BHRC By-lawsBHRC Press ReleaseBHRC By-lawsBHRC ConferenceIHRCIRD ActivitiesLegal StatusBHRC BoardBHRC BranchesElection Monitoring Acid and Trauma VictimsBHRC BrochureBHRC Forms

ContactHOME

 

 

 

Cover August 2015

English Part August 2015

 

Top

Bangla Part

         নারী ও শিশু সংবাদ        পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

স্বাস্থ্য সংবাদ          আইন কনিকা

 

বিবিধ সংবাদ

 

                                 

 

মানবাধিকার রিপোর্ট জুলাই ২০১৫
আগষ্ট’ ১৫ মাসে মোট হত্যাকান্ডের সংখ্যা ১৯৬ জন

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকারের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। জরিপ অনুযায়ী ২০১৫ সালের আগষ্ট মাসে সারা দেশে মোট হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় ১৯৬টি। এ ধরনের হত্যাকান্ড অবশ্যই আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। এই হত্যাকান্ডের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। আগষ্ট মাসে গড়ে প্রতিদিন হত্যাকান্ড ঘটে প্রায় ৬.৩২ জন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের অবশ্যই অধিক দায়িত্ববান হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে হত্যাকান্ড কমিয়ে শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান এবং মানবাধিকার সম্মত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্তরে আইনের শাষণ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র এ ধরণের ক্রমবর্ধমান হত্যাকান্ড হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগের জরিপে দেখা যায়, ২০১৫ সালের আগষ্ট ‘১৫ মাসে হত্যাকান্ডের শিকার ১৯৬ জন।
এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা ৬ জন, পারিবারিক সহিংসতায় হত্যা ৩৭ জন, সামাজিক সহিংসতায় হত্যা ৪৩ জন, রাজনৈতিক কারণে হত্যা ১০ জন, আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে হত্যা ২৪ জন, বিএসএফ কর্তৃক হত্যা ০২ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যু ০৩ জন, গুপ্ত হত্যা ০৫ জন, রহস্যজনক মৃত্যু ৫১ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ০৮ জন, অপহরণ হত্যা ০৭ জন।
বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহতের মধ্যে পরিবহণ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২১৮ জন, আত্মহত্যা শিকার ২৫ জন, ধর্ষণের শিকার ৫৮ জন, যৌন নির্যাতনের শিকার ১০ জন, এসিড নিক্ষেপের ৪ জন, সাংবাদিক নির্যাতন ০২ জন।


Top

 

 

সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ধর্ম নেই, দেশ নেই : প্রধানমন্ত্রী

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস বুম বার্নিকাট এ কথা বলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য পুনরুল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের কোন ধর্ম ও দেশ নেই। তিনি বলেন, আমি নিজে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং বাংলাদেশের জনগণকে এ জন্য অনেক ভুগতে হয়েছে। মানবজাতিকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষা করতেই হবে। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সর্বাধিক সৈন্য প্রেরণকারী দেশ। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা বিভিন্ন গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে শান্তিরক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে অস্ত্র উৎপাদন হ্রাসের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষর ও বাংলাদেশ-চীন-ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোর প্রতিষ্ঠার চলমান উদ্যোগ এবং ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তির কথা উল্লেখ করেন।
প্রায় আধা ঘণ্টা স্থায়ী এ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় জিএসপি শব্দটি উচ্চারিত না হলেও মার্শা স্টিফেনস বুম বার্নিকাট বলেন, এটা কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়। আমরা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে সহায়তা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ যাতে এই খাতের চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, শর্ত পূরণের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অবস্থানের প্রশংসা করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পেও উন্নতি করছে। বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশিদের এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের ভূয়সী প্রশংসা করেন বার্নিকাট। বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনন্য সাফল্যেরও প্রশংসা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কেবল পোশাক খাতে নয়, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও জাহাজ নির্মাণেও উন্নতি করছে বাংলাদেশ। তিনি নারীর ক্ষমতায়নেও বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি লাভের প্রশংসা করেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যাবাসন সম্পর্কে মার্শা স্টিফেনস বুম বার্নিকাট বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। এটি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি সম্পাদন ও ছিটমহল সমস্যা সমাধান হওয়ার প্রশংসা করেন বার্নিকাট। বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব পালনেও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বার্নিকাট বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়েও প্রশংসা করেন। সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, মার্কিন দূতাবাসের চিফ অব মিশন ডেভিড মিল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে। ওই সুবিধা ফেরত পাওয়ার জন্য পরে বাংলাদেশকে ১৬টি শর্ত দেয়া হয়। ইতিমধ্যে অধিকাংশ শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ১২২টি দেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা নবায়ন করলেও ওই তালিকায় বাংলাদেশ আসেনি। এর প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, শর্ত পূরণের পরও রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র।

Top

 

অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের বদ্ধ কপাট খুলে দিন : খালেদা

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে একে একে কারাগারে ভরে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতে সরকার হীনষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল শুক্রবার রাতে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের দলের তরফ থেকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বারবার ব্যক্ত করা হয়েছে যে বিএনপি কখনো সন্ত্রাসের রাজনীতি করেনি এবং সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়ও দেয়নি। এটা সবারই জানা যে বিএনপি দেশের অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ পথে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু আন্দোলন চলাকালে সরকারি এজেন্টরা ও শাসকদলীয় লোকরাই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে তার দায় বিরোধী দলের কাঁধে চাপানোর অপপ্রয়াস নিয়েছিল, তা কারোরই অজানা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিগত আন্দোলনে সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর সঙ্গে শাসকদলীয় ক্যাডারদের জড়িত থাকার ঘটনা তখনকার বহু পত্রপত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছিল। অথচ বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে শাসকগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের চরিত্র হননের হীনষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের হয়রানি করেই চলছে। সরকারের এ ধরনের ফ্যাসিবাদী-অগণতান্ত্রিক ভূমিকা ও দুর্বৃত্তায়ন এখন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে, যার পরিণতিতে দেশের মানুষের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম।’
বিএনপিপ্রধান বলেন, “সরকারকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে তারা কোনোভাবেই জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। দুঃখের বিষয়, পাঁচ বছর ক্ষমতায় বহাল থাকার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে ‘জনগণই যে সকল ক্ষমতার উৎস’ সে সত্য কথাটি সরকার ক্রমাগত অস্বীকার করে চলেছে। কারণ এ সরকার জানে, তাদের সাথে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ নেই। তাই তাদের অনৈতিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে গিয়ে আজ তারা মরিয়া হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি দমন-নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। আমি সরকারকে আরো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, দমন-নিপীড়ন ও গ্রেপ্তার করে পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে পারেনি।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, রুহুল কবীর রিজভী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী আহমেদ রুমী, পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক মোজাহার আলী প্রধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর মেয়র জি কে গউস, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন খান, হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নূপুর, বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানসহ আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তিদানের মাধ্যমে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে, দলন-নিপীড়নের পথ থেকে সরে এসে মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অবরুদ্ধ গণতন্ত্রের বদ্ধ কপাট খুলে দেওয়ার আহ্বান জানাই।

Top

 

 


বাগ্যুদ্ধে অস্থির সরকার

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ, বক্তব্য পাল্টা বক্তব্যে অস্থির ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কথন-অতিকথনে ফের আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিতর্কের ঝড় বইছে। শুধু বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থায় নয়, অতীত ইতিহাস টেনে এনেছেন তারা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে নিজ দলের উপদেষ্টা, এমনকি ১৪-দলীয় জোটের শরিক দল জাসদের সঙ্গেও চলছে তুমুল বিতর্ক। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ক্রসফায়ার ইস্যুতে মন্ত্রী ও নেতারা পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। নেমেছেন বাগ্যুদ্ধে। রাজধানীর হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আরজুর ‘ক্রসফায়ারে’ মৃত্যুর বিষয় নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এ ইস্যুতে র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। জিএসপি সুবিধা পাওয়া না পাওয়া নিয়েও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর মধ্যে ভিন্ন মন্তব্য পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা নিয়ে শেখ সেলিম ও কে এম সফিউল্লাহ বাহাস : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে ত্রিমুখী বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করেছেন। ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শোক দিবসের এক আলোচনায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কে এম সফিউল্লাহকে ‘ইডিয়েট’ ও ‘বেয়াদব’ বলে আখ্যায়িত করেছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘ওই যে একটা ইডিয়েট সফিউল্লাহ, মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। আর্মি চিফ ছিল। মণি ভাই মারা যাওয়ার দেড়-দুই ঘণ্টার পর বঙ্গবন্ধু মারা গেলেন। কেউ বলে ৬টা ৪৭ মিনিট। বঙ্গবন্ধু সবার কাছে ফোন দিয়েছেন। কর্নেল শাফায়াত ছুটে আসছিল। আর উনি (কে এম সফিউল্লাহ) বসে বুড়ো আঙুল চুষছেন’ শেখ সেলিম বলেন, ‘এটা তো কোনো সেনা অভ্যুত্থান ছিল না। বিপথগামী সেনা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনারা এটা করেছিল। যখন তারা অস্ত্র নেয়, তখনই তাদের কোর্ট মার্শাল হওয়া উচিত ছিল। উনি (সফিউল্লাহ) এগিয়ে আসলেন না। কেন ওই দিন বঙ্গবন্ধুর বাসার দিকে শাফায়াত জামিলকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচখানা, দশখানা ট্রাক আসেনি। কিসের জন্য সফিউল্লাহ নীরব ছিলেন’ কে এম সফিউল্লাহকে উদ্দেশ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘উনি বঙ্গবন্ধুকে বলেছেন, আপনি একটু বাসা থেকে বেরিয়ে যাইতে পারেন না’ প্রশ্ন রেখে শেখ সেলিম বলেন, ‘ক্যান, তুমি আসতে পারলা না তখন তো তুমি আর্মি চিফ ছিলা।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ৬টার পরে মারা গেলেন আর সফিউল্লাহ রেডিও স্টেশনে গিয়ে বিপথগামী সৈনিকদের সঙ্গে গেল। সে কেন অর্ডার দিল না, যারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে গেছে, তারা আর ঢুকতে পারবে না। এরা ক্যান্টনমেন্টে ঢুকলে এদের অ্যারেস্ট করা হোক। অ্যারেস্ট করা হলো না। ডালিম গেল, নূর গেল, এরা কিন্তু সবাই অবসরপ্রাপ্ত। ওইখানে গিয়ে তাকে (সফিউল্লাহ) নিয়ে আসল। সে বলল, খুনি মোশতাক সরকারের প্রতি সে আনুগত্য স্বীকার করবে। কিন্তু রক্তের সঙ্গে যারা বেইমানি করছে তারা কখনো ভালো থাকতে পারে নাই।’ এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, ‘খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে শেখ সেলিমের আঁতাত ছিল।’ তিনি বলেন, ‘আমাকে বঙ্গবন্ধু ফোন করেন নাই। আমি সোয়া ৫টার দিকে জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গেই আমি তাকে ফোন করি। ওই সময় সাধারণত ট্যাঙ্কগুলো মাসে দুবার নাইট ট্রেনিং করত। ঠিক ১৫ তারিখই নাইট ট্রেনিং ছিল। ওই ট্রেনিংয়ের জন্য তারা দেখিয়ে বেরিয়েছে, যাতে কারও মনে কোনো সন্দেহ না আসে। আমি যখন জানতে পেরেছি, তখন আমার করার কিছু ছিল না। সেখানে গিয়ে মৃতদেহ দেখে লাভ কী হতো। আমি যদি সেদিন মারা যেতাম তাহলে লাভ কী হতো!’ তিনি বলেন, ‘সেলিম কী বলে আই ডোন্ট কেয়ার। আমি তো মনে করি খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে শেখ সেলিমেরও আঁতাত ছিল। নইলে সে কেন ১৫ তারিখ আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে গিয়েছিল। ১৫ আগস্ট আমার কোনো ভুল ছিল না। সেদিন যা হয়েছে আমার কোনো করণীয় ছিল না। ওই সময় যদি সেনাবাহিনী ধাওয়া করে সেনানিবাসের দিকে ঢুকত, প্রতিরোধ করতে পারত কেউ কথা ঠিকই বলা যায়, তবে কাজের কাজ কিছুই হতো না।’

Top
 

 


 

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে নওয়াজত্র

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের পক্ষ নিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। পাকিস্তান-ভারত কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠক বাতিল হওয়ার পর সেই উত্তেজনাকে একটু বাড়িয়ে দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। নওয়াজ শরিফ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কাশ্মীরি নেতারা কোনো তৃতীয় পক্ষ নয়। বরং কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে ওদের মতামতটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক মাস আগে উফায় শান্তি প্রক্রিয়ার নতুন সূচনার যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, তা বানচাল হয়ে গিয়ে ভেস্তে গেছে ভারত-পাকিস্তান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের উপস্থিতি মেনে নিতে চায়নি নয়াদিল্লি। কিন্তু, পাকিস্তানের সহানুভূতি রয়েছে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের পক্ষেই। গত ২৬ আগস্ট বিবৃতিতে সে কথাই স্পষ্ট করে দিলেন পাক-প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। দ্য ডন।


Top
 

ইউরোপে হামলার ছক আইএসের

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ইউরোপে হামলার পরিকল্পনা করছে আইএস জঙ্গিরা। এরই মধ্যে ৮০০ জঙ্গি ব্রিটেনে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্তও করে ফেলেছে। স্প্যানিশ সন্ত্রাসবিরোধী অধিদফতরের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই মুহূর্তে আল কায়েদা ও আইএসের অনেক জঙ্গি ইউরোপে অবস্থান করছে। শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে হুকুমের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। ধারণা করা হচ্ছে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে সাড়ে ৩০০ ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরেছে। স্প্যানিশ গোয়েন্দা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এই লোকগুলো খুব ভালো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। তবে তারা আইএসের প্রতি বিশ্বস্ত ও যেকোনো কিছু ঘটিয়ে দিতে প্রস্তুত। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে, বেশিরভাগ জঙ্গিরই চালচলন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এদিকে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো বলেছে, সিরিয়ার পালমিরায় প্রাচীন বাল শামিন মন্দির ধ্বংস একটা যুদ্ধাপরাধ। আইএস গত মে মাসে পালমিরার নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকে মন্দিরটি ধ্বংস করা নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। একে প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আধুনিক শহর পালমিরা স্থানীয়ভাবে তাদমুর হিসেবে পরিচিত। পালমিরা মানে তালগাছের শহর। রাজধানী দামেস্ক থেকে ২১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ও পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আল জাউর শহরের মধ্যবর্তী সড়কের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এটি অবস্থিত। কাছেই মরুভূমির প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে যাকে ইউনেস্কো ও অন্যরা প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করে। প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো রোমান যুগের শিল্পস্থাপত্যে তৈরি বাল শামিন মন্দিরটি জাতিসংঘ স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। মন্দিরটি ১৭ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করা হয়েছিল। ১৩০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট হাদ্রিয়ানের আমলে মন্দিরটির সম্প্রসারণ করা হয়।



বিচারবহির্ভূত হত্যা মানা যায় না
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েইন বলেছেন, বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যা মানা যায় না। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিচার করে দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।
গত ২৬ আগস্ট ব্রিটিশ হাইকমিশন ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সোয়েইন এ মত দেন। বাংলাদেশ সফরের শেষ দিনে গতকাল তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। ২৩ আগস্ট প্রথম ঢাকায় আসেন তিনি। এ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে দেখা করেন। যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প দেখতে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল ও রাজধানীর কড়াইল বস্তিতেও যান তিনি। এ ছাড়া তৈরি পোশাক কারখানাও তিনি ঘুরে দেখেন।
ডেসমন্ড সোয়েইন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ৩০ লাখ পাউন্ডের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। আন্তর্জাতিক খাদ্য কর্মসূচি ও যুক্তরাজ্যের অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারকে সহায়তায় ঘূর্ণিঝড় কোমেন এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ হাজারের বেশি বন্যাদুর্গতকে সহায়তায় এ অর্থ খরচ করা হবে।
বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সোয়েইন বলেন, ‘তিন দিনের সফরের ওপর নির্ভর করে এ বিষয়ে মূল্যায়ন করার মতো অবস্থানে আমি নেই। আমি শুধু বলতে পারি, এ ধরনের প্রতিটি অপরাধের তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচার করা জরুরি। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষা করা উচিত। তাই বিচারবহির্ভূত হত্যা মানা যায় না। এ ধরনের অপরাধের তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও পুলিশের। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সমাজের কাজের ক্ষেত্র নিশ্চিত করার বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বা ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন লক্ষ্যে সুশাসন, স্থিতিশীল পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার মতো বিষয়গুলো যুক্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সোয়েইন বলেন, সক্রিয় নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যমসহ শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান, যা সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনবে-এমন একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ দেখতে চান তাঁরা।
বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে জানতে চাইলে সোয়েইন বলেন, ‘কীভাবে সেটি অর্জন করতে হবে, তা বলাটা আমার কাজ নয়। দেশটা আপনাদের এবং আপনাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং রাজনীতিবিদেরাই বিষয়গুলোর সুরাহা করে নেবেন।’
সুশাসন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কোনো কর্মসূচি নেবে কি না, জানতে চাইলে ডেসমন্ড সোয়েইন বলেন, ‘আপনাদের দেশ কীভাবে চলবে, বিদেশি রাজনীতিবিদ হিসেবে সেটি বলে দেওয়াটা আমার কাজ নয়। সমস্যার সমাধান বাংলাদেশের লোকজনকেই করতে হবে।’ তিনি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের (এমডিজি) বিভিন্ন সূচকে সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আশা করেন, এসডিজির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ একইভাবে সফল হবে।

 

Top
 



ব্যক্তিত্ব


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ মানুষের মধ্যে যিনি খুঁজেছেন ঈশ্বরকে, কুষ্ঠরোগীর সেবাকালেও যিনি ভাবতেন ঈশ্বরের সেবা করছেন- তিনি মাদার তেরেসা। নাম অ্যাগনেস গঞ্জা বয়াজু। তেরেসা সন্ন্যাস জীবনে নেওয়া নাম। জন্ম ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট বর্তমান মেসিডোনিয়ার রাজধানী স্কোপিয়েতে; তবে সন্ন্যাসজীবন গ্রহণের তারিখ ২৭ আগস্টকেই জন্মদিন মানতেন। তিনি ছিলেন নিকোলো ও দ্রানা বয়াজুর কনিষ্ঠ সন্তান। বাবা আলবেনিয়ার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাত্র আট বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ হলে সংসার হাল ধরেন মা। ছোট অ্যাগনেসকে রোমান ক্যাথলিক আদর্শে লালন-পালন করবেন বলে মা ঠিক করলেন। মিশনারিদের জীবন ও কাজকর্মের গল্প শুনতে ভালোবাসতেন তিনি। ১২ বছর বয়সে নিজেই ধর্মীয় জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নেন, ১৮ বছর বয়সে ১৯২৮ সালে গৃহত্যাগ করে মিশনারি হিসেবে ‘সিস্টার্স অব লরেটো’ সংস্থায় যুক্ত হন। পরের বছরই তাঁকে ধর্মসেবার কাজে ভারতে পাঠানো হয়।
১৯৩১ সালে প্রথম, তারপর ১৯৩৭ সালে কলকাতায় কনভেন্ট স্কুলে পড়ানোর সময় চূড়ান্তভাবে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন, সিস্টার তেরেসা হয়ে ওঠেন মাদার তেরেসা। উপমহাদেশে মন্বন্তর ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু তাঁকে বিচলিত করে। ১৯৪৮ সালের ১৭ আগস্ট কনভেন্ট ছেড়ে তিনি বেরিয়ে পড়েন, ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য হাত পাতেন দ্বারে দ্বারে। কুষ্ঠরোগী থেকে শুরু করে যুদ্ধাহত শিশু, দুস্থ, নিঃসহায় সবার পাশে তিনি দাঁড়িয়েছেন, মানবতার মধ্যেই ঈশ্বরের সন্ধান করেছেন। ১৯৫০ সালে গড়েন ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’, যা আজ বিশ্ববিস্তৃত। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশে এসে বীরাঙ্গনা আর অনাথ শিশুদের জন্য গড়ে তোলেন চ্যারিটি মিশন। বাংলাদেশে আর্তমানবতার সেবায় তিনি বারবার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সর্বশেষ এসেছিলেন ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর। ১৯৭৯ সালে তাঁকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়। নোবেল পুরস্কারের অর্থ পেয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ভালোই হলো, এই টাকায় ফুটপাতের মানুষগুলোর জন্য কিছু করা যাবে।’ প্রায় ৮০০ পুরস্কার পেয়েছেন জীবনকালে। বিশ্ব মানবতার প্রতীক এই মহীয়সী ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

Top
 

চীনের ১১টি মজার তথ্য, শুনে আপনি অবাক হবেন !
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
আমাদের প্রতিবেশী দেশ চীন। আর এই চীন বিখ্যাত নানা কারনে। আমরা প্রত্যেকেই চীন সম্পর্কে অনেক তথ্য জানি। তারপরও এমন কিছু মজার তথ্য থেকে যায় যেগুলো আমাদের অনেকের কাছেই অজানা। জানা অজানার নেশা থেকে সৃষ্ট উম্মাদনা তাড়া করে আমাদের। তাই শুধু মাত্র মুক্তমঞ্চ.কমের পাঠকদের জন্য আমরা নিয়ে আসলাম চীন সম্পর্কে ১১টি মজার তথ্য , যা আপনি জানেন না।
(১) সম্প্রতি চীনা কর্তৃপক্ষ অনেক যায়গায় পাহাড়ার জন্য কুকুরের পরিবর্তে রাজ হাঁস নিযুক্ত করেছে। কেননা রাজা হাঁস যাকে তাড়া করে সেই জানে এটার ক্ষীপ্রতা কেমন!
(২) প্রতিবছর চীনে এক কোটি ত্রিশ লাখ শিশু এবোর্শনের মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়।
(৩) বেইজিং এ ট্রাফিক জ্যামে ক্ষতির পরিমান ১১.৩ বিলিয়ন ডলার।
(৪) বেইজিং এ বাতাস এতটাই দুষিত, যে প্রতিদিন ১ প্যাকেট সিগারেটের খেলে যে ক্ষতি হয়, বেইজিং এর বাতাসে একদিন শ্বাসপ্রশ্বাস নিলে সেই পরিমান ক্ষতি হয়।
(৫) আপনি জানেন কি? টয়লেট পেপার প্রথম চীনে আবিষ্কৃত হয়েছিলো শুধু মাত্র সে দেশের রাজা টয়লেটে ব্যবহার করবেন বলে।
(৬) ফরচুন কুকি যেটা আমরা মনে করি চীনে আবিষ্কৃত হয়েছিলো কিন্তু আসলে সেটা আবিষ্কৃত হয়েছে আমেরিকায়।
(৭) নাবালক ছেলেদের মুত্র দ্বারা সিদ্ধ করা ডিম খাওয়াকে পবিত্র কাজ মনে করা হয়।
(৮) সামরিক বাহিনীর অফিসারদের কোর্টে পিন দেয়া থাকে, যাতে তারা দাড়ানোর সময় মনযোগ সহকারে দায়িত্ব পালন করে। সামান্য হেলে পরলেই বলি হয়ে যাবে!
(৯) তারা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের হাটার জন্য আলাদা লেন তৈরি করেছে।
(১০) তারা এলিস ইন ওয়ান্ডার ল্যান্ড মুভিটা নিষিদ্ধ করেছিলো এই কারনে যে, মুভিতে পশুপাখিরা মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারে।
(১১) পুলিশদেরকে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় হাত উচিয়ে রাখার ট্রেনিং দেয়া হয়। তাহলে বুঝুন আসল ডিউটির সময় একেকটা অফিসার কি রকম সিরিয়াস থাকে!
Top

সারাদেশে শিশু-কিশোর হত্যাকান্ড ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানবাধিকার কমিশনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সারাদেশে শিশু-কিশোর হত্যাকান্ড ও নির্যাতনের আশংকাজনক হারে বৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে পাবনা জেলার চাটমোহর পৌর সদরের থানামোড় আমতলায় আজ (৮ আগস্ট) বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। “শিশু-কিশোরদের প্রতি কেন এই নির্মম বর্বরতা?” শিরোনামে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চাটমোহর উপজেলা ও পৌর শাখা।
সংগঠনের চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি ও স্থানীয় সময় অসময় পত্রিকা সম্পাদক কেএম বেলাল হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বৃহত্তর পাবনা আঞ্চলিক শাখা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ত. ম. শহিদুজ্জামান নাসিম, সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব কে এম আনোয়ারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (দায়িত্বপ্রাপ্ত) নূরুল করিম খান আরজ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মালেক, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র প্রফেসর আব্দুল মান্নান, আটঘরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি কে. এম. রইচ উদ্দিন রবি, মহিলা ডিগ্রী কলেজ অধ্যক্ষ শরীফ মাহমুদ সরকার সনজু, বড়াল নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এস. এম. মিজানুর রহমান, চাটমোহর প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক চলনবিল সম্পাদক রকিবুর রহমান টুকুন, দৈনিক আমাদের বড়াল সম্পাদক হেলালুর রহমান জুয়েল, সাপ্তাহিক চাটমোহর বার্তা সম্পাদক এস. এম. হাবিবুর রহমান, পৌর বিএনপি সভাপতি এ. এম. জাকারিয়া, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট গৌর চন্দ্র সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি শ্রী জয়দেব কুন্ডু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম কালু, উপজেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জোহা, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান মোন্নাফ, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মোত্তালেব হোসেন, উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ জাকির হোসেন, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সাজেদুর রহমান মাষ্টার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইদুল ইসলাম, পৌর যুবদল সভাপতি শেখ জিয়ারুল হক সিন্টু, উপজেলা প্রজন্ম দল সভাপতি আসাদুজ্জামান লেবু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইদুল ইসলাম পলাশ, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়াহিদ বকুল, উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন, নিহত শিশু আব্দুল্লাহ আল নূরের পিতা মোঃ আবুল হোসেন, নিহত শিশু আয়শা হুমায়ারা জিমের পিতা মোঃ আব্দুল বাসেদ, অপহৃত শিশু রনি সরকারের মা মোছাঃ শিল্পী খাতুন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চাটমোহর উপজেলা শাখার নির্বাহী সদস্য শ্রী জয়দেব কুন্ডু গনো, পৌর শাখার সহ-সভাপতি খন্দকার হোসনে আরা হাসি, পৌর শাখার সভাপতি মোঃ নূর-ই হাসান খান ময়না, শিক্ষার্থী আসলাম হোসেন প্রমূখ।
সভায় বক্তাদের কন্ঠে স্থানীয় ৪ বছরের শিশু আব্দুল্লাহ আল নূর, ১৮ মাস বয়সি শিশু আয়শা হুমায়ারা জিম হত্যাকান্ড, প্রায় ১৩ মাস আগে অপহৃত ৫ বছর বয়সি শিশু রনি সরকার সহ সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন, রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় কিশোর নাজিম, পাবনায় হরিজন সম্প্রদায়ের যুবক তুলসী দাস, খুলনায় শরীরে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু রাকিব হত্যা, বরগুনায় শিশু রবিউল ইসলাম আউয়াল হত্যাকান্ড সহ সারাদেশে শিশু-কিশোর হত্যাকান্ডের ঘটনা গুলোর বিবরণ উঠে আসে।
বক্তাগণ বলেন, “বর্তমানে শিশু হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা এতটাই বেড়ে গেছে যে, মায়ের পেটেও শিশুরা আজ নিরাপদ নয়। একদল বিবেক বর্জিত অমানুষ মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে এবং বিভিন্ন পন্থায় সম্পূর্ণ নির্দয়ভাবে শিশু-কিশোরদের হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ক্রমেই বাড়িয়ে তুলেছে। অবস্থার পরিবর্তনে পুলিশ বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে, জনগণকে তৎপর হতে হবে, রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়। শিশু-কিশোর হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই শিশু নির্যাতনের ঘটনা হ্রাস পেতে পাবে। বিশেষ আদালত স্থাপন করে হলেও শিশু-কিশোর হত্যা ও নির্যাতনকারী মানুষ নামধারী পশুদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”


Top
 

মানবাধিকার কমিশনের সিলেট আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত

 

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সিলেট আঞ্চলিক মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৫ইং ২২ আগস্ট ২০১৫ মৌলভীবাজার পৌর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হোসেন। কমিশনের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট কিশোরী পদ দেব শ্যামল এর সভাপতিত্বে বিশেষ সম্মানিত প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য এডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া এবং সংসদ সদস্য এডভোকেট সফুরা বেগম। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সমন্বয়কারী এম শহীদুর রহমান, যুক্তরাজ্যের ইস্ট ইংলিয়ানা রিজিওনালের সভাপতি তৌফিকুর রহমান লাকি, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন বাংলাদেশ চাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক দিল ফারজানা বীথি, কমিশনের সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী ড. আর. কে. ধর, কমিশনের সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আতাউর রহমান, সিলেট বিভাগীয় বিশেষ প্রতিনিধি মনোরঞ্জন তালুকদার, মৌলভীবাজার মানবাধিকার সম্মেলন-২০১৫ এর আহবায়ক শাহীন আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম চৌধুরী, মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা শাখার নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট আবু তাহের, হবিগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি এস,এম, খোকন প্রমুখ। সম্মেলনে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ এবং হবিগঞ্জ জেলা থেকে প্রায় সহস্রাধিক মানবাধিকার কর্মী যোগ দেন। সম্মেলনে বক্তারা সিলেট বিভাগের সর্বত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্ব আরোপ করেন। বক্তারা চলতি বছরের মধ্যে সিলেট বিভাগের প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

Top

 


গাইবান্ধায় নির্যাতিত কিশোরের পাশে মানবাধিকার কমিশন

 


গরুর চুরির অপবাদ দিয়ে শরীরে সিগারেটের ছ্যাকাসহ অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আরিফ মিয়া (১৩) নামে এক কিশোরের পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পরে তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামে। আরিফ ওই গ্রামের শহিদুল মিয়ার ছেলে। সে রাজমিস্ত্রির সহকারি যোগালি হিসেবে কাজ করে।
আরিফের মা জানান, গত ২৫ জুলাই রাতে বাড়ির পাশের একটি বিল থেকে মাছ ধরে তার ছেলে ফিরছিল। এ সময় ওই গ্রামের আইয়ুব আলী, মহসিন আলী, ময়নুল ইসলাম ও মধু মিয়াসহ কয়েকজন তার পথরোধ করে দাঁড়ায়। এ সময় মহসিন ও ময়নুল তাদের গরু চুরির জন্য আরিফকে দায়ী করে বলে, ‘তুই গরু চুরি করেছিস’। সে অস্বীকার করলে তারা ক্ষেপে যায়। গরু চুরির ওজুহাতে রাতভর তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তারা পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় এবং ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাকা দেয়। সাংবাদিকদেরকে আরিফ জানায়, প্রথমে তাকে রাস্তার উপর বেদম মারপিট করে। পরে তাকে একটি বাড়িতে আটক রেখে সারারাত তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তার দু’হাত বেঁধে বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ডান পা ভেঙে দেওয়া হয়। এছাড়া তার বাম পা ও ডান হাতে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়।
আরিফের বাবা শহীদুল মিয়া জানান, পেটের দায়ে তার ছেলে বাড়িতে বসে না থেকে রাজমিস্ত্রির সহকারি যোগালি হিসেবে কাজ করে। তার ছেলে চোর নয়। তিনি আরও জানান, টাকার অভাবে এখন চিকিৎসা করাতে পারছি না। এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামী করে আরিফের মা আনোয়ারা বেগম থানায় মামলা দিয়েছেন। রোববার দুপুরে প্রধান আসামী সাদেকুল ইসলাম (৪৫) আবুল কাশেম (৪০), ময়নুল ইসলাম (৩৫) ও আইয়ুব আলী (৩৮) সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাইবান্ধা জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিস মোস্তফা তোতন জানান, মানবাধিকার লংঘনের এ ঘটনাটি তাদের নজরে আসার পর তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় আনোয়ারা বেগম থানায় মামলা দায়ের করে। এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন কিশোর আরিফকে গত ০৫-০৮-২০১৫ তারিখে হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার সদস্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা কমিশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস.এম জহুরুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সর্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক এ,কে,এম সালাহ উদ্দিন কাশেম, এস.এম বিপ্লব ইসলাম, আসাদুজ্জামান রুবেল ও অমল চন্দ্র দাস। তারা আহত কিশোরের উন্নত চিকিৎসা ও সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নির্যাতিত কিশোর আরিফকে হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার সদস্যরা।
Top

ফুলপুরে মানবাধিকার
কমিশনের সভা অনুষ্ঠিত

 


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

আকরাম হোসাইন, ফুলপুর (ময়মনসিংহ)ঃ
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, ফুলপুর শাখার এক সভা গত ৮ আগস্ট ২০১৫ ফুলপুরস্থ কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, ফুলপুর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ থাকায় তার অনুপস্থিতিতে সভার সভাপতিত্ব করেন সহ সভাপতি আকরাম হোসাইন। ফুলপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ সিদ্দিকুর রহমানের পরিচালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ টি এম রবিউল করিম, প্রচার সম্পাদক মুখলেছুর রহমান, সদস্য আব্দুল গফুর, মোহাম্মদ আলমগীর, আফরোজ্জামান প্রমুখ। সভায় ফুলপুর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের আশু রোগমুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন আলহাজ সিদ্দিকুর রহমান। আকরাম হোসাইন, প্রতিনিধি, ফুলপুর, ময়মনসিংহ।

Top


এবার মহারাষ্ট্রে স্পেশাল ডাক ড. ইউনূসের

মানবাধিকার রিপোর্টঃ

ভারতের মহারাষ্ট্রে মৃতপ্রায় ক্ষুদ্র, স্বল্প ও মাঝারি উদ্যোগকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবার ডাক পড়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। রাজ্য সরকার এজন্য তাকে স্পেশালভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আগামী ৬ই সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে সেখানকার শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে প্রাণজাগানিয়া আলোচনা করবেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস। গতকাল এ খবর দিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি পত্রিকা দ্য হিন্দু। এতে বলা হয়, সামাজিক উদ্যোক্তা ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহারাষ্ট্রের ক্ষুদ্র বাণিজ্যকে পথনির্দেশনা দেবেন।
রাজ্যের মৃতপ্রায় ‘মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেজ’ (এমএসএমইস)-কে কীভাবে পুনরুজ্জীবিত করা যায় সে পরামর্শ দেবেন। এজন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসকে বিশেষ আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। সেখানে তিনি শুধু নিজের অভিজ্ঞতাই ভাগাভাগি করবেন না। একই সঙ্গে তিনি এমএসএমই খাতের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই রাজ্যে ক্ষুদ্র মাপের অসংখ্য শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। মোট ২.৫৪ লাখের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার ৫৪৯টি ইউনিট এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে রয়েছে অর্থের সংকট থেকে শুরু করে দক্ষ শ্রমিকের অপর্যাপ্ততা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী সুধীর মুঙ্গানতিওয়ার বলেন, প্রতি বাজেটে এসব খাতে আমরা বার্ষিক ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে যাচ্ছি। তা সত্ত্বেও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এসব শিল্প অসংখ্য সমস্যা মোকাবিলা করছে। এজন্য আমরা করণীয় সম্পর্কে ড. ইউনূসের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে চাই। জানতে চাই কীভাবে এ ক্ষেত্রে সফল হতে পারবো।
মুদ্রা ব্যাংক এ খাতে মূলধন সরবরাহ করবে। তা ছাড়াও রাজ্য এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আরও নানা পথ অনুসন্ধান করছে। তাই মন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস হবেন এ ক্ষেত্রে আমাদের চালিকাশক্তি, বলতে গেলে তিনি হবেন আমাদের অভিভাবক।

 
Top

নির্বাচনে কারচুপির আশংকা সুচির


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মিয়ানমারে ঐতিহাসিক জাতীয় নির্বাচন আগামী ৮ নভেম্বর। ২৫ বছর পরে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দেখা মিললেও এতে কারচুপির শংকা প্রকাশ করেছে দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সুচি। বুধবার এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নির্বাচনে কারচুপির বড় আশংকা রয়েছে। কিন্তু আমরা এ প্রতিযোগিতা থেকে পিছপা হব না।
সুচি বলেন, দেশের জনগণ আমাদের পক্ষে। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায়ও ভোটারদের হৃদয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে আমরাই জয় লাভ করব। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিবেশ আমাদের অনুকূলে থাকলেও ভোট গ্রহণে ক্ষমতাসীন দলের কারচুপি, দুর্নীতি সবকিছু নস্যাৎ করে দিতে পারে। ইতিমধ্যে, বিরোধীরা এনএলডি’র বিরুদ্ধে ধর্মঘেঁষা সাম্প্রদায়িক হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কট্টর বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের এ দলে ভেড়ার অজুহাত কাজে লাগিয়ে এ কুকর্ম করছে তারা। এছাড়া, সুচির আস্থাভাজন গণতান্ত্রিক সংগ্রামে পাশে থাকা নেতা শোয়েমানকে সংসদের স্পিকারের আসন থেকে সরিয়ে দেয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সামরিক বাহিনী তাদের অবস্থান মজবুত করতেই তাকে অপসারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এসব বৈরী পরিস্থিতির পরেও আশায় বুক বেঁধেছেন তিনি। কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের প্রচারণা গণতন্ত্রায়নের পথে ঊষার আলো জাগিয়েছে। এ জন্য বিজয় অতি নিকটে বলেও মনে করছেন তিনি।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রকন্যা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী ১৯ জুন ১৯৪৫ ইয়াংগুনে জন্ম। বাবা স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা অং সান ও মা দাউ খিন চি একজন নার্স ১৯৪৭ জে. অং সান গুপ্তহত্যার শিকার ১৯৬৯ ব্রিটেনের অক্সফোর্ডে গমন। ব্রিটিশ অধ্যাপক মাইকেল এরিসকে বিয়ে করেন ১৯৮৮
মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন। এনএলডি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ১৯৮৯, সুচি গৃহবন্দি হন (২০ বছর) ১৯৯০ নির্বাচনে এনএলডি’র জয়। জান্তা সরকারের প্রত্যাখ্যান ১৯৯১, শান্তিতে নোবেল জয়
১৯৯৯, স্বামী মাইকেল এরিসের মৃত্যু ২০০২, গৃহবন্দি থেকে মুক্তি ২০০৩, সুচির গাড়িবহরে হামলা, ৪ দেহরক্ষী নিহত। আবারও গৃহবন্দি ১৩ নভেম্বর ২০১০, গৃহবন্দি থেকে পুনরায় মুক্তি ২০১১, সাবেক সেনাপ্রধান থিয়েন সিয়েনের নেতৃত্ব আধাসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা ২০১২, পার্লামেন্ট আসনে বিজয়ী ২০১৪, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে সুচিকে নিষেধাজ্ঞা ৮ নভেম্বর ২০১৫ নির্বাচনে এনএলডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

 

Top
 

আইন নিজের হাতে নেবেন না
মানবাধিকার কমিশন ব্লগার নিলয় হত্যার নিন্দা জানিয়েছে


মানবাধিকার রিপোর্টঃ

গত ৭ আগস্ট ২০১৫ দুপুরে ব্লগার নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয় কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম সাদেক এবং মহাসচিব ড. সাইফুল ইসলাম দিলদার এই হত্যাকান্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছে। মানবাধিকার কমিশন ব্লগার নিলয় হত্যার ঘটনা তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছে। কমিশন মনে করে, কারও অনুভূতির উপর আঘাত দেয়া যেমন ঠিক নয়, অপরদিকে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে এ ধরনের নির্মম ঘটনা সংঘটিত করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। মানবাধিকার কমিশন ব্যক্তি ও বাগ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, কিন্তু কারও ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত করে প্রবন্ধ লেখা, বক্তব্য উপস্থাপন অথবা ব্যক্তিকে হেয় করে কল্পকাহিনী উপস্থাপন করাও মানবাধিকার লঙ্ঘন।


Top

রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎ পেলেন না জাতিসংঘ দূত

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনের আগে মানবাধিকারের অবস্থা মূল্যায়নের জন্য সম্প্রতি দেশটি সফর করা জাতিসংঘের দূত ইয়ানঘি লি তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে তাঁর পূর্বনির্ধারিত বৈঠক শেষ মুহূর্তে বাতিল করে দেওয়া হয়। দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক করার কথা ছিল। তাও বাতিল করা হয়। সরকারের সমালোচকদের সঙ্গে তাঁর দেখা করার সুযোগ ঘটলেও তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন আশপাশে নিরাপত্তাকর্মীরা ঘোরাফেরা করছিলেন। গোপন ক্যামেরার নজরদারিও ছিল। এসব নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের এই মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তা।
ইয়ানঘি লি সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘অনুমতির অভাব এবং বৈঠকে বিঘœ ঘটায় আমি যে লক্ষ্য নিয়ে মিয়ানমার গিয়েছিলাম, তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছি। এক বছর আগে জাতিসংঘের বিশেষ মানবাধিকার দূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ইয়ানঘির এটা ছিল মিয়ানমারে তৃতীয় সফর। তবে প্রতিবারই তাঁর কাজের পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়। এ বাধা সবচেয়ে বেশি ১৩ লাখ রোহিঙ্গার অধিকারের বিষয়টি দেখার ক্ষেত্রে।
ইয়ানঘি আগের দুইবার ১০ দিন করে মিয়ানমার অবস্থান করেছিলেন। এবারও তা চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে মাত্র পাঁচ দিন থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। বৈঠক বাতিল এবং প্রতিনিয়ত তাঁকে অনুসরণ করায় হতাশা জানিয়ে লি বলেছেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমি খবর পেয়েছি যে আগের সফরে আমার সঙ্গে যাঁদের কথা হয়েছে, গোপনে তাঁদের প্রত্যেকের ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁদের পর্যবেক্ষণ ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবার কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আমার পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করা হয়েছে।’
আগামী ৮ নভেম্বর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন। ২০১০ সালের নির্বাচনে রোহিঙ্গারা ভোট দিতে পারলেও এবার পারবে না। এ ব্যাপারে লি বলেন, ‘এটা এমন একটা ব্যাপার, যা রাখাইনে মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বৈষম্য তৈরি করবে।
Top

মালালার নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দুই দেহরক্ষী


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সবচেয়ে কমবয়সী নোবেলজয়ী পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইয়ের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দুই দেহরক্ষী নিয়োগ দিয়েছে ব্রিটেন। সন্ত্রাসী হুমকি পাওয়ার পর তার জন্য ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। মালালাকে নিয়মিত মন্ত্রী ও বিদেশী রাজনৈতিক ভিআইপিদের সমমানের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে ব্রিটিশ পুলিশ।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, ১৮ বছর বয়সী নারীশিক্ষা আন্দোলন কর্মী মালালার পুরস্কার-সম্মাননা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার নিরাপত্তা হুমকিও বাড়ছে। নিরাপত্তা সূত্র বলছে, নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ও নারীশিক্ষা কর্মী মানে বৈশ্বিক রাষ্ট্রদূত। এ জন্য তার প্রতি নজর দিতে হবে।
তবে মালালার নিরাপত্তা বা এ সংক্রান্ত কোনো অপারেশনের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। নারীশিক্ষা আন্দোলন নিয়ে কাজ করায় পাকিস্তানে হামলার শিকার হন মালালা। তারপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হয়।
তারপর থেকে বার্মিহামে বসবাস করে আসছে মালালার পরিবার। এরই মধ্যে নোবেল শান্তি পুরস্কারসহ বিশ্বের নামিদামি অনেক পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তিনি।


Top

৪৭ লাখ ভোটার পাবেন সাময়িক এনআইডি


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েও জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে না থাকায় ৪৭ লাখ ভোটারকে ‘প্রভিশনাল এনআইডি’ ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে অনুমোদন পেলেই শিগগির তা কার্যকর করবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ। সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারের বিষয়ে মতামত ও সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কমিশনের আগামী বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দুইশ টাকা থেকে এক হাজার টাকার ফি দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন, হারানো পরিচয়পত্রের ডুপ্লিকেট সংগ্রহসহ আনুষঙ্গিক সেবা নিতে হবে। দেশের ৯ কোটি ৬২ লাখেরও বেশি ভোটারের মধ্যে ৪৭ লাখের মতো নাগরিকের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। এরা গত দুই বছরে ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে।
৯ কোটিরও বেশি নাগরিকের হাতে থাকা লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র ফিরিয়ে নিয়ে শিগগির উন্নতমানের স্মার্ট এনআইডি দেয়ার কথাও রয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এসব নাগরিকের হাতে স্মার্ট কার্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসি।এ অবস্থায় নাগরিক দুর্ভোগ-হয়রানি রোধ ও সেবার বিকেন্দ্রীকরণ করার উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন এনআইডির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দীন। তিনি বলেন, ৪৭ লাখ ভোটারের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাদের যে কোনো জরুরি কাজে আমরা প্রভিশনাল এনআইডি দেয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছি। যাতে করে তারা অনলাইন লগ-ইন করে নির্ধারিত পরিচিতি নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন। এটা প্রিন্ট করে সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করবে। এক পৃষ্ঠার প্রিন্টভার্সনে কার্ডের ওপরভাগে সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র, নাম, পিতা, মাতা, জন্ম তারিখ, ঠিকানা ও যন্ত্রে পাঠযোগ্য বারকোড থাকবে। মাত্র এক বছরের জন্য এ ‘প্রভিশনাল এনআইডি’ ব্যবহার করা যাবে।
এনআইডি মহাপরিচালক জানান, ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হওয়ার নির্ধারিত রশিদে ফরম নম্বর ব্যবহার করেই এ সেবা নিতে পারবে জাতীয় পরিচয়পত্র বঞ্চিত যে কোনো নাগরিক। এ জন্য কোনো ফি লাগবে না।
এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, এখন যারা নতুন ভোটার হচ্ছে; কিন্তু পরিচয়পত্র দরকার পড়ছে তারা অনলাইন ভেরিফিকেশন হয়ে প্রভিশনাল এনআইডি নিতে পারবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, যন্ত্রে পাঠযোগ্য সাময়িক এ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট, ভর্তিসহ প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহারের সুযোগ পাবে।।

Top


৫ম বারের মত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত আক্তারুজ্জামান বাবুল


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মানিকগঞ্জ জেলাধীন শিবালয় উপজেলায় ১৯২৪ইং সালে প্রতিষ্ঠিত বরংগাইল গোপাল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে পর পর ৫ বার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা মহানগর (উত্তর) শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবুল। তিনি উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছেন। দরিদ্র ছাত্রদেরকে নিজ অর্থে টিউশন ফি প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো তৈরিসহ আর্থিক, শারীরিক এবং বিভিন্ন পরামর্শের মাধ্যমে মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।
Top

প্রতিবন্ধীরা নিয়োগ পাবেন গার্মেন্টস কারখানায়


 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সমাজের মূল স্রোতের বাইরে থাকা অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধীরাও এখন থেকে গার্মেন্টস কারখানায় নিয়োগ পাবেন। এ জন্য তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কারখানায় কাজ করার উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএতে আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা আসতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে ও গোবাল অটিজম বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন সায়মা হোসেন পুতুল উপস্থিত থাকবেন।
বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, অটিস্টিকরা সমাজের নিগৃহীত শ্রেণী। তাদেরকে সুন্দর ভবিষ্যত দেয়া ও সমাজের মূল স্রোতে আনার লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ। এ জন্য তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তবে কী প্রক্রিয়ায় শ্রম শক্তিতে নিয়ে আসা যায় সেটি নিয়ে কাল (আজ বৃহস্পতিবার) বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, সায়মা হোসেন পুতুল ছাড়াও বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার বেনোয়ে পিয়েরে লারামে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অটিজম বিশেষজ্ঞ ও তাদের প্রতিনিধি ছাড়াও গার্মেন্টস কারখানার মালিকরা উপস্থিত থাকবেন। এতে সায়মা হোসেন পুতুলের অটিজমের উপর একটি তথ্যবহুল বক্তব্য ও উপস্থাপনা থাকবে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবন্ধীদের কারখানায় নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বিজিএমইএ থেকে কারখানা মালিকদের অনুরোধ করা হবে। প্রতিটি কারখানা মালিকই যাতে অন্তত ৩ জন করে প্রতিবন্ধীকে নিজস্ব কারখানায় নিয়োগ দেন সেটি নিশ্চিত করতে সংগঠনটি চেষ্টা চালিয়ে যাবে। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন এস এম মান্নান কচি। তিনি বলেন, আমরা কারখানা মালিকদের কাছ থেকে প্রতিবন্ধীদের নিয়োগের বিষয়ে কমিটমেন্ট নেব।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সচল গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ৩৫ লাখ থেকে ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। এসব কারখানার কয়েকটিতে বর্তমানে স্বল্প সংখ্যক শারীরিক প্রতিবন্ধী কাজ করছেন। যদিও এর পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান বিজিএমইএ’র কাছে নেই। তবে এর সঙ্গে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরাও যাতে একই সুযোগ পান সেই লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিজিএমইএ’র এমন উদ্যোগকে অবশ্য বেশ কিছু কারখানা মালিক ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তবে তারা বলছেন, এটি যাতে লোক দেখানো না হয়। বরং প্রকৃত অর্থেই যাতে তাদের মূল স্রোতে আনা যায় সে জন্য এ উদ্যোগটি ফলপ্রসূ করতে কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।

 

 

মালয়েশিয়ায় আট বছরে সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশির মৃত্যু

 

মানবাধিকার রিপোর্টঃ
মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের অনেকেরই জীবনের চাকা থেমে যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ বছরের কোঠায়। গত সাড়ে আট বছরে দেশটিতে ৩ হাজার ৩১২ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। প্রায় সব ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, স্ট্রোক কিংবা অসুস্থতা।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, এমন মৃত্যুর অনেকাংশে কারণ কর্মক্ষেত্র ও থাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সব সময় দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত কাজের চাপ।
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মৃত ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশ থেকে যত লাশ আসছে, তার মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশই আসছে মালয়েশিয়া থেকে। এর মধ্যে গত বছর মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ৫১০ জন বাংলাদেশির মরদেহ, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। গত বছর মৃত্যুর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাঁদের ৩৩ শতাংশই স্ট্রোকে মারা গেছে। ৩৫ শতাংশ মারা গেছে হার্ট অ্যাটাক, যক্ষ্মাসহ নানা অসুখে। দুর্ঘটনায় মারা গেছে ২০ শতাংশ। বাকিরা অন্যান্য কারণে মারা গেছেন।
মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালে মালয়েশিয়া থেকে ২১৬ জন, ২০০৮ সালে ৪১১ জন, ২০০৯ সালে ৪৭২ জন, ২০১০ সালে ৩৬১ জন, ২০১১ সালে ৩৫৬ জন, ২০১২ সালে ৩৪০ জন, ২০১৩ সালে ৩৮৭ জন, ২০১৪ সালে ৫১০ জন ও ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ২৫৯ জন বাংলাদেশির লাশ এসেছে।
মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন ও ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র বলেছে, বছরে এমন দিন খুব কমই গেছে, যেদিন মালয়েশিয়া থেকে এক বা একাধিক বাংলাদেশির লাশ আসেনি। গত ১৭ জুলাই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে চারজন প্রবাসীর লাশ। তাঁরা হলেন রংপুরের রাশেদুল ইসলাম, ইহসানুল হক, ঢাকার আশিক আহমেদ ও আরিফা সুলতানা। চারজনই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
মাস দুয়েক আগে মালয়েশিয়া থেকে লাশ হয়ে দেশে ফেরেন ৩০ বছরের তরুণ মাদারীপুরের শরিফ মোল্লা। তাঁর মৃত্যুর কারণ লেখা আছে-স্ট্রোক। শরিফের ভাই গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘২০০৮ সালে শরিফ যখন মালয়েশিয়ায় যান, তখন তাঁর বয়স ছিল ২২ বছর। জীবিত অবস্থায় দেশে আসেননি, এলেন লাশ হয়ে। সুস্থ ভাইটা শুনলাম স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার আবদুল মজিদ (২৭) মালয়েশিয়া যাওয়ার তিন মাস পর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁর ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে তো তার এমন কোনো অসুখ ছিল না। মালয়েশিয়ায় গেল। তিন মাস পরই লাশ হয়ে ফিরল।’
২৯ বছরের এনামুল হকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি মারা গেছেন স্ট্রোকে। ২৮ বছরের আলম মোর্শেদ মারা গেছেন দুর্ঘটনায়। ৩১ বছরের কবির হোসেন স্ট্রোকে। তাঁর বাবা বাবুল সরকার আজও ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি।
গাইবান্ধার বাবুল মিয়া (৩৮), নোয়াখালীর আবদুর রহমান শেখ (৩৭), কিশোরগঞ্জের রমজান (২৯) ও মুন্সিগঞ্জের সেলিম হোসেনও (৩২) মারা গেছেন স্ট্রোকে। গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁদের লাশ এসেছে দেশে। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এমন মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসনবিষয়ক বেসরকারি সংস্থাগুলোর জোট কারাম এশিয়ার সমন্বয়ক হারুন-আল-রশিদ প্রথম আলোকে জানান, বাংলাদেশ থেকে দু-তিন লাখ টাকা খরচ করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে একেকজন মালয়েশিয়া আসছেন। কিন্তু এখানে বেশির ভাগ জায়গাতেই কাজের পরিবেশ ভালো নয়। খরচের টাকা তোলার জন্য অনেকে দিনে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টাও কাজ করেন। কাজ শেষে কারখানার পেছনে বস্তির মতো গাদাগাদি করে থাকেন। নির্ধারিত সময়ে খরচের টাকা ওঠে না। ফলে অতিরিক্ত সময় থেকে তাঁকে অবৈধ হয়ে যেতে হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম, সব সময় মানসিক দুশ্চিন্তা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা-খাওয়া, পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা-এসব কারণে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ হলেও যথাযথ চিকিৎসা পান না। ফলে ৩০ কিংবা ৪০ বছর পেরোনোর আগেই একেকজন মারা যাচ্ছেন।
মালয়েশিয়ার ক্লাং জেলায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার বাংলাদেশি আছেন। ক্লাং সিটি কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য মানিভানান আল ভেলুই বলেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকেরা যেখানে থাকেন, সেখানকার পরিবেশ একেবারেই অস্বাস্থ্যকর। আমরা বিভিন্ন সময়ে কারখানার মালিকদের এ বিষয়ে বলেছি। এমন পরিবেশে থাকলে যেকোনো সময় অসুস্থতা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) মুশাররাত জেবিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় প্রতি মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন বাংলাদেশি মারা যান। তাঁদের অধিকাংশই মারা যান স্ট্রোক, হৃদ্রোগ কিংবা দুর্ঘটনায়। আমরা লাশগুলো দেশে তাঁদের স্বজনদের কাছে পাঠাই। এসব মৃত্যু আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। তবে যাঁরা কাজ করতে আসেন, তাঁরা যদি মানসিক দুশ্চিন্তা কমাতে পারেন, অসুস্থ হলে শুরুতেই যদি চিকিৎসক দেখান, তাহলে মৃত্যু অনেক কমে আসবে।’


বিবাহিতরা বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ!


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
বিয়ের বন্ধন কি কোথাও ফাঁস হয়ে বিঁধে ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে সমাজতত্ত্ববিদদের নড়েচড়ে বসার সময় এসেছে। এনসিআরবির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অবিবাহিতদের চেয়ে বিবাহিতদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বেশি। এনসিআরবির দাখিল করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে অবিবাহিতদের তুলনায় বিবাহিত নারী-পুরুষরাই বেশি আত্মহত্যা করেছে। ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ অ্যান্ড সুইসাইডস’ নামে ওই প্রতিবেদনে এনসিআরবির গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ভারতে মোট এক লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ জন আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ৬৫.৯ শতাংশ ব্যক্তি বিবাহিত। অন্যদিকে অবিবাহিতদের মধ্যে আত্মহত্যা করেছে ২১.১ শতাংশ। আবার বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এই প্রবণতা একেবারেই নগণ্য। মাত্র ১.৪ শতাংশ।


Top


 

নারী ও শিশু সংবাদ


 


 

অটিস্টিক শিশুদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতা

দূর করার তাগিদ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ


অটিস্টিক শিশুদের অধিকাংশের মা-বাবা উচ্চশিক্ষিত ও অবস্থাসম্পন্ন অটিস্টিক শিশুদের অধিকাংশের বাবা ও মা উচ্চশিক্ষিত বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে। উক্ত গবেষণায় বলা হয়, অটিস্টিক শিশুদের ৪৩ শতাংশের মা এবং ৫২ শতাংশের বাবা স্নাতকোত্তর বা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং তারা অবস্থা সম্পন্নও হয়ে থাকেন। তবে তাদের প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন মা হতাশায় ভোগেন। গতকাল সোমবার আইসিডিডিআরবি অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে এই গবেষণা তথ্য তুলে ধরা হয়। অটিস্টিক শিশুর বাবা-মা মানসিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা নির্ণয়ে আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এই গবেষণায় সহযোগিতা করে নন কমিউনিক্যাবল ডিজিস লাইন ডিরেক্টরেট হেলথ সার্ভিস, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গোবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন, আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লেম্যান, নন কমিউনিক্যাবল ডিজিস লাইন ডিরেক্টরেট হেলথ সার্ভিস বিভাগের (এনসিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক এ.এইচ.এম এনায়েত হোসেন গবেষণা বিষয় বক্তব্য দেন, গবেষকদের পক্ষে ড. আলেয়া নাহিদ গবেষণার উপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এর উপর প্যানেল আলোচক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ও এনসিডিএর ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. মোস্তাফা জামান, সেন্টার ফর চাইল্ড এন্ড এডোলেশন-এর বিজ্ঞানী ড. জেনা হামাদানী, এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ মুন্নি সাহা প্রমুখ।
২০১৫ সালের মে-জুন মাসে ঢাকায় ৩৮৮ জন মায়ের মধ্যে এই গবেষণা চালানো হয়, যাদের ৩ বছর বয়সের অটিস্টিক শিশু আছে এবং তারা স্কুলে যায়। গবেষক দল তাদের পরিবারের আর্থ সামাজিক অবস্থা, মায়েদের সহযোগিতার অবস্থা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অটিস্টিক শিশু সম্পর্কে মায়েদের দক্ষতা এবং মায়েদের হতাশার বিষয় তুলে আনেন।
গবেষণায় দেখা যায়, ৫ জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে ৪ জনই ছেলে, সেই হিসাবে ৭৯ শতাংশ ছেলে শিশু ও ২১ শতাংশ মেয়ে শিশু অটিস্টিক। ৫০ শতাংশ মা ৩ বছরের মধ্যে তাদের শিশুর অটিজমজনিত আচরণ বুঝতে পারেন এবং ৬ বছর বয়সে তাদের বিশেষায়িত স্কুলে পাঠান। সেমিনারে বলা হয়, যত দ্রুত অটিস্টিক শিশুকে চিহ্নিত করা যাবে এবং যত দ্রুত তাকে বিশেষায়িত স্কুলে দিবেন তত দ্রুত সময়ে শিশু স্বাভাবিক আচরণের দিকে এগিয়ে যাবে। তারা বলেন, অটিজম কোন রোগ নয় বরং মস্তিষ্কের একটি বিকাশজনিত সমস্যা, দ্রুত শনাক্তকরণ ও যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে এই শিশুরা অন্য শিশুদের মতো উন্নতি করতে পারে।
গবেষণা মতে, ৬৩ শতাংশ মা শিশুকে ডাক্তারের চেম্বারে নেন এবং ৩৭ শতাংশ সেবার জন্য হাসপাতালে আনেন। ৮৯ শতাংশ মা জানান, বিশেষায়িত স্কুলে যাওয়ার পর শিশুর অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। ৬৯ শতাংশ বাবা-মা বিশ্বাস করেন, চিকিৎসার ফলে তাদের শিশু সুস্থ জীবন পাবে।
সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেন, অটিস্টিক শিশুর পিতামাতার ক্ষমতায়নে কাজ করতে হবে। এই বিষয়ে যারা প্রতিদিন তাদের সন্তানদের নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হন তাদের সকলকে সহযোগিতা করার ওপর জোর দেন সায়মা ওয়াজেদ। তিনি বলেন, অনেক বাবা-মায়ের অটিজম সম্পর্কে জানার সুযোগ নেই। তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশ অনেক বিষয় এগিয়ে গেছে। কাউকে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। অধ্যাপক দ্বীন মোহাম্মদ নুরুল হক বলেন, অটিস্টিক শিশুদের সামাজিক প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। অজ্ঞতার কারণে এখনও অনেকে মনে করেন, অটিস্টিক শিশু অভিশাপের ফল। আমাদের এই অবস্থা পরিবর্তনে কাজ করতে হবে। অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আমি অনেক পরিবারকে জানি, যেখানে অটিস্টিক শিশুর জন্য মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে গেছে। এই জায়গাগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বক্তারা প্রান্তিক অঞ্চলে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষক বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন। তারা বলেন, বিশেষায়িত স্কুলগুলো ঢাকা কেন্দ্রিক, ঢাকার বাইরেও এই বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন স্কুলগুলো ঠিকভাবে কাজ করে কিনা তাও তদারকির পরামর্শ দেন তারা। তারা বলেন, ৬ বছর বয়সে স্কুলে গেলে তারা ছয় বছরই পিছিয়ে পড়ে। তাই এই শূন্যতা পূরণে বাবা-মাকে সচেতন করে দ্রুত শিশুকে চিহ্নিতকরণে ভূমিকা রাখতে গণমাধ্যমকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।।

Top


ঝালকাঠিতে বাল্য বিয়ে, বরের জেল


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বাল্য বিয়ের অপরাধে বর রিপন হাওলাদারকে (৪০) ১৫ দিনের কারাদণ্ড ও পাঁচ শত টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এ রায় ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মুহাম্মদ আমীর উদ্দিন। রিপন হাওলাদার বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি গ্রামের আবদুস সালাম হাওলাদারের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার বাঁশবুনিয়া গ্রামের এনায়েত খানের মেয়ে কাঠালিয়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী রুনু আক্তারের সঙ্গে রিপনের বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় থানা এসআই আ. সালামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে উপজেলা শহরের একটি বাসা থেকে তাদের আটক করে
পরে সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ১৯২৯ সনের ৪ ধারায় বর রিপন হাওলাদারকে ১৫ দিনের জেল ও পাঁচ শত টাকা জরিমানা এবং কনে রুনু আক্তারকে নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।

Top

শিশুদের প্রতি হিংস্রতা নয়


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুরা নির্মমতার শিকার হচ্ছে। এতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত, ব্যথিত। শিশুদের প্রতিকূলতা থেকে রক্ষা করা বড়দের দায়িত্ব। তা না করে আমরা আমাদের শিশুদের মারধর করি।
যেসব শিশু কাজে সহায়তা করে, তাদের আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করি, নির্যাতনে তারা প্রাণও হারায়। এই আদিম হিংস্রতা মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের শিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়। মানুষের প্রতি মানুষের অমানবিকতা অনেক কষ্টের জন্ম দেয়। আমরা শিশু বা কোনো মানুষের প্রতি অমানবিক হতে চাই না, কোনো মাকে, কোনো স্বজনকে কাঁদাতে চাই না। কোনো শিশুকে শারীরিক নির্যাতন করার আগে আমরা নিজের সন্তানের কথা ভাবব, আমরা মনে করব, এই শিশুটি আমার, আমার স্বজনের, আমার আত্মীয়ের। মানুষ হিসেবে আমাদের বিবেক জাগ্রত হোক। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের এই প্রিয় দেশকে শিশুদের বসবাসের যোগ্য করতে চেষ্টা করি। তারাই মানবতার ভবিষ্যৎ। তাই আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে শিশুদের গড়ে তোলা।
ে।


 

Top
 

 

পুলিশ ও কারাগার সংবাদ

 


 

পুলিশকে পেটালেন স্থানীয়রা
মানবাধিকার রিপোর্টঃ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও এক কনস্টেবলকে স্থানীয় লোকজন মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ আগস্ট উপজেলা সদরের পোস্টকামুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পোস্টকামুরী গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান তাঁর স্ত্রী রুমা বেগমকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এএসআই সিরাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল সেলিম মিয়া গতকাল সকাল নয়টার দিকে আমিনুরের বাড়িতে যান। সেখানে তাঁরা আমিনুরকে না পেলেও তাঁর স্ত্রী রুমাকে আটক করে হাতকড়া পরান। এ সময় আমিনুরের ছেলে রানা (১৭) তার মাকে ছাড়ার জন্য টাকা দেওয়ার কথা বলে কনস্টেবল সেলিমকে নিয়ে মির্জাপুর বাজারে যায়। এর কিছুক্ষণ পর সেলিমকে নিয়ে রানা বাড়ি ফিরলে রুমার হাতকড়া খুলে দেন সিরাজুল।
ঘটনাটি স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ওই দুই পুলিশসহ রুমাকে তাঁদের ঘরে আটক করেন। এ সময় সিরাজুল ও সেলিম বের হওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত গ্রামবাসী তাঁদের দুজনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে সিরাজুল, সেলিম ও রুমা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসী তাঁদের ধাওয়া করে প্রায় ৫০০ গজ দূরে গিয়ে আটক করেন। এ সময় রুমা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
ওই গ্রামের শফিকুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, আরিফ হোসেন, ফুলবান বেগমসহ কয়েকজন অভিযোগ করেন, পুলিশ মাঝেমধ্যে ওই বাড়িতে হানা দিয়ে টাকা নিয়ে চলে যায়। গতকালও পুলিশ সেখানে গিয়ে রুমাকে আটকের পর হাতকড়া পরায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়।
এ ব্যাপারে এএসআই সিরাজুল জানান, আমিনুর পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য তাঁদের বাড়ি যাওয়া হয়েছিল। সেখানে তাঁকে না পেয়ে চলে আসার সময় ওই ঘটনা ঘটে। টাকা নিয়ে রুমাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, রুমার ঘরে ৪০০-৫০০ টাকা ছিল। ওই টাকা তিনি তাঁর (সিরাজুল) সঙ্গে রেখেছিলেন।
মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে দুই পুলিশকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন জানান, পরোয়ানাভুক্ত আসামি আমিনুরকে গ্রেপ্তারের জন্য গেলে ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটে।।

Top


পুলিশ প্রশিক্ষণ


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
সাতক্ষীরায় পুলিশের মানবাধিকারসহ বিভিন্ন পেশাগত দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ রবিবার থেকে শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্স ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে। গতকাল সকালে শুরু হওয়া এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর মোদাছছের হোসেন। তিনি বলেন, সবাইকে সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষ করে অর্জিত জ্ঞান বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন্সের পরিদর্শক মো. আবদুল লতিফ। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের তথ্য কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেন জানান, প্রশিক্ষণ কর্মশালায় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার ২৪ জন এসআই ও এএসআই অংশ নিচ্ছেন।
Top

শিশু নির্যাতনের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত মঙ্গলবার পিরোজপুরে বাবুল শেখ (৩৭) নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং ২এর বিচারক মোঃ নাজিমউদ্দৌলা এ রায় দেন। এ মামলার বিবরণে জানা যায়, নাজিরপুর থানার চিথলিয়া গ্রামে ২০০৬ সালে আব্দুস সত্তার শেখের ছেলে বাবুল তখন ১৩ বছর বয়সী একটি কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানী করে। এরপর নাজিরপুর সরকারি হাসপাতালে নার্স মমতাজের সহায়তায় মেয়েটির গর্ভপাত ঘটায়।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাবুলকে আসামি করে থানায় মামলা দেন। মামলার রায়ে বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাথে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্র পক্ষে ট্রাইব্যুনালের পিপি আব্দুর রাজ্জাক খান বাদশা ও আসামি পক্ষে এ্যাডভোকেট আহসানুল কবির বাদল মামলা পরিচালনা করেন।ে।
Top

শিশু অপহরণের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন


মানবাধিকার রিপোর্টঃ
জেলার সাদুল্লাপুরের দক্ষিণ চক দাঁড়িয়া গ্রামের এক শিশুকন্যা অপহরণ মামলার একজনকে যাবজ্জীবন ও তিন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। গাইবান্ধা স্পেশাল ট্রাইবু্যুনাল ২ এর বিজ্ঞ বিচারক বুধবার ওই রায় প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের ৬ জুন ওই শিশুকে আসামি আব্দুল মান্নান অন্য আসামিদের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর তাকে লালমনিরহাটের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে ওই পতিতালয় থেকে শিশুটিকে ভারতে পাচারের চেষ্টা চালানো হয়। পাচারকালে পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় অপহরণকৃত শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ মেয়েটিকে পিতা-মাতার কাছে ফেরত দেয়।।
Top
 



 

স্বাস্থ্য সংবাদ


 

ভ্রমণে বমি এড়াতে আপনি কী করবেন?


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ভ্রমণের সময় অনেকের বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। এটাকে বলা হয় মোশন সিকনেস বা গতির অসুস্থতা। গতির (ভ্রমণ) জন্য কানের ভেসটিবুলার অংশের সমস্যার ফলে এই অবস্থা হয়। এ ধরনের সমস্যা ভ্রমণকে কষ্টদায়ক করে তোলে। বমি প্রতিরোধে অনেকেই ভ্রমণের আগে ওষুধ খেয়ে নেন। তবে কিছু খাবারও রয়েছে যা খেলে বমি প্রতিরোধ করা সম্ভব। লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে এমন কিছু খাবারের নাম।
আদা
আদা বমি প্রতিরোধী খাদ্য হিসেবে বেশ পরিচিত; এটি হজমের জন্য উপকারী। যদি আপনার বমির সমস্যা হয় তাহলে ভ্রমণের আগে আদার চা খেয়ে নিতে পারেন। গর্ভাবস্থার বমি প্রতিরোধেও এটি কার্যকরী।
পুদিনা
পুদিনার চা বমি বন্ধে বেশ উপকারী। পুদিনা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে একটু মধু মিশিয়ে চায়ের সাথে খেতে পারেন। আর পথে থাকলে কিছু পুদিনা পাতা চাবাতেও পারেন। এর গন্ধ বমি বমি ভাব ও বমিরোধে সাহায্য করবে।
দারুচিনি
দারুচিনি বমিনাশক উপাদান হিসেবে উপকারী। আপনি দারুচিনির চা খেতে পারেন। চাইলে স্বাদ বাড়াতে একটু মধুও যোগ করতে পারেন এর সাথে। গর্ভাবস্থার সকালের অসুস্থতা কাটাতে এবং বমি দূর করতে দারুচিনির চা খুব কার্যকরী।
পেঁয়াজের জুস
পেঁয়াজের জুস দ্রুত বমি ভাব থেকে মুক্তি দেয়। পেঁয়াজ এবং আদা থেঁতলে জুস করে একসঙ্গে খেতে পারেন। এটি ভালো কাজ করে।
লবঙ্গ
বমি বমি ভাব ও বমি থামানোর জন্য কিছু লবঙ্গ মুখে নিয়ে চাবাতে পারেন। এর স্বাদ বাড়াতে একটু মধু যোগ করতে পারেন। পাকস্থলি ভালো রাখতেও লবঙ্গ বেশ উপকারী।
এলাচ
এলাচ চাবানোও দ্রুত বমি রোধে বেশ উপকারী; এটি হজমের জন্য ভালো। আপনি এলাচ ও দারুচিনির চা খেতে পারেন।
গরম লেবুপানি
গরম লেবুর পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। মাথাব্যথা, বমি এবং বমিবমি ভাব দূর করতে এই পানি উপকারী।
জিরা
ভ্রমণের আগে জিরার গুঁড়া পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি বমি দূর করতে সাহায্য করবে।
মৌরি
মৌরিও বমি বমি ভাব এবং বমি রোধে সাহায্য করে। দ্রুত বমি ভাব দূর করতে কিছু মৌরি চাবাতে পারেন। মৌরির চা পান করতে পারে ভ্রমণের আগে।
শতায়ু দিতে পারে যে ৬টি খাবার
যারা শতবর্ষ পার করেন, সবাই তাঁর জীবন যাপনের রহস্যটা জানতে চান। তিনি কী খেতেন, কিভাবে চলতেন ইত্যাদি দীর্ঘ জীবন লাভের উপায় হয়ে ওঠে। বিজ্ঞানীদের মতে, দীর্ঘায়ু লাভের সবচেয়ে বড় সহায়ক হতে পারে সঠিক পুষ্টিমানের খাবার। তা ছাড়া কিছু মানুষ জিনগতভাবেই অনেক দিন বেঁচে থাকার সৌভাগ্য অর্জন করে। এর সঙ্গে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের বিষয় তো রয়েছেই। বহু খাবারের পুষ্টিগুণ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু খাদ্য চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মতে, এগুলো মানুষকে শতায়ু দিতে পারে। চিনে নিন এমনই ছয়টি জাদুকরি খাবারের কথা।
১. অ্যাসপারাগাস : সুস্বাদু ও দারুণ উপকারী সবজি। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ এবং পটাশিয়াম রয়েছে। গোটা দেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ কোষের ক্ষয় সারাতে ভালো কাজ করে অ্যাসপারাগাস।
২. বিন : বরবটি, শিম, মটরশুঁটি ইত্যাদির বিচি প্রোটিনে ভরপুর থাকে। এসব উদ্ভিজ্জ প্রোটিন হৃদযন্ত্রের সুস্থতা ধরে রাখে। এতে হালকা ফ্যাট এবং উচ্চমাত্রার আঁশ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় বলা হয়, যেসব মানুষ সারা জীবন নিয়মিত বিন খান, তাঁরা দীর্ঘদিন বাঁচেন।
৩. বেরি : আঙ্গুর, স্ট্রবেরি ইত্যাদি বেরি জাতীয় ফলে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা জোরদার করতে দারুণ কাজ করে এগুলো।
৪. ডার্ক চকোলেট : সবাই পছন্দ করেন চকোলেট। তবে ডার্ক চকোলেট বহুগুণে গুণান্বিত। প্রতিদিন কয়েক কামড় চকোলেট হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়।
৫. রসুন : এটি বহু রোগের ওষুধ হিসেবে বিবেচিত। এতে রয়েছে এসিলিন, যা হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম সুষ্ঠু রাখে।
৬. গ্রিন টি : এ চা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রিন টি-এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কয়েক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি ত্বকে যে ক্ষতিসাধন করে, গ্রিন টি তা আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে বলে মনে করেন গবেষকরা। সূত্রঃ ফক্স নিউজ অবলম্বনে

Top



মাথা ঘাড় ও প্রেসারের সম্পর্ক


মাথাব্যথা অনেক কারণেই ঘটে থাকে তার মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগের মতো কারণ চিকিৎসকরা নির্ণয় করতে না পারায় ওই ধরনের সমস্যাকে একটি ঢালাও নামে ডাকা হয়ে থাকে, মাইগ্রেন। মানে মাথা ব্যথায় প্রায় ৪০-৫০ শতাংশই মাইগ্রেন এবং এর গ্রহণযোগ্য কারণ এখনো জানা সম্ভব হয়নি। মাইগ্রেন সাধারণভাবে উঠতি বয়সের ব্যক্তিদের বেলাই বেশি পরিলক্ষিত হয়। উচ্চ রক্তচাপ সাধারণভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে কোনোরূপ উপসর্গের সৃষ্টি করে না, তাই বহুদিন ধরে হাইপ্রেসার অনেক রোগীদের কাছে অজানাই থেকে যায়। অনেকে বুঝতেই পারেন না যে তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এভাবেই অনেক ব্যক্তি বছরকে বছর অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ নিয়ে দিব্যি সব ধরনের কাজকর্ম যথাযথভাবে পালনও করতে পারছেন। উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে আপনার হৃৎপিণ্ডকে অধিক শক্তি ব্যয় করে রক্ত পাম্প করতে হয়। অধিক কাজের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে প্রাকৃতিক নিয়মেই হার্টের কলেবর বৃদ্ধি পেয়ে যায়। যাকে হার্ট মোটা হওয়া, হার্ট বড় হওয়া, হার্টের দেয়াল মোটা হওয়া বলা হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছার পর হার্ট আরও বেশি কাজ করতে অপারগ হয়ে পড়ে। ঠিক তখনই এ ধরনের রোগীরা বেশকিছু সমস্যায় আক্রান্ত হন, যেমন- বুক ব্যথা বিশেষ করে ভরা পেটে হাঁটতে গেলে, তার সঙ্গে কারও কারও পরিশ্রমে হয়রান হয়ে যাওয়া বা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়া, এর সঙ্গে অনেকের পা ফুলে পানি আসা, পেট ফুলে যাওয়া, গ্যাস, বদহজম, অরুচি ইত্যাদি হয়ে থাকে। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, উচ্চ রক্তচাপ বিনা লক্ষণে হার্টের ক্ষতি করার পর রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তাই অনেকে উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। উচ্চ রক্তচাপ কারও কারও বেলায় কিছু উপসর্গের প্রকাশ ঘটায় যেমন- অস্থিরতা, কাজে মন না বসা, ঠাণ্ডা এবং গরম সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া, কারও কারও ঘাড়-মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এ ধরনের উপসর্গ মাত্র শতকরা ১০ ভাগ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেলায় পরিলক্ষিত হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, যদি কোনো ধরনের তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত হন যেমন তীব্র পেট ব্যথা, হাত-পা ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যথার কারণে রক্তচাপ সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। ঘাড়-মাথা ব্যথা হলে যদি প্রেসার বেশি পরিমাপিত হয়, তাতে কিন্তু সঠিকভাবে বলা যাবে না যে, প্রেসার থেকে মাথা ব্যথা হচ্ছে অথবা ঘাড়-মাথা ব্যথা হওয়ার ফলে প্রেসার বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ব্যথা থেকেও প্রেসার বাড়তে পারে। কখনো কখনো টেনশনের জন্য রক্তচাপ বৃদ্ধি ও মাথা ব্যথা দুটোই একসঙ্গে ঘটে থাকে তবে এর সঙ্গে অনিদ্রারও একটি যোগসূত্র আছে। ঘাড়-মাথা ব্যথার সঙ্গে হাইপ্রেসার পাওয়া গেলেই যে রক্তচাপের বৃদ্ধি পেয়েছে তা মোটেই সঠিক নয়। বয়স্ক ব্যক্তিদের বেলায় ঘাড়ে অস্থিক্ষয়জনিত সমস্যা আছে কিনা জানতে হবে।
লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি), ঢাকা মেডিকেল কলেজ, মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বাবর রোড, ঢাকা।
Top

ধূমপানে সিজোফ্রেনিয়া


ধূমপানের সঙ্গে সিজোফ্রেনিয়া রোগের যোগসূত্র রয়েছে বলে আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। লন্ডনের কিংস কলেজের এক দল গবেষক ৬০টির বেশি গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ধূমপায়ীদের সিজোফ্রেনিয়া রোগ বা ‘দ্বৈত সত্তা’র সমস্যায় ভোগার প্রবণতা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, সিগারেটের নিকোটিন মস্তিষ্কের গঠন বদলে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন ‘সাইকোসিস’ বা যে মানসিক বৈকল্যের কারণে মানুষ বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে তার সঙ্গে ধূমপানের যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু এত দিন ধূমপানকে এর কারণ হিসেবে দেখা হতো না বরং মনে করা হতো, এই মানসিক অবস্থা রোগীকে ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করছে। অর্থাৎ সাইকোসিসের রোগী যারা সচরাচর কণ্ঠ শুনতে পায় বা অলীক কিছু দেখতে পায় তারা মানসিক এই চাপ কমাতে নিজেরাই ধূমপানের পথ বেছে নেয়।
কিংস কলেজের গবেষকরা এখন বলছেন, তাঁরা সিজোফ্রেনিয়ার সঙ্গে ধূমপানের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ দেখতে পেয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ধূমপান অল্প বয়স থেকে এই মানসিক অবস্থার দিকে কাউকে ঠেলে দিতে পারে। তবে তাঁরা বলেছেন, এর পক্ষে জোরালো তথ্য-প্রমাণ পেলেও এ বিষয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
গবেষকরা অবশ্য এ-ও বলছেন, ধূমপান করলেই যে সিজোফ্রেনিয়া হবে- এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর কোনো কারণ নেই। তবে সিজোফ্রেনিয়ার ঝুঁকি রয়েছে এমন মানুষের ক্ষেত্রে ধূমপান এই ঝুঁকি যে বাড়িয়ে দেয় গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র : বিবিসি।
Top

মাইগ্রেইন রোগীদের জন্য খাদ্যাভ্যাস


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
মাইগ্রেইন যাদের আছে তাদের মাথাটা মনে হয় একটা টাইম বম্ব। একটু বেচাল হলেই ভয়ঙ্কর মাথা ব্যথা শুরু হয়ে সব কাজ পণ্ড হয়ে যেতে পারে। রাত জাগা, কাজের চাপ, বেশি বা কম কফি খাওয়ার কারণে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হতে পারে। সত্যি বলতে কি, এর চেয়ে অনেক তুচ্ছ কারণেও মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
যাদের এই ব্যথা আছে শুধু তারাই জানেন এটি কী পরিমাণে যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। মাইগ্রেইনের ব্যথা উঠলে কেবল মাথা ব্যথা হয় তাই নয়, অনেক সময় চোখ খুলে তাকানোও যায় না। কারো কারো এসময় বমিও হতে পারে। সাধারণত: মাইগ্রেইনের সময় মাথা দপ দপ করে এবং মাথার একপাশে ব্যথা শুরু হয়ে তা সারা মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। অতিরিক্ত আলো এবং শব্দে এই ব্যথা বাড়তে পারে। অনেক সময় মাইগ্রেইনের রোগীদের বিষন্নতা থাকে, এবং সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে তাদের সমস্যা হতে পারে। মাইগ্রেইনের সমস্যার ওষুধ থাকলেও জীবন যাপনের ধরণ এবং খ্যাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও আপনি এই সমস্যা কমিয়ে আনতে পারেন।
Top
 

কোন ধরণের খাবার খেলে ব্যথা শুরু হয় তা বের করুন


মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
একেক জনের একেক ধরণের খাবারের কারণে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হয়। আপনার যাতে ব্যথা শুরু হয় তাতে আরেকজন মাইগ্রেইন রোগীর সমস্যা নাও হতে পারে। কয়েক সপ্তাহ একটি নোটবুকে কি কি খাবার খাচ্ছেন এবং কোন কোন দিন ব্যথাহচ্ছে তা টুকে রাখুন। আপনি এভাবে কোন খাবারের কারণে মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু হয় তা বিশ্লেষণ করে বের করতে পারবেন। এটি একটি ক্লান্তিকর প্রক্রিয়া মনে হলেও অনেকে এতে উপকার পেয়েছেন। মাইগ্রেইনের ব্যথা শুরু করে এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চললে, সময়মত ঘুমালে এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপন করলে মাইগ্রেই থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার তালিকায় রোজ সবুজ শাক সবজি এবং বাদাম রাখুন
মানবাধিকার হেলথ ডেস্কঃ
ম্যাগনেসিয়াম ও রিবোফ্লাবিন বা ভিটামিন-বি২ মাথা ব্যথা কমানোর কাজ করে। এগুলো সবুজ শাক সবজি এবং বাদামে পাওয়া যায়। তাই রোজ দুপুরে বা রাতে শাক খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ৪-৬ টি বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। আলু এবং লাল আটাতেও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। ডিম এবং কম চর্বিযুক্ত দুধে রিবোফ্লাবিন থাকে।
ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ বাড়িয়ে দিন
ভিটামিন ডি মূলত: দাঁত এবং হাড়ের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হলেও মাথা বথ্যার সাথেও এটির সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়। সাধারণত: প্রতিদিন ১০০০ আইইউ ভিটামিন ডি শরীরের জন্য প্রয়োজন হলেও মেয়েদের ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এই চাহিদা ১২০০ আইইউ-তে গিয়ে পৌছায়। ভিটামিন ডি-এর বেশিরভাগই আসে সূর্যের আলোর সংস্পর্শ থেকে তবে খাবার থেকেও অনেকটুকু শরীরে গ্রহণ করতে হয়। যেসব খাবারে ভিটামিন ডি রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মাশরুম, ডিমের কুসুম, চিজ বা পনির, দৈ, দুধ, কড লিভার অয়েল এবং গরুর কলিজা। আপনি একসাথে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর সাপ্লিমেন্ট খেয়েও দেখতে পারেন। এটি বিশেষ করে ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এবং ষাটোর্ধ যে কারোর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
Top

পরিমান মত নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করুন


প্রতিদিন তিনবার ভরপেট খাওয়ার চাইতে অল্প করে বেশ কয়েক বার খান যাতে রক্তচাপ কখনো কমে না যায়। চর্বিযুক্ত খাবার কম খান এবং জটিল ধরণের শর্করাজাতীয় খাবার বেশি খান। যেসব খাবার থেকে আস্তে আস্তে চিনি শরীরে পৌছায়, যেমন-বাদামি রুটি, লাল আটার রুটি, ওটমিল, লাল চাল, কম জিআই যুক্ত চাল, শাক সবজি সেগুলোকে জটিল ধরণের শর্করা জাতীয় খাবার বলে। আপনার মাইগ্রেইন হয়ত কখনই পুরোপুরি ভাল হবে না, তবে কিছু বিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের কারণে জীবনের মান অনেক উন্নত হয়ে উঠতে পারে।
ডা: নাওমি মির্জা, মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ
 

এসপিরিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়


দিনে ১টা করে লো ডোজ বা স্বল্পমাত্রার এসপিরিন ট্যাবলেট সেবনে ক্যান্সারের ঝুঁকি হরাস পায় ১৯ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞগণ গবেষণায় দেখেছেন, দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রাম এসপিরিন সেবন যদি ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত অব্যাহত রাখা যায় তবে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এসপিরিন সেবনে ক্যান্সার নিরাময় ও প্রতিরোধেও ভূমিকা রয়েছে।
এছাড়া এসপিরিনের হূদরোগ প্রতিরোধ ও আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রয়েছে। তাই প্রতিদিন ১টা করে লো ডোজ এসপিরিন সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একটি বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তবে যাদের হাইপার এসিডিটি ও গ্যাসট্রিক আলসার আছে তাদের নিয়মিত এসপিরিন সেবনের আগে অবশ্যই সংশ্লি¬ষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
Top

 

 

আইন কনিকা


 

ধর্ষণের অভিযোগে কঠিন সাজা হতে পারে
রফিকুল আলম


আমাদের সমাজব্যবস্থার কারণে সব সময়ই দেখা যায় দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার চলতে থাকে। আমাদের সমাজ পুরুষতান্ত্রিক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে নারী ও শিশুদের ওপর এ অত্যাচারের পরিমাণ বেশি। নারী ও শিশুর প্রতি এ নির্যাতের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। নারী ও শিশুরা সাধারণত যেসব নির্যাতনের শিকার হয় তার মধ্যে অন্যতম ধর্ষণ। অনেক সময় দেখা যায় ধর্ষণের ফলে যে শিশুর জন্ম হয়, সে শিশুর তত্ত্বাবধান ও ভরণপোষণের দায়িত্ব কে নেবে তা নিয়ে দেখা দেয়া নানা প্রশ্ন। অবশ্য আমাদের সমাজব্যবস্থায় এক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। তাই এসব বিষয়ে পাঠাকদের উদ্দেশে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুর তত্ত্বাবধান ও ভরণপোষণ : নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য অপরাধের যথাযথ বিচার করার উদ্দেশ্যে সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ প্রণয়ন করে। ওই আইনের ১৩ ধারায় এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের মাধ্যমে জন্ম নেয়া সন্তানকে তার মা কিংবা মাতৃকুলীয় আত্মীয়-স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা যাবে। ওই সন্তান তার বাবা অথবা মা কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার অধিকারী হবে। তার ভরণপোষণের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে। ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে ২১ বছর পর্যন্ত এবং মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে তার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে স্বীয় ভরণপোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত এই ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে হবে। উল্লেখ্য, ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় এই অর্থ সরকার ধর্ষকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। সেটি সম্ভব না হলে ধর্ষক ভবিষ্যতে যে সম্পদের অধিকারী হবে, তা থেকে ওই টাকা আদায়যোগ্য হবে।
ধর্ষণ : কোনো নারীর সম্মতি ছাড়া তার সঙ্গে কোনো পুরুষের যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকে ধর্ষণ বলে। আরো সহজ ভাষায় বলা যায়, যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সম্মতি না থাকলেই তা ধর্ষণ হবে। ধর্ষণের সময় নারী যদি কোনো বাধা না দেয় বা প্রতিরোধ নাও করে তাহলেও যৌন সম্পর্ক স্থাপনে যে কোনোভাবে অসম্মতি জানালেই সেটি ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে অর্থাৎ নারীর সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকেই ধর্ষণ বলে ধরা হবে। কারণ ধর্ষণের সময় অনেক কারণে নারী বাধা দিতে বা প্রতিরোধ করতে পারেন না। যেমনÑ ধর্ষণকারী তাকে অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাতে পারে, নারী মৃত্যু বা গুরুতর আঘাত পাওয়ার ভয় পেতে পারেন। আবার মাদকদ্রব্য বা ওষুধ দিয়ে নারীকে জ্ঞানহীন করে ধর্ষণ করা হতে পারে। তবে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সম্মতি দিক বা না দিক তা ধর্ষণ হবে। কারণ এই আইনের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুর সম্মতির আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। আইন বিষয়টি এভাবে দেখছে এ জন্যই যে, বড়রা নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য একটি শিশুকে এমন সূক্ষ্মভাবে প্রভাবান্বিত করতে পারে, যাতে মনে হতে পারে যে, শিশুটি স্বেচ্ছায়ই কাজটি করছে বা করেছে।
ধর্ষণের শাস্তি : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ ধারাতে ধর্ষণের শাস্তি সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। ৯-এর ১ উপধারা মতে, কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে তার শাস্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং সে এর অতিরিক্ত অর্থদ-েও দণ্ডিত হবে। ধর্ষণের ফলে বা ধর্ষণ-পরবর্তী অন্য কোনো কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে ধর্ষণকারী মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ ছাড়াও তাকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হতে পারে। এই আইনের ৯(১) ধারার ব্যাখায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ বিয়ে ছাড়া ১৬ বছরের বেশি বয়স্ক কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতি ছাড়া বা ভয় দেখিয়ে বা প্রতারণামূলকভাবে তার সম্মতি আদায় করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে তার সম্মতি বা অসম্মতির কোনো আলাদা গুরুত্ব নেই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ ধারার ৩ উপধারায় দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এই ধারা মতে, দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করলে এবং ধর্ষণের ফলে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে বা তিনি আহত হলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ে দণ্ডিত হবে। এ ছাড়াও তাদের সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। পত্রিকা পড়লে কখনো কখনো দেখা যায়, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায়ও কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বা হন। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের ও সাধারণ পুলিশদের দায়িত্বহীনতা এবং কর্তব্যে অবহেলার জন্যই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। পুলিশের এ ধরনের দায়িত্বহীনতার জন্য ওই আইনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই আইনের ৯(৫) ধারা মতে, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হলে, যাদের হেফাজতে থাকাকালীন ওই ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, সে ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা, ওই নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরি দায়ী হবেন এবং তাদের প্রত্যেকে অনধিক ১০ বছর; কিন্তু অন্যূন পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ-ে দণ্ডিত হবেন এবং অনূর্ধ্ব ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। তবে এ ধরনের হেফাজতকারীরা যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তাদের হেফাজত কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম বা অসাবধানতা ঘটেনি, তবে তারা নির্দোষ বলে গণ্য হবেন। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, অপরাধ বিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগকারীকেই প্রমাণ করতে হবে যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি সংঘটিত অপরাধটি করেছে। বর্তমান বিধানে এই নীতির ব্যতিক্রম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এখানে অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হবে যে, সে নির্দোষ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ ধারার ৪ উপধারায় ‘ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানো বা আহত করার চেষ্টা’কে একটি মারাত্মক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এই ধারা মতে, কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করলে তার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ড বা জরিমানা। কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর কিন্তু সর্বনিম্ন পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ- এবং এ ছাড়াও আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ধর্ষিতার করণীয় : ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই একজন নারী বা একটি শিশু মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েন। তখন তার কী করা উচিত বা তিনি কী করবেন ভেবে পান না। তাছাড়া ধর্ষণের শিকার নারী এবং তার পরিবারের প্রতি সমাজের বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অধিকাংশ ধর্ষণের ঘটনাই গোপন করে যাওয়া হয়। মামলার প্রক্রিয়াটি একজন ধর্ষণের শিকার নারীর জন্য খুব সহায়ক নয়। ধর্ষিত হওয়ার পর থানায় যাওয়া, মেডিকেল পরীক্ষা করানো, আদালতে দাঁড়ানো সবকিছুই একজন ধর্ষণের শিকার নারীর জন্য বিব্রতকর; তবু এর মধ্যেই সব প্রতিকূলতা এড়িয়ে নারীকে আইনের লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ধর্ষণের ঘটনায় আইনি সহায়তা পেতে হলে কী করতে হবে তা নিচে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলোÑ ধর্ষণের ঘটনার সাক্ষী হিসেবে কাজে লাগানোর জন্যও ঘটনাটি কাউকে জানানো উচিত। যে কাউকেই ধর্ষণ সম্পর্কে জানানো যায়। সে আত্মীয়, বন্ধু, ডাক্তার এমনকি পুলিশ অফিসারও হতে পারে; ধর্ষণের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলা করতে হবে। কারণ ধর্ষণের পর মামলা করতে দেরি হলে ধর্ষণ প্রমাণ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে; ধর্ষণের শিকার নারী বারবার গোসল করে নিজেকে পরিষ্কার করতে চায়। ফলে শরীরের বেশিরভাগ আলামত বা সাক্ষ্য-প্রমাণ ধুয়ে-মুছে যায়। সুতরাং যত খারাপই লাগুক নিজের স্বার্থেই ডাক্তারি পরীক্ষার আগে গোসল করা যাবে না। ধর্ষণের সময় পরনে যে কাপড় ছিল তা ধোয়া বা পরিষ্কার করা যাবে না। কারণ কাপড়ে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণাদি থাকে; ওই কাপড় কোনোভাবেই পলিথিনের ব্যাগে রাখা যাবে না। কাগজের ব্যাগে বা কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে এবং সেভাবেই এই কাপড় থানায় নিয়ে যেতে হবে; ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থানায় অভিযোগ করতে হবে। যে কেউ এজাহার করতে পারেন। আক্রান্ত নারী যখন থানায় যান, তখন তার সঙ্গে আত্মীয়, বন্ধু বা পরিচিত কাউকে সঙ্গে নিয়ে গেলে ভালো। সেক্ষেত্রে বিপর্যস্ত অবস্থায় তিনি কিছুটা সহযোগিতা ও সাহস পাবেন; মামলার প্রধান সাক্ষী হিসেবে যে নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তার জবানবন্দি গ্রহণ করতে হবে। পুলিশ এ জবানবন্দি গ্রহণ করবে। ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে পুলিশ অফিসার অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের উত্তর দিতে নারী বাধ্য নন; ধর্ষণের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারি পরীক্ষা করানো গুরুত্বপূর্ণ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই পরীক্ষা করানো জরুরি। কেননা এরপর আর খুব বেশি সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকে না।
Top

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার
সাদিকুল নিয়োগী পন্নী


ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪, ৫৫, ৫৭, ১৫১ ধারা অনুযায়ী পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে গ্রেফতার করা যায়। তবে এ গ্রেফতারের পেছনে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী নিুোক্ত কারণে কোনও ওয়ারেন্ট বা মেজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়াই কাউকে গ্রেফতার করতে যেতে পারে।
* আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত বা জড়িত থাকার সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তি।
* যে ব্যক্তির কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জাম যেমন-হাতুড়ি, শাবল, ছুরি ইত্যাদি পাওয়া যায় কিন্তু সে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে না পারলে।
* যাকে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বা সরকার কর্তৃক অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
* চোরাইমাল হিসেবে সন্দেহ করা যায় এরূপ মালামালসহ কোনও ব্যক্তি।
* পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করা বা পুলিশ হেফাজতে বা আইনসঙ্গত হেফাজত থেকে পলায়ন বা করার চেষ্টা করেছে এমন ব্যক্তি।
* বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা থেকে পলায়নকারী বলে সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তি।
* বাংলাদেশের আইন যা অপরাধ এরূপ কাজ দেশের বাইরে করে দেশে আত্মগোপন করলে।
* ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬৫(৩) উপধারা লঙ্ঘন করেছে এমন মুক্তিপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি।
* যাকে গ্রেফতার করার জন্য অন্য কোনও থানার পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে ইনকোয়ারি ¯িপ পাওয়া গেলে।
কোনও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৫ ধারা অনুসারে বখাটে, ভবঘুরে, পুরাতন ডাকাত, উত্ত্যক্তকারী ইত্যাদি প্রকৃতির লোককে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৭ ধারা অনুসারে কোনও ব্যক্তি পুলিশের কাছে তার প্রকৃত পরিচয় ও ঠিকানা জানাতে অস্বীকার করলে পুলিশ তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে। এছাড়াও কোনও ব্যক্তি অপরাধমূলক কর্মকাে র প্রস্তুতি নিলে পুলিশ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারা অনুসারে সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে।

Top
 

 


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 
   

                                                     Copy Right : 2001 BHRC  All rights reserved.