BHRC By-lawsBHRC Press ReleaseBHRC By-lawsBHRC ConferenceIHRCIRD ActivitiesLegal StatusBHRC BoardBHRC BranchesElection Monitoring Acid and Trauma VictimsBHRC BrochureBHRC Forms

ContactHOME

 

 

 

Cover November 2015

English Part November 2015

 

Top

Bangla Part

         নারী ও শিশু সংবাদ        পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

স্বাস্থ্য সংবাদ          আইন কনিকা

 

বিবিধ সংবাদ

 

                                 

 

মানবাধিকার রিপোর্ট নভেম্বর ২০১৫
নভেম্বর ’১৫ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা

১৮৪ জন

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ


বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। নভেম্বর ২০১৫ সালে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ১৮৪টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। এই হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। নভেম্বর মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৬.১৩ জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, ২০১৫ সালের নভেম্বর‘১৫ মাসে হত্যাকান্ডের শিকার ১৮৪ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ১০ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ২৭ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৪৩ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ০১ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে হত্যা ০৭ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ০৩ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ০৪ জন, গুপ্ত হত্যা ১২ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৬৩ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ০৫ জন, অপহরণ হত্যা ০৮ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত পরিবহণ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৯৯ জন, আত্মহত্যা ৩৬ জন, ধর্ষণের শিকার ৩৭ জন, যৌন নির্যাতনের শিকার ১৪ জন এবং সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার ৪ জন।

 

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নিউইয়র্ক শাখা গঠিত


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

গত ২৫ নভেম্বর ২০১৫ বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন এর নিউ ইয়র্ক শাখা গঠন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জেকশন হাইটসের ইত্যাদি পার্টি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার ৩২ সদস্য বিশিষ্ট নিউইয়র্ক কমিটি ঘোষণা করেন। শরীফ আহমেদ লস্কর এর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম রাজিব এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইমারত হোসেন ইমু। মোহাম্মদ কাওছারের কোরআন তেলোয়াত ও জনার্ধন সরকারের গীতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় প্রথমেই বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। মীনা ইসলামের উপস্থাপনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শরীফ আহমেদ লস্কার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য সংগঠন রয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার ও মানুষের প্রকৃত সেবার লক্ষ্যে এই ধরনের সংগঠন এটাই প্রথম। বাংলাদেশের মত এখাওন নিরীহ জনসাধারণ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং নানা ধরনের অত্যাচার ও জুলুমের শিকার হচ্ছে। ঐ সমস্ত অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই কমিশন গঠন করতে আমরা একতাবদ্ধ। তিনি নিউইয়র্ক থেকে সারা আমেরিকাতে এই কমিটির বিস্তার করে ”অসহায়দের পাশে দাড়ানোর কথা ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথি ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার বলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শুধু পদবীতে নয়, যারা সত্যিকারের মানব কল্যাণে কাজ করে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশী, শুধু তাদেরই মূল্যায়ন করে থাকে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার সেবায় কমিশন হাত বাড়িয়ে আসছে। তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), হযরত ঈসা (আঃ), গৌতম বুদ্ধ সকলেরই মানব কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। আমরা তাদেরই অনুসারী। তিনি জানান, প্রবাসীরা দেশে গিয়ে বিমানবন্দর থেকে নিজ গন্তব্যে পৌছানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বোধ করলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। এমনকি প্রবাসীদের কোন স্বজন দেশে অধিকার থেকে বঞ্চিত অথবা অত্যাচারিত ও প্রতারিত হলে কমিশন সে ব্যাপারেও কড়া পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। মহাসচিব বলেন, সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে প্রকৃত মানব সেবায় আত্মনিয়োগের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। বিশেষ অতিথি আরিফুল ইসলাম রাজিব ও ইমারত হোসেন ইমু তাদের বক্তব্যে নিউইয়র্ক প্রবাসীদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন ও নতুন কমিটির সকলকে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আমিনুল হক, মোঃ সানা উল্লাহ, মেহের চৌধুরী, মীনা ইসলাম, জনার্ধন চৌধুরী প্রমুখ।

 

শিশু নির্যাতন বরদাশত করা হব না || প্রধানমন্ত্রী


 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোর দিয়ে বলেছেন, শিশু গৃহকর্মীদের নির্যাতন এবং কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ সরকার কোনোভাবেই মেনে নেবে না। সরকার কোনো ধরনের শিশু নিপীড়ন বরদাশত করবে না।
গত ১১ নভেম্বর রাজধানীতে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ, ২০১৫ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
‘শিশু গড়বে দেশ, যদি পায় পরিবেশ’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে গতকাল বিশ্ব শিশু দিবস পালিত হয়।
প্রতিটি পথশিশুর খাদ্য, আশ্রয় এবং শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো শিশু রাস্তায় জীবনযাপন করবে না। আমরা ১৬ কোটি লোকের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। তাই প্রায় ৩৪ লাখ পথশিশুকে খাওয়ানোর সক্ষমতাও সরকারের রয়েছে।’
প্রতিটি শিশুকে তাদের এলাকার স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুরা যে এলাকায় বাস করে, সেখানকার স্কুলগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, শিক্ষা যেন শিশুর জন্য বোঝা না হয়। স্কুলগুলোতে ও পরিবারে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে তারা নিজেরা শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হবে এবং পড়াশোনায় উৎসাহ বোধ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা সরকারের দায়িত্ব। কারণ, তারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। পাশাপাশি প্রতিটি শিশুকে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে হবে। দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস না জানলে আগামী প্রজন্ম জীবনসংগ্রামে জয়ী হতে অনুপ্রাণিত হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি শিশুর খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি এবং মায়েদের পুষ্টির ওপর বিশেষ নজর দিয়েছে। এর ফলশ্র“তিতে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমছে। নবজাত শিশুরা যাতে বেশি দিন মায়ের যতœ পেতে পারে এ লক্ষ্যে কর্মজীবী নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় সেক্টরের প্রতিটি অফিসে দিবাযতœ কেন্দ্রের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শিশুদের যথাযথ শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নগরের অনেক শিশু খামারের মুরগির বাচ্চার মতো বদ্ধ পরিবেশে বড় হচ্ছে। সব শিশুর খেলাধুলা ও বিনোদনমূলক কর্মকাে অংশগ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য প্রতিটি ফ্ল্যাটবাড়ি ও আবাসিক এলাকায় খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রাখতে হবে।
প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিসেফের আবাসিক প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেইগবিডার। বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।




Top

 

 

বিরোধী দল এখন রাজনৈতিক অধিকারবঞ্চিত: খালেদা জিয়া

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বিরোধী দল সংবিধান স্বীকৃত সব রাজনৈতিক অধিকার থেকে এখন বঞ্চিত। দেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই।
আজ সোমবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। বিবৃতিতে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলামকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, সারা দেশে গত কয়েক সপ্তাহে মিথ্যা মামলায় তাঁদের তিন হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে নতুন আটক করা হয়েছে। আইন-আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও, তাঁদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা এখন সরকার রেওয়াজে পরিণত করে ফেলেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ারসহ অন্যান্য নেতাদের বেলায়ও একই ঘটনা ঘটেছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, দেশের মানুষের কাছে সম্মানিত হিসেবে বিবেচিত এসব রাজনীতিকের সম্মান ক্ষুণœ করার মতো মিথ্যা অভিযোগে আটক করা কোনো সুস্থ রাজনীতির ঘটনা নয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার কোনোভাবেই বিরোধী মতকে সহ্য করছে না। তারা গণতন্ত্রের সব ক্ষেত্রকে সংকুচিত করতে করতে এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থার পথেই দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপনের সই করা বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মৌলিক ও মানবাধিকার আগেই ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। আইন-আদালতও এখন শাসকগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। শাসকগোষ্ঠী দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক কর্মী-নেতারা ছাড়াও দেশের কোনো মানুষই এখন নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না।’ বিএনপির চেয়ারপারসন ‘গণগ্রেপ্তার’ বন্ধ এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
 

Top

 

রূপগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে
গৃহবধূকে নির্যাতন

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধুকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে তার স্বামী। একপর্যায়ে শিশুসন্তান সহ বাড়ি থেকে গৃহবধুকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার তারাব পৌরসভার গন্ধর্বপুর এলাকায়।
নির্যাতিতা গৃহবধূ ফাতেমা বেগম জানান, তিনি উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের আধুরিয়া এলাকার বকুল মিয়ার মেয়ে। গত পাঁচ বছর পূর্বে গন্ধর্বপুর তালতলা এলাকার আব্দুল আউয়ালের ছেলে কবির হোসেন সাথে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে সাকিবুল (৩) নামে তাদের একটি পূত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী জুয়া খেলার প্রতি আসক্ত হয়ে পরে। এর জের ধরেই বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য ফাতেমাকে নির্যাতন করতো। সে স্বামীকে বাবার বাড়ি থেকে কয়েক দফায় টাকা এনে দিলেও অল্পদিনের মধ্যেই শেষ করে আবারো নতুন করে যৌতুক দাবি করতো। এরই জের ধরে সোমবার আরো ১ লাখ টাকা দাবি করে কবির হোসেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে ফাতেমাকে জ্বালানী কাঠ দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পাষন্ড স্বামী। এক পর্যায়ে মৌখিক তালাক দিয়ে শিশুসন্তানসহ বাড়ি থেকে ফাতেমাকে বের করে দেয়। পরে তার পিতা সংবাদ পেয়ে ফাতেমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
 

Top

 

কোম্পানীগঞ্জে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে মানবাধিকার কমিশনের মানববন্ধন
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সিরাজপুর ইউনিয়নের নবম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা প্রচেষ্টাকারী রাজুকে গ্রেফতার এর প্রতিবাদে ২২নভেম্বর সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ প্রশাসনের সামনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখা ও বসুরহাট পৌরসভা শাখার যৌথ উদ্যোগে ১ঘণ্টা ব্যাপী এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। এ সময়ে কমিশন সভাপতি মানবতাবাদী এএইচএম মান্নান মুন্না এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে একাতœতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভীন রুনু, ইউপি চেয়ারম্যান নুরনবী চৌধুরী, পৌর কাউন্সিল আবুল খায়ের, উপজেলা মানবাধিকার কমিশন সাধারণ সম্পাদক মানবতাবাদী লুৎফুর রহমান মিন্টুর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ সভাপতি মানবতাবাদী আবু আনছার কাওছার, বসুরহাট পৌরসভা শাখার মানবাধিকার কমিশন সাধারণ সম্পাদক মানবতাবাদী বেলায়েত হোসেন বেলাল, মাকসুদাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা খানম, নারী নেত্রী ও মানবতাবাদী পারভীন মুরাদ, চাঁড়াভিটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য প্রশান্ত সুভাস চন্দ, প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন রনি, কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিমুল হক সাথী, সিরাজপুর ইউপি সদস্য মহি উদ্দিন সুজন, চরহাজারী ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন রাফেল, কবিতা পরিষদ সাধারণ সম্পাদক ও মানবতাবাদী নাজমা বেগম শিপা, শিশু সংগঠন ব্যঞ্জনা খেলাঘর আসর সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াছমিন মুক্তা, মুক্ত সাংস্কৃতিক সংগঠন সভাপতি শওকত আজিম জাবেদ, উই ফর ইউ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মানবতাবদী নুর-ই-মাওলা রাজু।
এছাড়াও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন এর মানবন্ধনে মাকসুদাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও আইডিয়াল স্কুল এর ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠণের নেতৃবৃন্দ মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করে। উল্লেখ্য, গত ১৬নভেম্বর সংশ্লিষ্ট উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নে চাঁড়াভিটি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল ছাত্রী (১৫) বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে আসার সময় অস্ত্রের মুখে তার পথ গতিরোধ করে বখাড়ে রাজু আবদুল কাজী বাড়ীর বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে রাজু স্কুল ছাত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিবস্ত্র অবস্থায় পাশের একটি ডোবায় হাত-পা বেঁধে পেলে রেখে পালিয়ে যায়। ’

Top
 

রূপগঞ্জে বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশনের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের রূপগঞ্জ থানা শাখার নতুন কমিটির পরিচিতি ও আলোচনা সভা গত ১৫ নভেম্বর ২০১৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল মোল্লা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি ও রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহজাহান ভুঁইয়া। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের রূপগঞ্জ শাখার উপদেষ্টা আজাহার আলী ভুঁইয়া, ডা. বশিরউদ্দিন বাচ্চু, মনির হোসেন মনু, সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম, এম.এ মোমেন, আলী ওসমান, মানবকণ্ঠের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি ও সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হানিফ মোল্লা, জায়েদ হোসেন খন্দকার, সংগঠনের রূপগঞ্জ উপজেলার সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাংবাদিক, শামীমা আক্তার ঝুনু, জোসনা আক্তার বেবী প্রমুখ। মানবাধিকার সভায় বক্তারা বলেন, রূপগঞ্জে বাল্য বিয়ে বন্ধ, মাদক নির্মূল ও পারিবারিক কলহ বন্ধে সর্বদা বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনকেও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন সংগঠনটি।
এদিকে গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রূপগঞ্জ শাখার উদ্যোগে এলাকার দুটি সংসার ভেঙে যাওয়ার বিচার শালিসের মাধ্যমে সমাধান করেছেন।


Top

 

বাংলাদেশের উন্নয়ন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা: প্রণব মুখার্জি


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ‘দক্ষিণ এশিয়ার সেরা’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে গত ১৪ নভেম্বর ৩৫তম ভারতীয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (আইআইটিএফ) ২০১৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের এই প্রশংসা করেন তিনি। বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাত হাজার প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নিচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ “ফোকাসড কান্ট্রি” এবং আফগানিস্তান “পার্টনার কান্ট্রি” হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় ভালো লাগছে। এর মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারতের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতিষ্ঠান মেলায় বেশি করে অংশ নেওয়াতেও আমি আনন্দিত।’
ভারতের রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আইআইটিএফ প্রতিবেশী দেশসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর একটি সর্বজনীন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম। অংশগ্রহণমূলক অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ভারতের এই উদ্যোগ উন্নয়নশীল অনেক দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলি ও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ১৫ দিনব্যাপী এই বাণিজ্য মেলার আয়োজন দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে নভেম্বরের ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রথম পাঁচ দিন ব্যবসায়ীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। নভেম্বরের ১৯ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

 

মিয়ানমারকে অভিনন্দন জাতিসংঘ মহাসচিবের

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
‘৮ নভেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ, গৌরবজনক এবং উৎসাহব্যঞ্জক অংশগ্রহণের জন্য মিয়ানমারের জনগণকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন’ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন। তিনি এই নির্বাচনকে গণতন্ত্রের উত্তরণে মিয়ানমারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে স্বাগত জানান বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন বানের একজন মুখপাত্র।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তিনি স্বীকার করেন, বিশেষভাবে প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সাহস এবং দূরদৃষ্টি, যার নেতৃত্ব সংস্কার প্রক্রিয়ার এই নির্ধারণী পর্যায়ে অগ্রগতি অর্জনে সহায়তা করেছে।’ মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলসমূহ, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং অন্য যারা এই নির্বাচনকে এরকম একটি তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্যে পরিণত করতে নিরলসভাবে অবদান রেখেছেন তাদের সবাইকে জাতিসংঘ মহাসচিব ইতোমধ্যে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ‘এ কথা বলার সময় তিনি দুঃখজনকভাবে সতর্ক করে দেন যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি অংশের ভোটাররা বিশেষভাবে রোহিঙ্গারা ভোট দেয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং বেশ কিছু লোক প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হয়েছেন।’।



যুক্তরাজ্যে হাজারো শিশু নির্যাতনের ঘটনা থাকে অন্তরালে

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

যুক্তরাজ্যে প্রতি আট শিশুর মধ্যে একজনই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সেখানে যে হারে শিশু নির্যাতনের খবর পাওয়া যাচ্ছে তার প্রকৃত সংখ্যা অনেকগুণ বেশি। সে হিসাবে হাজার হাজার শিশু নির্যাতনের চিত্র রয়ে যাচ্ছে লোকচক্ষুর অন্তরালে।
দেশটির পুলিশ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সেখানে শিশু নির্যাতনের যে চিত্র পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, ওই সময়ে ৫০ হাজার শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু ওই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এ সংখ্যা অনেকগুণ বেশি। শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘চিলড্রেন কমিশনার’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই সময়ে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার। সে হিসাবে শতকরা ৮৫ ভাগ নির্যাতনেরই কোনো খবর নেই। গবেষণায় বলা হয়েছে, পারিবারিক লোকলজ্জার কারণেই এ জিনিসগুলো এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, পুলিশ, সমাজ সেবার বিভিন্ন সার্ভিস এবং স্কুলগুলো এ বিষয়গুলো কীভাবে করছে তা দেখভালের জন্য একটি টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, দুই তৃতীয়াংশ শিশু নির্যাতনই পারিবারিক পরিবেশে কিংবা ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে হয়ে আসছে। ৭৫ ভাগ কিশোরীই এসবের শিকার হচ্ছে। শিশুটি এ ব্যাপারে তার পরিবার কিংবা অন্য কাউকে জানালেও এতে তার কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। সংস্থাটির প্রধান অ্যানে লংফিল্ড বলেন, এ বিষয়গুলো আমাদের জরুরিভিত্তিতে চিহ্নিত করার সময় এসেছে। প্রতিহত করতে হবে পরিবার থেকে। দূরে রাখতে হবে ‘বিশ্বাসী’ সঙ্গ থেকে।


 

Top
 

 

ঘুরে এলাম বেঙ্গালুর
এডভোকেট আবু মোত্তালেব বাদল

 


মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধির লক্ষে ভ্রমন জরুরী। সীমাবদ্ধ জায়গার- বাইরে বৃহত্তর ভূমন্ডলে, ভ্রমনের ফলে মানুষ জানতে পারে অপর সমাজের সংস্কৃতি, জীবন যাপন আর উন্নয়ন বা অবনতির বাস্তব তথ্য আবার সৃষ্টি লিলার দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য সমূহ। মূলত আমাদের এই ভ্রমন শুরু চিকিৎসার প্রয়োজনে গত ২৭.৭.১৫ তারিখ রোজ সোমবার রাজশাহী হতে মাইক্রোবাস যোগে আমরা পাঁচজন দর্শনা-গেদে বর্ডারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হই। সকাল ১০.০০ ঘটিকায় দর্শনা সীমান্তে কাষ্টম চেকিং এর কাজ শেষ করে গেদে রেলওয়ে ষ্টেশনে পৌছে কাষ্টমের কাজ শেষ করি। তার পর ১১.৪০মি: ট্রেনে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। ইলেকট্রিক ট্রেনটি সত্যিই বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে চলছিল। যদিও ট্রেনটি লোকাল ছিল কিন্তু কোথাও সামান্য সময়ের অপচয় হতে দেখিনি। নিদৃষ্ট ষ্টেশনে দাড়াচ্ছিল বটে তবে তা তি সামান্য সময়ের জন্য। যাত্রীরাও অতিদ্রুত উঠানামার কাজ শেরে নিতে অভ্যস্ত মনে হল। নিয়মিত ছন্দে ট্রেন ছুটে চলছে কোলকাতার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ষ্টেশন অতিক্রম করে। আমাদের নামার কথা ছিল খোদ কোলকাতার শিয়ালদহ ষ্টেশনে- কিন্তু আমাদের অগ্রবর্তী দলের অমি ও পলাশের পরামর্শে নামতে হল দমদম ষ্টেশনে। এখান হতে পাতাল ট্রেনে কোলকাতা নিউমার্কেট সংলগ্ন ইসপ্লেনেট ষ্টপেজে নামি। এখান হতে ট্যাক্সি যোগে সদর স্ট্রীট এর একটি আবাসিক হোটেলে উঠি।আমাদের ভ্রমন মূলত মোঃ আশরাফুল ইসলাম (বাচ্চু) এর হার্টের চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুর যাওয়া। আমরা মোট ছিলাম পাঁচজন এর মধ্যে চার জনেরই চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। শুধু আমি সুস্থ শরীরে তাদের মধ্যে যোগ দিয়েছিলাম। বেঙ্গালুরের ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের জন্য আমাদের কলকাতায় দুই দিন থাকতে হয়েছিল। এই অবসরে আমাদের কোলকাতার কিছু দর্শণীয় স্থান পরিদর্শন করার সুযোগ হয়েছিল- তার মধ্যে উল্লোযোগ্য - ভিকটোরিয়া মেমোরিয়াল পার্ক সেথ পাথরের বিশাল সৌধ, মহারানি ভেকটরিয়ার স্মৃতিসৌধ স্থাপত্য ভাস্কার্যে ভরা বিশাল ভবন, চূড়ায় রয়েছে পাখাওয়ালা মূর্তি, চারিদিকে দিঘী/লেক, ভেতরে পান্ডুলিপি, চিঠিপত্র তৎকালীন সময়ের আগ্নেয়াস্ত্রসহ নানান জিনিসপত্রের গচ্ছিত সৌধের ভিতরে দেখে বাইরে এলাম। গেটের উল্টা দিকে রাস্তা পার হয়ে কিছু হালকা নাস্তা সেরে নেই তখন দেখতে পাই সু-সজ্জিত দুই ঘোড়ার গাড়ি, ফাঁকা ময়দানের ধারে সংরক্ষিত এলাকায় ইদুরের সমারহ মাটির মধ্য থেকে বের হচ্ছে আবার ভেতরে প্রবেশ করছে। ইদুরের এই লিলা-খেলা দেখে ভাল লাগলো। ওখান থেকে ট্যাক্সি যোগে গঙ্গা তীরে মিলোনিয়াম পার্কের যাওয়ার পথে আমাদের নজরে পড়ে ইডেন গার্ডেন, আকাশবানী ভবন, কোলকাতা কোর্ট ভবন ইত্যাদি শেষে মিলোনিয়াম পার্ক পরিদর্শন করি। এর পর গঙ্গাতীরের ব্যস্ততা দেখতে দেখতে বুঝতেই পারি নদী পারাপারে ফেরীর ব্যবস্থা রয়েছে- আমরাও কৌতুহলী হয়ে পাঁচ রুপি করে টিকিট কেটে আরমেনিয়াম জেটির নিদৃষ্ট ফেরিতে উঠে পড়ি। ফেরী হাওড়া ব্রিজের নিচ দিয়ে ওপারে হাওড়া ষ্টেশন ঘাটের দিকে চলছিল। নদীর মধ্য হতে হাওড়া ব্রীজ এবং দুধারের সুরোম্য শহর দেখতে আমাদের রুগির শুধু ঔষধের ব্যবস্থা দিলেন। আমরা গিয়েছিলাম মূলত ডাঃ দেবী প্রশাদ শেঠীর কাছে চিকিৎসা সেবার লক্ষে কিন্তু আমাদের রুগীর অবস্থা তত শোচনীয় নয় বিধায় তার সাক্ষাত ছাড়াই আমাদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়। অবশ্য পরে বিশেষ অনুগ্রহে ও ব্যবস্থাই বাচ্চু ভাইয়ের স্ত্রী এবং সংগিয় বগুড়ার পারভিন আপা। ডাঃ দেবী প্রশাদ শেঠীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছিলেন। উনি রুগীর সিডি দেখে ঔষধের ব্যাবস্থা পত্রই বহাল রাখেন। উল্লেখ্য যে আমাদের রুগীকে বাংলাদেশে একাধিকবার অপারেশন করার তাগিদ দিয়েছিলেন স্থানীয় ডাক্তারগন। এছাড়াও আমার দেখা/জানা ঘনিষ্ট বড় ভাই জিনি আইন পেশায় জড়িত জনৈক ভদ্রলোককে দেশে বার বার অপারেশনের তাগাদা দেয়া হয়েছিল- কিন্তু তিনি উল্লেখিত ব্যাঙ্গালুরের উক্ত প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চেক আপ শেষে হার্টের অপারেশন ছাড়াই শুধু ঔষধের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ফিরে আসেন এবং এখন ও সুস্থ্য রয়েছেন। আমাদের সুযোগ হয়েছিল সংলগ্ন ইন্ডাষ্ট্রীয়াল এরিয়া কিছুটা ঘুরে দেখার। বিশাল বিশাল পাথর কেটে টাইলস তৈরী করা হচ্ছিল এবং কোথাও কুচি পাথর আর সিমেন্ট মিশ্রিত ব্লক তৈরী করা হচ্ছিল আমাদের দেশের ইটের মত ঐ ব্লক গুলি দিয়ে ভবন নির্মান করা হয়। ব্লক গুলি ইটের চেয়ে সব দিকেই কিছুটা বড় মনে হল। বিদুৎ ব্যবস্থা আমাদের মতন যখন তখন চলে যাওয়া বা কখনও আমাদের মত লোড সেডিং আমরা থাকা অবস্থায় চোখে পড়েনি। (চলবে)

 

Top
 

মানবাধিকার ও আজকের বাস্তবতা
মুহ্ম্মাাদ জাহাঙ্গীর আলম

 



মানবাধিকার শব্দটি বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত একটি শব্দ। জাতিসংঘ সহ মানবাধিকার সংগঠন গুলি মানবাধিকার আন্দোলন জোরদার করলেও পদে পদে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। মানবাধিকার লংঘনের মত অপরাধ কমিয়ে আনার জন্য আমাদে উদার মন মানসিকতা সহ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন। জাতিসংঘ ও সংবিধানে ঘোষিত মানবাধিকার ধারা সমূহের রক্ষা ও বাস্তবায়নের জন্য সর্বাগ্রে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। মানবাধিকার সংক্রান্ত আইনের প্রতি আমাদের উদাসীনতার জন্য গুরুতর মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর বিশ্বে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি অনেকের বিবেককেই নাড়া দিয়ে যায় আর তখন বিষয়টি অ্যানা ইলিয়নর রুজভেল্ট সর্বপ্রথম বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেন। মানবাধিকারের প্রবক্তা অ্যানা ইলিয়নর রুজভেল্ট এর আহবানে জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর সাধারণ অধিবেশনে Universal Declaration Of Human Rights (UDHR প্রস্তাব গ্রহণ করে। অ্যানা ইলিয়নর রুজভেল্ট ছিলেন তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্টের ফাস্টলেডি এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (১৯৩৩-১৯৪৫) ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট এর স্ত্রী।
Human Rights অর্থ Rights Held To be Justifiable Belonging to any person” সমাজের সকল স্তরে সব মানুষের জন্মগত অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। যা আমাদের শাসনতন্ত্রের ১৭ নং অনুচ্ছেদে প্রতিফলিত হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন-২০০৯ এর ধারা- ২ (চ) অনুসারে মানবাধিকার অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত কোন ব্যক্তির জীবন, অধিকার, সমতা ও মর্যাদা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আদালত দ্বারা বলবৎ যোগ্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে ঘোষিত মানবাধিকার জাতিসংঘ বিশ্বে হিউম্যান রাইটস বা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে Universal Declaration Of Human Rights (UDHR)  কে চারটি অংশে ভাগ করে যথা: ০১। মানুষের শাসনতান্ত্রিক অধিকার অর্থাৎ দাসমুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার অধিকার, ০২। রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ০৩। আত্মিক, পাবলিক এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থাৎ ধর্মপালনের ও সংগঠন করার অধিকার। ০৪। সামাজিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার। এ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি তদারকির জন্য জাতিসংঘের রয়েছে আলাদা কার্যক্রম। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত‘ প্যারিস নীতিমালার আলোকে বাংলাদেশ সরকার সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ পাস করে। প্যারিস নীতিমালানুযায়ী সত্যিকারের একটি মানবধিকার কমিশন হবে। ০১। স্বতন্ত্র আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। ০২। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল এবং স্বাধীন ভাবে অর্থ খরচ করতে সমর্থ ০৩। যে কোন রাষ্ট্রীয় সংস্থার স্বায়ত্ব শাসন অথবা এর পরে নিজস্ব প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাতন্ত্র্য সত্তা থাকবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ ব্যবস্থা (ইউনিভার্সল পিরিওডিক রিভিউ (টচজ) এ পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতি সাড়ে চার বছর অন্তর জাতিসংঘের সদস্য প্রতিটি রাষ্টের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে। এশিয়ান এন.জি.ও নেটওয়ার্ক অন ন্যাশনাল হিউমান রাইট্স ইনষ্টিটিউশন্স (এ.এন.এন আই.)হচ্ছে মানবাধিকার সুরক্ষা উন্নয়নে এশিয়া অঞ্চলের জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান গুলির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি নেটওয়ার্ক। ২০০৭ সালে মানবাধিকার ফোরাম, বাংলাদেশ গঠিত হয় যার উদ্দেশ্যে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সঠিক চিত্র তুলে ধরা এবং সে পরিস্থিতির উন্নয়নে সম্ভাব্য ব্যবস্থার সুপারিশ করা।
শাসক গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মানবাধিকার সংগঠন কাজ করলে ও অনেকে আবার মানবাধিকার লংঘন সংক্রান্ত বিষয় গুলো নীরবে সমর্থন করে অর্থাৎ প্রতিবাদ করে না। মানবাধিকার কর্মীগণ স্বচ্ছ বা সৎ না হলে মানবাধিকার আন্দোলনের সুফল পাওয়া যায়না। সংবিধানসহ আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত মানবাধিকার রক্ষা ও বাস্তবায়নে মানবাধিকার আন্দোলনে নি:স্বার্থ ভাবে শরীক হলে মানবাধিকার সংগঠন বা কর্মীর দূর্ণাম হওয়ার কথা নয়। মানবাধিকার আন্দোলনের দূর্বল দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন হয়ে কাজ করলে এবং সরকারের সহযোগীতা পেলে বর্তমানে নাজুক মানবাধিকার পরিস্তিতির উন্নতি সম্ভব ।
সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, লক্ষীপুর জেলা শাখা।


Top

ইইউ ও ইউনান নরমালের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ
 

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (ইইউ) এবং চীনের ইউনান নরমাল ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধি দল সোমবার ইউনূস সেন্টারে নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইইউর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের চৌধুরী, ভিসি ড. আবদুর রব, প্রোভিসি ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক অফিসের প্রধান আবু রাসেল, ইউনানের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. ইয়াচুন, ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ প্রমুখ। ড. ইউনূস প্রতিনিধি দলকে উভয় দেশের জ্ঞান-বিজ্ঞান বিনিময়ে যৌথ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে আরও জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে উন্নত দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বাধুনিক শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান আহরণ করতে হবে।
Top
 

চিড়িয়াখানায় মানুষ ধরার ফাঁদ!

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানী ঢাকায় বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা হাতে গোনা। তার ওপর অব্যবস্থাপনার কারণে এই অল্পসংখ্যক বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়ার আগে দর্শক দুইবার ভাবছেন। ঢাকা চিড়িয়াখানা একসময় সব বয়সী মানুষের জনপ্রিয় একটি বিনোদন কেন্দ্র হলেও এখন সঙ্ঘবদ্ধ অসৎ চক্রের কারণে স্থানটি ভীতিকর বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হতে চলেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরে এবং বাইরে কিছু ক্যান্টিন ও রেস্টুরেন্টের মালিক-কর্মচারীরা বেড়াতে আসা দর্শকদের জিম্মি করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আদায় করছেন। কিছু ক্ষেত্রে টাকা না পেয়ে দর্শকদের মোবাইল ফোন সেটসহ অন্যান্য জিনিস রেখে দেওয়া হচ্ছে। আর টাকা না দিতে চাইলে তাদের সঙ্গে করা হচ্ছে দুর্ব্যবহার। এমনকি গায়ে হাত পর্যন্ত তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর ৩০-৩৫ লাখ দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় আসেন। আর দীর্ঘদিন ধরে অসৎ চক্র চিড়িয়াখানার বাইরে এবং ভিতরের বেশ কিছু ক্যান্টিন-রেস্টুরেন্টে দর্শকদের কাছ থেকে স্ন্যাকস ও কোমল পানীয় বিক্রি করে জোর করে গলা কাটা দাম আদায় করছে। মূলত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া ব্যক্তিদের থেকে ভাড়ায় নেওয়া এসব ক্যান্টিন ও রেস্টুরেন্ট পরিচালনাকারীরা এ চক্রের সদস্য। দর্শনার্থীরা খেতে না চাইলেও একটি কোমল পানীয়র বোতল জোর করে খুলে তাদের সামনে দেওয়া হয়। আর এ জন্য তাদের কাছ থেকে ১০ গুণ বেশি দাম আদায় করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিড়িয়াখানার ভিতর ও বাইরে কাকাতুয়া, শতমূল, ঈগল, ময়ূর, গাংচিল, মৃগয়া, দোয়েলসহ বিভিন্ন নামের ক্যান্টিন ও রেস্টুরেন্টে জোর করে দর্শকদের ডেকে নিয়ে এক প্লেট খাওয়ার অযোগ্য চটপটির জন্য দাম রাখা হচ্ছে ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা। আর পানিসহ কোমল পানীয় বাবদ রাখা হচ্ছে ১০০ থেকে ৮০০ টাকা। এ পরিমাণ টাকা দিতে না পারলে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র জোর করে রেখে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে এবং মানসম্মানের ভয়ে অনেকেই এসব বিষয় পুলিশকে জানাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা জানান, মূলত প্রতি বছর এসব ক্যান্টিন ও রেস্টুরেন্ট চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ইজারা দেয়। এরপর ইজারাদাররা ১০ গুণ বেশি দামে তা অন্যদের কাছে ভাড়া দেন। যারা ভাড়া নেন তারা বেশি মুনাফার জন্য চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা দর্শকদের কাছ থেকে গলা কাটা অর্থ আদায় করেন। কিছু দিন আগে চিড়িয়াখানায় সস্ত্রীক বেড়াতে গিয়ে অপ্রীতিকর অবস্থার সম্মুখীন হন একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চিড়িয়াখানা ঘুরে বাইরে এসে বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রেস্টুরেন্টগুলোর একটিতে গিয়ে চটপটির অর্ডার দেন। কিন্তু চটপটির সঙ্গে অর্ডার না দিলেও তাদের কাছে দুটি জুসের বোতল খুলে সামনে রেখে যান এক কর্মচারী। ‘পানীয় খাব না’- এ কথা বলার পরও জোর করে তা গছিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ‘চটপটি মুখে দিতেই তার বিশ্রী স্বাদের কারণে এক চামচ খাওয়ার পর আর মুখে দিতে পারলাম না। খাওয়ার আগে প্রতি প্লেট চটপটির দাম ৩০ টাকা করে চাওয়া হলেও খাওয়া শেষে বিল দিতে গিয়ে জানতে পারলাম আমাদের বিল ২০০০ টাকা ধরা হয়েছে। কীভাবে এত টাকা- জানতে চাইলে সেই কর্মচারী বলেন, একটি জুস ৫০০ করে ১০০০ আর চটপটির দাম রাখা হয়েছে ১০০০ টাকা। প্রথমে এ দাম দিতে অসম্মত হলে আমাদের ঘিরে ফেলেন দোকানের পাঁচ-ছয় জন কর্মচারী। তাদের বয়স বেশি না। ১২ থেকে ১৫ বছর। লক্ষ্য করে দেখলাম তাদের সঙ্গে বাইরে আরও কয়েকজন যুবক আমাদের লক্ষ্য রাখছে। তর্ক করতেই আমাদের বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। শেষ পর্যন্ত মানসম্মানের কথা চিন্তা করে আমি পকেটে থাকা ১০০০ টাকা দিয়ে সে যাত্রায় রক্ষা পাই।’ এ ছাড়া সম্প্রতি চিড়িয়াখানার বাইরে আরেকটি রেস্টুরেন্টে কলেজশিক্ষার্থীদের একটি দল গিয়েও সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ছোট একটি পিজা খেতে গেলে দলটির কাছ থেকে ৩০০০ টাকা চাওয়া হয়। এরপর সেই দলে থাকা ছেলেদের ধমক দেওয়া হয় এবং মেয়েদের অশালীন কথা বলা হয়। শেষ পর্যন্ত দলটির কাছ থেকে শুধু বাড়ি যাওয়ার বাস ভাড়া রেখে সবার মানিব্যাগ ও পার্স চেক করে সঙ্গে থাকা সব টাকা রেখে দেওয়া হয়। গতকাল চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা এক দর্শক রনি বলেন, ‘আমার মা ও খালাকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যাই। ভিতরে রেস্টুরেন্টগুলোর ডাকাতির কথা আমি আগে থেকেই জানতাম। এ কারণে কিছু খাইনি। কিন্তু চিড়িয়াখানার ভিতরে থাকা রেস্টুরেন্ট কর্মচারীসহ অসংখ্য হকারের উৎপাতে শান্তিতে পশু-পাখিও দেখা যাচ্ছিল না। তারা এমনভাবে আমাদের খাবার খেতে ডাকছিল যে, আমরা তড়িঘড়ি সেখান থেকে সরে যাই। এমনকি ভিতরে টয়লেটে যাওয়ার জন্য ৫ টাকা লেখা থাকলেও আমাদের কাছ থেকে ১০ টাকা রাখা হয়।

Top

 


বিনা মূল্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এইচআইভি পরীক্ষা হচ্ছে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

এইচআইভি শনাক্ত করতে ১০টি সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে রক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র চালু হয়েছে। কিন্তু খুব বেশি মানুষ এসব কেন্দ্রে এসে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই বিশেষ সেবার কথা জানে না বলে মানুষ এসব কেন্দ্রে আসছে না।
সরকারের জাতীয় এইডস/এসটিডি কর্মসূচি কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, এইচআইভি শনাক্ত করার জন্য সরকারি অর্থায়নে ২০টি কেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে মে মাস থেকে। ইতিমধ্যে ১৮টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি চালু হয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে। বাকিগুলো এনজিও কার্যালয়ে।
একাধিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় এইডস/এসটিডি কর্মসূচি ও সংশ্লিষ্ট তিনটি এনজিওতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মে মাস থেকে নভেম্বরের ২৭ তারিখ পর্যন্ত ১০টি সরকারি হাসপাতালে ৫২৬ জন রক্ত পরীক্ষা করিয়েছেন। অর্থাৎ একটি হাসপাতালে মাসে গড়ে ১০ জন মানুষ সেবা নিতে আসছে। অনেকে বলেছেন, সংখ্যাটি অনেক কম।
এ ব্যাপারে জাতীয় এইডস/এসটিডি কর্মসূচির উপব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে এইচআইভি পরীক্ষা হচ্ছে, এটা অনেকেরই জানা নেই। তাই মানুষ কম আসছে।
সরকারি হিসাবে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে এইচআইভি/এইডস রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ২৪১ জন। এ পর্যন্ত এইডসে আক্রান্ত মানুষ শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৯৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৪৭২ জন। দেশে এইচআইভি/এইডসের প্রকোপ খুবই নিম্নপর্যায়ে। তবে গত সপ্তাহে জাতিসংঘের এইডসবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডস তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে এইচআইভি/এইডসের প্রকোপ কম হলেও সংক্রমণ থেমে নেই। এ খাতে আন্তর্জাতিক অর্থ-সহায়তা কমে যাওয়ায় দেশটি এখনো ঝুঁকির মধ্যে আছে।
এর আগে সাধারণ মানুষ এইচআইভির পরীক্ষা করাতেন বিভিন্ন এনজিওতে। গোবাল ফান্ডের অর্থ-সহায়তার কারণে এনজিওগুলো বিনা মূল্যে এই সেবা দিতে পারত। সরকারি ও বেসরকারি সূত্র জানিয়েছে, এইচআইভি/এইডস খাতে গোবাল ফান্ডের অর্থায়ন কমে যাচ্ছে। তাই সরকার নিজের অর্থে এইচআইভি/এইডস খাতে কাজ শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই কেন্দ্র চালু হয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ সেবা পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খুব শিগগির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এই কেন্দ্র চালু হবে। সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রগুলো চালু হলেও এগুলো পরিচালনা করছে আশার আলো সোসাইটি, মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ এবং ক্যাপ নামের তিনটি এনজিও। প্রতিটি কেন্দ্রে এদের তিনজন করে কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘এইচআইভি/এইডস পরীক্ষা ও সেবাকেন্দ্র’ চালু হয়েছে মেডিসিন বহির্বিভাগে। গতকাল শনিবার সকালে ওই কেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় আশার আলো সোসাইটির পরামর্শক ও প্রশাসক সাবিহা ইয়াসমিনের সঙ্গে। তিনি জানান, এইচআইভি শনাক্তের জন্য এ পর্যন্ত ৩৫ জন এই কেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছেন। এঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী, ছাত্র, পরিবহনশ্রমিক, শিক্ষক, কৃষক, প্রবাসী শ্রমিক, পোশাকশ্রমিক আছেন।
তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে কেউ এই কেন্দ্রে এসে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জেনে যেতে পারেন তিনি এইচআইভি সংক্রমিত কি না। রক্ত দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল জানানো হয়। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হয়।
আশার আলো সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক হাবিবা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে এইচআইভির পরীক্ষা হচ্ছে, এটা বেশি মানুষকে জানাতে হবে। অন্যদিকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অনেক সময় এইচআইভির সংক্রমণের ব্যাপারে কাউকে কাউকে সন্দেহ করেন। এ রকম সন্দেহ হলেই ওই ব্যক্তিদের এই কেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠাতে পারেন।
পানি বিশুদ্ধ করার সঠিক উপায়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মানবদেহের ৭৫ শতাংশই পানি। পরিপাক, সংবহন, পুষ্টিকণা পরিবহন, খাদ্য শোষণ ও বিপাক, তাপমাত্রা ও ভারসাম্য রক্ষাসহ শরীরের প্রতিটি কাজে পানির প্রয়োজন হয়। অথচ এই পানিই কখনো কখনো নানা রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, টাইফয়েড ইত্যাদি রোগ আসলে পানিবাহিত।
জাতিসংঘের ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি নয়জনের একজন বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানির আওতায় নেই। প্রতি তিনজনে একজন সঠিক পয়োনিষ্কাশনের আওতার বাইরে। ফলে দেখা দিচ্ছে নানা রোগবালাই। কেবল বিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন পানি ব্যবহারের মাধ্যমে দুনিয়াজুড়ে পানিবাহিত রোগ এবং এ কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি ২১ শতাংশ কমানো যেতে পারে।
পানি বিশুদ্ধ করার সঠিক পদ্ধতি কোনটি, এ নিয়ে অনেকেরই আছে বিভ্রান্তি। পানি ফুটিয়ে পান করা ভালো, নাকি ফিল্টার করে, নাকি দুটোই?
* পানি ফুটিয়ে নেওয়া সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি। এতে জীবাণু, পরজীবী এমনকি তার ডিম ও লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়। পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কমপক্ষে ১০ মিনিট ধরে ফোটাতে হবে। তারপর তা ঠান্ডা করে কলসি, কাচের জগ বা পরিষ্কার পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। রেখে দেওয়া ফোটানো পানিতে আবার জীবাণুর আক্রমণ হতে পারে—বিশেষ করে, যদি তা বেশি দিন রেখে দেওয়া হয়। তাই রোজকার পানি রোজই ফুটিয়ে নেওয়া ভালো।
* পানি ফোটালে জীবাণু ও পরজীবী ধ্বংস হয় বটে, তবে সব রাসায়নিক উপাদান নষ্ট হয় না। ফোটানো পানিতে কখনো কখনো ক্যালসিয়াম কার্বনেট জাতীয় তলানি পড়ে। এর সবগুলো যে খারাপ, তা নয়। তবে খনিজ উপাদানের কারণে পানি ঘোলাটে বা অপরিচ্ছন্ন দেখালে ছেঁকে নেওয়া যেতে পারে।
* ফোটানো পানি আবার ফিল্টার করা প্রয়োজন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আসে। পানি ফোটানোর মাধ্যমেই ক্ষতিকর জীবাণু দূর করা সম্ভব, তবে সন্দেহ হলে ফিল্টার করা যায়। বেশির ভাগ ফিল্টার আসলে পানির স্বাদ ও গন্ধকেই উন্নত করে।
* ভ্রমণে, বনজঙ্গলে, ক্যাম্পে বা দুর্গত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা হয়। এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়, তবে জরুরি পরিস্থিতিতে কাজ চালানো যেতে পারে।
* বাইরে বা ভ্রমণের সময় কেনা পানির চেয়ে বাড়ি থেকে বোতলে পানি নেওয়ার চেষ্টা করুন। কাচ ও স্টিলের পাত্রে পানি সংরক্ষণ করাই সবচেয়ে ভালো।


Top

 দাফনের একদিন পর কেঁদে উঠল কিশোরী

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

দাফনের একদিন পর কংক্রিটের তৈরি কবর এর অভ্যন্তরে স্থাপিত কফিন এর ভেতর থেকে কেঁদে উঠল এক কিশোরী। সাহায্যের জন্য আর্তনাদও করেছিল। কিন্তু আত্মীয়দের প্রাণান্তকর চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা আর হয়নি। ফের মরেই গেল নেইসি পিরেজ নামে হ ুরাসের ১৬ বছর বয়সী কিশোরীটি। কিশোরীর আর্তনাদে আত্মীয়রা কংক্রিটের তৈরি কবর টি ভাঙ্গতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কিন্তু কফিন টি বের করে আনার আগেই এবার স্থায়ীভাবে তার প্রাণপাখিটি উড়ে গেল। কফিন টি বের করে আনার পর আত্মীয়রা দেখতে পান যে, এর উপরের স্বচ্ছ কাঁচটি ভাঙ্গা। আর কিশোরীর হাতের আঙ্গুলের ডগাগুলো থেতলানো। সম্ভবত বাঁচার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেই মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে হাত দিয়েই কাঁচটি ভেঙ্গে ফেলেছিল ওই কিশোরী। কফিন থেকে বের করে এনে ডাক্তাররা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মধ্যে প্রাণের আর কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি। ফলে পুনরায় তাকে একই কবর এ দাফন করা হয়। মিস পেরেজ নামে ওই কিশোরী মৃত্যুর সময় তিন মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন। পশ্চিম হ ুরাসের লা এন্ত্রাদাতে নিজবাড়িতে অবস্থানকালে গত পরশু গভীর রাতে প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে বের হন টয়লেটে যাওয়ার জন্য। ধারণা করা হচ্ছে, গুলি-বোমার বিস্ফোরণের আওয়াজে আতঙ্কিত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু জ্ঞান হারানোর পর তার নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখে তার ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন বাবা-মা ভাবেন যে তাকে হয়তো জ্বীন-ভুতে পেয়েছে বা কোনো শয়তানি আত্মা তার দেহে ভর করেছে। যেই ভাবা সেই কাজ। তারা মেয়েকে ডাক্তারের কাছে না নিয়ে স্থানীয় খ্রিস্টান ধর্মগুরু বা পাদ্রিকে ডেকে আনেন। পাদ্রি এসে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন মন্ত্র প্রয়োগ ও তুক-তাক করেও কোনো কুল কিনারা করতে পারেন নি। অবেশেষে কিশোরীর দেহটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দাফনের সময় কিশোরীটিকে তার বিয়ের পোশাকেই কবর দেওয়া হয়েছিল। কিশোরী স্ত্রীকে অকালে হারানোর শোকে কাতর স্বামী রুডি গঞ্জালেস দাফনের একদিন পরই পিরেজের কবর পরিদর্শনে যান। আর তখনই তিনি কবর এর ভেতর থেকে স্ত্রীর আর্তনাদ শুনতে পান। সঙ্গে সঙ্গে গঞ্জালেস আত্মীয়দের ডেকে পাঠান। সবাই মিলে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালান পিরেজকে জীবিত উদ্ধারের। স্লেজ হ্যামার দিয়ে ইট-পাথরের তৈরি কবরটি মুহূর্তেই ভেঙ্গে ফেলা হয়। গঞ্জালেস স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অকালে স্ত্রীকে হারিয়ে আমি শোকে কাতর হয়ে পড়েছিলাম। ফলে পরদিন আমি তার কবরের পাশে গিয়ে বসেছিলাম। এ সময় কবর এ হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখছিলাম। আর ঠিক সে সময়ই আমি ভেতরে তাকে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ শুনতে পাই। কিন্তু প্রথমে আমি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। পরে কয়েকবার খেয়াল করে শোনার পর আমার মনে আশার আলো জেগে ওঠে।
গোরস্থানের নিরাপত্তা প্রহরী জেসাস ভিলেনোভা আমাকে বলেন যে তিনিও রাতে আর্তনাদ শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু জেসাস কল্পনাও করতে পারেননি যে গোরস্থানের কোনো কবরের ভেতর থেকে কেউ আর্তনাদ করছিল। জেসাস সাংবাদিকদের বলেন, দুপুর বেলাতেই পিরেজের স্বামী পাগলের মতো তার পরিবারের লোকজনদের নিয়ে গোরস্থানে ছুটে আসে। এরপর কবর ভেঙ্গে তার লাশ উদ্ধার করে সান পেদ্রোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তাররা হাজার চেষ্টা করেও আর তার প্রাণ ফেরাতে পারেননি। ডাক্তাররা বলেন, ‘মিস পিরেজ সেদিন রাতে আতঙ্কে জ্ঞান হারানোর ফলে হয়তো তার হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর এতেই হয়তো ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেছিল। অথবা এমনও হতে পারে তার হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়নি। কিন্তু আতঙ্কের ফলে পুরো দেহের মাংসপেশি অবশ হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে হয়তো তার পূর্ণ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মাংসপেশী অবশ হয়ে পড়ায় ডাক্তাররা তার হৃদস্পন্দন ধরতে পারেননি। এমনকি এমনও হতে পারে তার পূর্ণ জ্ঞান থাকা অবস্থায়ই তাকে দাফন-কাফন করা হয়েছিল। কিন্তু সব কিছু বোঝার পরও হয়তো সে কিছুই বলতে পারছিল না। কারণ চোখের পাতাটিও নাড়ানোর ক্ষমতা ছিল না তার।
দাফনের একদিন পর কবরের ভেতরে জ্ঞান পুরোপুরি ফিরে আসার পর অক্সিজেনের অভাবেই তার মৃত্যু হয়। ওই কিশোরীর চাচাতো বোন ক্যারোলিন পিরেজ বলেন, ‘তাকে উদ্ধারের পর আমি তার দেহে হাত দিয়ে দেখেছি। তখনও তার শরীর গরম ছিল। এমনকি তার হৃদপিন্ড ধুকপুকানিও শুনেছি আমি। তার কপালটি ছিল ক্ষতবিক্ষত। হাতের আঙ্গুলগুলোও থেতলানো ছিল। এ থেকেই প্রমাণিত হয় সে বাঁচার জন্য কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিল। কফিন এর কাঁচ ভাঙ্গতে গিয়েই সে এভাবে জখম হয়।’ ক্যারোলিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আশার আলোতে আমাদের মন জ্বলে উঠেছিল। আমরা ভাবছিলাম আমরা হয়তো তাকে ফিরে পেতে যাচ্ছি। কিন্তু কী কষ্টটাই না পেয়ে সে মারা গেল। ফলে আগের চেয়ে অনেক বেশি বেদনাহত হয়েছি আমরা।’
মৃত কিশোরী নেইসি পিরেজের মা অভিযোগ করেন, প্রথমবার ডাক্তারার অতি বেশি তাড়াহুড়ো করে তাকে মৃত ঘোষণা করেছিল।

Top


 

 


Top


 

নারী ও শিশু সংবাদ


 


 

নারীদের পাশে নারী
তদন্তকারী কর্মকর্তারা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অধীনে থাকা ৪৯টি থানায় নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ার পর কোনো থানা যদি মনে করে মামলাটি জটিল, তার তদন্ত ঠিক সেভাবে করতে পারবে না, তখন তা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। নারী তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে নির্যাতনের শিকার নারী খোলামেলাভাবে কথা বলতে পারেন, যা পুরুষ তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হয়তো সেভাবে বলতে পারেন না। নারীরা কিছুটা হলেও দরদ দিয়ে মামলা তদন্ত করেন। এভাবেই বলছিলেন পুলিশের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন।
দেশের একমাত্র নারী সহায়তা ও তদন্তকারী বিভাগ বা উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফরিদা ইয়াসমিন। নির্যাতনের শিকার নারীরা আইনি সহায়তা, কাউন্সেলিং, সাময়িক আশ্রয়সহ (সর্বোচ্চ পাঁচ দিন) বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন এই বিভাগ থেকে। তেজগাঁও থানা কমপ্লেক্সে অবস্থিত এই স্বতন্ত্র বিভাগটি নারী পুলিশ কর্মকর্তা এবং নারী সদস্যদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বাক্-শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ইশারা ভাষায় দোভাষীর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন। ৮২ জন জনবল দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বিভাগটি।
২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা বিভাগটি চলতি বছরের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩)-এর আওতায় ১ হাজার ৪৬৫টি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৭০টি মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে। মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৪৫টি মামলার অভিযোগপত্র দিচ্ছে। যৌতুক, ধর্ষণ, অপহরণ, শ্লীলতাহানি, পাচার, দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপসহ অন্যান্য মামলাসহ ৯৫টি মামলা তদন্তাধীন আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন এক নারী। তিনি স্বামীর অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে শেষ পর্যন্ত নারী তদন্ত কর্মকর্তাদের শরণাপন্ন হন। এর আগে স্বামীকে তালাক দেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি তাঁর সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করেন। সাবেক স্বামী ৩২ দিন জেল খেটে এখন জামিনে আছেন। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, নারী তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ অন্যরা আমাকে যেভাবে সহায়তা করেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’
উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (তদন্ত ও প্রশাসন) মুক্তা ধর জানালেন, রাজধানীতে মাইক্রোবাসে গারো তরুণী ধর্ষণসহ একাধিক আলোচিত মামলা পরিচালনা করছেন তাঁরা। নির্যাতনের শিকার নারীরা অনেক সময় শুধু পরামর্শ পেতেও আসছেন এখানে। অনেক নারী থানায় মামলা দায়েরের পর নিজেই বলছেন, তাঁর মামলাটি যাতে নারী তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক কুইন আক্তারের হাতে আটটি মামলা আছে। কুইন আক্তার বলেন, বিভিন্ন ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি আদালতে সাক্ষ্যও দিতে হচ্ছে। সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক সময় নারী তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে অনেকে মানতে চান না।
উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে কর্মরত কর্মকর্তারা ঘটনা ঘটার পর ফোনে খবর পেলে ভিকটিমকে উদ্ধার করে বিভিন্ন সহায়তা দিচ্ছেন। জনবলস্বল্পতাসহ অন্যান্য সীমাবদ্ধতার কারণে ৪৯টি থানায় নারী নির্যাতনের সব মামলার তদন্তের ভার নিতে পারছে না এই বিভাগ। নারী ইন্সপেক্টর থাকার কথা ছয়জন, আছেন মাত্র একজন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ১৪ জন নারী সাব-ইন্সপেক্টর দায়িত্ব পালন করছেন। সংখ্যাটি বাড়ানো প্রয়োজন। এই ১৪ জনের তদন্তকাজের জন্য আছে মাত্র একটি গাড়ি। যে এলাকার ঘটনা, ওই এলাকার থানার সহায়তা নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্তে যাচ্ছেন। তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় আর্মড পুলিশ থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন কর্মরত কর্মকর্তারা।।
 

 হাতীবান্ধায় শিশুবিবাহ বন্ধে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
‘সবাই মিলে শপথ করি, শিশুবিবাহকে না বলি’-এই ¯োগান সামনে রেখে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে এ স্বাক্ষর অভিযান চলে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শিশুবিবাহ বন্ধের জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে চলবে। কার্যক্রমটি উপলক্ষে গতকাল সকালে উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান সেলিম, মাকতুবা ওয়াসীম, সানিয়াজান ইউপি চেয়ারম্যান এনায়াতেুল্লাহ প্রমুখ। আলোচনা সভায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য, আনসার, ভিডিপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ কয়েক শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা বাল্যবিবাহ বন্ধে শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে গণস্বাক্ষরে অংশ নেন। এরপর দুপুরে উপজেলার ফকিরপাড়া ও বিকেলে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদে একইভাবে গণস্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।
ইউএনও মাহবুবুর রহমান বলেন, চলতি মাসের প্রথম দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম লালমনিরহাট সফরে আসেন। ওই সফরে তিনি হাতীবান্ধা এসে এ জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই জনসচেতনতা তৈরিসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ, কাজী, পুরোহিত ও আনসার-ভিডিপি সদস্যদের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে গণস্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে। এই অভিযানে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে।ে।


গৃহে নির্যাতনের শিকার ৮৭ শতাংশ নারী
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
থেমে নেই নারী নির্যাতন। নানাভাবে, অভিনব কায়দায় নারীকে করা হচ্ছে নির্যাতন। কিছু প্রতিবাদ হলেও এসবের যেন নেই কোন প্রতিকার। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কিছু যুগোপযোগী আইন হয়েছে ঠিকই; তবে এসব আইনের বাস্তবায়ন না হওয়ায় নারীর প্রতি নির্যাতন কমছে না। বরং তা বেড়েই চলেছে।
নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিবাহিত জীবনে গৃহে ৮৭ শতাংশ নারী নির্যাতনের শিকার হন। নির্যাতনের এ চিত্রে রয়েছে শারীরিক নির্যাতন, মানসিক, অর্থনৈতিক কিংবা যৌন নির্যাতন। অন্যান্য বয়সের তুলনায় ২০ থেকে ৩৪ বছর বয়সী নারীরাই এই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বেশি। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, যে গৃহ নারীর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হওয়ার কথা, সেই গৃহেও নারীরা নিরাপদ নয়। সেখানেই যদি নির্যাতনের হার ৮৭ ভাগ হয়, তাহলে কর্মক্ষেত্র কিংবা অন্য স্থানে নির্যাতনের হার কত হবে। তারা বলছেন, সময় বদলালেও দেশে নারী নির্যাতনের চিত্র রয়ে যাচ্ছে একই রকম। শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি নারীর জীবনে রয়েছে মানসিক নির্যাতনে ঘটনা। মানসিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে অনেকেই বেছে নিচ্ছে আত্মহননের পথ।
সম্প্রতি কিছু ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পারিবারিক সহিংসতা ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে নারীর চোখ উপড়ে ফেলা, হাত কেটে দেয়া, পা কেটে দেয়া, জিভ কেটে দেয়া, কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সালমা আলী বলেন, নারী নির্যাতনের যে চিত্র আমরা দেখছি, তাতো কেবল গণমাধ্যমে উঠে আসা ঘটনা। তবে দেশের প্রকৃত চিত্র আরো ভয়াবহ। বস্তিতে বসবাসকারী নারীরা প্রায়শই ঘরে বাইরে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন; প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই নির্যাতনের হার আরো অনেক বেশি, সে বিষয়গুলোর সিংহভাগই আমাদের সামনে আসে না।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, নারীর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা যে ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখে মনে হয় সমাজ বিবেকহীনতার দিকে এগুচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সমাজের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে, পরিবার ও রাষ্ট্রের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে।

 


 

Top
 

 

পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

 


 

হাইওয়ে পুলিশ অসহায়!


 

গাইবান্ধায় এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের আনালেরতাড়ী গ্রামের মৃত জন্ডী চরণ মোদকের তরুনী রাধা রানী (১৭) কে এসিড নিক্ষেপের দায়ে আব্দুল খালেক (২২) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন ও ৬০,০০০/- টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দেড় বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। গাইবান্ধা এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা গত ১২ই নভেম্বর/২০১৫ রোজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামী উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন। দন্ড প্রাপ্ত আব্দুল খালেক একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সদর উপজেলার আনালেরতাড়ী গ্রামে ২০০৭ সালের ৬ই নভেম্বর রাতে রাধা রানী ও তার বোন বিউটি রানী তাদের শোবার ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় আব্দুল খালেক কৌশলে ঘরের দরজা খুলে তাদের উপর এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে রাধা রানীর মুখ, বুক ও পিঠের অধিকাংশ স্থান এবং তার বোন বিউটির ঘার ও পিঠের সামান্য অংশ ঝলসে যায়। ঐ ঘটনায় ঐ যুবতীর মা স্নেহলতা মোদক বাদী হয়ে ৭ই নভেম্বর গাইবান্ধা সদর থানায় আব্দুল খালেক কে আসামী করে এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় আব্দুল খালেক বিভিন্ন সময়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যাক্ত করে আসছিল। বিউটি রানী তার প্রস্তাবে সারা না দেওয়ায় খালেক ক্ষুদ্ধ হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল খালেক কে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্র পক্ষের মামলা পরিচালনাকারী কৌশুলী বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও ব্র্যাক মানবাধিকার সেলের আইনজীবি এ্যাডভোকেট আনিস মোস্তফা তোতন জানান, আসামী আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় তার উপস্থিতিতে দীর্ঘ শুনানী শেষে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ৬০,০০০/- টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন বিচারক।


গাজীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসি
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কাপাসিয়ায় স্ত্রীকে ফাঁসির দায়ে জালাল উদ্দীন নামের এক ব্যক্তির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালতের বিচারক। গতকাল গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক এই রায় দেন। গাজীপুরের জিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দীন আহম্মদ জানান, ২০০৯ সালের ২২শে এপ্রিল কাপাসিয়া উপজেলার চর খিরাটি গ্রামের জালাল উদ্দীন (২৫) বিয়ের মাত্র ৪ মাস পর তার স্ত্রী কাকলি বেগমের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কাকলির পিতা ফরিদপুরের নগরকান্দার ইউনুস আলী তার মেয়ের বাসায় এসে মেয়ের গলায় দাগ, বুকে লালচে জখমের চিহ্ন দেখতে পান। কাকলির মরদেহ দেখে সন্দেহ হলে তারা পিতা বাদী হয়ে এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। আর এলাকাবাসি তার স্বামী জালাল উদ্দীনকে আটক করলে সে সবার সামনে স্বীকার করে পারিবাবির কলহের জের ধরে কাকলিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুইপা ও হাত ঘরের চৌকির সঙ্গে বেঁধে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে ও ওড়না প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে কাকলিকে হত্যা করা হয়। পরে গ্রামবাসি তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। মামলায় আসামি গেপ্তার ও তদন্ত শেষে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন। দ বিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচার কার্যক্রম শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কারাবন্দি আসামির এজলাসে উপস্থিতিতে মৃত্যুদ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন।
 

 হাজতখানা থেকে পালালো পুলিশের এসআই
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানীর কাফরুলের এক ব্যবসায়ীকে হত্যা মামলায় আদালত জামিন বাতিল করায় হাজতখানা থেকে পালিয়েছে পুলিশের এক এসআই। তার নাম রেজাউল করিম পাটোয়ারী। তিনি কাফরুল থানায় করা এক ব্যবসায়ী হত্যা মামলার আসামি। গতকাল ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে। ৫ নম্বর জজ আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান তিন আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনজনকেই নেয়া হয় হাজতখানায়। হাজতখানা থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় রেজাউল করিম পাটোয়ারী। একই ঘটনায় পুলিশের অপর এক এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স বাবু ওরফে রতন ওরফে বাবু মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মিরাশ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পলাতক আসামির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। একই সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তারের জন্যও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৯শে ফেব্র“য়ারি সন্ধ্যায় কাফরুল এলাকার ভাঙ্গারির দোকান থেকে ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনকে মামলা আছে তুলে নিয়ে যায় এসআই এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতন। ঐদিন রাত ১১টায় ফারুকের বোন থানায় গেলে থানা হাজতে তার ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পান। পুলিশকে ম্যানেজ করে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করলে ফারুক এসআই নুরুজ্জামান ও সোর্স রতনকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিতে বলেন। টাকা না দিলে মেরে ফেলবে বলেও জানান তিনি। টাকা জোগাড় করতে না পারায় দু’দিন পর ২১শে ফেব্র“য়ারি ফারুককে কাফরুল থানার একটি মামলায় (মামলা নং ৫৭(২)১২) গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত আসামির শরীরে জখমের চিহ্ন দেখে রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। ২২শে ফেব্র“য়ারি কারাগারে ফারুক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কারা হাসপাতালে তার রক্তবমি হলে তাকে ২৮ ফেব্র“য়ারি ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে রাত সাড়ে ১১টায় মারা যান ফারুক। এ ঘটনায় ওই বছরই ১৮ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন ফারুকের বোন পারভীন হক। পরে ৬ই নভেম্বর আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলাটি তদন্ত শেষে গত ১লা মার্চ সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মাজহারুল হক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটিতে পুলিশ ৩০৪ ধারায় (অপরাধজনক প্রাণনাশ) আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলেও আদালত তা নাকচ করে সরাসরি হত্যার অভিযোগে ৩০২ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু তৈয়ব জানান, মামলাটিতে আসামিরা হাইকোর্ট থেকে প্রথম জামিন পায়। পরে সিএমএম আদালত চার্জশিট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত জামিন বাড়ান তাদের। গতকাল তারা ঢাকার ৫ নম্বর জজ আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে হাজতখানায় নেয়া হয়। জানা যায় কৌশলে হাজতখানা থেকে পালিয়ে যান রেজাউল করিম পাটোয়ারী।
প্রসিকিউশন শাখার কর্মকর্তারা জানান, গতকাল ১২টার দিকে আসামি রেজাউল করিম পালিয়েছেন। হাজতখানায় বিভিন্ন মামলার আসামিদের আনা নেয়ার এক ফাঁকে তিনি বেরিয়ে যান। হাজতখানার দায়িত্বে থাকা এক কনস্টেবল তাকে আটককালে তিনি সিটি এসবি’র দারোগা বলে পরিচয় দেন। হাজতখানার ভেতরে ‘প্রস্রাব করার’ জন্য ঢুকেছিলেন বলে জানায়। এ কথা শুনে ওই কনস্টেবল তাকে ছেড়ে দেন।


 

Top



Top
 



 

স্বাস্থ্য সংবাদ


 

 



কীভাবে বুঝবেন আপনার কিডনি ভালো আছে ?

 

মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
মানুষের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে কিডনি অন্যতম। অনেক সময় আমরা কিডনির অনেক ধরণের সমস্যা উপলব্ধি করি, কিন্তু সমস্যাটি গাঢ় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো পদক্ষেপ নেই না। যার ফলে আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।শরীরের রেচন প্রক্রিয়া সহ সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ নির্গমনের কাজ এই কিডনীই করে থাকে। তবে কাজ করতে করতে কিডনী যে কোন মুহুর্তে অকেজো হয়ে পড়তে পারে কিংবা কিডনীর কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে কিডনী ড্যামেজ হওয়া থেকে শুরু করে আরো অনেক বড় বড় রোগের সম্মুখীন হওয়াটা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
কিডনী ফেইলিওর এর মত সমস্যা যে কারোই হতে পারে। তাই শুরু থেকে কিডনীর সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা জরুরী। কারণ যদি কিডনীর সমস্যার লক্ষণ শুরু থেকে জানা থাকে, তাহলে অল্প থাকতেই মেডিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চলুন কিডনীর সমস্যার লক্ষণগুলো আগে একবার জেনে নেয়া যাক,
দুর্বলতা
কিডনী সমস্যার অন্যতম প্রধাণ লক্ষণ হচ্ছে দুর্বলতা। আর এই দুর্বলতা আসে রক্তশূন্যতা থেকে। কিডনী যদি ঠিকমত কাজ না করতে পারে তাহলে রক্ত ক্রমাগত দূষিত হতে থাকে। যার কারণে রক্তে নতুন করে ব্লাড সেল উৎপন্ন হয় না। এছাড়াও কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গেলে তা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন এরিথ্রোপ্রোটিন উৎপন্ন করতে পারে না। এই হরমোন বোন ম্যারো থেকে ব্লাড সেল উৎপাদনে সাহায্য করে।
শ্বাসকষ্ট
যখন কিডনী কাজ করা বন্ধ করতে শুরু করে, তখন শরীরের বর্জ্য পদার্থ রক্তে মিশতে শুরু করে। এই বর্জ্য পদার্থের বেশিরভাগই হচ্ছে অম্লীয় পদার্থ। তাই এই বর্জ্য যখন রক্তের সাথে ফুসফুসে পৌঁছায় তখন ফুসফুস সেই বর্জ্য বের করার জন্য কার্বনডাই অক্সাইড ব্যবহার করা শুরু করে। যার কারণে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ফুসফুসে ঢুকতে পারে না। এতে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে।
মূত্রের রং পরিবর্তন এবং রক্তক্ষরণ
কিডনীর সমস্যায় মূত্রের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। কারণ, কিডনীর অক্ষমতায় রেনাল টিউবিউলস এর ক্ষতি হয়, যা পলিইউরিয়ার সৃষ্টি করে। এর মানে হচ্ছে আপনার অধিক পরিমাণে মূত্র তৈরীর কাজ করে। তবে কিডনীর অক্ষমতা যত বৃদ্ধি পাবে, মূত্রের পরিমাণ ততই কমবে। এবং মূত্রের রং গাঢ় হলুদ কিংবা কমলা রং হয়ে যাবে। সেই সাথে মূত্রের সাথে রক্তক্ষরণ এবং অত্যাধিক ফেনা হতে পারে।
শরীরে চুলকানির উপসর্গ
কিডনীর অক্ষমতায় শরীরে প্রিউরিটাস দেখা দেয়। প্রিউরিটাস আসলে চুলকানির মেডিক্যাল নাম। শরীরের রক্তে যখন বর্জ্য পদার্থ মিশতে শুরু করে তখন চুলকানির উপসর্গ দেখা দেয় কারণ ওই বর্জ্যের মধ্যে ফসফরাস থাকে। যেসব খাবারে ফসফরাস থাকে যেমন দুধজাতীয় খাবার, সেগুলো হজমের পর ফসফরাস বর্জ্য হিসেবে মূত্রের সাথে বের হতে পারে না। যার কারণে এটি রক্তে মিশে চামড়ায় চুলকানি সৃষ্টি করতে থাকে।
চোখে ঝাপসা দেখা কিংবা মানসিক অস্থিরতা
কিডনীর সমস্যা আপনার চোখে ঝাপসা দেখা কিংবা মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি করতে পারে। কারণ শরীরের বর্জ্য পদার্থের একটি বড় অংশ হচ্ছে ইউরিয়া। কিডনীর সমস্যার কারণে ইউরিয়া শরীর থেকে বের না হয়ে বরং রক্তে মিশে যায়। এই দূষিত রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছে মানসিক অস্থিরতা, ঝাপসা দেখা এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। যদি ইউরিয়ার পরিমাণ অত্যাধিক হয় তাহলে তা মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে, যার ফলাফলে রোগী কোমাতে পর্যন্ত চলে যেতে পারেন।
অরুচি
শরীরের বর্জ্য পদার্থের আরেকটি উপাদান হচ্ছে অ্যামোনিয়া। যদি অ্যামোনিয়া রক্তে মেশে তাহলে তা শরীরে প্রোটিন নষ্ট করে ফেলে। কিডনীর অক্ষমতায় শরীর বর্জ্য হিসেবে অ্যামোনিয়া ফিল্টার করতে পারে না। রক্তে অত্যাধিক পরিমাণের অ্যামোনিয়া মুখে অরুচি, ওজন হারানোর মত সমস্যার সৃষ্টি করে।
শরীরে ব্যথা
একটি জেনেটিক কন্ডিশনের কারণে শরীরের অভ্যন্তরে, বিশেষ করে কিডনী এবং লিভারে এক ধরনের ফ্লুইড ভর্তি সিস্ট বা গুটির সৃষ্টি হয়। এই সিস্টের মধ্যে থাকা ফ্লুইড এক ধরনের বিশেষ টক্সিন বহন করে, যা শরীরের শিরা বা ধমনী গুলোতে ক্ষতি করতে পারে। একাধিক শিরার বা ধমনীর ক্ষতি হলে তা শরীরে ব্যথা সৃষ্টি করে। এই ব্যথা সাধারণত ভোঁতা অনুভূতি, খোঁচা কিংবা জ্বলুনীর মত হতে পারে। সাধারণত এই ব্যথাগুলো শরীরের পেছনের অংশে, পায়ে কিংবা কোমরে হতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিডনীতে সমস্যা হলে কোন ধরনের লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু তাই বলে আপনি কিডনীর সমস্যা থেকে মুক্ত এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই। সবসময় সচেতন থাকুন, কিডনীর নিয়মিত চেক আপ করুন। তাহলে কিডনীর সমস্যা নিজেকে দূরে রাখা এবং সুস্থ থাকা সম্ভব।


 যেভাকে ৬ দিনে কিডনি থেকে সরাবেন পাথর


মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
মূত্রথলিতে পাথর রোগে আজকাল অনেকে আক্রান্ত। মুত্রের রঙ গাঢ় হলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অধিক বেড়ে যায়। এ ছাড়া ক্ষুদ্র স্বচ্ছ খনিজের কারণেও কিডনিতে পাথর হয়। কিডনির পাথরের আকারও একেক রকম হয়।
যন্ত্রণার পাশাপাশি এ রোগ বড় ধরনের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলে। অনেকে কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়ে চিকিৎসকদের শরাণপন্ন হন। অস্ত্রোপচারের সময় অনেকে আবার মারাও যান। বড় ধরনের রোগও সৃষ্টি করে এটা।
কিন্তু ছুরির তলায় যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে কিডনি থেকে সহজে পাথর সরানোর উপায় বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে কার্যকরভাবে কিডনি থেকে অপসারণ করতে পারেন পাথর। সময় লাগবে মাত্র ছয়দিন। শুধু পাথরই নয়, বালি ও অন্যান্য বাহ্যিক পদার্থ কিডনি থেকে বের করার জন্যও এটা বেশ কার্যকরী পদ্ধতি।
কিন্তু কীভাবে?
১০০ মিলি লেমন জুস, সমপরিমাণ ভার্জিন অলিভওয়েল ও বিয়ার একটি বোতলে নিন। এরপর মিশানোর জন্য ভালো করে ঝাঁকুনি দিন। প্রত্যক সকালে ৫০ মিলি করে খালি পেটে খান। খাওয়ার আগে অবশ্যই বোতলটি ঝাঁকিয়ে নিন।
কিডনিতে যদি পাথর থাকে তাহলে খাওয়ার ৬দিনে এবং বালু থাকলে চারদিনে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে।


পাঁচ ধরনের খাবার সম্পর্কে সতর্ক থাকুন


মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
খাদ্য বা খাবার মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। তবে সেই একই খাদ্য মাঝে মধ্যে অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর যেসব খাদ্য থেকে আমরা অসুস্থ হতে পারি এমন প্রধান বা টপ ৫ ধরনের খাবারের তালিকা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ। আর তা হচ্ছে ডিম, সবজি, ফল, মাছ ও মাংস। বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লোক খাবার খেয়ে অসুস্থ হয় তার পরিসংখ্যান নেই। তবে আমেরিকানরা গবেষণায় খাদ্যবাহিত রোগের একটি পরিসংখ্যান দিয়েছে। সেদেশে বছরে প্রায় ১ কোটি লোক খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। আর যেসব খাদ্য থেকে অসুস্থ হয় তা হচ্ছে:
১. প্রতিবছর ১ লক্ষ ৪০ হাজার আমেরিকান ডিম খেয়ে অসুস্থ হন। কারণ ডিম যদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে এ ধরনের ডিম খেয়ে অসুস্থ হতে পারেন। ২. সবুজ শাক সবজি বা গ্রিন লিফ ভেজিটেবল থেকে বিশ্বের এক নম্বর ফুড রিলেটেড ইলনেস তৈরি হয়। তাই এ ধরনের সবজি আহারের সময় হাইজিনিক কি না তা দেখতে হবে। বিশেষ করে সালাদ তৈরির সময়। ৩. ফল থেকেও খাদ্যবাহিত রোগ হয়। তাই ফল আহারের সময় ফলের খোসা আহার না করা ভালো। ৪. মাছ থেকেও অসুস্থতা হতে পারে। বিশেষ করে গ্রোসারি শপ থেকে কেনা মাছ। এসব মাছ বারবার এক শেলফ থেকে অন্য শেলফে পরিবর্তন করার কারণে দূষণের শিকার হয়। ৫. মাংস থেকেও খাদ্যবাহিত রোগ হয়। তাই হাইজিনিকভাবে পশু জবাই না করা হলে এবং জবাইখানার পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত না থাকলে মাংস থেকেও মারাত্মক ফুডপয়জনিং হতে পারে।
তাই যে কোনো ধরনের ফ্রেশ খাবার হাইজিনিকভাবে তৈরি ও রন্ধন অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় ফুডপয়জনিংসহ খাদ্যবাহিত রোগের ঝুঁকি থেকে যাবে।


নতুন চুল গজাতে রসুন , জেনে নিন যেভাবে ব্যবহার করবেন !


মাথার চুল পড়ে যাওয়া আজকাল কমবেশি সকলেরই সমস্যা। চুল একবার পড়ে যাওয়ার পর নতুন করে চুল গজানো যেন অসম্ভব একটি ব্যাপার! তবে হ্যাঁ, এই অসম্ভবকে সম্ভব করারও আছে উপায়। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন রাতে ঘুমানোর আগে করুন একটি সহজ কাজ। এই কাজটি আপনার খালি হয়ে যাওয়া মাথায় নতুন চুল গজাতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর এতে আপনার কাজে আসবে খুব সাধারণ অলিভ অয়েল ও রসুন! হ্যাঁ, রসুনেই গজাবে চুল !
রসুনে আছে উচ্চমাত্রার সালফার, ভিটামিন সি, সেলেনিয়াম এবং হরেক রকম খনিজ উপাদান যারা নতুন চুল গজাতে অত্যন্ত সহায়ক। রসুনে উপস্থিত কপার নতুন চুল গজায়, চুল কালো করে ও চুলকে ঘন করে। রসুনের ব্যবহারে চুলে কোন সাইড এফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা একদম নেই।
কী করবেন?
আপনাকে করতে হবে দুটি কাজ। এক, রসুনের নির্যাস মেশানো অলিভ অয়েল তৈরি করতে হবে। এটা করার জন্য এক বোতল অলিভ অয়েলে কয়েক কোয়া রসুন ফেলে রাখুন সপ্তাহ খানেক। মোটামুটি ৭ দিন পার হয়ে গেলেই তৈরি আপনার তেল। মাথায় যখনই তেল দেবেন, এই তেলটি ব্যবহার করুন। চুল পড়া রোধ করতে ও মাথায় নতুন চুল গজাতে এই তেলটি অত্যন্ত সহায়ক।
চোখের ক্লান্তি দূর করতে ৫ পরামর্শ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
একটানা দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটারের বা টিভির মনিটর বা যান্ত্রিক পর্দায় চোখ রাখলে, অপর্যাপ্ত অথবা অতি উজ্জ্বল আলোয় পড়াশোনা করলে অথবা লম্বা সময় গাড়ি চালালে চোখের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। অনেকক্ষণ ধরে ছোট ছোট অক্ষর পড়লে বা চশমা ছাড়া বেশি সময় ধরে পড়ার কারণেও এ সমস্যা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ সমস্যার নাম অ্যাসথেনোপিয়া। এর ফলে কপালের দুই পাশে বা মাথার পেছনে ও ঘাড়ে ব্যথা হয়। দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে। চোখে শুষ্কতার অনুভবও হয়।
অ্যাসথেনোপিয়ার কারণে চোখের বড় ধরনের বা দীর্ঘমেয়াদি কোনো ক্ষতি না হলেও এটা অস্বস্তিকর ও কষ্টকর। ফলে মানসিক চাপ বাড়ে, কাজে মনোযোগ কমে যায় অথবা ভুল হয়। চোখের ক্লান্তি দূর করার জন্য কয়েকটি পরামর্শ:
কম্পিউটারে মনিটরের উজ্জ্বলতা (ব্রাইটনেস) ও কনট্রাস্ট পরিবর্তন করে দেখুন। টেক্সট বা ফন্ট সাইজ বাড়িয়ে নিন। এতে যান্ত্রিক পর্দায় বিভিন্ন লেখা বা নির্দেশনা সহজে পড়তে পারবেন। পর্দার রেজল্যুশনও বাড়াতে পারেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মনিটর ও চোখের মধ্যকার সঠিক দূরত্ব (১৬ থেকে ৩০ ইঞ্চি) বজায় রাখা ও মনিটরের ওপরের অংশ চোখের একই সমতলে রাখার চেষ্টা করা। পড়ার সময় আলোর উৎস আপনার মাথার পেছনে এমনভাবে থাকবে যেন তা বই বা খাতার ওপর সরাসরি পড়ে। টিভি দেখার সময় ঘরটিকে মৃদু আলোয় আলোকিত করবেন। মাঝেমধ্যে বিরতি নিন। আড়মোড়া ভাঙুন। কপালের দুই পাশ ধরে আঙুল দিয়ে ঘুরিয়ে হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন। ডেস্কের ওপর কনুই রেখে দুই হাত দিয়ে মাথাটা এমনভাবে ধরুন যেন আঙুলগুলো কপাল ঢেকে রাখে। এবার জোরে জোরে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে। সারা দিনে এই ব্যায়াম কয়েকবার করুন। দৃষ্টিসীমায় একটু সবুজ রাখার চেষ্টা করুন। যেমন: টবের উদ্ভিদ। কাজের ফাঁকে কম্পিউটার থেকে চোখ সরিয়ে কিছুক্ষণ জানালার বাইরে বা সেই সবুজে দৃষ্টি দিন। কাজের সময় বারবার চোখের পাতা ফেলবেন। এতে চোখের শুষ্কতা কম হবে।
 

ডায়াবেটিস বশে রাখতে পাঁচ পাওয়ার ফুড


ইডায়াবেটিস। কথাটা শুনলেই এক সঙ্গে বিরক্তি, ভয়মিশ্রিত অনুভূতি হয়। কারণ এ রোগ একবার ধরলে তো আর উপায় নেই। সারা জীবনের জন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ম মেনে করতে হয়। একটু বেগতিক হলেই বড়সড় সমস্যাও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু কিছু কিছু খাবার রয়েছে, যা খেলে ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে থাকে এ রোগ। যারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা প্রতিদিন এসব খাবার খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর যাদের ডায়বেটিস নেই তারা এ খবার খেয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এ খাবারগুলোকে ‘পাওয়ার ফুড’ নাম দিয়েছেন। খাবারগুলো হল-
সাইট্রাস ফল : লেবু জাতীয় ফলের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। রোজ আঙুর, কমলা, লেবু জাতীয় ফল খেলে তা রক্তে ইনস্যুলিনের মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস বশে থাকবে।
স্যালমন : এই মাছের মধ্যে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। স্যালমন মাছ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
সবুজ শাক-সবজি : টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকলে নিয়মিত ডায়েটে অবশ্যই প্রচুর সবুজ শাক-সবজি রাখতে হবে। পালং শাক, বাঁধাকপি, লেটুস, ব্রকোলি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ১৪ শতাংশ কমে যায়।
ওটমিল : টাইপ টু ডায়াবেটিস থাকলে আদর্শ ব্রেকফাস্ট হতে পারে ওটমিল। ওটের মধ্যে থাকে বিটা-গুকান ফাইবার। এই ফাইবার সারা দিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
বাদাম : গবেষকরা জানাচ্ছেন যারা নিয়মিত বাদাম খান তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা ২১ শতাংশ কমে যায়। বাদামের ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ‘অ্যান আউন্স অ্যা ডে কিপস ডায়াবেটিস অ্যাওয়ে।’ প্রতিদিন আখরোট, আমন্ড বা কাজু খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।



 


Top

 

 

আইন কনিকা


 

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও প্রচার মাধ্যম


বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জারি হয়েছে ২০০৫ সালে এবং বর্তমান সরকারের আমলে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, সংশোধন আইন-২০১৩ সালে প্রণীত হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এ আইন সম্পর্কে জনগণ যেমন সচেতন নয় তেমনি যারা প্রচারমাধ্যমে কাজ করেন, সিনেমা-নাটক তৈরি করেন তারাও ঠিক ততটা অবগত নন। ফলে দেখা দিয়েছে সমস্যা। এটা সবাই জানেন যে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন হয়েছে কিন্তু কোনো আইন অমান্য করলে কী সাজা বা আইনে কী বলা হয়েছে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই।
প্রথমেই পাবলিক প্লেস সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া যাক- আইনে পাবলিক প্লেস বলতে বোঝায় জনসাধারণ যেখানে সমবেত হয় বা চলাচল করে বা একত্রিত হয় সেরকম স্থানকেই বোঝানো হয়েছে। যেমন : স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২. গ্রš’াগার ৩. হাসপাতাল, ক্লিনিক ৪. প্রেক্ষাগৃহ ৫. প্রদর্শনী কেন্দ্র ৬. থিয়েটার হল ৭. রেস্টুরেন্ট ৮. শিশুপার্ক ৯. খেলাধুলার স্থান ১০.পাবলিক পরিবহন- বাস, ট্রেন স্টিমার, লঞ্চ, ফেরি ইত্যাদি।
আইনের ৭ক ধারা অনুযায়ী- এ পাবলিক প্লেসের মালিক বা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাকে ধূমপানমুক্ত রাখতে কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই নেবেন। যেমন : (ক) ধূমপান থেকে বিরত থাকার জন্য নোটিস প্রদর্শন। (খ) ধূমপানমুক্ত এলাকায় কোনো ছাইদানি না রাখা।
(গ) ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থানে (যদি ধূমপানমুক্ত স্থান থাকার বিধান থাকে) ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ এবং ‘ধূমপান মৃত্যু ঘটায়’ লেখা নোটিস প্রদর্শন। (ঘ) কোনো ব্যক্তি ধূমপানমুক্ত এলাকায় ধূমপান করলে ওই এলাকার মালিক বা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি ধূমপায়ীকে ধূমপান না করার জন্য অনুরোধ করবেন।
(ঙ) ছক (ঘ) বিধান অনুসারে বিরত থাকতে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি ধূমপান করলে তাকে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারবেন এবং তাকে কোনো প্রকার সেবা প্রদান হতে বিরত থাকতে পারবেন এবং আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করবেন।
ধূমপান এলাকার ব্যবস্থা- আইনের ধারা ৭ এর পাবলিক প্লেস-এর কোনো স্থান ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট করতে বা ধূমপানমুক্ত এলাকায় যাতে ধূমপানের ধোঁয়া প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, রেস্টুরেন্ট, শিশুপার্ক ইত্যাদিতে ধূমপানের জন্য কোনো স্থান রাখা যাবে না ।
২(ক) অনুসারে কোনো ব্যক্তি উপধারা (১) বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি অনধিক তিনশত টাকা অর্থদে দ নীয় হইবেন এবং দ্বিতীয়বার করিলে দ্বিগুণ হারে দ নীয় হইবেন।
আইনের ধারা ৮ অনুযায়ী, পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনের প্রবেশপথে এবং অভ্যন্তরে এক বা একাধিক দৃশ্যমান স্থানে ‘ধূমপান হইতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ লিখে রাখতে হবে। এ নোটিস বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। (সাইজ ৪০ সেন্টিমিটার *২০ সেন্টিমিটার) এবং সেটা সাদা জমিনে লাল অক্ষরে অথবা লাল জমিনে সাদা অক্ষরে ধূমপানমুক্ত সাইনসহ প্রদর্শন করতে হবে নমুনা পাওয়া যাবে- জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল-এর ওয়েবসাইটে।
আরেকটি উলেখযোগ্য দিক হচ্ছে- এবারই প্রথম আইনের ১০ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে তামাকের প্যাকেটে, মোড়কে, র্কার্টনে বা কৌটায়, ক্ষতি সম্পর্কিত সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ আকারে ছবি ও লেখায় (অনুপাত ৬:১) ছাপতে হবে। ছবিসমূহ ক্রমানুসারে প্রতি তিন মাস পরপর পরিবর্তন করতে হবে। যেমন : ধূমপানের কারণে গলায় ও ফুসফুসে ক্যান্সার হয়, ধূমপানের কারণে স্ট্রোক হয়, ধূমপানের কারণে হৃদরোগ হয় ইত্যাদি ছবিসহ প্যাকেটের গায়ে ছাপতে হবে। বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন জরুরি, কারণ বছরে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ তামাকের কারণে প্রাণ হারায় এবং ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করে বলে বাজেটে উলেখ করা হলেও বর্তমান বাস্তবতা অনেক বেশি ভয়াবহ।
বাজেটে উলিখিত সংখ্যাগুলো ২০০৪ সালের গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য। বর্তমানে প্রতি বছর তামাকজনিত মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ, প্রতিদিন মৃত্যুবরণ করছেন প্রায় ৬৮০ জন, প্রতি ঘণ্টায় ২৮ জন, প্রতি ২ মিনিটে ১ জনের মৃত্যু ঘটেছে তামাকের কারণে।
অথচ এটি কোনো বিশ্ব সংবাদে প্রতিদিন দেখা যায় না। শুধু দেখা যায় যদি কোনো প্লেন ক্রাশ করে ২০০ জনের বা আরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়, যেমন মৃত্যু হলো গত কিছু দিন আগে মিসরের সিনাই উপত্যকায় একটি রাশিয়া প্লেন ক্রাশে। অথচ তামাকের কারণে প্রতিদিন মৃত্যু হয় প্রায় ৭০০ লোকের।
সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয় গত ১ নভেম্বর, ২০১৫ টিভি নাটকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন-২০১০ প্রতিপালন সম্পর্কে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। তাতে কিছু কিছু টিভি চ্যানেল তাদের নাটকের ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন করেছে এ মর্মে ঊহারৎড়হসবহঃ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয সূত্রোক্তপত্রে অভিযোগও করেছেন এবং তারা তার ডকুমেন্টও প্রেরণ করেছেন।
সুতরাং জনসাধারণের উপকার হয় এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করাই স্বাস্থ্যসম্মত শুধু নয়, আইন ও বিধিসম্মত। অতএব আমরা আশা করব যারা টিভি, নাটক, সিনেমা নির্মাণ করেন তারা যথেষ্ট আন্তরিক হবেন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন, যাতে মানুষ তামাকের এ ব্যবহারের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, গর্ভপাত, মৃতশিশু প্রসবের মতো জটিল পরিস্থিতির শিকার না হয়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে যারা খুন, রাহাজানি বা হত্যাকা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত।
তাই আসুন, প্রচার মাধ্যমে বিশেষত টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিবিধান আমরা মেনে চলি যাতে দর্শকরা বিভ্রান্ত না হয় এবং তামাকের ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন হয়।
 


দূষণ রোধে প্রতি জেলায় প্রয়োজন পরিবেশ আদালত

অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দীপু


পরিবেশ দূষণের কারণে নদ-নদী, খাল-বিল বিস্তৃত বাংলাদেশের চিরচেনা রূপ আজ স্মৃতির পাতায় ঠাঁই করে নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের চারদিকজুড়ে শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র, বালু ও তুরাগ নদী একসময় ছিল প্রমত্ততায় প্রবহমান। কিন্তু নদীগুলোর সেই সে াতস্বিনী রূপ এখন আর লক্ষ্য করা যায় না। নদীগুলো হারাচ্ছে নাব্যতা ও গতিপথ। পরিবেশ হয়ে পড়েছে মারাÍক হুমকির সম্মুখীন। হাইকোর্ট ২০০৯ সালের ২৫ জুন এক যুগান্তকারী রায়ে ২০১০ সালের নভেম্বরের মধ্যে নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিধারা ফিরিয়ে আনতে নদীর জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য সরকারকে নির্দেশনা প্রদান করেন, মহামন্য আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়টিকে বহাল রাখেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশানুযায়ী সরকার যথারীতি নদী তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে। নদীগুলোর তীরবর্তী ভূমি দখলমুক্ত করা যেমন জরুরি, নদীর পানি দূষণমুক্ত করে একে সুপেয় করে বিভিন্ন জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব রক্ষা করা আরও জরুরি। দীর্ঘকাল যাবৎ নদীখেকো ভূমিদস্যুরা যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নদীর জায়গা দখল করে নদীগুলোর সর্বনাশ করেছে একই প্রক্রিয়ায় একশ্রেণীর অতি মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ী আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে হাজার হাজার টন বিষাক্ত তরল বর্জ্য নির্বিচারে নদী-নালা, খাল-বিলে নিক্ষেপ করে পানিকে করে তুলেছে বিষাক্ত।
এতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ মারাÍক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এসব বিষাক্ত বর্জ্যরে কারণে এক সময়ের স্ফটিক স্বচ্ছ পানি কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে নদীগুলো মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। ধ্বংস হচ্ছে জলজ প্রাণীসহ উদ্ভিদ। মারাÍক হুমকির সম্মুখীন হয়ে উঠেছে জীব-বৈচিত্র্য। দূষিত দুর্গন্ধময় পানির কারণে নদী তীরবর্তী মানুষ বিভিন্ন চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে বিষাক্ত তরল বর্জ্য নিঃসরণ হয়ে থাকে তার মধ্যে ডাইং ফ্যাক্টরিগুলো অন্যতম। দেশে দেড় হাজারের বেশি ডাইং ফ্যাক্টরি রয়েছে। তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ শহরেই রয়েছে পাঁচ শতাধিক ডাইং ফ্যাক্টরি। পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, এসব ডাইং ফ্যাক্টরি থেকে প্রতিদিন ২৫ কোটি লিটার অপরিশোধিত বিষাক্ত তরল বর্জ্য বেআইনিভাবে শীতলক্ষ্যাসহ আশপাশের নদীগুলোতে ফেলা হচ্ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এর বিধি ১২ (আ)-তে বলা আছে, যে কোন শিল্প মালিক ইটিপি (ইফ্লুয়েন্স ট্রিটমেন্ট পান্ট) স্থাপন করে পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবে।
পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া গ্যাস সংযোগ গ্রহণ করতে পারবে না এবং কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন এমনকি পরীক্ষামূলক উৎপাদনও করতে পারবে না। একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশের বেশিরভাগ ডাইং ফ্যাক্টরির কোন ইটিপি নেই। অথচ ইটিপিবিহীন ডাইং ফ্রাক্টরির মালিকরা বহাল তবিয়তে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিন অপরিশোধিত বিষাক্ত তরল বর্জ্য পার্শ^বর্তী নদী-খাল-বিলে ফেলে পরিবেশ দূষিত করছে। সম্প্রতি পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০ (খসড়া) মোতাবেক পরিবেশ দূষণকারীর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদ , পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ অথবা উভয় দে র বিধান রেখে আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বর্তমানে বাংলাদেশে মাত্র দুটি পরিবেশ আদালতের পরিবর্তে প্রতি জেলায় একটি করে পরিবেশ আদালত গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আগের আইনে পরিবেশ অধিদফতর ইচ্ছা করলে পরিবেশ দূষণকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারত। কিন্তু প্রস্তাবিত আইনে বাংলাদেশের যে কোন ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিক সংশিষ্ট আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা করে মামলা রুজু করতে পারার বিধান রাখা হয়েছে। আশা করি অতিদ্রুত প্রস্তাবিত পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০ পাস হয়ে আইনে পরিণত হবে।

Top
 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 
   

                                                     Copy Right : 2001 BHRC  All rights reserved.