি নিয়ে শাহপরীর দ্বীপের জেটিঘাটে
ফিরে আসার পর উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়।
নৌকার মালিক মোহাম্মদ হাসান জানান, টেকনাফের মাছ
ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিনসহ কয়েকজন মিলে ১ লাখ ২০ হাজার
টাকায় মাছটি কিনে নেন।
ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার টেকনাফের বড়
মাছ বাজারে মাছটি কেটে বিক্রি করা হবে। প্রতি কেজি ১
হাজার ২০০ টাকায় বিক্রির জন্য বুধবার মাইকিং করা হবে।
এরই মধ্যে বেশ কিছু মাছ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাছটি বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা হবে
বলেও তিনি জানান।
শাহপরীর দ্বীপের স্থানীয় ব্যবসায়ী শরিফ হোসেন বলেন, এ
রকম বড় মাছ গত দু যুগেও তাঁরা দেখেননি। এ মাছ খেতে বেশ
সুস্বাদু।
টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজাত কুমার চৌধুরী
বলেন, এ মাছ গভীর সাগরে পাওয়া যায়। নাফ নদীর মোহনায়
সাধারণত পাওয়ার কথা নয়। মাছটি পথ হারিয়ে হয়তো এখানে ধরা
পড়েছে।
Top
‘বিনা বিচারে
কেউ কারাগারে বন্দী থাকলে তা দুঃখজনক'
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিনা বিচারে কেউ কারাগারে বন্দী থাকলে তা দুঃখজনক হবে
বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার
সিনহা। সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার
পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, আমার জন্য বিচারপতি হিসেবে
সবচেয়ে মর্মান্তিক হবে যদি বিনা বিচারে কেউ কারাগারে
থাকেন। একটা প্রবাদ আছে আমরা বিনা বিচারে ১০০ জন
অপরাধীকে ছাড়তে পারি কিন্তু নির্দোষ একজনকেও আটকে
রাখতে পারি না। তা মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে।
তিনি বলেন, কারা ফটকের সামনে থেকে প্রায় সময়ই আসামি
ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। পুরান ঢাকার যে আবস্থা, সেখান
থেকে আসামি স্থানান্তর করা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণও। আর যদি
কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন নিম্ন আদালত
স্থানান্তর করা যায় তাহলে আদালত ও কারা উভয়
কর্তৃপক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক হবে। এ জন্য চেষ্টা করা হবে।
আর পুরান ঢাকার কারাগার থেকে এখানে বন্দীরা একটু ভাল
আছে। কেননা জায়গার সংকট নেই।
এর আগে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা কারাগারের বিভিন্ন জায়গা
ঘুরে দেখেন। প্রায় আধা ঘণ্টা কারাগারের ভেতর অবস্থান
করার সময় তিনি বন্দীদের সঙ্গেও কথা বলেন।
নতুন সিইসি নুরুল হুদা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন
সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদা।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাকে সার্চ কমিটির সুপারিশ
থেকে সিইসি পদের জন্য মনোনীত করেছেন।
নতুন চার নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন- সাবেক অতিরিক্ত
সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক
বিচারক কবিতা খানম এবং সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।
দেশের ১২তম নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে রণাঙ্গনের
মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদাকেই বেছে
নিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠনে গঠিত সার্চ কমিটি প্রধান
নির্বাচন কমিশনার পদে সাবেক সচিব নুরুল হুদা এবং আলী
ইমাম মজুমদারের নাম সুপারিশ করে।
আলী ইমামের নাম অবশ্য ২০১২ সালে ১১তম কমিশন পুনর্গঠনের
সময়েও সুপারিশ করা হয়েছিল।
চারজন কমিশনারসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ
সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আজ রাত বা আগামীকালই জারি করা হতে
পারে। তারা আগামী বুধবার শপথ নিতে পারেন।
নুরুল হুদা ১৯৭৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরকারি
কর্মকমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই
প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। কে এম নুরুল হুদা চাকরিজীবনে
ফরিদপুর ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছাড়াও কিছু
মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক থাকার সময়ে বিএনপি সরকার
নিয়োগকৃত ডিসি হিসাবে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেরুয়ারি ও
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনের ১২ জুলাই নির্বাচনে
রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি
১৯৮৫ সালে উপজেলা নির্বাচন ও ১৯৮৬ সালের সংসদ
নির্বাচনেও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ২৪ জুলাই বিএনপি ক্ষমতায় এসে তাকে অন্যান্য
কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়।
সর্বোচ্চ আদালত অবশ্য বিএনপি সরকারের ওই আদেশ বে আইনি
ঘোষণা করেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে
তিনি ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন এবং সকল ধরনের
আর্থিক সুযোগ সুবিধা লাভ করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ
মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
ছিলেন।
‘পুরুষালী পোষাক পরলে
মেয়েদের সন্তান হয় না’
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পুরুষদের মত পোষাক পরলেই মেয়েরা সন্তান ধারণের ক্ষমতা
হারায় বলে দাবি করলেন ভারতের মুম্বাই এর এক কলেজের
অধ্যক্ষ। তার এমন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই অবাক কলেজের
শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে প্রতি ৫ জন মহিলার মধ্যে ১ জন
মহিলা পলিসিস্টিক ওভারি ডিসঅর্ডারের শিকার হন।
চিকিৎসকদের মতে এই হরমোনের অসাম্যতা এবং জিনগত কারণেই
এই রেগের শিকার হন মহিলারা। কিন্তু মুম্বাই এর সরকারি
পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষা স্বাতী দেশপাণ্ডে অন্যরকম
মনে করেন। তিনি মনে করছেন পোষাকের কারণে এটা হচ্ছে!
তিনি বলেছেন, “আমি শুনেছি কেন কম বয়সি মহিলারা
পলিসিস্তিক ওভারি ডিসঅর্ডারের শিকার হন। যখন তারা
পুরুষদের মত পোষাক পরেন, তখন তারা পুরুরষদের মতই ভাবতে
ও আচরণ করতে শুরু করে দেন। তাদের মস্তিষ্কেও মহিলা
লিঙ্গের সাধারণ কাজগুলি উলটে যায়। এই কারণেই কম বয়স
থেকেই সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছা কমতে থাকে আর তারা এই
ধরনের রোগে আক্রান্ত হন”।
জরায়ুর রোগের সঙ্গে পোশাকের এমন সম্পর্ক টেনে বের করে
এখন এই অধ্যক্ষ্যা কলেজের ছাত্রীদের জন্য ‘যোগ্য পোষাক’
তৈরির কথা ভাবছেন। স্বাতী দেশপাণ্ডে চান যে তাঁর
কলেজের ছাত্রীরা পরে আসুক ‘নারীসুলভ’ সালোয়ার কামিজ।
‘পুরুষালী’ জিন্স-টি শার্ট এর হাত থেকে ছাত্রীদের
বাঁচাতেই নাকি তার এমন সিদ্ধান্ত! এতদিন কলেজে মহিলা ও
পুরুষদের একই পোষাক ছিল- সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট।
কলেজের এক ছাত্রীর কথায়, “এর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষ
আমাদের প্যান্টে শার্ট গুঁজে পরতে বারণ করেছিল। আর
এখনও তো পোষাকই বদলে দিতে চাইছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের
বিরোধীতা করছি। ল্যাবের মধ্যে সালোয়ার কামিজ পরে ঢোকাটা
খুব অস্বাভাবিক হবে”।
পোশাকেই শেষ নয়। এই কলেজের ক্যান্টিনে মারাঠি ভাষায়
দুটি কোনটি পুরুষদের বসার জায়গা আর কোনটি মহিলাদের
বসার জায়গা তা লিখে দেওয়া আছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন,টাঙ্গাইল জেলা শাখার মাসিক
সভা গত ৫ ফেব্র“য়ারি রবিবার বিকেল ৪টায় টাঙ্গাইল
প্রেসক্লাব এর মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায়
জেলা কমিটির সদস্য-সদস্যরা,সকল উপজেলা,থানা ও পৌর
কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি
এম এ ছাত্তার উকিলের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য
রাখেন সাধারণ সম্পাদক কাজী তাজউদ্দিন আহমেদ রিপন। সভায়
বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক
সমন্বয়কারী মীর মিজানুর রহমান, নির্বাহী সভাপতি নাসরীন
জাহান খান বিউটী, যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত চন্দ জয়দেব,
নাজমুস সালেহীন, টাঙ্গাইল পৌর শাখার সভাপতি ও জেলা
শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাশেদ খান মেনন
রাসেল,সাংস্কৃতিক সম্পাদক লিপি খন্দকার রানু,
কোষাধ্যক্ষ মোঃ খোরশেদ আলম, সদর উপজেলা শাখার সাধারণ
সম্পাদক প্রকৌশলী হাছানউদ্দিন আহমেদ লিটন , নাগরপুর
উপজেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহীদুল ইসলাম,
টাঙ্গাইল পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহানুর রহমান
শাহীন, কোষাধ্যক্ষ আবু রায়হান, জেলা শাখার নির্বাহী
সদস্য মনিরুজ্জামান মনির, সদস্য হোসনে আরা বিউটি। সভায়
আগামী ২১ শে মহান ভাষা ও শহীদ দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি
গ্রহণ করা হয়। এছাড়া সকল শাখার কার্যক্রম আরো গতিশীল
করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
‘ইসলাম
সন্ত্রাসের উৎস নয়’
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইসলাম সন্ত্রাসের উৎস নয়। তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে
লড়াইয়ে মুসলিম দেশগুলোকে সংযুক্ত করা উচিত। ইউরোপের
উচিত আরো শরণার্থী গ্রহণ করা। জার্মানির মিউনিখে
সিকিউরিটি কনফারেন্সে এসব কথা বলেছেন জার্মান
চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের
অনলাইন সানডে এক্সপ্রেস। এতে বরা হয়, ২০১৫ সালে
জার্মানিতে তার গৃহীত নীতির অধীনে কমপক্ষে ১১ লাখ
শরণার্থী আশ্রয় পেয়েছে। এ জন্য দেশে ও দেশের ভিতরে
ভীষণভাবে সমালোচিত অ্যাঙ্গোলা মারকেল। সামাজিক
মিডিয়ায়ও তীব্র সমালোচনা এ নিয়ে। এর ওপর সামনেই সেখানে
জাতীয় নির্বাচন। এমন এক সময়ে সাহসী অ্যাঙ্গেলা মারকেল
বললেন, ইসলাম কোনো সন্ত্রাসের উৎস নয়। সন্ত্রাসের
বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে মুসলিমদের সহযোগিতা নিতে হবে।
তিনি যখন এ বক্তব্য রাখছিলেন তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
অ্যাঙ্গেলা মারকেল বলেন, ইসলামপন্থি সন্ত্রাসের
বিরুদ্ধে আমরা যৌথভাবে লাড়ই করছি। এতে সবার অভিন্ন
স্বার্থ। আমরা কাজ করছি এক হয়ে। উল্লেখ্য, গত ২৭শে
জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প
৭টি মুসলিম দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
দেয়ার পর এর সমালোচনা করেছিলেন মারকেল।
মায়েরাও উপবৃত্তির আওতায়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সন্তান স্কুলে গেলে মা উপবৃত্তি পাবেন—সরকারের নতুন এ
কর্মসূচি খুবই অর্থবহ হবে। বর্তমান সরকারের যেসব
সাফল্য রয়েছে শিক্ষা খাতে অগ্রগতি তার অন্যতম।
শিক্ষার্থীর জন্য উপবৃত্তি, বিনা মূল্যে বই বিতরণসহ
কিছু উদ্যোগ প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার কমালেও তা
সন্তোষজনক নয়। সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করানোর পরও অনেক
পরিবার দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়। মাকে
উপবৃত্তি দেওয়ার কর্মসূচি এ প্রবণতা কমাবে।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ১ মার্চ এ কর্মসূচির উদ্বোধন
করবেন, যার আওতায় আসবেন প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী এক কোটি
৩০ লাখ শিশুর মা।
প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে অনেক মনোযোগ দেওয়ার পরও
আশানুরূপ সাফল্য আসেনি। মানসম্মত শিক্ষকের অভাব,
সৃজনশীল পদ্ধতির অজ্ঞতা, মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশার
প্রতি অনীহাসহ নানা সমস্যা অগ্রগতিতে বাধা হয়ে আছে।
প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়ানো ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব
যেসব কর্মকর্তার কাঁধে, তাঁদেরও অনেকে দুর্নীতিগ্রস্ত।
জালিয়াতির মাধ্যমে অমেধাবীরা চাকরি পাচ্ছেন, ব্যবহৃত
হচ্ছে বিভিন্ন কোটার জাল সনদ। অভিভাবকের দারিদ্র্য ও
অসচেতনতা শুধু নয়, স্কুলে মানসম্মত শিক্ষাপদ্ধতি না
থাকার ফলেও অনেকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিচ্ছে। দৈহিক
শাস্তি কমানো সম্ভব হলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বেশির
ভাগ শিক্ষক পেশাদারির সঙ্গে পাঠদান করেন না। অনেকের
বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান কম। পাঠ্যপুস্তক বা সিলেবাস নির্ভর
পড়ালেখা, পরীক্ষামুখী পুঁথিগত বিদ্যা ছাত্র-ছাত্রীদের
সৃজনশীলতার সম্ভাবনা অঙ্কুরেই হত্যা করছে। তাদের মেধা
ও মননের বহুমুখী বিকাশ ঘটছে না। শিক্ষাদান অনেকের
কাছেই এখন ব্যবসা। শিশুর প্রথম শিক্ষক তার মা।
উপবৃত্তির কর্মসূচি দরিদ্র পরিবারগুলোকে সন্তানের
শিক্ষার প্রতি ইতিবাচকই শুধু রাখবে না, সামান্য আর্থিক
সহায়তাও জোগাবে। এ কর্মসূচির দ্রুত ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন
হলে ঝরে পড়া কমবে, বাড়বে ভর্তির হার। অনেক উদ্যোগ
নেওয়ার পরও যেসব কারণ প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির পথে
বাধা হয়ে আছে, সেগুলোর প্রতিও নজর দিতে হবে।
যানজটে নাকাল নগরবাসী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
এমনিতেই যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি
দিতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা কিংবা তারও বেশি সময় লেগে যায়।
তার ওপর যখন কোনো উপলক্ষ আসে, মানুষের ভোগান্তির কোনো
সীমা-পরিসীমা থাকে না। তেমনই অবস্থা হয়েছিল গত ৪
জানুয়ারি ২০১৭। এদিন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার ৬৯তম
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করেছে। শহরের বিভিন্ন
প্রান্ত থেকে মিছিল এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার
দিকে। আর তাতেই থমকে গেছে পুরো ঢাকা। সকাল ১০টা থেকেই
বাড়তে শুরু করে অস্বাভাবিক যানজট। দুপুরে তা সর্বোচ্চ
পর্যায়ে পৌঁছে। বিকেল পর্যন্ত চলেছে এর জের। অফিসগামী
অনেককেই দেখা গেছে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে যেতে।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও ছিল একই অবস্থা। সদরঘাট,
কমলাপুর কিংবা বাস টার্মিনালমুখী যাত্রীদের মালামাল
মাথায় নিয়ে ও ছোট শিশুদের হাত ধরে টানতে টানতে
গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে। যারা গুরুতর রোগী নিয়ে
হাসপাতালে যাচ্ছিল তাদের অসহায়ভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে
কাঁদতেও দেখা গেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে, এতে
আপত্তি করার কিছু নেই। আর ক্ষমতাসীন দল বা এর অঙ্গ ও
সহযোগী সংগঠন হলে তো কথাই নেই। মিছিল করা তাদের
সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। সাধারণ মানুষ রাস্তায় বিনা
বাধায় চলাচল করবে—এটাও তাদের অধিকার। কিন্তু বুধবার
কিছু ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে। মিছিল যাওয়ার সুবিধার্থে
ট্রাফিক পুলিশকে দেখা গেছে কোথাও কোথাও যান চলাচল বন্ধ
করে দিতে। জনদুর্ভোগ হবে, এমন অজুহাতে যখন বিরোধী দলকে
রাস্তায় মিছিল বা সমাবেশ করতে দেওয়া হয় না তখন এভাবে
যান চলাচল বন্ধ করে মিছিল করতে দেওয়ায় মানুষ অবাক হয়েছে।
তাদের মনে নানা প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে। কেউ কেউ এ নিয়ে
প্রকাশ্যেই নানা ধরনের মন্তব্য করেছে।
২০১৬ সালে ঢাকা শহরে বাড়িভাড়া সবচেয়ে বেশি বেড়েছে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানীতে ২০১৬ সালে বাড়িভাড়া বেড়েছে গড়ে ৮ দশমিক ৫৪
শতাংশ। গত বছর নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৮১
শতাংশ। অর্থাৎ নিত্যপণ্যের তুলনায় প্রায় দেড় গুণ হারে
বাড়িভাড়া বেড়েছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন কনজ্যুমারস
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বার্ষিক প্রতিবেদনে
এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি গতকাল রোববার
প্রকাশ করা হয়।
ক্যাবের হিসাবে গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে
প্রায় ৩৮৮ শতাংশ। অথচ একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে
২০০ শতাংশ। অর্থাৎ নিত্যপণ্যের দামের তুলনায় বাড়িভাড়া
বৃদ্ধির হার প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিবারের মতো এবারও
বছরের শুরুতে বাড়ির মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া
বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
ক্যাবের ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর প্রায়
৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ ভাড়া বাসায় বসবাস করে এবং
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর মোট আয়ের একটা সিংহভাগ
বাড়িভাড়ায় খরচ হয়। ২০১৬ সালে ঢাকা শহরে বাড়িভাড়া সবচেয়ে
বেশি বেড়েছে পাকা টিনশেডে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ, ফ্ল্যাটে
বেড়েছে ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, মেস রুমে বেড়েছে ৭ দশমিক ৯৫
শতাংশ এবং বস্তিতে বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
Top
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
ঝুঁকিপূর্ণ
কাজে শিশুরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বরগুনার আমতলীতে বৈধ-অবৈধ ইটভাটায় প্রায় দেড় শতাধিক
শিশু শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত আছেন। এতে শিক্ষার অধিকার
থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া এবং
ধুলা ময়লার কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য
ঝুঁকিতে পড়ছে এসব কোমলমতি শিশুরা। পরিবারের অসচেতনতা ও
দরিদ্রতার কারণেই এ পরিস্থিতির শিকার বলে সংশ্লিষ্টদের
সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। আমতলী, উপজেলার একাধিক
ইটভাটায় গিয়ে দেখা গেছে, এসব শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে
অথবা বাবা-মা ছাড়াই ৮ থেকে ১৬ বছরের কমপক্ষে দেড়
শতাধিক শিশু ভাটার কাজে নিয়োজিত আছে। এসব শিশু এবং
শিশুদের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকটা
বাবা-মায়ের অসচেতনতা এবং দরিদ্রতার কারণেই তাদের এই
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নামানো হচ্ছে। অন্যদিকে ভাটার মালিকরা
কম বেতনে বেশি কাজ করানোর জন্যই এসব কোমলমতি শিশুদের
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা
গেছে, উপজেলায় ইটভাটা ও পাঁজা রয়েছে ১৯টি অনুমোদিত
ইটভাটা ৬টি। অনুমোদনহীন ইটভাটা ১৩টি। প্রায় প্রতিটি
ইটভাটাতেই শিশুরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। আমতলী
উপজেলার তালুকদার বাজারে এইচআরপি ব্রিক্স-এ গিয়ে দেখা
যায়, বেশকিছু শিশু ভাটার বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছে। এ
সময় কথা হয় উপজেলার রাওগাঁর জয়নাল হাওলাদারের দুই ছেলে
মনু (১৩) ও রাসেল (১১) এর সঙ্গে। তারা জানায়, ৮ বছর
বয়স থেকেই তারা ইটভাটায় কাজ করে আসছে। বর্তমানে কাজ করে
সপ্তাহে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা পায় তারা। এ টাকা নিয়ে
বাবার সংসারেই দেয় মনু ও রাসেল। লেখাপড়া করতে ইচ্ছা হয়
কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে মনু বলে, ‘ল্যাহা-পড়া করতে তো
মোনে চায়-ই, তাইলে মোরা কাজ না করলে খামু কি?’। একই
ভাটায় শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত রায়হান ও হৃদয় জানায়, তারা
দু’জনই এ বছর পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি
হয়েছে। বাই সাইকেল কেনার জন্য তারা ভাটায় শ্রমিকের কাজ
করতে আসছে। কথা হয় শাহীন নামের আরেক শিশুর সঙ্গে।
শাহীন বলে, মোরা পাঁচ ভাইবোন, সবাই শ্রমিকের কাজ করি।
ধুলা ময়লায় শরীরের ক্ষতি হয় না? শাহীনকে এমন প্রশ্ন করা
হলে বলেন, ‘রাইতে ঘুমাইতে গ্যালে মাঝে মাঝে কাশ (কাশি)
হয়।’ শুধু তালুকদার বাজারে এইচআরপি ব্রিক্স নয়,
উপজেলার মহিষডাঙ্গায় সোবাহান কাজীর এমসিকে ব্রিক্স,
তালতলা এইচবিএম, কিশোরখান ব্রিক্সসহ প্রায় ভাটায়ই এভাবে
শিশুরা শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। আমতলীর ৫০
শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রশাসক ডা. এমএ মতিন বলেন,
ইটভাটায় কর্মরত শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে
রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইটভাটায় দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে
বিষাক্ত ধোঁয়া ও ধুলাবালিতে শিশুদের ত্বক ও নখ নষ্ট
হওয়ার পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা, অ্যাজমা, হাঁপানি,
ব্রঙ্কাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
শ্রম আইন-২০০৬-এর ২৮৪ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি কোনো
শিশু বা কিশোরকে চাকরিতে নিযুক্ত করলে অথবা আইনের কোনো
বিধান লঙ্ঘন করে কোনো শিশুকে চাকরি করার অনুমতি দিলে,
তিনি ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডগত ব্যবস্থা নেয়া
হবে।
রূপগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে
হত্যা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে
বাবলী আক্তার (১৫) নামে এক গৃহবধূকে স্বামী, শ্বশুর আর
শাশুড়ি মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাব
জেলেপাড়া এলাকায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতের পিতা
বাবুল মিয়া জানায়, তিনি কাঞ্চন পৌরসভার হাটাব দক্ষিণ
বাড়ৈ এলাকার বাসিন্দা। ১১ মাস পূর্বে তার মেয়ে ও
স্থানীয় হাটাব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির
শিক্ষার্থী বাবলী আক্তার (১৫)কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে
তুলে নিয়ে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী হাটাব জেলেপাড়া
এলাকার আমির হোসেনের ছেলে রাশেদুল। বিয়ের পর থেকেই তার
মেয়ে বাবলীকে বিভিন্ন সময়ে কারণে অকারণে নির্যাতন করতো
স্বামী রাশেদুল ও তার বাবা মা। দুইমাস আগে স্বামী
রাশেদুল এলাকায় ওয়ার্কশপ দেবার জন্য বাবলীর বাবার কাছে
৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এতে দিনমজুর বাবুল মিয়া
অপরাগতা প্রকাশ করলে বাবলীর উপর নির্যাতন শুরু করে
রাশেদুল। বৃহস্পতিবার বিকালে ফের যৌতুকের টাকার জন্য
বাবলীকে মারধর করে রাশেদুল ও তার পরিবারের লোকেরা।
এদিকে, রাত ২টার দিকে রাশেদুল ইসলাম লোক মারফত বাবলীর
পিতার কাছে সংবাদ পাঠায় যে, বাবলী গুরুতর অসুস্থ।
সংবাদ শুনে বাবলীর পিতা বাবুল মিয়া তার এক আত্মীয়কে
সঙ্গে নিয়ে রাশেদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখেন যে, বাবলীর
লাশ তার ঘরের ভেতর খাটের উপর পড়ে আছে। এ ঘটনা আশেপাশের
লোকজন জানতে পেরে ঘাতক স্বামী রাশেদুলকে আটক করে
পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ সময় কৌশলে গা ঢাকা দেয়
রাশেদুলের পিতা আমির হোসেন ও মা রওশন আরা বেগম।
যৌতুকের জন্যই তার একমাত্র মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে
দাবি করেন নিহত বাবলীর পিতা বাবুল মিয়া। পুলিশ সকালে
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের
মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার
ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ
সম্পর্কে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে বাবলীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা
করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত স্বামী মুখ খুলেননি। এ ঘটনায়
রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলায়
স্বামী রাশেদুলকে আটক দেখিয়ে আমরা তার রিমান্ড আবেদন
করবো। পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার
প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
নারীরা যৌতুকের
শিকার হচ্ছেনই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যৌতুকের কারণে নির্যাতন, হত্যা, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছেই।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, এ ধরনের ঘটনায় মামলা কম হয়।
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, পারিবারিক
সহিংসতার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার যৌতুক। প্রতিরোধে দরকার
আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ ও সামাজিক আন্দোলন।
যৌতুককে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালে ১৭৩ জন নারী খুন হয়েছেন।
নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩৬২টি। আর গত ৫ বছরে এ সংখ্যা ২
হাজারের বেশি। হত্যার শিকার হয়েছেন ১ হাজার ১৫১ জন নারী।
মা-বাবা আদর করে মেয়ের নাম রেখেছিলেন সুখী (২৪)। কিন্তু
সুখীর কপালে সুখ তো জোটেইনি; বরং শ্বশুরবাড়িতে বর্বর
নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। বিয়ের ১২ বছরের মাথায়
যৌতুক না পেয়ে স্বামী ও তাঁর স্বজনেরা মিলে টেস্টার
দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সুখীর ডান চোখটি একেবারে উপড়ে
ফেলেন। বাঁ চোখেও ছিল মারাত্মক আঘাত। ঘটনাটি ২০১৫ সালে
সাভারের জিঞ্জিরায় ঘটেছে।
সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে যৌতুক নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে;
যা বিয়ের আগে থেকে শুরু হয়ে চলতে থাকে। যৌতুকের দাবি
মেটাতে গিয়ে কনের পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। আবার এ দাবি
মেটাতে না পারলেই নেমে আসে শারীরিক ও মানসিক
নির্যাতনের খড়্গ।
যৌতুকের কারণে অনেক নারীকেই হত্যার শিকার হতে হচ্ছে।
আবার মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচলেও অনেকে বেছে নেন
আত্মহত্যার পথ। ২০১৬ সালে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের
শিকার ৯ জন নারী আত্মহত্যা করেন। ২০১৫ সালে
আত্মহত্যাকারী নারীর সংখ্যা ছিল ১৮।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো.
আনোয়ার হোসেন বলছেন, মানুষের মূল্যবোধ কমে যাচ্ছে;
যৌতুক এখন সামাজিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। পুঁজিবাদ ও
সামাজিক কাঠামোর দুর্বলতা এর বড় কারণ। যৌতুকরোধে
সচেতনতা ও মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। এ
ক্ষেত্রে শিক্ষাব্যবস্থা ও গণমাধ্যম বড় ভূমিকা রাখতে
পারে বলে মত দেন এই শিক্ষক।
অর্থনৈতিক কারণে যৌতুক বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করেন নারী
নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচির
পরিচালক আবুল হোসেন। তিনি মনে করেন, সমাজে এখনও
মেয়েপক্ষকে মনে করা হয় আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভের উৎস।
সমাজে যৌতুকপ্রথা বন্ধ করতে দরকার সবার সচেতনতা।
বিয়ের ৫ বছর পরে যৌতুক দিতে রাজি নন পাবনার শম্পা
খাতুন (২৫)। এ কারণে বেঁচে থাকার অধিকারই হারিয়ে ফেলেন
তিনি। যৌতুক না পেয়ে স্বামী ও তাঁর স্বজনেরা শ্বাসরোধ
করে হত্যা করেন শম্পাকে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে
প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন স্বামী। ঘটনাটি ২০১৬ সালের
ফেব্র“য়ারির।
নারীরা যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হলেও সংসার
করার জন্য আইনের আশ্রয় নেন না। পাশাপাশি, আইনি পরিবেশ
নারীবান্ধব না হওয়ায় কম যাচ্ছেন। তা ছাড়া, অপরাধীরা সব
সময়ই প্রভাবশালী থাকে, তাদের বিরুদ্ধে বিচার পাওয়ার
নজির কম। বিচার বিভাগে দীর্ঘসূত্রতা আর ভোগান্তির
কারণেও অনেকের অনীহা।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
টাকার জন্য পুলিশের
কেমন নির্যাতন!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দুই লাখ টাকা ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় যশোর কোতোয়ালি
থানার ভেতর আবু সাঈদকে হাতকড়া পরিয়ে ঝুলিয়ে নির্যাতন
করা হয় যশোরে পুলিশ এক যুবককে ধরে নিয়ে থানার মধ্যে
ঝুলিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্বজন অভিযোগ, চাহিদামতো দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে টাকা
না দেওয়াতেই এ নির্মমতা চালায় পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার যুবক হলেন আবু সাঈদ (৩০)। তিনি যশোর
সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। তাঁর
স্বজন জানান, সাঈদকে ছাড়াতে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি
করেছিল পুলিশ। শেষমেশ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে
আনা হয়েছে।
যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক
পুলিশ সদস্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন,
সাঈদকে গত ৪ জানুয়ারি ২০১৭ রাতে আটক করেন থানার
উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল। পরে তাঁর কাছে তিনি ও সহকারী
উপপরিদর্শক (এএসআই) হাদিবুর রহমান দুই লাখ টাকা দাবি
করে। কিন্তু তা দিতে অস্বীকার করায় সাঈদকে হাতকড়া পরিয়ে
থানার মধ্যে দুই টেবিলের মাঝে ঝুলিয়ে পেটানো হয়। খবর
পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ওই রাতেই
সাঈদকে ছাড়িয়ে আনে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাঈদের এক স্বজন মুঠোফোনে প্রথম
আলোকে বলেন, সাঈদের নামে মামলা রয়েছে। তবে তিনি জামিনে
আছেন। ৪ জানুয়ারি ২০১৭ রাতে বিনা অপরাধেই তাঁকে আটক করে
নির্যাতন করে পুলিশ। পরে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে
ছাড়িয়ে আনা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন প্রথম
আলোকে বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি এসআই
নাহিয়ানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। যোগাযোগ করা হলে
নাহিয়ান বলেন, ‘আমি শুনেছি আবু সাঈদকে আটক করা হয়েছিল।
কিন্তু আমি আটক করিনি। আর আটকের পর কী হয়েছে তা আমি
জানি না।’
এদিকে চেষ্টা করেও এসআই নাজমুলের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব
হয়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এএসআই
হাদিবুর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে আমি
জড়িত নই।’
রাজশাহীতে পুলিশের
পিটুনিতে ট্রাকচালক আহত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজশাহীতে পুলিশের মারপিটে এক ট্রাকচালক আহত হয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর তালাইমারি এলাকায় এই ঘটনা
ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ট্রাক চালকরা রাস্তা অবরোধ করে
রাখেন। ঘন্টাব্যাপী অবরোধে সড়কের দুইপাশে শতশত গাড়ি
আটকা পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব
যানবাহন। ফলে উভয় প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী,
শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্ভোগের শিকার হন।
নান্দাইলে পুলিশের
ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নান্দাইল উপজেলার পৌর এলাকার চারআনী পাড়া গ্রামে
পুলিশের ওপর হামলা করে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে ছিনিয়ে
নিয়েছে জনতা। বৃহস্পতিবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে
৪ পুলিশ আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে নান্দাইল মডেল
থানা পুলিশ ওই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের বাড়ি ঘেরাও
করে তার ছেলে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও পলাতক আসামি শাহাব
উদ্দিন ফকিরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারে নেতৃত্ব দেন
নান্দাইল মডেল থানার এসআই আলিমুজ্জামান। এরপর বাড়ির
লোকজন চিৎকার দিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় শতাধিক
লোক পুলিশের ওপর হামলা করে শাহাব উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেয়।
জনতার হামলায় আহত হন এসআই আলিমুজ্জামান, কনস্টেবল
রুহুল আমিন, মঞ্জুরুল হক ও সুমন মিয়া। আহতদের মধ্যে
এসআই আলিমুজ্জামানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাতে কোপ দেয়া
হয়েছে বলে নান্দাইল মডেল থানার ওসি মো. আতাউর রহমান
নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পুলিশের ওপর হামলার খবর থানায় পৌঁছালে পুলিশ
সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে নান্দাইল হাসপাতালে পাঠায়।
পরে অভিযান চালিয়ে শাহাব উদ্দিনের বাবা আবু বক্কর
সিদ্দিক ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই ওসি জানান, ইয়াবা ব্যবাসায়ী শাহাব উদ্দিনকে
গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। পুলিশের ওপর
হামলা এবং গ্রেফতারের আসামি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে ২০
জনের নাম উল্লেখ করে শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা হয়েছে।
ওই গ্রামে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
কেন্দ্রীয় কারাগারে
পদে পদে বাণিজ্য!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
‘কারাগারে ঢোকানোর পরই একজন আমার স্বামীকে বললেন, ভাই
আপনি জেলে থাকতে পারবেন না। অনেক নোংরা, বিছানা নাই,
বাথরুমের পাশে থাকতে হবে। হাসপাতালে থাকেন, মাত্র ১৫
হাজার টাকা দিলেই হবে। যখন আমার স্বামী রাজি হইল, তখনই
আমারে ফোন দিল এক দালাল। টাকা অ্যাডভান্স চাইল। আমি
তার হাতেই প্রতি মাসের ২৭ তারিখে টাকা দিতাম। পরে আমার
স্বামী বলল, দালাল পাঁচ হাজার টাকা খেয়ে ফেলে, এ জন্য
তারে ভালো বিছানা দেয় না। এখন আমিই কাঠি (তার) দিয়া
টাকা দিই। এইখানে হাজার টাকার ওষুধ পাঠাইলে কমিশন দিতে
হয়। খাবার পাঠাইলেও টেকা দিতে হয়, আবার কিনতেও হয়
দ্বিগুণ দামে। টাকা ছাড়া কোনো কথা নেই। কারাগারের
ভেতরে-বাইরে বাণিজ্য আর বাণিজ্য।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে
বন্দী স্বামীকে দেখতে আসা এক নারী প্রথম আলোর কাছে এমন
তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। শুধু ওই নারীই নন,
অন্তত ৩০ জন বন্দীকে দেখতে আসা স্বজনদের সঙ্গে সম্প্রতি
কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁদের প্রায় সবাই কমবেশি এমন
অভিযোগ করেন।
কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় তিন দিন ঘুরে ‘সাক্ষাৎ
বাণিজ্য’ ও নানা অনিয়মের চিত্র পাওয়া গেল। কারাগারের
মূল ফটক থেকে শুরু করে ভেতরে, মাঠে, ঝোপঝাড়ের আড়ালে
লোকজনের সঙ্গে কারারক্ষীদের কথা বলতে দেখা গেছে। মাঠে
একটি বেঞ্চে বসে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের নাম-ঠিকানা লিখতে
হয়। মূলত সেখান থেকেই বাণিজ্য শুরু হয়। ধীর গতিতে নাম
লেখানো চলে, পাশাপাশি চলতে থাকে দালালদের দেনদরবার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিন কারারক্ষী প্রথম আলোর
কাছে অভিযোগ করেন, কারাগারের মূল ফটক থেকে ভেতরে সব
মিলিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার বাণিজ্য হয়। বেশি হয়
সকাল আটটার আগে এবং বিকেল পাঁচটার পরে। তাঁদের মতে,
বন্দীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, হাসপাতালে থাকা, আসামির জামিন,
বন্দী রোগী বাইরের হাসপাতালে পাঠানো, পুনরায় গ্রেপ্তার,
খাবার বা টাকা পাঠানো, মালামাল তল্লাশি করাসহ
সবক্ষেত্রেই বাণিজ্য হয় কারাগারে। তাঁরা অভিযোগ করে
বলেন, সাক্ষাৎকার কক্ষটি পাঁচজন কারারক্ষীর কাছে এক
মাসের জন্য ৬০-৭০ হাজার টাকায় ‘বিক্রি’ করা হয়। এরপর
যা বাণিজ্য হয় তা ভাগ করে নেন কারারক্ষীরা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদনেও বলা
হয়েছে, বর্তমানে এ কারাগারটির প্রধান সমস্যা হলো সাক্ষাৎ
বাণিজ্য, অবৈধভাবে কারাগারে কয়েদিদের কাছে টাকা পাঠানো
এবং কয়েদিদের মুঠোফোনের ব্যবহার। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও
কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় রসিদের মাধ্যমে টাকা পাঠানো
হচ্ছে। কয়েদিদের মুঠোফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও
ভেতরে দায়িত্বরত কারারক্ষীদের সহায়তায় মুঠোফোনে কথা
বলেন বন্দীরা।
জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ
জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, আগে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে এসব দুর্নীতি কিছুটা ছিল, ব্যবস্থাপনায় সমস্যা
ছিল। কিন্তু কেরানীগঞ্জে এ ধরনের কোনো অনিয়ম বা
বাণিজ্য নেই। বিশেষ করে মাদক বা সাক্ষাৎকার নিয়ে কোনো
বাণিজ্য হচ্ছে না। উচ্চপর্যায়ের নজরদারি রয়েছে। তবে
দু-একটি ঘটনা থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে আসামিরাও এসব
অবৈধ সুবিধা চায়।
গাজীপুরে হত্যা
মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গাজীপুরে হত্যা মামলায় তিন ভাইসহ চারজনকে যাবজ্জীবন
সাজা দিয়েছেন আদালত। গত ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ দুপুরে
গাজীপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক
মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।
দপুর গ্রামের তিন ভাই মো. মাসুদ, মো. সানাউল্লাহ, নূরে
আলম ওরফে ময়না ও তাঁদের ভগ্নিপতি বরিশালের কোতোয়ালি
থানার আনোয়ার শিকদার। রায় ঘোষণার সময় নূরে আলম উপস্থিত
ছিলেন। অন্য তিন আসামি পলাতক।
গাজীপুর আদালতের আইনজীবী মো. হাফিজ উল্লা দরজি বলেন,
পূর্বশত্র“তার জের ধরে ২০০৪ সালের ১৫ এপ্রিল
কালীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর এলাকার শামসুল হক দরজিকে বাড়ি
থেকে ডেকে নিয়ে যান মো. মাসুদ ও সানাউল্লাহ। পরে বাড়ির
পাশে নিয়ে শামসুল হককে বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। এ সময়
নূরে আলম ও আনোয়ার শিকদারও শামসুলকে মারপিট করেন।
একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে শামসুলের বুকে আঘাত করা হয়।
চিৎকার শুনে শামসুলের স্ত্রী হাফেজা বেগম ছুটে যান।
তখন রক্তাক্ত অবস্থায় শামসুলকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান
হামলাকারীরা। পরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শামসুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
সিজেরিয়ান পদ্ধতিতে বাচ্চার জন্ম হলে কী কী খেয়াল
রাখবেন?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
আজ থেকে ৩০-৪০ বছর আগেও মহিলারা সাধারণ বা নর্মাল
পদ্ধতিতে শিশুর জন্ম দিতেন । কিন্তু গত তিন দশকে
চিত্রটা আগাগোড়া পালটেছে । শিশুর জন্ম দেওয়ার সময়
বেশিরভাগ মহিলাই এখন সিজার পদ্ধতিতে প্রসব করান । মানে
তলপেট কেটে বাচ্চাকে বের করে আনা হয় । কিন্তু কেন? হঠাৎ
এই ভোলবদলের কারণ কী?
ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড মহিলারা বেশি বয়েসে মা হওয়ার
পক্ষপাতি । বেশি বয়সের প্রেগনেন্সিতে ক্ষতির সম্ভাবনা
তৈরি হয় । মা আর সন্তান, দু’জনেরই প্রাণের সংশয় থাকে ।
সেই বিপদ থেকে বাঁচতেই সিজারিয়ান পদ্ধতিতে ডেলিভারি
করান বেশিরভাগ মহিলা । অ্যানাস্থেশিয়া করিয়ে পেট কেটে
বাচ্চা বেরিয়ে আসবে, কোনও যন্ত্রণা ছাড়াই, নো লেবার
পেইন । অনেক সময় হাইপ্রেসার বা ডায়াবেটিস থাকলেও
চিকিৎসকরা সিজার করতে বলেন ।
মা-দাদীদের আমলে নর্মাল ডেলিভারিতে বাচ্চার জন্ম হত ।
যোনি থেকে বেরিয়ে আসত বাচ্চা । সে এক কষ্টকর অনুভূতি ।
অথচ যুগযুগ ধরে সেভাবেই স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বাচ্চার
জন্ম হয়েছে । তাই যোনিকে বলা হয় জন্মের উৎসস্থল। ১২
থেকে ১৮ ঘণ্টা লেবার পেইনের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে
তারপর বাচ্চার জন্ম হত । তা ছাড়াও, কষ্টকর নর্মাল
ডেলিভারিতে বাচ্চাদের প্রাণ সংশয় হত । অনেক মাও
মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন । সেইসব কারণেই সিজারিয়ান
পদ্ধতিকে বেছে নিয়েছেন আজকের আধুনিকরা। অনেক সময়
তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী দিনক্ষণ মিলিয়ে ডেলিভারির
ব্যবস্থা করা হয়।
বর্তমান চিকিৎসা শাস্ত্রে সিজারিয়ান ডেলিভারি অনেক
নিরাপদ। অ্যানাস্থেশিয়ার প্রক্রিয়া অনেক উন্নত । লেবার
পেইন সহ্য করতে হয় না । মা, বাচ্চার প্রাণের সংশয়ও কম
থাকে । এতশত বিচার করেই সিজারের দিকে ঝুঁকছেন আধুনিকরা
।
কিন্তু তা বলে কি সমস্যা একেবারেই নেই? আছে, এখানেও
সমস্যা আছে । ডেলিভারির পর মায়েদের তলপেটে বড়সড় ক্ষত
তৈরি হয় । ফলে সংক্রমণের ভয়ও থাকে । একবার সিজার
করানোর পর, বারবার প্রেগনেন্সি নেওয়ার ক্ষেত্রে
সীমাবদ্ধতা চলে আসে। খুব বেশি হলে দু’বার প্রেগনেন্সি
নেওয়া যায় ।
এ তো গেল মায়ের সমস্যা । সিজ?েরিয়ান বাচ্চাদেরও সমস্যা
প্রচুর । অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা
দেখা দেয় । বারবার অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা তৈরি হয় ।
সিজ?ারিয়ান ডেলিভারি যখন ট্রেন্ড, তখন উচিত ডাক্তারের
পরামর্শ মতো চলা । এই ডেলিভারি আদতেও শরীরে সুট করবে
কিনা, সেটা নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা মাস্ট !
স্পন্ডাইলোসিস, ঘাড়
মাথা ও বুক ব্যথা
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব নারী-পুরুষের ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ
স্পন্ডাইলোসিস যাকে ঘাড়ের হাড়ের ক্ষয় বা হাড় বেড়ে যাওয়া
রোগ বলে। যদিও ঘাড় ব্যথাই সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের
প্রধান উপসর্গ তথাপি এই রোগে মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা বা
বুক ব্যথার মতো উপসর্গও থাকতে পারে। সারভাইক্যাল
স্পন্ডাইলোসিসের কারণে অনেক সময় ঘাড়ে ব্যথাই অনুভূত হয়
না। রোগী বলেন, মাথা ঘুরছে অথবা বুকে ব্যথা অনুভূত
হচ্ছে।
স্পন্ডাইলোসিসের লক্ষণ : ব্যথা ঘাড় থেকে হাতে চলে যায়।
অনেকের হাতে ঝিঁ ঝিঁ ধরে। পিঠে-বুকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘাড় ডানে-বামে বা সামনে-পেছনে ঝোঁকাতে কষ্ট হয়। অনেকে
উপরের দিকে তাকাতে পারেন না। অনেক রোগীই বলে থাকেন,
তাদের কোনো কোনো আঙ্গুল অবশ লাগছে বা বোধ পাচ্ছেন না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করেন তার একটি হাত ঝিঁ ঝিঁ
লেগে আছে অথবা ঝিঁ ঝিঁ লাগার কারণে মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে
গেছে।
সাধারণ উপসর্গ ছাড়াও অনেক রোগীই মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা
বা বুকে ব্যথার কথা অভিযোগ করে থাকেন। এমনও রোগী আছে
যারা বুক ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করতে না পেরে নিজেকে
হƒদরোগী ভাবেন। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই সামান্য একটি এক্স-রে
করে দেখা যায় তিনি ঘাড়ের হাড় ক্ষয় রোগে ভুগছেন। একইভাবে
মাসের পর মাস মাথা ঘোরা রোগের ওষুধ খেয়ে উপকার না পেয়ে
পরে স্পন্ডাইলোসিস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম
নয়। তাই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া জরুরি।
চিকিৎসা : স্পন্ডাইলোসিসের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা
আইপিএম। কারণ নির্ণয় হওয়া মাত্রই চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
ব্যথা বা অন্যান্য উপসর্গ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাওয়ার আগ
পর্যন্ত আইপিএম চালিয়ে যেতে হবে। নিয়ম মেনে চলাও
চিকিৎসার সমান গুরুত্বপূর্ণ। সামনে ঝুঁকে কাজ না করা,
পাতলা বালিশে ঘুমানো, সমান বিছানা ব্যবহার
স্পন্ডাইলোসিস রোগীদের কষ্ট দ্রুত দূর করবে। ডায়াবেটিস,
গ্যাস্ট্রিক আলসার এবং কিডনি রোগে আক্রান্তরা
ব্যথানাশক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন।
জটিলতা : ফ্রোজেন সোল্ডার স্পন্ডাইলোসিসের অন্যতম
প্রধান জটিলতা। রোগ জটিল আকার ধারণ করলে হাত শুকিয়ে
যাওয়া বা আঙ্গুল অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
তাই দ্রুত সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের চিকিৎসা নিন।
হাঁস না মুরগি, কার
ডিম বেশি পুষ্টিকর?
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
অনেকে আবার আঁশটে গন্ধের কারণে হাঁসের ডিম মুখে তুলতে
চান না। কারও আবার মুরগির ডিমে অরুচি। তবে, জনপ্রিয়তার
কথা বললে কেউ কারও থেকে কম যায় না। কিন্তু স্বাস্থ্য
সচেতনরা বুঝে উঠতে পারেন না কোন ডিম খাবেন। হাঁসের ডিম
খেলে বেশি পুষ্টি, নাকি মুরগির ডিম খেলে ঝরবে মেদ। জেনে
নিন কোন ডিম বেশি পুষ্টিকর।
আকার মুরগির ডিমের তুলনায় হাঁসের ডিম আকারে বড় হয়। এ
ছাড়াও হাঁসের ডিমের খোলা মুরগির ডিমের তুলনায় বেশি
শক্ত হয়। যে কারণে হাঁসের ডিম ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত খাওয়া
যেতে পারে। যদিও, টাটকা ডিম খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য
উপকারী।
আকারে বড় হওয়ার কারণে হাঁসের ডিমের কুসুমও বড় হয়। তাই
যদি বেশি কুসুম খেতে চান বা আপনার শরীরে বেশি
প্রোটিনের প্রয়োজন হয় তাহলে হাঁসের ডিম খান।
পুষ্টিগুণ ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিম থেকে ১৮৫ কিলো ক্যালরি
এনার্জি পাওয়া যায়। যেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিম থেকে
পাওয়া যায় ১৪৯ কিলো ক্যালরি এনার্জি। কার্বহাইড্রেট ও
মিনারেলের পরিমাণ সমান হলেও হাঁসের ডিমে প্রোটিনের
পরিমাণ সামান্য বেশি থাকে। উভয়ের ডিমেই সেলেনিয়াম,
ম্যাঙ্গানিজ, দস্তা, তামা, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস,
ক্যালসিয়াম, আয়রন থাকে। তবে হাঁসের ডিমে সব কিছুরই
পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকে।
হাঁস, মুরগি উভয়ের ডিমেই থিয়ামিন, নিয়াসিন,
রাইবোফ্লোভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফোলেট, ভিটামিন
বি৬, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২
ও রেটিনল থাকলেও হাঁসের ডিমে সব ভিটামিনের পরিমাণই বেশি
থাকে।
এবার আসা যাক ফ্যাট প্রসঙ্গে। ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে
স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.৬৮ গ্রাম, ১০০ গ্রাম
চিকেনে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.১ গ্রাম। হাঁসের
ডিমে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ মুরগির ডিমের থেকে
৫০ শতাংশ বেশি। অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিমাণও হাঁসের
ডিমে বেশি হলেও থ্রিওনিন, আইসোলিউসিন, ট্রিপটোফ্যান,
লিউসিন, মিথিওনিন, লাইসিন, কিস্টিন, টাইরোসিন,
ফেনিলালানিন, ভ্যালাইন, সেরিন, গ্লাইসিন, প্রোলিন,
অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, হিস্টিডিন, অ্যালানিন ও আর্জিনিন
সব ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডই মজুত মুরগির ডিমেও।
তাই হাঁসের ডিম বেশি পুষ্টিকর হলেও এই ডিমে
কোলেস্টেরলের পরিমাণও বেশি থাকে। ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে
যেখানে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৮৮৪ মিলিগ্রাম, ১০০ গ্রাম
মুরগির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৪২৫ মিলিগ্রাম। তাই
হার্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই দূরে থাকুন হাঁসের ডিম
থেকে। যারা হাই প্রোটিন ডায়েট মেনে চলতে চান তারা
কুসুম ছাড়া হাঁসের ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
কিডনির রোগ বুঝবেন
এই পাঁচ লক্ষণে
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কিডনি শরীর থেকে টক্সিন বা বর্জ্য বের করে দেয়। সেটাই
যদি ঠিকঠাক কাজ না করে তাহলে মুশকিল। কয়েকটি শারীরিক
অসুবিধা কিন্তু কিডনির গোলমালের জন্য হয়। যেমন গায়ে
ঘনঘন র্যাশ, সারাদিনে খুব প্রস্রাব হওয়া, গরমেও কম
ঘাম হওয়া। ছাকনির মতো কাজ করে কিডনি। শরীরের ভারসাম্য
বজায় রাখে। তাতে গোলামাল হলেই এসব হতে পারে। নিচের ৫
লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখুন, দেখলেই বুঝবেন আপনার কিডনিতে
সমস্যা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটাই
কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ।
১. মূত্রের সমস্যা : কিডনি বিকল হলে প্রস্রাব করতে
সমস্যা হয়। প্রস্রাবের সময় চাপও বোধ হয়। যদি অনেকক্ষণ
ছাড়া ছাড়া প্রস্রাব হয় এবং প্রসাবের রং গাঢ় হয় বা যদি
অস্বাভাবিক পরিমাণে প্রসাব হতে থাকে বা খুব ঘন ঘন
ফ্যাকাশে রঙের প্রস্রাব হয়, ধরে নেয়া যায় কিডনি ঠিকমতো
কাজ করছে না। রাতে ঘুমের সময় বারবার প্রস্রাব করতে
ওঠাও, কিডনির সমস্যার লক্ষণ।
২. ত্বকে ফুসকুড়ি বা র্যাশ : শরীরে যখন অতিমাত্রায়
টক্সিন জমে, অথচ কিডনি কাজ করতে পারে না, ত্বকে তখন
ফুসকুড়ি বেরোয়। অন্যান্য চর্মরোগও দেখা যায়।
৩. ক্লান্তি চেপে বসবে : সুস্থ কিডনি থেকে ইপিও (এরিথ্রোপোয়েটিন)
হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন অক্সিজেন বহন করতে আরবিসি
বা লোহিত রক্তকণিকাকে সাহায্য করে। কিডনি ফেলিওরে এই
হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়ায় আরবিসিতে তার প্রভাব পড়ে।
অল্প পরিশ্রমই ক্লান্ত করে দেয়। মস্তিষ্ক ও পেশিকেও
প্রভাবিত করে। রক্তাল্পতারও একই লক্ষণ।
৪. শ্বাসকষ্ট : কিডনির সমস্যার একটা কমন লক্ষণ। আরবিসি
কমে যাওয়ার কারণে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এর ফলে
শরীরে, বিশেষত ফুসফুসে টক্সিন জমতে থাকে।
৫. মাথা ঘোরা ও মনোনিবেশ করতে সমস্যা : শরীরে
অক্সিজেনের ঘাটতি দুটি কারণে হতে পারে। অ্যানিমিয়া বা
রক্তাল্পতা নয়তো কিডনি ফেলিওর। মস্তিষ্কে অক্সিজেনের
জোগান কমে যাওয়ার কারণেই একাগ্রতা কমে যায়। স্মৃতিশক্তি
হ্রাস পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। মাঝে মধ্যে মাথাও ঘুরবে।
বুকের দুধে নতুন
অ্যান্টিবায়োটিক
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বুকের দুধের প্রোটিন থেকে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক
উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল
ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরির একদল ব্রিটিশ গবেষক তাদের
উদ্ভাবিত এই অ্যান্টিবায়োটিকের উন্নয়নে কাজ করছেন। তারা
দাবি করেছেন, এটি ‘অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী’ হয়ে ওঠা
জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করবে। পাশাপাশি কোষীয় রূপান্তরের
কারণে সৃষ্ট রক্তশূন্যতার চিকিৎসায়ও সহায়ক হবে। মায়ের
দুধে থাকা ল্যাকটোফেরিন নামক প্রোটিন নবজাতককে বিভিন্ন
জীবাণুর সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি ক্ষতিকর
ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, এমনকি ভাইরাসকেও ধ্বংস করতে পারে।
এ প্রোটিনের মাধ্যমে গবেষকরা একটি ক্যাপসুল তৈরি
করেছেন। এই ক্যাপসুল নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়াকে
চিহ্নিত করে সেগুলো ধ্বংস করতে পারে অন্য কোষের ক্ষতি
না করেই।
গবেষকরা দেখতে পান, এ প্রোটিন ক্যাপসুল ব্যাকটেরিয়ার
জৈব কাঠামোকে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ফলে সেটি আর
ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে না। প্রচলিত
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে ওঠা এ ধরনের
ব্যাকটেরিয়াকে বলা হচ্ছে ‘সুপার বাগ’। প্রতিবছর সুপার
বাগের সংক্রমণে পৃথিবীতে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটছে।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যেই মৃত্যু হচ্ছে ১০ হাজার মানুষের।
যুক্তরাজ্য সরকারের গঠিত একটি গবেষক প্যানেলের হিসাবে
এখনই এসব সুপার বাগ প্রতিরোধের নতুন চিকিৎসা তৈরি না
হলে ২০৫০ সালে ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণুর কারণে মৃত্যুর
সংখ্যা বছরে এক কোটিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে।
ইংল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডেম স্যালি ডেভিস
টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রতি দশকে আমাদের এ
ধরনের ১০টি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন। আমি কেবল
আমার বৃদ্ধ বয়সের কথা ভাবছি না; আমার সš-ানরাও যাতে
তাদের বৃদ্ধ বয়সে ব্যবহার করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ল্যাকটোফেরিন থেকে তৈরি নতুন এ
অ্যান্টিবায়োটিক সুপার বাগের পাশাপাশি উত্তরাধিকার
সূত্রে পাওয়া রক্তকণিকার রোগ নির্মূলেও ভালো কাজ করবে।
ওষুধ নয়, ভেজ
ডায়েটই হূদরোগের সলিউশন
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
হৃদরোগ ও কোলেস্টেরল চিকিৎসায় ওষুধের ব্যবহার চলে আসছে
দীর্ঘদিন ধরে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এখন হূদরোগ ও
কোলেস্টেরলের চিকিৎসায় প্লান্ট বেজড ডায়েট (উদ্ভীজ্জ
ডায়েট)-এর ওপর জোর দিচ্ছেন। সাধারণত কোলেস্টেরল কমাতে
স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কানাডার
একদল বিশেষজ্ঞ শুধুমাত্র ডায়েটের মাধ্যমে কোলেস্টেরলের
চিকিৎসার ওপর জোর দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কানাডার
অন্টারিওর কমিউনিটি কার্ডিওলজিস্ট ড: শেন উইলিয়ামস
হূদরোগীদের চিকিৎসায় ভেজ ডায়েট আহারের পরামর্শ দিয়ে
আসছেন। আর ভেজ ডায়েট ভোজীরা মাছ, মাংস, পোল্ট্রি, ডিম,
ডেয়ারি প্রডাক্টস ও মধু খাননা। ভেজ ডায়েট ভোজীগণ শুধু
ফল, সবজি, হোল গ্রেইনস, নাটস, সিডস এবং লেগুমস আহার
করেন। ড: উইলিয়ামস একজন কার্ডিওলজিস্ট হওয়া সত্ত্বেও
তার বিশ্বাসকে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এভাবে
প্রকাশ করেছেন যে, মানুষ খাবারের শক্তি সম্পর্কে জানে
না। তিনি বিগত ৪ বছর ধরে রোগীদের প্লান্ট বেজড ডায়েট
এবং কাউন্সিলিং-এর ওপর পরামর্শ দিচ্ছেন।
ভেজ ডায়েট সম্পর্কে আরো একধাপ এগিয়ে বলেছেন, আমেরিকান
জার্নাল অব কার্ডিওলজির এডিটর খ্যাতনামা
কার্ডিওভাসকুলার প্যাথলজিস্ট ড: উইলিয়াম রবার্টস। তিনি
মনে করেন ভেজ ডায়েটই হূদরোগীদের অন্যতম সলিউশন। এছাড়া
সম্প্রতি এনালস অব ফ্যামিলি মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত
এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয় হূদরোগের ঝুঁকির ভয়ে অনেক
আমেরিকান এখন স্ট্যাটিন সেবনের মাত্রা কমিয়ে দিচ্ছেন।
গবেষণার প্রধান অথার ড: মাইকেল জোহানসেন উল্লেখ করেছেন
যারা কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ স্ট্যাটিন সেবনে উপকার
পেয়েছেন তাদেরও অনেকে ওষুধটি সেবন ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে
অপর একজন আমেরিকান চিকিৎসক ড: জন ম্যাকডগাল মনে করেন
স্ট্যাটিন হওয়া উচিত শেষ চিকিৎসা, প্রাথমিক চিকিৎসা নয়।
তিনি আরো মনে করেন কেবলমাত্র অসুস্থ ব্যক্তিদেরই
স্ট্যাটিন খাওয়া উচিত। আর বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে
হূদরোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে ভাল পš’া হচ্ছে প্রচুর
পরিমাণ শাক-সবজি, ফলমূল আহার এবং ডিম-মাংস,
স্যাসুরেটেড ফ্যাট আহার না করা।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
Top
আইন কনিকা
আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে মৃত্যুদন্ড
যৌতুকের জন্য কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে দোষী
ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়ার বিধান রাখা
হয়েছে ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৭’-এর খসড়ায়। মহিলা ও
শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এ খসড়াটি অনুমোদনের
জন্য আজকের মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচ্যসূচিতে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত করা চলতি বছরের
জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতিও রয়েছে মন্ত্রিসভার আলোচ্যসূচিতে।
এতে গত বছরের তুলনায় জনপ্রতি সাড়ে ১৪ হাজার থেকে
সর্বোচ্চ সাড়ে ২১ হাজার টাকা খরচ বাড়ানোর প্রস্তাব করা
হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত
বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংক্রান্ত ২০১৬ সালের ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর)
প্রতিবেদন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান
ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং শেখ হাসিনা
বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া উপস্থাপন করা হতে পারে বৈঠকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
যৌতুক নিরোধ আইন প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশুবিষয়ক
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ১৯৮০
সালের যৌতুক নিরোধ আইনে যৌতুক দাবি ও লেনদেনের শাস্তি
নির্দিষ্ট করা থাকলেও যৌতুক চেয়ে নির্যাতনের শাস্তির
বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। প্রস্তাবিত আইনে বিষয়টি স্পষ্ট
করা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো নারীর স্বামী,
স্বামীর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে
অন্য কোনো ব্যক্তি যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে
আত্মহত্যায় প্ররোচিত করলে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন
কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ছাড়া যৌতুকের জন্য মৃত্যু
ঘটানোর চেষ্টা করলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, মারাত্মক
জখমের জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড বা অন্যূন ১২ বছর
সশ্রম কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুকের
জন্য অঙ্গহানির শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন সশ্রম
কারাদন্ড বা কমপক্ষে ১২ বছর সশ্রম কারাদন্ডের প্রস্তাব
করা হয়েছে খসড়ায়। তবে স্ত্রীর জখমের ধরন অনুযায়ী
স্বামীকে অর্থদন্ডসহ আমৃত্যু ভরণপোষণ দেয়ারও বিধান রাখা
হয়েছে।
এ ছাড়া সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী, যৌতুকের জন্য কোনো নারীকে
সাধারণ জখম করলে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং সর্বনিম্ন এক
বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করা হবে।
খসড়ায় ‘যৌতুক’ বলতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত
যে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর বা মূল্যবান জামানতকে বোঝানো
হয়েছে। কোনো ব্যক্তি কনে বা বর পক্ষের কাছে যৌতুক দাবি
বা যৌতুক নিলে বা দিলে অধরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।
কেউ যৌতুক দাবি বা লেনদেন করলে সর্বনিু এক বছর ও
সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল বা ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা
জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি যৌতুক
নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ বা মামলা করলে তিনি ছয় মাসের
কারদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত
হবেন বলেও খসড়ায় বলা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনেও যৌতুকের জন্য কোনো নারীর মৃত্যু ঘটানোর দায়ে কোনো
ব্যক্তি মৃত্যুদন্ড বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টার জন্য
যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হবেন। যৌতুক নিরোধ আইনেও
একই ধরনের শাস্তির বিধান যুক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি
বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও অপরাধকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত
করা হয়েছে খসড়া আইনে। প্রস্তাবিত এই আইন কার্যকরের পর
১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন রহিত হলেও ওই আইনের আলোকে
প্রণীত বিধি ও প্রবিধি উপ-আইন হিসেবে গণ্য হবে বলে
খসড়ায় বলা হয়েছে।
রিমান্ড কি
মানবাধিকার পরিপন্থী?
মানবাধিকার ল’ ডেস্ক
কোনও আসামিকে গ্রেফতার করার পর তথ্য উদঘাটনের জন্য
পুলিশ ওই আসামিকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজ হেফাজতে রাখতে
পারেন। তারপর আইন অনুযায়ী তাকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে
হাজির করতে হয়। ওই সময়ের মধ্যে মামলা সম্পর্কে তথ্য
উদঘাটন সম্ভব না হলে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানিয়ে
আসামিকে রিমান্ডে নেয়া যায়।
এ রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করা না করা এবং করলে কয়দিনের
জন্য তা ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনামূলক ক্ষমতার ওপর
নির্ভর করে। একাধিকবারও পুলিশ আসামিকে রিমান্ডে নিতে
পারেন। তবে সর্বসাকুল্যে একটি ঘটনার জন্য ১৫ দিনের বেশি
রিমান্ডে রাখা যায় না।
আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আগে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবশ্যই
পুলিশ ডায়েরি (সিডি) দেখতে হবে, যাতে আসামির বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ এবং প্রাপ্ত সাক্ষ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া
যায়। এছাড়া রিমান্ডের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে
দায়ের করা হয়েছে কিনা, আসামি শারীরিকভাবে সুস্থ কিনা
এসব বিষয় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট
রিমান্ড মঞ্জুর করলে ওই আদেশ উপরস্থ ম্যাজিস্ট্রেট এবং
এসপিকে (পুলিশ সুপার) জানানোর নির্দেশ দেবেন। রিমান্ড
মঞ্জুর করলে অর্ডার শিটে যথাযথ কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
এছাড়া রিমান্ড মঞ্জুরের সময় আসামিকে হাজির করা হয়েছে
কিনাÑ সে বিষয়টিও ম্যাজিস্ট্রেটকে দেখতে হবে। চীফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রথম
শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং সরকার কর্তৃক
বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত দ্বিতীয় শ্রেণীর জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেটের এ রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষমতা রয়েছে।
বর্তমানে এ রিমান্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহƒত হচ্ছে।
মানুষ পেটানোর হাতিয়ার এই রিমান্ড। মানুষকে রিমান্ডে
নিয়ে পিটিয়ে তথ্য আদায় করা হয়। এর ফলে রিমান্ডকে
মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে দাবি করেন মানবাধিকারকর্মীরা।
Top
|
|