BHRC By-lawsBHRC Press ReleaseBHRC By-lawsBHRC ConferenceIHRCIRD ActivitiesLegal StatusBHRC BoardBHRC BranchesElection Monitoring Acid and Trauma VictimsBHRC BrochureBHRC Forms

ContactHOME

 

 

 

Cover March 2015

English Part March 2015

 

Top

Bangla Part

         নারী ও শিশু সংবাদ        পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

স্বাস্থ্য সংবাদ          আইন কনিকা

 

বিবিধ সংবাদ

 

                                 

 

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের অনুসন্ধান রিপোর্ট

মার্চ ‘১৫ মাসে মোট হত্যাকান্ডের শিকার ২৭৪ জন



বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপ অনুযায়ী ২০১৫ সালের মার্চ মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ২৭৪টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্চ মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৯ জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, ২০১৫ সালের মার্চ ‘১৫ মাসে হত্যাকান্ডের শিকার হয় ২৭৪ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৭ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ৩৬ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৪৯ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ৩৫ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে হত্যা ১২ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ২ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ১ জন, গুপ্ত হত্যা ১৬ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৫৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ৬ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহণ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২২৬ জন এবং আত্মহত্যা ৪৪ জন। মার্চ ২০১৫ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে ধর্ষণ শিকার ২০ জন এবং যৌতুক নির্যাতনের শিকার হয় ৭ জন।
 

 


 

Top

 

 


কাণ্ডজ্ঞান থাকলে অবরোধ প্রত্যাহার করুন


অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার উৎখাতে তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে না। দীর্ঘ ৮১ দিন অবরোধ করেও তারা ব্যর্থ হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া আমাকে হত্যা না করে ঘরে ফিরে যাবেন না এবং অবরোধ বন্ধ করবেন না। কিন্তু আমি মনে করি, তাঁর যদি কোনো কাণ্ডজ্ঞান থেকে থাকে, তাহলে অবরোধ প্রত্যাহার করা উচিত। কারণ ৮১ দিনেও তাঁর এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মসূচি সফল হয়নি।’
৪৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গত ২৭ মার্চ রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধনীতাকে নস্যাৎ করতে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো সক্রিয় রয়েছে। এ অপচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। বর্তমানে খালেদা জিয়া এ মিশনে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে মদদ দিচ্ছেন।
ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এ বছর শহীদ মিনার ও সাভার স্মৃতিসৌধে না যাওয়ায় খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে খালেদা জিয়া আবারও প্রমাণ করলেন তিনি ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তির দোসর।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছে- যা জঙ্গি তৎপরতারই অংশ। যে ব্যক্তির সামান্যতম মানবতাবোধ আছে, সে এটি সমর্থন করতে পারে না। অথচ একশ্রেণির তথাকথিত সচেতন নাগরিক যাঁরা একই খুনিদের মানবাধিকার নিয়ে সোচ্ছার। এই তথাকথিত সচেতন মানুষ এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ নিয়েও নীরবতা পালন করছেন।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। অতীতে জঙ্গিরা আমাকে বহুবার হত্যার পরিকল্পনা নিয়েছিল এবং সম্ভবত ভবিষ্যতেও তারা এটা করবে। কিন্তু এই অপশক্তির বিরুদ্ধে আমার লড়াই কখনো থামবে না।’
খালেদা জিয়াকে সরকার অবরুদ্ধ করে রেখেছে বলে বিএনপির দাবি নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজেই নিজেকে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন এবং আমাকে হত্যা করার আগ পর্যন্ত অন্তরীণ থাকার শপথ নিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেনও আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।
দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর, কবি নির্মলেন্দু গুণের লেখা ‘একটি কবিতা লেখা হবে’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।
 


সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচন দিন


১৯৯৬ সালের মতো সংবিধান সংশোধন করে নতুন নির্বাচনের পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ সংসদ নির্বাচন করার আগে প্রধানমন্ত্রী এটাকে নিয়ম রক্ষা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি এই নিয়ম রক্ষার নির্বাচনের পর সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের অঙ্গীকার করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি তাঁর সরকারের সময়ে করা নির্বাচনের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমরা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে সংবিধান সংশোধনের পর পদত্যাগ করে অঙ্গীকার পূরণ করেছিলাম। এখন শেখ হাসিনা যদি তাঁর অঙ্গীকার পূরণ করেন, তাহলেই দেশে শান্তি, স্বস্তি ও সমঝোতার পরিবেশ ফিরে আসবে। মানুষ মুক্তি পাবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, তথাকথিত হলেও একটি সংসদের অধিবেশন চলছে। একতরফাভাবে যে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী তারা পাস করেছে, তা তারা একতরফাভাবে বাতিলও করে দিতে পারে। তাতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথ খুলবে। এই সংশোধনীর পর বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা পদত্যাগ করে দ্রুত নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করলেই চলমান সংকটের অবসান ঘটবে।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে টানা ৬৭ দিন খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে আছেন। ৫৩ দিন পর গতকাল তিনি দ্বিতীয় দফায় সংবাদ সম্মেলন করলেন। এতে তিনি প্রায় ৪১ মিনিট লিখিত বক্তব্য দেন। তবে, খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি। সংবাদ সম্মেলন শুরু হয় নির্ধারিত সময় বিকেল চারটার পরিবর্তে পৌনে পাঁচটায়।
টানা দুই মাসেরও বেশি অবরোধ-হরতালের মধ্যে খালেদা জিয়ার এ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির রদবদল হচ্ছে কি না, তা নিয়ে বেশ কৌতূহল ছিল।
খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীনেরা প্রতিনিয়ত তাঁকে জেল-জুলুম ও ফাঁসির ভয় দেখাচ্ছে। নানাভাবে হেনস্তা করছে। এতে কোনো লাভ হবে না। যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছা পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির বা কোনো দলের বিরুদ্ধে দলের নয়। এই আন্দোলন আদর্শিক এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।
প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনার কথা বিশ্বাস করে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আন্দোলনের কর্মসূচি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল না, তা আমরা অচিরেই বুঝতে পারি। কারণ, আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার পর সারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে তারা এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।’

 


পদক্ষেপ সংকলন ও ‘৭১ শোকে অশ্র“ধারা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত


বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রাজনগর উপজেলা শাখার উদ্যোগে মৌলানা মুফজ্জল হোসেন মহিলা ডিগ্রী কলেজ মিলনায়তনে কমিশনের প্রকাশিত সংকলন ‘পদক্ষেপ’ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার (এফএফ) গোলাম মুহিবুর রহমান এর প্রকাশিত ‘৭১ শোকে অশ্র“ধারা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয় গত ১২ মার্চ ২০১৫।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের রাজনগর উপজেলা শাখার সভাপতি ও মৌলানা মুফজ্জল হোসেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আকছির খান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইনুন আক্তার পান্না। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এড. কিশোরী পদ দেব শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক কবি সৌমিত্র দেব, কানাডা প্রবাসী মোঃ ফায়জু, টেংরা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ টিপু খান। বক্তব্য রাখেন কমিশনের রাজনগর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়ছল আজা, সহ-সভাপতি কেতকী রঞ্জন ভট্টাচার্য্য, প্রভাষক তোফায়েল আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান কমরু, সদস্য পূর্ণেন্দু দাশ পবিত্র, সৃজন সাধারণ সম্পাদক মোঃ খসরু চৌধুরী, চ্যানেল এস এর অনুষ্ঠান নির্মাতা জুবায়ের আহমেদ জুবের প্রমুখ।
 


নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সকলে মিলে
সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

---------- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার

 


সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস.এম. রোকন উদ্দিন বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সকলে মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। পারিবারিক নির্যাতন এখনও হচ্ছে যা খুবই দুঃখের বিষয়। তা সত্বেও আমাদের দেশে নারী ও পুরুষ উভয়ের নেতৃত্বে দেশ উন্ননের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গুণী নারী সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
গতকাল বিকেলে নগরীর দরগাহ গেইটস্থ রশীদ এম্পোরিয়ামের ২য় তলায় ড. আর কে ধর হলে বামাক মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং বিশ্ব নারী দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সিলেটের ডাকের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক দেওয়ান তৌফিক মজিদ লায়েক, সিলেট এডিশনাল পিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম, শাবিপ্রবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপিকা জোবেদা কনক খান, মানবাধিকার কমিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়কারী বিশিষ্ট সমাজসেবক শরীফ আহমদ লস্কর, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রোটারিয়ান মাহবুবুল আলম মিলন।
বামাক মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রের বিশেষ প্রতিনিধি মনোরঞ্জন তালুকদারের স্বাগত বক্তব্যে মাধ্যমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, জেলা শাখার সহ সভাপতি রোটাঃ আসাদুজ্জামান, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রোটাঃ বদরুল আলম চৌধুরী, মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক লিলু, লায়ন মিসবাহ উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফাইয়াজ হোসেন ফরহাদ, ল’ কলেজ শাখার সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, রোটারী এসিসট্যান্ট গভর্ণর এ কে এম শামসুল হক দিপু, রোটাঃ এডভোকেট রফিক আহমদ চৌধুরী, রোটাঃ সাহিদা খাতুন তালুকদার, সমাজসেবী শামসুন্নাহার বেগম, শিক্ষিকা শামীম আরা বেগম, সিলেট বিভাগীয় যুবপ্রদক প্রাপ্ত ফোরামের সভাপতি আফিকুর রহমান আফিক, যুব সংগঠক আলী আহসান হাবীব, রোটাঃ এড. হোসেন আহমদ শিপন, শিরিন আক্তার চৌধুরী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম, শামসুন্নাহার, তুহিন চৌধুরী, মামুন চৌধুরী, আব্দুর রউফ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ রেদওয়ান, দিনা বেগম, কামিল আহমদ রাব্বি, মোঃ হেলাল উদ্দিন, সালমা আক্তার, শারমিন বেগম, ফটোগ্রাফার জাহেদ আহমদ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মহানগর শাখার দপ্তর সম্পাদক যুবপ্রদকপ্রাপ্ত মোঃ শাহ আলম।
নারীর মান উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য শাবিপ্রবির জোবেদা কনক খান, রোটাঃ সাহিদা খাতুন তালুকদার, শিক্ষিকা শামীম আরা বেগম, রোটাঃ ও শিক্ষিকা শেখ মিনা বেগম, রোটাঃ ডালিয়া হক লাবনী সহ পাঁচজন গুণী নারীকে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট জেলা ও মহানগরের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
 

দোহারে মানবধিকার কমিশনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা



ঢাকার দোহার উপজেলায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন দোহার শাখার উদ্যোগে দিনব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৫ মার্চরোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় উক্ত প্রশিক্ষণশালায় ৮৬ জন কর্মকর্তা ও সদস্যদেরকে মানবাধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার দোহার শাখার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন পল্লব। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান মজনু মাঝির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হায়াত আলী মিঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন কমান্ডার, ফজলুল হক, একলাল উদ্দিন আহাম্মেদ, জামাল উদ্দিন আহম্মেদ, মোহাম্মদ আলী, সুরুজ আলম সুরুজ, নিলুফা ইয়াসমীন, সভাপতি শেখ ছামাদ মাদবর, কোষাধ্যক্ষ মো. মোজাম্মেল নির্বাহী সদস্য নাজমা, শিউলী বেগম, হানিফ মোল্লা, রহমত ভেন্ডার, জয়নাল পাহার, শাহেদ,আ্যাড. সঞ্জয়,রফিক, নগাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন
সোমবার, ১৬ মার্চ ২০১৫
সালিস কিংবা বিচারের নামে আমাদের সমাজে এখনো নানা অনাচার চলে আসছে। সময় পাল্টে গেলেও অনেক অনাচার থেকে মুক্তি মিলছে না। এলাকায় নিজেদের আধিপত্য প্রমাণের জন্য অনেকেই বিচার-সালিস করে থাকে। অনেকে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে লোকদেখানো সালিসের আয়োজন করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব বিচার-সালিস অমানবিক হয়ে ওঠে। যেমন, নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ভালুকা থেকে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাওনা টাকা আদায় করতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মামা-ভাগিনা। মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা অভিযোগে দুজনকেই গাছে ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলেও সেদিকে কর্ণপাত করেনি কেউ। স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে করা এ নির্যাতনের সময় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন জনপ্রতিনিধি কী করে এই বে আইনি কাজে সমর্থন দেন বা এমন ঘটনা ঘটার সময় কোনো প্রকার বাধা না দিয়ে দর্শক সাজেন। স্বাভাবিকভাইে প্রশ্ন উঠতে পারে, তিনিও কি ওই নির্যাতনকারীদের সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করেছেন
কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। সামাজিকভাবেও সালিস ডাকা যেতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই অভিযোগ এনে এভাবে নির্যাতন করা যাবে না। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একজন ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কী করে দুজন মানুষকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই নির্যাতনের অভিযোগে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকেও অভিযুক্ত করা যেতে পারে। কারণ গ্রাম্য সালিস বা বিচার কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হতে পারে বা করা যেতে পারে সে আইন সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত। সে আইনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কেও তাঁর জানা থাকার কথা। কাজেই মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে কাউকে গাছে ঝোলানোর উদ্যোগে তিনি বাধা দিতে পারতেন। কিন্তু প্রকাশিত খবরে জানা যায় তিনি বাধা দেননি।
কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। এটা আইনেরই বিধান। দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। আমরা মনে করি, এই নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত। প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।ুরুল আলম স্বপন, বায়েজিদ আহমেদপ্রমুখ সঞ্চালনারা দায়িত্বে ছিলেন হা.ম.ওয়াদুদ ।


 

গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন
 

ালিস কিংবা বিচারের নামে আমাদের সমাজে এখনো নানা অনাচার চলে আসছে। সময় পাল্টে গেলেও অনেক অনাচার থেকে মুক্তি মিলছে না। এলাকায় নিজেদের আধিপত্য প্রমাণের জন্য অনেকেই বিচার-সালিস করে থাকে। অনেকে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে লোকদেখানো সালিসের আয়োজন করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব বিচার-সালিস অমানবিক হয়ে ওঠে। যেমন, নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ভালুকা থেকে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাওনা টাকা আদায় করতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মামা-ভাগিনা। মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা অভিযোগে দুজনকেই গাছে ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলেও সেদিকে কর্ণপাত করেনি কেউ। স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে করা এ নির্যাতনের সময় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে, একজন জনপ্রতিনিধি কী করে এই বে আইনি কাজে সমর্থন দেন বা এমন ঘটনা ঘটার সময় কোনো প্রকার বাধা না দিয়ে দর্শক সাজেন। স্বাভাবিকভাইে প্রশ্ন উঠতে পারে, তিনিও কি ওই নির্যাতনকারীদের সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করেছেন
কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সে বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। সামাজিকভাবেও সালিস ডাকা যেতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই অভিযোগ এনে এভাবে নির্যাতন করা যাবে না। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। একজন ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কী করে দুজন মানুষকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই নির্যাতনের অভিযোগে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকেও অভিযুক্ত করা যেতে পারে। কারণ গ্রাম্য সালিস বা বিচার কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হতে পারে বা করা যেতে পারে সে আইন সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত। সে আইনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কেও তাঁর জানা থাকার কথা। কাজেই মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে কাউকে গাছে ঝোলানোর উদ্যোগে তিনি বাধা দিতে পারতেন। কিন্তু প্রকাশিত খবরে জানা যায় তিনি বাধা দেননি।
কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। এটা আইনেরই বিধান। দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। আমরা মনে করি, এই নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত। প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
 

পদক্ষেপ সংকলন ও ‘৭১ শোকে অশ্র“ধারা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত
 

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রাজনগর উপজেলা শাখার উদ্যোগে মৌলানা মুফজ্জল হোসেন মহিলা ডিগ্রী কলেজ মিলনায়তনে কমিশনের প্রকাশিত সংকলন ‘পদক্ষেপ’ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানী কমান্ডার (এফএফ) গোলাম মুহিবুর রহমান এর প্রকাশিত ‘৭১ শোকে অশ্র“ধারা’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠিত হয় গত ১২ মার্চ ২০১৫।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের রাজনগর উপজেলা শাখার সভাপতি ও মৌলানা মুফজ্জল হোসেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আকছির খান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইনুন আক্তার পান্না। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এড. কিশোরী পদ দেব শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক কবি সৌমিত্র দেব, কানাডা প্রবাসী মোঃ ফায়জু, টেংরা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ টিপু খান। বক্তব্য রাখেন কমিশনের রাজনগর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়ছল আজা, সহ-সভাপতি কেতকী রঞ্জন ভট্টাচার্য্য, প্রভাষক তোফায়েল আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান কমরু, সদস্য পূর্ণেন্দু দাশ পবিত্র, সৃজন সাধারণ সম্পাদক মোঃ খসরু চৌধুরী, চ্যানেল এস এর অনুষ্ঠান নির্মাতা জুবায়ের আহমেদ জুবের প্রমুখ।
 

ভারতে গত বছরে লক্ষাধিক ধর্ষণ-নির্যাতন


ভারতে ২০১৪ সালে এক লাখ ১৭ হাজার ৩৫টি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী মানেকা গান্ধী।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার গতকাল রোববারের এক খবরে জানানো হয়, সরকারি হিসাবে দেশব্যাপী ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের সংখ্যা লোকসভায় তুলে ধরেন মানেকা। তিনি জানান, রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেছে। যার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮২৭টি। এরপরই রয়েছে মধ্য প্রদেশ (১৩ হাজার ৩২৩ ) ও অন্ধ্র প্রদেশের (১৩ হাজার ২৬৭) অবস্থান।
সারা দেশের তথ্য বিশ্লেষণে নারী নির্যাতন বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেন নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী মানেকা গান্ধী। তাঁর দাবি, বর্তমান সরকার নারী নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
 

শ্রমিক নিরাপত্তা অধিকার রক্ষায় হেল্পলাইন চালু
 

কর্মস্থলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের জন্য একটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। কর্মস্থলে কোন দুর্ঘটনার শিকার হলে কিংবা শ্রমিক অধিকার বিঘ্নিত হলে শ্রমিকরা ০৮০০ ৪৪ ৫৫ ০০০-হেল্পলাইনে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারবেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং রয়েল নরওয়েজিয়ান গভর্নমেন্ট-এর সহায়তায় স্থাপিত এ হেল্পলাইন পরিচালনা করবে ডিপার্টমেন্ট অব ইন্সপেকশন ফর ফ্যাক্টরিস এ্যান্ড ইস্টাবলিশমেন্ট (ডিআইএফই)। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক-এর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গতকাল এ হেল্পলাইন উদ্বোধন করা হয়। আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি. রেড্ডি, শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার, ডিআইএফই-এর মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহমেদ, ডিরেক্টর অব লেবার এস এম আশরাফুজ্জামান এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে এই হেল্পলাইন আশুলিয়া এলাকার তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের সহায়তার ওপর জোর দেবে। পরে এর সাফল্যের ভিত্তিতে সারাদেশের শ্রমিকদের জন্য এ ব্যবস্থা চালু করা হবে। শ্রীনিভাস বি. রেড্ডি বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এবং শ্রমিকদের অধিকার সমুন্নত করতে এ হেল্পলাইন চালু করার জন্য গত দুই বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, এ হেল্পলাইন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হলো। এ হেল্পলাইন কর্মস্থলে শ্রমিকদের জন্য অপেক্ষাকৃত ভালো কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করবে। হেল্পলাইনে তাদের অভিযোগ করতে পারার কারণে তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নেও সহায়ক হবে।
 

সেই পাখিটি ফিরে এলো ৭০ বছর পর!

খুদে আকৃতির পরিযায়ী পাখি। নাম তার তামাপিঠ লাটোরা। বিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের নানা স্থানে একে দেখা যেতো। বাংলাদেশে সর্বশেষ একে দেখা যায় কুমিল্লার লালমাইতে ১৯৪৪-৪৫ সালের দিকে। তারপর আর কোথাও দেখা যায়নি। পাকিস্তান, ভারত, ভুটান, নেপাল, আফগানিস্তান, ইরানসহ পৃথিবীর আরো অনেক দেশে একে দেখা গেলেও বাংলাদেশ থেকে পাখিটি একরকম হারিয়েই গিয়েছিল।
তবে পাখিপ্রেমীদের জন্য আনন্দের খবর হলো দীর্ঘ ৭০ বছর পর সুন্দর এ পাখিটিকে আবার বাংলাদেশে দেখা গেছে। ছোট্ট পাখিটি আবার ফিরে এসেছে চিরসবুজের এই দেশে। এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পাখিটিকে সর্বপ্রথম দেখা যায় চট্টগ্রামের কাট্টলি সমুদ্র সৈকতে। কয়েকদিন আগে ঢাকা এবং দেশের আরো কয়েকটি স্থানে তামাপিঠ লাটোরা দেখা গিয়েছে। একে প্রথম শনাক্ত করেন পাখি পর্যবেক্ষক ও চট্টগ্রাম বার্ড ক্লাবের সদস্য মাসুদুর রহমান মামুন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে তিনি এই কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম বার্ড ক্লাবের সেক্রেটারি মো. নাসের ইয়ামিন ইত্তেফাককে জানান, তামাপিঠ লাটোরাকে মেটে পিঠ লাটোরা বা ছাই পিঠ লাটোরা নামেও ডাকা হয়। এর ইংরেজি নাম বে-ব্যাকড শ্রাইক (ইধু-ইধপশবফ ঝযৎরশব), বৈজ্ঞানিক নাম ল্যানিয়াস ভিট্টাটাস (খধহরঁং ঠরঃঃধঃঁং)। তামাপিঠ লাটোরা বাদামী চোখ এবং কপালে কালো পট্টিওয়ালা পোকা শিকারী পাখি। যার দৈর্ঘ্য ১৮ সেমি, ওজন ২০ গ্রাম, ডানা ৮.৫ সেমি, ঠোঁট ১.৭ সেমি, পা ২.৩ সেমি আর লেজ ৮.৮ সেমি। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ কালো-সাদা এবং মেরুন রঙে বৈচিত্র্যময়। দেহের নীচের দিক সাদা। ডানার প্রান্ত-পালকের গোড়ার সাদা পট্টিসহ ডানা কালো। লেজের ডগা এবং পাশে সাদা। মাথার চাঁদি এবং ঘাড়ের পেছনের অংশ ধুসর। কাঁধ গাঢ় মেরুন এবং কোমর সাদাটে। মাথার চাঁদির সামনের কালো অংশ মুখোশ হিসেবে বর্ধিত হয়ে চোখ ও কান ঢাকনি পর্যন্ত চলে গেছে। গলা সাদা এবং ডানা ও দেহতলের শেষ অংশ লালচে। মেয়ে পাখির মাথার চাঁদি কালো ও সরু। ছেলে এবং মেয়ে পাখি উভয়ের চোখ বাদামী। ঠোঁট কালচে শিং-বাদামী। পা, পায়ের পাতা এবং নখ কালো ।
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ (পাখি খণ্ড ২৬) এর তথ্য অনুযায়ী, তামাপিঠ লাটোরা শুকনো ক্ষুদ্র ঝোপ, শুকনো ঝোপ-ঝাড় এবং পতিত জমিতে বিচরণ করে। সাধারণত একা কিংবা জোড়ায় থাকে এরা। খোলা জায়গায় বা গাছের ডালে বসে এরা ভূমিতে শিকার খোঁজে। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ফড়িং, অন্য ছোট পাখির ছানা, ঝিঁঝি পোকা, ইঁদুর এবং টিকটিকি। উত্তেজিত হলে এরা কর্কশ কণ্ঠে ডেকে থাকে। ফেব্র“য়ারি থেকে জুলাই প্রজননকালে ভূমি থেকে ২-৪ মিটার উঁচুতে গাছের ডালে ঘাস, পশম, পাতা ও পালক মাকড়সার জাল দিয়ে জড়িয়ে আঁটসাঁট বাটির মতন বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে এরা। ডিমগুলো সাধারণত সামান্য বেগুনি-বাদামি ফুসকুড়ি ও তিলাসহ ফিকে সবুজে-সাদা রঙের হয়। এরা ৩ থেকে ৫টি ডিম পাড়ে। ডিমের আয়তন ২.১/১.৬ সেমি।
মো. নাসের ইয়ামিন বলেন, তামাপিঠ লাটোরা পাখিটিকে এখনো বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়নি। বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে এই সুন্দর মিষ্টি পাখিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা উচিত।
 

মৃত্যুদণ্ড আবার স্থগিত করতে বলল ইইউ


আবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পাকিস্তানে গত মঙ্গলবার এক দিনেই ১২ অপরাধীকে ফাঁসি দেওয়ার পরদিনই ইইউ এই আহ্বান জানাল। এদিকে গত ১৮ মার্চ বুধবার ইইউর এই আহ্বানের দিনই আরও নয়জনকে ফাঁসি দেওয়া হয় পাকিস্তানে। খবর ডনের।
গত ১৮ মার্চ ইইউর এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের উচিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ করা। কারণ, মৃত্যুদণ্ড একটি অন্যায্য ও নিষ্ঠুর সাজা এবং তা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারের মৌলিক নীতিমালাবিরোধী। বিশ্বের সব দেশেই এই ভয়ানক দণ্ড বন্ধ করা উচিত।
গত সকালে পাঞ্জাব প্রদেশের কয়েকটি কারাগারে খুনের অপরাধে সাজা পাওয়া নয়জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। কালই পরে আরও দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
আন্তর্জাতিক চাপের কারণে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। তবে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে ভয়াবহ তালেবান হামলার পর দেশটি ফাঁসির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। এর পর থেকে পাকিস্তানে এ পর্যন্ত ৪৮ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড ছাড়াও অন্য অপরাধে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর শুরু করে দেশটি।
শাফকাতের মায়ের আবেদন: শাফকাত হুসেইন নামের এক যুবকের ফাঁসি কার্যকরের প্রাক্কালে আন্তর্জাতিক মহল থেকে নতুন করে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হলো। শিশু হত্যার দায়ে অভিযুক্ত শাফকাতের মৃত্যুদণ্ড আজ বৃহস্পতিবার কার্যকর হওয়ার কথা। তার বয়সের কারণে এ নিয়ে আপত্তি উঠেছে। শাফকাত ২০০১ সালে এক শিশুকে হত্যা করে বলে অভিযোগ। ২০০৪ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আদালত মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৪। তাই মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ফাঁসির দণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল নাকচ হয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্টও প্রাণভিক্ষার আবেদন মঞ্জুর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। শেষ চেষ্টা হিসেবে গতকাল শাফকাতের মা সরকার ও বিচার বিভাগের কাছে ছেলের দণ্ড মওকুফ চেয়ে আবারও আবেদন জানান।
এ ছাড়া গতকাল অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিবারের মধ্যে সমঝোতার ফলে তিনজনের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখা হয়।
সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় চাই বৈষম্য বিলোপ আইন
রবিবার, ২২ মার্চ ২০১৫
 

মালয়েশিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি আটক


অবৈধ অভিবাসীবিরোধী বিশেষ অভিযানে মালয়েশিয়ার পেনাং প্রদেশের একটি নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে ১০৭ অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। তাদের মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ২০ মার্চ মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামা এ খবর প্রকাশ করেছে।
পেনাং প্রদেশের ইমিগ্রেশন সহকারী পরিচালক আবদুুর রহমান হাসানের বরাত দিয়ে বারনামা জানায়, ৮৫ কর্মকর্তা প্রতিবারের মতো এবারও অবৈধ অভিবাসীবিরোধী এ অভিযান চালান। পেনাংয়ের জালান চেইন ফেরির কনস্ট্রাকশন সাইটের সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট, রেলার ৮তলাবিশিষ্ট ভবনে হানা দিয়ে কর্মরত ৪৬৭ অভিবাসীকে আটক করে সেভেরাং জায়া ইমিগ্রেশন অফিসের হেডকোয়ার্টারে নিয়ে প্রত্যেকের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ১১২ জনকে আটক করা হয়। আটকদের জহুরবারু ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, আটকদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি রয়েছেন। থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী প্রদেশ পেনাংয়ে অনেক বাংলাদেশি কাজ করছেন। গত সপ্তাহ থেকে পেনাংয়ের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে সে দেশের পুলিশ।
এদিকে পেনাংয়ে ১০৭ বাংলাদেশি আটকের খবর প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কাউন্সিলর শাহিদা সুলতানা আমাদের সময়কে জানান, আটকের খবর আমরা মালয়েশিয়ার পত্রপত্রিকা ও লোক মারফত শুনেছি। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন আমাদের জানায়নি। রোববার মালয়েশিয়ায় সাপ্তাহিক ছুটি। আশা করি, সোমবার আমরা তাদের কাছ থেকে এ নিয়ে বার্তা পাব।
তবে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে গতকাল পর্যন্ত তারা কোনো তথ্য পাননি। মালয়েশিয়ার প্রভাবশালী দৈনিক স্টার জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে পেনাংয়ের বাটারউর্থ সিটিতে অভিযান চালিয়ে এসব প্রবাসী শ্রমিককে আটক করা হয়। নির্মাণাধীন একটি ৭তলা ভবন ঘেরাও করে তাদের আটক করে পুলিশ।
 

বিষাক্ত পানিতে সীমান্তের ১৫ গ্রামে স্বাস্থ্যঝুঁকি


বিষাক্ত পানি ব্যবহারে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ভারতের আগরতলা থেকে আসা বিষাক্ত এ পানিতে সয়লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তবর্তী ১৫ গ্রাম। দিন দিন বাড়ছে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি। কুচকুচে কালো পানির উৎকট গন্ধে জনজীবন দুর্বিষহ। এ পানি দিয়ে চাষাবাদ করায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ঊর্বরশক্তি নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়রা ভুগছেন শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ নানা সমস্যায়। কয়েক দশক ধরে চলছে এ অবস্থা।
সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, আগরতলা শহরের পয়:প্রণালী ও স্থানীয় শিল্প কারখানার বর্জ্যের পানি মূলত এখান দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের ওই শহরটি তুলনামূলক উঁচু স্থানে হওয়ায় সহজে বাংলাদেশের দিকে পানি নামে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সম্মেলনে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই ভারত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবীব জানান, কৃষি, বন ও পরিবেশ এবং মৎস্য বিভাগ প্রাথমিক কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাতে ভারতের এ পানি আখাউড়ার সীমান্তবর্তী দুটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার একটি অংশে বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। আখাউড়া কৃষি বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ১৫ গ্রামের প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে এই কালো পানি দিয়ে ধান চাষ হয়। নদী ও খাল থেকে মেশিনে খেতে পানি দেওয়ার সময় মাথা সমান উঁচু ফেনা হয়। ওই ফেনা আর কালো পানি ধান গাছের পাতায় লাগলে গাছ লাল হয়ে মরে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর আখাউড়া স্থলবন্দর সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে সিঅ্যান্ডবি খাল ও কালিকাপুর গ্রাম সংলগ্ন জাজি নদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে দূষিত পানি। এই পানি দিয়ে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন, মোগড়া ইউনিয়ন ও আখাউড়া পৌরসভার কিছু জমিতে ধান চাষ হয়। ফলে ধীরে ধীরে ঊর্বরতা হারাচ্ছে এসব জমি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিজিবি জওয়ান জানান, পানির উৎকট গন্ধে তাদের ক্যাম্পে ডিউটি করতে মারাৎদক অসুবিধা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। বিষাক্ত পানির প্রভাবে শ্বাসকষ্ট আর চুলকানির প্রকোপ বাড়ছে। অপরদিকে এ পানি তিতাস নদীতে মিশে প্রাকৃতিক ও জলজ পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিএ্যান্ডবি খালটি প্রায় সাত কিলোমিটার লম্বা। জিরো পয়েন্ট থেকে কয়েকটি গ্রাম পার হয়ে এটি তিতাস নদীতে মিশেছে।
 

জেলা সভাপতির উপর হামলায়
রামু উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের উদ্বেগ

 

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি, জেলা দায়রা ও জজ আদালতের সিনিয়র এডভোকেট রনজিত দাশের উপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রামু উপজেলা মানবাধিকার কমিশন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন রামু উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি প্রাক্তন শিক্ষক পরিতোষ চক্রবর্তী বাবুল, সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম জয়নাল আবেদীন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ আহাম্মদ, আব্দুল হাশেম, আলী হায়দার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজনীন আক্তার মেরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বিপন বড়–য়া, অর্থ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসিত পাল, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল হক, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহিম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সমরবিন্দু ধর, আপ্যায়ন সম্পাদক সরওয়ার আলম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সম্পাদক রাবেয়া বশরী রাবু, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আমিনা কাউসার কবির, সদস্য রেজাউল আমিন মোর্শেদ, রেজাউল করিম, কিনছেন রাখাইন কেলী, মোহাম্মদ ছৈয়দুর রহমান, অর্পন বড়–য়া, মো. আবু হান্নান ও সুরেশ বড়–য়া বাঙালী।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, চিহ্নিত হামলাকারীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় রাজপথে কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে কক্সবাজার জেলায় দূর্বার প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এদিকে, ২০ মার্চ রাতে কক্সবাজার শহরের গোলদীঘির পাড় এলাকায় চিহ্নিত দৃস্কৃতিকারী কর্তৃক হামলার শিকার হন জেলা মানবাধিকার কমিশন সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।
 


সাগরে বসবাস!


ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে বাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই তার। তাই বসবাসের জন্য রিও ডি জেনেইরো সংলগ্ন সাগর গুয়ানাবারা বে-র বুকেই আস্তানা গড়েছেন ব্রাজিলীয় যুবক হ্যামিলটন কুনহা ফিলহো। মানুষের ফেলে দেয়া বর্জ্য (বিভিন্ন প্লাস্টিক, কাঠের টুকরো, বোর্ড ইত্যাদি) দিয়েই সাগরের বুকে ভাসমান বাড়ি বানিয়ে স্বাভাবিকভাবে বসবাস করছেন ৩০ বছরের এ যুবক। বাড়িতে সারা জীবন থাকবেন বলেও মনস্থির করেছেন তিনি।
সকাল-বিকাল মাছ ধরেই পেট ঠাণ্ডা করেন হ্যামিলটন। এখন রিও ডি জেনেইরোর পর্যটকদের কাছে হ্যামিল্টনের জঞ্জালের বাড়িটি নতুন আকর্ষণের বিষয় হয়ে উঠেছে। ওয়েবসাইট।


তবুও নেতানিয়াহুতে অসন্তোষ ওবামার


ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক, তার গিঁট কিছুটা খুলতে শুরু করেছে। ফিলিস্তিন বিষয়ে ইসরায়েলের একমুখী নীতি এতদিন বিনা শর্তে সমর্থন দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে নীতি থেকে অনেকটা সরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মূলত ইসরায়েলের সদ্যসমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের সময় এক প্রচারাভিযানে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্যই এর অন্যতম কারণ। নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আবার প্রধানমন্ত্রী হলে আমার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে অন্তত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। এটি নিশ্চিত করতে আর বাকি যেসব বিকল্প উপায় রয়েছে, সেসব ভেবে দেখছি আমরা।’
এ মন্তব্যের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা রাখঢাক না রেখেই নেতানিয়াহুর সমালোচনা ও তিরস্কার করেন। শনিবার হাফিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওবামা এ সমালোচনা করেছেন।
অবশ্য নির্বাচনের ফলাফলের পর নেতানিয়াহু তার এ বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন। এখন বলছেন, দুই রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে তিনি। তবে এবার তার মন্তব্যে কিছুতেই আশ্বস্ত হতে রাজি নন ওবামা। আগের মন্তব্যটিকেই তার চূড়ান্ত মনোভাব হিসেবে ধরে নিয়েছেন ওবামা। এ খবর দিয়েছে সিএনএন। আর ওবামার এ মনোভাবের ফলে বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে বহুবার জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে ভেস্তে গেছে। এবার হয়তো দেশটি (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেই এ প্রস্তাবে স্বাক্ষর করবে। আর ওবামা ও নেতানিয়াহুর সম্পর্ক যে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই তা বোঝা যায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর। সাধারণত, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের পর বিজয়ীকে সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করে অভিনন্দন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানাতে দুই দিন সময় নিয়েছেন ওবামা। তাদের কথোপকথনে দুই রাষ্ট্র সমাধান সম্পর্কে নিজের সত্যিকার অবস্থান নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন কি না, তা সাংবাদিকদের জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জোশ আর্নেস্ট। কিন্তু ওবামা নেতানিয়াহুকে বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হবে। ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমনকি এখন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতিদান সম্পর্কিত জাতিসংঘের প্রস্তাবটিতে স্বাক্ষরের কথা চিন্তাভাবনা করছে। বিবিসি।গ্রেপ্তার-বাণিজ্য
মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ ২০১৫
৫৪ ধারার অপব্যবহার করে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার পরিস্থিতির ডাকে সাড়া দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই নির্দেশের মাধ্যমে পুলিশি অনাচারের ব্যাপ্তিকেও স্বীকার করে নেওয়া হলো। তবে দেশের সব থানাকেই এই নির্দেশের আওতায় আনা জরুরি।
‘অজ্ঞাত আসামি’ ও ৫৪ ধারার কাছে অসহায় সাধারণ মানুষসমস্যার প্রকোপ ঢাকার বাইরেই বেশি। এরই সর্বসাম্প্রতিক উদাহরণ, যশোরের শার্শায় ৫৪ ধারায় আটক হওয়া দুই ব্যক্তির একজন লাশ হন এবং গুলিবিদ্ধ অপরজনের পা কেটে ফেলতে হয়। গত শনি-রবিবার মাগুরায়ও সন্দেহবশত বিএনপির নেতাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ!
ডিএমপি অধ্যাদেশ ও ৫৪ ধারার অধীনে আটককৃতদের স্থানসংকুলান হচ্ছে না কারাগারে। হরতাল-অবরোধ-নাশকতা দমনের উদ্দেশ্যে এমন গ্রেপ্তারের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। গত ১৪ ফেব্র“য়ারি প্রথম আলোয় ‘ধরে এনে টাকা আদায়, পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সারা দেশ থেকে অজস্র অভিযোগ গণমাধ্যমে আসতে থাকে। কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের অসাধু ভূমিকার প্রমাণও মেলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিএমপি কমিশনার ২২ ফেব্র“য়ারি ডিএমপির সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিসি থেকে শুরু করে ওসি পর্যন্ত নির্দেশনা পাঠান যে নিরীহ লোকদের গ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তার-বাণিজ্য করা যাবে না।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সময় মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের কাছে ভাবমূর্তি তৈরির স্বার্থে অনেক রকম নির্দেশনা দিয়ে থাকে। বাস্তবে এসব নির্দেশ কাগুজে বাঘের দশা পায়। যেখানে রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও অর্থ আদায়ের সুযোগ দুটোই সুলভ, সেখানে শুধু কথায় চিড়ে ভিজবে না। দোষী হিসেবে চিহ্নিত কয়েকজনের বিচার করাই এ ক্ষেত্রে পুলিশকে সংযত রাখার উপায়।
সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাম-মফস্বলে শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হওয়ার নজির রয়েছে। গ্রেপ্তার হলেই ছাড়ানোর জন্য টাকার লেনদেন এতই বেড়ে গেছে যে ভুক্তভোগীরা পুলিশকে খুশি করে বাঁচতে চান। এতে করে আইন-আদালতের ওপর আস্থাও টলে যায়। পুলিশকে জনবান্ধব করা এবং আইনের শাসনের স্বার্থেই গ্রেপ্তার-বাণিজ্য কঠোর হাতে বন্ধ করা উচিত।
 

ভারতে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা
 

একজন সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন অনেক খেলা দেখাচ্ছেন। বলা চলে, তার এই খেলা বেশ ভালোভাবেই জমে উঠেছে। তিনি তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) নামে ভারতের নিকৃষ্টতম সাম্প্রদায়িক সংগঠনের প্রচারক হিসেবে। ভুলে যাওয়ার উপায় নেই যে, এই সংগঠনটির একজন নিবেদিত এবং অঙ্গীকারবদ্ধ সদস্য নাথুরাম বিনায়ক গডসে ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে গান্ধীজিকে গুলি করে হত্যা করেছিল। এই ঘটনার পর ভারত সরকার আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তখন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সরদার বল্লভভাই প্যাটেল। তিনি কংগ্রেসের শক্তিধর নেতা হলেও আসলে তিনি ছিলেন কংগ্রেসের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন আরএসএসপন্থি’। এ কারণে গান্ধী হত্যার পর আরএসএসকে নিষিদ্ধ করার অল্পদিন পরই তিনি এই সংগঠনটির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। এ সিদ্ধাšে-র বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী জওয়াহেরলাল নেহরুও কোনো আপত্তি করেননি। আরএসএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা আর কোনো রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কাজ না করে সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে কাজ করবে। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই দেখা গেল যে, তারা আগের মতোই কাজ করে যাচ্ছে একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে। শুধু তাই নয়, এভাবে কাজ করে তারা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল, শিবসেনা ইত্যাদি আরও কতগুলো চরম সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল খাড়া করেছে। তাদের যারা সৃষ্ট সব থেকে বড় রাজনৈতিক দল হলো ভারতীয় জনতা পার্টি।
নরেন্দ্র মোদি আরএসএসের প্রচারক হিসেবে কাজ করতে থাকার সময় তারা তাকে বিজেপিতে যোগদানের নির্দেশ দেয়। গুজরাটে বিজেপিতে সাংগঠনিক কাজের মাধ্যমে তিনি ২০০২ সালে অধিষ্ঠিত হন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর পদে। ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের সাধারণ নির্বাচনের পর তিনি হন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি ঘোষণা করেন, তারা গুজরাটের আহমেদাবাদে সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের এমন এক বিশাল মূর্তি নির্মাণ করবেন, যা নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অব লিবার্টির থেকেও উঁচু। এর জন্য কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হবে সেটা অনুমান করা কঠিন নয়। মোদির এই কাজ তার সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কারণ এত নেতা থাকতে সরদার প্যাটেলের মূর্তি নির্মাণের কারণ, তিনি ছিলেন কংগ্রেসের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক নেতাদের মধ্যে শীর্ষ ¯’ানীয়। অবশ্য তাকে ঘাপটি মেরে থাকা নেতা বলাও একেবারে কঠিন নয়। অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে কংগ্রেসের দাবি সত্ত্বেও প্যাটেল নিজেদের সাম্প্রদায়িক চরিত্র কোনো সময় গোপন রাখেননি। এদিক দিয়ে কংগ্রেসের অনেক ভণ্ড নেতার তুলনায় তার সততা প্রশংসাযোগ্য।
যা হোক, নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকার প্রসঙ্গে ফিরে গিয়ে এটা অবশ্যই বলা দরকার যে, ভারতে এখন সাম্প্রদায়িকতা সরকারের মদদে যেভাবে বি¯-ার লাভ করেছে, সেটা এক আতঙ্কের ব্যাপার। এ আতঙ্ক শুধু ভারতের অসাম্প্রদায়িক জনগণেরই নয়, বাংলাদেশের জনগণেরও। কারণ, ভারতে এভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তির কার্যকলাপ এবং তৎপরতা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
সারা দুনিয়াতে এখন ইসলামের খেদমত করার নামে যে জঙ্গি মুসলমানরা জোরেশোরে তৎপর আছে তাদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য হলো মুসলমানরাই। তাদের বক্তব্য হলো, ইসলামের মধ্যে এখন নানা প্রকার বিকৃতি দেখা দিয়েছে এবং ইসলামের পবিত্রতা ও বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্যই তারা তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এই শুদ্ধি অভিযান পরিচালনাকারীরা যে নিজেরাই ইসলামের শিক্ষার নানা বিকৃতি ঘটিয়ে সাম্রাজ্যবাদের প্ররোচনা এবং অর্থ ও অস্ত্র সাহায্যে বলীয়ান হয়ে তাদের ধর্মীয় কার্য করে যাচ্ছে জঙ্গি হামলার মাধ্যমে, এটা ওয়াকিবহাল মহলের কাছে স্পষ্ট। এ কাজ করতে গিয়ে ক্ষেত্রবিশেষে তারা অন্য ধর্মীয় লোকদের ওপর আক্রমণ করলেও তাদের আক্রমণের মূল লক্ষ্যস্থল হলো মুসলমানরাই। তারা হলো এক ধরনের বিকৃত মৌলবাদী যারা ইরাক, তিউনিসিয়াসহ বিভিন্ন দেশে এখন জাদুঘর পর্যন্ত আক্রমণ করে ধ্বংস এবং লুটপাট চালাচ্ছে। এদেরকে কেউ কেউ ভ্রান্তভাবে এবং প্রধানত উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলেও এরা সাম্প্রদায়িক নয়। এরা আসলে ধর্মযুদ্ধের নামে সাম্রাজ্যবাদের খেদমতকারী সংগঠন। আল কায়দা, বোকো হারাম, ইসলামিক স্টেট, জেএমবি লস্করে তায়েবা ইত্যাদি নামে এরা হলো বিশেষ ধরনের কতগুলো ফ্যাসিস্ট সংগঠন।
নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি এবং বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, শিবসেনা ইত্যাদি আরএসএস বৃত্তের অন্তর্ভুক্ত সংঘ পরিবারের প্রত্যেকটি দল হলো চরম সাম্প্রদায়িকতাবাদী। বিজেপির ক্ষমতাসীন হওয়ার সুযোগে আরএসএসও এখন বেশ প্রকাশ্যে তার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সভাপতি মোহন ভগবৎ তার নানা বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে বিষাক্ত সাম্প্রদায়িক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মোদি সরকার কর্তৃক তার মুখে হাত দেওয়ার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। কিন্তু শুধু বক্তৃতা-বিবৃতিই নয়, বিজেপি ভারতে ক্ষমতা দখলের পর সেখানে তারা গুজরাট মডেল চালু করতে নিযুক্ত হয়েছে। এ জন্য এখন ভারতজুড়ে বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা পরিণত হয়েছে এক নিয়মিত ব্যাপারে।
ভারতকে হিন্দুদের দেশ এবং মুসলমান-খ্রিস্টান ইত্যাদি অন্য ধর্মবিশ্বাসীদের বিদেশি আখ্যা দিয়ে ভারতকে শুধু হিন্দুদের দেশে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই নরেন্দ্র মোদি তার ঘর ওয়াপাসি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শুধু বিজেপিই নয়, তাদের সংঘ পরিবারভুক্ত অন্যান্য দলও এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন রাজ্যে গরিব মুসলমান ও খ্রিস্টানদের জোর করে হিন্দুধর্মে দীক্ষিত করছে। এসব ঘটনার বিরুদ্ধে ভারতেই জোর প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পর এবং ভারতের পার্লামেন্টে এ নিয়ে বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভের পর নরেন্দ্র মোদি বলেন, তারা সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ! তার কাছে ভারত ছাড়া আর কোনো ধর্ম নেই! এসবের মধ্যে যে কোনো সত্যতা নেই তা বলাই বাহুল্য। কারণ নরেন্দ্র মোদি তার‘ঘর ওয়াপাসি কর্মসূচি ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন সরকার হিসেবে খোলাখুলি এ ক্ষেত্রে আর কিছু করতে অসুবিধার মধ্যে থাকায় তিনি তাদের সংঘ পরিবারভুক্ত দলগুলোকে দিয়েই তার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন। তারা জবরদস্তিমূলকভাবে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের ধর্মান্তকরণ করলেও এই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে তার সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে, এমন উদাহরণ নেই।
কিন্তু‘ শুধু ধর্মান্তকরণ নয়, তারা মসজিদ ও চার্চের ওপরও ভারতজুড়ে হামলা করছে, সেগুলো ভাংচুর করছে। সম্প্রতি খ্রিস্টানদের ওপর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হামলা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দিল্লির নির্বাচনের আগে সেখানে তারা তিনটি চার্চে ভাংচুর করেছে। এছাড়া উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, কেরালা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, জব্বলপুরসহ অন্যান্য এলাকায় চার্চের ওপর হামলা করে তারা ভাংচুর করেছে। এই হামলা যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার এবং অন্যান্য রাজ্যে তাদের নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো পদক্ষেপই আজ পর্যন্ত নেয়নি। এ ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার দ্বারা এসব ক্রিমিনাল তৎপরতা অনুমোদন এবং উৎসাহিতই করা হচ্ছে। কাজেই নরেন্দ্র মোদি যতই বলুন তিনি ভারত ছাড়া অন্য ধর্ম জানেন না, এটা এক মহাপ্রতারণাপূর্ণ ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়।
কয়েকদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে কনভেন্ট অব জিসাস অ্যান্ড মেরি নামে একটি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে হামলা চালিয়ে সেখানে সত্তরোর্ধ্ব বয়সের মাদার সুপিরিয়রকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যে ভারতের মতো একটি দেশের জন্য কলঙ্কজনক, এতে সন্দেহ নেই। বিজেপির নেতৃত্ব এই ঘটনার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারণা করছে। অন্যান্য বিরোধী দলও একইভাবে এ কাজ করছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল হচ্ছে তৃণমূল। কিন্তু ঘটনার দিকে তাকিয়ে এ বিষয়ে সন্দেহ থাকে না যে, স্কুলটির ওপর এই আক্রমণ সাম্প্রদায়িক। তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে এখন এক সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও এবং সেখানে ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের সাম্প্রদায়িক কারবার তৃণমূল করছে না। কাজেই রানাঘাটের ঘটনা কারা ঘটিয়েছে এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছুই বলার উপায় নেই। মমতা ব্যানার্জি এই হামলার তদন্ত ভার নেওয়ার জন্য ভারতের সিবি আইকে অনুরোধ জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকায় পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব খুব উচ্চকণ্ঠে এই হামলার দায় তৃণমূলের ওপর চাপিয়ে রাজনৈতিক মাঠ গরম করছে। এ কথা ঠিক যে, তৃণমূল সরকার আইন-শৃঙ্খলার অনেক অবনতি সেখানে ঘটিয়েছে। কাজেই এ ধরনের কাজের দায়িত্ব সে হিসেবে তারা এড়িয়ে যেতে পারে না। কিন্তু তবু যে ধরনের হামলা রানাঘাটে হয়েছে তার সঙ্গে তৃণমূলের নয়, বিজেপির সর্বভারতীয় তৎপরতার সাদৃশ্যই অনেক বেশি। এ কারণে বিস্মিত হওয়ার কিছুই থাকবে না যদি দেখা যায় যে, এই হামলা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি অথবা তাদের সংঘ পরিবারভুক্ত কোনো দলের কর্মীরা করেছে।
ভারতে এভাবে বিজেপি সরকারের আমলে যেভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মুসলমান ও খ্রিস্টানরা যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন, এটা এক উদ্বেগের ব্যাপার। এই উদ্বেগ বাস্তবত আতঙ্কে পরিণত হওয়ার অবস্থা দাঁড়িয়েছে এ জন্য যে, এসব হামলাকারীর বিরুদ্ধে কোথাও কোনো পদক্ষেপ বিজেপি সরকার কর্তৃক নিতে দেখা যাচ্ছে না।
 


ভয়ঙ্কর মাদক সুপারি!
 

বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ সুপারি খাওয়ায় আসক্ত। আর অবশ্যই তা পানের সঙ্গে। কোথাও কোথাও এই সুপারিকে দেখা হয় ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে। ভেসজ হিসেবেও এর কদর আছে। বদহজম ও বন্ধ্যত্বের মতো সমস্যার প্রতিকার হিসেবে এটি ব্যবহার হয়। তবে এই সুপারি প্রতিবছর হাজার-হাজার মানুষের মৃত্যুরও কারণ। পুরো এশিয়াজুড়েই এই সুপারি পাওয়া যায়। এটির কার্যক্ষমতা এতটাই বেশি যে নিকোটিন, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইনের পাশাপাশি সুপারিকেও বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মানসিক বিভ্রমকারী’ মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও নারী এবং শিশুসহ অনেকেই এটি খান। তবে কর্মক্ষম পুরুষদের মাঝেই সুপারির ব্যবহার বেশি। সুপারি ব্যবহারকারীদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় মুখের ক্যান্সারের কারণে অনেকের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার যে কয়টি এলাকায় সুপারি খুব বেশি জনপ্রিয় তার একটি তাইওয়ান। সেখানে সুপারিকে বলা হয় ‘তাইওয়ানের চুইং গাম’। উচ্চমাত্রায় সুপারি খাওয়ার কারণে মুখের ক্যান্সারে মৃত্যুহারের মধ্যে প্রথম তিনটি অবস্থানের মধ্যে রয়েছে তাইওয়ান। সাধারণত পানের খিলি চুন, পানপাতা, এলাচি বা দারচিনির মতো মসলা এবং তামাকের সঙ্গে মিশিয়ে এই খিলি তৈরি করা হয়। আন্তর্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে এলাচি এবং দারচিনি ছাড়া বাকি সব উপাদানকে ‘কার্সিনোজেন’ বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বিবিসি।

Top

 

মমতার মনের কথা


 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের ইদানীং বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বক্তব্য সরাসরি প্রকাশ না করলেও সোস্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে প্রতিনিয়ত তার মনের কথা শেয়ার করেন। প্রথমে ফেসবুক দিয়ে শুরু করলেও এখন তিনি টুইট করে তার মতামত জানান। মুখ্যমন্ত্রী কোনো সফরে গেলে তার সঙ্গী থাকে একটি ট্যাব। এই ট্যাবে বিভিন্ন ছবি তুলতে ভালোবাসেন তিনি। এই ছবি আবার ফেসবুক আর টুইটারে পোস্ট করে মতামত জানান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে কোনো ঘটনার দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সোস্যাল নেটওয়ার্কে আপডেট এখন কলকাতার সংবাদমাধ্যমে মুখ্য সংবাদ সোর্স হিসেবে বিবেচিত হয়। ঠিক যেমন ঘটল তার ঢাকা সফরে। তার এই সফরকেন্দ্রিক ফেসবুকের পোস্টগুলো রেকর্ডসংখ্যক মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে। এই পোস্টগুলোর মোট লাইক করেছেন ৯৪ হাজার ২৬৯ জন। মš-ব্য করেছেন তিন হাজার ৮৪৫ জন। আর পোস্টগুলো শেয়ার করেছেন তিন হাজার ৪৫ জন। এই পোস্টগুলোতে নিজের বক্তব্যের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবি, ভাষাশহীদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানানোসহ স্মারক¯’লে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোট তিনটি ছবি ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের তিনটি ছবি দিয়েছেন। সফরে যাওয়ার প্রথম দিন ১৯ ফেব্র“য়ারি কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে বিমানে ওঠার কিছু আগে তিনি ফেসবুকে লিখছেনথ আমরা শিল্প, পর্যটন, শিল্পকলা, সিনেমা, সংস্কৃতি এবং অন্যান্য ক্ষেত্র বিভিন্ন সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করব। বাংলাদেশ সফর, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ, মাতৃভাষার জন্য আত্মদানকারী যারা মহান শহীদদের সম্মান দিতে এবং দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক জোরদারে একটি অভূতপূর্ব সুযোগ এই সফরে পাওয়া যাবে।

সফরের পরের দিন ২০ ফেব্র“য়ারি দুপুর ৩টা ২৫ মিনিটে তিনি ফেসবুকে লিখছেন, “আমি ১৭ বছর পর ঢাকা এসেছি। ‘বৈঠকি বাংলা’র উদ্দেশ্য ছিলথ এখানে উভয় পক্ষের সাহিত্য, চলচ্চিত্র, নাটক, সঙ্গীত দুনিয়া থেকে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কদের উপ¯ি’তিতে একটি উদ্দীপক পরিবেশে হৃদয়গ্রাহী আলোচনা করা। আমরা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের পারস্পরিকভাবে উভয় পক্ষই উপকৃত হবো এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দীর্ঘ ¯’ায়ী সম্পর্ক জোরদার করতে পারেন কীভাবে সেই আলোচনা করার জন্য এই সভা ছিল।” ওই দিনই সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তিনি লিখছেন, ‘বৈঠকি বাংলার পর আজ আমার বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। আমরা পারস্পরিক স্বার্থ ও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করলাম। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আš-রিকতার সঙ্গে, বিশেষ করে ভারত ও কলকাতা সফরের কথা বললেন।’ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে আবেগপ্রবণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে রাত ৯টা ৩ মিনিটে লিখছেন, ‘এই সন্ধ্যায় আমি ৩২ ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে আমার সম্মান জানাতে গিয়েছিলাম। আমার জন্য এবং এই উপমহাদেশে আমাদের সব তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধান ¯’পতি ছিলেন। জাতির পিতা হিসেবে তিনি বিশ্বের সবার কাছ থেকে বাংলা ভাষার জন্য সম্মান ও গৌরব নিয়ে এসেছিলেন। এই মহান আত্মার স্মৃতিতে আমি শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে মাথা নত করছি।’ রাত ১২টা ৪০ মিনিটে তিনি ফেসবুকে লিখছেন, ’২১ ফেব্র“য়ারি আš-র্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমার সশ্রদ্ধ সম্মান জানাতে শহীদ মিনার, ঢাকা উপ¯ি’ত হতে পারা জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত। আমি উদ্বেল ও গভীরভাবে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত অভিজ্ঞতা ও আবেগ দিয়ে স্পর্শ করছি।’

একুশের বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে মনের আবেগ দিয়ে তিনি লিখছেন, ‘আজ আমি আমার প্রিয় দিদি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য ছিল উষ্ণ এবং আš-রিক, যা আমাকে আবেগাপুত করেছে। এই সফর ছিল গঠনমূলক ও ইতিবাচক। আমি বলতে পারি ঐতিহাসিক। আমি পশ্চিমবঙ্গ সফরের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এসো এসো আমার ঘরে এসো, আমার ঘরেৃ।’

Top
 


সামরিক কুচকাওয়াজ এড়িয়ে গেলেন অং সান সুচি



মায়ানমারের বিরোধী দলীয় নেত্রী অং সান সুচি শুক্রবার স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে একটি বড় বার্ষিক সামরিক কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকা থেকে বিরত থেকেছেন।
কুচকাওয়াজে দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ‘স্থিতিশীলতার কোনো ধরনের ব্যত্যয়’ এর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
গণতন্ত্রের মানস কন্যা সুচি কিছুদিন থেকে ছোটো-খাটো স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন। শুক্রবার তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তার অনুপস্থিতি ছিল প্রকটভাবে দৃশ্যমান।
সু চির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ তার ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)’র একটি সূত্র এএফপিকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে তার বিশ্রাম প্রয়োজন। সে কারণে তিনি নাইপিদোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।’ তবে তার শারীরিক অবস্থা ‘ভালো’।
মিয়ানমারে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে অং সান সুচি তার তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে নোবেল বিজয়ী ৬৯ বয়সী নেত্রীর দল নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Top
 


জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ছে



প্রতিনিয়ত বাড়ছে ক্যান্সারে আক্রান্তের হার। বাড়ছে হার্ট, কিডনি কিংবা ফুসফুসের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের হারও। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা এ জন্য দায়ী করছেন মূলত ভেজাল বা অতিমাত্রায় রাসায়নিক উপাদান মেশানো খাদ্যদ্রব্য গ্রহণকে। অব্যাহতভাবে বেড়ে যাওয়া পরিবেশদূষণও বহু রোগবালাই বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে জুনোটিক ডিজিজ বা প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ানো রোগজীবাণুও বর্তমান সময়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এখন সোয়াইন ফ্লু রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। গত দুই মাসে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বার্ড ফ্লুর কারণে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে বিরাটসংখ্যক পোল্ট্রি ধ্বংস করতে হয়েছে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দেয় অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ। নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যাও কম নয়। জলাতঙ্ক এখনো অনেক এলাকায় আতঙ্কের কারণ। এমনই আরো কিছু রোগ রয়েছে, যেগুলো মূলত বিভিন্ন প্রাণীর মাধ্যমে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে। জনস্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে সব বিষয়কেই হিসাবে নিতে হবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশ এখনো এ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, খাদ্যে ভেজাল শুধু নয়, বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান বা সরাসরি বিষ মেশানোর মতো ঘটনাও বাংলাদেশে হরহামেশা ঘটছে। সবজি বাজারে আনার আগে সরাসরি বিষ মেশানো পানিতে চুবিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রায় সব ফলেই বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেক রঙিন খাদ্যদ্রব্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানে তৈরি কাপড়ের রং ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় কয়েক দশক আগেই ডিডিটির ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশে এখনো তা পাওয়া যায় এবং শুঁটকি তৈরিতে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় বলে জানা যায়। ফল-মাছ-মাংস-দুধে ফরমালিনের ব্যবহার নিয়ে কত না হইচই হয়েছে! অনেক নাটকও হয়েছে! কিন্তু কাজের কাজ খুব একটা হয়েছে কি স্বাস্থ্যমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে আইনের অভাব নেই। এত কঠোর আইন আছে, যা উন্নত অনেক দেশেও নেই। কিন্তু যেটা নেই তা হলো আইনগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন। কাজেই আইন বাস্তবায়নের দিকে আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে। আর তা না হলে অপরাধীরা প্রায় অবাধেই খাবারে ভেজাল মিশিয়ে যাবে। অথচ এই প্রবণতা রোধ করা না গেলে পাড়ায় পাড়ায় হাসপাতাল করেও জনস্বাস্থ্যের ধস ঠেকানো যাবে না। একইভাবে গুরুত্ব দিতে হবে পরিবেশ এবং জুনোটিক ডিজিজের ক্ষেত্রেও। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম- এই সরল সত্য মেনে নিয়েই আমাদের দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

Top
 

দশমিনায় গাজা সম্্রাট গ্রেফতার
 

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর দশমিনা থানা পুলিশের অভিযানে রবিবার দিবাগত রাত ৮টায় দু’গাজা সম্্রাট গ্রেফতার। জানা যায়, থানার ডিএসবি সদস্য মোঃ ফরহাদ হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার আবদুর রসিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজ সড়ক থেকে ৫শ’গ্রাম গাজাসহ দশমিনা গ্রামের মোঃ শাহ-আলম গাজী (৪৫) ও চরহোসনাবাদ গ্রামের বজলু সিকদার (৪২) নামক দু’গাজা সম্্রাটকে আটক করে। আটক দু’গাজা সম্্রাট ও তাদের স্বীকারোক্তিতে গাজা বিক্রেতা মোঃ জামাল হাওলাদার (৪২)সহ ৩ জনকে আসামী করে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে, বাউফলের নুরাইনপুর শিবকাঠী এলাকার বাসিন্দা সেচ্ছাসেবী সংগঠন আরবান’র কর্মকর্তা মোঃ সালাহউদ্দিন আহমেদকে ২০গ্রাম গাজাসহ উপজেলার সোনালী ব্যাংক এলাকা থেকে রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৭টায় থানা পুলিশ আটক করে। গতকাল সোমবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজহারুল ইসলামের আদালত সালাহউদ্দিনের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

 

Top

 




 

নারী ও শিশু সংবাদ

 



নারী বৈষম্যের বিরুদ্ধে কোন ছাড় দেয়া হবে না ॥ জাতিসংঘ

 


বিশ্বব্যাপী নারী ক্ষমতায়ন প্রচেষ্টা জোরদার করার জন্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ। একইসঙ্গে নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য সৃষ্টিকারীর প্রতি কোনো ধরনের সহিষ্ণুতা প্রদর্শন বা ছাড় না দেয়ারও আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি। শুক্রবার লিঙ্গ সমতা এগিয়ে নেয়া বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক বিতর্ক অধিবেশন উদ্বোধনকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাম কুটেসা বলেন, নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য সৃষ্টিতে যেসব কাঠামোগত কারণসমূহ কাজ করে সেক্ষেত্রে আমরা কোনো ধরনের ছাড় না দেয়ার পক্ষপাতি। এছাড়া লিঙ্গ বৈষম্য সৃষ্টিকারী যেসব আইন ও রীতিনীতি আছে তা বিলোপ করার পক্ষেও মত দেন তিনি। বেইজিং নারী সম্মেলনের ২০তম বার্ষিকী ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভাপতির অফিস এই বিতর্কের আয়োজন করে।
বিতর্কে অংশ নেয়া ক্রোয়েশিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট কলিন্ডা গ্রাবার কিতারোভিক বলেন, লিঙ্গ সমতা এগিয়ে নেয়ার লড়াইয়ে আমাদের এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে এই ধরনের আয়োজন আমাদের সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগাবে এবং দায়িত্ববোধকে আরো শানিত করার সুযোগ এনে দিয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এক্ষেত্রে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে যা সাহসের সাথে মোকাবিলা করতে হবে।
জাতিসংঘে লিঙ্গ সমতা নিয়ে কাজ করা মহিলাদের মতে বিশ্বব্যাপী এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২০ বছরে নারীর অগ্রগতি সবচেয়ে কম হয়েছে।
একই সঙ্গে সুর মিলিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ধর্ষণ, বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে এবং মজুরি বৈষম্যসহ নারী অধিকার ক্ষুণেœ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। এর পাশাপাশি তিনি এখনও অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক মহিলার ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে বান কি মুন বলেন, আমরা সর্বক্ষেত্রে নারীর অগ্রগতি ও ক্ষমতায়ন দেখতে চাই। এক্ষেত্রে বেইজিং কর্মপরিকল্পনা উচ্চাভিলাষী মনে হতে পারে কিন্তু নারী ও কিশোরীর ক্ষমতায়ন ও তাদের মানবাধিকার রক্ষায় এটি একটি বাস্তব পদক্ষেপ হতে পারে। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে এ সংক্রান্ত একটি কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন করা হয় যা বেইজিং ডিক্লিয়ারেশন নামে অভিহিত। এতে বিশ্বব্যাপী নারীর সমতা, উন্নয়ন ও সহিংসতা রোধের ঘোষণা দেয়া হয়।
নারীর মতায়নেই মানবতার উন্নয়ন
রবিবার, ৮ মার্চ ২০১৫
* ১০০ শিার্থীর মধ্যে ৫৩ জনই ছাত্রী
* অর্থনৈতিক কাজে জড়িত ১ কোটি ৭২ লাখ নারী
* গত ফেব্র“য়ারিতে ৩৭৮ নারী-শিশু নির্যাতিত
‘বিশ্বের যা কিছু মহান/ সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,/ অর্ধেক তার নর।’ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই অমোঘ বাণী যুগে যুগে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। একটি দেশ তথা বিশ্বের সামগ্রিক উন্নয়নে নারীর স্পর্শ বিনা কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এ দেশের গৃহবন্দি নারীকে আলোর দিশা দেখিয়েছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। নারী জাগরণের মূলমন্ত্র ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সমাজের সর্বস্তবে। আর সেই মূলমন্ত্রে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নিজ-নিজেে ত্র বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন এ দেশের নারীরা। আর তাই এবারের বিশ্ব নারী দিবস পালিত হচ্ছে ‘নারীর মতায়ন, মানবতার উন্নয়ন’Ñ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে। আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দেশেও ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে দিনটি।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সবেে ত্রই নারীর মতায়নে মাইলফলক সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে গত এক দশকে দেশে নারীর মতায়নে অর্থবহ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তাই নারী তথা দেশের কল্যাণের জন্যই নারী উন্নয়নের সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা উচিত।
শিক্ষায় নারী
নারীশিায় দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখন প্রতি ১০০ শিার্থীর মধ্যে ৫৩ জনই ছাত্রী। পাসের হারের দিক থেকেও তারা এগিয়ে। মাধ্যমিক শিায় নারীর অংশগ্রহণের সূচকে এ অঞ্চলের প্রথম সারির ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির বলেন, নারীশিা এগিয়ে যাওয়ার পেছনে নারী আন্দোলন মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। আর নারীশিার ব্যাপারে সরকারেরও একটি অঙ্গীকার ছিল। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি সুশীল সমাজ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাও কাজ করেছে।
বাংলাদেশ শিা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ ছাত্রী। মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীর সংখ্যা ৫৩ শতাংশ। কিন্তু কলেজ পর্যায়ে এ সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৭ শতাংশ। এ ছাড়া চিকিৎসা, আইনসহ পেশাগত শিায় নারীর অংশগ্রহণ এখন ৩৮ শতাংশ।
এ ব্যাপারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কারণে শিায় নারীদের সমতা অর্জিত হয়েছে। একই সঙ্গে নারী সংগঠনগুলো এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে। ফলে সব বিষয়েই নারীদের সচেতনতা বেড়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ ১৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৬টি। এর মধ্যে নারী চাকরিজীবী ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮০৪ জন। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তথ্যানুযায়ী, সর্বশেষ ৩৩তম বিসিএস পরীার মাধ্যমে ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির জন্য সুপারিশকৃত ৮ হাজার ৩৭৮ জনের মধ্যে ৫ হাজার ১৭৬ জন পুরুষ এবং নারী ৩ হাজার ২০২ জন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারে ৫ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে নারী ১ হাজারেরও বেশি। তবে প্রশাসনের শীর্ষপদ সচিব পদে নারী আছেন মাত্র পাঁচজন। অথচ মোট সচিবের সংখ্যা ৭২। এ বিষয়ে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, উচ্চশিায় নারী অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তার অভাব ও দারিদ্র্যের কারণে অনেক বাবা-মা আগেভাগেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন। এ কারণে চাকরিতে নারীর সংখ্যা কম।
অর্থনীতিতে নারী
বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি, শিল্প ও সেবাÑ এ তিনটি খাতে বিভক্ত। বিশেষজ্ঞরা জানান, ব্যবসায় একসময় একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল পুরুষের। তবে দিন বদলেছে। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রধান চালিকাশক্তি কৃষিতে নারীর অবদান এখন ৪০ শতাংশ।
ডবিউবিবি ট্রাস্টের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, নারী দিনে কমপে ১৬ ঘণ্টা ঘরের কাজে ব্যয় করে, জাতীয় অর্থনীতিতে যার কোনো আর্থিক মূল্য ধরা হয় না। বাংলাদেশ শ্রমশক্তির জরিপে দেখানো হয়, ১ কোটি ৭২ লাখ নারী অর্থনৈতিক কাজে জড়িত আর ১ কোটি ৬২ লাখ নারী কর্মজীবী। কিন্তু বাকি ৩ কোটি ৫০ লাখ নারী, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে এবং যারা সংসারের কাজে নিয়োজিত, তাদের কোনো উল্লেখ নেই জরিপে।
কৃষি : দেশে ৭০ শতাংশের বেশি ভূমিহীন নারী কৃষিকাজে জড়িত। তাদের দৈনিক গড় আয় ১৫০-২০০ টাকা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ১৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। আর গ্রামীণ নারীর ৭১ শতাংশই এখন প্রত্যক্ষ বা পরোভাবে কৃষিকাজে নিয়োজিত। তবে তুলনামূলক নিম্নমজুরিতে কৃষিকাজে অংশগ্রহণ করছেন নারীরা। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, পুরুষের তুলনায় নারীর মজুরি এখনো ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম। এ বিষয়ে শিশু ও নারীবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, নারীকে সেই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, যাতে স্বামীর পরিচয় নয়, নারী নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে পারে। দেশে একটি ইতিবাচক সরকার থাকলে নারীর উন্নয়ন সম্ভব।
শিল্প : ‘পোশাকশিল্প’ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি শিল্প খাত। জরিপ অনুসারে, বর্তমানে পোশাকশিল্পে ৮১ শতাংশই নারীশ্রমিক। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশ এই খাত থেকে আসে। এ বিষয়ে শ্রমিক নেত্রী গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, এত বছর পরও বাংলাদেশের ৪৫ লাখ পোশাকশ্রমিক তাদের পূর্ণ অধিকার পান না। কিন্তু শিল্পক্ষেত্রে নারীরা সুযোগ পেলে অনেক দূর যেতে পারবেন।
উদ্যোক্তা : নারীরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে মতায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালে মোট নারী উদ্যোক্তা ছিলেন ১ হাজার ২৭৩ জন। ২০১৩ সালে তা বেড়ে হয় ৪১ হাজার ৬৯৫ জন। এর মধ্যে সেবা খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছেন ৩৮১ জন আর ব্যবসা খাতে ২ হাজার ২৭০ জন। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, দিন দিন নারীদের কাজ করার আগ্রহ বাড়ছে। তারা ঘরে বসে না থেকে বিভিন্ন কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তাই দেশের স্বার্থে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে নারীদের পাশে থাকা উচিত সবার।
জনশক্তি রপ্তানিতে নারী
জনশক্তি রপ্তানির মন্দা সময়েও এগিয়ে নারীরা। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাব অনুযায়ী, গত বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত কাজ নিয়ে বিদেশে গেছেন ৬০ হাজার ৬৯১ জন নারী। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ৫৬ হাজার ৪০ জন। ২০১২ সালে যান ৩৭ হাজার ৩০৪ ও ২০১১ সালে ৩০ হাজার ৫৭৯ জন। অথচ ২০০১ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫৪। ১৩ বছরে জনশক্তি হিসেবে নারীর বিদেশ গমন বেড়েছে ১৬০ গুণ।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নারী
সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও নারীদের ভূমিকা ও অবস্থান বাড়ছে। এ বিষয়ে ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, নারীরা অনেক এগিয়েছে, এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবেন। আমার মতে বর্তমানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নারীদের অবস্থান শতকরা ৪০ থেকে ৬০ ভাগ। যখন এ সংখ্যা ৮০ ভাগে পৌঁছাবে, তখন বলতে পারব, বাংলাদেশের নারীদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পুরোপুরি অংশগ্রহণ আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীরা যদি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অংশগ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছাশক্তিটাই বড় হয়ে কাজ করবে। তার পরও সব মিলিয়ে বলব, নারীরা আজ অনেক এগিয়েছে, এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে।
কমছে না নারী নির্যাতন
দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উন্নয়নের সূচক ঊর্ধ্বমুখী করার প্রবণতার পরও কমছে না নারী নির্যাতন। প্রতিদিনই ঘরে-বাইরে নারী ও শিশুরা নানা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ২০১৪ সালে প্রায় ৫ হাজার নারী ও শিশু ধর্ষণসহ নানা নির্যাতনের শিকার হন। পুলিশ সূত্র জানায়, গত জানুয়ারিতে ৩২৭ ও ফেব্র“য়ারিতে ৩৭৮ জন নারী-শিশু নির্যাতনের শিকার হন। এর মধ্যে ফেব্র“য়ারিতে ৬৩ জনকে ধর্ষণ ও ৮ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। ৫৩ জন নারী-শিশুকে হত্যা করা হয়। ফেব্র“য়ারিতে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হন ২৫ নারী। তাদের হত্যা করা হয় ১৬ জনকে। এছাড়া উত্ত্যক্ত করা হয় ৩২ জনকে। আর এ কারণে আত্মহত্যা করেন ১ জন।




 


 

Top
 

পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

 


্বিগুণেরও বেশি বন্দী কারাগারে


সারাদেশের কারাগারে বর্তমানে তিল ধারণেরও উপায় নেই। দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩৪ হাজার। অথচ সেখানে প্রতিদিন গড়ে বন্দী থাকছে ৭৫ থেকে ৭৬ হাজার। অর্থাৎ প্রতিদিন দ্বিগুণ বন্দী থাকছে কারাগারে। কারা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সবকয়টি কারাগারে মোট বন্দী ছিল প্রায় ৭৬ হাজার।
কারা অধিদফতর এবং বিভিন্ন কারাগার সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে বিএনপিসহ চার দলীয় জোট ক্ষমতা গ্রহণের পর শুরু হয় দেশব্যাপী গণগ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,০১৮। তখন গড়ে প্রতিদিন বন্দী থাকতো ৭৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল বিএনপি সরকার পতনের ডেডলাইন ঘোষণা করে বলেন তার হাতে “ট্রাম্পকার্ড” আছে। এর পরপরই রাজধানীসহ দেশব্যাপী শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেফতার। ঐসময় ৬৬টি কারাগারে ধারণক্ষমতা ছিল ২৫,৩৯৬ জন। প্রতিদিন গড়ে বন্দী থাকতো ৮৫ হাজারেরও বেশি। ২০০৬ সালে বিএনপির শাসনামলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান কে হবেন এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগ ও এর সমমনা দলগুলো দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী চালায় গণগ্রেফতার। সেই সময় ৬৬টি কারাগারের প্রতিদিন গড়ে বন্দী ছিল ৯০ হাজার।
চলতি বছর বিএনপিসহ ২০ দলের টানা অবরোধ এবং সপ্তাহে ৫ দিন হরতালে নাশকতা প্রতিরোধে চলছে গণগ্রেফতার। গতকাল ছিল অবরোধের ৭৫তম দিন। বর্তমানে ৬৮টি কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩৪ হাজার। সেখানে প্রতিদিন বন্দী থাকছে ৭৫ হাজার।
৭টি কারাগার কর্তৃপক্ষ বলেন, ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দী হওয়ায় থাকা, টয়লেট ও গোসল নিয়ে কি যে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বন্দীরা, এই চিত্র যেকোন বিবেকবান মানুষ একনজর দেখলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না। জেল কোড অনুযায়ী বন্দীদের ব্যয়ভার বহন করা হয়ে থাকে। খাওয়ার কোন সমস্যা হয় না। গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে হয় বলে বন্দীরা নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অনেক বন্দী আছে যারা জানে না কি অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ধরনের বন্দী চরম দুর্বিষহ অবস্থায় থাকতে থাকতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এমন তথ্য জানান ঐসব কারা কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, নিরপরাধ মানুষ গ্রেফতারে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আন্দোলন এবং নাশকতা প্রতিরোধে সারাদেশে বর্তমানে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নাশকতাকারীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একশ্রেণির কর্মকর্তা গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চাহিদামত ঘুষ না দিলে থানায় ইতিপূর্বে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয় গ্রেফতারকৃতদের। যারা টাকা দিতে পারেন তাদের মুক্তি মেলে। যারা দিতে পারেন না কারাগারে স্থান হয় তাদের। তবে শুধু এই সরকারের আমলেই এধরনের গ্রেফতার বাণিজ্য হচ্ছে তা নয়। প্রতিটি সরকারের আমলেই গ্রেফতারের নামে বাণিজ্য হয়েছে।
একশ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তা দলীয় পরিচয়ে গ্রেফতারের নামে দুই হাতে ঘুষ বাণিজ্য করে আসছেন। ঐসকল পুলিশ কর্মকর্তা শুধু দলীয় নেতার মত আচরণই করেন না, মোটা অংকের উেকাচ দিয়ে রাজধানী ও ঢাকার বাইরে ভাল জায়গায় বদলি হন। তাদের কাছে ভাল জায়গা মানে যে থানায় বেশি ঘুষ বাণিজ্য করা যায় সেটাই। তবে শুধু ঘুষ দিয়েই এসব থানায় বদলি হওয়া যায় না। পিছনে প্রভাবশালী নেতা থাকতে হয়। এজন্য কোন কোন নেতা প্রতিমাসে থানা থেকে মাসোহারা পেয়ে থাকেন। ঐসকল দলীয় লেজুড়ভিত্তিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলা হয় ওয়ান টাইম অফিসার। সরকার যতদিন ক্ষমতায় তাদের চাকরিও ততদিন। এসময় কয়েকশ’ কোটি টাকা কামিয়ে কিংবা বিপুল সম্পদের মালিক হন ওই পুলিশ কর্মকর্তারা। সরকারের মেয়াদ শেষে তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান আত্মগোপনে, কেউ স্বেচ্ছা অবসরে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, থানায় এ ধরনের ওয়ান টাইম কর্মকর্তাদের এখন দাপট। তারা নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করে না।
বিরোধী দলীয় রাজনীতি করলেই যে সবাই বোমাবাজি কিংবা নাশকতার সঙ্গে জড়িত তা নয়। অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন তারা শুধুই রাজনীতি করেন। নাশকতা, ভাংচুর ও বোমা মেরে মানুষ হত্যাকে ঘৃণা করেন। এ ধরনের নেতা-কর্মীরাও গণগ্রেফতারের শিকার হন।
নাশকতাকারী, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারী বেশিরভাগই এগুলো ঘটিয়ে চলে যান আত্মগোপনে। জঘন্য অপরাধীদের চেয়ে গণগ্রেফতারের শিকার হন নিরীহ সাধারণ মানুষ। বিগত সরকারের আমলেও এক চিত্র ছিল। রাজধানীর তিনটি থানার ওসির বিরুদ্ধে সর্বাধিক গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ। এদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। এ পুলিশ (ওসি) কর্মকর্তার পুলিশ না হয়ে ডাকাত হওয়া উচিত বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরকারের ভাবমূর্তি এ ধরনের পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষুণœ করছে। শীর্ষ কর্মকর্তারা ভয়ে তাকে কিছু বলতে নারাজ। এমন তথ্য জানান এক কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে যে পুলিশ কর্মকর্তা কথা বলে তাকে রাজাকার বানিয়ে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। ঢাকার বাইরের অনেক থানায় চলছে গ্রেফতারের নামে বাণিজ্য। এ বাণিজ্যের ভাগ শীর্ষ কর্মকর্তাদের পকেট পর্যন্ত পৌঁছায়।

Top
 

শ্রীনগরে মাছুম হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন


বিকল্প ধারার নেতা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার মাছুম হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বাবুল ও শাহাদাত। বাবুল কারাগারে থাকলেও অন্যজন পলাতক। বৃহস্পতিবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের আদেশে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জান যায়, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহী বি চৌধুরীর শ্রীনগরের বিজয় মিছিলে যাওয়ার জন্য মামলার বাদী শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও তার ভাই মাছুম নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে ২০০৪ সালের ৭ জুুুুন বিকালে শ্রীনগর থানার কামারগাঁওয়ে পৌঁছলে আসামি শাহাদাত, বাবুল, কাইয়ুমসহ অন্যরা পরস্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে মাছুমকে খুন করে।
সিরাজগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর ফাঁসি
স্ত্রী হত্যার দায়ে সিরাজগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্দে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুস সালাম (৩৩) উল্লাপাড়া উপজেলার দহখোলা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ আদালত-২ এর বিচারক মাসুদুর রহমান এ রায় প্রদান করেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৬শে জুলাই রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে আবদুস সালাম তার স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য সালাম তার স্ত্রী ফাতেমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের মামা গোলবার হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে উল্লাপাড়া থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত স্বামীর বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেন এবং অপর ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন। সরকার পক্ষে স্পেশাল পিপি আবদুল হামিদ লাভলু ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ মামলা পরিচালনা করেন।

Top


জুনের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে


আগামী জুনের মধ্যেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার লালবাগ থেকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে। বর্তমান কারাগারের ৯ একর জায়গা জনগণের জন্য একটি পার্ক ও দুটি যাদুঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হবে। বর্তমানে কারা বিভাগে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে কারা বিভাগকে আরো যুগোপযোগী করার জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কারা প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, বন্দিরা সাজাভোগ শেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে যাতে সমাজে পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার সুযোগ পায় সে জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি আমরা গ্রহণ করা হয়েছে এ ছাড়া দেশ ও জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জঙ্গি এবং শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যাতে কারাগারের ভেতর থেকে জঙ্গি তৎপরতা চালাতে না পারে সে লক্ষ্যে কারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে।
 

 

Top
 

স্বাস্থ্য সংবাদ



ক্যানসারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা: নীরব প্রাণঘাতক ‘সুপারি’


ক্যানসারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে ‘নীরব মরণ ঘাতক’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে সুপারি।
বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ এটি ব্যবহার করে। চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে ছয় কাপ কফির সমান ফল দেয় এটি। কোথাও কোথাও এটিকে দেখা হয় ভালোবাসা ও বিয়ের প্রতীক হিসেবে। আবার কখনো কখনো এটি বদহজম ও বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এত গুণসম্পন্ন বস্তুটির নাম ‘সুপারি’। তবে হালে ক্যানসারের সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতার কারণে এটি ‘নীরব মরণ ঘাতক’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সুপারির জন্য এশিয়া প্রসিদ্ধ। উদ্দীপক উপাদানের কারণে অনেকেই নিয়মিত সুপারি চিবিয়ে থাকেন। বিশেষ করে গাড়ি চালানো, মাছ ধরা কিংবা নির্মাণকাজের মতো বিষয়ে যারা যুক্ত থাকে, তারা দীর্ঘসময় জেগে থাকার জন্য এটি ব্যবহার করে। সুপারিকে তাই মানসিক বিভ্রমকারী মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশেও পানের সঙ্গে সুপারি খাওয়া হয়। বহু মানুষ এটিতে অভ্যস্ত। তবে এভাবে সুপারিতে আসক্তির বড় সমস্যা হলো, সুপারিতে অভ্যস্ত মানুষের মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এতটাই যে, প্রথমবার সুপারি খাওয়ার কয়েক দশক পরও এর প্রভাবে কারও মুখে ক্যানসার হতে পারে।
এশিয়ার যেসব দেশে সুপারি অনেক বেশি জনপ্রিয় তাইওয়ান সেগুলোর একটি। সুপারি ‘তাইওয়ানের চুইং গাম’ হিসেবে পরিচিত। সুযোগ পেলেই এখানকার বাসিন্দারা চুইংগামের মতো সুপারি চিবোতে পছন্দ করেন। এখনো খালি সুপারি চিবোন তাঁরা; আবার কখনো পানপাতা, চুন, এলাচি বা দারুচিনির মতো মসলার সঙ্গে মিশিয়ে সুপারি খেয়ে থাকেন তাঁরা। বিষয়টি এখানকার সংস্কৃতির অংশ হয়ে পড়েছে। তবে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে এর খেসারত দিতে হচ্ছে ব্যবহারকারীদের।
আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে চুনকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। পান-সুপারির সঙ্গে চুন ব্যবহারের ফলে মুখের ভেতর ক্ষত তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান ক্ষতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
তাইওয়ানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মুখের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হান লিয়াং-জুন বলেন, অর্ধেক মানুষ এখনো জানেই না যে সুপারি মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ। সুপারির কারণে মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারের দিক থেকে শীর্ষ তিনটি দেশের একটি তাইওয়ান।
তাইওয়ানের সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতে বহু বছরের পুরোনো এই অভ্যাসটি কমিয়ে আনতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলও পেতে শুরু করেছে দেশটি। সুপারি ব্যবহারকারীর সংখ্যা খানিকটা কমেছে। সুপারির কুফল সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে ভারত ও থাইল্যান্ডও প্রচারকাজ শুরু করেছে।
 

বিবাহিতদের সুখের জন্য ১৪টি টিপস


জনপ্রিয় ম্যাগাজিন রিডার্স ডাইজেস্ট ঠিক এভাবেই লেখাটি শুরু করেছে। ডায়মন্ড কিংবা ফুল নয়, কিছু ছোট ছোট বিষয় আপনার বিবাহিত জীবনে এনে দিতে পারে অপরিমেয় সুখ, আস্থা ও ভালবাসা। এমনই ১৪টি পরামর্শ নিয়ে আজকের হেলথ টিপসটি সাজানো হয়েছে।
এক: স্বামী-স্ত্রীর চলার পথে প্রতিনিয়ত একসঙ্গে থাকতে হয়, মুখোমুখি হতে হয় অনেক প্রতিকূলতার। তা সত্ত্বেও দিনে অন্তত একবার একে অপরের কাজ ও সহযোগিতার জন্য প্রশংসা করুন। এমনকি ডিস ওয়াশ করলেও প্রশংসা করতে পারেন। দুই: আপনার জীবন সঙ্গিনীর জন্য কিছু একটা করার পরিকল্পনা করুন। যেমন বাসার বা অফিসের কাজে সহায়তা করুন। নিদেনপক্ষে একটা এসএমএস করুন। মধুচন্দ্রিমার দিনগুলো একে অপরকে মনে করিয়ে দিন। তিন: পরিবারের ভালমন্দ নিয়ে দু’জনে একসঙ্গে বসে আলোচনা করুন। গাড়িতে বা সোফায় বসে এমন কিছু মন্তব্য করুন যাতে আপনাদের সম্পর্কের একটা নতুন অর্থ তৈরি হয়। চার: মাঝে মধ্যে সময় পেলে একসঙ্গে সংসারের কাজ অথবা বাগানের পরিচর্যা করুন। দু’জনে কর্মঠ থাকার চেষ্টা করুন। পাঁচ: প্রতিদিন সকালে একবার জিজ্ঞেস করুন আজ তোমার কি কি কাজ আছে। ছয়: পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কথা বলুন এবং কোন পার্টি বা অনুষ্ঠানে স্ত্রীর প্রশংসা করার চেষ্টা করুন এবং কোন অনুষ্ঠানে কখনই স্ত্রীকে নিয়ে ফান করবেন না। সাত: যদি কখনও ভুল বুঝাবুঝি হয় অথবা মতের কোন পার্থক্য তৈরি হয় তখন দূরে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন অথবা এক সঙ্গে পার্কে হেঁটে আসুন। হালকা আলাপ করুন। আট: যেভাবে আপনার জীবন সঙ্গিনী বা সঙ্গী আপনার কাছ থেকে সাহচার্য আশা করে বা আপনার কাছ থেকে কথা শুনতে চায় সেভাবে পরিকল্পনা করুন। নয়: সব সময় গুছিয়ে সুন্দরভাবে কথা বলুন। দশ: স্বামী-স্ত্রীর বিশেষ মুহূর্তগুলোতে একে অপরকে সহযোগিতা করুন। এগার: আপনার ভালবাসা, শ্রদ্ধার মধ্যে যেন সততা থাকে তার জন্য চেষ্টা করুন। বার: কোন ভুল, ভ্রান্তি মতপার্থক্য থাকলে তা সংশোধনের চেষ্টা করুন। তের: সব কিছুর ঊর্ধ্বে নিজের বিবাহকে গুরুত্ব দিন। চৌদ্দ: হঠাৎ কোন কিছু চাপিয়ে দেবেন না। পারস্পারিক সমঝোতার মাধ্যমে সব সিদ্ধান্ত নিন।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ

Top
 

ভাতঘুমে স্মৃতিশক্তি বাড়ে


দীর্ঘ সময় কাজ করার পর একটু ঘুমিয়ে নিলে ক্লান্তি দূর হয়ে শরীরটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এতে নতুন উদ্যমে কাজ করার শক্তি পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় পড়ার ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নিলেও মাথার ঝিমঝিম ভাবটা দূর হয়ে যায়। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, ক্ষণিকের এই ঘুম বা ভাতঘুম স্মরণ রাখার ক্ষমতা পাঁচ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। জার্মানির সারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ নিয়ে গবেষণা চালান। তারা গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের দুটি দলে ভাগ করেন। তাদের সবাইকে বেশ কিছু শব্দ মুখস্থ করতে বলা হয়। এরপর এক দলের সদস্যদের ঘুমাতে দেওয়া হয়। অন্যদের না ঘুমিয়ে চলচ্চিত্র দেখা বা অন্য কিছু করতে বলা হয়। পরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যারা ঘুমিয়েছে তারা তুলনামূলকভাবে বেশি শব্দ স্মরণ করতে পেরেছে। গবেষকরা বলেন, ঘুমের সময় মস্তিষ্কের ¯িপ স্পিন্ডলস নামের কার্যক্রম স্মৃতি সমন্বয় করে। নতুন শেখা কিছু স্মরণে রাখার জন্য বিশেষ এই কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষক অধ্যাপক অ্যাক্সেল মেকলিঙ্গার বলেন, দীর্ঘ সময় অধ্যয়নের পর ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার ঘুম অনেক উপকারে আসতে পারে। অফিসে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজের ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নিলে স্মরণশক্তি যেমন বাড়ে, তেমনি কাজে নতুন উদ্যম পাওয়া যায়।
দাঁত কেন এত গুরুত্বপূর্ণ
সারা বিশ্বে সাধারণ মানুষ যখন দাঁতের গুরুত্ব সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখছেন সেখানে আমাদের দেশের অনেকেই দাঁত সম্পর্কীয় স্বচ্ছ ধারণা রাখেন না। দাঁতের প্রতি উদাসিনতা দেখে মনে হয় দাঁত শরীরের বাইরের কোনো অঙ্গ। অনেকে আবার বলেই বসেন দাঁতের তো অভাব নেই, দুই একটা নষ্ট হলে কিছু হবে না। হয় তাদের জন্য। দাঁত না থাকলে আপাত দৃষ্টিতে খাওয়া গেলেও খাদ্য যথাযথ চবর্ণের অভাবে হজমের সমস্যা হওয়া খুব স্বাভাবিক- এর ধারাবাহিকতায় পুষ্টিহীনতা হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব স্পষ্ট বোঝা যায়। শিশুদের দুধ দাঁতগুলো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ধরে না রাখতে পারলে ২য় পর্যায়ের স্থায়ী দাঁতগুলো বাঁকা হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি চোয়ালের আকৃতি ও গঠনগত সমস্যা হতে পারে। দাঁত হারালে বাকি দাঁতগুলো সরে যায় ফলে দাঁতের ফাঁকে খাবার জমে দাঁতের ধারক কলাকে নষ্ট করে দেয়। মুখে দুর্গন্ধ, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, দাঁত শিন শিন করা, মাংশ বা আঁশ জাতীয় খাদ্য চর্বণ দুরূহ হয়ে ওঠা থেকে শুরু করে দাঁত নড়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।কোনো একদিকের দাঁত না থাকলে স্বভাবজনিত সুবিধার কারণে মানুষ বিপরীত দিকে খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, ফলে আমাদের মুখ খোলার একমাত্র চোয়ালের সন্ধি টেম্পোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে ব্যথাসহ জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন প্রতিটি দাঁতের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কাজ।উপযুক্ত চবর্ণের অভাবে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন হয় না, এমন যুক্তিসঙ্গত কারণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষকরা, ফলে মানুষের কাজ করার আগ্রহ কমে যায়, ক্লান্ত লাগে, স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। সুদৃঢ় ব্যক্তিত্ব প্রকাশেও দাঁতের গুরুত্ব অনেক। সম্প্রতি আমেরিকার গবেষক দল ১০০৮ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ওপর জরিপ করে মজাদার তথ্য দিয়েছেন। নতুন কোনো মানুষকে দেখলে সর্ব প্রথম চোখে পড়ে তার হাসি, শতাংশের দিক দিয়ে হাসির অবস্থান ৪৭%, এরপর যথাক্রমে চোখ ৩১%, গন্ধ ১১%, পোশাক ৭% ও চুল ৪%। আকর্ষণীয় প্রাণবন্ত হাসি মানুষের মনকে প্রফুল্ল রাখে, মানসিক চাপ কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্তচাপ কমায়, চেহারায় বয়সের ছাপ স্পস্ট হতে বাধা দেয়। দাঁতবিহীন মুখ নিয়ে মন খুলে অকৃত্রিম হাসি কতটা কষ্টের, যাদের দাঁত নেই তারা অবশ্যই তা বোঝেন।কোনো সুস্থ দাঁতের সাধারণত স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না।
মানুষের অজ্ঞতা, উদাসিনতা, কুসংস্কার ও অহেতুক ভয়ের কারণে দাঁত নষ্ট হয়। অতি মূল্যবান এ অঙ্গকে যতœ করে সারা জীবন ভালো রাখা খুব বেশি কষ্টের নয়। নিয়মিত ও নিয়ম অনুযায়ী উন্নতমানের কোনো টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করতে হবে। মনগড়া পদ্ধতিতে বা অবৈজ্ঞানিক জিনিস দিয়ে দাঁত পরিষ্কারে লাভের চেয়ে ক্ষতির আশংকা বেশি। দুই দাঁতের ফাঁকে ডেন্টাল ফ্লস নামক বিশেষ সুতা ব্যবহার করে দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। মুখের অভ্যন্তরীণ অবস্থার ওপর নির্ভর করে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন বড় বিষয়। মিষ্টিজাতীয় খাদ্য কণা দাঁতের লুকায়িত অংশে বসবাসরত ব্যাকটেরিয়া বিশেষ প্রক্রিয়ায় এসিড তৈরি করে দাঁত ক্ষয় করে থাকে। ডেন্টাল ক্যারিজ হলে ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, ফলমূল, দুধ, দই, ডাবের পানি, ডিম ও আঁশজাতীয় খাদ্য খাওয়া আমরা বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। বছরে অন্তত দুইবার ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নেয়ার বিষয়ে সারা বিশ্বে কোনো দ্বিমত নেই। সমস্যার শুরুতেই চিকিৎসকের দ্রুত পরামর্শ চিকিৎসা পদ্ধতিকে সহজ করে।এসব বিষয় কম বেশি সবার জানা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে আমাদের দাঁত নষ্ট হচ্ছে । সঠিক জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের পরিবর্তন রক্ষা করতে পারে আপনার দাঁত। দাঁত মুখে থাকলেও এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ শরীরের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সম্পর্ক রয়েছে। দাঁতের গুরুত্ব বুঝে তার পরিচর্যা জীবনকে আরও সুন্দর করবে।

Top



সর্দি হলেই অ্যান্টিবায়োটিক নয়


‘ওষুধ খেলে সর্দি সারে সাত দিনে, না খেলে এক সপ্তায়’ পুরনো এ কথাই আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কথাশিল্পী সৈয়দ মুজতবা আলীর সঙ্গে সুর মিলিয়েই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেঁচে থাকো সর্দি-কাশি। তবে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নয়। অর্থাৎ সর্দি-গর্মি হয়ে নাক ঝরলেই কিংবা সামান্য কফ হলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত হবে না। ইউরোপিয়ান অ্যান্টিবায়োটিক সতর্কতা দিবস উপলক্ষে পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড ও রয়্যাল কলেজ অব জেনারেল ফিজিশিয়ানের গবেষকরা সর্দিতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ে সম্প্রতি গবেষণা চালান।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ মানুষ মনে করে নাকে সর্দি ঝরলে এবং কাশির সঙ্গে তরল কফ বের হলে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ দেয়। যদিও অল্পসংখ্যক মানুষের ধারণা, ঘন কফের ক্ষেত্রে তা কমই কাজে লাগে।
গবেষক দলের অন্যতম ড. ক্লিওডনা ম্যাকনাল্টি বলেন, প্রচলিত ‘অ্যান্টিবায়োটিক মিথ’ হলো, সর্দি-কাশিতে অ্যান্টিবায়োটিক উপকার দেবে। কিন্তু সর্দি-কাশি ভাইরাসজনিত। সর্দির মতো ভাইরাসজনিত অসুখে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনোই ভূমিকা নেই। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সর্দি এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। অন্যদিকে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরে থাকা কোটি কোটি উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে ভাইরাস আরও শক্তিশালী এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। তাতে ক্ষতির মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।

ত্বকের সংবেদনশীলতা
সবুজ ধনেপাতাতে মোটামুটিভাবে কিছু ঔষধি অ্যাসিডিক উপাদান থাকে যেটি ত্বককে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি একেবারেই ত্বকের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণতাও তৈরি করে থাকে।
অ্যালার্জীর সমস্যা
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদানটি শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানকে সমানভাবে বহন করে থাকে। কিন্তু এর অতিরিক্ত মাত্রা উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে। ফলে অ্যালার্জীর তৈরি হয়। এই অ্যালার্জীর ফলে দেহে চুলকানি, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা, র্যা শ ওঠা এই ধরনের নানা সমস্যা হয়ে থাকে।
প্রদাহ অতিরিক্ত ধনেপাতা সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্ব প্রতক্রিয়া হল মুখে প্রদাহ হওয়া। এই ঔষধিটির বিভিন্ন এসিডিক উপাদান যেটি আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে থাকে পাশাপাশি এটি মুখে প্রদাহেরও সৃষ্টি করে। বিশেষ করে এর ফলে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এর ফলে সারা মুখ লাল হয়েও যায়।
ভ্রূণের ক্ষতি
গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। ধনেপাতাতে থাকা কিছু উপাদান মহিলাদের প্রজনন গ্রন্থির কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে যার ফলে মহিলাদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা লোপ পায় এবং বাচ্চা ধারণ করলেও গর্ভকালীন ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে।

 


 

Top
 

 

আইন কনিকা

Top
 


আইন না মানা, না জানাও অপরাধ


আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো কোন আসামিকে যখন বিচারক কিংবা আইনজীবী জিজ্ঞাসা করেনÑ ‘আপনি দোষী না নির্দোষ?’ তখন শতকরা নিরানব্বইজন আসামিই বলেন, ‘আমি নির্দোষ।’ শিখিয়ে দেয়া পাখির বুলির মতো তার বক্তব্য শোনার পর বিচারক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে শুরু করেন বিচার প্রক্রিয়া। আইনজীবী শুরু করেন তার জেরা-জবানবন্দি। আর বলির পাঁঠার মতো নিজের ভাগ্যকে ঈশ্বরের হাতে সঁপে দিয়ে নীরব-নিথর দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন কাঠগড়ার আসামি। দিনের পর দিন হাজিরা আর যুক্তি-তর্কের মধ্য দিয়ে একদিন বিচারের রায় ঘোষিত হয়। দোষী কিংবা নির্দোষ, শাস্তি কিংবা খালাসের মাধ্যমে বিচার কার্যের সমাপ্তি ঘটে। কিন্তু ব্যক্তির জীবন থেকে ইতিমধ্যে ঝরে যায় বহু অমূল্য সময়, দিতে হয় অনেক চড়া মূল্য। আর কেবল মাত্র আইনের অজ্ঞতার কারণে সহায়-সম্পদ হারিয়ে অনেকেই পথের ভিখারিতে পরিণত হয়েছেন, সে উদাহরণ সমাজে বিরল নয়। অধিকার সম্পর্কে অসচেতন মানুষ দিনে দিনে কেবল সমাজের বোঝা বাড়িয়ে নিয়ে চলেছে। ফলে অজ্ঞতা আর মূর্খতার অন্তহীন করাল গ্রাসে তলিয়ে যেতে বসেছে সমাজ, সভ্যতা ও দেশ।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সন্ত্রাসনির্ভর, শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। বিশ্বের অন্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় অপরাধ প্রবণতার হার এখানে বেশি। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক জরিপে বাংলাদেশের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী ও নিু আদালতকে সর্বাপেক্ষা দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এ জরিপ থেকেই বাংলাদেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। বাস্তব অবস্থার বিশ্লেষণ করে উত্তরণের পথ খুঁজতে গিয়ে সরকারকে আজ হিমশিম খেতে হচ্ছে। সমাজ বিশেষকদের মতে, দরিদ্র্যতা, অশিক্ষা আর কুশিক্ষাকে দায়ী করা হলেও আইনের প্রতি অবজ্ঞা এবং আইনের নিরপেক্ষ ও সঠিক বাস্তব প্রয়োগ এবং অনেক ক্ষেত্রে আইনের অপপ্রয়োগকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আর সর্বাপেক্ষা ভয়ংকর চিত্র হল, দেশের অধিকাংশ মানুষের আইনের প্রতি অজ্ঞতা এবং আইন না জানা। দেশের শতকরা নিরানব্বইজন মানুষই জানে না যে আইন না মানা যেমন অপরাধ, আইন না জানাও তেমনি অপরাধ।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অতি আবশ্যিক বেশকিছু আইন রয়েছে, যাকে বলা হয় ‘টর্ট আইন।’ যার পরিধি হল, অপরের অধিকার লংঘন, নির্দিষ্ট কর্তব্যে অবহেলা এবং যার প্রতিকার হল অনির্ধারিত ক্ষতিপূরণ। এককথায় ব্যক্তি অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নিজের অজান্তেই আমরা দৈনন্দিন জীবনে যেসব অপরাধ করে থাকি সেসব অপরাধ বা অন্যায় কাজ যে ক্ষতিসাধন করে তার প্রতিকার বিধানই এ আইনের মূল উপজীব্য বিষয়। অনেকেই এ আইনকে দৈনন্দিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ বা উৎপাতের আইন হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। সমাজ জীবনে শান্তিশৃংখলা, নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিজীবনে সহায়-সম্পদ, স্বাস্থ্য, চিন্তা, চেতনার, স্বাচ্ছন্দ্যের সংরক্ষণ করাই এ আইনের মূল উদ্দেশ্য। প্রখ্যাত আইনজ্ঞদের অভিমত হল, ‘তুমি তোমার নিজের সম্পদ এমনভাবে ব্যবহার করো যেন তা অন্যের ক্ষতি না করে।’ এককথায় অপরের অধিকারে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যেই এ আইন প্রণীত হয়েছে। ব্যাপক অর্থে ব্যক্তির অধিকার ততটুকু পর্যন্ত বিস্তৃত, অপরের অধিকারের সীমা যেখান থেকে শুরু। যেমন কোন ব্যক্তির নিজের ঘরে বসে রেডিও কিংবা টেলিভিশনের গান শোনার অধিকার যেমন রয়েছে। তেমনি পাশের ঘরের লোকটির নির্বিঘেœ ঘুমের অধিকারও রয়েছে। অর্থাৎ প্রথম ব্যক্তির গান শোনার অধিকার দ্বিতীয় ব্যক্তির নির্বিঘœ ঘুমের অধিকার পর্যন্ত বিস্তৃত। এর কোন ব্যত্যয় ঘটলে সেখানে আইন লঙ্ঘিত হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। একটি বিখ্যাত মামলার নজির থেকে বিষয়টি আমাদের কাছে আরও পরিষ্কার হতে পারে।
রাইল্যান্ড বনাম ফ্লেচার মামলার নজির থেকে জানা যায় যে, রাইল্যান্ড তার কারখানার পানি সরবরাহের জন্য নিজের জমিতেই কয়েকটি জলাধার নির্মাণ করেন। পাশেই ছিল ফ্লেচারের কয়লাখনি এবং রাইল্যান্ডের জলাধার পানিতে পূর্ণ হওয়ার পর উপচেপড়া জল গোপন সুড়ঙ্গ পথে কয়লাখনিতে ঢুকে তার ক্ষতিসাধন করে। ফলে রাইল্যান্ডকে এ জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। মামলার জবাব থেকে জানা যায় যে, ফ্লেচারের কয়লাখনির সুড়ঙ্গ পথগুলো মাটির নিচে থাকায় জলাধার নির্মাণকালে তা পরিলক্ষিত হয়নি, এমনকি ফ্লেচারের কয়লাখনির কোন ধরনের ক্ষতিসাধনের কোন উদ্দেশ্যে রাইল্যান্ডের জলাধার নির্মাণ করা হয়নি। জলাধার নির্মাণকালে প্রকৌশলীরা বিপদ প্রতিরোধের কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ফ্লেচারের কয়লাখনির ক্ষতিসাধিত হওয়ায় ফ্লেচারকে ক্ষতিপূরণ দিতে আদালত রায় দেন।
টর্ট আইনে যেসব ক্ষেত্রে অপরের ক্ষতিসাধনের ঘটনাগুলো ঘটে থাকে, সেসব ক্ষেত্রে বেশকিছু নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। যেমনÑ ১. অপকার সাধনের ক্ষেত্রে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল কিনা? ২. অপকার সাধনের অভিপ্রায় ছিল কি না? ৩. অবহেলা কিংবা অমনোযোগী কোন আচরণ ছিল কি না? ৪. অপকার সাধনের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার কিংবা অবৈধ কোন কিছু করা হয়েছে কি না? ৫. বৈধ ও প্রচলিত আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়েছে কি না? ৬. যথাযথ দায়িত্ব পালনে গাফিলতি কিংবা কর্তব্য কাজে অবহেলা প্রদর্শিত হয়েছে কি না? সাধারণত একজন ব্যক্তি তার নিজের অন্যায় কাজের জন্য নিজেই দায়ী হয়। কিন্তু টর্ট আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির কৃত অপরাধের জন্য অপর ব্যক্তি দায়ী হয় যেমনÑ বাড়ির ভৃত্য বা চাকরের কৃত অপরাধের জন্য মুনিবকে বহুলাংশে দায়ী হতে হয়। প্রতিনিধি কিংবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিয়োগকারীকেও নিতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবী দায় গ্রহণ করতে হয়। যেমনÑ অনিবার্য দুর্ঘটনা, অনিবার্য ভুল, অনিবার্য কর্তব্যে অবহেলা কিংবা অনিবার্য কর্মফলের দায়িত্ব অবশ্যম্ভাবী দায় হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। তবে টর্ট আইনে সুচিন্তিত দায় কেবল মাত্র তখনই আরোপিত হয় যখন কোন ব্যক্তিকে অসৎ ইচ্ছা কিংবা তার কার্যের গাফিলতির জন্য দায়ী করা হয়।
টর্ট আইনে যদি বিবাদীর বৈধ অধিকার খর্ব না করে কিংবা যদি বে-আইনি না হয়ে থাকে তবে এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের মামলা করা যায় না। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিসাধিত হলেও তা টর্ট আইনের আওতায় পড়ে না। যেমনÑ ১. স্বেচ্ছায় ক্ষতিপূরণ ২. ভুল ৩. অনিবার্য দুর্ঘটনা ৪. ব্যক্তিগত আত্মরক্ষা ৫. সাধারণ অধিকার প্রয়োগ ৬. আইনানুমোদিত কাজ ৭. অত্যাবশ্যকতাভিত্তিক কাজ ৮. প্রশাসনিক কাজ ৯. রাষ্ট্রের কাজ ১০. বিচারবিভাগীয় কাজ ১১. আইনানুগ বৈধ কর্তৃপক্ষের কাজ ১২. পিতৃত্বের কর্তৃত্বের কাজ ইত্যাদি। অর্থাৎ পারস্পরিক সম্মতি, বৈধ চুক্তি কিংবা বৈধ কর্তৃত্বে কৃত কোন কার্যে ক্ষতিসাধনের ক্ষেত্রে কোন প্রতিকার দাবি করা যায় না।
নাগরিক জীবনে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের প্রতি মানুষকে শ্রদ্ধাশীল করে তোলার জন্য টর্ট আইনের ব্যাপক প্রচলন প্রয়োজন। সময়ের প্রয়োজনে নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আইনের বাস্তব ও নিরপেক্ষ প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে টর্ট আইনের চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে। নাগরিক জীবনের শান্তি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় টর্ট আইনের গুরুত্ব অপরিসীম। আইনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সবাইকে আইন মানতে হবে। সবাইকে আইন জানতে হবে। কেননা আইন না মানা যেমন অপরাধ, আইন না জানাও তেমিন অপরাধ।
লেখক : কার্যনির্বাহী সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশন
 

দণ্ডিত আসামীকে আশ্রয় দেয়ার শাস্তি


কামাল উদ্দীন জোয়াদ
আইনের অনুশাসন মানুষকে সুশৃঙ্খল হতে শিক্ষা দেয়। আর মানুষের সু-শৃঙ্খলতাকে অনেকাংশে কমে যায়, সজাগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। আইনের অনুশাসনের পাশাপাশি নীতিনৈতিকতার অনুশীলনের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রকে অপরাধমুক্ত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে কেউ না জেনে কোন অপরাধ করলে এজন্য তার শাস্তি মওকুফের কোন সুযোগ নেই। এজন্য আইনের বিভিন্ন ধারা-উপধারা কিছু কিছু জানা প্রত্যেক সুনাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এ বিষয়টি সামনে রেখে বাংলাদেশের ফৌজদারি দন্ডবিধিতে ‘অপরাধীকে আশ্রয় দান করা বা রক্ষা করা বিষয়ে কিছু বলব। যদি কোন ব্যক্তি কোন অপরাধ করার পর অপর কোন ব্যক্তিকে অপরাধী বলে জানা সত্ত্বেও বা ব্যক্তিকে অপরাধী বলে বিশ্বাস করার কারণ থাকা সত্ত্বেও তাকে আইনের শাস্তি থেকে বাঁচানোর জন্য লুকিয়ে রাখে, আশ্রয়দান করে বা রক্ষা করে, তবে অপরাধটি যদি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় হয় ওই ব্যক্তির (আশ্রয়দানকারী) জরিমানাসহ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে এবং অপরাধটি যদি যাবজ্জীবন অথবা দশ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হয় তবে ওই ব্যক্তির (আশ্রয়দানকারীর) অর্থদণ্ডসহ ৩ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে এবং অপরাধটি যদি ১ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয় তবে ওই ব্যক্তির (আশ্রয়দানকারীর) অপরাধটির জন্য দীর্ঘতম মেয়াদ দণ্ডিত কারাদণ্ডে এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত অর্থদণ্ডসহ উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
ব্যতিক্রমঃ অপরাধী ব্যক্তি স্বামী বা স্ত্রী, পিতা-মাতা অনুরূপ আশ্রয়দান করলে সে ক্ষেত্রে এ বিধি প্রযোজ্য হবে না।


 

Top
 


 

 

Top
 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 
   

                                                     Copy Right : 2001 BHRC  All rights reserved.