           
 
|
Cover December 2015
English Part
December 2015
Bangla Part
নারী ও শিশু সংবাদ
পুলিশ ও কারাগার সংবাদ
স্বাস্থ্য সংবাদ
আইন কনিকা
বিবিধ সংবাদ
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার প্রতিবেদন-২০১৫
১২ মাসে হত্যাকান্ড ২৩৭৫ জন এবং আহত ১০ সহস্রাধিক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ২০১৫ সাল তথা
জানুয়ারীডিসেম্বর ২০১৫ইং পর্যš- মোট ১২ মাসে
মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কমিশনের বিভিন্ন
জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের
ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য
সম্পন্ন করে। অনুসন্ধান জরিপ অনুযায়ী ২০১৫ সালের
জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড
সংঘটিত হয় ২৩৭৫টি। এছাড়া ২০১৫ সালে বিভিন্ন গোলযোগ,
সংঘর্ষ, নির্যাতননিপীড়নে আহতের সংখ্যা প্রায় ১০
সহস্রাধিক। এই হত্যাকান্ডের মধ্যে অধিক সংখ্যক
রাজনৈতিক কর্মী, নারী এবং শিশু হত্যার ঘটনা রয়েছে।
এছাড়া সীমান্তহত্যাকান্ডের ঘটনাও মানবাধিকার প্রতিবেদনে
স্থান পায়। বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হয় ২৩৪টি পৌরসভা
নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় সহস্রাধিক
মানুষ আহত হয় এবং নিহতের সংখ্যা ৫ জনের অধিক। ২০১৫ইং
সালে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম থাকলেও বিরোধী
দলীয় রাজনীতি অনুপস্থিত ছিল রাজনৈতিক মাঠে ময়দানে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন করতে হলে
দেশের বর্তমান গণতন্ত্র ব্যবস্থাকে শক্তিশালী এবং নিরপে
নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রবিহীন মানবাধিকার
প্রতিষ্ঠা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। গণতন্ত্রের উন্নয়ন না
হলে চলমান বিরোধ, হানাহানি এবং হত্যাকান্ড বৃদ্ধি পাবে
বৈ কমবে না। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা
পরিস্থিতির চরম অবনতিই প্রকাশ পায়। হত্যাকান্ডের হার
ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের
চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম সাদেক এবং মহাসচিব
মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
করেছেন। ২০১৫ সালে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায়
৬.৫০ জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিশেষ করে পুলিশ এবং
র্যাব কর্তৃক বিনাবিচারে হত্যাকান্ড মানবাধিকারের চরম
লঙ্ঘন। এবারের বিনাবিচারে হত্যাকান্ডের ঘটনায়
সংশ্লিষ্ট পুলিশের হস্তক্ষেপ সবচেয়ে বেশি। আইন
প্রয়োগকারী সংস্থ'ার নিরপে তথা গতিশীল কার্যক্রমের
মাধ্যমে হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের
গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং
মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই
সর্বস্তরে আইনের শাসন বা¯-বে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সমাজকে অনাচারমুক্ত এবং
মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের জরিপে দেখা যায় ২০১৫ সালে
হত্যাকান্ডের শিকার ২৩৭৫ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৯৮ জন, পারিবারিক
সহিংসতায় হত্যা ৪৩৭ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৪৯৭ জন,
রাজনৈতিক কারণে হত্যা ২১৬ জন, আইন শৃঙ্খখলা বাহিনীর
হাতে হত্যা ১২২ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ৪৪ জন,
চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ৮৩ জন, গুপ্ত হত্যা ১১৯ জন,
রহস্যজনক মৃত্যু ৬২৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ৬১ জন,
অপহরণ হত্যা৬৫ জন। ২০১৫ সালে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত
পরিবহণ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২৬১০জন, আত্মহত্যা ৩৬৯জন।
২০১৫ সালে কতিপয় নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে
ধর্ষণ ৩০৪ জন, যৌন নির্যাতন ৫৮ জন, যৌতুক নির্যাতন ৭৪
জন, এসিড নিপে ২৩ জন, সাংবাদিক নির্যাতন ৮ জন।
বিশ্ব দেখুক, আমরাও পারি :প্রধানমন্ত্রী

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ষড়যন্ত্রে দেশি-বিদেশি
চক্র জড়িত। দুর্নীতির মিথ্যা অজুহাতে বিশ্বব্যাংকও
অর্থ দেয়নি। কিš‘ আমরা বসে থাকিনি। নিজস্ব অর্থায়নে এই
সেতু নির্মাণ করে আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিথ যে কোনো
বৃহৎ প্রকল্প বাংলাদেশ বা¯-বায়ন করতে সক্ষম। বিশ্ববাসী
দেখুকথ আমরাও পারি।
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস-নাশকতা
ও মানুষ হত্যার বিচারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা
করেছে, যারা হুকুম দিয়েছে, পরিকল্পনা করেছে, অর্থ
জুগিয়েছে এবং জ্বালাও-পোড়াও করেছে; তাদের প্রত্যেকের
বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে
না। এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান
জানিয়ে তিনি বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায় না, দেশের
কল্যাণ চায় না; তাদেরষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। তারা
বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেই। দেশবাসীকেও সজাগ থেকে এদের
বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ মূল পদ্মা
সেতু ও নদীশাসন কাজের উদ্বোধন শেষে মুন্সীগঞ্জের
লৌজংয়ের উত্তর মেদেনীমণ্ডলের খানবাড়ীতে স্থানীয় আওয়ামী
লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। এর
আগে মাওয়া গোলচত্বরে সাত নম্বর পিলারের পাইলিং কাজ
উদ্বোধনের মাধ্যমে মূল সেতুর নির্মাণ কাজের সূচনা করে
সেখানেও সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। এই জনসভার
বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মা
সেতু নির্মাণের বেলায় দেশি-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সেতু নির্মাণের
জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্য দিতে এগিয়ে আসে। কিš‘ হঠাৎ
ঘুষ গ্রহণের ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক এ
প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিল। আমি জাতির পিতার
মেয়ে। আমি কোনো দুর্নীতি করি না, দুর্নীতি মানবোও না।
তাই আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম। কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, তার
প্রমাণ দিতে বললাম। কিন্তু তারা কোনো প্রমাণই দিতে
পারেনি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণ আমাদের
জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে জাতির পিতার
নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি।
বীরের জাতি বাঙালি কারও কাছে মাথা নত করে না।
বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে নাথ আমরা
এটাই প্রমাণ করেছি। এই সেতু নির্মাণে নিজেদের জায়গা-জমি
ও পৈতৃক ভিটা ছেড়ে দেওয়ার মাধ্যমে সহযোগিতা করায় ¯’ানীয়
মানুষদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি সেতু নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ
জানিয়ে তিনি বলেন, যারা জমি ও ঘরবাড়ি ছেড়েছেন, তাদের
পুনর্বাসন করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া
এই সেতু নির্মিত হলে দুই পারের মানুষের উন্নয়নও হবে।
দুই পারে স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলা হবে। অবহেলিত
দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এ অঞ্চলে
শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসং¯’ান সৃষ্টি হবে। মাওয়া
ও জাজিরায় আš-র্জাতিক মানের হোটেল-রিসোর্ট এবং পর্যটন
কেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও জানান তিনি। পদ্মা সেতুর মূল
কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এই জনসভাকে ঘিরে আওয়ামী
লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মধ্যে উৎসবমুখর
পরিবেশের সূচনা ঘটে। শীত উপেক্ষা করে দুপুরের আগেই
মুন্সীগঞ্জসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে মানুষ জনসভায়
যোগ দিতে শুরু করেন। বিকেল নাগাদ মানুষের ভিড়ে গোটা
জনসভাস্থল জনারণ্যে পরিণত হয়। এ সময় ¯োগান আর
বাদ্য-বাজনার তালে তালে জনসভায় যোগ দেওয়া মানুষ পদ্মা
সেতুর স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও
জানান। আর জনসভা¯’লের পাশাপাশি আশপাশের এলাকাকেও
ব্যানার-ফেস্টুন-প্যাকার্ডসহ রঙ-বেরঙের বেলুন ও ফুল
দিয়ে সাজিয়ে বর্ণাঢ্য সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। মূল
প্যান্ডেলে ¯’ান সংকুলান না হওয়ায় চারদিকে সমবেত মানুষ
যাতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে পারেন, সে জন্য
স্থাপন করা হয় বেশ কয়েকটি বিশাল ডিজিটাল স্ক্রিন।
আন্দোলন নয়,
নির্বাচনেই সরকারকে ঘায়েল: খালেদা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আন্দোলন নয়,
নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকারকে পরাস্ত করতে হবে।
বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা
বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
দশম সংসদ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তির সময় কর্মসূচিতে
বাধা পেয়ে চলতি বছরের শুরুতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ
করে বিএনপি। সে সময় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমায়
দগ্ধ হয়ে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়।
তবে ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনের দ্বিতীয় বছর পূর্তি
সামনে রেখে খালেদা জিয়া বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্রে
বিশ্বাস করে। আমরা বলতে চাই, দেশ বাঁচানোর জন্য
আন্দোলন নয়, নির্বাচন দিয়ে তাদের (সরকার) ঘায়েল করতে
হবে।”
পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার
আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো সময়ে পৌরসভা নির্বাচন
দলীয় প্রতীক দিয়ে হয়নি। আমি আপনাদেরকে আহ্বান জানাব-
আপনারা যে যেখানে আছেন, যে পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে,
সেখানে ধানের শীষ প্রতীককে সম্মান করে ভোট দিন।” বিএনপি
ফের ক্ষমতায় এলে দেশে কোনো ধর্মীয় বৈষম্য থাকবে না বলে
অঙ্গীকার করেন খালেদা জিয়া।
“বিএনপি সরকারে আসলে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে, আনন্দে
এবং একসঙ্গে বসবাস করবে। কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। তাদের
চাকরি ক্ষেত্রে কোনো রকম সমস্যা হবে না।”
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালযে খ্রিস্টান
অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান
হয়। অনুষ্ঠানে তেজগাঁও ক্যাথলিক মিশনের ফাদার এলবার্ট
রোজারিওসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শতাধিক সদস্য অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন শিশুদের নিয়ে
অ্যাসোসিয়েশনের আনা বড়দিনের কেক কাটেন।
Top
ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক এবং লন্ডনে মানবাধিকার সম্মেলন
অনুষ্ঠিত
মানবাধিকার
রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে
কমিশনের মহাসচিব মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার গত
২৩ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের
নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান
করেন। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে তিনি
নিউইয়র্কের ২টি মানবাধিকার সম্মেলনে এবং ওয়াশিংটনে
হোয়াইট হাউজসহ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান পরিদর্শন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সম্মেলনগুলোতে কমিশনের নিউইয়র্ক
স্ট্যাটের সভাপতি শরীফ আহমেদ লস্কর সভাপতিত্ব করেন।
অপরদিকে যুক্তরাজ্যে কমিশনের কর্মকান্ড গতিশীল করার
লক্ষ্যে ১ ডিসেম্বর ২০১৫ লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে
যুক্তরাজ্য শাখার বার্ষিক সম্মেলন, ২ ডিসেম্বর ২০১৫
যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড শাখার সমন্বয় সভা এবং ৪
ডিসেম্বর ২০১৫ যুক্তরাজ্যের এসেক্স কমিটির সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনগুলোতে প্রধান অতিথি হিসেবে
কমিশনের মহাসচিব মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার
প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। যুক্তরাজ্য সম্মেলনে
সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আব্দুল আহাদ
চৌধুরী, ইংল্যান্ড শাখার সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন
ইংল্যান্ড শাখার সভাপতি মানবতাবাদী এম. শহীদুর রহমান
এবং এসেক্স শাখার সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন এসেক্স
শাখার সভাপতি মহিবুর রহমান লাল ভাই। সম্মেলনগুলোতে
অন্যান্যদের মধ্যে আব্দুল মজিদ, সিরাজ, হাবিবুর রহমান
হাবিব, তারাউল ইসলাম, আব্দুল হাফিজ বকর, প্রবীণ
মানবাধিকার কর্মী আলহাজ্ব উস্তার আলী, হাজী আব্দুল
হান্নান, মাসুদুুর রহমান রুহুল, শফিক আহমেদ, দোলন
চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
।
Top
দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে ড. সাইফুল ইসলাম
দিলদারকে দায়মুক্ত প্রদান
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব এবং
দি ইনস্টিটিউট অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট-আইআরডি’র
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. সাইফুল ইসলাম দিলদারকে দুর্নীতি
দমন কমিশনের দায়েরকৃত মামলা থেকে অব্যাহতি তথা
দায়মুক্ত করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা নং/প্রাথমিক
তথ্য নং-১৯, ধারা -৪২০/৪০৬ এ উল্লেখ করা হয় ড. সাইফুল
ইসলাম দিলদার আইআরডি থেকে ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে।
পরবর্তীতে বিষয়টি বিশদ তদন্তের পর দেখা যায়, উল্লেখিত
অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল তথ্য, আইআরডি’র
ন্যায় একটি প্রতিষ্ঠানের নিকট বাংলাদেশ ব্যাংক এর
গৃহায়ণ তহবিলের পাওনা অর্থ ব্যক্তি নামে দেখিয়ে
আত্মসাতের কথা উল্লেখ করা হয়। আইআরডি উক্ত অর্থ গৃহায়ণ
তহবিলের নিকট ফেরত দিয়ে দায়মুক্ত গ্রহণ করে। দুর্নীতি
দমন কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তা বিশদ তদন্তের পর ফৌজদারি
বিধান কোষের ১৭৩ ধারা মোতাবেক ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার
এর পক্ষে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দায়ের তথা দায়মুক্ত
করেন। চূড়ান্ত রিপোর্ট নং-৮৯, তারিখঃ ০৭/১২/২০১৫ইং
Top
জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশকে
৮০ লাখ ইউরো দেবে ইইউ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও দুর্যোগের মুখে
থাকা জনগোষ্ঠীর সহায়তায় ৮০ লাখ ইউরো অনুদান দেবে
ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
আগামী বছর থেকে শুরু হতে যাওয়া চার বছরমেয়াদি একটি
প্রকল্পের অধীনে জিসিসিএ প্লাসের (দ্য গ্লোবাল
ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যালায়েন্স + ফ্ল্যাগশিপ ইনিশিয়েটিভ)
মাধ্যমে অনুদানের অর্থ ছাড় করা হবে বলে এক বিবৃতিতে
জানানো হয়েছে।
ইইউয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নীতিমালা ও
অগ্রাধিকারের পরিপূরক হিসেবে তৈরি প্রকল্পটি স্থানীয়
সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি ও
ইউএন ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড যৌথভাবে বাস্তবায়ন
করবে। এর অর্থ ছাড় করা হবে পারদর্শিতার বৈশিষ্ট্যের
ভিত্তিতে।
“দুর্গম অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর মধ্যে অভিযোজন ক্ষমতা তৈরির
লক্ষ্যে নেওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক এলাকার
দুই লাখ পরিবার সরাসরি উপকৃত হবে।”
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়োদন
বিবৃতিতে বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দরিদ্রতম ও
প্রান্তিক মানুষরাই জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অনুদান তাদের সরাসরি উপকৃত করবে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো ও দুর্যোগের
প্রভাব মোকাবেলায় দেশে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে
বিভিন্ন প্রচেষ্টা চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মায়োদন বলেন, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির বাংলাদেশ সদ্য
নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন সময়মতো
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ হলে তা চাকরি ও
প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ প্রশমন ও অভিযোজনে
বাংলাদেশকে কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহায়তায় ‘তৎপরতা
অব্যাহত রাখার’ আশ্বাস দেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখে থাকা উন্নয়নশীল
দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদারে
ভূমিকা রাখতে ২০০৭ সালে ‘জিসিসিএ প্লাস’ প্রতিষ্ঠা করে
ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ’
Top
ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি মাইলফলক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বের প্রথম ডেঙ্গু প্রতিরোধী টিকা অনুমোদন করিয়াছে
মেক্সিকো। প্রায় অপ্রতিরোধ্য হইয়া উঠা প্রাণঘাতী ব্যাধি
ইবোলাকে মুঠোবন্দী করিবার পর জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে
বিশ্ববাসীর জন্য সম্ভবত ইহাই হইতেছে সর্বাপেক্ষা
তাৎপর্যপূর্ণ সুসংবাদ। এই টিকা তৈরির সহিত সংশ্লিষ্ট
ফরাসি ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সানোফির টিকা
বিভাগের প্রধানের কণ্ঠেও উচ্চকিত হইয়া উঠিয়াছে অনুরূপ
উচ্ছ্বাস। ‘ডেংভ্যাকসিয়া’ নামক নব উদ্ভাবিত এই টিকাটিকে
গত তিন দশকের মধ্যে সেরা আবিষ্কার অভিহিত করিয়া তিনি
বলিয়াছেন যে, জনস্বাস্থ্যের ইতিহাসে এইটি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। তাহার এই মন্তব্যে কোনো
অতিশয়োক্তি আছে বলিয়া মনে হয় না। ইতিমধ্যে ১৫টি দেশের
৪০ হাজার মানুষের উপর এই টিকা পরীক্ষা করিয়া দেখা
হইয়াছে। পরীক্ষার ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক বলিয়া
প্রতীয়মান হয়। দেখা গিয়াছে যে, নয় বৎসরোর্ধ্ব বয়সী
দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হইয়াছে এই
টিকা। এমনকি ডেঙ্গুর সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর রূপ হেমোরেজিক
জ্বর হইতেও ৯৩ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারে এই
প্রতিষেধক। জানা যায়, ক্রমবর্ধমানহারে ডেঙ্গুর
ঝুঁকিকবলিত মেক্সিকো তাহাদের জাতীয় টিকা কার্যক্রমেও
এই টিকা অন্তর্ভুক্তির বিষয় বিবেচনা করিতেছে। আশা করা
হইতেছে যে, এই উদ্ভাবন বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার
মানুষের জীবন বাঁচাইতে সক্ষম হইবে।
ডেঙ্গু কতোটা প্রাণঘাতী হইয়া উঠিতে পারে তাহা কেবল
ভুক্তভোগীরাই জানেন। নিভৃত এই ঘাতকের ভয়াবহতা
প্রত্যক্ষ করিবার দুর্ভাগ্য আমাদেরও হইয়াছে। সাধারণ
জ্বরের সহিত ইহার তফাৎ অতি সামান্য হইবার কারণে কিছু
বুঝিয়া উঠিবার আগেই ঝরিয়া পড়িয়াছে বহু মূল্যবান জীবন।
এতোকাল কোনো প্রতিষেধক ছিল না, অন্যদিকে চিকিৎসার
ব্যাপারটিও জটিল। রোগ শনাক্তকরণে বা ঔষধ প্রয়োগের
ক্ষেত্রে সামান্য এদিক-ওদিক হইলেই রোগীর প্রাণ
বাঁচানোই কঠিন হইয়া পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,
প্রতি বৎসর বিশ্বে ৪০ কোটি লোক আক্রান্ত হয় এডিস
মশাবাহিত এই রোগে। তন্মধ্যে মারা যায় ২২ হাজার মানুষ।
এতোদিন মনে করা হইত যে, ডেঙ্গু কেবল গ্রীষ্মমণ্ডলীয়
অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু বিশ্বায়ন ও জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের প্রায় সর্বত্রই ছড়াইয়া
পড়িতেছে এই ব্যাধি। ইতোমধ্যে ৯টি দেশে রোগটি মহামারী
রূপ পরিগ্রহ করিয়াছে। বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারতও যে
আশঙ্কামুক্ত নহে তাহার প্রমাণ হইল, গত গ্রীষ্ম ও বর্ষা
মৌসুমে দিল্লি ও কলকাতায় শত শত মানুষ আক্রান্ত হইয়াছে
ডেঙ্গুতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, গত
অর্ধশতকে প্রায় ৩০ গুণ বৃদ্ধি পাইয়াছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
সর্বাপেক্ষা উদ্বেগের বিষয় হইল, বর্তমানে বিশ্বের
অর্ধেক মানুষই ইহার ঝুঁকির মুখে রহিয়াছে।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ডেঙ্গুর টিকা উদ্ভাবনের বিষয়টি
নিঃসন্দেহে খুবই স্বস্তিদায়ক একটি সংবাদ। তবে কিছু
সংশয় নিরসন করা জরুরি হইয়া পড়িয়াছে। প্রথমত, এই
ব্যাপারে এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আনুষ্ঠানিক কোনো
বক্তব্য পাওয়া যায়নি- যাহা অত্যাবশ্যক বলিয়া আমরা মনে
করি। দ্বিতীয়ত, টিকাটির দামের বিষয়টিও স্পষ্ট নহে। এই
প্রসঙ্গে আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলিতে চাহি যে, শুধু
টিকা উদ্ভাবন করিলেই চলিবে না, ডেঙ্গুর ঝুঁকির মধ্যে
থাকা বিশ্বের বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ যাহাতে
বিনামূল্যে বা সুলভে ইহার সুফল পাইতে পারে, তাহাও
নিশ্চিত করিতে হইবে। এই ক্ষেত্রেও বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার দায়িত্বই সর্বাধিক।
Top
জাতিসংঘের উদ্বেগ :
চরম বৈষম্যের শিকার
যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা প্রকাশ করলেও দেশটির নারীরা কর্মস্থল,
স্বাস্থ্যসেবা থেকে কারাগার- সবক্ষেত্রেই চরম বৈষম্যের
শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
১১ ডিসেম্বর ২০১৫ বিশ্বসংস্থার মানবাধিকার বিষয়ক
হাইকমিশনারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নারীর সমতা
প্রতিষ্ঠায় ওবামা প্রশাসন প্রশংসিত হলেও
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ‘প্রবল মেরুকরণ’র
পরিপ্রেক্ষিতে নারী অধিকারের বিষয়টি অবজ্ঞার মধ্যেই রয়ে
গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা সমঅধিকারের জন্য এখনো
লড়াই করে যাচ্ছেন বলে এতে বলা হয়েছে। খবর
বিডিনিউজ২৪ডটকমের। জাতিসংঘের সিডওর একটি বিশেষজ্ঞ দল
৩০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি
এলাকায় নারীদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। দলটির
সদস্যরা কেন্দ্রীয়, অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসন,
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, মানবাধিকার ও নারী অধিকার
সংস্থার প্রতিনিধি এবং সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা
বলার পাশাপাশি কর্মস্থলে নারীদের হাল-হকিকত সম্পর্কে
ধারণা নেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ দলটির পর্যবেক্ষণে
অভিবাসী নারী শ্রমিক, আফ্রিকান-আমেরিকান, স্প্যানিশ ও
স্থানীয় নারীরা বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
শারীরিকভাবে অচল নারীদের অবস্থা আরো সঙ্গীন।
যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার সময় গ্রেফতার হওয়া নারীদের
অবস্থাও করুণ।
বিশেষজ্ঞরা দলের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, কর্মস্থলে
পুরুষ সহকর্মীদের চেয়ে কম বেতন পাওয়া ছাড়াও
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক নারীই মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়
বেতনভাতা পাচ্ছেন না। প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও
তারা বিভিন্ন বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯০ থেকে ২০১৩ সালে প্রসবকালীন মৃত্যুর
হার ১৩৬ শতাংশ বেড়েছে বলেও তাদের পর্যবেক্ষণে পাওয়া
গেছে। আফ্রিকান-আমেরিকানদের মধ্যে এ ঝুঁকি চারগুণ বেশি।
ক্লিনিকে মায়েদের হয়রানির শিকার হওয়া এবং আন্তরিক
চিকিৎসাসেবা না পাওয়ারও প্রমাণ মিলেছে বিষেশজ্ঞ দলের
পরিদর্শনের সময়।
সিডও বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শনের আগ মুহূর্তে কলরাডো
প্ল্যানেড প্যারেন্টহুড ফ্যামিলি প্ল্যানিং সেন্টারে
কয়েকজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বিবৃতিতে
বলা হয়েছে, নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে বর্তমান
প্রশাসনের দৃঢ় অঙ্গীকার সত্ত্বেও বন্দুক নিয়ন্ত্রণে
যথাযথ আইন না থাকায় নারীরা প্রচণ্ড হুমকির মধ্যে
দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে নারী কয়েদিদের
মানবাধিকার বলতে কিছুই নেই বলেও মন্তব্য এসেছে।
বিশ্বের যে সাতটি দেশ এখনো নারীর প্রতি বৈষম্য
সংক্রান্ত জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষর করেনি, যুক্তরাষ্ট্র
তার অন্যতম। বিবৃতিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ এবং
আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই সিডও সনদ সমুন্নত রাখার
চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাক্ষর করা খুবই প্রয়োজন।
কারণ যুক্তরাষ্ট্র এর আগে সর্বস্তরে নারীর অধিকার
সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর থাকার অঙ্গীকার করেছে।
অটিস্টিক শিশুদের খাবার বুঝেশুনে দিতে হবে
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিউট্রিশন অ্যান্ড অটিজম রিসার্চ
সেন্টার (নার্ক) আয়োজিত সেমিনারে আলোচকেরা বলেছেন,
অটিস্টিক শিশুদের খাবারের ব্যাপারে অভিভাবকদের বিশেষ
মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। কিছু খাবার এ ধরনের শিশুকে
অসুস্থ করতে পারে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সানরাইজ
প্লাজায় সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। সেমিনারের মূল
প্রবন্ধে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ
আরিফুর রহমান বলেন, অটিস্টিক শিশুদের খাদ্যতালিকা থেকে
রুটি, ক্র্যাকার্স, পাস্তা ও বেকারিতে তৈরি খাবার বাদ
দেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া চিনিযুক্ত খাবার, মধু, লাল আঙুর,
কলা, চকলেট, সয়াসস, চিজ ইত্যাদিও এড়িয়ে চলতে হবে। এ
ধরনের খাবার খেলে শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া, অতিরিক্ত
চঞ্চলতা বা ঝিমুনি ভাব, ঘুম না হওয়া, হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে
যাওয়া এবং সারাক্ষণ বিরক্ত হয়ে থাকার মতো উপসর্গ দেখা
দিতে পারে।
সুস্থ শিশু জন্ম দিতে গর্ভধারণের পরপরই মায়েদের জন্য
বিশেষ ধরনের খাবারের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন
বারডেমের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড সেল বায়োলোজি বিভাগের
জ্যেষ্ঠ গবেষক কামরুন্নাহার। তিনি মায়েদের ফলিক
অ্যাসিড, ভিটামিন ১২, জিঙ্ক ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার
খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। কামরুন্নাহার বলেন, অটিজমে ভোগা
সব শিশু যে একই ধরনের খাবার সহ্য করতে পারে না, বিষয়টি
এমন নয়। একেক শিশুর একেক ধরনের খাবারে অসুবিধা দেখা
দিতে পারে। শিশুদের খাবারে চিনি পুরোপুরি বাদ দেওয়া
ঠিক হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি
স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘সাঘাটা ও ফুলছড়ি
এলাকার দুজন অটিস্টিক ছাত্র বিশেষ অলিম্পিকে সোনার
মেডেল নিয়ে এসেছে। আপনারা উৎসাহ হারাবেন না। ওরা সম্পদ।’
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব
বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুজাহেরুল হক।
১৪
বছরের কমে গৃহকর্মী নয়
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণে একটি নীতিমালা অনুমোদন
দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে
স্বীকৃতি পাবে এবং সবেতনে চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি
ছাড়াও অন্যান্য ছুটি ভোগ করতে পারবেন গৃহকর্মীরা।
সচিবা-লয়ে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে গৃহকর্মী সুরক্ষা
ও কল্যাণ নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের
বলেন, এই নীতিমালা অনুমোদন পাওয়ায় শ্রম আইন অনুযায়ী
গৃহকর্মীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, ১৪
বছরের কম বয়সী কাউকে গৃহকর্মী নিয়োগ দেয়া যাবে না।
গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
সংশ্লিষ্ট পক্ষ ঠিক করবে।
নীতিমালায় গৃহ-কর্মীদের বিশ্রামের পাশাপাশি বিনো-দনের
সময় দেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গৃহকর্মী নির্যাতনের
বহু অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,
নির্যাতন করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেবে।
বৈঠকে জাতীয় সংসদে ২০১৬ সালের প্রথম অধিবেশনে
রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া প্রাইভেটাইজেশন কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ডকে একীভূত
করে ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ গঠন আইনের’ খসড়ায়ও
চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৯৫৭ সালে প্রণিত
বালাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন আইনটিকে
বাংলায় অনুবাদ করে সেটির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে
মন্ত্রিসভা। বৈঠকে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আইনের খসড়ায়ও নীতিগত অনুমোদন দেয়া
হয়েছে বলেও জানান শফিউল আলম।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, গৃহকর্মী
সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালার আলোকে পরে আইন করা হবে।
২০১০ সালের এক জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন,
রাজধানীতে তখন ২০ লাখ গৃহকর্মী ছিল। তবে এখন এই সংখ্যা
অনেক বেড়ে গেছে। সারাদেশে কতজন গৃহকর্মী রয়েছেন, সেই
তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে স্বীকার করেন প্রতিমন্ত্রী।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে গৃহকর্মীর
মজুরি নির্ধারিত হবে। পূর্ণকালীন গৃহকর্মীর মজুরি যাতে
তার পরিবারসহ সামাজিক মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপনের
উপযোগী হয় নিয়োগকারীকে তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে
গৃহকর্মীর ভরণ-পোষণ, পোশাক-পরিচ্ছদ দেয়া হলে তা মজুরির
অতিরিক্ত বলে গণ্য হবে।
তবে ১২ বছর বয়সের কাউকে গৃহকর্মী রাখতে হলে তার
আইনানুগ অভিভাবকের সঙ্গে তৃতীয় কোনো পক্ষের উপস্থিতিতে
নিয়োগকারীকে আলোচনা করতে হবে। তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতিতে
এই আলোচনা, চুক্তি, সমঝোতা বা ঐকমত্যের সময় নিয়োগের
ধরন, তারিখ, মজুরি, বিশ্রামের সময় ও ছুটি, কাজের ধরন,
থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং গৃহকর্মীর বাধ্যবাধকতা-
এসব বিষয়ের উল্লেখ রাখতে বলা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক গৃহকর্মীর কর্মঘণ্টা
এমনভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যাতে তিনি পর্যপ্ত ঘুম,
বিশ্রাম, চিত্তবিনোদন ও প্রয়োজনীয় ছুটির সুযোগ পান।
গৃহকর্মীর ঘুম ও বিশ্রামের জন্য নিরাপদ ও
স্বাস্থ্যসম্মত স্থানও নিশ্চিত করতে বলেছে সরকার।
নীতিমালা অনুযায়ী, অসুস্থ অবস্থায় কোনো গৃহকর্মীকে দিয়ে
কাজ করানো যাবে না। নিয়োগকারীকেই নিজের অর্থে
গৃহকর্মীর চিকিৎসা করাতে হবে। এছাড়া গৃহকর্মীকে তার
নিজের ধর্ম পালনের সুযোগ দিতে হবে। কর্মরত অবস্থায় কোনো
গৃহকর্মী দুর্ঘটনার শিকার হলে চিকিৎসাসহ ও ক্ষতির ধরন
অনুযায়ী নিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
গৃহকর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ, দৈহিক বা মানসিক
নির্যাতন করা যাবে না উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে,
গৃহকর্মীর উপর কোনো হয়রানি ও নির্যাতন হলে বিচারের
দায়িত্ব সরকারের। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র, শ্রম, মহিলা ও
শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ও সুস্পষ্ট
নির্দেশাবলী দেবে। কোনো গৃহকর্মী নিয়োগকারী, তার
পরিবারের সদস্য বা অতিথিদের দ্বারা শারীরিক, মানসিক বা
যৌন হয়বানির শিকার হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, গৃহকর্মী নির্যাতন বা হয়রানির ঘটনায়
সংশ্লিষ্ট থানা যেন দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে
পারে সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দাপ্তরিক
নির্দেশনা জারি করতে হবে। কোনো গৃহকর্মী যৌন হয়রানি,
যৌন নির্যাতন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে
মামলা করলে সরকারি খরচে সেই মামলা পরিচালিত হবে।
গৃহকর্মী যদি কর্মরত পরিবারের শিশু, অসুস্থ ও বৃদ্ধ
ব্যক্তিসহ কোনো সদস্যের সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক
নির্যাতন বা পীড়াদায়ক আচরণ করেন তবে নিয়োগকারী তার
নিয়োগ বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা
নিতে পারবেন।
কাউকে না জানিয়ে গৃহকর্মী চলে গেলে নিয়োগকারী
সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করতে পারবেন। তবে অর্থ বা
মালামাল নিয়ে গৃহকর্মী পালিয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আইনের
আশ্রয় নিতে পারবেন নিয়োগকারী। নিয়োগকারী পূর্ণকালীন
গৃহকর্মী নিয়োগ দিয়ে তার ছবিসহ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে
অবহিত করতে পারবেন। স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো গৃহকর্মীকে
চাকরি থেকে অপসারণ করতে হলে এক মাস আগে জানাতে হবে।
গৃহকর্মীও যদি চাকরি ছাড়তে চান; তবে নিয়োগকারীকে তা এক
মাস আগে জানাতে হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কেউ গৃহকর্মীকে
চাকরি থেকে বাদ দিলে এক মাসের মজুরি দিয়ে বিদায় করতে
হবে। এই নীতিমালা বাস্তবায়নে শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন
একটি তদারকি সেল থাকবে।
এছাড়া সিটি করপোরেশন এলাকায় আঞ্চলিক বা প্রধান নির্বাহী
কর্মকর্তা এবং জেলা-উপজেলায় যথাক্রমে জেলা প্রশাসক ও
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে মনিটরিং সেল
গঠন করা হবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।
Top
সাপের কামড়ে
শরীরে কী ঘটে
এডভোকেট আবু মোত্তালেব বাদল
সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ সাপের কামড়
খায়। এর প্রতি পাঁচজনের একজন বিষক্রিয়ার কারণে মারা
যায়। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সাপে কাটা এক মার্কিন
চিকিৎসকের দিনলিপি সূত্রে জানা গেছে মানুষের শরীরে
সাপের বিষের প্রতিক্রিয়া। সম্প্রতি বিষয়টি গবেষকদের
নজরে আসে। এ বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন করেছে প্রকৃতি ও
প্রাণীবিষয়ক সাময়িকী ‘ডিসকভারি ম্যাগাজিন’। আর
দিনলিপির আলোকে সাপের বিষক্রিয়ায় শরীরে প্রভাব নিয়ে
ভিডিওচিত্রও প্রকাশিত হয়েছে।
মার্কিন উভচর প্রাণী বিশেষজ্ঞ কার্ল প্যাটারসন স্মিত
ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মৎস্য ও উভচর প্রাণিবিদ্যাবিষয়ক
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট (১৯৪২-১৯৪৬)। নিউইয়র্কের আমেরিকান
মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টরি ও শিকাগোর ফিল্ড
মিউজিয়ামে গবেষণা করেছেন তিনি। ১৯৫৭ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর লিংকন পার্ক চিড়িয়াখানার
পরিচালক মারলিন পারকিনস তথ্য জানতে একটি বড় আকৃতির
বিষাক্ত সাপ স্মিতের কাছে পাঠান। অসাবধানতার কারণে
সাপটি তার হাতে কামড় দেয়। বিষক্রিয়ার বিষয়টি তার জানতে
দেরি হয়। ততক্ষণে বিষ শরীরের অনেক অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
সাপের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী
১৫ ঘণ্টা সময়ে শরীরে পরিবর্তনের বিষয়টি দিনলিপিতে লিখে
যান স্মিত। ওই দিনলিপির বরাত দিয়ে ইনডিপেনডেন্ট
জানিয়েছে, বিষক্রিয়ার পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে
স্মিতের বমি বমি ভাব হয় একইসঙ্গে রক্ত হারাতে থাকেন
তিনি। আর বিষের কারণে তার রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ হয়ে
যায় এবং অনেক রক্তক্ষরণ হয়। বিষক্রিয়ার কারণে তার শরীরে
কাঁপুনি শুরু হয়। স্মিতের মুখের ভেতরের অংশেও ক্ষরণ হয়।
Top
রূপগঞ্জের দাউদপুরে মানবাধিকার
সম্মেলন
আগামী ৭ জানুয়ারি ২০১৬ রোজ বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায়
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন
পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মানবাধিকর কমিশন দাউদপুর
ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে এবং কমিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা ও
রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার সহায়তায় এক মানবাধিকার সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কমিশনের দাউদপুর ইউনিয়ন শাখার
সভাপতি মানবতাবাদী বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল করিম
মাস্টারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত থাকবেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার
সভাপতি মানবতাবাদী মোঃ শাহজাহান ভূইয়া। বিশেষ অতিথি
হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল ইসলাম, পিপিএম। সম্মেলনে
দাউদপুর ইউনিয়নসহ রূপগঞ্জ, কালীগঞ্জ এবং পলাশ উপজেলার
মানবাধিকার কর্মীগণ যোগ দিবেন।
Top
মানবাধিকার কমিশনের এসেক্স শাখার
কমিটি গঠন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন, সেখানেই বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশন নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পাশে দাড়ানোই মানবতার
ধর্ম। মানব সেবার প্রত্যয় নিয়ে দেশ-বিদেশে আটশত শাখার
মাধ্যমে কাজ করছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। এ
মন্তব্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব
মানবতাবাদী ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার। গত ৩ ডিসেম্বর
২০১৫ মধ্যরাতে যুক্তরাজ্যের এসেক্স এর আপনি লেনে
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের এসেক্স শাখার অভিষেক
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের
মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার।
এসেক্স শাখার সভাপতি মদিুর রহমান (লাল) এর সভাপতিত্বে
ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিরাজের সঞ্চালয়নায়
অনুষ্ঠিত অভিষেক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ হাবিবুর রহমান
হাবিব, কমিশনের ইউরোপিয়ান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সহিদুর
রহমান, ইউকে শাখার সভাপতি আব্দুল আহাদ চৌধুরী, সাধারণ
সম্পাদক তারাউল ইসলাম, ইংল্যান্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক
আব্দুল হাফিজ বক্কর। নবনির্বাচিত কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে
বক্তব্য রাখেন, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক
আলহাজ্ব উস্তার আলী, হাজী আব্দুল হান্নান, শফিক আহমদ,
দোলন চৌধুরী, শোয়েব আফজাল, আব্দুল হান্নান, মাসুদুল
ইসলাম রুহুল প্রমুখ। সভার শুরুতে স্পেনে সন্ত্রাসী
হামলায় নিহতের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা
পালন করা হয়। সভায় মুহিদুর রহমান (লাল)কে সভাপতি ও
আব্দুল মজিদ সিরাজকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য
বিশিষ্ট এসেক্স কমিটি ঘোষণা করেন সাংবাদিক মতিয়ার
চৌধুরী। কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তা হলেন সৈয়দ এহসানুল
হক, শফিক আহমদ, দুলন চৌধুরী, খছরু মিয়া, কবীর আলী,
কয়েছ মিয়া, নাজমুল ইসলাম, হান্নান মিয়া, শোয়েব আফজাল,
সৈয়দ তফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
Top
মানব উন্নয়নে আগের
অবস্থানেই বাংলাদেশ
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মানব উন্নয়ন সূচকে কিছুটা অগ্রগতি হলেও তালিকায় আগের
অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন সূচক-২০১৫
প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ রয়েছে ১৪২তম অবস্থানে।
বিশ্বের ১৮৭টি দেশের সর্বশেষ তথ্য নিয়ে এ তালিকাটি করা
হয়েছে। ২০১৩ সালেও বাংলাদেশ ১৪২তম অবস্থানে ছিলো।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৯ থেকে ২০১৪ সময়কালে সূচকের
পরিবর্তন হলেও গড়ে বাংলাদেশের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন
হয়নি। ৫ বছরের গড় হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এগিয়েছে
৬ ধাপ (১৩০তম), শ্রীলংকা ৫ ধাপ (৭৩তম), মিয়ানমার ১ ধাপ
(১৪৮তম), নেপাল ৩ ধাপ (১৪৫তম), পাকিস্তান অপরিবর্তীত
(১৪৭তম), ভিয়েতনাম ১ ধাপ (১১৬তম), ইন্দোনেশিয়া ৩ ধাপ
(১১০তম), চীন ১৩ ধাপ (৯০তম)। এবারের প্রতিবেদনের
শিরোনাম দেয়া হয়েছে, মানব উন্নয়নের জন্য ‘কর্ম’।
প্রতিবেদনে মানব উন্নয়নে কর্মসংস্থানের প্রতি
গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
গত ২০ ডিসেম্বর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে
আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে
প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, অসমতার কারণে
উন্নত ও অনেক উন্নয়নশীল দেশ মানব উন্নয়ন সূচকে অর্জন
তুলনামূলক কম। বাংলাদেশের মানব উন্নয়ন সূচকে অর্জন
শূন্য দশমিক ৫৭০ পয়েন্ট। এক বছর আগে আমাদের অর্জন ছিলো
শূন্য দশমিক ৫৬৭ পয়েন্ট। প্রতিবেদন অনুযায়ী যে দেশ ১
পয়েন্টের যত কাছাকাছি অর্জন করবে সে দেশের মানব উন্নয়ন
পরিস্থিতি তত উন্নত। তালিকার শীর্ষে থাকা নওয়ের রয়েছে
শূন্য দশমিক ৯৪৪ পয়েন্ট।
প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন
প্রতিবেদন অফিসের পরিচালক সেলিম জাহান। প্রধান অতিথি
ছিলেন- অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব
মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দীন। প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন
ইউএনডিপির আবাসিক সমন্বয়কারী পলিন তামাসিস।
Top
এসেক্সে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের আলোচনা সভা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
“আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা সর্বত্র” এই
প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারে পালিত হল আন্তর্জাতিক
মানবাধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার
কমিশ এসেক্স শাখার উদ্যোগে গত ১০ ডিসেম্বর ব্রিকলেনের
মুনলাইট রেস্টুরেন্টে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
শাখার সহসভাপতি সফিক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল
মজিদ এবং যুগ্ম সম্পাদক শাহিন উদ্দিন তরফদারের যৌথ
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, “আমাদের
অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা সর্বত্র” এই শ্লোগানকে সামনে
রেখে আমাদের এগুতে হবে সেই সাথে মনে রাখতে হবে, একজন
মানবাধিকার কর্মী হতে হলে তাকে প্রকৃত মানব সত্ত্বার
অধিকারী হতে হবে।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মতিয়ার
চৌধুরী। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের
সভাপতি মুহিদুর রহমান। কমিশনের এসেক্স শাখার ভবিষ্যত
পরিকল্পনা ও মানবাধিকারের বিবিণœ দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ
নেন সহ-সভাপতি শফিক আহমদ, সৈয়দ এহসানুল হক, আজহারুল
ইসলাম সিপার ও নজমুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক জিয়া আহমদ ও
নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ সাদ মিয়া,
সাংবাদিক হেফাজুল করিম রাকিব, যুগ্ম সম্পাদক ফারুক
আহমদ, সদস্য কবীর আলী, সদস্য আহদ আলী, সদস্য জোবের
আহমদ, কয়েছ আলী, দিপঙ্কর রায়, শোয়েব আহমদ প্রমুখ। সভার
শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন শাহিন আহমদ
তফাদার এবং গীতা পাঠ করেন বাবু দিপঙ্কর রায়।
Top
ন্যায় বিচার মৌলিক অধিকার :রাষ্ট্রপতি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, ন্যায় বিচার
প্রাপ্তি মানুষের মৌলিক অধিকার; কিন্তু নানা কারণে
জনগণ সেই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। তিনি
বলেন, বিচারকরা জাতির বিবেক। তাই সংবিধান, আইনের প্রতি
অবিচল আস্থা, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারকরা
তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন এটাই প্রত্যাশা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন
কেন্দ্রে ‘জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৫’র উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি এসব কথা
বলেন। সম্মেলনের সভাপতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র
কুমার সিনহা বলেন, বিচার বিভাগের মামলার জট হ্রাস এবং
মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের
মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। করতে হবে বিচার বিভাগের
সংস্কার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতির রোল
মডেল যা বিশ্বব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত হয়েছে। তেমনিভাবে
সকলের আন্তরিক প্রয়াস এবং সার্বিক সহযোগিতায় অচিরেই
এদেশ এশিয়ার বিচার ব্যবস্থার রোল মডেল হিসেবে মাথা উঁচু
করে দাঁড়াবে-এ আমার দৃঢ় প্রত্যাশা।
সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের
বিচারপতিগণ ছাড়াও নিম্ন আদালতের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৩শ
বিচারক অংশ নেন। উদ্বোধনের পর সম্মেলনের পরবর্তী দুইটি
সেশনে নিম্ন আদালতের বিচারকরা তাদের ভৌত অবকাঠামোগত
সমস্যাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা প্রধান বিচারপতির নিকট
তুলে ধরেন। বিচারকদের এসব সমস্যা সম্পর্কে অবহিত আছেন
এবং সেই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন
মর্মে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আশ্বাস দেন প্রধান
বিচারপতি। রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি আবেদনের শুনানি
সমাপ্তের পর বা মোকদ্দমার যুক্তিতর্ক শুনানির পর আদেশ
লাভে যাতে বিলম্ব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে
বিচার বিভাগের প্রতি যেমন জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে,
তেমনি বিচারকরাও বিবেকের নিকট স্বচ্ছ থাকবেন। তিনি
বলেন, ‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড’- এ নীতিবাক্য
আমাদের বিচার ব্যবস্থায় প্রচলিত থাকুক আমরা তা আর চাই
না।
Top
রোহিঙ্গা
সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্র“তি
পুনর্ব্যক্ত
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রোহিঙ্গা সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানে সহায়তা দেবে
যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল কক্সবাজার সফরকালে মানবিক এ
ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত
মার্শা বুম বার্নিকাট তার সরকারের প্রতিশ্র“তি
পুনর্ব্যক্ত করেন। দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ
তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- জেলা ও স্থানীয়
পর্যায়ের কর্মকর্তা, অনিবন্ধিত ও নিবন্ধিত রোহিঙ্গা এবং
মানবিক সহায়তা প্রদানকারী স্থানীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে
সাক্ষাৎ করতে রাষ্ট্রদূত বুম বার্নিকাট কক্সবাজার সফর
করেন। সেখানে তিনি ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে পরিচালিত দুটি
প্রকল্প পরিদর্শন করেন। প্রকল্প দুটির একটি বাংলাদেশ
সরকারের মানব পাচার রোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা, যেটি
জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কর্মসূচি, বিদেশগমনের পূর্বে
অভিবাসীদের সহায়তা, পুলিশ প্রশিক্ষণ, ভুক্তভোগীদের
আশ্রয় এবং সহায়তা প্রদান করে থাকে। অন্য প্রকল্পটি হলো
প্রধানমন্ত্রীর এক্সেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম।
উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে মার্কিন দূত: আমাদের স্টাফ
রিপোর্টার, উখিয়া থেকে জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত
মার্শা বুম বার্নিকাট কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার
কুতুপালং শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। গতকাল সকাল ৯টায়
এ পরিদর্শনে বার্নিকাট রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত
এনজিও সংস্থা ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে
পৃথকভাবে মতবিনিময় করেন। এ সময় অনিবন্ধিত ও নিবন্ধিত
রোহিঙ্গাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে রোহিঙ্গাদের
অভাব-অভিযোগের তথ্য নেন তিনি। পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা
এমএসএফ-হল্যান্ডের হাসপাতাল, এনজিও সংস্থা, এসিএফের
কার্যক্রম সরজমিন পরিদর্শন এবং সেবার মান আরও
সম্প্রসারিত করার আহ্বান জানান। এ সময় মার্কিন
রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছিলেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের
রাজনৈতিক কর্মকর্তা টলি অলিভার, যুক্তরাষ্ট্রের
গণতন্ত্র পরিচালক অ্যামবার ব্র“কস, যুশহ্যাচস,
গ্যাবরিলে বাইসমে, মারকো পেনা, নুসরাত হোছাইন, ইরতাজা
এইট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন,
কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মাহমুদুল হক, সহকারী কমিশনার
(ভূমি) নূরউদ্দিন মো. শিবলী নোমান, উখিয়া থানার ওসি
মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
Top
নারী ও শিশু সংবাদ
শিশু
পাচারের ঝুঁকিতে সীমান্তবর্তী ২০ জেলা : আইনের প্রয়োগ
নিশ্চিতের দাবি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খরা, ভূমিধস, সন্ত্রাস, ক্ষুধা ও
দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে শিশু পাচারকারীরা দেশের
বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। এ ধরনের ২০টি জেলাকে
চিহ্নিত করেছে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা। এসব
জেলায় শিশুপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের
যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন
সংশ্লিষ্টরা।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন সোস্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক
ইনহেন্সমেন্ট প্রোগ্রামের (সিপ) পক্ষ থেকে আয়োজিত
গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও সংবাদ
সম্মেলনে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের
প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর
পুরানা পল্টনে ফুড লাভারস প্লাজায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা
ও গত শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ
সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন সিপের পরিবীক্ষণ ও
মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন। উপস্থিত
ছিলেন সংগঠনের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. মনিরুজ্জামান
মুকুল ও ইসরাত জাহান বিজু।
সিপের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক
দুর্যোগ, খরা, ভূমিধস, সন্ত্রাস, ক্ষুধা, এতিম,
দারিদ্র্যের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। এই
সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে পাচারকারী চক্র। পাচারকৃত
শিশুদের তারা যৌন পেশাসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অংশ
নিতে বাধ্য করছে। পাচার হওয়া শিশুরা নানা ধরনের
নির্যাতন ও অন্ধকার জীবন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। ২০০৩
থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দুই লাখ মেয়েকে মিথ্যা প্রলোভন
দেখিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে যৌনকর্মে নিয়োজিত হতে
বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে শিশু পাচারের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট,
বরগুনা, ঝিনাইদহ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী,
সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, জামালপুর,
নেত্রকোনা, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা।
এ বিষয়ে সিপ কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যমান
আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় দেশে মানব পাচার চলছে।
বিশেষ করে শিশু পাচার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সীমান্তবর্তী
জেলাগুলোতে পাচারকারীদের তৎপরতা বেশি। তিনি পাচার রোধে
সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।’
বাল্যবিয়ে
বন্ধে শিক্ষার্থীরা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ফুলবাড়ী উপজেলায় লেখাপড়ার পাশাপাশি বাল্যবিয়ে বন্ধ
করার জন্য কিন্ডারগার্টেনের খুদে শিক্ষার্থীরা
গ্রামাঞ্চলে প্রচারে নেমেছে। তারা গরুর গাড়িতে করে
উপজেলার মেঠোপথ ধরে বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রচার চালিয়ে পুরো
এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ¯োগান ছিল ’১৮ বছরের আগে
বিয়ে নয়, আমরা করব বিশ্ব জয়।’ এ বাল্যবিয়ে বন্ধে
প্রচারে অভিনব কৌশলটি বের করেছে সবুজ বাংলা
কিন্ডারগার্টেনের খুদে শিক্ষার্থীরা। গ্রামাঞ্চলে
মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে
আলোচিত হয়েছে এ খুদে শিক্ষার্থীরা। বাল্যবিয়ে একটি
সামাজিক ব্যাধি। সেই ব্যাধি রোধকল্পে বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীরা নাটক লিখে অভিনয়ের মাধ্যমে তা প্রচারে
নেমে পড়েছে গ্রামের রাস্তায়। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের
অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে একটি মেয়ের জীবনে যে অশান্তি বয়ে
আনে তার বস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ নাটকে। উপজেলার
ছয়টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে সন্ধ্যার পর
মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দিয়ে বাল্যবিয়েবিরোধী নাটক
প্রদর্শন করছে তারা। সম্প্রতি ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কবির
মামুদ, প্রাণকৃষ্ণ ও জোতকৃষ্টহরি ওয়ার্ডকে
বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বাল্যবিয়ের
কান্না নাটকটি পরিবেশন করা হয়।
নারী পাচার চক্রের ১১ সদস্য আটক
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকা থেকে নারী পাচারকারী চক্রের
১১ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব এ অভিযান চালায়। এ সময়
অবৈধভাবে বিদেশে পাঠানোর জন্য নিয়ে আসা দুই নারীকে
উদ্ধারসহ তাদের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট এবং
বিদেশে পাঠানোর বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব-৩ এর সূত্র জানায়, এই চক্রের সদস্যরা সহজ সরল
গ্রাম্য নারীদের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার
করতো। এধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব অভিযান চালায়
এবং ১১ জনকে আটক করে। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হবে
বলে র্যাবসূত্র জানিয়েছে।
গৃহশ্রমিক নির্যাতনের
মামলা সামান্য অর্থেই রফা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বগুড়া জেলার টেংরা
গ্রামের দিনমজুরের মেয়ে গৃহকর্মী ধলি বেগম (৫০)।
রাজধানীর তেজগাঁও ২২/এ মনিপুরী পাড়ার মনসুর আলমের
বাসায় কাজ করতেন। ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর মনসুর আলীর
বাসায় স্বর্ণের চেইন চুরির অভিযোগ তুলে তাকে আটকে রাখা
হয়। ২৬ ডিসেম্বর সকালে তেজগাঁও থানা পুলিশ গৃহকর্তার
রান্নাঘর থেকে ধলি বেগমের লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ
ঘটনাটিকে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা বলে ‘অপমৃত্যুর
মামলা’ গ্রহণ করে।
শুরু হয় ধলি বেগমের মৃত্যু নিয়ে রহস্য উদঘাটন। সে কি
খুন হয়েছে; না আত্মহত্যা করেছে তা ৯ মাসেও উদঘাটন
সম্ভব হয়নি। পুলিশ প্রভাবশালী আসামির পক্ষ নেয়। থানার
তদন্তকারী কর্মকর্তা ধলি বেগমের মেয়ে লতাকে থানায় ডেকে
নিয়ে টাকার বিনিময়ে মামলা মীমাংসার প্রস্তাব দেয়।
প্রথমে ৫০ হাজার টাকা দিতে চায়, পরে আরও ১০ হাজার
বাড়িয়ে মোট ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বলেন, আর কোনো কথা বলা
যাবে না এবং মা ধলি বেগমের বিচার চাওয়া যাবে না। জানা
যায়, লতা বেগমের স্বামী ফজলুর রহমান লতাকে হুমকি দেয়
যে, গাইবান্ধা থেকে ঢাকা এসে বিচার দাবি করলে তাকে
তালাক দেবে। তার কোলের দুই বছরের সন্তানকে কেড়ে নেয়া
হবে। অবশেষে চাপের মুখে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় মামলা
মীমাংসা করতে বাধ্য হন লতা।
একইভাবে ঈশ্বরগঞ্জের গৃহকর্মী রতœা বর্মণ, রাজশাহীর
বিলকিস বেগম, চাঁদপুরের শরীফ, ময়মনসিংহের তাসলিমা,
রাজবাড়ির প্রিয়া আক্তারের হত্যা মামলাগুলো সময়ের আবর্তে
হারিয়ে যায়। ২০১১ সালের এ ৬টি মামলার কোনোটিরই বিচার
কোর্টের মাধ্যমে চূড়ান্ত রায় হয়নি। সবগুলো মামলাই আপোষে
মীমাংসা হয়েছে বলে জানায় ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা
নেটওয়ার্ক’-এর সচিবালয় হিসাবে কাজ করা বাংলাদেশ
ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর আইনজীবী
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
২০১১ সালের গৃহশ্রমিক হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত
মামলাগুলোর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, সবকটি মামলাই
হারিয়ে গেছে। দারিদ্র্যতার কারণে মামলার বাদীরা শেষ
পর্যন্ত তাদের দায়েরকৃত মামলাগুলো প্রত্যাহার করে
নিয়েছেন। বিলস সূত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ থেকে ৬০
হাজার টাকার বিনিময়ে হত্যা, ধর্ষণ কিংবা অমানবিক
নির্যাতনের মামলাগুলো ‘বেচাবিক্রি’ হয়ে যায়। যার কারণে
হত্যাকারী কিংবা নির্যাতনকারী কারোই সুনির্দিষ্টভাবে
শাস্তি নিশ্চিত হয় না।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, শুধু রতœা বর্মণ, বিলকিস
বেগম, শরীফ, তাসলিমা কিংবা প্রিয়া নয়; হাজার গৃহকর্মী
প্রতিদিন নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এদের মধ্যে
কেউ নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে, কাউকে
হত্যা করে ‘আত্মহত্যা’ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। গৃহশ্রমিক
নির্যাতন কিংবা হত্যা, আত্মহত্যার সঠিক কোনো
পরিসংখ্যান কারো কাছেও নেই। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
রয়েছে, গৃহকর্মী হত্যার পর গৃহকর্তা বা কর্ত্রীকে
বাঁচাতে মোটা অংকের উেকাচের বিনিময়ে ঘটনাগুলো আত্মহত্যা
বলে চালিয়ে দেয়ার। দারিদ্র্যতার কারণে অধিকাংশ মামলা
শেষ পর্যন্ত তুলে নিতে হয় ভিকটিমকে। আর চার্জশিট দিলেও
মামলা থেকে রক্ষা পেয়ে যায় মূল আসামিরা।
বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রী গৃহশ্রমিকদের নিয়ে করা
একটি জরিপ প্রতিবেদনের বরাদ দিয়ে জানায়, বাসা-বাড়ির
কাজে নিযুক্ত ৯৫ শতাংশ গৃহশ্রমিক গৃহকর্ত্রীর হাতে
নির্যাতনের শিকার হয়। এসব গৃহশ্রমিকের মধ্যে ৫২ ভাগ
নিয়মিতভাবে নির্যাতিত হয়। মৌখিক (গালি) নির্যাতনের
শিকার হয় ৯৫ শতাংশ। আর ৮৬ শতাংশ শারীরিকভাবে নির্যাতিত
হয়। ৯৩ শতাংশ নিয়মিত খাবার পায়, আর ৮২ শতাংশ পরিবার
সময়মতো খাবার দেয় না। রাজধানীর ধানমন্ডি, মিরপুর ও
মোহাম্মদপুরের তিনটি ওয়ার্ডের ৮৪৯টি বাড়িতে পরিচালিত এ
জরিপে আরও বলা হয়েছে, ৫০ শতাংশ গৃহকর্মী সময়মতো
জামা-কাপড় পায় না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০০৬ সালের তথ্য অনুযায়ী,
দেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সী গৃহশ্রমিকের সংখ্যা প্রায় তিন
লাখ ৩১ হাজার। বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। অথচ এ
বৃহৎ শ্রমের শ্রমিকদের পরিচালনা বা তাদের নিয়ন্ত্রণে
কোনো নীতিমালা এতোদিন ছিল না। গত ২১ ডিসেম্বর
মন্ত্রিসভায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা নীতিমালা’ অনুমোদন হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের কম বয়সী গৃহকর্মী নিয়োগ
দেয়া যাবে না।
Top
পুলিশ ও কারাগার
সংবাদ
খুলনায় পুলিশ
কনস্টেবলসহ অগ্নিদগ্ধ ৪
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জেলায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুলিশ কনস্টেবল
আতিয়ার রহমানসহ (৪৫) তার পরিবারের ৪ সদস্য অগ্নিদগ্ধ
হয়েছে। নগরীর মুজগুন্নি আবাসিক এলাকার গতকাল শনিবার
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একটি বাসার দ্বিতীয় তলার রান্নাঘরে
এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ অন্যরা হলেন-
আতিয়ারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৩৫), ছেলে তৌফিক (১৫) ও
শ্যালিকার ছেলে শামীম (১৫)। আহতদের মধ্যে আনোয়ারা বেগম
ও তৌফিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতাল থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার
দিকে নগরীর মুজগুন্নি পুলিশ লাইন স্কুলের বিপরীত দিকের
ভাড়া বাসায় পুলিশ কনস্টেবল আতিয়ার রহমানের স্ত্রী
আনোয়ারা বেগম রান্না করছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে গ্যাস
সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে রান্নাঘরে আগুন ধরে যায়। এতে
আতিয়ারের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম অগ্নিদগ্ধসহ বাড়িটি
মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে
আতিয়ার তার স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গেলে তিনিও গ্যাসের
আগুনে দগ্ধ হন। পরে ছেলে তৌফিক ও শ্যালিকার ছেলে শামীম
তাদের উদ্ধার করতে গেলে তারাও দগ্ধ হন। আশপাশের লোকজন
তাদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের
বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ড.
শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এদের মধ্যে আনোয়ারা
বেগমের শরীরের ৬০ ভাগ ও তৌফিকের শরীরের ৭০ ভাগ দগ্ধ
হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাসার মালিক এনামুল জানান, ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস
সিলিন্ডারটি লিক থাকার কারণে রান্না করার সময়
সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়েছে। খালিশপুর থানার ওসি মো.
আনোয়ার হোসেন জানান, অগ্নিদগ্ধ কনস্টেবল আতিয়ার রহমান
খালিশপুর থানার গাড়ি চালক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।
পুলিশ হেফাজত থেকে
হত্যা মামলার আসামির পলায়ন
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলায়
রিমান্ডে থাকা কবির হোসেন (৩০) নামের এক আসামি পুলিশ
হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক
নাহিদ হোসেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানাহাজত থেকে বের করলে
কবির কৌশলে পালিয়ে যান। রাকিবুল হাসান রকি হত্যা
মামলায় অভিযুক্ত কবির হোসেন দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে
ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের
ভোলাইল নূর মসজিদ এলাকার বাসিন্দা।
ফতুল্লা মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন
বলেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২১ মার্চ কাশিপুর
ভোলাইল এলাকার একটি ডোবা থেকে রাকিবুল হাসানের লাশ
উদ্ধার করা হয়। এলাকায় মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় তাঁকে
হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবার ফতুল্লা
মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৪
নম্বর আসামি কবির হোসেন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক
ছিলেন। গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
গতকাল আদালত তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট হাজত থেকে পালানো
আসামি
৫ দিন পর গ্রেপ্তার
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারায়ণগঞ্জ কোর্টের হাজতখানা থেকে পালানো আসামি মো.
মামুন মিয়া (৩০)কে পাঁচদিন পর শহরের বন্দর সেন্ট্রাল
খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার
দুপুরে কোর্ট পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
কোর্ট পুলিশের এসআই সাখাওয়াত হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত
করেছেন। এর আগে গত ১৭ই ডিসেম্বর কোর্ট হাজতখানা থেকে
পালিয়ে যায় মামুন। পরদিন ১৮ই ডিসেম্বর কোর্ট পুলিশের
টিএসআই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায়
দণ্ডবিধি ২২৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত
মামুন শহরের ২ নং বাবুরাইল এলাকার সাহাবুদ্দিন মিয়ার
ছেলে। সম্প্রতি সদর মডেল থানা পুলিশ মাদকসহ মামুনকে
গ্রেপ্তার করেছিল।।
কনডেম সেলে মৃত্যুর প্রহর
গুনছে এক হাজার আসামি
মানবাধিকার রিপোর্টঃ
করাগারের কনডেম সেলে বসে মৃত্যুর প্রহর গুণছেন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রায় এক হাজার কয়েদি। গুরুতর
অপরাধের দায়ে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় দেশের নিন্ম
আদালত এসব আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে। আসামিদের
মৃত্যুদণ্ডের রায় অনুমোদনের জন্য জেলা জজ ও দায়রা
আদালত থেকে পাঠানো ৪০৭টি ডেথ রেফারেন্স এখন হাইকোর্টে
বিচারাধীন। এসব ডেথ রেফারেন্সের বিপরীতে বিচারাধীন
আপিলের (জেল/নিয়মিত) সংখ্যা এক হাজারের অধিক। গত এক
যুগে হাইকোর্টে প্রায় ১১ শ ডেথ রেফারেন্স মামলার
নিষ্পত্তি হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেথ
রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির জন্য অতীতের তুলনায়
বর্তমানে হাইকোর্টে বেঞ্চের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতে ক্রমান্বয়ে এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তির হার
বৃদ্ধি পেয়েছে।
বর্তমানে হাইকোর্টের ৬টি ডিভিশন বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স
মামলার শুনানি চলছে। এর মধ্যে চারটি বেঞ্চ শুধুই ডেথ
রেফারেন্স মামলার শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে থাকে।
এর বাইরে আরো দুটি ডিভিশন বেঞ্চ গ্রহণযোগ্য ফৌজদারি
মোশনের পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি ও
নিষ্পত্তির এখতিয়ার প্রদান করেছেন প্রধান বিচারপতি এসকে
সিনহা। ফলে অধিক সংখ্যক বেঞ্চ থাকায় ডেথ রেফারেন্স
মামলার নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে
হাইকোর্টে ২০১১ সালে নিন্ম আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত
আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি চলছে। তবে এর
বাইরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে শুনানি
হচ্ছে বিডিআর এর তৎকালীন সদর দপ্তর পিলখানা
হত্যাযজ্ঞের ঘটনার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ
রেফারেন্সর। আগামী বছরের জানুয়ারি/ফেব্র“য়ারি মাসে এই
মামলার শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হতে পারে বলে
জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, ফৌজদারি মামলায় নিম্ন আদালত কাউকে ফাঁসি দিলে
ওই আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য জেলা ও দায়রা
জজ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক দেয়া এই চিঠিতে
ফাঁসির রায়ের অংশবিশেষ তুলে ধরে বলা হয়, হাইকোর্ট
বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত মৃত্যুদণ্ডের রায়
কার্যকর করার আদেশ হলো। তাই হাইকোর্টের সদয় অনুমোদনের
জন্য মামলার কাগজপত্র, সিডি, মূল নথি ও যাবতীয়
প্রসিডিংস পেশ করা হলো। এরপর রায়ের কপি প্রাপ্তির ৩০
দিনের মধ্যে আসামিরা আপিল দায়ের করেন। পরবর্তীকালে
মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, নিম্ন আদালতের আদেশনামা ও
রায়, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরা,
সিআরপিসির ৩৪২ ধারা মোতাবেক অভিযুক্ত ব্যক্তির পরীক্ষা,
আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, সুরতহাল
রিপোর্ট, ময়না তদন্ত রিপোর্ট, ফরেনসিক ও কেমিক্যাল
রিপোর্ট, জব্দ তালিকা, খসড়া মানচিত্র ও সূচিপত্রসহ
বিস্তারিত নথিপত্র যুক্ত করে বিজি প্রেস থেকে পেপারবুক
প্রস্তুত করা হয়। এরপর মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত
হয়।
চাঞ্চল্যকর কোন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স অগ্রাধিকার
ভিত্তিতে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হলে সেক্ষেত্রে
সুপ্রিম কোর্ট নিজ তত্ত্বাবধানে পেপারবুক প্রস্তুত করে
থাকে। যেমনটি করেছে বিডিআর বিদ্রোহে হত্যা মামলার
ক্ষেত্রে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানায়, চার শতাধিক ডেথ
রেফারেন্স মামলার মধ্যে ২০১১ সালে ১১৭ জনকে, ২০১২ সালে
১০০ জনকে, ২০১৩ সালে ৩১৫ জনকে, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ২০৫
জন করে ৪১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশের বিভিন্ন দায়রা
আদালত। ক্রম অনুযায়ী বর্তমানে হাইকোর্টে ২০১১ সালের
ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি চলছে। তবে ২০০৫ সালে ১টি,
২০০৯ সালে ২টি এবং ২০১১ সালের ১৮টি ডেথ রেফারেন্স মামলা
অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এসব মামলায় ৯৯৮ জন ফাঁসির
দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি কারাগারের কনডেম সেলে রয়েছেন। এ
প্রসঙ্গে আইনজীবী এম আমিনুল ইসলাম ‘ইত্তেফাককে’ বলেন,
কনডেম সেলে ফাঁসির আসামিরা মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করতে
থাকেন। তাদের অধিকার রয়েছে যাতে দ্রুত এসব মামলার
বিচার শেষ হয়। যত দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হবে ততই মঙ্গল।
Top
Top
স্বাস্থ্য সংবাদ
ক্যান্সার নির্মূলে
আত্মঘাতী জিন
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
এক ধরনের আত্মঘাতী জিনথেরাপি, যা নির্মূল করে
প্রোস্টেট ক্যান্সার কোষকে। এই জিনথেরাপি প্রোস্টেট
ক্যান্সার কোষকে নিজে থেকে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার প্রবণতা
জোগায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে বলেছেন,
আবিষ্ফ্কৃত এই নতুন জিনথেরাপি কৌশল প্রোস্টেট
ক্যান্সার কোষকে এমনভাবে পরিবর্তিত করে দেয়, যাতে
রোগীর শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তাদের ধ্বংস করতে
উদ্দীপ্ত হয়। এই কৌশল শরীরের ভেতর টিউমার কোষকে
আত্মধ্বংসের প্রবণতা জোগায়। তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে
সুইসাইড বা আত্মঘাতী জিন থেরাপি।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোস্টেট ক্যান্সার
রোগীর টিকে থাকার আগের চিকিৎসার চেয়ে ৫ বছরের মধ্যে এই
সুইসাইড থেরাপি ২০ ভাগ উন্নতি ঘটিয়েছে। এক ক্যান্সার
বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আরও গবেষণা প্রয়োজন এর কার্যকারিতা
বিচারের প্রয়োজনে। প্রোস্টেট ক্যান্সার হচ্ছে
যুক্তরাজ্যে সাধারণ ক্যান্সার। প্রতি বছর ৪ হাজারের
বেশি মানুষের এই রোগ ধরা পড়ে।
টেক্সাসের হাউস্টন মেথডিস্ট হসপিটালের গবেষকদের দ্বারা
পরিচালিত গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, রেডিও থেরাপির সঙ্গে
সমন্বয় করে এই সুইসাইড জিন থেরাপি ভবিষ্যতে প্রোস্টেট
ক্যান্সারের জন্য সম্ভাবনাময় চিকিৎসা পদ্ধতি তৈরি হবে।
এই কৌশলটি ক্যান্সার কোষকে এমনভাবে জেনিটেক্যালি রূপাš-র
করে, যাতে তারা রোগীর দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে
সক্রিয় করে তাদের আক্রমণ করার জন্য।
সাধারণত শরীর ক্যান্সার কোষকে শনাক্ত করতে পারে না।
কারণ তারা স্বাভাবিক স্বাস্থ্যকর কোষ থেকে তৈরি হয়।
ক্ষতের মতো নয়, যার বিরুদ্ধে শরীর প্রতিক্রিয়া করে। ফলে
শরীরের আক্রমণাত্মক ক্যান্সার কোষকে ঠেকাতে প্রতিরোধ
ব্যব¯’া কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না। টিউমার কোষের মধ্য
দিয়ে ভাইরাসকে ব্যবহার করলে কোষগুলোর মধ্যে আত্মঘাতী
প্রবণতা সৃষ্টি হয়, প্রতিরোধ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে
কার্যক্ষম হয়ে ওঠে। টেক্সাসের হাউস্টন মেথডিস্ট
হসপিটালের ড. বিয়ান বাটলার বলেছিলেন, এই জিন থেরাপি
কৌশল ক্যান্সারকে চিকিৎসাযোগ্য করে তুলেছে। টিউমার কোষে
সরাসরি উদ্দীপক উপাদান প্রবেশ করিয়ে শরীরের ক্যান্সার
নির্মূল করা যেতে পারে। বিবিসি।
কিডনি
রোগের ১০টি লক্ষণ
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
লক্ষণের দুর্বোধ্যতার জন্য ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছেন
এমন অনেকেই জানেন না যে তার এই রোগটি আছে। ক্রনিক কিডনি
রোগ (ঈকউ) অনেক বছর পরে কিডনি ফেইলিউর সৃষ্টি করে। ঈকউ
আছে এমন অনেকেরই সারা জীবনে কিডনি ফেইলিউর হয়না।
ষ্টেজ ৩ ঈকউ আছে এমন ৮০% লোকের কিডনি অকেজো হয়না। কিডনি
রোগের যেকোন ষ্টেজের জন্যই কিডনি রোগ সম্পর্কে জ্ঞান
অর্জনই হচ্ছে এই রোগ নিরাময়ের মূল শক্তি। কিডনি রোগের
লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী
নিরাময়ের ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়।
আপনার অথবা আপনার পরিচিত কারো যদি কিডনি রোগের এক বা
একাধিক লক্ষণ দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে
ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হোন। কারণ কিডনি
রোগের উপসর্গ গুলোর সাথে অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার
উপসর্গের মিল আছে। আসুন জেনে নেই কিডনি রোগের উপসর্গ
গুলো সম্বন্ধে।
১। এনার্জি কমে যাওয়া, অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা
অথবা মনোযোগের সমস্যা হওয়া
কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মক ভাবে কমে যায় তখন রক্তে
অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল
ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা
কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, আর তা
হচ্ছে এনেমিয়া। রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা
অবসাদ গ্রস্থতার সমস্যা হতে পারে।
২। ঘুমের সমস্যা হওয়া
যখন কিডনি রক্ত পরিশোধন করতে অপারগ হয় তখন রক্তের
টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হতে পারেনা বলে
রক্তেই থেকে যায়। যার কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অবেসিটি বা স্থূলতার সাথে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের
যোগসূত্র আছে। এবং নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের
একটি সাধারণ উপসর্গ।
৩। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও ফেটে যাওয়া
সুস্থ কিডনি অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কাজ করে থাকে। কিডনি
শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করে দেয়,
লাল রক্ত কণিকা তৈরি করে, হাড়কে শক্তিশালী করে এবং
খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া
ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য ও হতে পারে যা
অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে যখন
কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য
রক্ষা করতে পারেনা।
৪। ঘন ঘন প্রস্রাব করা
যদি আপনার প্রায়ই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হয় বিশেষ করে
রাতের বেলায় তাহলে এটা কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনির
ছাঁকনি গুলো নষ্ট হয়ে যায় তখন প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি
পায়। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ইউরিন ইনফেকশনের ও লক্ষণ হতে
পারে, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লেন্ড বড় হয়ে
গেলেও এই উপসর্গ দেখা দেয়।
৫। প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে
সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড সেল গুলোকে শরীরের ভিতরে
রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বাহির করে
দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন ব্লাড সেল বাহির হতে
শুরু করে। প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার এই লক্ষণটির
কিডনি রোগের সাথে সাথে টিউমার, কিডনি পাথর বা
ইনফেকশনেরও ইঙ্গিত হতে পারে।
৬। প্রস্রাবে বেশি ফেনা হলে
প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে,
প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন যাচ্ছে। ডিমের সাদা অংশ ফাটানো
হলে যেমন ফেনা বা বাবেল হয় প্রস্রাবের এই বুদবুদ ও ঠিক
সেই রকম। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের
উপস্থিতির জন্যই এমন হয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে
গেলে প্রোটিন লিক হয়ে প্রস্রাবের সাথে বাহির হয় বলে
প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেয়।
৭। চোখের চারপাশে ফুলে গেলে
যখন কিডনি অনেক বেশি লিক করে তখন প্রচুর পরিমাণে
প্রোটিন প্রস্রাবের সাথে বাহির হয়ে যায় বলে চোখের
চারপাশে ফুলে যায়।
৮। পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে গেলে
কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে
যায় ফলে পা এবং গোড়ালি ফুলে যায়। পায়ের নীচের অংশ ফুলে
যাওয়া হার্ট, লিভার এবং পায়ের শিরার দীর্ঘমেয়াদী
সমস্যার লক্ষণ ও হতে পারে।
৯। ক্ষুধা কমে গেলে
এটা খুবই সাধারণ সমস্যা কিন্তু শরীরে টক্সিনের উৎপাদন
বৃদ্ধি পেলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ফল স্বরূপ
ক্ষুধা কমে যায়।
১০। মাংসপেশীতে খিঁচুনি হলে
কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের
ভারসাম্যহীনতা এবং মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা
দেয়। যেমন- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা কমে গেলেও
মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা দেয়।
এছাড়াও বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হওয়া,
শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, সব সময় ঠান্ডা অনুভব করা, মাথা
ঘোরা, কোমর ও পায়ে ব্যাথা হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ গুলো ও
দেখা দিতে পারে। যদি উপরোক্ত উপসর্গ গুলো দেখা যায়
তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে সিমপল ইউরিন টেস্ট (অঈজ)
এবং ব্লাড টেস্ট (বএঋজ) করিয়ে আপনার কিডনির কোন সমস্যা
আছে কিনা নিশ্চিত হোন।
ব্লাড প্রেসার কত থাকা উচিত
মানবাধিকার হেলথ ডেস্ক
ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ একজন সুস্থ মানুষের কত থাকা
উচিত এমন প্রশ্ন নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। অনেক
বিশেষজ্ঞ মনে করেন, একজন সুস্থ মানুষের রক্তচাপ ১২০/৭০
থাকা ভালো। অর্থাৎ সিস্টোলিক বাড প্রেসার ১২০ এবং
ডায়াস্টোলিক বাড প্রেসার ৭০ মিলিমিটার অব মার্কারি থাকা
উচিত। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যদি
সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক বাড প্রেসার বাড়ে অথবা শুধু
ডায়াস্টোলিক বাড প্রেসার বাড়ে তা হলে হূদরোগের ঝুঁকি
থাকে।
বিশেষজ্ঞগণ ১২০/৮০-এর নিচে রক্তচাপ থাকাকে স্বাভাবিক
বা হেলদি বলে উল্লেখ করছেন। আর ব্লাড প্রেসার ১৪০/৯০-এর
ওপর থাকলে তা হৃদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষণায় দেখা
গেছে যাদের সিস্টোলিক বা ওপরের ব্লাড প্রেসার বেশি থাকে
তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি এবং যাদের
ডায়াস্টোলিক বা নিচের ব্লাড প্রেসার বেশি তাদের
অ্যাবডোমিনাল অ্যায়োর্টিক এনিরিউজস বা বড় রক্তনালি ফুলে
যাওয়া বা রাপসার বা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
তবে এ ব্যাপারে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ক্লিনিক্যাল
এপিডেমিওলজির প্রফেসর এবং গবেষণার সিনিয়র অথার অধ্যাপক
ড. হ্যারি হ্যামিংওয়ে মনে করেন সিস্টোলিক ও
ডায়াস্টোলিক উভয় প্রেসার কম থাকা উচিত। তবে সিস্টোলিক
প্রেসার বেশি থাকলে হৃদরোগের জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
জেনে নিন
বেদানার যত স্বাস্থ্য উপকারিতা
বেদানা কার না প্রিয়। ক্লান্তি মেটাতে এক গ্লাস
বেদানার জুস সবারই পছন্দ। সেই সাথে বেদানার রয়েছে
অসংখ্য ঔষধি গুণাবলি। চলুন জেনে নিই বেদানার উপকারিতা।
ডাইরিয়ার সমস্যায় বেদানা খুবই উপকারী। দিনে দুই তিন
বার বেদানার জুস খেতে পারলে এ সমস্যা থেকে অনেকাংশেই
মুক্তি পাওয়া যায়।
শীতের সময় জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি থেকে বাঁচার জন্য
বেদানার জুস খেতে পারেন।
অজীর্ণ রোগের উপশমে বেদানার রস উপকারী।
বমিভাব দূর করতে হলে মধু ও বেদানার রস সম পরিমাণে
মিশিয়ে পান করুন।
বেদানায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যার
ফলে আপনার শরীরের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হার্টে অক্সিজেন সরবরাহে ও রক্ত চলাচল ভালো রাখতে
বেদানার রস উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, তিন মাস
প্রতিদিন এক কাপ করে বেদানার রস খেলে হার্টের মাসলে
অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।
ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন-সি, সাইট্রিক অ্যাসিড
ট্যানিন-সমৃদ্ধ বেদানা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
সাহায্য করে।
প্রোস্ট্রেট ক্যান্সার ও স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধে
বেদানার রস উপকারী।
গর্ভবতী নারীরা চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে বেদানা খেতে
পারেন। এতে শরীরে রক্ত-সঞ্চালন বাড়ে এবং শিশুর ব্রেইনে
কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
গলাব্যথা কমাতেও বেদানার জুস খেতে পারেন।
এক কাপ বেদানার জুসে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া ও অল্প
মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীর চাঙা থাকে।
একটা বেদানায় রয়েছে ১০৫ গ্রাম ক্যালরি, ১২৪ গ্রাম পানি,
১.৪৬ গ্রাম প্রোটিন, ৩৯৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৯.৪
মিলিগ্রাম ভিটামিন সি
মনে রাখুন
আপনি নিয়মিত কোনো ওষুধ খেলে বেদানা খাওয়ার আগে অবশ্যই
চিকিৎকের পরামর্শ নিন।
বেদানা কেনার সময় ভারি ও দাগবিহীন বেদানা কিনবেন।
বেদানার জুস জামাকাপড়ে ফেলবেন না। দাগ হয়ে যাবে।
বেদানার জুস তৈরি করে সাথে সাথে খেয়ে ফেলুন, বেশিক্ষণ
রাখবেন না।
নারকেল তেল ভোজ্য
হিসাবে ক্ষতিকর নয়
বিগত তিন দশক ধরে কোকোনাট অয়েল বা নারকেল তেলকে
অস্বাস্থ্যকর বলে আসছেন বিশেষজ্ঞগণ। এ কারণে বেশিরভাগ
মানুষ কোকোনাট অয়েল ভোজ্য তেল হিসাবে ব্যবহার করেন না।
তবে এখন অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, কোকোনাট অয়েল ভোজ্য তেল
হিসাবে ক্ষতিকর এমন কোনো গ্রহণযোগ্য তথ্য এখনও পাওয়া
যায়নি। এসব খানিকটা অনুমান ভিত্তিক। আর এ নিয়ে বক্তব্য
রেখেছেন টাফট ইউনিভার্সিটির নিউট্রিশন সায়েন্স এন্ড
পলিসির অধ্যাপক এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডায়েটরি গাইড
লাইনের এডভাইজরি কমিটির ভাইস চেয়ার ড: এলিস এইচ লিচ
টেনস্টেইন।
তিনি উল্লেখ করেছেন, কোকোনাট অয়েল এখন তার খারাপ ইমেজ
দূর করতে পেরেছে এবং অনেক ন্যাচারাল ফুড সেন্টার
কোকোনাট অয়েল তাদের স্টোরে রাখছে, যদিও কোকোনাট অয়েল
নিয়ে নানা ভিন্নমত রয়েছে।
কোকোনাট অয়েল ভোজ্যতেল হিসাবে ব্যবহারের বিপক্ষে
অবস্থানকারীদের যুক্তি হচ্ছে, কোকোনাট অয়েলে
উচ্চমাত্রার স্যাসুরেটেড ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা উচ্চ
কোলেস্টেরল ও হূদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সম্প্রতি
অনেক বিশেষজ্ঞই বলে আসছেন কোকোনাট অয়েল রক্তের
কোলেস্টেরল বাড়ায় বা এটা হূদরোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন
কোনো গ্রহণযোগ্য বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক লিচ টেনস্টেইন আরও উল্লেখ করেছেন
কোকোনাট অয়েল এর স্বাস্থ্যকর প্রভাব নিয়ে অতি সামান্যই
গবেষণা হয়েছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন যে সমস্ত
কোকোনাট অয়েল অধিক প্রক্রিয়াজাত তা থেকে ক্ষতির
সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যে সমস্ত কোকোনাট অয়েল স্বাভাবিক
ভাবে উৎপাদন করা হয় যেমন ভারজিন কোকোনাট অয়েল, এসবে
ক্ষতির সম্ভাবনা একবারেই কম। তবে কর্নেল ইউনিভার্সিটির
হিউম্যান নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক ড: টম ব্রেনা মনে
করেন ভারজিন কোকোনাট অয়েল ব্যবহারে ক্ষতির কোনো কারণ
নেই।
Top
আইন কনিকা
সামাজিক
বাস্তবতা ও আইনের অপপ্রয়োগ
ঘটনা-১ : অনি ও রুহির বিয়ে হয়েছিল পারিবারিকভাবে। পাঁচ
বছরের দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার অভাব ছিল না। রুহির
কোলজুড়ে আসে একমাত্র সন্তান আয়ান। অনির মা, বাবা,
বোনসহ পরিবারের অন্যদের সঙ্গে রুহির পারস্পরিক
বোঝাপড়ার অভাব ছিল প্রকট। এক পর্যায়ে বিবাহ বিচ্ছেদের
সিদ্ধান্ত নেন অনি। তালাকের নোটিশ পেয়ে রুহি এক
আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি রুহিকে তালাকের
নোটিশ গ্রহণ না করে তার আগেই যৌতুক আইনে মামলা করার
পরামর্শ দেন। হতাশ, ক্ষুব্ধ ও ক্রোধান্বিত রুহি অনিসহ
তাঁর পরিবারের সব সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগে
রুহি উল্লেখ করেন, অনি (এক নম্বর আসামি) তাঁকে যৌতুকের
দাবিতে প্রায়ই মারধর করতেন। তাঁর দেবর, শাশুড়ি, ননদ
বলেন, যৌতুকের টাকা না আনলে সে যেন আর ঘরে না ফেরে। এক
পর্যায়ে অনি তাঁকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন।
ম্যাজিস্ট্রেট এই অভিযোগ সরাসরি আমলে গ্রহণ করে অনির
বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং অপরাপর সব অভিযুক্তের
বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন।
ঘটনা-২ : ভালোবেসে বিয়ে করেন আহান ও নোরা। বিয়ের পরই
নোরা আবিষ্কার করেন আহান মাদকাসক্ত এবং বখে যাওয়া এক
যুবক। নোরা আহানকে ফেরানোর অনেক চেষ্টা করেন; কিন্তু
ব্যর্থ হন। মদ-গাঁজার টাকার জন্য বারবার নোরাকে চাপ
দেন আহান। নোরা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে থাকেন।
একসময় নোরা আর টাকা দিতে অস্বীকার করেন। ফলে নোরার ওপর
নেমে আসে অবর্ণনীয় নির্যাতন। অতিষ্ঠ নোরা এক পর্যায়ে
ঘর ছাড়েন এবং আহানের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা
করেন।
ঘটনা-৩ : ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ধুমধামের সঙ্গে
বিয়ে হয়েছিল ফারুকী এবং স্বাতীর। এই বিপুল পরিমাণ
দেনমোহর পরিশোধ করার ক্ষমতা ফারুকীর কখনোই ছিল না।
পাত্রীপক্ষের প্রবল চাপে পাত্রপক্ষ বাধ্য হয়ে সম্মত হয়।
বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে উভয়ে আবিষ্কার করেন তাঁদের
দুইজনের পৃথিবী সম্পূর্ণ আলাদা। স্বাতী ফারুকীর যৌথ
পরিবারের ধ্যান-ধারণাকে মেনে নিতে পারেন না। ফারুকীও
কখনোই পৃথকভাবে বসবাসে সম্মত হননি। এক পর্যায়ে উভয়ে
সিদ্ধান্ত নেন পৃথক হয়ে যাওয়ার; কিন্তু ফারুকীর পক্ষে
দেনমোহরের অপরিশোধিত ৯ লাখ টাকা এককালীন পরিশোধ করা
সম্ভব নয়। আবার স্বাতীও এক টাকা ছাড় দেবেন না। স্বাতী
দেওয়ানি মামলার কথা বললে আইনজীবী বলেন, যা টাকা পাবেন,
বছরের পর বছর আদালতের চার দেয়ালে ঘুরতে ঘুরতেই শেষ হয়ে
যাবে। তাহলে উপায় আইনজীবীর সহাস্য উত্তর কেন যৌতুক আইনে
মামলা একবার শুধু একটা ওয়ারেন্ট আর জেলে ঢুকাতে পারলেই
হলো। ওই ব্যাটা ৯ লাখ কেন, আঠারো লাখ টাকা গুনে গুনে
বাড়ি এনে দেবে।
যৌতুক নিরোধ আইন-১৯৮০ প্রণীত হয়েছিল বিবাহের সময় বিবাহ
বা পরবর্তী সময়ে যৌতুক হিসেবে বিবাহের পণরূপে যেকোনো
সম্পত্তি বা মূল্যবান জামানত প্রদান, গ্রহণ অথবা
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যৌতুক দাবি নিষিদ্ধ করার
উদ্দেশ্যে। পত্রিকার সংবাদগুলোর দিকে দৃষ্টিপাত করলে
এর আগ্রাসী রূপ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা মেলে। যৌতুক
নামক ব্যাধিটি সমাজের উচ্চতর থেকে নিম্নস্তর পর্যন্ত
অবস্থান নিয়েছে। উচ্চবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং
মধ্যবিত্ত স্তরে যৌতুক বিষয়টি কনেপক্ষ থেকে উপহার
হিসেবে প্রচলিত। এর আগ্রাসী রূপটি এতই প্রবল যে হত্যা,
গুরুতরভাবে জখম করা বা শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ করে
দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। মামলা করার সময় যত দৌড়ঝাঁপ করা
হয়, মামলার ফলাফল জানতে ফরিয়াদি পক্ষকে একটা পর্যায়ে
ততটাই অনাগ্রহী মনে হয়। আসামি খালাস পেলে দোষ চাপিয়ে
দেওয়া হয় আদালত বা অদৃশ্য কারো ওপর। কিন্তু প্রশ্ন হলো,
একটি সত্য ঘটনার মামলায় আসামি একজন অপরাধী কেন খালাস
পাবে কেন সত্যিকারের একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে বিচার
না পেয়ে অশ্র“সজল নয়নে বোবা দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে আদালত
থেকে বেরিয়ে যেতে হবে কেন সমাজে উত্তরোত্তর যৌতুক দাবি,
গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনা মহামারিরূপে বৃদ্ধি পাবে কেন
অপরাধী খালাস পেয়ে আবার একই অপরাধ করবে।
বাংলাদেশে প্রচলিত আইনগুলোর মধ্যে সম্ভবত যৌতুক নিরোধ
আইনটি বহুল প্রচলিত। আইনটি ছোট হলেও এটি তার ছোট্ট
পরিসরেই তার নামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সব উপাদানই
ধারণ করেছে। এই আইনটিতে যৌতুক বলতে প্রত্যক্ষ বা
পরোক্ষভাবে প্রদত্ত যেকোনো সম্পত্তি বা মূল্যবান
জামানত বোঝাবে, যা বিবাহের একপক্ষ অন্যপক্ষকে অথবা
বিবাহের কোনো একপক্ষের মা-বাবা বা অন্য কোনো ব্যক্তি
কর্তৃক বিবাহের যেকোনো পক্ষকে বা অন্য কোনো ব্যক্তিকে
বিবাহ মজলিশে অথবা বিবাহের আগে বা পরে, বিবাহের পণরূপে
প্রদান করে বা প্রদান করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
ব্যাখ্যা-১ : সন্দেহ নিরসনকল্পে এতদ্বারা জ্ঞাত করা হলো
যে বিবাহের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নন এমন কোনো ব্যক্তি
কর্তৃক স্বামী বা স্ত্রী, যেকোনো পক্ষকে অনধিক ৫০০ টাকা
মূল্যমানের কোনো জিনিস বিবাহের পণ্য হিসেবে নয়,
উপঢৌকনরূপে প্রদান করলে অনুরূপ উপঢৌকন এই ধারামতে
যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে না।
ব্যাখ্যা-২ : দ বিধির ৩০ ধারায় মূল্যবান জামানত যে
অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, এই আইনেও ওই শব্দাবলি একই অর্থ
বোঝাবে।
এই সংজ্ঞা থেকে যৌতুক বলতে কী বোঝাবে তার একটি
পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। প্রচলিত ধারণা মতে মনে হতে
পারে, এই আইনে শুধু স্ত্রী বা স্ত্রীপক্ষই মামলা করতে
পারে। কিন্তু ওপরের সংজ্ঞা থেকে এটি স্পষ্ট যে স্বামী
বা স্বামীপক্ষ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তারাও এ আইনে
মামলা করতে পারে এবং এ ধরনের উদাহরণ বিরল নয়। এ আইনের
যাবতীয় অপরাধ আমল অযোগ্য। অর্থাৎ আদালত কর্তৃক পাঠানো
কোনো পরোয়ানা ছাড়া এ আইনের অধীনে পুলিশ কাউকে
গ্রেপ্তার করতে পারবে না। এ আইনের সব অপরাধ জামিন
অযোগ্য এবং আপসযোগ্য হবে। এ আইনে যৌতুক প্রদানকারী বা
গ্রহণকারী বা দাবিকারী বা প্রদান বা গ্রহণে
সহায়তাকারীকে সাজা প্রদান করার জন্য ৩ ও ৪ ধারায় দে র
বিধান রাখা হয়েছে। ৩ ও ৪ ধারামতে সর্বনিম্ন দ এক বছর
কারাদ ও সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদ এবং সঙ্গে জরিমানার
বিধানও রয়েছে।
প্রতিটি আইনই করা হয় কিছু সুনির্দিষ্ট বর্তমান বা
ভবিষ্যতে উদ্ভব হতে পারে এ ধরনের কিছু বিষয়কে মাথায়
রেখে। আইনটির উদ্দেশ্যই থাকে সেই বিষয়গুলোকে
পরিপূর্ণভাবে রোধ বা প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করার
আলোচ্য আইনটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এ আইনটি যেমন বহুল
ব্যবহৃত, তেমনি এর অপব্যবহারের উদাহরণও কম নয়। এ আইনের
অধীনে আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেল কর্তৃক সরবরাহকৃত
তথ্যমতে প্রস্তুতকৃত বেশির ভাগ অভিযোগই মিথ্যায় ভরপুর
থাকে। অহেতুক হয়রানি করার জন্য স্বামীর পরিবারের
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাইকে আসামি করে দেওয়া হয়। মনগড়া যে
বক্তব্য বা ঘটনার তারিখ উল্লেখ করা হয়, সাক্ষ্য
প্রদানকালে সেটি হয়তো স্বয়ং ফরিয়াদিই ভুলে বসে থাকেন।
স্বয়ং অভিযোগকারিণী যদি মামলার ঘটনার তারিখ, সময়,
স্থান এবং অভিযুক্তদের ঘটনা সংঘটনে ভূমিকা প্রভৃতি
বিষয় স্পষ্টভাবে বলতে না পারেন, তবে অন্য সাক্ষীরা কী
বলবেন বা মামলার রায়ে কী হবে সেটি সহজেই অনুমেয়। এক
ব্যক্তি তার নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে যতটা
সাবলীল, স্বতঃস্ফূর্তভাবে বর্ণনা করবেন, বানানো বা
সাজানো ঘটনার ক্ষেত্রে ঠিক ততটাই মুখস্থ বিদ্যার ওপর
নির্ভর করবেন, যা তাঁর বাচনভঙ্গি, আচরণকৃত বক্তব্য এবং
জেরার বক্তব্য থেকে স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হবে। একজন
বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট যদি এ ধরনের সাক্ষীকে গভীরভাবে
পর্যবেক্ষণ করেন, তবে সহজেই সাক্ষী বানানো বা মুখস্থ
সাক্ষ্য দিচ্ছেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ,
মনোমালিন্যকে পুঁজি করে অন্যপক্ষকে শায়েস্তা বা শিক্ষা
দেওয়ার জন্য এ আইনের অধীনে মামলা করা হয়।
একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যখন কোনো আইনি আশায় কোনো
আইনজীবীর দ্বারস্থ হন, তখন আইনজীবীর দায়িত্ব হলো ওই
ব্যক্তির বক্তব্য গভীরভাবে শোনা এবং ওই বক্তব্যের
কতটুকু আইনি কাঠামোয় পড়ে, কতটুকু পড়ে না, সে সম্পর্কে
সিদ্ধান্ত নেওয়া। অহেতুক আসামির সংখ্যা বৃদ্ধি
অভিযোগের সত্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
প্রথম ঘটনাচিত্রের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ কৌঁসুলি রুহিকে তাঁর
জিঘাংসা চরিতার্থ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আইনি
কাঠামোর মধ্যেই রুহি সে সুযোগ নিয়েছেন। ফলে একটি
পরিবারের সব সদস্য আসামি হয়েছেন। ব্যাপারটি এমন নয় যে
একটি পরিবারের সব সদস্য অপরাধ করতে পারেন না। কিন্তু
মামলার অভিযোগ এবং সামাজিক বাস্তবতা সাক্ষ্য আইনের ১১৪
ধারামতে বিবেচনা করলে অভিযোগের সঙ্গে সব সদস্যের
সম্পৃক্ততা বিরল ক্ষেত্র ছাড়া অসার বলে প্রতীয়মান হয়।
দ্বিতীয় ঘটনাচিত্রটি যৌতুক নিরোধ আইন প্রয়োগ হওয়ার মতো
একটি উপযুক্ত অভিযোগ। তৃতীয় ঘটনাচিত্রটি এ আইনের
অপপ্রয়োগের একটি নমুনা। বিজ্ঞ কৌঁসুলির এই ক্ষেত্রে
উচিত ছিল স্বাতীর বক্তব্য অনুসারেই পারিবারিক আদালতে
দেনমোহর প্রাপ্তির জন্য মামলা করা। একটি ফৌজদারি আদালত
কখনোই দেনমোহর আদায়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে না।
মামলার ফরিয়াদি (স্বাতী) স্পষ্টই আইনটির অপপ্রয়োগ
করেছেন এবং বিজ্ঞ কৌঁসুলিই সে সুযোগ করে দিয়েছেন। এ
ক্ষেত্রে বোঝা উচিত, দেওয়ানি আদালতই হলো দেনমোহর
প্রাপ্তির উপযুক্ত স্থান। ফৌজদারি আদালত কখনোই স্বাতীকে
তাঁর দেনমোহর উদ্ধার করে দিতে পারবে না। ফৌজদারি আদালত
অপরাধের বিচার করেন, অন্য কিছুর নয়। মামলার ফরিয়াদি
পক্ষ সাধারণত অন্যপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগের অপকৌশল
হিসেবে বিষয়টি সম্পূর্ণ দেওয়ানি প্রকৃতির জেনেও ফৌজদারি
আদালতে মামলা করে বসেন।
ওই আইনের সব ধারা জামিন অযোগ্য। অনেক সময় আসামিপক্ষের
বিজ্ঞ কৌঁসুলি দেনমোহর পরিশোধ করবেন, ঘরে তুলে নেবেন
বা আপস করে ফেলবেন বলে জামিন প্রার্থনা করেন। অন্যপক্ষ
হয়তো বিরোধিতা করে। অনেক সময় আদালত ওপরের কারণগুলো
উল্লেখ করে অন্তর্র্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। পরে
আপস না হলে স্বামী বেচারাকে শর্ত পূরণ না করায় জামিন
বাতিল করে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যা সম্পূর্ণ বে আইনি।
কী কী কারণে জামিন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করা যায় তার
সুনির্দিষ্ট উপাদান আছে, কেস ল’ রয়েছে, যা অনুসরণ করা
যুক্তিযুক্ত। আদালতকেও মনে রাখতে হবে, সাজা হিসেবে কখনো
জামিন স্থগিত রাখা যায় না বা জামিনে অযথা অকারণ
শর্তারোপ সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযুক্তকে ১৫-৩০ দিন জেলে
রেখে আপস করতে বাধ্য করা বা দেনমোহর পরিশোধ করানো
কখনোই কোনো ফৌজদারি আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।
এই ধরনের বিষয়গুলো ফৌজদারি আদালতের ক্ষমতার অপব্যবহার
বৈ অন্য কিছু নয়। জেলে গিয়ে যদি ফারুকী (তৃতীয়
ঘটনাচিত্র) ৯ লাখ টাকা দেনমোহর পরিশোধ করেন তবে
স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেকে হয়তো আইনটির বহুবিধ ব্যবহারে
চমৎকৃত, উৎসাহিত হবেন। তাতে হয়তো অযথাই যৌতুক দাবিকারী
অভিযুক্তের সংখ্যা সমাজে বৃদ্ধি পাবে এবং প্রকৃত অপরাধী
সাক্ষ্য, আইন প্রভৃতির অসামঞ্জস্যতার সুযোগ নিয়ে
সমাজের মুক্ত হাওয়ায় বিচরণ করবে। আবার হয়তো একই অপরাধ
করবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অপপ্রয়োগের কারণে বাস্তবে
এগুলো সংঘটিত হচ্ছে।
লেখক : সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
বর্তমানে গবেষণা কর্মকর্তা
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা
Top
|
|