           
 
|
Cover January
2015
English Part
January 2015
Top
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
অনুসন্ধান রিপোর্ট
জানুয়ারী মাসে রাজনৈতিক
সহিংসতায় ৪২ জন নিহত আহতের সংখ্যা ২ সহস্রাধিক ॥ মোট
হত্যাকান্ড ৪২১ জন
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতা তথা অবরোধ এবং হরতালের
কারণে জানুয়ারি ২০১৫ মাসেই ৪২ জন মানুষের প্রাণহানীসহ
মোট ৪২১ জন হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক
সহিংসতার কারণে গত ১ মাসে আহতের সংখ্যা দুই সহস্রাধিক।
এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতির
চরম অবনতি। কমিশন এই হত্যাকান্ডের হার অধিকহারে বৃদ্ধি
পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জানুয়ারী মাসে গড়ে
প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে ১৪ জনের অধিক। আইন প্রয়োগকারী
সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের
কর্মীদের অবশ্যই আরো দায়িত্ববান হতে হবে। আইন
প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে
হত্যাকান্ড কমিয়ে শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায়।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক
রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে
অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের
শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরনের
ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব। বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার
শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক
পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের
ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে।
মানবাধিকার কমিশনের জরিপে দেখা যায়, ২০১৫ সালের
জানুয়ারী মাসে মোট হত্যাকান্ডের শিকার ৪২১ জন। এর মধ্যে
যৌতুকের কারণে হত্যা ৮ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা
৩২ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৫৬ জন, রাজনৈতিক কারণে
হত্যা ৪২ জন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে হত্যা ১০ জন,
বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ১ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৩
জন, অপহরণ হত্যা ৮ জন, গুপ্ত হত্যা ১২ জন, রহস্যজনক
মৃত্যু ৫৭ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহন দুর্ঘটনায়
মৃত্যু ১৬৯ জন, আত্মহত্যা ১৯ জন।
জানুয়ারী ২০১৫ মাসে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য
ঘটনার মধ্যে ধর্ষণের শিকার ২ জন, এসিড নিক্ষেপ ২ জন।।
Top
সন্ত্রাস প্রতিরোধে পুলিশকে সাহায্য
করুন
প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সমাজে শান্তি
পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সন্ত্রাস প্রতিরোধে দল মত নির্বিশেষে
পুলিশকে সহযোগিতা করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৫ এর
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহবান জানান। তিনি বলেন,
বিএনপি-জামায়াত চক্রের সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা
বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ও চলমান উন্নয়নে হুমকি হয়ে
দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে যথাযথভাবে কর্তব্য পালন করে
জনগণের আস্থা অর্জন করতেও পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ
দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হবে।
এখানে সহিংসতা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই।
তিনি বলেন, কেবল শান্তি বিদ্যমান থাকলে কোন দেশ
অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোলবোমা
হামলায় প্রতিদিন স্বজন হারানোর বেদনা ও আর্তনাদে
বাংলার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এমনকি ছোট শিশুরাও
তাদের হিংস তা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ধর্মীয় দিবস ও
বিশ্ব ইজতেমার সময়ও তাদের হরতাল-অবরোধ চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে
গত এক বছরে দেশ শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু
বিএনপি-জামায়াত কোন কারণ ছাড়াই এবারের নৃশংসতা শুরু
করেছে। তিনি এ দলগুলোকে তাদের হিংস তা বন্ধের আহ্বান
জানান।
২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে সহিংসতার ঘটনা
তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর নামে
পুলিশ বাহিনীর ১৭ জন সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর ২০ জন সদস্যকে তারা হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, শত বাধার মধ্যে অর্পিত দায়িত্ব দিন-রাত
পরিশ্রম করে আপনারা পালন করে যাচ্ছেন। সেজন্য আপনাদের
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন
সম্পন্ন করতে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করায়
পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন
প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ বাহিনীতে বিভিন্ন সংস্কারের কথা তুলে ধরে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের আধুনিকায়নে আমরা যে সব
প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলাম তার অধিকাংশই আমরা ইতোমধ্যে
বাস্তবায়ন করেছি। গত ছয় বছরে পুলিশে ৩১ হাজার ৭৪৪টি
নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আরো
৫০ হাজার পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পুলিশে বর্তমানে
গ্রেড-১ পদ রয়েছে দুটি। প্রয়োজনে আরো একটি গ্রেড-১ পদ
বাড়ানোর আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমানে কনস্টেবল হতে এসআই পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ঝুঁকি
ভাতা পর্যায়ক্রমে ‘সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের জন্য
বাস্তবায়নেরও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রবিরোধী
অপতৎপরতা রোধ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে
পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন
রয়েছে। বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য
প্রযুক্তিনির্ভর ও স্বয়ংসম্পূর্ণ এয়ারপোর্ট আর্মড
পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। থানা পুলিশি
সেবার সবচেয়ে কার্যকর ও দৃশ্যমান ইউনিটে জনবল বাড়ানোর
ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের
মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ও জ্যেষ্ঠ
পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম
এরশাদ, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ,
মন্ত্রীবর্গ, প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ, সেনাবাহিনীর শীর্ষ
কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সপ্তাহ-২০১৫ উপলক্ষে এ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের
সদস্যদের এক মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ
করেন।
এ উপলক্ষে তিনি ৮৬ পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবলকে ৪
বিভাগে পুলিশ পদক-২০১৪ প্রদান করেন।
এর মধ্যে ১০ জন পুলিশ পদক-বিপিএম (সাহসিকতা) ও ২০ জন
বিপিএম (সেবা) পদক এবং ১৬ জন পুলিশ সদস্য রাষ্ট্রপতি
পুলিশ পদক পিপিএম (সাহসিকতা) ও ৪০ জনকে পিপিএম (সেবা)
পদকে ভূষিত করা হয়। ৩ জনকে দেয়া হয় বিপিএম (সাহসিকতা)
(মরণোত্তর) পদক।
Top
কোকোর মরদেহের সামনে বাকরুদ্ধ খালেদা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অশ্র“সিক্ত অঝর নয়নে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে
শেষবিদায় জানালেন মা খালেদা জিয়া। ২৭ জানুয়ারি দুপুর
পৌনে তিনটায় কোকোর কফিন আলিফ মেডিকেল সার্ভিসের
এ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। এ সময় অফহোয়াইট রংয়ের শাড়ি
পরিহিত খালেদা জিয়া অঝর নয়নে কাঁদছিলেন। বোন সেলিনা
ইসলাম ও দুই ভাইয়ের বউ কানিজ ফাতেমা ও নাসরিন সাইদ তাকে
ধরে রাখেন।
এর আগে, আরাফাত রহমান কোকোর লাশ বিএনপি চেয়ারপারসনের
গুলশান কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে নিয়ে
আসা হয়। কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকোর কফিন
রাখা হয়। সেখানেই মা খালেদা জিয়া ছেলের মুখ শেষবারের
মতো দেখেন। কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার নিজ অফিস কক্ষ থেকে
তিনি সোয়া দুইটার দিকে নিচতলায় আসেন। সেখানে ছেলের
লাশের পাশে আধাঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি। পুরো সময়ই
খালেদা জিয়ার চোখ ছিল অশ্র“সজল। এর আগে, বিমানবন্দর
থেকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে করে
কোকোর লাশ গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দিকে নিয়ে
যাওয়া হয়।
চোখের সামনে মা ছেড়ে গেছেন, ভাই হারিয়েছেন, ভেঙে পড়েননি;
কিন্তু নিজের সন্তানের লাশ দেখে কষ্ট আর ধরে রাখতে
পারলেন না বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছোট
ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহের সামনে আসতেই বাকরুদ্ধ
হয়ে পড়লেন তিনি। শুধু তাকিয়ে থাকলেন আর অঝোরে কাঁদলেন।
‘মা-বাবার কাছে সন্তানের লাশ পৃথিবীর সবচেয়ে বড়
বোঝা’-গুলশানের কার্যালয়ে এখনকার পরিবেশ সেটিই বারবার
মনে করিয়ে দিল উপস্থিত সবাইকে।
স্বামী জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর শক্ত হাতে
দিকভ্রান্ত বিএনপির হাল ধরেন খালেদা জিয়া। একবার,
দুবার নয়, তিনবার দৃঢ় মনোবল নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছেন
তিনি। নিজের দল ও পরিবারের যেকোনো সংকটকালে ‘আপসহীন’
মনোভাব দেখিয়েছেন এই নেত্রী। কিন্তু এবার কষ্ট আর
চোখের পানির সঙ্গে আপস করতে হলো খালেদা জিয়াকে। ছেলের
লাশ সামনে নিয়ে দমুড়ে-মুষড়ে পড়েছেন তিনি। কী দিয়ে
সান্ত্বনা দেবেন নিজেকে, সেই ভাষা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন
চরম শোকে।
দুই ছেলে তারেক রহমান আর আরাফাত রহমান কোকো, দুজনই
প্রায় সাত বছরেরও বেশি সময় তার (খালেদা জিয়া) থেকে
অনেক দূরে প্রবাস জীবন পার করছিলেন। দূরে থাকলে
সান্ত্বনা ছিল ছেলেরা একসময় ফিরে আসবে তার কোলে। একজন
ফিরে এল ঠিকই, তবে মরদেহ হয়ে না-ফেরার দেশে চলে যাওয়ার
জন্য। শত চেষ্টা ও পরম মায়ের মমতা দিয়েও তাকে আগলে
রাখতে পারবেন না মা খালেদা জিয়া।
শনিবার ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর শোকে বিহ্বল হয়ে
যান তিনি। মঙ্গলবার বিমানবন্দর থেকে ছেলের লাশ
গুলশানের কার্যালয়ে আনার পর শরীরের শক্তি হারিয়ে ফেলেন
খালেদা জিয়া। আত্মীয়-স্বজন আর কাছের মানুষ কার্যালয়ের
দ্বিতীয় তলা থেকে তাকে এক প্রকার কাঁধে ভর করে নিয়ে
আসেন নিচে। সান্ত্বনা দিতে থাকেন একাধারে। খালেদা জিয়া
যখন নিচে আসেন, তখন তার পাশে ছিলেন ছেলের বউ শর্মিলা
রহমান, দুই নাতনি জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান, ভাই
শামীম এস্কান্দার, তার পরিবার ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন।
বাবা হারিয়ে ছোট দুই নাতি খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে ধরে
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
খালেদা জিয়ার আরেক ছেলে লন্ডনে থাকা তারেক রহমান ভাই
হারানোর বেদনায় কাতর ও শোকে মুহ্যমান। লন্ডন থেকে
মালয়েশিয়ায় ছুটে যেতে চেয়েছেন কিন্তু ভিসা না পাওয়ায়
তাকে থামতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের মুখখানা দেখা
হলো না তার।
গুলশানে কোকোর মরদেহের সামনে তাদের কান্নায় আশপাশের
পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। কাছের মানুষ হারানোর এক
নিষ্ঠুর হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে এখানে।
কান্নার শব্দে উপস্থিত নেতা-কর্মী, গণমাধ্যমের
কর্মীদের মনও কেঁদে ওঠে।
২০০৭ সালের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের পর দেশে একপ্রকার
নিঃসঙ্গ সময় কাটালেও দুই ছেলে বিদেশে আছেন এইটুকু
সান্ত্বনা ছিল খালেদা জিয়ার। কিন্তু গত শনিবার
মালয়েশিয়ায় ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের কোকোর আকস্মিক
অকাল প্রয়াণে এখন আরো নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন তিনি।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর
মরদেহ মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের এমএইচ-১০২ বিমানে
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকায় অবতরণ করে। কোকোর
মরদেহ গ্রহণ করেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আবদুল
মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী
কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক
বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। এ ছাড়া
বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী বিমানবন্দর এলাকায় উপস্থিত হন।
কোকোর লাশ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশান কার্যালয়ে
নেওয়া হয়। বিকেল ৪টার মধ্যে মরদেহের দ্বিতীয় জানাজার
জন্য জাতীয় মসজিদ রায়তুল মোকাররমে নেওয়া হবে। বাদ আসর
এই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে রোববার বাদ জোহর
মালয়েশিয়ার নিগারা জাতীয় মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত
হয়। জানাজা শেষে তার লাশ বনানীস্থ কবরস্থানে দাফন করার
কথা রয়েছে।
গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে
মালেয়শিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরাফাত
রহমান কোকো। তার মৃত্যুতে সোমবার থেকে তিন দিন বিএনপি
দেশব্যাপী শোক দিবস পালন করছে। এ উপলক্ষে দলটির সকল
কার্যালয়ে সোমবার থেকেই কালো পতাকা উত্তোলন ও
নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছে।
সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ৩
সেপ্টেম্বর সেনানিবাসের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে
গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি
পাওয়ার পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান তিনি। সঙ্গে
ছিলেন তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই মেয়ে জাফিয়া
রহমান ও জাহিয়া রহমান।
Top
প্রধান বিচারপতি হিসাবে এস কে সিনহার শপথ

নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস
কে সিনহা) শপথ গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
গতকাল শনিবার বঙ্গভবনের দরবার হলে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে
নতুন প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান। এস কে সিনহা
১৬ জানুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো.
মোজাম্মেল হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হলেন। মন্ত্রিপরিষদ
সচিব এম মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা
করেন।
শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সদ্যবিদায়ী প্রধান
বিচারপতি এম মোজাম্মেল হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ,
মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ,
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ,
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ, তিন বাহিনী প্রধানগণ
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
নতুন প্রধান বিচারপতি ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত
দায়িত্বে থাকবেন। তিনি ১২ জানুয়ারি দেশের ২১তম প্রধান
বিচারপতি হিসেবে এ পদে নিয়োগ পান। প্রয়াত ললিত মোহন
সিনহা ও ধনবতী সিনহার ছেলে এস কে সিনহা ১৯৫১ সালের ১
ফেব্র“য়ারি মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জ উপজেলায় রাণীরবাজার
গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ২৪ নভেম্বর
হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
২০০১ সালের ২৪ অক্টোবর তার চাকরি স্থায়ী হয়।
বিচারপতি সিনহা ২০০৯ সালের ১৬ জুলাই আপিল বিভাগে
উন্নীত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে সিলেট জেলা বার এসোসিয়েশনে
একজন আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে সেখানে দুই জন
বিশিষ্ট আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে কাজ করেন। এরপর তিনি
১৯৭৮ ও ১৯৯০ সালে যথাক্রমে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের
আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
এস কে সিনহা ১৯৯৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্তির
আগ পর্যন্ত উচ্চতর আদালতে প্রখ্যাত আইনজীবী এস আর
পালের তত্ত্বাবধানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির প্রতিনিধি হিসেবে ২০০২
সালে লক্ষৌতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের প্রধান বিচারপতিগণের
তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন। তিনি ২০০৬ সালে
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিগণের
বিচার প্রশিক্ষণ এবং ২০১০ সালে কোরিয়ায় বিচার বিভাগীয়
উন্নয়ন কর্মসূচিতে যোগ দেন।
মৌলভীবাজারে আনন্দ র্যালি :জেলার কৃতী সন্তান বিচারপতি
এস কে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করায় বিসঞপ্রিয়া
মনিপুরী সোসাইটির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি,
মিষ্টি বিতরণ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে
বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক
প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। পরে
প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মনিপুরী
সোসাইটির আহ্বায়ক সুজিত কুমার সিনহার সভাপত্বিতে
বক্তব্য রাখেন- সুস্মিতা সিনহা, প্রসন্ন কুমার সিনহা,
সুরনজিত সিংহ, নীলমনি সিনহা, প্রদীপ সিনহা, সাংবাদিক
নজরুল ইসলাম মুহিব প্রমুখ। সমাবেশ শেষে উপস্থিত সকলের
মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
কমলগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে আনুষ্ঠানিকতা :প্রধান বিচারপতি
হিসেবে এস কে সিনহার শপথগ্রহণের সময় গ্রামের বাড়িতে
আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান বিচারপতির শপথ
গ্রহণের ক্ষণকে ‘ঐতিহাসিক মঙ্গল ক্ষণ’ হিসেবে স্মরণীয়
করে রাখতে কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরী অধ্যূষিত তিলকপুর,
মাধবপুর, ঘোড়ামারা, গোলের হাওড় ও কালারায়বিল মন্দিরে
একযোগে মঙ্গলধ্বনি, শঙ্খধ্বনি ও রাজঘন্টা বাজানো হয়।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় আরতি ও প্রার্থনা। এতে সরকার,
দেশ ও জাতি এবং প্রধান বিচারপতি সিনহার জন্য প্রার্থনা
করা হয়।
Top
পরমাণু চুক্তিতে সই করলেন ওবামা- মোদি

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি পরমাণু চুক্তি সই
হয়েছে। আজ রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ চুক্তিতে সই
করেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি ও জি নিউজ-এর খবরে জানানো
হয়, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউস
গার্ডেনে ওবামা ও মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠক চলছে। এরই
মধ্যে এ দুই সরকারপ্রধান ২০০৮ বেসামরিক পরমাণু
সহযোগিতা চুক্তি (টু থাউজেন্ড এইট সিভিল নিউক্লিয়ার
কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) সই করেন। বেলা সোয়া তিনটার
দিকে হায়দরাবাদ হাউসে এ দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক
বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে
গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য তুলে ধরবেন এ দুই নেতা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে আজ
সকালে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত পৌঁছান বারাক
ওবামা। এই সফরে ওবামার সঙ্গে ফার্স্ট লেডি মিশেল
ওবামাও আছেন। এই সফরকে কেন্দ্র করে দিল্লিজুড়ে নেওয়া
হয়েছে অভূতপূর্ব নিরাপত্তা।
কাল সোমবার ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ওবামা। কোনো
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই প্রথম ভারতের প্রজাতন্ত্র
দিবসের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে থাকছেন।
Top
গরিব মারার অবরোধ
ঢাকা মহানগরীসহ বড় শহরগুলোতে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার
অর্ধেকেরও বেশি নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের বেশির ভাগই
‘দিন আনে দিন খায়’ বা দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
সপ্তাহে দুই বা তিন দিন হরতাল-অবরোধ থাকলেও তারা
পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন
করতে পারে। কিন্তু একনাগাড়ে ১১ দিন অবরোধ চলতে থাকায়
তাদের পক্ষে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য
হয়ে হরতাল-অবরোধের মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজের
খোঁজে যেতে হয় তাদের। কখনো কাজ জোটে, কখনো জোটে না।
কখনো অর্ধেক আয় হয়, কখনো তা-ও হয় না। উপরন্তু আগুনে
পুড়ে লাশ হতে হয় কিংবা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হতে হয়।
পরিবারের ওপর নেমে আসে সীমাহীন দুর্দশা। পরিসংখ্যানে
দেখা যায়, হরতাল-অবরোধের প্রথম ১০ দিনেই ২৪ জন নিহত
হয়েছে, তার মধ্যে ১৮ জনই শ্রমজীবী। গুরুতর আহত হয়েছে
প্রায় সাড়ে তিন শ মানুষ। সেখানেও অনুপাতটি একই রকম।
যাঁরা লাগাতার হরতাল-অবরোধ ঘোষণা করেছেন এবং করে
যাচ্ছেন, তাঁরা দয়া করে বলবেন কি- এই শ্রমজীবী
অতিদরিদ্র মানুষেরা এখন কী করবে ঘরে বসে না খেয়ে ধুঁকে
ধুঁকে মারা যাওয়া সন্তানের মৃতমুখ দেখবে, নাকি
সন্তানের মুখে অন্ন জোগানোর জন্য কাজের খোঁজে বের হয়ে
নিজে মারা যাবে আর কত দিন তাঁরা হরতাল-অবরোধের নামে
মানুষকে পুড়িয়ে মারার এই অমানবিক ও নিষ্ঠুর ‘রাজনৈতিক’
কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন
সাম্প্রতিক সময়ের রাজনীতির চেহারা-সুরত দেখে খুব কম
মানুষই এখন বিশ্বাস করে যে এ দেশে জনগণের স্বার্থে
রাজনীতি হয়। বরং সিংহভাগ মানুষই মনে করে, বর্তমান
রাজনীতির একটিই মাত্র লক্ষ্য আছে, আর তা হলো যেকোনো
উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং
রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে নিজেদের উদরপূর্তি করা। এসব
মেনে নিয়েই মানুষ কোনো রকমে নিজের মতো করে বেঁচে থাকতে
চায়। কিন্তু হরতাল-অবরোধ দিয়ে মানুষের বেঁচে থাকার সেই
অধিকারটিও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কেন হরতাল-অবরোধকে যাঁরা
গণতান্ত্রিক অধিকার বলছেন, তাঁরা দয়া করে বলবেন কি-
অন্যের অধিকার কেড়ে নিতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা,
পুড়িয়ে মানুষ মারাটা কোন ধরনের অধিকার গত ১০ দিনে দুই
শতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দেশে
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সরবরাহব্যবস্থা পুরোপুরি
ভেঙে পড়েছে। ফলে আয়-উপার্জন কমে যাওয়া মানুষের মাথায়
নতুন করে বাজ পড়ার মতো বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম
দ্রুত বেড়ে চলেছে। আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত
হওয়ায় দেশের শিল্প-বাণিজ্যে রীতিমতো ধস নেমে আসছে।
কিছু মানুষের ক্ষমতার লড়াইয়ে দেশবাসীকে আর কত মূল্য
দিতে হবে এবং কেন দিতে হবে
আন্দোলনের নামে সহিংস কর্মসূচি থেকে সরে আসুন। অন্যথায়
দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষ ঘুরে দাঁড়ালে তার জন্য
পরিণাম চিন্তাহীন রাজনীতিকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে।
সরকার যেন স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় না নেয়, হুঁশিয়ারী
জাতিসংঘের
বাংলাদেশে বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার
এবং আটকের ক্ষেত্রে সরকার যেন স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয়
না নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া কোনো পদক্ষেপে যেন
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন না ঘটে, সেজন্যে
সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশে অব্যাহত রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ
প্রকাশ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কড়া ভাষায় একটি
বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন বলেছে, বাংলাদেশের
দুই প্রধান রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণভাবে তাদের বিরোধ
মিটমাটে ব্যর্থ হওয়ার পর যেভাবে সহিংসতা বাড়ছে, তা
খুবই উদ্বেগজনক।
সব রাজনৈতিক দলের প্রতি সংযম প্রদর্শন এবং অবিলম্বে
সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানানো হয় এই বিবৃতিতে।
বিশেষ করে যেভাবে নির্বিচারে গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা
ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার
কমিশন।
মঙ্গলবার একটি গাড়িতে এরকম হামলায় এক শিশুসহ চারজন
পুড়ে মারা যাওয়া এবং বিএনপির এক উপদেষ্টার গাড়িতে
হামলার কথা উল্লেখ করা হয় এ প্রসঙ্গে।
বাংলাদেশের সর্বশেষ এই রাজনৈতিক সংঘাতের সময় যেসব
হত্যাকা- হয়েছে, তার সবগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি
করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার বা সরকারের বাইরে যারাই এসব
ঘটনার পেছনে থাক, আমরা চাই কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এ সবের
নিরপেক্ষ এবং কার্যকর তদন্তের উদ্যোগ নেবে।’
Top
রাতের বেলা মাছের মেলা

কুয়াশায় চারপাশ
ঢাকা পড়েছে সন্ধ্যা নামার আগেই। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে
কনকনে হাওয়ায় ভর করে বাড?ছে শীত। এমন হিমঝরা রাতে
লেপ-কাঁথার মধ্যে না ঢুকে চাদর-মাফলারে কান-মাথা মুড়ে
সবাই যাচ্ছেন নদীর পাড়ে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর
পাড?। গত সোমবার রাতে সেখানে বসেছিল মাছের মেলা।
বৈদ্যুতিক বাতি আর কুপির আলোয় ঝলমলে বড় বড় রুই-কাতলা
আর চিতল-বোয়ালের রুপালি শরীর। পাইকার আর খুচরা
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে শীতের রাতে সরগরম হয়ে
উঠেছিল কুশিয়ারার পাড়।
পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে কুশিয়ারা নদীর পশ্চিম পাড?ে
মাছের এই মেলা বসে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে। স্থানীয়
লোকজনের মতে, এই মেলা একসময় বসত মৌলভীবাজার সদর
উপজেলার মনুমুখে। পরে মনুমুখ বাজারটি নদীভাঙনের কবলে
পড?লে মেলাটি সরে যায় শেরপুর এলাকার হামরকোনায়। সেখান
থেকে পরে কুশিয়ারার পাড়ে। এখানে রাত গভীর হলেই শুরু হয়
বেচাকেনা। দূর-দূরান্ত থেকে মাছ নিয়ে যেমন বিক্রেতারা
আসেন, তেমনি আসেন পাইকারেরা ও খুচরা ক্রেতারা। একসঙ্গে
বড? আকারের বিভিন্ন জাতের এত মাছ দেখার সুযোগ হাতছাড়া
না করতে আসেন অনেক দর্শকও। তাঁরা ঘুরে ঘুরে মাছ দেখেন,
দাম জানতে চান।
মেলার মধ্যে ঢুকতেই চোখে পড?ে আড?তে আড?তে স্তূপ করা
ছোট-বড? নানা জাতের মাছ। মাছ কিনতে মৌলভীবাজার, সিলেট,
হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন
পাইকারেরা। একেকটি আড?তে মাছের বাক্স-পেটরা খোলা হয়,
আর দরদাম হাঁকা নিয়ে চলছে চিৎকার-চেঁচামেচি।
মেঘনা মৎস্য আড?তের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, মাছের
মেলা এ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্য। মেলাকে কেন্দ্র করে
এলাকাটি উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে
মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওর-নদীর
মাছ ছাড?াও খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী,
ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানের মাছ আসে। এক রাতে এখানে
দেড? থেকে দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়।
বেশ কিছু বড? মাছ নিয়ে বসে ছিলেন আবদুল কাইয়ুম। প্রায়
৩০ কেজি ওজনের আইড? মাছটির দাম জানতে চাইলে তিনি
হাঁকলেন ৭০ হাজার টাকা। পাশের প্রায় ১৭ কেজি ওজনের একটি
বোয়াল মাছের দাম চাইলেন ২৫ হাজার, ২৫ কেজির একটি
বাঘাড?ের দাম ৩৫ হাজার টাকা। মাছের এমন দাম শুনে
আশপাশের অনেকের চোখ ছানাবড?া অবস্থা দেখে জানালেন, এ
রকম দামের অনেক মাছ রাত ১২টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।
সকাল-সন্ধ্যা মাছের আড়তের ডালায় সাজানো দুটি বাঘাড?ের
একটির ওজন ৪৫ কেজি, অন্যটির ৩২ কেজি। বড়টির দাম জানতে
চাইলে আড়তের কর্মী নাসির আহমেদ দাম হাঁকলেন ১ লাখ ২০
হাজার টাকা। তাঁর আড়তে ৩০ কেজি ওজনের একটি বোয়ালও ছিল।
সেটির দাম চাইলেন ৬০ হাজার টাকা।
মৌলভীবাজার শহরতলির হিলালপুরের বাসিন্দা সালেহ এলাহী
বোয়াল, চিতল, কালবাউসসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় আট হাজার
টাকার মাছ কিনে থলে ভরে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার
ছেলেরা চিতল মাছ চেনে না। মেলায় বড? চিতল পেলাম, তাই
কিনেছি। কাঁটাঅলা মাছ। না খেলেও অন্তত চিনতে তো পারবে।’
Top
নতুন মার্কিন
রাষ্ট্রদূত ঢাকায়

বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত
হিসেবে দায়িত্ব নিতে মার্শিয়া বুম বার্নিকাট ঢাকায়
এসেছেন। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৫তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে
তিনি ড্যান মজীনার স্থলাভিষিক্ত হবেন।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মার্শিয়া বার্নিকাট থাই
এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে করে ঢাকার হজরত শাহজালাল
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরের
আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সরাসরি গুলশানে মার্কিন
রাষ্ট্রদূতের বাসায় চলে যান।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের হাতে পরিচয়পত্র তুলে
দেওয়ার পর বার্নিকাট আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন
রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা গতকাল
প্রথম আলোকে জানান, মার্শিয়া বার্নিকাট কয়েক সপ্তাহের
মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করবেন।
তাঁর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে ঢাকায় চীনের নতুন
রাষ্ট্রদূত ও কানাডার হাইকমিশনার পরিচয়পত্র তুলে
দেবেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্শিয়া বার্নিকাট ৬
জানুয়ারি ওয়াশিংটনে শপথ নিয়েছেন। চলমান রাজনৈতিক
অস্থিরতার মধ্যে ঢাকায় এলেন তিনি। গত বছরের ৫
জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে
বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য এখনো কাটেনি।
গত বছরের ২২ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে
মার্শিয়া বার্নিকাটকে মনোনীত করেন। ১৭ জুলাই মার্কিন
সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ‘নিঃসন্দেহাতীতভাবে
ত্রুটিপূর্ণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। পাশাপাশি
বাংলাদেশে আরও বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার নিশ্চিত
করতে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি সংলাপে বসারও
আহ্বান জানিয়েছিলেন। শুনানিতে তিনি বাংলাদেশের
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
জানিয়েছিলেন। মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পাওয়ার পর ১৭
নভেম্বর বারাক ওবামা তাঁর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন।
নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার পর মার্শিয়া বার্নিকাট তাঁর টুইট
অ্যাকাউন্টে বলেন, ‘আমি ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের
সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বাংলাদেশের
জনগণ, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার
অপেক্ষায় আছি।’ ।
Top
বারোমাসি কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন
রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা
দীর্ঘ প্রায় তিন বছর সফল গবেষণার পর বারোমাসি কাঁঠালের
একটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন। বারি কাঁঠাল-৩ নামে এ
জাতটি গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে
অবমুক্তি পেয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা নাকাপায় সারা বছর
ফল দেয়া একটি কাঁঠাল গাছের সন্ধান পাওয়ার পর রামগড়
পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা ২০১১ সাল
থেকে এ গাছটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণা কেন্দ্রের
প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ জুলফিকার আলী
ফিরোজের নেতৃত্বে গবেষক দলটি প্রায় তিন বছর গাছটির
সার্বিক তত্ত্বাবধান, পরিচর্যা ও জার্মপ্লাজম নির্বাচন
করে একটি নতুন জাত উদ্ভাবনে সফল হন। গত বছর এপ্রিল
মাসে নতুন উদ্ভাবিত বারমাসি কাঁঠালটি নতুন জাত হিসাবে
অবমুক্তির জন্য জাতীয় বীজ বোর্ডে আবেদন করার পর
সেপ্টেম্বরে বারি কাঁঠাল-৩ নামে অবমুক্তি পায় এটি।
রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ জুলফিকার আলী ফিরোজ
জানান, জার্মপ্লাজম নির্বাচিত কাঁঠাল গাছটির বৈশিষ্ট্য
হচ্ছে গত ২০ বছর ধরে গাছটিতে বছরব্যাপী অর্থাৎ
সেপ্টেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ফল দিচ্ছে। তিনি বলেন,
সফল গবেষণার পর এখন রামগড় গবেষণা কেন্দ্রে নার্সারিতে
নতুন উদ্ভাবিত বারমাসি কাঁঠালের চারা উৎপাদন করা
হচ্ছে।
Top
উদ্ভট বিচার!
নরওয়ের ২১ বছর বয়সী এক তরুণ মিথ্যা প্রতিশ্র“তি দিয়ে
চুক্তিভিত্তিক হত্যাকা-ের জন্য টাকা নিয়েছিলেন।
কিন্তু, তার ওপর আরোপিত দায়িত্ব পালন না করায় জরিমানা
করেছে দেশটির একটি আদালত। প্রতারণার অভিযোগে তাকে
১,৩০০ ডলার জরিমানা করে আদালত। এ খবর দিয়েছে বার্তা
সংস্থা রয়টার্স। ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে হত্যার জন্য
২১ বছর বয়সী অপর এক তরুণের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন ওই
তরুণ। টাকা নেয়ার পরও চুক্তিভিত্তিক হত্যাকা- ঘটানোর
কাজটি সম্পাদনের কোন ইচ্ছা অভিযুক্ত তরুণের মধ্যে
দেখতে পায়নি কর্তৃপক্ষ। তাই তার বিরুদ্ধে প্রতারণার
অভিযোগ আনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ওই তরুণ
তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে জরিমানা পরিশোধ
করেছেন। এদিকে চুক্তিভিত্তিক খুনের জন্য টাকা দেয়ার
অভিযোগে ২ বছর জেল দেয়া হয়েছে মূল পরিকল্পনাকারীকে। ২১
বছর বয়সী ওই তরুণ স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, ১৭ বছর বয়সী
এক কিশোরী তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়,
তিনি তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। স্বীকারোক্তি দেয়ায়
তার শাস্তি অনেকটা লাঘব করা হয়েছে বলে জানায়
কর্তৃপক্ষ। ওই কিশোরীকে খুন করার জন্য প্রায় ৮,০০০
ডলার দেয়ার কথা বললেও, জরিমানা দেয়া অপর তরুণের দাবি
৫,৩০০ ডলারের বেশি টাকা তাকে দেয়া হয়নি।
Top
অন্তঃসত্ত্বা জানার ১ ঘণ্টার মধ্যে ১০ পাউন্ডের সন্তান
প্রসব
অদ্ভুত এক ঘটনা ঘটে গেলো যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস
অঙ্গরাজ্যের সাউথ ওয়েইমাউথ শহরে। ২৩ বছর বয়সী
ক্যাথেরিন ক্রোপাস ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে তিনি
অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আর যখন জানলেন, তার ১ ঘণ্টা পরই
পৃথিবীর আলোর মুখ দেখলো ফুটফুটে এক নবজাতক। সদ্যোজাত
মেয়ে শিশুটির ওজন ১০ পাউন্ড। এ খবর দিয়েছে অনলাইন
ইউএসএ টুডে ও মিড-ডে। পিঠে তীব্র ব্যথা অনুভব করায়
সাউথ শোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়
ক্যাথেরিনকে। ব্যথার কারণ জানতে চিকিৎসকরা
স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করান। প্রথমদিকে, তেমন কোন সমস্যা
শনাক্ত করা যায়নি। তাই তারা আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা
করানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং রিপোর্ট দেখার সঙ্গে সঙ্গে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। সন্তান প্রসব করেন ক্যাথেরিন।
এ সময়টাতে তার পাশে ছিলেন তার ৪০ বছর বয়সী বয়ফ্রেন্ড
ড্যান কীফ। ক্যাথেরিনের ধারণা ছিল, তার ওজন কিছুটা
বেড়ে গেছে। এর বেশি কিছু নয়। তবে বিস্ময়ের ধাক্কা না
কাটতেই সদ্যোজাত সন্তানকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা
ক্যাথেরিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডক্টর জেনিফার অ্যাশটন
জানালেন, তার পেশাগত জীবনে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা তিনি
দেখেছেন। সাধারণত, স্থ’ূলকায় বা অতিরিক্ত ওজনের নারী
যারা নিজেদের শরীর সম্পর্কে ততোটা অবগত নন, তাদের
ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতে পারে। ক্যাথেরিনের ক্ষেত্রে
তেমনটাই ঘটেছে। এদিকে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে
না পারায়, পেটে থাকা সন্তানের সঠিক পরিচর্যা হয় না। না
জানার কারণে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। আর ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর
শিশুটি জটিল নানা শারীরিক সমস্যায় বা অপুষ্টিতে ভুগতে
পারে।
Top
মাদ্রাসায় হিন্দু ছাত্র, মুসলিম ছাত্র
সংঘে
দাঙ্গা-বিভেদ ভুলে সম্প্রীতির নয়া নজির গড়ল ভারত।
সাম্প্রদায়িক রাজনীতির রোষানলে দগ্ধ ভারতের মাটিতে
এবার বোনা হচ্ছে সম্প্রীতির বীজ। উত্তর প্রদেশের
রামপুরের একটি মাদ্রাসায় চলতি শিক্ষাবর্ষে যোগ দিয়েছে
১১ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী পড়ুয়া। আর অন্যদিকে
হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সঙ্গে সমার্থক রাষ্ট্রীয়
স্বয়ংসেবক সংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ইতিমধ্যেই
পঠন-পাঠনে রত অন্তত ১৪০ জন মুসলিম ছাত্র। জমিয়াতুল
আনসার নামে ওই মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ খালিদ আনসারি
জানিয়েছেন, মূলত উর্দু সংস্কৃতি ও সাহিত্যের প তি
ভালোবাসা থেকেই নিজের ছেলেদের মাদ্রাসায় পড়তে
পাঠিয়েছেন তাদের বাবা-মায়েরা।অন্যদিকে রাষ্ট্রীয়
স্বয়ংসেবক সংঘ নিয়ন্ত্রিত সরস্বতী বিদ্যা মন্দির
ইন্টার কলেজের বিভিন্ন শ্রেণীতে এখন পড়ে অন্তত ১৪০ জন
মুসলিম পড়–য়া।
৫ বছরের জন্য
রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ইংলাক

থাইল্যান্ডে ধান ক্রয়ে অধিকহারে
ভর্তুকি দেয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক
সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে আনীত অভিশংসন প্রস্তাব পাস
করেছে আইনসভা। সেইসাথে ইংলাককে রাজনীতি থেকে ৫ বছরের
জন্য নিষিদ্ধ করার পক্ষেও ভোট দেয় সেনাবাহিনী সমর্থিত
আইনসভার সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার পার্লামেন্টে
ভোটাভুটির মাধ্যমে পাস করা হয় প্রস্তাবটি। ইংলাক সরকার
বৈশ্বিক বাজারের চেয়ে অতি উচ্চমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে
ধান কেনার ফলে মজুদের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এতে করে
দেশের বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়ে, যা বিতর্কের সৃষ্টি
করে। এদিকে শুক্রবার সকালেই দেশটির এ্যাটর্নি জেনারেল
ঘোষণা দিয়েছেন, এ দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাবেক
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা আনা হবে। এতে
করে তার ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। এদিন সাবেক
প্রধানমন্ত্রীকে অভিশংসনের লক্ষ্যে ২১৯ জনের মধ্যে ১৯০
জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট প্রদান করেন। ১৮ জন
প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন, তবে বাকিরা ভোট প্রদান
থেকে বিরত থাকেন। ভোটাভুটির পুরো প্রক্রিয়াটি দেশটির
জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। গতবছর দেশটিতে
সামরিক অভ্যুত্থান ঘটলে মে মাসের দিকে আদালত ইংলাককে
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বহিষ্কার করে।
ওদিকে ইংলাকের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিপক্ষে তিনি
বলেছেন, তিনি যেহেতু সরকারে নেই, তাই তিনি অভিশংসিত
হতে পারেন না। অন্যদিকে তার সমর্থকরা দাবি করেছেন, এটি
হচ্ছে ইংলাককে রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার একটি
অপকৌশল।
Top
একই দম্পতির বিয়ে ৬৬ বার!
ইংল্যান্ডের অধিবাসী লিসা গ্যান্ট ও অ্যালেক্স পেলিং
দম্পতি বিয়ে করেছেন ৬৬ বার! আগামী ২৮ জানুয়ারি
নিউজিল্যান্ডে বসবে তাদের ৬৭তম বিয়ের আসর। পৃথিবীর
বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন রীতিতে তাদের এ বিয়ে
সম্পন্ন হয়েছে। এ দম্পতি জানান, যেদিন কোনো স্থান,
কোনো রীতি তাদের সত্যিকার অর্থেই পছন্দ হবে, সেদিনই
তারা এ বিবাহ অভিযানে ক্ষান্ত দেবেন। এরপরই হবে তাদের
পরিপূর্ণ মধুচন্দ্রিমা। বিচিত্র এ দম্পতি ইংল্যান্ডের
পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, হাওয়াই, মেক্সিকো, হন্ডুরাস,
আল সালভাদর, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা, পর্তুগাল,
ফ্রান্স, রোমানিয়া, সুইজারল্যান্ড ও পাকিস্তানসহ আরও
নানা দেশে তাদের বিয়ের আসর সাজিয়েছেন।
Top
কবরের পাশে
মনিবভক্ত উটের অনশন
এতদিন প্রভুভক্ত কুকুরের ত্যাগের কথা শোনা গেলেও এবার
নিরীহ প্রাণী উটও অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সাত দিন আগে প্রিয় মনিব মারা গেছেন। আলী আল নানা
নামেরও ওই লোককে কবরও দেয়া হয়েছে। কিন্তু উটটি কবরটি
ছেড়ে যাচ্ছে না। চেষ্টা করেও প্রভুভক্ত উটটিকে কবর
থেকে সরানো হলেও সে আবার ফিরে যায়।
ইয়েমেনের একটি গ্রামে এই ঘটনায় সবাই আশ্চর্য হয়ে গেছে।
সূত্র : গালফ নিউজ।
গ্রামটির অবস্থান ইব প্রদেশে, নাম সিদা।গ্রামবাসী
জানায়, উটটি গোরস্থানে লাশ নিয়ে যাওয়ার সময়ও সাথে ছিল।
গালফ নিউজকে গ্রামের বাসিন্দা আল ওয়াজিহ আলী বলেন, আল
নানার ছেলে চুরি হওয়ার ভয়ে উটটি বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন।
কিন্তু পরক্ষণেই সেটি আবার কবরে চলে যায়।
আলী জানান, উটটিকে প্রায়ই কবরটি শুকতে দেখা গেছে। এই
ঘটনা দেখে অনেকেই সেখানে ভিড় জমাচ্ছে। উটটি কিছু
খাচ্ছে না, পানিও পান করছে না।
আলী জানান, উপসাগরীয় এলাকার বেশ কয়েকজন ধনী ব্যক্তি
প্রভুভক্ত উটটি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
Top
অস্তিত্ব–সংকটে সাপপাখি
রাত ১২টার বাসে বন্য প্রাণী আলোকচিত্রী মারুফ রাসেলকে
নিয়ে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হলাম। ভোর চারটা নাগাদ
শ্রীমঙ্গল পৌঁছে হোটেলে একটু বিশ্রাম। ঘুম থেকে উঠে
নাশতা সেরেই সাড়ে সাতটায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চেপে
সোজা বাইক্কার বিলের পথে।
বিলের আশপাশে মাছের ঘেরের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই।
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যেখানে রঙিলা চ্যাগা ও জলমুরগির
ছবি তুলেছিলাম, সেখানে দেখি নতুন একটি ঘের তৈরির কাজ
চলছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। এ রকম হলে পাখিরা আসবে
কোথায় নয়টা নাগাদ বাইক্কার বিলে পৌঁছে গেলাম। পুরোটা
বিল যেন কুয়াশার চাদরে ঢাকা। রোদের কোনো লক্ষণই নেই।
পাখি আছে বেশ। তবে আলোর স্বল্পতার কারণে ছবি মোটেও
ভালো হচ্ছিল না।
কুয়াশা কেটে ছবি তোলার উপযোগী আলো ফুটতে বেলা একটা
পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। আলো ফোটার পর এক মিনিটও
নষ্ট করলাম না। নৌকায় চেপে পাখিগুলোর কিছুটা কাছাকাছি
যাওয়ার চেষ্টা করলাম। আট-দশ প্রজাতির হাঁস, সাত-আট
প্রজাতির বক, ইগল, পানকৌড়ি, পিপি, কালেম, জলমুরগি ও
অন্যান্য জলার পাখির মধ্যে যেন হারিয়ে গেলাম। প্রচুর
ছবি তোলা হলো। হোটেলে ফিরে রাতে ছবিগুলো ঘেঁটে দেখার
সময় একটি ছবিতে ‘আউট অব ফোকাস’ হয়ে যাওয়া একটি পাখির
ওপর চোখ আটকে গেল। ‘পেয়েছি, পেয়েছি, যাকে খুঁজছিলাম এত
দিন ধরে’ বলে চেঁচিয়ে উঠলাম। পাখিটাকে বাস্তবে দেখার
তর আর সইছিল না। কোনোরকমে রাতটা পার করলাম। পরদিন
লাউয়াছড়ায় যাওয়া বাতিল করে আবার ছুটলাম বাইক্কার বিলে।
পৌঁছেই টাওয়ার থেকে টেলিস্কোপে পাখিটার অবস্থান দেখে
নিলাম। এরপর নৌকায় চেপে পাখিটার কাছাকাছি গেলাম।
চমৎকার ভঙ্গিতে ডানা মেলে রোদ পোহাচ্ছিল সে। আশপাশে
আরও দু-তিনটি পাখির দেখা মিলল। প্রাণভরে বিরল
পাখিগুলোকে দেখতে লাগলাম।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে এ দেশের এক বিরল পাখি; নাম
গয়ার (উধৎঃবৎ বা ঙৎরবহঃধষ উধৎঃবৎ)। সাঁতার কাটার সময়
লম্বা গলা ও মাথা পানির ওপর এমনভাবে রাখে, যা দেখতে
সাপের মতো লাগে। তাই এ দেশে এরা সাপপাখি বা সাপগলা
নামেও পরিচিত। আনহিঙ্গিডি পরিবারভুক্ত জলচর পাখিটির
বৈজ্ঞানিক নাম
অহযরহমধ সবষধহড়মধংঃবৎ।
সাপগলা বড় আকারের পাখি-দৈর্ঘ্য ৯০ সেন্টিমিটার এবং ওজন
দেড় কেজি। একনজরে এটি কালো পাখি। মাথা, ঘাড় ও
কাঁধ-ঢাকনির ওপরের অংশ বাদামি। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি
দেখতে অভিন্ন। প্রজননকালে পুরুষ পাখির পিঠ কালো, গলা
সাদা এবং ঘাড় ও মাথা মখমল চকলেট-বাদামি দেখায়। ডানা ও
দেহের পেছনে রুপালি-ধূসর লম্বালম্বি দাগ। দেহের নিচটা
চকচকে কালো। ঠোঁট দুরঙা-ওপরেরটা কালচে-বাদামি,
নিচেরটা হলুদ। পা কালো। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ
কালচে-বাদামি, ঘাড়ে লম্বালম্বি রুপালি-ধূসর দাগ এবং
দেহের নিচটা ও লেজ বাদামি থাকে।
দেশের বড় বড় হাওর, বিল, নদী ও হ্রদে দেখা মেলে
সাপগলার। সচরাচর একা, জোড়ায় বা ছোট দলে থাকে। পানিতে
ডুব দিয়ে ছোরার মতো ঠোঁট দিয়ে মাছ শিকার করে।
‘চিগি-চিগি-চিগি’ স্বরে ডাকে। পানিতে পুঁতে রাখা
বাঁশে, গাছের শাখায় বা মাটিতে সুন্দর ভঙ্গিমায় ডানা
মেলে রোদ পোহায়।
জুন থেকে ডিসেম্বর এদের প্রজননকাল। পানির কাছে বড় কোনো
গাছের শাখায় শুকনো সরু ডালপালা দিয়ে বাসা বানায়।
স্ত্রী তাতে পাঁচ-ছয়টি সবুজাভ-নীল রঙের ডিম পাড়ে। ডিম
ফোটে ২৪-২৬ দিনে।
লম্বা গলার মাছখেকো সাপপাখি বর্তমানে এ দেশে
অস্তিত্ব-সংকটের মুখোমুখি। দিনে দিনে এদের সংখ্যা
কমছেই। বর্তমানে বিশ্বে এরা প্রায়-বিপদগ্রস্ত এবং
বাংলাদেশে সংকটাপন্ন বলে বিবেচিত।
Top
উত্ত্যক্তের সাজা
গাজীপুরের শ্রীপুরে রফিকুল ইসলাম খান (২৮) নামে এক
তরুণকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ
আদালত। গতকাল আদালতের বিচারক ও শ্রীপুর উপজেলা সহকারী
কমিশনার (ভূমি) শামীম রহমান এক স্কুলছাত্রীকে
উত্ত্যক্ত করার দায়ে এ দ দেন। রফিকুল ইসলাম শ্রীপুর
উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর (নোয়াগাঁও)
গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার
রাজেন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে
রফিকুল স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় রফিকুল ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাকে
তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
Top
মাটি থেকে
ওষুধ
মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও প্রাণ রক্ষায় ওষুধ প্রয়োজন।
প্রাচীনকালে গাছগাছড়া থেকেই ওষুধ তৈরি করা হতো।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ওষুধ তৈরিতে আসছে বৈপবিক পরিবর্তন।
এবার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মাটি থেকে তৈরি করা সম্ভব
মূল্যবান ওষুধ। যুক্তরাজ্যের রকফেলার ইউনিভার্সিটির
গবেষকরা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার মাটির নমুনা পরীক্ষা
করে এমন আশার কথাই শুনিয়েছেন। মাটিতে প্রাপ্ত নতুন
ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান তাদের এ গবেষণায় উৎসাহিত
করেছে। ইতিমধ্যে তারা পাঁচটি মহাদেশ থেকে ১৮৫ ধরনের
মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্রের
তীর ও তলদেশ, জঙ্গল এবং মরুভূমির মাটিও।
গবেষকরা এ জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন ¯’ানের মাটি পরীক্ষা
করে দেখতে চান। কারণ এ চেষ্টা তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন
সব ধরনের মাটির নমুনা তাদের হাতে থাকবে। তাই তারা
‘ড্রাগস ফ্রম ডার্ট’ নামে ওয়েবসাইট চালু করে প্রচার
চালাচ্ছেন। তারা প্রত্যেক দেশ থেকে মাটির নমুনা পাঠিয়ে
সহায়তা করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ
ছাড়া বিভিন্ন দেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এ কাজে
যুক্ত হতে বলা হয়।
গবেষক ড. শিন ব্র্যাডি বলেন, লাখ লাখ নমুনা আমরা
চাচ্ছি না। কয়েক হাজার নমুনা হলেই চলবে। তবে এমন
জায়গার মাটি প্রয়োজন, যেখানে প্রকৃতির স্পর্শ বেশি এবং
মানুষের পদচারণা পড়েনি। যেমনথ গুহা, দ্বীপ অথবা উষ্ণ
বসš- অঞ্চল। গবেষকরা জানান, এ পর্যš- প্রাপ্ত নমুনায়
বর্তমানে ওষুধে ব্যবহৃত উপাদানের চেয়ে ভালো কিছুর
সন্ধান মিলেছে। যেমনথ মেক্সিকো থেকে সংগৃহীত মাটিতে
এপোক্সামাইসিন জাতীয় উপাদানের অ¯ি-ত্ব রয়েছে, যা
ক্যান্সারের ওষুধ তৈরিতে কাজে লাগে।
Top
গাড়ি যখন
বাড়ি
পারিবারিক জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট একটি
বাসভূমি। যেখানে থাকবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও
নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। তাই মানুষ নিজের সাধ্যমতো
কুঁড়েঘর থেকে শুরু করে ইমারত তৈরি করে চালিয়ে যায়
জীবনসংসার। এর ব্যতিক্রমও দেখা যায়। কিছু মানুষ
লোকালয়ের দালানকোঠা ছেড়ে বনে-জঙ্গলে, পাহাড়ে ঘর-সংসার
পাতেন। তেমনই ব্যতিক্রমী দুটি পরিবার যারা তাদের সংসার
পেতেছেন বাড়িতে নয়, গাড়িতে। ড্যানিয়েল বন্ড এবং
স্ট্যাসি দম্পতি : যুক্তরাজ্যের ক্যান্টারবেরি শহরের
ড্যানিয়েল বন্ড এবং স্ট্যাসি দম্পতি তাদের ঘর-সংসার
পেতেছেন একটি গাড়ির ভেতর। বলা যায় মোবাইল ঘরে চলে
তাদের জীবন-সংসার। বন্ড দম্পত্তি গাড়িতে জীবনযাপন
শুধুই খেলার ছলে শুরু করেননি। কারণ ক্যান্টারবেরি শহরে
জমি ও বাড়ির মূল্য অনেক। এখানে একটি ফ্ল্যাটের মালিক
হতে খরচ পড়ে ১ লাখ পাউন্ড। বন্ড দম্পতির
ক্যান্টারবেরিতে কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার
মতো সামর্থ নেই। ড্যানিয়েল বন্ড পেশায় একজন গাড়ি
মেকানিক। তার আয় বড়জোর ভাড়া বাসায় থাকার মতো। কিন্তু
বন্ড ও তার স্ত্রী ভাড়া বাড়িতে থাকতে একবারে অনিচ্ছুক।
তারা বাড়ি কেনার জন্য লোন পেতে বিভিন্ন ব্যাংকের দারে
দারে ঘুরেছেন। কোনো ব্যাংক ড্যানিয়েলের আবেদনে সাড়া
দেয়নি। অবশেষে স্বামী-স্ত্রীর মাথায় এ অভিনব বুদ্ধিটি
চলে আসে। তারা বড় একটি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করেন।
প্রথমে ড্যানিয়েলের পরিবারের লোকজন তাদের এ
পরিকল্পনাকে উদ্ভট ও অবিবেচকের মতো কাজ মনে করেন এবং
এর ঘোর বিরোধিতা করেন। কিন্তু পরিবারের বাধা উপেক্ষা
করে তারা সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল,
এমন একটি গাড়ি কিনবেন যেটিতে চড়ে শহরময় ঘুরে বেড়াতে
পারবেন, প্রাত্যহিক জীবনের সব কাজ করতে পারবেন এবং
রাতে নিরাপদে ঘুমাতে পারবেন। ২০১১ সালের জুলাইয়ে তারা
৩ হাজার পাউন্ড দিয়ে অলিম্পিয়া ১৯৯১ মডেলের একটি দোতলা
বাস কেনেন। বাসটিকে বসবাসের উপযোগী অর্থাৎ বাড়ির আদলে
গড়ে তোলার জন্য আরও ৮ হাজার পাউন্ড খরচ করেন। বাসটির
ভেতরে রয়েছে দুইটি থাকার ঘর, রান্নাঘর, ড্রয়িংরুম,
পানির ট্যাংক, ড্রেসিংরুম। প্রায় ২২০ লিটার ধারণ
ক্ষমতার পানির ট্যাংক সংযুক্ত করেছেন তারা।
সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য গাড়িটিতে
উন্নতমানের জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছেন। রান্নাঘরে
চুলো, ফ্রিজ, ক্যাবিনেট, সিংক সবই রয়েছে। বাসটির ভেতরে
ঢোকার পর আগন্তুক একে বাড়ি বলেই ভুল করবেন বারবার।
আদর্শ একটি বাড়িতে যা যা থাকা প্রয়োজন তার সবই রয়েছে
এই বাসটিতে। আর সব বাড়ির মতোই ডেনিয়েল পরিবারের ঘর
নামক বাসটি খোলা আকাশের নিচেই অবস্থান করে। প্রয়োজনে
তারা পুরো বাড়িসহ দূরদুরান্তে বেড়াতে চলে
যান।হারমান-ক্যানডেলারিয়া দম্পতি : গাড়িতে জীবনযাপন
করছেন আরেক দম্পতি- হারমান ও ক্যানডেলারিয়া। একটি দুটি
নয়, গাড়িতে তারা কাটিয়ে দিয়েছেন ১৩টি বছর। তবে তাদের
গাড়িতে এ সংসার-জীবন বন্ড দম্পতিদের মতো অর্থাভাবের
কারণে নয়। হারমানের জন্ম সানফ্রান্সিকো আর
ক্যানডেলারিয়ার জন্ম আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্স-এ।
দুজনের দেখা সেই ছোটবেলাতে- যখন হারমান ১০ ও
ক্যানডেলারিয়া ৮ বছর বয়সে। তখন থেকে তাদের বন্ধুত্ব,
তারপর পরিণয়। তারা দুজনেই ভ্রমণ পিপাসু। ১৯৯৬ সালে
বিয়ে হয় তাদের। দুজনের মনে ইচ্ছে জাগে, তারা
বিশ্বভ্রমণে বের হবেন। ২০০০ সালে তারা বাড়ি ছেড়ে
যাযাবর হয়ে যান। শুরু করেন ভ্রমণ ও সংসার একসঙ্গেই।
মজার ব্যাপার হল ১৩ বছরের এই ভ্রাম্যমাণ সংসার-জীবনে
তাদের কোল জুড়ে আসে ৪টি সন্তান। বিভিন্ন দেশে তাদের
জন্ম হয়েছে। প্রথম সন্তান পাম্পা (১০) জন্ম নিয়েছে
নর্থ ক্যারোলিনাতে, তেহু (৭) আজেন্টিনাতে, পালমা (৪)
ভ্যানকুয়েভার দ্বীপে এবং তিন বছরের ওয়াল্লাবি জন্ম নেয়
অস্ট্রেলিয়াতে। এই পরিবার ১৩ বছরে ২ লাখ মাইল পথ পাড়ি
দিয়েছেন। ঘুরেছেন ৪০টির বেশি দেশ। আশ্চর্যের ব্যপার
হল, যে গাড়িটিতে এত দেশ তারা ঘুরে বেরিয়েছেন সেটি ৮৫
বছরের একটি পুরনো গাড়ি।
জনগণ ও সম্পদের নিরাপত্তা নেই
বাংলাদেশ গভীর অনিশ্চয়তার দেশে পরিণত হয়েছে। চলমান
রাজনৈতিক সংকটের কারণে এ অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। এ
পরিস্থিতির পেছনে অন্যতম কারণ দেশটির সংবিধানের পঞ্চদশ
সংশোধনী। গতকাল শুক্রবার এশিয়ান হিউম্যান রাইটস
কমিশনের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
মানবাধিকার কমিশনটি জানায়, বাংলাদেশের প্রতিবাদ সমাবেশ
পালনের স্থানগুলো বর্তমানে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। এমনকি
প্রতিবাদ কর্মসূচি না থাকলেও দেশটিতে জনগণের ও সম্পদের
নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ভেঙে পড়া সার্বিক
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এমন অবস্থায় রয়েছে যে,
সরকারপন্থী দল বা সরকারবিরোধী প্রতিবাদকারী বা বলতে
গেলে যে কেউই জনসম,ে সম্পদহানি আর মানুষকে আহত বা
হত্যা করতে পারে। আর সেটা কোনো ধরনের জবাবদিহি বা
বিচারের ভয় ছাড়াই। প্রায়ই এসব কর্মকা- চলাকালে আইন
প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে
স্রেফ প্রত্য করছে বা তারা হস্তক্ষেপ করলেও তার ফল
হচ্ছে জনগণ ও সম্পদের অধিক ক্ষতি।
Top
হিজড়াদের
প্রথম আশ্রয়কেন্দ্র
তুরস্কে হিজড়াদের জন্য প্রথমবারের মতো একটি
আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এর প্রতিষ্ঠাতা মিস আই
নিজেই একজন হিজড়া। তিনি জানিয়েছেন, মানুষের কাছ থেকে
জোগাড় করা অর্থ সাহায্য দিয়ে ইস্তাম্বুলে এই
আশ্রয়কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে। তিনি আরও জানান,
তুরস্কে হিজড়াদের অনেকেই যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে
বাধ্য হন। কারণ সেখানে হিজড়াদের ভাগ্যে প্রায়
ক্ষেত্রেই আর কোনো কাজ জোটে না। মিস আই তার নিজের
অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমি প্রথমে
পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু
পারিনি। পরে ভাবলাম সেফ হব সেটাও পারলাম না। সব
কিছুতেই বাধা। এখন এই আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে তিনি তার
মতো অন্যদের সহায়তা করতে চান।
বিয়েতে আগ্রহ হারাচ্ছে সৌদি নারীরা
ঢাকা: সৌদী আরবে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে এমন মেয়ের
সংখ্যা লাখ লাখ। ফলে ত্রিশোর্ধ এসব মেয়েদের নিয়ে
সমস্যায় পড়েছে সৌদি সরকার।
সম্প্রতি দেশের ‘ফ্যামেলি কেয়ার সোসাইটি’র প্রধান
মোহাম্মদ আল আবদুল কাদের এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি স্থানীয় ‘মক্কা’ পত্রিকাকে জানিয়েছেন, দেশে
ত্রিশোর্ধ অবিবাহিত নারীর সংখ্যা ১৫ লাখ। তবে সৌদি
আরবের অন্য সামাজিক সংগঠনগুলোর মতে দেশে অবিবাহিত
নারীদের সংখ্যা ২০ কোটির মত। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান
না করা হলে সমাজে নানা সমস্যা তৈরি হবে বল্ওে আশঙ্কা
করা হয়েছে। সৌদি আরবের স্বাবলম্বী নারীরা এখন বিয়ের
প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তারা বিয়ে করার চাইতে
নিজেদের কেরিয়ারকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। ফলে
দেশটিতে বিয়ে নিয়ে এ সঙ্কট শুরু হয়েছে।
দেশটিতে অবিবাহিত যুবকদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। মক্কা
ডেইলি বলছে, পর্যাপ্ত আয় না করতে পারার কারণে এসব
পুরুষরা বিয়ে করে পরিবার তৈরি করতে পারছেন না। সৌদি
সমাজে এখনও যৌতুক একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে বিবেচিত
হয়ে থাকে। সেখানে ছেলেপক্ষকেই যৌতুক দিতে হয।
এ সম্পর্কে এক সামাজিক নেতা বলেন,‘সৌতি আরবে প্রধান
সমস্যা হচ্ছে যৌতুক। এছাড়া এখানে বিয়ের আনুষঙ্গিক
ব্যয়ও অনেক বেশি। এসব সমস্যার কারণে যুবকরা বিয়ের জন্য
বিদেশি পাত্রী খুঁজে থাকেন।’ সৌদি আরর এবং উপসাগরীয়
দেশগুলোতে হাজার হাজর পুরুষ বিদেশি মেয়েদের বিয়ে করছে।
২০১০ সালে কুয়েত সরকার বিদেশি নারীদের বিয়ে করা ঠেকাতে
একটি কমিটি গঠন করেছিল। ওই কমিটি যুবকদের বিদেশি বিয়ে
ঠেকাতে কিছু বিধি নিষেধ চালু করেছিল। ২০০৭ সালে
বাহরাইন পার্লামেন্ট এই মর্মে নির্দেশ জারি করেছিল যে,
একজন পুরুষ যদি চার বিয়ে করেন তবে তার ?তিন স্ত্রীকে
অবশ্যই বাইরাইনের নাগরিক হতে হবে। অর্থাৎ একজন পুরুষ
একাধিক বিদেশি স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবেন না।
Top
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
দারিদ্র্য ও
বাল্যবিবাহে ঝরে পড়ছে বহু শিক্ষার্থী
টানা ৫ বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও
প্রাথমিক সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে বরিশাল
শিক্ষাবোর্ড সারাদেশে প্রথম স্থানে থাকলেও বিপুলসংখ্যক
শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত পরীক্ষায়
২৩ হাজার শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল বলে অনুসন্ধানে জানা
গেছে। এ সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল শিক্ষাবোর্ড ও
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা জানান, ঝরে পড়া
শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতকার্য
হতে পারেনি। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই
গ্রাম-গঞ্জের বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছিল। তাদের ঝরে পড়ার
ব্যাপারে শিক্ষকরা জানান, নির্বাচনী পরীক্ষায় পাস না
করার পাশাপাশি পারিবারিক অসচ্ছলতা ও দারিদ্য,
নদীভাঙ্গন, শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ,
অন্যত্র বদলী, শিশুশ্রম, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও
মেয়েদের বাল্যবিয়ে অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা
হয়েছে। দরিদ্র পরিবারের সিংহভাগ শিশুই স্কুলে ভর্তি হয়।
এদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গি পেরিয়ে যাওয়ার আগেই
স্কুল থেকে অধিকাংশই বিদায় হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম
শ্রেণি পাস করার আগে-পরে শিশুদের মধ্যে ছেলেরা
পারিবারিক অভাব- অনটন ও কন্যা শিশুরা ধর্মীয় অনুশাসনের
নামে সামাজিক ও কুসংস্কারের ফলে আর হাইস্কুলে ভর্তি হয়
না। যে সব শিশু ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর হাইস্কুলে
ভর্তি হয় তারা অষ্টম শ্রেণির আগেই স্কুল থেকে বিদায়
হওয়ার অন্যতম কারণ দরিদ্র শিশুরা পরিচর্যার অভাবে ভাল
পড়াশুনা করতে না পেরে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়। এ ছাড়া
পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে ছেলেশিশুরা পরিবারের আর্থিক
উপার্জনের জন্য নিজেরাই কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন। আর
কন্যাশিশুরা অষ্টম শ্রেণির গি পার হওয়ার আগেই বিয়ের
পিঁড়িতে বসেন। শহর অঞ্চলে ঝরে পড়ার সংখ্যা কম হলেও
কারণ প্রায় একই।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক আবুল বাশার
তালুকদার জানিয়েছেন, বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের অধীন ৬টি
জেলা থেকে ২০১৪ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট
পরীক্ষায় অংশ নিতে ১ লাখ ৭ হাজার ২৯ জন শিক্ষার্থী
নিবন্ধন করেছিল। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ
করেছে ৯৮ হাজার ৯৮২ জন। এদের মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী
ফরম পূরণ করেছে ৯৬ হাজার ৮১৭ এবং অনিয়িমিত ২ হাজার ১৬৫
জন। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাত্র ৯৬
হাজার ৪৬৮ পরীক্ষার্থী। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিবন্ধন
করার পর ১০ হাজার ২১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ
করেনি। আর পরীক্ষার ফরম পূরণ করার পরও ২ হাজার ৫১৪ জন
পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। বরিশাল
শিক্ষাবোর্ডে ২০১৪ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে
১২ হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলে ঐ কর্মকর্তা
জানান।
জেএসসি’র মত একই চিত্র প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীদের।
শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মাহবুব
এলাহী জানান-এ বছর বরিশাল বিভাগ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার
৫২১ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়
অংশগ্রহণের জন্য ডিআরভুক্ত হয়েছিল। এদের মধ্যে ১ লাখ
৬৯ হাজার ১৩ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। পাস করেছে ১
লাখ ৬৭ হাজার ৪৮ জন শিক্ষার্থী। প্রাথমিক সমাপনী
পরীক্ষার ডিআরভুক্ত হওয়ার পর থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ
পর্যন্ত ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজার ৫০৮ জন।
তবে যারা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর অকৃতকার্য
হয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ ঝরে পড়াদের তালিকায় যুক্ত হওয়ার
আশংকাই বেশি বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের
শিক্ষকরা। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তারা বলছেন, প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের সমাপনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর সে সব
শিক্ষার্থীদের আর খুব একটা বিদ্যালয়মুখী হতে দেখা যায়
না। অথচ এদের পড়াশুনার ব্যাপারে একটু যতœবান হলেই
তারাও অন্যদের মত ভাল ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম হতো বলে
তারা মনে করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ঝরে পড়া
শিক্ষার্থীদের পুনরায় বিদ্যালয়মুখী করতে তারা পরিবারের
সাথে আলাপ করলেও খুব সন্তোষজনক ফলাফল আসে না। কারো
পারিবারিক অসচ্ছলতা এবং কেউ কেউ সন্তানের পড়াশুনায় ভাল
ফলাফল না আসায় স্কুলের পরিবর্তে কর্মে নিয়োগে আগ্রহী
হয়ে পড়েন বেশি।
Top
প্রতিবন্ধী শিশুদের
বিনামূল্যে বিনোদন
প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নন। সাধারণ মানুষের মত
বাঁচার অধিকার তাদেরও রয়েছে। সমাজের আর দশটি শিশুর মত
প্রতিবন্ধী শিশুরও মন চায় ইট পাথরের গড়া এই নগরীর চার
দেয়ালে ঘেরা বন্দি জীবন থেকে বেরিয়ে বাইরের জগতের সাথে
মিশতে। মন চায় মাসব্যাপী চলা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
মেলার নির্মল বিনোদন উপভোগ করতে। সাধারণ শিশুর মত
তাদেরও মন চায় বাণিজ্য মেলার সাকিরা ফ্যান্টাসি ইমাজিং
ওয়ার্ল্ডের শিশুদের রাইডগুলোয় চড়ে সবার সাথে হই হুল্লা
আর আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠতে। মন চায় সাধারণ শিশুর
স্বজনদের মত তাতের স্বজনও যেন তার আনন্দ উপভোগ করবে আর
হাত নাড়ে তাকেও উৎসাহ দেবে যে, এগিয়ে যাও দুরন্ত সাহসে।
হ্যাঁ, প্রতিবন্ধী শিশুদের সকল বাধা পেরিয়ে সমাজের
আট-দশটি সাধারণ শিশুর মত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য
মেলায় নির্মল বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে। আর এটি
সম্ভব হচ্ছে বিনামূল্যে। প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনামূল্যে
বিনোদনের সকল রাইড এবং মেলা ঘুরে উপভোগ করার সুযোগ করে
দিয়েছে মেলার সাকিরা ফ্যান্টাসি ইমাজিং ওয়ার্ল্ড।
শিশুদের বিনোদনের এ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকার
মো:মাহাবুবুর রহমান পলাশ বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুরা
সমাজের বোঝা নন। তাদেরও মন চায় সমাজের সাধারণ শিশুর মত
হাসতে খেলতে। মন চায় বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখতে। তাই মেলা
উপলক্ষে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য রাইডগুলো বিনামূল্যে
উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি এসব শিশুদের
মেলায় নিয়ে আসতে চায় এমন কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের সাথে
যোগাযোগ করলে তাদের যাতায়াতের খরচও আমরা বহন করছি।
এছাড়া দুস্থ এবং অসহায় শিশুদের জন্যও এ সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও
‘গোবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশে’-এর
জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন
পুতুলের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে গত দুই বছর ধরে
প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এমন সুযোগ করে দিয়েছি। গত বছর
মেলায় এ কাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলাম।
মেলার পূর্বদিকে ইপিভির কাছাকাছি রয়েছে শিশু কিশোরদের
এ বিনোদনের ব্যবস্থা। এ জায়গাটিতে ঢুকলেই শুনতে পাওয়া
যায় শিশুদের হই-হুল্লোড়। কেনাকাটার ফাঁকে দর্শনার্থীরা
এখানে সময় কাটাচ্ছেন এবং উপভোগ করছেন বিভিন্ন ধরনের
রাইড। ট্রেন যাত্রা, টু-ইস্ট, নাগরদোলা, হেলিকপ্টার,
প্রাইভেট কার, ঘূর্ণিসহ মোট ২৫টি রাইড। ৩০ টাকায় উপভোগ
করা যাচ্ছে এক একটি রাইড। এসব রাইডের মধ্যে ট্রেন, টু-ইস্ট,
নাগরদোলা এবং থ্রি-ডি শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও মন
কেড়েছে।
বিনোদনের এ আয়োজনে শিশুদের পাশাপাশি মেতে উঠছেন
অভিভাবকরাও। যারা জীবনে কখনো থ্রি-ডি দেখেননি তারাও
দেখছেন থ্রি-ডি। একটি অন্ধকার রুমের মধ্যে ঢুকে দেখা
যাবে হঠাৎ একটি পাত্র থেকে বেরিয়ে আসা একটি বিষধর সাপ।
ছোবল মারতে শুরু করবে। বানর এক গাছ থেকে অন্য গাছে
লাফিয়ে আপেল ছুঁড়ে মারবে, মনে হবে সমুদ্রে ডুবে আছি,
এক ঝাঁক ইঁদুর দৌড়ে এসে লাফিয়ে পড়বে আপনার শরীরে। চশমা
পরে দেখছেন সবাই। ভিডিও চিত্রগুলো ভয়ঙ্কর মনে হলেও এই
ভয়ই দেয় দর্শনার্থীদের আনন্দ।
নাগরদোলার পাশেই রয়েছে চার বগির ছোট খেলনা ট্রেন।
টিকিট কেটে যখনই অভিভাবকরা শিশুদের ট্রেনে তুলে দেয়
তখনই তাদের চোখমুখ আনন্দে ভরে উঠে। দুই বাচ্চাকে নিয়ে
বিভিন্ন রাইডে তুলে নিজেও আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন
শ্যামলী থেকে আসা মীম। তিনি বলেন, বাচ্চাদের আনন্দ
দেখলে নিজেরই আনন্দ লাগে। এর পাশেই রয়েছে খেলনা ঘোড়া।
ঘোড়ার পিঠে চড়ে ৬ বছর বয়সী তপু অভিনয় করলো ঠিক একজন
ঘোড় সওয়ারের মত।
Top
বাল্যবিবাহ করতে এসে
শ্রীঘরে
বাল্যবিবাহ করতে আসায় বরকে এবং বরের সঙ্গে আসা বরের
বাবা, কনের বাবা ও মৌলভিকে কারাদ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ
আদালত। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার
আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মরিচবাড়ী গ্রামে এ
ঘটনা ঘটে।
কারাদ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বর খলিলুর রহমান, বরের বাবা
ইয়াছিন আলী, কনের বাবা শহীদ আলী ও বিয়ে পড়াতে আসা মৌলভি
রেজাউল করিম। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
জহুরুল ইসলাম তাঁদের এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ দিয়ে
কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আজ সোমবার সকালে তাঁদের
কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন,
‘উপজেলার ভেলাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রীর
(১৫) সঙ্গে একই উপজেলার দক্ষিণ গোবধা গ্রামের ইয়াছিন
আলীর ছেলে খলিলুর রহমানের বিয়ে ঠিক হয়। বিষয়টি শুনে
খোঁজখবর নিই। একপর্যায়ে রোববার রাতে বর খলিলুর রহমান
কনের বাড়িতে বিয়ে করতে গেলে সেখানেই তাঁকেসহ চারজনকে
আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বাল্যবিবাহ নিরোধ
আইনে কারাদ দেওয়া হয়।’
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
কারাগারে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা :
ধারণ ক্ষমতা ২৯০০০, বন্দি ৮০০০০
নতুন বন্দিতে ঠাসা দেশের কারাগারগুলো। যেন তিল ধারণের
জায়গা নেই। রাজনৈতিক ধরপাকড় আর গণগ্রেপ্তারে
কারাগারগুলোতে প্রতিদিনই নিত্যনতুন বন্দি আসছে। কিন্তু
বন্দির ভারে উপচে পড়ছে দেশের ৬৮টি কারাগারই।
কারাগারগুলোর ধারণ ক্ষমতা যেখানে ২৯ হাজার, সেখানে
বন্দি রয়েছে ৮০ হাজারেরও বেশি। মাত্রাতিরিক্ত বেশি
বন্দি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। দেশের
কারাগারগুলোতে বর্তমানে মাত্রাতিরিক্ত বন্দির কারণে
নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তীব্র শীতে কারা
অভ্যন্তরে বন্দিদের দুর্দশা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। রংপুর ও
রাজশাহী বিভাগের কারাগারগুলোতে সবচেয়ে বেশি
দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা। কারাবন্দিরা ঠা-াজনিত নানা
রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হলেও যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না। ফলে
কারা অভ্যন্তরে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী বন্দিরা জানান, কারাগারে নেয়ার পর প্রথম ২-৩
দিন ঘুমানোর কোন সুযোগ জুটে না। দুবেলা খাবারও পাওয়া
যায় না। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে
মিয়াসাবদের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করার পরই কিছুটা শান্তি
আসে। আর টাকা না দিতে পারলে কারারক্ষীরা খুবই নির্যাতন
করে। এর প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের পরিমাণ আরে বেড়ে যায়।
কারাগারে বন্দির সংখ্যা বেশির বিষয়টি স্বীকার করতে রাজি
নন কারা অধিদপ্তরের এক উপমহাপরিদর্শক। তিনি জানান,
অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এখন কারাগারে বন্দির সংখ্যা
কম।
বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারে ৬৬ হাজারের মতো বন্দি
রয়েছে। এসব বন্দি ব্যবস্থাপনায় তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে
না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অপরিকল্পিতভাবে
নির্মিত কারাগারে ভিআইপি বন্দিদের জন্য উপযুক্ত সেল
নেই। এর ওপর নিরাপত্তার অজুহাতে বন্দিদের এক কারাগার
থেকে অন্য কারাগারে ক্রমাগত স্থানান্তর করায় শারীরিক ও
মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অনেক রাজনৈতিক বন্দি।
স্থানাভাবে মহিলা বন্দিরাও নানা বিড়ম্বনা ভোগ করছেন।
বস্তুত, বর্তমানে সব কারাগারের পরিবেশই অত্যন্ত নাজুক
হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত বন্দির ঠাসাঠাসিতে স্বভাবতই সৃষ্টি
হয়েছে মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এ অবস্থায়
কারাবিধি অনুযায়ী বন্দিরা বিশেষত ভিআইপি বন্দি এবং
আদালত থেকে ডিভিশনপ্রাপ্তরা তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা
পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। কারা অধিদপ্তর সূত্রে
জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা
মাত্র ২ হাজার ৬৮২। কিন্তু সেখানে বন্দি রয়েছে পাঁচ
হাজার ৩৯২। অর্থাৎ ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি বাস করছে
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। বিষয়টি সম্পর্কে ঢাকা
কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী
মানবজমিনকে বলেন, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি থাকায়
কিছু তো সমস্যা হচ্ছেই। সেগুলো ম্যানেজ করেই রাখা হচ্ছে
বন্দিদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাসাধিককাল ধরে
সারা দেশে ধরপাকড় ও গ্রেপ্তারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায়
কারাগারে বন্দির সংখ্যাও বাড়ছে। তবে এ বন্দির বেশির
ভাগই বিরোধী দলের নেতাকর্মী। দেশের কারাগারগুলোর
নির্ধারিত সেলগুলোতে এখন বন্দিদের ঠাঁই হচ্ছে না। ফলে
বাধ্য হয়েই কারা কর্তৃপক্ষ কারাগারের ভেতরে বিভিন্ন
গোডাউন, বড় সেলের বারান্দা, এমনকি যেসব সেলের
বাথরুমগুলো বড় সেগুলোকেও সেল বানিয়ে বন্দি রাখার
ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এসবের মধ্যেই গাদাগাদি করে
থাকতে হচ্ছে বন্দিদের। আর ভারসাম্য রক্ষার্থে মাঝেমধ্যে
এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে বন্দি অদল-বদল করা হচ্ছে।
কারাগারগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত বন্দির কারণে যে কোন কারা
অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কারা
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ছোট-বড় ৬৮টি
কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং
দুটি হাইসিকিউরিটি সেল। ৫৫টি বিভিন্ন জেলা সদরে ছোট
কারাগার রয়েছে। এসব কারাগারে বর্তমানে রাজনৈতিক বন্দির
সংখ্যাই বেশি। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত কারাবন্দিদের অনুমোদিত
ধারণ ক্ষমতা যেখানে ৮৩ জনের, সেখানে বর্তমানে রয়েছে
৯৮৯। এখন প্রতিদিনিই ২০০ থেকে ৩০০ বন্দি কারাগারে
প্রবেশ করছে। কোন কোন দিন এর চেয়ে বেশিও হচ্ছে। কিন্তু
এভাবেই বন্দিদের জামিন হচ্ছে না। আর নির্বাচনের আগ
পর্যন্ত জামিন ছিল না বললেই চলে। গত কয়েক দিনে প্রায়
১২০০ রাজনৈতিক কর্মীকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা
দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার সন্ত্রাসীকে আটক করে
কারাগারে পাঠানো হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে
জানা গেছে, এ মুহূর্তে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে
জামিনে মুক্তি পাওয়া বন্দির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে খুবই
কম।
এ ছাড়া কারাগারের গেট থেকেই জামিনে মুক্তি পাওয়া বন্দি
গ্রেপ্তারের সংখ্যাও ইদানীং বেড়ে গেছে। বিএনপির
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ বছরে বিএনপির ২০
হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে
পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার পরিমাণও শ’ শ’। এ
ছাড়া অন্যান্য দলেরও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
হয়ে কারাগারে আছে। জামায়াতে ইসলামীর মতে, গত ৪ বছরে
দলের ২১ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। দেড়
হাজার মামলায় জামায়াতের ২ লাখেরও বেশি নেতাকর্মীকে
আসামি করা হয়। এদিকে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কাজে
লাগিয়ে লাগামহীন বাণিজ্যে নেমেছেন পুলিশ ও কারাগারের
কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী। জামিন পেলেও
রেহাই পাচ্ছেন না বন্দিরা।
পেন্ডিং মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে জামিন
পাওয়া আসামিদের কাছ থেকে তারা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে
নেয়া হচ্ছে। ফলে জামিনে মুক্তি পাওয়া বন্দিরা পেন্ডিং
মামলা আতঙ্কে ভুগছেন। কারাগারগুলোর সামনে পুলিশের
সিভিল টিমের দুর্নীতিবাজ সদস্যরা কারা কর্মচারীদের
সহযোগিতায় জামিনপ্রাপ্ত বন্দিদের আবার আটক করে সাজানো
পুরনো ভাঙচুর, আগুন, বিস্ফোরকদ্রব্যসহ নানা অভিযোগে
মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সিন্ডিকেটের দাবি
অনুযায়ী টাকা দিতে পারলে সে ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হচ্ছে
না। এক পরিসংখ্যান মতে, গত এক সপ্তাহেই দেশের বিভিন্ন
এলাকায় গ্রেপ্তার হয়েছেন কয়েক হাজার, বিএনপি ও
জামায়াতের নেতাকর্মী। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক শতাধিক। এ
সরকারের শাসনামলে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির আগে ও ২০১৫
সালের ৫ই জানুয়ারির পরে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার
বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ কারণে
কারাগারের ব্যবস্থাপনা সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
গ্রেপ্তারের হার বেড়ে যাওয়ায় এ সঙ্কট গুরুতর আকার ধারণ
করেছে।
Top
হত্যার দায়ে ছয়জনের যাবজ্জীবন
কারাদন্ড
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়া গ্রামের রবিউল
ইসলাম হত্যা মামলায় আদালত ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদ
দিয়েছেন। জেলা ও দায়রা জজ বিপ্লব গোস্বামী গতকাল
সোমবার এ রায় দেন।
আদালত সাজা পাওয়া ব্যক্তিদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা,
অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদে র আদেশ দিয়েছেন। সাজা
পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়া গ্রামের
আরিফ, টেইপুরের রুস্তম এবং দামুড়হুদা উপজেলার
ইব্রাহিমপুরের জালু, তুফান, বকুল ও রতন। তাঁরা সবাই
পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল, নিউ লাল পতাকা)
সদস্য। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় টেইপুরের জিনহারকে
(৪৫) বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৪
এপ্রিল মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা রবিউলকে গলা কেটে হত্যা
করে। রবিউলের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি পেশায় কৃষক
ছিলেন। ওই ঘটনার পর পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল,
নিউ লাল পতাকা) খুলনা বিভাগীয় সম্পাদক দিলীপ বিশ্বাস
পরিচয়ে এক ব্যক্তি মুঠোফোনে তাঁর পরিবারের কাছে হত্যার
দায় স্বীকার করেন। পরদিন বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে
রবিউলের গলাকাটা লাশ পায় পুলিশ।
ওই ঘটনায় নিহতের ভাই নজরুল ইসলাম ৫ এপ্রিল অজ্ঞাতপরিচয়
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। সদর
থানার এসআই সুভাষ সরকার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১২
অক্টোবর সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল
করেন।
গাজীপুরে পুলিশ কনস্টেবলকে কুপিয়েছে অবরোধকারীরা
গাজীপুর মহানগরের ভোগরা পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই মো.
সাব্বির হোসেন নামে এক কনস্টেবলকে কুপিয়েছে অবরোধকারীরা।
২১ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ডিউটি থেকে ফেরার পথে
তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
গাজীপুর সদর হাসপাত?ালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত
সিনিয়র ব্রাদার মো. হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সাব্বির হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে
ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে।
শরীরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে
পাঠানো হয়েছে।
জয়দেবপুর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) ফোউজিয়া
বেগম জানান, একজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর শুনেছি।
বিস্তারিত এখনো জানতে পারিনি।
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
ক্যান্সার রোগীদের
জন্য সুখবর
আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ৮০ বছরের নিচে যাদের বয়স,
ক্যান্সারে তাদের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে বলে
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। সাধারণত যেসব ক্যান্সারে
রোগীর মৃত্যু বেশি, ১৯৯৫ সালের পর সেগুলোতে মৃত্যু হার
এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে এবং তা ক্রমাগত কমছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, যে কোনো রোগীর ক্যান্সার আক্রাš-
হওয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত এবং চিকিৎসা শুরু করা
সম্ভব হলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ
দিয়েছেন, ৫০ থেকে ৫৬ বছর বয়সীদের প্রতিদিন অ্যাসপ্রিন
ট্যাবলেট সেবনের জন্য।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ফার্মাসি বিভাগের গবেষণা
নিবন্ধে বলা হয়, যদিও ক্যান্সার নিরাময়ে এখনও কোনো
‘ম্যাজিক বুলেট (ওষুধ) আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি, তবুও
শুরুতে রোগ শনাক্ত করা গেলে মৃত্যুহার নাটকীয়ভাবে কমিয়ে
আনা সম্ভব।
নিবন্ধের সহপ্রণেতা অধ্যাপক ডেভিড টেলর দ্য টাইমস
পত্রিকাকে বলেন, আমরা যদি সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করি
তা হলে বলা যায়, ক্যান্সারে শিশু ও কর্মজীবী মানুষের
মৃত্যু রোধের চেষ্টায় একদিন সাফল্য আসবেই।
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জ্যাক কিউজিক বলেন,
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত অ্যাসপ্রিন ট্যাবলেট
সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। তবে ধূমপান পরিহার এ
রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে একক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
একই সঙ্গে শারীরিক ¯’ূলতা কমানোও দরকার। তিনি বলেন, ৫০
থেকে ৬৫ বছর বয়সীরা ১০ বছর ধরে প্রতিদিন অ্যাসপ্রিন
সেবন করলে পুরুষের ক্ষেত্রে ক্যান্সার, স্ট্রোক এবং
হৃদরোগের ঝুঁকি প্রায় ৯ শতাংশ এবং নারীর ৭ শতাংশ কমিয়ে
আনা সম্ভব।
অধ্যাপক জ্যাক কিউজিক লন্ডনের কুইন মেরি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উলফসম ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ
মেডিসিন’-এর পরিচালক। তিনি বলেন, অ্যাসপ্রিন সেবন করলে
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্তহওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তবে
অনূর্ধ্ব ৭০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকির মাত্রা বেশ
কম। নিবন্ধের সহপ্রণেতা অধ্যাপক টেলর সার্বিক বিষয়
বিবেচনা করে বলেন, ক্যান্সার ‘কার্যকরভাবে নিরাময় অথবা
প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, মানুষের
জীবন-যাপন পদ্ধতি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
যেমন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
ডেইলি মেইল অনলাইল।
Top
ভিটামিন-ই গ্রহণের সুবিধা ও
অসুবিধা
আলোচিত ভিটামিনের নাম ভিটামিন-ই। অনেক খাদ্যে ভিটামিন-ই
পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে বলে শরীরে তার অভাব পরিলক্ষিত
হয় না। ভিটামিন-ই রাসায়নিক ক্রিয়া বা অক্সিডেশনকে
প্রতিহত করে, এ অক্সিডেশন শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
শরীরের স্নায়ু ও মাংসপেশির কাজ সঠিক করার জন্যও
ভিটামিন-ই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের কিছু কিছু ক্ষেত্রে
ভিটামিন-ই গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। এসব হচ্ছে-*
অন্ত্রের অসুখ * লিভার বা যকৃতের অসুখ * অগ্ন্যাশয়ের
অসুখ * অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাকস্থলী অপসারণ।যে শিশু
টিনের দুধ খায় তাদের ভিটামিন-ই এর ঘাটতি হতে পারে।
মূলত পলি স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ
করলে ভিটামিন-ই এর প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়।দাবি করা হয়
যে, ভিটামিন-ই ক্যান্সারের চিকিৎসায় এবং ব্রণ, বয়স বেড়ে
যাওয়া, চুলপড়া, মৌমাছির হুলের কামড়ের যন্ত্রণা,
ডায়াপার র্যাশ, বার্সাইটিস, পাকস্থলীর ঘা, হার্ট
অ্যাটাক, প্রসব যন্ত্রণা, কিছু রক্তের অসুখ, গর্ভপাত,
মাংসপেশির দুর্বলতা, দুর্বল অঙ্গস্থিতি, যৌন অক্ষমতা,
বন্ধ্যত্ব, মেনোপজ, রোদে পোড়া ত্বক এবং বায়ুদূষণের ফলে
ফুসফুসের ক্ষতি প্রভৃতি প্রতিরোধ করে। এসব দাবি
প্রমাণিত হয়নি। কিছু ক্যান্সারের চিকিৎসায় বর্তমানে
ভিটামিন-ই ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি কার্যকর কি না সে
ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।যে ব্যক্তির অসুখ থাকার ফলে
শরীরে ভিটামিন-ই শোষিত হতে পারে না, তাদের বেলায় এ
ঘাটতি দেখা যায়।বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিটামিন-ই বাজারে
পাওয়া যায়- * ক্যাপস্যুল * সিরাপ * ট্যাবলেট।খাবারের
গুরুত্ব : সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল সুষম এবং
বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার খাওয়া। আপনি যদি খাদ্য গ্রহণের
মাধ্যমে বিশেষ কোনো ভিটামিন বা মিনারেল পেতে চান তাহলে
চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে আপনার খাদ্য তালিকা তৈরি করে
নিন। আপনি যদি মনে করেন খাবারের মাধ্যমে আপনি পর্যাপ্ত
ভিটামিন বা মিনারেল পাচ্ছেন না তাহলে একটি পথ্যবিধি
মেনে চলুন।বিভিন্ন খাবারে ভিটামিন-ই পাওয়া যায়। তা
হচ্ছে-* উদ্ভিজ্জ তেল (কর্ন, কার্পাস তুলার বীজ,
সয়াবিন) * গমের ভ্রুণ * সমগ্র খাদ্যশস্য * সবুজ শাকসবজি
প্রভৃতি।খাবার রান্না করলে এবং সংরক্ষণ করে রাখলে
ভিটামিন-ই কিছুটা নষ্ট হয়। শুধু ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট
গ্রহণ করলে সেটি সুন্দর খাবারের বিকল্প হতে পারে না এবং
সেটি শরীরে শক্তিও উৎপন্ন করতে পারবে না। অন্যান্য
খাদ্যের উপস্থিতি ছাড়া ভিটামিনগুলো নিজেরা কাজ করতে
পারে না। শরীরে ভিটামিন-ই এর শোষণের জন্য কিছুটা
চর্বির প্রয়োজন হয়।ভিটামিন-ই পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনে,
যেমন- ডি-কিংবা ডিএল আলফা টকোফেরিল অ্যাসিটেট, ডি-কিংবা
ডিএল-আলফা টকোফেরল এবং ডি-কিংবা এল-আলফা টকোফেরিল এসিড
সাক্সিনেট।ভিটামিন-ই গ্রহণের আগে যে কথা মনে রাখতে হবে
আপনি যদি প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন-ই গ্রহণ করেন,
তাহলে লেবেলের লেখাগুলো ভালো করে পড়ে নেবেন এবং কোনো
ধরনের সতর্কতার উল্লেখ থাকলে সেটি মেনে চলবেন। কিছু
ক্ষেত্রে ভিটামিন-ই গ্রহণে সতর্ক হতে হবে-অ্যালার্জি :
ভিটামিন-ই গ্রহণের পর কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দেয় কিংবা
অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই
চিকিৎসককে জানাতে হবে।গর্ভাবস্থা : এটি গুরুত্বপূর্ণ,
যখন আপনি গর্ভবতী হচ্ছেন তখন পর্যাপ্ত ভিটামিন গ্রহণ
করছেন। তবে আপনাকে দেখতে হবে গর্ভাবস্থার পুরো সময়টা
আপনি সঠিক মাত্রায় ভিটামিন গ্রহণ করছেন কি না, কেননা
ভ্রুণের বিকাশ এবং বৃদ্ধি নির্ভর করে মায়ের সঠিক পুষ্টি
গ্রহণের ওপর। গর্ভাবস্থায় বেশি মাত্রায় ভিটামিন গ্রহণ
করলে ক্ষতি হতে পারে, তাই বেশি মাত্রায় ভিটামিন গ্রহণ
করবেন না।বুকের দুধ : শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য
স্তনদানরত মহিলার সঠিকমাত্রায় ভিটামিন গ্রহণ
গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে
থাকেন তা হলে মাঝে মধ্যে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ
করবেন। এ ক্ষেত্রে শিশুকে অন্য উপায়ে ভিটামিন দেয়ার
প্রয়োজন হতে পারে। তবে আপনি যদি বুকের দুধ খাওয়ানোকালে
অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন গ্রহণ করেন তাহলে আপনার
নিজের জন্য এবং শিশুর জন্য সেটি ক্ষতিকর হবে।শিশু :
দৈনন্দিন সুপারিশকৃত মাত্রা গ্রহণের ফলে শিশুর
অসুবিধার কথা জানা যায়নি। শিশু বুকের দুধ খেলে তাকে
সঠিক মাত্রায় ভিটামিন দেয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ
নিন। গবেষণায় দেখা গেছে নির্দিষ্ট সময়ের আগে
জন্মগ্রহণকারী শিশুর শরীরে ভিটামিন-ই এর মাত্রা কম থাকে।
আপনার চিকিৎসক এ ব্যাপারে ভিটামিন-ই এর মাত্রা
নির্ধারণ করে দেবেন।প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ :
দৈনন্দিন সুপারিশকৃত মাত্রা গ্রহণের ফলে প্রাপ্তবয়স্ক
নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধার কথা জানা যায়নি।অন্য
ওষুধ গ্রহণ : আপনি যদি ভিটামিন-ই গ্রহণের সময় অন্য কোনো
ওষুধ খেতে থাকেন তা হলে অবশ্যই চিকিৎসককে জানাবেন।
কারণ অনেক ক্ষেত্রে দুটি ওষুধের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ঘটতে
পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করতে
পারেন কিংবা অন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে বলতে পারেন।অন্যান্য
চিকিৎসাগত সমস্যা : অন্য কোনো চিকিৎসাগত সমস্যা
উপস্থিত থাকলে ভিটামিন-ই গ্রহণের ফলে অবস্থা খারাপ হতে
পারে। আপনার অন্য কোনো চিকিৎসাগত সমস্যা আছে কি না সেটি
চিকিৎসককে অবশ্যই জানাবেন, বিশেষ করে আপনার যদি
রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা থাকে।আপনি কি পর্যাপ্ত ভিটামিন-ই
গ্রহণ করছেনভিটামিন-ই শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনীয়
ভিটামিন। গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন-ই গ্রহণ করলে
হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, চোখের ছানি,
মাংসপেশির ব্যথা, ঠা া লাগা ও আন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি
কমে যায়। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন-ই গ্রহণে
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। আপনি পর্যাপ্ত
ভিটামিন-ই পাওয়ার জন্য নিচের পরামর্শ গ্রহণ
করুন-ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার খান : বাদাম, খাদ্যশস্য,
ভুট্টার ভ্রুণ এবং গাঢ় সবুজ শাকসবজি ভিটামিন-ই এর
চমৎকার উৎস। আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এসব খাবার
রাখুন।ভিটামিন-ই সাপ্লিমেন্ট খান : খাদ্য থেকে ১০০-৪০০
আইইউ ভিটামিন-ই পাওয়া সম্ভব হয় না। ভিটামিন-ই এর
অন্যতম ভালো উৎস জলপাই তেল। অথচ প্রতি চা চামচ জলপাই
তেলে থাকে প্রায় ১.৭৪ আইইউ ভিটামিন-ই। তার মানে দৈনিক
১০০ আইইউ ভিটামিন-ই পেতে আপনাকে দৈনিক খেতে হবে ৩ কাপ
জলপাই তেল। সুতরাং পর্যাপ্ত ভিটামিন-ই পেতে খাবারের
পাশাপাশি আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ভিটামিন-ই
সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।ভিটামিন-ই এর
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : শরীরে ভিটামিন-ই এর যদিও
প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তবু সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে কিছু
অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। অল্প সময়ের
জন্য অনুমোদিত মাত্রায় ভিটামিন-ই গ্রহণ করলে সাধারণত
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। যদি ভিটামিন-ই গ্রহণের ফলে
আপনার কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে
অতি শিগগিরই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।দৈনিক ৪০০
ইউনিটের বেশি এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ভিটামিন-ই গ্রহণ
করলে নিুলিখিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটে-* চোখে ঝাপসা
দেখা * ডায়রিয়া * মাথাঘোরা * মাথাব্যথা * বমিবমি ভাব *
পেট কামড়ানো * অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা দুর্বলতা।
Top
ঝাল লাগে কেন
উপাদেয় রোস্ট কিংবা এক টুকরো ফলে কামড় বসালে মুহূর্তেই
আমরা জিহ্বায় একধরনের স্বাদ অনুভব করি। খুব অল্প সময়ের
মধ্যেই খাবারের স্বাদ বুঝতে পারলেও ব্যাপারটি কিন্তু
মোটেও সহজ নয়। এর মধ্যেই ঘটে যায় অনেক কিছু। মুখে
খাবার দেওয়ামাত্রই জিহ্বার স্বাদকুঁড়িগুলো সক্রিয় হয়ে
ওঠে। সেগুলো স্নায়ুর মধ্য দিয়ে ব্রেনে একধরনের সংকেত
পাঠায়, যার ফলে আমরা স্বাদ বুঝতে পারি। শুধু তাই নয়,
তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, রাসায়নিক পদার্থের ওপর স্বাদ
নির্ভর করে। বিজ্ঞানীদের মতে, জিহ্বা সাধারণত পাঁচ
ধরনের মৌলিক স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। এগুলো হলোথ মিষ্টি,
নোনতা, টক, তেতো ও উমামি। উমামি হলো মাংস এবং মাশরুম
থেকে পাওয়া যায় এমন ধরনের স্বাদ।
অন্য স্বাদের বেলায় আর যাই হোক, ঝালের ক্ষেত্রে আমাদের
জিহ্বা হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠে কেন গবেষকরা এর জন্য
সানসুল নামক একধরনের উপাদানের কথা বলছেন। এ জটিল
রাসায়নিক উপাদান মরিচের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকে। আর
জিহ্বায় স্পর্শ লাগামাত্রই বেদনাদায়ক ঝালের অনুভূতি
জাগায়। এ গরম অনুভূতি সরাসরি ম¯ি-ষ্কে পৌছায়। ফলে অনেক
সময় মনে হয় ঠোঁট ও মুখ বেশ গরম হয়ে গেছে। সানশুল হলো
এমন একধরনের উপাদান যা অনুভূতিকে ধোঁকা দেয়। মরিচের
ক্যাপসাইসিন নামের উপাদানও এক্ষেত্রে দায়ী। সাধারণত
জিহ্বার তাপমাত্রা যখন ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে,
তখন ঝালের অনুভূতি বোঝাতে স্বাদকুঁড়িগুলো সক্রিয় হয়ে
থাকে। আর বলতে চায়, মুখে যা দেওয়া হয়েছে তার স্বাদ ভালো
নয়। অবশ্য ঝালের অনুভূতি জিহ্বার জন্য সুখকর না হলেও
এটি চামড়ার কোনো ক্ষতি সাধন করে না।
Top
ধনেপাতা
অতিরিক্ত ব্যবহার বিপদজনক!
নিত্যদিনের বিভিন্ন খাবারে ধনেপাতা ব্যবহার করে থাকেন
খাবারের গন্ধ এবং স্বাদে একটা পরিবর্তন আনার জন্য।
ধনেপাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল কোরিয়ানড্রাম স্যাটিভাম।
কিন্তু কখনও কি কল্পনা করেছেন যে এই সুস্বাদু খাবারটির
কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে?
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি কথা হল, এই সুপরিচিত সবুজ
সবজিটির অনেক ঔষধি গুণাগুণের পাশাপাশি অনেক
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিদ্যমান। যা নিয়মিত খেলে আমাদের
শরীর দিনদিন অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
লিভারের ক্ষতিসাধন
অতিরিক্ত ধনেপাতা খেলে এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে
খারাপভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের
উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত
করে ফেলে। এছাড়া এটাতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা
দূর করে কিন্তু দেহের মাঝে এর অতিরিক্ত মাত্রার
উপস্থিতি লিভারের ক্ষতিসাধন করে।
নিম্ন রক্তচাপ
অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়ার ফলে দেহের হৃৎপিন্ডের
স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলে, যার ফলে নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি
করে। বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা
খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই এটি অতিরিক্ত খাওয়ার
ফলে নিম্ন রক্তচাপের উদ্ভব ঘটতে পারে। এছাড়া এটি হালকা
মাথাব্যথারও উদ্রেক করতে পারে।
পেট খারাপ
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক
সমস্যা দূর করে থাকে কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন
পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। একটি
গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ এমএল ধনেপাতা
আহারে গ্যাসের ব্যথা ওঠা, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে ওঠা,
বমি হওয়া হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা যায়।
ডায়রিয়া
ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি
পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়া
এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে থাকে। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যাটি
হতেই থাকে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের
খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে ব্যবহার করুন।
নিঃশ্বাসের সমস্যা
আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে এই ধনেপাতা
আহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি আপনার শ্বাস
প্রশ্বাসের সমস্যা করে থাকে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার
সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট ছোট
নিশ্বাস নিতেও সমস্যা তৈরি হয়।
বুকে ব্যথা
অতিরিক্ত ধনেপাতা আহারে বুকে ব্যথার মত জটিল সমস্যাও
দেখা দিতে পারে। এটা শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথাই
সৃষ্টি করে না তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়ে থাকে। এজন্য এই
সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দৈনন্দিন আহারে কম করে এই
ধনেপাতা খেতে পারেন।
Top
আইন কনিকা
মৃত্যুকালীন ঘোষণার
গ্রহণযোগ্যতা
জাহাঙ্গীর আলম সরকার সাগর
‘মৃত্যুকালীন ঘোষণা’ সাক্ষ্য আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ
অংশ। আমাদের দেশের আদালতপাড়ায় বিচার প্রক্রিয়ায় প্রায়ই
মৃত্যুকালীন ঘোষণার (উুরহম উবপষধৎধঃরড়হ) প্রয়োগ দেখতে
পাওয়া যায়। সাক্ষ্য আইনকে সম্পূর্ণ এবং সমগ্র আইন বলা
যায় না, কেননা সাক্ষ্য আইন ছাড়াও ফৌজদারি কার্যবিধি
আইনের কিছু বিধান যথাÑ খালাসের সাক্ষ্য, ডাক্টারি
সাক্ষ্য, রাসায়নিক পরীক্ষকের সাক্ষ্য ইত্যাদি তথ্য
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও রেজিস্ট্রেশন আইনের ১৭,
৪৯ ও ৫০ ধারাসহ উত্তরাধিকার আইনের ৬৩ ধারা, সম্পত্তি
হস্তান্তর আইনের ৫৯ ধারা, স্টাম্প আইনের ৩ ধারা প্রভৃতি
সাক্ষ্য সম্পর্কীয় বিধান বিদ্যমান। আমাদের দেশের
প্রচলিত সাক্ষ্য আইন যে নীতিমালার ওপর প্রতিষ্ঠিত,
তৎসম্পর্কে বিখ্যাত মনীষী খড়ৎফ ঊৎংশরহব বলেন, ঞযব
ঢ়ৎরহপরঢ়ষবং ড়ভ ঃযব খধি ড়ভ ঊারফবহপব ধৎব ভড়ঁহফবফ রহ ঃযব
পযধৎরঃরবং ড়ভ ৎবষরমরড়হ, রহ ঃযব ঢ়যরষড়ংড়ঢ়যু ড়ভ হধঃঁৎব,
রহ ঃযব ঃৎঁঃযং ড়ভ যরংঃড়ৎু ধহফ রহ ঃযব বীঢ়বৎরবহপব ড়ভ
পড়সসড়হ ষরভব. সুতরাং এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে,
সাক্ষ্য আইনের ব্যাপক গুরুত্ব বিদ্যমান। তাই আমি
ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আইনের বহির্ভূত অনেক
ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইনের বহু নীতি প্রয়োগ করতে পারলে
বিরোধ (উরংঢ়ঁঃব) নিরসন সহজ হবে। সাধারণ মানুষ ছাড়াও বহু
সচেতন মানুষ এমনকি বহু নবীন আইনজীবীকেও ‘মৃত্যুকালীন
ঘোষণা’ বা উুরহম উবপষধৎধঃরড়হ সম্পর্কে ধারণা স্বচ্ছ নয়।
তাই দৈনিক যুগান্তরের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘আইন-আদালতের’
আজকের বিষয় ‘মৃত্যুকালীন ঘোষণার গ্রহণযোগ্যতা’। বিষয়টি
সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কিছু
বাস্তব দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বিশেষণের প্রয়াস রাখি।
এছাড়াও মৃত্যুকালীন ঘোষণা কি? পুলিশের কাছে প্রদত্ত
মৃত্যুকালীন ঘোষণা সাক্ষ্য আইনে গ্রহণযোগ্য কিনা? কিংবা
কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যুকালীন ঘোষণা গ্রহণযোগ্য? এ
বিষয়গুলো সম্পর্কে নিুে আলোচনা করা হল।
দৃষ্টান্ত -১ : ঠাকুরগাঁও জেলার মুহাম্মদ খবির উদ্দিন
আহমেদ এবং লালমনিরহাট জেলার কাজী আসফিয়া হক
পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও কোন প্রকার
আনুষ্ঠানিকতা করেননি। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালের মার্চ
মাসে তারা ঢাকার মতিঝিলে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং
দুর্ঘটনায় মারা যান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মুহাম্মদ খবির
উদ্দিন আহমেদ ও কাজী আসফিয়া হক আইনসম্মতভাবে বিবাহিত
কিনা? কাজী আসফিয়া হক এই মর্মে বিবৃতি দিয়েছেন যে, এমন
পরিস্থিতিতে ওই বিয়ে হয়েছিল যখন কোন উৎসব করলে তা
অপরাধ হতে পারত। কেননা ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে সমগ্র
বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা (ঊসবৎমবহপু) বিদ্যমান ছিল।
আদালতে এটা কি প্রাসঙ্গিক হবে?
দৃষ্টান্ত -২ : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানার স্থায়ী
বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম দ্বারা শফিকুল ইসলাম খুন (গঁৎফবৎ)
হয়েছে কিনা? কিংবা শফিকুল ইসলামের ওপর পাশবিক অত্যাচার
করা হয়েছিল কিনা? শফিকুল ইসলাম এমন বাস্তবতায় রফিকুলের
দ্বারা খুন হয়েছে কিনা, যাতে শফিকুল ইসলামের বিধবা
স্ত্রী পারভীন সুলতানা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি
দেওয়ানি মামলা দায়ের করতে পারেন। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে
শফিকুল ইসলাম তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিচারাধীন
হত্যা, পাশবিক অত্যাচার বা প্রতিকারযোগ্য অন্যায় কাজের
উল্লেখ করে বিবৃতি (ঝঃধঃবসবহঃ) দিয়ে থাকলে তা কি
প্রাসঙ্গিক বিষয় (জবষবাধহঃ ড়ভ ভধপঃ) বলে বিবেচিত হবে
কিনা?
দৃষ্টান্ত -৩ : ঢাকা জেলার গুলশানে আবদুর রহিম সরকারের
জš§ কোন তারিখে। আবদুর রহিমের মৃত পিতা মুহাম্মদ
জব্বার আলী খান তার বন্ধুকে বিশেষ কোন দিনে আবদুর রহিম
সরকারের জšে§র কথা জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছিলেন সেটা কি
প্রাসঙ্গিক বিষয়?
তবে প্রতি লেখার মতো এবারও উলিখিত দৃষ্টান্তগুলোতে
ছদ্মনাম ও ঠিকানা ব্যবহার করা হল সামাজিক মর্যাদার কথা
বিবেচনা করে। সমস্যাগুলোর সমাধান দেয়ার আগে কিছু
প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে নিুে আলোচনা করা হল। প্রথমে
আমাদের জানা উচিত মৃত্যুকালীন ঘোষণা (উধুরহম
উবপষধৎধঃরড়হ) কি?
মৃত্যুকালীন ঘোষণা (উধুরহম ফবপষধৎধঃরড়হ) : মৃত্যুকালীন
ঘোষণা সাক্ষ্য আইনের একটি চমৎকার বিধান। ন্যায়বিচার ও
আইনের শাসন (জঁষব ড়ভ খধ)ি প্রতিষ্ঠার জন্য মৃত্যুকালীন
ঘোষণার তাৎপর্য ব্যাপক। মূলত কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে অথবা যে ঘটনার ফলে তার মৃত্যু
ঘটেছে, তৎসংশিষ্ট কোন পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রদত্ত
বিবৃতিকে মৃত্যুকালীন ঘোষণা বলে। ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য
আইনের ধারা ৩২(১) উপধারায় মৃত্যুকালীন ঘোষণা সম্পর্কে
বিধান রয়েছে। অর্থাৎ বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি মৃত্যু বা
নিখোঁজ ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে তার বিবৃতি
যেসব ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। উলিখিত ধারায় পরিষ্কার উলেখ
রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মৃত অথবা যাকে খুঁজে পাওয়া যায় না
অথবা যে সাক্ষ্য দেয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে অথবা যাকে
হাজির করা এরূপ সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ যে সংশিষ্ট মামলার
অবস্থা বিবেচনায় আদালতের মতে তা অযৌক্তিক; সেইসব
ব্যক্তি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক বিবৃতি যে
ক্ষেত্রে নিজেরাই প্রাসঙ্গিক বিষয় : যে ক্ষেত্রগুলোতে
মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠে, সেই
ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে অথবা
ঘটানোর যে কোন অবস্থার ফলে তার মৃত্যু ঘটেছে তৎসংশিষ্ট
কোন পরিস্থিতি সম্পর্কে যদি বিবৃতি দিয়ে থাকে। অনুরূপ
বিবৃতি দেয়ার সময় বিবৃতিদানকারীর মৃত্যুর আশংকা
উপস্থিত হয়ে থাকুক বা না থাকুক এবং যে মামলায় তার
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন ওঠে তার প্রকৃতি যাই হোক,
উক্ত বিবৃতি প্রাসঙ্গিক। মৃত্যুকালীন ঘোষণার সংজ্ঞা
বিশেষণ করলে নিুলিখিত উপাদানগুলো দেখা যায়;
যথাÑ ১। বিবৃতিদানকারী ব্যক্তির মৃত্যুবরণ করতে হবে।
২। উলিখিত বিবৃতিটি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে হতে হবে। ৩।
উলিখিত অবস্থা বা ঘটনার ফলে তার মৃত্যু হতে পারে। ৪।
বিবৃতি প্রদানকারীর মৃত্যু বিচার্য বিষয় হতে হবে। ৫।
বিবৃতি প্রদানকারীর বিবৃতি প্রদানের যোগ্য হতে হবে।
মূলত উপরোলিখিত পাঁচটি উপাদানের সমন্বয়েই মৃত্যুকালীন
ঘোষণার সংজ্ঞা গঠিত। উল্লেখ্য, ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য
আইনের ৩২(১) উপধারার মৃত্যুকালীন ঘোষণার উপাদানগুলো যদি
কেউ পূরণ করে, তবে সেই পরিস্থিতিতে মৃত্যুকালীন ঘোষণা
গ্রহণযোগ্য।
পুলিশের কাছে প্রদত্ত মৃত্যুকালীন ঘোষণা সাক্ষ্য আইনে
গ্রহণযোগ্য কিনা : সাধারণত পুলিশের কাছে দেয়া অপরাধ
সংগঠন সংক্রান্ত কোন বিবৃতি সাক্ষ্য আইনে গ্রহণযোগ্য
নয়। তবে মৃত্যুকালীন ঘোষণা এই সাধারণ নীতির ব্যতিক্রম।
মৃত্যুকালীন ঘোষণা লিখিতও হতে পারে, আবার মৌখিকও হতে
পারে। এ ঘোষণা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী
লিখিত হওয়ার কোন বিধান নেই। মৃত্যুকালীন ঘোষণা (উধুরহম
উবপষধৎধঃরড়হ) ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে করা যায়, পুলিশের
কাছে এমনকি সাধারণ ব্যক্তির কাছেও করা যায়। তবে এখানে
উলেখ্য, যার কাছেই করা হোক না কেন, ৩২(১) উপধারার
শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। ৪২ ডিএলআর (আপিল বিভাগ) ১৩০
পৃষ্ঠায় উলেখ রয়েছে, সাক্ষ্য আইনের ৩২ ধারার বিধানমতে
মৃত্যুমুখী কোন ব্যক্তির বিবৃতি সম্মুখে পাওয়া যে কোন
লোক লিপিবদ্ধ করতে পারে, তাা লিখিত হতে পারে অথবা
মৌলিকও হতে পারে। আইনের এমন কোন বিধান নেই যে, এটা
অপরাধ সম্পর্কীয় আইনের ১৬৪(৩) ধারার মতোই
ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও
অন্যত্র উলেখ রয়েছে, পুলিশ অফিসারের রেকর্ডকৃত
মৃত্যুকালীন ঘোষণা সাক্ষ্য আইনে গ্রহণীয়, কিন্তু এ
ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকবে যে, বাদীপক্ষের কাছে এটা
অপেক্ষা ভালো পদ্ধতিতে ঘোষণা রেকর্ডের কোন সময় বা
সুযোগ ছিল না। তবে এ কথা ঠিক নয় যে, পুলিশ অফিসারের
রেকর্ডকৃত মৃত্যুকালীন ঘোষণা অনির্ভরযোগ্য।
সমস্যাগুলো বিশেষণে দেখা যায়, দৃষ্টান্ত : (১)-এ উলেখ
রয়েছে, মুহাম্মদ খবির উদ্দিন আহমেদ ও কাজী আসফিয়া হকের
মধ্যে বিয়ে হলেও কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা হয়নি। কেননা
জরুরি অবস্থা বিরাজমান ছিল সে সময় (অবশ্য এখনও জরুরি
অবস্থা বিদ্যমান)। ২০০৮ সালের মার্চ মাসে ভাড়া বাসায়
মতিঝিলে ওঠার পর একদিন দুর্ঘটনায় মারা যান কাজী আসফিয়া
হক। কিন্তু মৃত্যুর আগে বাড়িওয়ালার স্ত্রীর কাছে এই
মর্মে একটি বিবৃতি প্রদান করেন যে, এমন পরিস্থিতিতে
তাদের বিয়ে হয়েছিল যখন উৎসব করা অপরাধের পর্যায়ে পড়ত।
কেননা ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে সারাদেশে জরুরি অবস্থা (ঊসবৎমবহপু)বিদ্যমান
ছিল। কাজী আসফিয়া হকের এ জাতীয় বিবৃতি তার বিয়ে
সম্পর্কে সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান বের করবে। এবং বিচার
আদালতে মৃত্যুকালীন ঘোষণা হিসেবে প্রাসঙ্গিক বলে
বিবেচিত হবে। দৃষ্টান্ত : (২)-এ উলেখ রয়েছে, রফিকুল
ইসলাম দ্বারা সফিকুল ইসলাম খুন হয়েছে কিনা? যাতে
সফিকুল ইসলামের বিধবা স্ত্রী পারভিন সুলতানা রফিকুল
ইসলামের বিরুদ্ধে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করতে পারেন।
এ জাতীয় পরিস্থিতিতে শফিকুল ইসলাম তার মৃত্যুর কারণ
সম্পর্কে বিচারাধীন হত্যা, পাশবিক অত্যাচার ও
প্রতিকারযোগ্য অন্যায় কাজের উলেখ করে যে বিবৃতি প্রদান
করেন তা প্রাসঙ্গিক বিষয় বলে বিবেচিত?
পাশাপাশি দৃষ্টান্ত : ৩-এ যেমনটা উল্লেখ রয়েছে যে, ঢাকা
জেলার গুলশানে আবদুর রহিম সরকারের জš§ কোন তারিখে সে
বিষয়টি প্রমাণের জন্য আবদুর রহিমের মৃত পিতা মুহাম্মদ
জব্বার আলী খান তার বন্ধুকে বিশেষ কোন দিন লেখা আবদুর
রহিম সরকারের জšে§র কথা জানিয়ে যে পত্র দিয়েছিলেন সেটি
প্রাসঙ্গিক বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে সাক্ষ্য আইনের
বিধান মতে। কাজেই আইন আদালতে এবং বিচারকার্যে
মৃত্যুকালীন ঘোষণা উধুরহম ফবপষধৎধঃরড়হএকটি যথেষ্ট
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মৃত্যুকালীন ঘোষণা বহু ক্ষেত্রেই
সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
Top
Top
|
|