           
 
|
Cover April 2016
English Part
April 2016
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
হয়রানি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া
নাগরিক অধিকার
প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিন

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে
সরকার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেছেন, ইলেকট্রনিক
পাসপোর্টসহ নিরাপদ ভ্রমণ ডকুমেন্ট চালুর মাধ্যমে দেশের
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট পদ্ধতি সম্পূর্ণ আধুনিক করে তুলতে
সরকার কাজ করছে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডিপার্টমেন্ট
অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ
২০১৬ এবং বিভাগীয় ও আঞ্চলিক ১০টি পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের
নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন
প্রধানমন্ত্রী।
‘পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার: নিঃস্বার্থ সেবাই অধিকার’ এই
স্লোগান নিয়ে ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ
পালিত হয়। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে
পাসপোর্ট সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অব্যাহত চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি জেলায় একটি করে পাসপোর্ট অফিস থাকবে
এমন অঙ্গীকার করে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, নতুন
উদ্বোধন করা পাসপোর্ট অফিস জনগণের দোরগোড়ায় উন্নত সেবা
পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে। নতুন এই পাসপোর্ট অফিসগুলো হলো- ঢাকা
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট
অফিসগুলো হলো কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,
পটুয়াখালি, ফেনী, মুন্সীগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিনাজপুর।
পাসপোর্টকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ
করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট হলো একটি স্বাধীন
রাষ্ট্রের প্রতীক। এটি জাতির মর্যাদা বহন করে। হয়রানি ছাড়া
পাসপোর্ট পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। এ ক্ষেত্রে
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিস নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। জনগণের
উন্নত সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা শীর্ষক পাসপোর্ট সেবা পক্ষের
স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে
দায়িত্ব পালনের জন্য সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি
আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
পাসপোর্ট খাতকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে সরকার গত
সাত বছরের সাফল্যের বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,
ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট চালু হওয়ার পরে পাসপোর্ট ইস্যুতে
প্রতারণার অবসান ঘটবে। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তন ঘটছে।
এই অধিদপ্তরকে ডিজিটাল ডিপার্টমেন্ট হিসেবেই আমরা গড়ে তুলতে
চাই। বিশ্বের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে, এটা
আমাদের মাথায় রাখতে হবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট খাতের
উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ
করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিআইপি এ পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ
মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এবং ৩ লাখ ২৬ হাজার মেশিন রিডেবল
ভিসা দিয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। অনেকে এই
পদক্ষেপের সম্ভাব্যতা নিয়ে সন্ধিহান ছিলেন। কিন্তু ডিআইপি
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ পরিকল্পনা
বাস্তবায়িত হয়েছে। এমআরপি নিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা
করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন যে আমরা সব করে ফেললাম এটা নিয়ে
আবার খুব বেশি লেখালেখি করতে দেখি না। যখন একটু খুঁত পায়
তখন খুব বড় করে লেখে। কিন্তু যখন সংশোধন বা কাজ করে ফেলি
তখন লেখায় একটু কার্পণ্য থাকে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অনেক মিডিয়া বিষয়টি নিয়ে
অনেক হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু এ প্রকল্পে
ব্যাপক সংখ্যক পাসপোর্ট দেয়ার পরও মিডিয়া এই নিয়ে কোনো
ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বর্তমান সরকারের সময়ে
মিডিয়ার অগ্রগতির বিষয়টি উল্লেখ করে মিডিয়া সরকারের
সমালোচনার পাশাপাশি সাফল্যের প্রতিবেদনও প্রকাশ করবে বলে
আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
মানবাধিকার
রিপোর্ট এপ্রিল ২০১৬
এপ্রিল’২০১৬
মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ২২৮ জন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপে
এপ্রিল ২০১৬ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়
২২৮টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এপ্রিল মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৭.০৬
জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট
দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক
দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল
কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুণ্যের কোঠায়
নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে
প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ
প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসণ
প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই
কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা
সম্ভব। সম্প্রতি শিশু নির্যাতন ও হত্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়
গভীর উদ্ধেগ ও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করতে সরকার
ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম
দিলদার। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন
বিভাগের জরিপে দেখা যায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে
হত্যাকান্ডের শিকার ২২৮ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৯ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ২৬ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৬৩ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ২০ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে
হত্যা ১১ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ০২ জন, চিকিৎসকের
অবহেলায় মৃত্যু ০১ জন, গুপ্ত হত্যা ০৫ জন, রহস্যজনক
মৃত্যু ৮০ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ০২ জন, অপহরণ হত্যা ০৬
জন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় হত্যা ০৩ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ২২৫ জন, আত্মহত্যা ২১ জন। এপ্রিল ২০১৬ সালে
কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলীর মধ্যে ধর্ষণের
শিকার ৩৩ জন, যৌন নির্যাতন ২৭ জন এবং যৌতুক নির্যাতন ৯
জন।
বগুড়া আঞ্চলিক
মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গত ১৭ই এপ্রিল ২০১৬ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন “বগুড়া
আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৬” বগুড়া জেলা স্কুল
মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন বগুড়া ৫ আসনের সংসদ সদস্য
বীরমুক্তিযোদ্ধঅ মোঃ হাবিবুর রহমান। সম্মেলন উদ্বোধন
করেন কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মানবতাবাদী ড.
সাইফুল ইসলাম দিলদার। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের
বগুড়া আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজকুমার আগারওয়ালা। বিশেষ
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এডভোকেট
হোসনেয়ারা লুৎফা ডালিয়া, টাঙ্গাইল আঞ্চলিক সমন্বয়কারী
বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর মিজানুর রহমান, টাঙ্গাইল জেলা
শাখার নির্বাহী সভাপতি নাসরিন জাহান খান বিউটি।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বগুড় জেলা শাখার সভাপতি
ও বিশেষ প্রতিনিধি নুরুন্নবী বুলু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ
জিয়া হাসান, নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট মোঃ
জাকারিয়া হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান রতন,
জয়পুরহাট জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল খালেদ ফকির, সাধারণ
সম্পাদক নির্মল কুমার মন্ডল প্রমুখ। সম্মেলনে কমিশনের
বগুড়া অঞ্চলের সকল উপজেলা, থানা ও পৌরসভা শাখার
মানবাধিকার নেতৃবৃন্দগণ যোগ দেন।
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মানবাধিকার
সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ‘টাঙ্গাইল আঞ্চলিক
মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৬: টাঙ্গাইলস্থ এলেঙ্গা
রিসোর্টস-এ অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব
মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার। সম্মেলনে
সভাপতিত্ব করেন কমিশনের টাঙ্গাইল আঞ্চলিক সমন্বয়কারী
বীরমুক্তিযোদ্ধা মীর মিজানুর রহমান। সম্মেলনে বক্তব্য
রাখেন টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি মানবতাবাদী এড.
আব্দুস সাত্তার উকিল, নির্বাহী সভাপতি মানবতাবাদী
নাসরিন জাহান খান বিউটি, সাধারণ সম্পাদক মানবতাবাদী
তাজউদ্দিন আহমেদ রিপন, জামালপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি
মানবতাবাদী এডভোকেট মোজাম্মেল হক প্রমুখ। সম্মেলনে
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের টাঙ্গাইল ও জামালপুর
জেলার সকল উপজেলা, থানা শাখার নির্বাহী কমিটির সদস্যগণ
যোগ দেন।
ব্রিটেন পুলিশে বিড়াল
নিয়োগ!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অপরাধের বিরুদ্ধে
লড়তে পুলিশ বাহিনীতে বিড়াল নিয়োগ দিতে যাচ্ছে ব্রিটেন।
পুলিশের কাছে ৫ বছর বয়সী এক মেয়ে চিঠি লেখার পর এমন
সিদ্ধান্তের চিন্তাভাবনা করছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী
বাহিনীতে নানা ধরনের পোষা প্রাণী ব্যবহারের কথা শোনা
যায়। তাই বলে কোনো বাহিনীতে সরাসরি বিড়াল নিয়োগ! হ্যাঁ,
অদ্ভুত এ ব্যাপারটি ঘটতে যাচ্ছে ব্রিটেনে।
এলিজা অ্যাডামসন-হোপার নামের ওই মেয়ে ব্রিটেনের ডুরহাম
শহরের পুলিশ প্রধান মাইক বার্টনকে একটি চিটিতে লিখে-
বিপদে পড়া লোকজনের শব্দ শুনতে এবং গাছ থেকে লোকজনকে
উদ্ধারের কাজে বিড়াল অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। চিঠির
সঙ্গে নিজ হাতে আঁকা একটি বিড়ালের ছবিও পাঠায় মেয়েটি।
পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে এলিজাকে পাঠানো চিঠিতে বলা
হয়, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকতার কাছে চিঠিটি পাঠানো
হবে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়, কিছু কিছু
ক্ষেত্রে বিড়াল ব্যবহারের বিষয়টি তারা বিবেচনা করবে।
এলিজা চিঠিতে লিখে, বিড়ালের ভালো কান থাকায় তারা সহজেই
বিপদের শব্দ শুনতে পায়। এটি পুলিশকে সহায়তা করতে পারে।
পথ খুঁজে পেতেও বিড়াল ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। পুলিশকে
তারা পথ দেখাতে পারে। গাছে উঠতে, শিকার করতে এবং আটকে
পড়া মানুষ উদ্ধার করতে বিড়াল উত্তম সহায়তাকারী হতে পারে।
এ বিষয়ে পুলিশের পরিদর্শক রিকি অ্যালেন বলেন, ‘আমরাই
প্রথম পুলিশ বাহিনীতে বিড়াল নিয়োগ দেয়ার চিন্তা-ভাবনা
করছি।’ যদি কোনো কাজে না লাগে তাহলে ফোর্সের মাসকট
হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এর আগে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়তে
পুলিশ বাহিনীতে কুকুর নিয়োগ দেয় ব্রিটেন।
জাপানে আসছে ‘গায়েবি ট্রেন’
মানবাধিকার রিপোর্ট’
গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যে ট্রেনটির অপেক্ষায় স্টেশনে
দাঁড়িয়ে আছেন, সেই ট্রেনটি আসছে কিন্তু দেখতে পাচ্ছেন
না। এমন অদ্ভুত ট্রেনে উঠতে আপনাকে পাড়ি জমাতে হবে
সুদূর জাপান।
ঘণ্টায় ২০০ মাইল বেগে চলা বুলেট ট্রেনেও সন্তুষ্ট হয়নি
জাপান। তাই এমনই একটি গায়েবি অদৃশ্য দ্রুতগামী ট্রেন
তৈরি করছে জাপানের সেইবু গ্রুপ।
সেইবু গ্রুপের শতবার্ষিকী উপলক্ষে রেড অ্যারো কমিউটার
ট্রেনের একটি নতুন সংস্করণের নকশা করার দায়িত্ব দেয়া
হয়েছে জাপানি স্থপতি কাজুইয়ো সেজিমাকে। স্থাপত্য ও
নকশাবিষয়ক সাময়িকী ডিজিন জানিয়েছে, ট্রেনের অভ্যন্তরসহ
পুরো ট্রেনের নকশার দায়িত্ব এই নারী স্থপতিকে দেয়া
হয়েছে।
সেইবু গ্রুপ বলেছে, সেজিমা এই প্রথমবারের মতো এ ধরনের
ট্রেনের নকশা করতে যাচ্ছেন। ধাতবের বদলে আধা স্বচ্ছ
কাচ দিয়ে তৈরি করা হবে ট্রেনের বগিগুলো, যার
প্রতিবিম্বে ট্রেনটি প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে পারবে।
এই ট্রেনটির অভ্যন্তরে যাত্রীসেবার সব ধরনের ব্যবস্থা
থাকবে। বসার কক্ষ, খাবার-দাবার থেকে শুরু করে নানা
বিনোদনমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
মৃত ব্যক্তির
টাকা নমিনি নয়, পাবে উত্তরাধিকারী
মানবাধিকার রিপোর্ট’
ব্যাংক হিসাবধারী কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর ব্যাংকে
রক্ষিত টাকা এখন থেকে নমিনির পরিবর্তে হিসাবধারীর
উত্তরাধিকারী পাবে- মর্মে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (০৩ এপ্রিল) বিচারপতি নাঈমা হায়দারের
নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এসময় আদালতে এ বিষয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের পক্ষে
শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এমআই ফারুকী। সঙ্গে ছিলেন
অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার।
আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, এ রায়ের ফলে সঞ্চয়ের টাকা
নমিনি উত্তোলন করতেও পারবেন, তবে টাকার মালিক হবেন
উত্তরাধিকারী।
হাইকোর্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র
কেনা এক ব্যক্তি মারা যান। এরপর তার ছেলে সঞ্চেরপত্রের
টাকার অংশীদার হতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাকসেশন
সার্টিফিকেট আনতে যান। কিন্তু ছেলে নমিনি না হওয়ায় তাকে
সাকসেশনপত্র দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ হিসেবে
উল্লেখ করা হয়, ওই ব্যক্তির নমিনি ছিলেন অন্য (উত্তরাধিকারী
নয়) ব্যক্তি।
দেশের বঞ্চিত
নির্যাতিত জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনের
কর্মীরা
মানবাধিকার রিপোর্ট’
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব ড.
সাইফুল ইসলাম দিলদার বলেছেন, ১৯৮৬ সালের প্রতিষ্ঠার পর
থেকে দেশের আনাচে-কানাচে বঞ্চিত মানুষের অধিকার রক্ষার
কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। অর্থের
অভাবে যে সকল মানুষ সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয় তাদের
সুবিচারের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলায় লিগ্যাল এইড গঠন
করে মানবাধিকার তথায় নির্যাতিত মানুষকে আইনী সহায়তা
দিতে হবে। গত ২৬ এপ্রিল ২০১৬ বিকালে নারায়ণগঞ্জ
শাহনেওয়াজ কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন
নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা আয়োজিত মত বিনিময় সভায় প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা
শাখার সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান মাসুমের সভাপতিত্বে
বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক
মোঃ ফজলুল হক ভূইয়া মন্টু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার
সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির আহমেদ খান, এড. খোরশেদ আলম
মোল্লা (আড়াই হাজার), এড. শাহ আলী মোঃ পিন্টু খান (বন্দর),
জাহানারা আক্তার (সোনারগাঁ), আনোয়ার হোসেন (রূপগঞ্জ),
বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম মাস্টার (রূপগঞ্জ), এড.
মনির হোসেন (সিদ্ধিরগঞ্জ), রুহুল আমিন প্রধান (ফতুল্লা),
আব্দুল আজিজ প্রামাণিক, শেখ আলী আহমেদ, মোঃ হাবিবুর
রহমান, মোঃ আনোয়ার হোসেন, ড. কারমুন নেছা, এড. মনির
হোসেন, প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে এড. মাহবুবুর রহমান
মাসুম বলেন, বিভিন্ন স্তর থেকে মানবতাবাদী মানুষকে খুজে
বের করতে হবে। ভূমি দস্যু, সন্ত্রাসীদের প্রত্যাখ্যান
করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানবাধিকার
সমুন্নত রাখার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। দুঃস্থ, গরীব
মানুষ যাতে আইনগত সহায়তা পায় তার জন্য জেলা কমিশনের
পক্ষ থেকে আইন সহায়তা সেল গঠন করা হবে। স্পষ্ট করে বলতে
চাই যেখানে অন্যায়, অত্যাচার এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত হবে
সেখানে কমিশন ঝাপিয়ে পড়েেব। সমন্বয় সভায় নারায়ণগঞ্জ
জেলা এবং মহানগর শাখার মানবাধিকার কর্মকর্তাগণ যোগ দেন।
অটিস্টিকদের
সুরক্ষায় মডেল হতে পারে বাংলাদেশ
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের অটিজমবিষয়ক পরামর্শক কমিটির চেয়ারপারসন ও
মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক ডাব্লিউএইচও এক্সপার্ট
অ্যাডভাইজরি প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন,
বিশ্বব্যাপী অটিজম ও অন্যান্য নিউরো ডেভেলপমেন্ট
ডিজঅর্ডারগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা ও তাদের
জীবনমানে দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই ও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে
সৃষ্টিশীল, সুলভ ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ
লক্ষ্যে বাংলাদেশ সাত বছর ধরে একটি বহুমুখী ও
বহুপক্ষীয় মডেল বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের এই অনন্য
মডেল অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ
করেন। গত শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘে ‘অটিজম মোকাবিলা :
এসডিজির আলোকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কৌশল’ শীর্ষক এক
উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি
এ কথা বলেন।
অটিজম সচেতনতা দিবস ২০১৬ উদ্যাপন উপলক্ষে জাতিসংঘের
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, কাতার,
দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র এবং অটিজম
স্পিকস যৌথভাবে এ ইভেন্টের আয়োজন করে।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন ও
কাতারের স্থায়ী প্রতিনিধি আলিয়া আল-থানির সঞ্চালনায় এ
উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের
পতœী বান সুন-টেক, অটিজম স্পিকসের সুজানা রাইটস এবং
ভারত, কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী
প্রতিনিধি ও ইকোসকের প্রতিনিধি বক্তৃতা করেন।
প্রত্যেক বক্তাই দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে
বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের
অধিকার রক্ষায় অনন্য সাফল্য অর্জন করায় সায়মা ওয়াজেদ
হোসেনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আকাশচুম্বী
অট্টালিকা নির্মাণে নিজেদের রেকর্ড ভাঙ্গতে যাচ্ছে
দুবাই
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন দুবাইয়ের বুর্জ আল
খলিফা। ২০১০ সালে এটি উদ্বোধন করে দুবাই। তবে এবার
বুর্জ খলিফার চেয়েও উঁচু আকাশচুম্বী আরো একটি অট্টালিকা
নির্মাণ করতে যাচ্ছে তারা। ?দুবাইয়ের ভবন নির্মাতা
প্রতিষ্ঠান ইমার এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাব্বার জানান,
প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে এটি। তবে
এর উ”চতা কত হবে- তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। ২০২০
সালের আগেই এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে বলেও জানান
আলাব্বার। ভবনটির নকশা তৈরি করেছে স্পেনীয় বংশোদ্ভূত
সুইস স্থপতি শান্তিয়াগো কালাত্রাভা ভলস। নকশাটিকে
‘অসাধারণ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আলাব্বার। এটা দেখতেও
অসাধারণ লাগবে বলেও মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের উ”চতম অট্টালিকা বুর্জ
খলিফার উ”চতা ৮২৮ মিটার বা ২৭০০ ফিট। এটা ‘দুবাই
টাওয়ার’ নামেও পরিচিত। বুর্জ খলিফা নির্মাণ কাজ শুরু
হয় ২০০৪ সালে। শেষ হয় ২০০৯ সালে। এটি তৈরিতে প্রায় দেড়
বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর বাইরে অবস্থিত
ফোয়ারা নির্মাণেই ব্যয় হয়েছে ১৩৩ মিলিয়ন ব্রিটিশ
পাউন্ড। এই ভবনে এক হাজার ৪৪টি এপার্টমেন্ট আছে এবং
১৫৮ তলায় আছে একটি মসজিদ।
সঞ্চয়পত্র নিয়ে হাইকোটের রায়
নমিনি নয়, মৃত ব্যক্তির টাকা পাবে উত্তরাধিকারী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সঞ্চয়পত্রের অ্যাকাউন্টধারী মারা গেলে ওই সঞ্চয়ের টাকা
নমিনির (মনোনীত ব্যক্তির) পরিবর্তে ব্যক্তির
উত্তরাধিকারী পাবেন বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক
সিভিল রিভিশনের শুনানি করে রোববার বিচারপতি নাঈমা
হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত
বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এম আই
ফারুকী, সাদেকুর রহমান ও নাজনীন নাহার।
আইনজীবী নাজনীন নাহার যুগান্তরকে বলেন, আমাদের বিচার্য
বিষয় ছিল টাকাটা নমিনি পাবেন নাকি উত্তরাধিকারীরা
পাবেন। এ বিষয়ে হাইকোর্টের রায় হচ্ছে নমিনি হবেন একজন
ট্রাস্টি। উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী নমিনি টাকাটা
উত্তোলন করে উত্তরাধিকারীদের মাঝে বণ্টন করে দেবেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মক্কেল মঞ্জুরুল হক চৌধুরী ও
তার দুই বোনের বাবার ৩০ লাখ টাকার একটি সঞ্চয় ছিল
বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওই সঞ্চয়পত্রে নমিনি ছিলেন তাদের
দ্বিতীয় মা। ক্লায়েন্টের বাবা মারা যাওয়ার পর
সঞ্চয়পত্রের টাকার অংশীদার হতে সাকসেশন সার্টিফিকেট
নেয়ার জন্য ঢাকার আদালতে একটি সিভিল মামলা করেন।
বিচারিক আদালত মামলা খারিজ করে দিলে হাইকোর্টে সিভিল
রিভিশন দায়ের করা হয়। রোববার হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে
সিভিল রিভিশন মঞ্জুর করে ওই রায় দেন।
‘রানা
প্লাজায় আহতদের সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র’

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা
ব্লুম বার্নিকাট জানিয়েছেন, রানা প্লাজা ধসে আহত
শ্রমিকদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা
করা হবে।
২৩ এপ্রিল ২০১৬ ব্র্যাকের আয়োজনে রাজধানীর গুলশানে
স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে ‘ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবনের
পথে’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
বার্নিকাট বলেন, শ্রমিকদের অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা
বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে সলিডারিটি সেন্টারকে ১০ লাখ ডলার
দেওয়া হয়েছে। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রমিকেরা
অগ্নিনিরাপত্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
পাশাপাশি বাংলাদেশের পোশাক কারখানার অগ্নি ও ভবন
নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে ১৫ লাখ
ডলার দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে শ্রমিকদের পেশাগত ও
স্বাস্থ্যগত সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়ে
যাচ্ছে।
জিকা ভাইরাস: ঝুঁকিতে ২২০ কোটি মানুষ!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের ২২০ কোটি মানুষ জিকা ভাইরাস ঝুঁকি রয়েছে বলে
জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী ই-লাইফ শো। ঝুঁকিতে
থাকা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানচিত্রে নির্দিষ্ট করা
হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, এডিস এজিপটি মশার মাধ্যমে
ছড়ায় জিকার ভাইরাসের জীবাণু। যা এ বছর বিশ্ব
স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে হুমকির বিষয় ছিল। গত সপ্তাহে
ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন
নিশ্চিত করেছে যে এই ভাইরাসের মাধ্যমে ত্রুটি নিয়ে
জন্মায় শিশু।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কোন কোন জায়গায় মশা
বাস করতে পারে এটা খুঁজে বের করার চাইতে জিকা আক্রান্ত
হওয়ার স্থানগুলো চিহ্নিত করা অনেক কঠিন। গবেষকদের একজন
ড. অলিভার ব্র্যাডি বিবিসিকে জানান, প্রথমবারের মতো
তাঁরা এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মানচিত্র তৈরি
করেছেন।
কোন ধরনের স্থানে জিকা ভাইরাস বিস্তার লাভ করতে পারে
এবং কোন এলাকার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
গবেষণার মাধ্যমে তাই দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা
বলছেন, দক্ষিণ আমেরিকা এই মুহূর্তে জিকা আক্রান্ত
হওয়ার সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার তালিকার শীর্ষে রয়েছে। সব
মিলিয়ে ২২০ কোটি মানুষ আছেন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়। আমাজন
নদী এবং আশপাশের এলাকাও রয়েছে ঝুঁকিতে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসে আসছে
গরমের মৌসুমে তাপমাত্রা বাড়ার সময়ও জিকা ছড়িয়ে পড়ার
আশঙ্কা করা হচ্ছে। জিকা ভাইরাসের কারণে হাজারো শিশু
জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাবে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ড.
ব্র্যাডি আরো বলেন, জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য
মশার কেবল একটি মাত্র শর্ত পূরণ প্রয়োজন। আর এটা হলো,
মশার শরীরে পর্যাপ্ত উষ্ণতা পাওয়া। এরপর মানবদেহ
ব্যবহার করে এটি সহজেই সংক্রমিত হয়। আফ্রিকা এবং এশিয়া
অঞ্চলও জিকার সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
অভিযান
জরিমানাতেও থামছে না ভেজাল
সাঈদুর রহমান রিমন্টঃ
বাজার, দোকান, সুপারশপ— কোথাও ভেজালমুক্ত খাদ্যপণ্য
মিলছে না। মাছেও ফরমালিন, দুধেও ফরমালিন। ফল-ফলাদিতে
দেওয়া হচ্ছে কার্বাইডসহ নানা বিষাক্ত কেমিক্যাল।
শাকসবজিতে রাসায়নিক কীটনাশক, জিলাপি-চানাচুরে মবিল।
ব্রেড, বিস্কুট, সেমাই, নুডলসসহ সব রকম মিষ্টিতে
টেক্সটাইল-লেদারের রং, মুড়িতে ইউরিয়া-হাইড্রোজেনের
অবাধ ব্যবহার চলছে। শিশুখাদ্য দুধও ভেজালমুক্ত রাখা
যাচ্ছে না। অতিরিক্ত রেডিয়েশনযুক্ত গুঁড়াদুধ আমদানি
হচ্ছে দেদার, ছানার পরিত্যক্ত পানির সঙ্গে ভাতের মাড়,
এরারুট আর কেমিক্যাল মিশিয়ে প্রস্তুতকৃত সাদা তরল
পদার্থকে ‘গাভীর দুধ’ বলে সরবরাহ করা হচ্ছে। নোংরা পানি
ব্যবহারের মাধ্যমে আইসক্রিম বানানো হচ্ছে
ময়লা-আবর্জনার স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে।
খাদ্যপণ্যে ভেজাল মেশানোটা রীতিমতো অঘোষিত নিয়মে পরিণত
হয়েছে। চাল, আটা, লবণ, চিনি, ভোজ্যতেল, আলু থেকে শুরু
করে রুটি, কেক, মিষ্টি, বিস্কুট কিছুই ভেজালের ছোবল
থেকে বাদ যাচ্ছে না। জীবনধারণের জন্য সবচেয়ে জরুরি
‘পানি’ পর্যন্ত নিরাপদ থাকছে না। যত্রতত্র নকল কারখানা
বানিয়ে পুকুর-ডোবা এবং ওয়াসার পানি সরাসরি গামছায় ছেঁকে
বোতলজাত করা হচ্ছে। সে পানিতে থাকছে আর্সেনিক,
ক্যাডমিয়াম-লেড-ইকোলাই, অথচ এগুলোই ‘বিশুদ্ধ মিনারেল
পানি’ হিসেবে নামিদামি কোম্পানির সিলমোহরে সরবরাহ হচ্ছে।
কলা, আম, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস থেকে শুরু করে আপেল,
আঙ্গুর, নাশপাতিসহ দেশি-বিদেশি প্রায় সব ফলেই মেশানো
হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল। অপরিপক্ব ফল পাকাতে
ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও তা উজ্জ্বল বর্ণে রূপান্তরের
জন্য অধিক ক্ষারজাতীয় টেক্সটাইল রং ব্যবহার হচ্ছে অবাধে।
আবারও সংশোধন
হচ্ছে অর্পিত সম্পত্তি আইন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রতি জেলায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে * আবেদনের সুযোগ
বাড়ছে আরও ৬ মাস
অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের জন্য আবেদনের সময়সীমা
আবারও বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি জেলায় একটি
অতিরিক্ত আপিল ট্রাইব্যুনাল ও একটি বিশেষ আপিল
ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হচ্ছে। যেসব রায় বা আদেশের
বিরুদ্ধে সময়মতো আপিল করা হয়নি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে
সেগুলোও আপিলের সুযোগ পাবেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া ‘খ’
তফসিলভুক্ত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকের নামে রেকর্ড করে
দেয়ার ক্ষেত্রে জারি করা পরিপত্র সংশোধিত আইনে
অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। উল্লিখিত বিষয়সহ ‘অর্পিত
সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ চূড়ান্ত করেছে
ভূমি মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের
জন্য উপস্থাপন করা হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা
গেছে এসব তথ্য।
জানতে চাইলে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী
শনিবার যুগান্তরকে বলেন, আইনটি এর আগেও একাধিকবার
সংশোধন করা হয়েছে। এবার স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে
আলাপ-আলোচনা করে আইনের সংশোধনীর খসড়া প্রস্তুত করা
হয়েছে। প্রতি জেলায় অতিরিক্ত আপিল ট্রাইব্যুনাল ও
বিশেষ আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্পত্তি ফেরত পেতে যারা আগে আবেদন করতে পারেননি তারা
আবারও আবেদনের সুযোগ পাবেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত পরিপত্র
সংশোধিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনটি প্রণয়ন করা
হয় ২০০১ সালে। এর আগে আইনটি পাঁচবার সংশোধন করা হয়েছে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দু’বার এবং শেখ
হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় তিনবার সংশোধন করা
হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ষষ্ঠবারের মতো সংশোধনের
জন্য পাঠানো হলে মন্ত্রিসভা তা ফেরত পাঠায়। এই আইনের
আওতায় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু হয়
২০১০ সাল থেকে। এই প্রক্রিয়ায় সারা দেশে এখন পর্যন্ত
প্রায় দুই লাখ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার
মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কিন্তু একজন দাবিদারের কাছেও
এখন পর্যন্ত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ করা হয়নি বলে দাবি
ভুক্তভোগীদের।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত
শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ
আইন’ একাধিকবার সংশোধন হলেও তা বাস্তবায়নে তৃণমূলে নানা
সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়গুলো নজরে আনা হলে আবারও
সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে
যেভাবে আলোচনা হয়েছে, সেভাবে সংশোধন হলে বিদ্যমান
সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
অনুমোদন ছাড়াই জলাতঙ্কের টিকা!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
এবার সরকারের উদ্যোগে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন বা
টিকা সংগ্রহ নিয়ে উদ্বিগ্ন জনস্বাস্থ্যবিদরা। বিশেষ করে
সংগ্রহ-প্রক্রিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন বা
যাচাই সনদ থাকার অপরিহার্য শর্ত উপেক্ষা করায়
যেনতেনভাবে নিম্নমানের ভ্যাকসিন সরবরাহের সুযোগ করে
দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে বিস্ময়
তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে কেউ কেউ ভ্যাকসিন
সংগ্রহ-প্রক্রিয়ায় কারসাজির বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি
দিয়ে তদন্ত করারও তাগিদ দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক সূত্রে জানা যায়, এবার হঠাৎ
করেই সরকার এ প্রতিষেধক সংগ্রহে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার অনুমোদনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। গত ৩০ মার্চ
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিএমএসডি থেকে প্রচার করা এ-সংক্রান্ত
একটি বিজ্ঞপ্তি সবার নজরে আসার পর জলাতঙ্ক চিকিৎসা
অঙ্গনে শুরু হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। ওই বিজ্ঞপ্তিতে
মানুষের শরীরে চামড়ার নিচে প্রয়োগ উপযোগী এক লাখ ৩০
হাজার ভায়াল অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি)
সরবরাহের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়। এ ক্ষেত্রে
উল্লিখিত শর্তের মধ্যে কোথাও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
প্রি-কোয়ালিফিকেশন সনদপ্রাপ্ত ভ্যাকসিনের শর্ত দেওয়া
হয়নি। এমনকি বিশেষায়িত ভ্যাকসিন উৎপাদন বা সরবরাহকারী
প্রতিষ্ঠানের বিষয়টিও উপেক্ষা করে যেকোনো ওষুধ
প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
ফলে এবার এই ভ্যাকসিনের মান নিয়ে শুরুতেই দেখা দিয়েছে
সংশয়।
ভয়ংকর চেয়ারম্যান
সাঈদুর রহমান রিমন
যশোরের চৌগাছা
উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল
ইসলাম শাহিন ও তাঁর বাহিনীর অত্যাচারে ৩০টি হিন্দু
পরিবারের ১৫০ জন সদস্য দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে বলে
দাবি করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য
পরিষদ। সরেজমিনে এর সত্যতা পাওয়ার দাবি করেছেন পরিষদের
নেতারা। গতকাল শুক্রবার যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ
সম্মেলন করে তাঁরা এ কথা বলেন।
এদিকে পাশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনকে যশোরে অবাঞ্ছিত
ঘোষণার পাশাপাশি তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা
পুরস্কার ঘোষণা করেছেন পুলিশ সুপার। অন্যদিকে কোনো দল
শাহিনকে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী করলে
নির্বাচন বর্জন করার হুমকি দিয়েছে হিন্দু ভোটাররা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালে শাহিন পাশাপোল ইউপি
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরই হিন্দুদের ওপর
অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়।
চাঁদাবাজি ও হিন্দুদের জমি দখলের জন্য একটি বাহিনী গড়ে
তোলেন তিনি। জোর করে হিন্দুদের জমি লিখে নেন। অনেককে
রাতের আঁধারে ভিটাছাড়া করেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ,
তিনি হিন্দু পরিবারের মেয়েদের তুলে নিয়ে আটকে রেখে
ধর্ষণের ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে জমি লিখে নিতেন।
Top
তরুণদের দেশ বাংলাদেশি
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রতিবেদনে
বাংলাদেশকে যে তরুণদের দেশ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে,
সেটি একটি বড় সুযোগ। এখন জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশেরই বয়স ২৪
বছরের কম। যেকোনো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য
কর্মক্ষম জনশক্তিই সবচেয়ে বেশি ও কার্যকর অবদান রাখতে
পারে। বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা (১৫ থেকে ৬৪ বছর
বয়সী) ১০ কোটি ৫৬ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ।
২০৩০ সালে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ১২ কোটি ৯৮ লাখে, যা মোট
জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ।
এই যে তরুণদের বাংলাদেশ, তার সুযোগটি আমরা কীভাবে কাজে
লাগাতে পারি? তরুণদের কাজে লাগানোর উপায় হলো প্রথমত
তাঁদের উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ ও
প্রশিক্ষিত জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। দ্বিতীয়ত তাঁদের
মেধা ও শিক্ষার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার। ইউরোপ, আমেরিকা
এবং চীন ও জাপানসহ যেসব দেশ দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি
করেছে, তারা তাদের জনশক্তির সদ্ব্যবহার করেছে দেশের
ভেতরে ও বাইরে। এমনকি আমাদের প্রতিবেশী ভারত ও
শ্রীলঙ্কাও এ ক্ষেত্রে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। কিন্তু
শিক্ষার হার বাড়লেও আমরা দেশের বর্ধিত চাহিদা অনুযায়ী
দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তুলতে পারিনি। বিদেশে
কর্মরত জনশক্তিরও বেশির ভাগ অদক্ষ।
আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা যুগের চাহিদা মেটাতে
পারছে না বলেই বিশ্বে শিক্ষিত বেকারের তালিকায়
বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে।
Top
আইন
লঙ্ঘনের প্রবণতা
জননিরাপত্তার প্রশ্নে আপস নয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট সচেতন ও সজাগ হওয়া
সত্ত্বেও বাংলাদেশে জননিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার
অবকাশ রয়ে গেছে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আইনের
কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগ করতে গেলেই প্রথম বাধা
আসে প্রভাবশালীদের পক্ষ থেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের প্রবণতা বাংলাদেশের
জন্য নতুন কিছু নয়।
এখন পর্যন্ত যারা আবেদন করতে পারেননি, তাদের নতুন করে
আবেদন করার সময় দেয়া হয়েছে সংশোধনীতে। খসড়ায় বলা হয়েছে,
সম্পত্তি প্রত্যর্পণের জন্য আবেদন করার নির্ধারিত
সময়সীমা পার হলেও এই সংশোধনী কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে
অনধিক ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা যাবে।
প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য প্রতি জেলায়
একটি আপিল ট্রাইব্যুনালের স্থলে একটি অতিরিক্ত আপিল
ট্রাইব্যুনাল ও একটি বিশেষ আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের
প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত আপিল
ট্রাইব্যুনালে বিদ্যমান আপিল ট্রাইব্যুনালের মতোই আপিল
দায়ের করা যাবে। আর বিশেষ আপিল ট্রাইব্যুনালে সেসব
আপিল দায়ের করা যাবে যে আপিলগুলো দায়ের করার সময়সীমা
এর মধ্যে পার হয়েছে। অর্থাৎ যেসব রায় বা আদেশের
বিরুদ্ধে সময়মতো আপিল করা হয়নি, এই সংশোধনী কার্যকর
হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে
সেগুলোর জন্যও আপিল করা যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা
জানান, ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকের নামে
রেকর্ড করে দেয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ে সমস্যা হল,
এ ধরনের সম্পত্তির রেকর্ডপত্র অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত
মালিকের নামে নেই। এই সমস্যা নিরসনে সরকার ‘খ’ তফসিল
বাতিল করার পর একটি পরিপত্র জারি করেছিল। তাতে রেকর্ড
যার নামেই থাকুক না কেন, কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে
সেই সম্পত্তি প্রকৃত মালিকের নামে রেকর্ড করে দেয়ার
ক্ষমতা ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বলতে গেলে কোনো
ক্ষেত্রেই তারা তা করেননি। তাই এখন আইন সংশোধনের
মাধ্যমে পরিপত্রের বিষয়টি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
নিপীড়িত শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, 'শ্রমজীবী
মানুষের রক্তঝরা ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়।
শ্রমিকের ঐতিহাসিক অবদানের ফলেই বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা
হয়। অথচ আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে
নিপীড়িত শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।'
৩০ এপ্রিল ২০১৬ মহান মে দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে এসব কথা
বলেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, ''মহান মে দিবস উপলক্ষে আমি দেশে
বিদেশে কর্মরত সব বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মচারী এবং
বিশ্বের সব শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে আন্তরিক
শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমি তাদের উত্তরোত্তর সুখ,
শান্তি, সমৃদ্ধি ও সাফল্য কামনা করি। ১৮৮৬ সালের মে
মাসে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমেরিকার
শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটে’ জীবনদানকারী এবং এই
আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে আত্মদানকারী প্রতিবাদী
শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ।''
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান ও শ্রমের মর্যাদা
সম্পর্কে সব সময় আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছে। শ্রমজীবী
মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় আমরা আমাদের
প্রতিশ্র“তি পালনে কখেনোই পিছপা হইনি। শহীদ রাষ্ট্রপতি
জিয়াউর রহমান নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয়
দিতে গর্ব ও স্বেচ্ছন্দবোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে
তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি ভাবতেন। এদেশের শ্রমজীবী ও
পরিশ্রমী মানুষের কল্যাণে তিনি যুগোপযোগী পদক্ষেপ
গ্রহণ করেছিলেন।'
নিরাপত্তা বলয় ভেঙেই
অর্থ লোপাট : সুইফট
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সুইফটের প্লাটফরম ব্যবহার করে নিরাপত্তা বলয় ভেঙেই
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি করেছে হ্যাকাররা।
আর সুইফট সিস্টেমের দুর্বলতার কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছে।
এতে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সুইফট সবচেয়ে নিরাপদ
হিসাবে যেভাবে বিবেচিত হচ্ছিল, সে ধারণার চিড় ধরলো। আর
অর্থ লেনদেন কাঠামোর দুর্বলতাও প্রকাশিত হলো।
গতকাল সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক
ফাইন্যান্সিয়াল টেলি কমিউনিকেশনের (সুইফট) মুখপাত্র
নাতাশা দেতেরান সুইফট সিস্টেমের দুর্বলতার কথা স্বীকার
করেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের ক্লায়েন্ট সফটওয়্যারকে
টার্গেট করে ম্যালওয়্যার বসানো হয়েছিল। গতকাল বার্তা
সংস্থা রয়টার্সকে একথা বলেছেন তিনি। দেতেরান অবশ্য দাবি
করেন, ওই ম্যালওয়্যারের কারণে সুইফট নেটওয়ার্ক বা মূল
মেসেজিং সিস্টেমের নিরাপত্তার কোনো ক্ষতি হয়নি।
অবশ্য সুইফট কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই দাবি করে আসছিল,
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই ঘটনায় তাদের মূল বার্তা বিনিময়
ব্যবস্থার কোনো ক্ষতি হয়নি। সম্ভবত ওই হ্যাকাররা
বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে কয়েকসপ্তাহ
ধরে লেনদেন পর্যবেক্ষণ করেছিল। কখন কিভাবে অর্থ হাতিয়ে
নেবে তার পরিকল্পনা করেছিল তারা।
আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ক্ষেত্রে সুইফটের
প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই হ্যাকাররা সাইবার নিরাপত্তা
ভেঙেছিল বলে মনে করছে বিএই সিস্টেমস নামের একটি
ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান। আর তাদের গবেষণায় পাওয়া তথ্যের
ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জিজ্ঞাসা করলে সুইফটের
ওই মুখপাত্র স্বীকার করেন সুইফট সিস্টেমের দুর্বলতার
কারণেই হ্যাক করা সম্ভব হয়েছে।
Top
মানব পাচার থামছে
না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মানব পাচার বন্ধে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সাফল্য অর্জিত না
হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি
দিয়েই চলছে মানব পাচার। নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষগুলোও
তা বন্ধে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। মানব পাচারের ঘটনা
দুনিয়ার যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে
অন্যতম। একের পর এক ট্র্যাজেডির জন্ম দেওয়া সত্ত্বেও
তাতে লাগাম পরানো যাচ্ছে না জনসচেতনতার অভাবে। দেশের
প্রতিটি এলাকায় ছড়িয়ে আছে মানব পাচারকারীদের এজেন্ট।
বিদেশে চাকরি নামের সোনার হরিণ ধরার স্বপ্ন দেখায় তারা।
এদের মন ভোলানো কথায় সাড়া দিয়ে সহায়-সম্বল হারিয়ে
নিঃস্ব হয়েছে বহু মানুষ। চাকরির বদলে বিদেশে অনেকের
জন্য জুটছে অনিশ্চিত জীবন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের
জিম্মি করে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের মুক্তিপণ।
অবর্ণনীয় নির্যাতন সয়ে ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ দেশে ফিরতে
পারলেও অনেকের ঘটছে নির্মম মৃত্যু। প্রবাসীকল্যাণ ও
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাহাড়সম অভিযোগ দাখিলের
পরিপ্রেক্ষিতে মাঝেমধ্যে কিছু অভিযানের মধ্যেই
সীমাবদ্ধ থাকছে ভুক্তভোগীদের স্বার্থ রক্ষা। ইউরোপ,
আমেরিকা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর কিংবা লিবিয়া, সুদান,
লেবানন, ইরাক, সিরিয়ার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে
আকর্ষণীয় বেতন ও নানা সুযোগ-সুবিধার লোভ দেখিয়ে দেশের
বিভিন্ন এলাকার সহজ-সরল মানুষকে পাচার করা হচ্ছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে জনশক্তি
রপ্তানিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পাচারকারী চক্রের
তত্পরতায় তা বাদ সাধতে পারছে না। দালালদের চটকদার কথার
ফাঁদে পড়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাতে গিয়ে অসংখ্য
মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক
সংস্থার তথ্যানুযায়ী ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে
সাগরপথে পাচার হয়েছে দেড় লাখ মানুষ। পাচারকৃতদের মধ্যে
আছে নারীরাও। গৃহকর্মীর কাজ দেওয়ার নামে মধ্যপ্রাচ্যের
বিভিন্ন দেশে তাদের যৌনকাজে বাধ্য করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা
মৌসুমি ফলে বিষ!
‘মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা’
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
চট্টগ্রামের জনপ্রিয় একটি আঞ্চলিক গান। হালে তরমুজ
কেনার ক্ষেত্রে এই গানটি বেশ মিলে যায়। দোকানির কাছ
থেকে বেশ ঢাউশ সাইজের তরমুজ কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন
ক্রেতা। কিন্তু বাসায় ফিরে তরমুজ কেটে মুখে দিতেই
মাথায় বাড়ি। মুখে দিতেই বোঝা গেল রসালো এই ফলটি বিষে
ভরা।
শুধু তরমুজ নয় মৌসুমি প্রায় সব ফলই এখন বিষে ভরা।
বাজারে এখন কেমিক্যাল মিশ্রিত ফলই বেশি। অসাধু
ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে কৃত্রিম
উপায়ে ফল পাকাচ্ছে। কাজটি এমন কৌশলে করা হয় যাতে
ক্রেতারা বুঝতে না পারে।
রাসায়নিক মেশানোর পর একদিনের মধ্যে ফল পেকে যায়।
কোনোটার রঙ হয় গাঢ় হলুদ, কোনোটা আবার টকটকে লাল।
বিক্রির জন্য তাকে তাকে সাজিয়ে রাখা হয় দোকানে। জিভে
জল আসার মত এই ফল দেখেই আকৃষ্ট হন ক্রেতারা। ফল ভেবে
বিষ কিনে নিয়ে যান প্রিয়জনের জন্য।
আম, কলা, পেঁপে, তরমুজসহ বেশিরভাগ ফলেই কেমিক্যাল
মেশানো হচ্ছে। সাধারণত উত্পাদন প্রক্রিয়ার শুরু হতে
ভোক্তার হাতে পৌঁছানো অবধি নানা পর্যায়ে জেনে না জেনে
পোকা দমন, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ফল পাকানো এবং সংরক্ষণের
জন্য প্রাণঘাতী রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়।
"হে সভ্যতা"
আহাম্মেদুল বারী
বাবুল
হে সভ্যতা, তোমার নেই কি কোন দায়বদ্ধতা ?
তুমি ভেঙে গুড়িয়ে দাও আমার ইতিহাস কৃষ্টিগাথা।
তুমি সমাজের অবক্ষয়
সব ভেঙে তুমি কর লয়।
তুমি মারণাস্ত্রের তুমি ধ্বংসের
ইতিহাস রচয়িতা।
তুমি যুদ্ধ তুমি আতংক, তুমি ধ্বংসের হিরোশিমা নাগাসিকা
তুমিই শান্তির কবর রচয়িতা
তুমি কেড়ে নেয়া আমার গ্রামবাংলার
কোকিলের তান,
তুমি কেড়ে নেয়া আমার মাঝির বৈঠা হাতের ভাটিয়ালির গান।
যেথায় জুড়ায় আমার প্রাণ
যে মাটির সাথে রয়েছে আমার হৃদয়ের টান।
হে আধুনিকতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার লাঙ্গল জোয়াল,
কাস্তে হাতে রাখালের মাঠের পানে গরুর পাল।
তুমি কেড়ে নেয়া আমার ভালবাসার
আলতাপায়ে নাকে নোলক পল্লীবালার
কলসি কাখে সখিগো সাথে নদীর ঘাটে হেলে দুলে নেচে চলা।
হে সভ্যতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার গায়ের মেঠো পথের
ঘাসের ভাজে ভাজে আপন মনে চলতে থাকা, আর
অবাক চোখে থমকে গিয়ে তাকিয়ে থেকে ভাবুক মনের কাব্য হয়ে
কাব্য আকা।
বাবলার ডালে বাবুই আর চড়াই পাখির বিবাদ যেন সাঝের কালে
নিত্য চলে কিচিরমিচির।
হে সভ্যতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার গ্রাম বাংলার টিপ টিপ
বাতি
হেলে দুলে জলে এ যেন চিরায়ত গ্রাম বাংলার আধারের সাথী।
হে সভ্যতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার মাছের খাল বিল নদী নালা
যেখানে ছিল মাছ ধরাজেলের ব্য স্ততা সারাবেলা।
হে সভ্যতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার আনন্দ
গাথা নবান্নের পিঠার উৎসবের মুখরতা।
আর কৃষাণীর পান খেয়ে ঠোট লাল করা আজ যেন
পালানের ধান ভাগা ভাগির চলছে মহড়া।
হে সভ্যতা, তুমি কেড়ে নেয়া আমার অঝোর কবিতা
অবিনাসি গান আর পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের নকশী কাথা,
ভাটিয়ালী গান একবার যেতে দেনা আমার ছোট্ট সোনার গা।
ট্রেড ইউনিয়ন করার
অধিকার পাচ্ছেন ইপিজেড শ্রমিকরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দিাবি-দাওয়া আদায়ে মালিকদের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য
শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার রেখে ‘বাংলাদেশ
ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৬’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন
দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে দর কষাকষির অধিকার এবং
স্থায়ী
মজুরি বোর্ড পেতে যাচ্ছেন রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার
শ্রমিকরা। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আইনটি
অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ
শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আইন- ২০১৩ ইপিজেডে (রপ্তানি
প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) প্রযোজ্য নয়। এ কারণে শ্রম আইনের
সঙ্গে সামঞ্জস্যতা বিধান করে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এর
আগে ২০১৪ সালের ৭ই জুলাই ইপিজেড শ্রম আইনের খসড়ায়
নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। তাতে বলা হয়েছিল,
সমিতি করতে চাইলে কোনো প্রতিষ্ঠানের ৩০ ভাগ শ্রমিককে
ইপিজেড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীদের
মধ্যে ভোটের ব্যবস্থা করা হবে এবং তাদের মধ্যে ৫০ ভাগ
সমিতি করার পক্ষে ভোট দিলে সমিতি অনুমোদন পাবে। খসড়া
আইনে কল্যাণ সমিতি গঠনের বিষয়ে বলা হয়েছে, সমিতি গঠন
করতে ইপিজেডে শিল্প-কারখানার ৩০ শতাংশ শ্রমিককে ইপিজেড
কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হবে। এরপর এদের মধ্যে
ভোট হবে। আবেদনকারী শ্রমিকদের ৫০ শতাংশ সমিতি করার
জন্য ভোট দিলে সমিতি গঠনের অনুমোদন দেয়া হবে। সমিতিতে
ইপিজেড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে।
বিচারপতি
অপসারণ আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদনে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয়
সংসদের হাতে রাখার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
বিচারক (তদন্ত) আইন, ২০১৬’ আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন
দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ
অনুমোদন দেওয়া হয়।
গত ২৫ এপ্রিল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ খসড়া নীতিগতভাবে
অনুমোদন হলেও প্রক্রিয়া অনুযায়ী খসড়াটি চূড়ান্ত করবে
আইন মন্ত্রণালয়। এরপর মন্ত্রিসভা কমিটিতে তা উপস্থাপন
করা হবে। মন্ত্রিসভা কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে তা
জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সংসদ আলোচনার পর চাইলে
তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠাতে পারে।
আবার সংসদ চাইলে আলোচনা শেষে অনুমোদনও করতে পারে।
গত ২৫ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব
মোহাম্মদ শফিউল আলম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অপসারণের বিস্তারিত
প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, একজন বিচারপতির
বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগে করবেন, তাঁকে এফিডেভিটের মাধ্যমে
পূর্ণ পরিচয় প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা
দিতে হবে। জাতীয় সংসদের স্পিকার এ অভিযোগ প্রয়োজন মনে
করলে আমলে নেবেন। এরপর তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য ১০ জন
সংসদ সদস্যকে নিয়ে একটি কমিটি করে দেবেন। এ কমিটি সাত
দিনের মধ্যে স্পিকারের কাছে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে স্পিকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নিতে প্রতিবেদনটি জাতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে
উপস্থাপন করবেন। জাতীয় সংসদের রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে এ
বিষয়ে আলোচনা হবে।
জীবন রক্ষাকারী
ওষুধে ভেজাল!
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
২০টি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করল বিশেষজ্ঞ
কমিটি * ভেজাল ও নিুমানের ওষুধ তৈরির জন্য চিহ্নিত
২৯টি কোম্পানির বিরুদ্ধে দু’বছরেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি
নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরও ২৭টি
কী ভয়াবহ চিত্র, জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভেজাল! ভাবা
যায়? কিন্তু এটিই বাস্তব। ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ
তৈরির অভিযোগে ২৯টি কোম্পানি চিহ্নিত হয়েছে। তাও আবার
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষজ্ঞ
ব্যক্তিদের দিয়ে। অথচ দুর্ভাগ্য। প্রায় দু’বছর আগে এমন
প্রতিবেদন দেয়ার পরও কোম্পানিগুলোর উৎপাদন ও বিপণন
বন্ধ হয়নি। চলছে বহাল তবিয়তে। এই যখন অবস্থা তখন
দু’বছর পর অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ওষুধ
কোম্পানির সংখ্যা কমে যাওয়ার পরিবর্তে নতুন করে যুক্ত
হয়েছে আরও ২৭টি। এ অবস্থায় সম্প্রতি জমা দেয়া বিশেষজ্ঞ
কমিটির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে এই তালিকায় থাকা ২০টি
ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের জন্য
বলা হয়েছে। কিন্তু আদৌ এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে কিনা
তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় থেকেই যাচ্ছে। যুগান্তরকে এমন
সংশয় আর উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন সমাজ সচেতন সুশীল
সমাজের অনেকেই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেউ
কেউ ক্যান্সারের মতো মরণঘাতী ওষুধেও ভেজাল দিচ্ছে।
এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা না মেনে
তৈরি করা হচ্ছে নিুমানের এন্টিবায়োটিক। স্বাস্থ্য ও
পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে এ
সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে এমন
ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি দেশের
৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে
এই প্রতিবেদন তৈরি করে। তারা ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী
প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা ছাড়াও ১৪টি
কোম্পানির সব ধরনের এন্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন,
পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি
বাতিল এবং ২২টি কোম্পানির পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন
গ্রুপের এন্টিবায়েটিক উৎপাদনের অনুমতি বাতিল করার
সুপারিশও করেছে। দ্রুত এই সুপারিশ বাস্তবায়িত না হলে
এবং অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা
গ্রহণ করা না হলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে ভয়াবহ বিপর্যয়
নেমে আসবে বলেও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে তদন্ত কমিটির
প্রতিবেদনে। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য ও
পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী
কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম যুগান্তরকে বলেন,
বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে তারা কমিটির
বৈঠকে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্যেই ভেজাল
এবং নিুমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে
যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এখনও ঝুঁকির মুখে লাখ লাখ গার্মেন্ট
কর্মী
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
তিন বছর আগে এই সপ্তাহে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি তার
ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহতম দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। ২০১৩
সালের ২৪শে এপ্রিল বাংলাদেশে রানা প্লাজা ভবন ধসে ১১
শতাধিক শ্রমিক নিহত হন। রানা প্লাজা বিপর্যয়ের ব্যাপকতা
স্তব্ধ করে দেয় পুরো বিশ্বকে। পোশাক শিল্পকে এ বিষয়ে
পদক্ষেপ নিতে তৎপর করে তোলে ওই ঘটনা। ধ্বংসস্তূপের
মধ্য থেকে টেনে বের করা মরদেহগুলোর হৃদয়বিদারক ছবিগুলো
মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। ওই ট্র্যাজেডির পর
অ্যাডিডাস, গ্যাপ, এইচঅ্যান্ডএম, টার্গেট ও
ওয়ালমার্টসহ ২ শতাধিক ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান দু’টি
উদ্যোগের মাধ্যমে দ্রুত ১০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি
দেয়। পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি, মানদ কার্যকর করা এবং
নিরাপত্তা উন্নয়নের খরচের লক্ষ্যে ওই প্রতিশ্রুতি দেয়
প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর ওই
প্রতিশ্রুতির আওতায় পড়ে বাংলাদেশের মাত্র এক তৃতীয়াংশ
কারখানা। এর আওতায় শুধু যেসব কারখানা থেকে ক্লোদিং
ব্র্যান্ডগুলো সরাসরি পণ্য উৎপাদন করে সেগুলো রয়েছে।
বাইরে থেকে যায় ৫০০০ সাব-কন্ট্রাক্টিং কারখানা ও ৩০
লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ)
এক গবেষণা দলের রিপোর্টে উঠে এসেছে পদক্ষেপের আওতায়
নেই ওই কারাখানা ও শ্রমিকের কঠোর পর্যবেক্ষণ বা
নিরাপত্তা উন্নয়ন।
গবেষণা প্রতিবেদনটির শীর্ষ গবেষক সারাহ ল্যাবোউইটজ
বলছেন, ওইসব কারখানার নিরাপত্তা উন্নয়ন আর
পর্যবেক্ষণের জন্য কে অর্থ ব্যয় করবে তা নিয়ে
অচলাবস্থায় অনেক শ্রমিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গবেষণা
প্রতিবেদনটির শিরোনাম- ‘বিয়োন্ড দ্য টিপ অব দ্য
আইসবার্গ: বাংলাদেশ’স ফরগটেন অ্যাপারেল ওয়ার্কার্স’।
প্রতিদিন কর্মস্থলে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি নেয়া
ওই শ্রমিকদের বড় একটি অংশ নারী। ইন্টারন্যাশনাল লেবার
অর্গানাইজেশনের (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের
গার্মেন্ট শ্রমিকদের ৮০ শতাংশই নারী। ওদিকে,
এনওয়াইইউ-এর গবেষক দল বলছে, এ সংখ্যা ৬০ শতাংশের কিছু
কম। ল্যাবোউইটজ বলেন, এ খাতে কর্মরত বেশির ভাগ নারীই
‘দর্জি’ হিসেবে কাজ করেন। পক্ষান্তরে ব্যবস্থাপনায়
প্রধানত পুরুষদের আধিপত্য। আর চীনে যখন মজুরি বেড়েছে,
বাংলাদেশে সে তুলনায় বেতন কমই রয়ে গেছে।
জুলহাজ
হত্যার তদন্তে সহায়তার প্রস্তাব জন কেরির
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঢাকার কলাবাগানে জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব
তনয়কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। সোমবার এক বিবৃতিতে
তিনি জুলহাজ ও তনয়ের হত্যাকা কে ‘কা জ্ঞানহীন সহিংসতা’
হিসেবে বর্ণনা করেছেন। নিহত দু’জনের পরিবারের প্রতি
কেরি সমবেদনা জানিয়েছেন। এই হত্যাকাে র তদন্তে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কথাও ব্যক্ত করেন তিনি।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মী জুলহাজকে একজন
বিশ্বস্ত সহকর্মী, সবার প্রিয় বন্ধু এবং মানবাধিকার ও
মর্যাদার প্রবক্তা হিসেবে অভিহিত করেছেন কেরি। মার্কিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা সহিষ্ণুতা, শান্তি ও
মানুষে মানুষে বৈচিত্র্যকে রক্ষা করে চলেন, জুলহাজ
ছিলেন তাদেরই প্রতীক। হত্যার তদন্ত ও বিচার কাজে
বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন কেরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যারা
সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখায় নিবেদিত, তাদের
প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
পৃথক বিবৃতিতে এই হত্যাকাে র নিন্দা করেছেন
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র নেড
প্রাইস। হত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোরালো আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আরও নিন্দা জানিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের
স্পিকার মেলিসা মার্ক-ভিভেরিতো। এক বিবৃতিতে এই হত্যাকা
কে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
সমকামীদের অধিকারবিষয়ক পত্রিকা ‘রূপবান’র সম্পাদক ও
মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের কর্মী জুলহাজ
মান্নানের হত্যাকা কে দুঃখজনক উল্লেখ করে বাংলাদেশে
সন্ত্রাসবাদের শেকড় চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন
মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটিতে থাকা
ডেমোক্রেট দলের সিনেটর বেন কার্ডিন। এক বিবৃতিতে
কার্ডিন বলেন, ‘ব্যক্তিসত্তার জন্য, কর্মের জন্য, কাউকে
ভালোবাসার জন্য কিংবা পছন্দের সৃষ্টিকর্তার আরাধনা
করার জন্য যদি কারও বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয় তার স্থান
আধুনিক সমাজে নেই, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্টভাবে
এই বার্তা দিতে হবে।’
রূপগঞ্জে
পূর্বাচল মুক্তিযোদ্ধা সোসাইটির কার্যালয় উদ্বোধন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়ন পূর্বাচল ২২নং
সেক্টর, রোড নং-২২২, কালনীস্থ পূর্বাচল মুক্তিযোদ্ধা
সোসাইটির কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে
সংগঠনটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর করিম মাস্টার
এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বীরমুক্তিযোদ্ধার
সন্তান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নিলা। উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তরা দাবি করেন, পূর্বাচলে
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত ১০০০ ফ্ল্যাট
ন্যায্যমূল্যে মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ের সাথে অবস্থিত
কবরস্থানের ৪০ কাঠা জমি মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থানের
জন্য নির্ধারিত করে দেয়ার ও পূর্বাচলের বিভিন্ন
রাস্তাগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণের। সে সময়
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নিলা বলেন,
যাদের প্লট নেই তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।
কবরস্থানের জমিটিও নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। আর রাস্তার
ক্ষেত্রে নিজ বাসস্থানের নিকটস্থ রাস্তাগুলোর নামকরণে
মুক্তিযোদ্ধাদের নামেই করার দায়িত্ব নেন তিন। সে সময়
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় রূপগঞ্জ আসনের সাংসদ গাজী
গোলাম দস্তগীর (বীর প্রতীক) একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি
মুক্তিযোদ্ধাদের মর্ম ও চাওয়া-পাওয়া বুঝেন। তাই তার
সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ও তার সহযোগিতায় দাবিগুলো পূরণের
সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন,
সংগঠনের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মিয়া,
সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসাইন, বীর
মুক্তিযোদ্ধা একেএম তমিজ উদ্দিন রাজ, ইউপি আওয়ামী লীগ
নেতা ডাঃ আব্দুস সামাদ আজাদ, সামাদ খাঁনসহ সংগঠনের সকল
সদ্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিহসহ সকল
মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ শেষে আলোচনাসভা, ভবন
উদ্বোধন ও অনুষ্ঠানের মধ্যমণি, স্থানীয় সাংসদ ও
প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনায় মোনাজাতের মধ্যদিয়ে
আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি ঘটে।
শান্তিচুক্তির ৭২টি ধারার ৪৮টি
বাস্তবায়িত হয়েছে : বীর বাহাদুর
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ঊ
শৈ সিং বলেছেন, পার্বত্য চুক্তি বা শান্তিচুক্তির ৭২টি
ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত
হয়েছে। জাতীয় সংসদে আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের এক
প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শান্তিচুক্তির ১৫টি ধারা আংশিক
বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ৯টি ধারার বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
চুক্তি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং করার জন্য সংসদ উপনেতা
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট
চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে
এ কমিটি চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে কাজ
করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শান্তি চুক্তির অবাস্তবায়িত ধারাসমূহ
বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত
রয়েছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ
নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনের কার্যক্রম চূড়ান্ত
পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শান্তিচুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে এ
যাবত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩০টি, খাগড়াছড়ি
পার্বত্য জেলা পরিষদে ৩০টি এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা
পরিষদে ২৮টি বিষয় ও বিভাগ হস্তান্তরিত হয়েছে। অবশিষ্ট
বিষয়গুলো হস্তান্তরের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক কার্যক্রম
চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয়
কমিটির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ১৯৯৭
সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বা
শান্তিচুক্তি ৪ খন্ডে বিভক্ত। ‘ক’ খন্ডে ৪টি, ‘খ’ খন্ডে
৩৫টি, ‘গ’ খন্ডে ১৪টি এবং ‘ঘ’ খন্ডে ১৯টি মোট ৭২টি ধারা
রয়েছে।
তিন মাসে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ৭৩২টি ঘটনা’
মনবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ
পর্যায়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে
বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালের প্রথম তিন
মাসেই প্রায় তিনগুণ সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
গত তিন মাসে ৭৩২টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে
নিহত, আহত, অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত, গণধর্ষণ,
জমিজমা, ঘরবাড়ি, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা,
ভাঙচুর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও উচ্ছেদের ঘটনা রয়েছে। গত
২২ এপ্রিল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে
আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা
দাশগুপ্ত এ তথ্য তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,
২০১৫ সালের বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মানবাধিকার পরিস্থিতি
সম্পর্কিত যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিলাম তাতে ২৬১টি
আলাদা ঘটনা সারা দেশে সংঘটিত হয়েছিল।
ভিক্ষুক বানানোর এক নিষ্ঠুর কারখানা
মনবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানীর মা ায় পানির পাম্প এলাকার দুদু মিয়ার গলি ধরে
পূর্ব দিকে ৩০ গজের মতো এগোলেই হাতের ডানে-বাঁয়ে
বস্তির মতো ছয়-সাতটি ঘর। তবে ঘরগুলো সেমিপাকা। সাত্তার
মিয়ার বাড়ি বললে সবাই চেনে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা।
ঘরগুলোর একটি থেকে কাঠের হুইলচেয়ারে বসে বের হয়ে এলেন
এক যুবক। চেয়ারটি পেছন থেকে ঠেলছে এক কিশোর। যুবকের
বয়স ২৮-৩০ বছর। কিশোরের ১২ থেকে ১৪। দুজনই প্রতিবন্ধী
এবং ভিক্ষুক। যুবকের দুই পা সরু লাঠির মতো। কিশোরটি
কুঁজো।
কিশোরকে একটু দূরে ডেকে নিয়ে নাম-পরিচয় জানতে চাইলে সে
জানায়, তার নাম আলতাফ, বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়।
যুবক তার আপন বড় ভাই, নাম মোক্তার। তাদের বাবা প্রয়াত
আলী হোসেন। অভাবের সংসারে ভাইকে নিয়ে সে ভিক্ষা করে।
এরপর কিশোরকে দূরে রেখে যুবকের কাছে তাঁর নাম-ঠিকানা
জানতে চাইলে তিনি প্রথমে ঘাবড়ে যান।
পরে জানান, তাঁর নাম মোক্তার হোসেন। কিশোরটি তাঁর ছোট
ভাই, নাম আলতাফ। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি
এলাকায়। তাঁদের বাবার নাম সোলায়মান। তিনি আগে রিকশা
চালাতেন, এখন অসুস্থ হয়ে বাড়িতেই থাকেন। মোক্তার আর
আলতাফ মিলে ঢাকা থেকে টাকা পাঠায়। তাতে মা-বাবার সংসার
কোনোমতে চলে।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত দুজনই স্বীকার করে তারা
ভাই নয়, আত্মীয়ও নয়। দিনভর ভিক্ষা করে যা আয় হয়, রাতে
ঘরে ফিরে তা দুজন সমান ভাগ করে নেয়। তা দিয়েই চলে খাওয়া,
ঘরভাড়া, পোশাক ও নিত্যদিনের হাতখরচ এবং সরদারের
‘সপ্তাহ’।
জানা গেল, সাত্তার মিয়ার সাতটি সেমিপাকা ঘর ছাড়াও এই
এলাকায় ৮০টির মতো ঘরে ভাড়াটে হিসেবে বসবাস করে হাজারের
ওপরে ভিক্ষুক। ঘরগুলো বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি থেকে শুরু
করে তিনতলা পাকা ভবন পর্যন্ত। ভিক্ষুকদের প্রায় সবাই
পঙ্গু। যারা পঙ্গু না, তারাও বয়স আর অসুস্থতার কারণে
স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। আর রয়েছে শিশু। তাদের কারো কারো
অবস্থা এতটাই করুণ যে, হঠাৎ করে দেখে বোঝার উপায় নেই
সে জীবিত না মৃত।
এই ভিক্ষুকদের নিয়ে কয়েক দিন ধরে সরেজমিন অনুসন্ধান
চালিয়ে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর অজানা তথ্য।
ভিক্ষুকদের একেকটি ঘর থেকে বের হয়ে আসা তথ্যচিত্রগুলো
এমনই যে, কখনো শ্বাসরুদ্ধকর, কখনো বিস্ময়ে চোখ কপালে
ওঠে, আবার কখনো চোখ ভিজে আসে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা,
আসাদুজ্জামান তপন ও মাসুদ রানা নামের দুই ফ্রিল্যান্স
সাংবাদিক এবং পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে সরেজমিন
অনুসন্ধানের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদনটি।
‘ক্রসফায়ার’ থেকে বাঁচানোর
নামে ১০ লাখ টাকা আদায়
প্রতারক চক্রের হোতা সরকারি কর্মচারী আটক
মনবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে প্রায়ই সর্বস্ব খোয়াচ্ছে সাধারণ
মানুষ। অনেক ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজর এড়িয়ে
তাদের পরিচয় দিয়েই চলছে অভিনব প্রতারণা। মাস তিনেক আগে
নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন তপুকে
‘ক্রসফায়ার’ থেকে বাঁচানোর নাম করে এক কোটি টাকা হাতিয়ে
নেওয়ার পাঁয়তারা করে একটি প্রতারকচক্র। নিজেদের ডিবি
পুলিশ পরিচয় দিয়ে এরই মধ্যে চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে ১০
লাখ টাকা। একপর্যায়ে সন্দেহ দেখা দেওয়ায় তপুর পরিবার
গোয়েন্দা পুলিশকে অবহিত করে বিষয়টি। গোয়েন্দা পুলিশ
তদন্ত করে নিশ্চিত হয়েছে, তপুর পরিবার প্রতারকদের
খপ্পরে পড়েছে। প্রতারকচক্রের হোতা একটি সরকারি দপ্তরের
কর্মচারী। ওই কর্মচারীকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে
পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা
শাখার (ডিবি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকী
গত রবিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকায় নানা ধরনের
প্রতারকচক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা নিরপরাধ লোকজনকে
টার্গেট করে প্রতারণা করে। নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতা তপুর
পরিবারকে ব্ল্যাকমেইল করে সম্প্রতি মোটা অঙ্কের টাকা
হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। এক কোটি টাকা আদায় করার
টার্গেট ছিল তাদের। এ ঘটনায় একটি সরকারি অফিসের এক
কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নিয়ন্ত্রণে আরো
সদস্য সক্রিয় আছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। ধৃত কর্মচারী
জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।’
সন্ত্রাস দমনে
সহযোগিতা বাড়াতে ফের ঢাকা আসবেন নিশা দেশাই
মনবাধিকার রিপোর্টঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল সন্ত্রাস দমনে
সহযোগিতা আরো বাড়াতে আবারও ঢাকায় আসবেন। ২৮ এপ্রিল রাতে
টেলিফোন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এমনটাই
জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
জন কেরির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ১৬ মিনিট কথা হয়। এ সময়
জন কেরি সম্প্রতি কলাবাগানে হত্যাকা-ের বিষয়ে উদ্বেগ
প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে জুলহাজ মান্নানের হত্যাকারীদের
খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিচারের বিষয়ে তাকে
আশ্বস্ত করেন।
এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে কাউন্টার
টেরোরিজম বিষয়ে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক
রয়েছে। এই সহযোগিতার আওতায় ইতোপূর্বে এফবি আই বাংলাদেশে
এসেছে। আমি আশা করি কাউন্টার টেরোরিজম বিষয়ক সহযোগিতার
ক্ষেত্র অব্যাহত থাকবে। কোনো তথ্য পেলে তা শেয়ার করা
হবে।’
বাংলাদেশ থেকে গমের মহামারি ছড়ানোর
শঙ্কা
মনবাধিকার রিপোর্টঃ
গত মার্চে দেশের ছয়টি জেলায় গমখেতে যে ‘ব্লাস্ট’ রোগ
ছড়িয়ে পড়েছিল, তার জীবাণু ব্রাজিল থেকে এসে থাকতে পারে।
আর বাংলাদেশ থেকে এটি ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়ার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিজ্ঞানবিষয়ক
প্রভাবশালী সাময়িকী নেচার-এর চলতি সংখ্যার প্রধান
প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ
এশিয়ার যেসব দেশ ব্রাজিল থেকে গম আমদানি করেছে, তাদের
সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ব্লাস্ট রোগ গমের ফলন
ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়। তবে মানবশরীরে এটার কোনো
স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। ব্লাস্ট রোগের জন্য দায়ী ছত্রাকের
জিনগত বৈশিষ্ট্য শনাক্তকারী গবেষণা দলের অন্যতম দলনেতা
ও যুক্তরাজ্যের সেইন্সবোরি ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী
সোফিয়ান কেমাউন লন্ডন থেকে টেলিফোনে বলেন, ‘আমরা
বাংলাদেশের আক্রান্ত হওয়া গমের ছত্রাকের জিনগত
বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করে ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
ওই তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ্বের বেশ কয়েকটি গবেষণা সংস্থা
এর সঙ্গে ব্রাজিলের ছত্রাকের মিল পেয়েছে।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
দেশের ৫৭ ভাগ শিশু
শ্রমিক মারধরের শিকার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের ৫৭ ভাগ শিশু শ্রমিক মারধরের
শিকার হয়। আর প্রায় ৪৬ ভাগ শিশু শ্রমিকের সঙ্গে
তাচ্ছিল্যকর ভাষা ব্যবহার করা হয়। যেসব শিশু গৃহকর্মী
হিসেবে কাজ করছে, তাদের মধ্যে ৬৬ ভাগ মানসিক নির্যাতন
এবং ৭ ভাগ হয় ধর্ষণের শিকার।
আজ রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে দ্য নিলসেন
কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড পরিচালিত ‘অসংগঠিত খাতে
শিশুশ্রমের অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র
উঠে আসে।
ঢাকা (উত্তর-দক্ষিণ), চট্টগ্রাম ও খুলনা সিটি
করপোরেশনের বিভিন্ন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত ৬০০
শিশু শ্রমিক নিয়ে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দেয় বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা
সমিতি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গবেষণাটি যেসব শিশুর ওপর পরিচালনা করা হয়, তাদের ৫২
ভাগের বয়স ছিল ১৫-১৮ বছর; ৪৪ ভাগের ছিল ১০-১৪ বছর এবং
৪ শতাংশ শিশু শ্রমিকের বয়স ছিল ৫-৯ বছর। গবেষণায় দেখা
যায়, ৭৯ ভাগ শিশু শ্রমিক প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হওয়ার
আগেই ঝরে পড়ে। বিভিন্ন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত এসব
শিশু শ্রমিক দৈনিক ১০ ঘণ্টার ওপরে কাজ করে মাসে আয় করে
মাত্র ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা। ৮০ ভাগ
শিশুর কর্মক্ষেত্রে কোনো ওভারটাইমের সুযোগ নেই। ২২ ভাগ
শিশু শ্রমিক বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত আছে।
একই সঙ্গে ৩৫ ভাগ শিশু শ্রমিকের জন্য তাদের
কর্মক্ষেত্রে কোনো ধরনের খাবার কিংবা সুপেয় পানির
ব্যবস্থা থাকে না।
পুলিশ দেখে কাজীর
পলায়ন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজশাহীতে পুলিশের হানায় ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর সঙ্গে
২৩ বছরের তরুণের বিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। এ সময় পুলিশ দেখে
বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে বেঁচেছেন কাজী। একই সময় পালিয়ে
গেছেন মেয়ের বাবা ও বরসহ লোকজনও। ১ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল
সাড়ে ৪টায় নগরীর মাসকাদীঘি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, পুঠিয়া উপজেলার বাঁশপুকুর এলাকার
শরিফুল ইসলামের (২৩) সঙ্গে পারিবারিকভাবে ১৩ বছরের এক
মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়। ১ এপ্রিল ২০১৬ দুপুরে বিয়ে করতে আসে
শরিফুল ইসলাম। বরপক্ষের দুপুরের খাওয়া-দাওয়া হয়ে গেলে
বিকালে বিয়ে পড়াতে বসেন কাজী। এ সময় বাল্যবিয়ের খবর
পেয়ে বিয়ে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। পুলিশ দেখেই মেয়ের
বাবা, বর ও কাজী যে যার মতো পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ
মেয়ের মাসহ এলাকাবাসীকে ডেকে বলেন, মেয়ের বয়স ১৮ বছর
হয়নি। মেয়ের ১৮ বছর হলেই তাদের বিয়ে হবে। নগরীর মতিহার
থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে
সেখানে পুলিশ যায়। পরে মেয়ের অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিয়ে
বন্ধ করা হয়েছে।
ভয়কে জয় করছেন
কামরাঙ্গীরচরের নারীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
তাদের বেশির ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
নির্যাতন চেপে রাখতেন বুকের মধ্যে। কখনও বলতে চাইতেন
না। বদনামের ভয় কাজ করতো তাদের মধ্যে। ভয়কে জয় করে
নিজেরাই এখন স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছেন কামরাঙ্গীরচরের
ক্লিনিক থেকে। বিনামূল্যে সেবা ও কাউন্সেলিং পাচ্ছেন।
গোপন থাকছে তাদের তথ্যাদি। দিন দিন তারা সচেতনও হচ্ছেন।
আর এতেই বাড়ছে সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যাও। ঢাকার
কামরাঙ্গীরচরের বস্তিতেই এই চিত্র দেখা গেছে। এমনই
তথ্য দিয়েছেন সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল বা ডক্টরস
উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ক্লিনিক
চালুর পর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা
করেছে তারা। এতে সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে ভালোই।
নারীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ২০১৩ সালে
কামরাঙ্গীরচরে ক্লিনিক চালু করে এমএসএফ। সংস্থাটি যৌন
নিপীড়ন ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার নারীদের
কাউন্সেলিং ও কমিউনিটি ভিত্তিক সেবা দিচ্ছে ক্লিনিকে।
ভোক্তভোগীরা কামরাঙ্গীরচরের আলীনগর, ঠোডা এবং
ঝাউলাহাটির ক্লিনিকে সেবা নিতে আসছেন প্রতিদিন।
সীমান্ত বিহীন চিকিৎক দল বিনামূল্যে ও গোপনীয়তা বজায়
রেখে নারীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন সেখানে। গুরুত্বর
ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান
স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সহযোগিতা নেন চিকিৎসক দল। যৌন
নির্যাতনের শিকার নারীদের শারীরিক ও মানসিক এই দুই
ধরনের সেবা দিচ্ছে সংস্থাটি। ধর্ষণের শিকার নারী যেমন
মারাত্মক আঘাত পেতে পারেন তেমনি সিফিলিস, গনোরিয়া
ক্ল্যামিডিয়া, হেপাটাইটিস বি বা এইচআইভি’র মতো
যৌনবাহিতা সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।
চিকিৎসক দল আরও বলছে, অবসাদ, অ্যাংজাইটির মতো মানসিক
অসুস্থতাও দেখা দেয় যৌন নির্যাতনের কারণে। নিপীড়নের
শিকার হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই চিকিৎসক ও মানসিক
স্বাস্থ্য টিমের সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেন তারা। তবে,
এ সময়ের পর এলেও সর্বাত্মক সহায়তা দেন তারা।
কামরাঙ্গীরচর ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসক মৌরি তার
অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মানবজমিনকে বলেন, যৌন বা
শারীরিক সহিংসতার শিকার হলেও সহজে মুখ খুলতে চান না কম
বয়সী মেয়েরা। এর বড় কারণ বদনামের ভয়। অনেকেই আবার মনে
করে তাদের আর কোনো বিকল্প নেই। স্বামী নির্যাতন করলেও
তার সঙ্গেই থাকতে হবে। কেউ কেউ আবার এটাকে তাদের নিয়তি
বলেই মনে করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। বেশির ভাগ নারীই
সাহায্য নিতে ভয় পান। কিন্তু এখন বাড়ির পাশেই খুব সহজে
তারা সেবা পাচ্ছেন, সচেতন হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা
নারীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে বলে জানান তিনি।
সংস্থাটির কামরাঙ্গীরচরের প্রকল্পের সমন্বয়কারী এমিলি
গ্যাসিয়ার মানবজমিনকে বলেন, নারীরা যাতে নিজে চিকিৎসা
চাহিদার বিষয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তা নিশ্চিত
করা জরুরি। আর এমন জায়গা থাকাও গুরুত্বপূর্ণ যেখানে
কঠিন সময়গুলোতে তারা মনো-সামাজিক সমর্থন ও গোপনীয়তা
রক্ষা করে চিকিৎসা পেতে পারে।
‘শিশু গৃহ শ্রমিকরা
আধুনিক যুগের দাস’, নীতিমালা প্রয়োগের দাবি
২০১৫ সালে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর বস্তিতে যৌন নির্যাতন বা
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়ে চিকিৎসা নেয়া নারী
ও মেয়ে সংখ্যা অনেক বেড়েছে। নিপীড়নের শিকার হয়ে চিকিৎসা
নিয়েছেন এমন নারীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে প্রায়
দ্বিগুণ। ২০১৪ সালে যৌন নির্যাতন ও জেন্ডারভিত্তিক
সহিংসতার শিকার রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৮৪ জন, ২০১৫ সালে তা
বেড়ে দাঁড়ায় ১১৫৪ জনে। তারা সবাই ধর্ষণ, স্বামী বা
সঙ্গীর মারধর, যৌন নিপীড়ন কিংবা পারিবারিক সহিংসতার
শিকার। গত বছর এমএসএফ ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারী সাত
শতাধিক নারী স্বামী বা সঙ্গীর দ্বারা সহিংসতার শিকার
হয়েছেন। সব বয়সী নারী ও মেয়েরা ক্লিনিকে আসলেও
বেশিরভাগ রোগীর বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
‘আট বছর ধরে অন্যের বাসায় কাজ করেছি। এখন আর কাজ করতে
পারি না। তাই রোজগার নেই। কোন বেলা খাই, কোন বেলা না
খেয়ে থাকি। একটি ছেলে আছে, খারাপ হয়ে গেছে। মাজার হাড়
ক্ষয়ে গেছে। কেউ ওষুধ কিনে দিলে খাই। না দিলে অসুখ নিয়ে
শুয়ে থাকি।’
কথাগুলো গৃহকর্মী জুলেকার। থাকেন জুরাইনে। তিনি
এসেছিলেন গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা বাস্তবায়ন
সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন অনুষ্ঠানে। সোমবার
সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নে এ গবেষণাপত্র উপস্থাপন
করা হয়। এ অনুষ্ঠানে আরো ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক
এসেছিলেন নিজেদের অভাব-অভিযোগের কথা বলতে। সবাই নিজ
নিজ সমস্যা তুলে ধরেন। রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি
মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) আয়োজিত অনুষ্ঠানে
প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য
মো. ইসরাফিল আলম।
তাসনিম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, শ্রমিক
নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বিল্স এর যুগ্ম নির্বাহী
পরিচালক সুলতান আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী ্এ্যাডভোকেট
সালমা আলী, এ্যামপ্লয়ার্স এসোসিয়েশনের শ্রম উপদেষ্টা
সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
ইসরাফিল আলম বলেন, শিশু গৃহ শ্রমিকরা আধুনিক যুগের দাস।
একই স্থানে নিজের সন্তানকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া
হচ্ছে। পাশেই একই বয়সের একটি ছেলে বা মেয়েকে ন্যুনতম
মানবিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
বেড়েই চলছে শিশু হত্যা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বেড়েই চলছে শিশু হত্যা।
তুচ্ছ সব কারণে বলি হতে হচ্ছে শিশুদের। বিশেষ করে
বড়দের স্বার্থের বলি হচ্ছে শিশুরা। গত দুই মাসে
অর্ধশতাধিক শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়েছে। গড়ে প্রায়
প্রতিদিন একটি করে শিশু হত্যাকাে র শিকার হচ্ছে। দিনে
দিনে বাড়ছে খুনের এই পরিসংখ্যান। নিজের মা-বাবার কোলও
শিশুদের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতাই
শিশুদের ওপর নৃশংস আচরণের জন্য দায়ী। সমাজে অস্থিরতা
বিরাজমান থাকলে মানুষের মনে তা প্রভাব পড়ে। সাম্প্রতিক
কয়েকটি শিশু হত্যার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে,
পারিবারিক কলহ, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, ব্যক্তিগত
লোভ-লালসা চরিতার্থ কিংবা স্বার্থ আদায় করার জন্য
টার্গেট করা হচ্ছে শিশুদের। চলছে ধর্ষণ ও অপহরণের
ঘটনাও। সবশেষ রাজধানীর বনশ্রীতে দুই ভাইবোন তাদের
মায়ের হাতে হত্যাকাে র শিকার হওয়ার ঘটনাটি সারা দেশে
আলোড়ন তুলেছে। বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করতে চাইছেন
না, মা তার আদরের দুই সন্তানকে নিজ হাতে হত্যা করতে
পারেন। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মা নিজেই স্বীকার
করছেন হত্যাকাে র ঘটনা। বলছেন, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে
সংশয়ের কারণেই তাদের হত্যা করেছে। মানসিক স্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এক ধরনের মানসিক অসুখ।
মনোবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার’ বলে।
সমাজে অস্থিরতা বিরাজ থাকলে সচ্ছল মানুষের মধ্যেও এ
ধরনের রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর আগে হবিগঞ্জের
বাহুবলে চার শিশুকে একসঙ্গে হত্যার পর বালিচাপা দিয়ে
রাখার ঘটনাও সারা দেশে আলোড়ন তোলে। ওই ঘটনার প্রধান
আসামি বাচ্চু র্যাব’র কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
এছাড়া কেরানীগঞ্জের শিশু আবদুল্লাহ হত্যাকাে র ঘটনাতেও
প্রধান আসামি র্যাব’র সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা
যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধান আসামিরা কথিত
বন্দুকযুদ্ধে মারা গেলেই শিশু হত্যাকা বন্ধ হবে না।
শিশু হত্যাকা সহ সকল অপরাধ দমনের জন্য আইনের শাসনের
শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। সমাজে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে
যে অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো উপায় নেই। তাহলেই কেবল
সমাজ থেকে এ ধরনের অপরাধ দূর করা সম্ভব। খোঁজ নিয়ে জানা
গেছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা
দেশে ৫৪টি শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়েছে। জানুয়ারি মাসে
২৯টি শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়েছে। আর ফেব্রুয়ারি মাসে
এই সংখ্যা ছিল ২৫টি। এই হিসাবে সারা দেশে প্রতিদিনই গড়ে
প্রায় একটি করে কোমলমতি শিশুর প্রাণ ঝরে পড়ছে। তবে
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার এক প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অপরাধীরা নিজেদের স্বার্থ
চরিতার্থ করার জন্য নিষ্পাপ শিশুদের সহজ লক্ষ্যবস্তুতে
পরিণত করছে। এছাড়া সামাজিক ও পারিবারিক অবক্ষয়,
বেকারত্ব, অনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, সংস্কৃতির নেতিবাচক
প্রভাব, অনলাইন প্রযুক্তির কু-প্রভাব, পর্নোগ্রাফির
প্রসার, অনৈতিক জীবনযাপন, মানবপাচার, বিরোধ বা শত্রুতা,
ব্যক্তি স্বার্থপরতা, লোভ, ক্রমাগত সামাজিক ও রাজনৈতিক
অস্থিরতা শিশু হত্যাকাে র কারণ মানবাধিকার সংস্থাগুলি
বলছে, শিশুহত্যার মতো ঘৃণিত অপরাধে জড়িতদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় শিশু হত্যার ঘটনা বেড়ে
যাচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য মতে, গত
বছরে সারা দেশে ২৯২টি শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়েছে আর
২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত গত চার বছরে সারা দেশে এক
হাজার ৮৫টি শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়েছে। এর মধ্যে
২০১২ সালে ২০৯টি শিশু, ২০১৩ সালে ২১৮টি শিশু ও ২০১৪
সালে ৩৬৬টি শিশু হত্যাকাে র শিকার হয়।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন,
‘শিশুরা পরিবারের চোখের মণি এবং এদের সহজেই টার্গেট করা
যায় বলে অপরাধীরা শিশুদের টার্গেট করছে। প্রতিটি শিশু
হত্যার ঘটনাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে
অনুসন্ধান ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের প্রতি নির্মমতা বন্ধ করতে হলে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে
হবে। সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
একার পক্ষে কোনো অপরাধই নির্মূল করা সম্ভব নয়।’
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু হত্যাকা বেড়ে যাওয়ার
অন্যতম কারণ হলো মানুষের মানবিক গুণাবলী ক্রমশ লোপ
পাওয়া। মূল্যবোধের অবক্ষয় ও অসহিষ্ণু মনোভাবের কারণেই
অবুঝ শিশুদের প্রতি নির্মম আচরণ করতে পারে। এক্ষেত্রে
সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা
না হওয়াও অন্যতম কারণ। এছাড়া শিশুরা পরিবারের চোখের মণি
হওয়ার কারণে তাদের টার্গেট করে কিছু আদায় করা বা
প্রতিশোধ নেয়ার কথা বিবেচনা করে দুর্বৃত্তরা। নানারকম
প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের অপহরণ ও হত্যাকা করাও সহজ।
কারণ শিশুরা প্রতিরোধ করতে পারে না। মেয়ে শিশুরা
সাধারণত বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের লালসার শিকার হয়ে
থাকে। ধর্ষণের পর পরিচয় ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় অনেক
ক্ষেত্রে মেয়ে শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মওলানা
ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ও
অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ
আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিশুদের টার্গেট করা হলো সবচেয়ে
অমানবিক কাজ। এটা সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ করতে পারার কথা
নয়। ক্রমবর্ধমান সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এসব
হত্যাকাে র জন্য দায়ী। সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু
হলে এসব ঘটনা বেড়ে যায়। এজন্য রাষ্ট্রকেই এগিয়ে আসতে
হবে। এসব হত্যাকাে র ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে
বিশেষ নজর দিতে হবে। দ্রুত আইনি কার্যক্রম শেষ করে
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবেই শিশু
হত্যাকা বন্ধ করা সম্ভব।
কয়েকটি ঘটনা: গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রামপুরায় আলভী
ও অরণী নামে দুই ভাইবোন তাদের গর্ভধারিণী মায়ের হাতে
নৃশংসভাবে খুন হয়। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
গত ১২ই ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার
সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন
পর ১৭ই ফেব্রুয়ারি বালিচাপা দেয়া অবস্থায় তাদের লাশ
উদ্ধার করে পুলিশ। ২৭শে ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দক্ষিণ
রসূলপুরে সৎ ভাইয়ের হাতে নির্মমভাবে খুন হয় মেহেদি ও
মনি নামে দুই সহোদর। ১৬ই ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জে
পরকীয়ার জেরে এক মা তার দেড় বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যা
করে। ১৪ই ফেব্রুয়ারি পাবনায় দুই শিশুকে বিষ খাইয়ে
হত্যার পর আত্মহত্যা করে এক নারী। ৩রা ফেব্রুয়ারি
বরিশালের গৌরনদীতে কবিতা নামে এক শিশু ও পঞ্চগড়ে
আম্বিয়া নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১লা
ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জে এক শিশুকে হত্যা করে তার মা।
৩১শে জানুয়ারি কেরানীগঞ্জে আবদুল্লাহ নামে এক শিশুকে
অপহরণের পর হত্যা করা হয়। তিনদিন পর তার লাশ উদ্ধার করে
পুলিশ। ৩০শে জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ সদরের মালির পাথর
এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে নীরব (১১) নামের এক
মাদ্?রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার
দুই মাস পর ২৮শে জানুয়ারি মিঠাপুকুরের একটি জমির গর্ত
খুঁড়ে পুলিশ শিশু রাহিমুল ইসলামের (১১) লাশ উদ্ধার করে।
১৯শে জানুয়ারি কক্সবাজারের রামুর বড়বিল গ্রামের একটি
ফলের বাগান থেকে মোহাম্মদ শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ কাজল
(৯) নামের দুই সহোদরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ই
জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জে ফাইভ মার্ডারের ঘটনায় শান্ত (৫)
ও সুমাইয়া (৫) নামের দুই শিশুও ছিল। গত ৫ই জানুয়ারি
একদিনেই দেশে ছয় শিশুকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে
গাজীপুরের টঙ্গীতে চোর সন্দেহে মোজাম্মেল হক নামে এক
শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঢাকায় রানা নামের এক
শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে তার সৎবাবা। আর চট্টগ্রামে
ছুরিকাঘাতে নিহত হয় আজিম হোসেন। সিলেট ও যশোরে অপহরণের
পর সালমান ও লিমাকে হত্যা করা হয়। ৩রা জানুয়ারি
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ইকবাল
হাসেন নামে এক ব্যক্তি নিজের ভাই ও বোনের তিন সন্তান
শিবলু, আমিন ও মাহিনকে পুড়িয়ে হত্যা করে।
শিশু শ্রমিকরা পাবে
আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ, অভিভাবকরা পাবেন ঋণ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
শিশুশ্রম নিরসনে সরকার ‘বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে
নিয়োজিত শিশুশ্রম নিরসন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্রমজীবি শিশুদের আর্থিক সহায়তা
ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যে সকল পরিবার ও
অভিভাবক তাদের সন্তানদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে দিতে বাধ্য
তাদের(পরিবার/অভিভাবক) বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য
ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শ্রম ও
কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী
কমিটির বৈঠক এ তথ্য জানানো হয়েছে। কমিটির সভাপতি
মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির
সদস্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক,
আনোয়ারুল আবেদীন খান, ছবি বিশ্বাস, শিরীন আখতার, মো.
রুহুল আমিন, রেজাউল হক চৌধুরী ও রোকসানা ইয়াসমিন ছুটি
এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এ বি
এম সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়,
‘বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুশ্রম নিরসন’
শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ৯০ হাজার শিশু
শ্রমিককে ১৮ মাসব্যাপী উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও দক্ষতা
উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আরো ৬০ হাজার
শিশু শ্রমিককে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে। আরো বলা
হয়েছে, সরকার ৩৮টি কাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ
হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে সরকারের
গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতিমধ্যে গার্মেন্টস সেক্টরে
শিশুশ্রম নিরসন হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬
অনুযায়ী শ্রম আদালতে ২০১৫ সালে ৪০টি ও চলতি বছর ৬টি
মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৈঠকে সরকারের গৃহীত প্রকল্প
দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরুৎসাহিত করতে অভিভাবক ও
জনপ্রতিনিধিসহ সকল পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে
কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে শিশু ও নারী নির্যাতন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সারাদেশে শিশু ও নারী নির্যাতন বাড়ায় উদ্বিগ্ন সাধারণ
মানুষ। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, পারিবারিক মূল্যবোধ
আর সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে দিন দিন বাড়ছে এ ধরণের
অপরাধ। তবে আইন-শৃঙ্খলা বহিনী বলছে, উৎকন্ঠার কিছু নেই
অপরাধ স্বাভাবিক পর্যায়েই আছে।
গত ফেব্র“য়ারি মাসে লক্ষ্মীপুরের কমল নগরে যৌতুকের
দাবিতে ফাতেমা আক্তার সীমা নামের এক গৃহবধূকে স্বামী
রোকন হোসেন পিটিয়ে হত্যা করে। একই মাসে চর গজারিয়ায়
ধর্ষণের শিকার হয় তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী। পুলিশের
তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালে যৌতুকের দাবিতে এই জেলাতেই খুন
হয়েছেন ৭ জন নারী, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৬৪
জন। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৫৭ টি।
কুমিল্লায় গত ৩ মাসে পারিবারিক কলহে খুন হয়েছে ৬ জন
শিশু। এমন আশঙ্কাজনক হারে শিশু হত্যার ঘটনায় নড়েচড়ে
বসেছে পুলিশ।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই
বাড়ছে নারী ও শিশু হত্যা। তাদের মতে অপরাধীদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় নারী এবং শিশু
নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে।
নারীর নিরাপত্তা
বাড়ে ক্ষমতায়নে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঘরে-বাইরে সব জায়গায়ই নারী অনিরাপদ। প্রতিনিয়ত নানাভাবে
নির্যাতনেরর শিকার হচ্ছে তারা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ
অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হলে নারীর ক্ষমতায়ন দরকার।
ক্ষমতায়ন ও নারীর সম-অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে
নিরাপত্তাহীনতাও কেটে যাবে। তাঁদের মতে, কোনো সমাজে
মানুষ নৈতিকতা বিবর্জিত হলে নারীর অনিরাপদ থাকা
স্বাভাবিক। তাই নারীকে সুরক্ষা দিতে হলে বিদ্যমান আইন
বাস্তবায়নের পাশাপাশি সমাজের সচেতনতা ও নৈতিক
মূল্যবোধের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে
হবে নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের শিক্ষা।
নারীর অনিরাপত্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে নির্যাতনের মাধ্যমে।
সেই নির্যাতন হতে পারে মানসিক বা শারীরিক। তিনি বলেন,
যেসব নারী তাদের নিজ পরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়,
সেগুলো তারা প্রকাশ না করা পর্যন্ত কেউ জানতে পারে না।
ফলে কোনো সংগঠনই এই নির্যাতনের চিত্র সঠিকভাবে তুলে
ধরতে পারে না।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমাজে নানা ক্ষেত্রে
অগ্রগতি ঘটলে একই হারে নারী নির্যাাতনের ঘটনা ঘটছে।
নারী নির্যাতনের বেশির ভাগ ঘটনাই অপ্রকাশিত থাকে। ২০১২
সালের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে নানাভাবে হত্যাকান্ডের
শিকার হয়েছে এক হাজার ৩৪২ জন, ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৫৭
জন, এসিড সন্ত্রাসের শিকার ৬৬ জন ও পুলিশি নির্যাাতনের
শিকার হয়েছে ৫৯ জন। ২০১৩ সালে এক হাজার ২০০ নারী
হত্যাকান্ডের শিকার, ধর্ষণের শিকার ৬৯৬ জন, এসিড
সন্ত্রাসের শিকার ৪৬ জন এবং পুলিশের নির্যাতনের শিকার
হয়েছে ৩৭ জন। ২০১৪ সালে এক হাজার ২৭২ জন নারী নানাভাবে
হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে, ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭৪ জন,
এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ৪১ জন ও পুলিশের
নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৩ জন নারী। ২০১৫ সালে এক
হাজার ৩০০ নারী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে, ধর্ষণের
শিকার হয়েছে ৮০৮ জন, এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ৩৭
জন এবং পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪০ জন।
এসব নির্যাতন থেকে নারীকে বাঁচাতে হলে শুধু আইন করেই
হবে না, নৈতিকতাবোধের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ‘আমাদের দেশের
৭৬ শতাংশ নারীই অর্থনৈতিকভাবে অনিরাপদ। নারীকে
অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ করতে পারলেও অনেকাংশে কমে যাবে
নারীর নিরাপত্তাহীনতা।’
‘নারীর অনিরাপত্তা শুরু হয় তার নিজের ঘর থেকে। একজন
নারীকে যখন তার পরিবার অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীনতা দিতে
পারে না; সেখান থেকেই ওই নারীর অনিরাপত্তার শুরু। আবার
আমাদের সমাজে একজন নারী স্বাধীনভাবে চলতে পারে না। এটি
হলো অনিরাপত্তার আরেক ধাপ।’ পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার
পরিবর্তনের পাশাপাশি নারীকে সাহসী ও প্রতিবাদী হতে হবে।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
যশোর কেন্দ্রীয়
কারাগার যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়া
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
হাসপাতালের ওষুধ বাইরে পাচার * রান্না ঘরে চলে মিনি
ক্যান্টিন ব্যবসা * চুক্তিতে মেলে মাছ, মাংস ও ডিম হ
বসে জুয়া ও মাদকের আসর * বিকাশে ঘুষ লেনদেন
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে চলছে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি।
কারা হাসপাতাল, বন্দিদের খাবার সরবরাহ, ক্যান্টিন
ব্যবসা, জুয়ার আসর ও মাদকের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে
জোরালোভাবে। কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় দেদারসে চলছে
এসব অবৈধ কর্মকা । অভিযোগ রয়েছে, দিনের পর দিন কারাগারে
এমন অনিয়ম-দুর্নীতি হলেও সেসব বন্ধে কার্যকর কোনো
পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ
করেই চলছে অনিয়ম-দুর্নীতি। এতে কারা অভ্যন্তরের বন্দিরা
প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কয়েকজন বন্দি
অনিয়ম-দুর্নীতির চিরকুট লিখেছেন কারা অভ্যন্তরে বসে।
সেই চিরকুটে তুলে ধরা হয়েছে কারাগারের অনিয়ম-দুর্নীতির
চিত্র। ১০-১২টি চিরকুট যুগান্তরের হাতে এসে পৌঁছেছে।
কারা বন্দিদের অভিযোগ, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের
বন্দিদের সুচিকিৎসার জন্য তিন তলাবিশিষ্ট একটি কারা
হাসপাতাল আছে। হাসপাতালের ফার্মাসিস্টের বিরুদ্ধে রয়েছে
নানা অভিযোগ। হাসপাতালের ওষুধ বিক্রি করে দেয়া ও
বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ নিত্যদিনের।
কারা হাসপাতালে প্রকৃত কারাবন্দিদের চিকিৎসা হয় না।
অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল বন্দিরা মাসিক ২-৩ হাজার টাকা
করে কারা চিকিৎসককে দিয়ে আবাসিক হোটেলের মতো বসবাস করছে।
বিকাশের মাধ্যমে ভর্তিকৃত বিত্তবান বন্দির স্বজনদের
কাছ থেকে টাকা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা
অসুস্থ রোগী তাদের হাতপাতালের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়।
কারা হাতপাতালে বিনা চিকিৎসা ও অবহেলায় প্রায়ই বন্দির
মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মেডিকেল রান্না ঘরে চলে মিনি
ক্যান্টিন ব্যবসা। ৪-৫ জন কয়েদি সাপ্তাহিক চুক্তিতে
টাকা দিয়ে রান্না করছে। রান্না করা মাছ, মাংস, ডিম ও
সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। কারা ক্যান্টিনে ন্যায্যমূল্যে
দ্রব্যাদি বিক্রির নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে চড়া
মূল্য নেয়া হয়। দ্বিগুণ দামে পণ্য ক্রয় করতে বন্দিদের
বাধ্য করা হয়। কারা রোস্টারে জমাকৃত বন্দিদের অর্থে
বর্তমানে কারা কর্তৃপক্ষ কারা ক্যান্টিন নামক অমানবিক
ব্যবসা করছে। কারা ক্যান্টিনে প্রাণ ও আকিজের পানি ছাড়া
অন্য কোনো কোম্পানির পণ্য বিক্রি করতে পারবে না বলে
বাধ্যতামূলক নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ
রয়েছে, ওই দুই কোম্পানির কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ
খেয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
মুখোমুখি পুলিশের
শীর্ষ পর্যায়ের দুই কর্মকর্তাা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার
অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন তারই অধস্তন আরেক কর্মকর্তা।
অধস্তন এই কর্মকর্তা হলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন
পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার থেকে সদ্য র্যাবে যোগ দেয়া
ডিআইজি আবদুল জলিল। অভিযোগে তিনি বলেন, সরকারি
দায়িত্বের বাইরে গিয়ে বিশেষ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের
পক্ষ নিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন,
ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা তার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ মালামাল
জব্দ সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্ত প্রভাবিত করেছিলেন।
মামলার তদন্ত আইনানুগভাবে শেষ না করেই তদন্ত
কর্মকর্তাকে জোর করে তিনি চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে
বাধ্য করেন।
উল্লেখ্য, এই মামলার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার
নির্দেশনা না শোনার কারণে পুলিশ সদর দফতর থেকে আবদুল
জলিল ম লের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল)
বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়। আর
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় জলিল ম লের
বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের হয়। মঙ্গলবার বিকালে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত
হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের
একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা
যায়, ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তার নির্দেশ না মানায় সম্প্রতি
সিএমপির কমিশনার আবদুল জলিল ম লকে এলিট ফোর্স র্যাবে
বদলি করা হয়। সোমবার তিনি র্যাবের অতিরিক্ত
মহাপরিচালক (প্রশাসন) পদে যোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে
জানতে চাইলে মঙ্গলবার ডিআইজি আবদুল জলিল ম ল যুগান্তরকে
বলেন, ‘অভিযোগের লিখিত জবাবই আমার বক্তব্য।’ এ বিষয়ে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শুনানির বিষয়টি স্বীকার করলেও
এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র
সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান যুগান্তরকে বলেন,
‘শুনানি হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা (যার
বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে) বলেন, পুলিশ একটি সুশৃংখল
বাহিনী। এখানে চেইন অব কমান্ড ভাঙার কোনো সুযোগ নেই।
এছাড়া সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫
অনুযায়ী এটি অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে। এ ব্যাপারে
মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।
কাশিমপুর কারাফটকে
সাবেক কারারক্ষী খুন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মোটরসাইকেলে এসে সন্ত্রাসীরা রুস্তম আলীকে লক্ষ্য করে
গুলি চালায়। বুকে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে
মাটিতে। সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে সেই মোটরসাইকেলে পালিয়ে
যায়। গতকাল দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয়
কারাগারের সামনে এ ঘটনায় হতবাক সবাই। দিনদুপুরে শ শ
মানুষের সামনে সন্ত্রাসীদের এমন আক্রমণে খোদ প্রশাসনও
স্তম্ভিত। সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন অবসরকালীন
ছুটিতে থাকা সাবেক কারারক্ষী ও কারা সার্জেন্ট
ইন্সট্রাকটর রুস্তম আলী। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। কারা
পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ
সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হাসপাতাল মর্গে নিহতের স্ত্রী, ভাই-বোনসহ স্বজনদের
আহাজারিতে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। রুস্তম আলীকে
খুনের পর কাশিমপুর কারাগারসহ দেশের সব কারাগারে
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে নির্দেশ দিয়েছেন কারা
প্রশাসন। গুলি করে তাকে খুন করার পর ওই এলাকায় আতঙ্ক
ছড়িয়ে পড়ে এবং শতাধিক দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা সরে
যান।
পরিকল্পিত হত্যাকান্ড প্রতিরোধ ও
তদন্তে ব্যর্থতা পুলিশে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশে একের পর এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকা ঘটলেও ঘাতকদের
গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা, তাদের শনাক্তও করতে পারছে
না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে চরম ক্ষুব্ধ
সরকারের নীতিনির্ধারকরা। প্রধানমন্ত্রী নিজেও এতে
নাখোশ। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশপ্রধানকে তলব করে বিভিন্ন
দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন সরকারপ্রধান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ
নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি
করার লক্ষ্যে একটি তালিকা তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়। এর সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বদলির ওই তালিকায় আছেন উপ-মহাপুলিশ
পরিদর্শক থেকে শুরু করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের
কর্মকর্তারা। তিনটি মেট্রোপলিটন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না থাকায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ
কমিশনারদেরও বদলি করা হতে পারে। মেট্রোপলিটন এলাকার
একাধিক ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার এবং বেশ কয়েকটি
থানার ওসিও দ্রুত বদল করা হবে বলে একটি সূত্রে জানা
গেছে। একই সূত্রের দাবি, পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি
পদেও পরিবর্তন আসতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না
করার শর্তে গত ২৮ এপ্রিল জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির
অবনতি হওয়ায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে
কিছু দিকনির্দেশনা এসেছে। যোগ্য পুলিশ কর্মকর্তাদের
নির্দিষ্ট স্থানে নিয়োগ দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি করতে
বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এক প্রশ্নের
জবাবে তিনি বলেন, পুলিশে একটি বদলির তালিকা করা হয়েছে।
এরই মধ্যে তাদের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে
পাঠানো হয়েছে।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
অর্শ বা পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে করণীয়
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
পাইলস অতি পরিচিত একটি রোগ এটাকে বলা হয় সভ্যতার রোগ।
অর্থাৎ এই রোগটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শহরে
জীবনযাপনে অভ্যস্ত লোকদের মাঝেই বেশি দেখা যায়। তার
প্রধান কারণ তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি যেমন কমপানি, কম
শাক সবজি, বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং সময়মত
মলত্যাগ না করা। উপরের উল্লেখিত জীবনযাপনের কারণে
কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায় এবং মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত
প্রেসার দিতে হয়।
ফলে মলদ্বারের চারিদিকে রক্তনালী ও মাংসপি- ফুলে গিয়ে
পাইলস সৃষ্টি করে। পাইলসের উৎসর্গ (১) গর্ভাবস্থায় এই
রোগের প্রকোপ বাড়ে। (২) পায়খানার সময় বিশেষ করে কষা
পায়খানার সময় পাইলসের রক্তনালী ছিড়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ
হয়। (৩) পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত, টাটকা রক্তক্ষরণই
পাইলসের প্রধান ও প্রাথমিক লক্ষণ।
তবে ধীরে ধীরে চিকিৎসার অভাবে এই রোগ জটিল আকার ও
অন্যান্য উপস্বর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন : ক) পাইলস
মলদ্বারের বাহিরে বের হয়ে আসা, খ) বাহির হওয়ার পর ভেতরে
প্রবেশ না করাগ) ব্যথা ও ইনফেকশন দেখা দেওয়া ইত্যাদি।পাইলস
হইলে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি?৪০ বছর বয়সের উপরে ৬০%
লোকের মলদ্বারা পরীক্ষা করলেই পাইলস দেখা যাবে।
সৌভাগ্যের বিষয় সবারই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কোন
উপস্বর্গ বা জটিলতা দেখা না দিলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
কখন এবং কি চিকিৎসা করবেন?উপস্বর্গ বা জটিলতা দেখা দিলে
চিকিৎসা অতীব জরুরি।প্রাথমিক পর্যায় অর্থাৎ শুধুমাত্র
শক্ত পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত রক্তক্ষরণ হলে- পায়খানা
নরম বা নিয়মিত রাখুন- প্রয়োজন হলে ইসুবগুলোর ভুষি বা
লেকজেটিভ খান। প্রচুর পানি ও শাকসবজি খান, চর্বিযুক্ত
খাবার পরিহার করুন।
-নিয়মিত মলত্যাগ করুন। * জটিলতর আকার ধারণ করলে অর্থাৎ
পাইলস বেরিয়ে আসলে এবং উপরোক্ত চিকিৎসা যদি কাজ না করে
তবে- * ইনজেকশন * ব্যান্ড লাইগেশন * অপারেশন ইত্যাদির
যে কোন ১টি করে নিতে হবে। জটিল পাইলসের ক্ষেত্রে
ব্যান্ড লাইগেশন ও ইনজেকশন একটি কার্যকর সফল চিকিৎসা
পদ্ধতি।
এটা ব্যথামুক্ত এবং রোগী ভর্তির প্রয়োজন হয় না। *
পাইলসের কখন এবং কি অপারেশন করা হয় :পাইলস যখন
মলদ্বারের বাহিরে অবস্থান করে অর্থাৎ মলত্যাগের পর
পাইলস আপনা আপনি ভেতরে প্রবেশ না করে অথবা ভেতরে
প্রবেশ করানোর পরও বাহির হইয়া আসে তখন অপারেশনই হচ্ছে
একমাত্র সঠিক চিকিৎসা।
দুই পদ্ধতিতে অপারেশন করা যায়-১) পুরানো পদ্ধতি ও ২)
নতুন পদ্ধতি ১) পুরানো পদ্ধতিতে রোগীকে অনেক দিন
হাসপাতালে থাকতে হয় বলে এখন উন্নত বিশ্বে এই পদ্ধতিতে
চিকিৎসা করা হয় না। ২) নতুন পদ্ধতি-২ প্রকার- ক) লংগু
ও খ) ডায়াথারমি পদ্ধতি লংগু অত্যন্ত ব্যয়বহুল পদ্ধতি
৫০-৬০ হাজার টাকার খরচ পড়ে এবং ডায়াথারমি স্বল্প খরচ
পদ্ধতি।
উভয় পদ্ধতি উন্নত বিশ্বে বর্তমানে প্রচলিত। এই নতুন
পদ্ধতি রোগীর একদিনের বেশি হাসপাতালে থাকতে হয় না। উভয়
পদ্ধতিই ব্যথামুক্ত ও অত্যন্ত কার্যকর। * পাইলস
চিকিৎসার পর আবার দেখা দিতে পারে কি?সঠিকভাবে চিকিৎসা
করা হলে এ রোগ আবার দেখা দেয়ার সম্ভাবনা কম। উপদেশ :
পাঠকগণ এই রোগটির রোগীরা সবচেয়ে বেশি অপচিকিৎসা বা ভুল
চিকিৎসার শিকার হয়। কারণ বেশির ভাগ রোগীরা হাতুড়ে
চিকিৎসকের দ্বারা এসিড জাতীয় অত্যন্ত ক্ষতিকারক জিনিস
দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন।
যার ফলে পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রকার জটিলতা নিয়ে রোগীরা
আমাদের দ্বারস্থ হয়। যেমন- পায়খানার রাস্তায় ঘাঁ হওয়া।-
মলদ্বার চিকন হয়ে যাওযায় মলত্যাগে প্রচ- ব্যথা হওয়া।
মলদ্বারে ক্যান্সার হওয়া।- মলদ্বারের ক্যান্সারকে
পাইলস মনে করে ভুল চিকিৎসা করা ইত্যাদি। অতএব পাইলস
সন্দেহ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
কানে পানি
ঢুকে যন্ত্রণায় কাতর? নিন ম্যাজিকাল সমাধান !
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
জেনে রাখুন, শরীরচর্চা, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
নদী, পুকুর বা সুইমিংপুলে সাঁতার কেটে গোসল করতে কে না
ভালোবাসে? কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে সেখানেই ঘটে যায়
বিপত্তি। ডুব দিতেই কানের মধ্যে সুড়ুৎ করে পানি ঢুকে
যায়। অসাবধানে শাওয়ারে গোসলেও ঘটতে পারে একই ঘটনা। কারো
কান থেকে কিছু সময় পরে এমনিই পানি বের হয়ে আসে, আবার
কারো কানে পানি জমে আঠালো রক্তের মতো বের হয়।
কানের যন্ত্রণায় কাতর করে রাখে কিছুদিন। এ বিষয়ে
পরামর্শ দিচ্ছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের ডা: মো: আব্দুল হাফিজ শাফি, নাক-কান-গলা
বিভাগ। এছাড়াও টপ টেন হোম রেমিডি উইকি হাউ থেকে এই
সমস্যার সমাধানে নিচের অংশে সময়ের কণ্ঠস্বরের পাঠকদের
জন্য থাকছে দারুণ কিছু পরামর্শ
কানে পানি ঢোকা রোগে বড়দের সঙ্গে সাধারনত ছোট
ছেলেমেয়েরাই বেশি আক্রান্ত হয়। শিশুদের গলার ভেতরে
শ্বাস ও খাদ্যনালীর মুখে অবস্থিত লসিকাগ্রন্থি বড় হওয়া,
গলা ও মধ্যকর্ণের সংযোগনালীর (শ্রুতিনালী) কাজে সমস্যা
থাকা, এলার্জি, ভাইরাসের আক্রমণ এবং মধ্যকর্ণে
যন্ত্রণার কারণে এই সমস্যা হতে পারে। বায়ুর চাপ কমে
চারপাশের রক্তনালী হতে তরল পদার্থ মধ্যকর্ণে জমা হয়।
বর্তমান বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে
কানে পানি জমা রোগের হার খুবই বেশি।
মধ্যকর্ণে তরল পদার্থ শিশুর শ্রবনশক্তি হ্রাসের অন্যতম
কারণ। ভাষাশিক্ষা বিঘ্নিত হয়, বুদ্ধিবৃদ্ধি ও মানসিক
বিকাশ ব্যহত হয়, স্কুলে দক্ষতা কমে যায় এবং সঙ্গে
শিশুর ব্যবহারের পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়। শিশুর বয়স
৪ থেকে ৫ বছরে এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
আক্রান্ত শিশুর ৯৫% পর্যন্ত এমনিতেই সেরে যায় তবে ৫%
এর ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় স্থায়ী হয়। বয়সের সঙ্গে
সঙ্গে এ রোগের প্রকোপ কমে যেতে থাকে। তবে বড়দের
ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগটি স্থায়ী হয়ে যেতে
পারে।
রোগের কারণ
* সর্দি-কাশি-নাক বন্ধ হয়ে ঘন ঘন শ্বাসনালীর সংক্রমন।
* প্রায়ই এলার্জি জনিত নাকের প্রদাহ।
* ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন।
* শিশুদের ক্ষেত্রে নাকের পিছনে এডিনয়েড নামক
লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া।
* নাকের হাড় বাকা বা ক্রনিক সাইনোসাইটিস এর সমস্যা।
* ভাইরাল ইনফেকশন।
এই রোগে কানের মধ্যে ভোঁ ভোঁ শব্দ হয়। কানে কম শোনা
যায়। সংক্রমণ বেশি তীব্র হলে কানের পর্দা ফুটো হয়ে কান
বেয়ে রক্ত মিশ্রিত পানি বের হতে পারে। এ রকম জটিলতার
আগেই একজন নাক-কান-গলার চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত।
এ ধরণের রোগে চিকিৎসক কান পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণত
এন্টি-হিস্টামিন, বয়স উপযোগী নাকের ড্রপ, প্রয়োজনে
অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করে থাকেন। ব্যথা কমাতে
প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। কানে পানি ঢুকে
কান বন্ধ হয়ে যাওয়ার চাইতে বিব্রতকর সমস্যা আর কিছুই
হতে পারে না। খুবই বিচিত্র একটা অনুভব, সেটা কাউকে
ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। অন্যদিকে কানে পানি রয়ে গেলে কান
পাকা ও তীব্র ব্যথা সহ নানান রকমের শারীরিক সমস্যা হতে
পারে। অনেকেই কানে পানি ঢুকলে কটন বাড দিয়ে পরিষ্কার
করার চেষ্টা করেন। এই কাজটি একেবারেই ভুল! বরং জেনে
নিন কান থেকে পানি বের করার ৬টি সঠিক উপায়।
কিডনি অকার্যকর
হওয়ার আট লক্ষণ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
কিডনি অকার্যকর হতে থাকলে শরীর ফুলে যায়। ছবি :
সংগৃহীত
শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি। কিডনি
অকার্যকর হলে জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। কিডনি ভালো রাখতে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর খাবার খান। কিডনি
অকার্যকর হওয়ার আট লক্ষণের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য
বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলদি ফুড টিম। এসব লক্ষণ দেখা দিলে
দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। ১. ফোলা অকার্যকর কিডনি
শরীর থেকে বাড়তি তরল বের করতে পারে না। এতে মুখ, হাত,
পায়ের পাতা, পা, হাঁটু ফুলে যায়। হঠাৎ করে এ রকম হওয়া
কিডনি অকার্যকর হওয়ার লক্ষণ।
২. প্রস্রাবে পরিবর্তন কিডনি অকার্যকর হলে প্রস্রাবে
কিছু পরিবর্তন আসে।
ক্স প্রস্রাব হতে কষ্ট হয় বা চাপ বোধ হয়। ক্স
প্রস্রাবের সাথে রক্ত যেতে পারে। ক্স প্রস্রাবের রং
গাঢ় হয়ে যায়। ক্স প্রস্রাব কমে যায় এবং গন্ধ হয়। ক্স
ফেনার মতো প্রস্রাব হয়।
৩. ত্বকে র?্যাশ হওয়া কিডনি অকার্যকর
হয়ে পড়লে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে। এই বিষাক্ত
পদার্থ ত্বককে শুষ্ক ও ইরিটেটেড করে তোলে।
৪. অবসন্নতা স্বাস্থ্যকর কিডনি ইরিথ্রোপয়েটিন বা ইপিও
হরমোন উৎপন্ন করে। এটি লোহিত রক্তকনিকা তৈরিতে কাজ করে।
কিডনি অর্কাযকর হলে, লোহিত রক্তকনিকা কমে যায়। এটি
শরীরে অক্সিজেন পরিবহন বন্ধ করে দেয়। এতে রক্ত স্বল্পতা
হয় এবং পেশি অবসন্ন লাগে।
৫. ছোট শ্বাস কিডনির ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আরেকটি লক্ষণ
হলো ছোট শ্বাস। লোহিত রক্তকনিকা কমে যায় বলে শরীরে
অক্সিজেন পরিবহন কম হয়। এতে ছোট শ্বাসের সমস্যা হয়;
ফুসফুসে বাড়তি পানি জমে।
৬. মুখে দুর্গন্ধ হয় কিডনি অকার্যকর হলে শরীরে বিষাক্ত
পদার্থ বাড়তে থাকে। এতে মুখ দুর্গন্ধ তৈরি হয়। যদি মুখে
দুর্গন্ধ কমানোর চিকিৎসা করার পরও এমনটা হতেই থাকে, তবে
কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৭. ব্যথা কিডনি অকার্যকর হলে অনেক সময় পিঠের নিচে অথবা
পাশে ব্যথা করে। কিডনিতে পাথর হলে বা সংক্রমণ হলেও
তীব্র ব্যথা হয়।
৮. মনোযোগের অভাব ও ঘুম ঘুম ভাব কিডনি অকার্যকর হলে
মস্তিস্কে অক্সিজেনের অভাব হয়। এতে মনোযোগের অভাব হয়।
ঘুম ঘুম ভাব হয় এবং স্মৃতিতে সমস্যা হয়।
ক্যান্সার
নিয়ন্ত্রণে ১০ হাজার গুণ শক্তিশালী ফল এখন নীলফামারীতে!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
বন্দর খড়িবাড়ী গ্রামে এ্যানোনা মিউরিকাটা গোত্রের
ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল করোসল (corossol) ধরেছে। এই
ফলের গাছ সংগ্রহ করা হয়েছিল আইভরিকোস্ট থেকে। সংগ্রহ
করা ছয়টি গাছের মধ্যে একটি গাছে ফল ধরেছে। যা প্রচার
পাওয়ায় ওই ফলটি এক নজর দেখতে ভিড় করছে মানুষজন। দুই
একর জমির ওই বাগানে মানবদেহের জন্য উপকারী এমন দুই
শতাধিক ঔষধি ও ফলজ গাছ রয়েছে। ‘করোসল’ অনেক দেশেই
ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল হিসেবে পরিচিত। নীলফামারীর
খড়িবাড়ী গ্রামের ঔষধি ও ফলজ বাগানের মালিক বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আলমাস রাইসুল গনি।
বিভিন্ন দেশ ঘুরে চারা সংগ্রহ করে নিয়ে এসে তিনি
বাগানটি তৈরি করেছেন।
গ্রাভিওলা একটি ফলের নাম। যার অন্য নাম করোসেল (corossol),
সাওয়ারসপ (Soursop), গুয়ানাবা( Guanaba), গুয়ানাভানা (Guanavana),
ব্রাজিলিয়ান পাও পাও (Brazilian paw paw)ি ইত্যাদি। এই
ফলটি পৃথিবীকে আশ্চর্য করে দিয়েছে। ক্যান্সার
নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে এই ফলটি কেমোথেরাপির চেয়ে
হাজারগুণ বেশী কাজ করে। এবং এটিতে শরীরের শক্তিও জোগাড়
হয়। গ্রাভিওলা ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে বহু
প্রবন্ধ, নিবন্ধ লেখা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
গ্রাভিওলা গাছ দক্ষিণ আমেরিকা , কিউবা, মেক্সিকো,
সেন্ট্রাল আমেরিকা, বিশেষ করে, আমাজান নদী অববাহিকায়
দেখা যায়। এটি ১৫ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। আর এতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান।
গ্রাভিওলা ফলে রয়েছে বেশ উপকারিতা। এর পাতা, বাকর, রস,
বীজ ভিন্ন ভিন্ন উপকারে আসে। তবে এর বাকল ও পাতায় রয়েছে
সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা। হাজার বছর ধরে লিভার
সমস্যা, বাত থেকে প্যারাসাইট এর মতো রোগ নিরাময়ে ঔষধ
হিসেবে গ্রাভিওলার পাতা ও বাকল খেয়ে আসছে আমাজানের
বাসিন্দারা।
ললগ্রাভিওলা আম্লিক ফল হিসেবেও পরিচিত। বলা হচ্ছে-
ক্যান্সার সেলের মৃত্যু ঘটাতে কেমোথেরাপির চেয়ে এটি ১০
হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার,
ফুসফুস ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার, লিভার
ক্যান্সার, প্রসটেট ক্যান্সারে এটা বেশী কার্যকর।
কিভাবে এটি কাজ করে?
করোসেল গাছের পাতা, বাকল ও বীজের নির্যাসে রয়েছে
আনোনাসিয়াস এসেটোজেনিন (Annonaceous acetogenin) নামক
এক ধরনের যৌগ, যা কিনা ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিক
বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি ক্যান্সার কোষে
শক্তি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং রক্ত প্রবাহ আটকে দেয়।
ফলে ক্যান্সার কোষ আর অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারেনা। তবে
এ নিয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
তারা গ্রাভিওলার অন্য উপকারিতার উপর বেশী জোর দিয়েছেন।
তারা বলছেন, গ্রাভিওলা গোটা রোগ প্রতিরোধ বাবস্থাকে
সমর্থন করে। শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। অল্প
বয়সে বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এই ফলের নির্যাস
আথ্রাইটিস পেইন, জয়েন্ট পেইন, নাকের প্রদাহ, আক্সিমা
প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়।
এখন দেখার বিষয় নীলফামারীর এই মহা উপকারী ফল কিভাবে
রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।
নিজ উদ্যোগে শতাধিক ঔষধি গাছের পাশাপাশি করোসলের ফলনে
কর্নেল আলমাস রাইসুল গনির বাগানটি বাংলাদেশের মডেল
বাগান হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এটাই সবার প্রত্যাশা।
বিষন্নতা কমাতে দিনে দুটি কলা!
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
শরীর ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার তো খেতেই হবে। এ
জন্য ফাস্টফুডের বদলে খুঁজে নিতে পারেন সহজ প্রাকৃতিক
খাবার। এর মধ্যে কলা অন্যতম। কলা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি
খাবার। আর এটি স্বাদেও ভালো।
পুষ্টিবিদরা বলেন, বিষণ্ণতা কমাতে দিনে দুটি কলা খাওয়া
বেশ উপকারী। তবে এর জন্য ছোট কলা বেছে নেয়া ভালো। আর
যদি টানা এক মাস আপনি দিনে দুটি করে কলা খান তাহলে ফল
পাবেন জলদি। হেলদি ফুড টিমে প্রকাশিত হয়েছে এসংক্রান্ত
একটি প্রতিবেদন।
Top
আইন কনিকা
সুপ্রীম কোর্টের
ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত অবসরের পর রায় লেখা যাবে না
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখা বন্ধ করে দিয়ে
ঐতিহাসিক কাজ করেছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। এর
মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারের ইতিহাসে নতুন
যুগের সূচনা হলো। গত ২৮ এপ্রিল ২০১৬ দুজন বিচারপতির
লেখা ১৬৮টি রায় নতুন করে শুনানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্য দিয়ে অবসরের পর রায় লেখার
খারাপ নজিরের ইতি ঘটল। একইসঙ্গে বিচারপ্রার্থীদের
বিলম্বে রায় পাওয়ার ক্ষেত্রে যে দুর্ভোগ তারও অবসান
ঘটল। আর কার্যকর হলো ৫২ বছর আগে দেয়া সুপ্রিম কোর্টের
একটি রায়। স্বাধীনতার পর যে রায়কে না মানার প্রথা চালু
হয়েছিলো আমাদের বিচারাঙ্গনে।
প্রধান বিচারপতি হিসেবে এসকে সিনহা দায়িত্ব গ্রহণের পর
অবসরের পর রায় লেখা নিয়ে সাংবিধানিক বিতর্ক তৈরি হয়।
খোদ জাতীয় সংসদ ছাড়াও বর্তমান ও সাবেক বিচারপতি এবং
আইনমন্ত্রী বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। প্রধান বিচারপতি এসকে
সিনহা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, অবসরের পর রায় লেখা
সংবিধানসম্মত নয়। তিনি আরো বলেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানে
অবসরের পর রায় লেখা যায় না। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী
অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানিয়েছেন, অবসরের পর রায় লিখতে
সাংবিধানিক বাধা নেই। তার ভাষ্যমতে, সংবিধানের কোথাও
লেখা নেই অবসরের পর বিচারপতিরা রায় লিখতে পারবেন না।
সাংবিধানিক পদাধিকারীদের নিয়োগ কার্যকর হয় শপথ গ্রহণের
মধ্য দিয়ে এবং পদত্যাগ ও অবসরের মধ্য দিয়ে নিয়োগের
অবসান ঘটে। এ কারণে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করেন,
অবসরের পরে রায় লেখা সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
কেননা অবসরের পর বিচারপতির শপথ বহাল থাকে না এবং তিনি
একজন সাধারণ নাগরিকে পরিণত হন। সুপ্রিম কোর্টের রুলসে
অবসরের পর রায় লেখা যাবে কি যাবে না এ বিষয়ে স্পষ্ট
কিছু উল্লেখ নেই। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
অ্যাডভোকেট এম আসাদুজ্জামান বলেন, রায় তো বিচারপতিরা
দেন, কিন্তু অবসরের পর সাধারণ নাগরিকে পরিণত হওয়া
ব্যক্তি আদালতের নথি স্পর্শ করবেন কোন অধিকারে?
অবসরের পর রায় লেখার বিতর্কটি মূলত জোর পায় এই কারণে
যে, স্বাধীনতার পর থেকেই অবসরের পর দীর্ঘকাল রায় না
লিখে ফেলে রাখার খারাপ নজির চালু হয়েছিলো। যদিও আজ থেকে
৫২ বছর আগে এ রকম একটি বিতর্কের অবসান করেছিলো তৎকালীন
সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৬৪ সালে কাজী মেহারদিন বনাম মুরাদ
বেগম মামলায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের তৈরি হয়েছিলো।
অবসরের পর হাইকোর্টের একজন বিচারক একটি রায় লেখেন এবং
তাতে স্বাক্ষর করেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে সুপ্রিম
কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ আর কর্নেলিয়াসের
নেতৃত্বে পাঁচজন বিচারক এক রায় দেন। রায়ে বলা হয়,
‘অবসর পরবর্তী সময়ে কোনো বিচারপতির লিখিত ও
স্বাক্ষরকৃত রায় কোনো রায় নয়।’ এই রায় এখনো বলবৎ আছে।
কেননা উচ্চ আদালতের অন্য কোনো রায় দ্বারা এই রায় এখনো
খ ানো হয়নি।
আমাদের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, “আপিল
বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন হাইকোর্ট বিভাগের জন্য এবং
সুপ্রিম কোর্টের যে কোনো বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন
অধস্তন সকল আদালতের জন্য অবশ্য পালনীয় হবে।” অর্থাৎ
সুপ্রিম কোর্টের কোনো আদেশ ও নির্দেশ, রায়, ডিক্রি
ইত্যাদি মান্য করা সকল আদালতের বিচারকদের জন্য
বাধ্যতামূলক। পাকিস্তান আমলে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের
ধারাবাহিকতা স্বাধীন দেশেও বহাল ছিলো (ক্ষেত্র বিশেষ
ছাড়া)। অবসরের পর রায় দেয়া বেআইনি এই নির্দেশনা দেশ
স্বাধীন হওয়ার আগে পর্যন্ত মান্য করা হয়েছে। কিন্তু
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অবসরের পরেও বিচারকরা রায় লিখতে
থাকেন।
সম্প্রতি রাষ্ট্র বনাম শাহিদুর রহমান মামলায় সুপ্রিম
কোর্টের আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। রায়টি
লিখেছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। রায়ে বলা হয়েছে,
মামলা নিষ্পত্তির ৬ মাসের মধ্যে রায় লিখতে হবে।
বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন প্রধান বিচারপতির পদ থেকে
অবসর নিয়েছেন পনের মাস আগে এবং বিচারপতি শামসুদ্দিন
নিয়েছেন প্রায় সাত মাস আগে। তাদের লেখা ১৬৮টি রায় নতুন
করে শুনানি গ্রহণ করে পুনরায় রায় দেবে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে অবসরের পর রায়
লেখার খারাপ নজিরের সমাপ্তি ঘটল।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এম
মাহবুবউদ্দিন এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক
বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলা নিষ্পত্তির পরেও
বিচারপ্রার্থীদের বছরের পর বছর রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে
হত। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিচারপ্রার্থীদের
দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।
Top
|
|