BHRC By-lawsBHRC Press ReleaseBHRC By-lawsBHRC ConferenceIHRCIRD ActivitiesLegal StatusBHRC BoardBHRC BranchesElection Monitoring Acid and Trauma VictimsBHRC BrochureBHRC Forms

ContactHOME

 

 

 

Cover June 2015

English Part June 2015

 

Top

Bangla Part

         নারী ও শিশু সংবাদ        পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

স্বাস্থ্য সংবাদ          আইন কনিকা

 

বিবিধ সংবাদ

 

                                 

 

মানবাধিকার রিপোর্ট জানুয়ারী থেকে জুন ২০১৫
জানুয়ারী থেকে জুন মাসে অফিসিয়ালী হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৩৩৮ সন্দেহমূলকসহ মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ২৮৯৮ জন



মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপ অনুযায়ী ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন ৬ মাসে সারা দেশে অফিসিয়ালি হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৩৩৮টি এবং সন্দেহজনকসহ মোট হত্যাকান্ড ২৮৯৮টি। এছাড়া বিভিন্ন গুপ্ত হত্যা, নিখোজ এবং মরদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি এমন ঘটনা যুক্ত হলে মোট হত্যকান্ডের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতির বহিঃপ্রকাশ। মানবাধিকার কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন ৬ মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ১৬ জনের বেশি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থ'া ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায় ২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন ৬ মাসে অফিসিয়াল হত্যাকান্ডের শিকার ১৩৩৮ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৪৭ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ২৫৭ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ২৪৪ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ১৮৫ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে হত্যা ৫৫ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ২৬ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৪৭ জন, গুপ্ত হত্যা ৬৯ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৩৫০ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ২৮ জন, সাংবাদিক হত্যা ০২ জন, অপহরণ হত্যা ২৮ জন। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহণ দুর্ঘটনায় ম"ত্যু ১৩৪৪ জন, আত্মহত্যার শিকার ২১৬ জন।
২০১৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে ধর্ষণ ১০২ জন, যৌন নির্যাতন ১০ জন, যৌতুক নির্যাতন ১৮ জন, এসিড নিপে ০৯ জন।
Top

২২ চুক্তি, সমঝোতা ও প্রটোকল স্বাক্ষর

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুদেশের মধ্যে ২২টি চুক্তি, সমঝোতা ও প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসব চুক্তি স্বাক্ষর করেন উভয় দেশের কর্মকর্তারা। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ঐতিহাসিক স্থলসীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় হয়।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্বাক্ষরিত চুক্তি, প্রটোকল ও সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, অভ্যন্তরীণ নৌ প্রটোকল, উপকূলীয় নৌ চলাচল চুক্তি, পণ্যের মান স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সহযোগিতা চুক্তি। এ ছাড়াও উভয় দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীর (কোস্টগার্ড) মধ্যে সহযোগিতা, মানব পাচার প্রতিরোধ, জাল নোট পাচার প্রতিরোধ, সমুদ্রভিত্তিক ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, ২০০ কোটি ডলারের ঋণ বিষয়ক সমঝোতা, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক অর্থনীতির সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার বিষয়ক সমঝোতা, আখাউড়ায় ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ লিজ বিষয়ে বিএসএনএল ও বিএসসিসিএলের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি, বাংলাদেশে লাইফ ইনস্যুরেন্স করপোরেশনের (এলআইসি) কার্যক্রম শুরু নিয়ে সম্মতিপত্র। ভেড়ামারা ও মংলায় ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা বিষয়ক সমঝোতা চুক্তিও সই হয়।
এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কয়েকটি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কলকাতা-আগরতলা বাস সার্ভিস ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস। এ ছাড়া খুলনা-মংলা রেলওয়ে লাইন এবং কুলাউড়া-শাহাবাজপুর রেল সংযোগ পূনর্বহাল, শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্রভবন, সারদা পুলিশ একাডেমীতে একটি মৈত্রী ভবন, ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন এর একটি পরীক্ষাগার এবং একটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের চ্যালেঞ্জ
দেড় শ কোটিরও বেশি মানুষের বাস এই দক্ষিণ এশিয়ায়। যেসব বহুল প্রচলিত কাঠি ব্যবহার করা হয় উন্নয়ন মাপার জন্য, তার কয়েকটিতে বেশ সন্তোষজনক চেহারাই দেখা যায় অঞ্চলের। বিশ্বের গড় হার বিবেচনায় এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার ভালো, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিরাপদ, মুদ্রাস্ফীতি আয়ত্তের মধ্যে, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণশীল, সব কটি অর্থনীতিই আমদানি-রপ্তানি উদারীকরণে এগিয়ে, বিনিয়োগ হার ভালো ইত্যাদি ইত্যাদি। তা ছাড়া উর্বর জমি, মৎস্যসম্পদ, পানিসম্পদ, খনিজ সম্পদ, ভূবৈচিত্র্য, সমুদ্রসম্পদ, প্রাণবৈচিত্র্য, ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ইত্যাদি সবদিক থেকেই এই অঞ্চল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ‘উন্নয়ন’ নামে মুনাফা উন্মাদনার আগ্রাসনে অনেক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও এখনো এই অঞ্চল অনেক সম্ভাবনাময়।
প্রচলিত মাপকাঠিতে পরিসংখ্যান অনেক ভালো খবর দিলেও পাশাপাশি তা এটাও বলছে যে পুরো দক্ষিণ এশিয়া এখন বিশ্বের চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শতকরা প্রায় অর্ধেক মানুষের অঞ্চল, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষ কেন্দ্রীভূত এই অঞ্চলে। জাতিসংঘের ‘বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ (গঁষঃরফরসবহংরড়হধষ চড়াবৎঃু ওহফবী) অনুযায়ী বিশ্বের দরিদ্রদের এক-চতুর্থাংশ আফ্রিকায় বাস করে, আর অর্ধেক বাস করে দক্ষিণ এশিয়ায়। এই সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, আফ্রিকার ২৬টি দরিদ্রতম দেশের চেয়ে বেশিসংখ্যক দরিদ্র মানুষ ভারতের আটটি রাজ্যে বাস করে। বলা হয়, এই সূচক অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ায় দরিদ্র মানুষের অনুপাত শতকরা ৫৫। যদি দিনপ্রতি আয় দুই ডলার ধরে দারিদ্র্য পরিমাপ করা হয়, তাহলে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী এই অঞ্চলের শতকরা ৭৭ জন মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে।
বিশুদ্ধ পানি, শিক্ষা, চিকিৎসা, আশ্রয়-সব কটিতেই এসব দেশের বেশির ভাগ মানুষ বিপন্ন অবস্থায় আছে। শ্রেণিগত, জাতিগত, লিঙ্গীয়, ধর্মীয়, বর্ণগত বৈষম্য নিপীড়নে ক্ষতবিক্ষত শতকোটি মানুষ। প্রচলিত মানব উন্নয়ন সূচক বিবেচনা করলে শ্রীলঙ্কা ছাড়া সব কটি দেশই ১২০-এর পরে।
Top

বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার নেই:

মোদিকে খালেদা


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে ‘বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকান নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এছাড়াও বৈঠকে তারা উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
রোববার বিকেলে ৪৫ মিনিট ব্যাপী এক বৈঠকে অংশ নেন নরেন্দ্র মোদি ও খালেদা জিয়া। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক শুরু হয় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে। বৈঠক শেষে ড. আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যকার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি বিষয়ে তিনি (খালেদা জিয়া) ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে জনপ্রতিনিধিত্বশীল কোনো সরকার নেই। এটা দেশ ও এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অন্তরায়। বর্তমান যুগ গ্লোবাল ভিলেজের যুগ। এখানে আমি ভাল আছি, শান্তিতে আছি; এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত এ বৈঠকে যোগ দিতে এর আগে রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সোনারগাঁও হোটেলে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম খান।

Top


মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস পালিত

 

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
২৬শে জুন ২০১৫ নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস (International Day in Support of Victims of Torture। জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদ (ECOSOC) ১৯৯৭ সালের ১২ই ডিসেম্বর এক অধিবেশনে প্রতি বছর ২৬শে জুন এই দিবসটি পালনের ঘোষণা দেয়। সে থেকে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোতে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতয় সদর দপ্তর রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচীসহ সারাদেশে একযোগে দিবসটি পালিত হচ্ছে। মানবাধিকার কমিশন দিবসটি পালনের জন্য ২৫ জুন থেকে ২৭ জুন ২০১৫ইং পর্যন্ত ৩ দিন ব্যাপী এই কর্মসূচী পালন করবে। সারাদেশের সাতশতাধিক শাখা এবং বহির্বিশ্বের শাখাগুলো দিবসটি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বাংলাদেশ অবধারিতভাবে এটাই নিশ্চিত করছে যেন নির্যাতিত মানুষের আইনগত প্রতিকার বা নিরাপত্তা প্রার্থনার উপযোগী কোন পথ খোলা নেই। বাংলাদেশে নির্যাতিতদের নিরাপত্তার পথে বাঁধা দূর করতে হবে। জাতিসংঘের নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি বিষয়ক কনভেনশনে (সিএটি) অন্তর্ভুক্তির বশের সময় বাংলাদেশ ঘোষণা করে যে, সে “দেশের বিরাজমন আইন ও বিধানের সাথে সঙ্গতি রেখে ১৪ অনুচ্ছেদের ১ উপধারা প্রয়োগ করবে।” ১৪ অনুচ্ছেদের ১ উপধারা অনুযায়ী “প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র নিজ দেশের আইনগত প্রক্রিয়ায় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রাপ্তি এবং ন্যায্য ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের একটি প্রয়োগযোগ্য অধিকার যেখানে যতটা পরিপূর্ণ সম্ভব ততটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।” জার্মান সরকার, সে সময়, এই ঘোষণাকে উদ্বেগের সাথে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, “একটি সাধারণ বিষয়ে রিজার্ভেশন আরোপ,” এবং যা “কনভেনশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’র প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ অঙ্গীকারের প্রতি সন্দেহের অবকাশ রয়ে যায়।” একইভাবে, সংশ্লিষ্ট রিজার্ভেশনটি “কনভেনশনের অধীনে রিজার্ভেশন আরোপকারী রাষ্ট্রের জাতীয় আইন প্রণয়নের আহবানের মাধ্যমে তার দায়িত্বসমূহের সীমা নির্দেশ করে;” একথা বলে নেদারল্যান্ড সরকার কনভেনশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’র প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্র“তি সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিল।
বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হলেও নির্যাতিত মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া তথা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকারে ও প্রতিরোধে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। কাউন্সিলে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে জরুরী ভিত্তিতে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে। আসন্ন মাসগুলোতে দেশটিতে নির্যাতিতদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নিুবর্ণিত পদক্ষেপ গ্রহণে সক্ষমতার বিষয়ঃ যেমন- নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনের ১৪ এর ১ অনুচ্ছেদের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা (রিজার্ভেশন) প্রত্যাহার করা; নির্যাতন স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা; ‘নির্যাতনকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পন্থায় ‘অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করে আইন কার্যকর করা; কোন সময় ক্ষেপণ না করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর কর্তৃক নির্যাতন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয় সংক্রান্ত সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন; দুর্নীতির সকল অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করা; নির্যাতিত মানুষকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সাহায্য দেওয়া; আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানের সাথে সঙ্গতি রেখে সকল অভিযুক্ত নির্যাতনকারীকে স্বাধীন ও কার্যকর তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা এবং নির্যাতিত মানুষ ও সাক্ষীদের কার্যকর নিরাপত্তা দেওয়া, প্রভৃতি কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে নির্যাতিতদের নিরাপত্তা প্রদানে সব ধরনের অপপ্রয়োগ এবং নির্যাতনের সংস্কৃতির প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং সরকারকে তার এ বিষয়ক অঙ্গীকারসমূহ স্পষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য, বিশেষ করে উপরের সুপারিশগুলোর প্রতি লক্ষ্য করে গ্রহণযোগ্য অগ্রগতি অর্জনের আহবান জানাচ্ছে। এতে সরকারের তরফ থেকে ব্যর্থতা তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা এবং মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বহিষ্কারের ব্যবস্থাই শুধু করবে। নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘভুক্ত সদস্য দেশগুলো ঘটা করে শুধুই একটি দিবস উদযাপনের বাইরে যদি গ্রহণযোগ্য কিছু করতেই চায়, তবে চরম এই অমানবিক মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সত্যিকার প্রতিকারের কঠোর পদক্ষেপ নিতেই হবে।
ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কমিশনের ঢাকা মহানগরের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার, ঢাকা মহানগর উত্তর এর সভাপতি আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবুল, মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আনোয়ার ফরাজী ইমন, উত্তরা আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহরাওয়ার্দী ভূইয়া, মুগদা থানা শাখার সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন, ওয়ারী থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিলন, শ্যামপুর থানা শাখার সভাপতি আব্দুল অদুদ, আশুলিয়া থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুর ইসলাম মন্টুসহ মানববন্দন কর্মসূচীতে কমিশনের নেতৃবৃন্দ যোগ দেন।

Top
 

 


 

মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম মহানগর শাখা কর্তৃক চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদ বস্ত্র বিতরণ

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্রগ্রাম মহানগর কমিটির উদ্যোগে গত ২৮শে জুন চট্রগ্রাম কেন্দ্রিয় কারাগারে ২শত ৪৫ জন নারী, ২০০ জন পুরুষ ও ৫০ জন শিশুকে ঈদের নতুন কাপড় দেওয়া হয় ! সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রিয় কারাগারারের সিঃ জেল সুপার জাহাঙ্গীর আলম ও জেলার সাহেব !
কমিশনের চট্রগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি জেলা পিপি আলহাজ আবুল হাশেমর নেতৃত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধরণ সম্পাদক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কমু, সহ-সভাপতি যথাক্রমে লায়ন এ এ গোলাম ফারুক মামুন, আলহাজ মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ফয়েজুর রহমান চৌধুরী, যুগ্ম-সম্পাদক আলহাজ মনসুর আহমদ, অর্থ সম্পাদক লায়ন আহসান উল্লাহ মুকুট, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ সেলিম হোসেন চৌধুরী, আই টি সম্পাদক কে জি এম সবুজ, মহিলা সম্পাদিকা কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, সদস্য জাহেদ তানসির, থানা কমিটির পক্ষ থেকে খুলশি থানা কমিটির সভাপতি আমিনুল হক বাবু, বলমুরিং থানা কমিটির সভাপতি মোঃ আবদুল মজিদ চৌধুরী, আকবর শাহ থানা কমিটির সভাপতি মওলানা লায়ন মোঃ ইউসুফ, সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ টুটুল, প্রসুন বড়ুয়া !

Top
 

বন্ধ হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকদের একাংশের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যৌন হয়রানির অভিযোগ। আমাদের দেশের প্রচলিত মূল্যবোধে শিক্ষকের মর্যাদা বাবা-মায়ের সমপর্যায়ের। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকরা পিতৃসুলভ ভাবমূর্তির অধিকারী হবে এমনটিই দেখতে চায় শিক্ষার্থীরা। তার বদলে লাম্পট্যের বহিঃপ্রকাশ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
অকাম্য হলেও প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লম্পটদের দৌরাত্ম্য এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার অবকাশ নেই। সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করতে গিয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন লম্পট শিক্ষকদের খপ্পরে। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে তারা বাড়ি ফিরছেন। নির্যাতনের শিকার হয়ে কোনো কোনো ছাত্রী ক্ষোভ, ঘৃণা ও লজ্জায় নিজেকে সঁপে দিচ্ছেন আরো অন্ধকার পথে। মেধাবী ছাত্রীরাই যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে লম্পট শিক্ষকদের যথেচ্ছতার শিকার হচ্ছেন, তা সহজে অনুমেয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে ২০০৯ সালে নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছিলে সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক সেল গঠন করা হলেও অসুস্থ অবস্থার অবসান ঘটেনি। দুশ্চরিত্র শিক্ষকরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ ধামাচাপা দেন। লোকলজ্জার ভয়ে যৌন হয়রানির শিকার শিক্ষার্থী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পিছটান অথবা আপসে উপনীত হতে বাধ্য হন। শিক্ষকদের যৌন হয়রানির ঘটনা কিভাবে বেড়ে চলেছে তার প্রমাণ মেলে গত ৫ বছরে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জনেরও বেশি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার ঘটনা। প্রাপ্ত অভিযোগের যথাযথ তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে যৌন হয়রানির মতোস্তৃণ্য অভিযোগের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যা রোধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া উচিত। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএন-উইমেন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জরিপে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৭৬ শতাংশ ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। এ চিত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো খারাপ।
যেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির হার ৬৬ শতাংশ সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার ৮৭ শতাংশ। ক্লাস চলাকালে বা ক্লাস না থাকাকালেও তাদের হয়রানি করা হয়। শ্রেণিকক্ষ, ছাত্রীনিবাস, ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ, করিডোর প্রভৃতি স্থানে ছাত্রীদের হয়রানি করা হয়। একজন নারী তার জীবনের নানা স্তরে যৌন হয়রানির শিকার হন। উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে গিয়েও তাকে এর শিকার হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে যারা পড়াশোনা করেন বা যারা পাঠদান করেন তাদের চেতনা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়। সুস্থ চেতনাসম্পন্ন মানুষ যৌন হয়রানির মতো হীন কাজে লিপ্ত হন না। জরিপে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ পেয়েছে তাতে হোঁচট খেতে হয়। যৌন হয়রানির শিকার নারী শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অনেকে ভয়াবহ মনোবৈকল্যের শিকার হন। যার জের তাকে টানতে হয় জীবনব্যাপী। নারী কোথাও যৌন হয়রানির শিকার হোক সেটা আমরা চাই না। কী পরিবারে, কী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কী কর্মক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে নারী নিরাপদ থাকবে সেটাই আমরা চাই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নারী শিক্ষার্থীকে কাক্সিক্ষত নিরাপত্তা দিতে পারছে না। আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রিন্সিপাল হিসেবে মনে করি, শিক্ষক যৌন হয়রানি নীতিমালা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। এসংক্রান্ত প্রতিরোধ কমিটিকে কার্যকর করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের উল্লিখিত নীতিমালা ও কমিটি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। যৌন হয়রানি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য সহজ ভাষায় লিফলেট ও বই বিলি করতে হবে। বইয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সর্বপ্রথম আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
Top
 



কেমিক্যালমুক্ত আম চেনার ১০টি উপায়!


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

এখন অনেক রকমের আম পাওয়া যাচ্ছে। নামে যেমন বাহার, খেতে তেমন সুস্বাদু। ছোটবেলায় আম, মুড়ি, দুধ দিয়ে মেখে খাওয়ার স্মৃতি কমবেশি সবারই আছে। কিন্তু ছোটবেলার সেই সুস্বাদু আমে এখন প্রচুর কৃত্রিম ভেজাল পাওয়া যায়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ফরমালিনসহ নানা রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করে আমকে এখন আতঙ্কের ফল হিসেবেই পরিচিতি করে তুলছে। এসব কেমিক্যাল মানুষের জন্য শুধু ভয়াবহই না মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি করে।
তবে কেমিক্যাল মুক্ত আম কিনতে চাইলে নিচের টিপসগুলো মাথায় রাখতে পারেন:
১. প্রথমেই লক্ষ্য করুন, আমের গায়ে মাছি বসছে কি-না। এর কারণ, ফরমালিন যুক্ত আমে মাছি বসে না।
২. আম গাছে থাকা অবস্থায় বা গাছপাকা আম হলে লক্ষ্য করে দেখবেন যে আমের শরীরে এক রকম সাদাটে ভাব থাকে। কিন্তু ফরমালিন বা অন্য রাসায়নিকে চুবানো আম হবে ঝকঝকে সুন্দর।
৩. কারবাইড বা অন্য কিছু দিয়ে পাকানো আমের শরীর হয় মোলায়েম ও দাগহীন। কেননা আমগুলো কাঁচা অবস্থাতেই পেড়ে ফেলে ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়। গাছ পাকা আমের ত্বকে দাগ পড়বেই।
৪. গাছপাকা আমের ত্বকের রঙে ভিন্নতা থাকবে। গোঁড়ার দিকে গাঢ় রঙ হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কারবাইড দেওয়া আমের আগাগোড়া হলদেটে হয়ে যায়, কখনো কখনো বেশি দেওয়া হলে সাদাটেও হয়ে যায়।
৫. হিমসাগর ছাডাও আরও নানান জাতের আম আছে যা পাকলেও সবুজ থাকে, কিন্তু অত্যন্ত মিষ্টি হয়। গাছপাকা হলে এইসব আমের ত্বকে বিছিরি দাগ পড়ে। ওষুধ দিয়ে পাকানো হলে আমের শরীর হয় মসৃণ ও সুন্দর।
৬. আম নাকের কাছে নিয়ে ভালো করে শুঁকে কিনুন। গাছ পাকা আম হলে অবশ্যই বোটার কাছে ঘ্রাণ থাকবে। ওষুধ দেওয়া আম হলে কোনো গন্ধ থাকবে না, কিংবা বিচ্ছিরি বাজে গন্ধ থাকবে।
৭. আম মুখে দেওয়ার পর যদি দেখেন যে কোনো সৌরভ নেই কিংবা আমে টক বা মিষ্টি কোনো স্বাদ নেই, বুঝবেন সে আমে ওষুধ দেওয়া।
৮. আম কেনা হলে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এমন কোথাও রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল করে না। গাছ পাকা আম হলে গন্ধে মৌ মৌ করে চারপাশ। ওষুধ দেওয়া আমে এ মিষ্টি গন্ধ হবেই না।
৯. আমের গায়ে সাধারণত এক ধরনের সাদা পাউডারের মতো থাকে। যা পানিতে বা ফরমালিনে চুবালে চলে যায় । এটাও খেয়াল রাখুন।
১০. কেমিক্যালে পাকানো আম হলুদ না হয়ে সাদার মত রং ধারণ করে। অনেক সময় ক্রেতার নজর কাড়তে ও আমের গায়ে থাকা দাগ দূর করতে এক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। কিছু আম আছে যে পাকলেও চামড়া সবুজ থাকে এরকম আম ক্রেতারা দেখেই কিনতে চায় না। তাই এরকম ক্রেতাদের ভুলের কারণেও কেমিক্যালের ব্যাবহার হয়।
Top

নির্যাতনে দেশ ছাড়ছে রোহিঙ্গারা দারিদ্র্যের কারণে বাংলাদেশিরা

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মিয়ানমারের মানুষ জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়ছে। আর দারিদ্র্যের কারণে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে পাচারকারীদের হাতে পড়ছে বাংলাদেশিরা। সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের সভায় ‘অভিবাসীদের মানবাধিকার’ শীর্ষক জুন মাসের আলোচনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাআ’দ আল হুসেন এ কথা বলেন।
হুসেন বলেন, অনেক বছর ধরেই মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছেড়ে আসা মানুষ পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ছে। ভূমধ্যসাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাগরে সৃষ্ট সংকটের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পাশবিক সংঘাত আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে অবৈধ অভিবাসনের সংকট তৈরি হয়েছে। নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে।
বঞ্চনা এবং হতাশাও মানুষকে অভিবাসনে বাধ্য করছে। জেইদ রাআ’দ আল হুসেনকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত দেশটির সংখ্যালঘু ১৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান। বাসস্থান, কৃষিজমির অধিকার, চাকরিসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে হত্যা, গুম, গণগ্রেফতার, নির্যাতন ও যৌন নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানরা। হুসেন আশঙ্কা করেন নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের তালেবানদের দেয়া সামপ্রতিক বিবৃতির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
Top
 

নতুন সেনাপ্রধান শফিউল হক

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক। তিনি ২৫ জুন থেকে দায়িত্ব পালন করেন। সেনা প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া ২৫ জুন অবসরে যান। ফলে ঐ দিনই সেনা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবু বকর ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সেনাবাহিনীর বিএ-১৭৩৮ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হককে ২৫ জুন অপরাহ্নে জেনারেল পদে পদোন্নতি প্রদান পূর্বক চিফ অব স্টাফ অব দ্য ডিফেন্স সার্ভিস অর্ডার-১৯৮১ অনুসারে ২০১৮ সালের ২৫ জুন অপরাহ্ন পর্যন্ত তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হলো।
আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ছিলেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর জন্ম । ১৯৭৮ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি সোর্ড অব অনারসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ডিফেন্স স্টাডি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে ইরাক, ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়ায় কাজ করেছেন। তিনি ভালো গলফও খেলেন। তার স্ত্রীর নাম সোমা হক। তাদের এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
Top

 

পথশিশুদের উন্নয়নে দ্রুত নীতিমালা চূড়ান্ত করার দাবি


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

পথশিশুদের ভাগ্যোন্নয়নের বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) নীতিমালা চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে আইপিডি সম্মেলন কক্ষে ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর), পথশিশু ও আমাদের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক সেমিনার তারা এই দাবি জানান। সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক অ্যানহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম (সিপ) আয়োজিত এ সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। সিপের নির্বাহী পরিচালক মো. ফজলুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি মীর শওকাত আলী বাদশা। আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, সাবেক এমপি তোফাজ্জেল হোসেন, টেরি দাস হোমসের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহমুদুল কবীর, অপরাজেয় বাংলাদেশের আমিনা খাতুন প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন সিপের প্রকল্প কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মুকুল। ডেপুটি স্পিকার বলেন, বর্তমান সরকার সকল শিশুকে শিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছে। সরকারের আন্তরিকতার কারণে শিশু অধিকার নিয়ে সভা-সামবেশ, সেমিনার ও সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এখন শুধু প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টি করা। এজন্য সরকারি, বেসরকারি ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠাগুলোকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। মীর শওকাত আলী বাদশা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও শিশুদের উন্নয়নে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদের উন্নয়নের মূলস্রোতে যুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আইনের বাস্তবায়নকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুরা এখনও বৃত্তের ভিতরে বন্দি উল্লেখ করে কাজী রোজী বলেন, সমাজের বিজনেস ম্যাগনেটদের এগিয়ে আনুন। পথশিশুদের পাশে দাঁড়ান। তবেই শিশুরা এ বৃত্ত থেকে মুক্তি পাবে। সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, পথশিশুর সুরক্ষা ও উন্নয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট সিএসআর নীতিমালা, গাইডলাইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। যার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে মনিটরিং ব্যাবস্থা রাখতে হবে। কর্পোরেটগুলোকে ক্যাটাগরি করে প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনায় সুবিধাবঞ্চিতদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
Top

যুক্তরাষ্ট্র এখনও বর্ণবাদ মুক্ত নয় :ওবামা


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বর্ণবাদের অভিশাপমুক্ত হতে পারেনি। এর প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনও দৃঢ়ভাবে বর্ণবাদ গেঁথে আছে। মার্কিন কৌতুকাভিনেতা মার্ক ম্যারনের জনপ্রিয় শো ‘ডবিউটিএফ’তে এক সাক্ষাৎকারে ওবামা এসব কথা বলেন। সোমবার প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, দাস প্রথার উত্তরাধিকারসহ আমাদের জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। এমনকি বর্ণ-গোত্রের দীর্ঘ ছায়া এখনও আমাদের রক্ত-মাংসে অংশ হয়ে আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এর থেকে আমরা এখনও পরিত্রাণ পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই থেকে ৩০০ বছর ধরে আমাদের সমাজে যা ঘটে আসছে তা থেকে আমরা রাতারাতি সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারবো বিষয়টি এমনও নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনার চার্লসটনের কৃষ্ণাঙ্গ গির্জায় শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারীর হামলায় ৯ জন নিহতের ঘটনার প্রেক্ষাপটে ওবামা এই তীর্যক মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার শ্বেতাঙ্গ ২১ বছর বয়সী যুবক ডিলান রুফকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে চার্লসটনে কৃষ্ণাঙ্গদের গির্জায় ঢুকে কেন সে নয়জনকে হত্যা করেছে তার একটি বর্ণবাদী ইশতেহার প্রকাশ করেছে সন্দেহভাজন খুনি ডিলান রুফ। শনিবার একটি ওয়েবসাইটে ওই ইশতেহারের পাশাপাশি পিস্তল ও যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধকালে কনফেডারেট সেনাবাহিনীর ব্যবহূত পতাকা হাতে রুফের ছবিও পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছে, “আমার অন্য কোনো পছন্দ নেই। আমি চার্লসটনকে বেছে নিয়েছি কারণ আমার রাজ্যে এটিই সবচেয়ে ঐতিহাসিক শহর এবং একসময় এখানেই শ্বেতাঙ্গদের অনুপাতে কৃষ্ণকায়দের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল।”

Top


রোহিঙ্গাদের হয়রানি বন্ধে মালালার আহ্বান


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের হয়রানি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটি এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শান্তি নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গারাও সম-অধিকার ও সুযোগ-সুবিধার পূর্ণ দাবিদার। খবর এএফপির।
গতকাল সোমবার লন্ডনে মালালা ফান্ডের এক বিবৃতির মাধ্যমে মালালা ওই আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যে দেশে জন্মেছে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যেখানে বসবাস করছে, তারা সেখানকারই নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবি রাখে। তাদের হয়রানি বন্ধে এই মুহূর্তে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি মিয়ানমার এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ মালালা আরও বলেন, ‘আজ এবং অবশ্যই সবসময় আমি রোহিঙ্গাদের পক্ষে আছি। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি সব জায়গায় মানুষকে উৎসাহিত করব।’ রোহিঙ্গাদের অবৈধ অভিবাসী বলে দাবি করে থাকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। এ জন্য কর্মসংস্থান ও অবাধ চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে রাখা হয়েছে তাদের ওপর।
 

চাপা জিনসে সাবধান


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

আধুনিক ফ্যাশনের সাথে তাল মেলাতে কে না চায়। হাল ফ্যাশনের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে তাই বলে বিপদে পড়তে হবে সম্প্রতি এমনই ভয়াবহ বিপদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডের এক নারী। চাপা জিনস পরে ফ্যাশন করতে গিয়ে এমনই অবস্থা যে পা ফুলে গিয়ে মরার অবস্থা। কোন উপায় না পেয়ে ঐ নারী ভর্তি হন হাসপাতালে। হাসপাতালে ভর্তির পর জিনস কেটে বের করতে হয়েছে তাকে। চাপা জিনস পরে রাস্তায় বের হওয়ায় পা ফুলে, রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে রাস্তার পাশে পড়ে গিয়েছিলেন ঐ নারী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে যাত্রা কোন রকমে বেঁচে যান তিনি। তবে কয়েক দিন হাঁটতে পারেননি ঐ নারী। চিকিৎসক থমাস কিমবার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, চাপা জিনস পরায় তার পায়ের পেশিগুলো ফুলে স্নায়ুগুলোর স্বাভাবিক কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। এ ধরনের পোশাক না পরে তুলনামূলকভাবে খোলামেলা পোশাক পরারই পরামর্শ দিয়েছেন কিমবার।
Top

সংবিধান সংশোধনের দাবি সু চির


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

আবারও সংবিধান সংশোধনের দাবি জানালেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রীপন্থি বিরোধী দলের নেত্রী অং সান সু চি। দেশটির জান্তা সমর্থিত সংস্কারপন্থি’ সরকার সংবিধান সংশোধন নিয়ে নতুন করে পার্লামেন্টে বিতর্ক শুরু করার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার তিনি এই দাবি জানান। এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের আগমুহূর্তে সেনাবাহিনী নিজেদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখবেন কি-না তা নিয়েই পার্লামেন্টে আলোচনা করছে মিয়ানমার সরকার। গতকাল এক বিবৃতিতে সংবিধান সংশোধনের দাবি জানিয়ে সু চি বলেন, আমরা যদি এদেশের পরিবর্তন সত্যিই চাই, আমাদের অবশ্যই ৪৩৬ ধারাটি সংশোধন করতে হবে।’ এ ধারার কারণে সেনাবাহিনী সংবিধানের যে কোনো সংশোধনের বিরুদ্ধেই ভেটো দিতে পারে।
এ ছাড়া সংবিধানের যে কোনো পরিবর্তনের জন্য ৭৫ শতাংশ আইন প্রণেতার সমর্থন দরকার পড়ে। এ শর্তের ফলে পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন দখল করে রাখা অনির্বাচিত সেনা সদস্যরাই সংবিধান বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে থাকে। মিয়ানমারের সংবিধান মতে, নিজে কিংবা পরিবারের কোনো সদস্য যদি বিদেশি নাগরিক থাকেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না ওই ব্যক্তি। সু চির ছেলে ব্রিটেনের নাগরিক যে কারণে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখা না-রাখা এবং সু চিকে প্রেসিডেন্ট হতে দেওয়া না-দেওয়ার বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে পার্লামেন্টে তিন দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে। এসব ইস্যুতে শেষ দিন পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বছরের শেষ দিকে সাধারণ নির্বাচনের আগে সবচেয়ে বড় সাংবিধানিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই পার্লামেন্ট অধিবেশনই শেষ সুযোগ।
Top

মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছরই থাকছে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

বর্তমান সরকার নারী ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী তাই নতুন আইনে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছরই রাখা হবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, তবে আমাদের সমাজে মেয়েরা অনেক অনভিপ্রেত ঘটনার শিকার হয়ে বিয়ের আগেই গর্ভধারণ করে। যা মেয়েদের জন্য আর একটি ঝুঁকিপূর্ণ দিক। এ বিষয়টা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
গত ২৩ জুন গুলশানের স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে বিবাহিত শিশুর ক্ষমতায়নে কাজ করার প্রকল্প ‘ইমেজ’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি । বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, নেদারল্যন্ডস্ দূতাবাসের চার্জ দ্যা এফেয়ার মারটিন ভান হুগস্ট্রাটেন এবং সাবেক উপদেষ্টা ও আইন সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। ‘ইমেজ’-এর বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রজেক্ট ডিরেক্টর ফারহানা জেসমিন হাসান। ইনপুট সেশনের সভাপতিত্ব করেন নেদারল্যান্ডস্ দূতাবাসে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ক সচিব এলা দে ভুগড।
অনুষ্ঠানে বলা হয় শিশু বিয়ের হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার ৬৮ শতাংশ। ‘ইমেজ’ ইনিশিয়েটিভ ফর ম্যারিড অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস এম্পাওয়ারমেন্ট বিবাহিত শিশুদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বুঝতে এবং এর আলোকে জীবনে পরিবর্তন আনতে কাজ করবে। এই পরিবর্তন আনার জন্য শুধু বিবাহিত শিশুই নয়, তাদের স্বামী, শ্বশুরবাড়ি, বাবা-মা, পাড়া-প্রতিবেশিদের নিয়েও কাজ করবে ‘ইমেজ’।
দুই বছরে ‘ইমেজ’ নিলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম তিন ইউনিয়নে বাস্তবায়িত হবে। ২ বছরে এই প্রকল্প ৪ হাজার ৫০০ শিশুর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ক্ষমতায়নে কাজ করবে। নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে যৌথভাবে টেরে ডেস হোমস্ নেদারল্যান্ডস্ ও রেড ওরেঞ্জ-এর মাধ্যমে তিন জেলায় মাঠ পর্যায়ে বিবাহিত শিশুর ক্ষমতায়ন বাস্তবায়নে টেরে ডেস্ হোমস লোসান, এস কেএস ফাউন্ডেশন এবং পল্লীশ্রী কাজ করবে।
অতিথিরা বলেন, শিশুর শৈশব, শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য তার অধিকার এবং এগুলো নিশ্চিতকরণে ‘ইমেজ’-এর উদ্যোগ ভাল। কিন্তু তা যেন কোনোভাবে শিশু বিবাহকে প্ররোচিত না করে সেদিকেও সতর্ক হতে বলেন তারা।

Top


জাতীয় পরিচয়পত্র দশ ডিজিটের স্মার্টকার্ড


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

জাতীয় পরিচয়পত্রের ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড হবে দশ ডিজিটের। স্মার্ট কার্ডের ক্ষেত্রে ১০ ডিজিটের ইউনিক আইডি নম্বর রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্যমান লেমিনেটিং করা ম্যানুয়াল জাতীয় পরিচয়পত্র ১৩ ও ১৭ ডিজিটের। নাগরিকদের নম্বর মনে রাখা সহজসাধ্য হবে-বিবেচনায় দশ ডিজিটের স্মার্ট করার বিষয়ে মঙ্গলবার কমিশন সভায় উপস্থিতরা সর্বসম্মত হয়েছেন। একইসঙ্গে ৯ কোটি ৬২ লাখ ভোটারের বাইরে ১৫ বছর বয়সীদেরও স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। এজন্য আগামী ২৫ জুলাই থেকে ১৫ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করবে ইসি।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, এ বছরেই সবার হাতে পর্যায়ক্রমে স্মার্ট কার্ড তুলে দেয়া হবে। এই লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রোজার পর ১৫ বছর বয়সীদের ভোটার নিবন্ধনে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হবে। ১০ ডিজিটের এনআইডির ইউনিক নম্বর নিয়ে একজন ব্যক্তি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একটি মাত্র নম্বর বহন করেই নাগরিক সুবিধা পেতে পারবেন।
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্রের ডিজিট হবে ১০টি। ১০ ডিজিটের মধ্যে মূলত ৯টি ডিজিট র্যান্ডম তৈরি হবে এবং শেষের ১টি ডিজিট ‘চেকসাম’ হিসাবে ব্যবহূত হবে। কোনো এনআইডি নম্বরের প্রথমে জিরো থাকবে না। একই ডিজিট চার বা ততোধিকবার থাকতে পারবে না। ৩টি একই ডিজিট পরপর একবারের বেশি ব্যবহার করা হবে না। ক্রমানুসারে কোনো এনআইডি তৈরি হবে না। স্বামী-স্ত্রীর নাম উল্লেখ থাকলেও উন্নত মানের ডিজিটাল কার্ডের (স্মার্ট কার্ড) উপরের অংশে স্বামী-স্ত্রীর নাম থাকছে না। তবে কার্ডের মাইক্রোচিপসে ভোটারের এই তথ্য দেয়া থাকবে। কারণ স্বামী বা স্ত্রী পরিবর্তনযোগ্য, এজন্য উন্নতমানের স্মার্ট কার্ডে একজন ভোটারের নাম, পিতা ও মাতার নাম দৃশ্যমান রাখা হবে। ১৫ বছর নাকি ১৮ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে তা নিয়ে এতোদিন নির্বাচন কমিশনাররা দ্বিবিভক্ত ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবারের কমিশন সভায় বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে কোন বয়সীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়-সে সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। তাতে অনেক দেশে ১৮ বছরের নিচের বয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার তথ্য উঠে আসে। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশনারদের সবাই ১৫ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
ইতোমধ্যে স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত ও বিতরণের জন্য ফরাসি কোম্পানি অবারথু টেকনোলজির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চুক্তি স্বাক্ষরও হয়েছে। কোম্পানিটি ৯ কোটি স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত ও বিতরণ করবে। ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা মূল্যের এই চুক্তির মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় অল্প সময়ের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের হাতে পর্যায়ক্রমে স্মার্ট কার্ড তুলে দিতে চায় ইসি। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত করার জন্য ৫টি মেশিনও ক্রয় করে আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত জাতীয় পরিচয়পত্রের তিন স্তরে মোট ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সন্নিবেশিত থাকবে। এছাড়া স্মার্ট কার্ডের মধ্যে যে মাইক্রোচিপ দেয়া থাকবে তাতে একজন নাগরিকের সব তথ্য পাওয়া যাবে।’
২৫টি কাজে ব্যবহার করা যাবে স্মার্ট কার্ড
এছাড়া প্রাথমিকভাবে ২৫টি কাজে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে, এরমধ্যে সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, টিআইএন প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণ, সরকারি ভাতা উত্তোলন, সহায়তা প্রাপ্তি, বি আইএন, শেয়ার-বিও একাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ই-গভর্নেন্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন ও শিক্ষার্থীদের ভর্তির কাজে ব্যবহার করা হবে স্মার্ট কার্ড।

Top


মানবাধিকার কর্মকর্তার পিতৃবিয়োগ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের উত্তরা আঞ্চলিক শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ ইকরাম মিয়ার পিতা বদিরুজ্জামান মিয়া (৭৮) গত ২৯ জুন ২০১৫ রোজ সোমবার রাত ৮:৩০টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না..... রাজিউন)। তার গ্রামের বাড়ী গোপালগঞ্জ। বদিরুজ্জামানের মৃত্যুতে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
 

মানবাধিকার কমিশন কুমিল্লা জেলা শাখার আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবস পালন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

গত ২৬ জুন ২০১৫ইং তারিখে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, কুমিল্লা জেলা শাখার কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভার সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কবির মোহন। সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি জিএম ফারুক, এস. এম গোলাম বায়েজিদ, তপন কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পিটার, আমজাদ হোসেন আবাদ, শাহীন আহমেদ প্রমুখ।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, দেশে নারী নির্যাতন, খুন, গুম, ধর্ষণ ও মাদকের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার মানবাধিকার কমিশন উদ্বিগ্ন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি এসকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান করেন। বর্তমানে গৃহ পরিচারিকাদের নির্যাতন বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি গৃহপরিচারিকাদেরকে পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করার জন্য পরিবারের অন্যান্যদেরকে অনুরোধ করেন। রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে যেন দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি না করার জন্য ব্যবসায়ী ভাইদের নিকট আহবান জানান।
মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ইইউ-র অভিযান
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত সোমবার লুক্সেমবার্গে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন। তবে জাতিসংঘের নির্দেশনা না থাকায় আপাতত ইইউ মানবপাচারকারীদের বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের মধ্যেই অভিযান সীমিত রাখবে। খবর বিবিসির।
আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা লিবিয়া উপকূলে জড়ো হয় এবং সেখান থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নৌযানে করে ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে। যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে সম্প্রতি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকে সাগরে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে। এপ্রিলে এরকম একটি দুর্ঘটনায় প্রায় আটশ অভিবাসী প্রাণ হারায়। ইইউ বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘারিনি বলেন, ‘আজই অভিযানের যাত্রা শুরু হচ্ছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই: এ অভিযানের ল্য কোনোভাবেই অভিবাসীরা নয়। বরং এ অভিযানের ল্য তারা যারা ওই সব অভিবাসীদের জীবনের বিনিময়ে এবং কখনো কখনো মৃত্যুর বিনিময়েও নিজেদের পকেট ভারী করে।
Top

বরগুনায় আন্তর্জাতিক নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালিত


মানবাধিকার রিপোর্টঃ মানববন্ধন, আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে ২৬ জুন সকাল ১০টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্ত্বরে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বরগুনা জেলা শাখার আয়োজনে মানববন্ধন চলাকালীন সময় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. গোলাম মোস্তফা কাদের, সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন শানু, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল আকতার খান, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, মানবাধিকার নেতা বাবু সুখ রঞ্জনশীল, হিমাদ্রি শেখর দেবনাথ কেশব, মীর জামাল, এম.এস রিয়াদ, জয়দেব, নাসির প্রমূখ।
 

হিজড়ারাও ব্যাংকের সাহায্য পাবে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধ কার্যক্রমের অংশ থেকে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। গত ২৩ জুন ২০১৫ এক সার্কুলার লেটার জারি করে সিএসআর নীতিমালায় এ সংযোজন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গত বছর একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
Top
 

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ ুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। দেশটিতে এখানকার রাজনীতির দিকনির্ধারক হিসেবে কাজ করে অর্থ। মারাত্মকভাবে বর্ণবাদের দোষে দুষ্ট মার্কিন বিচারব্যবস্থা।
যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে গত ২৬ জুন ২০১৫ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেছে চীন। প্রধানত মার্কিন গণমাধ্যমের বিভিন্ন তথ্যের বরাত দিয়ে চীনা প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এর ঠিক আগের দিন ২৫ জুন ২০১৫ যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করে।
চীনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের নির্মমতা, বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড় নজরদারি- সব মিলিয়ে মার্কিন মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। পুরো যুক্তরাষ্ট্র ছেয়ে গেছে অস্ত্রে। প্রতিনিয়ত ঘটছে সহিংস অপরাধ। পুলিশ তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। সন্ত্রাসী সন্দেহে বাছবিচারহীনভাবে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দারা। ভিনদেশে ড্রোন হামলা এবং ব্যাপক হারে নজরদারি করে ওই সব দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত নয়। সেখানকার রাজনৈতিক ফয়সালায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে অর্থ। মারাত্মক বর্ণবাদী পক্ষপাতদুষ্টতায় ভুগছে সেখানকার বিচারব্যবস্থা। মার্কিন পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের কথা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে চীনের প্রতিবেদনে। বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্য কঠিনভাবে বিদ্যমান। সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটে চলেছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।
ঠিক আগের দিনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে চীনের আগাপাশতলা সমালোচনা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, চীনে দমন-পীড়নের ঘটনা একেবারে নিয়মিত, বিশেষ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় সোচ্চার ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর ওপর। রাজধানী বেইজিংয়ে উইঘুর সম্প্রদায় ও তিব্বতিদের ওপর চীনা নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে মার্কিন প্রতিবেদনে। সমালোচনা করা হয়েছে হংকংয়ে আধা-স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থারও। হংকংবাসীর ভোটাধিকার প্রয়োগে সীমাবদ্ধতাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার সংকট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। এ ছাড়া হংকংয়ে সংবাদমাধ্যমের অধিকারের সীমাবদ্ধতা এবং গণমাধ্যমের ওপর সহিংসতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।
হংকংয়ের স্থানীয় সরকার অবশ্য গতকাল এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, তাদের সাংবিধানিক সংস্কারের ব্যাপারে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। বাকস্বাধীনতায় ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছে হংকং সরকার। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের রশি টানাটানির অন্যতম একটি ইস্যু হলো মানবাধিকার। ১৯৮৯ সালে চীনের বেইজিংয়ে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গণতন্ত্রপন্থীদের ওপর সরকারের হামলায় কয়েক শ মতান্তরে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর মানবাধিকার ইস্যুতে দুই দেশের দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : এএফপি।
Top

প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় সবাইকে

কাজ করতে হবে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

প্রতিবন্ধীরাও মানুষ। তাদের প্রতি সমাজ ও রাষ্ট্রের যে বিশেষ দায় থাকা উচিত এ ব্যাপারে মানবতাবাদীরা বরাবরই সোচ্চার। আশার কথা সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সরকার প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়ানোকে সব সময় কর্তব্য বলে ভেবেছে। তাদের শিক্ষা ও পুনর্বাসনে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বিস্তার ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর পাশাপাশি আগামী অর্থবছর থেকে সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ছয় লাখে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সভায়। বর্তমানে চার লাখ প্রতিবন্ধী সরকারের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাতা পাচ্ছেন। আগামী অর্থবছর থেকে ছয় লাখ প্রতিবন্ধীর সবাইকে মাসে ৫০০ টাকা হারে ভাতা দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিবন্ধীদের জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কর্মজীবী প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে ডরমেটরি নির্মাণেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে। প্রতিবন্ধীদের ভাতা বৃদ্ধি এবং ছয় লাখ প্রতিবন্ধীকে সুবিধাদানের সিদ্ধান্ত একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
স্মর্তব্য, প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ৮৪ কোটি টাকায় নির্মিত হচ্ছে এ কমপ্লেক্স। বর্তমানে সারাদেশে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ১০৩টি সেবা ও সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলা চর্চায় জমি বরাদ্দের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীরা অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের জন্য তারা বয়ে এনেছেন গর্ব করার মতো সাফল্য। আমরা আশা করব প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নেয়া সরকারের কর্মসূচিগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হবে। তাদের স্বাভাবিক জীবনধারার সঙ্গী বানাতে সরকারি প্রয়াসের বাইরে বেসরকারি উদ্যোগও থাকা উচিত। সমাজের সম্পন্ন লোকেরা প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টি দিলে তাদের জীবন আরো সহজ হয়ে উঠবে।
প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করতে হবে আমাদের সবাইকে। বিশেষ করে যারা প্রতিবন্ধী নয় তাদেরও। প্রতিবন্ধীরা অবহেলার পাত্র নন। তাদেরও সমান সুযোগ নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে কাজ হচ্ছে অনেক। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগামী। কিন্তু তারপরও প্রতিবন্ধীরা সামাজিকভাবে এখনো পুরোপুরি অধিকারপ্রাপ্ত হয়নি। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিই এ জন্য দায়ী।
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী। আর এ ১০০ কোটি জনগোষ্ঠীর আবার বেশিরভাগই আমাদের মতো উন্নয়ন রাষ্ট্রগুলোয় বসবাস করে। তার মানে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধী। তবে এই প্রতিবন্ধিতার বিভিন্ন রকমফের আছে। কোনোটি দৃষ্টিগোচর হয়, আবার কোনোটি অতটা প্রকট নয়। তাই ততটা গুরুত্ব পায় না।
একটি অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বা অসচেতন জনগোষ্ঠী কখনো প্রতিবন্ধীদের মতো সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা করতে পারে না। কারণ, অশিক্ষা বা অসচেতনতার জন্য তারা নিজেদের অধিকার সম্পর্কেই ধারণা রাখে না। ফলে ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। মানবাধিকার লঙ্ঘন কেবল হত্যা, খুন বা অপহরণ নয়। সাধারণ ফৌজদারি বা দেওয়ানি অধিকার রক্ষা করতে না পারাই সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আমাদের সংবিধানেও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা আছে। তাই সংবিধানের আলোকে তাদের জন্য অধিকারবান্ধব একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, তারা আমাদেরই একজন। এ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে রয়েছে তাদেরও সমান অধিকার ও অবদান।
 

Top

বস্তির ৮০ ভাগ শিশুই বাল্য বিবাহের শিকার


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

১৪ বছর বয়সী শাবনূরের কোলে এক বছরের পুত্র সন্তান। মা-ছেলে দুজনেরই শরীরের হাঁড় গুণে বলে দেয়া যায়। বখাটেদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে বাবা-মা তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। যখন বিয়ে হয় তখন শাবনূরের বয়স ছিল ১১ বছর। এর পক্ষে শাবনূরের মার যুক্তি হলো: ‘ভালো পোলা পাওন ঝামেলার, জামাই আমগো বইনের পোলা, ট্যারাকের হেলপারি করে, ভালো পয়সা কামায়, হের লাইগ্যা বিয়া দিছি। বিয়া না দিয়া কি করতাম ঘরে আরো দুই মাইয়্যা আছে; ওগোরও বিয়া দেওন লাগবো। কামে গেলে মাইয়্যা একলা ঘরে থাহে, আশপাশের পুলাপান ভালো না, একটা কেলেঙ্কারি হইলে মাইয়্যা লইয়া বিপদে পড়তে হইতো।’
শাবনূরের মতো শিশুদের খেলার বয়সে বিয়ে, একের পর এক সন্তান ধারণ, স্বাস্থ্য ভেঙ্গে যাওয়া, বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে দিন পার করা– এই যেন বস্তির অভাবি সংসারের কন্যা শিশুদের পরিণতি।
ভাল পাত্র পাওয়ার আশায়, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ও দারিদ্র্যতার কারণে শাবনূরের মতো বস্তির শতকরা ৮০ ভাগ কন্যা শিশুর বাল্য বিবাহ হচ্ছে। কোনভাবেই এই বাল্য বিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের ২০১৪ সালে রাজধানীর নির্বাচিত পাঁচটি বস্তির অবস্থা বিশ্লেষণ করে ‘নগরায়নের প্রবণতা ও শিশুদের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে।
সেখান থেকে জানা যায়, বালকদের ক্ষেত্রে এই বিয়ের হার শতকরা ৪৬ ভাগ। অভিভাবকদের মধ্যে শতকরা ৫২ ভাগই ভাল পাত্র পাওয়ার আশায়, ২০ ভাগ দারিদ্র্যতার কারণে ও ১৯ ভাগ কন্যা শিশুকে যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা করতে বাল্য বিবাহ দিয়ে থাকেন। বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, এ কথা জেনেও তা হচ্ছে। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসন থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও বস্তিগুলোতে কিছুতেই তা কাজে আসছে না।সর্বশেষ শুমারির প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি বস্তি গড়ে উঠেছে। এই বিভাগে ৬ হাজার ৪৮৯টি বস্তি রয়েছে। যা মোট বস্তির ৪৭ ভাগ। এই বিভাগে প্রচুর শিল্পকারখানা থাকায় এটিকে কেন্দ্র করে অনেক বস্তি গড়ে উঠেছে। আর এসব বস্তিতে অহরহই হচ্ছে বাল্য বিবাহ।
শাবনূরের মতো কিশোরী বয়সে মা হওয়ার প্রবণতা বাংলাদেশসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে চরম সংকট তৈরি করছে। এ অঞ্চলে ২৫ শতাংশ মেয়ে কিশোরী বয়সে মা হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার মেয়ের কিশোরী বয়সে বিয়ে হচ্ছে। প্রতি ১০ জনে একজন ১৫ বছরে পৌঁছানোর আগেই গর্ভধারণ করছে। এরমধ্যে বস্তির কিশোরীদের ৫১ শতাংশই ১৫ বছর বয়সের আগেই মা হয়। এতে কিশোরীরা স্বাস্থ্য সংকটে পড়ছে। ফলে ফিস্টুলা, মাতৃমৃত্যুসহ বহুমুখী স্বাস্থ্য জটিলতায় পড়ছে তারা। ইউএনএফপিএ’র ‘বিশ্ব জনসংখ্যা প্রতিবেদন-২০১৩’ এমন তথ্য প্রকাশ করে।
ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মায়ের চেয়ে কিশোরী মায়ের প্রসবকালীন ঝুঁকি দ্বিগুণ। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হলে প্রসবকালীন মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। তাদের মানসিক, শারীরিক, যৌনজীবন ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই কিশোরী মাতৃত্ব বন্ধ করতে বাল্য বিয়ে রোধ করতে হবে। এ জন্য সচেতনতা ও প্রচারণার পাশাপাশি প্রয়োজন সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ বাড়ানো।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশে এটি বড় সমস্যা। বাংলাদেশে এ সমস্যা আরো প্রকট। তাই কিশোরীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা কৈশোরে মাতৃত্ব প্রতিরোধ না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। অনেকক্ষেত্রে অভিভাবকরা দারিদ্র্য, কুসংস্কার ও ইভটিজিংসহ অন্যান্য কারণে কন্যা সন্তানের দ্রুত বিয়ে দিতে চায়।
বাংলাদেশ প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. লতিফা সামসুদ্দিন বলেন, পৃথিবী জুড়েই শিশুদের ১০ থেকে ১৯ বছরকে কৈশোর কাল বলে। আর এ বয়সের আগে একজন শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক ও শারীরিক বিকাশ হয় না এবং তারা সন্তান ধারনের উপযোগী হয় না। আমাদের দেশে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বেশি বিয়ে হয় বলেই মাতৃমৃত্যুর হার বেশি। বাল্য বিবাহের কারণে এসব কিশোরী কমসময়ের মধ্যে গর্ভধারণ করে এবং প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দেয়। এর মধ্যে-অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, খিচুনী, কম ওজন নিয়ে শিশুর জন্ম নেয়া, বিলম্বিত প্রসব, বাধাপ্রাপ্ত প্রসব বেদনা হয়। এ বয়সে মেয়েদের ‘পেলভিস বোনস’ পুরোপুরি বৃদ্ধি হয় না। যার কারণে প্রসব বাধাগ্রস্ত হয়।
Top

অনিরাপদ পানিতে বেশি ঝুঁকি শিশুদের


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

বিশ্বে প্রতিদিন পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় দুই হাজার শিশু ডায়রিয়াজনিত রোগে মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে এক হাজার ৮০০ শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী অনিরাপদ পানি ও অস্বাস্থ্যকর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা। এই ধারায় বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ হাজার মানুষ ডায়রিয়াজনিত রোগে মারা যায়। এ ছাড়া দেশে দুই কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষের পানীয়জলে রয়েছে আর্সেনিকের মাত্রাতিরিক্ত বিষক্রিয়া। যদিও অল্পসংখ্যক শিশুর মধ্যে আর্সেনিক বিষক্রিয়ার চিহ্ন দেখা যায়, তবু এটা তাদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে দিতে পারে। আর্সেনিক ও ম্যাঙ্গানিজের মতো ভারী ধাতু শিশুদের মানসিক উন্নতিকে ব্যাহত করে। অনিরাপদ পানি পানের ফলে বাংলাদেশে শিশুদের ঝুঁকির এমন চিত্র তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- যদি প্রতিদিন কিন্ডারগার্টেনের ৯০ শিক্ষার্থী ভর্তি একটি বাস সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ত এবং সব শিক্ষার্থী মারা যেত, তাহলে বিশ্ব সেদিকে নজর ফেরাত। অথচ নিম্নমানের পানি, পয়োনিষ্কাশন ও দুর্বল স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থার কারণে প্রতিদিন ঠিক এমনটাই ঘটছে। ডায়রিয়াজনিত রোগে শিশু মৃত্যুর প্রায় ৯০ শতাংশই সরাসরি দূষিত পানি, পয়োনিষ্কাশনের অভাব অথবা অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অনিরাপদ পানির দিক থেকে বাংলাদেশ এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বড়দের তুলনায় শিশুদের ঝুঁকি আরো বেশি। বিশেষ করে পানিবাহিত জীবাণু থেকে শিশুরা দ্রুত আক্রান্ত হয়। তাই খাবার পানির ক্ষেত্রে বড়দের চেয়েও অনেক বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন শিশুদের জন্য। কিছুটা খরচ হলেও শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঘরে ঘরে নিরাপদ পানির আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা জরুরি।
বাংলাদেশ হেপাটোলজি সোসাইটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশে লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার, ফ্যাটি লিভার, ‘এ’ ও ‘ই’ ভাইরাসজনিত লিভার রোগ, পরজীবীজনিত লিভার রোগসহ লিভারের অন্যান্য রোগে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি লোক আক্রান্ত। এর মধ্যে কেবল দেড় কোটি মানুষ লিভারের দীর্ঘস্থায়ী রোগ হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে, আট লাখ হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে শিশু। বাংলাদেশে শিশুদের মধ্যেও লিভারের রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ শিশু হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
জাতীয় অধ্যাপক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম আর খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিশুদের হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ উভয়ই আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ। আর এ থেকে রক্ষার জন্য শিশুদের দূষিত পানি থেকে দূরে রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি পানের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বাইরের খোলামেলা বাসি খাবার বর্জন করতে হবে। হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন প্রদান, রক্ত গ্রহণের আগে পরীক্ষা করে নেওয়া, ইনজেকশন নেওয়ার সময় দূষিত সুচ ব্যবহার না করা, সব ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক বা আচরণ পরিহার করতে হবে। বিশেষ করে বাসা-বাড়িতে শিশুদের সুরক্ষায় নিরাপদ পানির সুব্যবস্থা করতে হবে।

Top

 




 

নারী ও শিশু সংবাদ


 


 

নারী নির্যাতন বেড়েই চলেছে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশ কি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চায় এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগতে পারে। কারণ প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে অত্যন্ত লজ্জাকর এই খবরগুলো। গতকালের পত্রিকায়ও রয়েছে এ রকম বেশ কিছু খবর। খোদ রাজধানীতেই ঘটেছে একাধিক ঘটনা। রামপুরায় স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। খিলগাঁওয়ে পুলিশের এক নারী সদস্যও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই যেন মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো। শিশু থেকে মাঝবয়সী নারী, স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী নারী- কেউ বাদ যাচ্ছে না নরপশুদের হাত থেকে। ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। অথচ জঘন্য এই অপরাধ দমনে উপযুক্ত পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। ফলে অপরাধীরা যে উৎসাহিত হচ্ছে, কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রয়েছে সেই পরিসংখ্যান। গত পাঁচ মাসে সারা দেশে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৮৯৬টি, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭০২টি, অর্থাৎ বেড়েছে ১৯৪টি। উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে এই সংখ্যা যে আরো দ্রুত বাড়বে সে ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়।
সমাজবিজ্ঞান ও অপরাধবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে নানা কারণকে দায়ী করলেও সবচেয়ে বেশি দায়ী করছেন দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত বিচারের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারাকে। জানা যায়, গত ১০ বছরে দেশে ধর্ষণের মামলা হয়েছে পাঁচ হাজার ১১৭টি। এর মধ্যে আজ পর্যন্ত রায় হয়েছে মাত্র ৮৮১টির, আর সাজা হয়েছে মাত্র ১০১ জনের। প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ, তদন্তের গাফিলতি ও তদন্ত প্রতিবেদনের বিকৃতি, তথ্য-প্রমাণের অভাব, সাক্ষীর সাক্ষ্য দিতে অনীহাসহ নানাবিধ কারণে অধিকাংশ অপরাধী বিচারে খালাস পেয়ে যায়। অথচ প্রকৃত হিসাব পেলে দেখা যাবে, অপমান সইতে না পেরে ধর্ষণের শিকার নারীরা আত্মহত্যা করেছে তার চেয়েও বেশি।
ধর্ষণ এমন এক সমস্যা, যা শুধু নারীদের নয়, দেশের সামগ্রিক অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে। অথচ এই সমস্যা মোকাবিলায় রাষ্ট্রের সীমাহীন উদাসীনতা আমাদের প্রতিনিয়ত পীড়িত করছে। ধর্ষণ মামলার বহু আসামি ধরা পড়ে না। আবার যারা ধরা পড়ে তাদেরও অধিকাংশ জামিনে বেরিয়ে যায় এবং মামলার বাদীকে চাপ দিয়ে কিংবা ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করে। সাক্ষী সুরক্ষা আইন না থাকায় অধিকাংশ সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে ভয় পায়। প্রভাবশালীদের চাপে এবং ঘুষ নেওয়ার কারণে তদন্ত প্রতিবেদন বিকৃত করা হয় বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। আবার ধর্ষণের শিকার নারীদের পরিবার আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে দুর্বল হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মামলা চালিয়ে যেতে পারে না। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুততম সময়ে এসব মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে এবং মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রের সব রকম সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।

Top


নির্যাতিত নারী ও শিশুর পরম আশ্রয় ওসিসি
দেড় যুগে ৫০ হাজারের বেশি ভুক্তভোগী চিকিৎসা নিয়েছে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

সারা দেশ থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন নারী ও শিশু ধর্ষণ কিংবা নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিতে আসে। এ হিসাবে মাসে শতাধিক নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) অর্ধলক্ষাধিক নারী ও শিশু চিকিৎসা নিয়েছে।
ওসিসির সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম এ তথ্য দেন। তিনি জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচজন, কোনো কোনো দিন সাতজন নির্যাতিত নারী ও শিশু ওসিসিতে চিকিৎসা নিতে আসছে। তাদের আর্তনাদে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে; খুব খারাপ লাগে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় ২০০১ সালের ১৯ আগস্ট ওসিসির যাত্রা শুরু। গত ৩০ এপ্রিল ৫৩ হাজার ২৫৯ জন নারী ও শিশু ওসিসিতে এসেছে চিকিৎসা নিতে। তাদের বেশির ভাগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, সরকার নারীর নিরাপত্তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি ওসিসিতে গিয়ে কথা হয় চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ ব্যক্তির মানসিক যন্ত্রণার কারণে ঠিকমতো ঘুম হয় না। চিকিৎসা দিয়ে তাদের শরীরের ক্ষত দূর করা যায়, কিন্তু মনের ক্ষত দূর করা কঠিন। তবে তাদের সুস্থ করে তোলার চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই ওসিসির।
ওসিসি সূত্র জানায়, গত মে মাসের ২০টি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে নির্যাতনের শিকার ২০ জনই শিশু। ধর্ষণের শিকার হয়ে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, সংখ্যালঘু, বিধবা, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীরা আসছে; দলিত জনগোষ্ঠীর নারীরা আসছে ওসিসিতে। কখনো কখনো ভুক্তভোগী এই নারী ও শিশুকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না ওসিসিতে। তখন আউটডোর-ইনডোরে তাদের সেবা দিতে হয়।
ওসিসির মাধ্যমে বিভিন্ন আইন-সহায়তা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আইনি সুবিধা পেয়েছেন অনেকে। ওসিসিতে চিকিৎসাসহ সব কিছু বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। অসহায় নারীদের টেকনিক্যাল বিষয়ে ট্রেনিং দিয়ে স্বাবলম্বী করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখছে ওসিসি। শিশুদের জন্যও লজিস্টিক সাপোর্টের ব্যবস্থা রয়েছে। বিনা মূল্যে তাদের বই-খাতা দেয় সরকার। নির্যাতিত নারী ও শিশুদের যথাযথ সেবা দেওয়া হয় বলে জানান ডা. বিলকিস।
সূত্র জানায়, আইনগত বিষয় দেখভাল করার জন্য ওসিসির নিজস্ব পুলিশি ব্যবস্থা রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ঢাকার ওসিসি মডেল হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন সময়ে বিদেশিরা এসে সেখানকার কার্যক্রম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ওসিসিতে নিয়োজিত পুলিশের এসআই হুমায়ন কবির বলেন, নির্যাতিত নারী ও শিশুদের সেবায় পুলিশ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধবিষয়ক মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের আওতায় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওসিসির শাখাগুলোতেও নির্যাতিত নারী ও শিশুরা চিকিৎসা নেয়।
Top

বাল্যবিবাহ বন্ধ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করেন অভিভাবকেরা। বিষয়টি জানার পর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনাটি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাত্রীটি বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা পায়। গতকাল উপজেলার বসুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, বসুপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে স্থানীয় খলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। ঘিওর উপজেলার হিজুলিয়া গ্রামের রহমত আলীর ছেলে কামরুল ইসলামের (২২) সঙ্গে মেয়েটির বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল নিশাত বলেন, বিয়ে না হওয়ায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
Top

অপরাধ ও মাদকে বুঁদ পথশিশু


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক চাহিদাবঞ্চিত যেই শিশুদের আমরা টোকাই, পথকলি, ছিন্নমূল কিংবা পথশিশু বলিয়া চিনি তাহাদের সংখ্যা বাড়িয়া চলিয়াছে। পথেই তাহাদের জন্ম ও বসবাস, আর পথে পথেই তাহাদের গিলিয়া খাইতেছে মাদক ও অপরাধচক্রগুলির মরণফাঁদ। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অবহেলার সুযোগ নিয়া এই শিশুদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরাধমূলক কাজে ঠেলিয়া দিতেছে সংঘবদ্ধ চক্রগুলি। প্রতিদিন রাজধানীতে অসংখ্য ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিতেছে। জড়িত অধিকাংশের বয়স ১০ হইতে ১৬ বৎসর। তাহাদের অধিকাংশ পথশিশু; আরও উদ্বেগের ব্যাপার হইল, তাহাদের ৯০ শতাংশই মাদকাসক্ত। মাদক সেবনের দুষ্টচক্রে পড়িয়া কৈশোরে উত্তীর্ণ না হইতেই তাহারা খুন, নাশকতা, ছিনতাই, মাদক বিক্রয়, চুরির মতো অপরাধে অবলীলায় জড়াইয়া যাইতেছে। অপরাধ কী বুঝিবার আগেই তাহারা হইয়া উঠিতেছে অপরাধ জগতের বাসিন্দা। দিনে দিনে তাহাদের মাদকাসক্তি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেমন বাড়িতেছে, তেমনই বাড়িতেছে তাহাদের বিপন্নতা, আর সামাজিক উদ্বেগ। ইদানীং সমাজের সর্বস্তরে মাদক ও অপরাধের বিস্তার গুরুতর হইয়া উঠিয়াছে। আরও উদ্বেগের কথা হইল, এই মাদকাসক্তদের শতকরা ৪০ ভাগই শিশু-কিশোর। ঢাকার বিভিন্ন অলিগলিতে পথশিশুদের মাদকসেবন দৃশ্য দেখিলে যে কেহ শিহরিয়া উঠিবেন। সারাদিন কাগজ বা অন্যান্য ভাঙ্গারি মালামাল কুড়াইয়া বিক্রয়লব্ধ টাকার প্রায় পুরাটাই মাদকসেবনে ব্যয় করিয়া তাহারা বসিয়া বসিয়া ঝিমাইতেছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যমতে, পথশিশুদের ৮৫ শতাংশই মাদকসেবী। আর বিভিন্ন জরিপ জানাইতেছে, এই মাদকসেবী পথশিশুর সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ। রাজধানী ঢাকায় তাহাদের সংখ্যা সবচাইতে বেশি। নয় হইতে আঠারো বৎসরের এইসকল শিশু-কিশোর ঢাকার কমপক্ষে ২২৯টি স্পটে মাদক সেবন করে। তবে ঢাকার বাহিরেও তাহারা সংখ্যায় অনেক। রাজধানীতে অহরহ চোখে পড়িবে, একশ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী পথশিশুদের দিয়াই মাদক সরবরাহ, ব্যবসা কিংবা পাচার করিতেছে। আর, মাদক ব্যবসা কিংবা সরবরাহে জড়িত হইবার কয়েক দিনের মধ্যেই তাহারা মাদক গ্রহণ শুরু করিতেছে। যেহেতু মাদকাসক্ত শিশুকে দিয়া যেকোনো কাজই করাইয়া নেওয়া যায়, একাধিক গবেষণায় দেখা যাইতেছে, অপরাধচক্রগুলি অন্তরালে থাকিয়া তাহাদেরকে নরকের দুয়ারে ঠেলিয়া দিতেছে। মাদক পাচার, চুরি, ছিনতাই, পিকেটিং, ভিক্ষাবৃত্তি, অস্ত্র বহন এমনকি খুনখারাবিতেও তাহাদের ব্যবহার করা হইতেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, মাদকাসক্ত ৪৪ শতাংশ পথশিশু মাদক বহন ও বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত, পিকেটিংয়ে জড়িত ৩৫ শতাংশ, ছিনতাই, নেশাদ্রব্য বিক্রয়, আন্ডারগ্রাউন্ড সন্ত্রাসীদের সোর্স এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ২১ শতাংশ পথশিশু।
 

Top
 

 

পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

 


 

পুলিশ কর্মকর্তার আত্মহত্যা
পরিবারের দাবি এ মৃত্যু রহস্যজনক, তদন্তের দাবি



মানবাধিকার রিপোর্টঃ

যশোর মণিরামপুর থানা ভবনের ছাদে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে পুলিশের এক উপপরিদর্শক আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর নাম আলী আকবর (৪২)। গতকাল শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। দাম্পত্য কলহের জের ধরে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আলী আকবর আত্মহত্যা করতে পারেন তা তাদের বোধগম্য নয়। তারা ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়েছে। নিহত আলী আকবর নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের নওখোলা গ্রামের ইমদাদ হোসেন খানের ছেলে।
মণিরামপুর থানার ওসি মোল্লা খবির উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশের উপপরিদর্শক আলী আকবর শুক্রবার রাতে মোবাইল ডিউটিতে ছিলেন। সারা রাত কর্তব্য পালন শেষে ভোররাতে থানায় আসেন। এর কিছুক্ষণ পর থানার অন্য পুলিশ সদস্যরা একটি গুলির শব্দ পান। খুঁজতে খুঁজতে থানার ছাদে গিয়ে তাঁরা দেখেন, তাঁর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। এ সময় তাঁর দেহের পাশে সার্ভিস রিভলবার ও এক রাউন্ড গুলির খোসা পড়ে ছিল। পরে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।’ ওসি আরো বলেন, ‘আলী আকবরের দুই স্ত্রী নিয়ে পারিবারিক কলহের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রথমিকভাবে থারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আলী আকবরের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে খুলনার খালিশপুরে বসবাস করেন। আর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে আলী আকবর থাকতেন যশোর মণিরামপুরে একটি ভাড়া বাসায়। দুই স্ত্রী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দাম্পত্য কলহ চলছিল।
তবে দ্বিতীয় স্ত্রী ঝুমা বেগম এটি আত্মহত্যা নয় দাবি করে বলেন, ‘তিনি ভোররাতে থানায় ফিরে আমার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি আমাকে বলেন, আসামি ধরেছেন। কাজ শেষ করে বাড়ি আসতে দেরি হবে। কিন্তু সকালে বাসায় আসতে দেরি হওয়ায় আমি থানায় গিয়ে জানতে পারি, অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে হাসপাতালে এসে দেখি তিনি মারা গেছেন।’ ঝুমা বেগম দাবি করেন, তাঁর স্বামী একজন সচেতন মানুষ, তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না।
এদিকে খুলনার খালিশপুরে ব্যবসারত নিহত আকবরের বড় ছেলে সালাউদ্দিন খান (২৬) জানান, শুক্রবার রাতে বাবার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। পরের দিন কিছু টাকার জন্য বাবার কর্মস্থল মণিরামপুরে যাবেন বলে বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু শনিবার মণিরামপুর থানা থেকে একজন কনস্টেবল ফোন করে তাঁর অবস্থান জানতে চান। প্রথমে তাঁকে জানানো হয় যে তাঁর বাবা খুব অসুস্থ, তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে তিনি বাবার মৃত্যুর খবর পান। তিনি তাঁর বাবার এ রকম অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি।
এদিকে স্বামীর মৃত্যুতে শয্যাশায়ী স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তবে তিনি একজন মহিলাকে (নাম জানা যায়নি) তাঁর স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত দাবি করে তাঁর নামে মামলা করবেন বলে জানান। প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এসআই আকবর মণিরামপুর থানায় যোগদান করেন।
মোহাম্মদপুরে পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
আবারও পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন তার সাবেক স্ত্রী। বসিলা পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তার সাবেক স্ত্রী। ধর্ষিতা ওই নারী দুপুর সোয়া ৩টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে এসে ভর্তি হন। সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী নিজে সেখানে ভর্তি হন। নির্যাতিত ওই নারী জানান, ডিভোর্সের পর এএসআই মোশাররফের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় কারাভোগ করে সে। জামিনে বের হয়ে আবার বিয়ের প্রতিশ্র“তি দিয়ে মামলা তোলে নিতে অনুরোধ করে তাকে। গত ৮ই জুন মোশাররফ মোহাম্মদপুরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে ওই নারীকে। ওই এলাকার ১৪ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। একইভাবে গত ২৭ ও ২৮শে মে বিয়ের প্রতিশ্র“তি দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে ওই এএসআই। পরে ওই নারীকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয় সে। নির্যাতিত নারী জানান, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০১২ সালে পার্শ্ববর্তী জেলার বাসিন্দা মোশাররফের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। মোশাররফ তখন উত্তরায় কর্মরত। অন্যদিকে ওই নারী তখন তার বাড়ি কিশোরগঞ্জে ছিলেন। ওই সময়ে একাধিকবার টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের দেখা হয়েছে। এভাবে প্রায় তিন বছর প্রেম করার পর ২০১৪ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান হাউজিং এলাকায় ভাড়া থাকতেন তারা। কিন্তু বছর পেরুতে না পেরুতেই চলতি বছরের ১৫ই জানুয়ারি বিচ্ছেদ ঘটে তাদের। বিচ্ছেদের পর থেকে উত্তরায় এক বান্ধবীর বাসায় থাকেন ওই নারী। আবার বিয়ে করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে ধর্ষণ করার দায়ে ওই নারী মামলা করবেন বলে জানান। এএসআই মোশাররফের আচরণে বাধ্য হয়েই ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এএসআই মোশাররফ হোসেন সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই এএসআই এসপিবিএনে কর্মরত বলে শুনেছি। সূত্রে জানা গেছে, মোশাররফের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কালিয়াজুরি থানার জগন্নাথপুর গ্রামে। তার পিতার নাম আবদুল মোতালেব।
Top

পাবনায় ধর্ষণের দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

পাবনায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) গাজী রহমান গতকাল সোমবার এ রায় দেন। দণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লার জামাল উদ্দিন (৩২) ও মুজাহিদ ক্লাব মহল্লার শফি মিয়া (৩০)। তাঁরা শহরের রূপকথা সড়কের একটি আবাসিক হোটেলের কর্মচারী।
মামলায় সরকারপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুস সামাদ খান বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Top

বাল্যবিয়ে পণ্ড কাজীসহ তিন জনের দণ্ড


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

হোসেনপুর ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ পণ্ড হয়েছে। একই সঙ্গে বাল্য বিয়ে দেয়ার অপরাধে কাজীসহ তিনজনকে দণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার দক্ষিণ কুড়িমারা গ্রামের আবদুল ওয়াহাবের মেয়ে ও হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী শিখা আক্তারের (১৪) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে পিয়েল মিয়ার (২০) শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। খবর পেয়ে হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরফদার সোহেল রহমান উপস্থিত হয়ে বিয়ে পণ্ড করে দেন। এছাড়া বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বর পিয়েল মিয়া ও বাবা আলাউদ্দিনকে ৭ দিন করে এবং কাজী মোহাম্মদ আলীকে ২০ দিনের দণ্ড দিয়েছেন।
নড়াইলে কারাগারে আসামির মৃত্যু
নড়াইল কারাগারে মো. সাইফুল আজম হাওলাদার (৪০) নামে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুন) ভোরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতলে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
তিনি খুলনার দৌলতপুর উপজেলার দক্ষিণ পাবলা কবরী বটতলা গ্রামের সাহারে আজম হাওলাদারের ছেলে।
নড়াইল কারাগারের জেলার এ কে এ এম মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাইফুল ২০১৫ সালের ৫ মে মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে এসেছিলেন। শনিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি।
Top

কক্সবাজারের ১১ পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসিসহ ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ডিবির ওসি ছাড়াও পুলিশের ৯ জন উপপরিদর্শক (এসআই) এবং একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রয়েছেন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই ১১ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার দিয়ে ইয়াবা ও মানবপাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গত শনিবার রাতে ফেনীর লালপোলে ছয় লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা বড়িসহ র‌্যাবের হাতে এএসআই মাহফুজুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই কক্সবাজার জেলা ডিবির ওসি দেওয়ান আবুল হোসেনকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির দপ্তরে ক্লোজ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ফেনীর ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কক্সবাজার ডিবি অফিসের বহুল আলোচিত এসআই বিল্লাল হোসেন ওরফে বেলাল দারোগাকে (সাময়িক বরখাস্ত) ফেনীতে বদলি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
Top
 



 

স্বাস্থ্য সংবাদ


 

রোজাদারদের পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত

সাধারণত দৈনিক একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৮ থেকে ১০ গাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু রমজান মাসে অভুক্ত থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় না। ফলে ডিহাইড্রেশন বা শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া গরম আবহাওয়া, পরিশ্রমের কাজ ও অতিরিক্ত গৃহস্থালির কাজ থেকে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে পানি শূন্যতা তৈরি হতে পারে। আপনার যদি অতিসামান্য ইউরিন তৈরি হয় অথবা প্রস্রাব বন্ধ হয় অথবা পানি শূন্যতার কারণে অজ্ঞান হবার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে পানি শূন্যতা যাতে তৈরি না হয় তার জন্য প্রত্যেক রোজাদারগণের আগাম সতর্কতা বা আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। যেমন: ইফতারি ও রাতের খাবারের পর প্রচুর পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি সেহরি খাওয়ার পূর্বে অথবা সেহরির সময় প্রচুর পানি ও তরল পদার্থ পান করতে হবে। তাহলে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দেবে না। শুধু পানি পান নয়, আপনি পানির পরিবর্তে ঘরে তৈরি লেবুর শরবত, ডাবের পানি, মানসম্মত জুস (যদি পাওয়া যায়), সুপ, তরল দুধ ইত্যাদি পান করতে পারেন। মনে রাখতে হবে কোন অবস্থায় রোজা থাকাকালীন পানি শূন্যতা হতে দেয়া যাবে না।
এজন্য প্রয়োজনে পরিশ্রমের কাজ, ব্যায়াম বা শরীর চর্চা ও রোদে বেশিক্ষণ না থাকাই ভালো। তবে পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের কারণে জীবন বিপন্ন হবার আশংকা থাকলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ


Top
 

উচ্চতা বাড়াতে ব্যায়াম

বয়স বাড়ছে, কিন্তু বাড়ছে না উচ্চতা। এমনটা হলে দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। লম্বা হওয়ার জন্য তখন কতই না চেষ্টা। হা-হুতাশেরও শেষ নেই। ইস! আর একটু যদি লম্বা হতে পারতাম। অথচ সহজ কিছু ব্যায়াম করে নিজের উচ্চতা বাড়িয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু সে সময়টা কোথায়। আজকাল তো ছেলেমেয়েরা সাধারণ ব্যায়ামের সময় পায় না। একটার পর একটা ব্যস্ততা তাদের ঘিরে আছে। স্কুলের পড়াশোনা, বাড়ির কাজ আর টেলিভিশন বা কম্পিউটার গেমস নিয়ে সময় কেটে যায়। তার পরও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা লম্বা হওয়ার ব্যায়ামের জন্য বাড়তি কোনো সময়ের প্রয়োজন নেই। অথচ পড়াশোনার মাঝেও হালকা ব্যায়ামে নিজের উচ্চতার উন্নতি করা যায়।
এক পায়ে লাফ পদ্ধতি : এটা সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। যেকোনো সময় এবং যেকোনো স্থানে এটি সহজে করা যায়। প্রয়োজন নেই কোনো নির্দিষ্ট জায়গা। ঘরে বা বাইরে যেকোনো স্থানে এ ব্যায়ামটি করা যেতে পারে। এমনকি পড়াশোনার সময়ও। পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া গেলে কোথাও যাওয়ার পথেও সেরে নেওয়া যায় ব্যায়ামটি। পড়াশোনা তৈরি কিংবা খেলাধুলার সময় একটু মনে করেই ব্যায়ামটি করা যায়। দুই হাত আকাশের দিকে রেখে এক পায়ে লাফাতে হবে। অন্তত আট বা ১০ পদক্ষেপ এক পায়ে লাফাতে হবে। এবার অন্য পায়ে এটি করতে হবে। নিয়মিত এ ব্যায়াম করলে দারুণ ফল পাওয়া যাবে।
ফল : এ অনুশীলনে ব্রেনের উপকার হয়। এটা পায়ের শক্তি যেমন বাড়ায়, তেমনি উচ্চতা বৃদ্ধির হরমোনকে প্রভাবিত করে।
ঝোলা ব্যায়াম : এটা একটা রড বা কোনো কিছু ধরে ঝুলতে হবে। এ সময়ে পায়ের আঙুল মাটির দিকে রাখতে হবে। মুখ ওপরের দিকে রাখতে হবে।
এ ব্যায়াম উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটা হাত ও কাঁধ শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। পাকস্থলীকে শক্তিশালী করে।


Top
 

রোজাদারগণের নতুন মস্তিষ্ক কোষ তৈরি হয়


রোজার স্বাস্থ্য বেনিফিট বা উপকারিতা নিয়ে কারও কোন সন্দেহ নেই। বিজ্ঞানীরাও অনেক ক্ষেত্রে ভেবে পান না এমন কোন অদৃশ্য শক্তি কাজ করে যে, সারাদিন অভুক্ত থাকেন অথচ রোজাদারগণ কষ্ট পান না বরং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা থাকেন অথচ হাইপোগাইসেমিয়া হয় না। এটাও মহান সৃষ্টিকর্তার এক অপরিমেয় কুদরত।
এবার খোদ মার্কিন বিশেষজ্ঞগণ গবেষণায় দেখেছেন, রোজাদারগণের মস্তিষ্কে নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর নামক এক ধরনের মস্তিষ্ক উদ্দীপক বেড়ে যায়। আর এর ফলে নতুন ব্রেইন সেল বা মস্তিষ্ক কোষ উৎপাদন বাড়ে। অথচ বিজ্ঞানীরা সব সময় বলে আসছেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অন্যান্য কোষের মত মস্তিষ্ক কোষেরও ক্ষয় হয় এবং নতুন মস্তিষ্ক কোষ তৈরি হয় না। অথচ রোজাদারগণের পজিটিভ ও আধ্যাত্মিক চিন্তার কারণে মস্তিষ্ক কোষ নতুন করে তৈরি হয়। এটাও মহান আল্লাহতায়ালার এক অপরিমেয় কুদরত। আর যেহেতু রমজানে মস্তিষ্ক কোষের উৎপাদন বাড়ে সে কারণে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বাড়ে।
এছাড়া বিশেষজ্ঞগণ গবেষণায় আরও দেখেছেন, স্ট্রেস হরমোন নামে বহুল পরিচিত কার্টিসোল হরমোন যা এড্রিনাল গান্ড থেকে নি:সরিত হয়। রোজাদারগণের স্ট্রেস হরমোন রোজা থাকাকালীন এবং রোজার পরে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। তাই এ সময় মানসিক শান্তি থাকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ


Top
 

অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহারে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিতে অসংখ্য মানুষ


অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার করে অসংখ্য মানুষ দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সামান্য প্রয়োজনে কিংবা প্রয়োজন ছাড়াই চিকিৎসকের পরামর্শ এড়িয়ে নিজেরাই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে রোগী। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক অপব্যবহার হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, অনেক ডাক্তার রোগীর অনুরোধেও প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেন। কিন্তু অনেক রোগী তা নির্ধারিত সময় ধরে ব্যবহার করেন না। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকের ফুল কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
চিকিৎসকরা জানান, অ্যান্টিবায়োটিক হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ফাঙ্গাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া থেকে পাওয়া বা ল্যাবে সিনথেসিস করা এমন কিছু ওষুধ যেগুলো মানব শরীরের বিভিন্ন জীবাণু (সাধারণত ব্যাকটেরিয়া) ধ্বংস করে বা তাদের বিকাশ প্রতিহত করে দেয়। অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে অন্য ওষুধের তফাত হচ্ছে এগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিয়মিত খেতে হয়। যেমন অসুস্থতাভেদে অ্যান্টিবায়োটিক তিন থেকে পাঁচ দিন, সাত দিন বা ১৪ দিনও খেতে হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা পাওয়া যায় না। এমনকি তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব বয়ে আনতে পারে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ রোগী ও তাদের স্বজনরা নিজেদের সিদ্ধান্তে ফার্মেসি থেকে কিনে সেবন করেন। আবার অনেক সময় ডাক্তারকে প্রভাবিত করেও তারা এ ওষুধ লিখিয়ে নেন। বিশ্বের অনেক দেশেই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা হয় না। অথচ বাংলাদেশের অধিকাংশ ফার্মেসিতে সহজেই বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে অমানবিক প্রেসক্রিপশন দিই। অন্যদিকে রোগীরাও অ্যান্টিবায়োটিকের পূর্ণ কোর্স অনুসরণ করেন না। ফলে এর থেকে যথার্থ কার্যকারিতা পাওয়া যায় না। বরং অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষতিকর প্রভাব বহন করতে হয় রোগীকে।’ তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিউএইচও) এবারের ৬৮তম সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তিনটি চ্যালেঞ্জের বিষয় উল্লেখ করেছেন। জার্মানির গবেষণার নিরিখে তিনি ইবোলার মতো নতুন নতুন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় পুষ্টিহীনতার অসুখগুলো এবং অ্যান্টিবায়োটিকের রেজিস্ট্যান্স ঝুঁকির দিকগুলো তুলে ধরেন। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার শরীরে মারাৎদক ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আসতে পারে। এটা হয় প্রধানত অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজে অনিয়ম হলে কিংবা কোর্স সম্পূর্ণ না হলে। একটা জীবাণু শুধু তখনই রোগ সৃষ্টি করে যখন তা থেকে তৈরি কোনো ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যায়। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এ জীবাণুর সংখ্যা কমিয়ে ফেললে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিকর পদার্থের পরিমাণও কমে যায়। রোগী তখন নিজেকে সুস্থ ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু জীবাণু তখনো থাকে রোগীর শরীরে। পরিমাণে অল্প বলে কোনো উপসর্গ দেখাতে পারে না। এ জন্য জীবাণুকে নির্দিষ্ট ডোজ পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চাপের মধ্যে রাখতে হয় যাতে সর্বশেষ জীবাণুও বেঁচে না থাকে। চিকিৎসকদের মতে দেহকে যখন কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই নিজের মতো যুদ্ধ করতে দেওয়া হয়, তখন এটি সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা আবিষ্কারে পটু হয়ে ওঠে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ সংক্রমণ প্রতিরোধেও দেহের ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেক গুণ। অ্যান্টিবায়োটিক রোগপ্রতিরোধে কার্যকর কোষগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক বর্জন করে দেহকে তাদের শত্রু চিনতে দিলে পরে তারা নিজেরাই এগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, অ্যান্টিবায়োটিক আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থাকে কার্যকর করে তুললেও অ্যান্টিবায়োটিক-নির্ভরতায় বড় ক্ষতি হচ্ছে, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম-বেশি ওষুধ নিলে তা দেহের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ওষুধ প্রতিরোধী করে তোলে। জীবাণুর ক্ষতি করার ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। পরে সাধারণ ওষুধ আর কাজ করে না। এর পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিকের পাশ্র্বপ্রতিক্রিয়া তো রয়েছেই। এসব প্রেক্ষাপটে অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প খোঁজার তৎপরতা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, গত ৫০ বছরে বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটছে মূলত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যকৃৎ বা লিভার নিষ্ক্রিয়তার দায় পড়ে রোগ নিরাময়ের ওষুধের ওপর। গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি জার্নালে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় বলা হয়, প্রেসক্রাইব করা সব ওষুধই যকৃতের ক্ষতিসাধন করে। তবে তাদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক যকৃতের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। গবেষণায় আরও বলা হয়, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার শরীরে এন্ডোটক্সিন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এতে দেহের রোগপ্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে।
যারা অ্যান্টিবায়োটিক খুব কম সেবন করেন তাদের তুলনায় যারা দিনে ছয়টি বা ততোধিক অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করছেন তাদের সাধারণ ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি দেড় গুণ বেশি। সামান্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের জন্য পরিচিত রিস্ক ফ্যাক্টরগুলোর মধ্যে মেদ বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, ধূমপান ও অ্যালকোহল রয়েছে। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ক্যান্সার-এ প্রকাশ পাওয়া একটি গবেষণা অনুযায়ী, যারা দুই থেকে পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন নিয়েছেন তাদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।
শুধুমাত্র তুলসী পাতার ব্যবহারে সমাধান করুন ৬ ধরণের শারীরিক সমস্যা
(প্রয়.কম) সেই প্রাচীনকাল হতেই নানা শারীরিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহার হয়ে আসছে তুলসী পাতা। তুলসী পাতার ঔষধি গুণের কারণে এটি বহুকাল ধরেই সমাদৃত ঘরোয়া চিকিৎসায়। ছোটোখাটো নানা শারীরিক সমস্যা থেকে শুরু করে মারাত্মক দৈহিক সমস্যাও দূর করতে কার্যকরী এই তুলসী পাতা। আজ জেনে নিন শুধুমাত্র তুলসী পাতার ব্যবহারে নানা শারীরিক সমস্যা সমাধানের দারুণ উপায়গুলো।
১) গলাব্যথা ও সর্দি কাশি দূর করে
ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠাণ্ডা লেগে সর্দি কাশি হয়ে যায় এবং গলা ব্যথার সমস্যাও দেখা দেয়। এই সমস্যা দূর করবে শুধুমাত্র তুলসীপাতা। নিয়মিত তুলসী পাতার রস পান করলে ও তুলসী পাতা ফোটানো পানি দিয়ে গার্গল করলে দ্রুত সমস্যার সমাধান পাবেন।
২) মাথাব্যথা উপশম করে
অনেক সময় মানসিক চাপ, মাইগ্রেন বা অন্যান্য অনেক কারণেই মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। মাথাব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে শুকনো তুলসী পাতা পানিতে ফুটিয়ে এই পানির ভাপ নিন। খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
৩) দাঁতের সমস্যা দূর করে
দাঁতের জীবাণু দূর করতে তুলসী পাতার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের জুড়ি নেই। এছাড়াও মাড়ির ইনফেকশন জনিত সমস্যা দূর করে তুলসী পাতা। সমস্যা দূর করতে শুধুমাত্র তুলসী পাতা চিবিয়ে রস শুষে নিন।
৪) জ্বর নিরাময়ে
১ মুঠো তুলসী পাতা ২ কাপ পানিতে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করলে নানা ধরণের জ্বর যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এছাড়াও সাধারণ ঠাণ্ডা জ্বর হলে তুলসী পাতার চা তা দ্রুত নিরাময়ে সহায়তা করে।
৫) কিডনির সমস্যা দূরে রাখে
তুলসী পাতার রস দেহ থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করার ক্ষমতা রাখে। নিয়মিত তুলসী পাতার রস পান করলে কিডনির সমস্যা, কিডনি ড্যামেজ এমনকি কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।
৬) কানের ইনফেকশন দূর করে
অনেক সময় কানের বিভিন্ন কারণে কানের ইনফেকশনের সমস্যা দেখা দেয়। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করতে চান তাহলে কানে কয়েক ফোঁটা তুলসী পাতার রস ফেলে দিন। তুলসী পাতার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটোরি উপাদান কানের ইনফেকশন ও প্রদাহ দূর করবে।
মাত্র ৫ টি ছোট্ট অভ্যাস দূরে রাখবে ‘সাইনাসের সমস্যা’
সাইনাসের সমস্যা কতোটা যন্ত্রণাদায়ক তা ভুক্তভুগিরাই বুঝে থাকেন। বিশেষ করে এই বর্ষাকালের স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার কারণে সাইনাসের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথেই অনেক ঝামেলার মুখে পড়েন রোগীরা। বৃষ্টির পানি একটি মাথায় পড়লেই শুরু হয়ে যায় হাঁচি। এছাড়াও ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ ও আবহাওয়া তো রয়েছেই। কিন্তু এই যন্ত্রণাদায়ক সাইনাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার দারুণ কিছু উপায় রয়েছে। এই ছোট্ট কিছু অভ্যাস গড়ে নিতে পারলেই সাইনাসের প্রকোপ থেকে দূরে থাকতে পারবেন অনায়েসেই।
১) প্রতিদিন ১ চামচ করে মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। মধু হচ্ছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক। নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনার শ্বাসনালীর নানা সমস্যা দূরে রাখবে এবং সেই সাথে সাইনাসের সমস্যাও।
২) প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। দেহের ময়েসচার লেভেলের তারতম্য ঘটলেই সাইনাসের প্রকোপ বাড়া শুরু হয়। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পানীয় পান করুন। পুষ্টিকর ফল ও সবজির জুস পানের অভ্যাস রাখুন।
৩) চায়ের পরিবর্তে পান করুন দারুণ একটি পানীয় যা এই সাইনাসের প্রকোপ একেবারেই কমিয়ে দেবে। কুসুম থেকে মাঝারি গরম পানিতে ১ খণ্ড লেবু চিপে এতে মধু মিশিয়ে পানের অভ্যাস করুন প্রতিদিন। এছাড়াও গ্রিন টি পানের অভ্যাস করতে পারেন।
৪) সাইনাসের সমস্যার কারণে যদি আপনার নাক বন্ধ থাকে তাহলে একটি কাজ করুন। কুসুম গরম স্যালাইন নাক দিয়ে টানার অভ্যাস করুন। নাকের একপাশ দিয়ে টেনে অন্য পাশ দিয়ে বের করার চেষ্টা করুন। এতে করে জমে থাকা মিউকাস দূর হবে এবং প্রকোপ কমবে।
৫) পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম গ্রহন করুন এবং মানসিক চাপটাকে দূর রাখুন। অবাক হলেও সত্যি যে আপনার ঘুমের সমস্যা সাইনাসের সমস্যার সাথে জড়িত। সুতরাং ঘুম ও বিশ্রামকে অবহেলা নয় মোটেই।
কখন যাবেন ডাক্তারের কাছে
উপরের ৫ টি সমাধান সাধারণ সাইনাসের সমস্যাকে দূরে রাখতে বিশেষভাবে কার্যকরী। কিন্তু সাইনাসের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। নিচের লক্ষণগুলো দেখা মাত্র ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন-
১) নাক একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং কোনোভাবেই দূর না হওয়া
২) চোখের ভেতরের কর্নারে তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া
৩) কপালের মাঝ বরাবর তীব্র ব্যথা
৪) খুসখুসে গলা এবং নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ
৫) দিনে অস্বস্তি বাড়তে থাকা এবং রাত বাড়ার সাথে সাথে কাশি ও হাঁচি বাড়তে থাকা।
সূত্রঃ দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া
Top

 

 

আইন কনিকা


 

জিডি করতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি
অ্যাডভোকেট পলাশ কুমার রায়


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশিট হারিয়ে ফেলে দিশেহারা হয়ে পড়েন। আবার সার্টিফিকেট ও মার্কশিট সংগ্রহ করার জন্য তাকে থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করতে হবে এবং একটি পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশিষ্ট শাখায় যোগাযোগপূর্বক অবিকল সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে হবে। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন। কে বা কারা সাজ্জাদ হোসেনকে মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাঁদা না দিলে সাজ্জাদ হোসেনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। জাহিদুর রহমান আর সাজ্জাদ হোসেন উভয়ই কাছের থানায় জিডি করার জন্য যান কিন্তু ডিউটি অফিসার এবং অন্যরা তাদের কাছে জিডি করার বিনিময়ে ‘খরচাপাতি’ বাবদ জনপ্রতি পাঁচশ’ টাকা চায়। শেষমেশ টাকা দিয়েই তাদের জিডি করতে হয়। এসএম নুরুল হুদা এবং একে আজাদ জানান, নগদনারায়ণ দিয়ে ডিউটি অফিসারকে সন্তুষ্ট করতে না পারলে জিডি করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি যুগান্তরের একটি অনুসন্ধানী রিপোর্টে উলেখ করা হয়, অধিকাংশ জিডির তদন্ত হয় না। রাজধানীতে এক বছরের ৪ লাখ ৫৮ হাজার জিডির মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মাত্র এক-চতুর্থাংশের। ডিএমপি সদর দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মোট সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয় ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯১টি। তার মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ৮৫১টি জিডির ওপর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। এ সময় মোবাইল ও টেলিফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও চাঁদাবাজির ঘটনায় ১ হাজার ৩৯০টি জিডি হয়। পুলিশ বলছে এজন্য ২ হাজার ৪৯৫টি সিম বন্ধ করে দেয়া হয়। সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর থানাগুলোতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় হাজার জিডি এন্ট্রি হয়। এর মধ্যে ব্যস্ততম থানাগুলোতে কোনও কোনওদিন সাধারণ ডায়েরির সংখ্যা একশ’ ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশ পুলিশ প্রবিধানের (পিআরবি) ৩৭৭ ধারায় জিডি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে (ক) ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের ৪৪ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ এবং ১৫৫ ধারা মোতাবেক সব থানায় ডায়েরি রাখতে হবে পি ফরম ৬৫-এ যথাসময়ে এবং যথাযথভাবে ওই ডায়েরি লেখা হয়েছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। একমাত্র বাধাধরা অন্তর্ভুক্তি ব্যতীত তিনি সবকিছুই ডায়েরি করবেন। ডায়েরি কার্বন কপি দিয়ে দুই কপি লিখতে হবে। প্রত্যেক বইয়ে পৃষ্ঠা সংখ্যা থাকবে ২০০ এবং তা যথাযথভাবে নম্বর এবং তারিখযুক্ত হতে হবে। (খ) থানার পুলিশ কর্মকর্তার গোচরীভূত করা প্রত্যেক ঘটনার কথা। যেসময় তা জানানো হয়। সেসময় ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। (গ) সংক্ষিপ্ত অথচ সুস্পষ্টভাবে ডায়েরিতে সব অভিযোগ লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং বিচারের জন্য উপস্থাপিত অভিযোগ, বোধগম্য বা অবোধগম্য অপরাধ, অভিযোগকারীদের নাম, গ্রেফতারকৃত সব ব্যক্তির নাম, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকৃত অপরাধ, পুলিশ নিজের তত্ত্বাবধানে এনেছে এমন অস্ত্র বা সম্পত্তি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে এমন সাক্ষীর নাম। (ঘ) পলাতক ও নিরীক্ষণ করা হচ্ছে এমন ব্যক্তিদের সম্পর্কে তদন্তের বিষয় সংক্ষিপ্ত আকারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। ডায়েরি লিপিবদ্ধ করার তারিখ ও নম্বর রেজিস্টারেও লিপিবদ্ধ করতে হবে। (ঙ) বড় ধরনের আগুন লাগার ঘটনা, জলমগ্নতা, রেল বা অন্য বড় কোনও দুর্ঘটনা, কোনও মহামারী প্রকারের রোগের বিস্তার, দফাদার ও চৌকিদারদের উপস্থিতি ইত্যাদি অর্থাৎ সাধারণ প্রশাসন সম্পর্কিত বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যও ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। (চ) যখন কোনও ধন-সম্পদ বা বন্দির পুলিশ পাহারায় কোনও থানা বা ফাঁড়ি অতিক্রম করে ওই পুলিশ পাহারা সেই জেলার বা অন্য কোনও জেলার হোক না কেন, ঘটনাটি ডায়েরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুলিশ পাহারায় কমান্ড সার্টিফিকেট লিপিবদ্ধ করে তারিখ ও সময় উলেখ করতে হবে। পুলিশ পাহারার ক্ষেত্রে বন্দিদের যদি খাওয়ানো হয়, তা হলে তাদের কি খাবার দেয়া হয়েছে তাও ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। (ছ) ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করা সব অন্তর্ভুক্তির মার্জিনে যত কম কথায় সম্ভব একটি শিরোনাম দিতে হবে এবং মাসিক ভিত্তিতে তার ক্রমিক নং দিয়ে সেসময় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহি-স্বাক্ষর নিয়ে সত্যায়িত করতে হবে। (জ) ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বলে বিধি বা নির্দেশ মোতাবেক কোনও ঘটনা বিশেষভাবে রিপোর্ট করার জন্য পৃথকভাবে রিপোর্ট করার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যাবে না। (ঝ) পুলিশের প্রধান কর্তব্য হল জনগুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করা এবং কি পদ্ধতিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেই দায়িত্ব পালন করেছেন তা তার সাধারণ ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে। ডায়েরি সম্পূর্ণ করার জন্য কর্মকর্তাদের সচেষ্ট হতে হবে এবং তা হতে হবে যতদূর সম্ভব সংক্ষিপ্ত। (ঞ) ডায়েরি সম্পূর্ণ করতে হবে এবং তার একটি কপি ডাক প্রেরণের সময় যখনই হোক না কেন সেসময়ের এক ঘণ্টা আগে একটি কভারে সার্কেল সহকারী সুপারের ঠিকানা লিখে পাঠাতে হবে এবং তা হতে হবে গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংঘটিত সব ঘটনার বিবরণ। দিনের শুরুতে ডায়েরি আরম্ভ এবং দিনের শেষে তা শেষ হবে এমন কোনও কথা নেই। তবে সর্বশেষ অন্তর্ভুক্তির সময় এটা উলেখ করতে হবে যে গত ২৪ ঘণ্টার ঘটনা লিপিবদ্ধ করে ডায়েরি বন্ধ করা হল। (ট) প্রত্যেক ফাঁড়িতে ডায়েরি সংরক্ষণ করতে হবে এবং কার্বন কপিতে ডায়েরি লিখবেন ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নিয়মিত কার্যের অন্তর্ভুক্তি ছাড়াও ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে দৃষ্টিগোচর হওয়া সব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং সন্দেহযুক্ত চরিত্রের লোক, জুয়াড়ি, প্রতারক, বিদেশী বা ভ্রমণশীল গোত্রের সদস্যদের আগমন সম্পর্কিত তথ্য। অনুরূপ ফাঁড়িতে যেসব বিষয় রিপোর্ট করার জন্য পাঠানো হবে তাও রেকর্ডভুক্ত করতে হবে, তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু দেয়ার প্রয়োজন নেই।
বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই থানায় জিডি করতে যায় না। কিন্তু দুভার্গ্যজনক হলেও সত্যি যে, পুলিশ বাহিনীর কিছু দুর্নীতিপরায়ণ সদস্য থানায় জিডি করতে আসা জনসাধারণকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।
ঘরে বসে অনলাইনে রাজধানীর সব থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরিষেবা ৬ মার্চ ২০১০ থেকে চালু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। তবে খুব জরুরি নয় এবং তাৎক্ষণিক পুলিশ সহায়তার প্রয়োজন নেই, অনলাইনে এমন জিডি করার অনুরোধ করেছে পুলিশ। জানা যায়, ‘ও পুলিশ, ও বন্ধু আমার’ নামের একটি প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর থানাগুলোতে এ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে অনলাইনে সাত ধরনের জিডি নেয়া হবে। এগুলো হল পাসপোর্ট; সনদপত্র, পরিচয়পত্র, চেকবই বা গুরুত্বপূর্ণ দলিল হারানো; বখাটে, মাদকসেবী বা অপরাধীদের আড্ডা সংক্রান্ত তথ্য; ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তি যখন নিরাপদ স্থানে অবস্থান করবেন, জনশৃংখলা বিঘিœত হতে পারে এমন অবৈধ সমাবেশ; গৃহকর্মী, দারোয়ান, নৈশপ্রহরী নিয়োগ বা পালিয়ে যাওয়া; নতুন বা পুরনো ভাড়াটে সংক্রান্ত তথ্য এবং প্রবাসীদের সমস্যাসংক্রান্ত অভিযোগ। এসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পুলিশি সহায়তার প্রয়োজন হলে ফোনে অথবা সরাসরি থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার অনলাইনে জিডি সম্পর্কে বলেন, প্রথমদিকে এ ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে কিছু ত্র“টি হতে পারে। ধীরে ধীরে এসব সমস্যার সমাধান করা যাবে। নগরবাসীর অভিমত, কেবল ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ঘরে বসে অনলাইনে জিডি করার সুযোগ পাবেন; কেননা সাধারণ মানুষজনের ঘরে ঘরে এখনও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার খুব বেশি লক্ষণীয় নয়।
Top

সাধারণ ডায়েরি


জেনারেল ডায়েরি যা সংক্ষেপে জিডি নামে সর্বাধিক পরিচিত তা হল অপরাধ ও অন্যান্য সংবাদ বিষয়ক রেজিস্টার। পুলিশ অ্যাক্ট ১৮৬১ (১৮৬১ সনের ৫নং আইন) এর ৪৪ ধারা, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ও ১৫৫ ধারা এবং পুলিশ রেগুলেশন বেঙ্গল (পিআরবি) এর ৩৭৭ প্রবিধানে সাধারণ ডায়েরি বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি থানায় ও ফাঁড়িতে পি ফরম নং ৬৫-এ ২০০ পৃষ্ঠার একটি সাধারণ ডায়েরি থাকবে। এটি প্রত্যহ সকাল ৮টায় খুলে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার সংবাদ রেকর্ড করে পরের দিন সকাল ৮টায় যেহেতু খুলতে হবে সেহেতু এটি কার্যত বন্ধই হবে না অর্থাৎ এ ডায়েরি সার্বক্ষণিকভাবেই খোলা থাকবে। এ ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ হবে নালিশকারীদের নাম, ঠিকানা, ধৃত ব্যক্তির নাম, উদ্ধার করা অস্ত্রের বিবরণ, জব্দকৃত মালামালের বিবরণ, আসামি কোর্টে চালান দেয়ার তথ্য, এলাকার খাদ্যশস্যের মূল্য ও উৎপাদন, যাতায়াত ব্যবস্থা, পরিবেশ, মহামারীর সংবাদ, রাজনৈতিক অবস্থা, থানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগমন-প্রস্থান ইত্যাদি বিবরণ। মোটকথা, জেনারেল ডায়েরি হল একটি থানার চলমান চিত্ররূপ। জেনারেল ডায়েরিতে দিনের যাবতীয় কার্যক্রম ও সংবাদাদি লিপিবদ্ধ করা হলেও সাধারণ মানুষ বিভিন্ন কারণে বিশেষত কারও দ্বারা ভীতিপ্রাপ্ত হলে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে, কোন কিছু হারালে ইত্যাদি কারণে থানায় গিয়ে প্রায়ই জিডি করেন। কিন্তু এ জিডি সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা অত্যন্ত সাদামাটা। তাদের কাছে জিডি করার মানে হল কোন বিষয়ে থানা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করে রাখা। এমনকি অনেকে জিডি করে থানা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধও করেন যেন জিডির কথা কেউ না জানতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের জিডি করার একমাত্র উদ্দেশ্য হল পরে কোন কিছু ঘটলে যেন এর দ্বারা সুবিধা পাওয়া যায়। বিষয়টি এরকম যে, একজন সুস্থ মানুষ ভবিষ্যতে অসুস্থ হলে খেতে পারেন সে উদ্দেশ্যে অগ্রিম ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে রাখা। বাস্তবে থানায় জিডি করা হলে তা যদি কোন ধর্তব্য বা আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে হয় তবে থানা কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়ে অপরাধটি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেবেন। আর অপরাধটি অধর্তব্য প্রকৃতির হলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতের অনুমতি গ্রহণপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন। আর জিডির বিষয়টি প্রিভেনটিভ সেকশন এর হলে (যেমন ফৌঃ কাঃ বিঃ ১০৭ ধারা) সরাসরি আদালতে প্রসিকিউশন রিপোর্ট দাখিল করবেন। মোটকথা থানায় কোন বিষয়ে কারও পক্ষ হতে জিডি করা হলে বা অন্য যে কোন বিষয়ে কেউ কোন নালিশ নিয়ে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দেবেন অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে এর জন্য দায়ী হতে হবে।
জিডির গুরুত্বঃ আইনগত সহায়তা লাভের জন্য জিডি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেবল একটি জিডির ভিত্তিতেই একটি মামলার শুরু হতে পারে অথবা কোন অপরাধের আশংকা থেকে একটি জিডি করার পর সে অপরাধটি সংঘটিত হলে আদালতে ওই জিডি সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হয়ে থাকে। তাই জিডির আইনগত মূল্য অনেক। তবে থানায় জিডি করার পর জিডির নম্বরটি নিজের সংগ্রহে রাখতে হবে। প্রয়োজনে জিডির রিসিভ কপি রাখা যেতে পারে।

Top
 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 
   

                                                     Copy Right : 2001 BHRC  All rights reserved.